দ্যা ইকোনোমিষ্টের দৃষ্টিতে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই--খালেদা যাচ্ছেন জেলে। ================================ সেনা চাউনী থেকে প্রতিষ্ঠিত বি,এন,পি দলের পতনের মহুর্তে দেশ বিদেশ থেকে একের পর এক শুধু প্রেসক্রিপসানই আসছে।কেউ বলছেন নেত্রীর ভুলের কারনে দলের পতন অনিবায্যতা পেয়েছে,কেউ বলছেন তারেক জিয়াকে প্রতিষ্ঠিত করার মধ্যে গলধ হয়েছে,কেউ বলছেন শংকর জাতের নেতাদের মিলন মেলার কারনে কেউ কার ও কথা শুনছে না,কেউ বলছেন ২০০১সালের নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে, দলটি তাঁর জাতীয় চরিত্রের রুপ হারিয়ে ফ্যাকাসে হয়ে গেছেন,কেউবা বলছেন সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতির কারনে জনগনের আস্থা হারিয়ে পেলেছেন।অনেকে আবার বলছেন ১/১১ সরকারের রোষানলে পড়ে দলটি দিক হারিয়ে উলটা পথে চলেছেন।কেউ আবার বলেন,দশম নির্বাচনে অংশ না নেয়ার কারনে আজকের এই দশা।অনেকেই বলেন জামাতের কারনে দলটির পতন হচ্ছে।বহু বিজ্ঞ অভিজ্ঞ রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলতে শুনা যায়,৯ম সংসদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দেয়া প্রস্তাব"সর্বদলীয় সরকারের প্রস্তাব প্রত্যাক্ষান করে নির্বাচন বর্জনই সবচেয়ে বড় ভুল।""আবার অনেকেই আরো গভিরে পৌছে বলতে চান জনগনের সমস্যা নিয়ে আন্দোলন না করে পরিবার রক্ষা করার জন্য বিশাল জনসমর্থন পুষ্টদল কে ব্যাবহার করার কারনে দলটি ধীরে ধীরে রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েছে। রোগ চিহ্নিত করা গেল,যাহাই এযাবৎ বলা হল মুলত আওয়ামী লীগ এতদিন যা বলে আসছে,তাহাই। ঐ দলের দেশী বিদেশী শুভাকাংখীদের আলোচনায় ঘুরে ফিরেই এসেছে।বাস্তবীক ভাবে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পয্যায়ের নেতারাও আগে থেকেই বৃহৎ বিরুদি দলের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে,গনতন্ত্রের স্বার্থে,বার বার হুশিয়ারী দিয়ে বলার চেষ্টা করেছেন উল্লেখিত কথাগুলী।তখন বি,এন,পি কানে নেয়নি।এখন কানে নিচ্ছেন,খালেদা জিয়া নীজেই বলা শুরু করে দিয়েছেন আর হিংসাত্বক রাজনীতি করবোনা।এখন থেকে জনসম্পৃত্ত রাজনীতিই চালিয়ে যাব। ""মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দলের এক আলোচনা সভায় ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমি বলতে চাই- ভয়ের কিছু নেই। আপনাদের অভয় দিচ্ছি; আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতি করব না। কারো প্রতি প্রতিশোধ নেব না।” দলের ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে ওই আলোচনা সভা হয়। নির্বাচন কমিশন বাতিল করে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানেরও দাবি জানান খালেদা। তিনি বলেন, “আমরা শুধু চাই একটা অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন। বর্তমান নির্বাচন কমিশন বাতিল করে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।” একইসঙ্গে দেশকে এগিয়ে নিতে জাতীয় ঐক্যের রাজনীতির ডাকও দেন খালেদা জিয়া। “সরকার আসবে, সরকার যাবে। এদেশে কিন্তু মাত্র দুটি দলই আছে- বিএনপি ও আওয়ামী লীগ। কাজেই কোনো সময় আওয়ামী লীগ কোনো সময় বিএনপি, সেটারই রদবদল হতে থাকবে। আসুন উন্নয়নের রাজনীতি করি, জাতীয় ঐক্যের রাজনীতি করি। গুম-খুন-হত্যা বন্ধ করে, মামলা-হামলা বন্ধ করে সামনের দিকে দেশটাকে এগিয়ে নিতে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দিন।” রাজনীতিতে ভুল করলে এমন হয়,জাতীয় সরকারে যোগ দিয়ে নির্বাচন করেননি, অথছ এখন নির্বাচন কমিশন রদবদল করলেও নির্বাচন করবেন।এখন কেন নির্বাচন দিবেন সরকার।দেশের জনগন এবং বিদেশি বন্ধু রাষ্ট্র সমুহ বাংলাদেশের ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচন মেনে নিয়েছে। ""দ্যা ইকোনোমিষ্ট পত্রিকায় একটি নিবন্ধ চাপিয়ে বলেছে----অন্তহীন লড়াইয়ে জিতে চলেছে এক নারী"শিরোনামে দেশনেত্রী শেখ হাসিনার অন্থহীন প্রসংশা করে লিখেছে,--দেশের সব কিছুই শেখ হাসিনার নিয়ন্ত্রনে(২)বিদেশীরা এই সরকারের সাথে ব্যবসা বানিজ্যে আগ্রহী(৩)দেশে দারিদ্রের হার দ্রুত কমে এসেছে।(৪)বেগম খালেদা জিয়া অতীত কর্মকান্ডের কারনে জেলে যাবেন।"" গত কিছুদিন যাবৎ বলে আসছিলাম বি,এন,পি তাঁদের ভুল বুঝতে পেরেছে।এক দুইটি কর্মসুচি দিয়ে হঠকারী রাজনীতি পরিহার করেছে প্রমান করতে চাইলে, প্রমান হবে না।তাঁর জন্য জনগনের প্রত্যাশা হচ্ছে নিয়ন্তর গনসম্পৃত্ত কর্মসুচি দিয়ে রাজপথে অবস্থান নেয়া।রাজপথেই নির্ধারীত হবে বি,এন,পি,তাঁর মিত্র মানবতা বিরুদি অপরাধিদের সংঙ্গ ত্যাগ করে, জনগনের সংগে এসেছে কিনা।হঠকারী রাজনীতি ছেড়ে গনমূখী রাজনীতির চর্চা শুরু করেছে কিনা?সব কিছুর আগে গত জীবনে লাগাতার সহিংশ রাজনীতির কারনে,প্রতিহিংসার বসবর্তি হয়ে আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমে মানুষ হত্যা করে,সম্পদ ধ্বংশ করে মানবতা বিরুদি অপরাধের কারনে আদালতের মাধ্যমে তিনি নীজকে নির্দোশ প্রমান করে আসতে হবে।দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিবিদ হিসেবে কোন চালচাতুরীর আশ্রয় গ্রহন না করে আদালতের মাধ্যমে রাজনীতি করার সার্টিফিকেট নিয়ে আসতে না পারলে, তিনি জনগনের নিকট গ্রহনযোগ্যতা অর্জন করতে পারবেন বলে মনে হয় না।যতই সুন্দর কথা বলার চেষ্টা করুকনা কেন,জনগনের আস্থা বিশ্বাসে চিড় ধরেছে তা পুনরায় আস্থায় আসবে না আমি ব্যাক্তিগতভাবে আচায্যম্বিত হলাম,এতকাল শুনে এলাম এবং কি অভিজ্ঞতায় ও সঞ্চিত আছে--ছোট ছোট দল বড় দলকে অনুস্মরন করে।আমাদের সমাজেও দেখা যায় এবং কি তা নিয়ম ও বটে-- গ্রামের শিক্ষিত ভদ্র মানুষটিকে সবাই অনুসরন করে।রাজনীতির ক্ষেত্রেও বড় দল, আদর্শবান দলকে, ছোট দল গুলী বক্তৃতা বিবৃতিতে অনুসরন করে বা জোট বদ্ধ থেকে অস্থিত্ব টিকিয়ে রাখার চেষ্টায় ব্রতি হয়।বি,এন,পি দলটির এতই নৈতিক অবক্ষয় হয়েছে যে, জাতীয় পার্টির মত স্বৈরাচারী দল এবং এরশাদের মত পতিত সরকার প্রধানের বক্তৃতাকে ও এখন অনুসরন করা শুরু করতে হয়েছে বা হচ্ছে।কুমিল্লায় এরশাদ কি বলেছেন তা জনাব রিপন,-- সরকারকে উপলব্দি করার জন্য বলেছেন।খালেদা জিয়ার কথার প্রতিধ্বনী না করে এরশাদের বক্তৃতার প্রতিধ্বনি বি,এন,,পি দলের ক্ষয়িঞ্চুতার প্রকৃষ্ট প্রমান বলে আমি মনে করি। আমেরীকার প্রেসিডেন্ট জনাব ওবামা আফিকায় তাঁর নীজ বাড়িতে নৈশভোজের বক্তৃতায় দেশরত্ম শেখ হাসিনার ভুয়সি প্রসংশা করে যে বক্তৃতা দিয়েছেন অদ্যাবদি আওয়ামী লীগের কোন নেতা বা মন্ত্রী ও তা কোড করে কোন মন্তব্য করেনি বা বক্তৃতা বিবৃতিতেও প্রকাশ করেনি।প্রত্যহ কোন না কোন দেশ বা বিশ্ব সংস্থা বাংলাদেশ অথবা তাঁর নেতা শেখ হাসিনাকে উপলক্ষ করে বক্তৃতা বিবৃতি দিচ্ছেনা এমনতর সময় বা দিন নেই।সব কিছু কোড করে দেশের মানুষকে জানাতে গেলে শুনতে শুনতে মানুষের বিরক্তিই এসে যাবে,হীতে বিপরীত হওয়ার আশংকাই বেড়ে যাবে।বা আলাদা একটা মিডিয়ার জম্ম দিতে হবে।সাধারন স্বৈরাচার কি বলে তা কোড করতে হবে বি,এন,পির মত বৃহত একটি দলকে?? আমাদের গনতন্ত্রের জন্য,একাধিক বিরুদীদল থাকা একান্ত কাম্য।জনগনের প্রত্যাশাও তাই।দুর্ভাগ্য আমাদের তা থেকেও নেই।সর্বদলীয় সরকারে যোগ দিয়ে, পছন্দমত মন্ত্রী নেয়ার মত প্রস্তাব গ্রহন করে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত, যে নেতা নিতে পারেনি,সেই নেতার দ্ধারা আর যাই হোক, বাংলা দেশের রাজনীতিতে বিরুদীদলের ভুমিকা পালন করা সম্ভব হবে না।তাই প্রয়োজন একটা নতুন ধারার রাজনীতির উত্থান।নতুন রাজনৈতিক ধারার উত্থান, এখন সময়ের দাবি।দেশের অভিজ্ঞ রাজনীতিবীদ,সুশীল সমাজ,রাজনৈতিক বিশ্লেষকগন এই দিকে নজর দেয়ার সময় এসে গেছে।বি,এন,পি ভুল করেছে কেন,এই সম্পর্কে বিস্তারীত আলোচনা সমালোচনা হয়েছে,অভিজ্ঞরা পরামর্শ ও লাগাতার দিয়ে যাচ্ছেন,খালেদাও আকারে ইঙ্গিতে বলার চেষ্টা করে যাচ্ছেন,তিনি পরামর্শ গ্রহন করছেন এবং সেইমত ঔষদপথ্য করার উদাহরন ও রেখেছেন।দেশের চলমান সবচেয়ে জনগন সম্পৃত্ত ইস্যু তৈল গ্যাসের দাম বৃদ্ধি সক্রান্ত বিষয়ে কর্মসুচি নিয়ে মাঠে নেমেছেন।কিন্তু জনগনের সাড়া না পেয়ে হতাশ।যে কাজটি আগে করার সেই কাজটি পরে,পরের কাজটি আগে করতে গেলে যা হয় তাহাই হল।দলকে না গুচিয়ে,নেতৃত্ব বদল না করে মাঠে নামার ফল যা হওয়ার তাই হয়েছে।নেতারা নেই কর্মিও নেই।এ অবস্থায় বিরুদীদল হীন ভাবে সরকার চলতে পারেনা,চলা উচিৎ ও নয়। টেলিভিশনের পর্দায় অনেকে নীতিবাক্য আওড়াতে দেখি।এমনভাব প্রদর্শন করেন,যেন তিনি ছাড়া আর কেউ কিছুই বুঝেনা,তাঁদের নিকট বিনীত অনুরুদ,দেশের বিরুদীদলহীন এই সংকট মহুর্তে দেশ আপনাকেই খুজছে,দল বানিয়ে রাজপথে নেমে পড়ুন,লক্ষ লক্ষ জনতা আপনার পেছনে সারীবদ্ধভাভাবে দাঁড়ানোর অপেক্ষায় আছে।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন