বেগম জিয়ার দেশের সভায় যেমন হৈ চৈ,বিদেশের সভায় তেমনি ;পতনের লক্ষন স্পষ্ট।

 ব্যাক্তি, পরিবার,সমাজ,দল,রাষ্ট্র সব কিছুর বেলায় উত্থান পতন আছে থাকবে।এই সমস্ত সব কিছুওই সৃষ্টির অমোঘ বিধান।জর্মিলে মৃত্যু অনিবায্য।পৃথিবীর যাহা কিছু সৃষ্টি আছে সব কিছুর ধ্বংশ অনিবায্য।অল্প বয়সে মারা গেলে কোন লোক আপসোস একটু বেশী হয়,হওয়াটা স্বাভাবিক।কারন লোকটা কিছু দেখার আগে বা দেখার বয়স হওয়ার সাথে সাথে মারা গেল।পাড়া প্রতিবেশি মা বাবা সবাই ভুলতে পারেন না অনেক দিন পয্যন্ত।আবার কোন খারাপ মানুষ অর্থাৎ কোন সন্ত্রাসি যদি কম বয়সেও মারা যায়, সমাজের অধিকাংশ মানুষ খুশি হয়।অনেকে চিন্তা করেন সমাজের একটা বোঝা পার হল।সমাজ সেবক সে যে বয়সের হোক মারা গেলে, সমাজ তাঁর জন্য কাঁদে।
  ভারত বর্ষে অনেক রাজনৈতিক দলের জর্ম্ম হয়েছে।অনেক রাজনৈতিক দল বর্তমানে সাইনবোর্ড সর্বস্ব দলে রুপান্তরীত হয়ে মমূর্ষ অবস্থায় নামে মাত্র টিকে আছে।সত্যিকারের জনকল্যানে যে সমস্ত দল কাজ করে তাঁদের মৃত্যু হয়ে হয়েও আবার জনগনের মাঝে ফিরে এসেছে।
   বি,এন,পির জর্ম্মের ইতিহাস বাংলাদেশের সব মানুষের কম বেশি জানা আছে।এই দলটি প্রথম থেকেই মিথ্যের উপর ভর করে দলের বিকাশ ঘটিয়েছিল।একশ্রেনীর সুবিধাবাদি নেতার মিলনস্থল ছিল দলটি।যারা মনে প্রানে বাংলাদেশের স্বাধিনতাকে মেনে নিতে পারেননি,স্বাধিনতা যুদ্ধের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিরোধিতা করেছিলেন তাঁরাই এই দল গঠন প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিলেন জোরালো ভাবেই।দল প্রতিষ্ঠা করার পর যতনা সমাজ বা রাষ্ট্রের উন্নয়নকাজ তঁার চেয়ে বেশি ছিল আওয়ামী লীগের এবং তাঁর প্রতিষ্ঠাতা জাতির জনকের এবং তাঁর পরিবারের চৌদ্দগোষ্টি উদ্ধার।

  সদ্য ক্ষমতাচ্যুত দল বিদায় দিকবিদিক চিন্তা ভাবনা না করে সাধারন মানুষ ও বেশ ভাল ভাবেই তাঁদের বানোয়াট কাহিনী বিশ্বাস করেছিল।দলটির প্রতিষ্ঠাতা মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় বাড়তি সুবিদা যা ছিল সবটাই কাজে লাগিয়ে দুদন্ড প্রতাপে বেশ কিছু বছর দেশ শাষন করার সুযোগ ও পেয়েছিল।অবশ্য দেশ শাষনের এই সুযোগ নিতে পারতোনা যদিনা পাকিস্তানের আদলে মার্শাল 'ল জারী করে জনগনকে খাঁচায় বন্ধি করার ব্যবস্থা প্রথম থেকেই না করতেন।
  উত্থান যেমনি পতন তেমনি।মিথ্যার বেসাতি যখন জনগন সম্যক ভাবে অবগত হওয়া শুরু করেছেন তখন থেকেই দলটির পতন শুরু হয়েছে বলা যায়।ব্যাক্তি বা পরিবারারের পতনের সময় যেমন কেউ কারো কথা শুনে না,ভাল কাজেও বাঁধা আসে বারংবার, তেমনি বি,এন,পির ও তদ্রুপ অবস্থা  বিরাজমান। পতনের সব লক্ষন ধীরে ধীরে পরিস্পুটিত হওয়া শুরু হয়েছে।
  গত ২৪তারিখে বৃটেনে ঈদ উৎযাপিত হয়েছে।সংগত ভাবে বি,এন,পির শীর্ষ নেতা বৃটেন অবস্থান করায় ইদের দিন বাঙালী কমিউনিটিতে দেখা সাক্ষাৎ করবেন।তাছাড়া ভবিষ্যত বি,এন,পির কর্নধার ও দীর্ঘ বছর বৃটেন পালিয়ে আছেন,মায়ের সাথে থেকে একটা জনসমাবেশে মিলিত হয়ে বক্তব্য দিতে পারবেন এই আশা করাটা অন্যায় নয়।এমনিতে ভাইসচেয়ারম্যান সাহেবের উপর নিষেদাজ্ঞা আছে বৃটিশ সরকারের, ঐ দেশে তাঁর বক্তৃতা বিবৃতির উপর। তা কেন হল অবশ্য বাংলাদেশের মানুষ জানে না।যেই কারনেই হোক এতে বাংলা দেশের ভাবমুর্তি উজ্জ্বল হয়নি বরঞ্চ ক্ষতিগ্রস্তই হয়েছে ধারুন ভাবে। বিশ্বের বহু রাষ্ট্র নায়কের ছেলে মেয়েরা বৃটেন বাস করে,কেউ সেখানে লেখাপড়া করার জন্য কেউবা ব্যবসাপাতি করার জন্য।আমাদের দেশের সাবেক প্রধান মন্ত্রীর ছেলে প্রথমে চিকিৎসার জন্য গেলেও প্রায় ৬/৭বছরেও উনার চিকিৎসা শেষ হয়নি।একবার শুনা গিয়েছিল, তিনি আসবেন বীরের বেশে।জানিনা কোথায় যুদ্ধে জয় করে বীর হয়ে দেশে আসবেন বলছিলেন।ইদানিং শুনা যায় না সুন্দর শ্লোগানটি।যাক সেই সব কথা।যে কথাটি বলার জন্য এই নিবন্ধের অবতারনা সেই প্রসঙ্গেই আসি।
   শুভেচ্ছা বিনিময়ের অনুষ্ঠান হলেও এর গুরুত্ব নানাবিধ কারনে জনমনে প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছিল।ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য লন্ডনের বার্কিং এর একটি হলে সমাবেশের আয়োজন করেছিলো। আয়োজনকারীরা ছিলেন বিএনপির বর্তমান কমিটি এবং তত্বাবধানে ছিলেন তারেক রহমান। এরকম ভাবেই লন্ডনের কমিউনিটিতে ধারণা বিএনপির পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছিলো এবং দাওয়াত যখন দেয়া হয়েছিলো তখন বেছে বেছে দেয়া হয়েছিলো। এই দাওয়াতে আমন্ত্রিত হয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন ব্রিটেনের বিভিন্ন পেশায় কর্মরত- যারা মূলধারার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও পেশা তথা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, সলিসিটর, ব্যারিস্টার, কাউন্সিলর, ব্যবসায়ী ও সমাজসেবী অনেকেই। ছিলেন বাংলা মিডিয়ার সাংবাদিক এবং বিএনপি দলীয় নেতা কর্মীরা।ছিলো নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত একটি পেশাজীবী বেসরকারি সিকিউরিটির লোকজন।
এত কিছুর পর ও এমন একটি সভায় বিশৃংখলা হবে তাও কি ভাবা যায়।সব চেয়ে বড় কথাটি হচ্ছে তারেক জিয়া বার বার চেষ্টা করেও নাকি উশৃংখল নেতাকর্মিদের নিবৃত্ত করতে পারেননি।খালেদা যখন থামতে বলছিলেন তখনও হাত্তালি পড়ছিল জোরসেই।এত বেশি উশৃংখল আচরন হচ্ছিল মঞ্চে উপ্র বেগম জিয়ার গায়ের উপর পড়ে যাচ্ছিল হুমড়ি খেয়ে।পত্রিকায় এভাবেই এসেছে ঘটনাটি--
দেশের এবং লন্ডনের এই দুই জল্পনা ও আশার মধ্যে গুড়েবালি ঢেলে দেয় বিএনপির দলীয় নেতা কর্মীদের উচ্ছৃংখল আচরণ- এমনকি দলীয় ভাইস চেয়ারম্যান বার বার বলার পরেও বিএনপি নেতা কর্মীদের উচ্ছৃঙ্খল আচরন কিছুতেই বন্ধ হচ্ছিলোনা। এমনি অবস্থায় দলীয় চেয়ারপার্সনকে ধাক্কা-ঠেলা এমনকি মঞ্চে পড়ে যাওয়ার মতো অবস্থায়ও দলটির নেতা কর্মীদের মধ্যে সামান্যতম শৃঙ্খলা ও শালীনতার উদ্রেক না হওয়ায়- সভায় আগত অতিথি সকলেই বিস্মিত ও হতবাক হয়ে যান। দলীয় নেতা কর্মীদের উচ্ছৃঙ্খল আর হৈ চৈ এমনকি সিকিউরিটি বেষ্টনি বেধ করে মঞ্চে উঠে হৈ হুল্লুড আর খেলার মাঠের মতো নোংরামি আচরন- হতবাক হয়ে বেগম জিয়া যখন বলেন, এখানে দেখছি দেশের মতো অবস্থা- তখনো দলটির নেতা কর্মীরা হাততালি দিতে থাকেন, যা দৃষ্ঠি কঠুই শুধু লাগেনি, বিবেক বোধ শক্তি হারিয়ে তারা ছবি তোলার জন্য হয়ে পরেন বেপরোয়া। এমনি অবস্থায় বেগম জিয়াকে বক্তৃতা বন্ধ করে দিতে হয়। হলে তখন চলছিলো হুড় মুড়িয়ে মঞ্চে উঠার উম্মত্ত প্রতিযোগিতা।
এখানে যারা ছিলেন, যারা উচ্ছৃঙ্খল আচরন করেছিলেন, হৈ চৈ করেছিলেন, নেত্রীকে ধাক্কা ধাক্কি দিয়েছিলেন- এরা সবাই বিএনপির নেতা কর্মী, অন্য কেউ নয়।এদের এই উচ্ছৃংখলতা নতুন নয় । তারেক রহমান যখন লন্ডনে প্রথম অনুষ্ঠান করেন পামট্রিতে- সেখানেও ছিলেন বিএনপির নেতা কর্মী। এর পরেও তারেক রহমান লন্ডনে আরো পাচটি অনুষ্ঠান করেছেন। মোট এই ছয়টি অনুষ্ঠান। প্রত্যেকটি অনুষ্ঠানে বিএনপি দলীয় নেতা কর্মীরা হৈ চৈ আর উচ্ছৃংখল আচরন করেছেন। একটি অনুষ্ঠানও তারেক রহমান তার টিম দিয়ে পরিপূর্ণ শৃংখলার সাথে করতে সক্ষম হননি। সর্বশেষ বেগম জিয়ার উপস্থিতিতে এমন ন্যাক্কারজনক ভাবে অনুষ্ঠান উপহার দিলেন- যখন প্রয়োজন ছিলো জনগনের নির্দেশনা পাওয়ার।
প্রশ্ন হলো- এরকম উচ্ছৃঙ্খল আচরন করার জন্য অনুষ্ঠান কেন ?
ঈদ শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানে যে সব ব্রিটেন প্রবাসী পেশাজীবী ছিলেন তারা কেউই এরকম ছবি তোলার জন্য কিংবা বেগম জিয়ার পাশে দাড়ানোর জন্য ক্যামেরার পোজ বা মঞ্চে উঠার জন্য ধাক্কা ধাক্কি হৈ চৈ করেননি।
 আমি এখানে বলতে চাই যে কথাটি বাংলা দেশের যেখানেই খালেদা জিয়া দলীয় সভা করতে গিয়েছেন সেখানেই এই রুপ ঘটনার অবতারন হয়েছে।বরাবরই পরের দিন বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে সরকারি দলের এজেন্ট ঢুকে পড়েছে দলের মধ্যে,তাঁরাই গন্ডগোল পাকিয়েছে।লন্ডনের সভায় মনের অজান্তে খালেদা স্বীকার করে বললেন "দেশে যে অবস্থা এখানে ও দেখছি সেই অবস্থা"।
তবে কি বি,এন,পি  এতদিন মিথ্যে বিবৃতি দিয়ে এসেছিল?যার যেভাবে উৎপত্তি তাঁর সেভাবেই বিনাশ ঘটে, বহুল প্রচারীত প্রবাদটি যে এমনিতে আমাদের পন্ডিত গন বলেন নাই তাই প্রমানিত হচ্ছে বি,এন,পির ক্ষেত্রে।
" পতনের সময় কেউ কারো কথা শুনে না।"
  আমরা লক্ষ করেছি ঐ সভায় একজন মন্ত্রী নাকি খালেদা জিয়াকে রিসিভ করবেন।একান্ত মিথ্যের বেসাতি।আন্দোলন চলাকালিন সময় ও বিদেশি এম,পি মন্ত্রীদের সাক্ষর জাল করে বিবৃতি প্রকাশ করে দলটি।পরবর্তিতে ঘটনা ফাঁস হয়ে গেলে কয়েক সদস্যকে বহিস্কার করে ভাবমুর্তি রক্ষার বৃথা চেষ্টা করেছিল দলটি।এখানেও সেই মিথ্যারই আশ্রয় নিয়ে বলা হল মন্ত্রী বেগম জিয়াকে বরন করবেন।কিন্তু কোন মন্ত্রীতো দুরের কথা, সেই দেশের বিরুদি দলের ও কোন এম,পি কে সেখানে উপস্থিত দেখা যায়নি।
  পতনের প্রাক্কালে উত্থানের মতই মিথ্যের চড়াচড়ি লক্ষনীয় ভাবেই ফুটে উঠেছে।তবে সবচেয়ে আপসোসের ব্যাপারটি হচ্ছে, অল্প বয়সে দলটি মারা যাচ্ছে।উত্থান পর্ব কেলেংকারীতে প্রিপুর্ন বিদায় তেমন আপসোস দেশে তো হচ্ছেই না,এখন দেখি বিদেশেও হচ্ছেনা।আর বড় আপসোস হচ্ছে বিকল্প শক্তির আত্মপ্রকাশের আগেই দলটির মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে যাচ্ছে।বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য ভাল ফল বয়ে আনবে না এই মৃত্যুতে।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন