বাংলাদেশের "৭২ইং সালে প্রনীত সংবিধান বিশ্বের যে কোন গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সংবিধান থেকে উন্নত লিখিত একটি সংবিধান।তার পর স্বাধীনতার "৪৫বছর পর ও দক্ষ সুসংগঠিত,গনতান্ত্রিক চর্চায় অভ্যস্থ কোন্ন রাজনৈতিক দল বা সংগঠন অদ্যাবদি গড়ে উঠেনি।দক্ষ রাজনীতিবিদ নেই এই কথা বলা ঠিক হবে না।অসংখ্য রাজনীতিবিদ থাকা সত্বেও দল গড়ে উঠেনি বলাই শ্রেয় মনে করি।৬৯ এর গন আন্দোলনের পর তৎকালীন পুর্ব পাকিস্তানে বর্তমানের আওয়ামী লীগ একক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার পর অপরাপর দল গুলী অস্তিত্ব সংকটে পড়ে।অস্তিত্ব সংকটে পড়ার নমুনা ধরা পড়ে ৭০এর নির্বাচনের পর।সেই যে দু:খ্য লাগানিয়া বাংলাদেশের শুরু আজও তাঁর কপালে সুখের দেখা মেলেনি।
একহাতে যেমন তালি বাজেন,এক পরিবারে সমাজ হয় না,একক প্রার্থীর নির্বাচনের প্রয়োজন হয় না,তেমনি এক দলে গনতন্ত্রের চর্চাও হয়না।বি,এন,পি সেনা চাউনি থেকে জর্ম নেয়ার পর,দলটিকে উর্দি পরা থেকে সিভিলে নিয়ে আসতে আওয়ামী লীগকে কম মুল্য দিতে হয়নি।৭২থেকে ৭৫ এ যা কিছু ঘটেছিল,সব কিছুওর মুলেই কায্যকর,জনসমর্থিত,গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক বিপক্ষ শক্তির অনুপস্থিতির কারনেই ঘটেছিল।রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক বিপক্ষশক্তিশালী বিরোধি দল না থাকলে কি হয় ভালই শিক্ষা গ্রহন করেছিল।শিক্ষা নিয়েছিল বলেই বি,এন,পির মত স্বৈরাচারী দল কে সিভিল সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য মুল্য দিয়ে, রাজপথে তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে মিনিমাম পশ্চিমা ভোটের গনতন্ত্রের রাস্তায় নিয়ে আসতে সক্ষম হয়।দেশের সব শ্রেনী পেশার মানুষ আশা করেছিল সমশক্তি সম্পন্ন দুটি দল বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।বিশ্ব নেতৃবৃন্দ সমভাবেই দুই দলকে বিবেচনা করায় অভ্যস্থ্য হয়ে গিয়েছিল।যদিও তৃতীয় শক্তির একান্ত প্রয়োজন ছিল তা আর হয়ে উঠেনি।তৃতীয় শক্তির উত্থানের জন্য চেষ্টা কম হয়েছেতা বলা যাবে না।জাতীয় ও আন্তজাতিক ভাবে বহু চেষ্টার পর ও তা সম্ভব হয়নি বলা যায়।আন্তজাতিক শক্তি সমুহ অরাজনৈতিক ব্যাক্তির হাতে রাজনীতির তৃতীয় শক্তির চাবি দেয়ার কৌশলের কারনে ব্যর্থ হয়েছে বলাই উত্তম হবে আমি মনে করি।বাংলাদেশের মানুষ যদিও ধর্মাগ্ধ নয়--তথাপি অধর্মকেও প্রশ্রয় দিতে আগ্রহী নয়, এই ক্ষেত্রেও তাই প্রমান হল।ইসলাম সুদ দেয়া নেয়া এবং তাঁর সাক্ষী সবার জন্য পরকালে শাস্তির ব্যাবস্থা রেখেছেন,বিদেশি শক্তি সমুহ একজন স্বিকৃত সুধখোর ড: ইউনুস কে তৃতীয় শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে চরম ভাবে ব্যর্থ হলেন।বাংলাদেশের মানুষ তাঁকে প্রথম উত্থাপনেই প্রত্যাক্ষান করে বসে।তাঁর পরবর্তিতে দেশবাসি এবং বিশ্ব বাসি প্রথমসারি বা দ্বিতীয়সারি যে কোন অবস্থানে হোক্না কেন যে রাজনৈতিক দলকে চিন্তা করেছিল সেই দলটিও রাজনৈতিক ভুলের কারনে ইতিমধ্যেই অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে বলে দেশবাসি যেমন মনে করে তেমনি বিশ্ববাসীও মনে করে।দলটির প্রধান নেতার স্বামীর প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলকে স্বামী প্রদত্ত সম্পদ বিবেচনায়,তাঁর পরিবার রক্ষার কাজে ব্যাবহার করতে গিয়ে এই অস্তিত্বের সংকটে ফেলেছেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষক গন মনে করেন।তাছাড়াও দেশে বিদেশে জনমত গড়ে উঠা মানবতা বিরুধিদের বিচারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তাঁদের স্বার্থ রক্ষা করার চেষ্টা অব্যাহত রাখাও জনগন ভাল ভাবে নেয়নি।ফলে দিনে দিনে দলটি গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক কর্মসুচিতে সন্ত্রাসের আমদানী করে সাময়িক ভাবে জেতার চেষ্টা করেও হীতে বিপরীত হলে, রাজনৈতিক ময়দান থেকেই বিদায় নেয়।
দেশ আবার স্বাধীনতার ৪৫বছর পর এসে ৭২--৭৫এর মতই গভীর সংকটে নিপতিত হচ্ছে বলে অনুমেয়।শক্তিশালী,জনসমর্থিত,রাজনৈতিক আদর্শ সম্বলীত রাজনৈতিক দলের অনুপস্থিতিতে দেশে যে সমস্ত অশুভ শক্তির উদয় হয় বর্তমানেও তাঁর লক্ষন সুস্পষ্ট ভাবে লক্ষনীয়। বাংলাদেশের প্রসাশন,রাজনীতি,সমাজিকতা,সর্বপুরী রাষ্ট্র পরিচালনায় ইতিমধ্যে প্রস্ফটিত হওয়া শুরু হয়েছে।আজকের প্রথম আলো পত্রিকায় দৈনীক গার্ডিয়ান পত্রিকার একটি প্রতিবেদন চাপিয়েছে।তাঁর আংশিক তুলে দিলাম-----
‘গার্ডিয়ান’ প্রতিবেদন বলছে, নিরাপত্তা বিশ্লেষক, গোয়েন্দা বিশেষজ্ঞ এবং ঢাকার সাবেক কর্মকর্তারা হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন যে, ‘বাংলাদেশ যেটি কিনা দারুণভাবে দরিদ্র, ১৬ কোটি মানুষ নিয়ে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ, সেটি ক্রমবর্ধমানভাবে ‘রাইপ ফর রেডিক্যালাইজেশন’। এ কথার সরল মানে কি এই যে, ‘বাংলাদেশ নতুন করে একটি উগ্রপন্থা উত্থানের দ্বারপ্রান্তে?’
এরপর তাঁরা যা বলেছেন, তা আরও চিন্তার বিষয়। বিএনপির হিংসাত্মক অবরোধ কর্মসূচি নেই, এমনকি তাদের বা মৌলবাদী জামায়াতে ইসলামীর তরফে অন্তত প্রকাশ্যে বড় ধরনের কোনো কর্মসূচির যেখানে আলামত নেই। যুদ্ধাপরাধের বিচারের পর জামায়াত বড় বেশি দুর্বল। বিএনপি একই কারণে ততটা না হলেও সন্দেহাতীতভাবে বিপর্যস্ত। তাদের মাজা ভেঙে গেছে। জাতীয় পার্টি সরকারের অংশ। সেখানে আমরা কোথায় নিরাপত্তা বোধ বেড়ে যাওয়ার মতো কথা শুনব, কিন্তু তা নয়। ‘গার্ডিয়ান’ বলছে, অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসী ঘটনা কমে গেছে সেটা ঠিক। কিন্তু তাতে নিরাপদ বোধ করার কারণ নেই। পত্রিকাটির মতে, জেএমবির সেলগুলো ক্রমশ সক্রিয় হতে শুরু করেছে। ‘গার্ডিয়ান’ বলেছে, ‘সুন্নি মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশ এমন একটি মৌলবাদী পুনরুজ্জীবনের পথে রয়েছে, যা পাকিস্তান ও মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশের মতো পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনীয়।’ এর আলোকে একটি প্রশ্ন কি এ রকমভাবে দাঁড় করানো চলে যে, বাংলাদেশ পাকিস্তান হওয়ার হুমকিতে আছে? এমন আশঙ্কার আদৌ কোনো ভিত্তি থাকলে আমাদের অর্জন কোথায়?
বৈশ্বিক জিহাদবাদ বা জঙ্গিবাদ কোনো একটি ভূখণ্ডের নিজস্ব সমস্যা হিসেবে চাপা থাকছে না। তবে এর মধ্যে যেসব রাষ্ট্র যত বেশি ভঙ্গুর ও নাজুক থাকবে, তার বিপদ তত বেশি। যেখানে গণতন্ত্র, সুশাসন ও আইনের শাসন যত বেশি কম বা শিথিল থাকবে, সেখানে ধর্মের নামে অধর্ম বা তার অপব্যবহার তত বেশি ঘটবে।
গার্ডিয়ান’কে শাহরিয়ার কবিরের মন্তব্য, ‘জামায়াত সব সন্ত্রাসের গডফাদার।’ তবে সমাজে সন্ত্রাসের আরও গডফাদার, আরও উদ্বেগজনক উৎস আছে।
‘গার্ডিয়ান’-এর দুই প্রতিবেদক সাইমন টিসডার ও অ্যানা রিদোত আরও মারাত্মক পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছেন, ‘ নাগরিক স্বাধীনতায় নেতিবাচক প্রভাব সত্ত্বেও ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ সরকারের কঠোর অবস্থানকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। কিন্তু ঢাকার ভেতরের খবর রাখেন এমন মহল বলছে, তাঁরা একটি বৃহৎ দৃশ্যপট খেয়াল করছেন না। রাডারের নিচে দেখা যাচ্ছে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ব্যাপকভিত্তিক রেডিকালাইজেশন প্রবণতা।’
এ থেকে উত্তরণের পথ কী? অধিকতর গণতন্ত্রচর্চা তো বটেই।
এই অধিকতর গনতন্ত্রের চর্চার জন্য অধিকতর গনতান্ত্রিক শক্তিশালী বিরুদি দলের প্রয়োজনীয়তা কি অস্বিকার করার উপায় আছে??সেই দলের রাজনৈতিক উপস্থিতি কি বাংলা দেশে বর্তমানে আছে??তৃতীয় কোন রাজনৈতিক শক্তির উত্থান কি গত ৪৫ বছরেও সম্ভব করতে পেরেছেন আমাদের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ??এই না এর পিছনেও কিন্তু কারন আছে।স্বৈরাচারী সেনা শাষক গন বার বার অভ্যুত্থান পালটা অভ্যুত্থান ঘটিয়ে তাঁদের ক্ষমতাকে পাকাপাকি করার নিমিত্তে যে নীতি বিবর্জিত অরাজনৈতিক কর্মকান্ড করেছেন,লোভ লালসা,প্রলোভন দিয়ে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের চরিত্র কিনেছেন,ভয়ভীতি দেখিয়ে দলে ভিড়িয়ে অবাধ লুটপাটের সুযোগ দিয়ে চরিত্র হনন করেছেন তাঁরই খেসারতে আমাদের জনগনের রক্তে গড়া রাজনীতিবিদেরা, জনগনের আস্থা হারিয়ে জনগন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারনে, তৃতীয় কোন রাজনৈতিক শক্তির উত্থান ঘটাতে পারেননি বলে আমি মনে করি।প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল ও ব্যাক্তিস্বার্থে রাজনৈতিক কর্মকান্ড করতে গিয়ে আজকে বিলীনের দ্বারপ্রান্তে এসে পড়েছে।আর তাই রাজনৈতিক শুর্নতার কারনে আজকে সমাজের মধ্যেও একধরনের বল প্রয়োগের আভাস দেখা যাচ্ছে।স্বেচ্ছাচারিতার লক্ষন ফুটে উঠেছে।৭২--৭৫ এর মতই গুজবের ডালপালা বিড় হয়ে দেখা দিচ্ছে সমাজে।জনগন আস্থা রাখতে পারছেনা প্রশাসনের উপর।পত্রিকায় এসেছে গুজুবকেই প্রাধান্য দিতে শুরু করেছে মানুষ ।তেমনি ঘটনার ফসল টাঙ্গাইলের ঘটে যাওয়া ঘটনাটি।সরকারি দলের ছোট ভাই এর কারনে তিনটি প্রান জড়ে গেছ্বে।এখানেও পুলিশ কর্মকতার সাথে সুসম্পর্কের গুজবের মধ্যে সত্যের সঙ্গে কল্পনার রং মিশল। গুজব হলো জনতার মিডিয়া, দুষ্কালে এটা মারাত্মক অস্থিতিশীলতার হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে। তারা জানতে পারল, ওই প্রতিহিংসাপরায়ণ স্বামীর বাড়িতে ভাড়া থাকা এক পুলিশ কর্মকর্তার প্রশ্রয়ও নাকি ছিল। এমন অভিযোগ মানুষকে পুলিশের প্রতিও ক্ষিপ্ত করে তুলল। এবং তারা নারী-পুরুষ, কিশোর-বৃদ্ধ মিলে শয়ে শয়ে থানা ঘেরাওয়ে রওনা হলো। থানার পুলিশ যথারীতি লাঠি ও টিয়ার গ্যাস চালাল। তাতেও কাজ না হলে পুলিশ তার বন্দুকের ব্যবহার করে বসল। রাস্তায় পড়ে থাকল তিনজনের লাশ, আহত হলো ৫০ জন।
রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করার পরও কেন থানা ঘেরাও করতে গেল জনতা, সেই প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমেই এই প্রশ্নের নির্ভরযোগ্য উত্তর পাওয়া সম্ভব। আমাদের অনুমান, রফিকুল ইসলাম প্রভাবশালী হওয়ায়, থানার কর্মকর্তার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা থাকায়, এলাকাবাসী থানার ওপর আস্থা রাখতে পারেনি। অহরহ এ রকম আস্থা ভঙ্গের অভিজ্ঞতা যাদের আছে, তারা সন্দিহান হবেই। যখন হাজার হাজার মানুষ শক্ত কোনো অবস্থান নেয়, তখন যাবতীয় কর্তৃপক্ষের উচিত ধৈর্য ধারণ করা, মানুষের কথা শোনা, আস্থা অর্জনের চেষ্টা করা, অন্যায়ের প্রতিবাদে তাদের ভরসা হওয়ার দরকার তখন। এ দায়িত্বটা প্রথমত, এলাকার রাজনৈতিক নেতাদের, বিশেষ করে সরকারি দলের নেতাদের, যেহেতু বিরোধী দল কার্যত বিলীন।
দ্বিতীয়ত, জেলার প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিদের। তৃতীয়ত, ঘটনার মধ্যে পড়া পুলিশ কর্মকর্তাদের। কিন্তু মিডিয়ার বিবরণ থেকে মনে হয়, কেউই আন্তরিক চেষ্টা করেনি। এলাকার সাবেক সাংসদ লতিফ সিদ্দিকী পদ হারিয়েছেন, এলাকায় যাওয়াতেও তাঁর ভয়। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাদেরও কি তেমনই জনবিচ্ছিন্ন অবস্থা?এখানেও যদি আজকে বিরুদি দলের বিবেকবান ব্যাক্তিত্বের উপস্থিতি থাকতো তাহলে কোন অবস্থায় এমনতর ঘটনা ঘটার সুযোগ হতনা বলে আমার বিশ্বাস।রাজনৈতিক ব্যাক্তি তাঁর রাজনৈতিক প্রভাব দিয়েই এই ঘটনার মিমাংসার চেষ্টা করতেন শালিসী বৈঠকের মাধ্যমে।জননন্দিত নেতার নেতৃত্বের বাহিরে জনগন যাওয়ার প্রশ্নই উঠতোনা।
শক্তিশালী,কায্যকর,জনসমর্থিত বিরুদি দলের অনুপস্থিতিতে সবচেয়ে ক্ষতিকর দিক হচ্ছে আমলাতন্ত্রের উত্থান ঘটা।৭২--৭৫ এর অভিজ্ঞতার আলোকে বলা যায়, রাজনৈতিক শুর্নতা পুরন করে আমলারা।এমনতর অবস্থায় জাতির জনকও সম্মুখিন হতে হয়েছিল।জাতির জনক তাঁর অনেক জনসমাবেসে বলতে শুনা গেছে,""আমার কৃষক দুর্নীতি করে না,আমার শ্রমিক,দুর্নীতি করেনা--দুর্নীতি করে শিক্ষিত লোকেরা,দুর্নীতি করে আমলারা।শিক্ষিত ভাইয়েরা, আপনারা কার টাকায় আজকে ইঞ্জিনিয়ার সাহেব হয়েছেন,কার টাকায় আজকে ডাকতার সাহেব হয়েছেন,আপনাদের কাছে আমার অনুরুধ রইলো আপ্নারা তাঁদের সাথে অন্তত ভাল ব্যাবহার করেন"".।বঙ্গবন্ধু বলেই অকপটে সত্য বলতে পেরেছিলেন প্রকাশ্য জনসমাবেশে।তাঁর পর তাদের ঠেকাতে পারেননি।আজকের দিনেও আমরা লক্ষ করছি সেই একই ধারায় আমলারা ফিরে এসেছে। বিগত কয়দিনের পত্রপত্রিকায় সেই ধরনের ইঙ্গিত লুর্ন খবরা খবর চাপানো হচ্ছে।সকারের সিদ্ধান্ত দিয়ে আবার পিছনে যাওয়াতেও আমলাদের দৌরাত্বের ইঙ্গিত বহন করে।
সম্প্রতি কিছু ঘটনার প্রেক্ষাপটে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে যে, ঘুণেধরা আমলাতন্ত্র এবং চরম উচ্চাভিলাষী আমলাদের নানা রকম কারসাজি সরকারের বিভিন্নমুখী সাফল্যকে কিছুটা মস্নান করে দিচ্ছে। এটা সরকারের নীতিনির্ধারকরা বুঝেও না বোঝার ভান করলেও জনগণ ঠিকমতো নিচ্ছে না। এই যে, সরকারের কিছু সিদ্ধান্ত জনগণ ঠিকমতো গ্রহণ করছে না, তার ফলশ্রুতি হচ্ছে সরকারের ওপর সাধারণ মানুষের ক্ষোভ বাড়তে পারে। আমলাদের কারণে সরকারের ওপর সাধারণ মানুষের ক্ষোভ কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
গণতান্ত্রিক এবং সংসদীয় পদ্ধতির সরকার ব্যবস্থায় রাষ্ট্র পরিচালনা করেন জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদ, সংসদ সদস্য এবং তাদের মাধ্যমে মনোনীত মন্ত্রীরা। সব গণতান্ত্রিক দেশে আমলারা কাজ করেন মন্ত্রীদের নির্দেশে। মন্ত্রিপরিষদ সভার নির্দেশ, পরামর্শ এবং সিদ্ধান্তের আলোকে মন্ত্রণালয়ের সব ধরনের কর্মকা- সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণের এখতিয়ার একমাত্র মন্ত্রীদের। এভাবেই চলছিলও। কিন্তু ইদানিং দেখা যাচ্ছে আমলারা অনেক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছেন মন্ত্রী এবং সরকারের ওপর। আমলারা সুকৌশলে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিলেও সেই সিদ্ধান্তের ফলে কোন বিরূপ পরিস্থিতির উদ্ভব হলে তার দায় কোন আমলাই গ্রহণ করেন না। তখন সব দায়-দায়িত্ব জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে সরকার এবং সরকারের নীতিনির্ধারকদের ওপর। কোন সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে সরকারকে পিছু হটে সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করতে এবং ভাবমূর্তি সংকটে পড়তে হয়।
এমনতর পরিস্থিতিতে দেশের বুদ্ধিজীবি,সাংবাদিক,রাজনীতিবিদ সকলের নতুন করে চিন্তা করার প্রয়োজন আছে।রাজনীতি শুন্য, বিরুদিদল শুন্য ভাবে দেশ চলতে পারেনা।পতিত,অধ:পতিত দিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব নয়।কোন কালে অধ:পতিত কোন পরিবার আবার ঘুরে দাঁড়াতে সহজে পারেনি,যুগের পর যুগ অপেক্ষার পর হয়তো কোন পরিবার পেরেছে,।রাষ্ট্রের ব্যাপারটি একই হলেও এক্ষেত্রে তদ্রুপ সময়ক্ষেপন সম্ভব নহে,বা রাজনীতি শুন্য থাকতে দেয়া উচিৎ নহে।বিকল্প রাজনৈতিক শক্তির উত্থান ঘটানো দেশের জন্য প্রয়োজন,সমাজের স্থীরতার জন্য প্রয়োজন,আগামী প্রজর্মের সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন পুরন করার জন্য প্রয়োজন।আর সেই বিকল্প শক্তি হতে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ,স্বাধীনতায় বিশ্বাসি,দেশপ্রেমিক,আদর্শবান জনপ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে।
অবশ্যই অচিরেই সেই শক্তির উত্থান জাতির কল্যানের ধারক বাহক আর্শিবাদ বয়ে আনবে।
জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু
জহতু দেশরত্ম শেখহাসিনা।
একহাতে যেমন তালি বাজেন,এক পরিবারে সমাজ হয় না,একক প্রার্থীর নির্বাচনের প্রয়োজন হয় না,তেমনি এক দলে গনতন্ত্রের চর্চাও হয়না।বি,এন,পি সেনা চাউনি থেকে জর্ম নেয়ার পর,দলটিকে উর্দি পরা থেকে সিভিলে নিয়ে আসতে আওয়ামী লীগকে কম মুল্য দিতে হয়নি।৭২থেকে ৭৫ এ যা কিছু ঘটেছিল,সব কিছুওর মুলেই কায্যকর,জনসমর্থিত,গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক বিপক্ষ শক্তির অনুপস্থিতির কারনেই ঘটেছিল।রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক বিপক্ষশক্তিশালী বিরোধি দল না থাকলে কি হয় ভালই শিক্ষা গ্রহন করেছিল।শিক্ষা নিয়েছিল বলেই বি,এন,পির মত স্বৈরাচারী দল কে সিভিল সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য মুল্য দিয়ে, রাজপথে তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে মিনিমাম পশ্চিমা ভোটের গনতন্ত্রের রাস্তায় নিয়ে আসতে সক্ষম হয়।দেশের সব শ্রেনী পেশার মানুষ আশা করেছিল সমশক্তি সম্পন্ন দুটি দল বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।বিশ্ব নেতৃবৃন্দ সমভাবেই দুই দলকে বিবেচনা করায় অভ্যস্থ্য হয়ে গিয়েছিল।যদিও তৃতীয় শক্তির একান্ত প্রয়োজন ছিল তা আর হয়ে উঠেনি।তৃতীয় শক্তির উত্থানের জন্য চেষ্টা কম হয়েছেতা বলা যাবে না।জাতীয় ও আন্তজাতিক ভাবে বহু চেষ্টার পর ও তা সম্ভব হয়নি বলা যায়।আন্তজাতিক শক্তি সমুহ অরাজনৈতিক ব্যাক্তির হাতে রাজনীতির তৃতীয় শক্তির চাবি দেয়ার কৌশলের কারনে ব্যর্থ হয়েছে বলাই উত্তম হবে আমি মনে করি।বাংলাদেশের মানুষ যদিও ধর্মাগ্ধ নয়--তথাপি অধর্মকেও প্রশ্রয় দিতে আগ্রহী নয়, এই ক্ষেত্রেও তাই প্রমান হল।ইসলাম সুদ দেয়া নেয়া এবং তাঁর সাক্ষী সবার জন্য পরকালে শাস্তির ব্যাবস্থা রেখেছেন,বিদেশি শক্তি সমুহ একজন স্বিকৃত সুধখোর ড: ইউনুস কে তৃতীয় শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে চরম ভাবে ব্যর্থ হলেন।বাংলাদেশের মানুষ তাঁকে প্রথম উত্থাপনেই প্রত্যাক্ষান করে বসে।তাঁর পরবর্তিতে দেশবাসি এবং বিশ্ব বাসি প্রথমসারি বা দ্বিতীয়সারি যে কোন অবস্থানে হোক্না কেন যে রাজনৈতিক দলকে চিন্তা করেছিল সেই দলটিও রাজনৈতিক ভুলের কারনে ইতিমধ্যেই অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে বলে দেশবাসি যেমন মনে করে তেমনি বিশ্ববাসীও মনে করে।দলটির প্রধান নেতার স্বামীর প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলকে স্বামী প্রদত্ত সম্পদ বিবেচনায়,তাঁর পরিবার রক্ষার কাজে ব্যাবহার করতে গিয়ে এই অস্তিত্বের সংকটে ফেলেছেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষক গন মনে করেন।তাছাড়াও দেশে বিদেশে জনমত গড়ে উঠা মানবতা বিরুধিদের বিচারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তাঁদের স্বার্থ রক্ষা করার চেষ্টা অব্যাহত রাখাও জনগন ভাল ভাবে নেয়নি।ফলে দিনে দিনে দলটি গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক কর্মসুচিতে সন্ত্রাসের আমদানী করে সাময়িক ভাবে জেতার চেষ্টা করেও হীতে বিপরীত হলে, রাজনৈতিক ময়দান থেকেই বিদায় নেয়।
দেশ আবার স্বাধীনতার ৪৫বছর পর এসে ৭২--৭৫এর মতই গভীর সংকটে নিপতিত হচ্ছে বলে অনুমেয়।শক্তিশালী,জনসমর্থিত,রাজনৈতিক আদর্শ সম্বলীত রাজনৈতিক দলের অনুপস্থিতিতে দেশে যে সমস্ত অশুভ শক্তির উদয় হয় বর্তমানেও তাঁর লক্ষন সুস্পষ্ট ভাবে লক্ষনীয়। বাংলাদেশের প্রসাশন,রাজনীতি,সমাজিকতা,সর্বপুরী রাষ্ট্র পরিচালনায় ইতিমধ্যে প্রস্ফটিত হওয়া শুরু হয়েছে।আজকের প্রথম আলো পত্রিকায় দৈনীক গার্ডিয়ান পত্রিকার একটি প্রতিবেদন চাপিয়েছে।তাঁর আংশিক তুলে দিলাম-----
‘গার্ডিয়ান’ প্রতিবেদন বলছে, নিরাপত্তা বিশ্লেষক, গোয়েন্দা বিশেষজ্ঞ এবং ঢাকার সাবেক কর্মকর্তারা হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন যে, ‘বাংলাদেশ যেটি কিনা দারুণভাবে দরিদ্র, ১৬ কোটি মানুষ নিয়ে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ, সেটি ক্রমবর্ধমানভাবে ‘রাইপ ফর রেডিক্যালাইজেশন’। এ কথার সরল মানে কি এই যে, ‘বাংলাদেশ নতুন করে একটি উগ্রপন্থা উত্থানের দ্বারপ্রান্তে?’
এরপর তাঁরা যা বলেছেন, তা আরও চিন্তার বিষয়। বিএনপির হিংসাত্মক অবরোধ কর্মসূচি নেই, এমনকি তাদের বা মৌলবাদী জামায়াতে ইসলামীর তরফে অন্তত প্রকাশ্যে বড় ধরনের কোনো কর্মসূচির যেখানে আলামত নেই। যুদ্ধাপরাধের বিচারের পর জামায়াত বড় বেশি দুর্বল। বিএনপি একই কারণে ততটা না হলেও সন্দেহাতীতভাবে বিপর্যস্ত। তাদের মাজা ভেঙে গেছে। জাতীয় পার্টি সরকারের অংশ। সেখানে আমরা কোথায় নিরাপত্তা বোধ বেড়ে যাওয়ার মতো কথা শুনব, কিন্তু তা নয়। ‘গার্ডিয়ান’ বলছে, অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসী ঘটনা কমে গেছে সেটা ঠিক। কিন্তু তাতে নিরাপদ বোধ করার কারণ নেই। পত্রিকাটির মতে, জেএমবির সেলগুলো ক্রমশ সক্রিয় হতে শুরু করেছে। ‘গার্ডিয়ান’ বলেছে, ‘সুন্নি মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশ এমন একটি মৌলবাদী পুনরুজ্জীবনের পথে রয়েছে, যা পাকিস্তান ও মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশের মতো পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনীয়।’ এর আলোকে একটি প্রশ্ন কি এ রকমভাবে দাঁড় করানো চলে যে, বাংলাদেশ পাকিস্তান হওয়ার হুমকিতে আছে? এমন আশঙ্কার আদৌ কোনো ভিত্তি থাকলে আমাদের অর্জন কোথায়?
বৈশ্বিক জিহাদবাদ বা জঙ্গিবাদ কোনো একটি ভূখণ্ডের নিজস্ব সমস্যা হিসেবে চাপা থাকছে না। তবে এর মধ্যে যেসব রাষ্ট্র যত বেশি ভঙ্গুর ও নাজুক থাকবে, তার বিপদ তত বেশি। যেখানে গণতন্ত্র, সুশাসন ও আইনের শাসন যত বেশি কম বা শিথিল থাকবে, সেখানে ধর্মের নামে অধর্ম বা তার অপব্যবহার তত বেশি ঘটবে।
গার্ডিয়ান’কে শাহরিয়ার কবিরের মন্তব্য, ‘জামায়াত সব সন্ত্রাসের গডফাদার।’ তবে সমাজে সন্ত্রাসের আরও গডফাদার, আরও উদ্বেগজনক উৎস আছে।
‘গার্ডিয়ান’-এর দুই প্রতিবেদক সাইমন টিসডার ও অ্যানা রিদোত আরও মারাত্মক পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছেন, ‘ নাগরিক স্বাধীনতায় নেতিবাচক প্রভাব সত্ত্বেও ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ সরকারের কঠোর অবস্থানকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। কিন্তু ঢাকার ভেতরের খবর রাখেন এমন মহল বলছে, তাঁরা একটি বৃহৎ দৃশ্যপট খেয়াল করছেন না। রাডারের নিচে দেখা যাচ্ছে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ব্যাপকভিত্তিক রেডিকালাইজেশন প্রবণতা।’
এ থেকে উত্তরণের পথ কী? অধিকতর গণতন্ত্রচর্চা তো বটেই।
এই অধিকতর গনতন্ত্রের চর্চার জন্য অধিকতর গনতান্ত্রিক শক্তিশালী বিরুদি দলের প্রয়োজনীয়তা কি অস্বিকার করার উপায় আছে??সেই দলের রাজনৈতিক উপস্থিতি কি বাংলা দেশে বর্তমানে আছে??তৃতীয় কোন রাজনৈতিক শক্তির উত্থান কি গত ৪৫ বছরেও সম্ভব করতে পেরেছেন আমাদের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ??এই না এর পিছনেও কিন্তু কারন আছে।স্বৈরাচারী সেনা শাষক গন বার বার অভ্যুত্থান পালটা অভ্যুত্থান ঘটিয়ে তাঁদের ক্ষমতাকে পাকাপাকি করার নিমিত্তে যে নীতি বিবর্জিত অরাজনৈতিক কর্মকান্ড করেছেন,লোভ লালসা,প্রলোভন দিয়ে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের চরিত্র কিনেছেন,ভয়ভীতি দেখিয়ে দলে ভিড়িয়ে অবাধ লুটপাটের সুযোগ দিয়ে চরিত্র হনন করেছেন তাঁরই খেসারতে আমাদের জনগনের রক্তে গড়া রাজনীতিবিদেরা, জনগনের আস্থা হারিয়ে জনগন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারনে, তৃতীয় কোন রাজনৈতিক শক্তির উত্থান ঘটাতে পারেননি বলে আমি মনে করি।প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল ও ব্যাক্তিস্বার্থে রাজনৈতিক কর্মকান্ড করতে গিয়ে আজকে বিলীনের দ্বারপ্রান্তে এসে পড়েছে।আর তাই রাজনৈতিক শুর্নতার কারনে আজকে সমাজের মধ্যেও একধরনের বল প্রয়োগের আভাস দেখা যাচ্ছে।স্বেচ্ছাচারিতার লক্ষন ফুটে উঠেছে।৭২--৭৫ এর মতই গুজবের ডালপালা বিড় হয়ে দেখা দিচ্ছে সমাজে।জনগন আস্থা রাখতে পারছেনা প্রশাসনের উপর।পত্রিকায় এসেছে গুজুবকেই প্রাধান্য দিতে শুরু করেছে মানুষ ।তেমনি ঘটনার ফসল টাঙ্গাইলের ঘটে যাওয়া ঘটনাটি।সরকারি দলের ছোট ভাই এর কারনে তিনটি প্রান জড়ে গেছ্বে।এখানেও পুলিশ কর্মকতার সাথে সুসম্পর্কের গুজবের মধ্যে সত্যের সঙ্গে কল্পনার রং মিশল। গুজব হলো জনতার মিডিয়া, দুষ্কালে এটা মারাত্মক অস্থিতিশীলতার হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে। তারা জানতে পারল, ওই প্রতিহিংসাপরায়ণ স্বামীর বাড়িতে ভাড়া থাকা এক পুলিশ কর্মকর্তার প্রশ্রয়ও নাকি ছিল। এমন অভিযোগ মানুষকে পুলিশের প্রতিও ক্ষিপ্ত করে তুলল। এবং তারা নারী-পুরুষ, কিশোর-বৃদ্ধ মিলে শয়ে শয়ে থানা ঘেরাওয়ে রওনা হলো। থানার পুলিশ যথারীতি লাঠি ও টিয়ার গ্যাস চালাল। তাতেও কাজ না হলে পুলিশ তার বন্দুকের ব্যবহার করে বসল। রাস্তায় পড়ে থাকল তিনজনের লাশ, আহত হলো ৫০ জন।
রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করার পরও কেন থানা ঘেরাও করতে গেল জনতা, সেই প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমেই এই প্রশ্নের নির্ভরযোগ্য উত্তর পাওয়া সম্ভব। আমাদের অনুমান, রফিকুল ইসলাম প্রভাবশালী হওয়ায়, থানার কর্মকর্তার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা থাকায়, এলাকাবাসী থানার ওপর আস্থা রাখতে পারেনি। অহরহ এ রকম আস্থা ভঙ্গের অভিজ্ঞতা যাদের আছে, তারা সন্দিহান হবেই। যখন হাজার হাজার মানুষ শক্ত কোনো অবস্থান নেয়, তখন যাবতীয় কর্তৃপক্ষের উচিত ধৈর্য ধারণ করা, মানুষের কথা শোনা, আস্থা অর্জনের চেষ্টা করা, অন্যায়ের প্রতিবাদে তাদের ভরসা হওয়ার দরকার তখন। এ দায়িত্বটা প্রথমত, এলাকার রাজনৈতিক নেতাদের, বিশেষ করে সরকারি দলের নেতাদের, যেহেতু বিরোধী দল কার্যত বিলীন।
দ্বিতীয়ত, জেলার প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিদের। তৃতীয়ত, ঘটনার মধ্যে পড়া পুলিশ কর্মকর্তাদের। কিন্তু মিডিয়ার বিবরণ থেকে মনে হয়, কেউই আন্তরিক চেষ্টা করেনি। এলাকার সাবেক সাংসদ লতিফ সিদ্দিকী পদ হারিয়েছেন, এলাকায় যাওয়াতেও তাঁর ভয়। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাদেরও কি তেমনই জনবিচ্ছিন্ন অবস্থা?এখানেও যদি আজকে বিরুদি দলের বিবেকবান ব্যাক্তিত্বের উপস্থিতি থাকতো তাহলে কোন অবস্থায় এমনতর ঘটনা ঘটার সুযোগ হতনা বলে আমার বিশ্বাস।রাজনৈতিক ব্যাক্তি তাঁর রাজনৈতিক প্রভাব দিয়েই এই ঘটনার মিমাংসার চেষ্টা করতেন শালিসী বৈঠকের মাধ্যমে।জননন্দিত নেতার নেতৃত্বের বাহিরে জনগন যাওয়ার প্রশ্নই উঠতোনা।
শক্তিশালী,কায্যকর,জনসমর্থিত বিরুদি দলের অনুপস্থিতিতে সবচেয়ে ক্ষতিকর দিক হচ্ছে আমলাতন্ত্রের উত্থান ঘটা।৭২--৭৫ এর অভিজ্ঞতার আলোকে বলা যায়, রাজনৈতিক শুর্নতা পুরন করে আমলারা।এমনতর অবস্থায় জাতির জনকও সম্মুখিন হতে হয়েছিল।জাতির জনক তাঁর অনেক জনসমাবেসে বলতে শুনা গেছে,""আমার কৃষক দুর্নীতি করে না,আমার শ্রমিক,দুর্নীতি করেনা--দুর্নীতি করে শিক্ষিত লোকেরা,দুর্নীতি করে আমলারা।শিক্ষিত ভাইয়েরা, আপনারা কার টাকায় আজকে ইঞ্জিনিয়ার সাহেব হয়েছেন,কার টাকায় আজকে ডাকতার সাহেব হয়েছেন,আপনাদের কাছে আমার অনুরুধ রইলো আপ্নারা তাঁদের সাথে অন্তত ভাল ব্যাবহার করেন"".।বঙ্গবন্ধু বলেই অকপটে সত্য বলতে পেরেছিলেন প্রকাশ্য জনসমাবেশে।তাঁর পর তাদের ঠেকাতে পারেননি।আজকের দিনেও আমরা লক্ষ করছি সেই একই ধারায় আমলারা ফিরে এসেছে। বিগত কয়দিনের পত্রপত্রিকায় সেই ধরনের ইঙ্গিত লুর্ন খবরা খবর চাপানো হচ্ছে।সকারের সিদ্ধান্ত দিয়ে আবার পিছনে যাওয়াতেও আমলাদের দৌরাত্বের ইঙ্গিত বহন করে।
সম্প্রতি কিছু ঘটনার প্রেক্ষাপটে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে যে, ঘুণেধরা আমলাতন্ত্র এবং চরম উচ্চাভিলাষী আমলাদের নানা রকম কারসাজি সরকারের বিভিন্নমুখী সাফল্যকে কিছুটা মস্নান করে দিচ্ছে। এটা সরকারের নীতিনির্ধারকরা বুঝেও না বোঝার ভান করলেও জনগণ ঠিকমতো নিচ্ছে না। এই যে, সরকারের কিছু সিদ্ধান্ত জনগণ ঠিকমতো গ্রহণ করছে না, তার ফলশ্রুতি হচ্ছে সরকারের ওপর সাধারণ মানুষের ক্ষোভ বাড়তে পারে। আমলাদের কারণে সরকারের ওপর সাধারণ মানুষের ক্ষোভ কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
গণতান্ত্রিক এবং সংসদীয় পদ্ধতির সরকার ব্যবস্থায় রাষ্ট্র পরিচালনা করেন জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদ, সংসদ সদস্য এবং তাদের মাধ্যমে মনোনীত মন্ত্রীরা। সব গণতান্ত্রিক দেশে আমলারা কাজ করেন মন্ত্রীদের নির্দেশে। মন্ত্রিপরিষদ সভার নির্দেশ, পরামর্শ এবং সিদ্ধান্তের আলোকে মন্ত্রণালয়ের সব ধরনের কর্মকা- সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণের এখতিয়ার একমাত্র মন্ত্রীদের। এভাবেই চলছিলও। কিন্তু ইদানিং দেখা যাচ্ছে আমলারা অনেক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছেন মন্ত্রী এবং সরকারের ওপর। আমলারা সুকৌশলে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিলেও সেই সিদ্ধান্তের ফলে কোন বিরূপ পরিস্থিতির উদ্ভব হলে তার দায় কোন আমলাই গ্রহণ করেন না। তখন সব দায়-দায়িত্ব জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে সরকার এবং সরকারের নীতিনির্ধারকদের ওপর। কোন সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে সরকারকে পিছু হটে সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করতে এবং ভাবমূর্তি সংকটে পড়তে হয়।
এমনতর পরিস্থিতিতে দেশের বুদ্ধিজীবি,সাংবাদিক,রাজনীতিবিদ সকলের নতুন করে চিন্তা করার প্রয়োজন আছে।রাজনীতি শুন্য, বিরুদিদল শুন্য ভাবে দেশ চলতে পারেনা।পতিত,অধ:পতিত দিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব নয়।কোন কালে অধ:পতিত কোন পরিবার আবার ঘুরে দাঁড়াতে সহজে পারেনি,যুগের পর যুগ অপেক্ষার পর হয়তো কোন পরিবার পেরেছে,।রাষ্ট্রের ব্যাপারটি একই হলেও এক্ষেত্রে তদ্রুপ সময়ক্ষেপন সম্ভব নহে,বা রাজনীতি শুন্য থাকতে দেয়া উচিৎ নহে।বিকল্প রাজনৈতিক শক্তির উত্থান ঘটানো দেশের জন্য প্রয়োজন,সমাজের স্থীরতার জন্য প্রয়োজন,আগামী প্রজর্মের সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন পুরন করার জন্য প্রয়োজন।আর সেই বিকল্প শক্তি হতে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ,স্বাধীনতায় বিশ্বাসি,দেশপ্রেমিক,আদর্শবান জনপ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে।
অবশ্যই অচিরেই সেই শক্তির উত্থান জাতির কল্যানের ধারক বাহক আর্শিবাদ বয়ে আনবে।
জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু
জহতু দেশরত্ম শেখহাসিনা।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন