জাতির জনক ও দেশরত্মকে বাংলাদেশের গন্ডিতে আটকানো যাবে না।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে ৭৫ইং আমৃত্যু পয্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতারা স্রেফ জাতির জনক হিসেবে জানতো।কিন্তু তিনি কত বড় মাপের দার্শনিক,চিন্তাবীদ,রাষ্ট্র নায়ক,সমাজ সংস্কারক,ধর্ম সংস্কারক ছিলেন তা গুনাক্ষরেও আঁচ করতে পারেননি।যদি পারতেন তাহলে পালাকরে নেতাকর্মিরা বঙ্গবন্ধুকে পাহারা দিয়ে বাঁচিয়ে রাখতেন।বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যখন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র নায়কগন,দার্শনিক,চিন্তাবীদগন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে গভেষনা করা শুরু করেছেন,প্রত্যহ নতুন নতুন দিক উম্মোচিত করা শুরু করেন তখনি বোধদয় হয়,মুলত:দেশ কি হারিয়েছে,কাকে হারিয়েছে।দলের জন্য জাতির জনকের প্রয়োজনীয়তা কতটুকু ছিল।যখন জ্ঞানে এসেছে তখন বিবেক শুন্য হয়ে,ক্ষমতায় যাওয়ার বাহন হিসেবে জাতির জনককেই দলীয় গন্ডিতে আবদ্ধ করে পেলেছেন।একটা বিষয় শুধু চিন্তা করলে আমাদের বাঙ্গালী জাতির ভুল অনেকটাই কমে যেত।ভারতীয় উপমহাহাদেশে এবং কি পাকিস্তানেও বহু ভাষাবাসির জনগোষ্টি বিদ্যমান।৪৭/৪৮ইং থেকেই প্রায় জাতি গোষ্টি স্বাতন্ত্রতার জন্য লড়াই সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে।অদ্যাবদি কোন জাতি গোষ্টি কি সফলতার দ্বারপ্রান্তে যেতে পেরেছে?বাঙ্গালী জাতির মধ্যে এত বিবেদ থাকার পরও কোন যাদুর স্পর্ষে আজ থেকে ৪৫বছর আগে স্বাতন্ত্রতা শুধু নয়,স্বাধীনতাই পেয়ে গেছে?আওয়ামী লীগ যাকে শুধু বাংলাদেশের জাতির জনক,বাংলাদেশের রাষ্ট্র নায়ক ভেবেছে,বিশ্বের নির্যাতিত নীপিড়িত মুক্তিকামী জনগন তাঁকেই মুক্তির দিশারী,সংগ্রামের প্রেরনা হিসেবে স্বরন করে।বাঙালী ইচ্ছে করলেও বাংলাদেশের গন্ডিতে বঙ্গবন্ধুকে ধরে রাখতে পারবে না।যেমন পারেনি চিলির আলেন্দেকে,ভারতের মহত্মা গান্ধীকে,নেলসন ম্যান্ডেলাকে।
  তদ্রুপ দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে শুধু আওয়ামী লীগের নেত্রী বা বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী চিন্তা করেন যারা--তাঁরা বোকার স্ব্রর্গে বাস করেন।শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী যদি হতেন মাত্র ৬/৭বছরের মধ্যে কোন যাদুর বলে ভিক্ষুক জাতীকে মধ্যম আয়ের জাতিতে রুপান্তরীত করলেন।এত লুটপাট,এত অব্যবস্থাপনা,এত সহিংসতা,এত অবরোধ উপেক্ষা করে, কি করে দেশকে এত দূর নিয়ে গেলেন।বিনা ভোটে বা নামমাত্র ভোটে জীতে দেশে বিদেশে সমর্থনতো ধরে রেখেছেনই বরঞ্চ অনেক ক্ষেত্রে কয়েক গুন বাড়িয়ে নিয়েছেন।এটা আমার কথা নয়, জরীপের কথা।

""আরআইআর-এর জরিপের ফল এবং চলমান রাজনীতি।
বুধবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫,ভোরের কাগজ সহ দেশী বিদেশী প্রায় পত্রিকা""

"মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) পরিচালিত বাংলাদেশের রাজনীতি ও গণতন্ত্র বিষয়ের জরিপ প্রতিবেদন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে গত শুক্রবার ৪ সেপ্টেম্বর। ২০ মে থেকে ১০ জুনের মধ্যে ১৮ থেকে বেশি বয়সের গ্রাম ও শহরের ২ হাজার ৫৫০ জন নরনারী এই জরিপে অংশ নেয়। এর অর্ধেক ছিল নারী ও অর্ধেক পুরুষ। জরিপের বিষয় ছিল ৭টি এবং জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৭৪ শতাংশ গ্রাম আর ২৬ শতাংশ শহরে বসবাসকারী। যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি ২০০৮ সাল থেকে বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে জরিপ চালিয়ে আসছে।

জরিপের ফলাফলে বের হয়ে এসেছে যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ক্ষমতাসীন জোটের প্রধান দল আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা বেড়েছে এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, নিরাপত্তা পরিস্থিতি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো অবস্থা প্রভৃতি দিকগুলোতে মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস বেড়েছে। জরিপ থেকে দেখা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতি সমর্থন যথাক্রমে ৬৬ ও ৬৭ শতাংশ। দেশের সম্ভাবনার প্রতি ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়ে ৬২ শতাংশ মনে করছেন, দেশ সঠিক পথেই এগোচ্ছে। এ ছাড়া ৭২ শতাংশ মনে করেন, সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ইতিবাচক, ৬৮ শতাংশের মতে নিরাপত্তা পরিস্থিতি ভালো এবং ৬৪ শতাংশ মনে করেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রয়েছে। সেনাবাহিনী, র্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন র্যাব আদালত, নির্বাচন কমিশন, গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের কাজের প্রতি যথাক্রমে ৮৬, ৭৬, ৭৩, ৫৯, ৮৩ ও ৮০ শতাংশ উত্তরদাতা ইতিবাচক সমর্থন দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের প্রতি সমর্থন ও বিরোধিতার হার ৬০ ও ২৯ শতাংশ। বিএনপির প্রতি এই হার যথাক্রমে ৪২ ও ৪৬ শতাংশ।
প্রসঙ্গত উল্লিখিত সব ক্ষেত্রে সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা এবং বিরোধী দলের প্রতি অনাস্থার দিকটা বুঝে নিতে সম্পূর্ণভাবে জরিপের ওপর নির্ভরশীল হওয়ার প্রয়োজন নেই। মানুষ সমাজে থাকে, চলে, ফিরে, কাজকর্ম করে। এসবের ভেতর দিয়ে রাজনৈতিক মতামতও আদান-প্রদান করে। তাই সাধারণ মানুষ জরিপ না হলেও সব কিছু অনুধাবনে নিতে পারে। প্রবাদ এ জন্যই বলে, মার কাছে মাসির গল্প বলে লাভ নেই। তবুও গল্পের অনেক সময়েই প্রয়োজন পড়ে।
এবার তিন জন বিদেশীর চোখে বাংলাদেশের চিত্রের সংক্ষিপ্ত বিবরনী হুবহু তুলে দিলাম====
বাংলাদেশ সম্পর্কে দুই ইউরোপীয়ের পর্যবেক্ষণ
সোমবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫
আজকাল বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে লোকজন বিভিন্ন উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে আসেন। সম্প্রতি ইউরোপের দুটি দেশের দুজন, একজন পণ্ডিত এবং একজন সাধারণ নাগরিক, সফরে এসে বাংলাদেশ সম্পর্কে তাদের মন্তব্য ব্যক্ত করেছেন।

জাতীয় বাংলা দৈনিক সংবাদপত্রে ড. ভিটালি নাওমকিনের একটি সাক্ষাৎকার ৩ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয়েছে। এ সাক্ষাৎকারে ড. নাওমকিন বাংলাদেশের অগ্রগতি সম্পর্কে বলেন, ‘বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশ যে অগ্রগতি সাধন করেছে, তাতে আমরা বিস্মিত হয়েছি। কারণ স্বাধীনতার সময় দেশটি অত্যন্ত দরিদ্র ছিল, এর সমস্যার শেষ ছিল না। কিন্তু সেই অবস্থা থেকে বাংলাদেশ এখন অনেক এগিয়ে গেছে। প্রায় ১৭ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশ, কিন্তু এর আয়তন সে তুলনায় খুবই কম, মাত্র ১ লাখ ৪৪ হাজার বর্গকিলোমিটার। রাশিয়া পৃথিবীর বড় দেশ, আয়তন ১ কোটি ৬৩ লাখ ৭৭ হাজার বর্গকিলোমিটার, বাংলাদেশের চেয়ে ১৬৩ গুণ বড়। সেই রাশিয়া লোকসংখ্যাও বাংলাদেশের চেয়ে কম, ১৪ কোটি মাত্র। এতটুকু একটা দেশে এই বিপুল জনগোষ্ঠীর টিকে থাকাই তো কঠিন ব্যাপার কিন্তু বাংলাদেশ ৬ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে, নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশের তালিকায় উঠে এসেছে। এ দেশে এখন প্রায় শতভাগ ছেলেমেয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাচ্ছে, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীদের অংশগ্রহণ অনেক বেড়েছে। আমার মতে, বাংলাদেশের এই সাফল্য অত্যন্ত লক্ষণীয় একটি ব্যাপার।’
হাঙ্গেরীয় ভদ্রলোক এ দেশ সম্পর্কে অনেক কিছু শুনেছেন। ৩ সেপ্টেম্বর জন্মাষ্টমী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক শুভেচ্ছা বিনিময়ের নির্ধারিত কর্মসূচি ছিল। এছাড়া এ উপলক্ষে দেশের সরকার ও রাষ্ট্র প্রধান এবং বিরোধীদলীয় নেতা দেশবাসীর উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছা বাণী দিয়ে থাকেন। এ বছরেও দিয়েছেন। সরকার প্রধান এবং রাষ্ট্র প্রধান এভাবে বিশিষ্ট হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এ কথা শুনে ভদ্রলোক অবাক বিস্ময়ে আমার দিকে খানিকক্ষণ অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বললেন, ‘দ্য জন্মাষ্টমী ইজ ফর হিন্দুস বাট দ্য হেড অব দ্য গভর্নমেন্ট এন্ড হেড অব দ্য স্টেট আর অ্যারেঞ্জিং রিসিপশনস অন দিস অকেশন ফর দ্য হিন্দু কমিউনিটি?’ আমি ভদ্রলোককে বললাম, ‘ইট ইজ দ্য ট্রু স্পিরিট অব আওয়ার লিবারেশন ওয়্যার। ইন নাইনটিন সেভেনটি ওয়ান, হোয়েন অল বেঙ্গলিজ, ইরেসপেক্টিভ অব রিলিজিয়ন, হ্যাড বিন ইউনাইটেড আপন দ্য কল অব আওয়ার গ্রেট লিডার, ফাদার অব দ্য ন্যাশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
"উপরের কথোপকথটি অধ্যাপক ড. অরুণ কুমার গোস্বামী : চেয়ারম্যান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।"
"ওবামার মুখেও ডিজিটাল বাংলাদেশ
সোমবার, ৩১ আগস্ট ২০১৫ভোরের কাগজ===
ধনে ও মানে এখন আমাদের বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে। যার মর্যাদাকর স্বীকৃতি এখন খোদ এক সময়ের তলাবিহীন ঝুড়ি অপবাদ দেয়া মানুষরাই অকপটে দিয়ে যাচ্ছেন একের পর এক। সম্প্রতি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তার পিতৃদেশ অর্থাৎ বাবার দেশ আফ্রিকার কেনিয়াতে ব্যক্তিগত ঢঙয়ে এক সরকারি সফর করেছেন। সেখানেই তিনি বিশ্বে বিভিন্ন দেশের উন্নয়ন ও উন্নয়ন সম্ভাবনা নিয়ে বক্তব্য রাখার সময় আমাদের বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে অন্যতম মডেল হিসেবে বর্ণনা করেছেন। সে সঙ্গে অন্যান্য অনেক সফল কাজের সঙ্গে বিশেষত বাংলাদেশের ডিজিটাল ব্যবস্থার অভূত ও অভাবনীয় উন্নয়নকে যুগান্তকারী হিসেবে উল্লেখ করেছেন যা কিনা কেনিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হতে পারে।"

"একই মন্তব্য অবশ্য কম্পিউটার প্রযুক্তিকে বিশ্বের মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে দিয়ে যিনি নিজেও একটি ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন, সেই তথ্যপ্রযুক্তির মহামানব বিশ্বের একনম্বর ধনী ব্যক্তি হিসেবে খ্যাত মাইক্রোসফটের স্বত্বাধিকারী বিল গেটসও বলেছেন।
কেন, কিভাবে বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তিতে এই ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করল সেটি খোঁজার জন্য একটু পেছনে যেতে হবে। আমরা একটু অতীতের কথা স্মরণ করলেই মনে পড়বে, ১৯৯২ সালে বাংলাদেশের সমুদ্র উপক‚লে অবস্থিত পর্যটন নগরী কক্সবাজারের পাশ দিয়ে তথ্যপ্রযুক্তিকে গ্লোবালাইজ করার অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক সাবমেরিন ক্যাবল সংস্থাপন হওয়ার সময় ওই অবকাঠমোতে আমাদের বাংলাদেশকে বিনামূল্যে সংযুক্ত করার প্রস্তাব ছিল। কিন্তু তখন সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ওপর আমাদের দেশীয় বিশেষজ্ঞ কর্তৃক সাবমেরিন ক্যাবলের সুযোগ-সুবিধা এবং এর সুফল সম্পর্কে বিষয়টির সপক্ষে জোরালো মতামত দেয়ার পরও দেশের তথ্য পাচার হয়ে যাবে এরকম একটি আত্মঘাতী ভীতিকে প্রশ্রয় দিয়ে সেসময় তাতে যুক্ত করা হয়নি। অথচ একটি ভুলের কারণে এতদিন পরেও এখনো মিলিয়ন-বিলিয়ন অর্থ খরচ করেও আমরা সে লক্ষ্যে পুরোপুরি পৌঁছাতে পারিনি যা আগে খুব সহজেই হাতের নাগালে পাওয়া যেত। শুধুমাত্র একটি সময়োপযোগী ও সঠিক সিদ্ধান্তের জন্য এমনটি হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞ মহল মনে করেন। সে সময় সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে যুক্ত হতে পারলে এতদিনে দেশ ডিজিটালের পথে আরো অনেকদূর এগিয়ে যেত এতে কোনো সন্দেহ নেই।"

বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ হাসিনা না থাকলে কী হতো বা হতে পারে, ভাবলেও শিউরে উঠি। তার উপস্থিতি ধীরে ধীরে অর্জিত প্রজ্ঞা ও নেতৃত্ব এখন এই দেশ ও জাতির বড় সহায়। তিনি যে দৃঢ়তার সঙ্গে চলছেন তাতে তার যত ক্ষতি হোক না কেন দেশ ও জাতির লাভ বা মনোবল দৃঢ় হচ্ছে। এখন তার শক্ররও কমতি নেই। এককালে বিএনপি-জামায়াত শত্রু ছিল এখনো আছে যোগ হয়েছে নব্য উৎপাত, সুশীল নামের এক আজব শ্রেণি। এদের চাওয়া-পাওয়া কিংবা হিসাব-নিকাশের দিকটা বোঝা কঠিন। এক সময় দেখতাম এরা জাতির বিবেক সাজার অভিনয় করত, বড় বড় কথা মুখে আদর্শের বুলি আর পোশাকে সাদামাটা অথচ জীবনে ভোগী। এই ভোগী মানুষগুলোর আসল চেহারা বেরিয়ে এলো সংকটকালে।
ফরহাদ মজহারের মতো একদা বাম, হরি কীর্তন গাওয়া পায়ে ঘুঙুর বাঁধা মানুষ হয়ে উঠলেন ঘোর ডান। বিলেতে থাকাকালীন এমনকি দেশে এসেও প্লেবয় খ্যাত শফিক রেহমানের কাণ্ড দেখুন। দেশের তারুণ্যে প্রবাসী অভিজ্ঞতা ও খোলা জীবনের অতীত সম্বল করে যৌনতা ছড়িয়ে দেয়ার মানুষটিও কেমন বদলে গেলেন। যার চলনে-বলনে গোলাপ বিনিময়ে কামগন্ধ সে লোক নামলেন মৌলবাদের পক্ষে।এত বড় এমজংগানী মানুষ অশিক্ষিত,বদমেজাজী খালেদা জিয়ার পদলেহন করতে বিবেকে বাঁধেনা।পান্ডিত্য জাহির করার জন্য  তিনি এখন খালেদা জিয়ার বক্তৃতা লেখক। সেটা দোষের কিছু না, তিন তিন বারের প্রধানমন্ত্রীর একজন ভাষণ লেখক থাকতেই পারে।জাতির এই পরগাছা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান নিয়েও ব্যঙ্গ করতে হবে? সবাই জানেন সুর তালে স্লোগান জমে ওঠে। এ জন্য ভাঙা শব্দ বা স্বল্প বাক্যের জায়গাটি টেনে অন্যটির সঙ্গে জুড়ে দিতে হয়। সে কারণে ‘জয় বাংলা’কে ‘জয়-য়-য় বাংলা’ বলারও রেওয়াজ আজকের নয়,স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় হতে জোর পাওয়ার জন্যে কন্ঠে দিয়ে আসছে। এই জ্ঞান পাঁপি শফিক রেহমান সেটুকু মেনে নিতে পারেননি। ব্যঙ্গ করতে গিয়ে শালীনতাহীনভাবে একে ‘জয় লম্বা বাংলা’ বলতেও কলম কাঁপেনি বিবেকে বাঁধেনি।এই পেইড সুশিলদের   ষড়যন্ত্র করার  অপচেষ্টা দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা বা অবদান জামায়াত -বিএনপির রাজনৈতিক নেতাদের চাইতেও ভয়ঙ্কর। আজকাল আরেক উৎপাতের নাম টকশোজীবী। দুচারটে ভালো টকশো বাদ দিলে সরকারের নিন্দা আর খেয়ে না খেয়ে আওয়ামী বিরোধিতাই এদের শেষ সম্বল। এতসব গণ্ডগোল মিডিয়ার ষড়যন্ত্র, দেশি-বিদেশি লবিং আর অর্থের প্রতাপ এড়িয়ে লড়ছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। সে তাঁকেও শান্তি, স্বস্তি দিচ্ছেন না নিজ দল ও জোটের বখাটে কিছু নেতা। এদের কেউ কেউ মন্ত্রীও বটে। আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু না থাকলে কপালে মন্ত্রিত্ব দূরে থাক এ দেশে করে খাওয়াটা যাদের দুঃসাধ্য ছিল, তারাও এখন মুখে মুখে জগতের সেব বাঘ মেরে একাকার করে দিচ্ছেন প্রতিনিয়ত।আমার কথা নয় মানুষের  বিশ্বাস ও ধারণা ছিল মানুষ যখন ওপরে ওঠে, তখন তার সবকিছু মার্জিত ও শালীন হয়ে পড়ে,অভদ্র ও ভদ্রের খাতায় নাম উঠানোর চেষ্টা করে।কিন্তু আমাদের তারা বিপরীত। তাদের কাছে আমজনতার চাওয়া খুব বেশি কিছু নয়। মানুষ শান্তি ও নিরাপত্তা চায়। তাদের জীবনকে সুন্দর বা সচ্ছল করতে না পারলেও তারা বিগড়ে যায় না। এবার দেখছি ঠিক তার উল্টো। অকারণ কথা আর বিবেচনাহীন সিদ্ধান্তে বিরোধী দলহীন রাজনীতির মাঠে এ সরকারে খুঁটি নাড়িয়ে দিচ্ছেন এরা। অকারণে রাজপথ উত্তপ্ত করে তোলা মধ্যবিত্তের সন্তানরা আপাতত ঘরে ফিরে গেলেও এর রেশ কিন্তু বহুদূর যাবে। ভাষার আন্দোলন থেকে কিন্তু স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন,ভুলে গেলে চলবেনা। এ কথা বলতে পারি এর একটা মাসুল আওয়ামী লীগকে দিতে হবে। এটা গ্রামবাংলার চাষি বা শহুরে শ্রমিক আন্দোলন ছিল না। প্রান্তিক শ্রেণির মানুষ রাগী একরোখা প্রাণ দিতে প্রস্তুত। কিন্তু অসংঘবদ্ধ, শহুরে মধ্যবিত্ত ও রাজধানী কেন্দ্রিক জনগোষ্ঠীর ক্ষমতা অনেক বেশি। তারা বাইরে যেমন হোক ভেতরে একাট্টা। বন্ধন বা শৃঙ্খলা ও স্বার্থের। ফলে আগামী যে কোনো নির্বাচনে এর কুপ্রভাব পড়বেই।
প্রশ্ন হচ্ছে ঝানু, অভিজ্ঞ, বয়স্ক একজন মন্ত্রীর কাছ থেকে কেন আমরা বিবেচনাবোধ পেলাম না। গরম গরম আর তির্যক কথা বললেই কি কেউ সফল হয়ে যায়? ঘটনার ব্যাখ্যা, যৌক্তিকতা, কে আসলে দায় মেটাবে, কে বেনিফিশিয়ারি কিছুই পরিষ্কার করা হয়নি। মাঠ পর্যায়ে এমন পরাজয় শেখ হাসিনার সরকারের জন্য শুভ হতে পারে না। অন্যদিকে কেউ কেউ ধরে নিয়েছেন প্রতিদিন দুচারটে বিএনপিবিরোধী গরম কথা, খালেদা জিয়া ও তারেকের গুষ্টি উদ্ধার করলেই পদপদবী নিরাপদ। প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার প্রতিদিন নবায়ন কিন্তু ভালো ফল বয়ে আনবে না।জননেত্রী ঠিকই বুঝেন কোন সংলাপ তেলবীজের কোন সংলাপ রাজনীতির। শেখ হাসিনার সরকার বা তাকে সমর্থন ও শক্তি জোগানোর মূল কাজটি কিন্তু কঠিন। জনগণের যে অংশে গুজব হতাশা আর ষড়যন্ত্র কার্যকর সেদিকে নজর দিতে হবে। ভেবে পাই না এমন সময়ে তোফায়েল ভাই, আমু ভাই বা বর্ষীয়ান আওয়ামী নেতারা কেন কিছু বলছেন না। তাদের হস্তক্ষেপ এবং নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীরা পাশে দাঁড়ালেই শক্তি আসবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু ও শাস্তিদানের পর থেকে এক বিশাল ষড়যন্ত্র চলছে। যেখানে নতুন করে সংখ্যালঘু, ব্লুগার হত্যা, জাসদ বিতর্ক বা ভ্যাট রহস্য মানে গোদের উপর বিষফোঁড়া। এগুলো বন্ধ করে প্রধানমন্ত্রীকে সহায়তা করতে না পারলে অদূর ভবিষ্যৎ ছেড়ে কথা বলবে না।২০০১ এর কথাটা সব নেতা কমকরে হলেও সপ্তায় একবার মনের মধ্যে নিয়ে আসা উওচিৎ,তাহলে অনেকেই সংযত কথার বাক্য জোগাড় করতে পারতেন।সব কথার শেষ কথা হল প্রধান মন্ত্রী যেন কখনই একাকিত্ব বোধ না করতে পারেন সেই দিকেই আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। তিনি যেন কখনো একা হয়ে না পড়েন।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু যেমনি তাঁর যুগান্তকারী দর্শনের সুবাদে বিশ্বের মুক্তিকামী জনতার প্রেরনার উৎসে পরিনত হয়েছেন,তেমনি তাঁর যোগ্যকন্যা দরিদ্র বাংলাদেশকে উন্নতির শীর্ষ শিখরে যে মন্ত্রের গুনে নিয়ে গেছেন, সেই ডিজিটাল রুপকল্পের প্রনেতা,বাস্তবে প্রয়োগ করে শতভাগ সফলতার গুনে বিশ্বের বহু দরীদ্র পীড়িত জাতি গুষ্টির অনুকরনীয় অনুস্মরনীয় দৃষ্টান্তে রুপান্তরীত হচ্ছেন এবং হবেন।
জাতীর জনককে হারিয়ে জাতি যেমন শোকের সাগরে ভাসছে,দেশরত্মকে হারালেও জাতি একই ভাবে আপসোসের সাগরে নিমজ্জিত হবে।হাজার বছরেও স্বপ্নচারী,  দৃডচেতা,দুরদর্শী,আকাশসম হৃদয়ের অধিকারী রাষ্ট নায়ক বাঙালী জাতির অদৃষ্টে পাওয়া যাবে কিনা তা একমাত্র অনাগত ভবিষ্যতই বলতে পারবে।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার সরকার মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যাতত্ব দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস ঐতিহ্যে বিতর্ক উত্থাপনের অভিযোগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন।মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে বসবাস করে,মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার মত দৃষ্টতা দেখিয়ে নি:সন্দেহে তিনি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। এহেন গর্হিত বক্তব্য প্রদানকারী বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার রাখতে পারেননা।মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত অঙ্গিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কোন দল বা জোটের রাজনীতি করারঅধিকার নীতিগতভাবেই থাকতে পারেনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি সকল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করে সর্বচ্ছ আদালতের রায় অনুযায়ী '৭২এর সংবিধান অবিকল বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবী।বাংলাদেশেরজনগন চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ এগিয়ে যাক,মুক্তিযুদ্ধে সাগরসম রক্ত ঢেলে সেই অঙ্গিকারের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেছিল।স্বাধীন বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বসবাসকরে,পরাধীনতার গান শুনতে দেশ স্বাধীন করেনি বাংলার জনগন। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৩ বছরের বিরামহীন সংগ্রামের ফসল মুক্তিযুদ্ধ।সেইযুদ্ধে উপনিবেশিক পাকিস্তানের আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত সেনাবাহিনীকে নিরস্ত্র বাঙালীরা পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছিল।সেই স্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশেপরাজিত শক্তির দোষর,তাঁদের প্রেতাত্বাদের রাজনীতি করার কোন নৈতিক অধিকার নেই।জাতির জনক তাঁদের রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগন জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলায় রাজাকারের কোন স্থান দিতে চায়না। তাই খালেদা জিয়ার ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টার দৃষ্টান্তমুলক সাজার আশা পোষন করে।কোন রাজনৈতিক সমঝোতার ফাঁদে যেন এই মামলা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়,তাঁর গ্যারান্টিও সরকারের নিকট বাংলাদেশের জনগন চায়। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু Ruhul Amin ------------------------------ খালেদা জিয়াকে সমাবেশের অনুমতি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি আশাহত----04 /01 / 0016 ইং পোষ্ট -==================================প্রখ্যাত দার্শনিক,চিন্তাবিদ সক্রেটিসকে কম বেশি আমরা সবাই জানি।সক্রেটিস কোন যুগে জম্মগ্রহন করে মানব সেবায় ব্রতি হয়ে আজও দেশে দেশে অনুকরনীয় অনুসরনীয় হয়ে আছেন তাও আমরা জানি।নিশ্চয়ই তখনকার সময় থেকে বর্তমানের সমাজ, রাষ্ট্রব্যাবস্থাপনা আরো শত গুন উন্নত,সমৃদ্ধ,সভ্য।সক্রেটিস ছুতোর, কামার ইত্যাদি প্রসঙ্গে এসে প্রশ্ন করতেন, 'তাহলে রাষ্ট্র নামক জাহাজটি বিগড়োলে কাকে দিয়ে সারাইয়ের কাজ করাবো'হাসান আজিজুল হক (সক্রেটিস) পৃ : ১৬ সক্রেটিসের এ বিখ্যাত কথপোকথন কারো অজানা নয়। আদর্শবান ন্যায়নীতিভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করবার জন্য সক্রেটিসকে হেমলক পান করতে দেয়া হয়েছিল(বিষ), তারপরও তিনি আইনের প্রতি অটুট শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন- এটাও ছিল তার নির্ভীক বিদ্রোহ। তাকে বাঁচবার সুযোগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি আইনঅবজ্ঞা করেননি, আইনে যদি তার মৃত্যুদন্ড হয় তবে তিনি অবশ্যই তা মানতে রাজি। এখানেও তার সমস্ত জীবনকর্মের অনেক গভীর দর্শন কাজ করেছে। তার উপর মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল একথা তিনি ও এথেন্সবাসী জানতেন। কিন্তু যে আইনে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলো- তিনি সে আইনকে শ্রদ্ধা জানালেন এ অর্থে মানুষকে আইনের প্রতি অনুগত থাকতে বললেন। সেই আইন কারা তৈরি করছে তা তিনি জানতেন তাতে তো আর আইন নামক বিষয়টিকে জীবন থেকে বিতাড়িত করা যায় না।"পবিত্র কোরানে পাকে ও উল্লেখ করা হয়েছে, বিধর্মী কতৃক শাষিত রাষ্ট্র ও সরকার সমুহের আইন মেনে ধর্ম কর্ম করার।এই রুপ রাষ্ট্র ব্যাবস্থায় শুক্রবারের খতবায় বিশেষ আয়াৎ সংযুক্ত আছে এবং নিয়মিত নামাজের সাথে আর ও কয় রাকাত নামাজ আদায় করার নির্দেশনা দেয়া আছে।পরিতাপের বিষয়টি হচ্ছে,গত কয়েক বছর থেকে লক্ষ করা যাচ্ছে একশ্রেনীর মানুষ রাষ্ট্রীয় আইন রীতি নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সর্ব উচ্চ আদালতের রায়কে ও অমান্য করে হরতাল অবরোধ,প্রকাশ্য আদালতের সমালোচনা করতে।শুধু তাই নয় আন্দোলনের নামেপ্রকাশ্য দিবালোকে যাত্রীভর্তি চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে জীবন্ত মানবকে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিতে।উল্লেখ করা প্রয়োজন যারা এই সমস্ত আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিলেন,এবং প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেন যে আদালতের বিরুদ্ধেও কর্মসূচি দেয়া যায়,বক্তব্য দেয়া যায়,তাঁরা কখনই কোন অপরাধীর বিচার কায্য সম্পাদন করেছেন তদ্রুপ কোন উদাহরন নেই। যেমন আমি প্রথমেই বলতে চাই ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছেন রাতের অন্ধকারে।বঙ্গবন্ধুর অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? পৃথীবিপৃষ্টের সব চাইতে নিরাপদ স্থান জেলখানা।সেখানে রাতের অন্ধকারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করাহল,তাঁরা বন্দি ছিলেন, তারপর ও তাঁদের অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে বুদ্ধিজীবিদের বাসা থেকেতুলে নিয়ে জ্যান্ত মানুষকে হত্যা করা হল, তাঁদের অপরাধ কি বিচার করে মিমাংসা করা যেতনা? খালেদ মোশারফ., কর্নেল তাহেরসহ অসংখ্য মুক্তি যুদ্ধা সেনা অফিসারকে মেজর জিয়ার নির্দেশে নির্মম নির্দয় ভাবে হত্যা করা হল, অনেককে গুলী করার পর প্রান পাখী উড়াল দেয়ার আগেই জ্যান্ত মাটি চাপা দেয়া হল, তাঁদের বিচার কি প্রচলিত সেনা আইনে করা যেতনা? অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধা,আওয়ামী লীগের নেতা,মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারি,ব্লগার,প্রকাশক,লেখক সাহিত্যিক,সাংবাদিক হত্যা করা হল,তাঁদের অপরাধ কি আইনের আওতায় এনে বিচার করা যেতনা?আন্দোলনের নামে ঘোষনা দিয়ে মানুষ হত্যা করা,সম্পদ নষ্ট করা,লুটপাট করা কি মানবতা বিরুধী অপরাধের আওতায় পড়েনা?মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ হত্যা লুটপাট,অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার হতে পারে,যুদ্ধাবস্থা ব্যাতিরেকে ঘোষনা দিয়ে তদ্রুপ কর্মে জড়িতদের এবং হুকুমদাতার বিচার কেন হবেনা? নগদ অপরাধের ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার করা কি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব নয়? নাগরীকদের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া কি রাষ্ট্রের কর্তব্যের মধ্যে পড়েনা? যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন তাঁরা কি বিচার পাওয়ার সাংবিধানীক অধিকারের মধ্যে পড়েনা?সেই যুগের সক্রেটিস যদি নীজের উপর আনীত মিথ্যা অভিযোগ জেনে শুনে মেনে নিতে পারেন,সভ্যতার চরম শীখরে দাঁড়িয়ে যারা এই যুগে আইনকে, রাষ্ট্রীয় রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রকাশ্য আন্দোলনের নামে মানুষ খুন করেছেন,সম্পদের হানী ঘটিয়েছেন তাঁরা কি সক্রেটিস যুগের আগের অধিবাসি মনে করেন নীজেদের? তাঁরা নীজেরা নিজেদের মনে করুন কিন্তু মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে কোন যুগে ফিরিয়ে নিতে চান?তাঁদের যদি এতই অসহ্য লাগে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিশেষ কিছু আদর্শের প্রতিপালনের অঙ্গিকারের ভিত্তিতে ৩০লক্ষ শহিদের আত্মদান,পৌনে চারলাখ মাবোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস- তবে জনগনকে সংঘটিত করে আর একটি গনবিপ্লব ঘটিয়ে তাঁদের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে স্বাধীনতার পক্ষের কোন মানুষ বাধাতো দিচ্ছেনা। যাদের নেতৃত্বে, যাদের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন করা হল, তাঁরাতো ক্ষমতায় আছে,তাঁদের কেন জোর পুর্বক,ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে খমতা থেকে নামাতে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে,আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে জনজীবন দুর্বিসহ করে তোলার চক্রান্ত করতে দেয়া হবে।এই সেই দিন মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা নিয়ে যিনি বিতর্ক উত্থাপনের বৃথা চেষ্টা করে জনরোষের আওতার মধ্যে এখনও রয়েছেন,তাঁর সৌখিন বাসভবন পাহারায় আপনার সরকার অতিরীক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে বাধ্য হয়েছে,তিনি কি ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে সমাবেশ করার প্রসাশনিক অনুমতি পায়। বর্তমান গনতান্ত্রিক বিশ্বের একটি দেশের উদাহরন কি কেউ দিতে পারবেন,স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা সেই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে?একটি দেশকি কেউ দেখাতে পারবে যে,সেই দেশের কোনমীমাংসিত এবং প্রতিষ্ঠিত কোন সত্যকে ৩০/৪০ বছর পর আবার জনসমক্ষে উত্থাপন করে লক্ষ লক্ষ শহিদ পরিবারের অন্তরের আগুনে"ঘি "ঢেলে দেয়ার চেষ্টা, কোন প্রতিষ্ঠিত দল বা তাঁর নেতা করেছেন? কেন এই পয্যন্ত সরকার তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা না করে উলটো সমাবেশ করে তাঁর মতবাদ প্রচারের অনুমতি দেয়া হল??তাঁরা নীজেদের এত ক্ষমতাবান মনে করেন কিভাবে? তাঁরা কি করে আবার জাতির নিকট ক্ষমা চাওয়া ছাড়াই প্রকাশ্য সভা সমাবেশ করার অধিকার পায়?কেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সংসদে ঘোষনা দিয়েও এখন পয্যন্ত আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন করছেন না? মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আপনার আশ্বাস বাংলার মানুষ অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করে।সুতারাং জনগনকে দেয়া প্রতিশ্রুতি আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন কল্পে তড়িৎ ব্যাবস্থা গ্রহনকরবেন, জনগনের এই আস্থা বিশ্বাস এখন ও অটুট রয়েছে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,শাপলা চত্বরের সেই দিনের ষড় যন্ত্র মোতাবেক যদি খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার মানুষ রাজপথে নেমে আসতেন,পরিকল্পনাঅনুযায়ী সেনা বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়েআপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারতো,আপনাকে কি জীবিত বাঁচতে দেয়া হত? আপনার পরিবারের কাওন সদস্যকে বাঁচতে দিত?আওয়ামী লীগের থানা উপজেলা পয্যায়ের কোন নেতা কি বাঁচতে দিত? তাঁরা কি সে দিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ধর্ম বিদ্বেষী সরকার উৎখাত করে ধর্মধারি সরকার কায়েমের রাজনৈতিক শ্লোগানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নামক মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ধারক বাহক জননন্দিত এইসংগঠনটিকেও জ্যান্ত কবর দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত ছিল না?আমি আজ আরও একটি বিষয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,সম্পুর্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন চরমপন্থী নেতার অবিকল নকল করা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার--,গনতান্ত্রিকদেশে,গনতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে, গনতান্ত্রীক সংগঠনের,গনতন্ত্রের পুজারি মনে করা কোন নেতা, রাজপথে আন্দোলন না করে, সীমাবদ্ধ কক্ষে ৪১দিন অবস্থান করে, ৪২ জন মানুষকে পুড়িয়ে মেরে,পরবর্তিতে বিচারের সম্মুখ্যিন না হয়ে নিয়মাতান্ত্রীক আন্দোলনের সুযোগ কোন দেশের, কোন নেতা বা কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, এমন উদাহরন কি কেউ দিতে পারবে?? ষড় যন্ত্রের জাল কোথায় বিস্তৃত ছিল তাঁর প্রমান সেই নেত্রী নীজেই তাঁর উষ্মায় প্রকাশ করে দম্ভস্বরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে সুশৃংখল বাহিনীকে তাচ্ছিল্য করে বলে ছিল"সেনাবাহিনী বেঈমান"!!!এর পরও আপনার সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আনায়ন না করে প্রকাশ্য সভার অনুমতি দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার গুলির মনে আগাত দেয়া হয়েছে আমি মনে করি। গত পৌর নির্বাচনে রায় দিয়েছে তাঁর বিচার করার,তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অর্থই হচ্ছে জনগনের ক্ষোভ তাঁর উপর থেকে এখনও কমেনি,বরঞ্চ কয়েক গুন বেড়ে জনরোষের পয্যায় পৌছে গেছে।আপনার সরকারের তাঁকে দেয়া বাড়তিনিরাপত্তাই তা প্রমান করে।সুতারাং দেশ ও জাতি এই রাজনৈতিক লাশের ভার বইবার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা।দেশের এবং জাতির প্রয়োজন বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মত শিক্ষিত, বিজ্ঞান মনস্ক,প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত সমৃদ্ধ জাতি গঠনে জ্ঞানসমৃদ্ধ, আধুনিক সভ্য দুনিয়ার নেতৃত্ব গ্রহন করার মত গুনাবলি সমৃদ্ধ নেতার। কোন অবস্থায় সক্রেটিসের আগের যুগে জাতি ফেরৎ যেতে চায়না।পরিশেষে বলতে চাই,আর কোন সংগাত নয়,এবার চাই সমৃদ্ধি।আর নয় জঙ্গিপনা,এবার চাই ধর্মনিরপেক্ষতা।আর নয় সাম্প্রদায়ীকতা,এবার চাই অসম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা।আর নয় পাকি ভাবধারা প্রতিষ্ঠা,এবার চাই মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের সফল বাস্তবায়ন। জয় আমাদের হবেই হবে, অশুভ অপশক্তির পরাজয় অবশ্যাম্ভাবি। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা