মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার বড়ভাই শেখ সেলিম,স্নেহধন্য হানিফ সাহেবকে অনতিবিলম্বে থামান--- ============>=>=<==>====<<<<<<<<>=>>><====_=[=========== পনেরই আগস্টের ঘাতকরা এ কথা জানত, পেশিশক্তি প্রয়োগ না করলে বাংলাদেশ ও বাংলার জনগণের বুক থেকে আওয়ামী লীগকে উপড়ে ফেলা যাবে না। তাই একুশ বছর হীন চক্রান্ত করে ঠেকিয়ে রাখা হয় আওয়ামী লীগকে। আবার কারচুপির নির্লজ্জ নির্বাচনের মাধ্যমে ২০০১ সালে অগণাতান্ত্রিক উপায়ে খমতায় বসে পঁচাত্তরের ঘাতকের পৃষ্ঠপোষকরা। বঙ্গবন্ধুর হত্যা মামলার বিচার প্রক্রিয়াকেও তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিলম্বিত করেছে। একাত্তরের ঘাতকদের বসানো হয়েছে রাষ্ট্রক্ষমতায়। তাই পনেরই আগস্টের হত্যাকাণ্ডকে বাংলাদেশকে হত্যা বলা চলে, বাংলাদেশের মূলনীতিগুলোকে হত্যা করার অপচেষ্টা।এই বর্বর হত্যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের মহান ইতিহাসের মহোত্তম ঘটনাসমূহের একটি অন্যতম ঘটনা। মানব ইতিহাসে এটি হয়ে থাকবে সবচেয়ে শক্তিশালী দৃষ্টান্ত, যাতে একজন মানুষকে আমরা দেখি একটি জাতিগত স্বপ্নের অবয়ব নিতে, সেই মানুষের ব্যক্তিত্বের প্রভাব এতটাই গভীরে ছিল যে, তাঁর উদ্দীপক উপস্থিতি মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালেও রোধ করা যায়নি।যদিও শারিরীক উপস্থিতি তাঁর ছিল না। পৃথিবীর ইতিহাসের এ ধরনের জাতীয় আন্দোলন অনেক হয়েছে, কিন্তু এরকম বাঁধন ছাড়া ভালোবাসা আর কোনো নেতা পাননি। জার্মান দার্শনিক ফ্রেডরিখ হেগেলের (১৮৭০-১৮৩১) ভাষায় ‘মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হচ্ছে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা’। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় বাঙালির কোনোদিন কোনো রাষ্ট্র ছিল না। বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ করে দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র উপহার দেয়ার কৃতিত্ব সাধারণ বাঙালি কৃষক সন্তান মুজিবের। এটা নিশ্চিতভাবেই সত্য যে, স্বাধীনতাবিরোধী আন্তর্জাতিক শক্তির এদেশীয় এজেন্টরাই ১৯৭৫ সালে পরিবারের সদস্যসহ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যা করেছে। আরো স্পষ্ট করে বলা যায়, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হেনরি কিসিঞ্জার এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ভুট্টো_ বাংলাদেশের মোশতাক, জিয়া, এরশাদ, ফারুক, রশিদ, নূর, ডালিম চক্রের মাধ্যমে ১৫ আগস্টের হত্যাকা- ঘটিয়েছে। সেনাবাহিনীর তৎকালীন উপপ্রধান জে. জিয়াউর রহমান ছিলেন ঘাতকচক্রের আসল মদদাতা, প্রশ্রয়দাতা ও আশ্রয়দাতা। বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহকর্মী মোশতাক, ওবায়দুর রহমান, তাহের ঠাকুরসহ আরো অনেকেই ওই হত্যা-ষড়যন্ত্রে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর মতো কন্যা শেখ হাসিনাকেও দীর্ঘ সাড়ে তিন দশক ধরে ঘরে-বাইরের শত্রুর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে হচ্ছে। অতি সম্প্রতি আওয়ামী লীগের ২/৩ জন নেতা-পাতিনেতা জাসদবিরোধী বক্তব্য নিয়ে মাঠে নেমেছেন। জাসদ ১৪ দলীয় জোটের একটি ছোট্ট দল। ওই দল থেকে মন্ত্রী মাত্র ১ জন। অথচ জাসদ সভাপতি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইন্যু যেভাবে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে সোজাসাপ্টা বক্তব্য দিয়ে আসছেন, তেমনিভাবে আর কোনো নেতাকে খুব একটা বলতে দেখা যায় না। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের ২/৩ জন নেতা বর্তমানে একই সুরে জাসদবিরোধী বক্তব্য নিয়ে মাঠ গরম করছেন। এই মুহূর্তে জাসদের এবং জাসদ সভাপতির বিরুদ্ধে কথা বলা যে প্রকারান্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেই কথা বলা, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ, জাসদ সভাপতি শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার একজন সদস্য এবং জাসদ শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম একটি দল। আওয়ামী লীগের ২/৩ জন ব্যক্তি কেন এই আত্মঘাতী প্রকল্প হাতে নিয়েছেন, তা কেবল তারাই বলতে পারেন।দীর্ঘ ৪ দশক পর বঙ্গবন্ধু হত্যায় জাসদের দায় নিয়ে চলমান বিতর্ক অবসানের আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। মিডিয়া এবং দলের নেতাকর্মীদের বর্তমান বিতর্ককে রাবারের মতো টেনে লম্বা না করার আহ্বান জানিয়ে প্রবীণ এই নেতা বলেন, "জঙ্গিবাদবিরোধী ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের জন্য জাসদের সঙ্গে আমাদের এই মেলবন্ধন। কে কোথায় কবে কি করেছে তা নিয়ে না ভেবে আমাদের সামনের দিকে এগোতে হবে। জাসদ নিয়ে চলমান বিতর্ককে অনভিপ্রেত, অপ্রাসঙ্গিক ও অরাজনৈতিক। পক্ষের বিপক্ষের সকল রাজনৈতিক বিশ্লেষক ভাল ভাল ভাবেই জানেন,নতুন করে কাউকে ইতিহাসের তালিম দেয়ার দরকার আছে বলে মনে করি না।তাছাড়াও আরো পরিস্কার করে বলতে চাই-- 'জাসদের ইতিহাস দেশরত্ম জননেত্রী শেখ হাসিনার নখদর্পনে,আওয়ামী লীগের ইতিহাস বর্তমান জাসদ(ইনু)অংশের নখদর্পনে। বর্তমান কেন্দ্রীয় পলিটব্যুরুর সব সদস্যই তৎকালীন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় অথবা জেলার গুরুত্বপুর্ন নেতা ছিলেন।আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বেশীর ভাগ নেতাও সেই সময় ছাত্র নেতা বা যুব নেতা ছিলেন।বাদ বাকী সকল নেতাই বঙ্গবন্ধুর একান্ত সান্নিদ্ধ পাওয়া নেতা।বলতে পারেন নতুন প্রজর্ম্মের জানার জন্য বলা,তবে তা এই মহুর্তে কেন?স্বমহিমায় বঙ্গবন্ধুর প্রত্যার্পন সমাপনের পরে ইতিহাসবীদেরাই বলবে কার ভুমিকা কি ছিল।মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তির হাতে যে বৃহৎ প্রকল্প তার সবে মাত্র প্রস্তুতি কাজ চলছে,প্রকল্প শতভাগ বাস্তবায়নের পরে, এমনি ইতিহাস তাঁর নিজস্ব দায়ে কার কি ভুমিকা ছিল তা নির্ধারন করতে বাধ্য হবে। "জাসদ নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত করেছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রভাবশালী নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি। শেখ সেলিম অনেক ক্ষমতাবান মানুষ। তিনি শুধু দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বা নিছক একজন সংসদ সদস্য বা একজন সাবেক মন্ত্রী নন। তিনি যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান, এশিয়ার প্রখ্যাত যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মনির ছোট ভাই, জাতির জনকের ভাগ্নে_ সর্বোপরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বড় ভাই। কাজেই মন্ত্রিসভার সদস্য না হয়েও তিনি মন্ত্রীর চেয়ে বড় কিছু, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ২৩ আগস্ট জাতির জনকের বাসভবনে অনুষ্ঠিত শোক দিবসের আলোচনা সভায় শেখ সেলিম বলেন, 'জাসদই বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ক্ষেত্র তৈরি করেছিল। স্বাধীনতাবিরোধীরা কখনো বঙ্গবন্ধুর ওপর আঘাত হানতে পারত না, যদি গণবাহিনী, জাসদ বঙ্গবন্ধুর বিরোধিতা করে বিভিন্ন জায়গায় ডাকাতি করে, মানুষ হত্যা করে, এমপি মেরে পরিবেশ সৃষ্টি না করত। জাসদের গণবাহিনীর প্রধান কর্নেল তাহের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সুতরাং বঙ্গবন্ধু হত্যার মূল রহস্য বের করতে হবে। কারা কারা জড়িত ছিল।' শেখ সেলিমের জাসদবিরোধী বক্তব্য শুধু আওয়ামী লীগবিরোধী মিডিয়া এবং বিএনপি লুফে নেয়নি, আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতা-পাতিনেতাও ওই অসময়োচিত বক্তব্য নিয়ে মাঠে নেমেছে। বিএনপি-জামায়াত মার্কা টিভি চ্যানেল জাসদবিরোধী বক্তব্যকে কেন্দ্র করে টকশো'র নামে প্রায় প্রতিদিনই ১৪ দলীয় জোটকে ভাঙার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। শেখ সেলিমের অভিযোগের দু'দিন পর ২৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ শোক দিবসের আলোচনা সভায় বলেন, 'বাম সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যার প্রেক্ষাপট তৈরি করেছিলেন। জাসদ ও ন্যাপসহ যারা বাম রাজনীতি করতেন, বায়াত্তর থেকে পঁচাত্তর তারা বঙ্গবন্ধু সরকারের বিরোধিতা করেছিলেন। কেন করেছিলেন, তারাই ভালো ব্যাখ্যা দিতে পারবেন। তাদের ঔদ্ধত্য এমন পর্যায়ে ছিল যে, একটা সরকারকে অস্থিতিশীল করার জন্য যা যা করণীয়, তা-ই করেছিলেন। আর তারাই ওই সময় তৈরি করেছিলেন জাতির পিতাকে হত্যার প্রেক্ষাপট। বঙ্গবন্ধু সরকারকে অস্থিতিশীল করার জন্য হাট-বাজারে লুটপাট, ডাকাতি, ব্যাংক ডাকাতি, সাধারণ মানুষকে হত্যা_ এমনকি ঈদের নামাজের জামায়াত শেষে আওয়ামী লীগের এমপিদের হত্যা পর্যন্ত করেন তারা। এ সময় বর্বরোচিত হত্যাকন্ডের লক্ষ্য ছিল একটাই, বঙ্গবন্ধুর সরকারকে অস্থিতিশীল করা। সে কারণেই কিন্তু একাত্তরের পরাজিত শক্তি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে পেরেছিল।'" এরই মধ্যে টকশোতে বাসা থেকে টেলিফোনে মন্ত্রীত্ব বঞ্চিত ক্যাপ্টেন (অব) তাজুল ইসলাম তাজ জাসদবিরোধী কোরাশে বেশ ভালোভাবে সুর মিলিয়েছেন। ক্যাপ্টেন তাজ সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিককে বলেছেন, 'বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ষড়যন্ত্রের সময় জাসদের বিভিন্ন নেতা ষড়যন্ত্রকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিল। আজ তাদের সঙ্গে আমাদের রাজনীতি করতে হচ্ছে, এটা খুবই মর্মান্তিক।'আওয়ামী লীগের নেতা-পাতিনেতাদের জাসদবিরোধী বক্তব্যে বর্তমানে জীবন্মৃত বিএনপি যেন কিছুটা প্রাণ ফিরে পেয়েছে। শেখ সেলিমের প্রথম বক্তব্যের পর বিএনপির মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন এক সংবাদ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সময় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর ভূমিকা স্পষ্ট করার দাবি জানান।" বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এক সময় জাসদ করতেন। গয়েশ্বর ২৬ আগস্ট প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় বলেন, 'তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বাংলাদেশে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র রাজনীতি শুরু করেন। এটা ঐতিহাসিক সত্য, হাসানুল হক ইনু ও কর্নেল তাহেরের ভাই অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনকে ১৯৭৪ সালে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এম মনসুর আলীর বাড়িতে গুলিবর্ষণ করতে দেখেছিলেন বলে দাবি করে গয়েশ্বর বলেন, গুলিটা প্রথম আনোয়ার হোসেন ও ইনুর নেতৃত্বেই শুরু হয়। আমার সামনেই তারা গুলি করেন।"গায়েশ্বর বাবুর বক্তব্যে স্পষ্টতই প্রমান করে তিনি ও ঐদিনের ঘটনায় সরাসরি জড়িত ছিলেন। 'আওয়ামী লীগের ২/৩ জন নেতা-পাতিনেতা যখন বিএনপির সুরে কথা বলেছেন, তখন জাসদ শিবিরও চুপ করে থাকতে পারেনি। আওয়ামী লীগ নেতার অভিযোগের পরদিন জাসদের কার্যকরী সভাপতি মঈনউদ্দিন খান বাদল ও সাধারণ সম্পাদক শরীফ নূরুল আম্বিয়া ২৪ আগস্ট এক বিবৃতিতে শেখ সেলিমের বক্তব্যকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং সত্যের অপলাপ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, 'বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে আদালতে দেয়া অভিযোগপত্র, সাক্ষীদের জেরা, আদালতের রায় ও পর্যবেক্ষণের কোথাও বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জাসদের সংশ্লিষ্টতার সামান্যতম বিষয় আসেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের জনগণ ও ১৪ দলের নেতাকর্মীরা যখন বঙ্গবন্ধুর খুনি ও খুনের সুফলভোগী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম করছে, তখন শেখ সেলিমের এ বক্তব্য ঐক্যের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবে। শেখ সেলিম আর বিএনপির মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন যখন একই ভাষায় একই সময়ে জাসদের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে,এ অভিন্ন ভাষার যোগসূত্র কি?' শেখ সেলিমের অভিযোগের জবাবে জাসদের দুই নেতার দেয়া বিবৃতির দু'দিন পর মুখ খুলেছেন দলের সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু স্বয়ং। ২৬ আগস্ট সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আওয়ামী লীগের জাতীয় চার নেতাসহ হাতে গোণা কয়েকজন ত্যাগী নেতা ছাড়া,অনেকেই সেদিন খন্দকার মোশতাকের করুণা ভিক্ষা এবং হালুয়া রুটির ভাগাভাগির জন্য তার চারপাশে ভিড় করেছিল। জাসদ সেদিন নির্যাতন ভোগ করেছে। বর্তমানে তাকে এবং জাসদকে ঘিরে বিতর্কে বিএনপি-জামায়াতই লাভবান হবে। সাম্প্রতিককালে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির কতিপয় নেতা হঠাৎ করেই জাসদের বিরুদ্ধে বিষোদগার অথবা সমালোচনা শুরু করেছেন।' মন্ত্রী বলেন, 'বিএনপি ও আওয়ামী লীগের যারা একই সুরে জাসদের বিরুদ্ধে কথা বলা শুরু করেছেন, তাদের সঙ্গে আমি কোনো বাকযুদ্ধে লিপ্ত হতে যাচ্ছি না।'শেখ সেলিমের বক্তব্যে বিএনপির খুশি হওয়ার আরো কারণ রয়েছে। ঐদিন তাঁর বক্তৃতার মূল টার্গেট হচ্ছে জাসদ এবং তৎকালীন সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল কেএম শফিউল্লা। ধরে নিলাম, জে. শফিউল্লাহর বিরুদ্ধে শেখ সেলিম যে অভিযোগ করেছেন, তার শতভাগই সত্য। কিন্তু গত ৪০ বছরে বঙ্গবন্ধু হত্যা ষড়যন্ত্রে জে. শফিউল্লাহ সামান্যতম জড়িত ছিলেন এমন কোনো তথ্য প্রমাণ কেউ হাজির করতে পারেনি। এমনকি শেখ সেলিমও বলতে পারেননি। অন্যদিকে জিয়াউর রহমান যে বঙ্গবন্ধু হত্যা ষড়যন্ত্রে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন এর হাজারটা প্রমাণ রয়েছে। ২৪ আগস্ট দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত বক্তব্যে শেখ সেলিম এক পর্যায়ে বলেছেন, 'জিয়াউর রহমান আর্মির ডেপুটি চিফ ছিল। সেও হত্যাকান্ডে জড়িত ছিল। এখন বিস্তারিত কিছু বলব না। জিয়াউর রহমান, শাফায়াত জামিল, খালেদ মোশাররফ কী করেছিল, এ প্রশ্নের জবাব একদিন দিতে হবে। এ জন্য একটা তদন্ত কমিশন গঠন করা হোক।'ঘাতক ফারুক, রশিদ, ডালিম চক্রের বক্তব্য অনুযায়ী জিয়াউর রহমানসহ সেনাবাহিনীর বড় বড় কর্মকর্তারা প্রায় সকলেই হত্যা ষড়যন্ত্রের কথা জানতেন। শুধু সেনাপ্রধান শফিউল্লাহ জানতেন না। এরশাদসহ পাকিস্তান প্রত্যাগত সেনা কর্মকর্তারা বঙ্গবন্ধু সরকারের বিপক্ষে ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তাদের দু'বছরের সিনিয়রিটি দেয়া পাকিস্তান প্রত্যাগতরা কোনভাবেই মেনে নিতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর সেনাবাহিনীর তৃতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি সিজিএস ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফের ভাবটা ছিল,যা হবার হয়ে গেছে।' ১৫ আগস্ট ভোর রাতে ফারুক গং গোলাবিহীন ট্যাংক নিয়ে আক্রমনে বাহির হয়। গোলার দায়িত্বে ছিলেন সিজিএস। ১৫ আগস্ট দিনের বেলা ঘাতকদের গোলা সরবরাহ করেন খালেদ।তাছাড়া ফারুক-রশীদ তাদের মুক্তির পথ গ্রন্থে লিখেছেন, খালেদ মোশারফ বরাবরই তাদের সমর্থক ছিলেন। খালেদ মোশাররফ জীবিত থাকলে এসব অভিযোগের সত্যাসত্য জানা যেত। বঙ্গবন্ধু হত্যার ৯ দিন পর ২৪ আগস্ট সেনাপ্রধান কেএম শফিউল্লাহকে অপসারণ করে উপপ্রধান জিয়াউর রহমানকে পদোন্নতি দিয়ে সেনাপ্রধান নিযুক্ত করা হয়। একই সঙ্গে ভারতে প্রশিক্ষণরত ব্রিগেডিয়ার এরশাদকে মে. জেনারেল পদে পদোন্নতি দিয়ে উপসেনা প্রধান করা হয়। জিয়া ও এরশাদের পদোন্নতি এবং শফিউল্লাহর বরখাস্তই কি প্রমাণ করে না, জিয়া-এরশাদ জুটি বঙ্গবন্ধু হত্যা ষড়যন্ত্রে বিশাল ভূমিকা পালন করেছে? আর শফিউল্লাহর ক্ষমতাচ্যুতি প্রমাণ করে, উনি আর যাই হোন, বঙ্গবন্ধুর ঘাতকদের পক্ষের লোক ছিলেন না। বঙ্গবন্ধু হত্যার সুফলভোগী হলেন জিয়া, এরশাদ ও খালেদা। জে. শফিউল্লাহ নন।শেখ সেলিম বলেছেন, ১৫ আগস্ট কোন সামরিক অভ্যুত্থান ছিল না। কিন্তু ঘটা করে সামরিক অভ্যুত্থান না হলেও সেনাপ্রধান ছাড়া উপসেনা প্রধান জিয়া থেকে শুরু করে বড়কর্তারা প্রায় সকলেই জানতেন। সিনিয়র অফিসারদের মধ্যে ঢাকাস্থ ৪৬ ব্রিগেড কমান্ডার কর্নেল শাফায়াত জামিল এবং রক্ষীবাহিনী প্রধান ব্রিগেডিয়ার নুরুজ্জামান ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ড-কে কোনভাবেই মেনে নিতে পারেননি। ৩ নভেম্বর অভ্যুত্থান ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে হলেও এতে শক্তিশালী ভূমিকায় ছিলেন নুরুজ্জামান ও শাফায়াত জামিল। পাকিস্তান প্রেমিক এরশাদের ১৫ আগস্টের ঘাতকদের সাথে যে বিশেষ সখ্যতা ছিল, কর্নেল শাফায়াত জামিল তার লেখা গ্রন্থে তা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন। জাতির জনকের হত্যাকান্ড ছিল আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র।প্রেসিডেন্ট নিক্সন-পররাষ্ট্র মন্ত্রী কিসিঞ্জার গং ১৯৭১ সালে পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশের সৃষ্টি মেনে নিতে পারেননি। মুজিবের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সৃষ্টিকে কিসিঞ্জার তার ব্যক্তিগত পরাজয় মনে করতেন। কিসিঞ্জারের তিন বিদেশি শত্রুর অন্যতম ছিলেন বাংলাদেশের শেখ মুজিব। মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্রে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সদ্য অবমুক্ত হওয়া দলিলে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে, মুজিব হত্যা ষড়যন্ত্রে কিসিঞ্জারের দুষ্কর্মের কথা। মোশতাক-জিয়ার লেলিয়ে দেয়া নূর, হুদা, মহিউদ্দিনরা যখন ৩২ নম্বর বাসভবনে ১৫ আগস্ট ভোরে অভিযান চালায় সেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কিসিঞ্জার জানতে চায়" 'মুজিবুর কি জীবিত না মৃত্য?' এর কিছুক্ষণ পরেই দোতলা থেকে নিচে নামার সময় সিঁড়িতে মানুষরূপী জানোয়ার নূর বঙ্গবন্ধুর বুকে গুলি চালায়।রাজনীতি সম্পর্কে যাদের সাধারণ সেন্স আছে, তারাই জানেন একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। কিসিঞ্জার-ভুট্টোর মদদে মোশতাক-জিয়া চক্র, ফারুক-রশীদদের মাধ্যমে পরিবারের সদস্যসহ জাতির জনককে হত্যা করিয়েছে। জিয়া-এরশাদ জাতির জনক হত্যার প্রধান সুফলভোগী। সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই জিয়ার পর এরশাদকে এবং এরশাদের পর খালেদাকে ক্ষমতায় বসানো হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে হত্যার জন্যই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। জিয়া-এরশাদ-খালেদা তাদের আড়াই দশকের শাসনামলে স্বাধীন-অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে পরাজিত পাকিস্তানের আদলে মিনি পাকিস্তানে পরিণত করেছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। এ জন্যই যারা বঙ্গবন্ধু এবং জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছে, সেই তারাই বঙ্গবন্ধুকন্যাকে হত্যার জন্য একটার পর একটা ষড়যন্ত্র করে আসছে।আজকে স্বাধীন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু, গণতন্ত্র, স্বাধীনতা এবং স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতীক হচ্ছেন শেখ হাসিনা। আর একাত্তরে পরাজিত নিক্সন, কিসিঞ্জার, ইয়াহিয়া, ভুট্টো, গোলাম আযম, নিজামী, সাঈদীদের প্রতিনিধিত্ব করছেন জামায়াতের অঘোষিত আমির এবং বিএনপি প্রধান বেগম খালেদা জিয়া। রাজনীতিতে চিরশত্রু-চিরমিত্র বলে কোন কথা নেই। পরাজিত পাকিস্তানের প্রতীক বেগম খালেদা জিয়াকে চিরজীবনের জন্য পরাজিত করার লক্ষ্য নিয়েই বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা মেনন, ইনুদের নিয়ে জোট করেছেন। শেখ হাসিনার ওপর কারো মাতব্বরী বা খবরদারি করার দরকার নেই। বঙ্গবন্ধু হত্যা ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন না, এটা নিশ্চিত হয়েই শফিউল্লাহকে বঙ্গবন্ধুকন্যা সংসদ সদস্য পদে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু সরকারকে জাসদের যারা বিপর্যস্ত করেছে, সেই সিরাজুল আলম খান, মেজর জলিল, কর্নেল তাহের আজকে রাজনীতিতে দৃশ্যপটে নেই।শেখ হাসিনাকে শুধু আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বা গতানুগতিক একজন রাজনীতিবিদ মনে করার কোন কারণ নেই। খালেদার পেট্রোল বোমার রাজনীতি এবং এরশাদের নির্বাচনকলীন সময়ের হঠকারিতা এবং বেঈমানীকে দক্ষতার সাথে মোকাবিলা করে, একজন লৌহ মানবীর চেয়েও দৃডতা প্রদর্শন করে ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে পুনরায় ক্ষমতায় এনেছেন শেখ হাসিনা। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন না হলে আজকে কোথায় থাকতো গণতন্ত্র? আবার মঈনউদ্দিন-ফখরুদ্দীন স্টাইলের সরকার ক্ষমতা দখল করতো। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন একদলীয় হলেও এই নির্বাচন গণতন্ত্র রক্ষা করেছে, দেশে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন অনুষ্ঠানের একক কৃতিত্ব শেখ হাসিনার। পঁচাত্তর পরবর্তী রাজনৈতিক বাস্তবতা জাসদকে আওয়ামী লীগের কাছাকাছি এনে দিয়েছে। বিগত এবং বর্তমান সংসদে এবং বিভিন্ন টকশোতে জাসদ নেতা মঈনুদ্দীন খান বাদল যে যুক্তিনিষ্ঠা ও দৃঢ়তার সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত ও মুক্তিযুদ্ধের শত্রুদের বিরুদ্ধে বক্তব্য উপস্থাপন করেন তাতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিরই লাভ হয়। আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে হাতেগোনা দু-চারজন মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে বরাবর আপসহীন, প্রত্যয়দৃঢ় ও সত্যনিষ্ঠ বক্তব্য রাখলেও অধিকাংশ নেতাই যুক্তিসিদ্ধ ও লাগসই জবাব দিতে সক্ষম হন না। যা খুবই দুঃখজনক। বিভিন্ন সময়ে টকশোতে বিএনপি-জামায়াতপন্থী 'টকারদের' বক্তব্য খন্ডন করতে ক'জন আওয়ামী লীগের এমপি বা নেতা সক্ষম হন? এ ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বুদ্ধিজীবী-শিক্ষাবিদ-সাংবাদিক-আইনজীবীরা অকুতোভয়ে ভূমিকা পালন না করলে আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত মিথ্যাচারে দেশ এতদিন তলিয়ে যেত। সবশেষে, বর্তমানে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা এসেছে। ইতিমধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। অযথা জাসদ ও শফিউল্লাহকে নিয়ে টানাটানি করলে খুনি জিয়ার পরিবার এবং এরশাদ লাইমলাইটে চলে আসবে। একই সঙ্গে শেখ হাসিনার হাত দুর্বল হবে। আল্লার দয়ায় বঙ্গবন্ধুকন্যা আর কয়েকটা বছর সরকার পরিচালনায় থাকতে পারলে দেশের চেহারা যেমন পাল্টে যাবে, তেমনি স্বাধীনতাবিরোধীদের নেত্রী খালেদা জিয়া এবং তার দোসররা নির্মূল না হলেও মাথা তুলে আর দাঁড়াতে পারবে না। এই অবস্থায় স্বাধীনতাবিরোধীচক্রকে চিরতরে স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বাধীনতার পক্ষের সকল শক্তিকে একাত্তরের মতো ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।যে অবস্থায় এখন সরকার আছে,দেশরত্ম যেমন ভাবে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন,এই ধারাবাহিকতা আগামী সাধারন নির্বাচন পয্যন্ত যদি ধরে রাখা যায়,আমার বিশ্বাস শুধু জাতির জনকের হত্যাকারীরা নয়,সকল অশুভ শক্তি যুগ যুগান্তরেও আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি না। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী দেরত্ম শেখ হাসিনার নিকট আকুল আবেদন, কালবিলম্ব না করে আপনি আপনার বড়ভাই শেখ সেলিম,আপনার স্নেহধন্য জনাব হানিফ,ক্যপ্টেন তাজ সাহেবদের থামান।কোন কারনে জোটে ভাঙ্গন দেখা দিলে আওয়ামী লীগের বিশাল কর্মী বাহিনী তাঁদের ক্ষমা করবেনা। " জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা"

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন