পোস্টগুলি

জুন, ২০১৬ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে
ছবি

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আসন্ন জাতীয় কাউন্সিল-তৃনমূলের ভাবনা--- ______________________________________ রোজার পর জুলাইয়ের ১০/১১ তারিখে ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতিয় কাউন্সিল এর তারিখ নির্ধারীত হয়েছে।আওয়ামীলীগ- এর কাউন্সিল অধিবেশন মানেই সংস্কার, গতিশীলতা, নতুনত্ব, আধুনিকতা, প্রগতি। প্রত্যেকবারেই চমক সৃষ্টির ধারাবাহিকতা থেকে দলটি বিচ্যুত হয়নি। গঠন তন্ত্রের সংস্কার করে যুগ উপযোগি রাজনীতির ধারাবাহিকতা রক্ষা করা থেকেও পিছু হটেনি দলটি। বাংলাদেশের রাজনীতিতে বহুল প্রচলিত একটি কথা প্রায়শ: শুনা যায়, "আওয়ামীলীগ আজ যাহা চিন্তা করে অন্য রাজনৈতিক দল তা দশ বছর পর চিন্তা করে।আওয়ামী লীগ শ্রষ্টার ভুমিকা পালন করে,অন্যরা তা ভোগ করে।" বর্তমান আওয়ামী লীগ এবং জাতির জনকের আদর্শের আওয়ামী লীগের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ বিকশিত হয়েছিল ৬ দফা কেন্দ্রিক স্বাধীনতার আখাংকার বহি:প্রকাশ এবং পশ্চিম পাকিস্তানীদের শাষন শোষনের বাস্তব চিত্রের প্রতিবাদের বীজ থেকে।পক্ষান্তরে বর্তমান আওয়ামী লীগ পুন:জীবিত হয়েছে স্বৈরশাষকদের অগনতান্ত্রিক ফ্যাসিস্ট শাষনের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামের ভিত্তি রচনার সফল নেতৃত্বের গুনে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন আওয়ামী লীগের সভাপতি তখন তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিপুল বিজয় অর্জন করেছিল দলটি। তখনই আওয়ামী লীগ দেশের সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলের মর্যাদা ও স্বীকৃতি লাভ করেছিল । সত্তরের নির্বাচনের ঐতিহাসিক বিজয় ছিল আওয়ামী লীগের ইতিহাসে সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। এর মধ্য দিয়ে দলটি মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়ার নৈতিক ও আইনগত ভিত্তি অর্জন করেছিল। ইতিহাস এর অংশ নয়, ইতিহাস তৈরিতে একক এবং অসাধারণ ভূমিকা রেখেছিল আওয়ামী লীগ। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের শাষনভার গ্রহন করে, রাষ্ট্রের সমূদয় কাঠামো গঠন করার প্রাক্কালে সময়ের প্রয়োজন ছিল অবশ্যম্ভাবি। সসস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে দেশের অভ্যন্তরে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, শিল্পকলকারখানা, রাস্তা ঘাট,পুলকালভার্ট,ব্যাংবীমা, বাড়ীঘর সবকিছুই ছিল বিধ্বস্ত লন্ডভন্ড।উপরিন্তু যুদ্ধের ফলে সাধারনের নিকটেও মারানাস্ত্রের মজুদ গড়ে উঠেছিল।নয়মাসের যুদ্ধফেরৎ মুক্তিযুদ্ধা, প্রায় পাঁছ লক্ষের কাছাকাছি বিরঙ্গনা মা বোনের পুণ:বাসন, রাজাকারের অস্ত্র ও গোলাবারুদ কেড়ে নেয়া ইত্যাদি সহজ ব্যাপার ছিলনা কিছুতেই। এরই মধ্যে যোগ হয়েছিল প্রকট খাদ্য ঘাটতি। সব কিছু মিলিয়ে নতুন দেশের নতুন সরকার তড়িৎ সব সামাল দেয়ার সক্ষমতা অর্জনের আগেই যুক্ত হতে থাকে দেশী ও আন্তজাতিক চক্রান্ত।মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি নানাভাবে নতুন সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার শুরু করে। অল্প সময়ের মধ্যেই আওয়ামী লীগের ওপর চরম বিপর্যয় নেমে আসে। জাতির জনকের জাতিয় ও আন্তজাতিক উজ্জ্বল ভাবমুর্তি থাকা সত্ত্বেও শাসক দল হিসেবে সাফল্য ও ব্যর্থতা নিয়ে এগিয়ে চলছিল দলটি। সেটা কোনো অস্বাভাবিক ঘটনাও ছিল না। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের শাসনকালটা কোনোভাবেই ভালো সময় ছিল না, থাকার কথাও নয়। ক্ষমতাসীন হয়ে ফুল বিছানো পথে হাঁটার সুযোগ কিংবা সৌভাগ্য আওয়ামী লীগের হয়নি। জাতীয় ও আন্ত: র্জাতিক ক্ষেত্রে বিরোধী ও বৈরী শক্তিকে মোকাবেলা করে, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী দেশীয় ও আন্তজাতিক শক্তির গোপন-প্রকাশ্য ষড়যন্ত্র, অন্তর্ঘাত-নাশকতা মোকাবেলা করে জাতীয় পুনর্গঠনের কঠিন কাজটি তখন আওয়ামী লীগকে করতে হচ্ছিল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে। সাফল্য ব্যার্থতার খতিয়ান টানার সময়ের আগেই নির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকারকে সম্পুর্ন অবৈধ বিপদগামী সামান্য সংখ্যক সেনাসদস্যের সামরিক অভ্যুত্থানে উৎখাত করে একতরফা অপ-প্রচারের মাধ্যমে জাতির জনকের পরিবার ও আওয়ামী লীগের ভাবমুর্তি জাতিয় ও আন্তজাতিক পয্যায়ে ক্ষুন্ন করতে থাকে কুচক্রি মহল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে ইতিহাসের চাকা উল্টোপথে ঘোরানোর অপচেষ্টা শুরু হয়। বঙ্গবন্ধুর পর তার চার রাজনৈতিক সহযোগীকে জেলখানার ভিতর হত্যা, জেলা-থানা পয্যায় গুপ্ত হত্যা, সেনাবাহিনীতে মুক্তিযুদ্ধা সেনাকর্মকর্তা নিধন, প্রশাসনের অভ্যন্তরে আওয়ামী ভাবধারার কর্মকর্তা কর্মচারিদের বিনা অজুহাতে চাটাই, প্রগতিমনা লেখক সাহিত্যিক সাংবাদিকদের নিগৃহিতের ফলে সর্বস্তরে আওয়ামী শুন্যতার সৃষ্টি করে।জাতির জনকের বিশ্বস্ত সহচরদের হত্যা, মামলা ব্যতিরেকে জেলে প্রেরনের কারনে চরম নেতৃত্ব সংকটে পড়ে আওয়ামী লীগ। দলটি আবার কোনো দিন একটি বড় রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে কিনা, বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফিরে আসবে কিনা, পুন:রায় রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে পারবে কিনা– ইত্যাদি চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছিল জনমনে। পঁচাত্তর-পরবর্তী সময়ে ষড়যন্ত্রিরা খুব জোরেশোরেই প্রচার করতেন আওয়ামী লীগ মুসলিম লীগের চেয়েও খারাপ অবস্থায় পৌছে গেছে। পকিস্তান প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দিয়েছিল মুসলিম লীগ কিন্তু পরে পাকিস্তানের রাজনীতিতে দলটি ক্রমাগতই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেছে। বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ রাজনৈতিক লড়াই এবং মুক্তিযুদ্ধে ধারাবাহিক নেতৃত্ব দিয়েছে আওয়ামী লীগ। সুতারাং আওয়ামী লীগও দেশ শাষনের সুযোগ পাবেনা, বাংলাদেশের রাজনীতিতে অপাংক্তেয় হবে দলটি। স্বাধীন দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, এএইচ এম কামারুজ্জামান এবং মনসুর আলীর মতো নেতাদের হত্যা করে নেতৃত্বের যে শূণ্যতা তৈরি করা হয়েছিল তা পূরণ করা কীভাবে সম্ভব হবে তা নিয়ে শঙ্কা ও সংশয় দেশব্যাপিতো ছিলই, খোদ মধ্যম সারির আওয়ামী নেতাদের মধ্যেও ছিল। উধ্বতন নেতারা যদিও দল ছেড়ে যাননি কিন্তু দলীয় শীর্ষ পদের নেতৃত্ব নিয়ে কয়েকভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। মধ্যম ও তৃনমুলের নেতারা, এবং কি মুক্তিযোদ্ধাদের একাংশও দলে দলে দলত্যাগ করে জাতির জনকের হত্যাকারিদের সাথে হাত মিলায়। ফলে আওয়ামী লীগের নি:শেষের ধারনাটি জনমনে পোক্ত আকারই ধারন করেছিল। কালক্রমে সব শঙ্কা, সংশয় দূর হয়েছে। আওয়ামী লীগের পুনরুত্থানের সম্ভাবনা নিয়ে যারা সন্দেহ পোষণ করতেন তাদের সব অনুমান ভুল প্রমাণিত হয়েছে। ভুল প্রমাণ করেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জৈষ্ঠকন্যা শেখ হাসিনা। তিনি আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব গ্রহন করা প্রসঙ্গে বিস্তারিত ব্যাখ্যায় না গিয়ে সংক্ষেপে শুধু এটাই বলি, "শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নবজীবন লাভ করেছিল, শক্তি সঞ্চয় করেছিল, ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল এবং জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ১৯৯৬ ইং সালে শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছিল।" তাঁর পরবর্তি ইতিহাস ১৫ ই আগষ্টের বিয়োগান্তক ঘটনাক্রমের চেয়ে কোন অংশেই কম নয়।৯৬-২০০১ ইং সালের সরকার পরিচালনায় আওয়ামী লীগ শতভাগ সফল আমি বলবনা। সফলতার উদাহরন যেমন অনেক দেয়া যায় বিফলতার তেমনি শত অভিযোগ আনা যায়। কোন সরকার শতভাগ সফলতার কৃতিত্বের দাবী করতে পারেনা।বিশ্বের কোন রাষ্ট্রের রাষ্ট্র পরিচালনায় নিয়োজিত রাজনৈতিক দল কোন কালেই শতভাগ সফল এমন দাবী করেওনি। কিন্তু ২০০১ ইং সালে ক্ষমতা পরিত্যাগের ঘন্টা খানেকের মধ্যে তথাকথিত তত্বাবধায়ক সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ইন্ধনে, 'যে ন্যাক্কার জনক নির্য্যাতনের উদাহরন সৃষ্টি করা হয়েছিল,তাঁর তুলনা শুধুমাত্র ৭১এর হানাদার বাহিনীর অত্যাচার নির্য্যাতনের সঙ্গেই তুলনা করা যায়।আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে তৃনমুলের নেতাকর্মীও নির্য্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পায়নি।আওয়ামী লীগ নেতাদের ঘরছাড়া করে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে চারদলীয় জোট একরকমের প্রতিরোধহীন একতরফা নির্বাচনে বিপুল সংখ্যা গরিষ্টতা নিয়ে সরকার গঠন করে।সরকার গঠন করেই আর একদফা নিগৃহিতের উদাহরন সৃষ্টি করে জোট সরকার।প্রথম দফায় জামাত বিএনপি -শিবির মিলিত নির্য্যাতন করলেও দ্বিতীয় দফা নিয্যাতন শুরু করা হয় সরকারি পৃষ্টপোষকতায়। ক্ষমতায় বসেই জোট সরকার যার্ব গঠন করে সাথে 'পুলিশ ও বিডি আরের সংযোগ' ঘটিয়ে নাম দেয়া হয় 'যৌথ অভিযান'। নতুনত্বের কারনে জনমনে উল্লেখীত অভিযানের ব্যাপারে ভীতির সঞ্চার করে।শুরু করে আওয়ামী নিধন, তথাকথিত 'ক্রস ফায়ারের 'নতুন শব্দ" আবিস্কৃত করে জোট সরকার। সরকার কতৃক জনগনকে হত্যা করার আইনসিদ্ধ অভিনব একনাম 'ক্রস ফায়ার'। তাঁর আগে ৯১ইং সালে বিএনপি জামায়াতের সমর্থনে সরকার গঠন করার তিন মাসের মাথায় কোন প্রকার ইমার্জেন্সি ঘোষনা ছাড়াই তথাকথিত "ক্লিন হার্ট অপারেশনের" নামে সেনাবাহিনী নামিয়ে অকাতরে হত্যা, গুপ্ত হত্যা, এনকাউন্টারের অজুহাতে হত্যা করে আওয়ামী শুন্য করার চেষ্টা করা হয়। সেনাবাহিনী কতৃক ধৃত হওয়ার সাথে সাথে মৃত্যু নিশ্চিত করে বলা হতে থাকে 'হার্ট এটাকে' মৃত্যু হয়েছে।কত সংখ্যক নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল তার পরিসংখ্যান আদ্যবদি সরকারি তরফ থেকে জানানো হয়নি।'৭১ এর ২৫ শে মার্চ রাতে বাংলার মানুষের উপর এবং আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উপর পশ্চিম পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কতৃক পরিচালনা করা হয়েছিল --"অপারেশন সার্চ লাইট"। স্বাধীন দেশের সরকার কতৃক পরিচালনা করা হয় 'অপারেশন ক্লিন হার্ট।' আওয়ামী নিধনের স্বাধীনতা বিরুদ্ধ শক্তির দ্বয়ের মধ্যে কি অদ্ভুত মিল --!! আজকে যারা জঙ্গিদমনে যৌথ অভিযানের বিরুধিতা করছেন-তাঁদের দ্বারাই 'আইন সিদ্ধ রাষ্ট্রীয় মানুষ হত্যা'র তথাকথিত 'ক্রস ফায়ার' সংস্কৃতি চালু হয়েছিল। বর্তমান সরকারের অভিযান পরিচালিত হচ্ছে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে 'কান্নাকাটি 'শুরু করেছেন বেগম জিয়া এবং তাঁর নেতৃত্বের অন্যরা।পাঁপ বাপকেও ছাড়েনা, তিনি যে তাঁদের 'রক্ষক' নীজেই প্রমান করে দিলেন।এই কারনেই জনগন অনেক আগেই তাঁর নাম রেখেছেন 'জঙ্গীমাতা খালেদা'।" মুলপ্রসঙ্গে আসি, ২০০১ ইং সালের পর কয়েকদফা শেখ হাসিনাকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়।বাংলাদেশের কোথাও আওয়ামীলীগকে মাঠেঘাটে দাঁড়াতেও দেয়া হয়নি।এবং কি জননেত্রী শেখ হাসিনাকেও প্রত্যেক জেলা উপজেলা সফরে বাধা প্রদান করা হয়েছিল।তাঁর নীজ জেলায় জনসভাস্থলে পয্যন্ত ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়েছিল তাঁকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে। বহু চড়াই উৎরাই পেরিয়ে শেখ হাসিনার বিচক্ষনতায়, "গনতান্ত্রিক দেশে অগনতান্ত্রিক রীতি, "তত্বাবধায়কে'র নীতি পুর্নাঙ্গ বাস্তবায়ন করে 'খালেদা জিয়ার ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চক্রান্ত'কে রুখে দিতে সক্ষম হন।খালেদা জিয়ার ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখাকে প্রতিহত করতে গিয়ে আন্তজাতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয় বাংলাদেশকে। মাত্র নির্বাচনের জন্য গঠিত তিন মাসের সরকার- দুই বছর বাংলাদেশের জনগনের উপর চেপে বসে,শুধু তাই নয় ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার বহুবীদ ষড়যন্ত্রেও লিপ্ত হয়।শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশের মানুষের অনড় অবস্থানের কারনে আন্তজাতিক ষড়যন্ত্র মুখ থুবড়ে পড়তে বাধ্য হয়, শেষাবদি সাধারন নির্বাচন ঘোষনা করে শেখ হাসিনাকে 'জেলমুক্তি'দিতে বাধ্য হয়। জননেত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষনতা,অপরিসিম ধৈয্য, রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ঘোষিত নির্বাচনে নিরঙ্কুস সংখ্যা গরিষ্টতা পেয়ে সদর্পে বাংলাদেশের ক্ষমতায় ফিরে আসে। ৭০এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামীলীগের উত্থান ছিল দেশপ্রেমের আবেগের উত্থান। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০০৮ইং সালের আওয়ামীলীগের উত্থান বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বুঝাপড়ার উত্থান।সুতারাং বঙ্গবন্ধুর আওয়ামীলীগকে পতন ঘটানো যতই সহজ হয়েছিল- শেখ হাসিনার আওয়ামীলীগকে পতন ঘটানো ততই কঠিন হবে। ইহা একান্তই সত্য যে,' আবেগের মৃত্যু হতে পারে-আদর্শের মৃত্যু হয়না'। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্ব দল এবং দেশকে যে উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিল- তাঁর কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনার নেতৃত্ব-সে উচ্চতার মাত্রা কোন অংশেই কমেনি। বরং অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামীলীগ কতৃক সরকার পরিচালনা দৃশ্যত উন্নত, আধুনিক ধ্যান ধারনায় পরিপুষ্ট। জাতিয় ও আন্তজাতিক পয্যায় দল এবং দেশ স্বাধীনতার পরে যে কোন সময়ের চেয়ে ভাল অবস্থানে আছে। উপসংহারে বলতে পারি, এবারের আওয়ামী লীগের জাতিয় কাউন্সিল- অন্য যে কোন সময়ের কাউন্সিল অধিবেসনের চেয়ে গুনগত, রাজনৈতিক, সরকার পরিচালনা, দলের নেতৃত্ব পরিবর্তনে আলাদা আবেদন সৃষ্টি করবে।দলের গঠনতন্ত্রেও আসবে সুদুর প্রসারী চিন্তাচেতনায় পরিপুষ্ট অধিকতর গনতান্ত্রিক সংস্কার। যা দলের নেতাকর্মী ও দেশবাসি আশা করে, "জাতির জনকের কন্যার গতিশীল নেতৃত্বের নিকট"। পরিশেষে দলের কাউন্সিল অধিবেশনের সফলতা কামনা করছি কায়মনে-- 'জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু'

ছবি

উত্তরায় বিপুল অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা,ডিএমপির সংবাদ সম্মেলন--জনমনে মেজর জিয়ার ক্ষমতা গ্রহনকে মনে করিয়ে দিল। _______________________________________ ঢাকার উত্তরা থেকে উদ্ধারকৃত অস্ত্র গোলাবারুদের বিশাল চালানটি বিএনপি-জামায়াত-শিবির-জঙ্গীদের বলে অনেকটাই নিশ্চিত তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। দেশে ভয়াবহ অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতেই অস্ত্রের চালানটি আনা হয়েছিল। এরসঙ্গে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্র জড়িত। চক্র দুটি ২০১৩ সাল থেকেই আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে মরিয়া হয়ে আছে। দেশী ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের অংশ হিসেবে অস্ত্রের চালানটির যোগান এসেছে ভারতের নিষিদ্ধ সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব অসমের (উলফা) কাছ থেকে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হলে উলফা যাতে আবার বাংলাদেশে তাদের ঘাঁটি ঘাড়তে পারে, তার অংশ হিসেবেই অস্ত্রের চালানটি সরকার বিরোধীদের কাছে হস্তান্তরের চেষ্টা হয়েছিল। বড় ধরনের অস্ত্রের চালান ধরা পড়ায়, বড় ধরনের নাশকতার হাত থেকে দেশ রক্ষা পেয়েছে। ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন। বলেছেন, এতবড় অস্ত্রের চালান আনার সঙ্গে কোন সাধারণ বা কোন অস্ত্র ব্যবসায়ী চক্রের জড়িত থাকার সম্ভবনা নেই বললেই চলে। স্বাভাবিকভাবেই এতবড় অস্ত্র গোলাবারুদের চালানের সঙ্গে দেশী-বিদেশী চক্র জড়িত থাকার বিষয়টি স্পষ্ট। ধারণা করা হচ্ছে, ২০১৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত যারা দেশে নাশকতামূলক কর্মকা- চালিয়ে সরকার উৎখাতের চেষ্টা করছে, তারাই এমন অস্ত্রের চালান আনতে পারে। প্রসঙ্গত, বিএনপি-জামায়াত-শিবির ও জঙ্গীরা দেশব্যাপী তান্ডব চালিয়ে দেশে পরিকল্পিত ভাবে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় দেশে একের পর এক শিক্ষক, ব্লগার, প্রকাশক, লেখক, পুরোহিত, ধর্মযাজক ও পুলিশসহ নারী শিশুদের হত্যা এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর বর্বর নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের চেষ্টার সঙ্গে যারা জড়িত তারাই দেশে বড় ধরনের নাশকতা চালাতে চালানটি এনেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। অস্ত্রগুলো একেবারেই নতুন। পুরোপুরি প্যাকিং করা। এসব অস্ত্র গোলাবারুদ কোন সময়ই ব্যবহৃত হয়নি। পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেসব অস্ত্র ব্যবহার করে থাকে উদ্ধারকৃত পিস্তল গুলোর সঙ্গে তার মিল রয়েছে। তবে একটি অদ্ভুত বিষয়, অস্ত্রের গায়ে সিরিয়াল নম্বর থেকে শুরু করে অনেক কিছুই স্থায়ীভাবে খোদাই করে লেখা রয়েছে। শুধু অস্ত্রগুলো কোন দেশের তৈরি তা লেখা নেই। এ থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট, অস্ত্রের চালানটির সঙ্গে আন্তর্জাতিক চক্র ও চক্রান্ত জড়িত।কোন সময় অস্ত্র গোলাবারুদ ধরা পড়লে যাতে তৈরিকারক দেশ সম্পর্কে কোনদিনই কোন দালিলিক প্রমাণাদি না থাকে এজন্যই ইচ্ছাকৃতভাবে তৈরিকারক দেশ অস্ত্রের গায়ে তাদের দেশের নাম লেখেনা। এটি তৈরিকারক দেশের কৌশল। এযাবত ঘটিত নৃশংস হত্যাকান্ডের অধিকাংশ ঘটনারই রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। চালানো ধারাবাহিক অভিযানে এখন পর্যন্ত যে সমস্ত জঙ্গী গ্রেফতার হয়েছে। তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু অস্ত্র গোবারুদ উদ্ধার হয়েছে। উদ্ধারকৃত অস্ত্র গোলাবারুদের সঙ্গে উত্তরা থেকে উদ্ধারকৃত পিস্তল ও পিস্তলের বুলেটের মিল পাওয়া গেছে। প্রসঙ্গত, কলাবাগানে জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু তনয় হত্যার পর পালানোর সময় পুলিশ এক জঙ্গীকে ঝাপটে ধরে। ওই জঙ্গী তার ব্যাগ ফেলেই চলে যায়। ফেলে যাওয়া ব্যাগে সেভেন পয়েন্ট সিক্স ফাইভ বোরের বিদেশী পিস্তল উদ্ধার হয়।সেই পিস্তল ও বুলেটের সঙ্গে উত্তরা থেকে উদ্ধারকৃত পিস্তল ও বুলেটের মিল রয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর পরই উলফার তৎপরতা বন্ধে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাঁড়াশি অভিযান চলে। বাংলাদেশের মাটি কোন বিদেশী বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বা জঙ্গী গোষ্ঠীকে ব্যবহার করতে দেয়া হবে না বলে ঘোষণা দেয় সরকার। সেই ঘোষণার ধারাবাহিকতায় সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উলফার ঘাঁটির সন্ধানে সাঁড়াশি অভিযান চালানো অব্যাহত রেখেছে। অভিযানে গুঁড়িয়ে যায় অনেক উলফার ঘাঁটি। একের পর এক আটক হতে থাকে উলফা নেতারা। আবার অনেক উলফা নেতা অভিযানের মুখে পালিয়ে ভারতে যাওয়ার সময় সেদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়। অভিযানের পাশাপাশি সর্বশেষ গত বছর বাংলাদেশ থেকে উলফার সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেটিয়া ওরফে গোলাপ বড়ুয়াকে তার দুই সহযোগী লক্ষ্মী প্রদীপ গোস্বামী ও বাবুল শর্মাকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করে বাংলাদেশ সরকার। এছাড়াও বিভিন্ন সময় উলফা চেয়ারম্যান অরবিন্দ রাজখোয়া, সামরিক শাখার উপ-প্রধান রাজু বড়ুয়া, পররাষ্ট্র সচিব শশধর চৌধুরী, অর্থ সচিব চিত্রবন হাজারিকা, সংস্কৃতি সচিব প্রণতি ডেকা ও শীর্ষ নেতা পরেশ বড়ুয়ার পরিবারের সদস্যসহ অন্তত ২৮ জনকে ভারত সীমান্ত দিয়ে পুশব্যাক করা হয়। উলফা নেতাদের ভারতে পূশব্যাকসহ বাংলাদেশে উলফার ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিতে আওয়ামীলীগ সরকারের কড়া অভিযানে বাংলাদেশে উলফার নিরাপদ আস্তানা ও নেটওয়ার্ক পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়ে। এতে উলফা আওয়ামী লীগ সরকারের উপর চরম ক্ষিপ্ত। উলফা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সক্রিয় হয়ে ওঠে। ভারতীয় এই বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনটি বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। তারা আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টাকারী বিএনপি-জামায়াত-শিবির ও জঙ্গীদের সঙ্গে হাত মেলায়। বাংলাদেশে ব্যাপক জঙ্গী তৎপরতা ও নাশকতামূলক কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের অস্ত্র গোলাবারুদ দিয়ে সহায়তা করতে তৎপর হয়ে পড়ে। যাতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হলে উলফা আবার বাংলাদেশে তাদের নিরাপদ ঘাঁটি গাড়তে পারে। এমন আশায় উলফা আন্তর্জাতিক মদদে বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের ব্যাপক উত্থান ঘটানোর চেষ্টা করতে থাকে। তারই অংশ হিসেবে উলফা তাদের সংগ্রহে থাকা জব্দকৃত অস্ত্রের বড় চালানটি তাঁদের চিহ্নিত লোকদের দেয়ার জন্য সেখানে রেখে যায়। এসব অস্ত্রের পুরোটাই জামায়াত-শিবির ও জঙ্গীদের হাতে হস্তান্তর করার চেষ্টা করা হয়েছিল বলে সার্বিক পর্যালোচনায় এবং প্রাথমিক তদন্তে মনে হয়েছে। যেসব অস্ত্রগোলাবারুদ উদ্ধার হয়েছে, এর চেয়েও ভারি অস্ত্র গোলাবারুদ ইতোপূর্বে জামায়াত-শিবির ও জঙ্গী গোষ্ঠীগুলোর কাছ থেকে উদ্ধার হওয়ার নজির রেকর্ড আছে। উদ্ধারকৃত পিস্তলগুলো পেশাদার সন্ত্রাসী ও জঙ্গী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। তবে পেশাদার সন্ত্রাসীদের কাছে এতবড় অস্ত্রের চালান আসার ন্যূনতম কোন সম্ভাবনা নেই। এছাড়া উদ্ধারকৃত বেয়োনেটগুলো নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন জেএমবি সদস্যদের মধ্যে কমান্ডো নাইফ (গেরিলা চাকু) হিসেবে ব্যবহারের নজির আছে। "অভিযানে খালের পানিতে ডুবে থাকা সাতটি ট্রাভেল ব্যাগ উদ্ধার হয়। সেই ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয় সেভেন পয়েন্ট সিক্স টু বোরের ৯৫টি ও ২টি দেশীয় পিস্তল, সেভেন পয়েন্ট সিক্স টু বোবের ১৯২টি ম্যাগজিন, ১০টি ম্যাগজিন গ্লোক পিস্তল, ২৯৫টি এসএমজির (সাব মেশিন গান) ২৬৩টি ম্যাগজিন, ১০টি বেয়োনেট, ১০৪টি ছোট সিলিন্ডার আকারের বুলেট তৈরির বাক্স, নাইন এমএম (নয় মিলিমিটার) পিস্তলের ৮৪০টি তাজা বুলেট, চীনের তৈরি সেভেন পয়েন্ট সিক্স টু বোরের ২১৭টি তাজা বুলেট ও অস্ত্র পরিষ্কার করার ক্লিনিং রড ১৮৮টি উদ্ধার হয়।" সম্মানীত পাঠকদের একটু পেছনে যাওয়ার অনুরুধ করছি। ৭৫' এ বঙ্গবন্ধুকে নৃসংশভাবে হত্যা করার পর এদেশ মুলত: স্বাধীনতা বিরুধী দল ও জোট কতৃক শাষিত হতে থাকে।তাঁদের সকলের আমলেই ভারতের সেভেন সিস্টার খ্যাত বিচ্ছিন্নতাবাদি সংঘঠন গুলী বাংলাদেশের পার্বত্য জেলা এবং টেকনাফ, সিলেট এলাকায় তাঁদের ঘাঁটির সৃষ্টি করে।বার্মার বিচ্ছিন্নতাবাদি নেতার ঘাঁটিও গত কিছুদিন আগে কক্সবাজার এলাকা থেকে আবিস্কৃত হতে দেখা গেছে।প্রতিবেশি দেশ সমুহের বিচ্ছিন্নতাবাদিদের আশ্রয় দেয়ার কারনে সেই দেশগুলিও এযাবৎকাল বাংলাদেশের বিচ্ছিন্নতাবাদি গোষ্টি গুলিকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে প্রতিশোধ নেয়ার একরকম কৌশল দেখা গেছে। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এই দেশটির জম্মদাতা। জম্মদাত্রী মা'য়ের আন্তরীকতায় আর পালিত মা'সীর আন্তরীকতায় ব্যবধান বুঝিয়ে বলার দরকার হয়না। সুতারাং এই দেশটিকে নিয়ে আন্তজাতিক মহলকে খেলার সুযোগ আওয়ামী লীগ দিতে পারেনা। সঙ্গত কারনে সীমান্তের পার্বত্য এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিশাল বিশাল কয়েকটি ঘাঁটি বাংলাদেশ সরকার ঘুটিয়ে দেয় এবং বিপুল অস্ত্রও গোলাবারুদ উদ্ধার করে। বাংলাদেশের সরকার প্রধান প্রকাশ্য ঘোষনা দিয়েই বিদেশী সন্ত্রাসী গুষ্টি গুলীকে বাংলাদেশের ভুখন্ড থেকে উচ্ছেদ করে।ফলও লাভ করে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সঙ্গে তালমিলিয়ে ভারতীয় সরকারও তাঁদের সীমান্ত এলাকায় উপয্যপুরী অভিযান পরিচালনা করা শুরু করে।ফলত: পার্বত্য এলাকার অস্ত্রধারী সন্তু লারমা সহ অপরাপর সন্ত্রাসী গ্রুপ গুলী ভারতে বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থান করতে না পেরে- আওয়ামী লীগের গতবারের শাষনে আত্মসমর্পন করতে বাধ্য হয়।এবারও সুন্দরবন কেন্দ্রিক বেশ কিছু জলদুস্যু গ্রুপ ভারত মহাসাগরে এবং সুন্দরবনের ভারতীয় অংশে অবস্থান করতে না পেরে আত্মসমর্পন করতে বাধ্য হয়েছে। তাছাড়াও বড় একটি রাজনৈতিক বিজয় সম্পর্কে আমি আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই।বিজেপি ভারতের মৌলবাদি সংগঠন।শিবসেনা সহ আরো কয়েকটি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন উগ্র হিন্দু জাতীয়তা বাদি সংগঠন।ভারতের কংগ্রেস অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দল।দলীয় দৃষ্টিকোন থেকে বিজেপি বাংলাদেশের দৃশ্যমান রাজনৈতিক দল সমুহের মধ্যে আওয়ামী লীগের কখনই বন্ধু ছিলনা।তাঁদের দলীয় কাউন্সিল এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন সমুহেও ডেলিকেট পাঠিয়ে তেমন বন্ধুত্বের নিদর্শন রাখার তোড়জোড় কখনই দেখা যায়নি। কমিউনিষ্ট আন্দোলনে বা সমাজতন্ত্রীদের আন্দোলনে আন্তজাতিকতা স্পষ্ট অনুভব করা যায়। তেমনি মৌলবাদিদের আন্দোলন সংগ্রামেও ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে আন্তজাতিকতার রেশ স্পষ্ট দৃশ্যমান।পাকিস্তানের জামায়াত,ভারতের শিবসেনা,বার্মার বোরোদের মধ্যে যোগসাজস মাঝে মধ্যেই টের পাওয়া যায়। পাঠক লক্ষ করেছেন কিনা জানিনা, বিজেপি সর্বশেষ সংখ্যাগরিষ্টতা পেয়ে সরকার গঠন স্পস্ট হতে না হতে বাংলাদেশে বিএনপি জামায়াত সহ আরো কতিপয় দলের কেন্দ্রীয় অফিস সহ সারা দেশব্যাপি মিষ্টি বিতরন এবং মিষ্টিমূখের বন্যা বয়ে যায়।তাঁরা এতবেশি উৎফুল্ল হয়েছিল যে, "মনে হচ্ছিল বিজেপি দিল্লির মসনদ দখল করার আগেই- বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতা বিএনপি জামায়াতই পেয়ে গেছে।" তাঁদের আনন্দের এই মহোৎসব অমূলক নয়। ভারতের কংগ্রেসের সাথে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভাল সম্পর্কের অতীত ইতিহাস রয়েছে।কংগ্রেস ক্ষমতা থেকে বিদায় নেয়ার পর সঙ্গত কারনে তাঁদের বন্ধুদলের যেহেতু ক্ষমতা গ্রহন নিশ্চিত দেখা যাচ্ছিল তখন তাঁদের আনন্দ হওয়ারই কথা। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কখনই কংগ্রেসের খমতায় থাকা না থাকার মধ্যে এইরুপ উল্লাস বা বেদনার লক্ষন দেখা যায়নি।ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটেই ভারতীয় জনগনের সঙ্গে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তিসমুহের নিবিড় বন্ধন রয়েছে।আওয়ামীলীগের উল্লাস বা বেদনা প্রকাশ করা না করায়, 'এই বন্ধন কখনই চিহ্ন হওয়ার নয়।'ভারতের বিজেপি এবং বাংলাদেশের বিএনপি জামায়াত বিষয়টি সম্পর্কে 'জানেনা বা ধারনায় নেই 'এইরুপ চিন্তা যারাই করেন তাঁরা বোকার স্বর্গেই বাস করেন।' বর্তমানের ভারতীয় খমতাসীন দল বাংলাদেশের আওয়ামীলীগ সরকারকে নি:শর্ত সমর্থন দেয়ার একমাত্র কারন শান্তিতে ভারতের শাষনকায্য পরিচালনা করা। নির্ভেজাল শাষনকায্য পরিচালনায় বিজেপিকে আগামী সংসদ নির্বাচনেও খমতায় আনতে সাহায্য করতে পারে।আর তাই বিজেপি সরকার তাঁদের দলের অভ্যন্তরে মতবেদ থাকা সত্বেও বাংলাদেশের বর্তমান সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।সমর্থনের বিনিময়ে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদি শক্তিসমুহকে নিস্তেজ করে ভারতকে খন্ড বিখন্ডের হাত থেকে রক্ষা করতে পেরেছেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের বর্তমান সরকারের ঠিক এই দুর্বলতাকেই বেশ সুন্দর কৌশলি ভাবে কাজে লাগিয়ে সীমান্ত সমস্যা সহ আরো কতিপয় যুগযুগান্তরের বিরাজমান সমস্যা সমাধান করে নিয়েছেন।এক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দেয়ানেয়ার কুটনীতি অনুসরন করে শতভাগ স্বার্থ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন। বিনাযুদ্ধে সীমান্ত সমস্যার সমাধান কোন দেশ করতে পেরেছে, এইরুপ উদাহরন না থাকা সত্বেও বাংলাদেশ -ভারত হাজার বছরের ঐতিহ্য ভেঙ্গে তাও সম্ভব করতে পেরেছে। ভারত এবং বার্মার নিকট থেকে বিশাল সমুদ্র এলাকা দখলে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন। এইক্ষেত্রে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদিদের চেয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থীতিশীলতা ও জঙ্গী গোষ্টি, পাহাড়ি সসস্ত্র গোষ্টি,বঙ্গোবসাগরে জলদুস্যু, সুন্দরবন কেন্দিক সসস্ত্র বাহিনী সমুহের অপ-তৎপরতা বন্ধ করাই আওয়ামী লীগ সরকারের একমাত্র উদ্দেশ্য। তথাকথিত বঙ্গদেশ প্রতিষ্ঠা বা আরাকান সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধারকেও এক্ষেত্রে উড়িয়ে দেয়া যায়না।ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উচ্ছেদ করে সরকার বাংলাদেশের সমূহ দুটি বড় বিপদ সংকেত থেকেও দেশকে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু কন্যা তাঁর সুদুরপ্রসারী চিন্তাচেতনার ফলপ্রসূ বাস্তব পদক্ষেপ সমুহের উৎকৃষ্ট বাস্তবায়নে শতভাগ সফলতা অর্জন করতে পেরেছেন। সঙ্গত কারনেই বাংলাদেশের উগ্রজঙ্গীগোষ্টি, ভারতীয় জঙ্গীগোষ্টি, যুদ্ধাপরাধী জামায়াত শিবির, ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি,বাংলাদেশের বিচ্ছিন্নতা বাদী শক্তি সমূহের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থেই অলিখিত ঐক্য হতে বাধ্য।তাঁদের পরস্পরকে সাহায্য সহযোগিতা করার ইতিপুর্বে একাধিক উদাহরন চোখের সামনেই বিদ্যমান রয়েছে।এক্ষেত্রে বিএনপি জামায়াতের ২০০১ইং সালে সরকার পরিচালনার সময়ে দশট্রাক অস্ত্র চট্রগ্রাম বন্দরে আটকের সংবাদ বিস্মৃত হওয়ার কথা নয়।তাঁদের সম্মিলিত সম্যক উপলব্দি স্পষ্ট, "আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকাবস্থায় তাঁদের কারো স্বপ্ন বাস্তবায়ন হওয়ার সুযোগ নেই।বাংলাদেশের ভুখন্ড ব্যবহার ব্যতিরেকে ভারত ও বার্মায় কোনপ্রকার সসস্ত্র আন্দোলনের চিন্তা করা বাতুলতা মাত্র।" সুপ্রীয় পাঠকগন, আপনারা একটু গভীরভাবে চিন্তা করলেই একটা বিষয় পরিস্কারভাবে অনূধাবন করতে পারেন।বিএনপির নেতারা যখনই সরকার উৎখাতের প্রকাশ্য হুমকি প্রদান করে তার কয়েকদিন পরেই- হয় বড় রকমের নাশকতার ঘটনা ঘটে, নয়তো বড় জঙ্গী গোষ্টির অস্তিত্ব ধরা পড়ে।সর্ব শেষ হান্নান শাহর সাতদিনের মধ্যে সরকার উৎখাতের ঘোষনার দুইদিন পরেই এই বিশাল অস্ত্রের চালান দৃশ্যমান হল। তাঁদের অদ্য পয্যন্ত কোন হুমকিই অমূলক নয়-প্রত্যেকবারের হুমকিতে কিছুনা কিছু বিষয় স্পষ্ট হয়েছে। এই সমস্ত অশুভ শক্তির চক্রান্তের সম্মুখভাগে থেকে বিএনপি রাজনৈতিক সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।জন সম্পৃত্ত আন্দোলন-সংগ্রামে ব্যর্থ হয়ে দলটি অশুভ শক্তির কাঁধে ভর দিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসতে চায়। অবশ্য দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানও ঠিক এমন কৌশলি ভুমিকা গ্রহন করেই রাষ্ট্র ক্ষমতায় দৃশ্যমান হয়েছিলেন।তাঁর ব্যতিক্রমতো হতেই পারেনা। ' জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু'

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

ডিজিটাল বাংলাদেশ: সোনার বাংলার আধুনিক রূপ লিখেছেন --জুনায়েদ আহমেদ পলক,মাননীয় প্রতিমন্ত্রী,গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।২৩/০৬/২০১৬ ইং ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন। পলাশীর আম্রকাননে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়। হত্যা করা হয় বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে। পরাধীনতার নাগপাশে আবদ্ধ করা হয় বাংলা ও বাংলার মানুষকে। প্রায় দুশ বছরের ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তি এবং ১৯৪৭ সালে তাদের ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল পলিসি’ থেকে জন্ম নেওয়া পাকিস্তানি স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে ভোর আনার প্রত্যাশায় ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আওয়ামী লীগ গঠন করা হয়। জেলে থাকা অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৩ সালের ৯ জুলাই আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে তিনি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ, আওয়ামী লীগ একই সূত্রে গাঁথা। আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়েই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের ভিত্তি রচিত হয়। আর এই ভিত্তি রচনায় বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন তৎকালীন তরুণ ছাত্রনেতা শেখ মুজিব। তাঁর প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করা হয়। ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে বঙ্গবন্ধু তাঁর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইতে বলেছেন: “১৯৪৮ সালের ৪ঠা জানুয়ারি তারিখে ফজলুল হক মুসলিম হলের এসেম্বলি হলে এক সভা ডাকা হল, সেখানে স্থির হল একটা ছাত্র প্রতিষ্ঠান করা হবে।… ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার সাথে সাথে বিরাট সাড়া পাওয়া গেল ছাত্রদের মধ্যে। এক মাসের ভেতর আমি প্রায় সকল জেলায় কমিটি করতে সক্ষম হলাম। যদিও নইমউদ্দিন কনভেনর ছিল, কিন্তু সকল কিছুই প্রায় আমাকেই করতে হত। একদল সহকর্মী পেয়েছিলাম, যারা সত্যিকারের নিঃস্বার্থ কর্মী।” [অসমাপ্ত আত্মজীবনী, পৃষ্ঠা ৮৮-৮৯] পরবর্তীকালে মূলত পাকিস্তানি স্বৈরশাসকদের বৈষম্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে পরিচালিত ছাত্র আন্দোলনকে একটি রাজনৈতিক গণআন্দোলনে রূপ দিতেই আওয়ামী লীগ গঠন অনিবার্য হয়ে ওঠে। ২৩ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন আইন পরিষদে ‘পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে মেনে নেবে’ বলে ঘোষণা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে শেখ মুজিব এর প্রতিবাদ জানান। ফজলুল হক হলের বৈঠকে শেখ মুজিবের প্রস্তাবক্রমে গঠন করা হয় ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’। ১৯৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি আবারও খাজা নাজিমুদ্দিন ঘোষণা করেন, ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু’। এর প্রতিবাদে ১৬ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জেলখানায় অনশন করেন। সেই থেকে শুরু হয় পাকিস্তানি স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সংগ্রাম। এই সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৫৪ সালে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে ২৩৭টি আসনের মধ্যে যুক্তফ্রন্টের শরীক দল আওয়ামী লীগ ১৪৩ আসন পায়। গোপালগঞ্জের আসনে প্রভাবশালী মুসলিম লীগ নেতা ওয়াহিদুজ্জামানকে হারিয়ে শেখ মুজিব জয়ী হন এবং মাত্র ৩৪ বছর বয়সে যুক্তফ্রন্ট সরকারের কৃষি ও বনমন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন। পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় সরকার যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভা ভেঙে দিলে তিনি কোয়ালিশন সরকারের শিল্প, বাণিজ্য, শ্রম, দুর্নীতি দমন ও ভিলেজ এইড দপ্তরের মন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন। Bangabandhu - 16 বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ, আওয়ামী লীগ একই সূত্রে গাঁথা কিন্তু মন্ত্রিত্বের চেয়ে দলের স্বার্থকে বড় করে দেখে আওয়ামী লীগ। তাই দলকে সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন। তিনি আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করে সুদীর্ঘ ২৩ বছর ধরে গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে ধাপে ধাপে চূড়ান্ত পরিণতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যান। এই দীর্ঘ পথচলায় তিনি অনেকবার কারাবরণ করেছেন। অনেক অত্যাচার,নির্যাতন সহ্য করেছেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে আওয়ামী লীগই মূলত পূর্ব বাংলার জনগণের রাজনৈতিক আশা-আকাঙ্ক্ষার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। শত বাধা-বিপত্তির মুখেও আওয়ামী লীগ তার গণতান্ত্রিক সংগ্রাম অব্যাহত রাখে। ১৯৫৮ সালে পাকিস্তানে মার্শাল ল’ জারি করে গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করা হয়। সে সময় আইয়ুববিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয় আওয়ামী লীগ। ১৯৬৪ সালের ‘সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা’ প্রতিরোধে তারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ১৯৬৬ সালে শেখ মুজিব ঘোষণা করেন বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ঐতিহাসিক ‘ছয় দফা’। ইতিহাসে ‘ছয় দফা’কে বিবেচনা করা হয় ‘বাঙালির ম্যাগনা কার্টা’ হিসেবে। বঙ্গবন্ধু ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি ছয় দফা দাবির পক্ষে জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশব্যাপী ব্যাপক গণসংযোগ করেন। এর প্রতিক্রিয়ায় আইয়ুব খান শেখ মুজিবকে ‘পাকিস্তানের শত্রু’ আখ্যায়িত করে কারাগারে নিক্ষেপ করে। শেখ মুজিব কারান্তরীণ হলে ছাত্র সমাজ আওয়ামী লীগের ছয় দফার অনুসরণে ‘এগার দফা’ কর্মসূচি প্রণয়ন করে। ছাত্রসমাজের এগার দফায় মূলত ছয় দফা দাবিরই প্রতিফলন দেখা যায়। ১৯৬৮ সালে শেখ মুজিবকে প্রধান আসামি করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে সামরিক সরকার। ছাত্র-জনতার কঠোর আন্দলনের মুখে শেষ পর্যন্ত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ব্যর্থ হয় এবং সামরিক সরকার শেখ মুজিবকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। ১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি কারামুক্ত হয়ে শেখ মুজিব তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এক ঐতিহাসিক জনসভায় ভাষণ দেন। সেই জনসভায় বাংলার ছাত্রসমাজ শেখ মুজিবকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করেন। ছয় দফা থেকে জন্ম নেওয়া এগার দফা এবার রূপ নেয় এক দফা আন্দোলনে। স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলন ধাবিত হয় স্বাধীনতা সংগ্রামের পথে। ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু পূর্ব বাংলার নামকরণ করেন ‘বাংলাদেশ’। তিনি বলেন: “একসময় এদেশের বুক হইতে, মানচিত্রের পৃষ্ঠা হইতে ‘বাংলা’ কথাটির সর্বশেষ চিহ্নটুকুও চিরতরে মুছিয়া ফেলার চেষ্টা করা হইয়াছে… একমাত্র ‘বঙ্গোপসাগর’ ছাড়া আর কোনো কিছুর নামের সঙ্গে ‘বাংলা’ কথাটির অস্তিত্ব খুঁজিয়া পাওয়া যায় নাই… জনগণের পক্ষ হইতে আমি ঘোষণা করিতেছি, আজ হইতে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশটির নাম ‘পূর্ব পাকিস্তান’ এর পরিবর্তে শুধুমাত্র ‘বাংলাদেশ’।’’ [অসমাপ্ত আত্মজীবনী, পৃষ্ঠা ২৯৭] flag স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলন ধাবিত হয় স্বাধীনতা সংগ্রামের পথে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় আওয়ামী লীগ। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে তালবাহানা শুরু করে। ১৯৭১ সালের শুরু থেকে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে শুরু হয় অসহযোগ আন্দোলন। এই ধারাবাহিকতায় ৭ মার্চ, ১৯৭১ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বঙ্গবন্ধু এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বর্তমানে বিশ্বের ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ অলিখিত ভাষণ হিসেবে স্বীকৃত। ৭ মার্চের ভাষণের মধ্যে বঙ্গবন্ধু আসন্ন মুক্তিসংগ্রামের ইঙ্গিত প্রদান করে জনগণকে এর জন্য সর্বতোভাবে প্রস্তুত থাকতে বলেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন: “আমরা যখন মরতে শিখেছি তখন কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না।… ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তুল।… রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব। এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ।… আমাদের এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।” এরপর শুরু হয় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রাম। দীর্ঘ নয় মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী এই সংগ্রামে জয়লাভের মধ্য দিয়ে বিশ্বমানচিত্রে স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ এবং বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্বাধীনতার সমার্থক। বঙ্গবন্ধু শুধু একজন ব্যক্তি নন, একটি প্রতিষ্ঠান– একটি বিপ্লব– একটি অভ্যুত্থান– জাতি নির্মাণের কারিগর– একটি ইতিহাস, যার ব্যাপ্তি হাজার বছর বিস্তৃত। তাই তো তিনি বাঙালি ‘জাতির পিতা’। তাই তো সমকাল তাঁকে স্বীকৃতি দিয়েছে ‘হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি’ হিসেবে। বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ ২৩ বছরের গণতান্ত্রিক আন্দোলন ধাপে ধাপে বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামে রূপ নেয়। তিনিই বাংলাদেশের মানুষকে ভাষার অধিকার আর রাজনৈতিক স্বাধীনতা এনে দেন। তাঁর আজীবনের সংগ্রাম ছিল দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটানো। তাঁর স্বপ্ন ছিল একটি সুখী, সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলা গড়ে তোলার। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন: “রাজনৈতিক স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যায় যদি অর্থনৈতিক মুক্তি না আসে।” তিনি মনে করতেন যে, কৃষি বিপ্লবের মাধ্যমেই দেশ খাদ্যশস্যে স্বনির্ভর হয়ে উঠবে। দেশের এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে এবং জমির ফলন যাতে বৃদ্ধি পায় তার জন্য দেশের কৃষক সমাজকেই সচেষ্ট হতে হবে। এই লক্ষ্যে তিনি স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে অনেক কার্যকর পদক্ষেপও গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতা সংগ্রাম শেষে যখন জাতি পুনর্গঠন ও অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে কাজ করছিলেন তখনই ঘাতকের বুলেট তাঁকে জনগণের কাছে থেকে চিরতরে কেড়ে নেয়। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশের উত্তরোত্তর সাফল্যের দিকে এগিয়ে যাওয়া কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি। আন্তর্জাতিক মহলেও বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠেছিলেন একজন আলোচিত এবং উদীয়মান বিশ্বনেতা। সারাবিশ্বের মুক্তিকামী, শোষিত, বঞ্চিত, নিপীড়িত মানুষের অনুপ্রেরণার প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালো রাতে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। এমনকি ঘাতকের বুলেট থেকে রেহাই পায়নি বঙ্গবন্ধুর শিশুপুত্র শেখ রাসেলও। সেই সময় বিদেশে অবস্থান করায় তাঁর দুই কন্যা শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা কেবল প্রাণে বেঁচে যান। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ তথা সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনার রাজনীতিতে আগমন। ১৯৮১ সালের ১৭ মে জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম শুরু করেন। মাত্র চৌত্রিশ বছর বয়সে আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি। প্রতি মুহূর্তে ঘাতকের বুলেট তাঁকে তাড়া করে ফিরেছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা তাঁর লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন। দীর্ঘ একুশ বছর লড়াই-সংগ্রাম করে ১৯৯৬ সালে নির্বাচনে জয়লাভের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করে পরবর্তী পাঁচ বছরে একুশ বছরের জঞ্জাল পরিষ্কার করে দ্রুত দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেন। পার্বত্য শান্তি চুক্তি, গঙ্গা চুক্তি সম্পাদন করেন। স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণ করেন, মোবাইলের মনোপলি ভেঙে দিয়ে তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশের দ্বার উন্মোচন করেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার লক্ষ্যে নিরলস কাজ শুরু করেন তাঁর সুযোগ্য উত্তরসূরী শেখ হাসিনা। ২০০১ সালের ১ অক্টোবর বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট ক্ষমতাসীন হলে আবারও উল্টো পথে দেশ পরিচালিত হয়। স্বীকৃত যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে তুলে দেওয়া হয় রক্তের দামে কেনা বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা। গণতন্ত্রের মানসকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট সরকারি মদদে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ১৯৮১ সালের ১৭ মে তাঁর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর থেকে এ পর্যন্ত ২১ বার হামলা করা হয় তাঁর উপর। ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেন ‘রূপকল্প ২০২১’ যার মূল উপজীব্য ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ। দেশরত্ন শেখ হাসিনার ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’এর স্বপ্নদ্রষ্টা তাঁর মেধাবী পুত্র, আন্তর্জাতিক মহলে সমাদৃত প্রযুক্তি-বিশেষজ্ঞ সজীব ওয়াজেদ জয়। তারুণ্যের মেধা ও শক্তিকে ইতিবাচকভাবে কাজে লাগানোর এক অনবদ্য ও প্রেরণাদায়ী কর্মসূচি ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’। ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে এর বাস্তবায়ন শুরু হয়। ‘রূপকল্প ২০২১’ বাস্তবায়নের লক্ষ্য পূরণের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ঘোষিত সময়ের আগেই বাংলাদেশ নিম্ন আয়ের দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে এসেছে। ১ জুলাই, ২০১৫ বিশ্ব ব্যাংকের মধ্যম আয়ের দেশের তালিকায় স্থান পায় বাংলাদেশ। অর্থনীতিবিদগণ একে দেশের ধারাবাহিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে সাফল্যের অনন্য স্বীকৃতি হিসেবে অভিহিত করছেন। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশকে বিবেচনা করা হত উন্নয়নের টেস্ট কেস হিসেবে। আর আজ বাংলাদেশ সারাবিশ্বের কাছে উন্নয়নের বিস্ময়ে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। এসবই সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বগুণে। নোবেল বিজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ভুয়সী প্রশংসা করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সর্বশেষ বাজেট নিয়েও বিশ্বমিডিয়ায় শেখ হাসিনা ব্যাপকভাবে প্রসংশিত হয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার আধুনিক রূপই মূলত আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশ। ‘রূপকল্প ২০২১’এর অধীনে ঘোষিত সময়ের আগেই একটি সুখী, সমৃদ্ধ, স্বনির্ভর বাংলাদেশ বিনির্মাণের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন পূরণের জন্য তাঁর সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আজও নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। যে মশাল বঙ্গবন্ধু জ্বালিয়ে রেখে গিয়েছিলেন ৬৭ বছর আগে, তাঁর সুযোগ্য উত্তরসূরীরা আজও নিষ্ঠার সঙ্গে তা বহন করে চলেছেন। জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু। জয়তু শেখ হাসিনা।

ছবি

বঙ্গবন্ধু , আওয়ামীলীগ, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ। লিখেছেন--Shahalam Sajeeb ____________________________________ ★ ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন : ঢাকার কে.এম দাস লেনের কে.এম বশির হুমায়নের বাসভবন ‘রোজ গার্ডেন’- এ পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠন ★ ২৪ জুন : সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন আরমানিটোলা মাঠে দলের প্রথম জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। ★ ১৫ আগস্ট : দলের প্রথম সাপ্তাহিক মুখপত্র ইত্তেফাক প্রকাশিত হয়। ★ ১৯৫০- ০১ জানুয়ারি : শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেফতার। ★ ২৪ জানুয়ারি : হোসেন সোহরাওয়ার্দীর উদ্যোগে নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা। সভাপতি মানকি শরীফের পীর এবং সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক ওসমানী। ★ ১৯৫২-২৬ জানুয়ারি : নাজিমুদ্দিনের ঘোষণা উর্দুই হবে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। কারাবন্দী শেখ মুজিব ১৯৫২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হন। মেডিকেলে প্রিজন সেলে থাকা অবস্থায় বাইরের নেতাদের সাথে যোগাযোগ করে আন্দোলন এগিয়ে নেওয়ার দিক-নির্দেশনা দেন। ★ ৩১ জানুয়ারি : তৎকালীন আওয়ামী লীগ সভাপতি মওলানা ভাসানীর সভাপতিত্বে ঢাকা বার লাইব্রেরি হলে অনুষ্ঠিত সভায় ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটি’ গঠিত। ★ ১৬ ফেব্রুয়ারি : শেখ মুজিবকে ঢাকা থেকে ফরিদপুর জেলে হস্তান্তর। ★ ২১ ফেব্রুয়ারি : ১৪৪ ধারা ভঙ্গের সিদ্ধান্ত। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের মিছিলে গুলি। রফিক, সালাম, জব্বার, বরকত ও অহিউল্লাহ শহীদ। ★ ২২ ফেব্রুয়ারি : প্রতিবাদ মিছিলে আবার গুলি, সফিকুর রহমান শহীদ। ★ ১৯৫৩-০৯ জুলাই : ময়মনসিংহে আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠার পর প্রথম কাউন্সিল অধিবেশন। ভাসানী সভাপতি, শেখ মুজিবুর রহমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত। ★ ১৪ নভেম্বর : ঢাকায় আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে যুক্তফ্রন্ট গঠনের সিদ্ধান্ত এবং ২১ দফার খসড়া গৃহীত। ★ ০৪ ডিসেম্বর : যুক্তফ্রন্ট গঠিত। স্বায়ত্তশাসন, ভাষা এবং বাঙালি অধিকার আদায়ের জন্য ঐতিহাসিক ২১ দফা ঘোষণা করা হয়। ★ ১৯৫৪- ০৮ মার্চ : প্রাদেশিক আইন সভার নির্বাচনে ২১-দফার পক্ষে নিরঙ্কুশ রায়, যুক্তফ্রন্টের বিপুল বিজয়। মুসলিমলীগের ভরাডুবি। ★ ১৯ এপ্রিল : পাকিস্তান গণপরিষদ কর্তৃক বাংলা ও উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা। ★ ১৯৫৫- ২১-২৩ অক্টোবর : পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে দলের নাম থেকে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দেওয়া হয়। ★ ১৯৫৬-০২ মার্চ : গণপরিষদে পাকিস্তানের প্রথম সংবিধান পাস। ★ ৬ সেপ্টেম্বর : পূর্ব বাংলার এবং ১১ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের মন্ত্রিসভা গঠন। ★ ১৯৫৭- ১৮ মার্চ : আওয়ামী লীগ থেকে মওলানা ভাসানীর পদত্যাগ। ★ ৩১ মে : মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করে শেখ মুজিব সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আওয়ামীলীগকে সংগঠিত করার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ★ ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ১১ অক্টোবর : হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী, আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে কোয়ালিশন সরকার। ★ ১৯৫৮- ০৭ অক্টোবর : পাকিস্তানে সামরিক আইন জারি, সংবিধান বাতিল। শেখ মুজিবসহ বহু নেতা গ্রেফতার। রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ। ★ ১৯৫৯-৭ ডিসেম্বর : শেখ মুজিবের মুক্তিলাভ। গোপনে সহকর্মীদের কাছে স্বাধীন বাংলা প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা প্রকাশ। ★ ১৯৬২- স্বাধীনতার লক্ষ্যে শেখ মুজিবের রাজনৈতিক-সাংগঠনিক প্রস্তুতির সূচনা। এ লক্ষ্যে ছাত্র-যুব নেতাদের নিয়ে গোপন নিউক্লিয়াস গঠন। ★ ৩০ জানুয়ারি : সোহরাওয়ার্দী গ্রেফতার। প্রতিবাদে সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনের সূচনা। ★ ০৭ ফেব্রুয়ারি : শেখ মুজিবসহ আওয়ামীলীগ নেতাদের ধরপাকড়। ★ ২৪ জুন : আইয়ুব খানের মৌলিক গণতন্ত্র প্রত্যাখ্যান করে ৯ নেতার ঐতিহাসিক বিবৃতি। ★ ১৭ সেপ্টেম্বর : শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট-বিরোধী আন্দোলন, দুজন নিহত। ★ ০৪ অক্টোবর : রাজনৈতিক দল পুনরুজ্জীবিত না করে আওয়ামী লীগ, ন্যাপ, কেএসপি প্রভৃতি দল মিলে এনডিএফ বা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট গঠন। ★ ১৯৬৩- ০৫ ডিসেম্বর : বৈরুতে সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যু। ★ ১৯৬৪- ১৪ জানুয়ারি : সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। ★ ১৬ জানুয়ারি : শেখ মুজিবের নেতৃত্বে দাঙ্গাবিরোধী প্রতিরোধ। ‘পূর্ব পাকিস্তান রুখিয়া দাঁড়াও’ ইশতেহার প্রচার। ★ ২৫ জানুয়ারি : এনডিএফ ত্যাগ করে আওয়ামীলীগ পুনরুজ্জীবন। শেখ মুজিব মূল উদ্যোক্তা। এনডিএফ-পন্থিদের দল ত্যাগ। ★ ১৯৬৬- ০৫ ফেব্রুয়ারি : লাহোরে শেখ মুজিবের ৬-দফা দাবি উত্থাপন। ★ ১৮ মার্চ : আওয়ামী লীগ কাউন্সিলে ‘আমাদের বাঁচার দাবি ৬-দফা কর্মসূচি’ অনুমোদন। শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামীলীগের সভাপতি ও তাজউদ্দিন আহমদ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত। ★ ২০ মার্চ : আইয়ুব খানের হুমকি : ৬-দফা নিয়ে চাপাচাপি করলে অস্ত্রের ভাষায় জবাব দেওয়া হবে, গৃহযুদ্ধ হবে। ★ ০৮ মে : শেখ মুজিব ও তাজউদ্দিনসহ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার। ★ ০৭ জুন : ৬-দফা ও বন্দী মুক্তির দাবিতে আওয়ামী লীগের দেশব্যাপী হরতাল। ১০ জন নিহত। ★ ১৭ জুন : ইত্তেফাক পত্রিকা নিষিদ্ধ ঘোষিত। ★ ১৯৬৭- ২২ জুন : রেডিওতে সরকারের রবীন্দ্রসংগীত নিষিদ্ধ ঘোষণা। ★ ১৯৬৮- ১৭ জানুয়ারি : ১৯৬৬ সালের ৮ মে কারাবন্দী শেখ মুজিবকে ঢাকা জেল থেকে মুক্তি দিয়ে জেলগেটে আবার গ্রেফতার করে ঢাকা সেনানিবাসে আটক। ★ ১৮ জানুয়ারি : শেখ মুজিবকে ১নং আসামি করে ‘রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিব এবং অন্যান্য’ মামলা দায়ের। এ মামলাটিই ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র’ মামলা হিসেবে পরিচিত। ★ ১৯ জুন : আগরতলা মামলার আনুষ্ঠানিক শুনানি শুরু। ♦ ডিসেম্বর : ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন (দুই গ্রুপ), এনএসএস (একাংশ) ও ডাকসুর নেতৃত্বে আন্দোলনের লক্ষ্যে ‘কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’ গঠনের উদ্যোগ। ★ ১৯৬৯-০৮ জানুয়ারি : গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও আইয়ুব শাহীর পতনের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগসহ ৮টি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে ডেমোক্রেটিক অ্যাকশন কমিটি (ডাক) গঠন। ★ ১০ জানুয়ারি : ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ কর্তৃক ৬-দফাভিত্তিক ১১-দফা কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা। ★ ১৭-২০ জানুয়ারি : ১৪৪ ধারা ভেঙে ছাত্রদের প্রথম বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল। পুলিশি হামলা। ২০ জানুয়ারি ছাত্রনেতা আসাদ নিহত। ★ ২৪ জানুয়ারি : ছাত্র গণ-অভ্যুত্থান। স্কুলছাত্র মতিউরসহ কয়েকজন নিহত। কারফিউ ভঙ্গ। ♦ জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি : শেখ মুজিবের মুক্তি, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা বাতিল ও ১১-দফা দাবিতে সারাদেশে গণ-অভ্যুত্থানের বিস্তৃতি। ★ ২২ ফেব্রুয়ারি : শেখ মুজিবের নিঃশর্ত মুক্তি, আগরতলা মামলা প্রত্যাহার। ★ ২৩ ফেব্রুয়ারি : রেসকোর্স ময়দানের লক্ষ লক্ষ মানুষের গণসংবর্ধনায় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ কর্তৃক শেখ মুজিব ‘বঙ্গবন্ধু’ অভিধায় ভূষিত। ★ ২৫ মার্চ : আইয়ুব খানের পতন। জেনারেল ইয়াহিয়া খানের ক্ষমতা গ্রহণ, সামরিক আইন জারি। ★০৫ ডিসেম্বর : সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যু দিবসে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা, ‘এখন থেকে পূর্ব পাকিস্তানের নাম হবে ‪#‎বাংলাদেশ‬ ’। ★ ১৯৭০- ০৭ ডিসেম্বর : পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন। ৩০০ আসনের জাতীয় পরিষদে পূর্ব বাংলার ১৬৯টি আসনের মধ্যে আওয়ামীলীগের ১৬৭টি আসনে জয়লাভ। ★ ১৭ ডিসেম্বর : পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন। ৩০০ আসনে আওয়ামীলীগের ২৮৮ আসন লাভ। ★ ০৩ জানুয়ারি : রেসকোর্স ময়দানের বিশাল জনসভায় জাতীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যদের (এমএনএ ও এমপিএ) ৬-দফা ও স্বাধিকারের নামে শপথ গ্রহণ। এই শপথ অনুষ্ঠানে ‘আমার সোনার বাংলা’ গাওয়া হয়। ★ ১৯৭১- ০১ থেকে ২৫ মার্চ : বাংলাদেশের।প্রশাসন, বিচার বিভাগ, ব্যবসা- বাণিজ্য, ব্যাংক শিল্প-কারখানা, পরিবহন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব কিছু পরিচালিত হয় বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে। এই সময়কালে বঙ্গবন্ধু ৩৫-দফা নির্দেশনা প্রদান করেন। ( বঙ্গবন্ধু অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের ১০-দফা কর্মসূচী ) ★ ০১ মার্চ : ইয়াহিয়া কর্তৃক ৩ মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা।ইয়াহিয়ার ঘোষণার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার দাবিতে সমগ্র বাংলাদেশে স্বতঃস্ফূর্ত গণবিস্ফোরণ। ‘জয় বাংলা, বীর বাঙালি অস্ত্র ধর- বাংলাদেশ স্বাধীন কর, তোমার আমার ঠিকানা- পদ্মা মেঘনা যমুনা, জাগো জাগো বাঙালি জাগো’ প্রভৃতি স্লোগানে সারাদেশ আন্দোলিত। কারফিউ জারি। ★ ০২ মার্চ : বঙ্গবন্ধুর হরতাল-ধর্মঘট আহ্বান। ♦ ৩ মার্চ জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলাভবনে স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ কর্তৃক প্রথম ‘জাতীয় পতাকা’ উত্তোলন। ★ ০৩ মার্চ : পল্টন ময়দানে বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের জনসভায় ‘স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার’ ঘোষণাপত্র পাঠ, জাতীয় পতাকা প্রদর্শন ও জাতীয় সংগীত হিসেবে ‘আমার সোনার বাংলা’ পরিবেশন। ★ ০৭ মার্চ : রেসকোর্স ময়দানের ১০ লাখ লোকের সমাবেশে বঙ্গবন্ধু কার্যত বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। (বঙ্গবন্ধু অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের ১০-দফা কর্মসূচি ঘোষণা) ★ ১৬ মার্চ : ইয়াহিয়া খানের সাথে বঙ্গবন্ধুর আলোচনা শুরু। আলোচনার নামে কালক্ষেপণের কৌশল নিয়ে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা বাঙালি জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ প্রস্তুতি গ্রহণ করে। ★ ২৩ মার্চ : আলোচনা কার্যত ভেঙে যায়। বঙ্গবন্ধু ৩২নং বাসভবনে নিজ হাতে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। ★ ২৫ মার্চ : রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে নিরস্ত্র বাঙালি জাতির ওপর সামরিক অভিযান এবং রাজধানী ঢাকায় গণহত্যা শুরু করে। ★ ২৬ মার্চ : পঁচিশে মার্চ রাত ১২টার কিছু পরে অর্থাৎ ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে গ্রেফতার হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে বঙ্গবন্ধু আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তৎকালীন ইপিআরের ওয়ারলেসযোগে বঙ্গবন্ধুর এই ঘোষণা চট্টগ্রামসহ সারাদেশে প্রচারিত হয়। চট্টগ্রামসহ সারাদেশে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা মাইকিং করে এবং লিফলেট আকারে বিতরণ করা হয়। -বেলা সোয়া ২টায় চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হান্নান কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে গমন করেন এবং সেখান থেকে সর্বপ্রথম বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা পাঠ করেন।

ছবি

ঐতিহাসিক 23 জুন :-- নিপা দাশ আজ 23 জুন বাঙালির প্রানের সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের 67 তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ! মুসলিম লীগের দ্বি - জাতিতাত্তিক ধ্যান - ধারণা থেকে বের হয়ে অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল বাঙালি রাজনৈতিক নেতৃত্ব 1949 সালের 23 জুন ঢাকার রোজ - গার্ডেনে এক সম্মেলনের মাধ্যমে ' পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ ' গঠন করে ! সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী , সাধারণ সম্পাদক টাঙ্গাইলের শামসুল হক এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন শেখ মুজিবুর রহমান ও খন্দকার মোশতাক আহমেদ ! শুরুতেই দলটি বাঙালিদের স্বার্থে একটি বিস্তৃত কর্মসূচি গ্রহণ করে ! এর মধ্যে প্রাদেশিক স্বায়ত্ত শাসন , জনগণের সার্বভৌমত্ত , বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দান , পাট ও চা শিল্প জাতীয়করণ , বিনা ক্ষতিপূরণে জমিদারি ব্যবস্থা উচ্ছেদ , কৃষকদের মধ্যে ভূমি বন্টন , সমবায় ভিত্তিক চাষাবাদ ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখ যোগ্য ! এ সব দাবী উত্থাপনের কারণে দলটি দ্রুত পূর্ব বাংলার জনগনের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করে ! মওলানা ভাসানী , শামসুল হক এবং শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি শাসকের রোষানলে পড়েন ! শেখ মুজিবকে 1949 সালে কারাগারে প্রেরণ করা হয় ! তিনি 1952 সালের 27 ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্দি জীবন কাটান ! 1954 সালে যুক্তফ্রন্ট গঠনের মূল উদ্যোগ ছিল আওয়ামী লীগের ! 1955 সালে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আদর্শ ধারণ করে দলের নাম ' পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ ' নামকরণ করা হয় ! ফলে ধর্ম পরিচয় নির্বিশেষে সকল বাঙালি ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সমূহ জাতীয়তাবাদের ধারায় অংশ গ্রহনের সুযোগ পায় ! 1952 -র ভাষা আন্দোলন , 1954 -র যুক্তফ্রন্ট , 1966 -র ছয় দফা , 69 এর গন - অভূথান , 70 এর নির্বাচন ও 1971 সালের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী প্রধান রাজনৈতিক দল হলো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ! আওয়ামী লীগ এমন একটি রাজনৈতিক দল যে দলটি শুরু থেকেই বাঙালির স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কাজের সাথে জড়িত !

আসলে বাংলাদেশে ইসলামের প্রকৃত পরিচর্যাকারী ছিলেন বঙ্গবন্ধু। তারই যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইসলামের উন্নয়ন করে মুসলিম জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় কর্মকা-কে যথাযোগ্য মর্যাদায় আসীন করেছেন। ইসলাম ধর্মের প্রকৃত জ্ঞান অর্জনের জন্য মুসলিম সম্প্রদায়কে উৎসাহী করার কৃতিত্ব সম্পূর্ণ তার। উপরন্তু দেশের মধ্যে ধর্মীয় উগ্রবাদের জঙ্গিপনা নির্মূলের সাফল্যও তার সরকারের বড় অবদান।

ছবি

রাজনীতির গতিপ্রকৃতি-- মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তির ব্যাক্তি ও সংগঠনের অবস্থান--- _____________________________________ রাজনীতির গতিপ্রকৃতি সত্যিই অভাবিত। অবাক করার মতো। কারো ইচ্ছা অনিচ্ছার, চিন্তা-চেতনার উপর তা নির্ভর করে না। ভাবা হয় এক রকম, বাস্তবতা দেখা দেয় অন্যরকম।ধ্যান-ধারনা,চিন্তা-চেতনা, জল্পনা-কল্পনা শেষাবদি হয় পরাজিত। রাজনীতির গতিপ্রকৃতি নিয়ন্ত্রণ করার উদগ্র বাসনা প্রত্যেক দল এবং জাতীয় নেতারই থাকে। কিন্তু বিশ্বের কোন নেতা বা রাজনৈতিক দলই পারেনি রাজনীতির গতিপ্রকৃতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করতে।এমনটা না পারলেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ধর্মীয় গোষ্ঠী, ব্যক্তি বা মহল বিশেষ রাজনীতির গতিপ্রকৃতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে তাঁদের কর্মতৎপরতা অব্যাহত রাখে। তাই আদিকাল থেকে দেশে দেশে ঘটে চলেছে লড়াই- সংগ্রাম, ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত, হত্যা-গুপ্তহত্যা, গুম-খুন,দাংগা-হাঙ্গামা, যুদ্ধ-বিগ্রহ ইত্যাদি। বাংলাদেশের রাজনীতি বহুধাবিভক্ত হলেও দুটি ধারা অগ্রসরমান এবং দৃশ্যমান।প্রথমটি জাতিয়তাবাদী ধারা। দ্বিতীয়টি উগ্র ধর্মীয় গোষ্টি কতৃক নিয়ন্ত্রিত সাম্প্রদায়িক গোষ্টির পরিপূরক মিশ্র ধারা। প্রথম ধারাটি বাঙ্গালী জাতীয়তাবোধ, কৃষ্টি, সংস্কৃতি লালনকারি। দ্বিতীয়টি অধিকতর পশ্চাদমুখি, ধর্মীয় বিদ্বেস প্রসূত, সাম্প্রদায়িক, গোষ্টি দান্ধিকতায় পরিপুষ্ট। প্রথমটি উদার রীতি-নীতি, নীতি-আদর্শ ও নীতি-নৈতিকতায় পরিপুষ্ট। দ্বিতীয়টি নির্দিষ্ট রীতি-নীতি হীন, নীতি-আদর্শ বর্হিভূত, উগ্র ধর্মীয় চেতনা সমৃদ্ধ, ইসলামের মূল চেতনা 'শান্তি ও সার্বজনীনতা' বর্হিভূত কট্ররতার ধারক ও বাহক। প্রথম ধারাটির নেতৃত্বে বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদী সত্বার উম্মেষ ও বিকাশ ঘটিয়ে হাজার বছর বিভিন্ন জাতি-গোষ্টির দাসত্বের বন্ধন চিহ্ন করে বাঙ্গালী জাতি শৃংখল মুক্ত হওয়ার লক্ষে ১৯৭১ ইং সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত করে এবং স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটায়। দ্বিতীয় ধারাটির নেতৃত্বে ১৯৪৭ইং সালে বাঙ্গালীর জাতীয়বাদী চেতনা বর্হিভূত, সাম্প্রদায়িক চেতনা সমৃদ্ধ, গোষ্টি বিদ্বেসী দ্বিজাতি তত্বের ভিত্তিতে স্বাধীন-সার্বভৌম পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়েছিল। প্রথম ধারাটি 'ধর্মীয় গোষ্টি চেতনার' বিরুদ্ধে উদার ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি আদর্শ ধারন ও লালন করে দীর্ঘ ২৩ বছর নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রাম ও লড়াইয়ের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট তৈরী করে।অবশেষে ১৯৭১ ইং সালে দীর্ঘ নয় মাসব্যাপি সসস্ত্র যুদ্ধ করে দ্বিতীয় ধারাটিকে চরমভাবে পরাজিত করে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা করে।অপরপক্ষে দ্বিতীয় ধারাটি বিনা রক্তপাতে, স্বল্প সময়ে, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বাঙ্গালীদের বঞ্চিত করে পাঠান-পাঞ্জাবীর নেতৃত্বে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়িয়ে, কুটকৌশলের মাধ্যমে দুই হাজার মাইলের ব্যবধানে দুই ভুখন্ড একত্রিত করে- স্বাধীন সার্বভৌম পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠা করে। প্রথম ধারাটির উম্মেষ, বিকাশ সাধনে বহু জননেতার অবদান অবশ্যই ছিল।তম্মধ্যে অপরিসীম দক্ষতা,অসীম সাহষ, রাজনৈতিক বিচক্ষনতা, উপস্থিত বুদ্ধি, বাগ্মিতা, একাগ্রতা, মানুষকে আপন করে নেয়ার দুর্লভ ক্ষমতা সর্বোপরি নেতৃত্বের অপরিসীম গুনাবলীতে একক নেতৃত্বে বিকশীত ও প্রস্ফুটিত হয়েছিলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান। তাঁর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নেতৃত্বে বাঙ্গালী তাঁর নীজস্ব আবাসভুমি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা করে।অন্যদিকে দ্বিতীয় ধারাটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইংরেজ সাম্রাজ্যবাদি শাষকশ্রেনী ভারতীয় উপমহাদেশ দীর্ঘ দুইশত বছর দাসত্বের শৃংখলে আবদ্ধ রাখার পর,বিশ্বরাজনীতির গুনগত পরিবর্তনের কারনে এই উপমহাদেশের শাষন ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করে।ফলত: ভারতীয় উপমহাদেশের অভ্যন্তরে জাতিগত স্বাধীনতা পাওয়ার বৃহৎ সুযোগ সৃষ্টি হয়। তৎহেতু বাংলাভাষাবাসিদের মধ্যে তৎসময়ের জাতীয় নেতৃবৃন্দ গনজাগরনও সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছিলেন। বিধিবাম-পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত,শিয়া উগ্রধর্মীয় মতবাদে বিশ্বাসী, ধর্মজ্ঞানহীন, ধর্মীয় অনুশাষনহীন, সম্পূর্ণ বিজাতীয় সংস্কৃতির ধারক বাহক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বিলেতের ব্যারিষ্টারীতে ইস্তফা দিয়ে এসে মুসলিম লীগের নেতৃত্ব গ্রহন করেন। তিনি এই জনপথকে শাষন শোষন করার মানসে, বাঙ্গালী ভাষাবাসিদের আবারও দাসত্বের শৃংখলে আবদ্ধ করার উদ্দেশ্যে অভিনব কৌশল গ্রহন করেন।তিনি বাঙ্গালী হিন্দু ও মসুলমানদের বিভাজনের উদ্দেশ্যে ধর্মীয় গোষ্টিগত তত্ব 'দ্বিজাতি তত্ব' হাজির করেন।অর্থাৎ হিন্দু এবং মসুলমানদের জন্য আলাদা আলাদা রাষ্ট্রের প্রস্তাব উত্থাপন করেন।বাঙ্গালী নেতাদের প্রবল বাধার মুখেও কুটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে তিনি সফল হন।ফলত: প্রথম জাতীয়তাবাদী ধারাকে কূটকৌশলে পরাজিত করে তিনি দুইহাজার মাইলের ব্যবধানে দুই প্রান্তে দুই ভুখন্ড নিয়ে পাকিস্তান রাষ্ট্রটির সৃষ্ট্রি করতে সক্ষম হন। যদিও আপাত:দৃষ্টিতে পাকিস্তান স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় কিন্তু জাতিগত দ্বন্ধের অবসান তিনি করতে পারেননি।পাকিস্তানের তেইশ বছর শাষনকালে ধর্মের বিষবাস্প ছড়িয়েও জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি।ফলে পাকিস্তানকে শাষন করার জন্য সর্বসম্মত কোন সংবিধানও রচিত হয়নি।অপরপক্ষে ভঙ্গুর ধর্মীয় চেতনার বিরুদ্ধে উদার বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ, গনতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতার অঙ্গিকারের ভিত্তিতে অত্রভুখন্ডে গনজাগরনের সৃষ্টি করতে সক্ষম হন বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান।কালক্রমে বাঙ্গালী জাতিয়তা বোধের চেতনাকে মুক্তিযুদ্ধে রুপান্তরীত করে ১৯৭১ ইং সালের ১৬ই ডিসেম্বর চুড়ান্তভাবে দ্বিতীয়ধারাকে পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা করেন এবং তিনি জাতির জনক হিসেবে আর্বিভুত হন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের আলোকে ১৯৭২ ইং সালেই মাত্র একবছরের মধ্যে বিদ্যমান জাতীয় সংসদের সর্বসম্মতভাবে অনুমোদনে যুগশ্রেষ্ঠ লিখিত সংবিধান বাঙ্গালী জাতিকে উপহার দিতে সক্ষম হন। সংবিধান রচনার পরের দিন থেকে দ্বিতীয় ধারাটি চরম পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে ঘাপটি মেরে সমাজের সবার অগোচরে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখে। ১৯৭৫ ইং সালে জাতির জনক এবং তাঁর পরিবারকে নির্মমভাবে হত্যা করে ইতিহাসের জগন্যতম প্রতিশোধ গ্রহন করতে সক্ষম হয়। হত্যাকারিরা প্রথমোক্ত ধারাকে ইতিহাসের অতল গব্বরে নিক্ষিপ্ত করে।প্রগতির চাকাকে পিছনে নেয়া শুরু করে।হত্যা, গুপ্তহত্যা, বিনাবিচারে হত্যার সংস্কৃতি চালু করে। এবং কি পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ স্থান 'জেলখানা'-সেখানেও জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে 'রক্তের হুলিখেলায়' মধ্যযুগীয় ভাবধারাকেও হার মানাতে সক্ষম হয়। দীর্ঘ একুশ বছর জাতির জনকের জৈষ্ঠকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আন্দোলন সংগ্রামের কঠিন ও সুদীর্ঘ পথ পরিক্রমনের পর আবারও প্রথমোক্ত ধারাটি ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়।তাঁর পরবর্তি ইতিহাস সকলেরই জানা।১৯৭৫-২০০৮ইং সালের ইতিহাস- "ষড়যন্ত্রের ইতিহাস, হত্যার ইতিহাস, জাতির জনকের পরিবারকে নিচ্ছিন্ন করে দেয়ার একাধিক ঘটনাক্রমের ইতিহাস।"জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে দিয়ে যে হত্যার উদ্ভোধন করা হয়েছিল, সেই ধারায় আজও কোন পরিবর্তন হয়নি।সর্বশেষ শেখ হাসিনার একমাত্র পুত্র জাতির জনকের দৌহিত্র সজিব ওয়াজেদ জয়কে হত্যার ষড়যন্ত্রে এসে ঠেকেছে। সকল বাধা বিপত্তি পায়েদলে জাতির জনকের কন্যা ২০০৮ইং সালে কমবেশি শত্রুমিত্র চিহ্নিতকরন সাপেক্ষে, বৃহৎ উদ্দেশ্য সাধনের লক্ষে, জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির সুচনার উদ্দেশ্যে, সুদুর প্রসারী চিন্তাচেতনার আলোকে, মহাজোট গঠন করেন।জাতির বৃহৎ স্বার্থের বিবেচনায় তিনি এরশাদের মত স্বৈরাচারকেও মহাজোটের অন্তভুক্ত করেন। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক বিচক্ষনতার তৎক্ষনাৎ সুফল জাতি পেয়েছে। ২০০৮ ইং সালের অবাধ, শান্তিপুর্ন সাধারন নির্বাচনে বিশাল জয় নিয়ে মহাজোট জাতির জনকের কন্যার নেতৃত্বে সরকার গঠন করতে সক্ষম হয়।তিনি দ্বিতীয় ধারাকে রাজনৈতিক ভাবে এবং দেশে বিদেশে গ্রহনযোগ্য সাধারন নির্বাচনের মাধ্যমে জনগনের রায়ে চরমভাবে পরাজিত করতে সক্ষম হন। এমনতর পরাজয়ের গ্লানী তাঁদের উপহার দেন-দীর্ঘ সাত বছরেও আর সোজা হয়ে দ্বিতীয় ধারাটি রাজপথে দাঁড়াতে পারেনি। তাঁর দুরদর্শি নেতৃত্বে, সুদুরপ্রসারি চিন্তাচেতনার আলোকে দেশব্যাপি অঘোষিত জাতিয় ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে।বিশাল এক উদ্দেশ্য আদর্শ্যকে সামনে নিয়ে মহাজোট গঠন করেছিলেন তিনি।বিগত সাত বছরে তাঁর সরকারের শাষনামলে জনগনের দীর্ঘদিনের আন্দোলন সংগ্রাম তথা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে রাষ্ট্রীয় ও জনজীবনের সর্বস্তরে প্রতিষ্ঠার চাওয়া পাওয়াকে অগ্রাধিকার দেয়ার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।এই কারনে তাঁর সরকারকে বহুবীদ জাতীয় ও আন্তজাতিক ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করে সবেমাত্র স্থীরতার মধ্যে জাতিকে নিয়ে এসেছেন।তাঁর নীজের জীবন এবং একমাত্র পুত্রের জীবনের হুমকিকেও তোয়াক্কা না করে দৃডপদক্ষেপেই তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন। এই কথাটি অনস্বিকায্য যে, মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তিকে নিস্তেজ ও নির্মুল করা ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বাস্তবায়ন করা আদৌ সম্ভব নহে। তাঁর সরকার ক্ষমতা গ্রহন করেই সেই পদক্ষেপটি প্রথমেই নিয়েছেন। আপাত: দৃষ্টে মনে হচ্ছে, জাতির জনকের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তিকে তিনটি শ্রেনীতে ভাগ করেছেন। প্রথমত: মুক্তিযুদ্ধে রাজনৈতিক, আদর্শগত, সাংগঠনিক,সসস্ত্র বিরুধীতাকারি চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের ব্যাক্তি ও সংগঠনকে প্রধান শত্রু হিসেবে বিবেচনায় নিয়েছেন তিনি। দ্বিতীয়ত: তাঁদের পৃষ্টপোষনকারী, রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা, দেশী বিদেশী ব্যাক্তি ও সংগঠন। যাঁরা মুখোশের আড়ালে প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থি কর্মকান্ডে লিপ্ত রয়েছেন। এই শ্রেনীর ব্যাক্তি ও গোষ্টি আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে এবং বাহিরে বিচরনরত: রয়েছে। তাঁদেরকে তিনি রাজনৈতিক দ্বিতীয় প্রধান শত্রু হিসেবে বিবেচনায় নিয়েছেন।বিভিন্ন কলাকৌশলে সময়ক্ষেপন করে,প্রধান শত্রু নিধনের পর, তাঁদের সঙ্গে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁদেরকে রাজনৈতিক ভাবে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে পরাজিত করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে। তৃতীয়ত: শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারনে আওয়ামী লীগের বিপক্ষে অবস্থান-মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি কোন অবস্থায় নহে।অতীতে ক্ষতির কারন হলেও বর্তমান এবং ভবিষ্যতে ক্ষতির কোন লক্ষন নেই। এইরুপ দল ও সংগঠন, ব্যক্তি ও গোষ্টি সমুহকে মিত্র হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে-প্রথম ও দ্বিতীয় শক্তির সঙ্গে লড়াই করার উদ্দেশ্যে তাঁদেরকে বুকে টেনে নিয়েছেন। প্রথমোক্তকে নিস্তেজ করার স্বার্থে তৃতীয়পক্ষকে ভাগে এনে দ্বিতীয় পক্ষকে রাজনৈতিক ভাবে পরাস্ত করার নীতি কৌশল নিয়ে তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন। জাতির জনকের কন্যা মৃত্যু ঝুকি মাথায় নিয়ে এবং আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যতকে জিম্মি করে প্রথম পক্ষের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছেন। তিনি তাঁর অসীম সাহষ, দৃড মনোবল, অপুরন্ত সাহষিকতা, বিচক্ষনতা, ধৈয্যের পরাকাষ্টা প্রদর্শন করে তাঁদের পরাস্ত করে নিস্তেজ করতে সক্ষম হয়েছেন। ফলে দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্রের মদদ দাতারাও আগের মত মানবতা বিরুধী বিচার নিয়ে তেমন সোচচার নেই। সৌদী আরবের মত তাঁদের বৃহৎ মিত্র শক্তিও শেষ পয্যন্ত পৃষ্ট প্রদর্শন করে যুদ্ধপরাধের বিচারকে নৈতিক সমর্থন দিতে বাধ্য হয়েছেন। ব্যপারটি আদৌ সহজ নয়, ছিলনা কখনও-জাতির জনকের কন্যা বিধায় সম্ভব হয়েছে। জাতির জনকের শেখ হাসিনার সরকার লড়াই রত: অবস্থাও তাঁদের চক্রান্ত, হত্যা, গুপ্ত হত্যা, টার্গেট হত্যা বন্ধ হয়নি।রাজনৈতিক এবং আইনীভাবে পরাস্ত হলেও তাঁদের নাশকতার মাধ্যমে জনজীবনে অস্বস্তি ও ভীতিকর পরিস্থীতি সৃষ্টির চেষ্টা থেমে যায়নি।আমি এইরুপ অতীতের কিছু লোমহর্ষক ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের বিষয় আপনাদের স্মরনে নিয়ে আসতে চাই। অষ্টেলিয়ার ক্রিকেট টীম যখন সফর বাতিল করে তখন কল্পনাও করা যায় নাই, ঢাকা ও রংপুরে দুই জন বিদেশী গুপ্ত ঘাতকের হাতে খুন হবেন। বিদেশি খুন সামলাতে না সামলাতেই পাবনায় খ্রিস্টান ধর্ম যাজককে খুন করার প্রচেষ্টা। এরই মধ্যে হঠাৎই খুন হয়ে গেলেন পিডিবির সাবেক চেয়ারম্যান হালে পীর খিজির খান। এ সবের মধ্যেই ঈদোৎসব কাটে, যথাযথ মর্য্যদার সাথে- উৎসব আনন্দের মধ্য দিয়ে। কিছুদিন পরই দুর্গা পুজা নিয়ে চলে নানা জল্পনা কল্পনা। এখানে সেখানে কিছু মূর্তি ভাঙ্গা হলেও উৎসব মুলত: আনন্দেই কাটে।এই সময়ে হঠাৎ তাজিয়া মিছিলে বোমা বিস্ফোরিত হয়। পবিত্র মহরমের শোক মিছিলে হামলায় সবাইকে হতচকিত করে দেয়। একটু দম ফেলতে না ফেলতেই ঘটে একই দিনে প্রায় একই সময়ে দুই নৃশংস ও হৃদয় বিদারক হামলার ঘটনা। মৃত্যু হয় তরুণ প্রকাশক দীপনের আর অপর হামলার এক প্রকাশক ও দুই লেখক প্রচন্ড আঘাত প্রাপ্ত হন। এই সমস্ত হত্যা, গুপ্ত হত্যা চলাকালিন সময়ে দলের অভ্যন্তর থেকে উদ্ভব হয় ন্যাক্কারজনক দুস্কর্মের হোতাদের।একদিকে শত্রু নির্মুল অন্য দিকে উন্নয়ন কর্মকান্ড অব্যাহত রাখা-বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়ে সরকার। ছাত্র লীগ ও যুবলীগের নামধারীদের অপকর্ম- দুষ্কর্ম হোতাদের কারনে। এই ক্ষেত্রেও সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি-কৌশল কার্যকর করে এবং মোহাম্মদ পুর সহ প্রভৃতি স্থানে ক্রস ফায়ারের ঘটনার মাধ্যমে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে সক্ষম হন। স্বস্তি ও তৃপ্তির ভাব দেখা দেয় মহাজোট সরকারে। জনগনও ছিল নিজ নিজ জীবন ও জীবিকা নিয়ে শান্তি ও স্বস্তির মধ্যে।মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী সাকা-মুজাহিদের ফাঁসি কবে কার্যকর হবে এই প্রতীক্ষায় ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের জনগণ। হঠাৎ করেই দৃশ্যপট গেল পাল্টে।তরুন প্রজম্ম কতৃক দেশে বিদেশে আলোচিত গণজাগরণ মঞ্চের অর্ধবেলা হরতাল আহব্বানকে ঘিরে।তাঁরা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করে বলে , ‘সরকারের ভেতর থেকে পৃষ্টপোষকতা না থাকলে একের পর এক হত্যাকান্ড’ সম্ভব হতো না। দীপন হত্যাকান্ডের আগে-পরে ‘পুলিশ নির্লিপ্ত’ ছিল। দোষীদের গ্রেপ্তার করতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে বিধায় হরতালের ডাক দিতে বাধ্য হয়েছে মঞ্চ। এই যেন বুকে থেকে পিঠে চুরিকাঘাত। অন্যদিকে চরমতমভাবে মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ ও সংগঠন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজ তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। প্রকাশকরা নেমেছেন দোকান বন্ধ করে রাজপথের আন্দোলনে। বাংলাদেশ রুখে দাঁড়াও, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম, ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি , আইন শালিশী কেন্দ্রসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন যার যার অবস্থান থেকে ব্যক্ত করছে তীব্র প্রতিক্রিয়া। প্রকাশক হত্যায় নিউইয়র্ক, লন্ডন প্রভৃতি স্থানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে মুক্তচিন্তার পক্ষে এবং ‘সরকারের ব্যর্থতায়’ গভীর হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হচ্ছিল।সরকারের ভিতরে বাইরে অস্থিরতা মাঝে মধ্যেই প্রকাশ্য রুপ ধারন করছিল। "এমনতর সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বড়ভাই শেখ সেলিমের কন্ঠে ভেসে উঠে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তি জাসদের ভুমিকা নিয়ে ক্ষুব্দ কন্ঠস্বর।" হঠাৎ বজ্রপাত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তির মাথার উপর। শুরু হল শেখ সেলিমের উদ্দেশ্য নিয়ে নানামুখি আলোচনা ও সমালোচনা। শেখ সেলিমের কন্ঠের সাথে তাল মিলাল আরও কতক কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতা। আওয়ামী লীগের তৃনমুল থেকে দাবী উঠল শেখ সেলিমের বিরুদ্ধে মহাজোট ভাঙ্গার অপচেষ্টায় তাঁকে বহি:স্কারের। সুযোগ বুঝে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে লন্ডনে অবস্থানরত: খালেদা হঠাৎ সুধী সমাবেশ ডেকে বলে বসেন, '‘হাসিনা ও মঈন ইউ আহমদের’ ,২০০৯ সালের বিডিআর হত্যার অভিযোগে বিচার করা হবে।" বক্তব্যটি দেশব্যাপি আলোচনার বিষয়বস্তুতে পরিনত হল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘লেডি হিটলার’ এবং হত্যার ঘটনার জন্য দায়ী করে বলেন, ‘জঙ্গিদের কথা বলে শেখ হাসিনা বিদেশিদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছেন।খালেদার বক্তৃতার সুর থেকে এটা সুস্পষ্ট অনুমান করা গিয়েছিল-দেশের মানুষ নয়, বিদেশীদের বোঝানোই হচ্ছে বিএনপি-জামাত জোট নেত্রীর আসল উদ্দেশ্য। খালেদা জীয়ার বক্ত্যব্যের পরেই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তির মধ্যে সম্বিত ফিরে এল। সহষা আন্দোলন স্তিমিত হল, সমালোচনার বর্শার আঘাত কমতে লাগলো, সরকারেও স্থীরতা এল।শেখ সেলিমের জাসদ বিতর্কও মাটিচাপা পড়ে গেল। বঙ্গরত্ম শেখ হাসিনা যখন প্রথম শত্রুর বিরুদ্ধে জয়ী হয়ে দ্বিতীয় শত্রুকে পরাস্ত করার জন্য তাঁদের একান্ত মিত্র দেশ সফর করে মারানাস্ত্র মজুদে ব্যাস্ত, তখনি ঘটে গেল কয়েকটি অনিভিপ্রেত ঘটনা। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তর থেকে প্রথমেই তনু হত্যা নিয়ে পানি ঘোলা করে দেয়ার চেষ্টা হল।একের পর এক জঙ্গি হামলায় পুরোহীত সহ বেশ কিছু মানুষ খুন হয়ে গেল।চট্রগ্রামে ঘটে গেল লোম হর্ষক ঘটনা। পুলিশের ডি আই জির স্ত্রীকে টার্গেট কিলিং এ হত্যা করা হল।মাদারিপুরে এক কলেজ শিক্ষককে চাপাতির কোপে আহত করে পালায়নরত: অবস্থায় জনতার হাতে ধৃত হল এক শিবির নেতা। এমনিতর সময় আওয়ামীলীগের গুটিকতক নেতার হাতে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকারের আমলা লাঞ্চিত হওয়ার ঘটনায় সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থীতির মুখে ঠেলে দেয়।।সন্ত্রাসী মাস্তান নেতাদের অপকর্মের কারনে ইউপি নির্বাচন দেশ বিদেশে প্রশ্নের সম্মুখ্যিন হল। জাতির জনকের কন্যার ইউপি নির্বাচন দলীয় মনোনয়নে ও প্রতিকে করার সুদুরপ্রসারি চিন্তাচেতনা এবং মহৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকে বিলীন করে ব্যাক্তি স্বার্থকে প্রাধান্য দেয় কতিপয় দুবৃত্ত নেতা। তাঁরা সরকারের নির্বাচন সুষ্ঠ ও অবাধ করার সদিচ্ছাকে জলাঞ্জলী দিয়ে বিগত দিনের কঠোর পরিশ্রমে অর্জিত অর্জন সমুহের উপর কলংকের কালিমালেপন করে দিল। এমন সময়ে সরকার জঙ্গি হামলা নির্মুলে যখন যৌথ বাহিনীর সাঁড়াষি অভিযান চালিয়ে জনজীবনে স্বস্তি আনায়নে ব্যাস্ত, ঠিক তখনি আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় শির্ষস্থানীয় নেতার মুখ থেকে পুনরায় জাসদ বিতর্কের অবতারনা হল। উক্ত বিতর্ক ক্ষনিকের মধ্যে দেশব্যাপি চড়িয়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড়ের গতিকে টর্নেডোতে রুপান্তরীত করেছে।মহুর্তে বিএনপি নেত্রীও সৈয়দ আশ্রাফের মন্তব্যে ঘি ঢালার উদ্দেশ্যে বক্তৃতা বিবৃতির ঝড় তোলার চেষ্টা অব্যাহত রাখল। জাতির জনকের কন্যা সবেমাত্র প্রধান শক্তির সাথে লড়াই করে ক্লান্ত শরীর নিয়ে দ্বিতীয় শক্তির বিরুদ্ধে রণসাজে সাজার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, ঠিক তখনি উপরি উক্ত অনভিপ্রেত ঘটনাবলী কিঞ্চিত হলেও সরকারকে দুর্বল করবে সন্দেহ নেই। পয্যবেক্ষনে দেখা যায়, জাতির জনকের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ বিদেশের কিছু পরিবার ও ব্যাক্তির প্রতি মানষিকভাবে দুর্বল।যে সমস্ত ব্যাক্তিও পরিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানকে জাতির জনক হয়ে আত্মপ্রকাশ করার পিছনে অসামান্য অবদান রেখেছেন, সেই সমস্ত পরিবার ও ব্যাক্তির ছেলেমেয়েদের প্রতি উদার মনোভাব পোষন করেন।জগন্যতম অপরাধের কারনেও সহষা ক্ষিপ্ত হননা তিনি, ব্যবস্থা গ্রহন করতে কিছুটা সময়ক্ষেপন করেন।যেমন জাতীয় চার নেতার পরিবার,নারায়ন গঞ্জের ওসমানী পরিবার, চট্রগ্রামের হান্নান সাহেবের পরিবার, টাঙ্গাইলের সিদ্দিকী পরিবার সহ আরো কতেক পরিবার। শেখ হাসিনার এই মানষিক দুর্বলতাকে পুঁজি করে ঐ সমস্ত পরিবারের সদস্যগন সময়ে সময়ে এমনসব কান্ডজ্ঞানহীন ঘটনা ঘটান -শেখ হাসিনাকে তো বটে সরকারকেও বিব্রত, ব্যতিব্যস্ত করে তুলতে দেখা যায়। ইহা কতখানি নীতি আদর্শের অভ্যন্তরে পড়ে জাতির চিন্তা করার প্রয়োজন আছ বৈকি। মুলত: সরকার যখন আইনের আওতার মধ্যে থেকে কঠোরভাবে সংবিধান অনুযায়ী বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেন তখনই উল্লিখিত সব তৎপরতা ও বক্তব্যের ভেতর দিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টায় লিপ্ত হন ষড়যন্ত্রকারীরা।তাঁরা দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে সরিয়ে নিয়ে ডান-প্রতিক্রিয়াশীলমুখী করার প্রচেষ্টা চালান। জাতি হিসাবে আমাদের পরিত্যক্ত, আমাদের নিকট যুদ্ধে পরাজিত সেই পাকিস্তানমুখী করার চক্রান্ত,বাঙ্গালী জাতির জন্য লজ্জা ছাড়া আর কি হতে পারে? যে বীজ রোপন করেছিলেন কায়েদে আযম মহাম্মদ আলী জিন্নাহ ১৯৪৭ইং সালের দ্বিজাতি তত্বের মধ্য দিয়ে,সেই বীজকেই তাঁরা পরিচর্য্যা করতে চান।৭১ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে তাঁদের পরাজিত করে সেই বীজের মুলৎপাটন করেছিল বাঙালী জাতি। পাকিস্তানের উচ্ছিষ্ট ভোগিরা স্বাধীনতার পর বাহাত্তরের সংবিধান চালু হলে আবার সংঘঠিত হয়। তাঁরা বাঙ্গালী জাতির মুলচেতনা জাতীয়তাবাদ ও ধর্ম নিরপেক্ষতার শক্তিকে এবার মুল টার্গেটে পরিনত করে। প্রথমেই তাঁরা মিথ্যা অপবাদ,ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে পঁচাত্তরে সামরিক বাহিনীকে কাজে লাগিয়ে সপরিবারে বাঙ্গালী চেতনার ধারক ও বাহক জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে।তার পর জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে। তাঁর পরেই পবিত্র সংবিধানকে সামরিক ফরমানে রাতারাতি সংশোধন করে। তাঁরা পাকিস্তানের আদলে হুকুমের গণতন্ত্র চালু করে।মুলত: গণতন্ত্রের মর্মমূল উৎপাটন শুরু করে।দেশকে মিনি পাকিস্তানে রুপান্তর করে-যাহা জাতি হিসেবে বিশ্বদরবারে আমাদের জন্য অত্যান্ত ঘৃনার এবং মায্যদাহানীকর। বিশ্বব্যাপী উগ্রজঙ্গিবাদের উত্থান হলে এটা সর্বোতেভাবে কাজে লাগিয়ে দেশকে আরো দক্ষিণে ঠেলে দিতে প্রচেষ্টা চালায় তাঁরা সর্বতোভাবে। উদাহরন হিসেবে বলা যায়--আওয়ামী লীগের ১৯৯৬-০১ আমলে গোপন জঙ্গি গ্রুপগুলি বিএনপি-জামাত আমলে প্রকাশ্য জেএমজেবি, হরকাতুল জিহাদ রুপে আত্মপ্রকাশ। বর্তমান দিনগুলোতে হিজবুত তাহরীর, আল্লাহর দল, আনসার উল্লাহ বাংলা টীম প্রভৃতি হচ্ছে এক ও অভিন্ন ধারাবাহিকতার বহিঃপ্রকাশ। আওয়ামী লীগের সময় অপ্রকাশ্য ও নিষিদ্ধ- বিএনপি-জামাত আমলে প্রকাশ্য অস্ত্র নিয়ে রাজপথে মিছিল। আওয়ামী লীগের সময়ে হত্যা, গুপ্তহত্যা পরিচালনা করে, আওয়ামী লীগের শাষনকে অকেজো করা। বহি:শত্রুর আক্রমনের পথ সৃষ্টি করে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করা। হত্যা-গুপ্তহত্যার মাধ্যমে ভীতি প্রদর্শন পুর্বক প্রথমোক্ত ধারাকে ঘরকুনো করে রাখার অপপ্রয়াস। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তাঁদের অন্ধকার যুগের সুচনা করা। উপসংহারে বলতে চাই,শেখ সেলিম এবং সৈয়দ আশ্রাফের মত জাতীয় নেতারা মহাজোট গঠনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবহিত নন ইহা বিশ্বাস করা কঠিন ব্যাপার।জনাব ইনু '৭৫ পরবর্তিতে তরুন নেতা ছিলেন। দলের কর্মকান্ডে সক্রিয় অংশ গ্রহন ছিল অবশ্যই।তবে জাসদের মুল কান্ডারি ছিলেন না, অবশ্যই বলা যায়।মুল চক্রান্তের হোতা মেজর জলিল,আসম রব, শাহাজান সিরাজ (দাদা ভাই),কর্নেল তাহের সহ আরো কতিপয় নেতা জাসদ রাজনীতির মুল চালিকা শক্তি হিসেবে চিহ্নিত ছিলেন।তাঁদের মধ্যে আসম আব্দুর রব ১৯৯৬ইং--২০০১ ইং সালে আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী ছিলেন।তখন এই সমস্ত বিতর্ক উত্থাপন না করে, এখন জাতীয় কর্তব্য সাধনের পথে দেশরত্ম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেকদুর অগ্রসর হওয়ার পর, দলের দ্বিতীয় শীর্ষস্থানীয় নেতার মুখ থেকে মহাজোটের ক্ষতিকারক উক্তি প্রকাশের কি কারন থাকতে পারে এই মহুর্তে বোধগম্য হচ্ছেনা। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি মনেপ্রানে আশা করে, জাতীয় নেতৃবৃন্দ তাঁদের কথাবার্তায়,আচার আচরনে আরো অনেক বেশী সচেতন হবে।মুল উদ্দেশ্য সাধনের আগমুহুর্ত পয্যন্ত অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ পুর্ণাঙ্গ বিনির্মান পয্যন্ত কথা ও কাজে সতর্কতা অবলম্বন করবেন। ইহাই জাতির আখাংকা। 'জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু।'

ছবি

ইসলামী সন্ত্রাস বাদ বাস্তবতা: না অলীক কল্পনা? ________________________________________ ভয় দেখিয়ে বা ত্রাস সৃষ্টি করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টাকেই বলা হয় সন্ত্রাসবাদ। বিরোধীদের দমনের জন্য বা তাদের ভীত-সন্ত্রস্ত করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সহিংস বা অবৈধ তৎপরতাও সন্ত্রাসবাদ হিসাবে বিবেচিত হয়। এ দ্বিতীয় ধরনের পদক্ষেপকে বলা হয় রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। ইসলাম গোপনে কাউকে হত্যা করা বা সন্ত্রাসী পদক্ষেপকে নিষিদ্ধ করেছে। সূরা কাহ্ফ,সূরা মায়েদা ও বনি ইসরাইলে নরহত্যাকে নিষিদ্ধ বলে জানানো হয়েছে। যেমন,সূরা মায়েদার ৩২ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,‘এ কারণেই আমি বনি ইসরাইলের প্রতি এ বিধান দিয়েছি যে,কেউ প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ অথবা পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করা ছাড়া কাউকে হত্যা করে সে যেন সব মানুষকেই হত্যা করে। আর যে কারও জীবন রক্ষা করে,সে যেন সবার জীবন রক্ষা করে। আমার পয়গম্বরগণ বনি ইসরাইলের কাছে স্পষ্ট নিদর্শনাবলী নিয়ে এসেছে। বস্তুত এরপরও তাদের অনেক লোক পৃথিবীতে সীমালঙ্ঘন করেছে।’ সূরা বনি ইসরাইলের ৩৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,‘সে মানুষকে হত্যা কর না যাকে হত্যা করা আল্লাহ হারাম করেছেন;কিন্তু বৈধ কারণে হত্যা করা ন্যায়সঙ্গত। যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে নিহত হয়,আমি তার উত্তরাধিকারীকে হত্যার বদলা নেওয়ার বা কাসাসের ক্ষমতা দান করি। অতএব,সে যেন হত্যার ব্যাপারে সীমালঙ্ঘন না করে। নিশ্চয় সে সাহায্যপ্রাপ্ত।’ আবু সাবাহ্ কানানী নামের এক ব্যক্তি হযরত ইমাম জাফর সাদেক (আ.)-কে জিজ্ঞাসা করেন,‘আমার এক প্রতিবেশী আমীরুল মুমিনীন হযরত আলী (আ.) সম্পর্কে খারাপ কথা বলে,তার ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নেওয়ার অনুমতি দেবেন কি?’ তিনি বললেন,‘তুমি কি কিছু করতে পারবে?’ সে বলল,‘আল্লাহর কসম! আপনি যদি অনুমতি দেন তাহলে তার আশপাশে কোথাও গোপনে অবস্থান নেব এবং নাগালের মধ্যে আসা মাত্রই তরবারি দিয়ে তাকে হত্যা করব।’ ইমাম তাকে বললেন,‘হে আবু সাবাহ! তোমার এ কাজ তো গুপ্তহত্যা বা সন্ত্রাস এবং আল্লাহর রাসূল (সা.) তা নিষেধ করেছেন। ইসলাম অবশ্যই গুপ্ত হত্যা বা সন্ত্রাসের বিরোধিতা করে।’ মাসুম ইমামগণ থেকে বর্ণিত হয়েছে,ঈমান গুপ্তহত্যা বা সন্ত্রাসে বাধা দেয়। একজন মুমিন কখনও সন্ত্রাসে বা গুপ্ত হত্যায় জড়িত হয় না।’ পবিত্র কুরআনের এসব আয়াত ও এসব নির্ভরযোগ্য হাদীস থেকে বোঝা যায়,একজন খুনী,অপরাধী বা হত্যার যোগ্য অপরাধী বা কাফির সেনাকে কেবল ন্যায়পরায়ণ ইমাম বা তাঁর বিশেষ প্রতিনিধি অথবা ইসলামী রাষ্ট্রের প্রধানের অনুমতি সাপেক্ষে তদন্ত ও সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে বিচার অনুষ্ঠানের পর প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যায়। এক্ষেত্রে তদন্ত ও বিচার কাজও হতে হবে প্রকাশ্যে বা কোন রাখ-ঢাক ছাড়াই। এ ধরনের শাস্তির উদ্দেশ্য হল,সমাজে শৃঙ্খলা বিধান ও জনসাধারণের নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনা। অন্যদিকে সন্ত্রাসী তৎপরতা চালানো হয় রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারের লক্ষ্যে। জননিরাপত্তা ও জনগণের শান্তি-শৃঙ্খলায় ব্যাঘাত ঘটানোর উদ্দেশ্যেও গোপনে এ ধরনের হামলা চালানো হয়। কোন ইমাম এ ধরনের তৎপরতার অনুমতি দেননি। মহান আল্লাহ্ সূরা নিসার ৮৬ নম্বর আয়াতে বলেছেন,‘যারা ঈমান এনেছে তারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে;আর যারা কাফির তারা তাগুতের (শয়তানের) পথে লড়াই্ করে;তাই তোমরা জিহাদ করতে থাক শয়তানের পক্ষাবলম্বনকারীদের বিরুদ্ধে,(দেখবে,) শয়তানের ষড়যন্ত্র একান্তই দুর্বল’ ইসলামী জিহাদের উদ্দেশ্য হল,দুর্বল,বঞ্চিত ও নিপীড়িত লোকদের কুফরি বা তাগুতি শক্তির হাত থেকে মুক্ত করা। শিয়া রাজনৈতিক ফিকাহ শাস্ত্রে সন্ত্রাস বলতে ভয় দেখানোর জন্য অস্ত্র ব্যবহার,প্রতিপক্ষকে অসচেতন বা অসতর্ক অবস্থায় হত্যা করা এবং শত্রুকে আশ্রয় দেওয়ার পরও হত্যা করা বা তার ওপর নির্যাতন করাকে বোঝায়। গোপন প্রতিহিংসা ও অযৌক্তিক বা অন্ধ-বিদ্বেষ এ ধরনের তৎপরতায় প্রেরণা যোগায়। শিয়া ফিকাহ অনুযায়ী এ ধরনের তৎপরতা তথা সন্ত্রাস পবিত্র কুরআনের স্পষ্ট নির্দেশ ও রাসূল (সা.)-এর সুন্নাতের খেলাফ।’ পাশ্চাত্যের বিশিষ্ট ইসলাম বিশেষজ্ঞ বার্নার্ড লুইসও মনে করেন ইসলাম খুব স্পষ্টভাবে সন্ত্রাসবাদের বিরোধিতা করে। এমনকি ইসলাম আত্মহত্যারও বিরোধিতা করে। ইসলামের যুদ্ধনীতি মোতাবেক সব অবস্থাতেই শিশু,বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ও বেসামরিক মানুষকে যুদ্ধের সময় নিরাপত্তা দিতে হবে। ইসলামের দৃষ্টিতে রাসায়নিক ও পরমাণু বোমার মতো গণবিধ্বংসী অস্ত্র ব্যবহারও হারাম। বার্নার্ড লুইস বলেছেন,‘ঐতিহ্যবাহী ধারার ইসলামী আইন অনুযায়ী ফতোয়া দেওয়ার যোগ্যতা উসামা বিন লাদেনের নেই। কারণ,তিনি আলেম নন। বিন লাদেনের ফতোয়া দেওয়া হিটলার কর্তৃক পোপ নিয়োগ দেওয়ার কিংবা লেনিনের মাধ্যমে রাশিয়ার অর্থডক্স গীর্জায় নির্দেশনামা জারি করার সমতুল্য।... পবিত্র কুরআন ও হাদীসে সন্ত্রাস নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও তালেবান ও আলকায়দার মতো দলগুলো মুসলিম বিশ্বে আত্মঘাতি হামলা চালিয়ে বা বোমা হামলা চালিয়ে নিরপরাধ ও বেসামরিক মুসলমানদের হত্যা করছে। আর এসব কাজে কুরআন ও হাদীসের সমর্থন রয়েছে বলে দাবি করেছে। আসলে এটা সঠিক বাক্যকে ভুল কাজে ব্যবহারের দৃষ্টান্তের মতো। ‘জিহাদ ধর্মের অন্য কাজগুলোর চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ’-এমন মত দেওয়া হয়েছে লেখক ইবনে তাইমিয়ার আসসিয়াসাত আশ শারিয়া গ্রন্থে। উগ্র ইসলামপন্থী মৌলবাদীরা ওয়াহাবীদের সৃষ্ট নানা বিদ‘আতে প্রভাবিত হয়েছেন। আর এরই আলোকে অনেকে ইসলামী সন্ত্রাসের ওপর তত্ত্ব বা থিওরি দাঁড় করাচ্ছেন। এসব তত্ত্বের না আছে বুদ্ধিবৃত্তিক বা যৌক্তিক ভিত্তি,না আছে কুরআন বা হাদীসের বর্ণনার সমর্থন। ফলে পবিত্র জিহাদ বা ইসলামী জিহাদ যে সন্ত্রাসের বিরোধী সেই ধারণা ধোঁয়াশাযুক্ত বা অস্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আসলে ইসলামের নামে প্রচলিত যেসব ধারা ইসলামের মূল চেতনা তথা তাওহীদের চেতনার সাথে সমন্বিত নয় সেসব ধারা আধুনিক মতবাদগুলোর খপ্পরে পড়বে,এটাই স্বাভাবিক। অতি উগ্র ইসলামী মৌলবাদীদের ক্ষেত্রে সেটাই ঘটেছে। আল কায়েদার ‘পছন্দের ইসলামে’ লক্ষ্য পূরণের হাতিয়ার হিসাবে সন্ত্রাস সমর্থনযোগ্য। অথচ প্রকৃত ইসলামে সৎ বা অসৎ যে কোন উদ্দেশ্যে সন্ত্রাস বৈধ নয়। পবিত্র কুরআনের অনেক আয়াত,রাসূলল্লাহ (সা.)- এর তৎপরতা ও পবিত্র ইমামগণের বর্ণনা থেকে এ বিষয়টি দিবালোকের মতই স্পষ্ট। (সুত্র প্রত্যাশা:সংখ্য-২ বর্ষ-২)

ছবি

অনুপ্রবেশকারিদের কারনে আওয়ামীলীগ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হোক-'ত্যাগী নিবেদিত কর্মীরা মেনে নিতে পারেনা'----_______________________________________ অবশেষে আমাদের ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির কুম্ভকর্ণের ঘুম ভেঙ্গেছে।জাতিয় নেতাদেরও কিছুটা বোধদয় হচ্ছে,রাজনীতিতে কিছুটা স্থবিরতা এসেছে, অনুপ্রবেশকারি ডুকে পড়েছে,ফ্রাংকেস্টাইলে কোথাও কোথাও রাজনীতির গতিধারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে, প্রভুত্বের রাজনীতির চর্চা হচ্ছে। যত্রতত্র ছাত্রলীগ, যুবলীগকে ব্যবহার করা হচ্ছে, নেতাদের ব্যাক্তিগত স্বার্থ্য হাসিলে-ছাত্রলীগের কর্মীরা ক্ষেত্রবিশেষ জীবনও বিলিয়ে দিচ্ছে।দুইদিনব্যাপী বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বর্ধিত সভা ও কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংগঠনের সভাপতি মো. সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন-প্রধান অতিথি সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি জনাব ওবায়দুল কাদের একই সুরে- 'একই উপদেশ দিয়ে বলেন, 'ভাই লীগ ত্যাগ করে ছাত্র লীগ করার জন্য।" বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় একটা কলাম পড়ে ছিলাম গত কয়মাস আগে। সেখানে আওয়ামী লীগ নেতাদের নানাহ কায্যকলাপের বিষয়-সুনির্দিষ্ট ব্যাক্তি, স্থান উল্লেখ করে বিস্তারীত আলোচনা দেখতে পেয়েছিলাম। পত্রিকায় যা এসেছে তা হয়তবা শতভাগ সত্য অথবা মিথ্যা ,কম বেশি হতে পারে।পত্রিকার আংশিক আমি নিম্নে তুলে ধরা বাঞ্চনীয় মনে করি।পত্রিকাটি লিখেছে-'এক সময় আওয়ামী লীগের জেলা পয্যায়ের নেতারা ছিল ঐজেলায় সর্বজন শ্রদ্ধেয়। নির্লোভ সেই নেতারা রাজনীতির জন্য শুধু ত্যাগই করেছেন। কালক্রমে পাল্টে গেছে সেই রাজনীতির চিত্র। সর্বশেষ টানা সাত বছর দল ক্ষমতায়, তাই আওয়ামী লীগের জেলা নেতাদের সংগঠনের চেয়ে অন্যদিকেই মনোযোগ বেশি। কমপক্ষে দুই ডজন নেতা ক্ষমতা ভাগাভাগি ও নিজেদের আখের গোছানোয় ব্যস্ত। সরকারি-বেসরকারি জমি দখল থেকে শুরু করে জেলার সব ব্যবসা-বাণিজ্য ও নিয়োগের একচ্ছত্র আধিপত্য নিজেদের মধ্যে করে নিয়েছেন ভাগবাটোয়ারা। অন্যগুলোতে এ দুই পদের রাজনীতিকদের নাম ব্যবহার করে অহরহই হচ্ছে দখল, তদবির, টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজি। টানা দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর এসব ক্ষেত্রে এসেছে বেপরোয়া ভাব। দেখে বা শুনেও তারা কিছু বলছেন না বা বলতে পারছেন না। অবশ্য বেশকিছু জেলায় সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের চেয়ে ক্ষমতাসীন হয়ে বসেছেন হাইব্রিড নেতারা। তারা নিজেদের মতো করে চলছেন। তোয়াক্কা করছেন না ত্যাগী রাজনীতি-বীদদের। বেশির ভাগ জেলায় তৃণমূলের নেতাকর্মীদের চেয়ে এখন কদর বেশি সুযোগসন্ধানীদেরই। এমপিদের মাধ্যমে তারাই ছড়ি ঘোরাচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের ওপর। প্রতিবেদনটি হাজার হাজার আওয়ামী লীগ কর্মীর অন্ত: দহনের কথাই বলেছে।যে সমস্ত নেতাকর্মী বিশেষ করে-"যারা জাতির জনকের আদর্শকে আঁকড়ে ধরে সারাটি জীবন শুধু মাঠে ময়দানে আন্দোলন সংগ্রামই করেছেন-বিনিময় কখনই দলের নিকট কিছুই চাননি তাঁদের।এমন অনেক নেতাকর্মী আমার জানামতে এখনও কোনমতে বেঁচে আছেন-যাঁরা দলের দুর্দিনে পৈতৃক সম্পদ বিক্রি করে দলীয় কর্মী লালন করতে গিয়ে ভুমিহীনের খাতায় নাম লিখিয়েছেন।সম্মান জনক চাকুরী হারিয়ে বাদবাকী জীবন বেকারের খাতায় নাম লিখিয়ে বৃদ্ধাবস্থায় মানবেতর জীবন যাপনের ঝুঁকিতে আছেন। এখনও দিনের ১৮/২০ ঘন্টা সময়-সবার অগোচরে দলের আদর্শ প্রচার ও প্রসারে নিবেদিত রেখেছেন। অনেকেই স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে প্রতিনিয়ত দলের মঙ্গলে নীজকে রেখেছেন ব্যপৃত। মিথ্যা মামলা জেল জুলুম সহ্য করেও আদর্শচ্যুত হননি কখনও।সারা দেশে এমন লাখ লাখ নেতাকর্মী বুকের অন্তদহনে জ্বলে পুড়ে চারখার হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এমন নেতাকর্মী আছে আমি জানি চিনি, ভাল সম্পর্কে সম্পর্কিত আছি বহু আগে থেকে। ২০০৮ইং সালে নতুন প্রজম্মের উত্থান লক্ষ করে আত্মতৃপ্তিতে তাঁদের বসার জায়গা দিয়ে নীজে রাজনীতি থেকে স্বেচ্চায় অবসর নিয়ে প্রতিনিয়ত দলের মঙ্গল কামনায় সময় কাটান।" আমি স্বীকার করি আওয়ামী লীগ বুর্জোয়া সংগঠন। জেলা উপজেলার নেতা হলে ব্যাবসা করা যাবেনা তাও নয়। দল ব্যাবসা করার জন্য অনুপ্রেরনা দেয়। স্বাবলম্বী না হয়ে রাজনীতি করা বা সমাজ সেবা করা যায়না সত্য কথা। তবে সেই ব্যবসা কোন অবস্থায় অবৈধ পথে, জোর করে, জবরদখল করে নয়।দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয় এমন কোন কাজে জেলা উপজেলার নেতারা জড়াতে পারেন না- কোন অবস্থাতেই। রাজনীতির ধ্যানধারনার মধ্যে পার্থক্য এসেছে ইহা বাস্তব।বর্তমানের কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রায় সব নেতাই কোননা কোন ব্যবসা বানিজ্যের সাথে সম্পৃত্ত রয়েছেন।সার্বক্ষনিক রাজনীতি করেন এমন নেতা কোন দলেই খুঁজে পাওয়া যাবেনা।অথছ বেশীর ভাগ নেতাই সার্বক্ষনিক রাজনীতিতে থাকার কথা ছিল।'৭৫এর পট পরিবর্তনের আগেকার সময় সার্বক্ষনিক নেতাদের বিচরন রাজনীতিকে মুখরীত করে রেখেছিল।সম্মান শ্রদ্ধাও ছিল অন্য যে কোন পেশার চাইতে অনেক বেশী। কালচশমাধারী,তথাকথিত মেজর জিয়ার-- "রাজনীতিবীদদের জন্য রাজনীতি কঠিন করে দেব" জতীয় কর্মসুচী সূক্ষভাবে পরিচালনা করা হয়। সার্বক্ষনিক রাজনীতি এবং রাজনীতিবীদদের কবর রচনা করে পুর্নজম্ম ঘটিয়েছে রাজাকার, আলবদর, সেনাকর্মকর্তা, ব্যবসায়ী টাউট, বাটপার, কালোবাজারি নানান শ্রেনীর পঁচাগন্ধময় সমাজের কাল কীটপতঙ্গ গুলীর। এই অরাজনৈতিক ব্যাক্তিরাই রাজনীতিকে বিনিয়োগে পরিনত করেছে।তাঁদের মুখরোচক কথারঢালি বিমুগ্ধ করেছে আমজনতাকে।তাঁরাই আমদানী ঘটিয়েছে রাজনীতিতে পেশী শক্তির,কালো টাকার, অস্ত্র, মাস্তান, হোন্ডাগুন্ডার।তাঁরাই রাজনীতিতে কায়েম করেছে প্রভুত্বতন্ত্রের।রাজনীতির সিনিয়র নেতা হয়ে গেছে রাতারাতি বস। আওয়ামী লীগের লাখ লাখ ত্যাগী নিবেদিত কর্মীরা জানে বর্তমানের উত্থিত হাইব্রিড,তথাকথিত লুটেরা শ্রনীকে স্বল্প সময়ে নিয়ন্ত্রন করা যাবেনা। ৪০বছর আগে রুপিত বীজ- সুক্ষাতিসুক্ষ পরিচর্য্যায়, বিদেশী মদদের প্রলোভন, শক্তিধর ভিটামীনের অবাধ ব্যবহারে বটবৃক্ষ আকার ধারন করেছে, শীকড় অনেক গভীরে পৌঁছে গেছে। ইচ্ছা করলেই জাতির জনকের কন্যা অল্প সময়ে শিকড় উপড়ে ফেলতে পারবেন না। আশার কথা হচ্ছে-'সবমহলে তৃনমুল হতে গনতন্ত্র চর্চার লক্ষন ইতিমধ্যে ফুটে উঠেছে। এই ধারাবাহিকতা যদি নিদেনপক্ষে ২০/২৫ বছর সচল থাকে, তবেই তাঁদের শিকড় উপড়ানো সম্ভব হতে পারে।' বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির জনকের কন্যা বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন রাজনীতিবীদদের হাতে রাজনীতির চাবি তুলে দেয়ার লক্ষে।(১)স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ও তৃনমুলের কর্মীদের কতৃক প্রার্থী বাছাই, মনোনয়ন বোর্ড কতৃক মনোনয়ন দান।(২)আওয়ামী লীগে বহিরাগত সন্ত্রাসী মাস্তান লুটেরাদের অনুপ্রবেশ রোধে কঠোর নিষেদাজ্ঞা জারী। (৩) নির্বাচনে পেশীশক্তি, কালটাকার ব্যবহার রোধে নির্বাচন কমিশনকে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী করে আইন পাশ। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থীদের নির্বাচনে মাস্তানী প্রতিরোধে যথাযথ কায্যকর ভুমিকা নিয়েও প্রতিরোধ করা কোন কোন বিশেষ এলাকায় সম্ভব হয়নি।ঐ সমস্ত এলাকায় না পারার বহুবিধ কারনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারন আমি মনে করি তিনটি--(১) বিএনপি জামায়াত জোটের তৃনমুলে শক্তিহীনতা। (২) দুর্বল প্রতিদ্বন্ধির প্রতিরোধহীন প্রচার প্রচারনা।(৩) ভোটারদের কেন্দ্রমুখী করার ক্ষেত্রে প্রার্থীদের আন্তরীকতার অভাব বা স্বেচ্ছায় নেয়া কৌশল।" যাহোক--'আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীদের সাত্বনা দেয়ার মানসে আমার এই লেখনি নয়।আমার লেখনি তাঁদের জন্য,'যারা ফসল রোপন না করে জোর পুর্বক রোপিত ফসল নিয়ে যাচ্ছেন-তাঁদের উদ্দেশ্যে। তাঁদের প্রতি অনুরুধ থাকবে, "আমার ভুমিতে এসেছেন, প্রয়োজনে আমার ঘরেও বসেন আপত্তি নেই বরং খুশী হব -- কিছু নিয়ম কানুন যে ভাই আগে থেকে আমি পালন করি, তা যে আপনাকেও কঠোর ভাবে মেনে চলতে হবে ---" জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা

ছবি

বিশ্বনেতাদের সঙ্গে শেখ হাসিনা-- বাংলাদেশের সাফল্যের কাহিনী শুনল বিশ্বনেতারা-- ____________কপি পেষ্ট-----bd protidin_______ জাপানে জি-৭ সম্মেলনে বিশ্বনেতাদের মধ্যে (বাম থেকে) মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদ, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো —এএফপি বিশ্বের সাত পরাশক্তির জোট জি-৭ সম্মেলনে আউটরিচ মিটিংয়ে বিশেষভাবে আমন্ত্রিত হয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার কাছে বিভিন্ন সামাজিক সূচকে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার কাহিনী শুনেছেন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, ফ্রান্স, জার্মানি, কানাডার মতো দেশগুলোর রাষ্ট্রনায়করা। সাফল্যের কারণেই শেখ হাসিনাকে গতকাল জাপানের নাগোয়ায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনের আউটরিচ মিটিংয়ে স্বাস্থ্য, নারীর ক্ষমতায়ন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এবং উন্নত অবকাঠামো বিনির্মাণে সহযোগিতাবিষয়ক আলোচনায় বাংলাদেশকে নেতৃত্বের সুযোগ দেয় ধনী ও প্রতাপশালী রাষ্ট্রের এই জোট। নাগোয়ার কাশিকো দ্বীপে শিমা কানকো হোটেলে এ বৈঠকে ছিলেন জি-৭-এর মূল নেতৃত্বে থাকা প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, ইতালির প্রধানমন্ত্রী মাত্তিও রেনজি, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদ, জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মরকেল, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে, ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোল্ড টাস্ক, ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট জিন জাঙ্কার প্রমুখ। দেশের বার্তা সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জি-৭-এর নেতাদের নিজেদের সম্মেলনের পরদিন গতকাল সকালে শুরু হয় আউটরিচ মিটিং। এতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, ফ্রান্স, জার্মানি, কানাডা, ইইউর রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ এশিয়া ও প্যাসিফিকের বিশেষ আমন্ত্রিতরা। ভবিষ্যৎ বিশ্ব অর্থনৈতিক কাঠামোর ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব বহন করা এ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ ও পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক। পরে মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ ছাড়া যে দেশ গুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে তাদের সবাই কোনো না কোনো অঞ্চলকে প্রতিনিধিত্ব করছেন। কিন্তু বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্যই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এর মাধ্যমে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছে বাংলাদেশের গুরুত্ব স্পষ্ট হয়েছে। পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বলেন, এ সম্মেলনে অংশ গ্রহণ প্রধানমন্ত্রীর গ্লোবাল ইমেজ এবং এই কঠিন সময়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দৃষ্টান্তের একটা স্বীকৃতি। বৈঠকের দুটি সেশনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মূলত চারটি বিষয় নারীর ক্ষমতায়ন, মানসম্মত অবকাঠামো, জলবায়ু ও স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কথা বলেছেন। শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতির বিভিন্ন দিক সম্পর্কে বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে অবহিত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বলেছেন, উন্নত দেশগুলো যদি কারিগরি সহায়তা, অর্থায়ন এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, তাহলে বিশ্ব আজকে যেসব সমস্যায় পড়েছে, তা আর হবে না। বড় বড় অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়নের পাশাপাশি তৈরি পোশাকশিল্প এবং বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের ধারণার কথা তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী। পরিবেশবান্ধব জ্বালানির গুরুত্বের কথাও তুলে ধরেছেন। স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে বলতে গিয়ে ৩০ হাজার মাতৃসদনের মাধ্যমে নারীদের সহায়তার কথা উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ যে উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি অবদান রাখে তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে গুণগত স্বাস্থ্যসেবা তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছানোর প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিশ্বনেতাদের জানান শেখ হাসিনা। নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং রাজনীতিতে নারী— এই জায়গায় বাংলাদেশ একটা অবস্থান তৈরি করেছে। নারীর অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার ক্ষেত্রে ‘একটি বাড়ি একটি খামার’-এর কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। সমাজে নারীর মর্যাদা ও অধিকারের কথা বলতে গিয়ে বিশ্বব্যাপী নারীর মর্যাদা ও অধিকার নিশ্চিতের আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জি-৭-এর মূল নেতারা ছাড়াও আউটরিচ মিটিংয়ে অংশ নেন শাদের প্রেসিডেন্ট ইদ্রিস ইতনো, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো ওইদোদো, লাওসের প্রধানমন্ত্রী ড. সিসোলিথ, পাপুয়া নিউগিনির প্রধানমন্ত্রী পিটার ও’নেইল, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট শ্রীসেনা, ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী জুয়ান ফুক, জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন, আইএমএফের এমডি লাগারদে, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম ও এডিবির প্রেসিডেন্ট তাকেহিকো নাকাও। পরে বিকালে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিট ক্যামেরনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সন্ধ্যায় ফিরে যান নাগোয়ার হোটেল হিলটনে। আজ শনিবার দুপুরে রাজধানী টোকিও যাবেন তিনি। সেখানে বাংলাদেশ দূতাবাসের নতুন চ্যান্সেরি ভবন উদ্বোধন করবেন। আগামীকাল সকালে জাপানের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর প্রাতরাশ বৈঠকের পর জাপান ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হওয়ার কথা। দুপুরে শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক আছে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের। বাংলাদেশের সাফল্যের অংশীদার হতে চায় ব্রিটেন : দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, বাংলাদেশের সাফল্যের অংশীদার হতে চায় ব্রিটেন। বাংলাদেশের উন্নয়নে, জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ উন্নীত করায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এ আগ্রহ দেখিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক। সচিব জানান, আলোচনার শুরুতেই বাংলাদেশের ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনে বিস্ময় প্রকাশ করেন ডেভিড ক্যামেরন। তিনি জানতে চান, অব্যাহত এ অর্জন কীভাবে সম্ভব হলো? উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ প্রবৃদ্ধি একবারে ৬ থেকে ৭ হয়ে যায়নি। বাংলাদেশ দীর্ঘদিন টানা ৬ শতাংশের ওপর প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে। এরপর ১-২ পয়েন্ট করে ধাপে ধাপে এগিয়ে তবেই ৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশে ব্রিটিশ বিনিয়োগ নিয়েও দুই নেতা কথা বলেন।

ছবি

বিরুপ পরিস্থীতিতেও গনতন্ত্রের অভিযাত্রা এবং সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় বিরল দৃষ্টান্তই স্থাপন করেছেন জাতির জনকের কন্যা----________________________________________________ বাংলাদেশের অভ্যুদ্বয়ের পর থেকে সামরিক বেসামরিক, স্বৈরশাষন, অপশাষন,গনতান্ত্রিক শাষন অগনতান্ত্রিক শাষন সহ বহুবিদ শাষন, জনগনের সৌভাগ্য বলি আর দুর্ভাগ্য বলি, দেখার সুযোগ হয়েছে। আওয়ামী লীগ এর আগেও তিনবার দেশ শাষন করার সুযোগ পেয়েছিল। কেউ স্বীকার করুক বা না করুক-এবারকার বিরুধী দলের ভুমিকাহীন শাষনে গনতন্ত্রের অভিযাত্রাকে জাতির জনকের কন্যা-যে স্বচ্ছতা, জবাবদিহীতা, সংশ্লিষ্টদের অংশিদারিত্ব নিশ্চিত, জন আকাংক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে এগিয়ে নিচ্ছেন- এমনতর অন্যদল বা জোটের শাষনে বিরুধীদলের অস্তিত্ব জোরালো থাকা সত্বেও দেখা যায়নি। 'অর্থাৎ রাষ্ট্রের কাঠামোগুলিকে সর্বক্ষেত্রে গনতন্ত্রের ধারাবাহিকতায় রেখে জবাবদিহীতা নিশ্চিতে বর্তমান সরকারের যে আন্তরিকতার বহি:প্রকাশ ঘটছে তেমনটি অতীতে দেখা যায়নি।' উদাহরন হিসেবে চলমান ইউপি নির্বাচনের কথাই বলতে পারি-বিএনপি জামায়াতকে সরকার, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন সর্বাত্মক চেষ্টা করেও সার্বিক প্রতিযোগিতায় নামাতে পারেনি।বিরুধিদলের ভোট যুদ্ধে অনেক ক্ষেত্রে নামমাত্র অংশ গ্রহন, কোন কোন ইউপিতে হালছেড়ে বসে পড়া, অনেক ইউপিতে অংশ গ্রহন করার দলীয় নেতাকর্মী না পাওয়া সত্বেও সত্তর শতাংশ ইউপিতে ভোট সুষ্ঠ অবাধ,নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিএনপি জামায়াতের এত বেশী দুর্ভাগ্য বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থীর চাইতেও অনেক কম ইউপিতে তাঁরা বিজয়ী হতে পেরেছে। বিরুধীদের প্রতিরোধ, প্রতিযোগিতা, প্রচার-প্রচারনা ব্যতিরেকে সংখ্যাগরিষ্ট ইউপিতে সুষ্ঠ নির্বাচন নিশ্চিত করা সরকারের আন্তরিকতা,গনতন্ত্রের প্রতি একাগ্রতার বহি:প্রকাশ ছাড়া কোনভাবেই সম্ভব ছিলনা। এবারের নির্বাচন ব্যাক্তির নয়, প্রতিকেরও ছিল। নৌকা এবং ধানের শীষের তৃনমুলে মায্যদার লড়াই বটে। এই মায্যদার লড়াইতে বিএনপি এবং তাঁর জোট গোহারা হেরেছে।অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছিল দুই দলের বিদ্রোহী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ নেয়ার আইনগত সরকারি বাধা থাকলে জনগন জানতেই পারতেন না দেশে সবচেয়ে জনপ্রীয় এবং জনসম্পৃত্ত একটা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দেশের কোন কোন অঞ্চলে লুটেরা আওয়ামী নেতাদের ভোটকারচুপি, বাধাপ্রদান, জোরজবরদস্তি না থাকলে বিএনপি জামায়াতকে রাজনৈতিকভাবে তল্পিতল্পা সহ চিরতরে জনগন থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া সম্ভব ছিল। অঞ্চলবেদে কারচুপির কারনে কর্মীদের মনে আশা জাগানো ইস্যু পেয়ে বিএনপি জামায়াত আরও কিছু দিন মরে মরেও বেঁচে থাকার সিঁড়ি পেয়ে গেল। গত সাত বছরের শাষনে সংসদ এবং জনমতকে প্রাধান্য দিয়ে দেশ শাষনের বিরল উদাহরন সৃষ্টি করে যাচ্ছেন জাতির জনকের কন্যা। শক্তিহীন বিরুধীদলের অস্তিত্ব সত্বেও বিগত সরকার সমুহের ন্যায় সংসদকে পাস কাটিয়ে প্রেসিডেন্ট অর্ডিনেন্স এর মাধ্যমে গনবিরুধী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের কোন নজির অদ্যাবদি স্থাপিত হয়নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফর,সৃজিত চুক্তি, সমঝোতা স্মারক,গৃহিত পদক্ষেপ যথারীতি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জনগনকে জানাচ্ছেন, সংসদ সচল থাকা অবস্থায় সংসদকে অবহিত করছেন, মহামান্য রাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করে তাঁকেও ফলাফল রীতিমত অবহিত করছেন। স্বচ্ছতা, জবাবদিহীতা ও গনতন্ত্রকে লালন ও বিকশিত করার ক্ষেত্রে জাতির জনকের কন্যার বিরল দৃষ্টান্ত প্রতিনিয়ত স্থাপন করে চলেছেন।পুর্বের সরকার সমুহ সংসদের কায্যক্রম চলাবস্থায়ও প্রেসিডেন্ট অর্ডিনেন্সের মাধ্যমে বহু রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত নিতে দেখা গেছে।এমনও দেখা গেছে সরকার প্রধান বিদেশ সফর করে এসে গৃহিত কায্যক্রম এবং সুচিত চুক্তিপত্র সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জনগনকে অবহিত দুরের কথা- সংসদ এবং মন্ত্রীপরিষদ এবং কি প্রেসিডেন্টকেও অবহিত করার কোন নজির ছিলনা। সরকার অর্থনৈতিক কর্মকান্ডেও অনেকটা স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহীতা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছেন। শেয়ার মার্কেটে লুটপাট, ব্যাংকের অর্থ লোপাট, পদ্মা সেতুর কথিত দুর্নীতির অভিযোগ, রেলওয়ের দুর্নীতি ইত্যাদি ঘটনা সমুহ পত্র পপত্রিকায় প্রকাশের সাথে সাথে বিরুধীদলের আন্দোলন বা দাবি উত্থাপনের আগেই মুর্খ্যব্যাক্তিকে সরিয়ে তদন্ত অনুষ্ঠান, জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা, দোষ প্রমানে যথারীতি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করে সরকার আর্থিকক্ষেত্রেও শৃংখলা, স্বচ্ছতা ও জবাব দিহীতার রীতি প্রতিষ্ঠা করতে চেষ্ঠা অব্যাহত রেখেছেন এবং কোন কোন ক্ষেত্রে সক্ষমও হচ্ছেন। অন্যকোন দল বা জোটের শাষনে আর্থীক কেলেংকারী, অব্যবস্থাপনার জন্য শক্তিশালী বিরুধীদলের আন্দোলন ও দাবির প্রতি বা জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে কোন মন্ত্রী বা আমলার বিরুদ্ধে নিদেনপক্ষে বিভাগীয় তদন্তের ব্যবস্থা বা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনেরও কোন উদাহরন নেই। অনেক ক্ষেত্রে চাপের মুখে তদন্ত হলেও সেই তদন্ত কোনদিন আলোর মুখ দেখেনি। বর্তমান সরকার চলতি অর্থবছরের বাজেট দেয়ার ক্ষেত্রেও জনমত, স্বচ্ছতা, জবাবদীহীতা ও গনতন্ত্রের প্রতি অনন্য এক উদাহরন তুলে ধরেছেন।বিগত সাতবছরে সাতবার ( মাননীয় অর্থমন্ত্রীর দশম বাজেট) ঘোষনার আগে-পরে দ্রব্যমুল্যের দাম উঠানামা করেনি।অতীতের ন্যায় বাজেট মানিনা,গনবিরুধী বাজেট প্রত্যাখ্যান করে রাজপথে জনগন, পেশাজীবি বা কোন রাজনৈতিক দলের মিছিল মিটিং দেখা যায়নি, প্রতিবাদ প্রত্যাখ্যানের অপমানজনক কোন বিবৃতি বক্তব্য চোখে পড়েনি।অর্থ্যাৎ জনগনের চাহিদামাপিক, শ্রেনীপেশার মানুষের আগাম মতামতের প্রাধান্য, জন আখাংকার মুল্যায়ন ,অধিকতর সহজ, স্বচ্ছতার রীতি অনুসরন, সাধারনের বোধগম্যতার নিরিখে বাজেট ঘোষনার ফলেই কোন অপ্রীতিকর পরিস্থীতির সৃষ্টি এযাবৎ হয়নি, দ্রব্যমুল্যের দাম উঠানামা করেনি, জনভোগান্তির কোন কারন সৃষ্টি হয়নি।গনতন্ত্র, স্বচ্ছতা, জবাবদিহীতা, অংশীদারিত্বের নীতি অনুসরন করার কারনেই এমন সুখকর সেবা উপহার দিতে সক্ষম হচ্ছেন। অতীতে যেসব দল সরকারে থেকে বছরের পর বছর বাজেট দিয়েছে, তারা জন আকাংখাকে বিবেচনা বা উপলব্ধিতে নেননি। জনগণের ভাগ্যোন্নয়নের বিষয় জনগণকে বুঝতে হবে এবং বুঝেই জনগণ জনগণের জন্য বাজেট বাস্তবায়নে কাজ করবে- এই উপলব্ধিটুকু ইতোপূর্বে কোনো ক্ষমতাসীন সরকারপ্রধান কিংবা ৭ বার বাজেট দিয়েছেন বলে যে অর্থমন্ত্রী গর্বে গদগদ হতেন, তারা জন আকাঙ্ক্ষা উপলব্দি করেননি এবং কি করার চেষ্টাও করেননি।ফলে বাজেটের পর দ্রব্যমুল্য লাগামহীনভাবে বেড়ে যেত।প্রতিবাদে বাজেট ঘোষনার পরের দিন হরতাল অবরোধসহ বিভিন্ন আন্দোলনে সম্পৃত্ত হয়েছে রাজনৈতিক দল,শ্রেনী পেশার সংগঠন এবং জনগন। আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক ও ভাবাদর্শগত অবস্থানের কারণে বিরুপ পরিস্থীতির সৃষ্টি হয়নি।দলটির নীতি আদর্শের প্রতি আনুগত্যের কারনে, জাতির জনকের কন্যার গনতন্ত্রের প্রতি অবিচল আস্থা, জনগনের প্রতি আন্তরিকতা, দেশপ্রেম থাকার কারনে । দলটির জন্ম, অর্জন ও বিকাশ হচ্ছে এই উপলব্ধির জন্মদাত্রী। 'সরকার বাই দ্য পিপল অব দ্য পিপল ফর দ্য পিপল- গণতন্ত্রের এই অমর বাণী আওয়ামী লীগ লালন-ধারণ-বহন করে' বলেই এই ধরনের কাঠামোগত পরিবর্তনের চিন্তা লালন করতে পেরেছে। আগামী বাজেট এভাবে পরিবর্তিত হোক জনগণ তা কামনা করে। গণতন্ত্রের এই মর্মবাণী বাজেট ঘোষণার ভেতর দিয়ে তুলে ধরার জন্য নিঃসন্দেহে জনগণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাবে। উপসংহারে বলতে চাই- গণতন্ত্রের রয়েছে দুটো দিক। একটি রাজনৈতিক আর অপরটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক। প্রথমটি ভোট, সংসদ, সরকার ও বিচার বিভাগের কাজের ভেতর দিয়ে প্রতিভাত হয়। আর দ্বিতীয়টি জনগণের অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা বাসস্থানের মৌলিক চাহিদা পুরণ এবং কাজের নিশ্চয়তা ও পরিবেশ সুরক্ষা, সামাজিক বেষ্টনীর পরিধি প্রভৃতির ভেতর দিয়ে কার্যকর হয়। এ দুটি পরস্পরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একটির জন্য অপরটি যেমন বাধাগ্রস্ত হয়, তেমনি একটি অপরটির বাধা দূর করে এগিয়ে নিতে সাহায্য করে। তবে দুটি সমান তালে অগ্রসর হওয়া যে কোনো দেশ ও জাতির জন্য সৌভাগ্যের বিষয়। আমাদের দুর্ভাগ্য হচ্ছে, প্রথমটি অর্থাৎ গণতন্ত্রের রাজনৈতিক দিকটি রয়েছে এক জটিলতা ও বিপদের মধ্যে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ এবং অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মৎস্য শিকার করার জন্য বিএনপি-জামায়াত জোটের বয়কট ও অগ্নি সন্ত্রাস,রাজপথে সৃষ্ট রাজনৈতিক দলের অভাব, রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরে গনতন্ত্রের চর্চার অভাব এমন হয়েছে।আমাদের রাজনৈতিক দলসমুহের প্রাজ্ঞ রাজনীতি বীদগন নীজ দলের কর্মী সমর্থক ও জনগনকে শুধুমাত্র রাষ্ট্রের একটি অঙ্গ-নির্বাচনকেই গনতন্ত্রের মুল হিসেবে শিক্ষা দিয়ে থাকে এবং বলতে স্বাচ্ছন্দবোধ করে। গনতন্ত্রের বিবিধ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ রয়েছে সেই সমস্তকে গুরুত্ব দেয়না। রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে গনতন্ত্র, জবাবদিহীতা,স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠিত না হলে, নির্বাচনী কাঠামোতে গনতন্ত্র,স্বচ্ছতা, জবাবদিহীতা না থাকলে, নির্বাচন কিভাবে সুষ্ঠ হবে আমার বোধগম্যতায় আসেনা।নির্বাচন নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি করা যায়, রাষ্ট্রীয় কাঠামোর অন্যসব গনতান্ত্রিকতার ছোঁয়া না থাকলে রাজনীতিতে শক্তিশালী জনসম্পৃত্ত,আদর্শিক দলের উপস্থীতি না থাকলে নির্বাচন ফেরস্তায়ও সুষ্ঠ করতে পারবেনা। পরিশেষে বলতে চাই জাতির জনকের কন্যার অসীম ধৈয্য, সহনশীলতা, পরমত সহিঞ্চুতার কারনে এখনও মন্দের মধ্যে এটাই ভালো বলতে হবে--দেশ ও জাতি এখন পয্যন্ত সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার মধ্যেই রয়েছে। ফলে রাজনৈতিক গণতন্ত্রের যতটুকু অভাব, সেই অভাবকে সামাজিক-অর্থনৈতিক গণতন্ত্রের বিকাশের মাধ্যমে পুরন করার সর্বাত্মক চেষ্টা সরকার করে যাচ্ছে।গনতন্ত্র, আইনের শাষনের নিয়ন্তর সংগ্রামের পথে বিরুপ পরিস্থীতি মোকাবেলা করে কাংখীত সাফল্য ধরে রাখায় তাঁর সুফল আসতে শুরু করেছে। 'জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু'

ছবি

বাংলাদেশ আধুনিক ও কল্যান রাষ্ট্রের পথে কয়েকধাপ এগিয়ে ------ ______গতবছর এই দিনে যা লিখেছিলাম।____ বর্তমান বাংলাদেশ জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাছিনার নেতৃত্বে আধুনিক কল্যান রাষ্ট্র হিসাবে নীজের পায়ে দাড়িয়ে গেছে নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়। ২০০৮ হতে ২০১৫ সাল সময় খুব বেশি নয় মাত্র সাত বছর।সাত বছরের মধ্যে জন গনের মৌলিক চাহিদা শতভাগ পূরন করতে পেরেছে বলে আমি মনে করি। অন্ন,বস্ত্র,বাসস্হান,শিক্ষা,চিকিৎসা,এই ৫টি মৌলিক চাহিদার সংকট তিরোহিত হয়েছে।কোন কোন ক্ষেত্রে চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি অর্জিত হয়েছে। যেমন মানুষের প্রধান মৌলিক চাহিদা হচ্ছে খাদ্য।গত সাত বছরে খাদ্য চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও রপ্তানি করতে সক্ষম হয়েছেন। বাংলাদেশের কোন কর্মক্ষম মানুষ একবেলা উপোষ আছে এই কথাটা কোন শত্রুও বলতেপারবেনা।উত্তর বংগের দূর্ভিক্ষ বা মঙ্গা জননেত্রী যাদুঘরে পাঠাতে সক্ষম হয়েছেন। অক্ষম বৃদ্ধ নারী পুরুষের জন্য ভাতা চালু করে তার আওতা বৃদ্ধি করেছেন। সমাজেরএমন কোন নিপিড়িত অংশ নেই যে অংশটি সরকারি সেবার আওতা বর্হিভূত রয়েছে। সামাজিক বেষ্টনির আওতায় ভিজিডি বিজিএফ এর মাধ্যমে দুস্তনারী শিশুদের বিনা পয়সায় খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছেন।যাহা প্রয়োজন ছিলনা গর্ভকালীন ভাতা তাও সরকার চালু করেছেন। বস্ত্রের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা বিরাজমান দেশের চাহিদা পুরন করে বর্তমানে বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে খাতটি। রপ্তানি আয়ের বিরাট একটা অংশ যোগান দিয়ে চলেছে এ খাত। অসহায় নারীদের বিরাট একটা অংশের কর্মসংস্হানও করেছে খাতটি।পোষাক শিল্প এখন ভারী শিল্প হিসাবেবিবেচিত। বিদেশে বাংলা দেশী ব্যান্ডের পোষাক জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। শুধুমাত্র বাসস্থানের কিছু সমস্যা এখনও বিদ্যমান রয়েছে।তারপরও গত সাত বছরের মধ্যে নতুন করে বাস্তুহীন হয়েছে তেমন শুনা যায়নি।শহরের দিকে দাবমান বাস্তু হীন মানুষের স্রোত নেই বললেও চলে।শহরের বাস্তুহীন বস্তিবাসিদের বাস্হানের জন্য বৃহৎ কয়েকটি প্রকল্পের কাজ শেষ পয্যায়।চলমান প্রকল্প এবং নতুন প্রকল্পের সংযুক্তি ঘটলে এইক্ষেত্রে আর কোনসমস্যা থাকবেনা বলেই মনে হয়। শিক্ষায় জননেত্রীর সরকার বৈপ্লবিক পরিবর্তন লক্ষনীয় ভাবে পরিষ্পুটিত বা দৃশ্যমান উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছেন।বাংলা দেশের একটি গ্রামও নেই যেখানে এক বা একাদিক প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই।প্রতি ইউনিয়নে একাদিক হাইস্কুল, উপজেলায় একাধিক কলেজ,জেলা শহরে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশেষায়িত স্কুল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।মূল শিক্ষা ব্যবস্থাকে ডিজিটিলাইজড প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। চিকিৎসা ক্ষেত্রেও দেশ অনেকদূর এগিয়ে গেছে। গ্রাম পয্যায় কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন জননেত্রীর একটি যুগান্তকারি সিদ্ধান্ত হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে।বাংলাদেশে বর্তমানে কোন নারীশিশু চিকিৎসার আওতার বাহিরে নেই।কমিউনিটি ক্লিনিক গ্রামের মানুষের দরজায় পৌছে গেছে।বাংলাদেশ গ্রাম প্রধান দেশ।মোট জনসংখ্যার শতকরা আশি ভাগ লোক গ্রামে বাসকরে।গ্রামের উন্নতি বাংলাদেশের উন্নতি।এই থিম মাথায় রেখে গ্রামীন অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন।তমধ্যে একটি বাড়ি একটি খামার উল্লেখযোগ্য সফল প্রকল্প। ইউনিয়ন পয্যায় ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র, প্রতি উপজেলায়-উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স, জেলা পয্যায় সদর হাসপাতাল সহ বিশেষায়ীত আরো একাদিক হাসপাতাল মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় যুগান্তকারি পরিবর্তন এনে দিয়েছে স্বাস্থ্য সেবায়। ঔষদ শিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন লক্ষনীয় ভাবে ফুটে উঠেছে।বাংলা দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করে জাতীয় আয়ের অংককে কিছুটা স্পিত করতে সক্ষম হয়েছে। অদুর ভবিষ্যতে এই খাত আরও বিকশিত হবে আশা করা যায়। সামগ্রিক ভাবে চিন্তা করলে দেখা যায়,সমাজ বিজ্ঞানিরা কল্যান রাষ্ট্রের যে সজ্ঞা দিয়েছেন সেই সজ্ঞার আওতার মধ্যে বাংলা দেশের অবস্থান।সমাজ বিজ্ঞানিরা ৫টি মৌলিক চাহিদা পূরন সাপেক্ষ সামাজিক বেষ্টনি কল্যান রাষ্টের অন্যতম শর্ত হিসাবে বিবেচনা করেন।ইতিমধ্যে বাংলাদেশের ঈর্ষনীয় অর্থনৈতিক উন্নতির সংগে সংগতি রেখে সামাজিক বেষ্টনীর ভীত মজবুত ও আওতা যথেষ্ট বৃদ্ধি করা হয়েছে।তাছাড়াও নারী সমাজের উন্নয়ন ও নারির ক্ষমতায়নে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি অনেকাংশেবৃদ্ধি করেতে সক্ষম হয়েছে।জননিরাপত্তা সর্বক্ষেত্রে গনত্ন্ত্রায়ন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাকেই কল্যান রাষ্ট্রের অধিক গ্রহনযোগ্য মতবাদ হিসাবে বিবেচনা করেন। জাতির জনক বংগবন্ধুর সপ্নের সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নকে সামনে রেখে তারই কন্যা দেশরত্ন শেখ হাছিনা মেহনতি মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।শাসক নয় সেবক হিসাবে আজ জননেত্রী জনগনের নিকট অধিক গ্রহনীয় হয়ে উঠেছেন।দেশরত্মের হাতে যতদিন থাকবে দেশ পথ হারাবেনা বাংলাদেশ। জয়বাংলা--------জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাছিনা।

ছবি

বিটিভির অভ্যন্তরে সরকার বিরুধী প্রেতাত্বার ছায়া--বাজেট বক্তৃতার উদ্ভোধনী সঙ্গীত বিএনপির দলীয় সঙ্গীত---- _____________________________________ মহান আল্লাহই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছে, বাঙ্গালী জাতিকে মার্য্যদার আসনে বসাচ্ছে।ধর্মব্যবসায়ীদের অপকর্মের কারনে তাঁদের দিচ্ছে লা'নত, ধর্মনিরিপেক্ষ আওয়ামী লীগকে দিচ্ছে সর্ব উচ্চ মার্য্যদা। সরকারের প্রশাসন সহ সর্বক্ষেত্রে বেঈমান আর মির জাফরে চেয়ে গেছে। দুর্নীতিবাজ, লুটেরা, ঘুষ খোরের আখড়া বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা।যে যেখানে আছে সেখানেই লুটপাটের স্বর্গরাজ্য বানিয়ে নিচ্ছে।এর পরও মহান আল্লাহর অসীম কৃপায় দেশ এগিয়ে যাচ্ছে,মার্য্যদা পাচ্ছে বাঙ্গালী জাতি বিশ্ব দরবারে। অকল্পনীয় ঘটনা ঘটিয়ে দিয়েছে - বি টি ভি। সংসদে মাননীয় অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতার আগে নিয়ম অনুযায়ী উদ্ভোধনী সঙ্গীত বাজিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করার রেওয়াজ দীর্ঘ দিনের।এবারের বাজেট বক্তৃতার আগে বিটিভি উদ্ভোধনী সঙ্গীত বাছাই করে বিএনপির দলীয় সঙ্গীতকে।কতবড় দু:সাহস থকলে এমন কর্ম ঘটাতে পারে সরকার নিয়ন্ত্রীত একটি প্রতিষ্ঠান। সরকারের রন্ধে রন্ধে বসে আছে আওয়ামীলীগের দুশমন। প্রশাসনের নিম্ন পয্যায় থেকে সচিবালয় পয্যন্ত এমন কোন জায়গা নেই তাঁরা ঘাপটি মেরে বসে নেই। উপরে উপরে চামচামী করলেও ভিতরে অর্হর্নিশি সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে মির জাফরের বংশধরেরা। তদ্রুপ ঘটনা ঘটিয়েছে পুলিশ ইউপি নির্বাচনে। যেখানে লাঠি, কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ব্যবহার করে ভোট কেন্দ্র নিয়ন্ত্রন করা যেত, সেখানে অতি উৎসাহী পুলিশ গুলী করে অসংখ্য মানুষের জীবনহানী ঘটিয়ে দিল। তাঁরা সরকারের একান্ত বন্ধু হয়ে প্রমান করতে চাইল ভোটে হানাহানি, কারচুপি হচ্ছে। মানুষ হত্যা করে পুলিশ সারা বিশ্বের নিকট তুলে ধরার চেষ্টা করেছে ভোট সুষ্ঠু হয়নি,অনেক মানুষের মৃত্যুই তার প্রমান। ষড়যন্ত্রকারীরা কত দু:সাহসী হলে বিটিভির মত সরকারি প্রতিষ্ঠানেও বিএনপির দলীয় সঙ্গীত বাজাতে পারে!! নিশ্চিত ধরা পড়ার সম্ভাবনা থাকা সত্বেও তাঁরা ষড়যন্ত্র করেই ফেলেছে। এমন অনেক সংস্থা আছে সরকার দুই এক বছরেও খবর পাওয়ার কোন সুবিধা নেই, সে সমস্ত সংস্থায় কি পরিমান ষড়যন্ত্র, লুটপাট, দুর্নীতি করছে তা সহজেই অনুমেয়। আমাদের দাবী--বিটিভিতে এই গুরুতর ষড়যন্ত্রে যারাই জড়িত তাঁদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ইউপি ইলেকশানে সামান্য গোলযোগে যে সমস্ত পুলিশ গুলি করে মানুষ হত্যা করেছে তাঁর তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।বিনা কারনে মানুষ হত্যায় তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হতে হবে। উল্লেখ্য বিএনপি, জামায়াতের কোন নেতা কর্মী ইউপি নির্বাচনে পুলিশী হত্যার শিকার হয়নি।যে সমস্ত ইউপিতে বিএনপি চোখ রাঙানী পরিহার করে ভোট যুদ্ধে অংশ নিয়েছে, তাঁদের নেতাকর্মীরা ভোটের মাঠে ছিল-সেই সমস্ত ইউপিতে ভোট সুষ্ঠ, অবাধ, নিরপেক্ষই হয়েছে।যে সমস্ত ইউপিতে তাঁরা ভোট যুদ্ধে অংশ নেয়নি সেই সমস্ত ইউপিতে একতরফা শক্তিশালী প্রার্থীর পক্ষে জালিয়াতি হয়েছে ইহা সত্য,ইহাই বাস্তব। তাছাড়া বিপুল সংখ্যক বিদ্রোহী প্রার্থী ভোটে জিতে যাওয়ার মুল কারন প্রভাবশালী জেলা নেতারা দলের কেন্দ্রীয় সিন্ধান্ত অনুযায়ী তৃনমূলের মতামতের তোয়াক্কা না করে স্বজনপ্রীতি,আত্মীয়করন, টাকার বিনিময়ে প্রার্থীতা বিক্রি। সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী,ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, উদ্যোগক্তা, প্রশাসন, দল , মিডিয়া, আর্থিক প্রতিষ্ঠান সর্বক্ষেত্রে সকলের ইচ্ছাই যে, রাতারাতি টাকার কুমিরে পরিনত হওয়া।অন্য দিকে আর একপক্ষ কাজ করছে সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করার জন্য।সর্বক্ষেত্রে ঘাপটি মেরে বসে আছে বিএনপি জামায়াতের প্রেতাত্মারা। এই প্রেতাত্মারাই দুর্নীতি করার জন্য আওয়ামী লীগের নেতাদের সবচেয়ে বেশি সুযোগ করে দেয়। তাঁদের চেনাজানা পথগুলি বাতলিয়ে দেয়। কোন আঙ্গিকে, কি করলে, অনেক টাকা পাওয়া যাবে। তাঁরা ইচ্ছা করেই সুযোগ করে দেয়-আবার প্রকাশও করে তাঁরাই।অর্থাৎ একদিকে আওয়ামী নেতার চরিত্র হনন, অন্যদিকে সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্ট-একঢিলে দুই পাখী শিকার। উপসংহারে বলতে চাই, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে-অবিলম্ভে আওয়ামীলীগের অভ্যন্তরে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করুন।সাথে সাথে প্রশাসনের সর্বস্তরে শুদ্ধি অভিযানও পরিচালনা করতে হবে।সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান সমুহেও শুদ্ধি অভিযান অত্যান্ত জরুরী। ইউপি নির্বাচন-- দলে শুদ্ধি অভিযানের প্রয়োজনীয়তাকে স্পষ্ট করেছে। বিটিভির উদ্ভোধনী সঙ্গীত সরকার নিয়ন্ত্রীত সংস্থায় শুদ্ধি অভিযানের প্রয়োজনীয়তাকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। ইউপি নির্বাচনে মানুষ হত্যা প্রশাসনে শুদ্ধি অভিযানকে চোখের সামনে নিয়ে এসেছে। সুতারাং আর কোন মতেই কালক্ষেপন নয়,সরকারের অর্জন বিসর্জনে রুপান্তরের আগেই পদক্ষেপ গ্রহন করা উচিৎ হবে বলে আমি মনে করি। ষড়যন্ত্রের পতন অনিবায্য,সত্যের জয় সর্ববস্থায়। এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ,এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। 'জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু'

ছবি

গ্রামীন ফোনের অভিনব জালিয়াতি---চল বহুদূর। _______________________________________________ গ্রামীণফোন বাংলাদেশের 'জিএসএমভিত্তিক' একটি মোবাইল ফোন সেবা প্রদানকারী কোম্পানি। এটি ১৯৯৭ সালের ২৬ মার্চ থেকে কার্যক্রম শুরু করে। (অক্টোবর ২০১৪) ৫ কোটিরও বেশী, গ্রাহক নিয়ে গ্রামীণফোন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল ফোন সেবাদাতা কোম্পানি। গ্রামীণফোন বাংলাদেশের মোবাইল ফোন বাজারের ৫০ শতাংশেরও বেশি অংশ দখল করে আছে। প্রদেয় সেবাসমূহ:- (১)গ্রামীনফোনের সিম কার্ড সংযোগের ক্ষেত্রে গ্রামীণফোন দুই ধরনের মোবাইল সেবা দিয়ে থাকেঃ পোস্ট-পেইড সংযোগ এবং প্রি-পেইড সংযোগ । (২)প্রি-পেইড সংযোগের মধ্যে রয়েছেঃ-স্মাইল (শুধুমাত্র বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মোবাইল থেকে মোবাইল সংযোগ)স্মাইল পিএসটিএন (অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক মোবাইল এবং পিএসটিএন সংযোগ) (৩)ডিজ্যুস(তরুণদের জন্য বিশেষ সংযোগ)এছাড়াও বর্তমানে চালু হয়েছে আরো কয়টি প্যাকেজ ৷ যেমনঃ সহজ, বন্ধু, আপন এবং নিশ্চিন্ত। (৪) পোস্ট-পেইড সংযোগের মধ্যে রয়েছেঃ-এক্সপ্লোর প্যাকেজ ১ (অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক মোবাইল এবং পিএসটিএন সংযোগ) (৫) এক্সপ্লোর প্যাকেজ ২ (অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক মোবাইল এবং পিএসটিএন সংযোগ) এছাড়াও গ্রামীণফোন এসএমএস ,ভয়েস এসএমএস , এসএমএস পুশ-পুল সার্ভিস , ভিএমএস , ফ্যাক্স এবং ডাটা সার্ভিস, ওয়েলকাম টিউন, রিংব্যাক টোন, মিসড কল এলার্ট প্রভৃতি সেবা প্রদান করে থাকে। (তথ্য সুত্র উইকিপিডিয়া) ১৯৯৭ সালে কার্যক্রম শুরুর পর থেকে গ্রামীণফোন দেশের সর্ববৃহৎ মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে এবং দেশের ৯৯ শতাংশ জনপদ তারা নিজেদের সেবার আওতায় এনেছে বলে প্রতিষ্ঠানটির দাবি।বিটিআরসির জুলাইয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ১২ কোটি ৮৭ লাখ মোবাইল ফোন গ্রাহকের মধ্যে ৫ কেটি ৩৯ লাখ গ্রাহক গ্রামীণফোনের সেবা নিচ্ছেন।দেশের সর্ব বৃহৎ মোবাইল অপারেটর কোম্পানীটির জাল জালিয়াতির কিছু খন্ড চিত্র আপনাদের এবং সদাশয় সরকারের অবগতির জন্য তুলে ধরার চেষ্টা করছি---- (ক) মূনাফা পাচার:---দেশের অপারেটরগুলোর মধ্যে গ্রামীণফোনই সবচেয়ে বেশি মুনাফা করছে। এ কোম্পানির ৫৫.৮ শতাংশ মালিকানা রয়েছে নরওয়ের কোম্পানি টেলিনরের হাতে। দেশের প্রায় অর্ধেক মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী কে সেবা দিয়ে গ্রামীণ ফোন চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে মোট পাঁচ হাজার ১৫০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। মুনাফা এবং প্রতারনার টাকার সিংহ ভাগই চলে যাচ্ছে নরওয়ের মালিকানাধীন টেলিনরের মাধ্যমে বিদেশে। ফোন কলে জালিয়াতি:--- গ্রামীন ফোন কোম্পানির ৫ কোটি ৩৯ লাখ গ্রাহকের মধ্যে ৯৫ শতাংশই আট ধরনের প্রি-পেইড প্যাকেজের কোনো একটি ব্যবহার করেন, যার কোনো কোনো অফারে প্রতি মিনিটে এক টাকা ৬৮ পয়সা পর্যন্ত কাটা হয়। আর পোস্টপেইড গ্রাহকদের প্রতি মিনিটে ১ টাকা ২০ পয়সা (তার সঙ্গে ভ্যাট রয়েছে) খরচ করতে হয়, যা অন্য অপারেটরগুলোর তুলনায় দ্বিগুন বেশি। (খ) কলড্রপ জালিয়াতি:-- নেটওয়ার্কের দুর্বলতার কারণে সাম্প্রতিক সময়ে গ্রামীণফোনে কথা বলার সময় কলড্রপ অনেক বেড়ে গেছে। গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ গত বছর ১ অক্টোবর থেকে কলড্রপে ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দিলেও পরে ‘গ্রাহকদের না জানিয়েই’ তা বন্ধ করে দেয়। গ্রামীণফোনের এ আচরণ ‘প্রতারণা’ ছাড়া আর কি হতে পারে? শুধু কলড্রপ নয়, কোনো অফারের রেট বাড়লে তাও জানানো হয় না।”'টাকা চুরি করার অত্যাধুনিক মেশিন’এ পরিনত হয়েছে সর্ববৃহৎ মোবাইল ফোন কোম্পানীটি। (গ) ইন্টার নেটে ডাটা জালিয়াতি:--‘গ্রামীন ফোনের , “বড় প্রতারণা হলো ইন্টারনেটের ডাটায় । পছন্দ করা কোনো ইন্টারনেট প্যাকেজের যখন মেয়াদ শেষ হয়ে যায় তখন নিজে থেকেই প্রতি কিলোবাইটে পয়সা কাটা শুরু হয়। পুনরায় কোনো ইন্টারনেট প্যাকেজ না চাইলেও আগের প্যাকেজ অনুসারে প্রতি কিলোবাইটে পয়সা কেটে নিতেই থাকে। '৭৭ টাকায় ফ্রি ১ GB ফেইসবুক ইন্টারনেট এবং টক টাইম ১০০ মিনিট। ডায়াল *5000*76#। মেয়াদ ডায়াল দিনসহ ৭দিন।অথছ দেখা যায় মোবাইলে ব্যালেন্স থাকে যতক্ষন-ততক্ষণ ফেইসবুক ব্যবহার করা যায়। ফেইসবুক ব্যবহারের বিল কাটা হয় সঞ্চিত ব্যালেন্স থেকে। ব্যালেন্স শেষ, ইন্টারনেট অচল। ফ্রি মিনিটের কোন কল কখনই কেউ করতে পেরেছে তেমন উদাহরন নেই। “ ৩ এমবি এক টাকার কথা বলে নিচ্ছে ১.৩৬ টাকা, অথচ ভ্যাটসহ কাটার কথা ১.১৮ টাকা।” (ঘ) রিচার্জ জালিয়াতি:-- ‘৪৮ টাকা রিচার্জ করলে ৪৮ মিনিট ফ্রি পাওয়া যাবে’ এমন বিজ্ঞাপন দেখে রিচার্জ করলেও ওই ফ্রি সুবিধা কেউ পাননি। মোবাইলে যথেষ্ট ব্যালেন্স না থাকলে *1010*1# এ ডায়াল করে ১০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত ‘ইমার্জেন্সি ব্যালেন্স’ পাওয়া যাবে বলে গ্রামীণফোনের ওয়েব সাইটে বলা হয়েছে। পরবর্তী বিল রিচার্জে ওই টাকা কেটে নেওয়ার কথা। কিন্তু এই সেবাটিতেও গ্রাহক হয়রানি চরমে। অনেক সময় যথেষ্ট টাকা থাকা সত্বেও বলা হয় বলা হচ্ছে আপনার একাউন্টে যথেষ্ট পরিমান টাকা নেই, টাকা ধার নিতে চাইলে বলা হয় আপনার একাউন্টে যথেষ্ট পরিমান টাকা আছে। (ঙ) গ্রাহক সেবাকেন্দ্রের অভিনব প্রতারনা:--প্রতিকার চাইতে গ্রামীণফোনের কাস্টমার কেয়ারে ফোন করলেও হয়রানির শিকার হতে হয়। কাস্টমার কেয়ারে কল দিলে ১০ মিনিটের অধিক সময় অপেক্ষায় রেখে বলে, তাদের কাছে ব্যালেন্স কেটে নেওয়ার কোনো এসএমএস আসেনি। ‘এক ঘণ্টা পরে কল দিন’। এক ঘণ্টা পরে বলছে, তারা কাটেনি। তাহলে টাকা গুলি গেল কোথায়?” (চ) সেবা কেন্দ্র ফিস:-- কাস্টমার কেয়ারে কল করলেও দুই টাকা কাটে; 121 এ কল করুন, ওখানে কল করলে বলে- বাংলা শুনতে 1 চাপুন- এ রকম কয়েক বার করার পর বলে লাইন বিজি.।” ইতিমধ্যে একবন্ধু সৌদী আরব থেকে জানিয়েছে কল মীসেও নাকি১০/১৫ টাকা করে কেটে নিচ্ছে গ্রামীন ফোন। ঘটনাটির সত্যতা যাছাই করা সম্ভব হয়নি।যদি সত্যি এই ধরনের কোন ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে নি:সন্দেহে বলতে পারি 'নীল কুঠি সাহেবদের' অভিনব প্রতারনার আরেক নাম 'গ্রামীন ফোন'। উল্লেখীত পদ্ধতি সমুহের বাহিরেও অন্য যে সমস্ত প্যাকেজ চালু আছে সব গুলি প্যাকেজেই জাল জালিয়াতি, প্রতারনা, গ্রাহক হয়রানী করে প্রতিদিন বাংলাদেশ থেকে কোটি কোটি টাকা লুটে নিচ্ছে ।

ছবি

প্রেমিক জেনারেল ও তিনটি ছবি আসিফ জাভেদ | ২৬ মার্চ, ২০১৬ প্রথম আলো। (পাকিস্তানি শাষকদের ইসলাম রক্ষার দমবন্ধকরা এক বাস্তব চিত্র।লেখক পাকিস্তানী একজন চিকিৎসক।বর্তমান প্রজম্মের বন্ধুদের জন্য কপিপেষ্ট করার লোভ সামলাতে পারলামনা।আশা করি সব বন্ধুরা মনোযোগ দিয়ে পড়বেন প্রবন্ধটি) মার্চ ১৯৭১: ঢাকা বিমানবন্দরে নেমে ​ইয়াহিয়া খান বললেন, ‘মেরা দেমাগ মে তো কুছ নেহি আতা’। ছবি: রশীদ তালুকদার১৯৭১ সালের ২৩ মার্চের নওয়া-ই-ওয়াকত-এর সংখ্যাটি আমার মনে যে ছাপ ফেলেছিল, তা এখনো অক্ষত আছে। সেদিন এই পত্রিকায় তিনটি ছবি পাশাপাশি ছাপ হয়—মাঝখানের ছবিটি ছিল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর। ক্যাপশন: ‘পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা’। সে ছবির এক পাশে শেখ মুজিবুর রহমান। সেটির ক্যাপশন: ‘পাকিস্তানের বিশ্বাসঘাতক’। তৃতীয় ছবিটি একজন সেনা কর্মকর্তার। তাঁর বুকে বিচিত্র পদক ও স্মারক। সে ছবির ক্যাপশন: ‘পাকিস্তানের রক্ষক’। ১৯৬০-এর দশকের শেষভাগে আমার মা রাওয়ালপিন্ডিতে ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে যেতেন। আমার মামা ছিলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদমর্যাদার একজন সেনা কর্মকর্তা। তেমন একটি সফরের পরপর আমার মা একটি কৌতূহলোদ্দীপক গল্প বললেন: একদিন আমার মামার বাসায় বেশ উত্তেজনা। বাসায় একজন ভিআইপি আসবেন, ফলে মাকে কয়েক ঘণ্টা নিজের ঘরে থাকার জন্য বলা হলো। অতিথিটি একজন নারী। তিনি কিছুক্ষণ মামার সঙ্গে সময় কাটান। আমার মামা তখন সামরিক আইনের অধীনে বেসামরিক কাজের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি চলে যাওয়ার পর মা তাঁর হাফ ছেড়ে বেঁচে যাওয়া ভাইকে অতিথি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। চাপা কণ্ঠে মামা বললেন, ভদ্রমহিলা এসেছিলেন তাঁর কাছে কিছু আনুকূল্য চাইতে। নারীটির প্রভাব-প্রতিপত্তি ব্যাপক। তাঁকে উপেক্ষা করলে বিপদের সম্ভাবনা আছে। আশা করি, এই লেখা পড়তে পড়তে পাঠকেরা সেই নারীটিকে চিনে ফেলবেন। ইয়াহিয়া খানের আরেকটি ছবি আছে, যা আমি ভুলতে পারব না: তিনি হাসিমুখে নূরজাহানের পাশে হাতে একটি গ্লাস নিয়ে বসে আছেন, গ্লাসে সম্ভবত সুরা। ছবিতে আরও কিছু মানুষ, সবাই বেশ উপভোগ করছেন। অনেক বছর পর নূরজাহান খালিদ হাসানের কাছে স্বীকার করেছিলেন, ইয়াহিয়া খান তাঁর সঙ্গ উপভোগ করতেন। তিনি তাঁকে নূরি বলে ডাকতেন। আর আমাদের মালেকা-ই-তারান্নুম তাঁকে ডাকতেন সরকার। একটি গান প্রেসিডেন্টের খুব পছন্দ ছিল। তিনি তাঁর জন্য সেই গানটি গাইতেন। খালিদ হাসানকে তিনি বলেছিলেন, ‘অতুলনীয় লেখক সাদাত হাসান মান্টো গাঞ্জে ফারিশতে বইয়ে নূরির যে বর্ণনা দিয়েছিলেন, প্রেমিক প্রেসিডেন্টের তা অবশ্যই পড়া উচিত ছিল।’ নূরজাহান যে পটভূমি থেকে এসেছিলেন, তার সব বৈশিষ্ট্যই তাঁর মধ্যে ছিল। তাঁর সবকিছুই ছিল বানানো। তিনি ছিলেন প্রেমবিলাসী, কিন্তু তাঁর মধ্যে পরিশীলন ছিল না। শওকতের মতো উত্তর প্রদেশের কেন্দ্র থেকে উঠে আসা একজন মানুষ কীভাবে তাঁর মতো ঘোর পাঞ্জাবি কৃষক মেয়ের সঙ্গে থাকল, তা বিস্ময়ের উদ্রেক করে। মান্টো এ কথা লেখার ২০ বছর পর ইয়াহিয়া খান যখন নূরির সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন, জেনারেল মানেক শ তখন অপেক্ষা করছেন, তুষার পড়ে হিমালয়ের পথ কখন বন্ধ হয়ে যাবে, যাতে নিশ্চিত হওয়া যায় যে দক্ষিণের দিকে চীন আর সৈন্য পাঠাতে পারবে না। জেনারেল আতিক-উর-রহমানের অতিথি হয়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আজহার লাহোরের গভর্নর হাউসে একটি রাত কাটান। জেনারেল আতিককে পাঞ্জাবের গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। পরদিন সকালে দুজন প্রাতরাশ করতে বসলেন। আতিক অতিথিকে জিজ্ঞেস করলেন, ঘুম ভালো হয়েছিল কি না। জেনারেল আজহারের ঘুম ভালো হয়নি। ওপর তলার ঘরে অনেক হইচই হয়েছে। তিনি জিজ্ঞেস করেন, ‘ওপরের ঘরে কারা ছিল?’ লজ্জিত হয়ে আতিক বলেন, ‘ইয়াহিয়া খান। তিনি বান্ধবীদের সান্নিধ্য উপভোগ করছিলেন।’ সময়টা ১৯৭১ সাল। পূর্ব পাকিস্তানের তখন পতন ঘনিয়ে আসছে। পরবর্তীকালে অনেকেই একটি ঘটনার সাক্ষ্য দিয়েছেন, কিন্তু ওই সময় তা চেপে গিয়েছিলেন। পারস্য সাম্রাজ্যের আড়াই হাজার বছর পূর্তি উৎসবে পারসেপোলিসে গিয়ে ইয়াহিয়া খান গাড়ি পার্কিংয়ে প্রস্রাব করেছিলেন। তিনি এত বেশি পান করে ফেলেছিলেন যে নিজেকে আর সামলাতে পারেননি। তাই ঝোপের আড়ালে গিয়ে নিজেকে খালি করে দেন। ইয়াহিয়া খানের প্রথম ছবিটির কথা মনে পড়লে আমার জানতে ইচ্ছে করে, নওয়া-ই-ওয়াকত-এর মাজিদ নিজামি আসলে কী ভাবছিলেন? তিনি বহন করছিলেন তাঁর কিংবদন্তিতুল্য ভাই হামিদ নিজামির উত্তরাধিকার। এই পত্রিকাটি ছিল পাকিস্তানের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ উর্দু দৈনিক, যারা দাবি করত, স্বৈরাচারকে মুখের ওপর সত্য বলতে তারা ভয় পায় না। তিনি সম্ভবত স্রোতে গা ভাসিয়ে দিয়েছিলেন। নওয়া-ই-ওয়াকতই একমাত্র সংবাদপত্র নয়, আরও অনেকেই ওই সংক্ষুব্ধ সময়ে জাতিকে ভুল পথে পরিচালিত করেছে। পুরো জাতি জাতীয়তাবাদের মাতলামিতে ভেসে গিয়েছিল। সংবাদপত্র ও সরকার-নিয়ন্ত্রিত রেডিও-টিভির তথ্যে বিভ্রান্ত হয়েছিল। আরেকটি অদ্ভুত ব্যাপার হলো, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের লেখা পড়লে দেখবেন, তাঁরা বলছেন, ইয়াহিয়া খান একজন অসাধারণ কর্মকর্তা। যদিও এ কথার সমর্থনে তাঁরা কোনো প্রমাণ দেননি। ইয়াহিয়া খান মগ্ন ছিলেন নূরিদের মতো মানুষদের নিয়ে। মান্টো সরস মন্তব্য করে বলেছেন, পাকিস্তানের তরুণেরা যখন দেশের জন্য জীবন দিচ্ছে, প্রেমিক জেনারেল তখন ‘চাতাউরের দুর্গ দখলে’ ব্যস্ত। ঢাকার পতনের পর জুলফিকার আলী ভুট্টোর কাছে ইয়াহিয়া খানের ক্ষমতা হস্তান্তরের গল্পটিও রূপকথা। আসলে মংলা গ্যারিসনে অভ্যুত্থানের কথা শুনে তিনি ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। ইয়াহিয়ার কার্যক্রমের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বিবরণ দিয়েছেন পুলিশ বিভাগের রাওয়ালপিন্ডির বিশেষ শাখার সুপার সি এইচ সরদার। তিনি লিখেছেন: প্রেসিডেন্ট ভবন ছিল তখন বেশ একটা জায়গা। নানা মানুষজন আসছে। প্রেসিডেন্ট নিজে মাতাল আর রমণীমোহন।...দেহজীবিনী আর তাদের দালালেরা তো বটেই, সমাজে মর্যাদাবান অনেকেও ছিলেন। আকলিম আখতার, মিসেস কে এন হোসেন ও লায়লা মোজাফ্ফর ছিলেন অন্যতম। বহু নিন্দিত কিন্তু আকর্ষণীয় নারীও আসত। তারা প্রেসিডেন্ট হাউসজুড়ে নাচত, গাইত, পান করত। প্রেসিডেন্ট হাউসকে ওখানকার নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ বাহিনী বলত কঞ্জরখানা, আর সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর বলত ডাঙ্গরখানা। একবার ইরানের শাহ পাকিস্তানে রাষ্ট্রীয় সফরে এলে গভর্নর হাউসে ওঠেন। প্রেসিডেন্টও তখন সেখানে। শাহের বাইরে যেতে দেরি হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু প্রেসিডেন্ট তখনো শয়নকক্ষ থেকে বেরোচ্ছেন না। প্রটোকল নিয়ে মারাত্মক সমস্যা দেখা দিল। কিন্তু কারও সেখানে যাওয়ার উপায় নেই। প্রেসিডেন্টের এম এস জেনারেল ইসহাক আকলিম আখতারকে বললেন, তিনি যেন প্রেসিডেন্টকে নিয়ে আসেন। আকলিম জেনারেল রানি হিসেবে পরিচিতি ছিলেন—প্রেসিডেন্টের রানি, আদতে বেশ্যার দালাল। ঘরে গিয়ে দেশের সবচেয়ে খ্যাতিমান গায়িকার সঙ্গে প্রেসিডেন্টকে তিনি যে অবস্থায় দেখেন, তাতে তারই আক্কেল গুড়ুম। প্রেসিডেন্টকে তিনি নিজে কাপড় পরিয়ে নিচে নিয়ে আসেন।...ফুর্তি করার জন্য ইয়াহিয়ার বহু বান্ধবী ছিল।...এক সন্ধ্যায় তিনি চলে গেলেন মিসেস কে এন হোসেনের বাড়িতে, যাঁকে সবাই ‘কালো সুন্দরী’ বলে জানত...সবার অগোচরে প্রেসিডেন্ট সেখানে তিন দিন তিন রাত কাটিয়ে দেন। চতুর্থ দিন মিসেস হোসেনকে রাষ্ট্রীয় অতিথিশালায় নিয়ে তিনি তাকে অভ্যন্তরীণ সজ্জাকরের স্থায়ী চাকরি দিয়ে দেন। তাঁর স্বামীকে সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত করা হয়। প্রেসিডেন্ট কেন তিন দিন তাঁর বাড়িতে ছিলেন, এ নিয়ে পরে প্রশ্ন করা হলে মিসেস হোসেন বলেন, প্রেসিডেন্টকে তিনি বাংলা গান শিখিয়েছেন। ঢাকার পতনের পর ইয়াহিয়া খান টিভিতে ঘোষণা দেন, ‘পূর্ব ফ্রন্টে সাময়িকভাবে পিছিয়ে এলেও’ পশ্চিম ফ্রন্টে যুদ্ধ চলবে। কিন্তু পরদিনই ভারতের এককভাবে ঘোষিত যুদ্ধবিরতি তিনি মেনে নেন। ১৯৭১ সালে ইয়াহিয়াকে নিয়ে অাঁকা শিল্পী কামরুল হাস​ানের পোস্টার১৯৭১ সালের মার্চ মাসে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে সরদার উইসুফ চানদিও আর ইয়াহিয়া খানের মধ্যে যে আলাপ হয়, তা নিচে তুলে দিচ্ছি। এ ঘটনার বর্ণনাও দিয়েছেন সি এইচ সরদার। দায়িত্বে নিয়োজিত এক ডিএসপির কাছে তিনি গল্পটি শুনেছিলেন। জায়গাটা ছিল করাচির কাছাকাছি একটি হ্রদ। উপলক্ষ ছিল হাঁস শিকার: ইউসুফ: এখন কী হবে? নির্বাচনে তো একদিকে জিতেছে মুজিব (কটু কথা), আরেক দিকে ভুট্টো (কটু কথা)? ইয়াহিয়া খান: বাচ্চু, চিন্তা কোরো না, তামাশা দ্যাখো। আমি এমন টোপ ফেলব যে তারা যেকোনো একজন আরেকজনকে মেরে ফেলবে। ইয়াহিয়ার কিছু ঘোষণা শুনে মার্কিন গৃহযুদ্ধের এক কৌতূহলোদ্দীপক চরিত্রের কথা মনে পড়ে যায়। চ্যান্সেলর্সভিলের যুদ্ধের আগে জেনারেল হুকার উত্তরের সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। তিনি তখন অমার্জিত মন্তব্য করে বলেন, ‘আমার পরিকল্পনা একদম নিখুঁত, আল্লাহ্ জেনারেল লিকে (প্রতিপক্ষ) দয়া করুন।’ কিন্তু পরদিন হুকার মারাত্মকভাবে পরাজিত হলেন। তার জায়গায় দায়িত্ব পেলেন লিঙ্কন। ইয়াহিয়া খান নাকি কোয়েটা স্টাফ কলেজের শিক্ষক ছিলেন। তিনি কি মার্কিন গৃহযুদ্ধের ওই অধ্যায়টি পড়েননি? টিক্কা খান ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে অভিযান শুরু করলে লাখ লাখ শরণার্থী সীমান্ত পেরিয়ে পশ্চিম বাংলায় চলে যায়। পাকিস্তানের এই রক্ষক তখন কী করছিলেন, সি এইচ সরদারের বিবরণে পড়ুন: ইয়াহিয়া খান মৌজ-ফুর্তিতে মেতে ছিলেন। পছন্দের কোনো মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে প্রতি রাতে তিনি রাওয়ালপিন্ডি ও ইসলামাবাদের রাস্তায় ঘুরতে বেরোতেন। পাহারাদারেরা তো যথারীতি থাকতই। কখনো কখনো গাড়ির ছাদ খুলে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই তিনি মৌজে মশগুল হয়ে যেতেন। রক্ষীরাও তা দেখতে পেত। ইসলামি রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের এমন অসংযমী আচরণে তাদের মন তেতো হতো। এ কথা জানানো হলে পুলিশের সুপার বলতেন, ‘প্রেসিডেন্ট তো গুরুতর সমস্যা নিয়ে অত্যন্ত ভারাক্রান্ত থাকেন। তার একটু বিনোদনের দরকার।’ বিনোদন বটে! ইয়াহিয়ার সহমর্মীরা কখনো কখনো বলেন, উপদেষ্টারা তাঁকে ভুল পথে পরিচালিত করেছে। কিন্তু তাদের নিয়োগ দিয়েছে কে? অনেক ভালো উপদেশও ছিল, কিন্তু সব উপেক্ষিত হয়েছে। কিছু দৃঢ়চিত্ত মানুষ তাঁকে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় সংসদের অধিবেশন স্থগিত করতে মানা করেছিলেন। ১৯৭১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি জেনারেল ইয়াকুব খান ও অ্যাডমিরাল আহ্সান তাঁকে বলেন, অধিবেশন স্থগিত করা খুবই অবিবেচকের কাজ হবে। স্ট্যানলি উলপার্ট লিখেছেন, ‘এর কয়েক সপ্তাহ আগে এস এম আহসান খুবই সাহসের সঙ্গে হরতালরত বাঙালির ওপর গুলি চালাতে অস্বীকার করেন। তাঁর জায়গায় তখন জেনারেল ইয়াকুবকে বসানো হয়। তিনিও গণহত্যার আদেশ অগ্রাহ্য করেন।’ ইয়াহিয়া যখন মদ্যপ ইয়ারদের দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়ে তাদের অনুরোধ দূরে ঠেলেন, তখন তারা হতভম্ব হয়ে যান। সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট পদগোর্নি রাজনৈতিক সমঝোতার প্রস্তাব দিলেও তিনি তা বেকুবের মতো প্রত্যাখ্যান করেন। রক্ষকের খুব তাড়া ছিল, বাঙালিদের ‘ওপর বাঘ লেলিয়ে দিতে তার আর তর সইছিল না’, সে তাতে যা হয় হোক। ক্ষমতার দম্ভে উন্মত্ত এবং চাটুকারদের দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়ে তিনি একবার গর্বভরে বলেছিলেন, তাঁর সমরাস্ত্র ভারতের চেয়ে উন্নত। ফলে জেনারেল ইয়াকুবকে পূর্ব পাকিস্তান থেকে নিয়ে এসে পদাবনতি দেওয়া হয়, এমনকি অবসরেও পাঠানো হয়। প্রেসিডেন্ট তাঁর জায়গায় জেনারেল নিয়াজিকে পাঠান। তাঁকে বরণ করতে বিমানবন্দরে এলে জেনারেল খাদিম হোসেন রাজার কাছে নিয়াজির প্রথম প্রশ্ন ছিল, ‘আমার জন্য কয়টা মেয়ে ঠিক করে রেখেছ?’ কয়েক মাস পরই দেখা গেল, নিয়াজি লেজ গুটিয়ে তাঁর নিজ ব্যাচের জেনারেল অরোরার কাছে আত্মসমর্পণ করছেন। নিয়াজি আবার নিজেকে দুনিয়ার সবচেয়ে সম্মানিত জেনারেল মনে করতেন। এই ছিল তার নমুনা। এবার দ্রুত লয়ে ১৯৭২ সালে চলে যাই। ইয়াহিয়া খানকে রাখা হয়েছিল সুরক্ষিত বান্নি বাংলোয়। হামুদুর রহমান কমিশনের কাছে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য তাঁকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল শিয়ালা রেস্টহাউসে। সি এইচ সদর পরবর্তী প্রজন্মের জন্য তার বিবরণ রেখে গেছেন: ইয়াহিয়া হেলিকপ্টারের বদলে সড়কপথে ফিরতে চাইলেন। ব্যাপারটাতে ঝুঁকি ছিল বলে আমি সে জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। সড়কপথে ঝুঁকি কেন, ইয়াহিয়া তা জানার জন্য পিড়াপিড়ি করতে লাগলেন। আমি বললাম, ‘কারণ লোকে আপনাকে হেনস্তা করতে পারে।’ ‘মানুষ আমার বিপক্ষে যাবে কেন?’ ‘কারণ পূর্ব পাকিস্তানে আপনি হেরে গেছেন।’ ইয়াহিয়া দেখালেন চিরাচরিত প্রতিক্রিয়া, ‘কেন, আমি কি অস্পৃশ্য? আমি কারও স্পর্শকাতর অঙ্গ কি ছুঁয়ে ফেলেছি?’ পাঞ্জাবি ভাষায় তাঁর কথা আরও রংদার শোনাল। সড়কপথে যাত্রা শুরু হলো। সিহালা রেলসড়কের গাড়ি থেমে গেল। কারণ, লোকে তাঁকে চিনতে পেরে পাথর ছুড়তে শুরু করেছে। ইয়াহিয়ার মুখ শুকিয়ে এল। যেন মৃত্যু ঘনিয়ে আসছে। অবস্থা দেখে আমি বললাম, রাজাবাজার যাওয়া যাক। তিনি তখন কাঁপছেন। অনুনয়-বিনয় করে তিনি বললেন, তাঁকে যেন বান্নি রেস্টহাউসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পৌঁছে আরেক আবদার, তাঁকে অ্যাবোটাবাদে নিয়ে যাওয়া হোক। ‘কেন?’ তাঁর জবাব, ‘এ জায়গাটা আমার পছন্দ নয়। এখানে অনেক শেয়াল। রাতে খুবই চেঁচামেচি করে।’ আমি বললাম, ‘সঙ্গী হিসেবে তারা খারাপ কী?’ ঢাকা পতনের পর পাকিস্তান টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রোয়েদাদ খান তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট নূরুল আমিনের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি তাঁর স্মৃতিকথায় লিখেছেন: নূরুল আমিনের মতো খাঁটি দেশপ্রেমিককে কখনোই এতটা রাগান্বিত দেখিনি। দুদিন ধরে তিনি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করার ব্যর্থ চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। ইয়াহিয়ার সঙ্গে সবুজ ফোনে সেদিন সন্ধ্যায় সাক্ষাতের সময় নিলাম। ইয়াহিয়া আমাকে প্রেসিডেন্ট হাউস পর্যন্ত নূরুল আমিনকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য বললেন। আমরা যখন গেলাম, জেনারেল হামিদও তখন সেখানে। তাঁরা সবাই—ভেবে দেখুন—পান করছেন। নূরুল আমিন বিস্ফোরিত হয়ে বললেন, ‘ঢাকার পতন হয়েছে, পূর্ব পাকিস্তান হাতছাড়া হয়ে গেছে। আর আপনি হুইস্কি খাচ্ছেন?’...ইয়াহিয়া সব দোষ মুজিবের ওপর দিলেন। আমি জীবনে যত বৈঠক করেছি, সেটি ছিল সবচেয়ে বেদনাদায়ক। পাকিস্তানের এই রক্ষকের আরও একটি ছবি অনেকের মনে পড়বে: ভুট্টোর সামনে ইয়াহিয়া বসে আছেন। তাঁর স্বাক্ষরের জন্য টেবিলের ওপর একটি কাগজ মেলে ধরা। ইয়াহিয়ার মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল, তিনি বিমর্ষ ও অপমানিত। কারও পতন আর কতটা হতে পারে! তিনি কি নিরোর আধুনিক রূপ? অনুবাদ: প্রতীক বর্ধন ড. আসিফ জাভেদ: যুক্তরাষ্ট্রের উইলিয়ামসপোর্টে কর্মরত পাকিস্তানি চিকিৎসক।

ছবি

সাফাদীর নতুন প্রেম রক্ষায় মরিয়া প্রচেষ্টা অব্যাহত-- ________________________________________ হাজারো মিথ্যা দিয়ে একটি সত্যকে ঢাকা যায়না,প্রবাদটি ইসলামের শত্রু ইহুদীদের ক্ষেত্রে প্রজোয্য হয়না।মিথ্যা,ষড়যন্ত্র, অবিশ্বাস দিয়ে ইসলামের প্রাথমিক যুগে নবী (স)এর বিরুদ্ধে যে শত্রুতা আরাম্ভ করেছিল তাঁর ধারাবাহিকতা তাঁরা হারাননি--হারিয়েছে সত্য, ন্যায়, সমতা ও সার্বজনীন ধর্ম ইসলামের অনুসারী মসুলমানদের বিশ্বাসের।মুসলিম বিশ্বের একটি দেশও বাকী নেই যে দেশটিতে হানাহানি,মারামারি নেই।ইহুদীরাই সমস্ত হানাহানীর মুলকারিগর তবে ইসলামের অনুসারী সেই দেশের নাগরীকদের মাধ্যমেই তাঁরা অপ-কর্মকান্ড গুলী বাস্তবায়ন করে।তদ্রুপ বাংলাদেশেও তাঁদের এজেন্ট রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপিকেই মিত্র হিসেবে বেছে নিয়েছে।যে ব্যাক্তির মাধ্যমে মহৎ ইসলাম বিরুধী কর্মটি সম্পাদন করার জন্য বিএনপি ইজরাইলের মত শক্তিশালী মুসলিম বিদ্বেসী রাষ্ট্রের সাথে সংযোগ রক্ষা করতে পেরেছে, সেই অচেনা অজানা,অরাজনৈতিক, ব্যবসায়ী ব্যাক্তিটিকে প্রাথমিক পয্যায় উপহার হিসেবে দলের অত্যান্ত গুরুত্বপুর্ণ পদ 'যুগ্ম মহাসচিবের' দায়িত্ব প্রদান করেছে খালেদা জিয়া। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে,'তাঁর ষড়যন্ত্র বাস্তবায়িত হলে ঢাকার পথকলিদের কুখ্যাত সন্ত্রাসী জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বাবরের চাইতে আরো গুরুত্বপুর্ণ অবস্থানেই রাখা হত।' মহান আল্লাহর অশেষ কৃপায় অন্য শত ষড়যন্ত্রের ন্যায় বাংলাদেশের সরল্প্রান মসুলমানদেরকে- ইহুদীদের ষড়যন্ত্রের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য প্রাথমিক পয্যায়ে গোয়েন্দাদের নজরে এনে দিয়েছেন। বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ,বাংলাদেশের ইসলামধর্মের অনুসারীদের কড়া সমালোচনার মুখে অতীতের ন্যায় সেই ইহুদী একের পর এক মিথ্যে সাজানো নাটকের পর্ব মঞ্চস্ত করে যাচ্ছেন তাঁদের বন্ধু রাজনৈতিক দল 'বিএনপিকে'রক্ষা করার মানসে। সুপ্রীয় পাঠক,সাফাদী অদ্যকার সাক্ষাতকারে একটি গুরুত্ব পুর্ন তথ্য তুলে ধরেছেন,"জনাব সজীব ওয়াজেদ জয়ের একান্ত অনুরুধে তাঁদের দুই জনের অনুষ্ঠিত বৈঠকটি একান্ত গোপনীয় কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছিল,এবং সেখানে কোন ছবি ধারন করার কোন সুযোগ ছিলনা।" সুপ্রীয় বন্ধুগন, সাফাদীর বক্তব্য যদি এই হয়,তাহলে প্রচারীত ইউটিউব কি মিথ্যা?নাকি সাফাদীর আজকের বক্তব্য মিথ্যা? বিচারের ভার আপনাদের হাতে দিলাম-- _____________________________ (কপি পেষ্ট--আমাদের সময়.কম)০১/০৬/২১৬ তারিখে প্রকাশিত পত্রিকা থেকে নিম্নের অংশটি __________ __________ শামস সয়ূজ : বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তার তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে করা বৈঠকটি তার অনুরোধেই অত্যন্ত গোপনে করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির নেতা মেন্দি এন সাফাদি। আর সেকারণে বৈঠকের কোনো ছবিও তোলা হয়নি বলে দাবি তার। এ বৈঠক হয়েছে তাদের দুজনের এক বন্ধুর মাধ্যমে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি পক্ষপাতিত্ব নেই বলেও দাবি করেন তিনি। অন্যদিকে মি. রহমান নামে এক বাংলাদেশির সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে বলে আগে জানিয়েছিলেন সাফাদি। তবে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান সেই ব্যক্তি নন বলে নিশ্চিত করেছেন সাফাদি। তিনি জানান, তারেক রহমানের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়নি। সাফাদির সঙ্গে ই-মেইলে নেয়া সাক্ষাৎকারে দৈনিক আমাদের অর্থনীতির পক্ষ থেকে তাকে তিনটি প্রশ্ন করা হয়। সাক্ষাৎকারটি অনুবাদ করেছেন মমিনুল ইসলাম। পুরো সাক্ষাৎকারটি হুবহু তুলে ধরা হলো। প্রশ্ন : খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা জাহিদ এফ সর্দার সাদী ইউটিউব চ্যানেলে সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকার পোস্ট করেছেন, যেখানে আপনি ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পুত্র এবং তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে বৈঠক করার দাবি করেছেন। জয় এ দাবিকে জঘন্য অভিহিত করে তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন। জয় ২৯ মে ফেসবুক পোস্টে বৈঠকের সঠিক ঠিকানা দেয়ার জন্য চ্যালেঞ্জ করেছেন। এ বিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী? মেন্দি এন সাফাদি : এটা স্পষ্ট যে, সজীব ওয়াজেদ জয় আমাদের ওয়াশিংটনের বৈঠকের কথা অস্বীকার করেছেন। তার অনুরোধেই বৈঠকটি অত্যন্ত গোপনে করা হয়েছে। [ কিন্তু সাফাদি কথিত গোপনীয়তা রক্ষা তো করলেন না Ñসম্পাদক ] সে কারণেই বৈঠকের কোনো ছবি তোলা হয়নি। আমাদের দুজনের পারষ্পরিক এক বন্ধুর অফিসে এ বৈঠক হয়েছে। তার (বন্ধু) অনুরোধের কারণে নাম প্রকাশ করতে চাচ্ছি না। কারণ সে আমাকে বলেছে, তার নাম প্রকাশ করা হলে মার্কিন প্রশাসনে তার অবস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হবে। প্রশ্ন : চলতি মাসের শুরুর দিকে দৈনিক আমাদের অর্থনীতির এক সাক্ষাৎকারে আপনি বলেছিলেন, মি. রহমান নামে বিএনপির কোনো নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন কি না তা স্মরণ করতে পারছেন না। মেইলে তারেক রহমানের ছবি সংযুক্ত করা হলো। ইনি কি সেই রহমান? মেন্দি এন সাফাদি : আমি রহমানের পূর্ণ নাম জানি না। তিনি আমাকে তার পুরো নাম বলেননি। কেবলমাত্র বাংলাদেশ থেকে মি. রহমান হিসেবে পরিচয় দেয়া হয়। তবে কোনো ধরনের কথোপকথন বা বৈঠক, এর পেছনে করমর্দন ও আশীর্বাদ কামনা ছাড়া অন্য কিছু ছিল না। যে ছবিটি সংযুক্ত করা হয়েছে তার সঙ্গে আমি সাক্ষাৎ করিনি। প্রশ্ন : আপনার সাম্প্রতিক মন্তব্য ও সাক্ষাৎকার বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অধিকার ও গণতন্ত্রায়নের স্বার্থের চেয়ে রাজনৈতিক অবস্থার প্রতি আপনার আগ্রহ বেশি। সেই সঙ্গে এটাকে বিএনপির দাবির প্রতি সমর্থন হিসেবে দেখা হয়। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী? মেন্দি এন সাফাদি : বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যাপারে আমার কোনো পক্ষপাতিত্ব নেই। ‘পিএনবি’র (বিএনপি) একজন নেতার সঙ্গেও আমার সরাসরি যোগাযোগ হয়নি। আমি পূর্বেই বলেছি, আমি যখন আসলাম চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেছি, তখন তাকে ‘পিএনবি’র একজন সিনিয়র ব্যক্তি হিসেবে পরিচয় করনো হয়নি। তবে সংখ্যালঘু অধিকারের সমর্থক হিসেবে পরিচয় করানো হয়। আমাদের কথোপকথন মোটের ওপরে ৫-৬ মিনিটের মতো সংক্ষিপ্ত ছিল। এতে দলীয় বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। আমরা কেবলমাত্র সব সংখ্যালঘুর সহাবস্থানে রাখা নিয়ে আলোচনা করি। ফেসবুকে নেওয়া ইংরেজী সাক্ষাৎকারটি আমাদেরসময়.কমের পাঠকদের জন্য নিচে দেওয়া হলো- Q 1 : In a recent interview posted on the you tube channel of F R Sadi, you claimed you have had a meeting with Mr. Sajeeb Wazed Joy in Washington DC. However, Mr. Wazed has vehemently denied such an outrageous claim. In a Facebook post on 29 May, 2016, Sajeeb Wazed Joy challenged you to provide evidence regarding the exact location of your “meeting” with him. What would be your response to Mr. Sajeeb Wazed Joy’s recent Facebook post? Q. 2 In an interview taken by Daily Amader Orthoneeti earlier this month you said, you could not remember any BNP leader named Mr. Rahman with whom you talked. Please have a look at the attached picture of Mr. Tareq Rahman along with this message, and tell us, if this was the person you talked to? Q 3 It has been argued that from your recent comments and interviews it seems you are more inclined to supporting BNP’s claims and interests regarding Bangladesh’s political situation than ensuring the rights and interests of the minorities and democratization of Bangladesh society. What would be your response regarding this allegation? Hope to get from you very soon. Thanks in advance. 1, it was clear that Mr. Sajeeb Wazed Joy deny our meeting in Washington, the meeting was highly secret at his request, so no pictures from the meeting, the meeting was held in the office of a mutual friend that I did not want to reveal his name because he asked because revealing his name could harm his standing in the American administration. 2 The answer to question who it Rahman, I said that I do not know what the full name of Rahman because did not tell me his full name, just was introduced as Mr. Rahman from Bangladesh, shaken hands and blessings It was not beyond that any kind of conversation or meeting, and about the picture attached it’s not the guy I met . 3- I have no preference about the political parties in Bangladesh, and had no direct contact with any one of the leaders of the at PNB, and as I said before when I met Mr. Aslam Chaudhry and not treated presented to me as a senior figure at PNB party, but as a supporter of the rights of minorities, and our conversations were short a total of 5-6 minutes and not treated the subject of parties, we treated only for the purposes of keeping all minorities and to coexist.