পোস্টগুলি

নভেম্বর, ২০১৫ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে
ছবি

জামায়াত -শিবিরের( নব্য আইএস আই)দমনে সংজ্ঞায়িত বিশেষ আইন ও পুলিশ বিগ্রেড প্রয়োজন-- >>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>> দু:খ্যজনক হলেও সত্য,আইন শৃংখলার অবনতি হলে ডাক ঢোল পিটিয়ে ধরপাকড় শুরু হয়।দাগি অপরাধি থেকে চিঁছকেচোর পয্যন্ত কেহই রেহাই পান না, পুলিশের হাত থেকে। ফলাও করে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয় কোন জেলায় কতজন ধরা হল।এতে অনেক পুরাতন মামলার আসামিও অনেক সময় ধরা পড়ে।যাছাই বাছাই করে অনেককে থানা থেকে ছেড়ে দেয়া হয়।অনেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়।ধরপাকড়কে কেন্দ্র করে পুলিশের চলে রমরমা বানিজ্য।একশ্রনীর দালাল সর্বক্ষন থানার আশেপাশে ঘুরঘুর করে আসামীদের আত্মীয়স্বজনের সাথে থানার বড় সাহেবের যোগাযোগ ঘটিয়ে দেয়ার নাম করে শুরু হয় প্রাথমিক বানিজ্য।এরপরের অবস্থা নাইবা বললাম।২০১৩-১৪ সালের আগুনসন্ত্রাস,সরকারী প্রাইমারী স্কুলে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া ইত্যাদি নানাহ সন্ত্রাসি বোমা বাজির মামলার একজন আসামীও বর্তমানে জেল খানায় নেই। এই নাথাকার প্রধান কারন, মামলার এজাহারের দুর্বলতা।ঐ সমস্ত মামলা দ্রুত বিচারের উদ্যোগ নিলে আজকের আইএসআই এর সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকতোনা।পুলিশ বাহিনীতে বেশিরভাগ জামাত-বিএনপির ছাত্র ক্যাডারেরা বর্তমানে ও, সি, সেকেন্ড অফিসারের দায়িত্বে চলে এসেছেন। বর্তমান সরকারের গত কয়মাস আগের নিয়োগে বেশিরভাগ জামাত-বিএনপির ক্যডার যে কোন ভাবেই নিয়োগ পেয়ে গেছেন। আমার এলাকা থেকে দুই জন নিয়োগ পাওয়া-উভয়েই শিবির --ছাত্রদলের ক্যাডার ছিলেন। উপরে উপরে যতই তেলবাজি করে আওয়ামীনেতা, মন্ত্রী, এমপিদের ম্যানেজ করুক না কেন অন্তরে তাদের দর্শন ঠিকই কাজে লাগিয়ে যাচ্ছে। দারগা সাহেব ধারা হালকা করে দিবেন বলে মোটা টাকাও পেলেন, নীজের দলের লোকটাকে জামিন যোগ্য ধারায় চালানও করলেন।দুই দিক থেকে আমাদের অফিসার সাহেবেরা লাভবান হচ্ছেন।তাঁরপরও আমাদের নেতাদের হুঁশ হয়না।নেতারাই শিবির ক্যাডারের জন্য সুপারিশ করেন,চাড়িয়ে আনার চেষ্টা করেন।দারগা সাহেব ঠিক নেতার সুপারীশের অপেখ্যায় থাকেন,বলা মাত্রই মোটা টাকা আদায় করে ছেড়ে দেন বা হালকা ধারায় কোর্টে চালান দেন।এতে নেতাকেও খুশি রাখলেন,টাকা রুজি হল,দলের অস্তিত্বও রক্ষা করতে পারলেন,যাহা তাঁর মুখ্য বিষয়। যাহাই হোকনা কেন, পুলিশ তাঁর উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন যদি সঠিক ভাবে করে কোন বোমাবাজ,সন্ত্রাসী, জামিন পাওয়ার কথা নয়।কারন বোমা,অস্ত্র,লুটপাট ইত্যাদি মামলা প্রাথমিক ধারায়ও জামিন অযোগ্য।তাহলে জামিন পায় কিভাবে? যারা জামিন পেয়ে বেরিয়ে এসেছে তাঁদের মধ্যে অনেকেই আবার হাতে নাতে বোমা বাজি করার সময়ে ধরাও পড়েছে।,ব্লগার হত্যা, প্রকাশক হত্যা, বিদেশী হত্যা ইত্যাদি মামলায় এযাবৎ যে কয়জনকে পুলিশ শনাক্ত করতে পেরেছেন তাঁরা সবাই আগের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, বোমাবাজি,আগুন সন্ত্রাসের সাথে জড়িত ছিল দেখা যায়। তাঁরাই আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে আবারও ধরা পড়ছে,অনেককে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে খোঁজাখুজি শুরু হয়েছে। এই সমস্ত নানা কারণে প্রচলিত আইন- ধর্মীয়জঙ্গি দমনে কার্যকর প্রমাণিত হয়নি। নতুন আইনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। ধর্মীয় জঙ্গিপনা আগে কখনও ছিলনা। আইন প্রনয়নের প্রাক্কালে ধর্মীয়জঙ্গি সংজ্ঞা নির্ধারন করে যেহেতু আইনের কোন ধারা স্পষ্ট নাই,সেহেতু এই ফাঁককে কাজে লাগিয়ে তাঁরা জামিন নিয়ে বেরিয়ে আসে।প্রচলিত আইনের পাশাপাশি ধর্মীয় জঙ্গিপনার মাধ্যমে মানুষ হত্যা,বোমাবাজি,সন্ত্রাস সৃষ্টি ইত্যাদি ম্যানসন করে যতক্ষন পয্যন্ত আইন প্রনয়ন করা হবেনা, ততক্ষন তাঁদের জেলের অভ্যন্তরে রাখা যাবেনা। বিচারক--কে চোর, কে ডাকাত,কে আওয়ামী লীগ, কে বিএনপি দেখবেনা--দেখবে শুধু সে যে অপরাধ করেছে -সেই অপরাধের সাথে সংযুক্ত ধারা সঠিক কিনা। যদি সঠিক না থাকে তবে জামিন দিতেই হবে। এই কারনেই এই ধরনের অপরাধ দমনে সংজ্ঞায়িত আইনের প্রয়োজনীয়তাকে অস্বীকার করার উপায় নেই। বিশ্বের বহু দেশেই, প্রত্যেক অপরাধের জন্য ভিন্ন ভিন্ন আইন আছে। ধর্মীয়জঙ্গি-- সন্ত্রাস দমন আইনে দমন করার পরিকল্পনা ফল ভয়ে আনবেনা।বরঞ্চ সন্ত্রাস দমন আইন সহ প্রচলিত অন্য সমস্ত আইনকে যুগ-উপযোগি করে ধর্মীয়জঙ্গির আলাদা সংজ্ঞা নির্ধারন করেও করা যেতে পারে। আমাদের মধ্যে ইদানিং দেখা যায় অনেকে বর্তমানের ব্লগার হত্যা,প্রকাশক হত্যা ইত্যাদি ঘটনা সমুহকে "বাদ" সংযুক্ত করে বিশেষায়িত করে তাঁদের শক্তি সামর্থ্যের বিশালত্ব দেখাতে চান। ভাল বা মন্দ যাহাই হোক জঙ্গিবাদ একটা দর্শন,একটা আদর্শ হতে পারে। জঙ্গিবাদের বিশালত্বও আছে মেনে নেয়া যায়। কিন্তু বর্তমানের বাংলাদেশের সংঘঠিত ঘটনা সমুহ সেই আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য নহে। এই পয্যন্ত যারাই গোয়েন্দাদের নিয়ন্ত্রনে এসেছে তাঁরা সবাই জামায়াত শিবিরের ক্যডার।এদের সাথে আন্তজাতিক ইসলামি কোন জঙ্গি সংগঠনের সাথে সম্পৃত্ততার প্রমান এই পয্যন্ত পাওয়া যায়নি। তাঁরাই নীজ থেকে প্রপাকান্ডা করে প্রচার করছে তাঁরা আই এস আই। তবে ভারতের বিখ্যাত সন্ত্রাসী দাউদ ইব্রাহীমের সাথে তারেক জিয়া সহ কয়েকবার বৈঠক হয়েছে বলে বন্দি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাবর তথ্য দিয়েছেন বলে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন। দাউদ ইব্রাহীমের মত আরও অনেক অন্ধকারের কীটের সাথে সম্পর্ক থাকতে পারে, তবে ইসলামী কোন সাচ্ছা দলের সাথে নেই, তা নির্দ্বিদ্ধায় বলা যায়। বর্তমানের ঘটনা শুধু মাত্র আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে পরিস্থিতির সৃষ্টি করে বিদেশী বন্ধু রাষ্ট্র সমুহকে বিনিয়োগের আগ্রহে বাধা দিয়ে উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ করা।সরকারকে অস্থির করে,আইনশৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে মানবতা বিরুধি বিচারকে বাধাগ্রস্ত করাই তাঁদের লৈক্ষ। লক্ষ করলে দেখা যায়,প্রত্যেকটি ঘটনার পর একশ্রনীর বুদ্ধিজীবি গনতন্ত্রে সকলের অবাধ বিচরনের কথা বলে মাতম করতে থাকেন। জ্যান্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারার সাথে -গনতন্ত্রের সমস্যা কোথায় দেখেন আমি তা বুঝিনা। যে বিবৃতিটা দিচ্ছেন সেটা কিভাবে দিচ্ছেন? বাক স্বাধিনতা সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা না থাকলে তিনি যে কথাটা বললেন এবং যে পত্রিকা কথাটা চাপালো কারো বিরুদ্ধে সরকার তো কোন ব্যবস্থা নিলনা--। তবে বাক স্বাধীনতা, ,গনতন্ত্র নাই কথাগুলি আসে কিভাবে? শান্তিপুর্ন কোন মিছিল মিটিং এ পুলিশ বাধা দিয়েছে এমন উদাহরন কি একটা আছে? কোন দেশের সর্বচ্ছো আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হরতাল, অবরোধ, বিবৃতি, মিছিল, শ্লোগান ইত্যাদি সেই দেশের রাজনৈতিক কোন দল দিয়েছে?কেউ কি কোনদিন শুনেছেন? তারপরেও গনতন্ত্র নেই? আপনারা সব মানুষ মেরে দেশটাকে খালি করে শুধু আপনারা থাকবেন তবেই গনতন্ত্র থাকবে। যুদ্ধ-অপরাধের বিচার না হলে গনতন্ত্র থাকবে। আপনাদের লুটপাটের বিচার না হলে গনতন্ত্র থাকবে। আপনারা নির্বাচন না করে যদি ক্ষমতায় বসতে পারেন তবেই সুষ্ঠ গনতন্ত্র থাকবে। আপনার ছেলে,আপনার নীজের লুটের টাকার তত্বাবধায়ক সরকারের দেয়া মামলা গুলি সরকার প্রত্যাহার করে নিলে গনতন্ত্র থাকবে। ক্যান্টনমেন্টের সেনাবাহিনীর বিশাল বাড়ী যদি এখন আপনার কাছে থাকতো তবেই গনতন্ত্র আপনার সেই বাড়ীতে নিরাপদে থাকার বিশাল জায়গা পেত। আপনাদের লুটপাটের গনতন্ত্র বাংলাদেশের মানুষ চায়না।আপনাদের আগুন সন্ত্রাসের গনতন্ত্র জনগন চায়না। জনগন অনেক পরে হলেও বুঝতে পেরেছে,যে মা সন্তান প্রসব করে,সে মায়ের চেয়ে দরদ সন্তানের প্রতি অন্য কারো হতে পারেনা। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে,আওয়ামী লীগের নেতা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান, সেই স্বাধীনতার নেতৃত্ব দিয়েছেন একটানা ২৪টি বছর। জেল,জুলুম,হুলিয়া,ফাঁসির মঞ্চে গিয়েও আপোষ করেননি বঙ্গবন্ধু। তাঁর হাতে সৃজিত স্বাধীনতার অপূর্নতা--তাঁরই জৈষ্ঠ কন্যার হাতে পরিপূর্নতা পাচ্ছে। এটাইতো বিধির বিধান। নচেৎ কি যাদুর বলে,একনাগাড়ে ৭বার দুর্নীতির সুচকে বিশ্বের সবকয়টি দেশের শীর্ষে থাকা একটা দেশকে রাতারাতি দুর্নীতির সুচকে দক্ষিন পুর্ব এশিয়ার সব কয়টি দেশের নিম্নে নিয়ে যেতে পারে। দারিদ্রসীমার নীছে অবস্থানকারি একটা দেশকে কি করে মাত্র ৫বছরের মধ্যে এত অবরোধ, হরতাল, নাশকতা, জ্বালাও পোড়াও উপেক্ষা করে মধ্যম আয়ের দেশে রুপান্তর করতে পারে। তৃতীয় বিশ্বের একটা দেশের প্রধানমন্ত্রী কি করে উন্নত শক্তিধর দেশ সমুহের জন্য বরাদ্ধ শ্রেষ্ঠত্বের আসন অনায়াসে নিজের করে নিতে পারে। কি করে তৃতীয় বিশ্বের ঘনবসতি পুর্ন একটা দেশের প্রধানমন্ত্রী ধরিত্রীর শ্রেষ্ঠ মানষ কন্যা হতে পারে। বিদেশি সাহায্যনির্ভর একটাদেশ কিকরে রাতারাতি সাহায্যদাতা দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে।এই সেই দিনও যে দেশটি গ্রামের একটা ব্রীজের টাকা বিদেশ থেকে ঋন নিয়ে করার অভ্যেস ছিল, সেই দেশটি কি করে পদ্মা সেতুর মত এত বিশাল একটা সেতু দেশের নিজস্ব তহবিলে করতে পারে। তার চেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে, পদ্মা সেতুর তিনগুন বেশী অর্থব্যায়ে গভীর সমুদ্র বন্দর কি করে করার সাহষ পায়? আপনাদের ভাষায় গনতন্ত্র যদি না থাকে,তবে না থাকুক,লুটেরার গনতন্ত্রের আমাদের প্রয়োজন নেই। উন্নয়নের গনতন্ত্র আছে,সমৃদ্ধির গনতন্ত্র আছে,সর্বশেষ বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে বলার গনতন্ত্র আছে--আমি বাঙ্গালী, আমার জাতির জনক সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি, বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান।তিনি আমার দেশের নাম রেখে গেছেন "বাংলাদেশ"। আমার দেশের বর্তমানের অবিসংবদিত নেতা তাঁরই জৈষ্ঠ কন্যা, তোমরা যাকে ধরিত্রির মানষ কন্যারুপে চিনো, তিনিই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী,দেশরত্ম শেখ হাসিনা ওয়াজেদ। পরিশেষে বলতে চাই, নব্য জামায়াত শিবির তাঁদের রক্ষক বিএনপিকে আইএসআই এর ভুমিকায় অভিনয় থেকে যে কোন মুল্যে বিরত রাখতে হবে। প্রয়োজনে কিছুক্ষনের জন্য মঞ্চের আলো নিবিয়ে দিয়ে হলেও শেষ দৃশ্যের যবনিকা টানা সভ্য বাংলাদেশ গড়ার জন্য একান্ত প্রয়োজন। জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা

ছবি

বিএনপির চ্ছত্রছায়ায় জামায়াত-শিবিরের প্রেতাত্মার অপর নাম বাংলাদেশী আইএস আই। ------------------------------------------ বাংলাদেশে বিভিন্ন নামে জামায়ত-শিবির বিএনপির প্ররোচনায় জঙ্গীপনার তৎপরতায় সব মহলেরই উদ্ভেগ-উৎকন্টা দেখা দিয়েছে। এদের কার্যকলাপ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং মানুষে মানুষে সৌহার্দ-সম্প্রীতির জন্যও চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে। পর পর কয়েকটি অনাক্ষাংখিত সন্ত্রাসী ঘটনায় দেশ-বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশিদের মধ্যে উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে। দেশকে অস্থিতিশীল করতে ৭২-৭৫ এর মতই সক্রিয় হয়ে উঠেছে বিভিন্ন কুচক্রী মহল। নানা ধর্ম আর নানা মতের সহাবস্থান সুদুর অতীতকাল থেকে আমাদের এই দেশের ইতিহাস ঐতিহ্যে বয়ে চলে আসছিল।সুফিবাদের প্রচার প্রসারের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মের প্রচলন হলেও অন্য মতালম্বিরাও পরবর্তিতে ইসলামের শান্তির বানী প্রচারে বাধাগ্রস্থ হয়নি। ধর্মীয় উগ্রতা নিয়ে এ অঞ্চলের মানুষ কখনও মাথা ঘামিয়েছে তেমন উদাহরন কখনই সৃষ্টি হয়নি। সাম্প্রতিক কালে আইএস পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশে একটি মহল বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড- সংঘটিত করে চলেছে।এই চক্রটি আই এস আই এর সাথে সম্পর্ক বুঝানোর জন্য এবং তাঁদের অনুকুলে হামলা হচ্ছে, জনগন ও সরকারকে ধোঁকা দেয়ার প্রতারিত করার জন্য তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলা এবং বগুড়ায় শিয়া মসজিদে মুয়াজ্জিনকে হত্যা করেছে নির্দ্বিদায় বলা যায়।ফেস বুক বন্ধ করে ফ্রক্সি সারবার এর উপর নজরদারি চালিয়ে গোয়েন্দারা আমার উল্লেখিত বিষয়টির সত্যতা শতভাগ মিলাতে পেরেছেন। সরকার ও নিশ্চিত ছিলেন বর্তমানের হামলা সমুহ জামায়াত শিবিরেরই কর্ম।শেষ পয্যন্ত তাহাই প্রমানীত হল। বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে অতীতেও বিভিন্ন সময় চেষ্টা হয়নি তা কিন্তু বলছি না। কোন সময়েই তাঁরা শতভাগ সফল হতে পারেনি।এ জাতিয় দুর্যোগ মহুর্তে তাৎক্ষনিক ভাবে আমাদের অসাম্প্রদায়িক নেতারা মাঠে নেমে জনগনকে সাথে নিয়ে নিয়ন্ত্রন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এইরুপ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা নিয়ন্ত্রনে অহিংস আন্দোলনের মহান নেতা মহাত্মা গান্ধীজি দাঙ্গাকবলিত অঞ্চল নোয়াখালী এসে তাঁর পালিত ছাগলটিও হারিয়েছিলেন।ধর্মাগ্ধমহল কখনও বিষয়টিকে অনেক দূর টেনে নিতে সফল হয়নি। কারণ এ অঞ্চলে সহনশীল সুফিবাদের মাধ্যমে ধর্মের প্রচার হওয়ায় স্বভাবগত ভাবেই মানুষ শান্তিপ্রিয়, কোন হিংস্রতা, উগ্রতা ও ধর্মান্ধতা, সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্রয় দেয়নি।বিদেশি বন্ধু দেশ সমুহের নিকট দেশের আইন শৃংখলা অবনতির উদাহরন তুলে ধরার জন্য এবং মানবতা বিরুধি অপরাধের বিচার দীর্ঘায়িত বা বাঞ্চাল করার জন্য রাজনৈতিক জোটের আন্দোলনের উপর ভরকরে ২০১৩ সাল থেকেই বিভিন্ন লেবাসে ভিন্ন ভিন্ন নামে দেশে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের এই সময়ে স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত-শিবির হত্যাসহ বিভিন্নভাবে তাণ্ডব চালিয়ে জনমনে আতংক সৃষ্টির পায়তারা চালিয়ে আসছে। তারা সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে লেখক, প্রকাশক,ব্লগার, পুলিশ সর্বশেষ শিয়া ধর্মালম্বিদের হত্যাসহ নৃশংস সন্ত্রাস, জঙ্গিপনা করে চলেছে। ২০১৪ সালের শুরুর দিকে এবং ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাস থেকে পেট্রোলবোমায় মানুষ হত্যাসহ টানা ৯২ দিন ২০ দলীয় জোটের ব্যানারে যে তান্ডব চলেছে, বিএনপি নেত্রীর সরাসরি তত্বাবধানে- জামায়াত শিবিরের জঙ্গি কর্মিরাই তা করেছে, যাহা দিবালোকের মতই মানুষের মনে সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।সেই আলামত এখনও স্পষ্ট,আগামি কয়েক দশকেও তাঁর ক্ষত জনমন থেকে মুছবেনা।এখন জঙ্গিপনা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হচ্ছে তা আইএস ও অন্যান্য জঙ্গী সংগঠনের নামে জনগনকে এবং সরকারের দৃষ্টি বিভ্রান্ত করার একমাত্র নতুন অপকৌশল- সাক্ষাৎ প্রতারনা ছাড়া আর কিছই নয়। বগুড়ার এই হামলা এবং তাজিয়া মিছিলে হামলা আইএসের সাথে যোগসুত্রের উদাহরন তুলে ধরার জন্য সাজানো নাটক।যেহেতু ফেসবুক বন্ধ করে সরকার নিশ্চিত হতে পেরেছেন সাম্প্রতিক হত্যা ও সন্ত্রাসের ঘটনাগুলোর উৎপত্তি, সংগত কারনে ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলির সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে আইনের মাধ্যমে বিচারের আওতায় নিয়ে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি নিশ্চিত করা একান্ত প্রয়োজন। এই প্রজর্ম্মের জন্য নয়,আগামি প্রজর্ম্মের জন্য। অপরাধগুলো সত্যিকার ভাবেই নব্য জামায়াত শিবিরের সৃষ্ট আইএস করছে তাহা দিবালোকের মতই জনগনের নিকট তুলে ধরা সরকারের নৈতিক দায়িত্ব বলে আমি মনে করি। আইএসআই এর মাধ্যমে রাজনৈতিক স্বার্থ- প্রতারনা করে জনগনকে বিভ্রান্তের ঘোরে ঠেলে দেয়ার অপপ্রয়াসের এবং তাঁদের দলিয় ও জোটের স্বার্থ হাসিল করার অপপ্রয়াসের মুখোষ উম্মোচনের প্রয়োজনেই জনগন চায় সঠিকও নিরপেক্ষ তদন্ত। প্রয়োজনে বিরুদিদলের গত কিছুদিন আগের আগুন সন্ত্রাসের তদন্ত বিদেশিদের মাধ্যমে হওয়ার দাবিকে মেনে নিয়ে আন্তজাতিক তদন্ত দল গঠন করে তদন্ত করে হলেও চিরতরে বাংলার মাটি থেকে এই অপরাজনীতির ধারক বাহক,তাঁদের পৃষ্টপোষকদের চিহ্নিত করে কবর দেয়ার ব্যাবস্থা করার আকুল আবেদন জানাচ্ছি।অবশ্য বেগম খালেদা জিয়া ইতিমধ্যে আন্তজাতিক তদন্ত দলের তদন্তের দাবি থেকে সরে গেছেন বলেই মনে হচ্ছে।এই দাবি থেকে কেন খালেদা জিয়া সরে গেল তাও তদন্ত করে দেখা দরকার বলেই আমি মনে করি। সঠিক তদন্ত হলেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে। একের পর এক ব্লগার হত্যা, বিদেশী নাগরিক হত্যা, হত্যার চেষ্টা, তাজিয়া মিছিলে হামলাসহ সর্বশেষ বগুড়ার শিয়া সম্প্রদায়ের মসজিদে হত্যাকান্ডের মাধ্যমে দেশকে একটি অনিরাপদ, জঙ্গী ও সাম্প্রদায়িক বিরোধসঙ্কুল স্থান হিসেবে বহির্বিশ্বে তুলে ধরার অপচেষ্টা চালিয়ে তারা রক্ষা পেয়ে যাবে তা হতে দেয়া যায়না।স্বাধিনতার পর থেকেই লক্ষ করছি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপরিবার সহ হাজার হাজার নেতাকর্মি,মুক্তমনা ব্লগার,লেখকপ্রকাশক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক,এমপি,মন্ত্রী তাদের হত্যার শিকার হয়েছে।একেক সময়ে একেক নামে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে প্রগতিশিল চিন্তাধারার মানুষকে পরপারে পাঠিয়ে দিচ্ছেন।কখনও শুনা যায়না কোথাও একজন মৌলবাদি বা উগ্রতায় বিশ্বাসি লেখক ব্লগার,সাহিত্যিক সাংবাদিক রাজনৈতিক নেতা হত্যার শিকার হতে।কেন হয়না তাঁরা হত্যার শিকার? আল্লাহ কি তাঁদেরকেই মানুষ হত্যা করার লাইসেন্স দিয়েছেন? অন্য কেহ হত্যা করলে মহাপাপ হয়, তাঁরা হত্যা করলে কি পুর্ন হয়? মানুষ হত্যায় পুর্ন হয় এমন শরিয়তের দলিল যদি কোন ধর্মীয় আলেম দিয়ে প্রমান দিতে পারেন, তবে আমি নিজেই শত শত মানুষকে হত্যা করে বেহেস্থে যাওয়ার পথ পরিষ্কার করতে রাজি আছি। বেহেস্তে যাওয়ার লোভ নেই সারা পৃথবী খুঁজে একজন মানুষকেও পাওয়া যাবেনা।তাঁরা হত্যা করে সবাই বেহেস্তে চলে যাবে আমরা কেন বসে থাকবো? মুলত; তাঁদের লক্ষ্য, দেশের অগ্রযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করে প্রমান করা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে হত্যা ঘুম,খুন বেড়ে যায়,দেশে প্রচার যদিও তাই হয় বিদেশিদের নিকট তুলে ধরতে চায় এখানকার জনগন ধর্ম ছাড়া কিছুই বুঝেনা,ধর্মীয় সম্পৃতি আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলে রক্ষা করতে পারেনা।যেমন এখন ও তাঁরা প্রচার করে বেড়ায় ৭৪-৭৫ সালে বহু লোকের হত্যা ঘুম খুনের কাহিনী। মুলত;তখনও আজকের অপশক্তিরাই সারা দেশব্যাপি হত্যা,ঘুম,খুন,রাহাজানি,পাটের গুদামে আগুন, আমেরীকা কতৃক খাদ্যের জাহাজ মাঝ দরিয়ায় রেখে খাদ্যসংকট তৈরী,ইত্যাদি হেন কাজ নেই যাহা তাঁরা করেনি।তখন সম্মুখ সমরে ছিল আওয়ামী লীগ থেকে সদ্য বেরিয়ে যাওয়া অতি বিপ্লবি জাসদ।আজকে সম্মুখ সমরে বিএনপি- পেছনে যত অপশক্তি সকলেই একজোট হয়ে ষড়যন্ত্রের জাল বিচিয়ে একের পর এক প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার মানুষকে হত্যা করে চলেছে।আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে তাঁদের বাপ-দাদাকে ক্ষমতায় নিয়ে আসতে তৎপর রয়েছে। এ থেকে উত্তরণের একমাত্র পথই হচ্ছে এসব অপকর্মের হোতাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা। জনগনের সামনে মুখোষ খুলে দিয়ে চিরতরে রাজনীতি থেকে উচ্ছেদের পথ রচনা করা। আমরা আশা করব দ্রুত এই সমস্ত হামলার ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে। এমন ঘটনা আর যেন না হয় , সেটা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে জামায়াত শিবির সহ সকল অপশক্তির রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষকে রুখে দাঁড়ানোর জন্য আওয়ামী লীগ সহ সমমনা প্রতিটি দলকে তাঁদের কর্মি বাহিনী নিয়ে মাঠে নামতে হবে। ঢাকায় বসে বিবৃতি দিয়ে খালেদাকে মাঠে নামতে দেবনা হুংকার দিলেই খালেদা পালিয়ে যাবেনা। তাঁর জন্য চাই প্রতিরোধ গড়া। প্রশিক্ষিত কর্মিবাহিনী নিয়ে আসুন সবাই মিলে অপশক্তি রুখার স্বার্থে একযোগে মাঠে নেমে পড়ি। বর্তমান প্রশাসনেও তাঁদের ২১ বছর নিয়োগ দেয়া অপশক্তি আপনাদের চাইতে আরো বেশি। তাঁদের দিয়ে সন্ত্রাস নির্মুলের স্বপ্ন দেখা ছেঁড়া কাথায় শুয়ে কোটি টাকার স্বপ্ন দেখার সমতুল্য।এই অপশক্তি কোনভাবেই যেন মাথাচাড়া দিতে না পারে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিতদের সাথে" সর্বদলীয় বিগ্রেড" গঠন করে তাঁদেরকেও দায়িত্ব দিয়ে কাজে লাগাতে হবে।সব মহলকেই সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। একই সঙ্গে এ দায়িত্ব দেশের সব রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তি এবং শুভবুদ্ধিসম্পন্ন প্রতিটি মানুষকে সম্পৃত্ত করে তাঁদের উপরও দায়িত্ব তুলে দিতে হবে। আইন শৃংখলা বাহিনী দিয়ে নিয়ন্ত্রন করা যাবে স্বল্প সময়ের জন্য-নির্মুল করা যাবেনা শেকড় কোনকালেই। জনগনই পারে একমাত্র শেকড় উপড়ে পেলে দিতে। জনগনের বিকল্প কোন শক্তি নেই, হবেও না কোন সময়। সব মহলকে সর্বাজ্ঞে জনগনের শক্তির উপর নির্ভর করার অভ্যেস গড়ে তুলতে হবে, তবেই অপশক্তির কবর রচিত হতে পারে-নচেৎ কস্মীন কালেও এই অপশক্তির ষড়যন্ত্র রুখতে পারবেনা সরকার।যেমনটি মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে চরম ভাবে পরাজিত করার ২/৩বছরের মধ্যেই আবার তাঁরা মাথা চাড়া দিয়ে উঠে জাতির জনকের প্রান সংহার করেছিল।দেশী বিদেশী অপশক্তি সমুহকে একত্রিত করে অশুভ শক্তি অর্জন করে পেলেছিল।তাঁরা মুলত:সুক্ষ ষড়যন্ত্রকারি,বিপদে কচ্ছপের মত মাথা লুকিয়ে রাখে- কিন্তু শেয়ালের চেয়ে ধুর্ত। যে কোন বিপদে বড় গাছের ছায়ায় তাঁরা আশ্রয় নিতে জানে।সময় হলেই তাঁরা আবার শেয়ালের পালে ভীড়ে যায়।আবারও মানুষের ঘুম হারাম করা সেই চিরচেনা ডাক দিয়ে আক্রমনের প্রস্তুতি শানায়।

ছবি

পাকিস্তানের নিকট প্রাপ্য সম্পদ আদায়ে আন্তজাতিক আদালতের শরনাপন্ন হওয়া সময়ের দাবি--- ================================== 1971 ইং সালে পাকিস্তানের সুসজ্জিত ৯৩ হাজার সৈন্য বাঙ্গালী প্রশিক্ষনহীন,স্বল্প প্রশিক্ষিত মুক্তিযুদ্ধাদের নিকট চরম পরাজয়ের গ্লানি আজও ভুলতে পারেনি। ভুলার কথাও নয়,উর্বর ভুমি হাত ছাড়া হলে সবাই কিছুনা কিছু গ্নানিতে ভোগে।তবে পাকিস্তানের ক্ষেত্রে বিষয়টি আরও গ্লানিকর এইজন্য যে জাতির জনকের আকাশসম ব্যাক্তিত্বের নিকট দ্বিতীয় পরাজয়।পরাজয়টি ঘটেছিল দ্বিতীয় আন্তজাতিক ইসলামি শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠানকে কেন্দ্রকরে।স্বাধীনতার পর প্রথম ইসলামী শীর্ষ সম্মেলনকে ঘিরে পাকিস্তানের বিরুধিতা সত্বেও বঙ্গবন্ধু সম্মেলনে যোগদান করে ইসলামী উম্মাহ সদস্য পদ গ্রহন করেন।দ্বিতীয় সম্মেলন ১৯৭৪ সালে পাকিস্তানের লাহোর অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রাক্কালে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক বিচক্ষনতা এবং দক্ষ পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের যোগ্য কূটনীতি পরিচালনার কারনে মুসলিম বিশ্বের প্রায় সকল রাষ্ট্রকে নিয়ন্ত্রন পুর্বক স্বীকৃতি আদায় করে শক্ত অবস্থান নিয়ে পাকিস্তানকে একঘরে করে নিতে সক্ষম হন। সম্মেলন কে ঘিরে আন্তজাতিক রাজনীতির কুটচালে বঙ্গবন্ধুর ক্যারিসম্যটিক রাজনীতির নিকট পাকিস্তানিদের চরম পরাজয় ঘটানোর উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু শেষ পেরাগ তাঁদের ঘাড়ের মাঝ বরাবর ঠুকে দেন। বঙ্গবন্ধু সম্মেলনে যোগদানের প্রশ্নে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ স্বীকার পুর্বক পাকিস্তানের স্বীকৃতি দাবি করে বলেন, "যে দেশ আমার দেশকে মেনে নেয় নাই,বাংলাদেশের বাস্তবতা মানতে পারেননি সেই দেশে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে আমার বাংলাদেশ অংশ গ্রহন করতে পারেনা।" ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ নিয়ন্ত্রিত অন্য মুসলিম দেশ গুলীও সম্মেলন অনুষ্ঠানে সংশয় প্রকাশ করে বিবৃতির ঝড় উঠলে পাকিস্তান বাংলাদেশকে স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে সম্মেলনে যোগদানের জন্য আমন্ত্রন পত্র পাঠাতে বাধ্য হন। ২৪ বছরের পাকিস্তানের সময়টিতে দেশটির সামরিক ও সামন্ততান্ত্রিক নেতৃত্ব তৎকালিন পুর্ব পাকিস্তানকে শোষন করার মানষে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছিল। তখনকার মানসিকতা থেকে পাকিস্তান আজও বের হয়ে আসতে পারেনি।বলা যায় সম্পর্ক উন্নত করায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার দিকেই তাঁদের জোঁক।তাঁর একমাত্র কারন বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যখনি আওয়ামী লীগ আসে তখনি পুরাতন বকেয়া নিয়ে কুটনৈতিক ভাবে কথাবার্তা শুরু করে।আওয়ামী লীগ মনে করে উক্ত পাওনা সম্পদ নৈতিকভাবে এবং হিস্যা অনুসারে বাংলাদেশ প্রাপ্য।এই পাওনা আদায় করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সরকার পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করার চেষ্টা সব সময়ই করে আসছে। বাংলাদেশ কখনও পাকিস্তানকে অমর্যাদা করে এবং পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ঘটনায় কোন বিবৃতি বা অনৈতিক হস্তক্ষেপ করেনি। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে হত্যা, নারী নির্যাতন,মানবাধিকার লঙ্গনের অভিযোগে ১৯৫ জন পাকিস্তানি সেনা আটক অবস্থায় বিচারের পদক্ষেপ নিলে তৎকালিন পাকিস্তানের ভূট্রো সরকার জনগনের নিকট চরম ভাবে জবাবদিহিতার সম্মুখীন হয়। তাঁদের সেনা অফিসারদের বিচারের উদ্যোগ নিলে পাকিস্তানে আতংকের সৃষ্টি করে এবং তৎকালীন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলী ভুট্টো অভ্যন্তরীণভাবে চাপের সম্মুখীন হন।বঙ্গবন্ধুর চিন্তা চেতনায় তখন প্রায় আড়াই লাখ বাঙালি পাকিস্তানে অবস্থানরত ছিল। তাঁদের ফেরৎ আনার বিষয়টি ঘুরপাক খাচ্ছিল।তাঁদের মা বাবা আত্মীয়স্বজনও বাংলাদেশে তাঁদের ভাগ্য নিয়ে চিন্তায় অস্থির ছিলেন।একসময় বড় সংকট হয়ে বঙ্গবন্ধুর সরকারকে বিব্রত করবে এটা নিশ্চিত বুঝতে পেরেছিলেন জাতির জনক। তাদের বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনের প্রশ্নেও পাকিস্তান জটিলতা সৃষ্টি করে রেখেছিল।সেনা অফিসার ছাড়াও বাংলাদেশের মাটিতে আত্মসমর্পণকারী ৯৩ হাজার পাকিস্তানি সেনা তখন বঙ্গবন্ধুর শক্তি। বাংলাদেশের অধিবাসিদের ফেরত আনার বড় হাতিয়ার।তাঁদেরকে নিয়ে ভুট্টো কম বিপদে পড়েছিলেন বললে ভুল হবে রীতিমত বিভ্রান্ত ছিলেন।ভূট্রোর হাতেও বাংলাদেশি নাগরিক গন ৯৩ হাজার সেন্য ফেরৎ নেয়ার বড় হাতিয়ার।এর বাইরে বাংলাদেশ শর্ত দিয়ে দাবি করেছিল পাকিস্তানের স্বীকৃতি। অন্যদিকে পাকিস্তান দাবি করেছিল ১৯৫ যুদ্ধাপরাধীসহ ৯৩ হাজার সেনাসদস্যের নিঃশর্ত মুক্তির। ১৯৭৩ সালের ২৮ আগস্ট ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে পাকিস্তান যুদ্ধপরাধি সেনা কর্মকর্তাদের বিচার করবে মর্মে, বাংলাদেশ পাকিস্তানি সৈন্যদের বিচারের দাবি প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। ফলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে যে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছিল, তার অবসান ঘটেছিল। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যেসব ব্যক্তি মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের বিচার করা যাবে না- এ ধরনের কোনো কথা ওই চুক্তিতে ছিল না। জাতির জনক ঘোষনা দিয়েছিলেন যাঁরা মানবতা বিরুধি অপরাধে জড়িত ছিলেন না, অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে রাজাকার আলবদর, আলসামস হয়ে মুক্তিযুদ্ধাদের বিরুদ্ধে তথা স্বাধীনতা যুদ্ধের বিপক্ষে অস্ত্র ধরেছিলেন তাঁদেরকে সাধারন ক্ষমা করে দিয়ে বলেছিলেন দেশের কাজ করার জন্য।যাঁরা হত্যা, লুন্ঠন,নারি দর্শন,অগ্নিসংযোগের মত মানবতা বিরুধি অপরাধে জড়িত ছিলেন তাঁদের জাতির জনক ক্ষমা করেননি।তাঁদের বিচার অনুষ্ঠিত হচ্ছিল,কারো কারো বিচার শেষে জেল জরিমানা হয়েছিল এবং অনেকেই জেলে ছিলেন। পাকিস্তান বার বার যে চুক্তির কথা তাঁদের প্রতিবাদে এবং বিবৃতিতে উল্লেখ করে বলতে চায় তা হচ্ছে ১৯৭৪ সালের ৯ এপ্রিলে সম্পাদিত চুক্তি।তাতেও মানবতাবিরোধী অপরাধে যারা জড়িত ছিল তাদের বিচার করা যাবে না- এমন সুনির্দিষ্ট কোন শর্ত উল্লেখ করা নেই। তারপরও বার বার চুক্তিটির উল্লেখ করে পাকিস্তান বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরুদ্ধে চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে।তাই বলা যায় তাঁরা বর্তমান বাংলাদেশের বাস্তবতা এখন পয্যন্ত মেনে নিতে পারেননি। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের ভুমিকায় পরিষ্কার অনুধাবন করা যাচ্ছে১৯৭৪ সালের ২৪ ফেব্র“য়ারি লাহোরে দ্বিতীয় ইসলামিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল তাঁর আগে, যে স্বীকৃতি বাংলাদেশকে দিয়েছিল তা তাদের অন্তর থেকে দেয়নি বাধ্য হয়েই দিয়েছিল। ১৯৭৪ থেকে ২০১৫ সময়টা অনেক দীর্ঘ। এত দীর্ঘ সময়েও দুদেশের মধ্যে বিরাজমান অর্থনৈতিক সমস্যা অর্থাৎ বাংলাদেশের প্রাপ্যতার বিষয়টি সমাধান হয়নি।১৯৭৫ ইংরেজী সালে বঙ্গবন্ধুর মর্মান্তিক মৃত্যুর পর নামে বেনামে পাকিস্তানিরাই দেশ শাষন করেছিল।ফলে তাঁরা বাংলাদেশের পাওনা সম্পদ ফেরৎ দেয়ার বিষয় নিয়ে একরকম স্বস্তিতেই ছিল।দীর্ঘ ২১ বছর এই নিয়ে কোন কূটনৈতিক তৎপরতা তাঁদের মোকাবেলা করার প্রয়োজন হয়নি। কিন্তু এবার বিধিবাম, স্বাধীনতার পক্ষ শক্তির যেভাবে উম্মেষ ঘটেছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে, তাঁদের তল্পিবাহকেরা আবার ক্ষমতায় আসতে আদৌ পারবে কিনা বা আসলেও অনেক সময়ের প্রয়োজন হতেপারে, এমনটি চিন্তা চেতনার উদ্রেক হওয়ায় পাকিস্তানের সর্বস্তরের রাজনীতিক, চিন্তাবীদ, শুসিলদের মনে ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। ফলশ্রতিতে আগের বিচারের রায় গুলীতে কিছু রাজনৈতিক দল,সামাজিক সংগঠন,ব্যাক্তি বিশেষ কোন প্রতিক্রিয়া না জানালেও এবার সাকা-মোজাহিদ প্রশ্নে একে অপরের প্রতি বৈরী ভাবাপন্ন রাজনৈতিক দল গুলিও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীন বিষয়ে একহাট্রা হয়েছে। আগবাড়িয়ে কিঞ্চিত বর্তমানের কূটনৈতিক সম্পর্ককেও ধংস করার মানষে সব রাজনৈতিক দল একজোট হয়েবাংলাদেশের মানবতা বিরুধিদের বিচারের বিপক্ষে অবস্থান গ্রহন করেছে। পাকিস্তানের কাছে পাওনা সম্পদ ফেরত, বাংলাদেশে অবস্থানরত পাকিস্তানি নাগরিক বিহারিদের পাকিস্তানে প্রত্যাবর্তন, বাণিজ্যে ভারসাম্যহীনতা ইত্যাদি ক্ষেত্রে, আগে থেকেই নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে অগ্রসর হচ্ছিল দেশটি। পাকিস্তানের কাছে পাওনা সম্পদের বিষয়টি একাধিকবার বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা হলেও পাকিস্তান তেমন সাড়া আদৌ দেয়া প্রয়োজন আছে তেমনটিও মনে করেনি।বঙ্গবন্ধুর সরকারের সময়ে ১৯৭৪ সালে প্লানিং কমিশন ২ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা পাওনা দাবি করে একটি রিপোর্ট প্রণয়নকরেছিল। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের আগে পাকিস্তানের সম্পত্তি, জনসংখ্যা, সংখ্যাসাম্য নীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও সম্পদের পরিমাণ হিসাব করে ওই পাওনা টাকার দাবি বিভিন্ন পয্যায়ে উত্থাপন করে আসছে বাংলাদেশ। "গত ৪০ বছরে এ ব্যাপারে তেমন কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় বর্তমান বিশ্ববাজারের তুলনামুলক মুল্য নির্ধারন করে আন্তজাতিক আদালতে শরনাপন্ন হওয়া যায় কিনা এই বিষয়টি যখন বর্তমান বাংলাদেশ সরকার খতিয়ে দেখছে, তখনি দেশটির কাঁপুনি এসেছে,যে কোন ভাবে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার মানষেই তাঁরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীন বিষয়ে হস্তক্ষেপের পরিকল্পনা করছিল।এমনি মহুর্তে দুই জনের ফাঁসির আদেশকে তাঁরা ইস্যু হিসেবে নিয়ে বর্তমানের যৎকিঞ্চিত সম্পর্ক আছে তাও বৈরী করার ষড়যন্ত্র করছে। পাকিস্তান বাংলাদেশ বিমানকে একটি পুরনো টাইপের বোয়িং বিমান ফেরৎ দিয়ে বাংলাদেশের প্রাপ্যতাকে আগেই নৈতিক স্বিকৃতি দিয়েছিল, যা একত্রিত পাকিস্তানের সম্পদের উপর আমাদের প্রাপ্যতার তুলনায় কিছুই নয়। ১৯৮৯ সালে তৎকালীন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফরের সময় পাকিস্তান নীতিগতভাবে বাংলাদেশের সম্পদ ফিরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে একটি কাউন্সিল গঠন করতে রাজি হয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তানের সরকারে পরিবর্তন আসাতে বিষয়টি নিয়ে পরবর্তিতে তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। বাংলাদেশে আটকে পড়া পাকিস্তানি বিহারিদের পাকিস্তানে প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে বহু দেনদরবার হলেও কোনো অগ্রগতি অদ্যাবদি পরিলক্ষিত হয়নি। এসব পাকিস্তানি নাগরিক এখনও মনমানষিকতায়, চেতনায় পাকিস্তানি ভাবাদর্শ বহন করে এবং তাঁরা পাকিস্তানের নাগরিক দাবি করে, সেখানে যেতেও চায়।অনেকে বিভিন্ন কলাকৌশল অবলম্বন করে চলেও গেছে। প্রায় ২ লাখ পাকিস্তানি এখনও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বসবাস করছে।যাহা বাংলাদেশের জন্য বিরাট এক বোঝা। ১৯৮৫ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হক এদের নিতে রাজি হয়েছিলেন,এবং ঘোষনাও দিয়েছিলেন।জনাব ভূট্রোর মেয়ে পাকিস্তানের পিপলস পার্টি নেতা বেনজির ভুট্টোর বিরোধিতায় জিয়াউল হক মাঝপথে প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেন। ভুট্টো যেমন এদের পাকিস্তানি বলে স্বিকৃতি দেননি তাঁর মেয়েও সেই পথ অনুসরন করে বিহারিদের পাকিস্তানি বলতেও রাজি হলেন না। এখানে উল্লেখ করতে চাই যে কারনটি পাকিস্তানিদের খুব বেশি ভাবিয়ে তুলেছে তা হল দল হিসেবে কংগ্রেস এবং দেশ হিসেবে ভারত বাংলাদেশের অকৃত্তিম বন্ধু, এটা আন্তজাতিক সম্প্রদায়ও অনেকটা তাই মনে করে।সেই কংগ্রেস ভারতের সরকারে থাকাকালিন সমুদ্র সীমানা নির্ধারনের পুরাতন অমিমাংশিত বিষয়টি শেখ হাসিনার সরকার আন্তজাতিক আদালতে উত্থাপন করে রায় নিয়ে এসেছে।ভারত সরকার আন্তজাতিক পয্যায় সবিশেষ বিব্রতকর পরিস্থিতি মোকাবেলা করে,আরও হেনস্তা হওয়ার ভয়ে বিষটি নিয়ে আর বাড়াবাড়ি করার চেষ্টাও করেনি। দ্বিপক্ষিয় আলোচনার মাধ্যমে মিমাংসার প্রস্তাব দিলেও তা শেখ হাসিনার সরকার প্রত্যাখ্যান করে আন্তজাতিক আদালতে চলে যায়।মিয়ানমারের সাথে তাঁর আগেই আন্তজাতিক আদালতের মাধ্যমে সমুদ্রের হিস্যা জয়ী হয়ে বাংলাদেশের স্বার্থ শতভাগ নিশ্চিত করেছে।শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশের স্বার্থের প্রশ্নে কোন বন্ধু রাষ্ট্রকে ছাড় দিয়ে আপোষ করার উদাহরন এই পয্যন্ত তাঁদের দৃষ্টিতে আসেনি।পাকিস্তানকেও যে প্রাপ্যতার প্রশ্নে ছাড় দিবেনা তা অংক করে বুঝিয়ে দেয়ার প্রয়োজন নেই।সুতারাং সম্পর্কের বৈরীতায় প্রাপ্য অংশ নিয়ে তালবাহানা করার জন্য অনেক আগে থেকেই বৈশম্য সৃষ্টি করে রাখার দিকেই তাঁদের জোঁক পরিলক্ষিত হয়।নিম্নে তাঁর কিঞ্চিত উদাহরন দেয়ার চেষ্টা করছি। পত্রপত্রিকার তথ্যানুসারে এবং বাংলাদেশ সরকারের আমদানী ও রপ্তানী ব্যুরুর তথ্যানুসারে দেখা যায়, বাংলাদেশে পাকিস্তানের রফতানির পরিমাণ বেড়েছে শতকরা ২৭ দশমিক ৬ ভাগ হারে। বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানের আমদানি বেড়েছে মাত্র ৯ দশমিক ২ ভাগ হারে। ২০১০-১১ সময়সীমায় বাণিজ্যের পরিমাণ যেখানে ছিল ৯৮৩ মিলিয়ন ডলার, বর্তমানে তা নেমে এসেছে মাত্র ৩৪০ মিলিয়ন ডলারে। এছাড়াও বর্তমানের বিশ্ব অস্থিরতার মুল ইস্যুর দিকে নজর দিলে দেখা যায়,পাকিস্তানি নাগরিক, এমনকি ঢাকাস্থ দূতাবাসের কর্মচারীরা ইতিমধ্যে নানা অপকর্মে নিজেদের জড়িত করেছেন। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে দেখা যায়, বেশকিছু পাকিস্তানি নাগরিক বাংলাদেশে ভারতীয় জাল নোটের অবৈধ ব্যবসা তথা পাচারের সঙ্গে জড়িত। এই সমস্ত টাকা অধিকাংশ জঙ্গি প্রতিপালনের খরছ যোগায় তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।এদের মধ্যে বেশ কজন ইতিমধ্যে গ্রেফতারও হয়েছেন। চলতি বছরের ফেব্র“য়ারি মাসে জনৈক মাজহার খান (যিনি ঢাকাস্থ পাকিস্তান হাইকমিশনে কর্মরত ছিলেন) অকূটনৈতিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন এবং বাংলাদেশ তাকে বহিষ্কার করেছে। বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতা বিস্তারে কোনো কোনো পাকিস্তানি নাগরিক সরাসরি জড়িত,অনেকেই ইতিমধ্যে গ্রেপতার হয়েছেন, কিছু কিছু গোয়েন্দা নজরদারিতে আছে, অনেকেই পালিয়ে বেঁচে গেছেন।নানাহ মাদক ব্যাবসায় জড়িত- অনেকে গ্রেফতার হয়েছে,অনেকে গ্রেফতার এড়িয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন,পাকিস্তান দুতাবাসের আশ্রয় প্রশ্রয়ে অনৈতিক কাজে উৎসাহ পাচ্ছে এমন অভিযোগও আছে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সার্ক, কমনওয়েলথ, ডি-৮, ওআইসিসহ বেশকিছু আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্য। এক্ষেত্রে দুদেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় থাকার কথা ছিল।পরিবেশ পরিস্থিতি অনুকুলে থাকলেও তা হয়নি। বরঞ্চ দিন দিন নিম্নমুখিতাই প্রকাশ পাচ্ছে।এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ঘটনায় পাকিস্তান যখন হস্তক্ষেপ করে, তখন দুদেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও অবনতি হতে বাধ্য। বাংলাদেশের মানুষ, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে পাকিস্তানিদের নেতিবাচক প্রচারণাকে সহ্য করবে না। এতে করে সাধারণ মানুষের মাঝে পাকিস্তানবিরোধী মনোভাব যা আছে এতে আরও শক্তিশালী হবে। বাস্তবতা হচ্ছে, বাংলাদেশ প্রায় প্রতিটি সামাজিক সূচকে পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে আছে। আর্থিক ভিত্তি, নারীশিক্ষা, বৈদেশিক রিজার্ভ, মুদ্রামান, সাস্থ্যসেবা, শিশুমৃত্যুর হার কমানো, রেমিটেন্স ইত্যাদি প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পাকিস্তানের চেয়ে অনেক ভালো অবস্থানে আছে। পাকিস্তান বর্তমান বিশ্বের কোন রাষ্ট্রের জন্য কোনো ক্ষেত্রেই কোনো মডেল নয়। বাংলাদেশ বহু ক্ষেত্রেই বিশ্বের বহু রাষ্ট্রের অনুকরনীয় অনুস্মরনীয় দৃষ্টান্ত।শেখ হাসিনা বিভিন্ন পয্যায়ে যেভাবে বিশ্ব নেতৃত্বে আসীন হচ্ছেন,পাকিস্তান তাঁর ধারে কাছেও অবস্থান নিতে পারছেনা।৪৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশে রুপান্তরীত হলেও ৭০ বছরের পাকিস্তানের অবস্থান বহু দেশের নিম্নেই রয়ে গেছে।এই সমস্ত বিষয় গুলিও তাঁদের নেতৃত্বকে মর্মপীড়া দেয়।তাই বর্তমান সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করে চাপে রাখতেও এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে আমি মনে করি। সার্কে উভয় দেশই আছে বটে, কিন্তু এ ক্ষেত্রেও দেখা যায়, পাকিস্তান মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে তার সম্পর্ককে যতটুকু গুরুত্ব দেয়, সার্কের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ককে এখন আর তত গুরুত্ব দেয় না। পাকিস্তান যদি বাংলাদেশের ব্যাপারে তার পুরাতন ধ্যান ধারনায়, মন মানসিকতায় পরিবর্তন না আনে, তাহলে দুদেশের সম্পর্কের অবনতিতো হবেই,পাকি সমর্থক এখনও যে সমস্ত বেজর্মা আড়ালে আবড়ালে মুখ ঢেকে দালালি করে তাঁদের দুর্দশা বাড়বে বৈ কমবেনা। সকল সম্পর্ক চিন্নতো হবেই ন্যাক্কার জনক অপদস্ত হয়ে আন্তজাতিক ভাবে বাংলাদেশের সম্পদ ফেরৎ দিতে বাধ্য হবে।বাংলাদেশের জনগন এখনও আশা করে পাকিস্তান তার শাষককের মানসিকতায় পরিবর্তন আনবে এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাবে না, এটাই নতুন প্রজম্ম প্রত্যাশা করে। সর্ব শেষে বলতে চাই, পাকিস্তানের নিকট একত্রিত থাকা অবস্থায় আমাদের প্রাপ্য সম্পদের বর্তমান বিশ্ববাজারের মুল্যে- মুল্য নির্ধারন করে আদায়ের জন্য আন্তজাতিক শালিসি ব্যাবস্থাপনার আয়োজন করা বর্তমানে সময়ের দাবি।পাকিস্তানের প্রতি যতই অনুরাগ, আবেগ প্রদর্শন করা হোকনা কেন কখনই তাঁরা বাংলাদেশকে বন্ধু হিসেবে গ্রহন করে নিবেনা।জাতির জনকের নির্মম হত্যায় পাকিস্তানের সরাসরি হাত ছিল ইহা পরিষ্কারভাবে আন্তজাতিক মহলের বিবেচনায় রয়েছে।তাঁদেরও সম্যক উপলব্দি আছে।সুতারাং জাতির জনককে হত্যার পাপ তাদের সর্বসময়ে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে-ইচ্ছা থাকলেও ভাগ্য তাঁদের প্রলম্বিত করবেই।অযথা সময়ক্ষেপন না করে সকল সম্পর্ক চিন্ন করে অযাচিত ষড়যন্ত্রের চোবল থেকে আগামি প্রজম্মকে রক্ষা করার জন্য জাতির পিতার কন্যা বর্তমান বিশ্বের অন্যতম নেতা বাংলাদেশের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী দেশরত্ম শেখ হাসিনার নিকট আবেদন জানাচ্ছি। জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা

ছবি

দুই যুদ্ধপরাধির রায় কায্যকরে আমেরিকার সন্তোষ,তল্পিবাহক পাকিস্তানের ক্রন্দন। ============================ অস্থির আবহাওয়ায় সামন্য স্বস্তির বাতাবরনের দেখা মিলেছে বলা অত্যুক্তি হবেনা।বর্তমান বিশ্বের মোড়ল বলে খ্যাত আমেরীকার ভুমিকার উপর বিশ্বের বহুদেশের স্থিতিশীলতা-অস্থিরতা নির্ভর করে, কেউ স্বিকার করুক বা না করুক এটাই বাস্তবতা।বর্তমান সরকারের নীতি আদর্শ নিয়ে যুক্ত রাষ্ট্র আওয়ামী লীগ কাজ করছে, এবং ভাল ফলাফলও পাওয়া যাচ্ছে তা বুঝাই যাচ্ছে।বিচ্ছিন্নভাবে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক বিভিন্ন সংস্থা বা তাঁদের সিনেটের কতিপয় সদস্যের বিবৃতি পত্রিকান্তরে প্রকাশিত হওয়ার পর বাংলাদেশের জনগনের মধ্যে এবং সরকারে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল।প্রত্যেক রায়ের পর আন্তজাতিক কতিপয় সরকারি বেসরকারি সংস্থা ব্যাক্তি মহল তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে যাচ্ছিল,প্রতিবাদের ধরন এবং তীব্রতায় ইতিমধ্যে কিছুটা স্তিমিতভাব বা কমে এসেছে তা গত দুই একদিনের বিশ্বের নামকরা কিছু পত্রিকার উপর চোখ রাখলে স্পষ্ট অনুধাবন করা যায়। অবশ্য ইউরুপিয়ান ইউনিয়ন ছাড়া অন্য কোন দেশ সরকারি ভাবে প্রতিবাদ জানায়নি,একমাত্র পাকিস্তান ছাড়া।ইউরুপিয়ান ইউনিয়নের অন্তভূক্ত দেশগুলির মধ্যে অনেক আগেই মৃত্যুদন্ডাদেশ রহিত করে আইন পাশ করেছে।নীতিগত ভাবে তাঁরা মৃত্যুদন্ডের বিরুধিতা করতে পারে,তবে তাঁরা যুদ্ধপরাধির বিচারের বিপক্ষে নয়। বিভিন্ন পত্রিকায় গত কাল একটা ধারুন সুখবর বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে স্বস্থিরভাব দেখা দিয়েছে।বাংলাদেশের প্রায় পত্রিকায় খবরটি আজ ফলাও করে প্রকাশিত হয়েছে।খবরটি নিম্নরুপ-- যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলি আহসান মুহাম্মাদ মুজাহিদ ও বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সন্তুষ্ট বলে বলে জানিয়েছেন সেদেশের পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তা গিলবার্ট মর্টন।বুধবার ওয়াশিংটনে সাকা-মুজাহিদের ফাঁসির দন্ড কার্যকর সম্পর্কে স্টেট ডিপার্টমেন্ট এই কর্মকর্তা বলেন, যুদ্ধাপরাধও মানবতাবিরোধী ট্রাইব্যুনালের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান অত্যন্ত পরিস্কার। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের এই বিচার কার্যক্রমকে সমর্থন করে। বাংলাদেশে আইনের শাষন প্রতিষ্ঠা হোক সমাজে ন্যায়, বিচার প্রতিষ্ঠা হোক এটা যুক্তরাষ্ট্র চায়। আইন এবং আদালতের রায়ের মাধ্যমে অপরাধীদের সাজা হয়েছে এতে যুক্তরাষ্ট্র সন্তুষ্ট।তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদ নিরসনে রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং দেশীয় ও বহুজাতিক সন্ত্রাসী দলগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সরকারের কঠিন অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ সন্ত্রাসের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠতে পারেনি। বাংলাদেশে বড় কোনো সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেনি। সরকারের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টার কারণে বহুজাতিক সন্ত্রাসী দলগুলো বাংলাদেশের সীমানা ব্যবহার করে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাতে পারেনি। বর্তমান সরকার ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে জানিয়ে তিনি বলেন, আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশ সরাসরি সংশ্লিষ্ট না হয়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বিভিন্ন সময়ে আইএসএর অনুসারীদের গ্রেপ্তার করেছে। জামাআতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি),হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশ (হুজিবি) এবং আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) মতো সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের অনেক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে সরকারের আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো। বর্তমান সরকার যুদ্ধাপরাধের বিচার ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। এ মুহূর্তে ধর্মীয় উগ্রবাদ, যুদ্ধাপরাধী ও স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালাচ্ছে সরকার। উল্লেখযোগ্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বর্তমান সরকার বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাত্রার গুণগত মানোন্নয়নে বদ্ধপরিকর।গিলবার্ট মর্টন যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার হিসাবে উল্লেখ করে বলেন, সন্ত্রাস মুক্ত জঙ্গীবাদ মুক্ত একটি বাংলাদেশ গড়ে উঠুক যুক্তরাষ্ট্র তা চায়। কোন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রমকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে না। বর্তমান সরকারের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশে একটি শান্তিপূর্ণ স্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে। এই পরিবেশ ব্যাহত হয় এমন কোন কাজ যুক্তরাষ্ট্র সরকার সমর্থন করবেনা। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বাংলাদেশ একটি মধ্যবিত্ত আয়ের দেশে পরিনত হচ্ছে এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকার উৎফুল্ল এবং আনন্দিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব পরিবর্তনের জন্য সে দেশে অবস্থারত বাংলাদেশিরা গুরুত্বপুর্ন অবদান রাখছেন এটা পরিস্কার বুঝা যায়।বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ মার্কিন সরকারের বিভিন্নপয্যায়ে ঘনিষ্ট যোগাযোগ রেখে চলেছেন।আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকেও তদ্রুপ সফরের ব্যাবস্থা করা গেলে ষড়যন্ত্রের জালে ছিদ্র হত এটা বলার অপেক্ষা রাখে না।বিরুধিদল যদি লক্ষ লখ ডলার খরছ করে লবিষ্ট ফার্ম নিয়োগ করতে পারে সরকার কেন পক্ষে তাঁর নীতি কৌশল তুলে ধরার জন্য লবিষ্ট নিয়োগ করছেনা তাও বোধগম্য নয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিএনপির নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড নিয়ে পাকিস্তান সরকার এবং সেই দেশের গণমাধ্যম ও একাধিক রাজনৈতিক দল যে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে, তাতে এটা মনে হওয়া স্বাভাবিক যে বাংলাদেশ নয়, পাকিস্তান রাষ্ট্রটির প্রতিই তাঁদের অধিক আনুগত্য ছিল। আর সেটি লুকোছাপা না করে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে জিহাদি মনোভাব দেখিয়েছে, তা কূটনৈতিক শিষ্টাচারের পরিপন্থী। প্রথমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী নিসার আলী জানান, বাংলাদেশে দুই যুদ্ধাপরাধীর বিচারে তিনি দারুণভাবে মর্মাহত ও উদ্বিগ্ন। নিসার আলী ১৯৭৪ সালের চুক্তির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে যা বলেছেন, তার অর্থ হলো সে সময় পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীদের মাফ করে দিয়ে এখন বিচার করছ কেন? এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রও একই কথার প্রতিধ্বনি তুলে দুই দেশের সম্প্রীতি ও বন্ধুত্বের স্বার্থে এ ব্যাপারে আর অগ্রসর না হওয়ার আহ্বান জানালেন। নিজের কথায়ই পাকিস্তান ধরা খেয়েছে। ১৯৭৪ সালের ত্রিদেশীয় চুক্তিতে বাংলাদেশ ও ভারত যৌথ বাহিনীর কাছে আটক ১৯৫ জন পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তার অপরাধ প্রমাণিত হওয়া সত্ত্বেও বিচার না করে মাফ করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তাই, পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করতে চাই, পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী যাঁদের মাফ করে দিতে এবং ভুলে যেতে বলেছিলেন, সেই তালিকায় কি সম্প্রতি দণ্ড পাওয়া দুই যুদ্ধাপরাধীর নাম ছিল? তাঁরা কি পাকিস্তানের নাগরিক? আসলে পাকিস্তানের এই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার পেছনে যে বিষয়টি কাজ করেছে, তা হলো একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিষয়টি সামনে এলে পাকিস্তানের কৃতকর্ম মানুষের চোখের সামনে ভেসে ওঠে। কিন্তু পাকিস্তানের শাসক ও রাজনীতিকেরা সেটি হতে দিতে চান না। এর মাধ্যমে পাকিস্তানের বর্তমান প্রজন্মের রাজনীতিকেরা একাত্তরের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত না থেকেও নিজেদের মানসিকভাবে যুক্ত করেছেন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ এত দিন একাত্তরের ঘটনাবলির জন্য তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ পিপিপি ও তার নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টোর ওপর দায় চাপালেও এখন মনে হচ্ছে, তিনিও সেই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি। যুদ্ধ অপরাধীর বিচার কতটুকু যুক্তিপূর্ন হচ্ছে তা পাকিস্তানের জামায়াতে ইসলামীর বর্তমান ভুমিকা থেকে স্পষ্ট অনুধাবন করা যায়।এর পরেও যদি আমাদের তথাকথিত টকশোবাজদের জ্ঞান ফিরে না আসে তবে বলতেই হয়,বিদেশিদের বীর্যের ক্রিয়া অবশ্যম্ভাবি তাঁদের দেহে এখনো প্রবাহমান। "বাংলাদেশের দুই যুদ্ধাপরাধীর বিচারের ব্যাপারে ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জামায়াতের নেতা সিরাজুল হক। রোববার বান্নুতে আয়োজিত এক জনসভায় তিনি বলেছেন, ‘মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই নেতার একমাত্র অপরাধ ছিল, তাঁরা এই দেশ ও এর আদর্শ ও সেনাবাহিনীকে ভালোবাসতেন। বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকার একের পর এক পাকিস্তানপন্থী লোকদের নির্মূল করছে এবং জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষস্থানীয় নেতাদের ফাঁসিতে ঝোলাচ্ছে। কিন্তু ইসলামাবাদের শাসকেরা নিশ্চুপ রয়েছেন।’" জামায়াতের এই নেতা পাশাপাশি নওয়াজ শরিফকে উদার নীতি ত্যাগ করতে বলেছেন। অন্যথায় বাংলাদেশ বা ভারতে চলে যেতে বলেছেন। পাকিস্তানে প্রতিদিনই সন্ত্রাসী ঘটনায় বহু মানুষ মারা যাচ্ছে, তার প্রতিবাদে পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামি কালো দিবস পালন না করলেও বাংলাদেশের দুই নেতার বিচারের প্রতিবাদে কালো দিবস পালন করেছে। কম যায়নি ইমরান খানের তেহরিক-ই-ইনসাফও। দলটি পাঞ্জাব প্রাদেশিক পরিষদে এ দুজনের ফাঁসির বিরুদ্ধে প্রস্তাব এনেছে।খুব কম শুক্রবার যায় যেদিন কোননা কোন মসজিদে বোমাহামলায় মানুষের জীবনহানি হচ্ছেনা।সেই বিষয়টি নিয়ে একদিনের জন্য ও জামায়াতে ইসলাম পাকিস্তান প্রতিবাদ করেছে তেমনটি পত্রিকার পাতায় পাওয়া যায়না।বাংলাদেশের সর্বচ্ছ আদালতের রায়ের প্রতি প্রতিবাদ জানিয়ে জামায়াত বা সরকার পাকিস্তান দেশ হিসেবে পশ্চাদপদ,জাতি হিসেবে অসভ্যের নিদর্শনই রেখেছেন বলে আমি মনে করি। পাকিস্তানের প্রগতিশিল লেখক সাংবাদিক,সাহিত্যিক এবং জনগন বেশীরভাগ বিচারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন আগে থেকে। সংগঠিত শক্তি বা দলীয় ব্যানার নেই বিধায় সরকারের উচ্চপয্যায়ে প্রভাব বিস্তার করা হয়তোবা সম্ভব হচ্ছেনা।পাকিস্তানের ক্ষমতারবলয়ে এবং ক্ষমতার বাহিরে প্রতিক্রিশীলদের প্রভাব প্রতিপত্তি দেশটির স্বাধীনতার উষালগ্ন থেকেই পরিলক্ষিত হয়।প্রগতিশীল অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিকাশ ১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই শক্তিসঞ্চয় করে সাধারনের মাঝে প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি।নামে বেনামে সেনা শাষনে অভ্যস্ত জাতির মানষিকতা এর চেয়ে ভাল হবেই বা কি করে।প্রগতিশীল চিন্তাধারার লেখক সাহিত্যিক যে একেবারেই কম জম্মেছে তাও কিন্তু নয়।সাহষ করে তাঁরা স্বৈরশাষনের যাতাকলে পিষ্ট হয়েও তাঁদের লেখনি থামিয়ে দেননি। যুগের পর যুগ তাঁরা চেষ্টা করে যাচ্ছেন, লড়াই করে যাচ্ছেন প্রতিক্রিয়ায় আবদ্ধ রাষ্ট্র ও সরকারের নীতি এ আদর্শের বিরুদ্ধে।তেমনি সাম্প্রতিক বাংলাদেশের মানবতা বিরুধি অপরাধের বিচারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া সরকার রাজনৈতিক দল, জামায়াতের বিরুদ্ধে শক্ত এবং তীব্র প্রতিবাদের পত্রিকায় প্রকাশিত উদাহরন নিম্নে তুলে ধরছি। " পাকিস্তান সরকার ‘ভারসাম্যহীনভাবে অতি আবেগ’ দেখিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির মানবাধিকারকর্মী আসমা জাহাঙ্গীর। তিনি অভিযোগ করেন, সামরিক আদালতে ও সৌদি আরবে পক্ষপাতদুষ্ট বিচারের মাধ্যমে পাকিস্তানের নাগরিকদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলেও সে ব্যাপারে সরকার নীরব থাকে। তাদের এমন প্রতিক্রিয়া এই বার্তা দেয় যে দেশের মানুষের চেয়ে বাংলাদেশের বিরোধী দলের নেতাদের প্রতি পাকিস্তান সরকারের অধিক ভালোবাসা ও আবেগ রয়েছে। পাকিস্তানের এই মানবাধিকারকর্মী আরও বলেন, যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে পাকিস্তানে ও সৌদি আরবে যেসব পাকিস্তানি নাগরিককে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হচ্ছে, তাঁদের প্রতি আগে সরকারকে আবেগ দেখাতে হবে। সরকারের এমন আবেগ একটি ব্যাপার নিশ্চিত করেছে যে ওই দুজন (সাকা ও মুজাহিদ) রাজনৈতিক এজেন্ট ছিলেন এবং পাকিস্তানের জন্য কাজ করতেন। ওই দুজন বাংলাদেশি কি পাকিস্তানে বসবাসকারী নাগরিকদের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ? যদি উত্তর হ্যাঁ হয়, তাহলে কেন এবং কিসের জন্য—সরকারের এটাও পরিষ্কার করা উচিত।" সভ্য দুনিয়ায় যেখানে মানবতা বিরুধী শাস্তি মৃত্যু দন্ডের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে উঠছে ঠিক তখন পাকিস্তানিরা স্থগিত থাকা মৃত্যুদন্ডাদেশের উপর থেকে নিষেদাজ্ঞা প্রত্যাহার করে আইনটি আবার পুরোদমে বিচারিক ব্যাবস্থায় চালু করেছে। "গত বছর ডিসেম্বরে পাকিস্তানে মৃত্যুদণ্ডের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর গত ১১ মাসে ২৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে, যা বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম।"মাত্র দেড় দুই বছরের মধ্যে মৃত্যুদন্ড কায্যকারিতার দিক থেকে অন্যতম দেশ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।বাংলাদেশের অবস্থান এখনও তুলনামুলকভাবে তলানীতে অবস্থান। তাঁরপরও পাকিস্তানের মত বর্বর দেশ বাংলাদেশের মানবতা বিরুধিদের মৃত্যুদন্ড নিয়ে কথা বলতে সামান্যতম দ্বিধাম্বিত নয়। পাকিস্তানের এই অকূটনৈতিক আচরণ ও যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। গত সোমবার পাকিস্তানকে দেওয়া প্রতিবাদে বলা হয়: মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার দায়ে দণ্ডিত দুজনের ফাঁসি নিয়ে ইসলামাবাদের প্রতিক্রিয়া একটি সার্বভৌম দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সরাসরি হস্তক্ষেপ। বাংলাদেশ এটাও আশা করে যে পাকিস্তান দায়িত্বশীল আচরণ করবে এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকবে। এতে আরও বলা হয়: ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সই হওয়া চুক্তি নিয়ে খণ্ডিত ব্যাখ্যা মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ অঞ্চলের দীর্ঘস্থায়ী স্থিতি ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিবেশী ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান হচ্ছে চুক্তির মূলনীতি। ওই চুক্তিতে কখনোই মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যায় জড়িত এবং এর পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দায়মুক্তি কিংবা বিচার থেকে রেহাই দেওয়ার কথা বলা হয়নি। বাংলাদেশ সরকার চুক্তি মোতাবেক ১৯৫ জন যুদ্ধ অপরাধিকে ফেরৎ দেয়া এবং তাঁদের বিচারের অঙ্গিকারের রাষ্ট্রীয় চুক্তির কথাও স্মরন করিয়ে ভবিষ্যতে এমন আচরনে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি হওয়ার কথা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের জৈষ্ট কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনার অন্যতম নির্বাচনী অঙ্গিকার ছিল, সকল হত্যাকান্ডের বিচার অনুষ্ঠান করে দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আইনের শাষন প্রতিষ্ঠা করার।সে লক্ষ নিয়ে '৯৬ইং সালে ২১ বছর পর খমতায় এসে জাতির জনকের হত্যার বিচার প্রক্রিয়া স্বল্প পরিসরে হলেও শুরু করেছিলেন।বিচার যথারীতি অনুষ্ঠিত হয়েছে,জড়িত কিছু লোকের শাস্তিও কায্যকর করা হয়েছে,বাকি সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা তাঁদের কৃতকর্মের বেনিফেসিয়ারিদের থেকে সুবিধা নিয়ে বিদেশে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।জেলে জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচারের রায় ও আগামি কয়েক সপ্তাহের মধ্যে প্রকাশিত হবে আশা করা যায়।সবচেয়ে দুর্ভেদ্ধ কঠিন জাতীয় ও আন্তজাতিক প্রভুবেষ্টিত, ২১ বছর স্বৈরাচারের লালনে শক্তি সামর্থ,অর্থ অস্ত্রে বলিয়ান যুদ্ধপরাধীদের বিচার করার অঙ্গিকার নিয়ে ২০০৮ ইং সালে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করে।সরকার গঠননের পরেই জনগনের নিকট দেয়া অঙ্গিকার পুরনের লক্ষে সংসদে মানবতা বিরুধি অপরাধের বিচারের জন্য আন্তজাতিক ট্রাইবুনাল গঠনে আইন পাশ করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করে।দীর্ঘ তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ করে বিচারের প্রাথমিক পয্যায় থেকে দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্রকারিদের টনক নড়ে উঠে।তাঁরা নাশকতা,বোমাবাজি,হত্যা,লুন্ঠন,আগুন সন্ত্রাস,ধর্মীয় গোষ্ঠিকে ইন্দন দিয়ে রাজপথে নামিয়ে সরকারকে নাস্তিকের তিলক পরানোর অপচেষ্টা,জঙ্গী উত্থানে ইন্দন,সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে সরকার উৎখাত, নাস্তিকতার ষড়যন্ত্রে সৃজনশীল লেখক প্রকাশক হত্যা ইত্যাদি আইনশৃংখলা অবনতির নানাহ অপচেষ্টা অব্যাহত রাখে। যুদ্ধ অপরাধের বিচার বা ৭১ এর মানবতা বিরুধিদের বিচার কায্যক্রম বন্ধে এমন কোন অপচেষ্টা নেই যা তাঁরা এবং তাঁদের দোষরদের দ্বারা সংগঠিত হয়নি। শেষ পয্যন্ত কোটি কোটি ডলার খরছ করে বিদেশে লবিষ্ট ফার্ম নিয়োগ দিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্টে চক্রান্ত অব্যাহত রাখে। এতকিছুর পরও জাতির জনকের কন্যার মনোবল,দেশ এবং জাতির উন্নয়ন অগ্রগতি,আইনের শাষন কায়েমে মানবতা বিরুধিদের বিচার প্রক্রিয়ায় সামান্যতম চিড় ধরাতে পারেনি জাতীয় ও আন্তজাতিক ষড়যন্ত্রের ধারক ও বাহকেরা।বরঞ্চ দেশ ও জাতির সংকল্প দৃড থেকে দৃডতর হয়েছে।জাতি ধীরে ধীরে বিচারের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।সেই ঐক্যই আজ চারদিকে আওয়াজ উঠেছে মানবতা বিরুধী অপরাধে শাস্তি পাওয়া প্রত্যেকের সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকুলে বাজেয়াপ্ত পুর্বক তাঁদের নাগরিক অধিকার বঞ্চিত করার জন্য।

ছবি

আইএস আই নয়,আমার প্রতিবেশি একসময়ের সহজ সরল মেধাবী ছেলেটি--। ================================= আপনার আমার খুবই পরিচিত পাড়ার সভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের একটা ছেলে হঠাৎ কেন জানি বদলে যেতে থাকে।কারো সাথে কথা বলা তেমন প্রয়োজন মনে করেনা,সামাজিকতার প্রয়োজন আছে বলে মনে করে করেনা।মা, বাবা কারো জিজ্ঞাসার জবাব দেয়ার প্রয়োজন মনে করে না।সে আছে তার মত করে।সারা দিন ডুবে আছে চিন্তার রাজ্যে,কি চিন্তা করে, ভাবনা গুলো কি কোন সহপাটি বন্ধু বা আত্মীয় এর সাথে শেয়ার করার প্রয়োজন আছে তাও মনে করেনা। এমনিতর পরিস্থিতিতে বালকটির যে মগজ ধোলাইয়ের কাজ চলছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।গুনি -গুনি চেনেন, স্বর্ন চেনে বনিক্য।তদ্রুপ সেই ছেলেটিকেও চিনে নিতে তাঁদের কষ্ট হয়নি।এরা সাধারনত:সহজ সরল,আত্মকেন্দ্রিক, সমাজ বিচ্ছিন্ন,একাকি থাকা পছন্দ করেন।ঠিক সে মোতাবেক তাঁদের চিহ্নিত করে আয়ত্তে নেয়া তাদের জন্য তেমন কঠিন কাজ নয়।তাঁদেরকে নিয়ন্ত্রন করে প্রাথমিক পাঠদানের পর কতটুকু কাজ হবে বা ছেলেটির দ্বারা কি করা সম্ভব তাঁর গবেষনা চলে।গবেষনার ফলাফল নির্নয় করে প্রাথমিক প্রস্তুতি সম্পন্নের পর কেবল মাত্র উচ্চতর প্রশিক্ষনের জন্য নির্বাচিত করা হয়।এরা আমার আপনার অত্যান্ত কাছের প্রতিবেশি।হঠাৎ দেখা যায় ঐ ছেলেটির আর কোন খোঁজ নেই,চিহ্নিত জীবন যাপনে অভ্যস্থ ছিলনা বলে পাড়ার কেউ তেমন নজর ও হয়তো রাখেনি।সে ছেলেটির মগজ ধোলাই করে এমন অস্বাভাবিক করে দেয়া হল স্বল্প সময়ের মধ্যে, মানুষ হত্যা তাঁর হাতের মোড়াই শুধু নয়, প্রয়োজনে নীজের জীবন উৎসর্গ করে দেয়ার মত মানষিকতা তাঁর মধ্যে সৃষ্টি হয়ে যায়। কেন এমনতর হয় তাও কি কেউ চিন্তা করে দেখেছিল কোন দিন--? এদের পেছনে আছে অর্থ, মোহ, পরকাল, ধর্মের উন্মাদনা ও অস্ত্রের জোগান,সদা প্রস্তুত বেহেস্তের টিকেট।শুধু ইসলাম ধর্মেই যে তা নয় প্রত্যেক ধর্মেই বহু আলাদা আলাদা মতবাদে বিস্বাসি প্রত্যেক গোত্রের মধ্যেই এই সর্বনাশা আছর ভর করেছে। বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিও অনেক যুবক-যুবতির মাথা ঘুরিয়ে দিতে সাহায্য করছে। চতুর শ্বেতাঙ্গ ক্রিষ্টান,ইহুদিও পশ্চিমাদের ধর্মীয় ক্রুসেডের দায়িত্ব নিয়েছে সংগঠিত, সুসজ্জিত জঙ্গী বাহিনী,মুলত:তাঁদেরই সৃষ্ট এই দানব। চাপাতি, তলোয়ার, আত্মঘাতী বোমায় উড়ে যাচ্ছে জেহাদের নামে উদম্য মাতাল বিভ্রান্ত যুবক যুবতি। ঐ যুবকটির হঠাৎ পরিবর্তনে তার বিশ্বাস বা ভক্তি যতটা না কাজ করেছে, তারচেয়ে অধিক কাজ করেছে সর্বক্ষন পিছনে লেগে থেকে প্ররোচিত করার কারন। এদের প্ররোচিত করার স্থান দেশের চাইতে বিদেশেই তুলনামূলক বেশি। সংবাদপত্র, টিভি বা যে কোনো মিডিয়ায় অত্যাদিক প্রচারনাও কম ক্ষতিকারক মনে হচ্ছেনা।তরুনদের ধর্মইতো নতুন একটা কিছু করার প্রতি অদম্য আগ্রহ বিদ্যমান থাকা।যতটানা ঘটনা তাঁর অধিক প্রচার পাওয়ার জন্য ও তাঁরা কিছু কিছু ঘটনা করে থাকে।ঘটনার ধরন পয্যালোচনা করলেই বোঝা যাবে, কতটা আগ্রাসী আর কতটা প্রচারসর্বস্ব। মাথা চিবিয়ে খেয়ে, মগজে উগ্রতার ঘন্টা জুড়ে দিয়ে ধর্ম কায়েম হয় না,কোন ধর্মই তা চায় না। ধর্মের অপব্যাখ্য করে তার কুপ্রভাব গুলি মগজে ডুকিয়ে দিয়ে বিশ্বব্যাপি ত্রাসের আতংক সৃষ্টি করে রেখেছে,একশ্রেনীর স্বার্থান্বেষি মহল।পৃথিবীর বড় বড় শহরগুলো এখন আতঙ্কে, ভয়ে জড়সড়,কোন দেশ, কোন জাত কোন গোত্র শান্তিতে নেই। তবে এটুকু নি:সন্দেহে বলা যায়, এই সমস্ত সহজ সরল তরুন তরুনিদের ভুল পথ থেকে সরিয়ে আনার কোন সরকারি বেসরকারি,এনজিও বা সামাজিক প্রতিষ্ঠান কারো উদ্যোগ নেই। আমাদের বিচক্ষন বুদ্ধিজীবীরা বলতেই আছেন জঙ্গির ভয়ে আছি,কখন প্রান পাখি উড়ে যায় বলা যায়না,পুলিশি প্রহরার জন্য সরকারের নিকট ঘন ঘন দাবি উত্থাপন করে যাচ্ছেন। তাঁরা কি আদৌ জানতেন না বাংলা ভাইদের যখন উত্থান হল তখন অনেকেইতো বলতে শুনেছি এটা স্রেফ মিডিয়ার সৃষ্টি।তাঁরা কি জানতেননা আজকে যে শিশুটি জম্ম নিল সেই একদিন যুবক হবে,বিয়ে করবে, তাঁর সংসারে বাচ্ছা হবে? অনেকে এখন বলেন, তাঁরা ভাবতে পারেননি মৌলবাদ এভাবে বড় হয়ে উঠবে, এতেই তো বোঝা যায় বুদ্ধিবৃত্তির মেধায় কতবড় তালা, চোখে কাল চশমার আবরনে ঠুলি লাগানো। এখন থেকে বিশ বছর আগে তারা সামনে স্পষ্ট দেখতে পেয়েছিলেন ওরা জঙ্গী নয়, এখন শত শত কিলোমিটার দূরেও দেখতে পান আইএসের জঙ্গি খলিফার দিকবিদিক বোমা হামলা,জামায়াত শিবিরের" মানুষ কতলকে"ও ওনাদের মনে হচ্ছে আই এস আইএর কর্মকান্ড। এখন সময় এসে গেছে, কোন বিতর্কে না জড়িয়ে আমাদের তরুন প্রজর্ম্মকে রক্ষা করার কৌশল নির্ণয় করার।তাঁদের মা বাবা অনেক আশা ভারসা করে তাঁদের স্কুল কলেজে পাঠিয়েছে,ছেলে লেখা পড়া শেষ করে পরিবারের হাল ধরবে।পথিমধ্যে ছেলের মগজ ধোলাই করে বিপথে নিয়ে যাবে সংঘবদ্ধ চক্র তা কোন মা বাবা চিন্তা করেনি। ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়া" সামাজিক ক্যান্সার প্ররোচনা ও ষড়যন্ত্র "বন্ধ না হলে তরুন সমাজের এক অংশ যে বিপথে যাবে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। শুশিল সমাজের বৃহদাংশের রাতের ঘুম হারাম হয়ে যাবে তাও একান্ত হলফ করে বলা যায়।কে কখন কোথায় কার দ্বারা উড়ে যাবে কেউ জানে না। নষ্ট মগজ, বিকল চিন্তা আর বদলে যাওয়া যুবকের চেহারা গুলি আমাদের আশেপাশের।এখন বুদ্ধিভিত্তিক সমাজকে নির্ঘুম রাখছে, অতঃপর দেশের আপামর জনগনকে নির্ঘুম রাখবে। যখনি ধর্মাগ্ধ গোষ্টিটির সাথে যোগাযোগের ঠিকানা পাবে তখন সারা বিশ্বকে নির্ঘুম রাখবে। বিজ্ঞানের চরম শিখরে দাঁড়িয়ে সভ্যতা কি আত্মসমর্পন করবে ধর্মাগ্ধ গুটিকতক উম্মাদের নিকট। দুনিয়াতে যাহা কিছু উত্তম তাঁর পাশেই অবস্থান অধমের।তবে কি ধরে নেয়া যায় বর্তমানের অস্থিরতা সভ্যতারই কাল দিক? জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা

ছবি

্তিক ইসলামপন্থী জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট বা আইএস। প্রায় প্রতিদিনই নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড আর ভয়াবহ হামলার কারণে বিশ্ব মিডিয়ায় আলোচনার শীর্ষে থাকে এই সংগঠন। এদের সম্পর্কে নানা জানা-অজানা তথ্য নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়পত্রিকার পাতায়। আইএসের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত অতিকথন কোনগুলো তা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দ্য ইনডিপেনডেন্ট। আসল সত্যটা কী সেটাও সেখানে জ

ছবি

জাতীয় ও আন্তজাতিক ষড়যন্ত্র ব্যর্থ;যথারীতি দুই মানবতা বিরুধি অপরাধির দন্ড কায্যকর-- ================================== যুদ্ধাপরাধের বিচার ঠেকাতে বিএনপি ও জামায়াত বহু মূখি চেষ্টা অব্যাহত রেখেছিল। দেশে ও বিদেশে এসব ষড়যন্ত্রের নীলনকশা বাস্তবায়নে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছে দল দুটি। এসবের সঙ্গে দলের পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডিত ২১শে আগষ্ট,জেল হত্যায় জড়িত বিদেশে পালিয়ে বেড়ানো আসামী এবং তাদের পরিবারের সদস্যরাও জড়িত ছিল বলে দেশি বিদেশী গনমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হচ্ছে। মানবতা বিরুধি বিচার ঠেকাতে বিএনপি -জামায়াত সাকা-সাঈদীকেই প্রধান অস্ত্র হিসেবে ব্যাবহার করার কৌশল অবলম্বন করেছিল বলে প্রকাশিত সংবাদ পয্যালোচনা করে দেখা যায়।দুই জনকে মূর্খ হিসেবে সামনে নিয়ে এসে ষড়যন্ত্র করার বহুবিদ কারন আছে। কারন সমুহ পয্যালোচনা করলে দেখা যায় উহার যথার্থতা, যথেষ্ট যুক্তি,সংগত আইনি ভীত্তি, বহুবিদ সহায়ক উপকরন বিদ্যমান রয়েছে,আমি মনে করি। তবে বিষয়গুলি পয্যালোচনা করে দেখা যেতে পারে গনমানুষের মনে শেষ পয্যায় সংশয় সৃষ্টি হওয়ার পিছনে কোন ব্যাপার গুলি সংগত ভাবে কাজ করেছে? তাঁদের ধারনা ছিল সাকা পরিবার পাকিস্থানিদের সাথে বিশেষ সম্পর্ক এবং ফকা চৌধুরীর পাকিস্তান আমলের অর্জিত ইমেজ কে কাজে লাগিয়ে মানবতা বিরুধি অপরাধের বিচার প্রক্রিয়াই বাঞ্চাল করে দিতে পারবে।সে লক্ষ নিয়ে বিদেশে লবিষ্ট নিয়োগ থেকে আরাম্ভ করে বিশ্বের ক্ষমতাধর ব্যাক্তি বিশেষকেও কাজে লাগানো হয়েছিল। দেশ বিদেশের পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত জামায়াত--বিএনপির বহুবিদ ষড়যন্ত্রের মধ্যে নিম্নের বিষয়গুলি অধিকতর গুরুত্ব বহন করে বলে আমি মনে করি। ""প্রথম বিচার কায্য আরাম্ভ হলে ট্রাইবুনালকে বিতর্কিত করার জন্য বিচারপতির স্কাইপি কেলেংকারি, একদিন আগেই সাকার রায়ের কপি ফাঁস, বিদেশে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ, বিভিন্ন রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির ফোন, চিঠি, বিচার নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার বিবৃতি, আন্তর্জাতিক প্রোপাগান্ডা, সামাজিক মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার, বিচারপতি এবং সংশ্লিষ্টদের হুমকি দেশের অভ্যন্তরে নানাভাবে অস্থিরতা সৃষ্টি করার জন্য খুন ও গুপ্ত হামলা, আমেরিকার সিনেট সদস্যদের জাল সই সম্বলিত বিবৃতি,মক্কা মদিনা শরিফের ইমামের নামে মিথ্যা বিবৃতিদানের কাহিনী প্রচার,সর্বচ্চো বিচারালয়ে জাল সার্টিফিকেট সরবরাহ,প্রেসিডেন্ট ওবামা কতৃক বাংলাদেশের সরকার প্রধান বরাবর টেলিফোন করে মৃত্যুদন্ড মওকুফ করে যাবজ্জীবন সাজার সুপারিশ, মানবাধিকারের প্রশ্ন উত্থাপন করে সভ্য দুনিয়ার নেতৃত্বদানকারি ইউরুপীয় ইউনিয়নের দুতাবাস সমুহকে মৃত্যুদন্ডের বিপক্ষে বিবৃতি দানে বাধ্য করা পয্যন্ত তাঁরা সক্ষম হয়।"" এক্ষেত্রে সাকার পরিবারের ইমেজ এর পাশাপাশি দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর ওয়াজীন হিসেবে আন্তজাতিক খ্যাতি,মোজাহিদের দলের শীর্ষ নেতার অবস্থানকে মুল পুঁজি হিসেবে ব্যাবহার করা হয়। যুদ্ধাপরাধের বিচার বানচাল এবং কারাবন্দি নেতাদের মুক্ত করতে জাতীয় ও আন্তজাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই গত ৪/৫ বছরের রাজনীতি, সন্ত্রাস, আগুন সন্ত্রাস,ধর্মীয় মৌলবাদিদের লোভলালসার মাধ্যমে ধর্মীয় উম্মাদনা সৃষ্টি করে সাধারন মানুষের ধর্ম বিশ্বাসকে বিভ্রান্ত করা সহ চতূর্মুখী কর্মকান্ড পরিচালিত হয়েছে। এছাড়া পথে ঘাটে নাশকতা সৃষ্টি করে জঙ্গীদের নামে স্বীকারোক্তি,বাহিরে দলীয় বুদ্ধিজীবিদের বেসরকারি টিভি চ্যানেলে টাকার বিনিময়ে টকশোতে দাওয়াত গ্রহন পুর্বক গভীর রাত পয্যন্ত ইনিয়ে বিনিয়ে বিচারের বিরুদ্ধে জনমত সংগ্রহের চেষ্টা, ব্লগার,প্রকাশক হত্যা করে আন্তজাতিক জঙ্গী সংগঠনের উপস্থিতির প্রমানে প্রানান্তকর চেষ্টা সহ নানা ধরনের অপরাধ এবং ষড়যন্ত্র করে চলেছে দল দুটির বাছাই করা নেতাকর্মি ও সুশিল সমাজ।এই সমস্ত অপকর্মে জড়িত নেতাকর্মি ও সুশিলদের মোটা অংকের টাকা এবং ভবিষ্যতের নিশ্চিত জীবন জীবিকার গ্যারান্টিও দেয়া হয়েছে,তাঁদের দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নকারি নির্দিষ্ট কমিটির পক্ষ থেকে। যুদ্ধাপরাধের বিচার নস্যাতে সব ধরনের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে সরকার দৃডতার সংজ্ঞে অগ্রসর হয়েছেন এবং হচ্ছেন। বিচারে প্রভাব ফেলতে দেশে নাশকতার পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধের বিচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিচারপতি, প্রসিকিউটরসহ সরকার পক্ষের লোকজনের অনেকের তালিকা করে হত্যার হুমকি দিয়ে মানষিকভাবে দুর্বল করে দেয়ার কৌশল অবলম্বন করে।এতে উল্লেখিত ব্যাক্তিবর্গ তাঁদের পরিবার ভয়ে অনেকে নিরাপত্তা ঝুঁকির বিবেচনায় সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করে।সরকারের কর্মকর্তা,আইন প্রয়োগকারি সংস্থাকে ভীতির মধ্যে রেখে সরকারকে বিভ্রান্ত করার কৌশল অবলম্বন করে। সরকারের মধ্যে থাকা তাঁদের লোকেরা অগ্রবর্তি হয়ে হাউকাউ শুরু করে নিরাপত্তায় পুলিশি ব্যাবস্থার দাবি উত্থাপনও করে।এই বিভ্রান্তি প্রচেষ্টায় তাঁরা আংশিক সফল হয়েছে বলে আমি মনে করি।মুলত;সমগ্র প্রশাসন ব্যাবস্থায় বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টার অংশ পুলিশ হত্যা। কেউ কেউ ঘর থেকে পরিবার নিয়ে বের হতে পারছেন না বলেও প্রচার করতে দেখা গেছে। মুলত:মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সাহিত্যিক,সাংবাদিক,লেখক,প্রকাশক,বুদ্ধিজীবিদের টার্গেট করেছে জামায়াত-শিবিরের দুর্বৃত্তরা--,সরকারি কর্মকর্তাদের নয়। দালাল কর্মকর্তাদের জন্য উপযুক্ত পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়ার পরও তাদের ভীতি কাটছে না বলে প্রচার প্রপাগান্ড অব্যাহত রাখে। তাঁদের কর্মকর্তাদের পাতানো ফাঁদে পড়ে বিচারের পক্ষের সরকারি কর্মকর্তারাও কেউ কেউ হাউকাউ করে পানি বেশি গোলা করে ফেলেছেন বলে আমি মনে করি। লক্ষ করলে দেখা যায়,প্রত্যেকটি ষড়যন্ত্রের মুলে সাকা,সাঈদী কে তাঁরা সামনে রাখার চেষ্টা করেছে।জাতীয় ও আন্তজাতিক পরিচিতি কাজে লাগিয়ে স্বার্থ উদ্ধার করাই তাঁদের উদ্দেশ্য,এখানেও প্রতারনার বহুবিদ কর্মে দল দু'টি নির্লজ্জভাবে জড়িত হয়েছেন। আন্তজাতিক পয্যায় ট্রাইবুনালকে বিতর্কিত করার চেষ্টায় অগ্রিম সালা উদ্দিনের রায় ফাঁস করার প্রচার চালায়।এই প্রচারনার জন্যেও তাঁদের প্রচুর টাকা খরছ করে ট্রাইবুনালের কর্মচারিদের বসে আনতে হয়েছিল। সরকার ষড়যন্ত্র ফাঁস হওয়ার সাথে সাথে তড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহন করে প্রথমেই মুদ্রাক্ষরিক ফারুক হোসনকে গ্রেফতার করে।নয়ন আলী নামে একজনের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির সুত্রধরে সম্পুর্ন গঠনা উৎঘাটন করতে সক্ষম হয়। এতে রায় ফাঁসের সঙ্গে সাকার আইনজীবীর সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেন অভিযুক্ত এবং গ্রেফতার হওয়া ব্যাক্তিরামোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে রায় ঘোষণার আগেই রায়ের কপি ফাঁস করে সালাউদ্দিনের আইজীবির হাতে তুলে দেয় তাঁরা।সরকারের বিভিন্ন সংস্থার তদন্তে মুল ঘটনার পরিকল্পনাকারি সহ উদ্দেশ্য বের হয়ে আসে। বিচারকে জাতীয় ও আন্তজাতিক ভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই কোটি কোটি টাকা শুধু এখাতেই ব্যয় করেছে দল দু'টি।অভিযুক্ত আইনজীবি বিদেশ সফরে গিয়ে আদ্যাবদি দেশে আসেননি। বর্তমান বিশ্বমোড়ল যুক্তরাষ্ট্রকে পক্ষে রাখার জন্য তাঁরা প্রথম থেকেই চেষ্টা অব্যাহত রাখে। এই জন্য কূটনৈতিক ভাবে সকল নিয়ম কানুন ভঙ্গকরে এমন কোন প্রক্রিয়া নেই যা তাঁরা আশ্রয় নেয়নি।প্রথম থেকেই যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া ও আওয়ামী লীগ সরকারের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মনোভাবকে প্রভাবিত করতে অর্গানাইজেশন ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিজ ইনক-. নামে একটি প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের লবিস্ট ফার্ম কেসেডি অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস ইন কর্পোরেশনের সঙ্গে চুক্তি সই করে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারক ছাড়াও নীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে কাজ করেন এমন গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মাঠে নামার কথা বলা হয়েছে। জামায়াতের এক প্রভাবশালী নেতা ও তার ভাই ২০১১ সালে তিন লাখ ১০ হাজার ডলারের বিনিময়ে প্রাথমিকভাবে তিন মাসের জন্য কেসেডি অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসকে নিয়োগ করেন। প্রতিষ্ঠানগুলো বিচারের মুখোমুখি হওয়া জামায়াত নেতাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত রয়েছে বলে আন্তজাতিক মিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হয়েছে।মোটা টাকা খরছ করার যথাযথ ফল ও পেয়েছে দল দুইটি।প্রথমেই জামায়াতের সাবেক আমীর ও যুদ্ধাপরাধী (মৃত) গোলাম আযমসহ অন্যদের ফাঁসি না দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে বিচার শেষ হওয়ার আগেই ২০১২ সালে চিঠি পাঠিয়েছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রভাবশালী ব্যাক্তি বর্গরা। এই চিঠির বিষয়বস্তু আবার আন্তজাতিক মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচারের ব্যাবস্থাও করেছিলেন।নিয়মিত বিশ্বের বিভিন্ন সংগঠন মৃত্যুদন্ড না দেয়ার জন্য সরকারকে অনুরুধ করে চিঠি,বিবৃতি টেলিফোন ইত্যাদি নানাভাবে অনুরুধ উপরুধ আসতেই থাকেসরকারের সংশ্লিষ্ট মহলে।সরকারি সুত্র বিষয়টি মিডিয়াকে নিশ্চিত করে জানায়, এ বিচারকে প্রভাবিত করতে বিদেশী বিভিন্ন ধরনের সংগঠন বিবৃতি দিচ্ছে সত্য।সুত্র নিশ্চিত হতে পেরেছে এজন্য অধিকাংশ সংগঠন মোটা অংকের অর্থ নিয়ে এ ধরনের বিবৃতি দিচ্ছে। সর্বশেষ এই কয়দিনে তাঁদের তৎপরতা দেশী বিদেশী কারো চোখ এড়াতে পারেনি,একরকম মরিয়া হয়ে প্রকাশ্য- অপ্রকাশ্য ভাবে সমস্ত প্রপাগান্ড করা হয়েছে। বিএনপি নেতা যুদ্ধাপরাধী সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং জামায়াতে ইসলামীর নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড অবিলম্বে স্থগিত চেয়ে বিবৃতি দেয় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। গত শুক্রবার সংস্থাটির ওয়েবসাইটে দু’জনের ফাঁসি স্থগিত চেয়ে বিবৃতি দেয়া হয়েছে। দু’জনের মামলায় ‘স্বাধীন ও নিরপেক্ষ পর্যালোচনারও’ দাবি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থাটি। আগেও একই ধরনের আহ্বান জানিয়েছিল সংস্থাটি, যার কড়া সমালোচনা করেছিল বাংলাদেশ সরকার।নির্লজ্জ সংস্থাটি তাঁরপর ও বিবৃতি দিয়ে আবারও আগের কথাটাই নতুন করে বলতে চেয়েছে। বাংলাদেশ সরকার যেভাবে দেশীবিদেশী ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে বাংলাদেশকে যুদ্ধঅপরাধের দীর্ঘ লালিত কলংক মুক্ত করার প্রয়াস অব্যাহত রেখেছেন, ইহা ইতিহাসের এক নজিরবিহীন ঘটনা।বিশেষ করে আমাদের মত তৃতীয় বিশ্বের একটা দেশের সরকার ধনী দেশগুলীর বিরুধিতা ক্ষেত্র বিশেষ চক্রান্ত উপেক্ষা করে বিচার এগিয়ে নেয়া নি:সন্দেহে কঠিন পরিস্থিতির মোকাবেলা করা ছাড়া আর কিছুই নয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের কন্যা যদি সরকার প্রধান নাহতেন আরো শতবছর পরও জাতি কলংক মুক্ত হতে পারতো বলে আমি মনে করিনা।দেশরত্ম শেখ হাসিনা কোনভাবেই তাড়াহুড়ো না করে সম্পুর্ন আইনী প্রক্রিয়া শেষ হওয়া ব্যাতিরেকে কোন অপরাধির শাস্তি বাস্তবায়নে কখনই চঞ্চলতা প্রদর্শন করেছেন,কোন শত্রু ও বলতে পারবেননা। স্বাধীন বাংলাদেশে অতীতে বিভিন্ন সরকারের সময়ে বিশেষ করে" মেজর জিয়ার সরকারের" ক্ষমতা গ্রহনের পরপর বিভিন্ন কারনে দেশের মুক্তিযোদ্ধা সেনাকর্মকর্তা এবং দেশের বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গের বিচার অত্যান্ত গোপনীয় ভাবে, নির্দিষ্ট বিচারকক্ষে অনুষ্ঠিত হতে দেখা গেছে। এমন নজীরও স্থাপন করেছিল বিচারালয়ে সাংবাদিকতো দুরের কথা কোন আইনজীবির মাধ্যমে আইনি পরামর্শ নেয়ার সুযোগ পয্যন্ত দেয়া হয়নি। উচ্চ আদালতের আপিলের মাধ্যমে সুবিচার পাওয়ার সুযোগ--যাহা "অভিযুক্তের মৌলিক সাংবিধানিক নাগরিক অধিকার" তাহাও কোন অভিযুক্তকে দেয়া হয়নি।আইন বিশেষজ্ঞদের অভিমত প্রত্যেকটি ফাঁসি " রাষ্ট্রীয় হত্যা "ছাড়া অন্য কিছুই ছিলনা।সংগোপনে বিচারের নামে প্রহসন করে ফাঁসির দড়িতে ঝুলানো হয়েছিল।কোন প্রকার আইনী প্রক্রিয়া সমাপ্ত করা ছাড়াই মাত্র ২/৩ মাসের মধ্যে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দন্ড কায্যকর করতে দেখা গেছে।যাহা সভ্য দুনিয়ায় চিন্তাও করা যায়না। তেমনটি বর্তমান সরকারের সময়ে দেখা যাচ্ছেনা। কোন প্রকার তাড়াহুড়ো না করে বিচারের সর্বশেষ পয্যায় সুচারুরুপে সমাপ্তির পর মহামান্য রাষ্ট্রপতির। "সাংবিধানিক অধিকার "প্রয়োগ করে ক্ষমা প্রদর্শনের ধাপ অতিক্রম করা ছাড়া কোন অপরাধির দন্ড অদ্যাবদি কায্যকর হয়েছে বলে চরম শত্রুও অভিযোগ উত্থাপন করতে পারেনি। সরকারের বিচার অনুষ্ঠানের প্রক্রিয়াগত দিক নিয়ে সম্ভবত উল্লেখিত কারনে কোন আন্তজাতিকভাবে স্বীকৃৃত সংস্থা বা জাতিসংঘের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ অদ্যাবদি উত্থাপিত হয়নি।বিচার অনুষ্ঠানের স্বচ্ছতা,অভিযুক্তের আইনী সহায়তা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করন,সাফাই সাক্ষী দেয়ার বিধান যথাযথ অনুসরন,সাক্ষীদের জেরার পয্যাপ্ত সুযোগনিশ্চিত করন, অভিযোগ প্রমানে প্রত্যক্ষদর্শির সাক্ষকে গুরুত্ব দেয়া,যথাযথ লিখিত প্রমান সংরক্ষন,নথিপয্যালোচনায় বিচক্ষনতা,সরকারী কৌশলিদের ধৈয্য ইত্যাদি আইনি প্রক্রিয়া অনুসরনের কারনে বিচার সুষ্ঠ, ন্যায়, যথাযথ হচ্ছে বলে আইন বিশেষজ্ঞ গন অভিমত ব্যাক্ত করেন। জাতীয় ও আন্তজাতিক ষড়যন্ত্রকে সরকার দৃডতার সাথে মোকাবেলা করে বিচার অনুষ্ঠানকে দেশবাসি আকুন্ঠ সমর্থন দেয়ার কারনে সরকার নৈতিক ভাবে অনেকটা বলিয়ান হতে পেরেছে।জনগনের সমর্থন,সরকারের ধৈয্য ও সহনশীলতা,স্বচ্ছতা,যথাযথ তথ্যপ্রমান যথাসময়ে হাজির করে মামলা প্রমানের সদিচ্ছাই কোনপ্রকার ষড়যন্ত্র মানবতা বিরুধিঅপরাধের বিচারের বেলায় কায্যকর হচ্ছেনা বলে বিশেষজ্ঞগন অভিমত ব্যাক্ত করেছেন।আমি মনে করি প্রধান মন্ত্রীর জনগনকে দেয়া অঙ্গিকার "মানবতা বিরুধি অপরাধের বিচার করার"তাঁকে সাহষি করে তুলেছে।জনগনের স্বত:স্ফুর্ত সমর্থনও এক্ষেত্রে প্রনিধান যোগ্য বলে আমি মনে করি। সকল সংশয়, জল্পনা কল্পনা,সন্দেহজনক পয্যবেক্ষনের সমাপ্তি ঘটিয়ে প্রধান দুই ব্যাক্তির দন্ড কায্যকর হওয়ায় সারা দেশে স্বস্তির আবহ সৃষ্টি হয়েছে।চক্রান্ত চতুর্দিকে ঘুরপাক খাওয়ার কারনে অনেকেই বেশ অস্বস্তিতে বিগত কয়দিন দিনাতিপাত করেছেন।বিশেষকরে তাঁদের দ্বারা অত্যাচারিত,হত্যার শিকার পরিবার,মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি,স্বাধীনতার চেতনায় উজ্জিবিত নতুন প্রজর্ম্মের অগনীত মানুষ উৎকন্টিত,সংশয়ের দোলাচলে আবর্তিত ছিলেন এই কয়দিন,আইন তাঁর নির্দিষ্ট গতিতে চলবে,নাকি ষড়যন্ত্র জয়ী হবে।শেষাবদি আইনই জিতেছে।দেশব্যাপি ঈদের আমেজ পরিলক্ষিত হচ্ছে,স্থানে স্থানে উৎফুল্ল জনতা মিষ্টি বিতরন করে, মিছিল করে কোলাকোলি করে তাঁদের আনন্দ উৎযাপন করছে।মহান সৃষ্টি কর্তার নিকট শোকরিয়া আদায় করছে জনগন, দেরীতে হলেও তাঁরা জগন্য, নিকৃষ্ট দুই জানোয়ারের বিচারের দন্ড কায্যকর হতে দেখে যেতে পেরেছে। ধন্যবাদ মাননীয় প্রধান মন্ত্রী,ধন্যবাদ সদাশয় সরকার বাহাদুরকে,ধন্যবাদ মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে-- জনগনের আঁতের খবর বুঝতে পেরে" দুইজনের কৃত অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন" শেষ পয্যন্ত বাতিল করে সত্বর দন্ড কায্যকরের আদেশ প্রদান করে বিচক্ষনতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা

সভ্য ইউরুপ চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখাল মুসলিম প্রধান দেশ সমুহকে তাঁরা কত ধৈয্যশীল জাতি-- ~~~~~~~~~~~~~~~`~~~~`~~~`~~~~~~ ইউরুপের সভ্যতাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল সারা পৃথিবিকে তাঁরা যে আসলেই সভ্য জাতি।বিশেষ করে এশিয়া,আফ্রিকার মানব সমাজকে।সভ্য ইউরুপ -সভ্যের মতই তাঁদের ভুমিকা রেখেছে।এত বড় হৃদয়বিদারক ঘটনা হওয়ার পরও তাঁদের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে সংযত আচরন,পরমত সহিঞ্চুতা,ধৈয্যের চরম পরাকাষ্টা দেখিয়ে সারা বিশ্ববাসিকে অবাক করে দিয়েছে।বিশেষ করে মধ্য এশিয়ার দেশ সমুহ যেখানে দিল্লিতে আগুন দিলে ঢাকায় তার তাপ অনুভব করা যায়, সে সমস্ত দেশ সমুহের সামনে যুগান্তরের শিক্ষনীয় এক উদাহরন সৃষ্টি করে দিয়ে গেল প্যারির হামলা। ফ্রান্সের আইএস জঙ্গিদের হামলায় প্রায় একশত ষাট জন মানুষ প্রান হারিয়েছে।সারা প্যারিস জুড়ে জরুরী অবস্থা ঘোষনা করা হয়েছে।দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর এই প্রথমবারের মত দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি হল।সরকার জনগনকে ঘর থেকে বাহির না হতে বারন করেছিল।সরকারের বাধা উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ প্যারির উন্মুক্ত চত্বরে সমবেত হয়েছেন।তাঁরা নিহত ও আহতদের প্রতি তাদের সশ্রদ্ধ আবেগ এবং ভালোবাসার প্রকাশ ঘটিয়েছে।গুরুত্ব পপূর্ন স্থাপনা সমুহে আলো ননা জজ্বালিয়ে অন্ধকারের কীটদের পপ্রতি তাদের ঘৃনা পপ্রকাশ ককরেছে।আইফেল টাওয়ারে আলো জ্বলেনি, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় কোনো প্রজ্বলন হয়নি, মানুষ সবকিছুকে দেখেছে বর্বরতা,নৃসশতা অসভ্য কিছু মানুষের অপকর্ম হিসেবে।সেই বর্বরতার বিরুদ্ধে বিশ্ব সভ্যতা ও মানবতার চিন্তাকে সজাগ করার প্রানান্তকর চেষ্টা করেছে।তাঁদের মনের আকুতি প্রকাশ করেছে খোলা ময়দানে সমবেত হয়ে, ঘরে বসে থেকে নয়। স্বত:স্ফুর্ত জনতার সোচ্চার প্রতিবাদ জানিয়ে, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে চিরদিনের জন্য বিদায় জানাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে ফরাসি দেশের জনগণ, শিশু, কিশোর, নারী, বৃদ্ধসহ সর্বস্তরের বিবেকবান মানুষ। পরবর্তী প্রজন্ম যেন সুখী, নিরুপদ্রব সমাজে ননিশ্চিন্ত মমনে বসবাস ককরতে পারে।কোন দানবকূলের কারনেএমন ক্ষতি তাঁদের জীবনে ফিরে না আসে।ফরাসি সরকার, রাজনৈতিক দলগুলো,দেশেরাপামর সব নাগরিক লৌহ কঠিন অঙ্গীকার ব্যক্ত করছে।কোন ধর্মীয় সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের অভিশাপ তাঁদের জনপদে যেন হামলে পড়তে না পারে। সকল কুস্মুন্ডতা থেকে ফ্রান্সকে মুক্ত করতে এক ও অভিন্ন চেতনায় এক সারিতে সারা ফ্রান্স । আমাদের দেশের মতো ককোন রাজ ননৈতিক দল বা ব্যাক্তি সরকার ও পুলিশ বাহিনী ব্যর্থ বলে বিবৃতি দদেয়নি।একে অঅপরকে দোষ দিয়ে দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা করেনি। গোটা জনমতকে রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলার চেষ্টা কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে করেনি। স্বশরীরে আমাদের দেশের মত মিডিয়ায় গিয়ে টকশোর ননামেকেউ কেউ নানা উদাহরণ টেনে পান্ডিত্য জাহির করার চেষ্টাও করেনি।দায় কাঁধে নিয়ে সরকার পদত্যাগের ঘোষণা কেন দেয়নি এমন প্রশ্ন কোন তরফ থেকে উত্থাপিত হয়নি। একে অপরকে অভিযুক্ত করে কিংবা নৈতিকতার প্রশ্ন তুলে ঝগড়াঝাটি শুরু করে দেয়নি। ফরাসি সরকার সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তাঁর দৃঢ় অবস্থান ব্যক্ত করেই বক্তব্য দিয়েছে। ফরাসি জনগণও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান সরকারকে ও বিশ্ব বাসিকে জানিয়ে দিয়েছেন,স্বতস্ফুর্ত কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে।না কোন গাড়ি ভাংচুর করেনি জনতা,ব্যাংক বীমাতেও আগুন দেয়নি,স্বর্ন দোকান ও লুট করেনি।জঙ্গিবাদ দমনের জন্য বর্তমান গৃহিত ব্যাবস্থাকে আর জোরদার করার কথাই বলছে। জঙ্গিদের হাতে আর যেন কোন মানুষের জীবন বিপন্ন না হয় সে দাবিই জানিয়েছেন সমবেত জনতা।সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বাইরে অন্য কারো বিরুদ্ধে কোনো উচ্চারণ নেই, ঘৃণার পরিধির সামান্যতম বিস্তৃতিও ঘটেনি। প্যারিতে জঙ্গিবাদী আইএসের হামলার বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফ‚র্ত প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। ইংল্যান্ড, জার্মানি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইউরোপের দেশে দেশে, এশিয়ারও বহু দেশে। দেশসমূহের সরকার এবং জনগণ এই নৃশংস হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে কোনো নিরীহ মানুষের ওপর হামলা চালায়নি, এমনকি সংখ্যায় নগন্য মুসলমানদের অভিযুক্ত করে কোনো বক্তৃতা বা বিবৃতি পয্যন্ত দেয়নি। ব্যাক্তি পয্যায়ের আলোচনায়ও ইসলামের বিরুদ্ধে কেহই টুশব্দটি পয্যন্ত উচ্ছারন করেছে এমন কোন খবর এই পয্যন্ত পাওয়া যায়নি। সন্ত্রাসীরা এই হামলায় অংশ নিয়ে ইসলামের নাম ব্যবহার করেছে।ফরাসি জনগন ঠিকই বুঝেন জঙ্গিপনার অধিকার তাদের ইসলাম দেয়নি, সাধারণ মুসলমানরাও দেয়নি। ইসলাম বিশ্বের সর্বপেক্ষা শান্তি ও মানবতার ধর্ম।গুটিকতক বিপদ গামি দোযগের কীটের কারনে তাঁরা গোটা ধর্ম বা মুসলিম সমাজকে দোশি সাব্যস্ত করে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর ফন্দিও করেনি। অথচ এসব জঙ্গিগোষ্টিপবিত্র ধর্ম ইসলামের কত বড় ক্ষতি সাধন করছে তা তারা কোনোভাবেই বুঝার চেষ্টা করে না। তাদের যারা সমর্থক তারাও বোঝে না, মুসলমানদের কত ক্ষতি তারা করছে। তারা স্বীকার পয্যন্ত করেনা,ইহা অত্যান্ত ক্ষতিকর পদক্ষেপ আমাদের ধর্মের বিকাশের জন্য। ইসলাম অর্থই হচ্ছে শান্তি। সেই শান্তির ধর্মকে কতিপয় উগ্রবাদী গোষ্ঠী ইসলামি রাষ্ট্র, খিলাফত ব্যবস্থা,কোরানি শাষন,হেফাজতে ইসলাম,জামায়াতে ইসলাম ইত্যাদি প্রতিষ্ঠার নামে যেভাবে উগ্র সন্ত্রাসের পথ বেচে নিয়েছে, তাতে লাভ হওয়ার সম্ভাবনাতো নেই বরঞ্চ বিশ্ব দরবারে মসুলমান মানে সন্ত্রাসি,ইসলাম মানে জঙী এই ধারনাই বদ্ধমুল করার আপ্রান চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। নিজের দেশেতো বটেই বাইরের দেশগুলোতে রক্তাক্ত হত্যাযজ্ঞ করতে সামান্যতম দ্বিধাগ্রস্থ্যতা দেখা যাচ্ছেনা।ফলশ্রুতিতে মুসলমানদের সম্পর্কে অন্য ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে মারাত্মক বিরূপ ধারণা তৈরি হতে শুরু করেছে। এমনিতেই ইউরোপের দেশগুলোতে এখন কয়েক কোটি মুসলমান বসাবস করছে। সম্প্রতি সিরিয়া থেকে কয়েক লাখ মানুষ ইউরোপের দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। আরো বিপুল সংখ্যক মানুষ ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নেয়ার অপেক্ষায় আছে। বলাবলি শুরু হয়ে গেছে, ফ্রান্সের হামলায় যারা অংশ নিয়েছে তাদের কেউ কেউ শরণার্থীদের ভেতরেই লুকিয়ে ছিল বহুদিন পয্যন্ত। অথচ সিরিয়ায় আইএসআই মানবতার বিরুদ্ধে যে বিপর্যয় ঘটিয়েছে তার নজির খুঁজে পাওয়া কঠিন,তাঁদের অত্যাচার অনাচারে লাখ লাখ ইসলাম ধর্মের অনুসারি প্রাণে বাঁচার জন্য পাড়ি জমিয়েছে ইউরোপে। মধ্যপ্রাচ্যের তথাকথিত ইসলামি দুনিয়ায় কোথাও তাদের ঠাঁই হয়নি।কোটি কোটি বর্গ কিলোমিটার খালি থাকার পরও মুসলিম-মুসলিম ভাইদের সামান্য বিপদে সাড়া দেয়নি।সেখানে ইউরুপের উদার গনতান্ত্রিক দেশ গুলির দরজা সর্বদা খুলা রেখেছে।পথের বাধা না থাকলে,আরো বহু শরনার্থীর আবাস সেখানে হতে পারতো। মধ্যপ্রাচ্যের আরো অনেক দেশের, এশিয়ার দেশ সমুহের অনেক কর্মজীবির ঠাঁই ইউরুপে নিয়েছে,যাদের মধ্যে বেশির ভাগই ধর্মের দিক থেকে ইসলামের অনুসারি।বৈধ পথে ছাড়াও অবৈধ পথে কর্মজীবী মানুষ শরণার্থী স্রোতের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ইউরোপে পাড়ি জমিয়েছেন। এ ধরনের বাস্তবতায় যেখানে কয়েক কোটি মুসলিম মানুষ ইউরোপের দেশগুলোতে বসবাস করছে, জীবন-জীবিকা, পরিবার পরিজন নিয়ে শুখে শান্তিতে আছেন তখন আইএসআইয়ের নামে কতিপয় ইসলামি জঙ্গিএ ধরনের ভাগ্যবিনাশি হামলা, নিরীহ সাধারণ মানুষকে হত্যা করার জন্য সন্ত্রাসী আক্রমণ করা , আরো বড় ধরনের হামলা ও প্রতিশোধ নেয়ার হুমকি দেয়া কতটুকু যৌক্তিক তাহা মুসলিম বিশ্ব গভীরভাবে চিন্তা করার প্রয়োজন আছে। ইউরোপে বসবাসকারী সংখ্যায়লুগু মুসলমানদের অস্তিত্বই হুমকির মুখে ঠেলে দিল ধর্মের নামে উগ্রতা।প্যারিসে সংঘটিত হামলা ও হত্যা মনে হচ্ছে গোটা বিশ্ব সভ্য সমাজকে স্তম্ভিত করে দিয়েছে, মানব সভ্যতাকেই নানা প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। আইএসআই নামক সংগঠন প্রতিষ্ঠার পেছনে ইজরাইলের মোসাদ আমেরিকার সিআইএ সরাসরি জড়িত।তাঁদের অর্থ অস্ত্রে বলিয়ান হয়ে ইসলামকে ধংশের চক্রান্তে শামিল হয়েছে বিশ্বের মুসলিম অধ্যুষিত দেশ সমুহের তথাকথিত মৌলবাদি,পশ্চাদপদ, উগ্র গুটি কতক ধর্মধারি অধর্মের পুজারি- মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের দোসর, ইহুদী বাদের তল্পিবাহক।

ধার্মিকের ছদ্মাবরনে বকধার্মিকদের রক্তাক্ত আস্ফালন,বিশ্ব নীরবে তাকিয়ে রয়---!!

ছবি

বিশ্বমোড়লের স্বার্থের বাহিরে গেলে প্রিয় বন্ধুরাষ্ট্রেও জঙ্গীর উপস্থিতি আছে:অনুকুলে থাকলে দেশের সব মানুষ মারা গেলেও আপত্তির কোন কারন থাকে না। প্রীয় পাঠক বন্ধুরা,নিম্নে বহুল প্রচলিত বিশ্ব নেতাদের নীতি কৌশলের আতংক ওয়েব সাইট উইকিলিকস,অভিজ্ঞ সাবেক বিশ্বনেতা ফিদেল কেস্ট্রো,বর্তমান বিশ্বের ২য় শক্তিধর নেতা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত তিনটি বিশেষ খবর কপি পেষ্ট করে তুলে দিলাম।বর্তমান বাংলাদেশের কথিত আই এস হামলার সাথে এখানে কোন যোগসুত্র পাওয়া যায় কিনা তাঁর একটা বিশ্লেষন ধর্মী আলোচনা বাংলাদেশের রাজনীতি বিশ্লেষকদের কাছ থেকে জানার আগ্রহে আমার ক্ষুদ্র এই প্রয়াস। দেখি তাঁরা কি বলেন------ (এক) ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন বিষয়ে গোপন তথ্য ফাঁস করে আলোচিত ওয়েবসাইট ‘উইকিলিকস’ প্যারিস হামলার জন্য আমেরিকা ও তার মিত্রদের অভিযুক্ত করেছে। হামলার পর এক টুইট বার্তায় উইকিলিকস বলে, বছরের পর বছর ধরে সিরিয়া ও লিবিয়ায় চরমপন্থীদের অস্ত্রশস্ত্র এবং প্রশিক্ষণ দেয়ার ফল। পরের দিন আরেক টুইট বার্তা ওয়েসসাইটটি বলে, প্যারিস সন্ত্রাসী হামলায় বহু মানুষ নিহত হয়েছে। ইরাক ও সিরিয়াও ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। এই দুই মৃত্যুর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য যে উগ্রপন্থীদের প্রতিপালন করেছে তার সরাসরি যোগসূত্র রয়েছে। আরেক টুইট বার্তায় উইকিলিকস বলে, প্যারিসে ইসলামি সন্ত্রাসীদের হামলায় ১২০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। ইরাক, সিরিয়া ও লিবিয়ায় আড়াই লাখ মানুষ নিহত হয়েছে। এই ব্যাপারটা তখনো মজার ছিলো না, এখন মজার না। অস্ত্র এবং আর্থিক সহায়তার প্রশ্ন তুলে আরেক টুইট বার্তায় উইকিলিকস বলে, এরা (হামলাকারী) কারা? সুন্নী উগ্রপন্ত্রী, তাদের অর্থ এবং অস্ত্র দেয় কে? ওয়েবসাইটটি আরো বলে, সিরিয়া ও ইরাক রাষ্ট্রকে ধ্বংস করতে উগ্রপন্ত্রীদের যারা অস্ত্র, অর্থ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সহায়তা করেছে তাদের প্রত্যেকে বিচারের আওতায় আনা উচিত। শনিবার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে একটি আর্টসেন্টার, রেস্টুরেন্টসহ কয়েকটি জায়গায় বন্দুকধারীর গুলি এবং ফ্রান্স স্টেডিয়ামের কাছে বিস্ফোরণের ঘটনায় দেড়শতাধিক মানুষ নিহত হয়। ক্যাস্ত্রো বলেছেন, উগ্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএসআইএল সৃষ্টির পেছনে রয়েছে আমেরিকা ও ইহুদিবাদী ইসরাইল। কিউবার স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক বহু মিডিয়া এ খবর দিয়েছে। (দুই) ক্যাস্ত্রো বলেছেন, সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএসআইএল সৃষ্টির জন্য ইসরাইলের কুখ্যাত গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ ও আমেরিকার যুদ্ধবাজ সিনেটর জন ম্যাককেইন ষড়যন্ত্র পাকিয়েছেন। ক্যাস্ত্রো তার নিবন্ধে পরিষ্কার করে বলেছেন, জন ম্যাককেইন হচ্ছেন ইসরাইলের নিঃশর্ত মিত্র এবং মোসাদের সঙ্গে গোপন পরিকল্পনায় আইএসআইএল সৃষ্টি করা হয়। সেই অনিষ্ট শক্তি এখন ইরাকের বিরাট অংশ এবং সিরিয়ার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। ক্যাস্ত্রো তার বক্তব্যে ন্যাটো সামরিক জোটকেও এক হাত নিয়েছেন। তিনি এ জোটকে জার্মানির নাজি বাহিনীর এসএস কোরের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ন্যাটোর কিছু নেতার বক্তব্য শুনলে মনে হবে যেন তারা অ্যাডলফ হিটলারের নাজি বাহিনীর কাছ থেকে প্রেরণা পেয়েছেন। (তিন) বাংলাদেশ প্রেস ডেস্ক || রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, জি-২০’র কোনো কোনো সদস্যসহ প্রায় ৪০টি দেশ তাকফিরি সন্ত্রাসীগোষ্ঠী আইএসআইএল বা দায়েশকে অর্থের যোগান দিচ্ছে। জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন শেষে ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী তুরস্কের আনাতালিয়া শহরে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, রুশ গোয়েন্দা সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে আইএসআইএল’র অবৈধ তেল ব্যবসা জরুরিভিত্তিতে বন্ধের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও কথা বলেন তিনি। রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, মহাকাশ এবং বিমান থেকে তোলা ছবি জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানকারী রাষ্ট্র প্রধানদের দেখানো হয়েছে। এসব ছবিতে দায়েশের অবৈধ তেল বাণিজ্যের ব্যাপকতা ফুটে উঠেছে। । এ সব ছবিতে কিলোমিটারের পর কিলোমিটার জুড়ে তেল ট্যাংকারের লাইন ধরা পড়েছে বলে জানান তিনি। পুতিন বলেন, চার থেকে পাঁচ হাজার মিটার ওপর থেকে তোলা ছবিতে দেখা গেছে- তেল ট্যাংকারের লাইন দিগন্ত রেখা পেরিয়ে গেছে। গত বছর অধিকৃত তেলক্ষেত্রগুলো থেকে উত্তোলিত তেল বিক্রির অর্থ দায়েশ গোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস ছিল। ইরাকের উত্তরাঞ্চল এবং সিরিয়ার রাকা প্রদেশের তেলক্ষেত্রগুলো থেকে এসব তেল উত্তোলন করা হচ্ছে। আমার অভিমতের সাথে পাঠকের মনের মিল খোঁজে পান কিনা একটু দেখুন:------ পাঠকগন লক্ষ করুন--তিনটি পত্রিকার তিন দিগন্ত থেকে দুই বিশ্ববরেন্য ব্যাক্তি এবং এক মিডিয়া ওয়েব বিশ্ববাসিকে একই খবর একই সময়ের মধ্যে জানানো হল। আগেই বিশ্বনেতৃবৃন্দ স্থীর সিদ্ধান্তে উপনিত হয়েছেন আইএস জঙ্গী সমস্যা কোন একক দেশের একক কোন সমস্যা নয়।শান্তিকামি দেশ সমুহের উপর বিশ্ব মোড়ল বিভিন্ন নামে, বিভিন্ন কৌশলে একতরফা ভাবে কথিত জঙ্গীর ছদ্মাবরনে তাঁদের মাতব্বরির পথ মসৃন রাখার স্বার্থে চালিয়ে যাচ্ছে শান্তিকামি দেশ সমুহের শান্তিকামি জনগনের উপর। একের পর একবোমা হামলা,আগুন সন্ত্রাস,আর্জেস গ্রেনেড,গুলি,চাপাতির হামলা।দেশ সমুহের সম্পদহানি, প্রকাশ্য লুটতরাজ,গুপ্তহামলা ইত্যাদি করতেও দেখা যায়।মুলত;সামাজতান্ত্রিক বিশ্বের পতনের পর সাম্রাজ্যবাদি দেশ আমেরীকা এবং তার মিত্রদেশ সমুহের মিলিত প্রপাগান্ডার অংশই হচ্ছে আজকের বিশ্বের অস্থিরতার মুল কারন।এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে শীতল যুদ্ধের অবসানের পর থেকেই।জঙ্গির আনাগোনার আত্মপ্রকাশ একেক দেশে একেক নামে প্রকাশ করছে অনেক আগে থেকেই।তাঁদের শোষন এবং ভু-রাজনীতির হিসেব নিকেশ রাখার দোষর যতদিন দেশটির সরকারে আসতে পারবেনা ততদিন তাঁরা সেই দেশটির উপর এই অঘোষিত যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন।এটাই তাঁদের নীতি আদর্শে পরিনত হয়েছে।বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তাঁদের এই উলঙ্গ হামলা জ্ঞানপাপিরা দেখেও না দেখার ভান করেন। এটাতো স্পষ্ট, বি,এন,পির ডাকা অবরোধ প্রত্যাহার করা না করার উপর যেহেতু তাঁদের আরোপিত রেড এলার্ট নির্ভরশীল সেহেতু বি,এনপি কেন তাদের অবরোধ আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রত্যাহার না করে শঠতার আশ্রয় নিয়ে একটা জাতিকে ধ্বংশের নেশায় মেতে উঠেছেন? আগুন সন্ত্রাসের রশি কি বেগম জিয়ার হাতে ছিলনা? অবরোধ প্রত্যাহারের ক্ষমতা কি খালেদা জিয়ার নেই? কোন অশুভ শক্তির ইশারায় খালেদা অবরোধ ডেকে নিরাপদ কক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন? কারা দেশের মধ্যে আগুন সন্ত্রাস করেছিল? এই আগুন সন্ত্রাসের নেতৃত্বে কি খালেদা ছিলেননা? খালেদা কি সাম্রাজ্যবাদি চক্রের হাতে এই দেশটা সঁপে দেননি? ঘুপ্ত হত্যা কি অবরোধ প্রত্যাহার করা না করার সাথে সম্পৃত্ত? অবরোধকে উপলক্ষ করে এখনও কেন বাংলাদেশের উপর রেড এলার্ট থাকবে?খালেদা কেন প্রাকাশ্য এখনও বলছেননা তিনি অবরোধ প্রত্যাহার করেছেন? গুপ্ত হত্যার পর আন্তজাতিক ভাবে আই এসের হামলায় লিখক প্রকাশক হত্যার প্রচার এবং বিএনপি দলের সংলাপ ভিক্ষার মধ্যে একান্ত মিল থাকার পরও আমাদের দেশের তথাকথিত টকশোবাজেরা আইএস খোঁজতে সারা পৃথিবি সব তোলপাড় করে ফেলছেন। অনেক প্রাজ্ঞ রাজনীতিক,বিশ্লেষক,দল, জোট বুঝাতে চান গনতন্ত্রের অভাবে চরম পন্থার উদ্ভব হচ্ছে।গনতন্ত্র বলতে শুধুই কি একটা জাতীয় নির্বাচন? এখনতো পরিষ্কার হয়ে গেল,বিশ দলীয় জোট কেন নির্বাচনে অংশ নেয়নি?ভোটে অংশ না নিয়ে নির্বাচন সম্পর্কে প্রশ্ন উত্থাপন করা আহম্মকি,বেহায়াপনা ছাড়া আর কি হতে পারে? ফ্রান্সে কি গনতন্ত্রের অভাব আছে.না ভোটের কোন হেরফের আছে? সেখানে কেন হামলা হল? ফ্রান্সে হামলা হয়েছে নতুন শক্তির আগমনের আগেই সতর্ক করে দেয়ার কৌশল আমেরীকার।,যে যেদিকে যাবে যাক আগামী বিশ্ব রাজনীতিতে তুমি আমার আশে পাশে থেকো,নয়তো তোমার দেশেও জঙ্গীর উপস্থিতি বিশ্ব টের পেয়েছে,তাই নয় কি? টুইন টাওয়ার ধংশ হল গনতন্ত্রের অভাবে? এত বড় টুইন্টাওয়ার সেখানে নাকি সেদিন কোন মনুষ্য জীবের অবস্থান ছিল না। কি হাস্যকর ব্যাপার। গনতন্ত্রের অভাব কি ভারতেও আছে? খাগড়াগড় হামলা কেন হল? মুলত গনতন্ত্র সমাজতন্ত্র,রাজতন্ত্র কোন বিষয় নয়।তাঁদের স্বার্থের রক্ষক বড় বিষয়।সৌদি আরব সহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সমুহ রাজতন্ত্র নয় কি?ইসলামে কি রাজতন্ত্রের অনুমোদন আছে? ইহুদি রাষ্ট্র সমুহ কি ভাবে মুসলিম প্রধান দেশের বন্ধু হয়। কিভাবে গনতন্ত্রের সোল এজেন্ট আমেরীকার মিত্র হয়? জাতির জনকের কন্যা নতুন নতুন নামে নব্য আবিস্কৃত সকল বাংলাদেশি আই,এস,মোজাহেদিন,তাহরিকে ইসলাম ইত্যাদি যে নামেই ডাকা হোকনা কেন,সব জঙ্গীর আস্তানা ঠিকই চিনেন। উদ্ভাবীত আই এস,আগুন সন্ত্রাস,ধর্মীয় মৌলবাদের উত্থান,ইত্যাদি সব কিছুর চেলেঞ্জ মাথায় নিয়েই ধীর স্থীর ভাবে চিরদিনের জন্য নির্মুলের প্রজেক্ট হাতে নিয়ে বাস্তবায়নের পদক্ষেপ হাতে নিয়েছেন। ইতিমধ্যে বাংলার জনগনের সম্মুখে উক্ত প্রজেক্ট গুলির নির্মুলের উপকারিতা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কারনে জনগন স্বতস্ফুর্ত সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন।আন্তজাতিক জরিপের ফলাফল সমুহের প্রতি লক্ষ রাখলে আমার উক্তির সত্যতা বোধগম্য হতে বিশ্লেষনের প্রয়োজন হবেনা। বিশ্বের কোন দেশের চলমান সরকারের জনপ্রিয়তায় ধ্বস ছাড়া উন্নতি হতে দেখা যায়না,বাংলাদেশের সরকার তথা জাতির জনকের কন্যাই একমাত্র ব্যাতিক্রম শত ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে উন্নয়নের গতির সাথে তাল মিলিয়ে সকল অশুভ শক্তির আস্তানায় উপোয্যপুরি ক্ষেপনাস্ত্রের হামলা চালিয়ে যাচ্ছেন।যতক্ষন পয্যন্ত বাংলাদেশের জনগনের অর্থনৈতিক মুক্তির গ্যারান্টির নিশ্চয়তা হবেনা, ততক্ষন পয্যন্ত সংগ্রাম অব্যাহত রাখবেন ইনশাল্লাহ। সাথে সকল অশুভ শক্তির পাটাতন বাংলার মাটির গভীর থেকে উপড়ে সাম্রাজ্যবাদিদের দেশে ফেরৎ পাঠানোর দৃড মনোবল নিয়ে স্থীর হয়ে একাগ্রচিত্তে এগিয়ে যাচ্ছেন। প্রজেক্ট সমাপ্তির পর যাদুঘরেও আর আই এসের সন্ধান করে পাওয়া যাবেনা ইনশাল্লা।সেই মতেই সরকার দেশের জনগনকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। "জয় ইনশাল্লাহ হবেই হবে।" "জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখহাসিনা"

ছবি

অশুভ শক্তির অঘোষিত যুদ্ধ--মন্ত্রী নেতাদের অপরিপক্ষ বচন,বুদ্ধিজীবিদের সীমাহীন দুর্গতি।

ছবি

সর্বচ্ছো ছাড় দিয়ে সংলাপ ভিক্ষা বি,এন,পির--রাজনীতিতে পুর্নবাসন হওয়ার নতুন চাল খালেদার ~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~ বি,এন,পি কে নিয়ে আর লিখবোনা এক রকম সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।কারন পতন বা ক্ষয়ে যাওয়া কোন কিছু সম্পর্কে ঘাটাঘাটি করতে গেলে শুধু দুর্গন্ধই বের হয়,সুগন্ধ বের হবেনা।তাই সিদ্ধান্তটি নিয়ে আবার গতকালের দৈনিক সংবাদ পত্র গুলীতে একটা খবর দেখে অন্তরের কান্না থামাতে পারিনি।বার বার কেন জানি মনে হচ্ছিল,জাতির জনককে নির্মম নিষ্ঠুর ভাবে হত্যা করে হাজারো অপপ্রচারের মাধ্যমে দুর্দন্ড প্রতাপে সারা বাংলা চষে বেড়িয়েছিল যে মানুষ আকৃতির দোযগের কীট গুলি তাঁদের করুন আকুতির ভিক্ষার ধরন দেখে।একদা রাজনীতিকে যারা মিথ্যার ফুলঝুড়ি, ল্যাং মেরে উপরে উঠে আসা,অরাজনৈতিক ব্যাক্তিদের রাজনীতিতে টেনে এনে পেশী শক্তির প্রদর্শনের ব্যাবস্থা পোক্তকরন,রাজনীতিতে দুবৃত্তায়নের আমদানী,বোমা অস্ত্রের অবাধ ব্যাবহার,সরকারি প্রসাশন যন্ত্রকে বন্দুক ধরে পক্ষে কাজ করতে বাধ্য করন থেকে এমন কোন হেন কাজ নেই যাহা করেনি।জনগনের নিকট রাজনীতিকে" ব্যাবসা আর টাউটের আড্ডা "হিসেবে পরিচিত করে যেতে সক্ষম হয়েছেন।অবশ্য দলটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মেজর জিয়ার গগন বিদারী রাজনীতিবীদদের হৃদয় বিদীর্ন করা কালজয়ী উক্তিই ছিল""আমি রাজনীতিবীদদের জন্য রাজনীতি কঠিন করে দেব"" অন্যসব ওয়াদা পুরন করতে না পারলেও অক্ষরে অক্ষরে এই উক্তির যথাযথ প্রতিফলন রাষ্ট্রীয় সর্বক্ষেত্রে রেখে যেতে পেরেছেন,রাজনীতিতেতো বটেই। সেই দলের নীতি নির্ধারকদের একটা গুরুত্বপুর্ণ সম্মিলিত সিদ্ধান্ত গতকাল সব পত্রিকায় চাপা হয়েছে, ""বি,এন,পিকে সরকার যদি ডাকে তাহলে সর্বচ্ছো ছাড় দিতে প্রস্তুত"".।(১১/১১/০০১৫ ইংবৃহস্পতিবার) অথছ এই দলকে দেয়ার জন্য জাতির পিতার কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনা প্রধান মন্ত্রীত্বের বড়াই না করে, রাষ্ট্রীয় প্রটোকলের তোয়াক্কা না করে খালেদা জিয়ার বাড়ী পয্যন্ত গিয়ে গেট থেকে ফিরে এসেছেন।সামান্য সহানুভুতির বাঙ্গালী ঐতিয্য মেহমানদারি করার, অন্তত ভিতরে বসতে দিয়ে এককাপ চা দেয়ার সৌজন্যতা টুকুও দেখাননি।কি অহমিকা,অহংকার তাঁদের গ্রাস করেছিল,কেন এমন রাজনীতি শিষ্টাচার বর্হিভুত আচরন করেছিল বাংলার মানুষ আগে না জানলেও ইদানিং সব কিছু জানে।উত্তর পাঁড়ায় ক্ষমতায় বসিয়ে দিবেন,তাইতো সাজগোজ করে তিন মাসব্যাপি" আগুন সন্ত্রাস "করে দেশব্যাপি অস্থিরতা সৃষ্টি করে,আইনশৃংখলার অবনতির অজুহাত তুলে ধরার কৌশল অবলম্বন করেছিলেন।শেষাবদি বোমেরাং হয়ে নীজের ঘাড়ে এসে ভর করেছে,সেই বোমার আগুনে পুড়া অর্ধমৃত,মৃত, বিকলাঙ্গ বিভৎস নরকংকাল গুলো। তাইতো রাজনীতি থেকে বিতাড়িত,স্বেচ্ছায় নির্বাসনে যাওয়ার আগে শেষ আকুতি,সংলাপ ভীক্ষা চেয়ে রাজনীতিতে পুর্নবাসিত হওয়া যায় কিনা। পুর্নবাসনের সার্টিফিকেট পেতে ভীক্ষার ঝুলি নিয়ে সেই জাতির জনকের কন্যার দরবারে বার বার কড়া নাড়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আপনাকে করুনা দেখিয়ে বঙ্গবন্ধু সংসার ফেরৎ দিয়েছিলেন,তার বদলে বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে প্রতিদান দিয়েছেন স্ব-পরিবারে হত্যা করে,তাঁর কন্যাকে বাড়ীর দরজা থেকে ফিরিয়ে দিয়ে।এবার করুনা ভিক্ষা করে কি দিবেন জাতির পিতার কন্যাকে?২১শে আগষ্টের মত অন্যকিছু? সুপ্রিয় বন্ধুগন আপনাদের নিশ্চয়ই স্মরনে আছে ২০০৬ইং সালের ১৪ দলীয় জোটের আন্দোলনের কথা।অহমিকা শুধু মানুষ নয় রাজনৈতিক দলের ও যে পতন ডেকে আনে তাঁর প্রকৃষ্ট প্রমান আজকের বি,এন,পি।আন্দোলন যখন তুঙ্গে কোন অবস্থায় তত্বাবধায়কের প্রধান নিয়োগের ব্যাপারে তৎকালীন বিরুদীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার সাথে আলোচনা করার জন্য সরকারকে রাজী করানো যাচ্ছিল না,যদিও সংবিধানের নীতি অনুযায়ী সংসদের সংখ্যাগরিষ্ট বিরুদীদলীয় সদস্যদের মনোনীত প্রধান নেতার সাথে সমঝোতা সাপেক্ষে তত্বাবধায়ক প্রধান সহ অন্যান্ন সদস্যদের নিয়োগ দেয়ার বিধান রক্ষিত ছিল,তাঁর তোয়াক্কা না করে দলীয় প্রেসিডেন্টকে তত্বাবধায়কের প্রধান করা হয়েছিল।সেদিনের রাজনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে বৃহত্তর জোট গঠিত হয়েছিল জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।সেই জোটের নামকরন করা হয়েছিল "মহাজোট"।আকার এবংপ্রকারের দিক থেকে অতীতে তো হয়নি ভবিষ্যতেও আর কখনও গঠিত হবে কিনা জানি না।সেই দলের ঢাকা অবরোধের কর্মসূচিতে যখন সারা দেশ অচল,তখন খালেদা পুত্র তারেক জনগনের স্বতস্ফুর্ত আন্দোলনের সাথে চরম তামাশার এক ঐতিয্য সৃষ্টি করে।তাঁর কথিত হাওয়া ভবনের মাঠে তিনি ক্রিকেটের উৎসবে মেতে উঠেন।এই যেন রোম পুঁড়ছে,নিরু মনের আনন্দে বাঁশি বাজানোর প্রবাদকেও হার মানিয়ে দেয়ার মত জনগনের প্রতি চরম ঔদায্যতাপুর্ন আচরন। সরকার গঠনের আগে পরে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য চৌদ্দ দলীয় জোট,নবগঠিত মহাজোটসহ অন্য বিরোধী দল যে প্রস্তাব নিয়ে এসেছিল, আপোসহীন নেত্রী খালেদা জিয়া ও তার অনুগামীরা এর প্রত্যেকটির বিরোধিতা সহ চরম ব্যাঙ্গাত্মক মন্তব্য করেছিলেন।আন্দোলনের মুখে জনরোষ থেকে বাঁচার জন্য,সব কয়টি দাবী মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন। এভাবে বার বার আপোসহীন নেত্রী বাংলার জনগনের নিকট পরিচিত হতে থাকেন রাজনীতির ভাড়, বিদেশী বন্ধু রাষ্ট্র সমুহের নিকট হাস্যরসের খেলনার পতুল হিসেবে পরিনত হতে থাকেন।মেজর জিয়ার পারিবারিক জোরপুর্বক দখল করা সম্মান আর ইমেজে জনগণের সামনে তাসের ঘরের মত ব্যাবহারের পর ছোড়ে ফেলে দেয়ার মত অবস্থায় পৌঁছে দেয় মা,ছেলে মিলে।তাদের এতবড় জনসমর্থিত দলকে খেলো দলে রুপান্তরীত করে দিচ্ছিল তা একবারও বিবেচনায় আনতে পারেননি,দলের বুদ্ধিদীপ্ত তুখোড় নেতারাও। ২০০৭-এ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে সবচেয়ে বেশি দুর্দশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল বিএনপি। অল্প কয়েক দিনেই বাংলাদেশের ইতিহাসে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা দলটির ইমেজ নামতে নামতে তলানিতে এসে ঠেকেছিল। নেতা-নেত্রীদের ইতিপূর্বের মাঠ কাঁপানো বক্তৃতা তখন চরম মিথ্যাচার ছিল বলে মানুষের কাছে প্রতীয়মান হতে থাকে। দেশটি বার বার দুর্নীতি গ্রস্ততার বিচারে বিশ্বসেরা শীর্ষস্থান হওয়ার কলঙ্ক গায়ে মেখেছিল মা -ছেলের মিলিত লুটপাটের জন্য তা আর কাউকে বলে বোঝাতে হয়নি। বাঘা বাঘা বিএনপি নেতারা সব দুর্নীতির দায়ে একে একে অন্তরীণ হতে থাকেন জেলে। দু’দিন আগেও ধরাকে সরাজ্ঞান করতে অভ্যস্ত বেগম খালেদা জিয়াকে একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রায় ‘অনুচর সহচরশূন্য’ বাগাড়ম্বরখ্যাত মন্ত্রী এম,পি বিহীন অবস্থায় পুষ্পার্ঘ অর্পণ করতে দেখে বড় মায়া,করুনা,হৃদয়ের কান্না,ব্যাথায় মথিত হতে হয়েছিল লক্ষকোটি আমজনতার। অথচ এর ক’দিন আগেও নেত্রীর সান্নিধ্যের কাছাকাছি আসার জন্য উন্মত্ত প্রতিযোগিতা ছিল বিএনপির বড়-মাঝারি নেতা-নেত্রী, আমলা আর ব্যবসায়ী,নেতা পাতিনেতাদের। সাম্প্রতিককালে অমন অবস্থার পুনরাবৃত্তি আমাদের জীবদশায়দেখতে হবে কল্পনাও করিনি কোনদিন। ইতিহাসের পরিণতি এতই স্বয়ংক্রিয় যে ঝড়ো হাওয়া নিয়ে উপস্থিত হয়েছিল ফখরুদ্দীন আহমদের তত্বাবধায়ক সরকার,নিমিষেই বিলীন করে দিয়ে গেল প্রতাপশালী পরিবারের সবকিছু।বেরিয়ে আসতে থাকে জিয়ার ভাঙ্গা স্যুটকেস থেকে কোটি কোটি টাকার সম্পদ,ব্যাংক ব্যালেন্স,কো-কো জাহাজ আর ডান্ডি ডাইং এর মত হালফ্যাসানের ব্যাবিসায়ীক প্রতিষ্ঠান।পরিবারটি এতই নিলর্জ বেহায়া হয়ে যায় সম্পদের লোভে বাংলাদেশের একাধিকবারের ক্ষমতার শীর্ষে অবস্থান করেও ইতিহাসের চরমতম নিকৃষ্ট উদাহরন স্থাপন করতেও দ্বিধা করেনি।তত্বাবধায়ক সরকারের কালো টাকা সাদা করার সুযোগ গ্রহন করে বিপুল পরিমান টাকা রাজস্ব পরিশোধ করে সাদা করে।ইহাও কি সম্ভব?কোথায় পেলেন এত কাল টাকা,জনগনকে আর কেউ প্রচার করে বুঝাতে হয়নি,জনগনের হাতে বিচারের ভার যখন দিলেন তত্বাবধায়ক সরকার ২০০৮ ইং নির্বাচনের মাধ্যমে,মাত্র ২৯ টি আসনে বিজয় অর্জন করে ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হওয়ার পথে ধাবমান হওয়া শুরু করে। শেষ খবর পাওয়া পয্যন্ত বাড়ী ভাড়া নেয়ার জন্য লন্ডনে খোঁজ খবর শুরু করেছেন। এমতবস্থায় মা,ছেলে যখন বুঝতে পেরেছে ভোটের মাধ্যমে খমতা আর ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই,বড় জোর সৎ ত্যাগী নেতাদের মনোনয়ন দিয়ে দ্বিগুন যদিও করা যায় তাহলেও ষাট হতে দুই বাকী থাকবে।এরই মধ্যে এতিমের হকের টাকা সাপ হয়ে সারা জীবনের জন্য বিষক্রিয়া চড়িয়ে খমতার বৃত্ত থেকে ১৪ শীকের ভেড়াজালে সারাজীবন পঁচেগলে নি:শেষ হওয়ার ব্যাবস্থা পাকাপাকি হয়ে যাবে,কারন তিনিতো জানেন এতিমের টাকা কিভাবে আত্মসাৎ করে ভোগবিলাসে খরছ করেছেন এবং লুটের টাকায় লন্ডনে আরাম আয়েশে জীবন কাটাচ্ছে ছেলে,পরিকল্পনা তাঁর নীজেরও। সুতারাং অতীত ঐতিয্যের পথে বাঁচার চেষ্টা করা ছাড়া উপায় নেই। তাই জড়ো করলেন আবার বাবা -স্বামী জিয়ার ক্ষমতা গ্রহনের সুত্র মত সব শ্রনীর জঙ্গী,বোমাবাজ,ডানবাম,নাস্তিক, মাওলানা,মৌলভী।সব চেষ্টা বাংলার জনগন রুখে দেয়ার পর আবার ভিক্ষার ঝুড়ি নিয়ে জাতির জনকের কন্যার নিকট উপস্থিত হতে দেখে কলম হাতে বসতে বাধ্য হলাম। জাতির জনকের পরিবার সকল সম্পদ,স্ব-পরিবারের রক্ত ঢেলে দিয়ে মাথা গোজার ঠাঁইয়ের জন্য রাষ্ট্র থেকে একটা বাড়ী চেয়ে নিয়েছিলেন।অহংকারী অথর্ব,বাংলার মীরজাফরের পরিবার খমতায় এসে সেই বাড়ী থেকেও বের কিরে দিয়েছিল।অথছ জাতির জনকের মৃত্যুরপর এক রিকাশাওয়ালা দুই বোনের থাকার জন্য নীজের সঞ্চিত টাকায় একখন্ড জায়গা কিনে রেখেছিলেন অনেক আগেই।কেউ জানতোনা। পারিবারিক ঝগড়ার একপয্যায় সাংবাদিক সেই ঘটনা আবিস্কার করে।নেত্রী ঐ বাড়ী ভালবাসার নিদর্শনের প্রতিদানে সেই পরিবারকেই ঘর তোলে মাথা গোঁজার ব্যাবস্থা করে দিয়েছেন। রাজনীতির ভাগ্যের অমোঘবিধানে আজকে জাতির জনকের কন্যাদ্বয়ের মাথাগোজার ঠাঁই সারা বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু পাগল কোটি জনতার ঘরে,আর যারা বের করেছিল রাষ্ট্রীয় বাড়ী গাড়ী দখল করেছিল,সম্পদ লুট করে রাতারাতি চেড়াগেঞ্জী,ভাঙ্গাস্যুটকেস ভরে তুলেছিলেন ভোগের আশায়,। তাঁরাই একে একে দেশান্তরী হয়ে নতুন নতুন ষড়যন্ত্রে মেতে উঠছেন। @না!!! @ ভাবার কোন কারন নেই, রাষ্ট্র তাঁদের যেতে বাধ্য করেনি,আত্মহমিকাই তাঁদের নিয়ে যাচ্ছে একের পর এক বিদেশ বিভুঁইয়ে।মৃত্যুর কোলে সঁপে দিচ্ছেন অজানা অচেনা জনপথে।ইহাই মনে হয় বিধাতার শাস্তি,ইহাই মনে হয় পবিত্র কোরানে আল্লাহ ঘোষিত পৃথিবীর দোজগ,উদাহরন হয়ে থাকার জন্য আল্লাহপাক মাঝে মাঝে দেখান।

নব্য জঙ্গীদের আই,এসের নামে নতুন ৩৪জনের নামের তালিকা প্রেরন,মৃত্যু পরওয়ানা জারী,প্রসাশন নির্বিকার

ছবি

জিয়া পরিবারের রোষানলের আগুনে দগ্ধ বেগম জিয়ার রাজনীতির যবনিকাপাত-- ================================= এই প্রথম বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোন বড় দল থেকে উপদল বা মুল দলকে বিভক্ত করে নতুন দল সৃষ্টি হতে যাচ্ছে।গনতান্ত্রিক রাজনীতিতে দল পরিবর্তন করে অন্য দলে যোগ দেয়া বা নতুন দলের আত্মপ্রকাশ ঘটানো অপরাধের পয্যায়ে পড়েনা, যদিনা আদর্শিক বিভেদ, দর্শন গত অমিল, কর্মসুচির দ্বিমত ইত্যাদির কারনে হয়ে থাকে।অতীতে স্বৈরাচারী সরকার সমুহ রাষ্ট্রের শক্তি ডি,জি,এফ,আই কে ব্যাবহার করে লোভী নেতাদের লোভের মুলা ঝুলিয়ে,আদর্শিক নেতাদের বল্প্রয়োগ করে নতুন দলের জম্ম দিতে দেখা গেছে।কোন কোন সময়ে হার না মানা নেতাদের হত্যা করে প্রতিশোধ নিতেও দেখা গেছে।যেমনটি ৭৫এর ৩রা নভেম্বর জেল খানার অভ্যন্তরে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে মোস্তাক সরকার ভবিষ্যতের সম্ভাব্য কাঁটা পরিষ্কার করে খমতা পাকাপোক্ত করতে গিয়ে মাত্র তিন দিনের মাথায় খমতা ত্যাগ করে ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হতে হয়েছে।যাক সেই কথা,আজকে আমার বিষয় তাই নয়,আলোচনা করতে চেয়েছিলাম দল ভাঙ্গা নিয়ে সেখানেই সীমাবদ্ধ থাকি। দৃশ্যমান না হলেও পর্দার আড়ালে দল ভাঙার রাজনীতি অনেকটা জোরেশোরেই সক্রিয় হচ্ছে। বলা যায়, সাজঘরের প্রস্তুতি শেষের দিকে। লক্ষ্য নতুন বছরের জানুয়ারি মাস। প্রস্তুতি সফল হলে সময়টা রাজপথের প্রধান বিরোদী দল বিএনপির জন্য আরও কঠিন হবে নিশ্চিত ভাবে বলা যায়। এই যখন অবস্থা, তখন এক সময়ে যারা কথিত কিংস পার্টির স্বপ্নে বিভোর ছিলেন, সহসা খমতা পাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন তাদের মধ্যে অনেকে নতুন ভাবে স্বপ্নে বিভোর হতে শুরু করেছেন। তবে রাজনীতি নিয়ে এমন ঘাত-প্রতিঘাতের অংকের পরিণতি অতীতে ভাল হয়নি এমনটি যারা বলে আসতেন তাঁরাও এবং অভিজ্ঞ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকে, এবারের বিষয়টিকে একটু গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন। তারা বলছেন, যদিও দল ভাঙার অপরাজনীতি করে অতীতে কেউই সফল হয়নি, তারপরও এবারের দল ভাঙ্গার প্রেক্ষাপট ভিন্ন রকম। এবার যারা দল ভেঙ্গে নতুন দল গড়বেন তাঁরা বৃহৎ রাজনৈতিক দলের সন্ত্রাস,বোমা বাজি,জঙ্গী পৃষ্টপোষকতা,প্রধান নেত্রীর রাজনৈতিক অনভিজ্ঞতা,প্রধান মন্ত্রীর পদে থাকাকালীন পারিবারিক লুটপাট,তারেকের অতিরীক্ত বাড়াবাড়ি,যোগউপযোগি কর্মসুচি প্রনয়নে ব্যর্থতা,দলীয় কর্মকান্ডে পারিবারিকিকরন,খালেদা জিয়ার পরিবারকে দুর্নীতির দায় থেকে রক্ষা করার জন্য বি,এন,পি,দলকে ন্যাক্কারজনক ভাবে ব্যাবহার,জামায়াতের উপর নির্ভরশীলতা,গনতান্ত্রিক আন্দোলনে হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশে বিদেশে উপহাসের পাত্রে পরিনত করা দলকে ইত্যাদি নানাহ অভিযোগের পাহাড়ের উপর ভর করে দল দ্বিখন্ডিত করার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ফেলেছেন বলে অভিজ্ঞমহল দ্বিধাহীন ভাবে উপলব্দি করছেন। অতীতে দল ভাঙ্গা যদিও নিন্দার কারন হয়ে জনগন থেকে নেতারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতেন,এবারের ব্যাপারটা তাঁর ঠিক উলটো হবে মনে করছে অভিজ্ঞরা। কেননা, মাইনাস ফর্মুলা থেকে শুরু করে অতীতে যারা যখন দল ভাঙার খবরের জন্ম দিয়েছেন তারা কেউ জনগন কতৃক ধিক্কার ছাড়া প্রসংশা পাননি,যাহা আশা করে বের হয়েছিলেন নতুন দলের জম্ম দিয়েছিলেন লাভ কিছুই হয়নি।জনগনের কাতারে কেউই দাঁড়াতে পারেননি। এবার সে রকম কিছু মনে করার কোন কারন নেই। যেহেতু জাতীয় স্বার্থে দল ভেঙ্গে নতুন দল গড়ার প্রত্যয়ে এবারের উদ্যোগ।ভাঙ্গার প্রক্রিয়া যদি ঘটে যায় তখন তা শক্ত ভীত পেয়ে গেলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না। এক টানা দ্বিতীয় মেয়াদে অনেকটা শক্তিশালী অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের মতো একটি বৃহৎ দল সরকারে রয়েছে।বাংলাদেশের ইতিহাসে গনতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে এইবারেই বিপুল জনপ্রিয়তা নিয়ে কোন দল বাংলাদেশের ক্ষমতার মসনদে অনেকটা নিশ্চিত ভাবেই রয়েছেন।এমনটি দ্বিতীয় বার ক্ষমতা উপভোগ করতে অতীতে কখনও কোন দলকে দেখা যায়নি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, দল এবং জোট শেষ অংকে কি হবে তা নিয়ে হয়তো এখনই কিছু বলা না গেলেও অচিরেই ধারনা পাওয়া যাবে । জানুয়ারী মাসের মাঝামাঝি সময়ে বিএনপির বিপরীতে আর একটি বিএনপি অবস্থান নিলে রাজনৈতিক অঙ্গন খানিকটা ঘোলাটে হওয়ার আশংকা রয়েছে। ভোটের হিসেবের মধ্যে বড় একটা উত্থান পতন ঘটবে। পরিস্থিতির কারণে অনেকে নতুন পতাকাতলে সমবেত হবেন,শুনা যায় আওয়ামী লীগের সংষ্কার পন্থি হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার কারনে দলে এবং সরকারে কোনঠাসা নেতারাও নতুন প্রক্রিয়ায় সামিল হচ্ছেন।উল্লেখ্যযে জাতীয়তা বাদী দল ও তাঁর জোট শরিক থেকে যারা বেরিয়ে আসছেন তাঁরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হিসেবে বি,এন,পিতে পরিচিত ছিলেন বলে জানা যায়।সে কারনে নাকি আওয়ামী লীগের বঞ্চিত নেতারা শামিল হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ ব্যাপারে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আমরা ইতিহাস থেকে কোনো শিক্ষা গ্রহণ করি না। কিন্তু অনৈতিকতার পরিণতি ভয়াবহ। আমি আশা করি, সবারই শুভ বুদ্ধির উদয় হবে।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. মাহবুবুর রহমান বলেন, বিএনপিকে কেউ কোনোদিন ভাঙতে পারবে না। এমন চেষ্টা অতীতেও সফল হয়নি। তবে তিনি মনে করেন, এখন আবার নতুন করে যারা চেষ্টা করছেন তাদের পেছনে প্রভাবশালী কোনো না কোনো পক্ষের হাত থাকতে পারে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ‘আমরা ভাঙা-গড়ার রাজনীতি করি না। যদি কেউ বিএনপি থেকে বেরিয়ে যায় তার জন্য তো সরকার দায়ী নয়।’ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বর্তমান প্রধান মন্ত্রী আগেভাগে সাংবাদিক সম্মেলনে বলে দিয়েছেন কোন রাজনৈতিক দলের নেতাদের আওয়ামী লীগে ঠাঁই হবেনা।তাঁর এই কথাটি সর্বমহলে প্রসংশিত হয়েছে।অভিজ্ঞরা মনে করেন বি,এন,পি জামায়াতের বেশ কিছু নেতা আওয়ামী লীগে যোগ দেয়ার জন্য বিভিন্ন মহলে জোর তদ্বির চালানোর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এই ঘোষনাটি দেন।এতে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর শক্তিশালী বিরুদী দল থাকা গনতন্ত্রের অপরিহায্য শর্তের প্রতি তাঁর অঙ্গিকারের বাস্তব পদক্ষেপ বলে অনেকে মন্তব্য করছেন। সাম্প্রতিক সময়ে হঠাৎ করে গুপ্তহত্যা বেড়ে যাওয়ায় দল ভাঙার গোপন প্রক্রিয়ার পালে জোরেশোরে হাওয়া লেগেছে। একদিকে এসব ষড়যন্ত্রমূলক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরকার যেমন উদ্বিগ্ন, তেমনি এ উদ্বেগ থেকেই রাজনীতির অন্দর মহলে শুরু হয়েছে নানা তৎপরতা। দুই বিদেশী হত্যাকাণ্ডের পর থেকে রাজনীতির পটভূমি তৃতীয় কোনো পক্ষ ঘোলাটে করতে অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে,ধারনাটি স্পষ্টতা পায়। একইসঙ্গে এ ধরনের স্পর্শকাতর হত্যাকাণ্ডে বিএনপির যোগসূত্রতার খবর প্রকাশিত হওয়ায় দলের নেতারা যারপরনাই নার্ভাসনেস অনুভব করা শুরু করেছেন। এমনিতে অবরোধে মানুষ পুড়িয়ে মেরে কঠিন বিপর্যয়ের মধ্যে আছে দলটি।গুপ্ত হত্যায় শামিল হয়ে আরও বেকায়দায় পড়বে, তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। সরকার বাধ্য হয়ে অনিচ্ছা সত্বেও কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিটা দেয়ার মতো বিএনপিকে গুপ্ত হত্যার ঘটনায় কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাস্তবিক অর্থে এমন দুঃসময়ে দল ভেঙে যাওয়ার খবরে বিএনপির জন্য ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে বিপাকের শেষ সীমায় পৌছাবে দলটির নেত্রীর পরিবার এবং দলটিকে। এ মুহূর্তে সরকারের রাজনীতির কৌশলগত দিক হচ্ছে বিএনপিকে শক্তিহীন করে রাখা,কোন অবস্থায় নীজের ঘাড়ে দোষ নিয়ে নহে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সেই দিকেই হাঁটছেন মনে হচ্ছে।নয়তো দলে নতুন কোন লোক যোগদানে কঠোর নিষেদাজ্ঞা দেয়ার কারনই বা কি?জামায়াতের মত কট্রর আওয়ামী বিরুদীদের দলে নিতে পেরেছেন- বি,এন পির মুক্তিযোদ্ধা অংশকে নিতে আপত্তি কোথায়? সরকার এই মহুর্তে ইচ্ছে করলে দলের ভাঙ্গনকে ত্ব্ররান্বিত করে দিতে পারতেন।তাঁদের অজস্র নেতার বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগে দায়েরকৃত পুরনো মামলাগুলো কাজে লাগানোর পাশাপাশি তাদের সব ধরনের সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক যোগাযোগের ওপর বিধি নিশেদ আরোপ করতে পারতেন,যেহেতু গুপ্ত হত্যায় জড়িত থাকার বহু প্রমান ইতিমধ্যে সরকারের হাতে এসে পৌছে গেছে। ২০ দলীয় জোটে বিভক্তি বা দলটির মধ্যকার দ্বন্দ্বকে কাজে লাগিয়ে, তাদের মধ্যে ভাঙন সৃষ্টিতে সক্রিয় উদ্যোগও নিতে পারতেন। সরকার আপাত সেই দিকে নজর না দিয়ে স্বাভাবিক ভাঙ্গনকে উৎসাহিত করার চিন্তায় মগ্ন।প্রধান মন্ত্রী কাউকে দলে নিবেননা, ঘোষনাটি বি,এন,পি ভাঙ্গনের ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চিত হয়েই দিয়েছেন বলে অভিজ্ঞমহল মনে করেন।দল ভাঙ্গনের কালচারে সামিল না হওয়ায় এবং নাম সর্বস্ব নেতাদের দলে না ভিড়ানোর ঘোষনায় প্রধান মন্ত্রী সর্বমহলের প্রসংশায় প্রসংশিত হচ্ছেন। এদিকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের দণ্ড কায্যকরের দিনক্ষন এগিয়ে আসছে। ঘাতকদের অনুসারীরা বেপরোয়া হয়ে দেশে অস্থিরতা তৈরিতে গুপ্তহত্যা এবং বোমা বিস্ফোরণ, নাশকতার পথ বেছে নিয়েছে। বিএনপি-জামায়াত সরাসরি এসব ঘটনার পেছনে রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণে সরকারের নীতিনির্ধারকরা নিজেদের মধ্যে দফায় দফায় আলোচনা করছেন। এ আলোচনায় বিএনপি ও জামায়াতের অতীতের নাশকতার মামলার আসামীদের গ্রেপ্তার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সরকার মনে করে পুরাতন মামলার আসামীদের গ্রেপ্তারের কৌশলে গুপ্ত হত্যার পরিস্থিতির উন্নতি করা সম্ভব হবে। সরকার মনে করে বাস্তবতার আলোকে ২০ দলীয় জোটের পরিধি রাজনৈতিক কারনেই সংকুচিত হতে বাধ্য।তাছাড়া বিএনপি ও জামায়াতের ভেতরের নেতৃত্ব পয্যায়ে মানবতা বিরুধি অপরাধের বিচারের রায়ের পর হরতাল দেয়া বা সমর্থন করা নিয়ে যে দ্বন্দ্ব আছে সেই দ্বন্ধেই জোট সংকোচিত হবে,শুধু সময়ের ব্যাপার।সুতারাং দলে জায়গা দিয়ে বা প্রেসার সৃষ্টি করে জোট ভেঙ্গে স্বৈরাচারী সরকার সমুহের পথ অনুসরন করার কোন প্রয়োজন আছে বলে আওয়ামী লীগ বা দলের নেত্রী শেখ হাসিনা মনে করেন না। অবশ্য এর আগেই ২০ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে এসেছেন বিএনপির পুরনো মিত্র শেখ শওকত হোসেন নিলু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন বিএনপির সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা,বিভিন্ন সভা সমাবেশে প্রধান মন্ত্রীর প্রসংশা করে বক্তৃতা বিবৃতিও দিচ্ছেন প্রায়ই। কিন্তু প্রধান মন্ত্রী তেমন কোন উৎসাহ এ পয্যন্ত দেখিয়েছেন তেমন প্রমান পাওয়া যায় না তাঁর ব্যাপারে। অপরদিকে সাবেক এমপি শহিদুল হক জামাল ও আবু হেনা নতুন বিএনপি গড়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন অনেক আগে থেকেই। বিএনপির সাবেক এ দুই নেতা দলটির সংস্কারপন্থী নেতাদের সংগঠিত করার পাশাপাশি বর্তমানের মুক্তিযোদ্ধা অংশকেও সংগঠিত করে বড় আকারে রাজনৈতিক দল গঠনে জোর তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন। জানা গেছে, বিএনপির সাবেক এই দুই নেতা সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে যোগ দেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন,প্রধান মন্ত্রী সরাসরি তাঁদের না করে দিয়েছেন।ঘটনাটি প্রায় ৭/৮ মাস আগেই ঘটেছিল।সেই দুই নেতাই আরো শক্তি সঞ্চয় করে দলে এবং জোটে ভাঙ্গন প্রক্রিয়ায় সম্মুখে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। আবুহেনা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমকে এবং কি জনসভায় ও বলেন,দলের বহু নেতাকর্মী নেত্রীর হঠকারী কর্মসুচি এবং পরিবার রক্ষার আন্দোলনে নাশকতার অভিযোগে জেলে রয়েছেন। তাঁরা প্রথম দিকে না বুঝেই খালেদা জিয়ার হঠকারি কর্মসুচিতে শামিল হয়েছিল।তাদের মুক্ত করতে আমাদের সংগ্রাম করতে হবে,নিয়মতান্ত্রিক ভাবে,গনতন্ত্রের সজ্ঞা অনুযায়ী আন্দোলন করতে হবে। তিনি জানান, সবাইকে নিয়ে জানুয়ারির মধ্যে বড় আকারের কনভেনশন করে সেখানে নতুন নেতা নির্বাচন করা হবে।অভিজ্ঞমহলের ধারনা বিকল্প ধারার বর্তমান নীরবতায় প্রমান করে তাঁরাও নতুন দলেই শামিল হবেন। বিকল্প ধারার মাহী বি. চৌধুরী সরকারের ঘনিষ্ঠ মহলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে সফল না হওয়ায়,এবং কর্নেল অলির লন্ডনে খালেদার সাথে বৈঠক করার কারনে বি,এন,পিতে শামিল না হয়ে নতুন বি,এন,পিতে শামিল হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে অনেকেই মনে করেন। যদিও বি. চৌধুরীর বি,এন,পি বা খালেদার প্রতি দুর্বলতা এখন ও রয়ে গেছে এবং বি,এন, পিতে ফিরে যাওয়ার পক্ষে। ছেলে মাহী ভবিষ্যত বি,এন,পি রাজনীতির অসারতার কথা চিন্তা করে নতুন বি,এন,পিতে যোগদান অথবা জোট গঠনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বলে জানা গেছে। এর বাইরে ২০ দলীয় জোটের ছোট ছোট রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নতুন বি,এন,পির যোগাযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে। দেশের বুদ্ধিজীবি ও সুশীল সমাজের একটা অংশের পক্ষ থেকে তাদের ভুল রাজনীতি থেকে সরে আসার জন্য অনুপ্রানিত করা হচ্ছে। লন্ডনে অবস্থানরত জামায়াত নেতা ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকের অস্বাভাবিক নীরবতার পেছনেও ঠিক একই রাজনৈতিক কারণ রয়েছে বলে খোদ দলটির নেতাকর্মীরা মনে করেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিয়াউর রহমানের ভাই আহমেদ কামাল নতুন বি,এন,পির সাথে থাকবেন এবং গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা পালন করবেন বলে জানা গেছে।খালেদা জিয়া দলের নেত্রী হওয়া অবদি জিয়া পরিবারের সাথে তেমন একটা ভাল সম্পর্ক রাখেননি তা আগেই পত্রপত্রিকায় জানাজানি ছিল। জিয়ার মৃত্যুর পর ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী না চলাকে তাঁর শশুরবাড়ীর মানুষ ভাল চোখে দেখেননি কখনও। স্বামীর মৃত্যুর পরে একদিনের জন্যও শশুর বাড়ী যাননি বলেও অভিযোগ করেন জিয়ার পরিবার।স্বাধীনতা যুদ্ধের পর শশুর বাড়ী বেড়াতে গেলে বাড়ীর লোকেরা এবং প্রতিবেশীরা বিরুপ মন্তব্য করায় খালেদা শশুর বাড়ীর পথ মাড়াননি বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন। আজকে ইহাই কাঁটা হয়ে জিয়ার আদর্শের উপর বড় ভাগ বসাতে উদ্যোগি হয়েছেন বলে বিশ্লেষকদের ধারনা। জিয়ার ভাই নতুন বি,এন,পি দল আত্মপ্রকাশের প্রাথমিক সব কাজ ইতিমধ্যে সমাপ্ত করে রেখেছেন। তারেক লন্ডন থেকে কাকাকে নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন বলেও জানা গেছে।খালেদা পন্থি বি,এন,পি নেতাদের মাথাব্যাথার বড় কারনই হচ্ছেন জিয়ার ভাই,সে যদি মাঠে নেমে আদিবৃত্তান্ত প্রকাশ শুরু করে, তবে খালেদার বাকী ইমেজ ও নষ্ট হতে সময় লাগবেনা বলে তাঁদের বদ্ধমুল ধারনা।বিষয়টি খোদ খালেদাকেও ভাবিয়ে তুলছে বলে জানা গেছে।এ ছাড়া আহমেদ কামালের মিলাদ মাহফিলকে তিনি ধর্মীয় অনুষ্ঠান বলে মন্তব্য করলেও রাজনীতিতে অভিজ্ঞমহল মনে করেন, ফুল ফোটার আগে ছিড়ে ফেলার আশংকা থেকেই তিনি কথাটা বলতে পারেন। রাজনীতিতে তিনি কেবল অনভিজ্ঞ নন।জিয়ার মতই আহমেদ কামাল সূযোগ সন্ধানী আগে থেকেই।বেগম জিয়ার এমন সংকটময় অবস্থার জন্য তিনি এতদিন অপেক্ষায় ছিলেন।অবশ্য জিয়ার হঠাৎ মৃত্যুর পরও ভিতরে ভিতরে চেষ্টা করেছিলেন, ভাইয়ের ইমেজকে কাজে লাগিয়ে রাজনীতিতে উত্থিত হওয়ার।সেই চেষ্টা কয়েক সিনিয়র নেতার কারনে প্রাথমিক পয্যায় বাধাগ্রস্থ হওয়ায় শেষাবদি চুপসে যান।শমসের মবিন চৌধুরীর সরে যাওয়ার বিষয়ে মাহবুবুর রহমান বলেন, তিনি অসুস্থতাজনিত কারণ দেখিয়েছেন।অভিজ্ঞ গন এই কথাটিতে আস্থা না রেখে বলেন, বর্তমানের গুপ্ত হত্যায় জড়িয়ে পড়ায় বি,এন,পি দেশে বিদেশে সমালোচনার ঢেউ উঠার আগেই তিনি সরে গেছেন। আন্তজাতিক কানেকশান সম্পর্কে শমসের মবিন অনেক কিছুই জানেন।তিনি বেগম জিয়ার ঘনিষ্টজনদের মধ্যে অন্যতম একজন।স্বাভাবিক ভাবেই তিনি জানেন খালেদার বর্তমান কানেকশান কোথায় কোথায় আছে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় থেকে দুর্নীতি, সন্ত্রাস এবং জঙ্গি লালন করেছে। ক্ষমতার বাইরে গিয়েও তারা একই কাজ করছে। জঙ্গিদের লালন-পালন এবং আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে, রাজনীতির নামে পেট্রলবোমা দিয়ে মানুষ হত্যা করছে। এতে তারা যেমন জনগণের কাছে অজনপ্রিয় হয়েছে, তেমনি নিজ দলের নেতাকর্মীদের আস্থাও হারিয়েছে। এরকম অবস্থায় দলটিতে ফাটল ধরার যথেষ্ট কারণ তৈরি হয়েছে। পরিশেষে বলা যায়,জিয়া পরিবারের রোষানলের আগুনে দগ্ধ বেগম জিয়া রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে বিতাড়িত হয়ে স্বেচ্ছায় স্ব-পরিবারে নির্বাসনের পথ বেচে নিতে পারেন।এবারের লন্ডন যাত্রা বেগম জিয়ার রাজনীতির সমাপনি বিদেশ সফর হলে আশ্চায্য হওয়ার কিছুই থাকবেনা।

ছবি
ছবি

ড. কামাল হোসেনের চোখে পানি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম. =================================== (সংগৃহিত) ৫০ বছরের কম হবে না, দেশের সেরা আইনবিদ ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে জানাশোনা, ওঠাবসা। তবে প্রথম কখন, কোথায় দেখেছিলাম দিনক্ষণ ঠিক করে বলতে পারব না। তিনিও আমায় কখন, কোথায় দেখেন জানার চেষ্টা করিনি। ১৬-১৭ জানুয়ারি, ’৭২ থেকে জানাজানি, ওঠাবসা চলছে। খুব সম্ভবত এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ, তিনি তখন মন্ত্রী। দেশের খাদ্য ঘাটতি নিয়ে শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর কাছে লেখা বঙ্গবন্ধুর ছোট্ট একটি চিঠি নিয়ে দিল্লি গিয়েছিলাম। সেই বিমানে ড. কামাল হোসেনও ছিলেন। তিনি একটু আগে, আমি পেছনে, কোনো কথা হয়নি। শিখ নেতা ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শরণ সিং তাকে বিমানের সিঁড়ি থেকে নিয়ে গিয়েছিলেন। আমাকে নিয়ে যান বাংলাদেশ অ্যাম্বাসির এক প্রথম সচিব। উঠেছিলাম লোদি হোটেলে। তিন বেডের রুমের ভাড়া ছিল ১২০ টাকা। আমরা তিনজন পাসপোর্টে ৬০০ ডলার নিয়ে গিয়েছিলাম। তখন ডলারের দাম ছিল ৬.৫০ টাকা। তাই লোদি হোটেলের ভাড়াটা খুব বেশি মনে হয়েছিল। পরদিন সকালে আমাদের প্রথম রাষ্ট্রদূত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জনপ্রিয় ভাইস চ্যান্সেলর এ আর মল্লিক হোটেলে ছুটে আসেন। আমি তার কাছে তখন ছোট্ট শিশু। তিনি যখন সন্তানের মতো আমায় ঝাপটে ধরেন তখন আমি পিতার আলিঙ্গনের স্বাদ পাই। তিনি তখনই তার ৯ নম্বর বসন্ত বিহারের বাড়িতে নিতে চেয়েছিলেন। বার বার তার স্ত্রীর কথা বলে বলছিলেন, তোমার আম্মা তোমার জন্য অপেক্ষায় আছে। আর এখানে তোমার থাকা হবে না। ত্রিপুরা গভর্নমেন্ট তোমাকে তাদের অতিথি ভবনে রাখতে চায়। তুমি রাজি হলেই হলো। রাজি হয়েছিলাম। না হয়ে উপায়ও ছিল না। কারণ সবকিছু উপেক্ষা করা গেলেও মানুষের আন্তরিকতা উপেক্ষা করা যায় না। পরদিন ভারতের মহীয়সী নারী প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে দেখা। আমি তো তখনো ছোট। মুক্তিযুদ্ধের অবদান মহিমা তার কিছুই আমায় স্পর্শ করেনি। ইন্দিরাজির ১ নম্বর ছফদর জং-এর বাড়ির বারান্দায় আমাকে গ্রহণ এবং কথাবার্তা শেষে বিদায় দিয়েছিলেন। সে সব এখন ভাবা যায় না। ভাবলেই কেমন লাগে। তখন লোকসভার বৈঠক চলছিল। জীবনে প্রথম লোকসভায় গিয়েছিলাম। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী, নাম মনে নেই ইন্দিরাজিকে বঙ্গবন্ধুর খাদ্য সমস্যা নিয়ে লেখা চিঠি প্রসঙ্গে সংসদকে জানাতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে তার দেশের খাদ্য সংকটের কথা জানিয়েছেন। আমি সংসদের পক্ষ থেকে প্রস্তাব করতে চাই, ক’দিন আগে বাংলাদেশের মুক্তির সংগ্রামে আমরা সহযোহিতা করেছি, রক্ত দিয়েছি, বাংলাদেশে আমাদের ভাইয়েরা যদি একবেলা না খেয়ে থাকে আমরাও থাকব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের জন্য যত খাদ্যের প্রয়োজন আপনি পাঠান।’ হাউসে দর্শকের গ্যালারিতে বসে আমার চেয়েও উঁচু মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর সেদিনের বক্তব্যে আমার হৃদয়ে নাড়া দিয়েছিল। তখন ভারতও ছিল খাদ্য ঘাটতির দেশ, তারপরও যে আবেগ তিনি ব্যক্ত করেছিলেন আমরা অনেক দিন তার মূল্য দিতে পারিনি। এখন কি পারছি? না, এখনো না। কোনো নতজানু নীতি কৃতজ্ঞতা হতে পারে না, বন্ধুত্বের প্রতিদান নয়। যাক, ওসব নিয়ে পাঠকদের সামনে আরেক দিন হাজির হব। আজ ড. কামাল হোসেনকে নিয়ে এগোতে চাই। তাও পূর্ণ নয়, একটি খণ্ডচিত্র তুলে ধরতে মন আকুলি বিকুলি করছে। ড. কামাল হোসেন মস্তবড় মানুষ, আমাদের অহংকার, দেশের গৌরবের প্রতীক, বাঙালি জাতির মালার লকেট। তাকে হয়তো কিছুই দিতে পারিনি, তিনিই দিয়েছেন। মানুষ অসুস্থ হলে যেমন ডাক্তারের কাছে যায়, তেমনি আইনের প্রয়োজনে শতবার তার কাছে গেছি কখনো বিমুখ করেননি। এখন তার বয়স হয়েছে, আমারও হয়েছে। ঘন ঘন যাতায়াত না থাকলেও তার প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধার কোনো ঘাটতি নেই। সমস্যা, তিনি খুবই উচ্চ শিক্ষিত, ধ্যানে-জ্ঞানে জগদ্বিখ্যাত। আমি তার সম্পূর্ণ বিপরীত। সে জন্য মনের মিল থাকলেও প্রকাশ্যে অবশ্যই অমিল আছে। আমি ভালো মনে করে যা বলি, তিনি অনেক সময় তাকেই খারাপ মনে করেন। এ ছাড়া একজন মানুষ হিসেবে তার প্রতি যে আমার অপরিসীম সম্মান বোধ রয়েছে, আমার প্রতি তার অপার স্নেহ ভালোবাসা- এসব জানাজানির কোনো অভাব নেই। তাই সেদিনের ছোট্ট একটি ঘটনা তুলে ধরছি। পাঠক জানেন, টাঙ্গাইল-৪ কালিহাতীর উপনির্বাচনে আমি প্রার্থী হয়েছিলাম। সোনার বাংলা প্রকৌশলিক সংস্থা (প্রা.) লি. নামে আমাদের ছোট্ট একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ছিল, যা প্রায় ১০ বছর কোনো কাজ করতে পারে না। কারণ স্বাধীন দেশে মুক্তিযোদ্ধারা সবসময় হয় বঞ্চিত। ১২-১৩ বছরে অগ্রণী ব্যাংক থেকে আমরা ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। সেই সময় ব্যাংকের হিসাব মতো ৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা সুদ ও অন্যান্য চার্জ দিয়েছি। এরপরও এক সময় ব্যাংক সুদ-আসল ধরে হিসাব করে দেখেছে তাদের পাওনা ৩ কোটি ১৯ লাখ। আগস্ট মাস আমার জন্য বেদনার মাস। সেই মাসেই ঋণটি ফয়সালা করার জন্য আবেদন করেছিলাম। আমরা প্রায় ৫ বছর যাবৎ সমুদয় সুদ মওকুফ করে এককালীন সমন্বয়ের আবেদন জানিয়েছি। কতজনের কত ঋণের সমুদয় সুদ মওকুফ করেছি, সরকারের সঙ্গে বনিবনার অভাবে আমাদেরটা হচ্ছে না। সর্বশেষ চিঠির প্রেক্ষিতে তারা এক লম্বা ফিরিস্তি দিয়ে ৮ কোটি ৪ লাখ টাকা মওকুফ দেখিয়ে ১০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ১০% সুদে ১০ বছরে পরিশোধের জন্য সুবিধা দিয়েছিল। সেই হিসাবে অগ্রণী ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেয়। চিঠি পেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের সিআইবি ডাটাবেজ থেকে সোনার বাংলার নাম প্রত্যাহার করে নেয়। যে ব্রাঞ্চ ঋণ দিয়েছিল, সে ব্রাঞ্চ ঋণটি পুনঃতফসিলের মাধ্যমে বিশ্রেণিকরণসহ ১০% সুদে ১০ বছরে শোধের সুবিধার কথা ধন্যবাদের সঙ্গে জানিয়ে দেয়। হায়রে সুবিধা! অর্থ আইনে আছে, কোনোমতেই কোনো ব্যাংক আসলের ওপর দ্বিগুণের বেশি সুদ নিতে পারবে না। আমরা মুক্তিযোদ্ধা বলে আমাদের ওপর ৬-৭ গুণ। কী আজব কাণ্ড! কারও যদি ফাঁসি হয় সেও ভালো। কিন্তু এখন দেখছি ১০ বছর আমরা আর কোথাও থেকে ঋণ সুবিধা পাব না। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে জড়িতরা ১০ বছর কোনো নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবে না- এর চেয়ে ফাঁসি কি ভালো নয়? এর মাঝে ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি শ্রী প্রণব মুখার্জির স্ত্রীর শ্রাদ্ধে যোগ দিতে দিল্লি গিয়েছিলাম। সেখানে থাকতেই বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকী সংসদে এক আবেগময়ী ভাষণ দিয়ে পদত্যাগ করেন। তারও সপ্তাহখানিক পর দেশে ফিরে মাটিতে পা রাখতে না রাখতেই কালিহাতীর উপনির্বাচন নিয়ে হাজারো প্রশ্নের সম্মুখীন হই। পরে বলব বলে বলে একেবারে নাস্তানাবুদ হয়ে যাই। তারপর বাবা-মার কবর জিয়ারতে গিয়ে আরও চাপে পড়ি। রাজনৈতিক দল হিসেবে যে কোনো উপনির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত ৫ জানুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচনের পরপরই নেওয়া হয়েছিল। তাই বলেছিলাম, আমাদের দল কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ এই নির্বাচনে অংশ নেবে। শুরু হয় ১৪ দল থেকে মনোনয়ন নেওয়ার এক মহা পাঁয়তারা। আমাকে লোকেরা যতই সংগ্রামী ভাবুন, তেমন প্যাঁচপুচ বুঝি না। ১৪-দলীয় জোটের সরকার, তাদের হয়ে নির্বাচন করতে গেলে ভোট হবে কী করে? কোনো প্রার্থী না থাকলে জনগণ ভোট দেবে কাকে? আমার উদ্দেশ্য এমপি হওয়া ছিল না, এখনো নেই। আমার উদ্দেশ্য সরকারি প্রভাবমুক্ত নির্ভেজাল নির্বাচন। তাই আশপাশের কোনো প্রস্তাবে রাজি হতে পারিনি। বোকার মতো মুক্তিযুদ্ধ করেছি, বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছি, যখন প্রয়োজন ছিল তখন আলাদা দল গঠন না করে আওয়ামী লীগ এবং বোনের জন্য জীবনপাত করেছি, তারপরও জনগণের এমন বঞ্চনা দেখে বিশেষ করে মূল্যহীন ভোটারদের দেখে নিজের কথা ভাবতে পারিনি। তাই সখিপুর-বাসাইলের মানুষের বহু পরিশ্রমে অপরিসীম অÍত্যাগে ’৯৯ সালে যে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের জন্ম, সেই দলের প্রতীক গামছা নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে গিয়েছিলাম। সাধারণ মানুষের প্রতারণা বা তঞ্চকতা কোনো কোনো সময় না হয় মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু আন্তর্জাতিক স্বীকৃত কোনো অর্থলগ্নি প্রতিষ্ঠান ব্যক্তি প্রতারকের মতো করলে ছোট হয়ে আসা পৃথিবীর অর্থনীতি চলবে কী করে? মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাইয়ের দিন দেখা গেল সোনার বাংলা প্রকৌশলিক সংস্থা (প্রা.) লি.কে ঋণ খেলাপি দেখিয়ে আমার মনোনয়নপত্র বাতিলের পাঁয়তারা চলছে। রিটার্নিং অফিসারের কাছে ১২ অক্টোবর ব্যাংক এক ধারণাগত ভুল বলে চিঠি দিয়েছে। অন্যদিকে ওই ১২ অক্টোবরই বাংলাদেশ ব্যাংক অগ্রণী ব্যাংকের ১১ অক্টোবরের চিঠির কারণে সোনার বাংলা প্রকৌশলিক সংস্থার নাম পুনরায় খেলাপি হিসেবে ডাটাবেজে তুলেছে। কী তাজ্জব ব্যাপার! যে কোনো নিয়মিত ঋণী প্রতিষ্ঠানকে অনিয়মিত দেখাতে কমপক্ষে ৬ মাস সময় লাগে। অথচ আগের দিনও যে নিয়মিত ছিল, সেই প্রতিষ্ঠানকে এক দিনে বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি দেখিয়ে দিল- এর বিচার আল্লাহ ছাড়া এ দেশে কার কাছে দেব? অথচ সেই তখনই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এশিয়ায় ব্যাংকের শ্রেষ্ঠ গভর্নরের খেতাব পেলেন। আর আমাদের মতো মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে গঠিত নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের প্রতি এমন জালিয়াতি করা হলো। যাকেই জিজ্ঞেস করলাম, তারা সবাই বলার চেষ্টা করলেন এসবই নাকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করেছেন। কিন্তু আমার দুর্ভাগ্য, বিশ্বাস করতে পারলাম না। হাইকোর্টে রিটের পর সরকার আপিল করবে এটাও নাকি অ্যাটর্নি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কথায় বলেছেন এবং পরে নির্বাচন কমিশন দিয়ে আপিল করিয়ে নির্বাচন ঠেকিয়ে দিয়েছেন। বাংলাদেশ খুবই ছোট, এখন আর কথাবার্তা তেমন চাপা থাকে না। অ্যাটর্নিই হয়তো তার কদর বাড়াতে একে ওকে অমন বলেন। তাদের কেউ কেউ সে কথা আমাকে জানিয়ে খুশি হতে চেষ্টা করেন। নির্বাচনী বিধি-বিধানে উল্লেখ আছে, ‘মনোনয়নপত্র দাখিলের ৭ দিন আগে প্রার্থীকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে দায় মুক্ত থাকতে হবে। তেমনি কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানও ওই ৭ দিনের মধ্যে নতুন কোনো দায় সৃষ্টি করতে পারবে না।’ কিন্তু তারা তাই করেছে। খুব সম্ভবত রিটার্নিং অফিসার চাবি মারা থাকায় কর্তার ইচ্ছায় কর্ম করেছে। নির্বাচন কমিশনও তথৈবচ। এসব নিয়ে একজন দায়িত্বশীল, চরিত্রবান, শক্ত মেরুদণ্ডের আইনজ্ঞ যখন খুঁজছিলাম এবং খুঁজতে খুঁজতে প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলীর কাছে গিয়েছিলাম। তারই এক ফাঁকে মামলাটির একটি খসড়া করতে ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে অ্যাডভোকেট রমজান আলীর প্রয়োজন হয়। অ্যাডভোকেট রমজান আমাদের বহুদিনের প্রিয়। সারা রাত জেগেও তিনি আমাদের অনেক কাজ করেছেন। ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে অনেক দিন দেখা হয় না। তিনি যে চেম্বারে আছেন তাও জানতাম না। ১৯ অক্টোবর অ্যাডভোকেট রমজানের সঙ্গে কথা বলতে মতিঝিলে গিয়ে শুনি স্যার বসে আছেন। তার সঙ্গে দেখা হয়, অনেক কথা হয়। তিনি সানন্দে রমজানকে আরজি তৈরি করতে বলেন। আমাদের কথা চলতে থাকে। দলের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার বীরপ্রতীক ও আরও কয়েকজন পাশে বসে কথা শুনছিল। একপর্যায়ে তাদের সবাইকে বাইরে চলে যেতে বলি। তারা চলে গেলে মেডিকেলে ভর্তি নিয়ে আন্দোলনে এক মেধাবী ছাত্রীর কথা বলতে গিয়ে সংবিধান প্রণেতা, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম আইনজীবীদের একজন ড. কামাল হোসেন একপর্যায়ে কেঁদে ফেলেন। তার কান্না আমায় নাড়া দেয়। চোখে পানি না এলেও হৃদয় মন অন্তর পানিতে ভেসে যায়। তিনি বলছিলেন, ‘সারা জীবন আইন নিয়ে চলেছি। সেখানেও আর শুদ্ধতা নেই। ভালো ভালো লোক এসে বলছে, আদান প্রদান হয়। গার্মেন্টে কাজ করে লেখাপড়া করা ছাত্রী মেডিকেলে ভর্তি হতে পারবে না। সামনে এসে কেঁদে ফেলছে, তাকে কী সান্ত্বনা দেই? আপনার যে কাগজপত্র দেখলাম আগের মতো কোর্ট থাকলে ৫ মিনিটের ব্যাপার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনায়েম খানের কাছ থেকে সনদ নিতে চায়নি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছিল। আমরা তখন তরুণ শিক্ষক সুবিতা রঞ্জন পালকে দিয়ে রিট করিয়ে ছিলাম। সেখানে আমরা জয়ী হই। পাকিস্তানের প্রতি আমাদের অত পুঞ্জীভ‚ত ঘৃণা থাকার পরও সুপ্রিমকোর্টে সরকার আপিল করে। সেখানে আমরা জয়ী হলে ছাত্ররা আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়, তাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলে। পাকিস্তানেও যে বিচার ছিল, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা ছিল আজ তাও এখানে নেই। তাই যেখানে এক দিন না গেলে শ্বাস বন্ধ হয়ে আসত সেই কোর্টে আজ ৩ বছর যাই না। আপনিই ভাবুন, এটা কত কষ্টের।’ তার চোখ থেকে যখন টসটস করে পানি পড়ছিল, তখন তারই মতো আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। অনেকক্ষণ বসে থেকে নির্বাক বেরিয়ে এসেছিলাম।

বিপ্লবের বাঁশিওয়ালা সিরাজ সিকদার ও তাঁর সর্বহারা পার্টি - আরিফুজ্জামান তুহিন মুক্তিযুদ্ধ আর্কাইবস থেকে সরাসরি কপি পেষ্ট প্রিয় পাঠকদের জন্য। ~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~ ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে মুক্ত হয়ে পাকিস্তান কায়েম হয়। মুক্তি আসে না। নতুন করে শুরু হয় স্বাধীনতার জন্য দীর্ঘ প্রস্তুতি। সেই প্রস্তুতির চরম প্রকাশ ১৯৭১ সাল। এ পর্বে এসে বাংলায় নানা রাজনৈতিক সংগঠন-ব্যক্তিকে দেখা যায়, যার মধ্যে সিরাজ সিকদার ও সর্বহারা পার্টি এক অনন্য অবস্থান তৈরি করে। এ কারণে এক শ্রেণীর কাছে সর্বহারা পার্টি ও সিরাজ সিকদার একটি সংঘবদ্ধ ডাকাতদলের নাম, আর অন্য একটি অংশের কাছে সিরাজ সিকদার ও তাঁর প্রতিষ্ঠিত পার্টি একটি আদর্শের নাম। সিরাজ সিকদার বহু আগে নিহত হয়েছেন, মুজিবের শাসনামলের শেষের দিকে। আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসের গতিপথে খুব কৌশলে সিরাজ সিকদারকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে, নতুন প্রজন্মের কাছ থেকে আড়াল করা হয়েছে তাঁর রাজনৈতিক ইতিহাস; কিন্তু বাস্তবতায় আজও তিনি সমান প্রাসঙ্গিক। আগামী ২ জুন সর্বহারা পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৯৭১ সালের যুদ্ধের ময়দানে জন্ম নেওয়া এই ঐতিহাসিক দলটির জন্মদিন উপলক্ষে সিরাজ সিকদার ও সর্বহারা পার্টি নিয়ে লিখছেন আরিফুজ্জামান তুহিন ঔপনিবেশিক এলিট জাতীয়তাবাদী প্রভাবিত ইতিহাসবিদদের কাছে নিম্নবর্গের মানুষের চৈতন্য বলে কোনো কিছু ধরা পড়েনি। ফলে এ অঞ্চলে নিম্নবর্গের মানুষের যে লড়াই, তা তারা দেখতে পায়নি। শেষ পর্যন্ত শাসকশ্রেণীর ঝোলনোল খেয়ে বাড়বাড়ন্ত ইতিহাসবিদদের কাছে ইতিহাস রক্ষা না পাওয়ারই কথা_এটা আবার ইতিহাসের শিক্ষা। সিরাজ সিকদার তেমনই একজন নিম্নবর্গের ফিনিঙ্ পাখি। অনেকে তাঁকে সিআইএর চর বলেন, অনেকের মতে তিনি বাংলার চে গুয়েভারা। প্রবীণ বামপন্থীরা, যাঁদের তিনকাল পেরিয়ে এসে ঠেকেছে কালীঘাটে যাওয়ার অপেক্ষায়, তাঁরা তাঁকে নানা রকম 'মার্কসবাদী ডিসকোর্সের' অধীনে ব্যাখ্যা করেছেন। বলেছেন, এটা হঠকারী। তার পরও সিরাজ সিকদার ও সর্বহারা পার্টি এ দেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনের ইতিহাসে অনন্য, কারণ এই বাংলায় যখন সবাই চীন-রাশিয়াকে নকল করে কমিউনিজমের আন্দোলন করছেন, সেখানে সিরাজ সিকদার ভিন্ন এবং বঙ্গীয় রীতিতে কমিউনিস্ট আন্দোলনের চেষ্টা করেছেন। সমসাময়িক বাঘা কমিউনিস্টদের পুতুল বানিয়ে দিয়েছেন ক্ষমতাসীনদের অনুষঙ্গ হিসেবে। এ কারণে সাহসের যে নাম লাল তারই প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছেন সিরাজ সিকদার। চারু মজুমদারের পূর্ববঙ্গীয় উত্তরসূরি ষাটের দশক পৃথিবীর মুক্তিকামী মানুষের দশক হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছে। এ সময় পাকিস্তানের অভ্যন্তরেও বিকশিত হতে থাকে জাতীয় মুক্তির প্রশ্ন। পাকিস্তানপর্বে কমিউনিস্ট পার্টি নিষিদ্ধ থাকায় কমিউনিস্ট পার্টি মূলত আওয়ামী লীগ ও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) মধ্যে মিশে গিয়ে কাজ করতে থাকে। পাকিস্তান সৃষ্টির কয়েক বছরের মধ্যেই বাঙালিদের স্বপ্নভঙ্গ হতে থাকে। এ পর্যায়ে কমিউনিস্ট পার্টি ও বামপন্থীরা পশ্চিম পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার নানা প্রক্রিয়া হাতে নেয়। এ সময় জাতীয়তাবাদী আন্দোলনও জমে ওঠে। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার নামে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয় লে. কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেন ও তাঁর সঙ্গীদের। মামলার শেষ পর্যায় এসে শেখ মুজিবুর রহমানকে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই দশকে ভারতে এযাবৎকালের সব থেকে বড় ধাক্কা আসে সশস্ত্র কৃষক আন্দোলনের মাঝখান থেকে। ১৯৬৭ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ির ফাশিদেওয়া, নকশালবাড়ীতে ঘটে যায় এ সশস্ত্র কৃষক বিদ্রোহ। সেই বিদ্রোহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে কমিউনিস্ট বিপ্লবের পথ হিসেবে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ নেয় চারু মজুমদারের নেতৃত্বে একদল কমিউনিস্ট। পরে যাঁরা সিপিআই (এমএল) নামে পার্টি তৈরি করেছিলেন, যা ভারতীয় উপমহাদেশে নকশাল আন্দোলন নামে পরিচিত হয়েছিল। নকশালবাড়ীর সেই প্রবল জোয়ার পূর্ব পাকিস্তানেও আছড়ে পড়ে। পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টি আগেই রুশ ও চীন দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। একটি ধর্মভিত্তিক বৈরী রাজনৈতিক আবহাওয়ায় কমিউনিস্ট হিসেবে রাজনৈতিক চেতনা বিকাশের পথ তখন সহজ ছিল না, খুব কম লোকই সেই পথে এগোতে পেরেছেন। তাঁদের মধ্যে একজন ছিলনে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষের মেধাবী ছাত্র সিরাজুল হক সিকদার বা সিরাজ সিকদার। ছাত্র ইউনিয়ন মেনন গ্রুপের ছাত্র বুয়েটের লিয়াকত হল শাখার সভাপতি সিরাজ সিকদার ইতিমধ্যেই মার্কসবাদের মৌলিক জ্ঞান আয়ত্ত করে ফেলেছেন। এই বয়সেই পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টির (এমএল) সদস্যপদ পেয়েছেন। পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি (এমএল) চারু মজুমদারের সশস্ত্র কৃষি বিপ্লবের তত্ত্বকে হঠকারী হিসেবে আখ্যায়িত করল। এর প্রতিক্রিয়ায় পার্টি থেকে বেরিয়ে এলেন সিরাজ সিকদার। তিনিসহ অন্য তরুণ কর্মীরা পার্টি থেকে বেরিয়ে গঠন করলেন রেড গার্ড। ঢাকা শহর ভরে উঠল, 'বন্দুকের নলই সকল ক্ষমতার উৎস' বা 'নকশালবাড়ী জিন্দাবাদ'-এর মতো দেয়াললিখনে। সিরাজ সিকদারের নেতৃত্বে রেড গার্ড লেনিন যাঁরা ভালো করে পড়েছেন তাঁরা জানেন বিপ্লব করতে হলে বিপ্লবী তত্ত্বের প্রয়োজন পড়ে। তবে তাঁর সঙ্গে প্রয়োজন হয় বিপ্লবের রণকৌশল। লেনিন থেকে শিক্ষা নিয়ে মাও সেতুংয়ের দীর্ঘমেয়াদি সশস্ত্র গণযুদ্ধের তত্ত্বমতে গ্রাম দিয়ে শহর ঘেরাও করার মধ্য দিয়েই গড়ে উঠবে বিপ্লবী পার্টির সেনাবাহিনী, যে সেনাবাহিনী জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে এ লড়াইকে রাষ্ট্রক্ষমতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এ রণকৌশল আঁকড়ে ধরে সিরাজ সিকদার প্রথমে অন্য ভ্রাতৃপ্রতিম কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে আলাপ-আলোচনার অংশ হিসেবে মিয়ানমারে কমিউনিস্ট পার্টির সাক্ষাতের জন্য রওনা হলেন টেকনাফ হয়ে মিয়ানমারে। সেখানকার কমিউনিস্ট পার্টির নেতা থান-কিন-থাউর সঙ্গে দেখা করলেন নে-উইনের বিরুদ্ধে তাঁদের সংগ্রামের স্বরূপ জানতে। তবে মিয়ানমারের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা থান-কিন-থাউর সঙ্গে সিরাজ সিকদার দেখা করতে যাননি। তাঁদের চারজনের একটি প্রতিনিধিদল সেখানে পাঠান। সেই প্রতিনিধিদলে ছিলেন ফজলুল হক রানা। সেদিনের ঘটনা সম্পর্কে রানা কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা মিয়ানমারে গিয়েছিলাম মূলত সেখানকার কমিউনিস্ট পার্টির লড়াইয়ের কৌশল সম্পর্কে জানার জন্য। আমাদের তাঁরা ক্যাম্পে রেখে খেতে দিয়েছিলেন। অনেক বিষয় আমাদের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল সে সময়।' ফিরে এসে চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে ঘাঁটি নির্মাণে লেগে গেলেন। বাকি কমরেডদের নিয়ে লেগে গেলেন পাহাড় কেটে সুরঙ্গ তৈরিতে। বিপ্লবের স্বপ্ন নিয়ে ঘোরের মধ্যে থাকা এই বিপ্লবীদের সঙ্গী-সাথির বয়স খুবই কম। তবে মানুষ ছাড়া বিপ্লব কার সঙ্গে করবেন? অবশেষে ক্ষান্ত দিয়ে ফিরে এলেন ঢাকায়। মাও সেতুংয়ের চিন্তাধারা গবেষণা কেন্দ্র থেকে পূর্ব বাংলার শ্রমিক আন্দোলন সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতি হিসেবে পাকিস্তানের কালপর্বে ঘটে যাওয়া ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের প্রস্তুতিকাল ১৯৬৭-৬৮ সালে সিরাজ সিকদার গড়ে তোলেন মাও সেতুং থট রিসার্চ সেন্টার বা মাও সেতুংয়ের চিন্তাধারা গবেষণা কেন্দ্র। মাও সেতুং গবেষণা কেন্দ্র গড়ে তোলা হয় মালিবাগে। মালিবাগের এ বাসাটি ভাড়া নেন ফজলুল হক রানা। এ সময় পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ছাত্রসংঘের কর্মীদের আক্রমণের কারণে রিসার্চ সেন্টারটি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন সিরাজ সিকদার। তবে সিরাজ সিকদার দমে যাননি। এর পরই ১৯৬৮ সালের ৮ জানুয়ারি তিনি গড়ে তোলেন পূর্ব বাংলার শ্রমিক আন্দোলন। এ সময় তিনি তাঁর বিখ্যাত থিসিস দেন, যা পূর্ব বাংলার শ্রমিক আন্দোলনের থিসিস নামে খ্যাত। ১৯৬৮ সালের ১ ডিসেম্বর পরিবর্ধিত ও পুনর্লিখিত দলিলটি পরবর্তী সময়ে সর্বহারা পার্টি গড়ে ওঠার থিসিস হিসেবে, তাত্তি্বক ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। পূর্ব বাংলার শ্রমিক আন্দোলনের থিসিসে সিরাজ সিকদার পূর্ব বাংলাকে পাকিস্তানের উপনিবেশ হিসেবে উল্লেখ করেন। এই থিসিসেই সিরাজ প্রধান ও মূল সংঘাতগুলো (কনট্রাডিকশনস) উল্লেখ করার পাশাপাশি একটি সফল বিপ্লবের বিভিন্ন পর্যায় ও তা সম্পন্নের রূপরেখা দেন। সম্মেলনে উপস্থিত সবার অনুমোদন পায় তা। থিসিসে সিরাজ সিকদার ভারতীয় উপমহাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ সারসংকলন করেন। কেন ভারতীয় উপমহাদেশে কমিউনিস্ট পার্টি ব্যর্থ হয়েছে সে বিষয় তিনি একটি পর্যালোচনা দেন। পূর্ব বাংলার বিপ্লবের চরিত্র ব্যাখ্যা করে বলেন, 'পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে পূর্ব বাংলা একটি স্বাধীন শান্তিপূর্ণ নিরপক্ষে প্রগতিশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। এক অর্থে তিনি তাঁর পররাষ্ট্রনীতিও ঠিক করে ফেলেন। দীর্ঘস্থায়ী গণযুদ্ধ করার জন্য বাহিনী তৈরির কাজেও তিনি লেগে যান। এরপর তিনি গঠন করেন ইস্ট বেঙ্গল ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট ও ইস্ট বেঙ্গল রেভল্যুশনারি আর্মি, যা পূর্ব বাংলার বিপ্লবী সেনাবাহিনী নামেও পরিচিত। এ সময় তিনি ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে মাওয়ের স্লোগান দিয়ে দেয়াললিখন করেন। শ্রমিক আন্দোলনের কর্মীরা মাওয়ের বিখ্যাত উক্তি নিয়ে চিকা পড়ে : বন্দুকের নলই ক্ষমতার উৎস। এ সময়ের একটি ঘটনার সাক্ষী শ্রমিক আন্দোলনের কর্মী শ্রমিক আবু ইসহাক। তিনি বলেন, ভাই (সিরাজ সিকদারকে কর্মীদের অনেকে ভাই বলে সম্বোধন করতেন) আমাদের বললেন, এই স্লোগান ঢাকার বিভিন্ন ওয়ালে লিখতে। আমরা লিখতাম। একটু পরে পুলিশ এসে সারা রাত ধরে সেই স্লোগান মুছত। তখন ভাই হেসে বলতেন, এটা দিয়েই হবে।' এ সময় শ্রমিক আন্দোলনের কর্মীরা সশস্ত্র স্বাধীনতাযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে শুরু করে। বিভিন্ন জায়গায় তাঁরা গোপনে সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে থাকেন। এর মধ্যে পার্বত্য অঞ্চল হয়ে দাঁড়ায় তাদের গোপন প্রশিক্ষণের অন্যতম ক্ষেত্র। সর্বহারার হাতে তৈরি বাংলাদেশের পতাকা! শ্রমিক আন্দোলনের থিসিসের পরই শ্রমিক আন্দোলন পূর্ব পাকিস্তানের (পূর্ব বাংলা) স্বাধীনতার প্রশ্নে লড়াই শুরু করে। গ্রাম দিয়ে শহর ঘেরাওয়ের তাত্তি্বক লাইন গ্রহণ করায় এ সময় সংগঠন পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। মাদারীপুর, শরীয়তপুর, বরিশালসহ একাধিক অঞ্চলে শ্রমিক আন্দোলনের মজবুত ভিত গড়ে ওঠে। সংগঠনের নেতৃত্বে বরিশালের ঘাট শ্রমিকদের মধ্যে কিছু অর্থনীতিবাদী প্রকাশ্য আন্দোলন-সংগ্রামও গড়ে ওঠে বলে জানিয়েছেন সর্বহারা পার্টির সাবেক নেতা-কর্মীরা। ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা হচ্ছে আমাদের জাতীয় পতাকার প্রকৃত ইতিহাস। ১৯৭০ সালের ৮ জানুয়ারি পার্টির দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে একটি নতুন পতাকা ওড়ানো হয়। ওই পতাকারই পরিবর্তিত রূপ আজকের বাংলাদেশের পতাকা। ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ ও ময়মনসিংহে ওড়া ওই পতাকায় সবুজ জমিনের মধ্যে লাল সূর্য। সে সময় নতুন একটি পতাকা উত্তোলনের ঘটনা বিভিন্ন পত্রিকায়ও প্রকাশিত হয়। পূর্ব বাংলা সর্বহারা পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য ফজলুল হক রানা কালের কণ্ঠকে বলেন, জাতীয় পতাকার মূল নকশার পরিকল্পকদের একজন ছিলেন অবাঙালি, সাইফুল্লাহ আজমী। যাঁর পরিবার বিহার থেকে অভিবাসী হয়ে এসেছিল এ দেশে। এ পতাকার সঙ্গে বর্তমান বাংলাদেশের পতাকার একটিই পার্থক্য, তা হলো সর্বহারা পার্টি কর্তৃক লাল সবুজের পতাকার মধ্যে শুধু মশাল জ্বালানো একটি অংশ ক্ষুদ্র জাতিসত্তার প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য রয়েছে, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকায় নেই। এ প্রসঙ্গে সিরাজ সিকদার নিহত হওয়ার পর সর্বহারা পার্টির সভাপতি রইসউদ্দিন আরিফ কালের কণ্ঠকে বলেন, আমাদের সংবিধান থেকে শুরু করে সবখানে উগ্র বাঙালি জাতীয়তাবাদের বহিঃপ্রকাশ। পতাকায়ও তাঁর অবস্থান স্পষ্ট। কিন্তু সিরাজ সিকদার ভিন্ন ঘরানার রাজনীতি করতেন। এ কারণে তিনি পতাকায় তিনটি মশাল দিয়ে স্মারক রেখেছিলেন। এক. ধর্মীয় সংখ্যালঘু, দুই. জাতিগত সংখ্যালঘু ও তিন. ভাষাগত সংখ্যালঘু। সশস্ত্র হামলা শুরু পূর্ব বাংলার শ্রমিক আন্দোলন শুধু তাত্তি্বক আর শান্তিপূর্ণ অবস্থানের কোনো সংগঠন ছিল না। প্রথম থেকেই সংগঠনটি সশস্ত্র অনুশীলনের মধ্য দিয়ে নিজেদের বিকাশ নিশ্চিত করে। এ রকম একটি ব্যর্থ হামলা চালায় ১৯৬৮ সালের ৬ মে কার্ল মার্কসের জন্মদিনে। ওই দিন পাকিস্তান কাউন্সিলে দুটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায় পূর্ব বাংলার শ্রমিক আন্দোলন। হামলাটি সফল হয়নি। তবে হামলা থেমে থাকেনি। এ হামলার পরে আরো বেশ কিছু হামলা হয় বিদেশি দূতাবাসে। তার মধ্যে ওই বছরের অক্টোবর নাগাদ ব্যুরো অব ন্যাশনাল রিকনস্ট্রাকশন, আমেরিকান ইনফরমেশন সেন্টারসহ আরো বেশ কিছু জায়গায়। বিদেশি শত্রুদের স্থানে হামলা চালানোর সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের বিরোধিতাকারীদেরও একটি তালিকা তৈরি হতে থাকে। সে তালিকায় ১৯৭১ সালের জানুয়ারিতে প্রথম নিহত হন চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির এক চা বাগানের সহকারী ম্যানেজার হারু বাবু। শেখ মুজিব ও আওয়ামী লীগের কাছে খোলা চিঠি ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিশাল জয়ের মধ্য দিয়ে জাতীয় মুক্তির লড়াইয়ে পূর্ব বাংলার মধ্যবিত্ত ও বুর্জোয়াদের ক্ষুদ্র সংগঠন আওয়ামী লীগ মূল নেতৃত্বে চলে আসে। তবে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা হস্তান্তরে গড়িমসি করতে থাকে। এ সময় আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ মুজিবের সঙ্গে আলোচনার ডাক দেয় পাকিস্তানি জান্তা সরকার। তবে সিরাজ সিকদার ও তাঁর সংগঠন পূর্ব বাংলার শ্রমিক আন্দোলন স্পষ্ট রাজনৈতিক অবস্থান নেয় পাকিস্তানের ঔপনিবেশিক শোষণের বিরুদ্ধে। এ সময় সংগঠনের পক্ষ থেকে সিরাজ সিকদার শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে একটি খোলা চিঠি লেখেন। ১ মার্চ ১৯৭১ পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান যখন সংসদ অধিবেশন স্থগিত করার ঘোষণা দেন, উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা বাংলা। পরদিন ২ মার্চ পূর্ব বাংলার শ্রমিক আন্দোলন শেখ মুজিবকে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ শুরু করার আহ্বান জানায়। একই সময় সংগঠনটি সর্বস্তরের দেশপ্রেমিক প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি অস্থায়ী বিপ্লবী জোট সরকার গঠন এবং সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ পরিষদ গঠনের অনুরোধ জানায়। তবে মুজিব তখন ব্যস্ত আলাপ-আলোচনায় সমাধান খুঁজতে। চিঠির সংক্ষিপ্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ এখানে ছাপা হবে ছোট অক্ষরে, আপনার ও আপনার পার্টির ছয় দফা সংগ্রামের রক্তাক্ত ইহিতাস স্পষ্টভাবে প্রমাণ করেছে, ছয় দফার অর্থনৈতিক দাবিসমূহ বাস্তবায়ন সম্ভব সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্যমে, পূর্ব বাংলাকে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন, মুক্ত ও স্বাধীন করে। আপনাকে ও আপনার পার্টিকে পূর্ব বাংলার সাত কোটি জনসাধারণ ভোট প্রদান করেছে পূর্ব বাংলার উপরস্থ পাকিস্তানের অবাঙালি শাসকগোষ্ঠীর ঔপনিবেশিক শাসন ও শোষণের অবসান করে স্বাধীন ও সার্বভৌম পূর্ব বাংলা কায়েম করার জন্য। পূর্ব বাংলার জনগণের এ আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য পূর্ব বাংলার শ্রমিক আন্দোলন আপনার প্রতি ও আওয়ামী লীগের প্রতি নিম্নলিখিত প্রস্তাবগুলো পেশ করছে : ১. পূর্ব বাংলার নির্বাচিত জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে এবং সংখ্যাগুরু জাতীয় পরিষদের নেতা হিসেবে স্বাধীন, গণতান্ত্রিক, শান্তিপূর্ণ, নিরপেক্ষ, প্রগতিশীল পূর্ব বাংলার গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা করুন। ২. পূর্ব বাংলার কৃষক-শ্রমিক, প্রকাশ্য ও গোপনে কার্যরত পূর্ব বাংলার দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক পার্টি ও ব্যক্তিদের প্রতিনিধি-সংবলিত স্বাধীন, শান্তিপূর্ণ, নিরপেক্ষ, প্রগতিশীল পূর্ব বাংলার প্রজাতন্ত্রের অস্থায়ী সরকার কায়েম করুন। ৩. পূর্ব বাংলাব্যাপী এ সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য পাকিস্তানের ঔপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র জাতীয় মুক্তিযুদ্ধের আহ্বান জানান। এ উদ্দেশ্যে পূর্ব বাংলার জাতীয় মুক্তিবাহিনী গঠন এবং শহর ও গ্রামে জাতীয় শত্রু খতমের ও তাদের প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের আহ্বান জানান। ৪. পূর্ব বাংলার জাতীয় মুক্তিসংগ্রাম পরিচালনার জন্য শ্রমিক-কৃষক এবং প্রকাশ্য ও গোপনে কার্যরত পূর্ব বাংলার দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক পার্টি ও ব্যক্তিদের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে 'জাতীয় মুক্তি পরিষদ' বা 'জাতীয় মুক্তি ফ্রন্ট' গঠন করুন। ৫. প্রকাশ্য ও গোপন, শান্তিপূর্ণ ও সশস্ত্র, সংস্কারবাদী ও বিপ্লবী পদ্ধতিতে সংগ্রাম করার জন্য পূর্ব বাংলার জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। (এরপর ৬ নম্বর পয়েন্টে শ্রমিক আন্দোলনের খোলা চিঠিতে ১৩টি করণীয় নির্ধারণ করে। এর মধ্যে গ্রামাঞ্চলে জমি বণ্টন, শ্রমিকদের শ্রম শোষণ বন্ধ, ভাষাগত, ধর্মীয়, জাতিগত সংখ্যালঘুদের সম-অধিকার দেওয়ার বিধানসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনা হাজির করে)। তবে শেখ মুজিব ও তাঁর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সিরাজ সিকদারের নেতৃত্বাধীন শ্রমিক আন্দোলনের এই খোলা চিঠি আমলে আনেননি। হতে পারে নিরঙ্কুশ ভোটে জয় পাওয়ার পর আওয়ামী লীগ তখন একলা চলো নীতিতে অটুট ছিল। তবে মুজিবনগর সরকার ১৭ এপ্রিল শপথ নেওয়ার পর সেই সরকারের প্রতি আরেকটি খোলা চিঠি দেওয়া হয় শ্রমিক আন্দোলনের পক্ষ থেকে। সেখানে যুদ্ধের ময়দানে করণীয় বিষয়ে তুলে ধরা হয়। তবে এবারও প্রবাসী সরকার শ্রমিক আন্দোলনের সেই চিঠিতে কর্ণপাত করেনি। মুক্তিযুদ্ধের মধ্যেই সর্বহারা পার্টি তৈরি ১৯৭১ সালের ২ জুন যুদ্ধের ময়দানে কামানের গোলার মধ্যে সিরাজ সিকদারের নেতৃত্বে পার্টি তৈরি হয়। নাম হয় পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টি। বরিশালের পেয়ারা বাগানকে বেছে নেওয়া হয় পার্টির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরুর জন্য। এর আগে কমিউনিস্টদের নেতৃত্বে পার্টিগুলোর নাম সবই মোটামুটি কমিউনিস্ট পার্টি বা এর কাছাকাছি নাম রাখে; কিন্তু সিরাজ সিকদার প্রলেতারিয়েতের বাংলা সর্বহারার নামে নামকরণ করেন পার্টির। সর্বহারা পার্টি গঠনের ওই দিনে বরিশালের পেয়ারা বাগানে উপস্থিত ছিলেন পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ফজলুল হক রানা। কালের কণ্ঠকে তিনি সেদিনের স্মৃতি হাতড়ে বলেন, 'বরিশালের পেয়ারা বাগানে সেদিন লাখ লাখ মানুষ উপস্থিত হয়েছিল। মনে হয়েছিল পেয়ারা বাগান যেন কোনো মুক্তাঞ্চল। এখানে নারী-পুরুষ যে এক নতুন পৃথিবীর জন্মের আগে সমবেত হয়েছে নতুন যুদ্ধের ক্ষেত্র প্রস্তুতের জন্য। সিরাজ সিকদারের নেতৃত্বাধীন সর্বহারা পার্টি প্রথম দিকে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মীকে আশ্রয় দেয়। এ সময় সর্বহারা পার্টি কর্মসূচি হাতে নেয়, দেশপ্রেমিক মুক্তিবাহিনী গড়ে তোলার ব্যাপারে। এ অবস্থা ১৯৭১ সালের আগস্ট পর্যন্ত সর্বহারা পার্টি ধরে রাখে। আগস্টের শুরুতে সর্বহারা পার্টির অন্যতম কেন্দ্রীয় সদস্য এবং বর্তমান বাংলাদেশের পতাকার নকশাকার সাইফুল্লাহ আজমীসহ পাঁচজন যোদ্ধাকে সাভারে পাঠানো হয় মুজিববাহিনীর সঙ্গে বৈঠকের উদ্দেশ্যে। মুজিববাহিনী তাদের নির্মমভাবে হত্যা করে। বুর্জোয়া জাতীয়তাবাদী দলের বাহিনীর সঙ্গে শ্রমিক শ্রেণীর নেতৃত্বাধীন সর্বহারা পার্টির সব ঐক্য ভেস্তে যায়। তবে এরও আগে ভারতে খুব গোপনে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা 'র' (রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং)-এর নেতৃত্বে গড়ে ওঠে মুজিববাহিনী। মূলত এই বাহিনী গড়েই তোলা হয় যুদ্ধ থেকে কমিউনিস্টদের হটিয়ে দেওয়ার জন্য। ১৯৭১ সালের আগস্ট পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরে থেকে লড়াই-সংগ্রাম করেছে মূলত এ দেশের বিভিন্ন কমিউনিস্ট পার্টি ও গ্রুপ, যার মধ্যে সর্বহারা পার্টি অন্যতম। বরিশালের বানারীপাড়া অঞ্চলে অবস্থান নেয় শ্রমিক আন্দোলন, ৩০ এপ্রিল গঠন করে জাতীয় মুক্তিবাহিনী, যা দখলমুক্ত করে পেয়ারা বাগানের খানিকটা। এ মুক্তিবাহিনী পরিচালনা করতে সিরাজ সিকদারকে প্রধান করে সর্বোচ্চ সামরিক পরিচালনামণ্ডলী গঠন করা হয়। বরিশালের পেয়ারা বাগান স্বাধীনতাসংগ্রাম চলার সময় প্রথম ঘাঁটি ও মুক্তাঞ্চল। এ বিষয়ে সর্বহারা পার্টির তৎকালীন বৃহত্তর বরিশাল (বরিশাল, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ফরিদপুর, ঝালকাঠি ও পিরোজপুর) অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সম্পাদক রইসউদ্দিন আরিফ (পরবর্তী সময়ে সিরাজ সিকদার নিহত হলে অস্থায়ী সর্বোচ্চ বিপ্লবী সংস্থার সভাপতি) কালের কণ্ঠকে বলেন, 'বরিশালের পেয়ারা বাগান বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামের ইতিহাসে প্রথম ঘাঁটি ও মুক্তাঞ্চল। এ অঞ্চলে পাকিস্তানি বাহিনীর অনেক বড় অপারেশন চালাতে হয়েছিল। আবার সর্বহারা পার্টি পাকিস্তানি বাহিনীকে ব্যতিব্যস্ত করে রাখত। সর্বহারা পার্টি এ অঞ্চলে অজস্র সফল হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান বাহিনীর ওপর। বরিশাল অঞ্চলে অসংখ্য সফল হামলা চালিয়ে সর্বহারা পার্টি পাকিস্তানি বাহিনীকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলে। তবে স্বাধীনতার যত ইতিহাস লেখা হয়েছে, সেখানে বরিশালে সর্বহারা পার্টির অবদানকে খুব কৌশলে উহ্য রেখেছেন রাজনৈতিক মদদপুষ্ট ইতিহাসবিদরা। ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সর্বহারা পার্টির সতর্কবাণী ভারতীয় বাহিনীর হস্তক্ষেপে দ্রুত বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। ভারতীয় বাহিনীর এই তৎপরতাকে সাদা চোখে দেখেনি সর্বহারা পার্টি। পার্টি মনে করে, পাকিস্তানের উপনিবেশ থেকে দেশ এবার ভারতীয় উপনিবেশের মধ্যে গিয়ে পড়েছে। এ সময় নতুন বাংলাদেশে রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তোলার প্রশ্নে সর্বহারা পার্টি বাংলাদেশের সরকারের প্রতি একটি খোলা চিঠি লেখে। ওই চিঠিতে বলা হয়, ভারতীয় সৈন্যদের অনতিবিলম্বে সরিয়ে নেওয়া, যুদ্ধের সৈনিকদের দিয়ে নৌ, আকাশ ও স্থলবাহিনী তৈরি করা, স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা এবং তাদের বিচার নিশ্চিত করা, সব দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃত্বে জাতীয় বিপ্লবী সরকার গঠনসহ ২৭টি দাবি পেশ করা হয়। তবে মুজিব সরকার সর্বহারা পার্টির সেসব দাবির একটিতেও কর্ণপাত করেনি। যদি সে সময় আওয়ামী লীগ বিচক্ষণতার পরিচয় দিত, তাহলে আজ অবধি যুদ্ধাপরাধের বিচার ঝুলিয়ে রাখতে হতো না। চিঠিতে বলা হয়েছিল পূর্ব বাংলার সত্যিকারের স্বাধীনতার জন্য পূর্ব বাংলার লাখ লাখ মানুষ আত্মবলিদান করেছেন। তাঁদের আকাঙ্ক্ষিত প্রাণের চেয়ে প্রিয় স্বাধীনতা বাস্তবায়িত হতে পারে নিম্নলিখিত দাবিসমূহ বাস্তবায়নের মাধ্যমেঃ ১. পূর্ব বাংলার ভূমি থেকে অনতিবিলম্বে শর্তহীনভাবে সব ভারতীয় সৈন্য, সামরিক ও বেসামরিক উপদেষ্টাদের ভারতে ফেরত পাঠানো। ২. পূর্ব বাংলার স্থিতিশীলতা আনয়ন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, পুনর্বাসন ও পুনর্গঠনের কাজের জন্য পূর্ব বাংলার সম্পদ এবং কষ্টসহিষ্ণু, পরিশ্রমী ও আত্মত্যাগে উদ্বুদ্ধ, সাহসী ও দেশপ্রেমী জনগণের ওপর সর্বতোভাবে নির্ভর করা। ৩. পূর্ব বাংলার প্রতিরক্ষার জন্য পূর্ব বাংলার জনগণের মধ্য থেকে নিয়মিত স্থল, নৌ ও বিমানবাহিনী গড়ে তোলা এবং জনগণকে সামরিক শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে সশস্ত্র করে স্থানীয় বাহিনী গড়ে তোলা। পূর্ব বাংলার প্রতিরক্ষার জন্য এই সামরিক বাহিনী ও জনগণের ওপর নির্ভর করা। পূর্ব বাংলার নিয়মিত বাহিনী ও স্থায়ী বাহিনী মুক্তিবাহিনীর পক্ষেই সম্ভব। ৪. পূর্ব বাংলার জামায়াত, পিডিপি, মুসলিম লীগ (তিন অংশ), নেজামে ইসলাম এবং পাকিস্তানি সামরিক ফ্যাসিস্টদের সঙ্গে সহযোগিতা করেছে এ ধরনের অন্যান্য রাজনৈতিক দল, গোষ্ঠী, দল ও ব্যক্তিদের নির্বাচিত হওয়া, ভোট প্রদানের অধিকার, মিটিং-মিছিল সংগঠিত এবং অন্যান্য রাজনৈতিক কার্যকলাপ পরিচালনার অধিকার বাতিল করা; তাদের ভূমি গ্রামের ভূমিহীন কৃষকদের মধ্যে বিনা মূল্যে বিতরণ করা; ভূমি ব্যতীত তাদের শিল্প-ব্যবসা ও অন্যান্য সম্পত্তি ক্ষতিপূরণ ছাড়াই রাষ্ট্রীয়করণ করা; এদের মধ্যকার গোড়া জনবিরোধীদের বিচার ও শাস্তি প্রদান করা; প্রমাণিত আলবদর, রাজাকার ও পাকিস্তানি সামরিক দস্যুদের অন্য দালালদের কঠোর শাস্তির বিধান করা; কিন্তু আওয়ামী লীগ থেকে স্বতন্ত্র বাঙালি-অবাঙালি নির্বিশেষে সব দেশপ্রেমিককে আলবদর, রাজাকার বা পাকিস্তানি সামরিক গোষ্ঠীর দালাল বলে খতম করার ঘৃণ্য কার্যকলাপের বিরোধিতা করা। এ রকম ২৭টি জরুরি করণীয় নির্ধারণ করে সর্বহারা পার্টি। যেখানে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি থেকে ভারতে শরণার্থী, পররাষ্ট্রনীতি ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্থান পায়। তবে রাষ্ট্রযন্ত্র থোড়াই পরোয়া করে সেসব। উঠতি মধ্যবিত্ত যে রাষ্ট্র পেল, যে রাষ্ট্র তারা ধর্মীয় জাতিগতভাবে ১৭৫৭ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশের কাছে হারিয়েছিল, তা দখল করে নিল নিজেদের মধ্যে। যদিও মুক্তিযুদ্ধ অসাম্প্রদায়িকতা, গণতন্ত্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হাজির করেছিল, তবে বাস্তবে মুসলিম থেকে আওয়ামী মুসলিম লীগ হয়ে আওয়ামী লীগের যে ইতিহাস, সেখানে দুই ধারার মানুষের সম্মিলন ঘটেছিল_এক, সাবেকি মুসলিম লীগ, দুই, উঠতি মধ্যবিত্ত। সর্বহারা পার্টির কোনো দাবি না মেনে নেওয়া এবং স্বাধীনতার অব্যবহিত পর থেকেই বিরোধী মতামতকে উগ্রভাবে দমন করা, ভারতীয় হস্তক্ষেপের বাড়াবাড়ির কারণে সিরাজ সিকদার নতুন থিসিস দিলেন। এই নতুন থিসিসের নাম দিলেন, 'পূর্ব বাংলার বীর জনগণ আমাদের সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি, পূর্ব বাংলার অসমাপ্ত জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লব (জাতীয় মুক্তি ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা) সম্পূর্ণ করার মহান সংগ্রাম চালিয়ে যান।' এই দলিলটি বের হয় ১৯৭২ সালের মার্চ মাসে, পরে যা আবার ১৯৭৪ সালের মার্চে পুনঃপ্রকাশিত হয়। এই দলিলে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা হয়, কিভাবে বাংলাদেশ নামের নতুন দেশটি ভারতীয় অর্থনৈতিক উপনিবেশে পরিণত হয়েছে। মূলত এই দলিলের মাধ্যমেই শোষিত শ্রেণীর জন্য প্রকৃত জনমুক্তির বাংলাদেশ গড়তে 'সশস্ত্র সংগ্রাম' অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সর্বহারা পার্টি। এর ফলে বাংলাদেশ সৃষ্টির পরও সর্বহারা পার্টির সশস্ত্র সংগ্রাম অব্যাহত থাকে। বিভিন্ন এলাকায় থানা লুটের ঘটনা ঘটতে থাকে, একই সঙ্গে শ্রেণীশত্রু খতমের নামে স্থানীয় ভূস্বামী, জোতদার থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক সচ্ছলদের হত্যা করা হতে থাকে গোটা বাংলাদেশে। সর্বহারা পার্টি মুক্তিযুদ্ধকে পূর্ণাঙ্গ মনে করেনি কখনোই, তাদের চোখে এটি ছিল পাকিস্তানের শোষণ থেকে বেরিয়ে ভারতের আগ্রাসনের মুখে পড়ার একটি পর্ব মাত্র। এ কারণে সর্বহারা পার্টি ১৬ ডিসেম্বরকে বিজয় দিবস হিসেবে পালন না করে ভারতীয় বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ দিবস হিসেবে কালো দিবস ঘোষণা করে ওইদিন হরতাল পালনের আহ্বান জানায়। ১৯৭৩ ও ১৯৭৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের দিনে সর্বহারা পার্টি সারা দেশে হরতালের ডাক দেয়। পার্টির মুখপত্র 'স্ফুলিঙ্গ' ও প্রচারপত্রে বলা হয়, ১৬ ডিসেম্বর হচ্ছে ভারতীয় সম্প্রসারণবাদী শক্তির কাছে মুজিব সরকারের আত্মসমর্পণ দিবস। একমাত্র জনযুদ্ধের মাধ্যমেই জনগণের বিপ্লবী সরকার প্রতিষ্ঠা করে প্রকৃত বিজয় আসতে পারে। মাওবাদীদের বিরুদ্ধে মুজিব সরকারের ব্যাপক দমন-পীড়ন, হত্যা-নির্যাতনের প্রতিবাদে সর্বহারা পার্টি ঢাকায় হরতাল আহ্বান করলে সন্তোষ থেকে মওলানা ভাসানী বিবৃতি দিয়ে সমর্থন করেন। হরতাল সফল হয়। দেশব্যাপী থানায় থানায় সশস্ত্র আক্রমণ পরিচালিত হয়। এই হরতালে বৃহত্তর বরিশাল অঞ্চলের সর্বহারা পার্টির সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন রইসউদ্দিন আরিফ। হরতালের কথা স্মরণ করতে গিয়ে কালের কণ্ঠকে আরিফ বলেন, 'আমি ছিলাম ফরিদপুরের দিকে। হরতালের আগের রাতে এলাকার কৃষকরা মহাসড়কে গাছ কেটে ফেলে রাখে। এত বেশি গাছ তারা কেটে ছিল যে মহাসড়ক থেকে গাছ সরাতে সরকারের লোকদের বেশ বেগ পেতে হয়েছিল।' রাষ্ট্রের প্রথম ক্রসফায়ার ১৯৭৫ সালের ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিন, ১ জানুয়ারি। গত বছরের ডিসেম্বরে দেশব্যাপী সফল হরতাল পালনের মধ্য দিয়ে পার্টির কার্যক্রমকে গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন সর্বহারা পার্টির এক সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সিরাজ সিকদার। কেন্দ্রীয় কমিটিতে এক সদস্য হওয়ার কারণ হলো ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যান্য সদস্য মুজিববাহিনী অথবা রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন। কেন্দ্রীয় কমিটি এক সদস্য হওয়ায় এ সময় পার্টি রাজনৈতিক, সামরিক ও সাংগঠনিক কাজ চালিয়ে নেওয়ার জন্য প্রতিটি সেলে দুজন করে লোক নিয়োগ দেয়, যাঁরা হলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন শ্রমিক আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ফজলুল হক রানা। চট্টগ্রাম থেকে আত্মগোপন করে সিরাজ সিকদারকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল পার্টির গোয়েন্দা উইং। তিনি পার্টির শহীদ এক কর্মীর বাসায় যাচ্ছিলেন দেখা করার জন্য। এর পরই চট্টগ্রাম ত্যাগ করে কোনো ঘাঁটি অঞ্চলে ডুব দেবেন। একটি স্কুটার নিয়েছেন, যাবেন পাহাড়তলী। চট্টগ্রামের নিউমার্কেট এলাকায় এলে স্কুটার থামায় সাদা পুলিশ। সিরাজ সিকদার নির্বিকার ভঙ্গিতে নিজেকে পরিচয় দেন ব্যবসায়ী হিসেবে। এমনকি চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সদস্য হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিলে ঘাবড়ে যায় ডিবির সাদা পুলিশের দল। এবার কয়েক ব্যবসায়ীকে ফোন করা হয়। তাঁরা জানান, তিনি একজন ভালো ব্যবসায়ী। তবে ঢাকার গোয়েন্দা সদর দপ্তর নিশ্চিত যে যাঁকে ধরা হয়েছে তিনি সিরাজ সিকদার। ওই দিনই সিরাজ সিকদারকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়।

আমি আজ আমেরিকার কথা বলবো ========================== আমি বিশ্ব মোড়ল আমেরীকার কথাই বলছিলাম।দেশটি যে দেশের বন্ধু হয় সেই দেশের আর শত্রুর প্রয়োজন হয়না,কে যেন কথাটা বলছিলেন এই মহুর্তে আমার স্মরন হচ্ছে না।তবে কথাটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে দুনিয়ার দেশে দেশে।আমারদের এলাকায় বড়মাপের এক নেতা ছিলেন,তিনি মুসস্লিম লীগের অনেক বড় নেতা।তিনি যে দিন হেসে হেসে কাউকে পিঠের উপর চাপড় দিয়ে প্রসংশা করতেন,সে দিন রাতেই পুলিশ তাঁকে ধরে নিয়ে কয়েকটা মামলায় নাকি জড়িয়ে দিতেন।আমেরিকাকেও আজকে তেমনি মনে হয়। প্রকৃত বিচারে উগ্র সন্ত্রাস বিষয়টা বিশ্ব প্রেক্ষপটে দেশে দেশে যে ভয়ানক রূপ নিয়ে দাঁড়াচ্ছে এবং মানবতা-উন্নয়ন-সম্প্রীতি প্রভৃতির শত্রু হয়ে দাঁড়াচ্ছে; এই প্রশ্নের গভীরে গিয়ে চিন্তা করা এবং করণীয় বের করা আজ আমাদের মতো দেশগুলোর জন্য জরুরি হয়ে পড়ছে। বিশ্ববাসী সবারই এটা স্মরণে রয়েছে যে, আফগানিস্তানের সোভিয়েতমুখী ‘বিপ্লব’ ঠেকাতেই অর্থ-অস্ত্র, প্রশ্রয়-আস্কারা দিয়ে আমেরিকা উগ্রবাদকে কেঁচো থেকে সাপ বানিয়েছিল। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পরও ওই তৎপরতার ভেতর দিয়েই তালেবানের উদ্ভব ও বিকাশ হয়েছে। এই উগ্রতা সৃষ্টির পেছনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যে আমেরিকা রয়েছে, তা কিন্তু পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ-বিশ্ লেষণে ক্রমেই সুস্পষ্ট হচ্ছে। এর সঙ্গে যদি উল্লিখিতভাবে বেড়ে ওঠার ঘটনার গতি-প্রকৃতি যুক্ত করা যায়; তবে কি প্রমাণিত হয়! সিরিয়ায় দিনের পর দিন কিছুই করতে পারে না আমেরিকা। অথচ রাশিয়া সঙ্গে সঙ্গেই সাফল্য পাচ্ছে। মানুষ এত বোকা নয় যে, দুয়ে দুয়ে চার যে হয়, তা বুঝতে পারবে না। সাধারণ বিবেচনা থেকেই চলে আসা একটা ধারণা মানুষের মধ্যে ছিল যে, মধ্যপ্রাচ্যের তেল হচ্ছে সব কথার আসল কথা। এ জন্যই মধ্যপ্রাচ্যে ডিভাইড এন্ড রুল নীতি দিয়ে ওই অঞ্চলের দেশে দেশে কিংবা কোনো দেশের অভ্যন্তরে উত্তেজনা উস্কে দেয়া হচ্ছে। গণতন্ত্রের ধ্বজাধারী আমেরিকার ওই অঞ্চলে রাজতন্ত্রের অকুণ্ঠ সমর্থক হওয়া দিয়ে উসকে দেয়ার বিষয়টা সহজেই সুস্পষ্ট হয়ে যায়। তবে এখন ঘটনাপ্রবাহের ভেতর দিয়ে এটা ক্রমেই সুস্পষ্ট হচ্ছে যে, কেবল তেল সম্পদ নয়, ভূ-রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক স্বার্থরক্ষায় আমেরিকা উগ্রতা নিয়ে খেলছে। শ্রেষ্ঠত্ব ও নিয়ন্ত্রণ সুদৃঢ় করা হচ্ছে মূল কথা। বলাই বাহুল্য উসকে দেয়ার ব্যাপারটা চোরকে চুরি করতে বলে গৃহস্থকে জেগে থাকতে বলার মতো ব্যাপার-স্যাপার। এই কৌশল চালু রাখতে বিশ্বব্যাপী দুই চরম প্রান্তকে দুধকলা দিয়ে পোষা এবং তা সময় সুযোগমতো ব্যবহার করা হচ্ছে আমেরিকাকে স্বঅবস্থান নিয়ে টিকে থাকার জন্য অপরিহার্য। প্রসঙ্গত উগ্রতা বনাম সহনশীলতা, হিংসা বনাম অহিংসা, যুদ্ধ বনাম শান্তি, প্রাচুর্য বনাম গরিবি, অমানবিকতা বনাম মানবিকতা, ধৈর্য বনাম অস্থিরতা, গণতন্ত্র বনাম স্বৈরাচার, অন্ধত্ব বনাম উদারতা প্রভৃতির ভেতর দিয়ে রাষ্ট্র ও সমাজজীবনে স্বতঃস্ফ‚র্ত ও স্বাভাবিক নিয়মেই দুই চরম প্রান্ত সৃষ্টি হচ্ছে। আবহমানকাল থেকে মানুষের সংগ্রামই হচ্ছে অশুভ প্রতিহত কর, শুভকে জাগ্রত কর। দুর্গাপূজা হয়ে গেল, আশুরা পালিত হলো, ঈদোৎসবও পালন করা হলো; সব কিছুর ইহলৌকিক লক্ষ্য কিন্তু একই। রাষ্ট্র সমাজ সব অগ্রসর হয়েছে ও হচ্ছে দুষ্টের দমন ও শিষ্টের রক্ষার ভেতর দিয়েই। কিন্তু দেখা যাচ্ছে নানা রূপে নানাভাবে কিন্তু দুষ্ট আবির্ভূত হচ্ছেই এবং এই দুষ্টকে যুগে যুগে লালন-পালন করেছে, আস্কারা-প্রশ্রয় দিচ্ছে কায়েমি স্বার্থ। এই কায়েমি স্বার্থ কখনো অশুভকে করে নিয়ন্ত্রণ আবার কখনো ব্যবহার করে আমের আঁটির মতো ফেলে দেয়। তাই বলছিলাম বন্ধু পুরাতন ভাল,খেলনা নতুন ভাল।আমরা আমাদের মত করে পররাষ্ট্র,বন্ধু,উন্নয়ন,অগ্রগতির চিন্তা করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।আমেরিকা বড্ড বেশী প্রসংশা শুরু করেছে আমাদের।আবার সাথে রেডের লাঠিও রেখেছে,ভয় হয় নিক্সনের কথা মনে হলে। জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা

ছবি

নব্য জঙ্গী জামায়াত শিবিরকে রুখে দিতে নতুন প্রজম্ম প্রস্তুত। ~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~ দেশে একের পর এক নিরীহ-নিরপরাধ মানুষকে খুন করা হচ্ছে। আর খুন করার পরপরই সামাজিক গণমাধ্যম ও বিভিন্ন ওয়েবসাইটে দাবি করা হচ্ছে- হত্যাকাণ্ডের দায় আইএস, আনসার আল ইসলাম ইত্যাদির। এ ধারার সূচনা হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে নৃশংসভাবে হত্যার পর টুইট বার্তার মধ্য দিয়ে। বর্তমানে এই ধারাই বহুল প্রচলিত হয়ে উঠেছে। বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে আইএসের সদস্যরা ঢুকে পড়েছে। এসব খুন, হত্যাকাণ্ড তাদেরই কাজ। অন্যদিকে সরকার দাবি করছে, বাংলাদেশে কোনো আইএস নেই। সবই জামায়াত-শিবিরের কাজ। সরকার যদি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে জামায়াত শিবিরের উপর দোষ চাপায় তবে বিদেশী সংস্থা গুলী কি বলে সে দিকে নজর দেয়া যেতে পারে। গতকাল শনিবার ৭/১১/২০১৫ দেশের প্রায় সব কয়টি পত্রিকায় প্রকাশিত হয় আই এ সের নামে সক্রিয় জামায়াত-শিবির শীর্ষক প্রতিবেদন। এতে উঠে এসেছে আই, এ, সের নামে জামায়াত-শিবিরের প্রক্সি-ওয়ারের আদ্যোপান্ত। মূলত এলোপাতাড়ি মানুষ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়ে, দেশের মানুষের মনে আতংক ছড়িয়ে দিয়ে, সামাজিক-রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করে ফায়দা হাসিলের চেষ্টায় এসব হত্যাকাণ্ডের দায় তারা পরিকল্পিতভাবে আই এস, আনসার আল ইসলাম ইত্যাদি সংগঠনের কাঁধে তুলে দিতে তৎপর।পত্র পত্রিকা গুলী কি জ্যোতিষ?কোথায় পেল এই তথ্য।তথ্যের সূত্র নিশ্চিত করতে না পারলে প্রত্যেক পত্রিকার বিরুদ্ধে মামলা করার উদ্যোগ নিচ্ছে না কেন ভিক্টিম?মামলা করার নৈতিক বল কি নেই?মুলত পত্রিকাগুলি নিজেদের থেকে লিখে নাই। তারা যে প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে এসব অপকর্মে তৎপর, সেই প্রযুক্তিই ধরিয়ে দিচ্ছে তাদের। ফলে চট্টগ্রামের হাটহাজারী, ঢাকার ওয়ারী কিংবা যাত্রাবাড়ীতে বসে তারা যেসব ব্লগ ও টুইট বার্তা বিদেশী সাইটগুলোর সহায়তায় আপলোড করছে ইন্টারনেটে, সেগুলোর স্থান চিহ্নিত হয়ে পড়ছে।"" যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দুই গবেষক তাদের পর্যবেক্ষণ থেকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশে এ মুহূর্তে আই এস জঙ্গিদের কোনো অস্তিত্ব নেই। তবে জামায়াত-জেএমবিতে রয়েছে আইএসের বীজ।"" দেশ বিদেশের সকল গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে বাংলাদেশে বর্তমানে কোন জঙ্গী গোষ্টির অস্তিত্ব নেই,যা আছে তা জামায়াত শিবিরের কর্মকান্ড।তারপরেও একশ্রেনীর বুদ্ধিজীবি পরামর্শকের অযাচিতভাবে সরকারের উদ্দেশ্যে বিনে পয়সায় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে অহরহ,সংকট মোকাবেলায় বিরুধি দলের সংলাপকে গুরুত্ব দেয়া উচিৎ সরকারের।সরকার আই,এসেওকে লুকাচ্ছে আন্তজাতিক ভয়ে।আগে প্রচার করে নীজের কাঁধে তুলে নিয়েছে জঙ্গীদের।জঙ্গীর হামলা যদি হয় তাঁদের কি লাভ,না কাউকে আড়াল করার জন্য এই জোরালো অভিযোগ? কি আজব দেশ,কি আজব বুদ্ধিজীবি, কি আজব তাঁদের নীতি নৈতিকতা। হত্যাকারি আড়াল করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন। রাতের পর রাত জেগে, দিনের পর দিন সব কাজ ফেলে রেখে শুধু পতিকায় কলাম লিখা আর টি,ভি টকশোতে কি বলবে তাঁর প্রস্তুতি।যাঁরা পেট্রোল বামার আগুন দিয়ে মানুষ কয়লা করে, যাঁরা রাজপথ চেড়ে ভবনে নিরাপদ আশ্রয় নিয়ে দেশের তরুন সমাজের হাতে বোমা তুলে দেয়,আন্দোলনের নামে দিনের পর দিন অবরোধের আশ্রয় নিয়ে দেশের অর্থনীতি ধ্বংশের পাঁয়তারা করে বিদেশ নীর্ভর করে রাখতে চায় দেশকে, তাঁদের সাথে সংলাপ!!,তাঁর সাথেই বসে ফয়সালার পরামর্শ!!! ধিক তোদের বুদ্ধিবৃত্তি,শত ধিক তোদের নীতি নৈতিকতাকে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কোন ক্ষেত্রেই এত দৈন্যতা দেখা দেয়নি যে খুনী,খুনীর আশ্রয় দাতার সাথে বসে ফয়সালা করে দেশ চালাতে হবে।যাঁদের রাজনৈতিক জ্ঞান,শিক্ষা,নেতৃত্বের দৈন্যতা আছে তাঁরা আলোচনা কার সাথে বসে করবে করুক,আওয়ামী লীগের কিছুই যায় আসে না।তবে জঙ্গীপনা বন্ধ করতে হবে,নিষিদ্ধ দলকে জোটে রেখে রাজনীতি করা যাবে না।বাংলাদেশের নতুন প্রজম্ম খুনী এবং খুনীর আশ্রয় দাতা কাউকে রাজপথে নামতে দিবে না।সরকার যদি সংলাপে বসে তাতেও নতুন প্রজর্ম্মের কিছু যায় আসে না। এ তথ্য নতুন নয় যে, জামায়াত-শিবিরের উগ্রপন্থী সদস্যরাই দেশে জেএমবি, হরকাতুল জেহাদের জন্ম দিয়েছে। তারা শান্তির ধর্ম ইসলাম কায়েমের নামে সন্ত্রাসের আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানেও সেই ধারা বহমান। বিদেশী দুই গবেষক তাদের গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, সরকার জামায়াত শিবিরের নব্য আইএসের হুমকি মোকাবেলায় কোঠোর অবস্থান নিয়েছে।এতে নিরাপরাধ ব্যাক্তিও হয়্রানীর স্বীকার হবেনা তা হলফ করে বলা যাবেনা।বোয়াল মাছের চেষ্টায় জাল ফেলে কেউ অন্য মাছ পড়লে ছেড়ে দেয়না।এইক্ষেত্রে এমন হবেনা তা বলা যায়না।দেশের বৃহত্তর স্বার্থেঅভিযানের ভুলত্রুটি দেশের মানুষ ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন আশা করি।মানুষ চায় নিরাপদ চলাপেরার গ্যারান্টি,রাতে নিরুপদ্রব ঘুম,খাওয়ার জন্য ভাত,চিকিৎসায় ঔষদ।রাষ্ট্র নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা দিতে বাধ্য,ইহা জনগনের সাংবিধানিক অধিকার।জনগনের শান্তিতে বসবাস করার জন্য যথপযুক্ত ব্যাবস্থা সরকারকেই করতে হবে। বর্তমানে আইনশৃংখলা অবনতি ঘটানোর মুল কারন- মানবতা বিরুদি অপরাধের দন্ড পেয়ে দুই জামায়াত নেতা কারাগারে মৃত্যুর প্রহর গুনছে।অন্য দিকে জেলে চার জাতীয় নেতাকে হত্যায় করা মামলার রায় এই মাসের মধ্যেই হওয়ার সমুহ সম্ভাবনা রয়েছে।জাতির জনকের হত্যায় জড়িত পলাতক আসামীদের দেশে ফেরৎ এনে রায় কায্যকরের নতুন উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সব বিষয়গুলী একত্রে জট পাকিয়ে অস্তিত্ব সংকটে পড়ার সমুহ সম্ভাবনায় নষ্টালিজিয়া আক্রান্ত করেছে দুবৃত্ত সংগঠন গুলিকে।নষ্টালিজিয়ার প্রতিকারের আপ্রান চেষ্টা করে যাচ্ছে তথাকথিত পেইড সুশীলেরা। কোন অবস্থায় খুনিদের সাথে বৈঠক হতে পারেনা।প্রকাশ্য বিবৃতি দিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করে বেগম জিয়াকে জামায়াতে ইসলামীর সংগ ত্যাগ করার ঘোষনা জাতি যেদিন জানতে পারবে, সেদিনই হতে পারে আলোচনা।তাঁর আগে কোন অবস্থায় নতুন প্রজম্ম খুনির দোষরের সাথে বৈঠক মেনে নিবে না, নিতে পারে না।সেই বৈঠক যেই নামেই হোক। প্রয়োজনে নতুন রাজনৈতিক দলের মেরুকরনের আগমুহুর্ত পয্যন্ত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং সরকারের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করার জন্য গনতান্ত্রিক দেশপ্রেমিক -সামাজিক,সাংস্কৃতিক,রাজনৈতিক দল ও জোট সমুহের জন্য আরো খোলা মেলা অবারিত রাজনৈতিক কর্মকান্ড করার সুযোগ তৈরী করে দিতে হবে।বিরুদি দলের শুন্যতা পুরনের কায্যকর উদ্যোগ দেশের বিদ্যমান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বুদ্ধিজীবিদের মধ্য হতে উঠে আসুক তাতে কোন আপত্তি নেই। কোন অবস্থায় বি,এন,পি জামায়াত জোটকে যতক্ষন পয্যন্ত সন্ত্রাসের পথ ছাড়বে না,ততক্ষন পয্যন্ত বাংলাদেশের কোথাও সভা সমাবেশ করার অনুমতি দেয়া উচিৎ হবে না।এমনিতে জামায়াতের রাজনীতি করার কোন নৈতিক অধিকার নেই, তারপরেও হাইকোর্টের রয়েছে রুল। কোন আইনী সংজ্ঞায় নেই রাজনীতি করার অধিকার।বিশ্বের কোথাও স্বাধীনতা বিরুধিদের রাজনৈতিক,সামাজিক,সরকারি চাকুরী এবং ভোটাধিকার নেই।বাংলাদেশ বিশ্ব পরিবারের বাহিরের অন্যকোন গ্রহের দেশ নহে,এখানে কিভাবে তারা ভোটাধিকার, নাগরিক অধিকার পায়?প্রয়োজনে ৭২ এর সংবিধান ১৫তম সংশোধনী বাতিল করে সর্বচ্ছো আদালতের রায় পুর্ন বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।এখানে শিথিলতা দেখানোর কোন অবকাশ আছে বলে আমি মনে করি না।বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষের কোন নাগরীক চায়না মুক্তিযুদ্ধের বিরুধীতাকারী, জাতির জনকের অবমাননাকারী,সন্ত্রাসী জঙ্গী প্রতিপালনকারী কোন সংগঠন বা ব্যাক্তি বাংলাদেশের স্বাধীন ভুখন্ডে রাজনীতি করুক,নাগরীক সুবিধা নিয়ে স্বদর্পে ঘুরে বেড়াক,রক্তস্নাত জাতীয় পতাকা তাঁদের গাড়িতে উড়ুক। " জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা"

অরাজকতা, নাশকতা,হত্যা ইত্যাদিতে সরাসরি জড়িত জামায়াত,খালেদা জিয়ার গোপন চক বাস্তবায়নের নব্য বাংলাদেশি আই,এস

ছবি

জাতীয় চারনেতার আত্মত্যাগের প্রতিদান হতে পারে ৭২ এর সংবিধানের পুর্নাঙ্গ অনুসরন। ================================== '৭৫ এর ১৫ই আগষ্ট জাতির জনককে স্বপরিবারে হত্যার পর ৭৫ এর ৩রা নভেম্বর আর একটি নির্মম নিষ্ঠুর ইতিহাসের বর্বতম হত্যাকান্ড ঘটিয়েছিল ঘাতকেরা।মায়ের কোলে শিশু নিরাপদ,পার্থিব জগতে সব শ্রেনীর মানুষের জন্য জেল খানা নিরাপদ।এই তপ্তবাক্য সে দিন মুখ থুবড়ে পড়েছিল বাংলাদেশের ইতিহাসের নরপিশাচদের বুটের নিছে। ১৯৭৫ এর আগষ্ট থেকে নভেম্বর মাসের ঘটনা পুঞ্জিতে যাহা ঘটেছিল রাষ্ট্র ব্যাবস্থার সৃষ্টির আদিকাল থেকে যদি সব ইতিহাস তন্ন তন্ন করে খুঁজে বেড়াই তাহলেও দেখা মিলবেনা কোন রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানের স্বপরিবারে হত্যার ঘটনা। সভ্যতার আদিযুগেও হয়তো বা নয়।আবার কোন দেশের জেল খানায় হত্যাকান্ড ঘটেছে, সেই দেশেরই জাতীয় নেতা কস্মিনকালেও খুঁজে পাওয়া যাবেনা। বিশ্বের যত রাষ্ট্রনায়ক হত্যাকান্ড ঘটেছে একক অথবা তাঁর অনুসারীদেরকে সহ হত্যা করা হয়েছে।পরিবারের শিশু সন্তান ও অবলা নারী হত্যা হয়েছে তেমন ইতিহাস রচিত হয়নি। হত্যাকান্ডটি কোন আঞ্চলিক জেল খানায় নয়,খোদ রাজধানীর কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে,পাগলা ঘন্টি বাজিয়ে,সতীর্থদের কাছ থেকে সরিয়ে, সেনাবাহিনীর সাজোয়া যান ব্যাবহার করে ঘটানো হয়েছিল।জেল হত্যার শিকার জাতিয় নেতার এক কন্যার দু:খের সাগরের এক বিন্দু শিশিরসম আকুতির উদৃতি দিয়ে আজকে আমার লিখা শুরু করতে চাই।সিমিন হোসেন রিমি,মহান জাতীয় সংসদের সম্মানীত সাংসদ।তিনি আজকে যে কলামটি লিখেছেন তাঁর কিয়দংশ দিয়েই শুরু করতে চাই আমার লিখার প্রারম্বিকতা---।তিনি লিখেছেন--- "মৃত্যুর সহজ সংজ্ঞা হয়তো বা না-ফেরার অনন্ত অজানায় চলে যাওয়া। শারীরিক উপস্থিতির বিচ্ছেদ। সরাসরি কোনো দিন আর না দেখা হওয়া। অথবা যে আমার সরব উপস্থিতি ছিল, তা এক নিমেষে নীরব হয়ে যাওয়া, চিরতরে। ৪০ বছর আগে সাদা কাফনে জড়ানো মুক্তিযুদ্ধের অনন্য বীর, দেশপ্রেমী বাবার (তাজউদ্দীন আহমদ) রক্তাক্ত নীরব নিথর মৃতদেহ। একপাশে দাঁড়ানো আমি। মানুষের বলা কত রকম শব্দ ভেসে আসে কানে। শুনতে পাই, জেলহত্যার নির্মমতার শিকার বাবার তিনজন মৃত্যুসঙ্গীর একজনের মৃতদেহ রাখা হয়েছে আমাদের বাড়ির পাশেই। বাবাকে রেখে অদ্ভুত মমতায় হেঁটে যাই সেই পথে। সাদা কাপড়ের অনেকটা জুড়ে রক্তে ভেজা। রক্তবর্ণ একটি চোখ খোলা। তাকিয়েই থাকি। প্রশ্নের পর প্রশ্ন আছড়ে পড়তে থাকে আমার ভেতরে। সেই খোলা স্পন্দনহীন রক্তাক্ত চোখকে মনে হয় বাংলাদেশের মানচিত্রে রক্ত দিয়ে লেখা বড় প্রশ্নবোধক চিহ্ন! সেই প্রশ্নবোধক চিহ্নের বিপরীতে ন্যায়ের পতাকা সগর্বে ওড়ে না ৪০ বছরেও। জোড়াতালিতে অথবা বিরুদ্ধ স্রোতে ন্যায়ের পতাকা নুয়ে পড়ে বারবার। যে মানুষ নিজেকে প্রকাশ করবে বলে হাজার বছর ধরে পাহাড়, অরণ্য, সাগর, মহাসাগর পাড়ি দিয়েছে। কঠিন রুক্ষ মাটিকে করেছে উর্বরা, ছুঁয়েছে আকাশ, ভেদ করেছে অজানা রহস্য__________!!!!। মীর জাফর নবাবী পাওয়ার আশায় বৃটিশ বেনিয়াদের চক্রান্তে পলাশির আম্রকাননে প্রধান সিপাহশালার হয়ে ভয়াবহ যুদ্ধের ময়দানে যুদ্ধ যুদ্ধ ভাবের অভিনয়ের মাধ্যমে নবাব সিরাজদৌল্লার চরম পরাজয় ঢেকে আনেন।পালায়নপর নবাবকে পথিমধ্যে হত্যা করে ভারতীয় ইতিহাসে রচনা করেছিলেন নিমোঘ কাল অধ্যায়ের। বাংলার নবাবকে হত্যার মাধ্যমে গোটা ভারতবর্ষকে তিনি তুলে দিয়েছিলেন ইংরেজদের হাতে।মাত্র ছয় বছর তল্পিবাহক ফরমায়েসি নবাবি চালাতে পেরেছিলেন।শেষবদি অত্যান্ত অপমান অপদস্ত হয়ে সিংহাসন ত্যাগের অল্প কিছুদিনের মধ্যে মৃত্যু বরন করেন কথিত আছে ন্যাক্কারজনক ভাবে তাঁর মৃত্যু হয়। মরেও বেঁচে আছেন ভারতবাসির কাছে প্রচণ্ড ঘৃণা, ধিক্কার,আর পরম বন্ধুর গালির প্রথম শব্দের উৎস হয়ে। থাকবেন পৃথিবীর চন্দ্র সুর্য্য যতদিন উদয় আর অস্ত যায় ততদিন পয্যন্ত।অভিশপ্ত হতে থাকবেন অনাগত কাল ধরে। মীরজাফরের চায়ার কায়া দেখা যায় স্পষ্ট খোন্দকার মোশতাকের চরিত্রের মধ্যেও।জাতির জনকের অপার ভালবাসা,বিশ্বাসের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫ সালে স্ব-পরিবারে হত্যায় প্রধান ভুমিকা পালন করেন মোস্তাক।শুধু তাই নয় স্বঘোশিত রাষ্টপতি হয়ে ক্ষমতাকে নির্ভেজাল,কন্টকমুক্ত করার মানষে সরাসরি টেলিফোন আদেশে মোস্তাক হত্যা করানন বাঙালি জাতির চার মহান নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, এ এইচ এম কামরুজ্জামান এবং মুহাম্মদ মনসুর আলীকে। তারই নির্দেশে কতিপয় সেনা কর্মকর্তা ৩ নভেম্বর মধ্যরাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে তাঁরই দীর্ঘদিনের সহচর পরম বন্ধু জাতিয় চার নেতাকে হত্যার জন্য সকল রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা দিয়ে ঘাতকদের জেল খানায় প্রেরন করে-- চালায় ইতিহাসের নারকীয় বর্বরতম হত্যাযজ্ঞ।মোস্তক জানতেন চারনেতার দৃড চারিত্রিক বৈশিষ্টের এবং জাতির জনকের প্রতি তাঁদের আনুগত্যের অনুকুল্লতা, অপিরিসিম ভালবাসার নিচ্ছিদ্র বন্ধনে আবদ্ধতা কত গভীরে প্রোথিত ছিল।চার নেতাকে হত্যার মুল কারন বশ্যতা স্বীকার না করা,ভবিষ্যতের ক্ষমতারকাঁটা হয়ে দাঁড়াবার সমুহ সম্ভাবনা,আওয়ামী লীগ সংগটিত হলে বীরের মায্যদায় জেলমুক্তি পেয়ে নেতৃত্ব গ্রহনের আশংকা ইত্যাদি নানাহ রাজনৈতিক ও বৈশ্বিক হিসেবের খাতা মেলানোর জন্যই তড়িঘড়ি জাতিয় চারনেতাকে জেলখানায় হত্যার প্রয়োজনীয়তা তাঁর নিকট অবশ্যম্ভাবি হয়ে উঠে। তাছাড়া সকল বিভ্রান্তির বেড়াজাল ছিন্নকরে ততদিনে প্রতিরোধের আগুন মিটি মিটি জ্বলা শুরু হয়ে গেছে সারা বাংলাদেশে।অকাতরে ছাত্রজনতা রক্ত ঢেলে খুনীচক্র প্রতিহতের ইংগিত পাওয়া যাচ্ছে চতুর্দিক থেকে।এতেই প্রমাদ গুনতে শুরু করেছেন মোস্তাক। তিনি সামরিক বাহিনীর বন্দুকের নল পেছনে ঠেকিয়ে যাদের মন্ত্রিপরিষদে শপথ নিতে বাধ্য করেছিলেন, তাদের মধ্যেও ভীতি কেটে যাওয়া শুরু হয়ে গেছে।সংসদ সদস্যদের মধ্যে অনেকে ইতিমধ্যে মোস্তাকের নেতৃত্ব চেলেঞ্জ করার মত সাহস সঞ্চয় করে নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা শুরু করে দিয়েছেন। প্রথমেই সংসদ সদস্য এড. সিরাজুল হক প্রকাশ্য চেলেঞ্জ করে মোস্তাককে মহামান্য রাষ্ট্রপতি বলতে অস্বিকার করে মোস্তাক ভাই বলে সম্ভোধন করে রাষ্ট্রপতি পদের শিরায় 'প্রশ্নবোধক চিহ্ন ’ বসিয়ে দিতে সক্ষমতা প্রদর্শন করে বসেন।সুচুতুর মোস্তাক অন্তদৃষ্টিতে বুঝতে সামান্যতম বেগ পেতে হয়নি।রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আওয়ামী লীগ ধীরে ধীরে সংগঠিত হচ্ছে।সংসদের বিদ্যমান সদস্যরাও সকল ভীতি পায়েদলে সংঘটিত হতে থাকে।সরকার এবং সংসদের ভেতরের প্রভাব বাইরেও কিছু কিছু পড়তে থাকে। যদিও জাতীয় ৪ নেতাসহ অনেকেই তখন জেলখানায় বন্দি, পলাতক,সেনাবাহিনীর একাংশের অকথ্য নির্যাতনের শিকার।বাহিরের জগতের যেকোন নেতাকর্মীর জীবন বিপন্ন হওয়ার সময় তখনও বিদ্যমান। জীবন বিপন্নের তোয়াক্কা না করার মত সাহষি মুজিব প্রেমিরা মাঠে ঘাটে অবস্থান নিচ্ছিদ্র করতে ব্যস্ত ।কোন কোন এলাকায় প্রতিবাদের দুর্গ গড়ে উঠেছে,প্রয়োজন শুধু শক্ত নেতৃত্বের।রাজধানী ঢাকায় ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন, মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামী লীগের নিবেদিত প্রাণ নেতাকর্মীদের প্রতিবাদ মিছিল বের করার খবর পাওয়া যাচ্ছিল।জনগন ভীতিকর চোখে উৎসুক নয়নে আগ্রহ ভরে মিছিল গুলি প্রত্যক্ষ করছিল,হাতনেড়ে কেউবা চোখের ভাসায় সমর্থনও দিচ্ছিল। সামগ্রিক অবস্থা দ্রুতই খন্দকার মুশতাক সরকার এবং তার নেপথ্যের শক্তির নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে থাকে---এটি অনেকটা নিশ্চিত হয়েই খন্দকার মুশতাক আহমদ এবং ১৫ আগস্টের ঘাতকচক্র জেলখানায় বন্দি জাতীয় ৪ নেতাকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তাদের আশঙ্কা একটাই তা হচ্ছে তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে সব কিছু চলে গেলে জাতীয় ৪ নেতা জাতীয় বীরের মর্যাদা নিয়ে জেল থেকে মুক্ত হবে, বঙ্গবন্ধুর শূন্যস্থান পূরণ করতে হাল ধরবেন। সেই ভয় থেকেই ২ নভেম্বর দিবাগত রাতে, ৩ নভেম্বর প্রত্যুষে খুনিচক্র বঙ্গভবন থেকে খন্দকার মুশতাকের টেলিফোনে আদেশ পেয়ে রাষ্ট্রীয় সাজোয়াযান ব্যাবহার করে,পাগলা ঘন্টি বাজিয়ে,বিউগলে সুর তোলে জেলখানার অভ্যন্তরে প্রবেশ করে, চারনেতার সহ যোদ্ধাদের আলাদাকক্ষে সরিয়ে নির্মম,নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারি জাতিয় চার নেতাকে। বাংলাদেশের মানুষ জানতে পারেনি ২/৩রা নভেম্বর মধ্যরাতে ও প্রত্যুষ্যে কি ঘটেছিল রাজধানী ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে। ঘাতকচক্র খন্দকার মুশতাককে আর ক্ষমতায় ধরে রাখতে পারেনি। সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে ক্ষমতার লড়াইয়ে পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান পালটা অভ্যুত্থান ঘটতে থাকে।একপয্যায়, খন্দকার মুশতাক রাষ্ট্রপতি পদ ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। নানা কলাকৌশলের আশ্রয় নিয়ে শেষাবদি ক্ষমতার শীর্ষে আসেন আসল নাটের গুরু সাম্রাজ্যবাদের এজেন্ট,পাকি দালাল মুক্তিযোদ্ধা জিয়া। জাসদ এবং বিপ্লবী নানা প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির পাশাপাশি সামরিক বাহিনীর অনেকেই ৭৫ এর ঘটনা চক্রে যুক্ত হলেও শেষ পরিণতি এদের কারোই সুখকর হয়নি। সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকেই হয় অভ্যুত্থানে মারা গেছেন নয়তো ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে জেলে গেছেন।মোহভঙ্গ হতে শুরু করেছে তত দিনে জাসদের বিপ্লবি চেতনার। কেননা ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট এর অপ লাইনের রাজনৈতিক শক্তি ছিল তখনকার জাসদ। সূচিত হত্যাকাণ্ড, ক্ষমতার পরিবর্তন সবই ছিল একটি বিশেষ নেপথ্যের শক্তির পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। যার সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য ছিল মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে হত্যা করা, এর আদর্শকে ধ্বংস করা।বাংলাদেশ বিরোধি আমেরীকা সাম্রাজ্যবাদের তল্পিবাহক পাকিস্তানের প্রতাত্মার দ্বারা দেশ শাষন।রাষ্ট্রদ্রোহি, মুক্তিযুদ্ধবিরুদি শক্তিকে ক্ষমতা, রাষ্ট্র, রাজনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, অর্থনীতিসহ সর্বত্র প্রতিষ্ঠা করা। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস জেলে চার নেতা হত্যার মাত্র তিন দিনের মাথায় ৮২ দিনের খল রাষ্ট্রনায়ক মোশতাকের পতন ঘটে।ইতিহাসের অমোঘ নিয়মে জায়গা হয় কারান্তরালে। কিন্তু তার অপকর্মের সুবিধাভোগী জিয়াউর রহমান অবৈধ ভাবে নির্বাচিত সরকারকে উচ্ছেদ করে মোশতাকের ক্ষমতা দখলের বিচার না করে ১৯৭৮ সালে তাকে মুক্ত করে দেন। বিচারের পথ বন্ধে জারী করেন কুখ্যাত ইমডেমনিটি অধ্যাদেশ।বিচারমুক্ত জেল মুক্ত করলেও জনগণের ঘৃণা আর ধিক্কার থেকে তাকে রক্ষা করতে পারেননি জিয়াউর রহমান। ফলে তাকে আমরণ স্বেচ্ছায়বন্দি জীবনযাপন করতে হয়েছে নিজ গৃহের কারান্তরালে। প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির তল্পিবাহক মোশতাক চেয়েছিলেন বাংলাদেশকে আবারো পাকিস্তানে রূপান্তরিত করতে।তৎক্ষনাৎ যদিও তাঁর পরিনতি সেই পয্যন্ত তাঁকে যেতে দেয়নি,ধারবাহিকতা বিচ্যুত হয়নি ষড়যন্ত্রকারিদের।এখন ও সেই ধারাবাহিকতার বহিপ্রকাশ ঘটছে প্রতিনিয়ত।জাতির জনকের কন্যাকে হত্যা প্রচেষ্টা কয়েকবারই সংঘটিত হয়েছে।নেতৃত্ব শুন্য করতে প্রগতির চাকা পিছনে নিতে ধারাবাহিক ভাবে নেতাদের হত্যা করা হচ্ছে।স্বাধীনচেতা, প্রগতিমনা, মুক্তমনা-- লেখক, সাংবাদিক সাহিত্যিকদের উপর প্রতিনিয়ত চলছে হামলা।অকাতরে বলি হচ্ছেন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি।ধর্মের নামে কখন ও গনতন্ত্রের নামে চলছে বোমা হামলা, পেট্রোল বোমার আঘাতে পুড়িয়ে জ্যান্ত মানুষকে কয়লায় রুপান্তরের অহর্নিশ প্রচেষ্টা। এমতর পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে অনুসরন করার দরকার ছিল ৭২ইং সালের বিশ্বের সেরা লিখিত সংবিধান।যে সংবিধান জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রত্যক্ষ তত্বাবধানে রচিত হয়েছিল বাঙ্গালি জাতির অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে সমুন্নত রাখার অঙ্গিকারের নিমিত্তে।জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাস্তব প্রতিফলনের মাধ্যমেই প্রতিষ্ঠিত হতে পারে জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলার বাস্তবায়ন,জাতিয় চার নেতার আত্মদানের ঋনের ভার কমানোর উপায়। "জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা"

স্বাধিনতার অর্থ উলঙ্গপনা নয়,অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন,সম্মান প্রদর্শন।

ছবি

জঙ্গীবাদ বাংলাদেশের সমস্যা নয়,সন্ত্রাসি নাশকতা, ঘুমখুন ইত্যাদি আতংকবাদই মুল সমস্যা---। ===========================≠======== সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিশ্বজনীন সমস্যা হলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিষয়টিকে একক বাংলাদেশের অভ্যন্তরীন জঙ্গীবাদ উত্থানের সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা গভীর থেকে করে চলেছে বিশ্বমোড়ল আমেরিকা।দুই বিদেশী হত্যা কান্ডে তাঁদের আচরন ও প্রতিক্রিয়া লক্ষ করলে ব্যাপারটি পরিস্কার ভাবে অনুধাবন করতে কারো কষ্ট হওয়ার কথা নয়।একই সময়ে খোদ আমেরিকায় এবং তাঁর মিত্র আরো কতক দেশে প্রকাশ্য নিষ্টুর ও জগন্যতম হত্যা কান্ড ঘটার পরও তাঁদের দৃষ্টি সেখানে পড়েনি,পড়েছে বাংলাদেশের উপর। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে বাংলাদেশ সরকারও বিষয়টি কিছুটা অনুমান ইতিমধ্যে করেছেন। যার কারনে দুই বিদেশি হত্যাকাণ্ড, চেকপোস্টে পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যা এবং তাজিয়া মিছিলে গ্রেনেড হামলার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বচ্ছ সতর্কতা মুলক অবস্থানে রাখা হয়েছে।দেশব্যাপি চলছে পুলিশের বিশেষ অভিযান।এরই মধ্যে প্রকাশক দিপনকে হত্যা করে বন্ধুরাষ্ট্রের হাতে আর একটি অস্ত্র তুলে দিতে সক্ষম হল তাঁদের এদেশীয় দোষরেরা। ষড়যন্ত্রকারিরা আরও হত্যা নাশকতা চালাতে পারে।সমাজের সর্বস্তরে অতংকের সৃষ্টি অজুহাত দেখানো যেতে পারে সহজে সেই প্রচেষ্টাই করেছে সাম্রাজ্যবাদের দোষরেরা।আতংক সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই হামলা করে মানুষ হত্যার পথ বেঁচে নিয়েছে,যাতে তাঁদের মুরুব্বী সহজে সরকারের উপর প্রভাব রাখতে পারে,সরকারকে বশ্যতা স্বীকারে বাধ্য করতে পারে,সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছে তাঁরা। জাতির জনকের কন্যা সব ষড়যন্ত্র সম্যক অনুধাবন করে দৃশ্যমান কিছু পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন।ইতিমধ্যে দেখা যাচ্ছে,সর্বক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিকভাবে সতর্কাবস্থা জারি না করা হলেও এ ধরনের সন্ত্রাসী ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে বাড়তি নজর দেয়া হচ্ছে--দেশের সব বিমানবন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। স্পর্শকাতর স্থানগুলোতে নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা। শাহজালাল বিমানবন্দরের ভিতর ও বাইরে যাত্রীদের কঠোর তল্লাশিসহ দর্শনার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। বহির্গমন যাত্রীদেরও তল্লাশি চালানো হচ্ছে। বিমানবন্দর কেন্দ্রিক নাশকতার পরিকল্পনা করছে একটি গোষ্ঠী-এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নিরাপত্তা জোরদারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। নাশকতার ঘটনা ঘটতে পারে এবং দুর্বৃত্তরা বিস্ফোরক কোনো কিছু নিয়ে বিমানবন্দরে আসতে পারে, যা মেটাল ডিটেক্টরে ধরা পড়বে না, এমন আশঙ্কা মাথায় রেখে বিশেষ সতর্কতা জারি করা আছে। দর্শনার্থীদের বিমানবন্দরে প্রবেশের সবকয়টি কাউন্টার বন্ধ রেখে ভিতর-বাইরে তল্লাশি করা হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ‘স্থাপনা সমুহ’ এবং "কেপিআই জোন" আশপাশের এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে চলাচলকারীদের প্রযুক্তির সাহায্যে ব্যাগেজ ও দেহ তল্লাশি করে দেখা হচ্ছে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত রেডিও-টেলিভিশন কেন্দ্র, আণবিক শক্তি কমিশন, বিমানবন্দর, বিদ্যুৎ, ওয়াসা, গ্যাস সরবরাহের স্টেশনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে পুলিশি পাহারার পাশাপাশি গোয়েন্দা তৎপরতাও বাড়ানো হয়েছে।কুটনীতিক জোনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা দ্বিগুন করা হয়েছে। সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ শুধুমাত্র বাংলাদেশের একক সমস্যা নয়।অনেক আগে থেকেই সমস্যাটি একটি বিশ্বজনীন সমস্যায় রুপ নিয়েছে।তুলনামুলক সমস্যাটির প্রভাব মুসলিম অধ্যুষিত দেশ বাংলাদেশ হওয়া সত্বেও কম বলা যায়। নাইন-ইলেভেনে টুইনটাওয়ার উপর হামলার পর থেকে এ বিপদ সারা বিশ্বের দেশে দেশে বিশেষ করে মুসলিম অধ্যুষিত দেশ সমুহে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।ভারত, ফ্রান্স,আমেরিকা,বৃটেন সব দেশই কমবেশী এর মুল্য দিতে হচ্ছে।পাকিস্তানে প্রায় প্রতি শুক্রুবারে সেখানে গোষ্টিগত দ্বন্ধে এবং জঙ্গি হামলায় শত শত লোক মারা যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞগন মনে করেন বিশ্ব পুঁজির কায়েমি স্বার্থের প্রতিভূরা নীজেদের স্বার্থে সৃষ্টি করা সাপটি এখন তাদেরকেই থেমে থেমে দংশন করছে। বিশ্বকে শাষন করার জন্য তাঁরা যে দ্বৈতনীতি অনুসরন করে আসছিলেন তারই প্রতিফলন হচ্ছে আজকের বিশ্বের আতংক জঙ্গীবাদ।শীতল যুদ্ধ চলাকালিন সময়ে আফগানিস্তান থেকে রাশিয়া কে হঠানোর জন্য যে সাপকে লালন পালন করে পোষ মানিয়ে ছিল,অর্থ অস্ত্র প্রযুক্তি দিয়ে সহযোগিতা করেছিল, সেই সাপ তাঁদের প্রয়োজন ফুরিয়ে যাওয়ার পর ধ্বংশের প্রয়োজন দেখা দিলে ফুঁসে উঠে। এর আগেই দুনিয়াব্যাপি সাপের বংশ বিস্তার করে সংখ্যায় আধিক্য হয়ে সকল দেশের জন্য হুমকি হওয়ার মত শক্তি সামর্থ্য সঞ্চয় করতে সক্ষম হয়ে যায়। বর্তমানে হুমকি হয়ে অশান্তির দাবানল চড়িয়ে দিচ্ছে বিশ্বব্যাপি। বাংলা দেশের অবস্থান এক্ষেত্রে যদিও প্রাথমিক অবস্থায় তাঁদের অনুকরনে জঙ্গি মতবাদি দানব সৃষ্টি হয়েছিল ভৌগলিক কারনে বা বাংলাদেশের মানুষ উদারচেতা ধর্ম পালনকারি বিদায় সেই দানবের শিকড়ে তেমন শক্তি সঞ্চয় করতে পারেনি।মাত্র কয়েক ন্যুনন্নতম অভিযানেই শিকড়ে টান পড়ায় মুলদানবীয় গাছের ডালপালা শুকিয়ে ঝড়ে পড়া শুরু হয়েছে।তখনকার অভিযানে যে কয়জন জঙ্গি ধরপাকড় করা সম্ভব হয়েছিল, তাঁরা প্রায় সকলেই জামায়াত শিবিরের রাজনীতির সাথে সম্পর্কিত ছিল। সাম্রাজ্যবাদ তাঁদের স্বার্থে ভিন্ন প্রক্রিয়ায় দক্ষিন-পুর্ব এশিয়ায় মৌলবাদকে জিইয়ে রাখার জন্য চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে আগে থেকেই। মুক্তি যুদ্ধের আগে থেকেই মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি বিরুদিতা করে তার প্রমানও রেখেছেন।যুদ্ধে পরাজয়ের গ্লানি ভুলতে না পারার কারনে জাতির জনককে হত্যা করে পথ পরিস্কার করতে চেয়েছিল।আংশিক সফল যে হয়নি তা বলবোনা।এখনও সেই একই প্রক্রিয়ায় দ্বৈতনীতির আশ্রয় গ্রহন করে একদিকে সন্ত্রাসিদের সাহায্য করছে, অন্যদিকে রেড এলার্ট জারি করে বিশ্ব দৃষ্টি বাংলাদেশের উপর রাখার কৌশল নিয়েছে।ভারত - চীনের রাজনীতিতে মোড়লগিরি দেখাতে হলে হাতের মোঠায় বাংলাদেশের প্রয়োজন।বাংলাদেশের এই ভৌগলিক অবস্থানের কারনে দ্বৈত ভূমিকা পালনের মাধ্যমে তাঁদের কব্জায় নিয়ে যেতে চায়। বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থায় নিজেদের মোড়লগিরি টিকিয়ে রাখার আশা দিন দিন ক্ষীন হয়ে আসছে,তা অনুধাবন করা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নতি, স্বাধীন পথে চলার অভিলাষ, জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনার বিশ্ব নেতৃত্ব গ্রহনের আশংকা বা তাঁর দৃডচেতা মনোভাব সেই বিশ্ব মোড়ল ভালো চোখে দেখছে না।মোড়লের ফর্মুলায় ইউ,ইউ, ইউনিয়ন ও যোগ দিবে এতেও কোন সন্দেহ নেই।ইতিমধ্যে বিশ্বব্যাংক মধ্যম আয়ের দেশ গন্য করে বাংলাদেশের ঋনের সুদের হার বাড়িয়ে দিয়েছেন।এতেই উক্ত আশংকা পোষন কোনক্রমেই ভুল নহে আমি মনে করি।তার আগে পদ্মাসেতু নিয়ে তেলেসমাতি বিশ্ব দরবারে নিন্দার ঝড় উঠবে এই আশংকাও করছেন।যারফলে বার বার আদালত পরিবর্তন করেও মামলা থেকে রেহাই পাওয়ার কোন ফর্মুলা বিশ্বব্যাংক বের করতে পারছেন না।ঋন সুবিধা প্রত্যাহারের পর এবং দুর্নীতির অভিযোগের জবাবে প্রধান মন্ত্রী বাংলাদেশের নিজস্ব তহবীলে পদ্মাসেতু নির্মানের ঘোষনা যারপরনাই মোড়ল গীরির আত্মসম্মানে বড় রকমের ছেদ পড়েছে। ক্ষীপ্ততাই সুদহার বাড়ানোর কারন বলে আমি মনে করি।বহির্গতভাবে যদিও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ব্যাপক প্রসংশা করে ভিতরের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছেই।সে কারণেই পশ্চিমা দুনিয়ার চেয়েও বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ পুর্নাঙ্গ সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ সম্পর্কে অযথা সংশয় সৃষ্টির চেষ্টা চালানো হচ্ছে। সরকারের সতর্কবস্থার পাশাপাশি হামলাকারি চিহ্নিত করার আন্তরীক চেষ্টা আশা করা যায় অদৃশ্য ষড়যন্ত্র রোখার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালনে সামর্থ হবে বাংলাদেশ। সন্ত্রাস ও জঙ্গি তৎপরতা বেশ কিছু দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব এবং উন্নয়নকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। বৈশ্বিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্যও তা বাধার সৃষ্টি করে চলেছে। বাংলাদেশ প্রথম থেকেই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে বিশ্ববাসি ভালভাবেই অবগত আছেন। এই আপদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াইয়ের প্রাসঙ্গিকতাকে স্বীকার করে বিশ্ব সপ্রদায়ের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়েছে বাংলাদেশ।জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণেও এ বিষয়ে বাংলাদেশের দ্ব্যর্থহীন অবস্থানের কথা তুলে ধরা হয়েছে। সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদকে বৈশ্বিক সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সব রাষ্ট্রকে এক যোগে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রীর বক্তব্যে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কতক সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনাও তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশের এ অবস্থান জাতিসংঘের বিশ্বশান্তি এবং সব জাতিগোষ্টির সহ-অবস্থানের পরিবেশ নিশ্চিত করার যৌক্তিক প্রত্যাশার সঙ্গে সম্পুর্ন সঙ্গতিপূর্ণ।যদিও ধর্মের নামে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের অপচর্চা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে তা বিশ্বের বর্তমানের প্রচলিত প্রতিটি ধর্মীয় মতবাদের মূল চেতনার পরিপন্থী। পৃথিবীর প্রতিটি ধর্ম শান্তি ও মানবতার পক্ষে। প্রতিটি ধর্ম সন্ত্রাস ও অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে তার অনুসারীদের বার বার সতর্ক করে দিয়েছে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িতরা নিজেদের মতলব হাসিলের জন্য ধর্মকে বর্ম হিসেবে ব্যবহার করলেও তাদের সঙ্গে ধর্মীয় মূল্যবোধের দূরত্ব সম্পর্কেও সকল ধর্মের মানুষের বোধগম্যতা ইতিমধ্যে জোরালো হওয়া আরাম্ভ হয়ে গেছে। আমাদের এই গ্রহকে শান্তির গ্রহে পরিণত করতে চাইলে,বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের জীবনযাত্রার মানকে উন্নত পর্যায়ে নিতে চাইলে এ প্রয়াসের প্রতি বিঘ্ন সৃষ্টিকারী সন্ত্রাসবাদ এবং জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতেই হবে। এটি শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের সব দেশের সব মানুষের কর্তব্য বলে বিবেচিত হচ্ছে ইতিমধ্যে।জঙ্গী শুধুমাত্র ইসলাম ধর্ম অনুসারিদের মধ্যে সৃষ্টি হচ্ছে এ কথাটি সম্পুর্ন ভুল।সব ধর্মেই জঙ্গিপনা উত্থানের অপপ্রয়াশ লক্ষ করা যাচ্ছে।ভারতের শিবসেনা,বাংলাদেশের জামায়াত,বার্মার উলপা,পাকিস্তানে প্রদেশভিত্তিক নামের ভিন্নতা লক্ষ করা গেলেও জামায়াত মরুব্বির ভুমিকা পালন করছে। বাংলাদেশে নিষিদ্ধ সংগঠনগুলো অস্তিত্ব সংকটে আছে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই। তাদের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে সরকারি ভাবে। অন্যদিকে প্রতিবেশী দেশের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলোও অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে। এ অবস্থায় রাজনৈতিক মতের বিস্তর ব্যাবধান সত্বেও তাঁরা সবাই এককাতারে আসার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।এক্ষেত্রে অপ লাইনের রেফারির ভুমিকায় অবতির্ন্ন হওয়ার সুযোগ বি,এন,পি নিবে এতে কোন সন্দেহ নেই।এই ব্যাপারটি যারা বি,এন,পি ভালবাসেন তারা গ্রহন করতে পারছেন না।তাই একে একে পদত্যাগ করে আগেভাগে নীজেকে ক্লিন রাখার জন্য প্রতিযোগিতা করে পদত্যাগ করা শুরু করেছেন। অতিবাম,অতিডান,জামায়াত,নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গীসংগঠন, চীনপন্থী সাম্যবাদি দল,সিরাজ শিকদার,কমরেড তোহা,আবদুল হকের অনুসারীরা আন্ডারগ্রাউন্ডে শলা পরামর্শ চালিয়ে যাচ্ছে।এদের সাথে যোগ দিতে পারে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সন্ত্রাস ও জঙ্গী বিরুদী জিরুটলারেন্সের কারনে জোট সরকারের আমলে আশ্রয় পাওয়া ভারতের সেভেন সিষ্টার খ্যাত আন্দোলনকারি জঙ্গীগোষ্টি এবং বার্মার জঙ্গীগোষ্টিরাও।গতকিছুদিন আগে বার্মার জঙ্গীনেতার আস্তানা কক্সবাজার এলাকা থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে।অনুপশেঠির সন্ত্রাসি গোষ্টি এবং ভারতের বিচ্ছিন্নতা বাদিদের বদ্ধমুল ধারনা যতদিন আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকবে ততদিন তাদের পক্ষে ভারতের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসি কর্মকান্ড পরিচালনা করা সম্ভব হবে না। সরকারের অমনোযোগিতা,অহংকারী মনোভাবের সুযোগে- সংগঠিত হয়ে যেকোন মহুর্তে তারা সরকারের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। এ অবস্থায় সরকারকেই দায়িত্বশীল ও কঠোর ভূমিকা পালন করতে হবে। কাজে লাগাতে হবে গোয়েন্দা বিভাগকে। সন্ত্রাসী ও জঙ্গি সংগঠনগুলোকে সংগঠিত হওয়ার আগেই নিষ্ক্রিয় করতে হবে। তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিতে হবে।জামায়াতের অর্থের উৎসমুখ বন্ধ করে দেয়া এই মহুর্তে অতিব প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।টাকার উৎসস্থল জামায়াতের ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান গুলী অন্যতম।মধ্যপ্রাচ্য থেকে হুন্ডির মাধ্যমেও তাঁদের টাকা আসা বন্ধ করা প্রয়োজন। টাকার শক্তি যত কমবে জঙ্গীপনা ততবেশী নিস্তেজ হবে।টাকার উৎসসমুহ বন্ধ করে দিতে পারলে তাদের মনোবলও ভেঙে যাবে। অন্যদিকে রাজনৈতিক দিক থেকেও নানা কার্যক্রম নিয়ে তাদের উত্থানের আশঙ্কা নস্যাৎ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি সামাজিক শক্তি, রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে।মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তিকে মাঠে নামাতে হবে।সাহিত্যিক,সাংবাদিক,বুদ্ধিজীবি,অসাম্প্রদায়িক চেতনা সম্পন্ন সকল জনগোষ্টিকে সংগঠিত করে সর্বদা মাঠে রাখার ব্যাবস্থা গ্রহন করতে হবে।বাড়ীর মালিকদেরকে কঠোর নির্দেশনা দিতে হবে,তারা যেন অপরিচিত কাউকে বাসা ভাড়া না দেন।উপযুক্ত ব্যাক্তির সুপারিশ ব্যাতিরেকে বাসায় স্থান দেয়া দন্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গন্য করে আইন পাশ করা প্রয়োজন। ব্যবহার করতে হবে সর্বস্তরের মিডিয়াকে। গড়ে তুলতে হবে জনসচেতনতা। জনগণের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে পারলে সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদ যেবাদই হোকনা কেন, কোনোভাবেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না। "জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা"