সরকারের জনপ্রশাসন, জাতির পিতার নির্দেশনা--বর্তমান সরকারের অবস্থান ও করনীয়------ ===============================        গত ২৬ জানুয়ারি থেকে ২৯ জানুয়ারি নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে পুলিশ সপ্তাহ। এ উপলক্ষে পুলিশের সেবা, পুলিশের কাংখীত ভূমিকা নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।    পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পুলিশকে বিশ্বস্ত  বন্ধুর মতো মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কোনো নাগরিক যাতে ‘অহেতুক’ হয়রানির শিকার না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল  হামিদ। পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনের দরবার হলে এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি পুলিশ বাহিনীর উদ্দেশে বলেছেন, জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব। পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য হবে দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন। পুলিশের প্রতিটি সদস্যকে জনগণের বন্ধু হয়ে উঠতে হবে। আবহমানকাল থেকেই রাষ্ট্রের উচ্চতম পয্যায় থেকে এইসমস্ত হীতপোদেশ দিয়ে যাচ্ছেন এই বাহিনীকে,কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে বলে মনে হয়না।পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে স্পষ্ট বুঝা যায়,পুলিশের অপরাধ প্রবনতার পারদ ফি বছর উধ্বমূখি ছাড়া একবারের জন্যেও নিম্নমুখি হয়নি। উল্লেখ্য, পুলিশ সপ্তাহ শুরুর কয়েকদিন আগে থেকেই আলোচনার কেন্দ্রে পুলিশ। পুলিশ সদস্যদের হাতে দুই সরকারি কর্মকর্তা নির্যাতিত হওয়ার ঘটনায় সংবাদের শিরোনামে আসে পুলিশ। জনহয়রানি, নির্যাতনের ঘটনায় পুলিশের অভিযুক্ত ও সমালোচিত হওয়ার প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রপ্রধান এবং  সরকার প্রধানের আহ্বান বিশেষভাবে তাৎপর্যপুর্ন। লক্ষনীয় বিষয় হলো,"এইসমস্ত নেতিবাচক খবর সারা বছরই পত্রিকার পাতায় দেখা যায়। সরকারের উচ্চমহলের উপদেশও নিয়মিত বর্ষিত হতে থাকে।" সরকার দায়ী পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করতে অলসতার পরিচয় দিচ্ছেনা। সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে নেয়া কঠোর পদক্ষেপের বিবরন মিডিয়ায় তেমন আসেনা।ঘটিত ঘটনার বিবরন চোখে দেখা যায়,মিডিয়ায় প্রকাশ পায়।কিন্তু বিপরীতে সরকারের নেয়া ব্যবস্থা চোখেও দেখা যায়না,মিডিয়াও প্রকাশ করেনা। ঘটিত ঘটনা যেমন বিভৎস,ন্যক্কারজনক,তাঁর জন্য নেয়া সরকারের ব্যবস্থাও অমানবিক,কল্যান রাষ্ট্রের ধারনার বিপরীত। দুর্নীতির পথ প্রসস্ত রেখে দুর্নীতি দমন করা যায়না। ভাল কাজের পুরষ্কারের ব্যবস্থা যেমন আছে,খারাপ কাজের তিরষ্কারও করে যাচ্ছে নিয়মিত। বছর শেষান্তে দেখা যায় অনেক পুলিশের চাকুরী নেই, অনেকেই জেলে,অথবা কোর্ট কাছারীতে দন্ডায়মান। অন্ধ প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার মানষে দুর্নীতিগ্রস্ত পুলিশ শেষাবদি দেশ,জাতি ও নীজ পরিবারের বোঝা হয়ে অসহনীয় জীবন যাপনে বাধ্য হয়ে পড়েন। কোন কল্যানমূলক রাষ্ট্রের ইহা কাম্য হতে পারেনা।অসম প্রতিযোগিতা বন্ধ করার প্রচেষ্টা গ্রহন অবশ্যই জরুরী।প্রতিযোগীতার সমাজে দুর্নীতি বন্ধ করা যাবেনা, তবে কায্যকর প্রসাশনিক সংষ্কারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হবে। দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা দুর্নীতির জন্য একক দায়ী নয়, আমাদের প্রচলিত সমাজ এবং বৃটিশের রেখে যাওয়া রাষ্ট্র ব্যাবস্থাপনা বহুলাংশে দায়ী। পুলিশ সাপ্তাহ পালনের ঢামাডোলের মধ্যেই পত্র পত্রিকায় কয়টি খবর প্রকাশিত হয়।পুলিশ চেকপোস্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা গোলাম রাব্বী ও সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র দাস নির্যাতিত হওয়ার পর  রাজধানীর উত্তরার ৯ নম্বর সেক্টরে এক ব্যবসায়ীকে আটকে রেখে টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ৩ পুলিশের বিরুদ্ধে। গত ২৭  জানুয়ারি প্রকাশিত এ সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, রাজধানীর উত্তরায় এক তরুণ ব্যবসায়ীকে তার বান্ধবীসহ রাতভর আটক করে রেখে আড়াই লাখ টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।  এসব ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের পেশাদারিত্ব নিয়ে। পুলিশের ওপর আস্থা হারাচ্ছে মানুষ। খুন, চাঁদাবাজি, অপহরণ আর ছিনতাইয়ের মতো গুরুতর সব অপরাধের অভিযোগ পুলিশকে ঘিরে। এটি শুধু উদ্বেগজনক নয়, অত্যন্ত বিপজ্জনকও। পুলিশ নিজেই অপরাধী হলে দুর্বৃত্তরা অপরাধ সংঘটনে উৎসাহিত হবে, এটাই স্বাভাবিক। পুলিশ অপরাধ সংগঠন করবে,চাঞ্চল্যকর অপরাধে চাকুরী হারাবে,পরিবার নিয়ে অমানবিক জীবন যাপন করতে বাধ্য হবে।ইহাও রাষ্ট্রের কাম্য হতে পারেনা। সমাজ ব্যবস্থায় লক্ষনীয়ভাবে ফুটে উঠেছে প্রতিযোগীতা।প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার অদম্য অকাংখা জম্ম দিচ্ছে প্রতিটি সেক্টরে অবৈধ আয়ের আকাংখ্যা।এই থেকে পুঁজিবাদি সমাজে পরিত্রানের কোন উপায় নেই। বৃটিশ আমলের প্রতিষ্ঠিত আমলা তান্ত্রিক ব্যবস্থাপনায় রাষ্ট্র পরিচালনায় সুফল তড়িৎ আশা করাও বোকামী।স্বাধীন দেশের রাষ্ট্রকাঠামো বিনির্মানে সংষ্কার কায্যক্রম নিয়মিতই চলমান রয়েছ।সংষ্কার একেবারেই হয়নি তাও নয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু তাঁর দ্বিতীয় বিপ্লবের মাধ্যমে চেষ্টা করেছিলেন উপনিবেশিক আমলাতন্ত্রকে ভেঙ্গে স্বাধীন দেশের উপযোগী রাষ্ট্রীয় কাঠামো সৃষ্টির।কিন্তু সেই চেষ্টা প্রসববেদনার আগেই হত্যা করে উপনি-বেশিকদের দোষর, স্বাধীনতার শত্রু,ধর্মাগ্ধরা একতরফা অপপ্রচার চালিয়ে জনমনে মহতি উদ্যোগের ভবিষ্যত ফলাফল সম্পর্কে জনগনকে ভীতসম্ভ্রন্ত করে তোলে। গত কয়দিন আগে পুলিশ সাপ্তাহ উপলক্ষে সম্মেলনে জন আখাংকার সম্পুর্ন বিপরীতে তদীয় কতিপয় পুলিশের পক্ষ হতে বেশ কিছু দাবি উত্থাপিত করেছেন। এর মধ্যে অন্যতম দুটি দাবি হচ্ছে,"পৃথক পুলিশ বিভাগ গঠন ও বিভাগীয় তদন্তের বাইরে পুলিশের অপরাধ তদন্তে অন্য কোন কমিটি গঠন না করা।" পৃথক পুলিশ বিভাগ গঠনের যৌক্তিকতা তুলে ধরতে গিয়ে কোন কোন পুলিশ কর্মকর্তা "সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের" উদাহরণ টেনে এনেছেন। তারা বলছেন, পৃথক পুলিশ  বিভাগ হলে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এড়িয়ে পুলিশ নিজেই অনেক কাজ দ্রুত করতে পারবে। পুলিশ প্রধান সরাসরি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাবেন। পুলিশের অপরাধ তদন্তে ""বাইরের তদন্ত কমিটি গঠন" করার বিরোধিতা করেছেন কোন কোন পুলিশ কর্মকর্তা।  তাদের যুক্তি হচ্ছে, পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তে বিভাগীয় কমিটিই যথেষ্ট!!!  তারা বলছেন, সরকারের অন্য কোন ক্যাডারের অপরাধ তদন্তে বাইরের কোন কমিটি গঠন করা হয় না। যতবারই তারা পৃথক বিভাগ গঠনের দাবি তোলে তত বারই তারা "সশস্ত্র বাহিনীর" উদাহরণ দেয়। তারা মনে করে, যেহেতু "সশস্ত্র বাহিনীর" পৃথক বিভাগ রয়েছে, সেহেতু পুলিশ বাহিনীরও "পৃথক বিভাগ "থাকা দরকার। যুক্তিটা অকাট্য কিন্তু ভীতরে রয়েছে প্রজান্ত্রের প্রতি" চরম দৃষ্টতা।" সশস্ত্র বাহিনীর পৃথক বিভাগ থাকা একটি গণতান্ত্রিক দেশের পক্ষে সঙ্গত নয়। স্বাধীন বাংলাদেশে সশস্ত্র বাহিনীর পৃথক বিভাগ ছিল না। পঁচাত্তর পরবর্তীতে মেজর জিয়া  স্বীয়স্বার্থে পৃথক বিভাগ গঠন করে। দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, এর পরবর্তী সরকারগুলো এই ত্রুটি সংশোধন করেনি। এ ত্রুটি যত দ্রুত সংশোধন করা হবে ততই গণতন্ত্রের জন্য মঙ্গল। এই পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের পৃথক বাহিনী গঠনের প্রশ্নই অবান্তর।বরঞ্চ জেলা পরিষদের নির্বাচনের পর, জেলা পরিষদের হাতে পুলিশকে নিয়ন্ত্রনের ক্ষমতা দিলেই জন আখাংকা পুরন হতে পারে। "  আমলাতান্ত্রীক "জটিলতা শুধুমাত্র পুলিশের মধ্যে তা     নয়। সরকারের সব বিভাগেই এর কু-প্রভাব রয়েছে।   সরকারের বহু উন্নয়ন কর্মকান্ড শেষ করা যায়না আমলাতন্ত্রের জটিলতার কারনে। ফলত:দেখা যায়, বছরান্তে উন্নয়ন কাজের সিংহভাগ টাকা ফেরৎ নিচ্ছে উন্নয়ন সহযোগি সংস্থা বা বাংলাদেশ ব্যাংক কতৃপক্ষ। আমলাতন্ত্রের জটিলতা যতদ্রুত নিবারন করা সম্ভব হবে, তত দ্রুত বিভিন্ন বিভাগের অনিয়ম, ক্ষমতার অপব্যবহার, ঘোষ, দুর্নীতি বিতাড়ন করা সম্ভব হবে। এই জন্য প্রয়োজন স্থানীয় সরকারের সর্বস্তরে "নির্বাচিত প্রতিনীধি",তাঁদের হাতে যথাযথ ক্ষমতা প্রদান। প্রয়োজনে আরও যুৎসই স্থানে কয়টি নতুন বিভাগ সৃষ্টি করে তথায় মন্ত্রী পদমায্যদায় জনপ্রতিনীধি কতৃক তদারকি,উন্নয়ন কর্মকান্ডের ব্যবস্থাপনা সহ প্রয়োজনীয় দায়িত্ব ও ক্ষমতা দেয়া যেতে পারে।জেলা পয্যায় "জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান" নির্বাচিত হওয়া বাঞ্চনীয়।তাঁদের ক্ষমতার আওতা নির্দিষ্টকরন পুর্বক জেলার সার্বিক উন্নয়নের বাজেট প্রনয়ন ,স্থানীয় উন্নয়নের সমুদয় বরাদ্ধ জেলার দায়ীত্বে দেয়া যেতে পারে। জেলার প্রশাসনের সর্বস্তরের দায়িত্ব, জেলার কর্মকর্তাদের বার্ষিক কাজের প্রতিবেদন তৈরী সহ প্রয়োজনীয় অন্যান্ন ক্ষমতা দিয়ে আইন পাশ করা যেতে পারে। এতে করে সরকারের মন্ত্রীদের অঞ্চল্প্রীতি অনেকটাই কমে আসবে বলে মনে করি।জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অবশ্যই প্রতিমন্ত্রীর মায্যদা দিতে হবে,কথায় নয় কাজে তাঁর প্রতিফলন থাকা বাঞ্চনীয়। তদ্রুপ ভাবে উপজেলা চেয়ারম্যানকে উপমন্ত্রীর মায্যদা দিয়ে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রিকরনের কাজ দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদকে সরকারের তৃনমুল ধরে আরো ক্ষমতায়ন করা প্রয়োজন। সংবিধানের শীর্ষে" গনপ্রজাতন্ত্র "উল্লেখ থাকা সত্বেও আমলারা রাষ্ট্র পরিচালকের মুর্খ্য ভুমিকায় থাকা অনভিপ্রেত।আমলারা জনগনের সেবক,জনগনের পক্ষে তাঁদের কর্মকান্ড হওয়ার কথা।তা না হয়ে জনগনকে হয়রানী,ঘোষ,দুর্নীতির মহোৎসব চালিয়ে যাচ্ছেন। সরকারের সর্বস্তরে জনপ্রতিনীধি কতৃক পরিচালনা মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম একটা অঙ্গিকার ছিল। দু:খ্যজনক হলেও সত্য স্বাধীনতার ৪৬ বছর পরও ইউনিয়ন পরিষদের প্রাপ্য ক্ষমতাও এখন পয্যন্ত নিশ্চিত করা যায়নি।উপজেলা অনিয়মিত,জেলায় সবেমাত্র নির্বাচনের উদ্দেশ্যে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকার সমুহ যত দিন জনগনের দ্বারা পরিচালিত হবেনা,সরকারের কর্মকর্তাদের কাজের জবাবদিহীতার নিশ্চয়তার বিধান করা যাবেনা ততদিন পুলিশ নয় শুধু, কোন বিভাগেই স্বচ্ছতা আনায়ন করা যাবেনা।জনগনের রাষ্ট্র জনগন পরিচালনা করবে, রাষ্ট্রের কর্মচারি জনগনের নিকট জবাবদিহী করবে ইহাই স্বাভাবিক হওয়ার কথা ছিল। যেহেতু আমাদের রাষ্ট্র কাঠামো "প্রজাতান্ত্রীক", প্রজার নিয়ন্ত্রনে বা প্রজা কতৃক নির্বাচিত প্রতিনীধি দ্বারা পরিচালনার কথাই সংবিধানে স্বীকৃত রয়েছে, সেখানে "আমলাতন্ত্র  "কতৃক দেশ শাষন সংবিধান বর্হিভুত শাষন নহে কি? জনগনের নির্বাচিত প্রতিনীধি যদি দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হয়,জনগন নির্দিষ্ট সময়ে ঐ প্রতিনীধিকে পরিবর্তন করার অধিকার রাখে। আমলার দুর্নীতির কারনে আমলা পরিবর্তনের অধিকার কি জনগন রাখে? জেলার সকল সরকারী সংস্থা যদি জেলা পরিষদের নিকট জবাবদিহী করার ব্যবস্থা থাকে, স্বয়ংক্রিয় ভাবেই দুর্নীতি কমে আসবে। এইরুপ স্থানীয় সরকারের নির্বাচন স্বচ্ছ, অবাধ হওয়া বাঞ্চনীয়। যাতে জনগন তাঁদের পছন্দমত প্রতিনীধি নির্বাচন করতে পারে। সে যে দলেরই হোক অবশ্যই সে বাংলাদেশের নাগরীক।জনগনের সেবা করার অধিকার তাঁর রয়েছে। স্থানীয় সরকারের দায়িত্ব শুধুমাত্র সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা, এতে সরকারের জনপ্রীয়তার তুলনা করা অবাঞ্চনীয়।ভাল মানুষ নির্বাচিত হওয়াই প্রধান বিবেচ্য হওয়া উচিৎ। আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সমাপনান্তে আশা করি সরকার জেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোযোগ দিবেন। জেলা পরিষদ নির্বাচন কোন আঙ্গিকে হবে, নির্ধারনের জন্য জনমত নেয়া জরুরী।এখনি উচ্চ পয্যায়ের স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ সমন্বয়ে শক্তিশালী কমিটি করে সুপারীশ সংগ্রহ করা যেতে পারে। প্রয়োজনে অন্যান্ন দেশের স্থানীয় সরকারের নির্বাচন ও কর্মপরিধির অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো যেতে পারে। সর্বশেষ কথা হল "সকল স্তরে নির্বাচিত প্রতিনীধি",সকল স্তরে "জনগনের মতামতের প্রাধান্য "থাকা বাঞ্চনীয়। দীর্ঘ ২১ বছর প্রশাসনিক সংষ্কার হয়নি বলে বর্তমান মুক্তিযুদ্ধের সরকারও সংষ্কারে গাফেলতি করবে তা যুক্তিসংগত হতে পারেনা। মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি চাইবে উপনিবেশিক শাষনের আদলে শাষন ব্যবস্থা বলবৎ রেখে তাঁদের শোষন অব্যাহত রাখতে। তাই বলে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের রুপকার জাতির জনকের" দর্শন"" সত্যিকারের "শোষনহীন,দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ""প্রতিষ্ঠায় প্রসাশনিক সংষ্কার বিলম্বীত করার, তাঁর প্রতিষ্ঠিত দল ক্ষমতায় থেকে কাম্য হতে পারেনা। জাতির জনকের আজীবনের স্বপ্ন, স্বাধীন দেশের জনগন তাঁদের নীজেদের নীজেরাই শাষন করবে। সর্বস্তরে জনগনের নির্বাচিত প্রতিনীধি প্রশাসন নিয়ন্ত্রন করার লক্ষে জেলা গভর্নর চালু করা হয়েছিল।অঙ্গিকার ছিল গভর্নর সরাসরি জনগনের নির্বাচিত প্রতিনীধি হবে। গভর্নরের হাতেই থাকবে ঐ জেলার সরকারি কর্মচারি নিয়ন্ত্রন,উন্নয়ন,বাজেট বরাদ্ধ, তদারকি সহ অন্যান্ন ক্ষমতা। এই মর্মে  প্রতিজেলায় পরিক্ষীত, ত্যাগী, জনসম্পৃত্ত সম্পন্ন ব্যাক্তিদের "নির্বাচনোত্তর দায়িত্ব " দিয়ে প্রশাসনিক সংষ্কারের প্রাথমিক পদক্ষেপও নিয়েছিলেন। "স্বাধীনতা বিরুধী, রাজাকার, পাকিস্তানের  এজেন্ট, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যোগসাজসে" ১৫ই আগষ্ট রাতের অন্ধকারে জাতির জনককে  স্ব-পরিবারে হত্যা করে বাঙ্গালী জাতির আশা আখাংকার বিপরীতে রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে পিরিয়ে নেয়। মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের বিপরীতে রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে নিয়ে যেতে নকল মুক্তিযুদ্ধার অভিনয়ে পারদর্শী মেজর জিয়াকেই তাঁরা বেছে নেয়। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, বদপুলিশ কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করবেন।ইহা অত্যান্ত সাময়িক পদক্ষেপ।পরবর্তি যারা স্থলাবিষিক্ত হবেন তাঁরা আরো খারাপ হবেনা তাঁর গ্যারান্টি কি? "এই যেন মাথা ব্যথায় মাথাই কেটে পেলার সিদ্ধান্ত। " প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না দিয়ে কেটে ফেলা গ্রহন যোগ্য হতে পারেনা।পুলিশের কাজ রাস্তা ঘাটে বলে দেখা যায়,হৈচৈ তাই হয়তো বেশী। চারদেয়ালের অভ্যন্তরে কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন কি দেখা যায়? পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেই দুর্নীতি বন্ধ হয়ে যাবে? দুর্নীতি তদারকির দায়িত্ব প্রাপ্ত, "দুর্নীতি দমন কমিশন" এর কয়েক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে "দুর্নীতির" অভিযোগের খবর কিছুদিন আগে পত্রিকায় পড়েছিলাম। "ছাগলের উপদ্রবে ভেড়া দেয়া,ভেড়ায় যদি ছাগল খেয়ে পেলে তবে কি কিছু করার থাকে?" এই কারনেই বলছিলাম,যতদিন পয্যন্ত প্রশাসনের সর্বস্তরে জবাব দিহীতার আওতায় আনায়ন করা যাবেনা--ততদিন পয্যন্ত সমাজ থেকে দুর্নীতি দূর করা যাবেনা। প্রশাসনিক আমুল সংষ্কারেই পারে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি,কালটাকা আহরনের পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করে সমস্ত অপকর্ম নিয়ন্ত্রন করতে।     জয় বাংলা     জয় বঙ্গবন্ধ   জয়তু দেশরত্ম  শেখ হাসিনা      

নি:সন্দেহে সংষ্কার প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়া প্রত্যেক সরকারের জন্য জটিল ও বিপদ জনক।পরিবর্তনের আবাস পেলেই এক শ্রেনীর পশ্চাদ মুখী মানুষ সব গেল সব গেল বলে সোরগোল তোলার চেষ্টা করেন।তাই এই ধরনের বড় সংষ্কারের আগে নীজের দলের অভ্যন্তরে সংষ্কার নিয়ে আসা দরকার।যে কোন পঅরিস্থিতি মকাবেলা করার মত সাংগঠনিক ভিত্তি একান্ত কাম্য।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন