অতীতের আলোকিত নেতৃবৃন্দ--বর্তমান প্রজম্ম ========≠======================== বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে পুরানো দল।দলটির মধ্যে রয়েছে অগনিত আদর্শবাদী, ত্যাগী, সংগ্রামী নেতা। অধিকাংশ নেতা সজ্জন কর্মীবান্ধব,দলের প্রতি আনুগত্যশীল।সার্বক্ষনীক রাজনীতি করার অনেক সামথ্যবান, নীতিবান নেতা কর্মীর দেখা মেলে দলটিতে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী দর্শনকে প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার জন্য লড়াই সংগ্রামের মধ্যে অনেকেই নীজের জীবন যৌবন কখন অমানিশার অন্ধকারে ঢেকে দিয়েছেন টেরও পাননি। যখন বাধ্যকের পীড়ন অনায়াসে শরীর ও মনকে আড়ষ্ট করা শুরু করেছে তখনি টের পেলেন কতবড় ঘোর স্বপ্নের মধ্যে ডুবে ছিলেন। সময়তো কারও জন্য অপেক্ষা করেনা, অসময়ে ইচ্ছা হলেও পারিপাশ্বিকতা সমর্থন করেনা। সংগতকারনে ভাই,বোন,আত্মীয় স্বজনের বোঝা হওয়া ছাড়া উপায় কি?সুতারাং অযত্ন,অবহেলায় বাধ্যক্যের জীবনে নেমে আসে এক বিভীষিকাময় অন্ধকার।নিকট অতীতের ত্যাগের গৌরবকে মনে হতে থাকে জীবনের নিমগ্মচিত্তের বড় বোকামি। আপামর জনগনের আদর্শ মানুষ আর বহু নেতা কর্মীর অনুস্মরনীয় -অনুকরনীয় হয়ে বেঁচে আছেন--ঘুনাক্ষরেও তাঁর মনে পড়েনা। অসহনীয় বাধ্যক্য সব অর্জনকে চাপা দিয়ে অভিমানকে সামনে নিয়ে আসে।তখনি কেবল নীজের জীবন, অনুসারীদের বিচ্ছিন্নতাকে মনে হতে থাকে- কেবলই অবজ্ঞা আর অবহেলা। অতীতের হাজারো মানূষের শ্রদ্ধা,ভালবাসায় সীক্ত হতে হতে কখন নীজে রীক্ত হয়ে গেলেন কস্মিনকালেও ভাবিত করেনি যাকে,সেই হয়ে যান আপনজনের আপদ। তেমনি সময় পার করছে দলটির অধিকাংশ পোড়খাওয়া নেতাকর্মী। একদা যাদের ত্যাগের মহিমায় সুন্দর সমাজ, সামাজিক সভ্যতার বিকাশ ঘটেছে ধীরলয়ে,সমাজ পেয়েছে মানব সেবার দীক্ষা। মানব সেবাব্রতে জীবন উৎসর্গকারী বাধ্যক্যপীড়িত মানুষটি আপনজনের নিত্য অবহেলায় একবারের জন্যেও মনে করেনা মরেও সে অমর। কালের বিবর্তনে রাজনীতিতে সবার অলক্ষে উত্থান ঘটেছে ভোগবিলাসী, আদর্শচ্যুত, উদ্দেশ্য পরায়ন, নামবিলাসী,তৌরন সর্বস্ব নেতা কর্মীর। তাঁদের হীনমানষিকতায় তুলে নিচ্ছে জনমানবের আনুগত্যতা, সামাজিক স্থীরতা, সম্মান আর শ্রদ্ধা। চতুর্দিকে দেখা দিচ্ছে অবক্ষয়ের অন্তজ্বালা। রাজনীতি হয়ে পড়েছে বিনিয়োগের উর্বর ভূমি। অমরত্বের অদেখা গৌরবের স্থলে-স্থান করে নিচ্ছে নগদ প্রাপ্তির অহংকার। ঘৃনীত হচ্ছেন বঞ্চিত জনগোষ্টির অভিসম্পাতে। রাজনীতিকে নিয়ে যাচ্ছেন জনমানবের অগ্নিস্ফুলিঙ্গে।স্মরনে পড়েনা তাঁদের অমরত্ব সুদুরপরাহত--হয়ে আছেন মনের অজান্তে সমাজের বিষাক্তকীট, দেশ ও দশের শত্রু, পরিবারের কলংক। নামিয়ে দিতে পারলে অন্ধকারে বেঁচে যাবে দেশ, সমাজ আর সভ্যতা। এই দুষ্ট চক্রের অনেকেই আজ আসীন হয়ে আছেন সমাজের এমন এক জায়গায়,সাধারনে তাঁরা সবাই অসাধারন। আয়ত্ব করে নিয়েছেন প্রচারের সব সামাজিক মাধ্যম। নীমিষেই বৃহৎ অর্জনকে করে দিতে পারেন বিসর্জন। দিনে দিনে ফুলে ফেঁপে হয়েছেন একেকজন বটবৃক্ষ। ভুলে গেছেন অতীত,পুর্বপুরুষেরা করেছেন তাঁবেদারী, বিজাতীয় উপনিবেশিকদের। ঘুনাক্ষরেও করেনা স্মরন, বৃক্ষ হতে পেরেছেন কার অবদানে। বহুল প্রচলিত প্রবচন,ছোট লোক বড় হলে বন্ধুকে কাঁদায়। এই মহুর্তে দেশ ও জাতিকে শৃংখলায় আনায়ন একান্ত জরুরী। তাঁর জন্য চাই আদর্শবান দল।আদর্শ ভিত্তিক দল বলতে বর্তমানে একটি দলকেই বুঝায়,সে দলটি হচ্ছে ঐতিহ্যের ধারক বাহক,তৃনমুল থেকে উঠে আসা দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।যে দলের রয়েছে জাতির জনকের কালজয়ী দর্শন,ধারন করার আদর্শ, গতিশীল নীতি।এই দলের নেতা কর্মীদের জাতির জনকের রেখে যাওয়া কালজয়ী দর্শন চর্চা অপরিহায্য। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ চর্চাই মেধাবী রাজনীতিবীদ হয়ে উঠার একমাত্র উপায় হতে পারে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করা ছাড়া দলের বিকাশ সম্ভব নয় । উধ্বতন নেতৃবৃন্দের দলের অভ্যন্তরে আদর্শ ধারনক্ষম নেতাকর্মীর উত্থান ঘটাতে মনপ্রান দিয়ে কাজ করা একান্ত প্রয়োজন। নীতি আদর্শ, সৎ, ত্যাগী নেতাদের বিচরন যত দ্রুত হবে, দুষ্ট চক্রের বিতাড়ন তত নিম্নগামী হবে।আদর্শবান, ত্যাগী নেতারা যত বেশী দল থেকে দূরে সরবে জনগন তত বেশী কষ্ট পাবে। জনগন যত বেশি কষ্ট পাবে, জাতির জনকের আত্মা ততবেশী গোমরে গোমরে কাঁদবে। কারন জাতির জনকের মত আর কোন নেতা বাঙ্গালী জাতিকে ভালবাসতে পারেননি।এই জাতির জন্য তাঁর পরিবারের সমতুল্য ত্যাগ কোন বাঙ্গালী নেতা অতীতেও পারেনি,ভবিষ্যতেও পারবেনা।বাঙ্গালী জাতিরজন্য বদন্যতা, মমত্ববোধ, মহত্বতা, ত্যাগ ,রক্ত, জীবন যৌবন যাহা কিছু সব একটি মাত্র পরিবারেই দিয়েছে,সেই পরিবারটিই হচ্ছে জাতির জনকের পরিবার। এমনতর সময়ে অনুসরন,অনুকরনযোগ্য একজনই আছেন, সেই পরিবারেরই সকল গুনাবলী ধারন করে আছেন। বিশ্বের কোটি মানুষ যাঁকে অনুস্মরন করা শুরু করেছেন,অনুকরন করা শুরু করেছেন।তাঁদের জীবনকেও তাঁর মত করে সাজাতে ব্যস্ত, তিনিই জাতির জনকের জৈষ্ঠ কন্যা,বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী দেশরত্ম শেখ হাছিনা। জাতির জনকের কন্যা এমন কতক গুন পারিবারিক ভাবেই বহন করে চলেছেন। তিনি অতিশয় প্রচার বিমূখ একজন পর্দানশীল মহিলা।প্রচারের দায়িত্ব আমাদের। আমাদের প্রচার মাধ্যম গুলীর। প্রধানমন্ত্রীর বদান্যতা ও সৌজন্যতার প্রকাশ তার সরলতায়। আমাদের দেশের মিডিয়ার দায় অবশ্যই আছে তার মহত্ব প্রচারের। তাঁর আচরনে উদারতা থাকলে তাকে জাগিয়ে রাখার। সেটা না করলে যে মহিলাটি আমাদের জন্যে এতকিছু করছেন যার শত্রু পদে পদে, তাঁর অজান্তে শত্রু শুধু বাড়ছেই। '৭১/৭৫ এর রাজাকার, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীরা সংগঠিত হচ্ছে দেশে বিদেশে।তাকে মর্যাদা দিতে চায়না,জাতির জনককে স্বীকার করেনা,এক সেকেন্ডের জন্য ভালো থাকতে দিচ্ছেনা। আমরা ঘরপোড়া মানুষ, বঙ্গবন্ধু শাষনামল দেখেছি। তার মতো মহান হৃদয়বান সার্থক বাঙালি একটিও নেই,অদুর ভবিষ্যতে জম্ম ও নিবেনা। পরনের লুঙ্গি, প্যান্ট, জামা, গায়ের চাদর খুলে দিয়ে দিতেন গরীব অসহায়দের।গ্রামের সাসাধারন মানুষদের জড়িয়ে ধরতেন, বাড়িতে নেতা কর্মী বা গ্রামের কেহ এলে না খেয়ে যেতে দিতেন না। তাঁকে নিয়ে কত ছলচাতুরী, কত কৌশলে তাকে ছোট করার অপচেষ্টা,তাঁর পরিবারকে হেয় করার কত অপচেষ্টা। পীঠা উৎসবের কথাই বলি।কোন নেতা,কোন দেশে,কোন আমলে মাটিতে সবার সাথে বসে আনন্দকে ভাগাভাগি করেছেন? কখনও কি কেউ দেখেছেন নাকি দেখবেন?আমাদের মিডিয়া কি এই মাটির মানুষটির পিঠা উৎসবে সমাগতদের বেশিরভাগই প্রধানমন্ত্রীকে ভালোবাসেন। তার চেতনাকে ধারণও করেন। কিন্তু সেটাই যথেষ্ট নয়। ব্যক্তিগত ভালোবাসার পাশাপাশি আদর্শের দিকটা তুলে ধরাও জরুরি। এমন এক সমাজে আমরা থাকি, এমন এক অতীত আমাদের ঘিরে আছে যেখানে পিঠা খেয়ে পিঠ প্রদর্শনে সময় লাগে না। প্রধানমন্ত্রীর মাটিতে উপবিষ্ট ছবিটির প্রচার গ্রামগঞ্জে ব্যাপক প্রচার হওয়া জরুরী ছিল। তিনি যে মাটির কাছাকাছি ও মানুষের পাশাপাশি সেটা গ্রামের মানুষের মতো ভালো কেউ বোঝবেনা। গ্রামের মানুষ তারা ভালোবাসে ও চায় বলেই আওয়ামী লীগ টিকে আছে। বারবার শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে দল জেগে ওঠার প্রেরণা পায় গ্রামের মানূষের কাছে। গ্রামের হতদরিদ্র মানুষ দল বেঁধে ঝুঁকি নিয়ে ভয়ভীতি এড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধের দেশকে সামনে নিয়ে যাচ্ছে। একদিন তাদের ডেকেও নিশ্চয়ই প্রধান মন্ত্রী পিঠা খাওয়াবেন আশা করি। জনতার নেত্রী বলেই আপনাকে আমরা জননেত্রী বলি,দেশের মঙ্গল চান বলেই আপনাকে দেশরত্মে ডাকতে ভাল লাগে। জননেত্রী হওয়ার জন্য যে মাটির মানুষের স্পর্শ প্রয়োজন, সেটা আপনার চেয়ে ভালো আর কেউ জানে না,জানবেওনা কোন দিন। জননেত্রীর ইহাই আদর্শ।এই আদর্শকেই অনুশ্মরনের কথা বলছিলাম।জননেত্রীর মানব কল্যান,জনগনের কল্যান করার অদম্য আকাঙ্ক্ষা,দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অদম্য স্পৃহাই নীতি।এই নীতিকেই অনুস্মরন করার কথা বলছিলাম। জননেত্রীর আদর্শ, উদ্দেশ্যকে সঠিক ভাবে ধারন করার মানষিকতা সম্পন্ন প্রজম্ম গড়ে তোলাই সময়ের দাবী। বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুনগত পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন আলোকিত রাজনীতির চর্চা।আলোকিত রাজনীতির চর্চার জন্য চাই সার্বক্ষনিক সময় দেয়ার মত সেই সমস্ত আলোকিত মানুষদের যারা আপনার আদর্শকে ধারন করতে পারে,মাটি ও মানূষের কল্যান কামনায় নীজের ভোগ বিলাস ত্যাগ করতে পারে।জাতির জনকের কালজয়ী দর্শনকে ধারন করে লোভ লালসার স্পৃহা অবদমন করতে পারে।আলোকীত রাজনীতি বীদদের রাজনীতিতে সার্বক্ষনিক বিচরন ছিল বলেই '৫২'৬৯'৭১'৯০ এর সৃষ্টি হতে পেরেছিল।বর্তমানের প্রজম্ম দিয়ে নিদেন পক্ষে আন্দোলন সংগ্রামের সিঁড়ি তৈয়ার করা যাবে না,তাঁরই প্রমান রেখে গেল ২০১৪--২০১৫ ইং সাল। জয় বাংলা বলে আগে বাড়ো জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয় হোক জাতির পিতার কন্যার

   রাজনীতির গতি প্রকৃতি নিয়ন্ত্রন করার জন্য দেশ প্রেমিক রাজনীতি বীদের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকায্য।আলোকিত মানুষেরাই আলোকিত সমাজ গড়ে তুলতে পারে।আলোকিত মানুষেরাই দর্শন ধারন করার ক্ষমতা রাখে।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন