তথাকথিত নেতাদের কারনে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হোক--ত্যাগী নিবেদীত কর্মীরা কোন অবস্থায় মেনে নেবে না----- =================================           বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় একটা কলাম পড়ে ছিলাম গত কয়দিন আগে।সেখানে আওয়ামী লীগ নেতাদের নানাহ কায্যকলাপের বিষয় সুনির্দিষ্ট ব্যাক্তি -স্থান উল্লেখ করে বিস্তারীত আলোচনা দেখতে পেলাম।পত্রিকায় যা এসেছে তা হয়তবা শতভাগ সত্য অথবা মিথ্যা নহে,কম বেশি হতে পারে।পত্রিকার আংশিক আমি নিম্নে তুলে ধরা বাঞ্চনীয় মনে করি।পত্রিকাটি লিখেছে---এক সময় আওয়ামী লীগের জেলা পয্যায়ের নেতারা ছিল ঐজেলায় সর্বজন -শ্রদ্ধেয়। নির্লোভ সেই নেতারা রাজনীতির জন্য শুধু ত্যাগই করেছেন। কালক্রমে পাল্টে গেছে সেই রাজনীতির চিত্র। সর্বশেষ টানা সাত বছর দল ক্ষমতায়, তাই আওয়ামী লীগের জেলা নেতাদের সংগঠনের চেয়ে অন্যদিকেই মনোযোগ বেশি। কমপক্ষে দুই ডজন নেতা ক্ষমতা ভাগাভাগি ও নিজেদের আখের গোছানোয় ব্যস্ত। সরকারি-বেসরকারি জমি দখল থেকে শুরু করে জেলার সব ব্যবসা-বাণিজ্য ও নিয়োগের একচ্ছত্র আধিপত্য নিজেদের মধ্যে করে নিয়েছেন ভাগবাটোয়ারা। অন্যগুলোতে এ দুই পদের রাজনীতিকদের নাম ব্যবহার করে অহরহই হচ্ছে দখল, তদবির, টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজি। টানা দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর এসব ক্ষেত্রে এসেছে বেপরোয়া ভাব। দেখে বা শুনেও তারা কিছু বলছেন না বা বলতে পারছেন না। অবশ্য বেশকিছু জেলায় সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের চেয়ে ক্ষমতাসীন হয়ে বসেছেন হাইব্রিড নেতারা। তারা নিজেদের মতো করে চলছেন। তোয়াক্কা করছেন না ত্যাগী রাজনীতি-বীদদের।  বেশির ভাগ জেলায় তৃণমূলের নেতাকর্মীদের চেয়ে এখন কদর বেশি সুযোগসন্ধানীদেরই। এমপিদের মাধ্যমে তারাই ছড়ি ঘোরাচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের ওপর।   প্রতিবেদনটি হাজার হাজার আওয়ামী লীগ কর্মীর অন্ত: দহনের কথাই বলেছে।যে সমস্ত নেতাকর্মী বিশেষ করে যারা জাতির জনকের আদর্শকে আঁকড়ে ধরে সারাটি জীবন শুধু মাঠে ময়দানে আন্দোলন সংগ্রামই করেছেন,বিনিময় কখনই দলের নিকট কিছুই চাননি তাঁদের।এমন অনেক নেতাকর্মী আমার জানামতে এখনও কোনমতে বেঁচে আছেন যাঁরা দলের দুর্দিনে পৈতৃক সম্পদ বিক্রি করে দলীয় কর্মী লালন করতে গিয়ে ভুমিহীনের খাতায় নাম লিখিয়েছেন।সম্মান জনক চাকুরী হারিয়ে বাদবাকী জীবন বেকারের খাতায় নাম লিখিয়ে বৃদ্ধাবস্থায় মানবেতর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিনের ১৮/২০ ঘন্টা সময়   সবার অগোচরে দলের আদর্শ প্রচার ও প্রসারে  নিবেদিত রেখেছেন।অনেকেই স্বজন  হারানোর বেদনা নিয়ে প্রতিনিয়ত দলের মঙ্গলে নীজকে রেখেছেন ব্যপৃত।  মিথ্যা মামলা জেল জুলুম সহ্য করেও আদর্শচ্যুত হননি কখনও।সারা দেশে এমন লাখ লাখ নেতাকর্মী বুকের অন্তদহনে জ্বলে পুড়ে চারখার হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এমন নেতাকর্মী আছে  আমি জানি চিনি,ভাল সম্পর্কে সম্পর্কিত আছি বহু আগে থেকে ২০০৮ ইং সালে নতুন প্রজম্মের উত্থান লক্ষ করে আত্মতৃপ্তিতে তাঁদের বসার জায়গা  দিয়ে নীজে রাজনীতি থেকে স্বেচ্চায় অবসর নিয়েপ্রতিনিয়ত দলের মঙ্গল কামনায় সময় কাটান।    আমি স্বীকার করি আওয়ামী লীগ বুর্জোয়া সংগঠন। জেলা উপজেলার নেতা হলে ব্যাবসা করা যাবেনা তাও নয়।দল ব্যাবসা করার জন্য অনুপ্রেরনা দেয়। স্বাবলম্বী না হয়ে রাজনীতি করা বা সমাজ সেবা করা যায়না সত্য কথা।তবে সেই ব্যবসা কোন অবস্থায় অবৈধ পথে, জোর করে, জবরদখল করে নয়।দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয় এমন কোন কাজে জেলা উপজেলার নেতারা জড়াতে পারেন না কোন অবস্থাতেই।     রাজনীতির ধ্যানধারনার মধ্যে পার্থক্য এসেছে ইহা বাস্তব।বর্তমানের কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রায় সব নেতাই  কোননা কোন ব্যবসা বানিজ্যের সাথে সম্পৃত্ত রয়েছেন।সার্বক্ষনিক রাজনীতি করেন এমন নেতা কোন দলেই খুঁজে পাওয়া যাবেনা।অথছ বেশীর ভাগ নেতাই সার্বক্ষনিক রাজনীতিতে থাকার কথা ছিল।'৭৫এর পট পরিবর্তনের আগেকার সময় সার্বক্ষনিক নেতাদের বিচরন রাজনীতিকে মুখরীত করে রেখেছিল।সম্মান শ্রদ্ধাও ছিল অন্য যে কোন পেশার চাইতে অনেক বেশী।     গুনধর, কালচশমাধারী,তথাকথিত মেজর জিয়ার, "রাজনীতিবীদদের জন্য রাজনীতি কঠিন করে দেব"     ------------------------ জতীয় কর্মসুচী। সেই  কর্মসূচী এমন সূক্ষভাবে পরিচালনা করাহয় যার ফলে সার্বক্ষনিক রাজনীতি এবং রাজনীতি বীদদের কবর রচনা করে পুর্নজম্ম ঘটিয়েছে রাজাকার, আলবদর,সেনা -কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী টাউট,বাটপার, কালোবাজারি নানা শ্রেনীর পঁচাগন্ধময় সমাজের কাল কীট পতঙ্গ গুলীর।       আওয়ামী লীগের লাখ লাখ ত্যাগী নিবেদিত কর্মীরা জানে উত্থিত হাইব্রীড,তথাকথিত লুটেরা শ্রনীকে স্বল্প সময়ে নিয়ন্ত্রন করা যাবেনা।২১ বছর আগে রুপিত বীজ পরিচর্যা, বিদেশী ভিটামীনের অবাধ ব্যবহারে  বটবৃক্ষ আকার ধারন করেছে,শীকড় অনেক গভীরে নিয়ে গেছে।ইচ্ছা করলেই জাতির জনকের কন্যা এর শিকড় উপড়ে ফেলতে পারবেন না। সর্বমহলে গনতান্ত্রিক চর্চার যে লক্ষন  ইতিমধ্যে ফুটে উঠেছে তাঁর ধারাবাহিকতা  যদি সচল থাকে এদের শিকড় উপড়াতে  সময় লাগবে উত্থানের অর্থেক সময় মাত্র।     আশার কথাটি হচ্ছে ইতিমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির জনকের কন্যা বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন রাজনীতিবীদদের হাতে রাজনীতির চাবি তুলে দেয়ার লক্ষে।(১)স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ও মনোনয়ন।(২)আওয়ামী লীগে বহিরাগত সন্ত্রাসী মাস্তান লুটেরাদের অনুপ্রবেশ রোধে কঠোর নিশেদাজ্ঞা জারী। (৩) নির্বাচনে পেশীশক্তি,কালটাকার ব্যবহার রোধে নির্বাচন কমিশনকে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী করে আইন পাশ,আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে নীজ দলীয় প্রার্থীদের বিগত পৌর নির্বাচনে চাড় না দেয়া।     অন্যসব পদক্ষেপ গুলী বিবেচনায় না এনেও উল্লেখীত তিনটি পদক্ষেপকে সুষ্ঠ ও কঠোর দৃষ্টিভঙ্গিতে প্রতিপালন করা গেলে অচিরেই গনতন্ত্রের সুফল প্রত্যেক নাগরিকের ঘরের দরজায় টোকা দিবে বলে আমার বিশ্বাস।তৃতীয় নম্বার সঠিক ভাবে সরকার অনুসরন করার কারনে নগদেই তাঁর সুফল জনগন পেতে যাচ্ছে।বিএনপি একরকম সিদ্ধান্ত নিয়েই রেখেছে আগামী মার্চের ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে তাঁর দল এবং জোট অংশ গ্রহন করবে।শাষক দল আওয়ামী লীগ এবং জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনার জন্য ইহা  কত বড় অর্জন তা কল্পনাও করা যায়না।তৃতীয় পদক্ষেপটির ব্যপারে সরকার যদি আন্তরীক না হতেন, পৌর নির্বাচনে এতবড় বিপয্যয়ের পর বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য সরকারকে ঘাম ঝরাতে হত তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।     "যাহাই হোকনা কেন,আওয়ামী লীগের সেই সমস্ত  ত্যাগী নেতাদের সাত্বনা দেয়ার মানষে আমার এই লেখনি নয়।আমার লেখনি তাঁদের জন্য যারা ফসল রোপন না করে জোর পুর্বক রোপিত  ফসল নিয়ে যাচ্ছে তাঁদের উদ্দেশ্যে।তাঁদের প্রতি অনুরুধ থাকবে,আমার ভুমিতে এসেছেন, প্রয়োজনে  আমার ঘরেও বসেন আপত্তি নেই বরং  খুশী  হব -- কিছু নিয়ম কানুন যে ভাই আগে থেকে আমি পালন করি,  তাযে আপনাকেও   মেনে  চলতে হবে --;"                   জয়বাংলা        জয়বঙ্গবন্ধু              জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা          

  নি:সন্দেহে বলতে পারি লাখ লাখ ত্যাগী কর্মী দেশের আনাচে কানাচে আছে বলেই আওয়ামী লীগ শত বাধা ভেঙ্গে বার বার জেগে উঠেছে।তাঁদের অন্তরে আঘাত দিয়ে আওয়ামী লীগ বেঁচে থাকতে পারবেনা।সময় হয়েছে আগাছা গাছ মারার আগেই সাফ করার উদ্যোগ নেয়া হোক।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন