রাজনৈতিক দল বাঁচে আদর্শ ও দর্শনে--নেতার ব্যাক্তিত্বে  কখনই নয়--- ============================== স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রতিকে বর্তমান সরকারের গনতন্ত্রের অভিযাত্রায় যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এই ব্যবস্থায় তৃনমুল পয্যায় থেকে নেতৃত্ব উঠে আসার পথ যেমনটি সুগম হল অপর পক্ষে অরাজনৈতিক ব্যাক্তিদের উচ্চপয্যায়ের রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের আত্মীয়তার সুত্রে, অবৈধ উপায়ে অর্জিত টাকার গরিমা,কালটাকার বৈধ ব্যবহারের ইচ্ছায় বা অন্য যে কোন উপায়ে রাজনৈতিক পদ সমুহ দখল করে ত্যাগী প্রকৃত দেশদরদী,জননন্দিত নেতাদের অপমান অপদস্ত করার পথ রুদ্ধ হল।স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত প্রতিনীধির স্তর সমুহের সর্বচ্ছো পদটি জনগনের নির্বাচিত প্রতিনীধির মাধ্যমে পুরন করার বিধান কায্যকর প্রত্যেক গনতান্ত্রিক দেশেই রয়েছে। বাংলাদেশেও ইহার ব্যাতিক্রম নহে বরঞ্চ বিশ্বের বহু গনতান্ত্রিক দেশে অনেক ক্ষেত্রে নির্বাচিত প্রতিনীধির অস্তিত্ব না থাকলেও বাংলাদেশে অস্তিত্ব বিদ্যমান রয়েছে।যেমন আমাদের দেশের পাড়া মহল্লায় যে সমস্ত ক্লাব বা সংঘ আছে সেখানেও নির্বাচনের মাধ্যমে পরিচালনা কমিটি করার বিধান অনেক আগে থেকে প্রচলিত আছে।আমাদের শিক্ষার প্রাথমিক স্তর সরকারি প্রাথামিক বিদ্যালয় সমুহ সুচারুভাবে পরিচালনার জন্য নির্দিষ্ট মেয়াদান্তের কমটি বিদ্যমান আছে।অন্য অনেক দেশে এই ব্যাবস্থার অস্তিত্ব দেখা যায়না।সরকারি প্রতিষ্ঠান বেসরকারি কমিটি কতৃক পরিচালনা করা যায় তাঁরা বিশ্বাসও করেনা।আমাদের দেশে কিন্তু এইরুপ তৃনমুলে উক্ত কমিটি সমুহ সফলভাবেই তাঁদের কায্যক্রম চালিয়ে আসছে দীর্ঘদিন থেকেই। বাংলাদেশে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হওয়ার অভিজ্ঞতা নতুন বিধায় প্রাথমিক অবস্থায় জনমনে সংশয় বিদ্যমান ছিল। নির্বাচন নিয়ে জনমনে কৌতুহল, সংশয় আর ভয় কম ছিল না। কৌতুহল, সংশয় আর ভয়ের বহুবিদ যুক্তিসংগত কারন ছিল।'৭৫ইং সালের পটপরিবর্তনের পর থেকে সামরিক সরকার সমুহ গনতন্ত্রের নাম ব্যবহার করে কৌশলে ক্ষমতা ধরে রাখার মানষে প্রথমেই আমাদের প্রতিষ্ঠিত নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার প্রক্রিয়া গ্রহন করে। নির্বাচনে আমদানী করে পেশীশক্তি, কাল টাকার অবাধ ব্যবহার। ভোট কারচুপি করে সামরিক সরকার সমুহের পদলেহিদের নির্বাচিত করার নতুন নতুন  কৌশল,যা তাঁর আগে কেউ কল্পনাও করেনি।পাকিস্তানের অন্তভুক্ত থাকার সময় মৌলিক গনতন্ত্রের সীমিত(মেম্ভার,চেয়ারম্যান ভোটার) ভোটারের ভোটে ও কোনদিন এইভাবে ব্যালট চিনতাই,ব্যালট কেটে নির্ধারীত প্রার্থীর পক্ষে সীল মারার উদাহরন ছিলনা।প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া থেকে নির্বাচিত হওয়া পয্যন্ত দলীয় চাপ থাকা সত্বেও ব্যর্থ নির্দলীয় আবহ সৃষ্টির কৌশল অবলম্বন করে মুলত জনগনের সাথে প্রতারনাই করে যাচ্ছিল সরকার সমুহ।উক্তরুপ প্রতারনার জাল চিহ্ন করে শেখ হাসিনার সরকার দলীয় প্রতীক এবং দলের মনোনয়নে নির্বাচনের বিধান করে জাতিকে প্রতারনার হাত থেকে রক্ষা করেছেন। তাছাড়াও দল সমুহের জনসমর্থনের ব্যারোমিটার উঠানামা করার স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র তৃনমুল পয্যায়ে বসিয়ে রাজনৈতিক  দল সমুহকে তাঁদের কর্মকান্ডের ভালমন্দ দিকগুলীর ব্যাপারে জনগনের মতামত বা ধ্যানধারনার বিষয়ে  সতর্ক করার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।রাজনৈতিক দল গুলীর ভুল সংশোধন করে নেয়ার জন্য চুলচেরা বিশ্লেষনে সময়ব্যায়ের তেমন কোন প্রয়োজনীয়তাও থাকলোনা।যেহেতু জনগনই সকল ক্ষমতার মালিক। জনকল্যান যদি রাজনীতির মুল উদ্দেশ্য হয় তাহলে জনগন যখন যাহা চাইবে রাজনৈতিক দলগুলিও সেইমতেই তাঁদের আন্দোলন সংগ্রাম, জোট,মোর্চা ইত্যাদি করার সহজ পথ খুজে নিতে পারবে।      গত ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচনের আগে -সকল নির্বাচনে ভোটের পর বলা হত কে কত পৌরসভায় জিতেছে। দাঙ্গাহাঙ্গামা,কারচুপি ইত্যাদির দায়বহন না করে জয়ী প্রার্থীদের সুফল ভোগ করার অনৈতিক চর্চা হয়ে আসছিল। ৫ই জানুয়ারী ২০১৬ ইং সাল থেকে অনৈতিক ভাবে সুফল ভোগের দিন শেষ হয়ে সুফল কুফলের দায়ভার রাজনৈতিক দল সমুহের কাঁধে নেয়ার যুগ শুরু হল। প্রথমিকভাবে শুরুটা অত্যান্ত সুন্দর সাবলীল আনন্দময় হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে।যেহেতু সকল দল ও জোট নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেছে,কোন দল বা জোটের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট ভাবে কারচুপি বা জবরদখলের মত অভিযোগ অদ্যাবদি উত্থাপিত হয়নি। ধরেই নেয়া যায় নির্বাচন সুষ্ঠ সুন্দর প্রতিযোগিতা মুলক,দাঙ্গা হাঙ্গামাহীন হয়েছে।নির্বাচন কমিশন যে সমস্ত কেন্দ্রে গোলযোগের অভিযোগ পেয়েছেন- সেই সমস্ত কেন্দ্রে পুন:নির্বাচনের ঘোষনা দিয়ে ভবিষ্যত নির্বাচন আরো সুষ্ঠ করার আরো অবাধ করার অঙ্গিকারই ব্যাক্ত করেছেন বলে আমি মনে করি। প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায় আওয়ামী লীগ শুধু জয়লাভই করেনি, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে।  আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়লাভ করবে এ ব্যাপারে আমি যেমন আত্মবিশ্বাসী ছিলাম, তেমনি জনগণও ছিলেন বলে ধরে নেয়া যায়। যদিও অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বিএনপির দিকে পাল্লাটা ভারি করে রেখেছিলেন, এই বলে যে যদি নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়(চোরের মনে পুলিশ পুলিশ)। এখন তারা কী ভাবছেন টকশোতে এসে প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করতে দেখা যাচ্ছেনা।   বিএনপির শোচনীয় পরাজয় ও আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ে আমি হতবাকও হইনি আশ্চর্যও হইনি। একটু আতংকিত ছিলাম এইভেবে ক্ষমতাসীন দলের কিছু নগদ বদনাম থাকে,(এটা শুধু আমাদের দেশে নয়,প্রত্যেক দেশেই)সেই সমস্ত বদনাম যদি জনগন বড় করে দেখে তবে জয়লাভ করা আওয়ামী প্রার্থীদের কষ্টকরই হবে।অথচ ভোটের পর লক্ষনীয়ভাবে দেখা যায় আওয়ামী লীগের হাইব্রিড নেতাদের  ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অপরাধ গুলী বিএনপি জোটের জাতিগত অপরাধের তুলনায় অনেক ক্ষুদ্রই মনে করেছে জনগন।  জনগন স্বতস্ফুর্ত ভাবে ভোট দিয়েছে,আওয়ামী প্রার্থিরা বেশ ভালভাবেই জয়ী হয়েছে। কোনো কোনো স্থানে দেখা গেছে বিএনপি প্রার্থীর জামানতও বাজেয়াপ্ত হয়েছে। যেমন সুনামগঞ্জ পৌরসভা এবং সিলেটের কানাইঘাটে বিএনপি প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। আমরা যদি একটু পেছন ফিরে তাকাই তাহলে কী দেখতে পাই? বিগত মহাজোট সরকারের সময় যতগুলো সিটি নির্বাচন হয়েছে সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, গাজীপুর সবখানেই বিএনপির প্রার্থীরা জয়লাভ করেছে। সর্বশেষ ঢাকা সিটির দুই অংশ এবং চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনেও দেখা গেছে দুপুর পর্যন্ত চট্রগ্রাম ও ঢাকা উত্তরে বিএনপির প্রার্থী মঞ্জুর আলম ও তাবিথ আউয়াল ভালোই করেছিলেন। নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়ালে হয়তো ফলাফলে ভিন্নতাও ঘটতে পারতো।    আমাদের স্মরন রাখা প্রয়োজন এবং অতীতের এইধরনের বহু উদারহরন দেয়া যেতে পারে বড় ধরনের কোনো রাজনৈতিক ভুল করলে বা ভুল রাজনৈতিক মতাদর্শের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠা দল সময়ের ব্যাবধানে বিলিন হবেই। জনসম্পৃক্ততা হারালে ও একটি ব্যাপক জনসমর্থন ভিত্তিক দলের এরকম পরিণতি হতে পারে। যেমন হয়েছিল মুসলিম লীগের ক্ষেত্রে। মুসলিম লীগ  দ্বি-জাতি তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল তা ছিল ঐতিহাসিকভাবে ও বাস্তবতার আলোকে ভুল একটি রাজনৈতিক তত্ত্ব। কেননা, হিন্দু-মুসলমান হলো একটি সম্প্রদায় বা গোষ্ঠী (ধর্মীয় দিক থেকে)কোনো জাতি নয়। ধর্মের ভিত্তিতে কোনো ধরনের জাতি-গোষ্ঠী গড়ে উঠতে পারে না। ধর্মীয় জাতিগত  হলে পাকিস্তান উৎপত্তির প্রথমেই ইসলামী শাষন রাষ্ট্রব্যাবস্থা দেখা যেত।কিন্তু তা হয়নি,হয়েছে বিদখুটে গনতন্ত্রের আবরনে সেনা শাষনের উর্বর রাষ্ট্রব্যাবস্থা।রাষ্ট্রের উচ্চপয্যায়ে কোন আলেম উলামা অথবা ধর্মীয় জ্ঞানে সমৃদ্ধ কোন নেতাকে দেখা যায়নি।ধর্মীয় শাষনের নিমিত্তে নেয়া কোন পদক্ষেপ কস্মিনকালেও চোখে পড়েনি।তাহলে ধরেই নিতে পারি,দ্বি-জাতিতত্বের দর্শন মানুষকে সাময়িক অন্ধকরে স্বার্থ হাসিলের অপকৌশল ছাড়া আর কিছুই না।জনগনের এই ভুল তত্বের মাজেজা বুঝতে বা অন্ধত্ব কাটতে সময় লেগেছে ২৩ বছর। একটি জাতি-গোষ্ঠী গড়ে উঠার মূলে হলো ভাষা ও সংস্কৃতিগত মেলবন্ধন। ভাষা সংষ্কৃতির মিল অমিলের ব্যাবধানে একাদিক রাষ্ট্র ব্যাবস্থা গড়ে উঠার উদাহরন নেহায়াৎই কম নহে। ধর্মীয় ভাবে(একই ধর্মের অনুসারি) গড়ে উঠেছে এমন উদাহরন কি আছে? পঁচাত্তরের পনেরো আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে মদদ দিয়ে, পরবর্তী সময়ে নিজে সেনাপ্রধান হওয়া এবং নানা নাটক মঞ্চায়ন, মুক্তিযুদ্ধে অংশনেয়া সহকর্মী এবং অধীনস্ত মুক্তিযুদ্ধাসেনা কর্মকর্তা-সৈনিকদের হত্যা, নানা ষড়যন্ত্র করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার শীর্ষ পদে আসীন হন জিয়াউর রহমান। তিনি দেশের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হলেও ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী রূপ দেয়ার মানসে গড়ে তুলেন বিএনপি নামক রাজনৈতিক দলটি। যার রাজনৈতিক দর্শন হলো বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ। যা দ্বি-জাতি তত্ত্বের মতোই অবাস্তব। ""উল্লেখ করতে চাই বাংলাদেশে বসবাসরত একজন মানুষ কি পাওয়া যাবে  জাতিগত ভাবে বাংলাদেশী? বাংলাদেশী জাতি বলতে কোন অস্তিত্ব কি কোথায়ও আছে? রক্তে মাংসে, কৃষ্টি সংষ্কৃতি,ভাষা, আচার আচরন সব কিছুতেই আমাদের বাঙ্গালীর মর্জাগত অভ্যেসের চিহ্ন ফুটে উঠবে।   আমাদের আবাস ভুমির নাম বাংলাদেশ। যে দেশটি ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানী দখলদারদের বিরুদ্ধে এক অসম যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে জয়ি হয়ে অর্জন করেছিলাম।সেই দেশটির নাম রেখেছিলেন সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান।এই দেশটির বয়স মাত্র ৪৫ বছর।আমাদের বাঙ্গালির জম্ম কখন কিভাবে কোথায় কেমন করে হল তাঁর সঠিক তথ্য কি কেউ দিতে পারবে? একদিন একবছর পাঁছবছরে কি বাঙ্গালি হয়ে জম্মগ্রহন করেছি।এই কারনইতো আমরা  সবাই বলি হাজার বছরের বাঙ্গালি। দেশভিত্তিক জাতীয়তা পৃথিবীর কোথাও নেই।দেশ অনেক আছে,দেশের অভ্যন্তরে অবশ্যই জাতিবেদ বিদ্যমান রয়েছে।দ্বিজাতিতত্ব যেমন উদ্ভট একটি ধারনা তেমনি বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী ধারনাও উদ্ভট, প্রতারনামুলক, মরিচিকার উৎকৃষ্ট উদাহরন ছাড়া আর কিছুই নয়।উদ্ভট দর্শনের প্রকাশ ঘটিয়ে মেজর জিয়াউর রহমান দলে সমাবেশ ঘটান সব সুবিধাবাদী-ক্ষমতা লোভীদের। এমনকি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী-যুদ্ধাপরাধীদেরও স্থান হয় সে দলটিতে। দেশের প্রধানমন্ত্রী করা হয় প্রথম শ্রেণির রাজাকার শাহ আজিজুর রহমানকে। জিয়াউর রহমান প্রকাশ না হওয়া তথাকথিত  ক্লিন ইমেজকে কাজে লাগিয়ে ব্যাপক জনসমর্থনও আদায় করতে সক্ষম হন। যার ফল এখনো দলটি ভোগ করছে। অন্যদিকে পঁচাত্তরে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর আওয়ামী লীগের ভাঙাচোরা অবস্থা, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র, দেশের কতিপয় মিডিয়া মাফিয়া ও সুশীল নাগরিকদের আওয়ামী লীগ বিরোধী প্রচারণা, ভারত বিরোধী প্রচারণা, সেনাবাহিনী ও প্রশাসনযন্ত্রের সহযোগিতা, ধর্মীয় রাজনৈতিক দল বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামাতের প্রত্যক্ষ সমর্থনে(আমেরীকা ও পাকিস্তানের মদদে) একটি ভুল রাজনৈতিক দর্শনের উপর গড়ে উঠেও দুর্দান্ত প্রতাপে দীর্ঘ দুই দশক দেশ শাষন করে। দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতায় থাকার কারণে দলটি সমাজে একশ্রেণির সুবিধাভোগী গোষ্ঠীও গড়ে তুলতে সক্ষম হয়। দলটির তখনকার ব্যাপক জনপ্রিয়তার পেছনে  বড় কারণ হলো জিয়াউর রহমানের তথাকথিত অপ্রকাশিত  ‘ক্লিন ইমেজ""।    উদ্ভট জাতীয়তাবাদের ধরনের মুল তত্ব যতই জনমনে সন্দেহের বহি:প্রকাশ ঘটাতে থাকে ততই তাঁদের ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার নতুন নতুন ফন্দি। যার ফলশ্রুতি ১/১১-এর তত্ত্বাবধায়ক সরকার, ২০০৮ সালের নির্বাচন ও বিএনপি-জামাত জোটের শোচনীয় পরাজয়। তারেক-কোকোর মুচলেকা দিয়ে দেশত্যাগ। দুর্নীতিতে নিমর্জিত জিয়া পরিবার ২০০৮ সালের চরম পরাজয়ের পর আর ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ নিতে পারেননি। ক্ষমতা হারানোর জ্বালা, মামলা-মোকদ্দমা থেকে বেগম জিয়া নিজে ও তার পুত্রকে রক্ষা এবং যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর জন্য খালেদা জিয়া একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিতে থাকেন। জনগণের উপর আস্থা হারিয়ে খালেদা জিয়া সন্ত্রাসের পথ বেঁচে নেন। আর তিনি যতই সন্ত্রাস নির্ভর রাজনীতিতে ঝুঁকেন ততই তার জামায়াত নির্ভরতাও বাড়তে থাকে। ফলে দলটি হয়ে পড়ে সম্পূর্ণ জনবিচ্ছিন্ন। আর জনগণের প্রতি আস্থাহীনতাই খালেদা জিয়াকে ১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জনে বাধ্য করে। তিনি বেছে নেন জ্বালাও-পোড়াও, মানুষ খুনের পথ। কোন ধরনের সাংগঠনিক প্রস্তুতি ছাড়াই ডাক দিয়ে বসেন অনির্দিষ্টকালের অবরোধের। তিনি বেছে নেয় স্বেচ্ছা অবরোধবাসিনীর বেশ আর ঘোষনা করতে থাকেন লাদেন স্টাইলে  মানুষ খুনের ফরমান। পেট্রল বোমায় শত শত মানুষ হত্যা করেও যখন অবরোধ সফল করা যায়নি তখন কোনো ধরনের ঘোষণা ছাড়াই( অবরোধ প্রত্যাহার) বাসায় চলে যান।  সত্যিকার অর্থে দেশে অবরোধের কোনো প্রভাব না পড়লেও দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্রকারিরা প্রত্যহ অবরোধের স্বাপ্নিক কাহিনী প্রচারে সামান্যতম অলসতার স্বাক্ষর রাখেননি।   করেছিলেন যদি কোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করা যায় তাহলে সেনাবাহিনী এবং বিদেশী কোনো শক্তি দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতার পরিবর্তনে ভূমিকা রাখবে। বিপ্লবের প্রধান নায়িকা সেজে আওয়ামী লীগ নিধনে রাষ্ট্র যন্ত্রকে শতভাগ ব্যাবহার করা যাবে।তাঁর পুত্রদ্বয়ের ক্ষমতা ধরে রাখার স্বাধ দীঘ দিনের জন্য পুর্ন করা যাবে। খালেদা জিয়া যদি জ্বালাও-পোড়াও, মানুষ খুনের রাজনীতির দিকে না গিয়ে জনগণের উপর আস্থা রেখে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নিতেন এবং যুদ্ধাপরাধী দল জামাত ও যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় ব্রতী না হতেন, তাহলে ক্ষমতায় ফিরে না আসার মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও অন্ততপক্ষে সংসদে বিরোধীদলের আসনে বসতে পারতেন এবং পরবর্তী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারতেন।  ভুল তত্ব দিয়ে পাকিস্তানীরা ২৩ বছর শাষন শোষন করতে পেরেছিল, জিয়া পরিবার বাংলাদেশের অধিবাসি হয়ে উদ্ভট "বাংলাদেশী তত্ব" দিয়ে আরো বেশি সময় শাষন করতে পারতেন অবশ্যই, পতন ছিল অবশ্যাম্ভাবি।মানুষ যতই শিক্ষিত হত ততই উদ্ভট তত্বের জারিজুরি প্রকাশ হত।একসময় উদ্ভট তত্বের অসারতা প্রমানীত হলে অসম্মানজনকভাবে বিদায় নিতে হত হয়তোবা। পৌর নির্বাচনে বিএনপির যে দৈন্যদশা ফুটে উঠেছে, সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বলে মনে করিনা।দলটি আদৌ টিকে থাকতে পারবে বলেও আমি বিশ্বাস করিনা। গনতন্ত্রের স্বার্থে হয়তোবা শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের দরজা বন্ধ করে সাময়িক রক্ষা করতে পেরেছেন।বিবেকবান নতুন প্রজম্মের চোখে যত বেশি প্রতারনার দর্শন "বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ" চোখে পড়বে,মেধায় মননে ঘোরপাক করবে- ততই " প্রতারক দল " মনে করে জনবিচ্ছিন্ন হতে থাকবে দলটি। অনেকেই মনে করেন দলটির আজকের পরিণতির জন্য বেগম জিয়া ও তার পুত্রের ভুল রাজনীতিই মূলত দায়ী। আমি তাঁদের সহিত সর্বান্তকরনে দ্বিমত পোষন করি।তাঁদের ভুলের কারনে হয়তোবা পতন ত্বরান্বিত হয়েছে, পতন ছিল অবশ্যাম্ভাবি।ভুল,প্রতারনামুলক দর্শন বা রাজনৈতিক তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠা বিএনপি নামক দলটি স্বার্থবাদি তত্বের ধারক মুসলিম লীগের পরিণতি বরণ করাই রাজনৈতিক বাস্তবতা। ব্যাতিক্রমে অধিক ভাগ্যগুনে টিকে থাকা হবে জাতির জন্য দুর্ভাগ্যের নির্মম রাজনৈতিক পদস্থলন।                জয়বাংলা      জয়বঙ্গবন্ধু              জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা

আদর্শহীন দর্শনহীন রাজনৈতিক দল সাময়িক চমক দিয়ে কিছুদিন হয়ত দেশ শাষন করতে পারে,দল হিসেবে টিকে থাকতে পারে।শেষ পরিনতি অবশ্যই তাঁর মৃত্যু ঘটে,ঘটতে বাধ্য,ইতিহাস তাঁর সাক্ষী।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন