রাজনৈতিক দল বাঁচে আদর্শ ও দর্শনে--নেতার ব্যাক্তিত্বে  কখনই নয়--- ============================== স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রতিকে বর্তমান সরকারের গনতন্ত্রের অভিযাত্রায় যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এই ব্যবস্থায় তৃনমুল পয্যায় থেকে নেতৃত্ব উঠে আসার পথ যেমনটি সুগম হল অপর পক্ষে অরাজনৈতিক ব্যাক্তিদের উচ্চপয্যায়ের রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের আত্মীয়তার সুত্রে, অবৈধ উপায়ে অর্জিত টাকার গরিমা,কালটাকার বৈধ ব্যবহারের ইচ্ছায় বা অন্য যে কোন উপায়ে রাজনৈতিক পদ সমুহ দখল করে ত্যাগী প্রকৃত দেশদরদী,জননন্দিত নেতাদের অপমান অপদস্ত করার পথ রুদ্ধ হল।স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত প্রতিনীধির স্তর সমুহের সর্বচ্ছো পদটি জনগনের নির্বাচিত প্রতিনীধির মাধ্যমে পুরন করার বিধান কায্যকর প্রত্যেক গনতান্ত্রিক দেশেই রয়েছে। বাংলাদেশেও ইহার ব্যাতিক্রম নহে বরঞ্চ বিশ্বের বহু গনতান্ত্রিক দেশে অনেক ক্ষেত্রে নির্বাচিত প্রতিনীধির অস্তিত্ব না থাকলেও বাংলাদেশে অস্তিত্ব বিদ্যমান রয়েছে।যেমন আমাদের দেশের পাড়া মহল্লায় যে সমস্ত ক্লাব বা সংঘ আছে সেখানেও নির্বাচনের মাধ্যমে পরিচালনা কমিটি করার বিধান অনেক আগে থেকে প্রচলিত আছে।আমাদের শিক্ষার প্রাথমিক স্তর সরকারি প্রাথামিক বিদ্যালয় সমুহ সুচারুভাবে পরিচালনার জন্য নির্দিষ্ট মেয়াদান্তের কমটি বিদ্যমান আছে।অন্য অনেক দেশে এই ব্যাবস্থার অস্তিত্ব দেখা যায়না।সরকারি প্রতিষ্ঠান বেসরকারি কমিটি কতৃক পরিচালনা করা যায় তাঁরা বিশ্বাসও করেনা।আমাদের দেশে কিন্তু এইরুপ তৃনমুলে উক্ত কমিটি সমুহ সফলভাবেই তাঁদের কায্যক্রম চালিয়ে আসছে দীর্ঘদিন থেকেই। বাংলাদেশে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হওয়ার অভিজ্ঞতা নতুন বিধায় প্রাথমিক অবস্থায় জনমনে সংশয় বিদ্যমান ছিল। নির্বাচন নিয়ে জনমনে কৌতুহল, সংশয় আর ভয় কম ছিল না। কৌতুহল, সংশয় আর ভয়ের বহুবিদ যুক্তিসংগত কারন ছিল।'৭৫ইং সালের পটপরিবর্তনের পর থেকে সামরিক সরকার সমুহ গনতন্ত্রের নাম ব্যবহার করে কৌশলে ক্ষমতা ধরে রাখার মানষে প্রথমেই আমাদের প্রতিষ্ঠিত নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার প্রক্রিয়া গ্রহন করে। নির্বাচনে আমদানী করে পেশীশক্তি, কাল টাকার অবাধ ব্যবহার। ভোট কারচুপি করে সামরিক সরকার সমুহের পদলেহিদের নির্বাচিত করার নতুন নতুন  কৌশল,যা তাঁর আগে কেউ কল্পনাও করেনি।পাকিস্তানের অন্তভুক্ত থাকার সময় মৌলিক গনতন্ত্রের সীমিত(মেম্ভার,চেয়ারম্যান ভোটার) ভোটারের ভোটে ও কোনদিন এইভাবে ব্যালট চিনতাই,ব্যালট কেটে নির্ধারীত প্রার্থীর পক্ষে সীল মারার উদাহরন ছিলনা।প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া থেকে নির্বাচিত হওয়া পয্যন্ত দলীয় চাপ থাকা সত্বেও ব্যর্থ নির্দলীয় আবহ সৃষ্টির কৌশল অবলম্বন করে মুলত জনগনের সাথে প্রতারনাই করে যাচ্ছিল সরকার সমুহ।উক্তরুপ প্রতারনার জাল চিহ্ন করে শেখ হাসিনার সরকার দলীয় প্রতীক এবং দলের মনোনয়নে নির্বাচনের বিধান করে জাতিকে প্রতারনার হাত থেকে রক্ষা করেছেন। তাছাড়াও দল সমুহের জনসমর্থনের ব্যারোমিটার উঠানামা করার স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র তৃনমুল পয্যায়ে বসিয়ে রাজনৈতিক  দল সমুহকে তাঁদের কর্মকান্ডের ভালমন্দ দিকগুলীর ব্যাপারে জনগনের মতামত বা ধ্যানধারনার বিষয়ে  সতর্ক করার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।রাজনৈতিক দল গুলীর ভুল সংশোধন করে নেয়ার জন্য চুলচেরা বিশ্লেষনে সময়ব্যায়ের তেমন কোন প্রয়োজনীয়তাও থাকলোনা।যেহেতু জনগনই সকল ক্ষমতার মালিক। জনকল্যান যদি রাজনীতির মুল উদ্দেশ্য হয় তাহলে জনগন যখন যাহা চাইবে রাজনৈতিক দলগুলিও সেইমতেই তাঁদের আন্দোলন সংগ্রাম, জোট,মোর্চা ইত্যাদি করার সহজ পথ খুজে নিতে পারবে।      গত ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচনের আগে -সকল নির্বাচনে ভোটের পর বলা হত কে কত পৌরসভায় জিতেছে। দাঙ্গাহাঙ্গামা,কারচুপি ইত্যাদির দায়বহন না করে জয়ী প্রার্থীদের সুফল ভোগ করার অনৈতিক চর্চা হয়ে আসছিল। ৫ই জানুয়ারী ২০১৬ ইং সাল থেকে অনৈতিক ভাবে সুফল ভোগের দিন শেষ হয়ে সুফল কুফলের দায়ভার রাজনৈতিক দল সমুহের কাঁধে নেয়ার যুগ শুরু হল। প্রথমিকভাবে শুরুটা অত্যান্ত সুন্দর সাবলীল আনন্দময় হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে।যেহেতু সকল দল ও জোট নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেছে,কোন দল বা জোটের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট ভাবে কারচুপি বা জবরদখলের মত অভিযোগ অদ্যাবদি উত্থাপিত হয়নি। ধরেই নেয়া যায় নির্বাচন সুষ্ঠ সুন্দর প্রতিযোগিতা মুলক,দাঙ্গা হাঙ্গামাহীন হয়েছে।নির্বাচন কমিশন যে সমস্ত কেন্দ্রে গোলযোগের অভিযোগ পেয়েছেন- সেই সমস্ত কেন্দ্রে পুন:নির্বাচনের ঘোষনা দিয়ে ভবিষ্যত নির্বাচন আরো সুষ্ঠ করার আরো অবাধ করার অঙ্গিকারই ব্যাক্ত করেছেন বলে আমি মনে করি। প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায় আওয়ামী লীগ শুধু জয়লাভই করেনি, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে।  আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়লাভ করবে এ ব্যাপারে আমি যেমন আত্মবিশ্বাসী ছিলাম, তেমনি জনগণও ছিলেন বলে ধরে নেয়া যায়। যদিও অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বিএনপির দিকে পাল্লাটা ভারি করে রেখেছিলেন, এই বলে যে যদি নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়(চোরের মনে পুলিশ পুলিশ)। এখন তারা কী ভাবছেন টকশোতে এসে প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করতে দেখা যাচ্ছেনা।   বিএনপির শোচনীয় পরাজয় ও আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ে আমি হতবাকও হইনি আশ্চর্যও হইনি। একটু আতংকিত ছিলাম এইভেবে ক্ষমতাসীন দলের কিছু নগদ বদনাম থাকে,(এটা শুধু আমাদের দেশে নয়,প্রত্যেক দেশেই)সেই সমস্ত বদনাম যদি জনগন বড় করে দেখে তবে জয়লাভ করা আওয়ামী প্রার্থীদের কষ্টকরই হবে।অথচ ভোটের পর লক্ষনীয়ভাবে দেখা যায় আওয়ামী লীগের হাইব্রিড নেতাদের  ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অপরাধ গুলী বিএনপি জোটের জাতিগত অপরাধের তুলনায় অনেক ক্ষুদ্রই মনে করেছে জনগন।  জনগন স্বতস্ফুর্ত ভাবে ভোট দিয়েছে,আওয়ামী প্রার্থিরা বেশ ভালভাবেই জয়ী হয়েছে। কোনো কোনো স্থানে দেখা গেছে বিএনপি প্রার্থীর জামানতও বাজেয়াপ্ত হয়েছে। যেমন সুনামগঞ্জ পৌরসভা এবং সিলেটের কানাইঘাটে বিএনপি প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। আমরা যদি একটু পেছন ফিরে তাকাই তাহলে কী দেখতে পাই? বিগত মহাজোট সরকারের সময় যতগুলো সিটি নির্বাচন হয়েছে সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, গাজীপুর সবখানেই বিএনপির প্রার্থীরা জয়লাভ করেছে। সর্বশেষ ঢাকা সিটির দুই অংশ এবং চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনেও দেখা গেছে দুপুর পর্যন্ত চট্রগ্রাম ও ঢাকা উত্তরে বিএনপির প্রার্থী মঞ্জুর আলম ও তাবিথ আউয়াল ভালোই করেছিলেন। নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়ালে হয়তো ফলাফলে ভিন্নতাও ঘটতে পারতো।    আমাদের স্মরন রাখা প্রয়োজন এবং অতীতের এইধরনের বহু উদারহরন দেয়া যেতে পারে বড় ধরনের কোনো রাজনৈতিক ভুল করলে বা ভুল রাজনৈতিক মতাদর্শের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠা দল সময়ের ব্যাবধানে বিলিন হবেই। জনসম্পৃক্ততা হারালে ও একটি ব্যাপক জনসমর্থন ভিত্তিক দলের এরকম পরিণতি হতে পারে। যেমন হয়েছিল মুসলিম লীগের ক্ষেত্রে। মুসলিম লীগ  দ্বি-জাতি তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল তা ছিল ঐতিহাসিকভাবে ও বাস্তবতার আলোকে ভুল একটি রাজনৈতিক তত্ত্ব। কেননা, হিন্দু-মুসলমান হলো একটি সম্প্রদায় বা গোষ্ঠী (ধর্মীয় দিক থেকে)কোনো জাতি নয়। ধর্মের ভিত্তিতে কোনো ধরনের জাতি-গোষ্ঠী গড়ে উঠতে পারে না। ধর্মীয় জাতিগত  হলে পাকিস্তান উৎপত্তির প্রথমেই ইসলামী শাষন রাষ্ট্রব্যাবস্থা দেখা যেত।কিন্তু তা হয়নি,হয়েছে বিদখুটে গনতন্ত্রের আবরনে সেনা শাষনের উর্বর রাষ্ট্রব্যাবস্থা।রাষ্ট্রের উচ্চপয্যায়ে কোন আলেম উলামা অথবা ধর্মীয় জ্ঞানে সমৃদ্ধ কোন নেতাকে দেখা যায়নি।ধর্মীয় শাষনের নিমিত্তে নেয়া কোন পদক্ষেপ কস্মিনকালেও চোখে পড়েনি।তাহলে ধরেই নিতে পারি,দ্বি-জাতিতত্বের দর্শন মানুষকে সাময়িক অন্ধকরে স্বার্থ হাসিলের অপকৌশল ছাড়া আর কিছুই না।জনগনের এই ভুল তত্বের মাজেজা বুঝতে বা অন্ধত্ব কাটতে সময় লেগেছে ২৩ বছর। একটি জাতি-গোষ্ঠী গড়ে উঠার মূলে হলো ভাষা ও সংস্কৃতিগত মেলবন্ধন। ভাষা সংষ্কৃতির মিল অমিলের ব্যাবধানে একাদিক রাষ্ট্র ব্যাবস্থা গড়ে উঠার উদাহরন নেহায়াৎই কম নহে। ধর্মীয় ভাবে(একই ধর্মের অনুসারি) গড়ে উঠেছে এমন উদাহরন কি আছে? পঁচাত্তরের পনেরো আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে মদদ দিয়ে, পরবর্তী সময়ে নিজে সেনাপ্রধান হওয়া এবং নানা নাটক মঞ্চায়ন, মুক্তিযুদ্ধে অংশনেয়া সহকর্মী এবং অধীনস্ত মুক্তিযুদ্ধাসেনা কর্মকর্তা-সৈনিকদের হত্যা, নানা ষড়যন্ত্র করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার শীর্ষ পদে আসীন হন জিয়াউর রহমান। তিনি দেশের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হলেও ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী রূপ দেয়ার মানসে গড়ে তুলেন বিএনপি নামক রাজনৈতিক দলটি। যার রাজনৈতিক দর্শন হলো বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ। যা দ্বি-জাতি তত্ত্বের মতোই অবাস্তব। ""উল্লেখ করতে চাই বাংলাদেশে বসবাসরত একজন মানুষ কি পাওয়া যাবে  জাতিগত ভাবে বাংলাদেশী? বাংলাদেশী জাতি বলতে কোন অস্তিত্ব কি কোথায়ও আছে? রক্তে মাংসে, কৃষ্টি সংষ্কৃতি,ভাষা, আচার আচরন সব কিছুতেই আমাদের বাঙ্গালীর মর্জাগত অভ্যেসের চিহ্ন ফুটে উঠবে।   আমাদের আবাস ভুমির নাম বাংলাদেশ। যে দেশটি ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানী দখলদারদের বিরুদ্ধে এক অসম যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে জয়ি হয়ে অর্জন করেছিলাম।সেই দেশটির নাম রেখেছিলেন সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান।এই দেশটির বয়স মাত্র ৪৫ বছর।আমাদের বাঙ্গালির জম্ম কখন কিভাবে কোথায় কেমন করে হল তাঁর সঠিক তথ্য কি কেউ দিতে পারবে? একদিন একবছর পাঁছবছরে কি বাঙ্গালি হয়ে জম্মগ্রহন করেছি।এই কারনইতো আমরা  সবাই বলি হাজার বছরের বাঙ্গালি। দেশভিত্তিক জাতীয়তা পৃথিবীর কোথাও নেই।দেশ অনেক আছে,দেশের অভ্যন্তরে অবশ্যই জাতিবেদ বিদ্যমান রয়েছে।দ্বিজাতিতত্ব যেমন উদ্ভট একটি ধারনা তেমনি বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী ধারনাও উদ্ভট, প্রতারনামুলক, মরিচিকার উৎকৃষ্ট উদাহরন ছাড়া আর কিছুই নয়।উদ্ভট দর্শনের প্রকাশ ঘটিয়ে মেজর জিয়াউর রহমান দলে সমাবেশ ঘটান সব সুবিধাবাদী-ক্ষমতা লোভীদের। এমনকি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী-যুদ্ধাপরাধীদেরও স্থান হয় সে দলটিতে। দেশের প্রধানমন্ত্রী করা হয় প্রথম শ্রেণির রাজাকার শাহ আজিজুর রহমানকে। জিয়াউর রহমান প্রকাশ না হওয়া তথাকথিত  ক্লিন ইমেজকে কাজে লাগিয়ে ব্যাপক জনসমর্থনও আদায় করতে সক্ষম হন। যার ফল এখনো দলটি ভোগ করছে। অন্যদিকে পঁচাত্তরে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর আওয়ামী লীগের ভাঙাচোরা অবস্থা, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র, দেশের কতিপয় মিডিয়া মাফিয়া ও সুশীল নাগরিকদের আওয়ামী লীগ বিরোধী প্রচারণা, ভারত বিরোধী প্রচারণা, সেনাবাহিনী ও প্রশাসনযন্ত্রের সহযোগিতা, ধর্মীয় রাজনৈতিক দল বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামাতের প্রত্যক্ষ সমর্থনে(আমেরীকা ও পাকিস্তানের মদদে) একটি ভুল রাজনৈতিক দর্শনের উপর গড়ে উঠেও দুর্দান্ত প্রতাপে দীর্ঘ দুই দশক দেশ শাষন করে। দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতায় থাকার কারণে দলটি সমাজে একশ্রেণির সুবিধাভোগী গোষ্ঠীও গড়ে তুলতে সক্ষম হয়। দলটির তখনকার ব্যাপক জনপ্রিয়তার পেছনে  বড় কারণ হলো জিয়াউর রহমানের তথাকথিত অপ্রকাশিত  ‘ক্লিন ইমেজ""।    উদ্ভট জাতীয়তাবাদের ধরনের মুল তত্ব যতই জনমনে সন্দেহের বহি:প্রকাশ ঘটাতে থাকে ততই তাঁদের ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার নতুন নতুন ফন্দি। যার ফলশ্রুতি ১/১১-এর তত্ত্বাবধায়ক সরকার, ২০০৮ সালের নির্বাচন ও বিএনপি-জামাত জোটের শোচনীয় পরাজয়। তারেক-কোকোর মুচলেকা দিয়ে দেশত্যাগ। দুর্নীতিতে নিমর্জিত জিয়া পরিবার ২০০৮ সালের চরম পরাজয়ের পর আর ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ নিতে পারেননি। ক্ষমতা হারানোর জ্বালা, মামলা-মোকদ্দমা থেকে বেগম জিয়া নিজে ও তার পুত্রকে রক্ষা এবং যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর জন্য খালেদা জিয়া একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিতে থাকেন। জনগণের উপর আস্থা হারিয়ে খালেদা জিয়া সন্ত্রাসের পথ বেঁচে নেন। আর তিনি যতই সন্ত্রাস নির্ভর রাজনীতিতে ঝুঁকেন ততই তার জামায়াত নির্ভরতাও বাড়তে থাকে। ফলে দলটি হয়ে পড়ে সম্পূর্ণ জনবিচ্ছিন্ন। আর জনগণের প্রতি আস্থাহীনতাই খালেদা জিয়াকে ১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জনে বাধ্য করে। তিনি বেছে নেন জ্বালাও-পোড়াও, মানুষ খুনের পথ। কোন ধরনের সাংগঠনিক প্রস্তুতি ছাড়াই ডাক দিয়ে বসেন অনির্দিষ্টকালের অবরোধের। তিনি বেছে নেয় স্বেচ্ছা অবরোধবাসিনীর বেশ আর ঘোষনা করতে থাকেন লাদেন স্টাইলে  মানুষ খুনের ফরমান। পেট্রল বোমায় শত শত মানুষ হত্যা করেও যখন অবরোধ সফল করা যায়নি তখন কোনো ধরনের ঘোষণা ছাড়াই( অবরোধ প্রত্যাহার) বাসায় চলে যান।  সত্যিকার অর্থে দেশে অবরোধের কোনো প্রভাব না পড়লেও দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্রকারিরা প্রত্যহ অবরোধের স্বাপ্নিক কাহিনী প্রচারে সামান্যতম অলসতার স্বাক্ষর রাখেননি।   করেছিলেন যদি কোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করা যায় তাহলে সেনাবাহিনী এবং বিদেশী কোনো শক্তি দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতার পরিবর্তনে ভূমিকা রাখবে। বিপ্লবের প্রধান নায়িকা সেজে আওয়ামী লীগ নিধনে রাষ্ট্র যন্ত্রকে শতভাগ ব্যাবহার করা যাবে।তাঁর পুত্রদ্বয়ের ক্ষমতা ধরে রাখার স্বাধ দীঘ দিনের জন্য পুর্ন করা যাবে। খালেদা জিয়া যদি জ্বালাও-পোড়াও, মানুষ খুনের রাজনীতির দিকে না গিয়ে জনগণের উপর আস্থা রেখে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নিতেন এবং যুদ্ধাপরাধী দল জামাত ও যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় ব্রতী না হতেন, তাহলে ক্ষমতায় ফিরে না আসার মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও অন্ততপক্ষে সংসদে বিরোধীদলের আসনে বসতে পারতেন এবং পরবর্তী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারতেন।  ভুল তত্ব দিয়ে পাকিস্তানীরা ২৩ বছর শাষন শোষন করতে পেরেছিল, জিয়া পরিবার বাংলাদেশের অধিবাসি হয়ে উদ্ভট "বাংলাদেশী তত্ব" দিয়ে আরো বেশি সময় শাষন করতে পারতেন অবশ্যই, পতন ছিল অবশ্যাম্ভাবি।মানুষ যতই শিক্ষিত হত ততই উদ্ভট তত্বের জারিজুরি প্রকাশ হত।একসময় উদ্ভট তত্বের অসারতা প্রমানীত হলে অসম্মানজনকভাবে বিদায় নিতে হত হয়তোবা। পৌর নির্বাচনে বিএনপির যে দৈন্যদশা ফুটে উঠেছে, সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বলে মনে করিনা।দলটি আদৌ টিকে থাকতে পারবে বলেও আমি বিশ্বাস করিনা। গনতন্ত্রের স্বার্থে হয়তোবা শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের দরজা বন্ধ করে সাময়িক রক্ষা করতে পেরেছেন।বিবেকবান নতুন প্রজম্মের চোখে যত বেশি প্রতারনার দর্শন "বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ" চোখে পড়বে,মেধায় মননে ঘোরপাক করবে- ততই " প্রতারক দল " মনে করে জনবিচ্ছিন্ন হতে থাকবে দলটি। অনেকেই মনে করেন দলটির আজকের পরিণতির জন্য বেগম জিয়া ও তার পুত্রের ভুল রাজনীতিই মূলত দায়ী। আমি তাঁদের সহিত সর্বান্তকরনে দ্বিমত পোষন করি।তাঁদের ভুলের কারনে হয়তোবা পতন ত্বরান্বিত হয়েছে, পতন ছিল অবশ্যাম্ভাবি।ভুল,প্রতারনামুলক দর্শন বা রাজনৈতিক তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠা বিএনপি নামক দলটি স্বার্থবাদি তত্বের ধারক মুসলিম লীগের পরিণতি বরণ করাই রাজনৈতিক বাস্তবতা। ব্যাতিক্রমে অধিক ভাগ্যগুনে টিকে থাকা হবে জাতির জন্য দুর্ভাগ্যের নির্মম রাজনৈতিক পদস্থলন।                জয়বাংলা      জয়বঙ্গবন্ধু              জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা

আদর্শহীন দর্শনহীন রাজনৈতিক দল সাময়িক চমক দিয়ে কিছুদিন হয়ত দেশ শাষন করতে পারে,দল হিসেবে টিকে থাকতে পারে।শেষ পরিনতি অবশ্যই তাঁর মৃত্যু ঘটে,ঘটতে বাধ্য,ইতিহাস তাঁর সাক্ষী।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার সরকার মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যাতত্ব দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস ঐতিহ্যে বিতর্ক উত্থাপনের অভিযোগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন।মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে বসবাস করে,মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার মত দৃষ্টতা দেখিয়ে নি:সন্দেহে তিনি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। এহেন গর্হিত বক্তব্য প্রদানকারী বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার রাখতে পারেননা।মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত অঙ্গিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কোন দল বা জোটের রাজনীতি করারঅধিকার নীতিগতভাবেই থাকতে পারেনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি সকল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করে সর্বচ্ছ আদালতের রায় অনুযায়ী '৭২এর সংবিধান অবিকল বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবী।বাংলাদেশেরজনগন চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ এগিয়ে যাক,মুক্তিযুদ্ধে সাগরসম রক্ত ঢেলে সেই অঙ্গিকারের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেছিল।স্বাধীন বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বসবাসকরে,পরাধীনতার গান শুনতে দেশ স্বাধীন করেনি বাংলার জনগন। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৩ বছরের বিরামহীন সংগ্রামের ফসল মুক্তিযুদ্ধ।সেইযুদ্ধে উপনিবেশিক পাকিস্তানের আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত সেনাবাহিনীকে নিরস্ত্র বাঙালীরা পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছিল।সেই স্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশেপরাজিত শক্তির দোষর,তাঁদের প্রেতাত্বাদের রাজনীতি করার কোন নৈতিক অধিকার নেই।জাতির জনক তাঁদের রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগন জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলায় রাজাকারের কোন স্থান দিতে চায়না। তাই খালেদা জিয়ার ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টার দৃষ্টান্তমুলক সাজার আশা পোষন করে।কোন রাজনৈতিক সমঝোতার ফাঁদে যেন এই মামলা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়,তাঁর গ্যারান্টিও সরকারের নিকট বাংলাদেশের জনগন চায়। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু Ruhul Amin ------------------------------ খালেদা জিয়াকে সমাবেশের অনুমতি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি আশাহত----04 /01 / 0016 ইং পোষ্ট -==================================প্রখ্যাত দার্শনিক,চিন্তাবিদ সক্রেটিসকে কম বেশি আমরা সবাই জানি।সক্রেটিস কোন যুগে জম্মগ্রহন করে মানব সেবায় ব্রতি হয়ে আজও দেশে দেশে অনুকরনীয় অনুসরনীয় হয়ে আছেন তাও আমরা জানি।নিশ্চয়ই তখনকার সময় থেকে বর্তমানের সমাজ, রাষ্ট্রব্যাবস্থাপনা আরো শত গুন উন্নত,সমৃদ্ধ,সভ্য।সক্রেটিস ছুতোর, কামার ইত্যাদি প্রসঙ্গে এসে প্রশ্ন করতেন, 'তাহলে রাষ্ট্র নামক জাহাজটি বিগড়োলে কাকে দিয়ে সারাইয়ের কাজ করাবো'হাসান আজিজুল হক (সক্রেটিস) পৃ : ১৬ সক্রেটিসের এ বিখ্যাত কথপোকথন কারো অজানা নয়। আদর্শবান ন্যায়নীতিভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করবার জন্য সক্রেটিসকে হেমলক পান করতে দেয়া হয়েছিল(বিষ), তারপরও তিনি আইনের প্রতি অটুট শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন- এটাও ছিল তার নির্ভীক বিদ্রোহ। তাকে বাঁচবার সুযোগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি আইনঅবজ্ঞা করেননি, আইনে যদি তার মৃত্যুদন্ড হয় তবে তিনি অবশ্যই তা মানতে রাজি। এখানেও তার সমস্ত জীবনকর্মের অনেক গভীর দর্শন কাজ করেছে। তার উপর মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল একথা তিনি ও এথেন্সবাসী জানতেন। কিন্তু যে আইনে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলো- তিনি সে আইনকে শ্রদ্ধা জানালেন এ অর্থে মানুষকে আইনের প্রতি অনুগত থাকতে বললেন। সেই আইন কারা তৈরি করছে তা তিনি জানতেন তাতে তো আর আইন নামক বিষয়টিকে জীবন থেকে বিতাড়িত করা যায় না।"পবিত্র কোরানে পাকে ও উল্লেখ করা হয়েছে, বিধর্মী কতৃক শাষিত রাষ্ট্র ও সরকার সমুহের আইন মেনে ধর্ম কর্ম করার।এই রুপ রাষ্ট্র ব্যাবস্থায় শুক্রবারের খতবায় বিশেষ আয়াৎ সংযুক্ত আছে এবং নিয়মিত নামাজের সাথে আর ও কয় রাকাত নামাজ আদায় করার নির্দেশনা দেয়া আছে।পরিতাপের বিষয়টি হচ্ছে,গত কয়েক বছর থেকে লক্ষ করা যাচ্ছে একশ্রেনীর মানুষ রাষ্ট্রীয় আইন রীতি নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সর্ব উচ্চ আদালতের রায়কে ও অমান্য করে হরতাল অবরোধ,প্রকাশ্য আদালতের সমালোচনা করতে।শুধু তাই নয় আন্দোলনের নামেপ্রকাশ্য দিবালোকে যাত্রীভর্তি চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে জীবন্ত মানবকে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিতে।উল্লেখ করা প্রয়োজন যারা এই সমস্ত আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিলেন,এবং প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেন যে আদালতের বিরুদ্ধেও কর্মসূচি দেয়া যায়,বক্তব্য দেয়া যায়,তাঁরা কখনই কোন অপরাধীর বিচার কায্য সম্পাদন করেছেন তদ্রুপ কোন উদাহরন নেই। যেমন আমি প্রথমেই বলতে চাই ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছেন রাতের অন্ধকারে।বঙ্গবন্ধুর অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? পৃথীবিপৃষ্টের সব চাইতে নিরাপদ স্থান জেলখানা।সেখানে রাতের অন্ধকারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করাহল,তাঁরা বন্দি ছিলেন, তারপর ও তাঁদের অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে বুদ্ধিজীবিদের বাসা থেকেতুলে নিয়ে জ্যান্ত মানুষকে হত্যা করা হল, তাঁদের অপরাধ কি বিচার করে মিমাংসা করা যেতনা? খালেদ মোশারফ., কর্নেল তাহেরসহ অসংখ্য মুক্তি যুদ্ধা সেনা অফিসারকে মেজর জিয়ার নির্দেশে নির্মম নির্দয় ভাবে হত্যা করা হল, অনেককে গুলী করার পর প্রান পাখী উড়াল দেয়ার আগেই জ্যান্ত মাটি চাপা দেয়া হল, তাঁদের বিচার কি প্রচলিত সেনা আইনে করা যেতনা? অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধা,আওয়ামী লীগের নেতা,মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারি,ব্লগার,প্রকাশক,লেখক সাহিত্যিক,সাংবাদিক হত্যা করা হল,তাঁদের অপরাধ কি আইনের আওতায় এনে বিচার করা যেতনা?আন্দোলনের নামে ঘোষনা দিয়ে মানুষ হত্যা করা,সম্পদ নষ্ট করা,লুটপাট করা কি মানবতা বিরুধী অপরাধের আওতায় পড়েনা?মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ হত্যা লুটপাট,অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার হতে পারে,যুদ্ধাবস্থা ব্যাতিরেকে ঘোষনা দিয়ে তদ্রুপ কর্মে জড়িতদের এবং হুকুমদাতার বিচার কেন হবেনা? নগদ অপরাধের ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার করা কি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব নয়? নাগরীকদের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া কি রাষ্ট্রের কর্তব্যের মধ্যে পড়েনা? যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন তাঁরা কি বিচার পাওয়ার সাংবিধানীক অধিকারের মধ্যে পড়েনা?সেই যুগের সক্রেটিস যদি নীজের উপর আনীত মিথ্যা অভিযোগ জেনে শুনে মেনে নিতে পারেন,সভ্যতার চরম শীখরে দাঁড়িয়ে যারা এই যুগে আইনকে, রাষ্ট্রীয় রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রকাশ্য আন্দোলনের নামে মানুষ খুন করেছেন,সম্পদের হানী ঘটিয়েছেন তাঁরা কি সক্রেটিস যুগের আগের অধিবাসি মনে করেন নীজেদের? তাঁরা নীজেরা নিজেদের মনে করুন কিন্তু মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে কোন যুগে ফিরিয়ে নিতে চান?তাঁদের যদি এতই অসহ্য লাগে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিশেষ কিছু আদর্শের প্রতিপালনের অঙ্গিকারের ভিত্তিতে ৩০লক্ষ শহিদের আত্মদান,পৌনে চারলাখ মাবোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস- তবে জনগনকে সংঘটিত করে আর একটি গনবিপ্লব ঘটিয়ে তাঁদের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে স্বাধীনতার পক্ষের কোন মানুষ বাধাতো দিচ্ছেনা। যাদের নেতৃত্বে, যাদের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন করা হল, তাঁরাতো ক্ষমতায় আছে,তাঁদের কেন জোর পুর্বক,ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে খমতা থেকে নামাতে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে,আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে জনজীবন দুর্বিসহ করে তোলার চক্রান্ত করতে দেয়া হবে।এই সেই দিন মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা নিয়ে যিনি বিতর্ক উত্থাপনের বৃথা চেষ্টা করে জনরোষের আওতার মধ্যে এখনও রয়েছেন,তাঁর সৌখিন বাসভবন পাহারায় আপনার সরকার অতিরীক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে বাধ্য হয়েছে,তিনি কি ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে সমাবেশ করার প্রসাশনিক অনুমতি পায়। বর্তমান গনতান্ত্রিক বিশ্বের একটি দেশের উদাহরন কি কেউ দিতে পারবেন,স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা সেই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে?একটি দেশকি কেউ দেখাতে পারবে যে,সেই দেশের কোনমীমাংসিত এবং প্রতিষ্ঠিত কোন সত্যকে ৩০/৪০ বছর পর আবার জনসমক্ষে উত্থাপন করে লক্ষ লক্ষ শহিদ পরিবারের অন্তরের আগুনে"ঘি "ঢেলে দেয়ার চেষ্টা, কোন প্রতিষ্ঠিত দল বা তাঁর নেতা করেছেন? কেন এই পয্যন্ত সরকার তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা না করে উলটো সমাবেশ করে তাঁর মতবাদ প্রচারের অনুমতি দেয়া হল??তাঁরা নীজেদের এত ক্ষমতাবান মনে করেন কিভাবে? তাঁরা কি করে আবার জাতির নিকট ক্ষমা চাওয়া ছাড়াই প্রকাশ্য সভা সমাবেশ করার অধিকার পায়?কেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সংসদে ঘোষনা দিয়েও এখন পয্যন্ত আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন করছেন না? মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আপনার আশ্বাস বাংলার মানুষ অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করে।সুতারাং জনগনকে দেয়া প্রতিশ্রুতি আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন কল্পে তড়িৎ ব্যাবস্থা গ্রহনকরবেন, জনগনের এই আস্থা বিশ্বাস এখন ও অটুট রয়েছে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,শাপলা চত্বরের সেই দিনের ষড় যন্ত্র মোতাবেক যদি খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার মানুষ রাজপথে নেমে আসতেন,পরিকল্পনাঅনুযায়ী সেনা বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়েআপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারতো,আপনাকে কি জীবিত বাঁচতে দেয়া হত? আপনার পরিবারের কাওন সদস্যকে বাঁচতে দিত?আওয়ামী লীগের থানা উপজেলা পয্যায়ের কোন নেতা কি বাঁচতে দিত? তাঁরা কি সে দিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ধর্ম বিদ্বেষী সরকার উৎখাত করে ধর্মধারি সরকার কায়েমের রাজনৈতিক শ্লোগানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নামক মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ধারক বাহক জননন্দিত এইসংগঠনটিকেও জ্যান্ত কবর দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত ছিল না?আমি আজ আরও একটি বিষয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,সম্পুর্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন চরমপন্থী নেতার অবিকল নকল করা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার--,গনতান্ত্রিকদেশে,গনতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে, গনতান্ত্রীক সংগঠনের,গনতন্ত্রের পুজারি মনে করা কোন নেতা, রাজপথে আন্দোলন না করে, সীমাবদ্ধ কক্ষে ৪১দিন অবস্থান করে, ৪২ জন মানুষকে পুড়িয়ে মেরে,পরবর্তিতে বিচারের সম্মুখ্যিন না হয়ে নিয়মাতান্ত্রীক আন্দোলনের সুযোগ কোন দেশের, কোন নেতা বা কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, এমন উদাহরন কি কেউ দিতে পারবে?? ষড় যন্ত্রের জাল কোথায় বিস্তৃত ছিল তাঁর প্রমান সেই নেত্রী নীজেই তাঁর উষ্মায় প্রকাশ করে দম্ভস্বরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে সুশৃংখল বাহিনীকে তাচ্ছিল্য করে বলে ছিল"সেনাবাহিনী বেঈমান"!!!এর পরও আপনার সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আনায়ন না করে প্রকাশ্য সভার অনুমতি দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার গুলির মনে আগাত দেয়া হয়েছে আমি মনে করি। গত পৌর নির্বাচনে রায় দিয়েছে তাঁর বিচার করার,তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অর্থই হচ্ছে জনগনের ক্ষোভ তাঁর উপর থেকে এখনও কমেনি,বরঞ্চ কয়েক গুন বেড়ে জনরোষের পয্যায় পৌছে গেছে।আপনার সরকারের তাঁকে দেয়া বাড়তিনিরাপত্তাই তা প্রমান করে।সুতারাং দেশ ও জাতি এই রাজনৈতিক লাশের ভার বইবার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা।দেশের এবং জাতির প্রয়োজন বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মত শিক্ষিত, বিজ্ঞান মনস্ক,প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত সমৃদ্ধ জাতি গঠনে জ্ঞানসমৃদ্ধ, আধুনিক সভ্য দুনিয়ার নেতৃত্ব গ্রহন করার মত গুনাবলি সমৃদ্ধ নেতার। কোন অবস্থায় সক্রেটিসের আগের যুগে জাতি ফেরৎ যেতে চায়না।পরিশেষে বলতে চাই,আর কোন সংগাত নয়,এবার চাই সমৃদ্ধি।আর নয় জঙ্গিপনা,এবার চাই ধর্মনিরপেক্ষতা।আর নয় সাম্প্রদায়ীকতা,এবার চাই অসম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা।আর নয় পাকি ভাবধারা প্রতিষ্ঠা,এবার চাই মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের সফল বাস্তবায়ন। জয় আমাদের হবেই হবে, অশুভ অপশক্তির পরাজয় অবশ্যাম্ভাবি। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা