আস্তিকের সাথে নাস্তিকের সহবস্থান যেমন সম্ভব নয়,তেমনি রাজাকারের সাথে মুক্তিযোদ্ধার সহবস্থান সম্ভব হতে পারেনা-------- ================================ প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখার বিষয়ে যে দৃঢ়তা প্রকাশ করেছেন, তা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। আমরা মনে করি, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কোনো ধরনের বিতর্কের সুযোগ নেই। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা সর্বদা সমুন্নত রাখতে হবে। সারা দেশের মানুষ, বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম যাতে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারে, তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে আমাদের শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে পরিচিত করানো না হলে তারা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারবেনা। বিশ্বে এমন কোন স্বাধীনতা প্রাপ্ত দেশ নেই, যে দেশের দায়িত্বপুর্ন রাজনৈতিক দলের নেতা বা বুধিজীবির মুখ থেকে তাঁদের দেশের স্বাধীনতা সম্পর্কে বিরুপ কোন মন্তব্য করে।অবশ্য অনস্বিকায্য যে বাংলাদেশের ন্যায় বিশ্বের কোন দেশ নেই যে দেশ তাঁদের স্বাধীনতার জন্য এত ত্যাগ স্বীকার করেছে।বাঙালি জাতি এত ত্যাগ স্বীকার করেও স্বাধীনতা পেল তাঁর পর ও স্বাধীনতা নিয়ে বিরুপ মন্তব্য নতুন প্রজম্মকে শুনতে হবে এর চেয়ে দু:খ্য জনক আর কি হতে পারে।একটা প্রতিষ্ঠিত বিষয় স্বাধীনতার ৪৫ বছর পর বিতর্ক উত্থাপন করার কারন কি হতে পারে তাও ক্ষতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব,মুক্তিযুদ্ধ,জাতিরজনক, জাতিয় সংসদ,জাতিয় কবি,জাতিয় পতাকা,জাতিয় পশু, জাতিয় ফুল,শহিদের সংখ্যা,ইজ্জত হারানো মা বোনের সংখ্যা ইত্যাদি যাহা কিছুই নির্ধারীত হয়ে গেছে স্বাধীনতার পরবর্তিতে তা নিয়ে বিতর্ক উত্থাপন কোনকালেই বাংলাদেশের অধিবাসি কোন নাগরিকের পক্ষ থেকে উত্থাপন হতে পারেনা। নয়মাসের যুদ্ধ, এককোটি শরনার্থীর মানবেতর জীবন যাপন,৩০লক্ষ শহীদের জীবনদান,প্রায় পৌনে চার লক্ষ মা বোনের ইজ্জত,বহু সম্পদের হানী,দীর্ঘ ২৩ বছরের আন্দোলন সংগ্রাম, সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী, স্বাধীনতার স্বপ্ন দ্রষ্টা সফল রুপকার বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের কারাগারে রেখে যে নতুন একটি দেশের অভ্যুদয় হয়েছিল ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পনের মধ্য দিয়ে,সেই নবাগত দেশের নতুন নাগরিকদের আবেগ কেমন ছিল তা কি লিখে বুঝানো যাবে? আজকে আমরা যে দেশটিতে বসবাস করে গর্ব করতে দ্বিধা করিনা,দেশপ্রেমে উদ্ভোদ্ধ হয়ে জনগনের সেবার মানষিকতা নিয়ে রাজনীতিতে ঝাপিয়ে পড়ি সে দেশটা যদি এখনও উপনিবেশিক শাষন শোষনের যাঁতাকলে পিষ্ট থাকতো -এই সুযোগ কি আমাদের বর্তমান রাজনীতিবীদদের কারো ভাগ্যে জুটতো? যে দেশটি নিয়ে সারা বিশ্বে অলোড়ন চলছে যদি সেই দেশের নাগরিক না হয়ে সাবেক পাকিস্তানের নাগরিক হতাম তাহলে কি তাঁদের সাথে আমারাও অসভ্য দেশের নাগরিক হিসেবে বিশ্ব দরবারে পরিচিত হতামনা? মুক্তিযুদ্ধের শহিদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক উত্থাপন করেছেন বেগম খালেদা জিয়া।তিনি বেশ ভাল কাজই করেছেন আমি মনে করি।এই বিষয়টিকে কোন অবস্থায় চাপা না দিয়ে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হতে থাকাই মঙ্গল হবে। স্বাধীনতা বিরুধী রাজাকার আলবদর ইস্যুটি জিইয়ে রেখে স্বার্থান্বেষি মহল সব সময় পানি ঘোলা করে মাছ ধরার চেষ্টা লক্ষ করেছেন দেশবাসি। নতুন প্রজম্মের চাওয়া পাওয়ার মুল্য দিতে গিয়ে মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচারের জন্য ট্রাইবোনাল গঠন করে বিচার অনূষ্ঠিত হচ্ছে।বিষয়টি স্বাধীনতার ৪৫ বছর পর সুরাহার পদনির্দেশনা পেয়েছে বলে জাতি উৎফুল্ল চিত্তে দেশ গড়ায় মনোযোগ দিতে পেরেছে।দেশও ইতিমধ্যে কাংখিত লক্ষে এগিয়ে যাচ্ছে। এমনি মহুর্তে শহিদের সংখ্যা বিতর্ক উত্থাপিত হয়েছে জাতির ভাগ্যগুনে। এরই সাথে অন্যান্য বিষয় ( উপরে উল্লেখিত বিষয়) সমুহ সংযুক্ত করে জাতিয় বিতর্ক অনুষ্ঠিত হতে থাকুক। অচিরেই সমাধান পেতে হলে বিতর্ক উত্থাপন জরুরি। কোন জাতিয় ইস্যু নিয়ে বিতর্ক রেখে জাতিয় উন্নয়ন সম্ভব নহে।এই প্রসঙ্গে আমি কয়টি উদাহরন আপনাদের অবগতির জন্য তুলে ধরতে চাই। বর্তমান বিশ্বে ইসলাম ধর্ম অধ্যুষিত অনেক দেশই আছে,ইসলামী শাষন আছে এমন একটি দেশও নেই? ইসলামি শাষন কায়েম হলে অন্য ধর্মালম্বিদের আলাদা কর দিয়ে বসবাস করার অধিকার অর্জন করতে হত। যেমন নবী করিম (স) এর সময়ে" জাজিরা"নামক একটি আলাদা করের ব্যাবস্থা করে দিয়েছিলেন। খোলাফায়ে রাশেদীনের সময় পয্যন্ত আইনটি বলবৎ ছিল।একক ধর্মীয় শাষনের দেশে নাস্তিকের কোন স্থান নেই।নাস্তিক শুধু ইসলামে ঘৃনিত তা নয়,সকল ধর্মেই নাস্তিক বিদ্যমান,সকল ধর্মেই তাঁরা ঘৃনিত। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধে জার্মানের নাৎসি বাহিনী হেরে গেলে, নাৎসী দলকে জার্মানীতে রাজনীতি করার উপর নিষেদাজ্ঞা দেয়া হয়,যা আজও বলবৎ রয়েছে। নাৎসি সমর্থকেরা কি সেই দেশ শাষনে প্রতিনিধিত্ব করার আজও সুযোগ পেয়েছে? বিশ্বে এমন কোন দেশের নাম কি আমাকে জানাতে পারবেন,যেই দেশের স্বাধীনতা,সার্বভৌমত্বের বিরুধী দল সেই দেশের রাজনীতিতে বিদ্যমান আছে? বা সেই দেশের জনগনের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাচ্ছে? যদিও আমাদের মত ত্যাগের স্বাধীনতা কোন জাতির নেই। না কোথাও নেই।তাহলে বাংলাদেশে কেন স্বাধীনতা বিরুধীরা রাজনীতিতে থাকবে? কেন সরকারে অংশ গ্রহন করার সুযোগ পাবে? তাঁরাতো স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের উৎপত্তি চায়নি। শুধু তাই নয়, আস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর সেনানী মুক্তি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে রনাঙ্গনে সম্মুখ যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিল।যে দেশ তাঁরা চায়নি সে দেশের নাগরিকত্ব কি ভাবে, কোন আইনে, কোন নৈতিকতায় চায় তাঁরা? সরাসরি যুদ্ধে নেতৃত্ব দেয়া সংগঠন জামায়াতের রাজনীতি করার অধিকার কি ভাবে পেল? কেন পেল? ইত্যাদি সকল বিষয় জাতিয় বিতর্কে ছেড়ে দিয়ে সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মুক্তি যুদ্ধের মিমাংসীত বিষয় সমুহ নিয়ে বিতর্ক উত্থাপন কারিরা, স্বাধীনতা বিরুদীরা, বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার থাকবে কি থাকবেনা তা জনগনই সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকারি। উপরে উল্লেখিত বিষয় অর্থাৎ জাতির জনক,শহীদের সংখ্যা,জাতিয় পতাকা ইত্যাদি বাঙ্গালি জাতির অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন যার কাছ থেকেই আসুকনা কেন তাকেই দেশদ্রোহি হিসেবে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা কি অন্যায় হবে। যে সমস্ত দল উল্লেখিত বাঙ্গালি জাতির অস্তিত্ব,গৌরবের নিদর্শন সমুহ মান্য করে রাজনীতি করবে তাঁরাই জনগনের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাবে, অন্যথায় নয়। সে যে গোত্রের, যে বংশেরই হোক স্বাধীন দেশে তাঁর প্রশ্ন উত্থাপন হতে পারেনা। যেমনি ভাবে আস্তিকের সাথে নাস্তিকের বসবাস সম্ভব নয় তেমনি স্বাধীনতা যুদ্ধে বিজয়ীদের সাথে পরাজিত শক্তির সহবস্থান হতে পারেনা। জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা
স্বাধীন বাংলাদেশে স্বাধীনতা বিরুধীদের নাগরীক অধিকার থাকতে পারেনা।বিশ্বের কোন দেশেই নেই।মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে মিমাংশিত বিষয় সহ পরবর্তি নতুন বাংলাদেশের জনগনের আবেগের সাথে সম্পৃত্ত কোন বিষয় নিয়ে বিতর্ক উত্থাপন করা সরাসরি দেশদ্রোহী অপরাধ।এই অপরাধের বিচার করতে সরকার ব্যার্থ হলে মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানী সহ পক্ষ শক্তির বুকে বিরাট আঘাত হিবে বলে আমি মনে করি।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন