(খোলা     আবেদন) ------------------------------------------ জয়বাংলা                                  জয়বঙ্গবন্ধু ==================≠=============== মাননীয়      প্রধান মন্ত্রী,গন প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।   জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা                           সভানেত্রী,              বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।              কেন্দ্রীয় কমিটি,ঢাকা,বাংলা দেশ।             (বিষয়:-কোটি মানুষের প্রানের সংগঠন,জাতির জনকের হাতে গড়া দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে লুটেরার খপ্পর থেকে রক্ষার আকুল আবেদন)    মাননীয় সভানেত্রী       যথাবিহীত সম্মান পুর্বক নিবেদন ,আপনি বাংলাদেশের জাতির জনক সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, স্বাধীনতার রুপকার, বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের জৈষ্ঠ কন্যা।আপনার সুভাগ্য হয়েছিল জাতির জনকের পরিবারের প্রথম কন্যা সন্তান হিসেবে জন্ম গ্রহন করার,যাহা কদাচিৎ কারো ভাগ্যে জোটে। বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী না হলেও  জাতি আপনার পরিবারকে চিরদিন স্মরন করবে পরম শ্রদ্ধাভরে।অতীব দু:খ্যের বিষয় আপনি ১৫ই আগষ্ট ১৯৭৫ ইং সালে আপনার পরিবার ও আত্মীয় স্বজনের অধিকাংশ সদস্যকে হারিয়ে  স্বজনহারা এতিম হয়ে দু:খ্যের সাগরে সাঁতার কেটে এখনও বেঁচে আছেন।বাঙ্গালী জাতি আপনার মতই জনককে হারিয়ে দিক নির্দেশনাহীন, নেতৃত্বহীন হয়ে বিশ্ব দরবারে দুর্নীতিবাজ,লুটেরা,ভিক্ষুক, আইন অবজ্ঞাকারী,জাতিরজনক হত্যাকারি ইত্যাদি নানা অসম্মানজনক অভিধায় অভিসিক্ত হতে হতে একপয্যায়ে জাতির  ললাটের লিখন মনে করে সহনীয় করে নীজেদের প্রস্তুত করে তুলেছিল।এমন সময় পরম করুনাময় আল্লাহ আপনার মনকে বাঙ্গালী জাতির সেবায় নিবেদন করার এবং জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মানের জন্য বাঙ্গালী জাতির ফরিয়াদে অনুমোদন প্রদান করে। করুনাময়ের অপার কৃপায় পিতার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার জন্য ব্যাথাতুর হৃদয় ক্ষনিকের জন্য ইস্পাত কঠিন হয়ে দেশে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। হতাশার সাগরে ডুবন্ত জাতি হঠাৎ সম্বিৎ ফিরে পায়,আশায় নতুন করে বুক বাঁধে। মাননীয় জাতির জনকের কন্যা,     ১৯৯১ ইং সালে আমাদের থানা আওয়ামী লীগের সাথে আপনার নির্ধারীত এক বৈঠক ছিল।সেই বৈঠকে আমারও যোগদানের সুভাগ্য হয়েছিল।আমার রাজনৈতিক জীবনের প্রথম কোন বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতার সামনে উপস্থিত হওয়া,শুধু কেন্দ্রীয় নেতাই নন জাতির জনকের কন্যা,আওয়ামী লীগের সভানেত্রী। বুকে ছিল প্রচন্ড কম্পন,মানষিকভাবে ছিলাম পয্যুদস্ত, ভাবে ছিল নার্ভাসের সীমাহীন চিহ্ন।     ভয়ের সাথে সাহষের মিশ্রন ছিল বুকে। আমাদের নেতা ছিলেন আজিজুল হক মজুমদার।গনমানুষের প্রানপ্রীয় নেতা, তিনি ছিলেন সাধারন সম্পাদক। সভাপতি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, আলী আজম হাই স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক জনাব কাজী গোলাম মাহমুদ সাহেব।আমি ছিলাম  সাংগঠনিক সম্পাদক। সেই সময়ের দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আর কোন পদ মাঝখানে ছিলনা।বয়স যদিও ২৭/২৮ এর মাঝামাঝি চেহারা এবং শারীরিক গঠনে ছিলাম নিতান্তই তরুন। দায়িত্বও পালন করছিলাম একাধিক। আমার নীজ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক এবং পাশের গ্রামের  হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের গুরুদায়িত্ব আমার কাঁধে। মাননীয় দু:খী মানুষের নেত্রী,     ভয় ছিল ভিন্ন কারনে,আলোচ্য বিষয়টি ছিল আমাদের তিনজনের বহিষ্কারাদেশ প্রসঙ্গে।১৯৯১ ইং সালের  জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাদের ফুলগাজী থানা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে কেন্দ্রে রেজুলেশন পাঠিয়ে চেয়েছিলাম বর্তমানে  মীরপুরের এম,পি জনাব কামাল আহম্মদ  মজুমদার সাহেবকে আমাদের এলাকায় যেন আওয়ামী লীগ মনোনয়ন প্রদান করেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস আমাদের সংসদীয় এলাকায়,তিনি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান, উচ্চ শিক্ষিত, ছাত্র জীবনে বাংলাদেশ ছাত্র লীগ, ঢাকা মহানগরের নেতা ছিলেন।     আমাদের প্রান প্রীয়জেলা নেতা জননেতা জনাব জয়নাল হাজারী সাহেব উক্তরুপ  দলীয় বীধি ভঙ্গকরে কোন প্রার্থীর পক্ষে অবস্থানকে মেনে নিতে পারেননি।তিনি নমিনেশন দাখিলের আগেই আমাদের তিনজনকে বহিষ্কার করার পদক্ষেপ গ্রহন করেন। বহিষ্কারাদেশ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যই আমাদেরকে আপনার সাথে দেখা করে সম্পুর্ন বিষয়টি জানানোর প্রয়োজন দেখা দেয়। আপনার পরামর্শমত জীবনবাজি রেখে নির্বাচনী কাজে দিনরাত পরিশ্রম করেছিলাম। আপনার মনে আছে কিনা জানিনা,প্রথম পরিচিতিতেই আপনি আমাকে দেখে  একরকম হতভম্বই হয়েছিলেন  (এত কম বয়সে থানা নেতা!!) । মরহুম জনাব আজিজুল হক মজুমদার সাহেবের মুখ থেকে আমার সম্পুর্ন পরিচিতি পেয়ে গর্বিত চাহনীতে আপনি অনেকক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে ছিলেন। অনেকটা সময় পর জিজ্ঞাসা করেছিলেন কয়জন শিক্ষক, উকিল  অন্যান্ন সমমানীত পেশার সদস্য আছে বর্তমান কায্যকরি কমিটিতে? সবিস্তারে বর্ননার পর বলেছিলেন,আপনারা আপনাদের কাজ করতে থাকুন,আমি দেখব কি হয়। তাঁরপর অনেকবারই আপনার সাথে সাক্ষাতের সুযোগ হয়েছে,প্রথমবারের মত মিশ্র অনুভুতি আর কখনই হয়নি। দীর্ঘ অনুপস্থিতির পর আপন মা বোনের সাথে দেখা হলে যেমন আনন্দে আত্মহারা হয়ে যেতাম, ঠিক আপনার সাথে দেখা হলেও একই অনুভূতিতে আপ্লুত হতাম।    প্রীয় জননেত্রী, নমিনেশনের আগে সমর্থন ব্যক্ত করায় আপনার নিকট নালীশ পৌঁছে ছিল।এখন দেখি বিদ্রোহী প্রার্থীরাও বহাল তবিয়তে আগের দাপটেই কায্যক্রম করে যাচ্ছে।তাঁদের বহিষ্কারের উদ্যোগও নেয়া হচ্ছেনা, দলীয় পদ পদবীও কেড়ে নেয়া হচ্ছেনা।অথছ আমাদের সেইদিনের বহিষ্কারাদেশকে কেন্দ্রকরে প্রতিষ্ঠিত জন নেতাকে '৯৬ এ দল সরকার গঠন করার প্রাক্কালে ঢাকার হোটেল কক্ষে নির্মম ভাবে জীবন দিয়ে তাঁর প্রায়চিত্ত করতে হয়েছিল।যার বিচার আজো ফুলগাজী বাসি পায়নি।জননেতা আজিজুল হকের ইমেজ কাজে লাগিয়ে আজও তাঁর ঘরের কোনের সহধর্মীনি ইউপি থেকে উপজেলা ভাইস চেয়ার ম্যান নির্বাচিত হয়ে আজও জনগনের সেবা করে যাচ্ছেন।এই থেকেই প্রতিয়মান হয় তিনি কত জনপ্রীয় নেতা ছিলেন। প্রানপ্রীয় নেত্রী, তাঁর পরের ইতিহাস আপনি সম্যক অবগত আছেন।কামাল মজুমদার সাহেব এখানে নমিনেশন না পেয়ে ঢাকার মীরপুরে উপনির্বাচনে অংশ নিয়ে আজ ও  ঢাকার রাজনীতিতে স্থীতাবস্থায় রয়েছেন।দলের অংশ নেয়া প্রতিটি সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে দলের পক্ষে নির্বাচিত হয়ে তাঁর যোগ্যতা, দক্ষতা ও পারমঙ্গমতার সাক্ষর রেখে আমাদের সেই দিনের অবস্থান সঠিক ছিল তাঁর প্রমান রেখে চলেছেন। প্রকারান্তরে সারা বাংলাদেশে আওয়ামী রাজনীতি উত্থানপতন ঘটলেও আমাদের আসন আজও আগের অবস্থানেই রয়েছে।অথছ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু অচেনা অজানা কোন এক প্রফেসারকে দিয়ে বলেছিলেন, আমি কলা গাছ দিয়েছি,তোমাদের দায়িত্ব আমার কলাগাছকে নির্বাচিত করে আনা।জনগন সেই কলাগাছকেও বিপুল ভোটে নির্বাচিত করে সংসদে পাঠিয়েছিল। আওয়ামী লীগের সেই ঘাঁটিতে আজ ষড়যন্ত্রকারীরা বাসা বেঁধেছে। মাননীয় বঙ্গকন্যা, সেই বাসাকে ভেঙ্গে চুরমার করার জন্য তৃনমুল থেকে এক তরুন ছাত্রনেতা প্রথমে ইউনিয়ন পরিষদে অংশ নিয়ে জয়লাভ করেছিল। ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচিত হয়ে সারা উপজেলায় নাম কিনতে সক্ষম হয়েছিলেন তাঁর কর্মগুনে। পরবর্তিতে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিপুল ভোটে জয়লাভ করে সারা সংসদীয় এলাকায় হৈচৈ পেলে দিতে সক্ষম হন। দ্বিতীয়বার নির্বাচনে শত বাধা উপেক্ষা করে বিপুল ভোটে আবার ও নির্বাচিত হয়ে সত্যিকারের জননেতায় রুপান্তরীত হচ্ছিলেন। নির্বাচিত হয়েছিলেন বিনা প্রতিদন্ধীতায় ফুল গাজী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে। আপনার কায্যালয়েও ঘন ঘন যাতায়াত ছিল, এলাকার উন্নয়নের ফাইলপত্র নিয়ে।আপনিও তাঁকে ভালবাসতেন পুত্রস্নেহে। আবারও অত্র সংসদীয় আসনের জনগনের ভাগ্যবিড়ম্বিত, আশাহত,স্বপ্ন ভঙ্গ হতে হল। ভাগ্যে জুটেনি এই মহান তরুন নেতাকে ধরে রাখার।দলের ভীতরে বাহিরে  ঘুপছি মেরে থাকা শত্রুরা প্রকাশ্য দিবালোকে তাঁকে কুপিয়ে,গুলী করে এবং শেষ পয্যন্ত নারকীয় কায়দায় আগুন দিয়ে কয়লা বানিয়ে দেয়। সেদিন তাঁরা একরামকে আগুন দিয়ে কয়লা করেনি, কয়লা করেছে আমাদের সংসদীয় আসন  উদ্ধারের হাজারো আওয়ামী নেতাকর্মীর স্বপ্নকে।আগুনে পুড়ে ছাঁই হয়ে গেছে ফিরে আসার সম্ভাবনা একেবারেই নেই।জানিনা কতবছর পর আবার সেই স্বপ্ন আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীরা দেখতে পাবেন।     মাননীয় নেত্রী, আজকের প্রসঙ্গটি আমার গুনগানের জন্য নয়,আপনার দৃষ্টিভঙ্গি স্মরন করে দেয়ার জন্য। তখন আপনি প্রশ্ন করতে ভুলেননি কতজন উকিল, শিক্ষক বা সম্মানীত পেশায় নিয়োজিত  ব্যাক্তি কায্যকরি কমিটির সদস্য আছে?আমার জীবনের সেরা প্রশ্নের জবাব আমি সেইদিন দিয়েছিলাম। এখন কি কোন  কায্যকরি কমিটির সভাপতি /সাধারন সম্পাদককে জীজ্ঞাসার প্রয়োজন মনে করেন না?     মাননীয় নেত্রী, আমি নিশ্চিত আপনি আমার কোন কথায় রাগ করবেননা। বলার সাহষ আপনিই দিয়েছিলেন আমাকে। ১৯৯১ ইং সালে বাংলাদেশের শিক্ষিতের হার নিশয়ই ২৫/৩০পার্সেন্টের বেশী ছিলনা।তখন আপনি প্রয়োজন অনুভব করেছেন শিক্ষিত জ্ঞানী মেধা সম্পন্ন সম্মানীত নেতাদের নেতৃত্বে থাকার।বর্তমানে ৬৫/৭০ ভাগ মানুষ শিক্ষিত থাকার পরেও আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগে সুশিক্ষায় শিক্ষিত নেতার অভাব হল কেন? কি করে অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত মাস্তানেরা দলের শীর্ষপদে আসীন হয়। ইউনিয়ন থেকে জেলা পয্যন্ত কয়জন প্রকৃতছাত্র নেতা হয়ে নেতৃত্বে আছে? আপনার নিকট কি তাঁদের বায়োডাটা আছে? আমি নিশ্চিত- এত তৃনমুলের খবর রাখার সময় আপনার নেই।যাদেরকে খবর রাখার দায়িত্ব দিয়ে রেখেছেন তাঁরা কি সঠিক খবর আপনার নিকট পৌচাচ্ছে       মাননীয় নেত্রী,     ভাল একটা সুযোগ আপনার হাতে আছে।আগামী ইউনিয়ন নির্বাচনে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মীদের ভোটের উপর নমিনেশন ছেড়ে দিন,দেখবেন আপনার বর্তমান অশিক্ষিত মাস্তান সভাপতি/সম্পাদকেরা একজনও নমিনেশন চাইবেনা।,তাঁরা জানে আওয়ামী লীগের হাজারো নীপিড়িত কর্মীবাহিনী তাঁদের পছন্দ করেনা।যাঁরা সাহষ করে চাইবে তাঁরা অন্য সবার  শেষে তালিকায় থাকবে।প্রকৃত ত্যাগী নেতারাই কর্মীদের ভোটে জয়ী হবে।জনগনও তাঁদেরকে নির্বাচিত করার জন্য মুখিয়ে আছে।দু:খ্যজনক হল আপনার তদারকি নেতাদের দাপটে সেই সমস্ত ত্যাগী নেতারা গঠিত নমিনেশন বোর্ড়ে যাবেনা প্রার্থী হতে। এই কারনে তাঁরা কেউই নমিনেশন চাইবেনা।প্রকৃত বঙ্গবন্ধুর অনুসারী দলের পুজা ছাড়া কখনই  ব্যাক্তির পুজা করেনা। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ব্যক্তিপুজা না করলে দলের কায্যক্রম থেকে ছিটকে পড়া সময়ের ব্যপার হয়ে যায়। আপনাকে বুঝিয়ে বলতে হবেনা,আপনি নীজেই উপলব্দি করতে পারেন।         মাননীয় নেত্রী,    আপনি জাতির জনকের কন্যা।রাজনীতিতে না থাকলেও আপনার মায্যদা দেশবাসি চিরকাল দিয়ে যাবে। বহু বছর পর জনগনের উপলব্দিতে এসেছে, জাতির জনকের পরিবার বাঙ্গালী জাতিকে ভালবেসে সাগরসম রক্ত ঢেলে দিয়েছিল। মা তাঁর প্রীয় সন্তানের দরদ  মন দিয়ে অনুভব করে, মাসী সেই মন দিয়ে অনুভব করতে পারেনা। জাতির জনকের স্বপ্নের বাংলাদেশ তাঁর কন্যার হাতে যত বেশী নিরাপদ থাকবে,অন্য কারো নিকট সেই নিরাপত্তা পাবেনা। বাংলাদেশের জনগন দাঁত হারিয়ে দাঁতের মার্যদা বুঝেছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে,জাতির জনকের কন্যাকে, বাংলাদেশের জনগন আর কখনও বিমুখ করবেনা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, ছিটমহল বিনিময় চুক্তি কায্যকরের পর জনগনের চোখ খুলে গেছে।সারা জীবন শুনেছে বঙ্গবন্ধু দাসত্বের চুক্তি করে বেরুবাড়ী ভারতকে দিয়ে দিয়েছে,এখন দেখি এনেছে তাঁর দশগুন বেশী।ওরা ভারতে গিয়ে গঙ্গার কথা ভুলে যায়,জাতির জনকের কন্যা পানি এনে দেয়। সমুদ্রে আমাদের ন্যায্য অধিকার আছে ওরা কেউ কোন দিন বলতেও শুনেনী -,জাতির জনকের কন্যা আন্তজাতিক আদালতে মামলা দায়ের করে সমুদ্র জয় ছিনিয়ে এনেছে,শুধু তাই নয় বিজিত অঞ্চলে অধিকারও প্রতিষ্ঠিত করেছে।       মাননীয় দেশরত্ম,    বাংলার জনগন আপনার উপর আস্থা রেখেছে,সেই আস্থা গুটিকতক লুটেরার কারনে কালিমালিপ্ত হবে নিশ্চয়ই আপনি চাননা। সারা দেশব্যাপি চিরুনী অভিযান চালালেও ৫/৭ হাজারের বেশী মাস্তান সন্ত্রাসী খুজে পাওয়া যাবেনা। ৫/৭হাজার সন্ত্রাসীর দাপটে ১৬ কোটি মানুষ জিম্মি থাকবে?আপনি কি ৫/৭ হাজার ভোটে জয় পরাজয় নির্ধারন হবে মনে করেন? কেন আপনি লুটেরা মাস্তানদের নাকে রশি বাঁধার ব্যবস্থা করেননা।গত ১৩/১ এর দৈনীক বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় অনুসন্ধান মুলক রিপোর্ট চেপেছে। সুনির্দিষ্ট করে বলে দিয়েছে কোন জেলার নেতা কি করেন।আপনার পক্ষ থেকেও তদ্রুপ অনুসন্ধান করে দেখুন, প্রতিবেদনটির সত্যতা আসলেই কতটুকু। সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম দুই বছরেই তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করুন, যাবে ৫০/১০০ আসবে ৩/৫ লক্ষ। আপনার দলের কর্মিরা বুকের চাতি উধ্বে তুলে বলতে পারবে আওয়ামী লীগে কোন লুটেরার স্থান নেই,আওয়ামী লীগ লুটপাটে বিশ্বাস করেনা।         মাননীয় জাতির জনকের কন্যা, আপনি ভাল করেই জানেন,আওয়ামী লীগের আছে জাতির জনকের রেখে যাওয়া দেশীয় আবহাওয়া উপযোগী কালজয়ী দর্শন,দলের আছে  আদর্শ এবং উদ্দের্শ্য। অন্য যাদের দর্শন আছে তা বিদেশীদের নিকট থেকে হাওলাতি দর্শন, কারো নিকট আছে পবিত্র শান্তির ধর্ম  ইসলামকে বিকৃত করে স্বার্থ উদ্ধারের দর্শন। বাংলাদেশের জনগন আবহমান কাল থেকে বিদেশী দর্শন,বিকৃত ধর্মীয় দর্শন গ্রহন করেনি,করবেও না। দুই জাতকে বাদ দিলে অন্য কোন দলের উল্লেখ করার মত দর্শনতো দুরের কথা আদর্শ এবং উদ্দের্শ্য বলতেও কিছু  নেই। মাঝিহীন নৌকার যেমন গন্তব্য নির্দিষ্ট থাকেনা,ঐ সমস্ত দল গুলীর গন্তব্যের কোন নির্দিষ্টতা নেই। মাঝিহীন নৌকার শেষ পরিনতি যেমন ডুবে যাওয়ায় নিহীত, দলগুলীও পতন অনিবার্য্য,শুধু সময়ের ব্যপার।সুতারাং আপনি কিসের ভয় করেন,দেশের মানুষকে শান্তিতে থাকার সর্বচ্ছো ব্যবস্থা গ্রহন করুন।,দলের অভ্যন্তরে ডুব দিয়ে থাকা আগাছা পরিষ্কার করার ব্যবস্থা গ্রহন করুন। মাননীয় সভানেত্রী,     চোখের সামনে দেখেছেন- চাটুকার নেতাদের কান্ড। পত্রিকর পাতায়  দেখেছিলাম, আপনার দরবারেও অনেকেই ধর্না দেয়ার সাহষ দেখিয়েছে। চক্ষু লজ্জাহীন, মেরুদন্ড হীন নেতাদের কোন বিবেক বুদ্ধি থাকেনা।স্বার্থ উদ্ধারে তাঁরা বহু কিছু করতে পারে। বিএনপি  ক্ষমতায় যখন ছিল খালেদা জিয়াকে  মাথা ন্যুজ করে ডাকতেন ম্যাডাম। বিএনপি জামায়াত জোট ক্ষনতা হারানোর  ৫/৭ বছর যেতে না যেতেই  খালেদা জিয়া স্বার্থান্বেষিদের নিকট হয়ে গেছেন মানষীক রুগী। আপনার নীজের বেলায়  আরও বড় বাস্তব অভিজ্ঞতা আছে।,১/১১ তথাকথিত সংষ্কার বাদীরা দলের অভ্যন্তরে কতবড় ষড়যন্ত্রইনা করেছিল।সংষ্কারের প্রশ্ন উত্থাপন করে জনমনে দল এবং আপনার সম্পর্কে নেতিবাচক ধারনা প্রতিষ্ঠার লক্ষে। ষড়যন্ত্রকারীদের সাথে হাত মেলাতেও তাঁদের বিবেকে বাধা দেয়নি।" সংষ্কার যদিও একটা চলমান প্রক্রিয়া-তৎক্ষনাৎ প্রতিষ্ঠার দাবী উত্থাপন করার অর্থ আপনি নীজেই জেলের অভ্যন্তরে গিয়ে হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন।"    মাননীয় দেশরত্ম,      চাটুকারদের   বিশ্বাস করতে নেই। আপনার চার পাশে, আপনার রন্ধন শালায়,গনভবনে চাটুকারের অবস্থান স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে । সত্বর তাঁদের বিদায়  করার ব্যবস্থা করুন।আওয়ামী লীগ বাঁচবে তাঁর প্রতিষ্ঠাতার রেখে যাওয়া বিশ্বের কোটি কোটি  নিপিড়ীত মানুষের মুক্তির সনদ মৃত্যুহীন দর্শনের কারনে।দিক নির্দেশনা পাবে দলটির আদর্শ এ উদ্দের্শের গতিশীল নীতি অনুসরনে।কোন নেতার ব্যাক্তি গত গুনের কারনে নয়।তাঁর প্রমান ৭৫ এর মোস্তাক গং "৭৫ পরবর্তি  কিংবদন্তি নেতা মোস্তফা মহসীন মন্টু ,ড.কামাল হোসেন।,হাল আমলে বঙ্গবীর খ্যাত কাদের সিদ্দিকী, তুখোড় ছাত্র নেতা খ্যাত মাহমুদুর রহমান মান্না ও আপনার স্নেহ ধন্য নামকরা ছাত্রনেতা জনাব মনসুর সাহেব সহ আরো অনেকে।আদর্শচ্যুত হয়ে তাঁরা এখন নর্দমার কীটে রুপান্তরীত হয়ে সর্বক্ষন স্বাধীনতা বিরুধীদের সাথে হাত মিলিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। মাননীয় জাতির পিতার কন্যা,    আমি জানি, আমার এই আবেদন আপনার টেবিল পয্যন্ত পৌছবে।আরো জানি কারা পৌঁছাবে,কেন পৌছাবে।আমার দৃডবিশ্বাস,লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীদের ভীড়েও আপনি আমাকে চিনে নিতে কষ্ট হবেনা।কারন আপনি তীক্ষ জ্ঞানী,প্রখর দৃষ্টিসম্পন্ন নেত্রী,সুদুরপ্রসারী চিন্তাবীদ। লেখাটি পড়ার সময় পাবেন কিনা জানিনা। যদি আচমকা কোন প্যারার উপর চোখ পড়ে দেখবেন এক নিপীড়িত,নির্যাতীত, নীষ্পেষিত আওয়ামী কর্মীর অন্তরের মর্মবেদনার খন্ড খন্ড চিত্র। বাস্তব চিত্র আরো অনেক বেশী ভয়াবহ, আশংকাজনক।পৌর ভোটে জীতে মনে করার কোন কারন নেই,আপনার দলের নেতাদের অপকর্ম নেই।আপনার দলের নেতাদের অপকর্মের চাইতে জনগন প্রতিদন্ধী প্রার্থীর দলের দেশ বিরুধী কর্মকান্ডকে বড় অপরাধ বিবেচনা করেছে। ক্ষমতা দীর্ঘায়ীত হওয়ার পরও আপনার আলোতে আলোকীত হয়ে আপনার দলের প্রার্থীরা জীতেছে।আপনার সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডকে দেশের জন্য সহায়ক মনে করে আপনার মনোনীত প্রার্থীদের ভোট দিয়েছে। এর অর্থ এই নয় তাঁরা প্রত্যেকে দুধে ধোয়া তুলসী পাতা। অতএব বিনীত প্রার্থনা,   দেশের উন্নয়ন অগ্রগতির প্রশ্নে জনমনে কোন প্রশ্ন নেই,দলের নেতাদের হাত থেকে জনগনের মান ইজ্জত রক্ষা হলে আর কোন চাহিদাও জনগনের নেই।আপনার পরিবার নিয়ে চরম শত্রুও প্রশ্ন উত্থাপন করেনা।কিন্তু আপনার দলের এমন কোন নেতা নেই যে প্রশ্নবিদ্ধ নয়।এমতবস্থায় দলের অভ্যন্তরে শুদ্ধি অভিযান একান্ত অপিরিহায্য। আমি  যে ইউনিয়নে বাস করি--আমি নীজেও দেখিনি গত ৫/৭বছরে কায্যকরি কমিটির কোন সভা অনুষ্ঠান হতে। তাঁরা মনে হয় রেজুলেশন,নোটিশ খাতাও চিনেনা। কিভাবে পত্রিকার সেই অনুসন্ধানী রিপোর্ট অস্বীকার করি।    মাননীয় জনগনের প্রানের নেত্রী, উল্লেখীত বিষয়গুলী কোন অবস্থায় আমার ব্যক্তিস্বার্থ জড়িত কোন বিষয় নয়।সারা বাংলাদেশের লাখ নেতা কর্মীর অন্তরের ক্রন্দন।আশা করি দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহন করে জননন্দিত নেতাদের নেতৃত্বে আসার পথ সুগম করার পদক্ষেপ নিয়ে বার্ধিত করবেন।                                       বিনীত নিবেদক                         ১৭/০১/২০১৬ ইং                          ফুলগাজী, ফেনী                       জয়বাংলা       জয়বঙ্গবন্ধু             জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা    

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন