বাঙ্গালী অশুভ শক্তিকে পরাভুত করবে -- তাঁদের হাজার বছরের সংষ্কৃতির বন্ধন দিয়ে------ ====================== আজ ফেব্রুয়ারী মাসের প্রথম দিন।মাসটি বাঙ্গালী জীবনে এক বেদনাবিধূর মাস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে ১৯৫২ সালের ২১ শে ফব্রুয়ারী দিনটি হতে। ১৯৪৭ ইং সালের ১৪ই আগষ্ট ভারতীয় উপমহাদেশ  "দ্বিজাতিতত্ব " নামক ভুল দর্শনের ভীত্তিতে বৃটিশ শাষকদের হাত হতে স্বাধীনতা লাভ করে। একদিকে ভারত,অন্যদিকে মসুলমান অধ্যুষিত পাকিস্তান।ভুল "ধর্মীয় জাতীয়তার দর্শনের "ভিতরেই লুকিয়েছিল শোষনের কালছায়া। বাংলাকে উপনিবেশীক শাষক- দের কলোনী করে দীর্ঘমেয়াদে শোষন করার চক্রান্ত। বহু আখাংকীত স্বাধীনতার স্বপ্নের মধ্যেই তাঁর বীজ রোপিত হয়েছিল। কথাটি আমি এই কারনেই বলছি,ইসলাম একটি শ্বাস্বত: ধর্ম। মানব জাতির জন্য শান্তির অভয়বানী নিয়ে নবী করিম (স:) এর মাধ্যমে আল্লাহ সকল জাতির হেদায়েতের জন্য দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন।ইসলাম ধর্ম এবং কোরানেপাক নাজেল করার সাথে সাথে পুর্ববর্তি সকল আসমানী কিতাব নিষিদ্ধ করে শেষ নবী হযরত মোহাম্মদ (স:)এবং সর্বশেষ আল্লাহ প্রদত্ত কোরানকে অনুসরন করার নির্দেশ দিয়েছেন। পবিত্র কোরানেই আছে,নবী করীম (স:)নীজেও বলেছেন এর পর আর কোন নবী বা রাসুল দুনিয়াতে আসবেনা, কোন কিতাবও নাজেল হবেনা। প্রেরীত ধর্ম  স্ব-স্ব-ভাষায় পালন করা যাবে। মহান আল্লাহ সকল ভাষাই বুঝেন,সকলের ইবাদত কবুল করবেন।পৃথিবীতে বিচরন করা প্রত্যেক জাতি, গোত্র, গোষ্টির মানুষের  "ইসলাম ধর্ম "গ্রহন করার এবং পালন করার অধিকার আছে। জাতিগত বেদাভেদ ভীন্ন একটি বিষয়। বাঙ্গালী জাতির মধ্যে যেমন" হিন্দু মুসলিম "আছে তেমনি অন্যান্ন জাতির মধ্যেও হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান আছে। জাতি বলতে আমরা বুঝি--একই  ভাষা,সংস্কৃতি,কৃষ্টি, চালচলন, আচার আচরন ইত্যাদি বিষয় সমুহ যদি কোন একটা নির্দিষ্ট জনপদে এক ও অভিন্ন থাকে তবে তাঁরা একটি জাতি হতে পারে। যেমন আমাদের দেশের উপজাতি গোষ্টি গুলি-তাঁদের মধ্যে বেশীর ভাগ যদিও বৌদ্ধ ধর্মালম্বি হয় হিন্দু ধর্মের অনুসারীও অনেকেই আছে। জাতীবেদে আমরা তাঁদের বলি মার্মা,ত্রিপরা, চাকমা, মুরং ইত্যাদি। সুতারাং লক্ষনীয় বিষয়টি হচ্ছে পাকিস্তানীরা যদিও  ইসলাম ধর্মের অনুসারী হয়, তাঁদের ভাষা আরবী নহে। তাঁদের মধ্যেও জাতীবেদ আছে,হিন্দু, মসুলমান, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান, উপজাতি ইত্যাদি রয়েছে। জাতিগত পার্থক্যও বিদ্যমান-যেমন পাঞ্জাবি,পাঠান, বিহারী, পোস্তন ইত্যাদি।ভাষাগত দিক থেকেও সবাই উর্দুতে কথা বলেনা। প্রত্যেক জাতী গোষ্টির আলাদা আলাদা নিজস্ব ভাষা সংষ্কৃতি, কৃষ্টি  বিদ্যমান রয়েছে। অখন্ড পাকিস্তানের কোন জাতি গোষ্টির ভাষা পরিবর্তনের প্রয়োজন হলনা,"বাংলা ভাষাকে কেন পরিবর্তন প্রয়োজন হল?" কোন ভাষার মধ্যে হিন্দুয়ানীর গন্ধ পাওয়া গেলনা বাংলা ভাষার মধ্যে কেন হিন্দুয়ানী গন্ধ পাওয়া গেল? হিন্দি ভাষা আর উর্দু ভাষার মধ্যে তেমন পার্থক্য না থাকা সত্বেও উর্দুকে পরিবর্তন না করে বাংলাকে কেন  পরিবর্তন করে মসুলমানি করাতে হবে? বাঙ্গালী হিন্দুর চাইতে কয়েকগুন বেশি পাঠান,পাঞ্জাবী হিন্দু থাকা সত্বেও তাঁরা ধর্মভ্রষ্ট না হয়ে বাঙ্গালীরা কেন ধর্মভ্রষ্ট হবে? বিহারীদের মধ্যে হিন্দিভাষার প্রচলন থাকলেও তাঁদের মুসল- মানী না করিয়ে বাঙ্গালীদের করার প্রয়োজন কেন হল? মুলত: বাঙ্গালী জাতিকে সুদীর্ঘকাল শাষন শোষন করার উদ্দেশ্যে  প্রথমেই ভাষা কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করে।বাঙ্গালী জাতির বাঙ্গালীত্ব কেড়ে নিয়ে শংকর জাতি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ভাষার উপর আঘাত করে।এই আঘাতেও কিন্তু অনেক বাঙ্গালী নেতার সায় ছিল। তাঁরাও তাঁদের সাথে সুর মিলিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছে। ১৯৪৮ সাল হতেই ভাষাকে কেন্দ্র করে বাঙালি জাতিকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র শুরু হয়। বাংলার রাজনীতিবিদ, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পী ও বুদ্ধিজীবীরা সেই ষড়ন্ত্রের স্বরূপ যথাসময়ে উদঘাটন এবং উদ্দেশ্য চিহ্নিত করতে সক্ষম হন। তারা তাদের লেখনী, বক্তৃতা, বিবৃতি, কবিতা, গল্প, উপন্যাস, সিনেমা, গান ও নাটকের মাধ্যমে সারা দেশের মানুষকে মাতৃভাষা বাংলা রক্ষার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ করা শুরু করেন। যদিও ভাষা রক্ষা করার দাবির আন্দোলন আপাত: দৃষ্টিতে সাংষ্কৃতিক আন্দোলন হিসেবে চিহ্নিত হয়, কালক্রমেই তা বাঙ্গালী মানষে গভীর রেখাপাত করতে সক্ষম হয়।১৯৫২ সালে ঢাকা ইউনিভারসিটি কেন্দ্রীক আন্দোলন যখন সর্বস্তরের ছাত্রদের আলোড়িত করে ছাত্র গনআন্দোলনের রুপ পরিগ্রহ করে, উক্ত আন্দোলনকে জোর করে দমনের উদ্দেশ্যে পাকিস্তানী শাষকচক্র ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী ১৪৪ধারা জারি করে। সর্বপ্রকার মিছিল মিটিং, সমাবে -শের উপর নিশেদাজ্ঞা আরোপ করে। ১৪৪ধারা ভেঙ্গে মিছিল করার চেষ্টা কালে শাষক চক্রের প্রত্যক্ষ হুকুমে পুলিশ নির্বিচারে গুলী চালায়।তৎক্ষনাৎ লুটিয়ে পড়ে -সালাম, জব্বার, রফিক, সফিক।আন্দোলন আর থামায় কে? ,অচিরেই ছাত্র আন্দোলনের আগুন ঢাকা থেকে সারা দেশের গ্রাম-গঞ্জ এবং শহর-নগরে ছড়িয়ে পড়ে। মিছিলে মিছিলে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে বাংলাদেশ (সাবেক পুর্বপাকিস্তান)। সরকার বিভিন্ন কায়দায় আরবি হরফে বাংলা লেখার চেষ্টা করতে থাকে।এর প্রতিবাদেই ফুঁসে উঠেছিল আন্দোলন। তাঁরা সাধারন বাঙ্গালি মসুল মানদের বুঝানোর চেষ্টা করে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিতে বিজাতীয় সংস্কৃতির আবহ রয়েছে।সুতারাং চলমান ভাষায় কথা বলা মসুলমানদের বড় রকমের গুনাহ হবে। হিন্দুয়া -নীর গন্ধভরা ভাষা আখ্যায়িত করে ধর্মপ্রাণ সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালানো হয়। মজলুম জননেতা মৌলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, শেরেবাংলা এ, কে, ফজলুল হক, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, কমরেড মনি সিংহ, ইত্তেফাক সম্পাদক বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবি তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া সহ আরো অনেক নেতাদের সঠিক ভূমিকাও দূরদর্শী নেতৃত্বের জন্য সেই অপচেষ্টা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যায়। বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়। জনমনে ঘোমট ক্ষোভ প্রশমন করা যায়নি,যদিও তাঁদের পরিকল্পনা বাতিল করে। বাঙ্গালী নেতারা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন পশ্চিম পাকিস্তা - নীদের সাথে পুর্ব পাকিস্তানের মিলন হবেনা। নীজেদেরকে নিয়ে নীজেরাই ভাবতে হবে। ভাষা রক্ষা করার দাবীতে সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবি, শিল্পি, অভিনেতা অভিনেত্রী ইত্যাদি শ্রেনী পেশার মানুষের মধ্যে যে চেতনাবোধ এবং সুদৃড ঐক্য গড়ে উঠেছিল সে চেতনা বোধ ও বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের সুপ্ত বাসনা ক্রমান্বয়ে পরবর্তি বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম,নির্বাচনে "কুইনীনের" মতই কায্যকরি ভুমিকা পালন করতে থাকে। মানুষকে আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করার কাজে শিল্পী-সাহিত্যিকদের অবদান ছিল অনেকটা ঘটকের মতো। শিল্পি সাহিত্যিকদের "ইস্পাত কঠিন" একতাবদ্ধতার কারনে পুর্ব পাকিস্তানের সকল রাজনৈতিক দলকে "জোটবদ্ধ "করতে প্রভুত সাহায্য করে।গঠিত হয় হক-ভাসানীর নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট।এর আগে কখনই জোট বদ্ধ আন্দোলন ও নির্বাচনের রাজনীতি দেখা যায়নি। ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক শক্তির প্রত্যক্ষ প্রভাব আমরা দেখতে পাই ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনে। ১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলনে। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে। তখন ভাষার দাবীতে যে আন্দো -লন গড়ে উঠেছিল,  বাঙ্গালীর ঘরে জম্ম নিয়ে,মাছে ভাতে বাঙ্গালী হয়েও একশ্রেনীর ধর্মাগ্ধ মানুষ অধার্মীক পাকিস্তানের দালালদের যোগসাজসে বিরুধীতার ভুমিকায় অবতিন্ন হয়েছিল।তাঁর ধারাবা -হিকতা দেখা যায় ৫৪সালের যুক্তফ্রন্ট সরকারের বিরুধীতায়। ৬৬ ইং সালের বঙ্গবন্ধুর ৬দফার বিরুদ্ধে অপ্প্রচার, প্রপাগান্ডায়।   ছয় দফা  দাবী মানা হলে  পুর্ব পাকিস্তানের সব মসুলমান হিন্দুই হয়ে যাবে।দেশ ভারত হয়ে যাবে।৬৯ ইং সালের গন অভ্যু -ত্থানকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টার মধ্যেও দেখা যায় অশুভ শক্তির ছায়া। '৭০ সালের সাধারন নির্বাচনে চক্রটির মুল নির্বাচনী প্রচারই ছিল,নৌকায় ভোট দিলে ইসলাম থাকবেনা। পুর্বপাকিস্তান  ইন্ডিয়া হয়ে যাবে। মসজিদ থাকবেনা,সব মসজিদ মন্দির হয়ে যাবে।'৭০ এর সাধারন নির্বাচনে ইসলাম ধর্মকে উলঙ্গ ব্যবহার করে নৌকার বিজয়কে থামানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে নুরুল আমীন গংদের প্রচার প্রচারনায় জনগন কান না দিয়ে বিপুল সংখ্যা গরীষ্ট ভোট ও আসন জনগন  আওয়ামী লীগকে দেয়। একই ধারাবাহিকতায় তাঁদের প্রেতাত্বাদের আস্ফালন দেখা গেছে নির্মম নিষ্ঠুর ভাবে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে। পাকিস্তনী সেনাদেরকে প্রত্যক্ষ অস্ত্রহাতে চক্রটি সহযোগিতা করে।বিভিন্ন বাহিনীর জম্ম দিয়ে মুক্তি যোদ্ধা,বাংলার বুদ্ধিজীবি -দের হত্যার মধ্যে। বাঙ্গালী মা বোনদের ধরে নিয়ে খাঁন সেনাদের মনোরঞ্জনে তুলে দেয়ার মধ্যে।প্রকাশ্য ইসলাম ধর্মকে ব্যবহার করে ফতোয়া জারী করতেও চক্রটি দ্বিধা করেনি। ফতোয়া জারী করে বলেছিল, বাঙ্গালী মা বোনদের ইজ্জত লুটে নেয়া নাকি জায়েজ হবে"। মুক্তি যুদ্ধে পরাজিত হয়ে চক্রটি কিছু সময়ের জন্য গর্তে লুকিয়ে ছিল।গর্তে লুকালে কি হবে ষড়যন্ত্র ঠিকই অব্যাহত রেখেছিল।সেই ষড়যন্ত্রের নির্মম আঘাত বাঙ্গালীর অস্তিত্বে বসিয়ে দেয় ১৯৭৫ ইং সালের ১৫ই আগষ্ট নিকষ কাল রাতে।বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের উম্মেশকারী, স্বাধীন বাংলাদেশের স্বনদ্রষ্টা,জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানকে স্ব-পরিবারে হত্যার মধ্যদিয়ে। পিরিয়ে নেয় বাঙ্গালীর নিজস্ব জাতীয়তা বোধের বাঙলাদেশকে উপনিবেশিকদের পুরাতন ধারায়। নাম রাখে, বঙ্গবন্ধুর দেয়া স্বপ্নের বাংলাদেশ ভিত্তিক" বাংলা দেশী জাতীয়তা বাদ".। কি চরম ধোঁকা,মাত্র সাড়ে তিন বছর আগে যে দেশটি জম্ম নিল সেই দেশের কৃষ্টি,সংষ্কৃতি,আচার আচরন কবে নিল জম্ম? তাও বাঙ্গালীকে গেলানো হল অভিনব কায়দায়। চক্রটি আবার চরম ভাবে পরাজিত হয় ২০০৮ইং সালের নির্বাচনে।বাঙ্গালীর মেধা,মনন, মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদান কারি সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং তাঁর নেত্রী জাতির জনকের জৈষ্ঠকন্যা শেখ হাসিনার নিকট।পরাজিত হলে কি হবে,ষড়যন্ত্র থেমে নেই। সরকারের মদদ পেয়ে চক্রটি ইতিমধ্যেই ব্যাপক শক্তি সঞ্চয় করতে সক্ষম হয়েছে।২০১৪-১৫ সালে সাধারন নির্বাচনকে সামনে রেখে চক্রটি করুন নির্মম,নগ্নভাবে ঝাপিয়ে পড়ে বাঙ্গালীদের উপর। নষ্ট করতে থাকে বেসুমার রাষ্ট্রীয় সম্পদ।পুড়ে মারে জ্যান্ত মানুষ। পেট্রোল বোমার আঘাতে ক্ষত বিক্ষত করে দেয় সাধারন মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ।সারা গায়ে আগুনের ঝলসে যাওয়া ডগডগে ক্ষত নিয়ে পঙ্গুত্ব বরন করে শত শত মানুষ।আগুনে পুড়িয়ে দিতে দ্বিধাবোধ করেনি আমাদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ "কোরান শরীফ"পয্যন্ত। বর্তমান সরকারের দৃডতা, অকোতোভয় মনোভাব, দেশ প্রেমের অফুরন্ত বৈশিষ্টের কারনে পরাজিত হয়েছে ঠিকই তবে ষড়যন্ত্র অব্যাহত গতিতে চলছে। সুযোগ পেলেই কাপুরুষের মত পিছন দিক থেকে একের পর এক আঘাত করছে,লেখক, সাহিত্যিক, রাজনীতিক, ব্লগার, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান,ধর্মীয় সমাবেশে। তাঁরই সর্বশেষ আঘাত লক্ষ করা যায় ব্রাম্মন- বাড়িয়া। ভাড়া নিয়ে তর্কের এক পয্যায় ওরা হামলে পড়ে আমাদের সংষ্কৃতি, কৃষ্টির  উৎসস্থল গুলীতে। ভেজ্ঞে ফেলে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কায্যালয় সহ অন্যন্ন স্থাপনা।   ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাম্প্রদায়িক শক্তির সহিংস হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করে সারা দেশের নাট্য কর্মীদের অভিভাবক সংগঠন বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন এবং বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। উভয় সংগঠনের পক্ষ থেকে সহিংসতা সৃষ্টিকারী সাম্প্রদায়িক ও ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর বিচার ও তাদের প্রতিরোধের আহ্বান জানানো হয়। সমাবেশে উপস্থিত বক্তাদের মতে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে উপলক্ষ করে এই তাণ্ডব চালানো হয়েছে। সাম্প্রদায়িক অপশক্তির আক্রমণের মধ্য দিয়ে ব্রাহ্মন- বাড়িয়ায় রাজনৈতিক ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। ভোটের রাজনীতির কারনে রাজনৈতিক দলগুলো এই সহিংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে পারেনি। বৃহৎ সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মাধ্যমে এই ব্যর্থতা ঘোচাতে হবে। সহিংসতা ঘটানো অপশক্তির সঙ্গে সম্পৃক্তরা জানে না যে, সংস্কৃতির বিনাশ নেই। এটি সহজাত প্রক্রিয়ায় চলে। কোনো -ভাবেই এর গতি রুদ্ধ করা যায় না। মৌলবাদী শক্তির এমন ঝটিকা আক্রমণ অনেক দিন ধরেই চলছে। আর সব সময় তাদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে বিজ্ঞান মনস্ক ও প্রগতিশীল মানুষ এবং সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান। এই অপশক্তির মোকাবেলায় কেবল মাত্র মাদ্রাসা শিক্ষা যুগপোযুগী করলেই হবেনা। যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। সর্ব শক্তি দিয়ে তাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।যে কোন মুল্যে তাঁদের বিনাশ করতে হবে।সকল অশুভ শক্তির উৎসস্থল জ্বালিয়ে পুড়িয়ে চারখার করে দিয়ে আগামী প্রজম্মের জন্য নতুন বাংলাদেশ, প্রগতিশীল বাংলাদেশ, অসাম্প্র দায়ীক বাংলাদেশ,জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।    আমি মনে করি,সাধারন চিন্তাচেতনার একজন সচেতন নাগরীকের উপলব্দি করায় কোন অসুবিধা হওয়ার কথা নয় যে, ব্রাম্মনবাড়ীয়ার সহিংস ঘটনার পরপরই চক্রটির ত্রান কর্তার ভুমিকায় '৭৫সাল থেকে অবতির্ন্ন বিএনপি জামায়াত জোট ও তাঁদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে প্রকাশ্য অবস্থান গ্রহন করে প্রতিষ্ঠিত সত্যকে অস্বীকার করে জনমনে বিভ্রান্তি চড়ানোর নয়া কৌশলের দিকে তাকালেই। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বিতর্ক উত্থাপন করে একের পর এক  চ্যালেঞ্জ চুঁড়ে জাতিকে সহিংস করে তোলার অপপ্রয়াস এবং মুক্তিযুদ্ধাদের ধৈয্যচ্যুতি ঘটিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ স্বীকার করার অপচেষ্টা ছাড়া আর কি হতে পারে?৭৫ ইং থেকে ২০০৬ইং মাঝ খানে ১৯৯৬-২০০১ ইং বাদ দিলে তাঁরাই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থ ব্যয় করে শহিদ দিবস সহ অন্যান্ন জাতীয় দিবস পালন করেছে। তখন মনে ছিলনা, মুক্তিযুদ্ধে ত্রীশ লক্ষ মানুষ শহীদ হয়নি। এখন তাঁদের মনে হচ্ছে পরম বন্ধুরা যখন একের পর এক ফাঁসীর রজ্জুতে ঝুলছে।তাঁদের বাছাবার সকল চেষ্টা ব্যার্থ হওয়ার পর নতুন আঙ্গিকে ষড়যন্ত্রের নকশা বাস্তবায়নের ছকের অংশই হচ্ছে লাগাতার মুক্তিযোদ্ধা,  শহীদ পরিবার,মুক্তিযুদ্ধ ও বাঙ্গালী অস্তিত্বে আঘাতের মর্ম। প্রাচীন যুগ থেকে এই দেশের সাহিত্যপ্রীতি প্রবণতা ও সঙ্গীতের প্রাধান্য দেখা যায়। লোকনৃত্যে, সাহিত্যে ও শিল্পে একটি আধ্যা -ত্মিকতার ছাপ দৃশ্যমান। বাংলার ভাটিয়ালি, বাউল, মুর্শিদি, মারফতি প্রভৃতি গানের মধ্যে এখানকার জনজীবনের অন্তরের সুরটি ধ্বনিত হয়। কবিগান, যাত্রা, জারি, সারি, পালাগান, কীর্তন ইত্যাদির সঙ্গে এই দেশের মানুষের সম্পর্ক নিবিড়। যত দিন বাঙালি আছে, বাংলা ভাষা আছে, শহীদ মিনার আছে, একুশে ফেব্রুয়ারি আছে, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দ দাসের কবিতা আছে, লালন ফকির, হাসনরাজা ও ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর সঙ্গীত আছে তত দিন জঙ্গিরা যত চেষ্টাই করুক না কেন, সহিংসতা, সন্ত্রাস ও ধর্মান্ধতার মাধ্যমে আবহমান বাংলার এই সংস্কৃতিকে ধ্বংস করতে পারবে না। বাঙালি জাতির অস্তিত্ব রক্ষায় এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এবারের ভাষা আন্দোলনের মাস ফেব্রুয়ারীতে এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার ও সূর্যসম রক্ত শপথ।    "জয় বাংলা     জয় বঙ্গবন্ধু             জয়তু দেশরত্ম  শেখ হাসিনা"         

  সমৃদ্ধ বাঙ্গালী সংষ্কৃতি যতদিন বাঙালী মননে জীবন্ত থাকবে তত দিন কোন অশুভ শক্তি মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবেনা।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার সরকার মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যাতত্ব দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস ঐতিহ্যে বিতর্ক উত্থাপনের অভিযোগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন।মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে বসবাস করে,মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার মত দৃষ্টতা দেখিয়ে নি:সন্দেহে তিনি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। এহেন গর্হিত বক্তব্য প্রদানকারী বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার রাখতে পারেননা।মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত অঙ্গিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কোন দল বা জোটের রাজনীতি করারঅধিকার নীতিগতভাবেই থাকতে পারেনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি সকল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করে সর্বচ্ছ আদালতের রায় অনুযায়ী '৭২এর সংবিধান অবিকল বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবী।বাংলাদেশেরজনগন চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ এগিয়ে যাক,মুক্তিযুদ্ধে সাগরসম রক্ত ঢেলে সেই অঙ্গিকারের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেছিল।স্বাধীন বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বসবাসকরে,পরাধীনতার গান শুনতে দেশ স্বাধীন করেনি বাংলার জনগন। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৩ বছরের বিরামহীন সংগ্রামের ফসল মুক্তিযুদ্ধ।সেইযুদ্ধে উপনিবেশিক পাকিস্তানের আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত সেনাবাহিনীকে নিরস্ত্র বাঙালীরা পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছিল।সেই স্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশেপরাজিত শক্তির দোষর,তাঁদের প্রেতাত্বাদের রাজনীতি করার কোন নৈতিক অধিকার নেই।জাতির জনক তাঁদের রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগন জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলায় রাজাকারের কোন স্থান দিতে চায়না। তাই খালেদা জিয়ার ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টার দৃষ্টান্তমুলক সাজার আশা পোষন করে।কোন রাজনৈতিক সমঝোতার ফাঁদে যেন এই মামলা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়,তাঁর গ্যারান্টিও সরকারের নিকট বাংলাদেশের জনগন চায়। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু Ruhul Amin ------------------------------ খালেদা জিয়াকে সমাবেশের অনুমতি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি আশাহত----04 /01 / 0016 ইং পোষ্ট -==================================প্রখ্যাত দার্শনিক,চিন্তাবিদ সক্রেটিসকে কম বেশি আমরা সবাই জানি।সক্রেটিস কোন যুগে জম্মগ্রহন করে মানব সেবায় ব্রতি হয়ে আজও দেশে দেশে অনুকরনীয় অনুসরনীয় হয়ে আছেন তাও আমরা জানি।নিশ্চয়ই তখনকার সময় থেকে বর্তমানের সমাজ, রাষ্ট্রব্যাবস্থাপনা আরো শত গুন উন্নত,সমৃদ্ধ,সভ্য।সক্রেটিস ছুতোর, কামার ইত্যাদি প্রসঙ্গে এসে প্রশ্ন করতেন, 'তাহলে রাষ্ট্র নামক জাহাজটি বিগড়োলে কাকে দিয়ে সারাইয়ের কাজ করাবো'হাসান আজিজুল হক (সক্রেটিস) পৃ : ১৬ সক্রেটিসের এ বিখ্যাত কথপোকথন কারো অজানা নয়। আদর্শবান ন্যায়নীতিভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করবার জন্য সক্রেটিসকে হেমলক পান করতে দেয়া হয়েছিল(বিষ), তারপরও তিনি আইনের প্রতি অটুট শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন- এটাও ছিল তার নির্ভীক বিদ্রোহ। তাকে বাঁচবার সুযোগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি আইনঅবজ্ঞা করেননি, আইনে যদি তার মৃত্যুদন্ড হয় তবে তিনি অবশ্যই তা মানতে রাজি। এখানেও তার সমস্ত জীবনকর্মের অনেক গভীর দর্শন কাজ করেছে। তার উপর মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল একথা তিনি ও এথেন্সবাসী জানতেন। কিন্তু যে আইনে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলো- তিনি সে আইনকে শ্রদ্ধা জানালেন এ অর্থে মানুষকে আইনের প্রতি অনুগত থাকতে বললেন। সেই আইন কারা তৈরি করছে তা তিনি জানতেন তাতে তো আর আইন নামক বিষয়টিকে জীবন থেকে বিতাড়িত করা যায় না।"পবিত্র কোরানে পাকে ও উল্লেখ করা হয়েছে, বিধর্মী কতৃক শাষিত রাষ্ট্র ও সরকার সমুহের আইন মেনে ধর্ম কর্ম করার।এই রুপ রাষ্ট্র ব্যাবস্থায় শুক্রবারের খতবায় বিশেষ আয়াৎ সংযুক্ত আছে এবং নিয়মিত নামাজের সাথে আর ও কয় রাকাত নামাজ আদায় করার নির্দেশনা দেয়া আছে।পরিতাপের বিষয়টি হচ্ছে,গত কয়েক বছর থেকে লক্ষ করা যাচ্ছে একশ্রেনীর মানুষ রাষ্ট্রীয় আইন রীতি নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সর্ব উচ্চ আদালতের রায়কে ও অমান্য করে হরতাল অবরোধ,প্রকাশ্য আদালতের সমালোচনা করতে।শুধু তাই নয় আন্দোলনের নামেপ্রকাশ্য দিবালোকে যাত্রীভর্তি চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে জীবন্ত মানবকে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিতে।উল্লেখ করা প্রয়োজন যারা এই সমস্ত আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিলেন,এবং প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেন যে আদালতের বিরুদ্ধেও কর্মসূচি দেয়া যায়,বক্তব্য দেয়া যায়,তাঁরা কখনই কোন অপরাধীর বিচার কায্য সম্পাদন করেছেন তদ্রুপ কোন উদাহরন নেই। যেমন আমি প্রথমেই বলতে চাই ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছেন রাতের অন্ধকারে।বঙ্গবন্ধুর অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? পৃথীবিপৃষ্টের সব চাইতে নিরাপদ স্থান জেলখানা।সেখানে রাতের অন্ধকারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করাহল,তাঁরা বন্দি ছিলেন, তারপর ও তাঁদের অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে বুদ্ধিজীবিদের বাসা থেকেতুলে নিয়ে জ্যান্ত মানুষকে হত্যা করা হল, তাঁদের অপরাধ কি বিচার করে মিমাংসা করা যেতনা? খালেদ মোশারফ., কর্নেল তাহেরসহ অসংখ্য মুক্তি যুদ্ধা সেনা অফিসারকে মেজর জিয়ার নির্দেশে নির্মম নির্দয় ভাবে হত্যা করা হল, অনেককে গুলী করার পর প্রান পাখী উড়াল দেয়ার আগেই জ্যান্ত মাটি চাপা দেয়া হল, তাঁদের বিচার কি প্রচলিত সেনা আইনে করা যেতনা? অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধা,আওয়ামী লীগের নেতা,মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারি,ব্লগার,প্রকাশক,লেখক সাহিত্যিক,সাংবাদিক হত্যা করা হল,তাঁদের অপরাধ কি আইনের আওতায় এনে বিচার করা যেতনা?আন্দোলনের নামে ঘোষনা দিয়ে মানুষ হত্যা করা,সম্পদ নষ্ট করা,লুটপাট করা কি মানবতা বিরুধী অপরাধের আওতায় পড়েনা?মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ হত্যা লুটপাট,অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার হতে পারে,যুদ্ধাবস্থা ব্যাতিরেকে ঘোষনা দিয়ে তদ্রুপ কর্মে জড়িতদের এবং হুকুমদাতার বিচার কেন হবেনা? নগদ অপরাধের ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার করা কি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব নয়? নাগরীকদের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া কি রাষ্ট্রের কর্তব্যের মধ্যে পড়েনা? যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন তাঁরা কি বিচার পাওয়ার সাংবিধানীক অধিকারের মধ্যে পড়েনা?সেই যুগের সক্রেটিস যদি নীজের উপর আনীত মিথ্যা অভিযোগ জেনে শুনে মেনে নিতে পারেন,সভ্যতার চরম শীখরে দাঁড়িয়ে যারা এই যুগে আইনকে, রাষ্ট্রীয় রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রকাশ্য আন্দোলনের নামে মানুষ খুন করেছেন,সম্পদের হানী ঘটিয়েছেন তাঁরা কি সক্রেটিস যুগের আগের অধিবাসি মনে করেন নীজেদের? তাঁরা নীজেরা নিজেদের মনে করুন কিন্তু মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে কোন যুগে ফিরিয়ে নিতে চান?তাঁদের যদি এতই অসহ্য লাগে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিশেষ কিছু আদর্শের প্রতিপালনের অঙ্গিকারের ভিত্তিতে ৩০লক্ষ শহিদের আত্মদান,পৌনে চারলাখ মাবোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস- তবে জনগনকে সংঘটিত করে আর একটি গনবিপ্লব ঘটিয়ে তাঁদের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে স্বাধীনতার পক্ষের কোন মানুষ বাধাতো দিচ্ছেনা। যাদের নেতৃত্বে, যাদের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন করা হল, তাঁরাতো ক্ষমতায় আছে,তাঁদের কেন জোর পুর্বক,ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে খমতা থেকে নামাতে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে,আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে জনজীবন দুর্বিসহ করে তোলার চক্রান্ত করতে দেয়া হবে।এই সেই দিন মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা নিয়ে যিনি বিতর্ক উত্থাপনের বৃথা চেষ্টা করে জনরোষের আওতার মধ্যে এখনও রয়েছেন,তাঁর সৌখিন বাসভবন পাহারায় আপনার সরকার অতিরীক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে বাধ্য হয়েছে,তিনি কি ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে সমাবেশ করার প্রসাশনিক অনুমতি পায়। বর্তমান গনতান্ত্রিক বিশ্বের একটি দেশের উদাহরন কি কেউ দিতে পারবেন,স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা সেই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে?একটি দেশকি কেউ দেখাতে পারবে যে,সেই দেশের কোনমীমাংসিত এবং প্রতিষ্ঠিত কোন সত্যকে ৩০/৪০ বছর পর আবার জনসমক্ষে উত্থাপন করে লক্ষ লক্ষ শহিদ পরিবারের অন্তরের আগুনে"ঘি "ঢেলে দেয়ার চেষ্টা, কোন প্রতিষ্ঠিত দল বা তাঁর নেতা করেছেন? কেন এই পয্যন্ত সরকার তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা না করে উলটো সমাবেশ করে তাঁর মতবাদ প্রচারের অনুমতি দেয়া হল??তাঁরা নীজেদের এত ক্ষমতাবান মনে করেন কিভাবে? তাঁরা কি করে আবার জাতির নিকট ক্ষমা চাওয়া ছাড়াই প্রকাশ্য সভা সমাবেশ করার অধিকার পায়?কেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সংসদে ঘোষনা দিয়েও এখন পয্যন্ত আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন করছেন না? মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আপনার আশ্বাস বাংলার মানুষ অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করে।সুতারাং জনগনকে দেয়া প্রতিশ্রুতি আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন কল্পে তড়িৎ ব্যাবস্থা গ্রহনকরবেন, জনগনের এই আস্থা বিশ্বাস এখন ও অটুট রয়েছে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,শাপলা চত্বরের সেই দিনের ষড় যন্ত্র মোতাবেক যদি খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার মানুষ রাজপথে নেমে আসতেন,পরিকল্পনাঅনুযায়ী সেনা বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়েআপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারতো,আপনাকে কি জীবিত বাঁচতে দেয়া হত? আপনার পরিবারের কাওন সদস্যকে বাঁচতে দিত?আওয়ামী লীগের থানা উপজেলা পয্যায়ের কোন নেতা কি বাঁচতে দিত? তাঁরা কি সে দিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ধর্ম বিদ্বেষী সরকার উৎখাত করে ধর্মধারি সরকার কায়েমের রাজনৈতিক শ্লোগানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নামক মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ধারক বাহক জননন্দিত এইসংগঠনটিকেও জ্যান্ত কবর দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত ছিল না?আমি আজ আরও একটি বিষয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,সম্পুর্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন চরমপন্থী নেতার অবিকল নকল করা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার--,গনতান্ত্রিকদেশে,গনতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে, গনতান্ত্রীক সংগঠনের,গনতন্ত্রের পুজারি মনে করা কোন নেতা, রাজপথে আন্দোলন না করে, সীমাবদ্ধ কক্ষে ৪১দিন অবস্থান করে, ৪২ জন মানুষকে পুড়িয়ে মেরে,পরবর্তিতে বিচারের সম্মুখ্যিন না হয়ে নিয়মাতান্ত্রীক আন্দোলনের সুযোগ কোন দেশের, কোন নেতা বা কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, এমন উদাহরন কি কেউ দিতে পারবে?? ষড় যন্ত্রের জাল কোথায় বিস্তৃত ছিল তাঁর প্রমান সেই নেত্রী নীজেই তাঁর উষ্মায় প্রকাশ করে দম্ভস্বরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে সুশৃংখল বাহিনীকে তাচ্ছিল্য করে বলে ছিল"সেনাবাহিনী বেঈমান"!!!এর পরও আপনার সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আনায়ন না করে প্রকাশ্য সভার অনুমতি দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার গুলির মনে আগাত দেয়া হয়েছে আমি মনে করি। গত পৌর নির্বাচনে রায় দিয়েছে তাঁর বিচার করার,তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অর্থই হচ্ছে জনগনের ক্ষোভ তাঁর উপর থেকে এখনও কমেনি,বরঞ্চ কয়েক গুন বেড়ে জনরোষের পয্যায় পৌছে গেছে।আপনার সরকারের তাঁকে দেয়া বাড়তিনিরাপত্তাই তা প্রমান করে।সুতারাং দেশ ও জাতি এই রাজনৈতিক লাশের ভার বইবার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা।দেশের এবং জাতির প্রয়োজন বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মত শিক্ষিত, বিজ্ঞান মনস্ক,প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত সমৃদ্ধ জাতি গঠনে জ্ঞানসমৃদ্ধ, আধুনিক সভ্য দুনিয়ার নেতৃত্ব গ্রহন করার মত গুনাবলি সমৃদ্ধ নেতার। কোন অবস্থায় সক্রেটিসের আগের যুগে জাতি ফেরৎ যেতে চায়না।পরিশেষে বলতে চাই,আর কোন সংগাত নয়,এবার চাই সমৃদ্ধি।আর নয় জঙ্গিপনা,এবার চাই ধর্মনিরপেক্ষতা।আর নয় সাম্প্রদায়ীকতা,এবার চাই অসম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা।আর নয় পাকি ভাবধারা প্রতিষ্ঠা,এবার চাই মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের সফল বাস্তবায়ন। জয় আমাদের হবেই হবে, অশুভ অপশক্তির পরাজয় অবশ্যাম্ভাবি। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা