তিস্তা নিয়ে আর তিক্ততা নয়--বন্ধু পুরাতন ভাল,খেলনা নতুন।
(রুহুল আমিন মজুমদার)

       বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগামী ৮এপ্রিল ভারত সফরের সকল আয়োজন সম্পন্ন। উক্ত সফরকে উপলক্ষ করে দুই দেশের কূটনৈতিক পাঁড়ায় চাঞ্চল্যতা দেখা দিয়েছে।বিশেষ করে মৌদি সরকারের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার সফর সফল করার লক্ষে বেশ কিছু নতুন নতুন পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হচ্ছে। যাহা ইতিপূর্বে ভারতের কোন সসরকার অন্য কোন দেশের সসরকার প্রধানের সফর উপলক্ষে আদৌ করা হয়নি।
     যেমন:-ভারতের প্রধান মন্ত্রীর বাসভবনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে  রাত্রী যাপনের অনুরুধ (২) বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রীর সম্মানে দেয়া নৈশভোজে ৫রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রন(৩)সফরের পূর্বে প্রতিশ্রুত ২০০বিলিয়ন ডলার ঋনের টাকা তড়িগড়ি ছাড়(৪) প্রতিশ্রুত তিস্তা চুক্তি আগামী মে মাসের ২৫ তারিখে স্বাক্ষরের আগাম প্রতিশ্রুতি (৫) রেল পথে জ্বালানী সরবরাহে  বিগ্নতা ও ব্যায়বহুল বিবেচনায় পাইপ লাইনে সসরবরাহের নিশ্চয়তা প্রদান(যদিও ভারতের অর্ধেক জনসংখ্যার জ্বালানী চাহিদা পূরন ভারত করতে পারেনি) সহ নানা আগাম কর্মসূচি বাস্তবায়ন  করে করে চলেছে।
    ইতিপূর্বে ভারতের প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছিলেন- তিস্তা সহ অভিন্ন নদীর পানি সম্পর্কে উদ্ভূত জটিলতা নিরসন পুর্বক শিগ্রই বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তার পানি বন্টন চুক্তি স্বাক্ষর হবে এবং অন্যান্ন নদীর পানি বন্টন বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।শেখ হাসিনার ভারত সফর দুই দফায় স্থগিত হয়ে তৃতীয় দফায় ঘোষিত হওয়ার পর মমতার একটি বিবৃতি তৃতীয় দফায় শেখ হাসিনার ভারত সফর অনুষ্ঠানের উপর নেতিবাচক প্রভাব পরিলক্ষিত হয়।মমতা ঐ বিবৃতিতে বলেছিলেন পশ্চিম্বঙ্গের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে তিস্তা চুক্তি নয়।
    বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সরাসরি মমতার বিবৃতির প্রতিক্রিয়া না জানালেও চট্রগ্রামে নৌবাহিনীর জন্যে সংগৃহিত দুটি সাবমেরিন কমিশনিং করার অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় বলেন--বাংলাদেশ কাউকে আক্রমন করার জন্যে নয়,বরঞ্চ আক্রান্ত হলে সমূচিত জবাব দেয়ার সামর্থ্য অর্জনে যা যা করার প্রয়োজন সব কিছু সামরিক বাহিনীতে  করবে। বিশ্বমানের সামরিক শক্তি অর্জনের লক্ষে তাঁর সরকার কাজ করে যাচ্ছে। সংসদে দাঁড়িয়ে সাংসদের এক প্রশ্ন উত্তরে তিনি বলেন--আমেরিকার টাকায় বাংলাদেশ চলে না বরঞ্চ আমাদের টেক্সের টাকায় আমেরিকানদের চলতে হয়। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী উক্তরুপ হুমকি কাকে কি উদ্দেশ্যে দিলেন অন্য ককেউ না বুঝলেও বোদ্ধামহলের বুঝতে অসুবিধা হয়নি।
    জাতির জনকের কন্যা ভারত সফর সম্পর্কে ইতিবাচক বা নেতিবাচক কোন প্রকার মন্তব্য থেকে বিরত থাকলেও ভারতের "র" এবং আমেরিকার সি,আই এ এর বিরুদ্ধে এক গুরুতর অভিযোগ উত্থাপন করে বলেন-- ২০০১ ইং সালে ভারত এবং আমেরিকার গোয়েন্দা বাহিনীর ষড়যন্ত্রে বাংলাদেশের ক্ষমতার রদবদল হয়েছিল। চারদলীয় জোট ক্ষমতায় গেলে ভারতকে গ্যাস দেয়ার গোপন চুক্তির ফলশ্রুতিতে উক্ত ষড়যন্ত্র অনুষ্ঠিত হয়েছিল। প্রধান মন্ত্রীর গুরুতর উক্ত অভিযোগ উত্থাপনের পর বিএনপি দলের তৃতীয় শ্রেনীর নেতাদের মুখে ক্ষীন প্রতিবাদ দেখা গেলেও শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের পক্ষ থেকে তেমন কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এবং কি ভারত এবং আমেরিকার রাষ্ট্রদূতের পক্ষ থেকেও কোন প্রতিবাদ দেখা যায়নি।
    এর আগে শেখ হাসিনা বার কয়েক বলেছেন, আমি জাতির পিতার কন্যা, দেশের স্বার্থ্য বিগ্নিত হয় এমন কোন কাজ, চুক্তি, সমঝোতা আমি করতে পারিনা। উক্ত বিবৃতির সত্যতার স্বাক্ষরও তিনি রেখেছেন ভারত থেকে নিম্ন মানের যুদ্ধাস্ত্র ক্রয় নিষিদ্ধ করে তাঁর সরকার চীন থেকে আধুনিক সাবমেরিন সহ অত্যাধুনিক  যুদ্ধাস্ত্র সংগ্রহে মনযোগী হয়ে।বাংলাদেশের জলসীমায় সাবমেরিন পৌছামাত্র ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ঢাকায় ছুটে আসেন সামরিক সহযোগীতার অঙ্গিকার নিয়ে।বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন পয্যায় আলোচনাও করেছেন তিনি।তাঁর সফর সার্থক যে হয়নি তা বুঝা যায় পরবর্তিতে বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের অভ্যন্তরে  চাপা ক্ষোভ বহি:প্রকাশের ফলশ্রুতিতে।
    আগেই বলেছি আসন্ন সফরে তিস্তা চুক্তি সম্পাদন বিষয়ে ভারতের প্রধান মন্ত্রী মৌদি বাংলাদেশ সফরকালিন সময়ে মমতার উপস্থীতিতে  প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।যে কোন উপায়ে তাঁর প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন করার লক্ষে তাঁর সরকারের চেষ্টার কমতি আছে বলে মনে হয়না।  তাঁর সরকারের চেষ্টায় নতুন ভাবে সংযোজিত হল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া রাষ্ট্রী নৈশভোজে মমতা সহ তিস্তা সম্পর্কিত আরো ৫রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রনের মধ্য দিয়ে।ভারত সরকারের ইতিহাসে এই প্রথম কোন রাষ্ট্রীয় অতিথির সম্মানে ভোজসভায় ৫জনের অধিক মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রন জানানো এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রীর জন্যে রাষ্ট্রীয় বরাদ্ধকৃত: বাসভবনে  অন্যকোন দেশের রাষ্ট্র প্রধানকে  রাত্রী যাপনের অনুরুধ জানানো।
    ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নৈশভোজের আমন্ত্রন গ্রহন বর্জনের উপর বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রীর ভারত সফর অনেকাংশে নির্ভরশীল বলা যায়।অবশ্য মমতার পক্ষ থেকে নৈশভোজের আমন্ত্রন সম্পর্কিত বিষয় এখনও কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
    এর আগে অবশ্য মমতা পশ্চিমবঙ্গের বেসরকারি টেলিভিসনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ঘোষনা দিয়ে উভয় সরকারের শীর্ষপয্যায়কে আশ্বস্ত করেছিলেন আগামী মে মাসের ২৫ তারিখে ঢাকায় তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরীত হবে।উক্ত ঘোষনার কোন প্রকার প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে না পাওয়ায় তিস্তা সংশ্লিষ্ট ৫রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে আমন্ত্রন  জানানো মৌদি সরকারের সর্বশেষ ইতিবাচক আন্তরিকতার বহি:প্রকাশ, এতে কোন সন্দেহের অবকাশ আছে বলে মনে করিনা।
    উল্লেখিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীগন নৈশভোজে যোগ দিয়ে চুক্তি স্বাক্ষরের পক্ষে বিরাজমান বাঁধা সমূহ দূর করতে আগ্রহি হবেন বলে ভারতের কেন্দ্রিয় সরকার  আশাবাদি। মমতাসহ অন্যান্ন মুখ্যমন্ত্রীগন তিস্তাচুক্তিতে একমত না হলেও বিকল্প পথে উক্ত চুক্তি সাক্ষরিত হবে তাঁর ইঙ্গিত এর আগেই দিয়ে রেখেছেন মৌদি দরকারের পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতার মাধ্যমে। মমতা নিজেই ঘোষনা দিয়ে বলেছেন ২৫ মে ঢাকায় তিস্তা চুক্তি সাক্ষরীত হবে।
    বাংলাদেশ মনে করে--কেন্দ্রীয় সরকারের  চুক্তির বিষয়ে রাজ্যের মতামত নিতে হবে, এমন কোন আইনগত বাধানিষেদ নেই।বরঞ্চ রাজ্য কোন বিদেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তিতে আবদ্ধ হতে গেলে কেন্দ্রিয় সরকারের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। রাজ্যের বাধার প্রসঙ্গ উত্থাপন করে প্রকারান্তরে ভারত সরকার  তিস্তাচুক্তি বিষয়ে কালক্ষেপন করার পথ অনুসরন করছে।সুতারাং তিস্তা বিষয়ে পরিস্কার ধারনা ব্যাতিরেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভারত সফর কোনপ্রকার ফলপ্রসূ ফলাফল বয়ে আনবেনা ।
    অপরপক্ষে মৌদি সরকার এমন একটি মহৎ চুক্তিতে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের কাউকে বৈরি করতে চাননা। চুক্তি স্বাক্ষর হলেও বৈরি ভাবাপন্ন রাজ্যের কারনে চুক্তিকায্যকরে ভালফল বয়ে আনবেনা বলে মনে করে। আর তাই সংশ্লিষ্ট সকল রাজ্যকে তিস্তা চুক্তি বিষয়ে একমতে নিয়ে আসার ইতিবাচক একের পর এক উদ্যোগ গ্রহন করে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।
       বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সরকার বিরোধী দল সমূহ এবং জাতীয় পত্রিকা সমুহ 'মমতার' টেলিভিশন ঘোষনার পর হিমশীতল বরফাকার ধারন করেছে। বিরুধী দলের এইরুপ চুপসে যাওয়াকে  বাংলাদেশ সরকার ভালভাবে নেয়নি। দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দেশের রাজনৈতিক দল, শুসিল সমাজ, সর্বোপরি  নাগরিক গনের ঐক্যবদ্ধ ভুমিকার প্রয়োজন আছে বলে সরকার মনে করে। এইরুপ নিস্তব্দতায় বাংলাদেশ সরকারের দৃডতায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে অভিজ্ঞমহলও মনে করেন।
     সামরিক চুক্তি বিষয়ের ন্যায় সেনসেটিব অথছ  অনুল্লেখিত একটি বিষয়ে আলোচনা,  সমালোচনা ভারতকে এ বিষয়ে আগ্রহি করার চক্রান্ত বলে অনেকে মনে করে। বাংলাদেশের তিনদিকে শক্তিধর দেশ ভারত পরিবেষ্টিত একদিকে বঙ্গোবসাগর। বাংলাদেশের সামরিক চুক্তির প্রয়োজন দেখা দিলে অন্যকোন তৃতীয় দেশের সঙ্গেই সেই চুক্তি স্বাক্ষরীত হবে।বাংলাদেশের সঙ্গে সামরিক চুক্তি ভারতের প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা। বাংলাদেশেরই প্রয়োজন---তবে বাংলাদেশ তাঁর উন্নয়ন অগ্রগতি নিরবচ্ছিন্ন রাখার স্বার্থে ভারতের সঙ্গে অনা-আক্রমন চুক্তি করতে পারে নিজেদের স্বার্থে।
       তিস্তা নিয়ে তিক্ততা না বাড়িয়ে ভারতের প্রতিবেশি দুই শক্তিধর চীন এবং পাকিস্তানকে সুযোগ না দেয়ার ভারতীয় পক্ষের তৎপরতাকে অ-শুভশক্তির প্রেতাত্বা কতৃক "সামরিক গোপন চুক্তি"র গুজব ছড়িয়ে বন্ধুসুলভ দুই প্রতিবেশি দেশের মধ্যে অন্য আর এক তিক্ততা সৃষ্টির অপপ্রায়াস চালিয়ে যাচ্ছে।এহেন ষড়যন্ত্র দেশ ও জাতির জন্যে মহাবিপদ ঢেকে আনতে পারে। ভারতের সঙ্গে অমিমাংসীত বিষয়ে মিমাংসা সংক্রান্ত আলোচনা না করে অনুল্লেখিত বিষয়ে বিতর্ক উপস্থাপন অনভিপ্রেত। আশাকরি অপপ্রচার থেকে সকল পক্ষ ইতিবাচক আলোচনায় ফিরে আসবে।
    বাংলাদেশ সরকারের মনোভাব পরিবর্তনে ভারত সরকার একাধিক বিকল্প প্রস্তাবের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ৫রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে নৈশভোজে আমন্ত্রন সর্বশেষ ইতিবাচক পদক্ষেপ। উক্ত প্রস্তাব তখনই বাংলাদেশের নিকট গ্রহনযোগ্য হবে যখন মমতা ঘোষনা দিয়ে বলবেন তিনি নৈশভোজে যোগদান করবেন এবং তিস্তাচুক্তি স্বাক্ষরে বিরাজমান বাঁধা সমূহ অপসারনে তাঁর রাজ্য ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহন করবে।তখন কেবলমাত্র বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার ৮এপ্রিল ভারত সফর  যথার্থ ফলাফল নিয়ে আসতে পারে।
ruhulaminmujumder27@gmail.com
"জয়বাংলা        জয়বঙ্গবন্ধু"

    

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন