দুর্নীতির বিরুদ্ধে সর্বাত্বক চলমান অভিযান---প্রান্তজনের অভিমত।
(রুহুল আমিন মজুমদার)
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সবুজ সংকেত পেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ১৫টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি প্রতিরোধ ও দমনে ১৪টি প্রাতিষ্ঠানিক দল গঠন করে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)সাঁড়াষি অভিযান শুরু করেছে। সংস্থার আট পরিচালক দলগুলোর নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
দুদকের বিশেষ অনুসন্ধান বিভাগের মহাপরিচালকের তত্ত্বাবধানে এসব দল গঠন করা হয়েছে। সংস্থার মহাপরিচালক মুনির চৌধুরী নিজেও এসব দলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। গঠিত তিন সদস্যের ওই সব দলে একজন করে উপ-পরিচালক ও সহকারী পরিচালক আছেন। তাঁদের অভিযান ইতিমধ্যে দৃশ্যমান হওয়া শুরু হয়েছে বলা যায়। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নামকরা উপাচায্যকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে দুদক। অন্যদিকে সরকারি দলের দাপুটে এক সংসদ সদস্যের কারখানাকে বিপুল পরিমান টাকা জরিমানা করে তাঁদের কাজের সক্ষমতা জনগনের নিকট দৃশ্যমান করার চেষ্টা অনেকটা সফল হয়েছে বলে মনে করি।
তিতাস গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ, শিক্ষামন্ত্রনালয় সহ সরকারের রাষ্ট্রীয় সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে দুদকের গঠিত স্ব-স্ব টিম লিডারের নেতৃত্বে যাতায়ত, তথ্য অনুসন্ধান, খোঁজখবর নেয়া নিয়মিত দাপ্তরিক কাজের অংশে পরিণত করেছেন বলেই আপাত:দৃষ্টে মনে হচ্ছে।বেসরকারি পয্যায়েও বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়ে সফলতা দেখাতে পেরেছেন। দেশব্যাপি শিল্প কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত হানা দিয়ে জেল জরিমানা করার উল্লেখযোগ্য ডজনদু'য়েক সাফল্যজনক উদাহরন সৃষ্টি করতে পেরেছেন। দুদকের বর্তমান অভিযানকে আপামর জনগনের সাধুবাদ দেয়ার সময় এখনও আসেনি।সমাজের সর্বস্তরে দুর্নীতির ছায়ায় বসে তাঁরাও কতটুকু অগ্রসর হতে পারেন জনগনের দেখার বিষয় আছে বলে মনে করি।
দুদকের বর্তমান পদক্ষেপ কোন অ-শুভ শক্তির চোখ রাঙানীতে যেন থেমে না যায়--সেই দিকে লক্ষ রাখার নিমিত্তে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে এক বা একাধিক পয্যবেক্ষন টিম করে দেয়ার প্রয়োজনীয়তা ধীরে ধীরে জনআখাংক্ষায় পরিণত হচ্ছে। বিষয়টির প্রতি সদাশয় সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন ও সুনজর জনগন আশা করে।
এই প্রসংঙ্গে উল্লেখযোগ্য দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আলোচনা করা দায়িত্ব ও কর্তব্য মনে করি। এই পয্যায়ে প্রথমেই চোখে পড়ে তিতাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানীর প্রতি। আমর জানামামতে উক্ত কোম্পেনীর রাত্রীকালিন পাহাদার থেকে শুরু করে ব্যাবস্থাপনা পর্ষদ পয্যন্ত সর্বত্র দুর্নীতির কালোছায়ায় আচ্ছাদিত। মিটার রিডারের ন্যায় তৃতীয় চতুর্থ শ্রেনীর একাধিক কর্মচারীর দেশেবিদেশে একাধিক বাড়ী ও গাড়ীর খবর অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসার সম্ভবনা রয়েছে। তদন্ত সংস্থা পুরাতন তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে অগ্রসর হলে কেঁচোর সাথে অজগর সাপ বেরিয়ে আসার শতভাগ সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায়না।সংস্থা চাইলে তৎমর্মে কতিপয় সু-নির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে সহযোগীতা করার ইচ্ছা রাখি।
তাছাড়াও পত্রপত্রিকার খবরে বিভিন্নসময়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা গেছে ব্যাকিং সেক্টরে খেলাপি ঋনের পরিমাণ নব্বই হাজার কোটি টাকা। উক্ত ঋনের অধিকাংশ খেলাপি ঋন ব্যাংকের মালিকদের নিকট।সরকারি ব্যাংক গুলিতে সরকার কতৃক নিয়োগকৃত পরিচালকগন নীজ নামে ঋন না নিলেও প্রভাব খাটিয়ে নীজের নিয়ন্ত্রিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যাক্তি ও সংস্থার নামে ঋন বরাদ্ধ দিতে কতৃপক্ষকে বাধ্য করছেন, এমন তথ্যও পত্রিকার পাতায় আসতে দেখেছি।
বেসরকারি ব্যাংকের মালিকগন সরকারি নিষেদাজ্ঞার কারনে শেয়ারের পঞ্চাশ শতাংশের বেশী ঋন নিতে না পারলেও সম্পকীত অন্যব্যাংকের মালিকদের যোগসাজসে একে অপরের নামে ঋন বরাদ্ধ দিয়ে --"শেয়ারের চেয়ে দ্বিগুনেরও বেশী টাকা ইতিমধ্যে উত্তোলন করে নিয়ে গেছে"।উল্লেখিত ঋনের টাকা বাংলাদেশে বিনীয়োগ না করে বিদেশে বাড়ী, প্লট, প্লাট কিনে তাঁরা আগেভাগে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। কখনও সমস্যা বা রাষ্ট্রীয় অভি্যান দেখা দিলে যেন দেশ ছেড়ে পালিয়ে, সেখানে গিয়ে থাকতে পারে।
ব্যাংক পরিচালকদের মধ্যে সিংহভাগ দ্বৈত নাগরীকত্ব আগেভাগে পকেটস্ত করে রেখেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। খোঁজ নিলে দেখা যায় দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যাক্তি, রাজনীতিক, আমলাদের সিংহভাগের বিদেশে প্লট, প্লাট একাধিক বাড়ী গাড়ী এবং কি পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে আগেভাগে সেই দেশে স্যাটেল করে রেখেছেন। বাংলাদেশের কোন একটি ব্যাংককেও সম্মিলীত আমনতিদের সমপরিমান টাকা ব্যাংককের স্বচ্ছ বিনিয়োগে নেই। প্রত্যেকটি ব্যাংক "যুবক" সমতুল্য উপরে উপরে ফিটফাট ভিতরে ভিতরে সদর ঘাট।
শুধুমাত্র ব্যাংকবীমা নয়--সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্বশাষিত প্রতিষ্ঠান কোথাও দুর্নীতি নেই, এমন স্বপ্নেও ভাবা যায়না। দুর্নীতি সর্বগ্রাসি রুপধারন করেছে ৭৫ পরবর্তী বে-আইনী শাষকদের শাষনামলের প্রথম পয্যায় থেকেই। তখন থেকে শুরু একশ্রেনী দুর্নীতির টাকায় ঘি খাওয়া আর এক শ্রেনীর সংখ্যাগরিষ্ট মানুষ তাঁর খেসারৎ দিয়ে যাচ্ছে--রুদ্রে পুঁড়ে বৃষ্টিতে ভিজে, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে'। সংখ্যা গরিষ্ট সেই শ্রেনীটি ন্যায্য মজুরী থেকেও বঞ্চিত হয়ে আসছে বছরের পর বছর।
বর্তমান সরকারের বিগত আট বছরের শাষনে দেশ অনেক এগিয়েছে, জনগনের জীবন যাত্রায় এসেছে যুগান্তকারি পরিবর্তন। দারিদ্রতা কমেছে গানিতিক হারে, উন্নয়ন অগ্রগতিতে এসেছে জোয়ার। সবকয়টি বিষয় একান্তই সত্য এবং দেশী বিদেশী পরিসংখ্যান দলের পরিসংখ্যানে পরিক্ষিত। কিন্তু ভেতরে ভেতরে আর একটি মহাব্যাধি ব্যাক্তি সমাজ, রাষ্ট্রে ব্যাপৃত হয়ে মহামারি আকার ধারনের পয্যায় পৌছে গেছে অনেক আগে। এই মহাব্যাধির নাম "অর্থনৈতিক বৈষম্য"।
সমাজের সর্বত্র উন্নয়ন অগ্রগতি, সমৃদ্ধির সংঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ধনী গরীবের ব্যবধান।" গরীবের আয় এবং ক্রয় ক্ষমতা বাড়েনি আমি ববলছিনা।গরীব মানুষেরসংখ্যা গানিতিক হারে কমছে সত্য কিন্তু তাদের সাথে ধনীদের সম্পদ আহরন ও কুক্ষিগত করে রাখার সামর্থ্য বহুগুন এড়ে অর্থনৈতিক বোষম্যের স্তুপকে পাহাড়ের চুড়ায় নিয়ে গেছে। দেশের সার্বিক উন্নয়ন অগ্রগতির উষালগ্নে উক্ত ব্যাধি সারানোর যথাযথ ব্যাবস্থা করা নাগেলে--"ব্যাক্তি, সমাজ, রাষ্ট্রকে ব্যাধিটি ক্যান্সারকার ধারন করে কুড়েকুড়ে ধংস করে দিতে পারে।সকল উন্নয়ন, অগ্রগতিকে অর্থহীন করে দিতে পারে।
আর এই "অর্থনৈতিক বৈষম্য" নামক ব্যাধির উৎপত্তিস্থল ''দুর্নীতি'' নামক লুটপাটের "মহাসাগর"।উক্ত মহাসাগরের পানিতে 'দুষনরোধ' করার এখনই উপযুক্ত সময়। সরকারের নিম্নপয্যায় থেকে উধ্বতন পয্যায় সর্বাত্বক "ব্লাক লাইট অপারেশন" আকারে বা প্রকারে পরিচালনা করা ছাড়া সামাজিক সমতা নিয়ন্ত্রনের অন্যকোন বিকল্প উপায় আছে বলে মনে করিনা।
সরকার যদিও নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা লাঘবে বিভিন্নভাবে প্রনোদনা দিয়ে যাচ্ছে এবং উচ্চ আয়ের মানুষদের করের আওতায় আনার নিয়ন্তর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখে সমতা আনার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন-- কায্যক্ষেত্রে প্রচেষ্টা তেমন সুফল বয়ে আনতে পারছেনা।সরকারি আমলাদের দুর্নীতির কারনে নিম্ন আয়ের মানুষ সরকারের প্রনোদনা থেকে যেমন বঞ্চিত হচ্ছে, তেমনি উচ্চ আয়ের মানুষদের করফাঁকি দেয়ার নতুন নতুন কৌশল আবিস্কারের মআধ্যমে করফাঁকি দেয়ার অব্যাহত প্রচেষ্টা--"সরকারের অর্থনৈতিক সমতার মূল উদ্দেশ্যকে অনেকাংশেই ব্যহত করছে।"
দুর্নীতি দমন সংস্থা"র নামেও বহু দুর্নীতির কাহিনী পত্রিকান্তরে প্রকাশিত হতে দেখা গেছে।দুর্নীতি দমন কমিশনের পিয়ন দারোয়ান, পরিচালক, উপ-পরিচালক, সদস্যদের দুর্নীতির মুখরোচক কাহিনী পথে প্রান্তরে চড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।দুর্নীতি দমন কমিশনকে তদারকির জন্যে অন্যকোন সংস্থা নিয়োগ দিলেও তাঁদের কায্যের ব্যাঘাত ঘটতে পারে।দুর্নীতি দমনের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হতে পারে। এক্ষেত্রে জনপ্রতিনীধিদের মধ্য থেকে একাধিক শক্তিশালী তদারকি টিম গঠন করা হলে 'আইনের ব্যাত্যায়' হবে মনে করিনা।কারন প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা কর্মচারিগন জনগনের সেবক, তাদের ট্যাক্সের টাকায় বেতন হয়। 'ভৃত্বের কাজের তদারকি মনিব করতেই পারে'।
সুতারাং দুনীতি দমন কমিশনকে নজরদারীতে রাখার জন্য---সৎ, ব্যাক্তিত্ব সম্পন্ন সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে উল্লেখিত সমপরিমান তদারকি কমিটি করা যায় কিনা সরকারকে ভেবে দেখা দরকার। সরকারি বিশেষ কয়েকটি দপ্তরে দুর্নীতির উৎস খোঁজার নিমিত্তে কমিশন পদক্ষেপ গ্রহন করেছে।শুধুমাত্র সরকারি দপ্তরে দুর্নীতি সীমাবদ্ধ নয় বেসরকারি সংস্থা,স্বায়ত্বশাষিত প্রতিষ্ঠান, প্রভাবশালী রাজনীতিক, স্বল্পবেতনের চাকুরীজীবি সর্বত্র রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতির দুষিত রক্ত প্রবাহমান। সিটি কর্পোরেশনের ঝাড়ুদার, তিতাসের মিটার রিডার, শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের গেইট কিপার, ব্যাংকের নাইটগার্ড, থানা জেলা পয্যায়ের রাজনীতিক পয্যন্ত অনেকেই নামে বেনামে একাধিক গাড়ী, বাড়ী, বেসুমার স্থাবর অ-স্থাবর সম্পদের পাহাড় গড়েছে। সরকার উপযুক্ত সার্জিকেলের হাতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম যোগান দিয়ে সর্বত্র "ব্লাক লাইট" অপারেশনের মাধ্যমে দুষিতরক্ত বের করে নিয়ে আসা বর্তমান সময়ের গনদাবীতে পরিণত হয়েছে।
আমরা জানি--ব্যাক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র থেকে পুঁজিবাদী সমাজে দুর্নীতির মূল উৎপাটন সহজ কাজ হবেনা। তবে উপযুক্ত নজরদারি আর দুর্নীতিলব্ধ অর্থ ব্যয়ের সুযোগ না থাকলে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রিত হ'তে বাধ্য হবে, ইহাও সত্য। এক্ষেত্রে আমাদের পাশের দেশ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের নাগরিকদের অভ্যন্তরীন সম্পদ আহরনের জবাবদিহীতার অভিজ্ঞতা ধার করা যেতে পারে। জ্ঞাত কোনো আয়-রোজগার নেই; অথচ বাড়ি-গাড়ির চমকে চোখ ঝলসে যায় এমন লোক তো আমরা হামেশাই দেখি। এরা বেআইনিভাবে পরধন নিজেদের আয়ত্তে নিয়ে তা করছে, ইহাই বাস্তবতা। ইহা ক্রমান্বয়ে হ্রাস করতে পারলেও রাষ্ট্র, জনগন, সরকার উপকৃত হবে কোন সন্দেহ নেই। আইনের বেড়াজালে এনে তাদের অর্জিত সম্পদ ভোগ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করার পদক্ষেপ এখনই নিতে হবে। গুটিকয়েক দিয়ে শুরু করা হলেও অন্যরা সতর্ক বার্তা পাবে। রাষ্ট্রের পক্ষে নামে শুধু নয় সত্যিকারের ‘ওয়াচ-ডগ’ হয়ে দুদককে নিয়ন্তর তাঁর কাজ চালিয়ে যাওয়ার সাহষ জোগাতে হবে, বছরান্তে তাঁর কর্ম পরিধি বিস্তৃত করতে হবে।
উল্লেখ্য, এ দেশে এ রকম অনেক দুঃসাধ্য কাজ সম্ভব হয়েছে। নিয়মিত খাদ্য ঘাটতি নিয়তি ছিল এই কিছুদিন আগেও।চাষাবাদ যোগ্য জমির পরিমান কমেছে কিন্তু খাদ্য উৎপাদন বেড়ে হয়েছে পাঁছগুণ। একসময় জনসংখ্যা বৃদ্ধিরোধে সরকারি উদ্যোগকে ধর্মবিরুধী আখ্যা দিয়ে অব্যাহত প্রচারনা চালানো হয়েছে তা সত্বেও জম্ম হার নিয়ন্ত্রিত হয়েছে। শিক্ষা, চিকিৎসাক্ষেত্রে ঘটেছে বিপ্লব। শিক্ষায় ঘটেছে ব্যাপক প্রসারতা ও বহুমূখিতা।অথচ একসময় এগুলি অর্জন করাকে প্রায় অসাধ্য মনে হয়েছে।
ছোটবেলায় শুনেছি-একটা সুঁই সুতা বানাতে পারেনা যেই দেশ, সেই দেশকে "মুজিব" পাকিস্তান থেকে আলাদা করে কি করবে?। নিশ্চয়ই ভারতকে দিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত শেখ মুজিব।" মুজিব স্বাধীন বাংলাদেশ তো দেয়নি বরঞ্চ সেই শেখ মুজিবের জৈষ্ঠকন্যা 'ভারত থেকে আর একটি বাংলাদেশ সমপরিমান ভূখন্ড ও জলাশয় উদ্ধার করে" প্রমান করেছেন "মুজিব পরিবার দিতে জানেনা---আনতে জানে"। দেশবিক্রি করেনা--অন্যের দেশ ক্রয় করার মানষিকতা পোষন করে। মুজিবের নেতৃত্বে মুক্ত দেশেই তাঁর কন্যার নেতৃত্বে প্রত্যহ জাহাজ নির্মান হয়, মিশাইল বানায়, ক্ষেপনাস্ত্র পরিক্ষা করে, মহাশুন্যে " বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট" পাঠানোর পরিকল্পনা করে। অকল্পনীয়ভাবে পারমানবিক চুল্লি বসায়, এযাবৎকালের সর্ববৃহৎ মেঘা প্রকল্প "পদ্মাসেতু" নিজস্ব অর্থায়নে এবং প্রযুক্তিতে বাস্তবায়নের সক্ষমতা অর্জন করে বিশ্ববাসিকে হতবাক করে দিতে পারে।"
তবে ইহা সত্য---"পুঁজিবাদি সমাজে দুর্নীতি দমন করা সম্ভব নয় তবে নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব --"যদি নেতৃত্বের দেশপ্রেম জাগ্রত থাকে"। সর্বক্ষেত্রে উপরে উঠার প্রতিযোগীতায় লিপ্ত সমাজে নিছে নামতে চাইবে কে? যাকে যেখানেই দেয়া হয়না কেন--'সে সেখানেই টাকা আহরনের চিন্তায় সদা ব্যাস্ত।' তা সত্ত্বেও হাত গুটিয়ে বসে থাকলে চলবেনা। সবল ও দৃঢ়, ধীর, স্থীর হতে হবে প্রতিটি পদক্ষেপ। বাস্তব পরিপ্রেক্ষিতকে অবশ্যই বিবেচনায় নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
জাতিরজনকের কন্যা উপযুক্ত সময় সঠিক সিদ্ধান্তটি নিয়েছেন।২০২১ সালের মধ্যে মধ্য আয়ের দেশে রুপান্তরের স্বপ্ন পুরনে সবচেয়ে বড় বাঁধা এইমুহুর্তে 'দুর্নীতি' নামক মহাব্যাধি। দুর্নীতির 'মহাব্যাধি'র লাগাম টেনে ধারার উপযুক্ত সময়ও এখন।
বলাবাহুল্য--"দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, লুটপাট, দখলবাজি, মাস্তানী, চাঁদাবাজি, ঘুষ, মাদক, চোরাচালানি, অর্থপাচার ইত্যাদি বে-আইনি, রাষ্ট্রদ্রোহী, সমাজদ্রোহী ব্যাধিসমূহ বিগতদিনে অপ-শাষকদের পৃষ্টপোষকতা, আস্কারা, ক্ষেত্র বিশেষ সহযোগীতা পেয়ে বর্তমান সময়ে মহিরুহ আকার ধারন করে মহাব্যাধিতে রুপান্তরীত হয়েছে।ইহা কারো অস্বীকারের উপায় নেই।দুই চার বছরের নিয়ন্তর চেষ্টায় ব্যাধিমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা কল্পনামাত্র, বড়জোর নিয়ন্ত্রিত করা যেতে পারে সর্বমহলের নৈতিক সমর্থন পেলে।
এই মহুর্তে গঠিত কমিটি সদস্যদের অন্তরের গহীনে গভীর দেশপ্রেম, দৃডপ্রত্যয়, কঠোর মনোভাব, একাগ্রতা নিয়ে নিয়ন্তর অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রাখার কোন বিকল্প নেই। দুর্নীতি উচ্ছেদের স্বার্থে সরকার প্রয়োজনে জরুরী অবস্থা সমতুল্য "অপারেশন ব্লাক লাইট" অথবা অন্য যুৎসই যে কোন বিশেষ অভিযানতুল্য" নামকরনে রাষ্ট্রীয় শক্তি প্রয়োগ করার ক্ষমতা দুদক'কে দেয়া যায় কিনা ভেবে দেখা উচিৎ।
দেশপ্রেমিক প্রত্যেক নাগরিক, সৎ রাজনীতিবিদ, স্বচ্ছ সরকারি আমলা, প্রতিতযসা মন্ত্রীগন এই মহুর্তে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সর্বশক্তি নিয়ে আগ্রাসি ভুমিকায় অবতিন্ন হওয়া ছাড়া গত্যান্তর নেই। দুর্নীতি নামক ক্যান্সার থেকে দেশ, সমাজ, সরকারকে মুক্ত করা না গেলে সরকারের সুখী, সমৃদ্ধশালী, উন্নত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে বলে মনে করিনা। সকল মহলের সম্মিলীত উদ্যোগ দুর্নীতির "মহাব্যাধি থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করা শতভাগ সম্ভব না হলেও অন্তত: নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হবে। তাহলেও জাতির জনকের স্বপ্ন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পূরণ করার ইচ্ছা তাঁর জৈষ্ঠকন্যার সম্ভব হবে বলে আমি দৃডভাবে বিশ্বাস করি।''
masterruhulamin@gmail.com
(রুহুল আমিন মজুমদার)
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সবুজ সংকেত পেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ১৫টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি প্রতিরোধ ও দমনে ১৪টি প্রাতিষ্ঠানিক দল গঠন করে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)সাঁড়াষি অভিযান শুরু করেছে। সংস্থার আট পরিচালক দলগুলোর নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
দুদকের বিশেষ অনুসন্ধান বিভাগের মহাপরিচালকের তত্ত্বাবধানে এসব দল গঠন করা হয়েছে। সংস্থার মহাপরিচালক মুনির চৌধুরী নিজেও এসব দলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। গঠিত তিন সদস্যের ওই সব দলে একজন করে উপ-পরিচালক ও সহকারী পরিচালক আছেন। তাঁদের অভিযান ইতিমধ্যে দৃশ্যমান হওয়া শুরু হয়েছে বলা যায়। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নামকরা উপাচায্যকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে দুদক। অন্যদিকে সরকারি দলের দাপুটে এক সংসদ সদস্যের কারখানাকে বিপুল পরিমান টাকা জরিমানা করে তাঁদের কাজের সক্ষমতা জনগনের নিকট দৃশ্যমান করার চেষ্টা অনেকটা সফল হয়েছে বলে মনে করি।
তিতাস গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ, শিক্ষামন্ত্রনালয় সহ সরকারের রাষ্ট্রীয় সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে দুদকের গঠিত স্ব-স্ব টিম লিডারের নেতৃত্বে যাতায়ত, তথ্য অনুসন্ধান, খোঁজখবর নেয়া নিয়মিত দাপ্তরিক কাজের অংশে পরিণত করেছেন বলেই আপাত:দৃষ্টে মনে হচ্ছে।বেসরকারি পয্যায়েও বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়ে সফলতা দেখাতে পেরেছেন। দেশব্যাপি শিল্প কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত হানা দিয়ে জেল জরিমানা করার উল্লেখযোগ্য ডজনদু'য়েক সাফল্যজনক উদাহরন সৃষ্টি করতে পেরেছেন। দুদকের বর্তমান অভিযানকে আপামর জনগনের সাধুবাদ দেয়ার সময় এখনও আসেনি।সমাজের সর্বস্তরে দুর্নীতির ছায়ায় বসে তাঁরাও কতটুকু অগ্রসর হতে পারেন জনগনের দেখার বিষয় আছে বলে মনে করি।
দুদকের বর্তমান পদক্ষেপ কোন অ-শুভ শক্তির চোখ রাঙানীতে যেন থেমে না যায়--সেই দিকে লক্ষ রাখার নিমিত্তে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে এক বা একাধিক পয্যবেক্ষন টিম করে দেয়ার প্রয়োজনীয়তা ধীরে ধীরে জনআখাংক্ষায় পরিণত হচ্ছে। বিষয়টির প্রতি সদাশয় সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন ও সুনজর জনগন আশা করে।
এই প্রসংঙ্গে উল্লেখযোগ্য দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আলোচনা করা দায়িত্ব ও কর্তব্য মনে করি। এই পয্যায়ে প্রথমেই চোখে পড়ে তিতাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানীর প্রতি। আমর জানামামতে উক্ত কোম্পেনীর রাত্রীকালিন পাহাদার থেকে শুরু করে ব্যাবস্থাপনা পর্ষদ পয্যন্ত সর্বত্র দুর্নীতির কালোছায়ায় আচ্ছাদিত। মিটার রিডারের ন্যায় তৃতীয় চতুর্থ শ্রেনীর একাধিক কর্মচারীর দেশেবিদেশে একাধিক বাড়ী ও গাড়ীর খবর অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসার সম্ভবনা রয়েছে। তদন্ত সংস্থা পুরাতন তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে অগ্রসর হলে কেঁচোর সাথে অজগর সাপ বেরিয়ে আসার শতভাগ সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায়না।সংস্থা চাইলে তৎমর্মে কতিপয় সু-নির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে সহযোগীতা করার ইচ্ছা রাখি।
তাছাড়াও পত্রপত্রিকার খবরে বিভিন্নসময়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা গেছে ব্যাকিং সেক্টরে খেলাপি ঋনের পরিমাণ নব্বই হাজার কোটি টাকা। উক্ত ঋনের অধিকাংশ খেলাপি ঋন ব্যাংকের মালিকদের নিকট।সরকারি ব্যাংক গুলিতে সরকার কতৃক নিয়োগকৃত পরিচালকগন নীজ নামে ঋন না নিলেও প্রভাব খাটিয়ে নীজের নিয়ন্ত্রিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যাক্তি ও সংস্থার নামে ঋন বরাদ্ধ দিতে কতৃপক্ষকে বাধ্য করছেন, এমন তথ্যও পত্রিকার পাতায় আসতে দেখেছি।
বেসরকারি ব্যাংকের মালিকগন সরকারি নিষেদাজ্ঞার কারনে শেয়ারের পঞ্চাশ শতাংশের বেশী ঋন নিতে না পারলেও সম্পকীত অন্যব্যাংকের মালিকদের যোগসাজসে একে অপরের নামে ঋন বরাদ্ধ দিয়ে --"শেয়ারের চেয়ে দ্বিগুনেরও বেশী টাকা ইতিমধ্যে উত্তোলন করে নিয়ে গেছে"।উল্লেখিত ঋনের টাকা বাংলাদেশে বিনীয়োগ না করে বিদেশে বাড়ী, প্লট, প্লাট কিনে তাঁরা আগেভাগে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। কখনও সমস্যা বা রাষ্ট্রীয় অভি্যান দেখা দিলে যেন দেশ ছেড়ে পালিয়ে, সেখানে গিয়ে থাকতে পারে।
ব্যাংক পরিচালকদের মধ্যে সিংহভাগ দ্বৈত নাগরীকত্ব আগেভাগে পকেটস্ত করে রেখেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। খোঁজ নিলে দেখা যায় দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যাক্তি, রাজনীতিক, আমলাদের সিংহভাগের বিদেশে প্লট, প্লাট একাধিক বাড়ী গাড়ী এবং কি পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে আগেভাগে সেই দেশে স্যাটেল করে রেখেছেন। বাংলাদেশের কোন একটি ব্যাংককেও সম্মিলীত আমনতিদের সমপরিমান টাকা ব্যাংককের স্বচ্ছ বিনিয়োগে নেই। প্রত্যেকটি ব্যাংক "যুবক" সমতুল্য উপরে উপরে ফিটফাট ভিতরে ভিতরে সদর ঘাট।
শুধুমাত্র ব্যাংকবীমা নয়--সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্বশাষিত প্রতিষ্ঠান কোথাও দুর্নীতি নেই, এমন স্বপ্নেও ভাবা যায়না। দুর্নীতি সর্বগ্রাসি রুপধারন করেছে ৭৫ পরবর্তী বে-আইনী শাষকদের শাষনামলের প্রথম পয্যায় থেকেই। তখন থেকে শুরু একশ্রেনী দুর্নীতির টাকায় ঘি খাওয়া আর এক শ্রেনীর সংখ্যাগরিষ্ট মানুষ তাঁর খেসারৎ দিয়ে যাচ্ছে--রুদ্রে পুঁড়ে বৃষ্টিতে ভিজে, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে'। সংখ্যা গরিষ্ট সেই শ্রেনীটি ন্যায্য মজুরী থেকেও বঞ্চিত হয়ে আসছে বছরের পর বছর।
বর্তমান সরকারের বিগত আট বছরের শাষনে দেশ অনেক এগিয়েছে, জনগনের জীবন যাত্রায় এসেছে যুগান্তকারি পরিবর্তন। দারিদ্রতা কমেছে গানিতিক হারে, উন্নয়ন অগ্রগতিতে এসেছে জোয়ার। সবকয়টি বিষয় একান্তই সত্য এবং দেশী বিদেশী পরিসংখ্যান দলের পরিসংখ্যানে পরিক্ষিত। কিন্তু ভেতরে ভেতরে আর একটি মহাব্যাধি ব্যাক্তি সমাজ, রাষ্ট্রে ব্যাপৃত হয়ে মহামারি আকার ধারনের পয্যায় পৌছে গেছে অনেক আগে। এই মহাব্যাধির নাম "অর্থনৈতিক বৈষম্য"।
সমাজের সর্বত্র উন্নয়ন অগ্রগতি, সমৃদ্ধির সংঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ধনী গরীবের ব্যবধান।" গরীবের আয় এবং ক্রয় ক্ষমতা বাড়েনি আমি ববলছিনা।গরীব মানুষেরসংখ্যা গানিতিক হারে কমছে সত্য কিন্তু তাদের সাথে ধনীদের সম্পদ আহরন ও কুক্ষিগত করে রাখার সামর্থ্য বহুগুন এড়ে অর্থনৈতিক বোষম্যের স্তুপকে পাহাড়ের চুড়ায় নিয়ে গেছে। দেশের সার্বিক উন্নয়ন অগ্রগতির উষালগ্নে উক্ত ব্যাধি সারানোর যথাযথ ব্যাবস্থা করা নাগেলে--"ব্যাক্তি, সমাজ, রাষ্ট্রকে ব্যাধিটি ক্যান্সারকার ধারন করে কুড়েকুড়ে ধংস করে দিতে পারে।সকল উন্নয়ন, অগ্রগতিকে অর্থহীন করে দিতে পারে।
আর এই "অর্থনৈতিক বৈষম্য" নামক ব্যাধির উৎপত্তিস্থল ''দুর্নীতি'' নামক লুটপাটের "মহাসাগর"।উক্ত মহাসাগরের পানিতে 'দুষনরোধ' করার এখনই উপযুক্ত সময়। সরকারের নিম্নপয্যায় থেকে উধ্বতন পয্যায় সর্বাত্বক "ব্লাক লাইট অপারেশন" আকারে বা প্রকারে পরিচালনা করা ছাড়া সামাজিক সমতা নিয়ন্ত্রনের অন্যকোন বিকল্প উপায় আছে বলে মনে করিনা।
সরকার যদিও নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা লাঘবে বিভিন্নভাবে প্রনোদনা দিয়ে যাচ্ছে এবং উচ্চ আয়ের মানুষদের করের আওতায় আনার নিয়ন্তর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখে সমতা আনার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন-- কায্যক্ষেত্রে প্রচেষ্টা তেমন সুফল বয়ে আনতে পারছেনা।সরকারি আমলাদের দুর্নীতির কারনে নিম্ন আয়ের মানুষ সরকারের প্রনোদনা থেকে যেমন বঞ্চিত হচ্ছে, তেমনি উচ্চ আয়ের মানুষদের করফাঁকি দেয়ার নতুন নতুন কৌশল আবিস্কারের মআধ্যমে করফাঁকি দেয়ার অব্যাহত প্রচেষ্টা--"সরকারের অর্থনৈতিক সমতার মূল উদ্দেশ্যকে অনেকাংশেই ব্যহত করছে।"
দুর্নীতি দমন সংস্থা"র নামেও বহু দুর্নীতির কাহিনী পত্রিকান্তরে প্রকাশিত হতে দেখা গেছে।দুর্নীতি দমন কমিশনের পিয়ন দারোয়ান, পরিচালক, উপ-পরিচালক, সদস্যদের দুর্নীতির মুখরোচক কাহিনী পথে প্রান্তরে চড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।দুর্নীতি দমন কমিশনকে তদারকির জন্যে অন্যকোন সংস্থা নিয়োগ দিলেও তাঁদের কায্যের ব্যাঘাত ঘটতে পারে।দুর্নীতি দমনের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হতে পারে। এক্ষেত্রে জনপ্রতিনীধিদের মধ্য থেকে একাধিক শক্তিশালী তদারকি টিম গঠন করা হলে 'আইনের ব্যাত্যায়' হবে মনে করিনা।কারন প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা কর্মচারিগন জনগনের সেবক, তাদের ট্যাক্সের টাকায় বেতন হয়। 'ভৃত্বের কাজের তদারকি মনিব করতেই পারে'।
সুতারাং দুনীতি দমন কমিশনকে নজরদারীতে রাখার জন্য---সৎ, ব্যাক্তিত্ব সম্পন্ন সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে উল্লেখিত সমপরিমান তদারকি কমিটি করা যায় কিনা সরকারকে ভেবে দেখা দরকার। সরকারি বিশেষ কয়েকটি দপ্তরে দুর্নীতির উৎস খোঁজার নিমিত্তে কমিশন পদক্ষেপ গ্রহন করেছে।শুধুমাত্র সরকারি দপ্তরে দুর্নীতি সীমাবদ্ধ নয় বেসরকারি সংস্থা,স্বায়ত্বশাষিত প্রতিষ্ঠান, প্রভাবশালী রাজনীতিক, স্বল্পবেতনের চাকুরীজীবি সর্বত্র রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতির দুষিত রক্ত প্রবাহমান। সিটি কর্পোরেশনের ঝাড়ুদার, তিতাসের মিটার রিডার, শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের গেইট কিপার, ব্যাংকের নাইটগার্ড, থানা জেলা পয্যায়ের রাজনীতিক পয্যন্ত অনেকেই নামে বেনামে একাধিক গাড়ী, বাড়ী, বেসুমার স্থাবর অ-স্থাবর সম্পদের পাহাড় গড়েছে। সরকার উপযুক্ত সার্জিকেলের হাতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম যোগান দিয়ে সর্বত্র "ব্লাক লাইট" অপারেশনের মাধ্যমে দুষিতরক্ত বের করে নিয়ে আসা বর্তমান সময়ের গনদাবীতে পরিণত হয়েছে।
আমরা জানি--ব্যাক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র থেকে পুঁজিবাদী সমাজে দুর্নীতির মূল উৎপাটন সহজ কাজ হবেনা। তবে উপযুক্ত নজরদারি আর দুর্নীতিলব্ধ অর্থ ব্যয়ের সুযোগ না থাকলে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রিত হ'তে বাধ্য হবে, ইহাও সত্য। এক্ষেত্রে আমাদের পাশের দেশ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের নাগরিকদের অভ্যন্তরীন সম্পদ আহরনের জবাবদিহীতার অভিজ্ঞতা ধার করা যেতে পারে। জ্ঞাত কোনো আয়-রোজগার নেই; অথচ বাড়ি-গাড়ির চমকে চোখ ঝলসে যায় এমন লোক তো আমরা হামেশাই দেখি। এরা বেআইনিভাবে পরধন নিজেদের আয়ত্তে নিয়ে তা করছে, ইহাই বাস্তবতা। ইহা ক্রমান্বয়ে হ্রাস করতে পারলেও রাষ্ট্র, জনগন, সরকার উপকৃত হবে কোন সন্দেহ নেই। আইনের বেড়াজালে এনে তাদের অর্জিত সম্পদ ভোগ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করার পদক্ষেপ এখনই নিতে হবে। গুটিকয়েক দিয়ে শুরু করা হলেও অন্যরা সতর্ক বার্তা পাবে। রাষ্ট্রের পক্ষে নামে শুধু নয় সত্যিকারের ‘ওয়াচ-ডগ’ হয়ে দুদককে নিয়ন্তর তাঁর কাজ চালিয়ে যাওয়ার সাহষ জোগাতে হবে, বছরান্তে তাঁর কর্ম পরিধি বিস্তৃত করতে হবে।
উল্লেখ্য, এ দেশে এ রকম অনেক দুঃসাধ্য কাজ সম্ভব হয়েছে। নিয়মিত খাদ্য ঘাটতি নিয়তি ছিল এই কিছুদিন আগেও।চাষাবাদ যোগ্য জমির পরিমান কমেছে কিন্তু খাদ্য উৎপাদন বেড়ে হয়েছে পাঁছগুণ। একসময় জনসংখ্যা বৃদ্ধিরোধে সরকারি উদ্যোগকে ধর্মবিরুধী আখ্যা দিয়ে অব্যাহত প্রচারনা চালানো হয়েছে তা সত্বেও জম্ম হার নিয়ন্ত্রিত হয়েছে। শিক্ষা, চিকিৎসাক্ষেত্রে ঘটেছে বিপ্লব। শিক্ষায় ঘটেছে ব্যাপক প্রসারতা ও বহুমূখিতা।অথচ একসময় এগুলি অর্জন করাকে প্রায় অসাধ্য মনে হয়েছে।
ছোটবেলায় শুনেছি-একটা সুঁই সুতা বানাতে পারেনা যেই দেশ, সেই দেশকে "মুজিব" পাকিস্তান থেকে আলাদা করে কি করবে?। নিশ্চয়ই ভারতকে দিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত শেখ মুজিব।" মুজিব স্বাধীন বাংলাদেশ তো দেয়নি বরঞ্চ সেই শেখ মুজিবের জৈষ্ঠকন্যা 'ভারত থেকে আর একটি বাংলাদেশ সমপরিমান ভূখন্ড ও জলাশয় উদ্ধার করে" প্রমান করেছেন "মুজিব পরিবার দিতে জানেনা---আনতে জানে"। দেশবিক্রি করেনা--অন্যের দেশ ক্রয় করার মানষিকতা পোষন করে। মুজিবের নেতৃত্বে মুক্ত দেশেই তাঁর কন্যার নেতৃত্বে প্রত্যহ জাহাজ নির্মান হয়, মিশাইল বানায়, ক্ষেপনাস্ত্র পরিক্ষা করে, মহাশুন্যে " বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট" পাঠানোর পরিকল্পনা করে। অকল্পনীয়ভাবে পারমানবিক চুল্লি বসায়, এযাবৎকালের সর্ববৃহৎ মেঘা প্রকল্প "পদ্মাসেতু" নিজস্ব অর্থায়নে এবং প্রযুক্তিতে বাস্তবায়নের সক্ষমতা অর্জন করে বিশ্ববাসিকে হতবাক করে দিতে পারে।"
তবে ইহা সত্য---"পুঁজিবাদি সমাজে দুর্নীতি দমন করা সম্ভব নয় তবে নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব --"যদি নেতৃত্বের দেশপ্রেম জাগ্রত থাকে"। সর্বক্ষেত্রে উপরে উঠার প্রতিযোগীতায় লিপ্ত সমাজে নিছে নামতে চাইবে কে? যাকে যেখানেই দেয়া হয়না কেন--'সে সেখানেই টাকা আহরনের চিন্তায় সদা ব্যাস্ত।' তা সত্ত্বেও হাত গুটিয়ে বসে থাকলে চলবেনা। সবল ও দৃঢ়, ধীর, স্থীর হতে হবে প্রতিটি পদক্ষেপ। বাস্তব পরিপ্রেক্ষিতকে অবশ্যই বিবেচনায় নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
জাতিরজনকের কন্যা উপযুক্ত সময় সঠিক সিদ্ধান্তটি নিয়েছেন।২০২১ সালের মধ্যে মধ্য আয়ের দেশে রুপান্তরের স্বপ্ন পুরনে সবচেয়ে বড় বাঁধা এইমুহুর্তে 'দুর্নীতি' নামক মহাব্যাধি। দুর্নীতির 'মহাব্যাধি'র লাগাম টেনে ধারার উপযুক্ত সময়ও এখন।
বলাবাহুল্য--"দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, লুটপাট, দখলবাজি, মাস্তানী, চাঁদাবাজি, ঘুষ, মাদক, চোরাচালানি, অর্থপাচার ইত্যাদি বে-আইনি, রাষ্ট্রদ্রোহী, সমাজদ্রোহী ব্যাধিসমূহ বিগতদিনে অপ-শাষকদের পৃষ্টপোষকতা, আস্কারা, ক্ষেত্র বিশেষ সহযোগীতা পেয়ে বর্তমান সময়ে মহিরুহ আকার ধারন করে মহাব্যাধিতে রুপান্তরীত হয়েছে।ইহা কারো অস্বীকারের উপায় নেই।দুই চার বছরের নিয়ন্তর চেষ্টায় ব্যাধিমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা কল্পনামাত্র, বড়জোর নিয়ন্ত্রিত করা যেতে পারে সর্বমহলের নৈতিক সমর্থন পেলে।
এই মহুর্তে গঠিত কমিটি সদস্যদের অন্তরের গহীনে গভীর দেশপ্রেম, দৃডপ্রত্যয়, কঠোর মনোভাব, একাগ্রতা নিয়ে নিয়ন্তর অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রাখার কোন বিকল্প নেই। দুর্নীতি উচ্ছেদের স্বার্থে সরকার প্রয়োজনে জরুরী অবস্থা সমতুল্য "অপারেশন ব্লাক লাইট" অথবা অন্য যুৎসই যে কোন বিশেষ অভিযানতুল্য" নামকরনে রাষ্ট্রীয় শক্তি প্রয়োগ করার ক্ষমতা দুদক'কে দেয়া যায় কিনা ভেবে দেখা উচিৎ।
দেশপ্রেমিক প্রত্যেক নাগরিক, সৎ রাজনীতিবিদ, স্বচ্ছ সরকারি আমলা, প্রতিতযসা মন্ত্রীগন এই মহুর্তে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সর্বশক্তি নিয়ে আগ্রাসি ভুমিকায় অবতিন্ন হওয়া ছাড়া গত্যান্তর নেই। দুর্নীতি নামক ক্যান্সার থেকে দেশ, সমাজ, সরকারকে মুক্ত করা না গেলে সরকারের সুখী, সমৃদ্ধশালী, উন্নত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে বলে মনে করিনা। সকল মহলের সম্মিলীত উদ্যোগ দুর্নীতির "মহাব্যাধি থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করা শতভাগ সম্ভব না হলেও অন্তত: নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হবে। তাহলেও জাতির জনকের স্বপ্ন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পূরণ করার ইচ্ছা তাঁর জৈষ্ঠকন্যার সম্ভব হবে বলে আমি দৃডভাবে বিশ্বাস করি।''
masterruhulamin@gmail.com
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন