ইসলামধর্ম সহ সকল ধর্মের প্রতিপালন বর্তমান সরকারের উদ্দেশ্য--বাতিলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রশক্তি প্রয়োগ রাসূল (স:) এর নির্দেশনা।
         (রুহুল আমিন মজুমদার)

        ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ ধর্মহীনতা নয়, সত্যিকারভাবে নির্ভয়ে ধর্ম পালনই ধর্ম নিরপেক্ষতা।সকল ধর্মের অনুসারিদের সহবস্থান নিশ্চিত করে ধর্ম পালনের স্বাধিনতা, ধর্মযাজকের চলাচলের স্বাধিনতা, ধর্ম পালনে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সমসুযোগ নিশ্চিত করার অর্থই  ধর্মনিরপেক্ষতা। সংখ্যাগরিষ্ট মুসলিম অধ্যুষিত দেশে আজান দেয়ার সময় অন্য ধর্মের বাদ্যযন্ত্র বাজানোর নাম ধর্মীয় স্বাধিনতা বা ধর্মনিরপেক্ষতা যেমন হতে পারেনা, তেমনি মন্দির প্রঙ্গনে ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠান করার নামও ধর্মীয় স্বাধীনতা বা ধর্মনিরপেক্ষতা হতে পারে না।

      মহান আল্লাহ সীমালঙনকারিকে পছন্দ করেন না। "সীমা লঙন" শব্দটি শুধুমাত্র ব্যাক্তিগত আচার, আচরন, কথাবার্তায় সীমাবদ্ধ নয়।মানব জীবনে প্রতিটি ক্ষেত্রে, সর্বত্র সমভাবে প্রযোজ্য। ধর্মীয়, গোষ্টিগত, জাতিগত, বর্ণগত,লিঙ্গগত প্রতিটি ক্ষেত্রে একে অপরের কোনরুপ ক্ষতি সাধন না করে, স্ব স্ব অবস্থানে প্রত্যেকে প্রত্যেকের ধর্মকর্ম সম্পাদন করার নিমিত্তে স্ব-গোত্রের আওতাভূক্ত বা সীমিত অবস্থানে থাকাই ইসলামের নির্দেশিত সঠিক নির্দেশনা।

      অতিধার্মীক, সহজে বেহেস্তে বা স্বর্গে যাওয়ার জন্যে অন্য ধর্মের উপর চড়াও হওয়া,সংখ্যা গরিষ্টতার জোরে অন্য ধর্ম পালনে বাধাপ্রদান, জোরপূর্বক ধর্মান্তরীতকরন,আপন ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব জাহির করার নিমিত্তে অন্যধর্মকে হেয় প্রতিপন্ন করে বক্তব্য প্রদান বা আচার আচরননে প্রকাশ ঘটানো, শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে অন্য ধর্মের বা গোত্রের বসতি উচ্ছেদ, হত্যা, নিপিড়ন, নিয্যাতন ইত্যাদি ইসলাম ধর্মানুসারে হারাম এবং কোরান ও হাদিছে কঠোর নিষেদাজ্ঞা রয়েছে। উপরি উক্ত কাজ গুলী যে জাতি বা গোষ্টি, সমষ্টিগত বা ব্যাক্তিগত ভাবে করা হোকনা কেন--"ইসলামের দৃষ্টিতে ঐ জাতি, গোষ্টি বা ব্যাক্তি সীমা লঙনকারি হিসেবে বিবেচিত হবেন"। ইহাই ইসলামের ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব, সৌন্দয্য, মহত্ব, সার্বজনীনতা এবং কি ইসলাম ধর্মের দৃষ্টিতে অলঙনীয় বিধান।

        বাঙ্গালী জাতির মহান নেতা বঙ্গবন্ধু তাঁর  মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত নতুন স্বাধিনতাপ্রাপ্ত বাংলাদেশের সরকার গঠন করে ধর্মনিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্রীয় চার মুলনীতির অন্যতম একটি নীতি হিসেবে গ্রহন করেছিলেন।ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে "৬৯ এর অসহযোগ আন্দোলনের দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় তাঁর   সংগ্রামী জীবনের দীর্ঘ পথচলায় সাধারন মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ধর্মালম্বি জাতি, গোষ্টির সঙ্গে তিনি ওৎপ্রোতভাবে মিশেছিলেন। তিনি সর্বসাকুল্যে যে ধারানাটি হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলেন, এতদাঞ্চলের জনগন ধর্মভীরু বটে কিন্তু ধর্মান্ধ নয়। তাছাড়াও তিনি দীর্ঘ রাজনৈতিক শিক্ষা নবিশকালীন সময়টুকু কাটাতে পেরেছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেম, ওলামা, মানব হৈতষি, জনদরদী সর্বজনগ্রাহ্য নেতাদের সাহচার্য্যে।তাঁর প্রাথমিক জ্ঞানার্জনও বলা যায় বাঙ্গালী জাতির জন্যে বড় একটি ভাগ্যের ব্যাপারই ছিল।

      মাওলানা তর্ক বাগীস, মাওলানা আবদুল হামিদ খাঁন ভাসানী, মাওলানা সামছুল হক, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ এর মত প্রথিতযসা, উন্নত চারিত্রিক বৈশিষ্ঠ মন্ডিত রাজনীতি সচেতন, উচ্চ শিক্ষিত ধর্মানুরাগি জ্ঞানী, গুনিদের সান্নিধ্য পেয়েছিলেন। পাশাপাশি মহত্মা গান্ধীজি, জহর লাল নেহেরু, এ, কে, ফজলুল হক, গনতন্ত্রের মানস পুত্র হোসেন শহীদ সরোওয়ার্দীর ন্যায় মানবিক গুন সমৃদ্ধ, উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত, রাজনীতিক দিকপালদের একান্ত ভক্ত ও অনুসারী হওয়ায় তাঁদের একান্ত সান্নিধ্য লাভের সৌভাগ্যও ঘটেছিল। বহুবিদ জ্ঞানের অধিকারিধর্মীয় নেতৃবৃন্দ ও মানবকল্যানে নিবেদিত মহান পুরুষ--জাতীয় নেতৃবৃন্দের সাহচায্যে এই অঞ্চলের মানুষের অন্তরের চাওয়া পাওয়া সম্পর্কে তাঁর বাস্তব রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে উঠেছিল। দীর্ঘ অভিজ্ঞতার আলোকে রাজনীতির দিব্য চোখে তিনি দেখতে পেয়েছিলেন  ধর্মভিত্তিক পাকিস্তানী শাষকদের বিরুদ্ধে পুর্ববাংলার জনগনের মুল ক্ষোভ, দু:খ্য এবং তাঁদের জনইচ্ছা।

এতদঞ্চলের জনগন দিব্য চোখে দেখতে পেয়েছিল--পবিত্র ধর্মের সাথে প্রতারনা, ধর্মকে ন্যাক্কারজনক ভাবে ব্যবহার করে কিভাবে জাতিভেদে শাষন শোষনের যাঁতাকলের খড়ক তাঁদের কাঁধে তুলে দিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু এতদাঞ্চলের জনগনের ক্ষোভ, দু:খ্য, চাওয়া পাওয়ার প্রতি দৃষ্টি রেখে তিনি প্রথমে তাঁর দলের চারিত্রিক বৈশিষ্টে পরিবর্তন আনায়ন করে অ-সাম্প্রদায়িক চেতনায় সমৃদ্ধ করেন। দলীয় অ-সাম্প্রদায়িক চেতনা আপামর বাঙ্গালী মানসে গেঁথে দিয়ে ধীরে ধীরে তিনি বাঙ্গালীর মুক্তির আকাংখ্যাকে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতার পরিণতিতে ধাবিত করেছিলেন।মুক্তিযুদ্ধের সেই চেতনার  আলোকেই তিনি  অ-সাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাঁর সুদুরপ্রসারি ধর্মনিরপেক্ষ অ-সাম্প্রদায়িক চেতনা মুক্তি যুদ্ধে পাকিস্তানী সাম্প্রদায়িক চেতনা সম্পন্ন শক্তির বিরুদ্ধে 'বাঙ্গালীর শোষন ও শাষন মুক্তির যুদ্ধ জয়ে' অসামান্য অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু তাঁর নতুন সরকার প্রতিষ্ঠাকালিন সময়ে বাঙ্গালী মানসে প্রোথিত সর্বগ্রাহ্য উক্তনীতিকেই সাংবিধানিক ভিত্তি প্রদান করে জন আক্ষাংকার চাহিদা পূরণ করে বাঙ্গালী জাতিকে সম্মানীত  করেছিলেন।

   সুধী পাঠক বন্ধুরা, আমি আমার অনেক লেখায় দ্ব্যর্থ্যহীনভাবে বহুবার বলেছি--"বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধস্ত নতুন দেশের নতুন "অ-সাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র ব্যবস্থা" কায়েম করেছিলেন, ইহাই বাস্তব সত্য। তাঁর সর্বসাকুল্যে শাষন মেয়াদ ছিল মাত্র সাড়ে তিন বছর। ইসলাম ধর্মের  প্রচার প্রসারে প্রাতিষ্ঠানিক, অ-প্রাতিষ্ঠানিক যে সমস্ত কাজ মাত্র সাড়ে তিনবছরে তিনি সম্পন্ন করেছিলেন--তাঁর শতভাগের একভাগ কাজ '৭৫  পরবর্তী সেনাশাষক, ধর্মীয় জোটশাষক, ইসলামীশাষক, বিছমিল্লাহর শাষক, স্বৈরশাষক, তথাকথিত গনতন্ত্রের শাষনামল সব মিলিয়ে 'দীর্ঘ ৩৫ বছরে করতে পেরেছিল কি না ? আজও আমার  জানার মনোবাসনা, মনের আকুল আকুতি নিরসনকল্পে লক্ষ লক্ষ বন্ধুদের মধ্যে কেউ একজনও  এগিয়ে আসেননি, তথ্য দিয়ে প্রমান করার সাহষ দেখাতে পারেননি। তবে কি সবগুলি শাষন  ধর্মকে বিক্রি করে শোষনের হাতিয়ার নয়??

আসুন আমরা নবী ককরিম (স:) এর শাষনকালটা দেখে আসি।
নবী করিম (স:) এর নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, রাষ্ট্র শাষন, মানব ইতিহাসের প্রথম লিখিত রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি মদীনা সনদ", সর্বশেষ 'বিদায় হজ্বের' ভাষন, তাঁর সমগ্র জীবনাচার পয্যালোচনায় দেখা যায় উল্লেখিত সকল কর্মকান্ডে ধর্ম, বর্ণ গোত্র, জাতিভেদে সর্বত্র নিরপেক্ষতার লক্ষন সমূহ সুস্পষ্ট রুপে পরিস্ফুটিত ছিল। রাষ্ট্র পরিচালনা থেকে ব্যাক্তিগত জীবনাচার সবকিছুতেই ইসলামের সার্বজনীনতা, সাম্য, শান্তির ধারাবাহিকতা রক্ষিত ছিল। তাঁর সমগ্র জীবন পয্যালোচনা, আসমানী কিতাব কোরান নাজিল, পবিত্র ধর্ম ইসলামের প্রচার, ইসলামী রাষ্ট্র পত্তন, শষন ব্যবস্থা প্রনয়ন, রাষ্ট্র শাষন, যুদ্ধ জয়, ইসলামের প্রসার প্রতিটি ক্ষেত্রে ইসলাম ধর্মের মহত্ব, সার্বজনীনতা, আধুনিকতা, নিরপেক্ষতা, অর্থনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয় সাম্য, শান্তি, সুন্দরের বহি:প্রকাশ সুস্পষ্ট ভাবে পরিলক্ষিত হয়েছিল। যার ফলে- ইসলাম ধর্ম সর্বযুগের শ্রেষ্ঠ মহান আল্লাহর মনোনীত পবিত্র ধর্ম, পবিত্র আসমানী কিতাব আল-কোরান আল্লাহ প্রদত্ত সর্বশেষ ধর্মগ্রন্থ, নবী মোহাম্মদ (স:) সর্বযুগের শ্রেষ্ঠ মহামানব এবং সর্বশেষ মহানবী, ইসলামী শাষন সার্বজনীন সাম্য, নিরপেক্ষ, আধুনিক, শান্তি, সম্পৃতি, কল্যানকর, মানবসেবার উৎকৃষ্ট শাষন ব্যবস্থা হিসেবে সর্বযুগে সকল ধর্ম, বর্ণ, গোষ্টি, জাতিভেদে স্বীকৃতি পেয়েছে।

      আল্লাহ তাঁর কোরানে ইসলামকে সর্বশেষ তাঁর মনোনীত একমাত্র ধর্ম, নবী করিম(স:)কে সর্বশেষ নবী এবং "আল-কোরান" সর্বশেষ "আসমানী কিতাব" ঘোষনা করেছেন।এর পর কোন নবী পৃথিবীতে আসবেনা এবং কি কোন আসমানী কিতাবও আসবেনা। ইসলাম ধর্মকে মানবজাতির জীবন যাপনের উপযোগী পুর্ণাঙ্গ ধর্ম হিসেবে ঘোষনা করে ঐ সময়কার প্রচলিত ধর্ম, জাতি, গোত্র, বর্ণ, গোষ্টি নির্বিশেষে সকলকে ঈমান প্রতিষ্ঠিত করার নির্দেশ প্রদান করেছেন। আল্লাহর নির্দেশ পালন করে যারা ইমান এনেছেন তাঁরা ইসলাম ধর্মের অনুসারী "মুসলিম ধর্মালম্বি" হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। বিশ্বাস স্থাপনকারী ইমানদার মুসলিম ধর্মালম্বি প্রত্যেক নারী- পুরুষ শেষ বিচারের হাশরের মাঠে নবী (স:) এর উম্মত দাবিদারহেতু তাঁর সুপারিশ পাওয়ার যোগ্য হবেন। অন্য কোন ধর্মের অনুসারী যেহেতু নবীজির উম্মত নন তাঁরা তাঁর সুপারিশ পাওয়ার অধিকারি হবেনা। তবে মানব জাতির সকল ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সকলের বিচার কেয়ামতের ময়দানে অনুষ্ঠিত হওয়ার সুস্পষ্ট ইঙ্গিত--নবী তাঁর বিদায়ী ভাষনে দিয়েছেন এবং আল্লাহ তাঁর পাক কালামে ঘোষনা করেছেন। যেহেতু বিচার অনুষ্ঠানের দলিল ইসলাম ধর্ম সুস্পষ্ট ভাবে দিয়েছে সেহেতু ভাল মন্দের শাস্তিও প্রত্যেক মানব, মানবীর জন্যে নির্ধারীত হবে।মহান আল্লাহর দরবারে প্রত্যেকের পুরস্কার ও তিরস্কার নিরুপন করা অবশ্যই রয়েছে।

     উল্লেখিত কারনেই নবী (স:)তাঁর উম্মতদের হুশিয়ার করে বলেছেন--"তোমরা ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করিও না।" অতীতে বহু জাতি ধর্মনিয়ে বাড়াবাড়ি করে ধ্বংস প্রাপ্ত হয়েছে। "যার যার ধর্ম সে-সে পালন করার স্বাধীনতা" কোরানের আলোকে তিনিই দিয়েছেন। সুতারাং নিদ্বিধায় বলা যায়--"ইসলামের প্রথম যুগের রাষ্ট্র ব্যবস্থা এবং জীবনাচারে ধর্মনিরপেক্ষতার গুরুত্ব অপরিসীম, অলঙনীয় ছিল। "নবীজির রাষ্ট্রব্যবস্থাপনায় ধর্মনিরপেক্ষতা অনুসরন অনুমোদিত ছিল। নবীজির শাষনকাল, তৎপরবর্তী চার খলিফার শাষনকাল যদি ধর্মহীনতার শাষন না হয় বর্তমান যুগে ধর্মনিরপেক্ষতার শাষন ধর্মহীনতার শাষন  হবে কেন--?

      বর্তমান সরকার সংবিধান সমুন্নত রেখে সকল কর্মকান্ড পরিচালনায় অঙ্গিকারাবদ্ধ। জাতির জনকের অনুসৃত নীতি অনুসরনে সংখ্যাগরিষ্ট ধর্মের অনুসারি "ইসলামধর্ম" সহ অপরাপর ধর্মালম্বি, নৃজাতি, গোষ্টির ধর্মীয় ও সামাজিক  উন্নয়নে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর। যেহেতু বাংলাদেশে ইসলাম ধর্মালম্বি জনগোষ্টির সংখ্যাধিক্য বিদ্যমান রয়েছে এবং এই ধর্মের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানও অত্যাদিক, সঙ্গত কারনে রাষ্ট্রীয় বরাদ্ধও ইসলাম ধর্মের প্রতিপালনের ক্ষেত্রে কয়েকগুন বেশি হবে, হয়েছেও তাই।
     নিম্নে "২০১৬--১৭ সালের সরকারের গৃহিত উল্লেখযোগ্য কিছু ধর্মীয় অনুদান, ওভপ্রাতিষ্ঠানিক বরাদ্ধের খাত ওয়ারি কর্মকান্ড আপনাদের জ্ঞাতার্থে  তোলে ধরার চেষ্টা করছি।

 ২০১৬ --১৭ সালের গৃহিত প্রকল্প
---------------------------------
২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয আওতায় বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পসমূহ নিম্নরূপ:
ক্রমিক নং প্রকল্পের নাম প্রাক্কলিত ব্যয়(লক্ষ টাকায়) বাস্তবায়নকাল ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরের বরাদ্দ(লক্ষ টাকায়)
বাস্তবায়নকারী সংস্থা: ইসলামিক ফাউন্ডেশন
১. মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম (৬ষ্ঠ পর্যায়) ১৫০৫৯৩.০০ জানুয়ারী ২০১৫ হতে ডিসেম্বর ২০১৯ ২৬০০০.০০
২. মসজিদ পাঠাগার সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্প-১ম সংশোধিত ১৮৭৪.০০ জুলাই ২০১২ হতে জুন ২০১৭ ৬৮৪.০০
৩. ইসলামী পুস্তক প্রকাশনা কার্যক্রম-২য় পর্যায় প্রকল্প ২৩০০.০০ এপ্রিল ২০১৬ হতে মার্চ ২০১৯ ১৯৯.৯৪
৪. ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জাতীয় পর্যায় ও জেলা লাইব্রেরীতে পুস্তক সংযোজন ও পাঠক সেবা কার্যক্রম সম্প্রসারণ প্রকল্প ১৩৭০.০০ জুলাই ২০১৬ হতে জুন ২০১৯ --
বাস্তবায়নকারী সংস্থা: হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট
৫. মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম ৪র্থ পর্যায় ৯৯৩১.০৬ জুলাই ২০১৪ হতে জুন ২০১৭ ৩৫০০.০০
৬. ধর্মীয় এবং আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে পুরোহিত ও সেবাইদের দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প ১৪৯৯.৫৫ জানুয়ারী ২০১৫ হতে ডিসেম্বর ২০১৭ ৬০০.০০
বাস্তবায়নকারী সংস্থা: বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট
৭. প্যাগোডা ভিত্তিক প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা প্রকল্প ৩০২.৯৪ জানুয়ারী ২০১৫ হতে ডিসেম্বর ২০১৭ (তথ্যসুত্র:--ধর্মমন্ত্রনালয়)

    ২০১৬ --১৭ ইং সালের অনুদান ও সাহায্য:---
---------------------------------
    ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় হতে প্রতি বছরের ন্যায় ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দেশের প্রত্যেক মাননীয় সংসদ সদস্যের নির্বাচনী এলাকার মসজিদ সংস্কার/মেরামত/পুনর্বাসনের জন্য ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা ও মন্দির সংস্কার/মেরামত/পুনর্বাসনের জন্য  ৪০,০০০/- (চল্লিশ হাজার) টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এবং মহিলা আসনে নির্বাচিত প্রত্যেক মাননীয় সংসদ সদস্যের নির্বাচনী এলাকার মসজিদ সংস্কার/মেরামত/পুনর্বাসনের জন্য ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা ও মন্দির সংস্কার/মেরামত/পুনর্বাসনের জন্য ২০,০০০/- (বিশ হাজার) টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া উক্ত সময়ে এ মন্ত্রণালয় হতে দেশের বিভিন্ন মসজিদ, মন্দির, ইসলাম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ঈদগাহ ও কবরস্থান সংস্কার/মেরামত ও পুনর্বাসন, হিন্দু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান (মন্দির/শ্মশান) সংস্কার/মেরামত, বৌদ্ধ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান (প্যাগোডা) সংস্কার/মেরামত, খ্রিস্টান ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান (সেমিট্টি) সংস্কার/মেরামত এবং দু:স্থ মুসলিম ও দু:স্থ হিন্দু পুনর্বাসন এর জন্য অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।(তথ্যসুত্র-ধর্ম মন্ত্রনালয়)

   এইছাড়াও যুগান্তকারি কিছু পদক্ষেপ ইতিমধ্যে সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জাতির জনকের কন্যা ঘোষনা করেছেন। তম্মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি ঘোষনা একজন ইসলাম ধর্মের অনুসারী বাঙ্গালী মুসলমান হিসেবে আমাকে এবং আমার মত অনেককেই গর্বিত না করে পারেনা।

        (১) সরকার প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ এবং 'ইসলামী কালচারাল সেন্টার' করার উদ্যোগ নিয়েছে।ইসলাম ধর্মের প্রচার প্রসারের জন্যে সরকারের গৃহিত নীতির আওতায় উক্ত প্রকল্প গ্রহন ও বাস্তবায়ন করার তড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহন করার জন্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।উক্ত প্রকল্পটি সরকারের দীর্ঘ মেয়াদি মেঘা প্রকল্পের আওতায় উপজেলাব্যাপি ইসলাম ধর্মের আচার অনুষ্ঠান,শিক্ষা,গভেষনা সহ ব্যাপক কর্মকান্ড বাস্তবায়নের সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনার আওতায় করা হবে।

  (২)আলেম-ওলামাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততা বাড়ানোর জন্য তাদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে এমন একটি আলাদা অর্থনৈতিক জোন করার চিন্তা-ভাবনাও করছে সরকার।
অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে যাতে আয় বাড়ানো যায় এ জন্য শুধুমাত্র আলেম-ওলামাগণের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে ঐ অর্থনৈতিক জোন। সারা বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত একশ’টি নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চলে কোন আলেম ওলামা যদি কোন ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠান করতে চান, সে জন্যও সুযোগ দেয়ার নীতিগত সিন্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

      প্রিয় পাঠক বন্ধুরা--ধর্মভিত্তিক দল ও তাঁদের প্রেতাত্বাদের শাষনামলে পবিত্র সংবিধানের ধারা পরিবর্তন,বাতিল, সংযোজন, সংকোচন ব্যাতিরেকে ইসলাম ধর্মের উন্নয়ন, প্রসার, প্রচারে কোনপ্রকার সুদুরপ্রসারি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারেনি--মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাকোড়ায় যৎকিঞ্চিত আর্থিক বরাদ্ধ বা সাহায্য ব্যাতিরেকে। বরঞ্চ জাতির জনকের স্বল্পকালীন সরকারের ইসলাম ধর্মে নিষিদ্ধ, ধর্মীয় নীতি নৈতিকতাহীন আইন কানুন বাতিল করে দিয়েছিল। তদস্থলে অনৈতিক, ইসলামের দৃষ্টিতে নিষিদ্ধ কর্মকান্ড অনুমোদন,  রাষ্ট্রীয় আনুকুল্য, ক্ষেত্র বিশেষ প্রত্যক্ষ সহযোগিতা দিয়েছিল। যেমন-- মদ, জুয়া, পতিতাবৃত্তি, ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ করে বঙ্গবন্ধু সরকারের প্রনীত আইন সামরিক সরকার  জিয়া কতৃক বাতিল করে উক্ত বিষয়বলীর অবাধ লাইসেন্স বিতরনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ভাবে বৈধতা দিয়েছিল। উক্তরুপ ইসলামের মুখোষধারি শাষন কি কোন ধর্মপ্রান মুসলিম বা অন্যকোন ধর্মালম্বির কাম্য হ'তে পারে? এইরুপ কর্মকান্ড কি ইসলামের দৃষ্টিতে সরাসরি মোনাফেকি নয়?
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং তাঁর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন ধর্ম ধারন করে অন্তরে,, পালন করে রাসূল নির্দেশিত পথে- কখনও প্রতারনা করে না।অন্যেরা ধর্ম ধারন করেনা-প্রকাশ করে,  পালন করে রাসুলে পাকের বাতিল করা নীতি আদর্শের অনুসারিদের অনুকরনে।
  কে সত্যপথে কে বাতিল পথে---"মহান আল্লাহই ভাল জানেন।"

             ruhulaminmujumder27@gmail.com
               "জয়বাংলা      জয়বঙ্গবন্ধু"

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার সরকার মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যাতত্ব দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস ঐতিহ্যে বিতর্ক উত্থাপনের অভিযোগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন।মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে বসবাস করে,মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার মত দৃষ্টতা দেখিয়ে নি:সন্দেহে তিনি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। এহেন গর্হিত বক্তব্য প্রদানকারী বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার রাখতে পারেননা।মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত অঙ্গিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কোন দল বা জোটের রাজনীতি করারঅধিকার নীতিগতভাবেই থাকতে পারেনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি সকল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করে সর্বচ্ছ আদালতের রায় অনুযায়ী '৭২এর সংবিধান অবিকল বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবী।বাংলাদেশেরজনগন চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ এগিয়ে যাক,মুক্তিযুদ্ধে সাগরসম রক্ত ঢেলে সেই অঙ্গিকারের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেছিল।স্বাধীন বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বসবাসকরে,পরাধীনতার গান শুনতে দেশ স্বাধীন করেনি বাংলার জনগন। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৩ বছরের বিরামহীন সংগ্রামের ফসল মুক্তিযুদ্ধ।সেইযুদ্ধে উপনিবেশিক পাকিস্তানের আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত সেনাবাহিনীকে নিরস্ত্র বাঙালীরা পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছিল।সেই স্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশেপরাজিত শক্তির দোষর,তাঁদের প্রেতাত্বাদের রাজনীতি করার কোন নৈতিক অধিকার নেই।জাতির জনক তাঁদের রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগন জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলায় রাজাকারের কোন স্থান দিতে চায়না। তাই খালেদা জিয়ার ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টার দৃষ্টান্তমুলক সাজার আশা পোষন করে।কোন রাজনৈতিক সমঝোতার ফাঁদে যেন এই মামলা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়,তাঁর গ্যারান্টিও সরকারের নিকট বাংলাদেশের জনগন চায়। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু Ruhul Amin ------------------------------ খালেদা জিয়াকে সমাবেশের অনুমতি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি আশাহত----04 /01 / 0016 ইং পোষ্ট -==================================প্রখ্যাত দার্শনিক,চিন্তাবিদ সক্রেটিসকে কম বেশি আমরা সবাই জানি।সক্রেটিস কোন যুগে জম্মগ্রহন করে মানব সেবায় ব্রতি হয়ে আজও দেশে দেশে অনুকরনীয় অনুসরনীয় হয়ে আছেন তাও আমরা জানি।নিশ্চয়ই তখনকার সময় থেকে বর্তমানের সমাজ, রাষ্ট্রব্যাবস্থাপনা আরো শত গুন উন্নত,সমৃদ্ধ,সভ্য।সক্রেটিস ছুতোর, কামার ইত্যাদি প্রসঙ্গে এসে প্রশ্ন করতেন, 'তাহলে রাষ্ট্র নামক জাহাজটি বিগড়োলে কাকে দিয়ে সারাইয়ের কাজ করাবো'হাসান আজিজুল হক (সক্রেটিস) পৃ : ১৬ সক্রেটিসের এ বিখ্যাত কথপোকথন কারো অজানা নয়। আদর্শবান ন্যায়নীতিভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করবার জন্য সক্রেটিসকে হেমলক পান করতে দেয়া হয়েছিল(বিষ), তারপরও তিনি আইনের প্রতি অটুট শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন- এটাও ছিল তার নির্ভীক বিদ্রোহ। তাকে বাঁচবার সুযোগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি আইনঅবজ্ঞা করেননি, আইনে যদি তার মৃত্যুদন্ড হয় তবে তিনি অবশ্যই তা মানতে রাজি। এখানেও তার সমস্ত জীবনকর্মের অনেক গভীর দর্শন কাজ করেছে। তার উপর মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল একথা তিনি ও এথেন্সবাসী জানতেন। কিন্তু যে আইনে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলো- তিনি সে আইনকে শ্রদ্ধা জানালেন এ অর্থে মানুষকে আইনের প্রতি অনুগত থাকতে বললেন। সেই আইন কারা তৈরি করছে তা তিনি জানতেন তাতে তো আর আইন নামক বিষয়টিকে জীবন থেকে বিতাড়িত করা যায় না।"পবিত্র কোরানে পাকে ও উল্লেখ করা হয়েছে, বিধর্মী কতৃক শাষিত রাষ্ট্র ও সরকার সমুহের আইন মেনে ধর্ম কর্ম করার।এই রুপ রাষ্ট্র ব্যাবস্থায় শুক্রবারের খতবায় বিশেষ আয়াৎ সংযুক্ত আছে এবং নিয়মিত নামাজের সাথে আর ও কয় রাকাত নামাজ আদায় করার নির্দেশনা দেয়া আছে।পরিতাপের বিষয়টি হচ্ছে,গত কয়েক বছর থেকে লক্ষ করা যাচ্ছে একশ্রেনীর মানুষ রাষ্ট্রীয় আইন রীতি নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সর্ব উচ্চ আদালতের রায়কে ও অমান্য করে হরতাল অবরোধ,প্রকাশ্য আদালতের সমালোচনা করতে।শুধু তাই নয় আন্দোলনের নামেপ্রকাশ্য দিবালোকে যাত্রীভর্তি চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে জীবন্ত মানবকে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিতে।উল্লেখ করা প্রয়োজন যারা এই সমস্ত আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিলেন,এবং প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেন যে আদালতের বিরুদ্ধেও কর্মসূচি দেয়া যায়,বক্তব্য দেয়া যায়,তাঁরা কখনই কোন অপরাধীর বিচার কায্য সম্পাদন করেছেন তদ্রুপ কোন উদাহরন নেই। যেমন আমি প্রথমেই বলতে চাই ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছেন রাতের অন্ধকারে।বঙ্গবন্ধুর অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? পৃথীবিপৃষ্টের সব চাইতে নিরাপদ স্থান জেলখানা।সেখানে রাতের অন্ধকারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করাহল,তাঁরা বন্দি ছিলেন, তারপর ও তাঁদের অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে বুদ্ধিজীবিদের বাসা থেকেতুলে নিয়ে জ্যান্ত মানুষকে হত্যা করা হল, তাঁদের অপরাধ কি বিচার করে মিমাংসা করা যেতনা? খালেদ মোশারফ., কর্নেল তাহেরসহ অসংখ্য মুক্তি যুদ্ধা সেনা অফিসারকে মেজর জিয়ার নির্দেশে নির্মম নির্দয় ভাবে হত্যা করা হল, অনেককে গুলী করার পর প্রান পাখী উড়াল দেয়ার আগেই জ্যান্ত মাটি চাপা দেয়া হল, তাঁদের বিচার কি প্রচলিত সেনা আইনে করা যেতনা? অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধা,আওয়ামী লীগের নেতা,মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারি,ব্লগার,প্রকাশক,লেখক সাহিত্যিক,সাংবাদিক হত্যা করা হল,তাঁদের অপরাধ কি আইনের আওতায় এনে বিচার করা যেতনা?আন্দোলনের নামে ঘোষনা দিয়ে মানুষ হত্যা করা,সম্পদ নষ্ট করা,লুটপাট করা কি মানবতা বিরুধী অপরাধের আওতায় পড়েনা?মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ হত্যা লুটপাট,অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার হতে পারে,যুদ্ধাবস্থা ব্যাতিরেকে ঘোষনা দিয়ে তদ্রুপ কর্মে জড়িতদের এবং হুকুমদাতার বিচার কেন হবেনা? নগদ অপরাধের ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার করা কি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব নয়? নাগরীকদের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া কি রাষ্ট্রের কর্তব্যের মধ্যে পড়েনা? যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন তাঁরা কি বিচার পাওয়ার সাংবিধানীক অধিকারের মধ্যে পড়েনা?সেই যুগের সক্রেটিস যদি নীজের উপর আনীত মিথ্যা অভিযোগ জেনে শুনে মেনে নিতে পারেন,সভ্যতার চরম শীখরে দাঁড়িয়ে যারা এই যুগে আইনকে, রাষ্ট্রীয় রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রকাশ্য আন্দোলনের নামে মানুষ খুন করেছেন,সম্পদের হানী ঘটিয়েছেন তাঁরা কি সক্রেটিস যুগের আগের অধিবাসি মনে করেন নীজেদের? তাঁরা নীজেরা নিজেদের মনে করুন কিন্তু মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে কোন যুগে ফিরিয়ে নিতে চান?তাঁদের যদি এতই অসহ্য লাগে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিশেষ কিছু আদর্শের প্রতিপালনের অঙ্গিকারের ভিত্তিতে ৩০লক্ষ শহিদের আত্মদান,পৌনে চারলাখ মাবোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস- তবে জনগনকে সংঘটিত করে আর একটি গনবিপ্লব ঘটিয়ে তাঁদের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে স্বাধীনতার পক্ষের কোন মানুষ বাধাতো দিচ্ছেনা। যাদের নেতৃত্বে, যাদের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন করা হল, তাঁরাতো ক্ষমতায় আছে,তাঁদের কেন জোর পুর্বক,ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে খমতা থেকে নামাতে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে,আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে জনজীবন দুর্বিসহ করে তোলার চক্রান্ত করতে দেয়া হবে।এই সেই দিন মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা নিয়ে যিনি বিতর্ক উত্থাপনের বৃথা চেষ্টা করে জনরোষের আওতার মধ্যে এখনও রয়েছেন,তাঁর সৌখিন বাসভবন পাহারায় আপনার সরকার অতিরীক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে বাধ্য হয়েছে,তিনি কি ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে সমাবেশ করার প্রসাশনিক অনুমতি পায়। বর্তমান গনতান্ত্রিক বিশ্বের একটি দেশের উদাহরন কি কেউ দিতে পারবেন,স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা সেই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে?একটি দেশকি কেউ দেখাতে পারবে যে,সেই দেশের কোনমীমাংসিত এবং প্রতিষ্ঠিত কোন সত্যকে ৩০/৪০ বছর পর আবার জনসমক্ষে উত্থাপন করে লক্ষ লক্ষ শহিদ পরিবারের অন্তরের আগুনে"ঘি "ঢেলে দেয়ার চেষ্টা, কোন প্রতিষ্ঠিত দল বা তাঁর নেতা করেছেন? কেন এই পয্যন্ত সরকার তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা না করে উলটো সমাবেশ করে তাঁর মতবাদ প্রচারের অনুমতি দেয়া হল??তাঁরা নীজেদের এত ক্ষমতাবান মনে করেন কিভাবে? তাঁরা কি করে আবার জাতির নিকট ক্ষমা চাওয়া ছাড়াই প্রকাশ্য সভা সমাবেশ করার অধিকার পায়?কেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সংসদে ঘোষনা দিয়েও এখন পয্যন্ত আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন করছেন না? মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আপনার আশ্বাস বাংলার মানুষ অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করে।সুতারাং জনগনকে দেয়া প্রতিশ্রুতি আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন কল্পে তড়িৎ ব্যাবস্থা গ্রহনকরবেন, জনগনের এই আস্থা বিশ্বাস এখন ও অটুট রয়েছে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,শাপলা চত্বরের সেই দিনের ষড় যন্ত্র মোতাবেক যদি খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার মানুষ রাজপথে নেমে আসতেন,পরিকল্পনাঅনুযায়ী সেনা বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়েআপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারতো,আপনাকে কি জীবিত বাঁচতে দেয়া হত? আপনার পরিবারের কাওন সদস্যকে বাঁচতে দিত?আওয়ামী লীগের থানা উপজেলা পয্যায়ের কোন নেতা কি বাঁচতে দিত? তাঁরা কি সে দিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ধর্ম বিদ্বেষী সরকার উৎখাত করে ধর্মধারি সরকার কায়েমের রাজনৈতিক শ্লোগানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নামক মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ধারক বাহক জননন্দিত এইসংগঠনটিকেও জ্যান্ত কবর দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত ছিল না?আমি আজ আরও একটি বিষয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,সম্পুর্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন চরমপন্থী নেতার অবিকল নকল করা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার--,গনতান্ত্রিকদেশে,গনতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে, গনতান্ত্রীক সংগঠনের,গনতন্ত্রের পুজারি মনে করা কোন নেতা, রাজপথে আন্দোলন না করে, সীমাবদ্ধ কক্ষে ৪১দিন অবস্থান করে, ৪২ জন মানুষকে পুড়িয়ে মেরে,পরবর্তিতে বিচারের সম্মুখ্যিন না হয়ে নিয়মাতান্ত্রীক আন্দোলনের সুযোগ কোন দেশের, কোন নেতা বা কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, এমন উদাহরন কি কেউ দিতে পারবে?? ষড় যন্ত্রের জাল কোথায় বিস্তৃত ছিল তাঁর প্রমান সেই নেত্রী নীজেই তাঁর উষ্মায় প্রকাশ করে দম্ভস্বরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে সুশৃংখল বাহিনীকে তাচ্ছিল্য করে বলে ছিল"সেনাবাহিনী বেঈমান"!!!এর পরও আপনার সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আনায়ন না করে প্রকাশ্য সভার অনুমতি দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার গুলির মনে আগাত দেয়া হয়েছে আমি মনে করি। গত পৌর নির্বাচনে রায় দিয়েছে তাঁর বিচার করার,তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অর্থই হচ্ছে জনগনের ক্ষোভ তাঁর উপর থেকে এখনও কমেনি,বরঞ্চ কয়েক গুন বেড়ে জনরোষের পয্যায় পৌছে গেছে।আপনার সরকারের তাঁকে দেয়া বাড়তিনিরাপত্তাই তা প্রমান করে।সুতারাং দেশ ও জাতি এই রাজনৈতিক লাশের ভার বইবার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা।দেশের এবং জাতির প্রয়োজন বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মত শিক্ষিত, বিজ্ঞান মনস্ক,প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত সমৃদ্ধ জাতি গঠনে জ্ঞানসমৃদ্ধ, আধুনিক সভ্য দুনিয়ার নেতৃত্ব গ্রহন করার মত গুনাবলি সমৃদ্ধ নেতার। কোন অবস্থায় সক্রেটিসের আগের যুগে জাতি ফেরৎ যেতে চায়না।পরিশেষে বলতে চাই,আর কোন সংগাত নয়,এবার চাই সমৃদ্ধি।আর নয় জঙ্গিপনা,এবার চাই ধর্মনিরপেক্ষতা।আর নয় সাম্প্রদায়ীকতা,এবার চাই অসম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা।আর নয় পাকি ভাবধারা প্রতিষ্ঠা,এবার চাই মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের সফল বাস্তবায়ন। জয় আমাদের হবেই হবে, অশুভ অপশক্তির পরাজয় অবশ্যাম্ভাবি। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা