বঙ্গবন্ধু কন্যার একক সাফল্য, উজ্জ্বল ভাবমূর্তি অ-শুভ শক্তির চক্রান্ত মোকাবেলা যথেষ্ট নয়--প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ সাংগঠনিক, আদর্শিক শক্তির।
   (রুহুল আমিন মজুমদার)

        কুমিল্লার একটি চেকপোস্টে বাস তল্লাশির সময় পুলিশের ওপর হামলা করে সন্দেহভাজন দুই জঙ্গি। স্থানীয়দের সহায়তায় দুই জঙ্গিকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ। তাদের কাছ থেকে বোমা ও ছুরি উদ্ধার করা হয়। আটককৃতদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে এক জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালানো হয়।সেখান থেকে বিপুল পরিমান বোমা, বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। জঙ্গিরা ভুয়া ন্যাশানাল আই, ডি জমা দিয়ে বাড়ীটি ভাড়ায় নিয়েছিল বলে জানা গেছে। তাঁরা নীজেদেরকে কাপড় ব্যাবসায়ি পরিচয় দিয়ে বাড়ীটি ভাড়ায় নিয়েছিল। জঙ্গিদের সঙ্গি এক মহিলাকে ঐ বাড়ী থেকে আটক করা হয়েছে।

    কয়েকদিন আগে গাজীপুরের টঙ্গীতে জঙ্গি নেতা মুফতি আবদুল হান্নান ও তার সহযোগীদের বহনকারী দুটি প্রিজন ভ্যানে বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। বোমা হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে স্থানীয় বাসিন্দারা মোস্তফা কামাল নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে বোমা হামলার কথা স্বীকার করেছে। হামলায় আরও অন্তত দুজন অংশ নিয়েছিল বলে জানা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নানকে ছিনিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে এই হামলা চালানো হয়েছে। হামলাকারী আটক এক যুবকের কাছ থেকে একটি গ্রেনেড, সাতটি হাতবোমা, ছয়টি চাপাতি এবং সাত হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। বোমা হামলায় কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এ ঘটনায় পুলিশ একটি মামলা করেছে।

      মৃত্যুদ-প্রাপ্ত জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নানকে ছিনিয়ে নেয়া হতে পারে---এমন একটা আশঙ্কা আগেই ছিল। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছিল যে, নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশের (হুজিবি) জঙ্গিরা মুফতি হান্নানকে ছিনিয়ে নেয়ার ছক কষছে। কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে একাধিক সন্দেহভাজন জঙ্গিকে আটকও করে। তাদের কাছ থেকে জঙ্গি ছিনিয়ে নেয়ার পরিকল্পনার কথা জানতে পারে পুলিশ। জঙ্গি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা জানা সত্ত্বেও টঙ্গীতে প্রিজন ভ্যানে বোমা হামলার ঘটনা আগে থেকে নস্যাৎ করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। স্থানীয় জনতা সহযোগিতা না করলে হামলাকারী যুবককে হয়তো গ্রেফতার করা সম্ভব হতো না। এর আগে ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহে তিন জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। পরে এক জঙ্গিকে গ্রেফতার করে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়। বাকি দুই জঙ্গির কোন খোঁজ আজও পাওয়া যায়নি।

        জঙ্গি হামলা নিস্তেজ করা সম্ভব হয়েছে সত্য সমূলে উৎপাটন করা সম্ভব হয়নি।বর্তমান বিশ্ব পরিস্থীতিতে সম্পূর্ণ উৎপাটন সম্ভব হবেনা ইহাও বাস্তব। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ও বিদেশী অ-শক্তি কতৃক তাঁদেরকে অর্থ, অস্ত্র, সাহষ দিয়ে লালন করার রাজনৈতিক দল ও প্রভূর অভাব নেই। তাঁদের পাহারাদার চিহ্নিত রাজনৈতিক গনসংগঠন যতক্ষন বাংলাদেশের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকবে ততক্ষন রাষ্ট্র ও ইসলাম ধর্ম বিরুধী অপশক্তির আস্ফালনও বিদ্যমান থাকবে। গাজী পুরের অস্ত্র উদ্ধার ও জঙ্গি গ্রেপ্তারের সাময়িক বিরতির পর উল্লেখিত তিনটি ঘটনা স্বল্প সময়ে সংঘটিত হয়েছে। এমন সময়ে ঘটনা তিনটি ঘটেছে যখন একদিকে আমেরিকার কংগ্রেসে আইনশৃংখলা বাহিনী কতৃক বাংলাদেশের মানবধিকার লঙন বিষয় রিপোর্ট উত্থাপিত হয়েছে এবং বাংলাদেশ আই এস আই এর জঙ্গি ঘাঁটি অনুসন্ধানে ব্যাস্ত মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্র।

     অন্যদিকে বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছিল আই এস আই জঙ্গি সংগঠনের অস্তিত্ব বাংলাদেশে নেই, সংঘটিত জঙ্গি হামলা দেশের অভ্যন্তরে সৃষ্ট অপশক্তির তৎপরতা এবং সরকার সফলভাবে উক্ত কায্যক্রম নিস্তেজ করতে পেরেছে। অদূর ভবিষ্যতে রাষ্ট্র ও ধর্মবিরুধী অপশক্তি শক্তি নিয়ে মাথা তুলে দাঁড়াবার সুযোগ পাবেনা---ঠিক তখনই।

      প্রিয় পাঠক বন্ধুগন, বাঙ্গালীর চিরায়ত একটি অভ্যেস তাঁদের চারিত্রিক বৈশিষ্টে বার বার ফুটে উঠতে দেখা যায়। রাজনীতি, খেলাধূলা, পারিবারিক, ব্যাক্তিগত সাংসারিক, রাষ্ট্রীয়, সামাজিক, এবং কি বহি:বিশ্বের সাথে সম্পর্ক প্রতিটি ক্ষেত্রে লক্ষনটি যথারীতি পরিলক্ষিত হতে দেখা যায়। সেটি হচ্ছে সংগঠিত ঘটনা যখন ঘটে তখন উৎসাহ, উদ্দিপনার ভাব যথেষ্ট  লক্ষ করা যায়।কিন্তু পরক্ষনে সে বিষয়টি আগের গুরুত্ব নিয়ে তাঁর ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারেনা। হুজুগে বহু অসাধ্য কাজও  বাঙ্গালী অতীতে সাধন করতে পেরেছে কিন্তু পরবর্তিতে  অসাধ্য সাধন করা কাজটির মুল্যমান নির্ণয়ে বাঙ্গালী যথারীতি উদাসিনই থেকেছে।

     জঙ্গি উত্থান রোধ, তাঁদের হামলা রোধ, অপশক্তির আস্ফালন নিয়ন্ত্রন ইত্যাদি ধারাবাহিক অর্জিত সাফল্য সমূহ নিশ্চিতকরনে যে রাজনৈতিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন অপরিহায্য ছিল সেই রাজনৈতিক কর্মসূচি বাস্তবায়নে গড়িমসি জোট ও সরকারকে জনবিচ্ছিন্ন করে আগের অবস্থানে নিয়ে গেছে। ঘটনার প্রক্কালে সরকারের সঙ্গে জনগনের যে নিবিড় বন্ধন সৃষ্টি হয়েছিল--সময়ের ব্যবধানে সে বন্ধনে অনেকটা ছিঁড় ধরেছে বলেই মনে হয়। এই প্রসংগে জোটের এবং সরকারের সমসাময়িক দুটি উদাহরন আমি তোলে ধরতে চাই--

       প্রথমত:  সরকারের একটি ভাল উদ্যোগ ছিল শহর থেকে গ্রাম পয্যায় বিভিন্ন  সময়ে 'হারিয়ে যাওয়া পরিবারের' সন্তানদের তথ্য সংগ্রহ করার উদ্যোগটি। যথেষ্ট সাড়াও মিলেছিল উদ্যোগটির কিন্তু মাঝপথে উদ্যোগটি একেবারেই থেমে গেছে। দ্বিতীয়  উদ্যোগটি রাজনৈতিক ভাবে  ১৪ দল জোটগত ভাবেই নিয়েছিল---প্রত্যেক পাড়া, মহল্লায় জঙ্গি বিরুধি জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে গন্যমান্য ব্যাক্তি, মসজিদের ইমাম, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী সমন্বয়ে জঙ্গিবাদ বিরোধী কর্মসুচি বাস্তবায়নের লক্ষে "নাগরিক কমিটি" গঠন প্রক্রিয়া।

         তৃনমূলে জঙ্গি বাদ বিরুধী জনসচেতনতা বৃদ্ধিজনিত কর্মসূচি গ্রহন ও বাস্তবায়নের লক্ষে ১৪ দলের গৃহিত এই উদ্যোগটিও শেষাবদি  আলোর মূখ দেখেনি। উদ্যোগটি বাস্তবায়িত হলে দুটি দিক থেকে জোট এবং সরকার লাভবান হ'ত। প্রথমত: দলীয় নেতাদের দখলবাজি, মাস্তানীর কারনে ক্ষমতাসীন সরকারের জনবিচ্ছিন্নতার ঘাটতি আদর্শিক নেতাদের পদচারনায় পূরণে সহায়ক হতে পারতো। জনগনের সঙ্গে আদর্শিক নেতাদের সরাসরি আলোচনায় অংশ নেয়ার সুযোগে তাঁদের সুখ, দু:খ্যের সংঙ্গে একাত্মতার কারনে হারানো "জনসম্পৃত্ততা পুর্ণোদ্ধার করা সহজে সম্ভব হতো।" দ্বিতীয়ত: সরকার সহজেই জঙ্গি অপতৎপরতায় বিশ্বমানবতার ধর্ম  ইসলামের কোনরুপ সম্পৃত্ততা নেই--জনগনকে সম্যকভাবে ধারনা দেয়া সম্ভব হ'ত।ফলে জনঘৃনার বহি:প্রকাশের ইতিবাচক ফলের ভাগিদার পরোক্ষভাবে বর্তমান সরকারের সাফল্যের ঝুড়িতে জমা হয়ে জনসমর্থন স্ফিতই হত- আমি বিশ্বাস করি।

       ১৪ দলের রাজনৈতিক জোট ও সরকারের নেয়া উদ্যোগ যথারীতি বাস্তবায়িত না হওয়ায় ঘাপটি মেরে থাকা কচ্ছপ প্রজাতির  অ-শুভ শক্তি নতুন উদ্যোমে তাঁদের পূর্বের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে নতুন করে ক্ষেত্র সৃষ্টির সুযোগ পেয়েছে।বিগত সরকার বিরুধী আন্দোলনে হেফাজতে ইসলাম রাজপথে নামার সর্বপ্রথম  মূল রাজনীতির হাতিয়ার বানিয়েছিল--"নারী কতৃক অর্জিত সম্পত্তির অধিকার সংক্রান্ত সংসদে পাশ হওয়া 'বিলটি"। উক্ত আইন পবিত্র কোরানের আলোকে ইসলামের মুল নীতি আদর্শ পরিপন্থি তাঁর কোন যৌক্তিক ফতোয়া অদ্যাবদি তাঁদের পক্ষ থেকে উত্থাপন করা সম্ভব হয়নি। একমাত্র 'জোট ও সরকারে'র প্রচার সেলের দুর্বলতার সুযোগে অশুভ শক্তি ষড়যন্ত্রের হাতিয়ার হিসেবে উক্ত আইনকে ইস্যু হিসেবে গ্রহন করে সরলপ্রান মুসলিম ধর্মালম্বিদের বিভ্রান্ত করার উদ্যোগ নিতে পেরেছিল।

      এবার তাঁরা বেঁচে নিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের সামনে রক্ষিত--"ন্যায় বিচারের প্রতিক ভাস্কায্যটি দেবিমূর্তি নাম দিয়ে প্রতারনামূলক প্রচারের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মালম্বিদের বিভ্রান্ত করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে।  ভাস্কায্য সম্পর্কে সরকার ও জোটের নির্লিপ্ততার সুযোগে  নির্দিষ্ট সময়ে সরানোর জন্যে সরকারকে ইতিমধ্যে তাঁরা  আলটিমেটাম দেয়ার দু:সাহষও দেখিয়েছে।

     লক্ষনীয় বিষয়টি হচ্ছে--গতবার হেফাজতে ইসলাম তাঁদের নাশকতার উদ্দেশ্যে পরিচালিত জঙ্গি মিছিলের সামনের কাতারে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে "মাদ্রাসার কোমলমতি এতিম শিশুদে"র। এবার তাঁরা প্রস্তুতি নিচ্ছে "প্রতিবন্ধি ও হিজড়াদে"র মানবঢাল হিসেবে  ব্যবহার করে কায্যসিদ্ধি করার। জামায়াতি ইসলামী নাশকতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে পরিচালিত তাঁদের জঙ্গি মিছিলের সামনে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছিল তাঁদের সৃষ্ট "ছাত্রী সংস্থার প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত নারী সদস্যদে"র। এবার অবশ্য তাঁদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে পরিস্কার ধারনা এখন পয্যন্ত পাওয়া যায়নি।

      সম্মিলিত অ-শুভ শক্তির রক্ষক, প্রেতাত্বা রাজনৈতিক শক্তি "বিএনপি" এর গতবারের আন্দোলনের কর্মসূচি ছিল "দুইবারের ব্যর্থ তত্বাবধায়ক সরকার" পুর্ণবহাল করার দাবি। এবার তাঁদের আন্দোলনের কর্মসূচি "নির্দলীয় সরকারের অধিনে সাধারন নির্বাচন" অনুষ্ঠানে সরকারকে অ-সাংবিধানিক পথে যেতে বাধ্য করা।" সম্মিলিত অ-শুভশক্তির একমাত্র গোপন সসস্ত্র শক্তি জঙ্গিদের আস্তানা ছিল গতবার শহর কেন্দ্রিক মুক্তমনা লেখক সাহিত্যিক সাংবাদিক, ব্লগার হত্যার মাধ্যমে জনজীবনে আতংক সৃষ্টির অপকৌশল।অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে- এবার তাঁদের আস্তানা মফস্বল শহর, দ্বিপাঞ্চল, প্রত্যন্ত গ্রামঞ্চল কেন্দ্রিক নাশকতা,অরাজকতা সৃষ্টির মাধ্যমে সরকারকে বিব্রত রাখার অপকৌশল।

       উদ্দেশ্য একটাই--মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত অঙ্গিকার বাস্তবায়নে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারি দলের নেতৃত্বে পরিচালিত সরকারকে অ-নিয়মতান্ত্রিক, অ-গনতান্ত্রিক, অ-সাংবিধানিক উপায়ে ক্ষমতাচ্যুত করা। অ-শুভশক্তির চক্রান্তের ফসল অ-গনতান্ত্রিক অ-সাংবিধানিক উপায়ে সরকার গঠনকারি তাঁবেদার শক্তির রাজনৈতিক দুর্বলতার সুযোগে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের প্রগতিশীল রাজনীতিবীদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, তৃনমূলের নেতাকর্মীদের উপর আরো এক দফা  নিয্যাতন, হামলা, মামলা , হত্যার মাধ্যমে অগনিত বছর মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বাহিরে রাখার চক্রান্তের সফল বাস্তবায়ন।

     মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির অনেকেই যদিও নৈরাশ্যবাদের জ্বরে আক্রান্ত হয়ে নেতিবাচক বিবৃতি, বক্তৃতা, প্রার্থী নির্বাচনে আদর্শবান ত্যাগিদের বাদ দিয়ে তথাকথিত হাইব্রিড প্রার্থীদের অগ্রাধিকার প্রদানের মাধ্যমে ধর্ম নিরপেক্ষ বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদি চেতনায় উদ্ভোদ্ধ লৌহকঠিন ঐক্যে ইতিমধ্যে ফাঁটল সৃষ্টি করতে পেরেছেন ; তথাপি সম্মিলীত দেশী-বিদেশী অ-শুভশক্তি প্রয়োজনীয় মহুর্তে মুক্তিযুদ্ধের অদম্য শক্তির ঐক্যের অতীতের সফল দৃষ্টান্তকে স্মরণে রেখেছেন। তদ্রুপভাবে সৃষ্ট দেশপ্রেমে উদ্ভোদ্ধ বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদী চেতনার ঐক্যবদ্ধ অদম্য শক্তিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করে সাংবিধানিক উপায়ে নিয়মাতান্ত্রিক রাজনীতি,গনতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে ক্ষমতায় যাওয়ার সামর্থ তাঁরা  রাখেনা এবং কি কল্পনাও করেনা। দেশপ্রেমিক বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদি শক্তির চেতনা সম্পর্কে তাঁদের ভালভাবেই বুঝাপড়া আছে"।

     ১৯৭১ ইং মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিরুধীতার মাধ্যমে শুরু করা হত্যা যজ্ঞ '৭৫  ইং সালের ১৫ই আগষ্ট মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী মহাশক্তির উৎসের বংশসহ বদ করে একতরফা অপপ্রচার, চরিত্রহনন করেও "৯৬ এ উত্থান রোধ সম্ভব হয়নি। আবার "২০০১ ইং সালের ইতিহাসের জগন্যতম নিয্যাতন, হত্যা, অত্যাচার সহ দীর্ঘ '৭১--৯৬পয্যন্ত দীর্ঘ  ৩৫ বছর একটানা "রাষ্ট্রীয় শক্তির পৃষ্টপোষকতায় কখনও বা রাষ্ট্রের নীজ উদ্যোগে" হত্যাযজ্ঞ, গুপ্তহত্যা, প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা, অপপ্রচার, গুজব, চরিত্রহনন মূলক নানা বিভ্রান্তি ছড়িয়ে--যে শক্তিকে সম্পুর্ণ বদ তো দুরের ভাবনা বরঞ্চ ২০০৮ ইং সালে ভুমিধ্বস উত্থানই রোধ সম্ভব হয়নি; সেই শক্তিকে  একমাত্র একটি সাধারন নির্বাচনে পরাভূত করে ক্ষমতায় আসতে পারবে--ইহা তাঁদের চিন্তাচেতনায় কস্মিনকালেও আসেনা বা আসার কথাও নয়।
   
     এই প্রকারের ভাবনা কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে একমাত্র মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তির অভ্যন্তরে সদ্য   অনুপ্রবেশকারি তথাকথিত 'ধর্মনিরপেক্ষ বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদে' বিশ্বাসি একশ্রেনীর সুযোগ সন্ধানী অতি আদর্শবান হাইব্রিডদের রক্ষক নেতাদের। যে শ্রেনীটি দল ও সরকারের অভ্যন্তরে ঘাপটি মেরে অতিভক্তি প্রদর্শন পুর্বক  বঙ্গকন্যার এযাবৎ  নেয়া একাধিক জনসম্পৃত্ত রাজনৈতিক কর্মসূচি বানচাল করে দিতে সক্ষম হয়েছে। যে শ্রেনীটি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তির একমাত্র ভরসাস্থল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের অভ্যন্তরে ঘাপটি মেরে দলের কর্মসূচি বাস্তবায়ন প্রাক্কালে কৌশলে বাঁধা প্রদান করে দলকে জনবিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে পদে পদে।

      জোট ও সরকারের নেয়া উল্লেখিত দু'টি কর্মসূচির একটিও চলমান থাকলে অদ্য হেফাজতের ভাস্কায্য সরানোর হুমকি, জঙ্গিদের নতুন উৎপীড়ন, বিএনপি জোটের নির্দলীয় সরকারের দাবি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বার্ণিয়াকটের লম্পজম্পের কোন কারন বিদ্যমান থাকার প্রশ্নই ছিল না। বরঞ্চ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ফর্মূলা নিয়ে সরকারের সঙ্গে দেনদরবারে সময় কাটিয়ে দিতে বাধ্য হ'ত বলে আমার বিশ্বাস। বর্তমান সময়ে বিএনপি জোটের রাজনৈতিক দৈন্যদশায় এর চেয়ে বেশিকিছু আশা করার অর্থই ছিল বিএনপি  দলের রাজনীতি, হাজার হাজার নেতা লক্ষ লক্ষ কর্মীকে অরক্ষিত রেখে  বিদেশে পালিয়ে বেড়ানোর পরিস্থীতির উদ্ভব ঘটানো।

অনেকের ধারনা সাগরসম উন্নয়ন-অগ্রগতি, জাতির জনকের কন্যার বিশ্বব্যাপি গড়ে উঠা উজ্জ্বল ভাবমূর্তি ব্যবহার করে নির্বাচনী বৈতরনী পার হয়ে যাবেন।ইহা নিতান্তই দুরাশার প্রকৃষ্ট উদাহরন হতে পারে ২০০১ ইং সালের সাধারন নির্বাচন থেকে প্রকৃত শিক্ষা না নেয়া। পার্বত্য চট্রগ্রামের পাহাড়ে বিরাজমান যুগান্তরের অশান্তি শান্তিচুক্তির মাধ্যমে নিরসন, তথাকথিত অনেক আপোশহীন নেত্রী বা রাষ্ট্রনায়কের ভুলে যাওয়া 'গঙ্গার' পানি বন্টন চুক্তির ন্যায় অসাধ্য সাধনের যুগান্তকরি সাফল্যের একক অংশিদার হওয়া সত্বেও বাংলাদেশের কোন নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগের কোন প্রার্থী কোনপ্রকার প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারেনি ২০০১ ইং সালের অশুভশক্তির পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের কারনে। যে কয়টি আসন পাওয়া গিয়েছিল ঐসমস্ত আসনে শুধুমাত্র প্রার্থী না দিয়ে শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুর নৌকা প্রতিক রেখে আসলেও জনগন স্বেচ্ছায় নৌকাকেই গ্রহন করার আসন। এতবড় শিক্ষা গ্রহনকারি নেতা প্রত্যেকেই জীবিত থাকাবস্থায় "শুধুমাত্র উন্নয়নকে প্রধান্য দিয়ে দলীয় কর্মসুচিকে গৌন চিন্তা করে এড়িয়ে চলা" কতটুকু রাজনৈতিক বিচক্ষনতার পরিচায়ক হচ্ছে সময়েই তাঁর যথার্থ উত্তর দিবে।
    "জয়বাংলা    জয়বঙ্গবন্ধু"
  ruhulaminmujumder27@gmail.com

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার সরকার মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যাতত্ব দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস ঐতিহ্যে বিতর্ক উত্থাপনের অভিযোগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন।মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে বসবাস করে,মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার মত দৃষ্টতা দেখিয়ে নি:সন্দেহে তিনি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। এহেন গর্হিত বক্তব্য প্রদানকারী বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার রাখতে পারেননা।মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত অঙ্গিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কোন দল বা জোটের রাজনীতি করারঅধিকার নীতিগতভাবেই থাকতে পারেনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি সকল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করে সর্বচ্ছ আদালতের রায় অনুযায়ী '৭২এর সংবিধান অবিকল বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবী।বাংলাদেশেরজনগন চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ এগিয়ে যাক,মুক্তিযুদ্ধে সাগরসম রক্ত ঢেলে সেই অঙ্গিকারের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেছিল।স্বাধীন বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বসবাসকরে,পরাধীনতার গান শুনতে দেশ স্বাধীন করেনি বাংলার জনগন। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৩ বছরের বিরামহীন সংগ্রামের ফসল মুক্তিযুদ্ধ।সেইযুদ্ধে উপনিবেশিক পাকিস্তানের আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত সেনাবাহিনীকে নিরস্ত্র বাঙালীরা পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছিল।সেই স্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশেপরাজিত শক্তির দোষর,তাঁদের প্রেতাত্বাদের রাজনীতি করার কোন নৈতিক অধিকার নেই।জাতির জনক তাঁদের রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগন জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলায় রাজাকারের কোন স্থান দিতে চায়না। তাই খালেদা জিয়ার ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টার দৃষ্টান্তমুলক সাজার আশা পোষন করে।কোন রাজনৈতিক সমঝোতার ফাঁদে যেন এই মামলা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়,তাঁর গ্যারান্টিও সরকারের নিকট বাংলাদেশের জনগন চায়। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু Ruhul Amin ------------------------------ খালেদা জিয়াকে সমাবেশের অনুমতি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি আশাহত----04 /01 / 0016 ইং পোষ্ট -==================================প্রখ্যাত দার্শনিক,চিন্তাবিদ সক্রেটিসকে কম বেশি আমরা সবাই জানি।সক্রেটিস কোন যুগে জম্মগ্রহন করে মানব সেবায় ব্রতি হয়ে আজও দেশে দেশে অনুকরনীয় অনুসরনীয় হয়ে আছেন তাও আমরা জানি।নিশ্চয়ই তখনকার সময় থেকে বর্তমানের সমাজ, রাষ্ট্রব্যাবস্থাপনা আরো শত গুন উন্নত,সমৃদ্ধ,সভ্য।সক্রেটিস ছুতোর, কামার ইত্যাদি প্রসঙ্গে এসে প্রশ্ন করতেন, 'তাহলে রাষ্ট্র নামক জাহাজটি বিগড়োলে কাকে দিয়ে সারাইয়ের কাজ করাবো'হাসান আজিজুল হক (সক্রেটিস) পৃ : ১৬ সক্রেটিসের এ বিখ্যাত কথপোকথন কারো অজানা নয়। আদর্শবান ন্যায়নীতিভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করবার জন্য সক্রেটিসকে হেমলক পান করতে দেয়া হয়েছিল(বিষ), তারপরও তিনি আইনের প্রতি অটুট শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন- এটাও ছিল তার নির্ভীক বিদ্রোহ। তাকে বাঁচবার সুযোগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি আইনঅবজ্ঞা করেননি, আইনে যদি তার মৃত্যুদন্ড হয় তবে তিনি অবশ্যই তা মানতে রাজি। এখানেও তার সমস্ত জীবনকর্মের অনেক গভীর দর্শন কাজ করেছে। তার উপর মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল একথা তিনি ও এথেন্সবাসী জানতেন। কিন্তু যে আইনে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলো- তিনি সে আইনকে শ্রদ্ধা জানালেন এ অর্থে মানুষকে আইনের প্রতি অনুগত থাকতে বললেন। সেই আইন কারা তৈরি করছে তা তিনি জানতেন তাতে তো আর আইন নামক বিষয়টিকে জীবন থেকে বিতাড়িত করা যায় না।"পবিত্র কোরানে পাকে ও উল্লেখ করা হয়েছে, বিধর্মী কতৃক শাষিত রাষ্ট্র ও সরকার সমুহের আইন মেনে ধর্ম কর্ম করার।এই রুপ রাষ্ট্র ব্যাবস্থায় শুক্রবারের খতবায় বিশেষ আয়াৎ সংযুক্ত আছে এবং নিয়মিত নামাজের সাথে আর ও কয় রাকাত নামাজ আদায় করার নির্দেশনা দেয়া আছে।পরিতাপের বিষয়টি হচ্ছে,গত কয়েক বছর থেকে লক্ষ করা যাচ্ছে একশ্রেনীর মানুষ রাষ্ট্রীয় আইন রীতি নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সর্ব উচ্চ আদালতের রায়কে ও অমান্য করে হরতাল অবরোধ,প্রকাশ্য আদালতের সমালোচনা করতে।শুধু তাই নয় আন্দোলনের নামেপ্রকাশ্য দিবালোকে যাত্রীভর্তি চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে জীবন্ত মানবকে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিতে।উল্লেখ করা প্রয়োজন যারা এই সমস্ত আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিলেন,এবং প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেন যে আদালতের বিরুদ্ধেও কর্মসূচি দেয়া যায়,বক্তব্য দেয়া যায়,তাঁরা কখনই কোন অপরাধীর বিচার কায্য সম্পাদন করেছেন তদ্রুপ কোন উদাহরন নেই। যেমন আমি প্রথমেই বলতে চাই ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছেন রাতের অন্ধকারে।বঙ্গবন্ধুর অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? পৃথীবিপৃষ্টের সব চাইতে নিরাপদ স্থান জেলখানা।সেখানে রাতের অন্ধকারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করাহল,তাঁরা বন্দি ছিলেন, তারপর ও তাঁদের অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে বুদ্ধিজীবিদের বাসা থেকেতুলে নিয়ে জ্যান্ত মানুষকে হত্যা করা হল, তাঁদের অপরাধ কি বিচার করে মিমাংসা করা যেতনা? খালেদ মোশারফ., কর্নেল তাহেরসহ অসংখ্য মুক্তি যুদ্ধা সেনা অফিসারকে মেজর জিয়ার নির্দেশে নির্মম নির্দয় ভাবে হত্যা করা হল, অনেককে গুলী করার পর প্রান পাখী উড়াল দেয়ার আগেই জ্যান্ত মাটি চাপা দেয়া হল, তাঁদের বিচার কি প্রচলিত সেনা আইনে করা যেতনা? অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধা,আওয়ামী লীগের নেতা,মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারি,ব্লগার,প্রকাশক,লেখক সাহিত্যিক,সাংবাদিক হত্যা করা হল,তাঁদের অপরাধ কি আইনের আওতায় এনে বিচার করা যেতনা?আন্দোলনের নামে ঘোষনা দিয়ে মানুষ হত্যা করা,সম্পদ নষ্ট করা,লুটপাট করা কি মানবতা বিরুধী অপরাধের আওতায় পড়েনা?মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ হত্যা লুটপাট,অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার হতে পারে,যুদ্ধাবস্থা ব্যাতিরেকে ঘোষনা দিয়ে তদ্রুপ কর্মে জড়িতদের এবং হুকুমদাতার বিচার কেন হবেনা? নগদ অপরাধের ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার করা কি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব নয়? নাগরীকদের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া কি রাষ্ট্রের কর্তব্যের মধ্যে পড়েনা? যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন তাঁরা কি বিচার পাওয়ার সাংবিধানীক অধিকারের মধ্যে পড়েনা?সেই যুগের সক্রেটিস যদি নীজের উপর আনীত মিথ্যা অভিযোগ জেনে শুনে মেনে নিতে পারেন,সভ্যতার চরম শীখরে দাঁড়িয়ে যারা এই যুগে আইনকে, রাষ্ট্রীয় রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রকাশ্য আন্দোলনের নামে মানুষ খুন করেছেন,সম্পদের হানী ঘটিয়েছেন তাঁরা কি সক্রেটিস যুগের আগের অধিবাসি মনে করেন নীজেদের? তাঁরা নীজেরা নিজেদের মনে করুন কিন্তু মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে কোন যুগে ফিরিয়ে নিতে চান?তাঁদের যদি এতই অসহ্য লাগে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিশেষ কিছু আদর্শের প্রতিপালনের অঙ্গিকারের ভিত্তিতে ৩০লক্ষ শহিদের আত্মদান,পৌনে চারলাখ মাবোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস- তবে জনগনকে সংঘটিত করে আর একটি গনবিপ্লব ঘটিয়ে তাঁদের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে স্বাধীনতার পক্ষের কোন মানুষ বাধাতো দিচ্ছেনা। যাদের নেতৃত্বে, যাদের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন করা হল, তাঁরাতো ক্ষমতায় আছে,তাঁদের কেন জোর পুর্বক,ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে খমতা থেকে নামাতে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে,আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে জনজীবন দুর্বিসহ করে তোলার চক্রান্ত করতে দেয়া হবে।এই সেই দিন মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা নিয়ে যিনি বিতর্ক উত্থাপনের বৃথা চেষ্টা করে জনরোষের আওতার মধ্যে এখনও রয়েছেন,তাঁর সৌখিন বাসভবন পাহারায় আপনার সরকার অতিরীক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে বাধ্য হয়েছে,তিনি কি ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে সমাবেশ করার প্রসাশনিক অনুমতি পায়। বর্তমান গনতান্ত্রিক বিশ্বের একটি দেশের উদাহরন কি কেউ দিতে পারবেন,স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা সেই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে?একটি দেশকি কেউ দেখাতে পারবে যে,সেই দেশের কোনমীমাংসিত এবং প্রতিষ্ঠিত কোন সত্যকে ৩০/৪০ বছর পর আবার জনসমক্ষে উত্থাপন করে লক্ষ লক্ষ শহিদ পরিবারের অন্তরের আগুনে"ঘি "ঢেলে দেয়ার চেষ্টা, কোন প্রতিষ্ঠিত দল বা তাঁর নেতা করেছেন? কেন এই পয্যন্ত সরকার তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা না করে উলটো সমাবেশ করে তাঁর মতবাদ প্রচারের অনুমতি দেয়া হল??তাঁরা নীজেদের এত ক্ষমতাবান মনে করেন কিভাবে? তাঁরা কি করে আবার জাতির নিকট ক্ষমা চাওয়া ছাড়াই প্রকাশ্য সভা সমাবেশ করার অধিকার পায়?কেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সংসদে ঘোষনা দিয়েও এখন পয্যন্ত আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন করছেন না? মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আপনার আশ্বাস বাংলার মানুষ অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করে।সুতারাং জনগনকে দেয়া প্রতিশ্রুতি আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন কল্পে তড়িৎ ব্যাবস্থা গ্রহনকরবেন, জনগনের এই আস্থা বিশ্বাস এখন ও অটুট রয়েছে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,শাপলা চত্বরের সেই দিনের ষড় যন্ত্র মোতাবেক যদি খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার মানুষ রাজপথে নেমে আসতেন,পরিকল্পনাঅনুযায়ী সেনা বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়েআপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারতো,আপনাকে কি জীবিত বাঁচতে দেয়া হত? আপনার পরিবারের কাওন সদস্যকে বাঁচতে দিত?আওয়ামী লীগের থানা উপজেলা পয্যায়ের কোন নেতা কি বাঁচতে দিত? তাঁরা কি সে দিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ধর্ম বিদ্বেষী সরকার উৎখাত করে ধর্মধারি সরকার কায়েমের রাজনৈতিক শ্লোগানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নামক মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ধারক বাহক জননন্দিত এইসংগঠনটিকেও জ্যান্ত কবর দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত ছিল না?আমি আজ আরও একটি বিষয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,সম্পুর্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন চরমপন্থী নেতার অবিকল নকল করা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার--,গনতান্ত্রিকদেশে,গনতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে, গনতান্ত্রীক সংগঠনের,গনতন্ত্রের পুজারি মনে করা কোন নেতা, রাজপথে আন্দোলন না করে, সীমাবদ্ধ কক্ষে ৪১দিন অবস্থান করে, ৪২ জন মানুষকে পুড়িয়ে মেরে,পরবর্তিতে বিচারের সম্মুখ্যিন না হয়ে নিয়মাতান্ত্রীক আন্দোলনের সুযোগ কোন দেশের, কোন নেতা বা কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, এমন উদাহরন কি কেউ দিতে পারবে?? ষড় যন্ত্রের জাল কোথায় বিস্তৃত ছিল তাঁর প্রমান সেই নেত্রী নীজেই তাঁর উষ্মায় প্রকাশ করে দম্ভস্বরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে সুশৃংখল বাহিনীকে তাচ্ছিল্য করে বলে ছিল"সেনাবাহিনী বেঈমান"!!!এর পরও আপনার সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আনায়ন না করে প্রকাশ্য সভার অনুমতি দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার গুলির মনে আগাত দেয়া হয়েছে আমি মনে করি। গত পৌর নির্বাচনে রায় দিয়েছে তাঁর বিচার করার,তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অর্থই হচ্ছে জনগনের ক্ষোভ তাঁর উপর থেকে এখনও কমেনি,বরঞ্চ কয়েক গুন বেড়ে জনরোষের পয্যায় পৌছে গেছে।আপনার সরকারের তাঁকে দেয়া বাড়তিনিরাপত্তাই তা প্রমান করে।সুতারাং দেশ ও জাতি এই রাজনৈতিক লাশের ভার বইবার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা।দেশের এবং জাতির প্রয়োজন বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মত শিক্ষিত, বিজ্ঞান মনস্ক,প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত সমৃদ্ধ জাতি গঠনে জ্ঞানসমৃদ্ধ, আধুনিক সভ্য দুনিয়ার নেতৃত্ব গ্রহন করার মত গুনাবলি সমৃদ্ধ নেতার। কোন অবস্থায় সক্রেটিসের আগের যুগে জাতি ফেরৎ যেতে চায়না।পরিশেষে বলতে চাই,আর কোন সংগাত নয়,এবার চাই সমৃদ্ধি।আর নয় জঙ্গিপনা,এবার চাই ধর্মনিরপেক্ষতা।আর নয় সাম্প্রদায়ীকতা,এবার চাই অসম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা।আর নয় পাকি ভাবধারা প্রতিষ্ঠা,এবার চাই মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের সফল বাস্তবায়ন। জয় আমাদের হবেই হবে, অশুভ অপশক্তির পরাজয় অবশ্যাম্ভাবি। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা