সাধারন নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে--'মার্কিনীদের পূরানো অভিসন্ধি ততই বিস্তৃত হচ্ছে।'
(রুহুল আমিন মজুমদের)

    মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তর সইছেনা।তাঁদের তল্পিবাহক ব্যাতিরেকে বাংলাদেশের শাষনক্ষমতা অন্য দলের হাতে থাকুক তাঁদের কাম্য নয়,দিনে দিনে তাঁরই বহি:প্রকাশ স্পষ্ট হচ্ছে।তাঁদের এই অনাংক্ষিত কূটনৈতিক তৎপরতা শুধু বাংলাদেশে সীমাবদ্ধ তাই নয়, তৃতীয় বিশ্বের প্রায় দেশেই তাঁদের এই আচরণ লক্ষনীয়। তাঁরা বাংলাদেশের খুব বড় সাহায্যকারি দেশও নয়, বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানীকারক বা আমদানীকারক বড় বন্ধু দেশও নয়।বরঞ্চ আমাদের প্রাপ্য পোষাক রপ্তানীতে তৃতীয় বিশ্বের দেশের পণ্য রপ্তানী বাবদ যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়ার কথা ছিল তাও বিভিন্ন অজুহাতে দীর্ঘদিন হ'তে বঞ্চিত রেখেছে।

     আমেরিকার নব নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মি: ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার পর বিদেশী কূটনৈতিকদের প্রত্যাহার, চাকুরীচ্যুত, বদলি করা হলেও বাংলাদেশে নিযুক্ত দীর্ঘ ৩৫ বৎসরের কূটনৈতিক চাকুরীতে অভিজ্ঞ  মিসেস বার্ণিয়াকটকে চাকুরিচ্যুত বা  প্রত্যাহার করেনি। এবং কি তলব করে পররাষ্ট্র বিষয়ে বাংলাদেশ সম্পর্কে  তাঁদের নতুন সরকারের নীতির পরিবর্তন হবে কি হবেনা তাও ব্রিপিং দেয়ার প্রয়োজন মনে করেনি। এই থেকেই পরিষ্কার ধারনা পাওয়া যেতে পারে তাঁদের সরকারের পরিবর্তন হতে পারে, বিশ্বময় পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে পরিবর্তন হ'তে পারে কিন্তু বাংলাদেশ সম্পর্কে  মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রাক্কালে নেয়া নীতি আদর্শের পরিবর্তন--"কস্মিনকালেও হবেনা"।

  বাংলাদেশের প্রথম সরকার প্রধান জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে তাঁর সরকারকে উৎখাতের পর দীর্ঘ ৪০ বছর বাংলাদেশের অভ্যন্তরীন রাজনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতির উপর তাঁদের প্রভাব প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বাড়তে থাকে। তাঁরা বাংলাদেশ সরকারকে তেমন অর্থনৈতিক সাহায্য না দিলেও দারিদ্র বিমোচন, আর্থ সামাজিক উন্নয়নের নামে তাঁদের-ই তাঁবেদার কতিপয় ব্যর্থ রাজনীতিবীদ, চাকুরিচ্যুত সামরিক কর্মকর্তা, দুর্নীতিগ্রস্ত বেসামরিক আমলা, চরিত্রহীন নাস্তিক বুদ্ধিজীবি, ধর্মীয় বিতর্কিত একশ্রেনীর আলেম ওলামা,  বিশ্বব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত চাকুরিজীবি, আমেরিকান সরকারের সুবিধাপ্রাপ্ত কতিপয় ব্যাক্তিদের  মাধ্যমে বাংলাদেশে বেসরকারি সাহায্য সংস্থা বা তদ্রুপ নামে প্রচুর সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, মানবাধিকার সংগঠন গড়ে তোলে। তাঁদেরকে "বিশ্বব্যাংকের দরিদ্র দেশ সমুহে আর্থিক সাহায্য তহবিলের" অঢেল আর্থিক বরাদ্ধ, তাঁদের সরকারের বৈষয়িক সহযোগীতা দিয়ে স্বল্প সময়ে বাংলাদেশে  একটি বৃহৎ মুৎসুদ্ধি শ্রেনীর বিকাশ  ঘটায়।ক্রমান্বয়ে তাঁদেরকে বাংলাদেশের আর্থ রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক চালিকাশক্তিতে রুপান্তর ঘটিয়ে--"তাঁদের রাষ্ট্রীয় স্বার্থ হাসিলে উদ্যোগি হতে থাকে।"

     তাঁদের হীন প্রচেষ্টার চরম বহি:প্রকাশ ঘটে তাঁদের সৃষ্ট ষড়যন্ত্রের গর্ভে জম্ম নেয়া মেজর জিয়া কতৃক প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি কতৃক ২০০৬ ইং সালে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার নিমিত্তে সংবিধান, রীতিনীতি, প্রচলিত আইন কানুনের প্রতি সামান্যতম শ্রদ্ধাবোধের তোয়াক্কা না করে যখন বাংলাদেশের জনগনের প্রতি চরম ধৃষ্টতাপূর্ন রাজনৈতিক অবস্থান গ্রহন করে। এমতবস্থায় আমেরিকান সরকারের পক্ষ থেকে বিএনপি সরকারের সংবিধান লঙন, প্রচলিত রীতিনীতি লঙনের এহেন নিলজ্জ বেহায়ানাপনার কোনপ্রকার তিরস্কার দুরের কথা বরঞ্চ "গনপ্রজাতান্ত্রীক বাংলাদেশ সরকার"কে "মডার্ন ইসলামী প্রজাতান্ত্রীক সরকার" অভিহিত করে উৎসাহ  প্রদান করে।

       তাঁর আগে ২০০১ ইং সালে চলমান সংবিধান অনুযায়ী মেয়াদ শেষে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে গঠিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কতৃক  তত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের অব্যবহিত পরই দেশব্যাপি  আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতাকর্মীদের উপর জামায়াত, শিবির, ছাত্রদল, যুবদল কতৃক প্রশাসনের প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় ক্ষেত্র বিশেষে সরকারের প্রশাসন কতৃক যে ভয়াবহ নিয্যাতন, নিপিড়নের মধ্যযুগীয় বর্বতার নজীর স্থাপন করে আওয়ামী নিধনযজ্ঞ, এলাকাছাড়া অভি্যান সফল করা হয়েছিল তখন তথাকথিত মানবাধিকার সংস্থা সমূহের মূখ বন্ধ ছিল, চোখ অন্ধ ছিল, কান বধির ছিল। এবং কি সংখ্যা লুঘু হিন্দুদের উপর অমানষিক অত্যাচার, নিয্যাতন, নির্বিচারে হত্যা, বাড়ীঘর জ্বালিয়ে দেয়া, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুট, অগ্নিসংযোগের ন্যায় "মানবতা বিরুধী" কর্মকান্ড সংঘঠিত হলেও তথাকথিত দেশী বিদেশী মানবধিকার সংগঠন বা বিদেশী কোন সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের রক্ষা, নিদেনপক্ষে অত্যাচার বন্ধে জরুরী কোন পদক্ষেপ বা কোন প্রকার প্রশ্ন উত্থাপিত হতে দেখা যায়নি।

তাঁর আগে ১৯৯১ ইং সালে যুদ্ধ অপরাধী দল 'জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ" এর সমর্থনে বিএনপি সরকার গঠন করে একমাসের মধ্যেই কোনপ্রকার "জরুরী অবস্থা ঘোষনা ব্যাতিরে"কে সেনাবাহিনী মোতায়েন পুর্বক "অপারেশন ক্লিনহার্টের" নামে ছাত্রলীগ,  যুবলীগ, আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতাকর্মীকে তথাকথিত "হার্ট এটাকে মৃত্যু"র কারন উল্লেখ পূর্বক ধরা মাত্র "হত্যা" করা হলেও ঘুম, খুন, বিচার বহিভূত হত্যা জনিত মানবাধিকার বিষয়ক কোনপ্রকার অভিযোগ বা সেনাবাহিনী মোতায়েনের বৈধতা সম্পর্কিত কোন প্রশ্ন কোন পক্ষ থেকেই উত্থাপিত হয়নি। যদিও দেশের স্বাভাবিক অবস্থায় সেনা মোতায়েনের আন্তজাতিক কোন বিধি কোনদেশেই কখনও কায্যকর ছিলনা, এখনও নেই।

বঙ্গবন্ধুকে নির্মভাবে হত্যার ষড়যন্ত্রে তাঁদের সরকারের প্রত্যক্ষ সংযোগ বিশ্বব্যাপি সাড়া জাগানো "উইকিলিকস"র মাধ্যমে আমেরিকান গোপন নথির তথ্য ফাঁসের পর দেশে বিদেশে বঙ্গবন্ধু স্বপরিবারে হত্যায় আমেরিকা, পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ জড়িত থাকা বিষয় সকল প্রকার জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটে। তাঁর আগে সকল মহলের ধারনায় ছিল জাতির জনকের স্বপরিবারে হত্যার পিছনে ষড়যন্ত্রের মূলে পাকিস্তানের আই,এস,আই এবং আমেরিকার সি, আই,এ এর পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষ ইন্ধনে এদেশীয় কতিপয় চাকুরিচ্যুত অবসর প্রাপ্ত সেনাকর্মকর্তা জড়িত ছিল। পাকিস্তান এবং আমেরিকার সরাসরি জড়িত থাকার বস্তুনিষ্ট কোন তথ্যপ্রমান কারো হাতে ছিলনা। বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকার উচ্ছেদ এবং বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা, জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর পরিবারের অধিকাংশকে রাতের অন্ধকারে নির্মম হত্যার পর আন্তজাতিক মানবাধিকার সংস্থা বা দেশীয় মানবাধিকার সংগঠন সমূহের কোন বাক্যই মূখ থেকে বের হয়নি। এবং কি উক্ত বিচার বন্ধে সভ্যতার সকল রীতিনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে ষড়যন্ত্রী তাঁবেদার সরকার কতৃক "ইনডেমনিটি" অধ্যদেশ জারী করার পরেও না। জেলখানার অভ্যন্তরে জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পরেও কোন মানবাধিকার কর্মীর অমানবিক চেতনায় আঁচও লাগেনি।

    আরো বিস্ময়কর ব্যাপারটি হচ্ছে জাতির জনকের কন্যার উপর বার বার হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করার পরেও মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্রের কংগ্রেসে কখনই নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপন হয়নি বরঞ্চ আকারে ইঙ্গিতে দলীয় অভ্যন্তরিন কোন্দলের প্রতি ঈঙ্গিত করে বাংলাদেশের জনগনের শোকাবহ অনুভূতির প্রতি চরম অবহেলার ধৃষ্টতা প্রদর্শন করতে দ্বিধা করেনি।২১শে আগষ্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বোমা ও গুলী বৃষ্টিতে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ রক্তের সাগরে পরিণত করার পরও মার্কিনীদের প্রতিক্রিয়া ছিল শীতল। রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে হত্যাকাণ্ডের নমূনা ধুয়েমূছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হলেও তথাকথিত মানবাধিকার সংগঠনগুলি ছিল নির্বিকার। সকল পক্ষই সতর্ক প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেই দায়িত্ব সম্পন্ন করায় ছিলেন উৎগ্রিব।

       মাকিন রাষ্ট্রদূত মর্শিয়া ব্লুম বার্ণিয়াকট গত ০৯/০২/২০১৭ইং বৃহস্পতিবার সেতু মন্ত্রনালয় এক বৈঠকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অকপটে বলেছেন তাঁর এবং তাঁর সরকারের  উপলব্দি "বিচিত্র বাংলাদেশের রাজনীতি"। তিনি আরো বলেন---"তাঁর ৩৫ বছরের কূটনৈতিক জীবনে এমন রাজনৈতিক বেসামাল দেশ  দেখেননি।" ৩৫ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বার্ণিয়াকট নি:সন্দেহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্নদেশে নিয়োগ করা রাষ্ট্রদূতদের মধ্যে অন্যতম অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সেরা কূটনীতিকদের মধ্যে একজন।

বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বাপেক্ষা স্থীতিশীল পরিবেশে বার্ণিয়াকট এবং তাঁর সরকারের কংগ্রেস একের পর এক বাংলাদেশ বিষয় শোভন--অশোভন  উক্তি করে যাচ্ছেন!
     মার্কিনীদের মোড়লগীরির আন্তপার্লামেন্টারি সংস্থা বৈশ্বিক হুমকি সংক্রান্ত সিনেটের শুনানীতে সেই দেশের গোয়েন্দাদের প্রধান আরো একটি চমকপ্রদ তথ্য ফাঁস করার উদ্যোগ গ্রহন করেছেন।বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল সমূহের স্বার্থান্বেষি চরিত্রের কালদিক উম্মোচনের আহব্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন--"ঘটে যাওয়া হত্যাকান্ড সমূহে 'বিএনপি জামায়াতে'র প্রত্যক্ষ হাত রয়েছে।" বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি দেশেবিদেশে বিনষ্ট করে ক্ষমতায় যাওয়ার চক্রান্তের এমন ইতিহাস বিশ্বের কোন গনতান্ত্রিক দেশে নেই, বাংলাদেশের রাজনীতিতে সেই দৃশ্যটিও তাঁদেরকে ভাবিয়ে তুলেছে।

শেখ হাসিনা সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিকদের হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছে কিনা এমন বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার  প্রধান জেমস ক্ল্যাপার।
প্রভাবশালী বার্তা সংস্থা এপির এক প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার বৈশ্বিক হুমকির বিষয়ে মার্কিন সিনেটে অনুষ্ঠিত এক শুনানিতে দেওয়া লিখিত বক্তব্যে জেমস ক্ল্যাপার এ প্রশ্ন  তোলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিদেশি নাগরিক ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হওয়া ১১টি গুরুতর হামলার দায় স্বীকার করে নিয়েছে ইসলামিক স্টেট। এ ছাড়া ২০১৩ সাল পর্যন্ত আনসারুল্লাহ বাংলা টিম ও আল-কায়েদা বাংলাদেশের ১১ জন প্রগতিশীল লেখক ও ব্লগারকে হত্যা করেছে।

  "৪৫ বছরের বন্ধু রাজনৈতিক সংগঠনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আগাম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সরকারের উদ্দেশ্য পরিস্কারের আগেই তাঁদের পার্লামেন্টের সিনেটে বিতর্ক প্রস্তাব উত্থাপন করে বলতে চেয়েছেন বাংলাদেশের বন্ধুরাষ্ট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র----"বাংলাদেশে ২০১৩--১৫ সালের সকল হত্যা কান্ডে বিএনপি- জামায়াতের প্রচ্ছন্ন হাত রয়েছে।"

   এদিকে কানাডার বিদেশ সংক্রান্ত সর্ব উচ্চ আদালতে বিচারাধীন "পদ্মা সেতুর" অনিয়ম সংক্রান্ত দীর্ঘ শুনানীর পর সম্মিলীত বিচারক মন্ডলি সর্বসম্মত রায় দিয়ে বলেছেন--"পদ্মাসেতুতে কোনপ্রকার দুর্নীতি, ঘোষ কেলেংকারী, স্বজনপ্রীতি ঘটেনি।"  এমনতর অবস্থায় বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংক কতৃক প্রত্যাহাহৃত ঋনের সুবিধা বঞ্চিত হওয়ার কারনে ক্ষতিগ্রস্ততার বিবরন তুলে ধরে আন্তজাতিক আদালতে ক্ষতিপূরণের মামলা দায়ের বাংলাদেশের পক্ষে "আইন সঙ্গত এবং বৈশ্বিক বীধিসম্মত" বলে রায়ের অভিমতে তুলে ধরেছে।

      আমাদের স্মরণে থাকা উচিৎ--বর্তমান সরকার ২০০৯ ইং সালের অবাধ নির্বাচনে ভূমিধ্বস বিজয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাষ্ট্রিয় ক্ষমতায় ফিরে এলে সদ্য ক্ষমতা হারানো "ওবামা সরকারের বাংলাদেশের অভ্যন্তরীন বিষয়ে নগ্ন হস্তক্ষেপের একাধিক চেষ্টা জাতির জনকের কন্যার সরকার কতৃক স্বভাবসূলভ দৃড় মনোভাবের মাধ্যমে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর বর্তমান রাষ্ট্রদূত "বার্ণিয়াকট"কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করে পাঠানো হয়।" বর্তমান ট্রাম্পের নেতৃত্বে মার্কিনীদের নতুন সরকার গঠিত হলে--"অন্যান্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের প্রত্যাহার করা হলেও বার্ণিয়াকটকে প্রত্যাহার করা হয়নি।"

       মানবতাবিরুধী বিচার অনুষ্ঠান বানচালে তাঁদের সরকার ও বিরুধীদলের যৌথ প্রচেষ্টা ব্যার্থ্য হওয়ার পর,তাঁর সরকারের উচ্চ পয্যায়ের প্রতিনীধি দল বাংলাদেশ সফরে পাঠিয়ে বিচার সংক্রান্ত বিষয়ে শেখ হাছিনা সরকারের  মনোভাব পরিবর্তনের চেষ্টারত: অবস্থায় বাংলাদেশ সরকারের সাবেক মন্ত্রী জনাব "আশরাফুল ইসলাম" কতৃক সফরত: প্রতিনীধি দলের প্রধানকে উদ্দেশ্য করে "চার আনার মন্ত্রী" সম্ভোধনের মাধ্যমে চরম অবহেলার বহি:প্রকাশ ঘটালে দেশে বিদেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।দেশের অভ্যন্তরে তাঁদের নিয়োগ দেয়া তথাকথিত সুশিলগন বাংলাদেশের ভবিষ্যত রাজনীতি কন্টাকাকির্ন, মন্ত্রীর অযাচিত আচরন, কূটনৈতিক বিধিবহির্ভুত আচরণ, বাংলাদেশের উপর চরম বিপদের বোঝা তুলে দেয়ার--"বর্তমান সরকারের ষড়যন্ত্র ইত্যাদি নানাহ মন্তব্যে বাংলাদেশের জনগন ও সরকারকে বিব্রত করার চক্রান্তে লিপ্ত হয়"।

    মার্কিন সরকার তাঁদের এদেশীয়-দোষরদের মাধ্যমে ২০১৪ ইং সালের সাধারন নির্বাচনকে উপলক্ষ করে দেশব্যাপি নাশকতা, আগুন বোমায় মানুষ হত্যা, ধর্মীয় গোষ্টিগুলিকে মাঠে নামিয়ে লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি কর্মকান্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগীতার মাধ্যমে ৭২--৭৪ এর ভুমিকায় অবতির্ন হয়ে শেখ হাসিনার সরকারের উপর চরম প্রতিশোধ গ্রহন করার চেষ্টায় লিপ্ত হয়। বাংলাদেশের উপর আন্তজাতিক চাপ অব্যাহত রাখার উদ্দেশ্যে ওবামা সরকার বাংলাদেশ ভ্রমনে রেড এলার্ট জারি করে।

    জাতির জনকের কন্যার সরকার দৃডতার সঙ্গে উল্লেখিত ষড়যন্ত্র শান্তিপূর্ন ভাবে প্রতিহত করে দেশকে 'অনিবায্য গৃহযুদ্ধে'র হাত থেকে রক্ষা করে দেশের স্থীতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন। শেখ হাসিনা একদিকে দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্র মোকাবেলা, অন্যদিকে বাংলাদেশের আর্থিক সংকট মোচন, দারিদ্র নিরসন, সামাজিক বৈসম্য দুরিকরন, দেশের উন্নয়ন অগ্রগতির যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহনে কোনপ্রকার কার্পন্য বা শিথিলতা প্রদর্শন না করার নীতিতে অটল থাকেন।

        শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অর্থনৈতিক প্রধান হাতিয়ার প্রথম মেঘা প্রকল্প "পদ্মা সেতু"কে তাঁরা ইস্যু হিসেবে গ্রহন করে সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করার চক্রান্তে লিপ্ত হয় তাঁদের এদেশীয় চর 'ড. ইউনূস' গংদের মাধ্যমে।শেখ হাসিনা নিজস্ব তহবিলে মেঘা প্রকল্প " পদ্মাসেতু"  করার দৃড সংকল্প ব্যাক্ত করলে দেশে বিদেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। মার্কিনীদের এদেশীয় দোষরগন এহেন সিন্ধান্ত অলীক কল্পনা, বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক গভীর সংকটে নিমজ্জিত করার ষড়যন্ত্র ইত্যাদি নেতিবাচক প্রচার অব্যাহত রেখে জনমনে সন্দেহ অবিশ্বাস সৃষ্টির কৌশল গ্রহন করে। বাংলাদেশের অর্থনীতির আজব সব তথ্য তুলে ধরে নেতিবাচক প্রচার, সরকারের দুর্নীতির মোক্ষম সনদ ইত্যাদি ন্যাক্কারজনক অপ-প্রচার রাতবিরাতে ইলেকট্রোনিক মিডিয়া, পত্রপত্রিকা সহ অন-লাইনের হাজার হাজার পোর্টালে  অব্যাহত রাখতে দেখা যায়।

       উল্লেখিত সময়ে সরকারের অধিকাংশ নীতিনির্ধারক, বিদেশী বন্ধু ও বন্ধুরাষ্ট্র, আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতা,  কতিপয় বুদ্ধিজীবি বিভ্রান্ত হলেও শেখ হাসিনা ছিলেন নির্ভিক, দৃড, কৌশলী, ধৈয্যশীল। ষড়যন্ত্রের মাত্রা যতবেশী ঢালপালা মেলে ধরেছে 'শেখ হাসিনা'র দৃডতা ততবেশী শক্তি, সামর্থ্য, একাগ্রতার প্রতি নিবিষ্ট হতে দেখা গেছে। ফলে--সরকারের দৃড মনোবল, সততা, সৎসাহষের নিকট সকল অপ-শক্তির সম্মিলিত ষড়যন্ত্রের প্রয়াস স্তিমিত হতে বাধ্য হয়।

  বাংলাদেশের উপর শকূনের কালছায়ার মেঘ দুরিভূত হয়ে  শান্তি শৃংখলা ফিরে এলে একের পর এক বিদেশী রাষ্ট্র ও সংস্থা সমূহ সরকারের গানিতিক উন্নয়নের ধারাকে "বিশ্ববাসির রোল মডেল" জাতিসংঘ কতৃক  "ধরিত্রীর মানষকন্যা" এবং কি বিশ্বব্যাংক কতৃক তাঁদের বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুল্যায়নে "নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ" হিসেবে ইতিবাচক অর্জনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা শুরু হয়। তৎক্ষনাৎ 'ওবামা প্রসাশন' রাতারাতি "বাংলাদেশ সংক্রান্ত নীতি পরিবর্তন" করে "মানবতা বিরুধী বিচার স্বচ্ছ, সুষ্ঠ, আন্তজাতিক মানের এবং বাংলাদেশকে আগামী দিনের দক্ষিন এশিয়ার অর্থনৈতিক টাইগারের অভিধায় অভিষিক্ত করতে থাকে।

    একদিকে দেশ পরিচালনায় অভিজ্ঞ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির লাগাতার নেতৃত্ব হত্যা, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বুদ্ধিজীবি নিধন, অ-সাম্প্রদায়িক চেতনার ধারক বাহক মুক্তমনা লেখক, ব্লগার, সাহিত্যিক, সাংবাদিক হত্যা, রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি, একক বাংলাদেশী রপ্তানী পন্যের উপর শুল্ক আরোপ করে অর্থনৈতিক বিধিনিষেদের গ্যাড়াকলে নিক্ষেপ, জাতির জনকের পরিবার ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে লাগাতার গোয়েবলসীয় মিথ্যাচারের প্রশ্রয়দান ইত্যাদি অপকর্ম অব্যাহত রাখে মার্কিন রাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন সকল সরকার।

        অন্যদিকে জাতির জনকের শাষনামল থেকে অদ্যাবদি স্বাধীনতা বিরুধী শক্তির চরম  উত্থান,  মুক্তিযুদ্ধের বিরুধী শক্তিকে নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠা ও সরকারে অংশ গ্রহন নিশ্চিতকরন, সরকারের দেশ রক্ষাবাহিনী সহ একাধিক শাখা প্রশাখায় দেশবিরুধী মীরজাফর ক্রয় ও সৃষ্টি, ধর্মীয় নৈতিকতা সম্পন্ন সাধারন মসুলমান সমাজের আস্থাশীল 'আলেম ওলামাদে'র ধর্মীয় নৈতিক শক্তির চরম উত্থান ঘটিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে কৌশলে কাজে লাগানোর চক্রান্ত, সন্ত্রাসী জঙ্গিগোষ্টির উত্থানে অ-প্রকাশ্য মদদদান, চরমপন্থি মাওবাদি জলদুস্যুদের উত্থান, শান্তিবাহিনীকে প্রচ্ছন্ন সহযোগিতার মাধ্যমে আলাদা ভূখন্ড ও স্বাধীনতার দাবী উত্থাপনে সার্বিক সহযোগীতা প্রদান, বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল নিয়ে আলাদা "বঙ্গদেশ" গঠনের চক্রান্তের উস্কানী ও প্রত্যক্ষ সমর্থন,, বার্মা, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদিদের ঘাঁটি বাংলাদেশের ভুখন্ডে স্থাপন ও ভুমি ব্যাবহারে তাঁদের সৃষ্ট সরকারের প্রচেষ্টাকে সর্বাত্মক সমর্থন, নাশকতা, অস্থিরতা, রাজনৈতিক শুন্যতা সৃষ্টি, সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টির বহুবিদ প্রচেষ্টা এযাবৎকাল বাঙ্গালী জাতি রক্তের সাগরের বিনিময়ে উপলব্দি করেছে।

     মার্কিনীদের মানবতা বিরুধী, বিশ্বসমাজে ধিকৃত সকল ষড়যন্ত্র  গ্রহন ও সফল বাস্তবায়ন সত্বেও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তি জাতির জনকের জৈষ্ঠ কন্যার সুদক্ষ নেতৃত্বে মাত্র ২১ বছরের মাথায় হার না মানা  অদম্য উত্থান তাঁদের হীন মানবতা বিরুধী কূটকৌশলের দ্বারা রোধ করা সম্ভব না হওয়াই বর্তমান বাংলাদেশের স্থীতিশীল রাজনৈতিক অবস্থাকে ' "বিচিত্র রাজনৈতিক ধারা মনে হচ্ছে  বার্নিয়াকট ও তাঁর সরকারের।"

     নি:সন্দেহে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারি দল, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা, বাঙ্গালী জাতির জাতিয়তাবোধের উম্মেষদাতা, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম রাষ্ট্রনায়ক।এর আগে হাজার বছরের ইতিহাসে বাঙ্গালী জাতির আলাদা ইতিহাস, সংস্কৃতি, কৃষ্টি এবং কি আলাদা ভূখন্ড থাকা সত্বেও একদিনের জন্যেও নীজেদেরকে শাষন করার ক্ষমতা লাভ করেনি বা বাঙ্গালী জাতি স্বাধীনতার স্বাদ উপভোগ করতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুই একমাত্র প্রথম বাঙ্গালী নেতা যিনি দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে উদ্ভোদ্ধ করে পশ্চিমা শাষকদের বিতাড়ন করে স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং সেই স্বাধীন দেশের প্রথম রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে অধিষ্ঠিত হতে পেরেছিলেন।

       সঙ্গতকারনে মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের এই দেশের প্রতি মায়া সর্বাপেক্ষা বেশীই থাকবে। মা গর্ভে সন্তান ধারন করেন বলেই তাঁর কষ্ট বাবার চাইতে বেশী  থাকে এবং মায়ের আন্তরীকতাও বাবার আন্তরিকতার চাইতে হাজার গুন বেশী। সঙ্গতকারনে আওয়ামীলীগের গর্ভে জম্ম নেয়া দলের দেশপ্রেম নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের প্রশ্ন উত্থাপন সময়ের ব্যবধানে বাংলাদেশের জনগনের নিকট ফ্যাকাসে হয়ে যায়। ফলে চার দলীয় জোট সরকার, তাঁদের বিদেশী শক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ অন্যান্ন প্রভুদের নিয়ে,  বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার ষড়যন্ত্রের ভীত যতই শক্তিশালী হয়েছে--জনগনের ইস্পাত কঠিন, সুদৃড ঐক্য ততই ইস্পাত কঠিন আকার ধারন করেছে।জনতার ইস্পাত কঠিন  উপয্যপুরী আঘাতে ক্ষমতার সেই ভীত তছনছ করে মুক্তিযুদ্ধের দল, স্বাধীনতার দল, মা মাটির দল আওয়ামীলীগ এবং তাঁর নেত্রী জাতির জনকের জৈষ্ঠকন্যা শেখ হাসিনাকে ২০০৯ ইং সালের সাধারন নির্বাচনে ভুমিধ্বস বিজয়ের মালা পরিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার মসনদে ফিরিয়ে আনে।

       এমতবস্থায় তাঁদের এতদিনকার ষড়যন্ত্রের ফসল অ-শুভশক্তির পাহারাদার বিএনপিকে রাজনীতির মাঠে ধরে রাখাই তাঁদের পক্ষে অসম্ভব হতে থাকে। বহুবীদ ধারায় চেষ্টার পরেও তাঁদেরকে রাজনীতির মাঠে, জনগনের মাঝে ফিরিয়ে এনে নতুনভাবে ষড়যন্ত্রের চক তৈরীর চেষ্টা বিগত কয়েকবছর যাবত: বিভিন্নভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। চারদলীয় জোট সরকার যখন তাঁদের মনোনীত প্রেসিডেন্টকে কারো সাথে সামান্য আলোচনা ব্যতিরেকে তত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান মনোনীত করেছিল--তখন বিদেশী প্রভুদের মুখে কোন কথাই ছিলনা।

    একতরফা "সায়েদ আলী নির্বাচন কমিশন নিয়োগ" দেয়ার পরেও প্রভুরা সকলেই ছিলেন চুপ। উপোয্যপূরী চারদলীয় সরকার দুর্নীতিতে পাঁছবার প্রথম স্থান অধিকার করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিশ্বদরবারে ভুলুন্ঠিত করার পরেও বাংলাদেশকে রাজনৈতিক সুবিধাদান বন্ধ করেনি প্রভুরা। চারদলীয় জোটের সরকার বহাল তবিয়তে দোদন্ড প্রতাপে আওয়ামী নিধন আভিযান, জঙ্গিগোষ্টির নায়ক "বাংলা ভাইয়ের"  উত্থান এবং প্রকাশ্য পুলিশী পাহারায় জঙ্গিমিছিল, একযোগে ৬৪ জেলায় বোমা হামলা, ২১শে আগষ্ট প্রশাসনের সহযোগীতায় শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বোমাহামলার মাধ্যমে নারকীয় হত্যাকান্ড সংঘটিত করার পরেও বাংলাদেশ তাঁদের নিকট বিপদজ্জনক রাষ্ট্রের তালিকায় স্থান পায়নি, বরঞ্চ "মর্ডান ইসলামী" দেশ হিসেবে বাহবাই পেয়েছে।

      বাংলাদেশের বিদ্যমান বিরুধীদলের কোনপ্রকার সহযোগীতা ব্যাতিরেকে, বরঞ্চ সর্বক্ষেত্রে চরম বিরুধিতা সত্বেও এবং বিশ্বমোড়লদের খবরদারির একাধিক ইস্যুকে  বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করে জাতির জনকের কন্যা--"কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে অর্থবহ করার উদ্দেশ্যে সর্বক্ষেত্রে গনতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রেখে দেশ পরিচালনা করে চলেছেন। তিনি ইতিমধ্যে মাত্র আটবছরের শাষনে বাংলাদেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে তুলে আনতে সক্ষম হয়েছেন।

      এমনতর মহুর্তে বেগম খালেদা জিয়াকেও যদি নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয় তাহলেও তিনি তাঁকেই মানবেন কিনা যথেষ্ট সন্দেহ--" প্রশ্নটি ইতিমধ্যে জনমনে ঘুরপাক শুরু করেছে"। মুলত: তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল সরকারকে অনির্দিষ্টকালের ক্ষমতা উপভোগের সুযোগ দিয়ে নির্বাচন কমিশন,  নির্বাচনকালিন সরকার সম্পর্কে দফায় দফায় আলোচনার নামে সময়ক্ষেপন করে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার চক্রান্ত কায্যকর করে নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করা।খালেদা জিয়ার নির্বাচন কমিশন সংস্কার সংক্রান্ত প্রস্তাব লক্ষ করলেই আমার বক্তব্যের সত্যতা প্রতিষ্ঠিত হবে--আশা করি।

       না চাইতে বজ্রপাত--অসময়ে তাঁদেরকে বিব্রত, হৎচকিত, বেসামাল করে দিয়েছে এবং সকল অশুভ পরিকল্পনা ভন্ডুল করে দিয়েছে। রাজপথে বিরুধী দলের কোনরুপ আন্দোলন, সংগ্রাম, হরতাল, অবরোধ ব্যাতিরেকেই বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদান্তে সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি কতৃক সার্চ কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াকে বর্তমান সরকার সর্বাত্মক সহযোগীতা দিয়ে সফলভাবে  সরকার তাঁর নৈতিক দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করেছে।যাহা গনতান্ত্রিক সরকারের নৈতিক দায়িত্ব হিসেবে বিবেচিত এবং দেশের অভ্যন্তরে ও বহিবিশ্বে সমাদৃত হয়েছে এবং হচ্ছে।ইহাই তাঁদের নিকট সর্বাপেক্ষা বিব্রতকর বিষয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

       মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধারাই সর্বক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করবে  এবং ইহাই স্বাভাবিক। প্রধান নির্বাচন কমিশনারও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। বাংলাদেশের জনগনের আখাংকাও মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠসন্তান হিসেবে মুল্যায়িত হোক।-অ-শুভশক্তি এবং তাঁদের প্রেতাত্বারা স্বাধীন দেশের আবাহাওয়ায় বাস করে, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে জাতির জনককে স্ব-পরিবারে হত্যা করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে। সম্মিলীত অশুভচক্র দীর্ঘ ত্রিশ বছরের অধিক মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে লুটেপুটে হৃষ্টপুষ্ট হয়ে "মুক্তিযোদ্ধা নির্বাচন কমিশনারে"র প্রতি প্রকাশ্য অনাস্থা দেয়ার সাহষ দেখায়।

     স্থীতিশীল বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে অস্থীতিশীল করার লক্ষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেষ্টার কমতি পরিলক্ষিত হচ্ছেনা।ইতিমধ্যে তাঁরা বাংলাদেশের আইনশৃংখলা বাহিনীর দায়িত্বপালন করাকেও প্রশ্নের সম্মুখিন করার নিমিত্তে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।এহেন নিম্নতর রুচিবোধের পরিচয় আগে কখনই তাঁদের চারিত্রিক বৈশিষ্টে দেখা যায়নি।যতই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি তাঁদের রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক অবস্থান সুদৃড করে বাংলাদেশ বিরুধী অশুভ শক্তিকে একঘরে করার প্রক্রিয়ায় আগ্রসর হচ্ছে মার্কিনীদের রুচিবোধ ততই নিন্মগামী হতে দেখা যাচ্ছে। বার্ণিয়াকট তাঁর ঘুম হারাম করে দিনরাত ছুটাছুটি অব্যাহত রেখেছে প্রত্যেক রাজনৈতিক দল ও ব্যাক্তির ঘরের কড়া নাড়ায়।

   স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিষয়াবলী নিয়ে তাঁদের উদগ্র বাসনা পূরানার্থে অতীতে বহুরক্ত এ জাতিকে বিসর্জন দিতে হয়েছে। আর কত রক্ত ঢেলে দিলে তাঁদের অপতৎপরতা বন্ধ হবে জাতি জানতে চায়।নিলজ্জ দেশের নিলজ্জ রাষ্ট্রদূতকে আকারে ইঙ্গিতে স্বয়ং সরকার প্রধান বিভিন্ন কটুবাক্যে নিস্পেষিত করার পরও তাঁর বেহায়াপনা থামাতে পারছেন না।

      রাষ্ট্রীয় শান্তি, স্থীতিশীলতা বজায় রেখে  চলমান উন্নয়ন, অগ্রগতি নিরবচ্ছিন্ন রেখে জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের জনগনের সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি, সর্বপরি জীবনমান উন্নয়ন, উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মান নিশ্চিত করে স্বাধীনতার স্বাদ ঘরে ঘরে পৌছে দেয়ার লক্ষে তাঁদের অশুভ চক্রান্ত, বেসামাল বাক্যালাপ, প্রচ্ছন্ন হুমকি অনেক ক্ষেত্রে জাতির জনকের কন্যাকে মেনে নিতে হচ্ছে এবং হবে।

    -একক ধারার মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে অস্থীতিশীল করার চক্রান্ত নিক্সন--হেনরী কিসিঞ্জার--'সভ্যতার সকল মাপকাঠি অবজ্ঞা করে খাদ্য সাহায্যের চালান ফেরৎ নিয়ে লাখ লাখ বাঙ্গালীকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়ার ষড়যন্ত্র দিয়ে শুরু করা চক্রান্ত আজব্দি একদিনের জন্যেও   থামেনি। সম্মিলীত দেশবিরুধী অ-শুভশক্তিকে নতুন বাংলাদেশের নতুন সরকারের বিরুদ্ধে অরাজকতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে তাঁর সরকারের অর্থ ও অস্ত্র সাহায্য দেয়া থেকে আজব্দি বিভিন্নভাবে বাংলাদেশকে হেনস্তা করেই যাচ্ছে। জাতির জনকের দশবছরের উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্নকে ধুলিসাৎ করে দীর্ঘ পাঞ্চাশবছর পর তাঁর কন্যার ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নকেও বানচাল করতে ষড়যন্ত্রের জাল আজও বিস্তৃত করে চলেছে।
   
     যতই তালবাহানা করা হোকনা কেন বাংলাদেশ, বাঙ্গালী জাতি কখনই ভুলবেনা তাঁদের মুক্তিযুদ্ধে বিরুধীতার ইতিহাস, খাদ্যের চালান ফেরৎ নিয়ে লাখ লাখ বাঙ্গালী হত্যার অমানবিক ইতিহাস, বাঙ্গালী জাতি কখনই ভুলবেনা--"অবহেলা, অবজ্ঞার করুন সেইসব দিনের অমলিন স্মৃতি।" জাতির জনকের জৈষ্ঠকন্যার দৃড অঙ্গিকার--"মুক্তিযুদ্ধের এককধারার বাংলাদেশকে তাঁর পুর্বতন অবস্থানে ফিরিয়ে নিতেই হবে এবং নিবেনই--কোন অপ-শক্তি তাঁর অঙ্গিকার পূরণে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারবেনা,--'ইনশাল্লাহ'।
জয় আমাদের হবেই হবে--সন্দেহ করার কোন কারন আছে বলে মনে করিনা।
            ruhulaminmujumder27@gmail.com
             "জয়বাংলা          জয়বঙ্গবন্ধু"

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন