ষড়যন্ত্র, অপপ্রচার, গুজুব, মিথ্যা বিবৃতি প্রচার তদন্ত সাপেক্ষে প্রমানিত হলে কঠোর শাস্তির বিধান রেখে আইন প্রনয়ন সময়ের দাবি।
  (মো: রুহুল আমিন মজুমদার)

    বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যখনই বাংলাদেশের মানুষের সেবা করার সুযোগ পায় তখনই সারা বাংলাদেশটাকে গুজবের দেশে পরিণত করে একশ্রেনীর রাজনৈতিক দল তাঁদের তল্পিবাহক সুশিল। বাংলাদেশের মানুষের নিকট দলটির শাষন অপাক্তেয়, অ-প্রয়োজনী, ক্ষতিকারক, অনধিকার চর্চা, ধর্মবিদ্বেসি, লুটেরা, দুবৃত্তের শাষন, দেশ ও জনগনের প্রতিদ্বন্ধি করে গড়ে তোলার নৈমত্তিক চেষ্টা অব্যাহত রাখে। মুক্তিযুদ্ধের আগে তাঁদের অপ-প্রচারের ধরন ছিল এককেন্দ্রিক। বাংলাদেশ স্বাধীন করে লাভ হবেনা, উৎপাদনি যন্ত্র নেই--টিকবেনা, ভারতের নিকট দেশ বিক্রি করে দেয়ার জন্যেই শেখ মুজিব স্বাধীনতা চাইতেছে। শেখ মজিবুর রহমানের মা, বাবা সবাই হিন্দু, হিন্দুস্থানের প্রতি তাঁদের মনের টান বেশী ইত্যাদি ইত্যাদি।

     মুক্তিযুদ্ধের পর "৭২--৭৫ ইং সালে তাঁদের অপপ্রচারে বহুমাত্রিকতা পায়।সদ্য যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের অর্থনৈতিক দুরবস্থা, আইনশৃংখলা বাহিনীর অপ্রতুলতা, খাদ্য সংকট,  যুদ্ধকালিন "মুজিব নগর" সরকারের নিয়ন্ত্রনের বাহিরে--মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া ছোট ছোট মুক্তি যোদ্ধা  গ্রুপ গুলির অস্ত্র জমাদান না দেয়ার বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে নতুন সরকারের কায্যকর ব্যবস্থা গ্রহনে বিলম্ভের সুযোগে দেশব্যাপি অরাজকতা, নাশকতা, হত্যা, গুম, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি ন্যাক্কারজনক অপপ্রচার, নৈরাশ্যজনক গুজবের দেশে পরিণত করেছিল সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত শিশু রাষ্ট্রটির নতুন সরকারকে।

     মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময় অসংখ্য নির্বাচিত সাংসদ, আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠিত নেতা, বুদ্ধিজীবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক হত্যার পাশাপাশি লুটতরাজ, পাটের গুদামে আগুন, বঙ্গভবন ঘেরাও, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ঘেরাও, শিক্ষাঙ্গনের অরাজকতা, শিল্পকারখানায় আগুন সহ জনজীবনে প্রতিবন্ধকতার অপরাজনীতির মাধ্যমে  দেশব্যাপি অস্থীতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল তাঁরা। আইনশৃংখলা বাহিনীর অপ্রতুলতার সুযোগে তথাকথিত "গনবাহিনী" নামে প্রকাশ্য অস্ত্রহাতে  সদ্য স্বাধীন দেশের নতুন সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিল তাঁরা। সঙ্গতুকারনে আইনশৃংখলার চরম অবনতির সুযোগে চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি সমাজে নিত্যনৈমত্তিক ব্যাপারে পরিণত হয়ে পড়েছিল।

    অপর দিকে পরিকল্পিতভাবে একের পর এক গুজব ছড়িয়ে সারা দেশকে গুজুবের দেশে পরিণত করে তোলে তাঁরা। যেমন--ভারতকে বেরু বাড়ী দিয়ে দিয়েছে, শেখ কামাল ব্যাংক ডাকাতি করতে গিয়ে পায়ে গুলি খেয়েছে,, মেজর রশিদের স্ত্রীকে অপহরন করে শেখ কামাল নিয়ে গেছে, ২৫ বছরের গোলামী চুক্তি করে ভারতের নিকট বাংলাদেশকে বন্ধক দেয়া হয়েছে,  ভারতের লক্ষ লক্ষ যুবক "রক্ষিবাহিনী''তে ভর্তি হয়েছে, দেশরক্ষা বাহিনী বিলুপ্ত করে দেয়া হচ্ছে, ভারত বাংলাদেশের সব সম্পদ নিয়ে যাচ্ছে ইত্যকার নতুন নতুন গুজবের জম্ম দিয়ে জাতির জনকের পরিবারকে হত্যা করার ক্ষেত্র প্রস্তুত করে তাঁরা। অবশেষে ১৫ই আগষ্ট ১৯৭৫ ইং সালের কাল রাতে বাঙ্গালী জাতির উম্মেষ দাতা, বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা করে সমসাময়িক ইতিহাসে ন্যাক্কারজনক অধ্যায়ের সৃষ্টি করতে সক্ষম হয় খুনী চক্র মীর জাপরের দল।শুধু তাই নয় ইহজগতের শ্রেষ্ঠ নিরাপদ স্থান জেলখানায় চার জাতীয় নেতাকেও হত্যা করতে তাঁদের বিবেকে তখন বাঁধেনি।

      তাঁদের সেইদিনের গুজবের ধরন ছিল একদিকে দেশ অচল করে আওয়ামী লীগের শাষন অ-জনপ্রিয় করা অন্যদিকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আকাশসম জনপ্রিয়তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। সেইদিন প্রধান  রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে মাঠে  ছিল বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের ধারক বাহক মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার "আবদুল জলিল-আসম রবে"র নেতৃত্বে  সদ্য জম্ম নেয়া নতুন দল "জাসদ" গোপনে ছিল মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি পলাতক "জামায়াত ইসলাম পাকিস্তান'' এবং তাঁর নেতা 'গোলাম আযম' সহ  সম্মিলীত "অ-শুভ শক্তি" র আধাঁর চাকুরিচ্যুত সেনাবাহিনীর কতিপয় দিকভ্রান্ত কর্মকর্তা এবং তাঁদের পক্ষের দশ/পনর জন 'বুদ্ধিজীবি '।

    আজকের দিনে অপপ্রচার, গুজুবের ধরন নিত্য পরিবর্তিত হয়ে বহুমাত্রিক আকারে পরিধি বেড়ে  "দেশ, জনগন, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, পবিত্র ধর্ম, কৃষ্টি, সংস্কৃতি, বাঙ্গালিত্ব, উন্নয়ন, অগ্রগতি,  বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং জাতির জনকের পরিবারের জীবিত দুই কন্যা ও তাঁদের পরিবার"  পয্যন্ত বিস্তৃতি ঘটেছে। আজকের দিনে প্রধান রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে অগ্রভাগে থেকে নেতৃত্বের আসনে উপবিষ্ট আছেন তথাকথিত "বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদে"র প্রবক্তা মুক্তিযুদ্ধে  জেড ফোর্সের অধিনায়ক "মেজর জিয়ার দল বিএনপি"এবং তাঁর সঙ্গী মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত অপশক্তি "জামায়াতে ইসলাম বাংলাদেশ" এর অগনিত প্রশিক্ষন প্রাপ্ত "নেতাকর্মী" সহ কতিপয় রাজনৈতিক দলের বাংলাদেশ বিরুধী "অশুভ জোট" এবং তাঁর নেত্রী "বেগম খালেদা জিয়া ও তাঁর লুটেরা, দু:চরিত্র, অথর্ব, হাওয়া ভবনের স্বত্বাধিকারি, ষড়যন্ত্রের নায়ক, আইন-আদালত চোর--"বর্তমানে লন্ডন প্রবাসি একমাত্র পুত্রধন "তারেক জিয়া"।"

       পেছনে আছে সম্মিলিত "অশুভ শক্তি" এবং তাঁদের প্রকাশ্য রুপ '৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে পাকবাহিনীর সহযোগীতায় ভুমিষ্ট  তথাকথিত ''খারেজি মাদ্রাসা'' কেন্দ্রিক 'উলামা মাশায়েখ' নামধারি, নামের মধ্যেই আল্লাহর বিধান অমান্যকারি "হেফাজতে ইসলাম" এবং তাঁর আমীর শায়খুল হাদিছ আল্লামা "সফি হুজুর"। তাঁদের সার্বিক জাতীয় ও আন্তজাতিক সহযোহীতা, সমর্থন আদায়ে সার্বক্ষনিক তৎপর গোটা পঞ্চাশেক গভীর রাতের টকশো কেন্দ্রিক ''শুসিল" এর জোট তথাকথিত 'নাগরিক সমাজ" এবং তাঁর  প্রকাশ্য নেতা 'আমেরিকার' দালাল, রক্তখেকো, নারীলোভী, সুদখোর 'ড. ইউনূছ' এবং আই এস এস এর দালাল ড. কামাল হোসেনের "পিতৃমাতৃহীন বেজম্মা"  জামাতা বৃটেনের অধিবাসি  ''ড. ব্রাকম্যান"।

       ডেভিড বার্গম্যানকে চেনেন না তেমন মানুষ খুব একটা খুঁজে পাওয়া যাবে না। বার্গম্যান নাগরিকত্বে ব্রিটিশ আর বিবাহ সূত্রে বাংলাদেশের খ্যাতিমান আইনবিদ ড. কামাল হোসেনের জামাতা। পেশায় সাংবাদিক। নিজেকে মানবাধিকার কর্মী বলেও পরিচয় দেন। একাত্তরের ঘাতকদের বিচারের জন্য সরকার বিশেষ  ট্রাইব্যুনাল গঠন করলে বার্গম্যান তার সমালোচনা শুরু করেন। তিনি বলতে থাকেন এই ট্রাইব্যুনাল দিয়ে সুষ্ঠু বিচার সম্ভব হবে না। মুক্তিযুদ্ধে যে ত্রিশ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছেন তা তার কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়নি। তিনি এই ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের "স্বচ্ছতা আর দক্ষতা" নিয়েও দেশে ও দেশের বাইরে মন্তব্য প্রতিবেদন লিখে আদালতের দ্বারা সমালোচিত হয়েছেন। গ্রামীণ ব্যাংক আর ড. ইউনূসকে নিয়ে দেশব্যাপি  বিতর্ক শুরু হলে বার্গম্যান ড. ইউনূসের পক্ষে কলম ধরেন। বার্গম্যানের সর্বশেষ কলম যুদ্ধ ছিল "পদ্মা সেতু দুর্নীতি" বিতর্কে দেশের অন্যান্য সুশীল আর কিছু মিডিয়ার সঙ্গে একজোট হয়ে সরকার ও তৎকালীন সেতুমন্ত্রী "সৈয়দ আবুল হোসেনে"র বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা ।
    "১৯৭৫---২০১৭ ইং সালের ফেব্রুয়ারীর শেষদিন পয্যন্ত  বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বঙ্গবন্ধু পরিবারের বিরুদ্ধে হাজারো অপপ্রচার, গুজুবের পাশাপাশি নির্মম হত্যাযজ্ঞ অব্যাহত রেখে আওয়ামীলীগের অসংখ্য প্রতিষ্ঠিত নেতাকর্মী,  বুদ্ধিজীবি, মুক্তচিন্তার লেখক, সাহিত্যিক সাংবাদিক, কবি, দেশবরেন্য মুক্তিযোদ্ধা  হত্যা করা হয়েছে। অসংখ্য নেতাকর্মীর সহায় সম্পদ ধ্বংস করা হয়েছে।সংখ্যা লুগু হিন্দুদের বাড়ীঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট,  আগুন দিয়ে ভস্মিভুত করেছে। আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের  মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য করেছে।মায়ের সামনে মেয়েকে,  ভাইয়ের সামনে বোনকে ধর্ষন করতেও তাঁদের বুক কাঁপেনি।

     রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় আওয়ামীলীগের একাধিক সভা সমাবেশে হামলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে হামলা চালিয়ে গ্যাং হত্যাকান্ড ঘটিয়ে শতশত নেতাকর্মীর জীবন হরন করেছে। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে পঙ্গু জীবন যাপনে বাধ্য করেছে। এই সমস্ত হত্যাকান্ডের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ২১ এ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিচালিত গ্রেনেড, গুলিবৃষ্টি হামলায় সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সহধর্মিনী, মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বেগম আই ভি রহমান সহ ২৯ জন নেতাকর্মীকে হত্যা, অসংখ্য নেতাকর্মীকে পঙ্গু করা হয়েছে।  চট্রগ্রামের লালদিঘী ময়দানে শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিচালিত সরকারের আইন শৃংখলা বাহিনী কতৃক  উপুয্যপুরী ব্রাশ ফায়ারে ১১জন নেতাকর্মীকে হত্যা, অসংখ্য নেতাকর্মীকে পঙ্গু করা হয়।রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উপোয্যপুরি বোমা হামলার মাধ্যমে পরিচালিত  জগন্য হত্যাযজ্ঞ হাসপাতালে নেয়ার পথে ও ভর্তির পর আরো অনেকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। অসংখ্য নেতাকর্মী ও সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব রয়েছেন ঐ দিনের হত্যাযজ্ঞে মৃত্যুর তালিকায়।

      সর্বশেষ ২০১৬ ইং সালের ডিসেম্বরে  বিমান দুর্ঘটনার মাধ্যমে হত্যা চেষ্টা সহ ২৫ বারের অধিক জাতির জনকের জৈষ্ঠকন্যা, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ম 'শেখ হাসিনা' এবং তাঁর পরিবারকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। আল্লাহর অসিম রহমতে তিনি প্রতিটি হত্যাকান্ড থেকে দেশপ্রেমিক পুলিশ ও দলীয় নেতাকর্মীদের অঢেল রক্তের বিনিময়ে রক্ষা পেয়েছেন।

  "৭৫ এর পর একতরফা অপপ্রচার চালিয়ে জাতির জনকের পরিবারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে।বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এমনও গুজুব ছড়িয়ে দেয়া হয়েছিল ৩২ নং বাসভবনে বস্তায় বস্তায় টাকা, মনে মনে স্বর্ণ এবং কি শেখ কামাল ও জামালের বিয়ের স্বর্ণের মকুটও পাওয়া গেছে। অথছ ঐ সমস্ত সম্পদের বিন্দু পরিমান সম্পদ বাংলাদেশের কোন ব্যাংক বা জাদুঘরে স্থান পায়নি। আহম্মকের দল বিজ্ঞানের চরম শিখরে দাঁড়িয়ে আজও সেই সমস্ত কল্প কাহিনী রসিয়ে রসিয়ে বলে বেড়াতে দেখা যায়।শেখ কামালের কথিত ব্যাংক ডাকাতির অর্থ ঘাটতির খোঁজ আজও বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসেবে আসেনি--তারপরেও আহম্মক মোনাফেকদের বলতে শুনা যায় উক্ত আরব্য 'রজনীর কল্পকাহিনী'র বিশদ বিবরণী। মেজর ডালিমের সহধর্মিনীর কথিত কল্প কাহিনীর সত্যতা ডালিম তাঁর নীজের লেখা বইতে সবিস্তারে বর্ণনা করেছেন--মোনাফেক নিন্দুকের দল তাঁর কথাও আমলে না নিয়ে মিথ্যা অপ-প্রচার রসিয়ে রসিয়ে আজও ভাঙ্গা রেকর্ড় বাজিয়ে যাচ্ছে।

  ২০১৪--১৫ সালে অশুভ শক্তি ৭৫ এর দিনগুলীর অনুসরনে ভয়াবহ অপপ্রচার, ধ্বংস লীলা, হত্যা, গুম, খুন, আগুন সন্ত্রাসের সাথে তালমিলিয়ে সারা বাংলাদেশক গুজুবের বাংলাদেশে পরিণত করতে চেয়েছিল।একদিকে ধর্মদ্রোহিতার অভিযোগে তথাকথিত উলামা মাশায়েখদের তান্ডব, অন্যদিকে বিএনপি জোটের রাজনৈতিক কর্মসূচি। একদিকে লাগাতার অসহযোগ, অবরোধ, হরতাল, ভাংচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, আগুন বোমার তান্ডবে শত শত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যার কর্মসূচি অন্যদিকে তাঁদের সৃষ্ট জঙ্গি হামলায় মুক্তমনা লেখক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, ব্লগার হত্যায় জনজীবনে নেমে আসে ঘোর অমানিশা।

   একই সময়ে শেখ হাসিনা পরিবারের ভাবমূর্তি বিনষ্টে প্রত্যহ নতুন নতুন কল্পিত কাহিনী গুজবাকারে ছড়িয়ে দেয়ার কর্মসুচি অন্যদিকে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা দখলের আমন্ত্রন। একদিকে সরকারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ মেঘা প্রকল্প 'পদ্মাসেতু'র অর্থছাড় ছাড়া আর্থিক দুর্নীতির কল্পিত  অভিযোগ অন্য দিকে শেখ হাসিনা পুত্র 'জয়ে'র ভাবমূর্তি ধংসে কোটি কোটি টাকা লোপাটের কল্পিত কাহিনী গ্রাম থেকে গ্রামে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেয়ার মিশন বাস্তবায়ন।

  এমনতর মহুর্তে অসিম ধৈয্য, সহনশীলতা, সাহষের বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনা। তিনি একদিকে রাজনৈতিক কর্ম সুচি রাজনৈতিক ভাবে মিমাংসার উদ্যোগ গ্রহন অন্যদিকে দুর্বত্তায়ন দমনে রাষ্ট্র শক্তি প্রয়োগের নজীর বিহীন উদাহরণ সৃষ্টি করেন। তাঁর নিজস্ব দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে অরাজক পরিস্থীতি মোকাবেলায় রাজপথে নামানো থেকে বিরত থেকে অনিবায্য গৃহ যুদ্ধের হাত হতে জাতিকে রক্ষা করেন অপরদিকে রাষ্ট্রীয় বিধি মোতাবেক সন্ত্রাস, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের বিরুদ্ধে পুর্ণ রাষ্ট্রীয় শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে অশুভ শক্তির তান্ডব নিস্তেজ করার উদ্যোগ সফলতার সঙ্গে কায্যকর করতে সক্ষম হন।

    সম্মানিত পাঠক বন্ধুরা--বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এবং তাঁর নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু মুজিবের নেতৃত্বে হাজার বছরের শৃংখল ভেঙ্গে বাঙ্গালী জাতি মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে একটি স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র জম্ম দিয়েছে। মাত্র ২৩ বছরে বঙ্গবন্ধুর ক্যারিসমেটিক নেতৃত্বের গুনে নিরস্ত্র জাতি পাকিস্তানী নিরানব্বই হাজার সুসজ্জিত সসস্ত্র সেনাবাহিনীর সঙ্গে অসম সমরে লিপ্ত হয়েছিল এবং সম্পুর্ণ ভাবে শত্রুকে পরাজিত করেছিল। শুধু তাই নয় দেশী বিদেশী বাংলাদেশ বিরুধী অশুভ শক্তিকেও সঙ্গে সম্পূর্ণ পরাজিত করে জয়ী হয়েছিল।
   
     বিশ্বব্যাপি সভ্যতার ইতিহাসে এমন একটি দেশ বা জাতিও নেই এত রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন করেছে। একটি দেশও নেই ভাষা রক্ষার জন্যেও জীবন দিতে হয়েছে। একটি জাতিও নেই মুক্তির জন্য তাঁদের "মা-বোন" নিজের অমুল্য সম্পদ বিকিয়ে দিয়েছে। একজন নেতাও নেই স্বল্প সময়ে জাতিকে মুক্তির লড়াইয়ে উদ্ভোদ্ধ করতে পেরেছে। একজন নেতাও নেই বিপ্লবের কমপক্ষে সাতদিন আগেও সমুদয় স্বাধীনতা তথা মুক্তির লড়ায়ের দিকনির্দেশনা দিতে পেরেছে। একজন নেতাও নেই স্বাধিনতার আকাংখার পরিপূর্ণতার লক্ষে কমপক্ষে ২০ বছর আগে থেকে "যুদ্ধ প্রস্তুতি" গড়ে তোলেছে। একজন নেতাও নেই স্বল্প কথনে মহাকাব্যিক ভাষনের মাধ্যমে পুর্বাপর দিকনির্দেশনা দিতে পেরেছে।
   
    বিশ্বের  একটি রাজনৈতিক দলও নেই যে দলের এত সংখ্যক নেতাকর্মী আদর্শ প্রতিষ্ঠায় জীবন দিতে পেরেছে। বিশ্ব ইতিহাসে এমন কোন একক রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়না বার বার অস্তিত্ব বিলীন করে দেয়ার পরেও আবার ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে। এমন কোন রাজনৈতিক দল খুঁজে পাওয়া যায়না যে দলের নেতৃত্বে জাতি সম্পুর্ণ একতাবদ্ধ হতে পেরেছে। এমন কোন নেতা খুঁজে পাওয়া যায়না--জাতির মুক্তির লক্ষে সারাটি জীবন শত্রুর জেলখানায় বন্দি থেকেছে। একজন রাষ্ট্রপিতাও পাওয়া যাবেনা দিকভ্রান্ত সামরিক বাহিনীর হাতে স্বপরিবারে জীবন দিতে হয়েছে। একজন নেতার পরিবারও জম্মেনি যে পরিবার বংশ পস্পরায় নীজ জাতির কল্যানে সর্বস্ব হারিয়ে ব্যাপৃত রয়েছে। এমন কোন দল বা নেতা নেই বার বার জীবন দিয়ে প্রমান করেছে তাঁদের চেয়ে বেশী অন্যকোন দল বা নেতা নেই দেশকে এত বেশী ভালবাসে।

    এইসমস্ত সবকিছুই সম্ভব হয়েছে--একমাত্র বাংলাদেশ, বাঙ্গালী জাতি,  দেশ প্রেমের পরিক্ষায় বার বার উত্তিন্ন 'বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ' এবং তাঁর আদর্শিক নেতাকর্মীবৃন্দ।

    সুতারাং উপসংহারে বলতে চাই--"দেশ ও জাতির বৃহত্তর কল্যানে নৈরাশ্যবাদি অপপ্রচার ও গুজুবের গহব্বর থেকে জাতির অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে কঠিন আইনী বেষ্টনী তৈরী করা বর্তমান সময়ের দাবি। যে কোন অপ-প্রচারের উৎস্থল, গুজুবের উৎপত্তিস্থল দ্রুত চিহ্নিত সাপেক্ষে সত্যতার বিচারে বিতরনকারি ব্যাক্তি ও গোষ্টিকে আইনের আওতায় আনার সাংবিধানিক ব্যবস্থা থাকা অত্যাবশ্যক।তাঁদের সকলের জন্যে আইনি কাঠামোতে বিচারের সম্মুখ্যিন করে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির বিধান রাখা একান্তই প্রয়োজন। বারবার আওয়ামী লীগের আপামর নেতাকর্মীদের তাজা রক্ত, সম্পদহানী, মানবেতর জীবনযাপনের অভিশপ্ততার চোখের পানিতে আপনাদের ক্ষমতার মসনদ নড়বড়ে হয়ে উঠতে পারে। তাঁদের চোখের পানির সমুদ্রের বহমান স্রোত বঙ্গোবসাগরে মিলিয়ে যাওয়ার আগেই ব্যবস্থা গ্রহনের আকুতি জানিয়ে রাখলাম এই অধম--"পরিপূর্ণতায় স্বর্গ সুখের আশায়"
         "জয়বংলা    জয়বঙ্গবন্ধু"
     ruhulaminmujumder27@gmail.com

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন