'পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আই, এস' এর মুদ্রিত মুক্তিযুদ্ধের বিকৃত তথ্য সম্বলিত বই---বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তিযুদ্ধ বিরুধী বক্তব্য সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ।
  (রুহুল আমিন মজুমদার)

     ২০১৫ ইং সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিয়ে আন্দোলনের নামে অরাজকতা সৃষ্টির মাধ্যমে তৃতীয় শক্তিকে ক্ষমতায় আনতে চেয়েছিল।তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল পরিস্কার----দুর্নীতির মামলা থেকে জিয়া পরিবারকে রক্ষা, যুদ্ধপরাধের বিচার বানচাল।উক্ত দাবি আদায়ে নৈতিক শক্তির ভিত্তি হতে পারতো----আমাদের অরাজকতার কারনে যেহেতু তোমরা ক্ষমতা পেয়েছ, সেহেতু আমাদের সকল দুর্নীতি সন্ত্রাস, অরাজকতার বিরুদ্ধে রাষ্ট্র কতৃক আনীত মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। অনেকেই মনে করেন খালেদা জিয়ার উক্ত মতলব হাসিল না হওয়ার কারনে---মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের শহিদ, স্বাধীনতার ঘোষক ইত্যাদি নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে যাচ্ছেন। রাজনীতির মাঠে নিয়মিত হাজির আছেন জানান দিয়ে নেতাকর্মী, দেশবাসি ও বহি:বিশ্বকে আশ্বস্ত রাখার জন্যই বোধ হয়, জাতীয় দলের জাতীয় নেত্রী হয়েও, প্রতিনিয়ত এমন বালখিল্য মন্তব্য করে যাচ্ছেন।

      ঘটনা কিন্তু আদৌ তা নয়---খালেদা জিয়ার ঐসমস্ত মন্তব্য তাঁদের দলের আদর্শিক মন্তব্য, উৎসস্থলের মন্তব্য, তাঁদের জম্মদাতার মনের গহিনে লুকায়িত গোপন অভিসন্ধির আগাম বহি:প্রকাশ ছিল মাত্র।আমি আগেও বার কয়েক বলতে চেষ্টা করেছি বিএনপি দলের সৃষ্ট্রির উৎস বৃত্তের বাহিরে এসে বাঙ্গালী জাতি, বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধিনতাকে মেনে রাজনীতি করার মানষিকতা এখনও গড়ে উঠেনি। বঙ্গবন্ধুর রক্ত স্রোত পান করে যে কালবাঘ রাতারাতি হৃষ্টপুষ্ট হয়েছিল, সেই কালবাঘের বল কি এত তাড়াতাড়ি নি:শেষ হতে পারে?

       একাত্তরে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর দীর্ঘ ৪৬ বছরে ২৫ মার্চ কালরাত স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি, স্মরণসভা কিংবা আলোচনা সভার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসের কোন আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি ছিল না। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর আগেও দুইবার বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিল, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের জনগনের দাবির পক্ষে স্বত:স্ফুর্ত আন্দোলনও ছিল।তথাপি ২৫ মার্চ সহ মুক্তিযূদ্ধের বিশেষ কিছু দিন ও শ্লোগান সংবিধানভুক্ত, স্মরনীয়, পালনীয় করে রাখার উদ্যোগ গ্রহন করেনি।

      দীর্ঘদিন পর হলেও এই সরকারী স্বীকৃতির পথ খুলে দিয়েছে আর কেউ নয়, খোদ একাত্তরে পরাজিত শক্তি দেশ পাকিস্তান। সম্প্রতি একাত্তরের এ গণহত্যার দায় এড়িয়ে উল্টো মুক্তিবাহিনীর ওপর দায় চাপিয়ে পাকিস্তানের সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় মিথ্যা তথ্য সংবলিত একটি বই ছাপিয়ে তা বিভিন্ন দেশে প্রচার করতে থাকে পাকিস্তান। সম্প্রতি মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম কেড়ে নেয়ার অমোঘ সত্যটি অস্বীকার করে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার আইএসআইর তত্ত্বাবধানে প্রকাশিত ওই বইটি সরকারের নজরে আসলে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়।

    প্রিয় পাঠক, বাংলাদেশ সরকারের নজরে আসে বইটি বাংলাদেশে অবস্থিত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত অফিসে আসার পর।তাঁর আগে বিভিন্ন দেশে তাঁদের রাষ্ট্রদূত  অফিসের মাধ্যমে আন্তজাতিক পয্যায় বইটি ছড়িয়ে দিয়েছে পাকিস্তান।তাঁরা যখন বইটি ছড়িয়ে দেয়ার উদ্যোগ গ্রহন করে তখনই খালেদা জিয়া বাংলাদেশে বইটি প্রচারের আগাম মাঠ প্রস্তুতির বক্তব্য উত্থাপন করেছে মাত্র।বইয়ের বিষয়বস্তু সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েই তিনি বক্তব্যগুলী রাজনীতির মাঠে ছেড়ে দিয়েছিলেন।অথবা খালেদা জিয়ার নিকট আগাম কপি পাঠিয়ে ক্ষেত্র প্রস্তুতের নির্দেশনা দিয়েছিল আই এস।

       আই এসের নির্দেশীত পথেই স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর স্বাধীন বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বাস করে, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটাক্ষ করার সাহষ দেখায়। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে শাষন করার জন্যে রাজনীতি করে আবার মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনা, দিন, নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য দেয়ার সাহষ করে। এই সমস্ত সব কিছুই সম্ভব হয়েছে এবং হচ্ছে একমাত্র জাতির জনক বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর কন্যা বর্তমান প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার উদারতার কারনে।

   বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবসের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি প্রদানের দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠেছে।এই দাবি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব শ্রেণী-পেশার মানুষের নিকট ছড়িয়ে পড়েছে। পাকিস্তানের এই বিকৃত বই ছাপানোর বিষয়টি সংসদের নজরে আনেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টান্ডলীর সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। সংসদ অধিবেশনে দাঁড়িয়ে তিনি এ বিষয়টি উত্থাপন করলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানের প্রতি নিন্দা ও ধিক্কার জানিয়ে ২৫ মার্চকে জাতীয়ভাবে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিকভাবেও দিবসটির স্বীকৃতি আদায়ে জোর কূটনৈতিক তৎপরতা চালানোর ঘোষণা দেন।

  প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানী শাষক, সেনাবাহীনি এবং তাঁদের এদেশীয় দোষরদের একই অপরাধে অপরাধী বলে চিহ্নিত করেছেন।আমি মনে করি বাংলাদেশে গনহত্যার পিছনে পাকিস্তানী সেনাদের চাইতে হাজার গুনে বেশী দুষে দুষ্ট এদেশীয় তাঁদের প্রেতাত্বারা।কারন পাকিস্তানীরা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানুষ হত্যা করেছে এদেশ দাবিয়ে রেখে তাঁদের শোষন অব্যাহত রাখার স্বার্থে। তাঁরা পারেনি, পরাজিত হয়ে এদেশ ত্যাগ করেছে। এখন তাঁরা আন্তজাতিক পয্যায় কূটনৈতিক ভাবে তাঁদের প্রতিশোধ নেয়ার চেষ্টা করতে পারবে বা করে।কিন্তু এদেশীয় দোষরেরা প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের সরলপ্রান বাঙ্গালীদের বিভ্রান্ত করে তাঁদের তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টায় লিপ্ত থাকার সুযোগ রয়েছে।যেহেতু তাঁরা এদেশের অধিবাসি, এই সমাজে বসবাস করে, এই দেশের আলোবাতাসে তাঁরা নি:শ্বাস গ্রহন করে। আমরা স্বাধীনতার ৪৬ বছর পরও তাঁদের ষড়যন্ত্র করার পথ রুদ্ধ করতে পারেনি।

    মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে নেতৃত্বদানকারি দল পরপর দুইবার ক্ষমতায় আসার পরেও বুঝতে পারেনি মুক্তিযুদ্ধের বিশেষ দিন, বিশেষ কিছু ঘটনা, বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী ভাষন, মুক্তিযুদ্ধের উদ্দিপক শ্লোগানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির প্রয়োজন আছে। রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নাথাকার কারনে দীর্ঘ বছর পাকিস্তানী প্রেতাত্বাদের উক্ত বিশেষ দিনগুলীকে বিকৃতভাবে উপস্থাপনের সুযোগ ছিল। তাঁরা যথাযথভাবে সুযোগ কাজে লাগিয়েছে মাত্র। 'জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু'র স্থলে ১৫ ই আগষ্ট ব্জাতির জনকের তাজা রক্তের উপর দাঁড়িয়ে 'বাংলাদেশ জিন্দাবাদ' শ্লোগান প্রতিস্থাপন করতে পেরেছিল।, 'বাংলাদেশ বেতার'কে রেডিও বাংলাদেশ ১৫ই আগষ্ট সকালে প্রথম ঘোষনাতেই বানাতে পেরেছিল। পাকিস্তান জিন্দাবাদের স্থলে শুধু বাংলাদেশ জিন্দাবাদ এবং রেডিও পাকিস্তানের স্থলে শুধু "রেডিও বাংলাদেশ" নয়।পরবরর্তীতে, সংবিধানেরও আমূল পরিবর্তন করে পাকিস্তানি ধারায় এদেশকে নিয়ে যেতে অনেকাংশে সফল হয়েছিল।
     ২০০৯ ইং সালে ভূমিধ্বস জয় নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারি দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জাতির জনকের কন্যার নেতৃত্বে ক্ষমতায় ফিরে এলে তৎপরবর্তি স্বল্প সময়ের ব্যবধানে ইতিহাসখ্যাত  "রাষ্ট্র বনাম মাজদার হোসেন" মামলায় ঐতিহাসিক রায় প্রদান করে সুপ্রিম কোর্ট।উক্ত রায় দিতে গিয়ে প্রাসঙ্গিকভাবে অতীতের দুই "সেনাশাষকের শাষনকাল" সহ তাঁদের সকল "সংবিধান সংশোধন'' অবৈধ ঘোষনা করে এক ঐতিহাসিক রায় প্রদান করেন। সাথে সাথে উচ্চ আদালত সরকারকে কায্যকর পদক্ষেপ নিয়ে সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংশোধন পুর্বক মুল সংবিধানে ফিরে যাওয়ার পয্যবেক্ষন ও সংযোজন করে।

শেখ হাসিনার সরকার বর্তমান বাংলাদেশের সামাজিক, রাজনৈতিক অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোন বিবেচনায় আদালতের সম্পুর্ণ রায় বাস্তবায়ন না করে সংসদের মাধ্যমে কিছু সংশোধনী এনে উক্ত রায় কায্যকর করেন।সরকার মোক্ষম সুযোগ পেয়েও সর্বদিক বিবেচনা করে আদালতের রায় গ্রহন বর্জনের মাধ্যমে দেশের আপামর জনগনের মনের ভাষারই মায্যদা প্রদান করেছিল, আমি মনে করি।

     বানর না মানে মনিবের কিছুক্ষন আগের আদর সেবা--সুযোগ পেলেই উঠে কাঁধে, লাগিয়ে দেয় লম্বা নখের আঁছড়। "শেখ হাসিনার সরকারে"র বেলায়ও হয়েছে ঠিক তাই। সংসদে হাইকোর্টের রায় বিল অনুসারে পাশ হওয়ার অব্যাবহিত পরেই আন্দোলনের নামে তাঁরা নামে নাশকতা, অরাজকতা, সন্ত্রাস, আগুনবোমা, পবিত্র কোরানে আগুন দেয়ার ন্যাক্কারজনক সব কর্মকান্ডে। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল পরিস্কার--আইন শৃংখলা অবনতির মাধ্যমে তৃতীয় শক্তিকে ক্ষমতায় আনার ষড়যন্ত্র। উক্ত আন্দোলন স্তিমিত হতে না হতে আবার আসে মোক্ষম সুযোগ "রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম" পবিত্র সংবিধানে সংযোজন করার মানব সভ্যতার ইতিহাসে বিরল ঘটনা "আদালতে মামলার শুনানী চলাকালে রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন"। বর্তমানেও তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে ন্যায় বিচারের প্রতিক হাইকোর্টের সামনে স্থাপিত ভাস্কয্যটি সরানোর জন্যে। "রাষ্ট্র বনাম মাজদার হোসেন" ঐতিহাসিক হাইকোর্টের রায় অবিকল সংবিধানে সংযোজিত হলে তাঁদের আজকের ষড়যন্ত্রের কোন পথ কি খোলা থাকতো?
 
প্রিয় পাঠক, এ প্রসংগে ১৪ মার্চ ২০১৭ দৈনিক জনকন্ঠের সম্পাদকীতে যা বলা হয়েছে তার অংশ বিশেষ এখানে উদ্ধৃত করছি। “বিশ শতকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংঘটিত হয়েছে গণহত্যা। এর মধ্যে বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, গুয়েতেমালা, চিলি, বুরুন্ডিসহ বিভিন্ন দেশে গণহত্যা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে বাংলাদেশে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনও বলেছে, মানব সভ্যতার ইতিহাসে যতগুলো গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে; তাতে অল্প সময়ের মধ্যে সব থেকে বেশিসংখ্যক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে। প্রতিদিন গড়ে ছয় থেকে বারো হাজার বাঙালীকে খুন করা হয়েছে। পঁচিশ মার্চ থেকে ষোলো ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন বারো হাজার হিসেবে নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩২ লাখ ৪ হাজার।

       বাংলাদেশে গণহত্যা পরিচালনাকারী খোদ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর অধিনায়ক "যুদ্ধাপরাধী আবদুল্লাহ নিয়াজি" তার ‘বিট্রেয়াল অব ইস্ট পাকিস্তান’ গ্রন্থে মন্তব্য করেছেন--"পঁচিশে মার্চের সামরিক অভিযান বুখারা ও বাগদাদে চেঙ্গিস খান ও হালাকু খানের গণহত্যার চেয়েও বেশি নিষ্ঠুর ছিল।" স্বয়ং গণহত্যাকারী প্রধান নিজেই যখন দাবি করছেন, স্পষ্ট হয় বাংলাদেশে তাদের নৃশংসতার মাত্রা কতটুকু ছিল। ১৯৭১ সালের পঁচিশ মার্চ এক রাতে ‘অপারেশন সার্চ লাইট’-এর নামে হানাদাররা বাংলাদেশে লক্ষাধিক বাঙালীকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এ হত্যাপ্রক্রিয়া অব্যাহত ছিল ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত গণহারে নারীদের ওপর চালানো হয়েছে পাশবিক নির্যাতন। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসর শান্তি কমিটি, রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীর সেসব পৈশাচিক বর্বরতা গণহত্যার ইতিহাসে এক ভয়াবহতম ঘটনা। পঁচিশে মার্চের গণহত্যা শুধু এক রাতের হত্যাকাণ্ডই ছিল না, এটা ছিল বিশ্বসভ্যতার জঘন্যতম হত্যাকান্ডের সূচনা। এর পর নয় মাসে পাকিস্তানী হানাদাররা ত্রিশ লাখ নিরপরাধ নারী-পুরুষ শিশুকে জঘন্যভাবে হত্যা করে।”

     মহান জাতীয় সংসদে দেরিতে হলেও ভয়াল ২৫ মার্চকে জাতীয় গনহত্যা দিবস পালনের আইন পাশ হয়েছে। মহান সংসদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ি মন্ত্রীপরিষদ উক্ত "২৫ মার্চকে গনহত্যা দিবস" পালন অনুমোদন দিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার অনুমোদন দেয়ার অর্থ রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে সকল রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উক্ত দিবস পালন করতে এই বছর থেকে বাধ্য। কিন্তু দু:খ্যজনক হলেও সত্য মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে রাজনীতি করে যারা ক্ষমতা দীর্ঘদিন উপভোগ করেছে এবং আগামীতেও ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখে তাঁদের মধ্যে বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি সহ তাঁর বিশদলীয় জোটের পক্ষ থেকে দিবসটি পালন উপলক্ষে কোনপ্রকার তোড়জোড় লক্ষ করা যাচ্ছেনা। দেশেবিদেশে স্বীকৃত, মহান সংসদে অনুমোদিত, হত্যাকারি কতৃক স্বিকৃত, বাংলাদেশ সরকার কতৃক ঘোষিত ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ এর ভয়াল গনহত্যাকে অস্বীকার করেও কি মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে তাঁরা রাজনীতি করার অধিকার ভোগ করতে পারবে?
 ruhulaminmujumder27@gmail.com
    "জয়বাংলা    জয়বঙ্গবন্ধু"

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার সরকার মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যাতত্ব দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস ঐতিহ্যে বিতর্ক উত্থাপনের অভিযোগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন।মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে বসবাস করে,মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার মত দৃষ্টতা দেখিয়ে নি:সন্দেহে তিনি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। এহেন গর্হিত বক্তব্য প্রদানকারী বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার রাখতে পারেননা।মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত অঙ্গিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কোন দল বা জোটের রাজনীতি করারঅধিকার নীতিগতভাবেই থাকতে পারেনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি সকল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করে সর্বচ্ছ আদালতের রায় অনুযায়ী '৭২এর সংবিধান অবিকল বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবী।বাংলাদেশেরজনগন চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ এগিয়ে যাক,মুক্তিযুদ্ধে সাগরসম রক্ত ঢেলে সেই অঙ্গিকারের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেছিল।স্বাধীন বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বসবাসকরে,পরাধীনতার গান শুনতে দেশ স্বাধীন করেনি বাংলার জনগন। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৩ বছরের বিরামহীন সংগ্রামের ফসল মুক্তিযুদ্ধ।সেইযুদ্ধে উপনিবেশিক পাকিস্তানের আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত সেনাবাহিনীকে নিরস্ত্র বাঙালীরা পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছিল।সেই স্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশেপরাজিত শক্তির দোষর,তাঁদের প্রেতাত্বাদের রাজনীতি করার কোন নৈতিক অধিকার নেই।জাতির জনক তাঁদের রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগন জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলায় রাজাকারের কোন স্থান দিতে চায়না। তাই খালেদা জিয়ার ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টার দৃষ্টান্তমুলক সাজার আশা পোষন করে।কোন রাজনৈতিক সমঝোতার ফাঁদে যেন এই মামলা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়,তাঁর গ্যারান্টিও সরকারের নিকট বাংলাদেশের জনগন চায়। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু Ruhul Amin ------------------------------ খালেদা জিয়াকে সমাবেশের অনুমতি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি আশাহত----04 /01 / 0016 ইং পোষ্ট -==================================প্রখ্যাত দার্শনিক,চিন্তাবিদ সক্রেটিসকে কম বেশি আমরা সবাই জানি।সক্রেটিস কোন যুগে জম্মগ্রহন করে মানব সেবায় ব্রতি হয়ে আজও দেশে দেশে অনুকরনীয় অনুসরনীয় হয়ে আছেন তাও আমরা জানি।নিশ্চয়ই তখনকার সময় থেকে বর্তমানের সমাজ, রাষ্ট্রব্যাবস্থাপনা আরো শত গুন উন্নত,সমৃদ্ধ,সভ্য।সক্রেটিস ছুতোর, কামার ইত্যাদি প্রসঙ্গে এসে প্রশ্ন করতেন, 'তাহলে রাষ্ট্র নামক জাহাজটি বিগড়োলে কাকে দিয়ে সারাইয়ের কাজ করাবো'হাসান আজিজুল হক (সক্রেটিস) পৃ : ১৬ সক্রেটিসের এ বিখ্যাত কথপোকথন কারো অজানা নয়। আদর্শবান ন্যায়নীতিভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করবার জন্য সক্রেটিসকে হেমলক পান করতে দেয়া হয়েছিল(বিষ), তারপরও তিনি আইনের প্রতি অটুট শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন- এটাও ছিল তার নির্ভীক বিদ্রোহ। তাকে বাঁচবার সুযোগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি আইনঅবজ্ঞা করেননি, আইনে যদি তার মৃত্যুদন্ড হয় তবে তিনি অবশ্যই তা মানতে রাজি। এখানেও তার সমস্ত জীবনকর্মের অনেক গভীর দর্শন কাজ করেছে। তার উপর মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল একথা তিনি ও এথেন্সবাসী জানতেন। কিন্তু যে আইনে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলো- তিনি সে আইনকে শ্রদ্ধা জানালেন এ অর্থে মানুষকে আইনের প্রতি অনুগত থাকতে বললেন। সেই আইন কারা তৈরি করছে তা তিনি জানতেন তাতে তো আর আইন নামক বিষয়টিকে জীবন থেকে বিতাড়িত করা যায় না।"পবিত্র কোরানে পাকে ও উল্লেখ করা হয়েছে, বিধর্মী কতৃক শাষিত রাষ্ট্র ও সরকার সমুহের আইন মেনে ধর্ম কর্ম করার।এই রুপ রাষ্ট্র ব্যাবস্থায় শুক্রবারের খতবায় বিশেষ আয়াৎ সংযুক্ত আছে এবং নিয়মিত নামাজের সাথে আর ও কয় রাকাত নামাজ আদায় করার নির্দেশনা দেয়া আছে।পরিতাপের বিষয়টি হচ্ছে,গত কয়েক বছর থেকে লক্ষ করা যাচ্ছে একশ্রেনীর মানুষ রাষ্ট্রীয় আইন রীতি নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সর্ব উচ্চ আদালতের রায়কে ও অমান্য করে হরতাল অবরোধ,প্রকাশ্য আদালতের সমালোচনা করতে।শুধু তাই নয় আন্দোলনের নামেপ্রকাশ্য দিবালোকে যাত্রীভর্তি চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে জীবন্ত মানবকে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিতে।উল্লেখ করা প্রয়োজন যারা এই সমস্ত আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিলেন,এবং প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেন যে আদালতের বিরুদ্ধেও কর্মসূচি দেয়া যায়,বক্তব্য দেয়া যায়,তাঁরা কখনই কোন অপরাধীর বিচার কায্য সম্পাদন করেছেন তদ্রুপ কোন উদাহরন নেই। যেমন আমি প্রথমেই বলতে চাই ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছেন রাতের অন্ধকারে।বঙ্গবন্ধুর অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? পৃথীবিপৃষ্টের সব চাইতে নিরাপদ স্থান জেলখানা।সেখানে রাতের অন্ধকারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করাহল,তাঁরা বন্দি ছিলেন, তারপর ও তাঁদের অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে বুদ্ধিজীবিদের বাসা থেকেতুলে নিয়ে জ্যান্ত মানুষকে হত্যা করা হল, তাঁদের অপরাধ কি বিচার করে মিমাংসা করা যেতনা? খালেদ মোশারফ., কর্নেল তাহেরসহ অসংখ্য মুক্তি যুদ্ধা সেনা অফিসারকে মেজর জিয়ার নির্দেশে নির্মম নির্দয় ভাবে হত্যা করা হল, অনেককে গুলী করার পর প্রান পাখী উড়াল দেয়ার আগেই জ্যান্ত মাটি চাপা দেয়া হল, তাঁদের বিচার কি প্রচলিত সেনা আইনে করা যেতনা? অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধা,আওয়ামী লীগের নেতা,মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারি,ব্লগার,প্রকাশক,লেখক সাহিত্যিক,সাংবাদিক হত্যা করা হল,তাঁদের অপরাধ কি আইনের আওতায় এনে বিচার করা যেতনা?আন্দোলনের নামে ঘোষনা দিয়ে মানুষ হত্যা করা,সম্পদ নষ্ট করা,লুটপাট করা কি মানবতা বিরুধী অপরাধের আওতায় পড়েনা?মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ হত্যা লুটপাট,অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার হতে পারে,যুদ্ধাবস্থা ব্যাতিরেকে ঘোষনা দিয়ে তদ্রুপ কর্মে জড়িতদের এবং হুকুমদাতার বিচার কেন হবেনা? নগদ অপরাধের ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার করা কি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব নয়? নাগরীকদের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া কি রাষ্ট্রের কর্তব্যের মধ্যে পড়েনা? যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন তাঁরা কি বিচার পাওয়ার সাংবিধানীক অধিকারের মধ্যে পড়েনা?সেই যুগের সক্রেটিস যদি নীজের উপর আনীত মিথ্যা অভিযোগ জেনে শুনে মেনে নিতে পারেন,সভ্যতার চরম শীখরে দাঁড়িয়ে যারা এই যুগে আইনকে, রাষ্ট্রীয় রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রকাশ্য আন্দোলনের নামে মানুষ খুন করেছেন,সম্পদের হানী ঘটিয়েছেন তাঁরা কি সক্রেটিস যুগের আগের অধিবাসি মনে করেন নীজেদের? তাঁরা নীজেরা নিজেদের মনে করুন কিন্তু মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে কোন যুগে ফিরিয়ে নিতে চান?তাঁদের যদি এতই অসহ্য লাগে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিশেষ কিছু আদর্শের প্রতিপালনের অঙ্গিকারের ভিত্তিতে ৩০লক্ষ শহিদের আত্মদান,পৌনে চারলাখ মাবোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস- তবে জনগনকে সংঘটিত করে আর একটি গনবিপ্লব ঘটিয়ে তাঁদের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে স্বাধীনতার পক্ষের কোন মানুষ বাধাতো দিচ্ছেনা। যাদের নেতৃত্বে, যাদের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন করা হল, তাঁরাতো ক্ষমতায় আছে,তাঁদের কেন জোর পুর্বক,ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে খমতা থেকে নামাতে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে,আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে জনজীবন দুর্বিসহ করে তোলার চক্রান্ত করতে দেয়া হবে।এই সেই দিন মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা নিয়ে যিনি বিতর্ক উত্থাপনের বৃথা চেষ্টা করে জনরোষের আওতার মধ্যে এখনও রয়েছেন,তাঁর সৌখিন বাসভবন পাহারায় আপনার সরকার অতিরীক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে বাধ্য হয়েছে,তিনি কি ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে সমাবেশ করার প্রসাশনিক অনুমতি পায়। বর্তমান গনতান্ত্রিক বিশ্বের একটি দেশের উদাহরন কি কেউ দিতে পারবেন,স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা সেই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে?একটি দেশকি কেউ দেখাতে পারবে যে,সেই দেশের কোনমীমাংসিত এবং প্রতিষ্ঠিত কোন সত্যকে ৩০/৪০ বছর পর আবার জনসমক্ষে উত্থাপন করে লক্ষ লক্ষ শহিদ পরিবারের অন্তরের আগুনে"ঘি "ঢেলে দেয়ার চেষ্টা, কোন প্রতিষ্ঠিত দল বা তাঁর নেতা করেছেন? কেন এই পয্যন্ত সরকার তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা না করে উলটো সমাবেশ করে তাঁর মতবাদ প্রচারের অনুমতি দেয়া হল??তাঁরা নীজেদের এত ক্ষমতাবান মনে করেন কিভাবে? তাঁরা কি করে আবার জাতির নিকট ক্ষমা চাওয়া ছাড়াই প্রকাশ্য সভা সমাবেশ করার অধিকার পায়?কেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সংসদে ঘোষনা দিয়েও এখন পয্যন্ত আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন করছেন না? মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আপনার আশ্বাস বাংলার মানুষ অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করে।সুতারাং জনগনকে দেয়া প্রতিশ্রুতি আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন কল্পে তড়িৎ ব্যাবস্থা গ্রহনকরবেন, জনগনের এই আস্থা বিশ্বাস এখন ও অটুট রয়েছে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,শাপলা চত্বরের সেই দিনের ষড় যন্ত্র মোতাবেক যদি খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার মানুষ রাজপথে নেমে আসতেন,পরিকল্পনাঅনুযায়ী সেনা বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়েআপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারতো,আপনাকে কি জীবিত বাঁচতে দেয়া হত? আপনার পরিবারের কাওন সদস্যকে বাঁচতে দিত?আওয়ামী লীগের থানা উপজেলা পয্যায়ের কোন নেতা কি বাঁচতে দিত? তাঁরা কি সে দিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ধর্ম বিদ্বেষী সরকার উৎখাত করে ধর্মধারি সরকার কায়েমের রাজনৈতিক শ্লোগানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নামক মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ধারক বাহক জননন্দিত এইসংগঠনটিকেও জ্যান্ত কবর দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত ছিল না?আমি আজ আরও একটি বিষয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,সম্পুর্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন চরমপন্থী নেতার অবিকল নকল করা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার--,গনতান্ত্রিকদেশে,গনতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে, গনতান্ত্রীক সংগঠনের,গনতন্ত্রের পুজারি মনে করা কোন নেতা, রাজপথে আন্দোলন না করে, সীমাবদ্ধ কক্ষে ৪১দিন অবস্থান করে, ৪২ জন মানুষকে পুড়িয়ে মেরে,পরবর্তিতে বিচারের সম্মুখ্যিন না হয়ে নিয়মাতান্ত্রীক আন্দোলনের সুযোগ কোন দেশের, কোন নেতা বা কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, এমন উদাহরন কি কেউ দিতে পারবে?? ষড় যন্ত্রের জাল কোথায় বিস্তৃত ছিল তাঁর প্রমান সেই নেত্রী নীজেই তাঁর উষ্মায় প্রকাশ করে দম্ভস্বরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে সুশৃংখল বাহিনীকে তাচ্ছিল্য করে বলে ছিল"সেনাবাহিনী বেঈমান"!!!এর পরও আপনার সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আনায়ন না করে প্রকাশ্য সভার অনুমতি দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার গুলির মনে আগাত দেয়া হয়েছে আমি মনে করি। গত পৌর নির্বাচনে রায় দিয়েছে তাঁর বিচার করার,তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অর্থই হচ্ছে জনগনের ক্ষোভ তাঁর উপর থেকে এখনও কমেনি,বরঞ্চ কয়েক গুন বেড়ে জনরোষের পয্যায় পৌছে গেছে।আপনার সরকারের তাঁকে দেয়া বাড়তিনিরাপত্তাই তা প্রমান করে।সুতারাং দেশ ও জাতি এই রাজনৈতিক লাশের ভার বইবার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা।দেশের এবং জাতির প্রয়োজন বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মত শিক্ষিত, বিজ্ঞান মনস্ক,প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত সমৃদ্ধ জাতি গঠনে জ্ঞানসমৃদ্ধ, আধুনিক সভ্য দুনিয়ার নেতৃত্ব গ্রহন করার মত গুনাবলি সমৃদ্ধ নেতার। কোন অবস্থায় সক্রেটিসের আগের যুগে জাতি ফেরৎ যেতে চায়না।পরিশেষে বলতে চাই,আর কোন সংগাত নয়,এবার চাই সমৃদ্ধি।আর নয় জঙ্গিপনা,এবার চাই ধর্মনিরপেক্ষতা।আর নয় সাম্প্রদায়ীকতা,এবার চাই অসম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা।আর নয় পাকি ভাবধারা প্রতিষ্ঠা,এবার চাই মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের সফল বাস্তবায়ন। জয় আমাদের হবেই হবে, অশুভ অপশক্তির পরাজয় অবশ্যাম্ভাবি। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা