আমাদের বর্তমান তথ্য ও প্রযুক্তি শিক্ষা--গ্রামগঞ্জে প্রতিষ্ঠিত হাজারো মাদ্রাসার কর্মবিমুখ ধর্মীয়শিক্ষা --- ____________________________ পাকিস্তানের জামাতে ইসলামী এবং বাংলাদেশের জামাতে ইসলামী এবং অন্য ইসলামী দলগুলীর মধ্যে শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে স্ব-স্ব দলীয় নীতির ব্যাপক পার্থক্য বিদ্যমান।অন্যান্ন মুসলিম দেশ সমুহের মধ্যে শিক্ষা ব্যবস্থায় আরবী শিক্ষার জন্য বা আলেম হওয়ার জন্য আলাদা কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। সব প্রতিষ্ঠান গুলির নাম মাদ্রাসা হলেও বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখা প্রশাখায় বিচরন আছে। সেখানে প্রচলিত সব বিষয় গুলী পাঠদান করা হয়। মাধ্যমিকের পর উচ্চশিক্ষায় ছাত্রদের পছন্দ অনুযায়ী বিষয় বাছাই করে উচ্চতর জ্ঞানার্জনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।পাকিস্তানের জামাতে ইসলামী ও তদ্রুপ শিক্ষা ব্যবস্থার পক্ষে। তাঁরা মনে করে আরবী এবং সাধারন শিক্ষার জন্য আলাদা আলাদা প্রতিষ্ঠান বাঞ্চনীয় নয়। পাকিস্তানের জামায়াতের আমীর কাজী হুসেইন আহমেদ শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে যা বলেন, সেটি আবার আমাদের দেশের জামায়াত বা ইসলামী দলগুলি বলে না। হুসেইন আহমেদের মতে, মাদ্রাসা এবং স্কুল বলতে আলাদা কিছু থাকা উচিত নয়। সব শিক্ষাই এক হওয়া উচিত। তিনি মনে করেন, স্কুল পর্যন্ত সবারই ভাষা, অঙ্ক, বিজ্ঞান, ভূগোল, ইতিহাস ইত্যাদি সব বিষয়ই পড়বে এবং স্কুলের পরে কেউ ইচ্ছে করলে ধর্মীয় বিষয় নিয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করবে। কাজী হুসেইন আহম্মদ সাহেব যদি স্কুলকে মাদ্রাসায় পরিণত না করে স্কুলের শিক্ষাকে সাধারণ শিক্ষা হিসেবে গ্রহণ করেন এবং মাদ্রাসাগুলোকে স্কুলে রুপান্তরের প্রস্তাব দিতেন তবে তার প্রস্তাব পাকিস্তানের জনসাধারন এবং সরকার সমর্থন করতেন আমার বিশ্বাস।তবে প্রস্তাবটি যেহেতু নাড়াচাড়া শুরু হয়েছে -এক সময় এদিক সেদিক একটা ভাল সিদ্ধান্ত আসবে আশা করা যায়। আমাদের দেশের ইসলামী দলগুলী যদি এইরুপ শিক্ষাব্যবস্থা প্রনয়নের দাবি জানাতেন তাহলে বিপুল সংখ্যক ছাত্র ছাত্রী দেশের বোঝা না হয়ে দেশের সম্পদে রপান্তরীত হতে পারত।এই ক্ষেত্রে বাংলা ইংরেজী যত নম্বরে পরিক্ষার ব্যবস্থা আছে তত নম্বরের আরবী পরিক্ষা প্রনয়ন করার দাবিও করতে পারেন। আবার আলাদা ভাবে বর্তমানের মক্তবের পরিধি আরও বিস্তৃত করে মক্তব শিক্ষাকে প্রত্যেক মুসলিম ছেলে মেয়ের জন্য বাধ্যতামুলক করার দাবিও গ্রহন যোগ্য হতে পারে। প্রত্যেক সমাজ কেন্দ্রিক মসজিদ প্রতিষ্ঠা করত: সেই মসজিদের আওতায় মক্তব চালু করার দায়িত্ব সরকারি ভাবে করার সিদ্ধান্ত থাকতে পারে।উক্ত মসজিদের দুই জন ইমাম একজন মোয়াজ্জেম সরকারি প্রাইমারী স্কুলের মতই সরকারি বেতন ভাতায় নিয়োগ দিয়ে মক্তব এবং মসজিদকে সরকারি করন করার দাবিও অযোক্তিক হবেনা। প্রত্যহ সকালে ছেলে মেয়েরা বর্তমানের নিয়ম অনুযায়ী মক্তবে আরবী শিক্ষার প্রাথমিক পাঠ গ্রহন করবে। নামাজ পড়ার নিয়ম কানুন মক্তবেই শিক্ষা গ্রহন করবে। প্রত্যহ এক অথবা দেড় ঘন্টা সকালে মক্তবে তালিম নিয়ে ৯/১০টায় বিদ্যালয়ে সাধারন শিক্ষা গ্রহন করবে। মাধ্যমিক পয্যন্ত সাধারন শিক্ষার পর উচ্চ শিক্ষা পছন্দ অনুযায়ী আরবী, বাংলা, ইংরেজী যাহাই পড়ুক না কেন ছাত্র/ছাত্রীদের স্বাধীন ভাবে বাছাই করার ব্যবস্থা রাখার দাবি ও আলেম সমাজের পক্ষ থেকে আসতে পারে। আমাদের দেশে দুই শ্রেনীর মাদ্রাসা শিক্ষা চালু আছে,একটি সরকার নিয়ন্ত্রীত আ'লীয়া মাদ্রাসা অন্যটি সচরাচর আলেম সমাজ ও জনগনের অর্থে পরিচালনা কমিটি কতৃক নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত। প্রথমোক্তটির ছাত্রছাত্রীরা সববিষয়ের উপর জ্ঞান অর্জন করার কারনে সরকারি বেসরকারি চাকুরিতে অংশ গ্রহন করার সুযোগ পেয়েছে।তাই তাঁদের পক্ষ থেকে সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা অনেকটা লাঘব হয়েছে বলে আমি মনে করি। শেষোক্ত শ্রেনীর মাদ্রাসার বেশির ভাগ আবার ব্যাক্তি বিশেষ পরিচালিত। এখানে সরকার, জনগন কারো কোন নিয়ন্ত্রন নেই।উভয় শ্রেনীর মাদ্রাসা সমুহে বাংলা, ইংরেজী, অংক, বিজ্ঞানের সামান্য ছোঁয়াও নেই।এই শ্রেনীর মাদ্রাসাগুলির বিস্তৃতি আরব রাষ্ট্র সমুহে নেই- ভারতীয় উপমহাদেশেও তেমন ছিলনা।গত ২৫/৩০ বছরের মধ্যে ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটেছে শুধু বাংলাদেশে। এই সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যে শিক্ষার্থীরা আরবী জ্ঞান অর্জন করে বের হয় পরবর্তিতে সে জ্ঞান ইহজগতে কাজে লাগানোর তেমন কোন ক্ষেত্র নেই। তাঁরা শুধুমাত্র ইমাম, মোয়াজ্জেম, তদ্রুপ মাদ্রাসায় শিক্ষকতা ছাড়া অন্য উপায় না থাকায় ব্যাক্তিগতভাবে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত করে-সেখানে নীজেরা নিয়ন্ত্রন করে।সেখানকার আয় দিয়ে --পরিবার পরিজন পরিচালনার ব্যবস্থা করেন। উদ্দেশ্য যতটানা ধর্মীয় শিক্ষার বিস্তৃতি--তাঁরচেয়ে ঢেরবেশী আর্থিক দুরাবস্থা নিরাময়। আরবের কোন দেশে এই শ্রেনীর প্রধান প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি হয়নি--হয়েছে ভারতের দেওবন্দে। দেওবন্দ মাদ্রাসার পাঠ্যসুচি অনুকরনে এই সমস্ত মাদ্রাসার শিক্ষাকায্যক্রম পরিচালিত হয়। স্থানীয়ভাবে গরিবের জন্য বরাদ্ধকৃত চাল গমের সাহায্য নিলেও শিক্ষার উন্নতি অগ্রগতির কোন সাহায্য মাদ্রাসা গুলি গ্রহন করেনা। তবে একাডেমিক ভবন নির্মানে অনেক ক্ষেত্রে সরকারি সাহায্য গ্রহন করতে দেখা যায়। বর্তমানের অবস্থা চলতে থাকলে আগামী দশ বছরের মধ্যে প্রত্যেক পরিবার পিছু একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হলেও আচার্য্য হওয়ার কিছুই থাকবেনা।এত বিপুল সংখ্যক আলেমের যেহেতু কোন কর্ম সংস্থান নেই তাঁরাতো আর বেকার থাকতে পারেনা। বর্তমানে তাঁদের মারমুখি অবস্থানের কারনটি কিন্তু সেখানেই নিহীত। প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসার মালিক বা ব্যবস্থাপক গন যতনা ধর্মীয় কারনে সরকারের উদ্যোগের বিরুধীতা করেন তার চেয়েবেশী তাঁদের সাময়িক আর্থিক ও পারিবারিক বিপয্যয়ের সম্মুখ্যিন হওয়ার সমুহ সম্ভাবনার চিন্তা। তাঁদের সাময়িক আর্থিক অনটনের চিন্তার কারনে ব্যাপক সংখ্যক তাঁদেরই ছাত্র-বেকারত্বের জীবন অতিবাহিত করে বিভিন্ন অসামাজিকতায় সম্পৃত্ত হতে পারে বা হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে-- তাও তাঁদের মরুব্বিদের চিন্তা চেতনায় আসছেনা। যেহারে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে সেহারে মাদ্রাসা গুলীর ছাত্র সংখ্যা বাড়বেনা। বাংলাদেশের সব শিশুরাও যদি মাদ্রাসা গুলিতে লেখাপড়া করে তারপরও একসময়ে ছাত্র সংকট দেখা দিতে বাধ্য। এই বিপুল সংখ্যক মানব সমাজকে একেবারে অকর্মন্য রেখে দেশ ও জনগনের বিপয্যয় ডেকে আনা ছাড়া আর কোন গত্যান্তর আছে বলে আমি মনে করিনা। এমনিতে বর্তমানে বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামে তিনের অধিক মাদ্রাসা স্থাপিত হয়ে আছে। যেখানে শতবছরের সরকারি ও বেসরকারি চেষ্টা, অক্লান্ত পরিশ্রমেও প্রতি গ্রামে একটি প্রাইমারি স্কুলের জনচাহিদা পুরন করা সম্ভব হয়নি-সেখানে ব্যাক্তি উদ্যোগে ২০/২৫ বছরের মধ্যে প্রতি গ্রামে তিনের অধিক মাদ্রাসা ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কারন চিন্তা করলেই ব্যপারটি সব মহলের নিকট আশা করি স্পষ্ট হবে। আমি জানি অনেকের ধারনা হবে বা হতে পারে আমি আরবী শিক্ষার বিরুধীতা করছি বা আমি নাস্তিক, অধার্মিক ইত্যাদি। পারলে জবাই করে দেয়ারও কেহ কেহ সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতে পারেন। তারপরেও বলব বিষয়টি গভীর ভাবে চিন্তা করে দেখার জন্য-সব মহলকে। সরকার হয়ত এই সমস্ত ধর্মীয় ব্যপারে সিদ্ধান্ত নিতে গেলে গদি হারানোর সমুহ সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। সরকার আলোচনা করতে চাইলেও প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসার কর্নধারদের তোপের মুখে পড়বে এবং ধর্ম বিরুধী সরকারের তকমা নিয়ে ক্ষমতাও ছাড়তে হবে।ঐ সমস্ত মাদ্রাসার ছাত্রদের বিষয়টি নিয়ে গভীর ভাবে চিন্তা করার দরকার আছে বলে আমি মনে করি। এখন হয়তোবা সংখ্যার আধিক্য ঘটে নাই বিধায় পরিবার পরিজন প্রতিপালন করা সহজ হচ্ছে, জনগনও সম্মান শ্রদ্ধা করছে। অদুর ভবিষ্যতে ঘরে ঘরে মাদ্রাসা এবং আলেম সৃষ্টি হয়ে গেলে কে কাকে পড়াবে আর সম্মান বা শ্রদ্ধাও করবে। লক্ষনীয় বিষয়টি হচ্ছে আমাদের দেশের খান্দানী খোন্দকার পরিবার গুলী ইতিমধ্যে উল্লেখিত শ্রেনীর আলেম উলামাদের আধিক্যে পেশার লাভ হারিয়ে ছেড়ে অন্য পেশায় নিযুক্ত হয়ে গেছেন।একটি পরিবার ও অবশিষ্ট নেই বাপ-দাদার খোন্দকারি পেশায় জড়িত আছেন। সরকার আমাদের সমুহ বিপদগ্রস্ত আলেম সমাজের প্রতি দৃষ্টি দিবেনা বা দিলেও ফললাভ করতে পারবেনা।এই বিপুল সংখ্যক আলেম উলামা সমাজকে জনসম্পৃত্ত করে দেশের সম্পদে রুপান্তরের জন্য প্রয়োজন সামাজিক উদ্যোগ বা সামাজিক সচেতনতা। দেশের প্রত্যেক সচেতন নাগরিক এখনি বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা না করলে বেশী দিন সময় লাগবেনা --সামাজিক বিরাট অস্থিরতা সৃষ্টি হবে,এতে কোন সন্দেহ নেই। তাঁদের হাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা তুলে দিলেও কোন লাভ হবেনা। সকল শিক্ষাব্যবস্থা অনুরুপ করে দিলেও কোন ফললাভ হবেনা। কারন যেখানে জ্ঞান বিজ্ঞানের আলো নেই সেখানে দেশ পরিচালনা হবে কিভাবে? অর্থনীতির চাকাও ঘুরবে কিভাবে? ইসলাম জ্ঞান-বিজ্ঞানের আলো ঘরে ঘরে জ্বালাতে বারন করেনি। রাষ্ট্র পরিচালনায় আধুনিকতার সংস্পর্ষে যেতেও বারন করেনি। এইরুপ সামাজিক সমস্যা দেখা দিলে শীর্ষস্থানীয় আলেম সমাজের পরামর্শ গ্রহন করার কথা কোরানেই বলা আছে। সুতারাং দেশের বিশাল জন সমষ্টির বিষয়টি নিয়ে গভীর ভাবে চিন্তাভাবনা করা প্রত্যেক সুনাগরিকের দায়িত্ব এবং কর্তব্য। কিভাবে বা কোন পদ্ধতিতে বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে সম্পৃত্ত করে ধর্ম এবং জীবন দুটাই পরিচালনা করা যায় তাঁর উদ্যোগে প্রয়োজনে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা একান্ত জরুরী। সামাজিক আন্দোলন গড়ে উঠা ছাড়া কোন প্রতিষ্ঠিত সরকার ও চাইবেনা ঝুঁকিপুর্ণ কোন সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে। সবমহলের শুভবুদ্ধির উদয় হোক অশুভ শক্তির উত্থান রোধে প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক। ধর্মকর্মে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনে সব মহল সচেতন হোক। আল্লাহ সকল বাংলাদেশীর মঙ্গলময় জীবন দান করুক। ______________________________ জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন