জয়ের ব্যাক্তিগত তথ্যের বিনিময় মুল্য ৩০ হাজার ডলার --প্রধান ব্যাক্তি রিজভীর ৪২ মাসের জেল । ভয়ংকর তথ্য ---!!!সরকার এতদিন জনগনকে অন্ধকারে রেখেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আই,সি,টি উপদেশটা সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরন ও হত্যা প্রচেষ্টায় জড়িত সাংবাদিক রেহমাম সফিককে পুলিশ গ্রেপতার করেছে।এর আগে আরো একজন রাজনীতিবীদ ও একজন সাংবাদিক রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে জেলে আছেন।তাঁরা হলেন জনাব মান্না সাহেব ও আমার দেশ সম্পাদক জনাব মাহমদুর রহমান।-একই মামলায় যুক্তরাজ্য বিএনপির মামুন সাহেরের ছেলে রিজবী সাহেবের আদালতে শাস্তি হয়ে সেই দেশেই জেলে আটক আছেন। তথ্য পেতে দেরী হওয়ার কারনে বাংলাদেশের জড়িত ব্যাক্তিদের গ্রেপ্তারে বিলম্ভ ঘটেছে বলে পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষনীয় ব্যাপার হচ্ছে গত কিছুদিন আগে থেকে বাংলাদেশের জেলে আটক জনাব অতিবিপ্লবী মান্না ও সাংবাদিক নেতা মাহমদুর রহমান সাহেবের মলিন চেহারার ছবি চাপিয়ে পত্রিকায় বেশ লেখালেখি হচ্ছিল। তাঁদের মুক্তির ব্যাপারে সুশীল সমাজ থেকে বেশ জোরেসোরেই দাবী উত্থাপিত হচ্ছিল। কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুমকিও দেয়া হচ্ছিল।শফিক সাহেব গ্রেপতার হবেন তারা কি টের পেয়েছিলেন? শফিক রেহমান গ্রেপতারের পরপরই বিএনপি থেকে কোঠোর ভাষায় বিবৃতি দেয়া হয়েছে।,তারেক জিয়া তার দুই দিন আগে শেখ হাসিনার জন্য কাঁদার লোকও থাকবেনা বলে হুমকি দিয়ে রেখেছেন।তারেক (বেয়াদপ) বলেছেন "শেখ মজিবের" জন্য চোখের পানি ফেলতে 'শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে' জীবিত রাখা হয়েছিল,'শেখ হাসিনার' জন্য কাউকে জীবিত রাখা হবেনা( বেয়াদপ আজরাইল)। তারেক জিয়ার অসংলগ্ন-অমার্জনীয় বক্তব্য, বিএনপি দলের কঠোর আন্দোলনের হুমকি, খালেদা জিয়ার বয়সের উল্লেখ করে( রেহমান সফিকের)বিবৃতি প্রদান, বছরের উপরে জেলে থাকা দুই ব্যাক্তির মলিন চেহারার ছবি চাপিয়ে পত্রিকায় লেখালেখি, ড. ইমরান এইছ সরকার সাহেবের খালেদা জিয়ার ভাষায় বিবৃতি, গোটা পঞ্চাশেক সুশীলের অহরাত্রি কান্নাকাটি- ইত্যাদি লক্ষ করলে বুঝতে কষ্ট হয়না, এই কয়দিন অন্দরমহলে ব্যাপক ঝড়ো হাওয়াই বয়ে গেছে।বাংলাদেশের জনগন না জানলেও তাঁরা ঠিকই জেনেছিলেন-যায় যায় দিন রেহমান সফিক সাহেবের কুকর্মের সকল তথ্য 'বাংলাদেশ পুলিশের' হাতে এসে পৌছে গেছে। তাইতো শেষ নীশিতে '৭৫ এর ধারাবাহিকতায় অতিবাম ইমরান, অতি ডান খালেদা এবং তাঁদের দোষরেরা যারপরনাই ঘুমহীনরাত্রী যাপনের মাধ্যমে জনগনের সহানুভূতি পেতে আপ্রান চেষ্টা অব্যাহত রেখেছিলেন। লক্ষ করলে দেখা যায়,গত প্রায় একমাস আগে থেকে সুক্ষভাবে একটা প্রচারনা তাঁরা তৃনমুল পয্যন্ত বিস্তৃত করতে সক্ষম হয়েছে, "এই দেশে কোন ভদ্রলোক আর রাজনীতি করতে পারবেনা, সম্মান নিয়ে থাকতে পারবেনা।" সে ভদ্রলোক কি রেহমান শফিক --? আরো একটি বিষয় লক্ষ করলে দেখা যায়, খালেদা জিয়া দীর্ঘ দিন কোন মামলায় হাজিরা দেননি।সব ষড়যন্ত্র ব্যার্থ্য হওয়ার পর কোন উপায় না পেয়ে আদালতে হাজিরা দিয়ে জামিন নিয়েছেন। বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে দেশকে নিপতিত করার চক্রান্ত আজকালের চেষ্টা নয়, মেজর জিয়ার ক্ষমতা দখল করার পর থেকেই চালু করার চেষ্টা করে যাচ্ছে চক্রটি। তাঁরা জানে নিয়মাতান্ত্রিক রাজনীতি করে কোন দিনও বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে পারবেনা। ষড়যন্ত্রই তাঁদের শক্তির উৎস, মুখে বলে জনগনই খমতার উৎস। বাংলাদেশের রাজনীতিতে আরও একবার প্রমানীত হল- সকল শ্রেনীর "অতিরা" সময়ে একজোট, এক রাজনীতি, এক মঞ্চ, এক উদ্দেশ্য, এক আদর্শে বিশ্বাস করে।তাঁদের কামনা একটাই 'বাংলাদেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি, প্রগতির ধারাকে নস্যাৎ কর, জাতিকে অন্ধকারে ঠেলে দাও'। এই একটিমাত্র ষড়যন্ত্রকে ধামাচাপা দিতে ২৮ বছর আগের রিটমামলা "রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম" কে আদালতের কজলিষ্টে নিয়ে আসে।উদ্দেশ্য দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করা, আইন শৃংখলার অবনতি ঘটানো।সর্বমহলে একসুরে আওয়াজ তোলে-'ইসলাম ছিল, আছে, থাকবে।' আদালতের রায়ের পরেও বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা হয়-"রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম' সরকার বাতিল করেছে। সুতারাং এই সরকারের বিরুদ্ধে 'জিহাদ' করার জন্য সকলকে প্রস্তুত থাকতে হবে। ইমরান এইছ সরকারের মঞ্চ থেকে প্রতিনিয়ত নবী করিম(স:) কে কটাক্ষ করে ব্লগিং করা হচ্ছে।ইউরুপের দরজা তাঁদের জন্য আগেই খোলা,এবার মুল বিদেশী ষড়যন্ত্রকারী আমেরীকাও খোলে দেয়ার ঘোষনা দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে।'৭৫ পরবর্তি ধারাতেই অশুভ চক্রটি উন্নয়ন, অগ্রগতি, প্রগতির ধারাকে বিনষ্ট করতে তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। দেশ একটা, সংবিধান একটা, সরকার একটা, প্রশাসন একটা, বিচার ব্যবস্থা একটা, আইন একটা , মানচিত্র একটা, পতাকা একটা, জাতীয় সংগীতও একটা--ব্যবহার কি দুই রকম হবে? সিনিয়র সাংবাদিক হলে কি অপরাধ করে শাস্তি পাবেনা? শাস্তি কি শুধু গরীবের জন্য বরাদ্ধ? আইনআদালত কি রাজনীতিক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবির জন্য প্রযোজ্য নয়? ৮২ বছর বয়স হলে কি জেলে যাওয়া মাফ ? মাত্র ৫হাজার টাকার কৃষি ঋনের জন্য শতবছরের বৃদ্ধ কৃষকের কোমরে রশি বেঁধে যখন থানা কোর্টে নিয়ে যায়- তখন কোথায় থাকে আপনাদের মানবতা? পত্রিকান্তরে প্রকাশিত খবর এবং আদালত সুত্র থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষন করলে যে কোন দেশপ্রেমিক নাগরিক উৎকন্ঠিত না হয়ে পারেনা। আদালত সুত্রে জানা যায়-- "রিমান্ড প্রার্থনাকারী তদন্ত কর্মকর্তা এএসপি হাসান আরাফাত বলেন, তারা প্রাথমিকভাবে তথ্য পেয়েছে শফিক রেহমান প্রধানমন্ত্রীর পুত্র ও আইসিটি উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যার চক্রান্ত করেছিলেন। এই ঘৃণ্য কাজের উৎসাহী, পরিকল্পনাকারী ও অর্থ সরবরাহকারী যারা দেশে-বিদেশে অবস্থান করছেন। এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িতদের নাম জানতে রেহমান শফিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন । তার অন্য কোনো পরিচয় আছে কি না তাও পুলিশকে জানতে হবে বলে আদালতকে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা। রিমান্ড প্রার্থনাকারী আদালতে বলেন, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস)’র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনসহ বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতা ও তাদের জোটের মিত্ররা জয়কে আমেরিকায় অপহরণ ও হত্যার চক্রান্ত করে আসছেন। তারা পল্টনের জাসাস কার্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন জায়গা ও নিউ ইয়র্কসহ ভিন্ন ভিন্ন স্থানে মিলিত হয়েছেন ষড়যন্ত্র করার জন্য। মামুনের পুত্র রিজভী আহমেদকে এই পরিকল্পনায় অর্থায়নের জন্য বিএনপি ও তাদের জোটের নেতাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন। রিজভী আমেরিকায় গ্রেফতার হন এবং যুক্তরাষ্ট্রের আদালত তাকে ৪২ মাসের কারাদন্ড দেয়। বিচারের সময় রিজভী আমেরিকার আদালতকে জানান, এফবিআইকে ঘুষ দিয়ে জয়ের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেন তিনি। ৩০ হাজার মার্কিন ডলারের বিনিময়ে তিনি বাংলাদেশি সাংবাদিক, রাজনৈতিক জোট ও জয়ের ব্যক্তিগত তথ্য গোয়েন্দাদের কাছে বিক্রি করে দেন। ষড়ন্ত্রের সেই সাংবাদিক শফিক রেহমান বলে রিমান্ড প্রার্থনাকারী দাবি করেন। রিজভী আমেরীকায় গ্রেপতার হয়ে বিচারে জেল হয়েছে---অথছ তাঁর মুক্তি জন্য অশুভ চক্রটি একটি বার বিবৃতি পয্যন্ত দেয়নি--,পাছে বাংলা দেশের জনগন ঘটনা জেনে যাবে। সব ঘটনা লোকচক্ষুর অন্তরালে রাখতে চেয়েছিল অশুভ চক্রটি। সেই বিচারের আলোকে--রিজভীর দেয়া তথ্যে, বাংলাদেশে অবস্থানরত:দের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ গ্রেপতার করে। বিএনপি আগেই প্রস্তুত করা বিবৃতি' পাঠ করে সাংবাদিকদের জানান তাঁরা তীব্র আন্দোলনের মাধ্যমে জেলমুক্তি ঘটাবেন।সম্পুর্ন বে-আইনী ভাবে একজন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ধৃত আসামীর পক্ষে হুমকি প্রদান করে বিএনপি এবং তাঁর নেত্রী খালেদা। নদীর ভাটায় খড়কুটা দিয়ে পানি আটকানো যায়না-বিএনপির পতনের সময়েও ষড়যন্ত্র করে রক্ষা পাওয়া যাবেনা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর উদারতায় ষড়যন্ত্র সফল করতে পেরেছিল ষড়যন্ত্রীরা। তাঁর কন্যার সরলতাকে পুঁজি করে ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করা যাবেনা। বাংলাদেশের লক্ষ কূটি আওয়ামী লীগ নেতা কর্মী অর্হনীশি জাগ্রত রয়েছে-কোন ষড়যন্ত্রকেই বাংলার মাটিতে শিকড় ছড়াতে দিবেনা। ষড়যন্ত্রের বীজ বপনের আগেই তা উপড়ে ফেলে--শান্তির বীজ বপন করবেই করবে। অশুভ শক্তির পতন অনিবায্য সত্যের জয় চিরকাল--- মিথ্যার পতন সময়ে জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন