ড. কামাল হোসেনের চোখে পানি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম. =================================== (সংগৃহিত) ৫০ বছরের কম হবে না, দেশের সেরা আইনবিদ ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে জানাশোনা, ওঠাবসা। তবে প্রথম কখন, কোথায় দেখেছিলাম দিনক্ষণ ঠিক করে বলতে পারব না। তিনিও আমায় কখন, কোথায় দেখেন জানার চেষ্টা করিনি। ১৬-১৭ জানুয়ারি, ’৭২ থেকে জানাজানি, ওঠাবসা চলছে। খুব সম্ভবত এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ, তিনি তখন মন্ত্রী। দেশের খাদ্য ঘাটতি নিয়ে শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর কাছে লেখা বঙ্গবন্ধুর ছোট্ট একটি চিঠি নিয়ে দিল্লি গিয়েছিলাম। সেই বিমানে ড. কামাল হোসেনও ছিলেন। তিনি একটু আগে, আমি পেছনে, কোনো কথা হয়নি। শিখ নেতা ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শরণ সিং তাকে বিমানের সিঁড়ি থেকে নিয়ে গিয়েছিলেন। আমাকে নিয়ে যান বাংলাদেশ অ্যাম্বাসির এক প্রথম সচিব। উঠেছিলাম লোদি হোটেলে। তিন বেডের রুমের ভাড়া ছিল ১২০ টাকা। আমরা তিনজন পাসপোর্টে ৬০০ ডলার নিয়ে গিয়েছিলাম। তখন ডলারের দাম ছিল ৬.৫০ টাকা। তাই লোদি হোটেলের ভাড়াটা খুব বেশি মনে হয়েছিল। পরদিন সকালে আমাদের প্রথম রাষ্ট্রদূত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জনপ্রিয় ভাইস চ্যান্সেলর এ আর মল্লিক হোটেলে ছুটে আসেন। আমি তার কাছে তখন ছোট্ট শিশু। তিনি যখন সন্তানের মতো আমায় ঝাপটে ধরেন তখন আমি পিতার আলিঙ্গনের স্বাদ পাই। তিনি তখনই তার ৯ নম্বর বসন্ত বিহারের বাড়িতে নিতে চেয়েছিলেন। বার বার তার স্ত্রীর কথা বলে বলছিলেন, তোমার আম্মা তোমার জন্য অপেক্ষায় আছে। আর এখানে তোমার থাকা হবে না। ত্রিপুরা গভর্নমেন্ট তোমাকে তাদের অতিথি ভবনে রাখতে চায়। তুমি রাজি হলেই হলো। রাজি হয়েছিলাম। না হয়ে উপায়ও ছিল না। কারণ সবকিছু উপেক্ষা করা গেলেও মানুষের আন্তরিকতা উপেক্ষা করা যায় না। পরদিন ভারতের মহীয়সী নারী প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে দেখা। আমি তো তখনো ছোট। মুক্তিযুদ্ধের অবদান মহিমা তার কিছুই আমায় স্পর্শ করেনি। ইন্দিরাজির ১ নম্বর ছফদর জং-এর বাড়ির বারান্দায় আমাকে গ্রহণ এবং কথাবার্তা শেষে বিদায় দিয়েছিলেন। সে সব এখন ভাবা যায় না। ভাবলেই কেমন লাগে। তখন লোকসভার বৈঠক চলছিল। জীবনে প্রথম লোকসভায় গিয়েছিলাম। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী, নাম মনে নেই ইন্দিরাজিকে বঙ্গবন্ধুর খাদ্য সমস্যা নিয়ে লেখা চিঠি প্রসঙ্গে সংসদকে জানাতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে তার দেশের খাদ্য সংকটের কথা জানিয়েছেন। আমি সংসদের পক্ষ থেকে প্রস্তাব করতে চাই, ক’দিন আগে বাংলাদেশের মুক্তির সংগ্রামে আমরা সহযোহিতা করেছি, রক্ত দিয়েছি, বাংলাদেশে আমাদের ভাইয়েরা যদি একবেলা না খেয়ে থাকে আমরাও থাকব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের জন্য যত খাদ্যের প্রয়োজন আপনি পাঠান।’ হাউসে দর্শকের গ্যালারিতে বসে আমার চেয়েও উঁচু মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর সেদিনের বক্তব্যে আমার হৃদয়ে নাড়া দিয়েছিল। তখন ভারতও ছিল খাদ্য ঘাটতির দেশ, তারপরও যে আবেগ তিনি ব্যক্ত করেছিলেন আমরা অনেক দিন তার মূল্য দিতে পারিনি। এখন কি পারছি? না, এখনো না। কোনো নতজানু নীতি কৃতজ্ঞতা হতে পারে না, বন্ধুত্বের প্রতিদান নয়। যাক, ওসব নিয়ে পাঠকদের সামনে আরেক দিন হাজির হব। আজ ড. কামাল হোসেনকে নিয়ে এগোতে চাই। তাও পূর্ণ নয়, একটি খণ্ডচিত্র তুলে ধরতে মন আকুলি বিকুলি করছে। ড. কামাল হোসেন মস্তবড় মানুষ, আমাদের অহংকার, দেশের গৌরবের প্রতীক, বাঙালি জাতির মালার লকেট। তাকে হয়তো কিছুই দিতে পারিনি, তিনিই দিয়েছেন। মানুষ অসুস্থ হলে যেমন ডাক্তারের কাছে যায়, তেমনি আইনের প্রয়োজনে শতবার তার কাছে গেছি কখনো বিমুখ করেননি। এখন তার বয়স হয়েছে, আমারও হয়েছে। ঘন ঘন যাতায়াত না থাকলেও তার প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধার কোনো ঘাটতি নেই। সমস্যা, তিনি খুবই উচ্চ শিক্ষিত, ধ্যানে-জ্ঞানে জগদ্বিখ্যাত। আমি তার সম্পূর্ণ বিপরীত। সে জন্য মনের মিল থাকলেও প্রকাশ্যে অবশ্যই অমিল আছে। আমি ভালো মনে করে যা বলি, তিনি অনেক সময় তাকেই খারাপ মনে করেন। এ ছাড়া একজন মানুষ হিসেবে তার প্রতি যে আমার অপরিসীম সম্মান বোধ রয়েছে, আমার প্রতি তার অপার স্নেহ ভালোবাসা- এসব জানাজানির কোনো অভাব নেই। তাই সেদিনের ছোট্ট একটি ঘটনা তুলে ধরছি। পাঠক জানেন, টাঙ্গাইল-৪ কালিহাতীর উপনির্বাচনে আমি প্রার্থী হয়েছিলাম। সোনার বাংলা প্রকৌশলিক সংস্থা (প্রা.) লি. নামে আমাদের ছোট্ট একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ছিল, যা প্রায় ১০ বছর কোনো কাজ করতে পারে না। কারণ স্বাধীন দেশে মুক্তিযোদ্ধারা সবসময় হয় বঞ্চিত। ১২-১৩ বছরে অগ্রণী ব্যাংক থেকে আমরা ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। সেই সময় ব্যাংকের হিসাব মতো ৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা সুদ ও অন্যান্য চার্জ দিয়েছি। এরপরও এক সময় ব্যাংক সুদ-আসল ধরে হিসাব করে দেখেছে তাদের পাওনা ৩ কোটি ১৯ লাখ। আগস্ট মাস আমার জন্য বেদনার মাস। সেই মাসেই ঋণটি ফয়সালা করার জন্য আবেদন করেছিলাম। আমরা প্রায় ৫ বছর যাবৎ সমুদয় সুদ মওকুফ করে এককালীন সমন্বয়ের আবেদন জানিয়েছি। কতজনের কত ঋণের সমুদয় সুদ মওকুফ করেছি, সরকারের সঙ্গে বনিবনার অভাবে আমাদেরটা হচ্ছে না। সর্বশেষ চিঠির প্রেক্ষিতে তারা এক লম্বা ফিরিস্তি দিয়ে ৮ কোটি ৪ লাখ টাকা মওকুফ দেখিয়ে ১০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ১০% সুদে ১০ বছরে পরিশোধের জন্য সুবিধা দিয়েছিল। সেই হিসাবে অগ্রণী ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেয়। চিঠি পেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের সিআইবি ডাটাবেজ থেকে সোনার বাংলার নাম প্রত্যাহার করে নেয়। যে ব্রাঞ্চ ঋণ দিয়েছিল, সে ব্রাঞ্চ ঋণটি পুনঃতফসিলের মাধ্যমে বিশ্রেণিকরণসহ ১০% সুদে ১০ বছরে শোধের সুবিধার কথা ধন্যবাদের সঙ্গে জানিয়ে দেয়। হায়রে সুবিধা! অর্থ আইনে আছে, কোনোমতেই কোনো ব্যাংক আসলের ওপর দ্বিগুণের বেশি সুদ নিতে পারবে না। আমরা মুক্তিযোদ্ধা বলে আমাদের ওপর ৬-৭ গুণ। কী আজব কাণ্ড! কারও যদি ফাঁসি হয় সেও ভালো। কিন্তু এখন দেখছি ১০ বছর আমরা আর কোথাও থেকে ঋণ সুবিধা পাব না। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে জড়িতরা ১০ বছর কোনো নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবে না- এর চেয়ে ফাঁসি কি ভালো নয়? এর মাঝে ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি শ্রী প্রণব মুখার্জির স্ত্রীর শ্রাদ্ধে যোগ দিতে দিল্লি গিয়েছিলাম। সেখানে থাকতেই বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকী সংসদে এক আবেগময়ী ভাষণ দিয়ে পদত্যাগ করেন। তারও সপ্তাহখানিক পর দেশে ফিরে মাটিতে পা রাখতে না রাখতেই কালিহাতীর উপনির্বাচন নিয়ে হাজারো প্রশ্নের সম্মুখীন হই। পরে বলব বলে বলে একেবারে নাস্তানাবুদ হয়ে যাই। তারপর বাবা-মার কবর জিয়ারতে গিয়ে আরও চাপে পড়ি। রাজনৈতিক দল হিসেবে যে কোনো উপনির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত ৫ জানুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচনের পরপরই নেওয়া হয়েছিল। তাই বলেছিলাম, আমাদের দল কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ এই নির্বাচনে অংশ নেবে। শুরু হয় ১৪ দল থেকে মনোনয়ন নেওয়ার এক মহা পাঁয়তারা। আমাকে লোকেরা যতই সংগ্রামী ভাবুন, তেমন প্যাঁচপুচ বুঝি না। ১৪-দলীয় জোটের সরকার, তাদের হয়ে নির্বাচন করতে গেলে ভোট হবে কী করে? কোনো প্রার্থী না থাকলে জনগণ ভোট দেবে কাকে? আমার উদ্দেশ্য এমপি হওয়া ছিল না, এখনো নেই। আমার উদ্দেশ্য সরকারি প্রভাবমুক্ত নির্ভেজাল নির্বাচন। তাই আশপাশের কোনো প্রস্তাবে রাজি হতে পারিনি। বোকার মতো মুক্তিযুদ্ধ করেছি, বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছি, যখন প্রয়োজন ছিল তখন আলাদা দল গঠন না করে আওয়ামী লীগ এবং বোনের জন্য জীবনপাত করেছি, তারপরও জনগণের এমন বঞ্চনা দেখে বিশেষ করে মূল্যহীন ভোটারদের দেখে নিজের কথা ভাবতে পারিনি। তাই সখিপুর-বাসাইলের মানুষের বহু পরিশ্রমে অপরিসীম অÍত্যাগে ’৯৯ সালে যে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের জন্ম, সেই দলের প্রতীক গামছা নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে গিয়েছিলাম। সাধারণ মানুষের প্রতারণা বা তঞ্চকতা কোনো কোনো সময় না হয় মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু আন্তর্জাতিক স্বীকৃত কোনো অর্থলগ্নি প্রতিষ্ঠান ব্যক্তি প্রতারকের মতো করলে ছোট হয়ে আসা পৃথিবীর অর্থনীতি চলবে কী করে? মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাইয়ের দিন দেখা গেল সোনার বাংলা প্রকৌশলিক সংস্থা (প্রা.) লি.কে ঋণ খেলাপি দেখিয়ে আমার মনোনয়নপত্র বাতিলের পাঁয়তারা চলছে। রিটার্নিং অফিসারের কাছে ১২ অক্টোবর ব্যাংক এক ধারণাগত ভুল বলে চিঠি দিয়েছে। অন্যদিকে ওই ১২ অক্টোবরই বাংলাদেশ ব্যাংক অগ্রণী ব্যাংকের ১১ অক্টোবরের চিঠির কারণে সোনার বাংলা প্রকৌশলিক সংস্থার নাম পুনরায় খেলাপি হিসেবে ডাটাবেজে তুলেছে। কী তাজ্জব ব্যাপার! যে কোনো নিয়মিত ঋণী প্রতিষ্ঠানকে অনিয়মিত দেখাতে কমপক্ষে ৬ মাস সময় লাগে। অথচ আগের দিনও যে নিয়মিত ছিল, সেই প্রতিষ্ঠানকে এক দিনে বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি দেখিয়ে দিল- এর বিচার আল্লাহ ছাড়া এ দেশে কার কাছে দেব? অথচ সেই তখনই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এশিয়ায় ব্যাংকের শ্রেষ্ঠ গভর্নরের খেতাব পেলেন। আর আমাদের মতো মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে গঠিত নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের প্রতি এমন জালিয়াতি করা হলো। যাকেই জিজ্ঞেস করলাম, তারা সবাই বলার চেষ্টা করলেন এসবই নাকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করেছেন। কিন্তু আমার দুর্ভাগ্য, বিশ্বাস করতে পারলাম না। হাইকোর্টে রিটের পর সরকার আপিল করবে এটাও নাকি অ্যাটর্নি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কথায় বলেছেন এবং পরে নির্বাচন কমিশন দিয়ে আপিল করিয়ে নির্বাচন ঠেকিয়ে দিয়েছেন। বাংলাদেশ খুবই ছোট, এখন আর কথাবার্তা তেমন চাপা থাকে না। অ্যাটর্নিই হয়তো তার কদর বাড়াতে একে ওকে অমন বলেন। তাদের কেউ কেউ সে কথা আমাকে জানিয়ে খুশি হতে চেষ্টা করেন। নির্বাচনী বিধি-বিধানে উল্লেখ আছে, ‘মনোনয়নপত্র দাখিলের ৭ দিন আগে প্রার্থীকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে দায় মুক্ত থাকতে হবে। তেমনি কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানও ওই ৭ দিনের মধ্যে নতুন কোনো দায় সৃষ্টি করতে পারবে না।’ কিন্তু তারা তাই করেছে। খুব সম্ভবত রিটার্নিং অফিসার চাবি মারা থাকায় কর্তার ইচ্ছায় কর্ম করেছে। নির্বাচন কমিশনও তথৈবচ। এসব নিয়ে একজন দায়িত্বশীল, চরিত্রবান, শক্ত মেরুদণ্ডের আইনজ্ঞ যখন খুঁজছিলাম এবং খুঁজতে খুঁজতে প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলীর কাছে গিয়েছিলাম। তারই এক ফাঁকে মামলাটির একটি খসড়া করতে ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে অ্যাডভোকেট রমজান আলীর প্রয়োজন হয়। অ্যাডভোকেট রমজান আমাদের বহুদিনের প্রিয়। সারা রাত জেগেও তিনি আমাদের অনেক কাজ করেছেন। ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে অনেক দিন দেখা হয় না। তিনি যে চেম্বারে আছেন তাও জানতাম না। ১৯ অক্টোবর অ্যাডভোকেট রমজানের সঙ্গে কথা বলতে মতিঝিলে গিয়ে শুনি স্যার বসে আছেন। তার সঙ্গে দেখা হয়, অনেক কথা হয়। তিনি সানন্দে রমজানকে আরজি তৈরি করতে বলেন। আমাদের কথা চলতে থাকে। দলের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার বীরপ্রতীক ও আরও কয়েকজন পাশে বসে কথা শুনছিল। একপর্যায়ে তাদের সবাইকে বাইরে চলে যেতে বলি। তারা চলে গেলে মেডিকেলে ভর্তি নিয়ে আন্দোলনে এক মেধাবী ছাত্রীর কথা বলতে গিয়ে সংবিধান প্রণেতা, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম আইনজীবীদের একজন ড. কামাল হোসেন একপর্যায়ে কেঁদে ফেলেন। তার কান্না আমায় নাড়া দেয়। চোখে পানি না এলেও হৃদয় মন অন্তর পানিতে ভেসে যায়। তিনি বলছিলেন, ‘সারা জীবন আইন নিয়ে চলেছি। সেখানেও আর শুদ্ধতা নেই। ভালো ভালো লোক এসে বলছে, আদান প্রদান হয়। গার্মেন্টে কাজ করে লেখাপড়া করা ছাত্রী মেডিকেলে ভর্তি হতে পারবে না। সামনে এসে কেঁদে ফেলছে, তাকে কী সান্ত্বনা দেই? আপনার যে কাগজপত্র দেখলাম আগের মতো কোর্ট থাকলে ৫ মিনিটের ব্যাপার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনায়েম খানের কাছ থেকে সনদ নিতে চায়নি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছিল। আমরা তখন তরুণ শিক্ষক সুবিতা রঞ্জন পালকে দিয়ে রিট করিয়ে ছিলাম। সেখানে আমরা জয়ী হই। পাকিস্তানের প্রতি আমাদের অত পুঞ্জীভ‚ত ঘৃণা থাকার পরও সুপ্রিমকোর্টে সরকার আপিল করে। সেখানে আমরা জয়ী হলে ছাত্ররা আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়, তাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলে। পাকিস্তানেও যে বিচার ছিল, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা ছিল আজ তাও এখানে নেই। তাই যেখানে এক দিন না গেলে শ্বাস বন্ধ হয়ে আসত সেই কোর্টে আজ ৩ বছর যাই না। আপনিই ভাবুন, এটা কত কষ্টের।’ তার চোখ থেকে যখন টসটস করে পানি পড়ছিল, তখন তারই মতো আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। অনেকক্ষণ বসে থেকে নির্বাক বেরিয়ে এসেছিলাম।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন