পাকিস্তানের নিকট প্রাপ্য সম্পদ আদায়ে আন্তজাতিক আদালতের শরনাপন্ন হওয়া সময়ের দাবি--- ================================== 1971 ইং সালে পাকিস্তানের সুসজ্জিত ৯৩ হাজার সৈন্য বাঙ্গালী প্রশিক্ষনহীন,স্বল্প প্রশিক্ষিত মুক্তিযুদ্ধাদের নিকট চরম পরাজয়ের গ্লানি আজও ভুলতে পারেনি। ভুলার কথাও নয়,উর্বর ভুমি হাত ছাড়া হলে সবাই কিছুনা কিছু গ্নানিতে ভোগে।তবে পাকিস্তানের ক্ষেত্রে বিষয়টি আরও গ্লানিকর এইজন্য যে জাতির জনকের আকাশসম ব্যাক্তিত্বের নিকট দ্বিতীয় পরাজয়।পরাজয়টি ঘটেছিল দ্বিতীয় আন্তজাতিক ইসলামি শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠানকে কেন্দ্রকরে।স্বাধীনতার পর প্রথম ইসলামী শীর্ষ সম্মেলনকে ঘিরে পাকিস্তানের বিরুধিতা সত্বেও বঙ্গবন্ধু সম্মেলনে যোগদান করে ইসলামী উম্মাহ সদস্য পদ গ্রহন করেন।দ্বিতীয় সম্মেলন ১৯৭৪ সালে পাকিস্তানের লাহোর অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রাক্কালে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক বিচক্ষনতা এবং দক্ষ পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের যোগ্য কূটনীতি পরিচালনার কারনে মুসলিম বিশ্বের প্রায় সকল রাষ্ট্রকে নিয়ন্ত্রন পুর্বক স্বীকৃতি আদায় করে শক্ত অবস্থান নিয়ে পাকিস্তানকে একঘরে করে নিতে সক্ষম হন। সম্মেলন কে ঘিরে আন্তজাতিক রাজনীতির কুটচালে বঙ্গবন্ধুর ক্যারিসম্যটিক রাজনীতির নিকট পাকিস্তানিদের চরম পরাজয় ঘটানোর উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু শেষ পেরাগ তাঁদের ঘাড়ের মাঝ বরাবর ঠুকে দেন। বঙ্গবন্ধু সম্মেলনে যোগদানের প্রশ্নে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ স্বীকার পুর্বক পাকিস্তানের স্বীকৃতি দাবি করে বলেন, "যে দেশ আমার দেশকে মেনে নেয় নাই,বাংলাদেশের বাস্তবতা মানতে পারেননি সেই দেশে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে আমার বাংলাদেশ অংশ গ্রহন করতে পারেনা।" ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ নিয়ন্ত্রিত অন্য মুসলিম দেশ গুলীও সম্মেলন অনুষ্ঠানে সংশয় প্রকাশ করে বিবৃতির ঝড় উঠলে পাকিস্তান বাংলাদেশকে স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে সম্মেলনে যোগদানের জন্য আমন্ত্রন পত্র পাঠাতে বাধ্য হন। ২৪ বছরের পাকিস্তানের সময়টিতে দেশটির সামরিক ও সামন্ততান্ত্রিক নেতৃত্ব তৎকালিন পুর্ব পাকিস্তানকে শোষন করার মানষে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছিল। তখনকার মানসিকতা থেকে পাকিস্তান আজও বের হয়ে আসতে পারেনি।বলা যায় সম্পর্ক উন্নত করায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার দিকেই তাঁদের জোঁক।তাঁর একমাত্র কারন বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যখনি আওয়ামী লীগ আসে তখনি পুরাতন বকেয়া নিয়ে কুটনৈতিক ভাবে কথাবার্তা শুরু করে।আওয়ামী লীগ মনে করে উক্ত পাওনা সম্পদ নৈতিকভাবে এবং হিস্যা অনুসারে বাংলাদেশ প্রাপ্য।এই পাওনা আদায় করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সরকার পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করার চেষ্টা সব সময়ই করে আসছে। বাংলাদেশ কখনও পাকিস্তানকে অমর্যাদা করে এবং পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ঘটনায় কোন বিবৃতি বা অনৈতিক হস্তক্ষেপ করেনি। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে হত্যা, নারী নির্যাতন,মানবাধিকার লঙ্গনের অভিযোগে ১৯৫ জন পাকিস্তানি সেনা আটক অবস্থায় বিচারের পদক্ষেপ নিলে তৎকালিন পাকিস্তানের ভূট্রো সরকার জনগনের নিকট চরম ভাবে জবাবদিহিতার সম্মুখীন হয়। তাঁদের সেনা অফিসারদের বিচারের উদ্যোগ নিলে পাকিস্তানে আতংকের সৃষ্টি করে এবং তৎকালীন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলী ভুট্টো অভ্যন্তরীণভাবে চাপের সম্মুখীন হন।বঙ্গবন্ধুর চিন্তা চেতনায় তখন প্রায় আড়াই লাখ বাঙালি পাকিস্তানে অবস্থানরত ছিল। তাঁদের ফেরৎ আনার বিষয়টি ঘুরপাক খাচ্ছিল।তাঁদের মা বাবা আত্মীয়স্বজনও বাংলাদেশে তাঁদের ভাগ্য নিয়ে চিন্তায় অস্থির ছিলেন।একসময় বড় সংকট হয়ে বঙ্গবন্ধুর সরকারকে বিব্রত করবে এটা নিশ্চিত বুঝতে পেরেছিলেন জাতির জনক। তাদের বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনের প্রশ্নেও পাকিস্তান জটিলতা সৃষ্টি করে রেখেছিল।সেনা অফিসার ছাড়াও বাংলাদেশের মাটিতে আত্মসমর্পণকারী ৯৩ হাজার পাকিস্তানি সেনা তখন বঙ্গবন্ধুর শক্তি। বাংলাদেশের অধিবাসিদের ফেরত আনার বড় হাতিয়ার।তাঁদেরকে নিয়ে ভুট্টো কম বিপদে পড়েছিলেন বললে ভুল হবে রীতিমত বিভ্রান্ত ছিলেন।ভূট্রোর হাতেও বাংলাদেশি নাগরিক গন ৯৩ হাজার সেন্য ফেরৎ নেয়ার বড় হাতিয়ার।এর বাইরে বাংলাদেশ শর্ত দিয়ে দাবি করেছিল পাকিস্তানের স্বীকৃতি। অন্যদিকে পাকিস্তান দাবি করেছিল ১৯৫ যুদ্ধাপরাধীসহ ৯৩ হাজার সেনাসদস্যের নিঃশর্ত মুক্তির। ১৯৭৩ সালের ২৮ আগস্ট ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে পাকিস্তান যুদ্ধপরাধি সেনা কর্মকর্তাদের বিচার করবে মর্মে, বাংলাদেশ পাকিস্তানি সৈন্যদের বিচারের দাবি প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। ফলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে যে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছিল, তার অবসান ঘটেছিল। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যেসব ব্যক্তি মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের বিচার করা যাবে না- এ ধরনের কোনো কথা ওই চুক্তিতে ছিল না। জাতির জনক ঘোষনা দিয়েছিলেন যাঁরা মানবতা বিরুধি অপরাধে জড়িত ছিলেন না, অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে রাজাকার আলবদর, আলসামস হয়ে মুক্তিযুদ্ধাদের বিরুদ্ধে তথা স্বাধীনতা যুদ্ধের বিপক্ষে অস্ত্র ধরেছিলেন তাঁদেরকে সাধারন ক্ষমা করে দিয়ে বলেছিলেন দেশের কাজ করার জন্য।যাঁরা হত্যা, লুন্ঠন,নারি দর্শন,অগ্নিসংযোগের মত মানবতা বিরুধি অপরাধে জড়িত ছিলেন তাঁদের জাতির জনক ক্ষমা করেননি।তাঁদের বিচার অনুষ্ঠিত হচ্ছিল,কারো কারো বিচার শেষে জেল জরিমানা হয়েছিল এবং অনেকেই জেলে ছিলেন। পাকিস্তান বার বার যে চুক্তির কথা তাঁদের প্রতিবাদে এবং বিবৃতিতে উল্লেখ করে বলতে চায় তা হচ্ছে ১৯৭৪ সালের ৯ এপ্রিলে সম্পাদিত চুক্তি।তাতেও মানবতাবিরোধী অপরাধে যারা জড়িত ছিল তাদের বিচার করা যাবে না- এমন সুনির্দিষ্ট কোন শর্ত উল্লেখ করা নেই। তারপরও বার বার চুক্তিটির উল্লেখ করে পাকিস্তান বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরুদ্ধে চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে।তাই বলা যায় তাঁরা বর্তমান বাংলাদেশের বাস্তবতা এখন পয্যন্ত মেনে নিতে পারেননি। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের ভুমিকায় পরিষ্কার অনুধাবন করা যাচ্ছে১৯৭৪ সালের ২৪ ফেব্র“য়ারি লাহোরে দ্বিতীয় ইসলামিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল তাঁর আগে, যে স্বীকৃতি বাংলাদেশকে দিয়েছিল তা তাদের অন্তর থেকে দেয়নি বাধ্য হয়েই দিয়েছিল। ১৯৭৪ থেকে ২০১৫ সময়টা অনেক দীর্ঘ। এত দীর্ঘ সময়েও দুদেশের মধ্যে বিরাজমান অর্থনৈতিক সমস্যা অর্থাৎ বাংলাদেশের প্রাপ্যতার বিষয়টি সমাধান হয়নি।১৯৭৫ ইংরেজী সালে বঙ্গবন্ধুর মর্মান্তিক মৃত্যুর পর নামে বেনামে পাকিস্তানিরাই দেশ শাষন করেছিল।ফলে তাঁরা বাংলাদেশের পাওনা সম্পদ ফেরৎ দেয়ার বিষয় নিয়ে একরকম স্বস্তিতেই ছিল।দীর্ঘ ২১ বছর এই নিয়ে কোন কূটনৈতিক তৎপরতা তাঁদের মোকাবেলা করার প্রয়োজন হয়নি। কিন্তু এবার বিধিবাম, স্বাধীনতার পক্ষ শক্তির যেভাবে উম্মেষ ঘটেছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে, তাঁদের তল্পিবাহকেরা আবার ক্ষমতায় আসতে আদৌ পারবে কিনা বা আসলেও অনেক সময়ের প্রয়োজন হতেপারে, এমনটি চিন্তা চেতনার উদ্রেক হওয়ায় পাকিস্তানের সর্বস্তরের রাজনীতিক, চিন্তাবীদ, শুসিলদের মনে ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। ফলশ্রতিতে আগের বিচারের রায় গুলীতে কিছু রাজনৈতিক দল,সামাজিক সংগঠন,ব্যাক্তি বিশেষ কোন প্রতিক্রিয়া না জানালেও এবার সাকা-মোজাহিদ প্রশ্নে একে অপরের প্রতি বৈরী ভাবাপন্ন রাজনৈতিক দল গুলিও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীন বিষয়ে একহাট্রা হয়েছে। আগবাড়িয়ে কিঞ্চিত বর্তমানের কূটনৈতিক সম্পর্ককেও ধংস করার মানষে সব রাজনৈতিক দল একজোট হয়েবাংলাদেশের মানবতা বিরুধিদের বিচারের বিপক্ষে অবস্থান গ্রহন করেছে। পাকিস্তানের কাছে পাওনা সম্পদ ফেরত, বাংলাদেশে অবস্থানরত পাকিস্তানি নাগরিক বিহারিদের পাকিস্তানে প্রত্যাবর্তন, বাণিজ্যে ভারসাম্যহীনতা ইত্যাদি ক্ষেত্রে, আগে থেকেই নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে অগ্রসর হচ্ছিল দেশটি। পাকিস্তানের কাছে পাওনা সম্পদের বিষয়টি একাধিকবার বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা হলেও পাকিস্তান তেমন সাড়া আদৌ দেয়া প্রয়োজন আছে তেমনটিও মনে করেনি।বঙ্গবন্ধুর সরকারের সময়ে ১৯৭৪ সালে প্লানিং কমিশন ২ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা পাওনা দাবি করে একটি রিপোর্ট প্রণয়নকরেছিল। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের আগে পাকিস্তানের সম্পত্তি, জনসংখ্যা, সংখ্যাসাম্য নীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও সম্পদের পরিমাণ হিসাব করে ওই পাওনা টাকার দাবি বিভিন্ন পয্যায়ে উত্থাপন করে আসছে বাংলাদেশ। "গত ৪০ বছরে এ ব্যাপারে তেমন কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় বর্তমান বিশ্ববাজারের তুলনামুলক মুল্য নির্ধারন করে আন্তজাতিক আদালতে শরনাপন্ন হওয়া যায় কিনা এই বিষয়টি যখন বর্তমান বাংলাদেশ সরকার খতিয়ে দেখছে, তখনি দেশটির কাঁপুনি এসেছে,যে কোন ভাবে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার মানষেই তাঁরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীন বিষয়ে হস্তক্ষেপের পরিকল্পনা করছিল।এমনি মহুর্তে দুই জনের ফাঁসির আদেশকে তাঁরা ইস্যু হিসেবে নিয়ে বর্তমানের যৎকিঞ্চিত সম্পর্ক আছে তাও বৈরী করার ষড়যন্ত্র করছে। পাকিস্তান বাংলাদেশ বিমানকে একটি পুরনো টাইপের বোয়িং বিমান ফেরৎ দিয়ে বাংলাদেশের প্রাপ্যতাকে আগেই নৈতিক স্বিকৃতি দিয়েছিল, যা একত্রিত পাকিস্তানের সম্পদের উপর আমাদের প্রাপ্যতার তুলনায় কিছুই নয়। ১৯৮৯ সালে তৎকালীন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফরের সময় পাকিস্তান নীতিগতভাবে বাংলাদেশের সম্পদ ফিরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে একটি কাউন্সিল গঠন করতে রাজি হয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তানের সরকারে পরিবর্তন আসাতে বিষয়টি নিয়ে পরবর্তিতে তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। বাংলাদেশে আটকে পড়া পাকিস্তানি বিহারিদের পাকিস্তানে প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে বহু দেনদরবার হলেও কোনো অগ্রগতি অদ্যাবদি পরিলক্ষিত হয়নি। এসব পাকিস্তানি নাগরিক এখনও মনমানষিকতায়, চেতনায় পাকিস্তানি ভাবাদর্শ বহন করে এবং তাঁরা পাকিস্তানের নাগরিক দাবি করে, সেখানে যেতেও চায়।অনেকে বিভিন্ন কলাকৌশল অবলম্বন করে চলেও গেছে। প্রায় ২ লাখ পাকিস্তানি এখনও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বসবাস করছে।যাহা বাংলাদেশের জন্য বিরাট এক বোঝা। ১৯৮৫ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হক এদের নিতে রাজি হয়েছিলেন,এবং ঘোষনাও দিয়েছিলেন।জনাব ভূট্রোর মেয়ে পাকিস্তানের পিপলস পার্টি নেতা বেনজির ভুট্টোর বিরোধিতায় জিয়াউল হক মাঝপথে প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেন। ভুট্টো যেমন এদের পাকিস্তানি বলে স্বিকৃতি দেননি তাঁর মেয়েও সেই পথ অনুসরন করে বিহারিদের পাকিস্তানি বলতেও রাজি হলেন না। এখানে উল্লেখ করতে চাই যে কারনটি পাকিস্তানিদের খুব বেশি ভাবিয়ে তুলেছে তা হল দল হিসেবে কংগ্রেস এবং দেশ হিসেবে ভারত বাংলাদেশের অকৃত্তিম বন্ধু, এটা আন্তজাতিক সম্প্রদায়ও অনেকটা তাই মনে করে।সেই কংগ্রেস ভারতের সরকারে থাকাকালিন সমুদ্র সীমানা নির্ধারনের পুরাতন অমিমাংশিত বিষয়টি শেখ হাসিনার সরকার আন্তজাতিক আদালতে উত্থাপন করে রায় নিয়ে এসেছে।ভারত সরকার আন্তজাতিক পয্যায় সবিশেষ বিব্রতকর পরিস্থিতি মোকাবেলা করে,আরও হেনস্তা হওয়ার ভয়ে বিষটি নিয়ে আর বাড়াবাড়ি করার চেষ্টাও করেনি। দ্বিপক্ষিয় আলোচনার মাধ্যমে মিমাংসার প্রস্তাব দিলেও তা শেখ হাসিনার সরকার প্রত্যাখ্যান করে আন্তজাতিক আদালতে চলে যায়।মিয়ানমারের সাথে তাঁর আগেই আন্তজাতিক আদালতের মাধ্যমে সমুদ্রের হিস্যা জয়ী হয়ে বাংলাদেশের স্বার্থ শতভাগ নিশ্চিত করেছে।শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশের স্বার্থের প্রশ্নে কোন বন্ধু রাষ্ট্রকে ছাড় দিয়ে আপোষ করার উদাহরন এই পয্যন্ত তাঁদের দৃষ্টিতে আসেনি।পাকিস্তানকেও যে প্রাপ্যতার প্রশ্নে ছাড় দিবেনা তা অংক করে বুঝিয়ে দেয়ার প্রয়োজন নেই।সুতারাং সম্পর্কের বৈরীতায় প্রাপ্য অংশ নিয়ে তালবাহানা করার জন্য অনেক আগে থেকেই বৈশম্য সৃষ্টি করে রাখার দিকেই তাঁদের জোঁক পরিলক্ষিত হয়।নিম্নে তাঁর কিঞ্চিত উদাহরন দেয়ার চেষ্টা করছি। পত্রপত্রিকার তথ্যানুসারে এবং বাংলাদেশ সরকারের আমদানী ও রপ্তানী ব্যুরুর তথ্যানুসারে দেখা যায়, বাংলাদেশে পাকিস্তানের রফতানির পরিমাণ বেড়েছে শতকরা ২৭ দশমিক ৬ ভাগ হারে। বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানের আমদানি বেড়েছে মাত্র ৯ দশমিক ২ ভাগ হারে। ২০১০-১১ সময়সীমায় বাণিজ্যের পরিমাণ যেখানে ছিল ৯৮৩ মিলিয়ন ডলার, বর্তমানে তা নেমে এসেছে মাত্র ৩৪০ মিলিয়ন ডলারে। এছাড়াও বর্তমানের বিশ্ব অস্থিরতার মুল ইস্যুর দিকে নজর দিলে দেখা যায়,পাকিস্তানি নাগরিক, এমনকি ঢাকাস্থ দূতাবাসের কর্মচারীরা ইতিমধ্যে নানা অপকর্মে নিজেদের জড়িত করেছেন। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে দেখা যায়, বেশকিছু পাকিস্তানি নাগরিক বাংলাদেশে ভারতীয় জাল নোটের অবৈধ ব্যবসা তথা পাচারের সঙ্গে জড়িত। এই সমস্ত টাকা অধিকাংশ জঙ্গি প্রতিপালনের খরছ যোগায় তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।এদের মধ্যে বেশ কজন ইতিমধ্যে গ্রেফতারও হয়েছেন। চলতি বছরের ফেব্র“য়ারি মাসে জনৈক মাজহার খান (যিনি ঢাকাস্থ পাকিস্তান হাইকমিশনে কর্মরত ছিলেন) অকূটনৈতিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন এবং বাংলাদেশ তাকে বহিষ্কার করেছে। বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতা বিস্তারে কোনো কোনো পাকিস্তানি নাগরিক সরাসরি জড়িত,অনেকেই ইতিমধ্যে গ্রেপতার হয়েছেন, কিছু কিছু গোয়েন্দা নজরদারিতে আছে, অনেকেই পালিয়ে বেঁচে গেছেন।নানাহ মাদক ব্যাবসায় জড়িত- অনেকে গ্রেফতার হয়েছে,অনেকে গ্রেফতার এড়িয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন,পাকিস্তান দুতাবাসের আশ্রয় প্রশ্রয়ে অনৈতিক কাজে উৎসাহ পাচ্ছে এমন অভিযোগও আছে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সার্ক, কমনওয়েলথ, ডি-৮, ওআইসিসহ বেশকিছু আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্য। এক্ষেত্রে দুদেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় থাকার কথা ছিল।পরিবেশ পরিস্থিতি অনুকুলে থাকলেও তা হয়নি। বরঞ্চ দিন দিন নিম্নমুখিতাই প্রকাশ পাচ্ছে।এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ঘটনায় পাকিস্তান যখন হস্তক্ষেপ করে, তখন দুদেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও অবনতি হতে বাধ্য। বাংলাদেশের মানুষ, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে পাকিস্তানিদের নেতিবাচক প্রচারণাকে সহ্য করবে না। এতে করে সাধারণ মানুষের মাঝে পাকিস্তানবিরোধী মনোভাব যা আছে এতে আরও শক্তিশালী হবে। বাস্তবতা হচ্ছে, বাংলাদেশ প্রায় প্রতিটি সামাজিক সূচকে পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে আছে। আর্থিক ভিত্তি, নারীশিক্ষা, বৈদেশিক রিজার্ভ, মুদ্রামান, সাস্থ্যসেবা, শিশুমৃত্যুর হার কমানো, রেমিটেন্স ইত্যাদি প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পাকিস্তানের চেয়ে অনেক ভালো অবস্থানে আছে। পাকিস্তান বর্তমান বিশ্বের কোন রাষ্ট্রের জন্য কোনো ক্ষেত্রেই কোনো মডেল নয়। বাংলাদেশ বহু ক্ষেত্রেই বিশ্বের বহু রাষ্ট্রের অনুকরনীয় অনুস্মরনীয় দৃষ্টান্ত।শেখ হাসিনা বিভিন্ন পয্যায়ে যেভাবে বিশ্ব নেতৃত্বে আসীন হচ্ছেন,পাকিস্তান তাঁর ধারে কাছেও অবস্থান নিতে পারছেনা।৪৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশে রুপান্তরীত হলেও ৭০ বছরের পাকিস্তানের অবস্থান বহু দেশের নিম্নেই রয়ে গেছে।এই সমস্ত বিষয় গুলিও তাঁদের নেতৃত্বকে মর্মপীড়া দেয়।তাই বর্তমান সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করে চাপে রাখতেও এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে আমি মনে করি। সার্কে উভয় দেশই আছে বটে, কিন্তু এ ক্ষেত্রেও দেখা যায়, পাকিস্তান মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে তার সম্পর্ককে যতটুকু গুরুত্ব দেয়, সার্কের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ককে এখন আর তত গুরুত্ব দেয় না। পাকিস্তান যদি বাংলাদেশের ব্যাপারে তার পুরাতন ধ্যান ধারনায়, মন মানসিকতায় পরিবর্তন না আনে, তাহলে দুদেশের সম্পর্কের অবনতিতো হবেই,পাকি সমর্থক এখনও যে সমস্ত বেজর্মা আড়ালে আবড়ালে মুখ ঢেকে দালালি করে তাঁদের দুর্দশা বাড়বে বৈ কমবেনা। সকল সম্পর্ক চিন্নতো হবেই ন্যাক্কার জনক অপদস্ত হয়ে আন্তজাতিক ভাবে বাংলাদেশের সম্পদ ফেরৎ দিতে বাধ্য হবে।বাংলাদেশের জনগন এখনও আশা করে পাকিস্তান তার শাষককের মানসিকতায় পরিবর্তন আনবে এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাবে না, এটাই নতুন প্রজম্ম প্রত্যাশা করে। সর্ব শেষে বলতে চাই, পাকিস্তানের নিকট একত্রিত থাকা অবস্থায় আমাদের প্রাপ্য সম্পদের বর্তমান বিশ্ববাজারের মুল্যে- মুল্য নির্ধারন করে আদায়ের জন্য আন্তজাতিক শালিসি ব্যাবস্থাপনার আয়োজন করা বর্তমানে সময়ের দাবি।পাকিস্তানের প্রতি যতই অনুরাগ, আবেগ প্রদর্শন করা হোকনা কেন কখনই তাঁরা বাংলাদেশকে বন্ধু হিসেবে গ্রহন করে নিবেনা।জাতির জনকের নির্মম হত্যায় পাকিস্তানের সরাসরি হাত ছিল ইহা পরিষ্কারভাবে আন্তজাতিক মহলের বিবেচনায় রয়েছে।তাঁদেরও সম্যক উপলব্দি আছে।সুতারাং জাতির জনককে হত্যার পাপ তাদের সর্বসময়ে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে-ইচ্ছা থাকলেও ভাগ্য তাঁদের প্রলম্বিত করবেই।অযথা সময়ক্ষেপন না করে সকল সম্পর্ক চিন্ন করে অযাচিত ষড়যন্ত্রের চোবল থেকে আগামি প্রজম্মকে রক্ষা করার জন্য জাতির পিতার কন্যা বর্তমান বিশ্বের অন্যতম নেতা বাংলাদেশের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী দেশরত্ম শেখ হাসিনার নিকট আবেদন জানাচ্ছি। জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা

প্রাপ্য সম্পদ আদায়ে গড়িমসি করে কোন লাভ হবেনা,পাকিস্তান কখনই বাংলাদেশের বন্ধু হবেনা।কারন তাঁদের পাঁপ তাঁদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে,পথের কাঁটা হয়ে সম্পর্ক প্রলম্বিত করছে।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার সরকার মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যাতত্ব দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস ঐতিহ্যে বিতর্ক উত্থাপনের অভিযোগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন।মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে বসবাস করে,মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার মত দৃষ্টতা দেখিয়ে নি:সন্দেহে তিনি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। এহেন গর্হিত বক্তব্য প্রদানকারী বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার রাখতে পারেননা।মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত অঙ্গিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কোন দল বা জোটের রাজনীতি করারঅধিকার নীতিগতভাবেই থাকতে পারেনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি সকল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করে সর্বচ্ছ আদালতের রায় অনুযায়ী '৭২এর সংবিধান অবিকল বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবী।বাংলাদেশেরজনগন চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ এগিয়ে যাক,মুক্তিযুদ্ধে সাগরসম রক্ত ঢেলে সেই অঙ্গিকারের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেছিল।স্বাধীন বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বসবাসকরে,পরাধীনতার গান শুনতে দেশ স্বাধীন করেনি বাংলার জনগন। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৩ বছরের বিরামহীন সংগ্রামের ফসল মুক্তিযুদ্ধ।সেইযুদ্ধে উপনিবেশিক পাকিস্তানের আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত সেনাবাহিনীকে নিরস্ত্র বাঙালীরা পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছিল।সেই স্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশেপরাজিত শক্তির দোষর,তাঁদের প্রেতাত্বাদের রাজনীতি করার কোন নৈতিক অধিকার নেই।জাতির জনক তাঁদের রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগন জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলায় রাজাকারের কোন স্থান দিতে চায়না। তাই খালেদা জিয়ার ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টার দৃষ্টান্তমুলক সাজার আশা পোষন করে।কোন রাজনৈতিক সমঝোতার ফাঁদে যেন এই মামলা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়,তাঁর গ্যারান্টিও সরকারের নিকট বাংলাদেশের জনগন চায়। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু Ruhul Amin ------------------------------ খালেদা জিয়াকে সমাবেশের অনুমতি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি আশাহত----04 /01 / 0016 ইং পোষ্ট -==================================প্রখ্যাত দার্শনিক,চিন্তাবিদ সক্রেটিসকে কম বেশি আমরা সবাই জানি।সক্রেটিস কোন যুগে জম্মগ্রহন করে মানব সেবায় ব্রতি হয়ে আজও দেশে দেশে অনুকরনীয় অনুসরনীয় হয়ে আছেন তাও আমরা জানি।নিশ্চয়ই তখনকার সময় থেকে বর্তমানের সমাজ, রাষ্ট্রব্যাবস্থাপনা আরো শত গুন উন্নত,সমৃদ্ধ,সভ্য।সক্রেটিস ছুতোর, কামার ইত্যাদি প্রসঙ্গে এসে প্রশ্ন করতেন, 'তাহলে রাষ্ট্র নামক জাহাজটি বিগড়োলে কাকে দিয়ে সারাইয়ের কাজ করাবো'হাসান আজিজুল হক (সক্রেটিস) পৃ : ১৬ সক্রেটিসের এ বিখ্যাত কথপোকথন কারো অজানা নয়। আদর্শবান ন্যায়নীতিভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করবার জন্য সক্রেটিসকে হেমলক পান করতে দেয়া হয়েছিল(বিষ), তারপরও তিনি আইনের প্রতি অটুট শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন- এটাও ছিল তার নির্ভীক বিদ্রোহ। তাকে বাঁচবার সুযোগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি আইনঅবজ্ঞা করেননি, আইনে যদি তার মৃত্যুদন্ড হয় তবে তিনি অবশ্যই তা মানতে রাজি। এখানেও তার সমস্ত জীবনকর্মের অনেক গভীর দর্শন কাজ করেছে। তার উপর মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল একথা তিনি ও এথেন্সবাসী জানতেন। কিন্তু যে আইনে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলো- তিনি সে আইনকে শ্রদ্ধা জানালেন এ অর্থে মানুষকে আইনের প্রতি অনুগত থাকতে বললেন। সেই আইন কারা তৈরি করছে তা তিনি জানতেন তাতে তো আর আইন নামক বিষয়টিকে জীবন থেকে বিতাড়িত করা যায় না।"পবিত্র কোরানে পাকে ও উল্লেখ করা হয়েছে, বিধর্মী কতৃক শাষিত রাষ্ট্র ও সরকার সমুহের আইন মেনে ধর্ম কর্ম করার।এই রুপ রাষ্ট্র ব্যাবস্থায় শুক্রবারের খতবায় বিশেষ আয়াৎ সংযুক্ত আছে এবং নিয়মিত নামাজের সাথে আর ও কয় রাকাত নামাজ আদায় করার নির্দেশনা দেয়া আছে।পরিতাপের বিষয়টি হচ্ছে,গত কয়েক বছর থেকে লক্ষ করা যাচ্ছে একশ্রেনীর মানুষ রাষ্ট্রীয় আইন রীতি নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সর্ব উচ্চ আদালতের রায়কে ও অমান্য করে হরতাল অবরোধ,প্রকাশ্য আদালতের সমালোচনা করতে।শুধু তাই নয় আন্দোলনের নামেপ্রকাশ্য দিবালোকে যাত্রীভর্তি চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে জীবন্ত মানবকে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিতে।উল্লেখ করা প্রয়োজন যারা এই সমস্ত আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিলেন,এবং প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেন যে আদালতের বিরুদ্ধেও কর্মসূচি দেয়া যায়,বক্তব্য দেয়া যায়,তাঁরা কখনই কোন অপরাধীর বিচার কায্য সম্পাদন করেছেন তদ্রুপ কোন উদাহরন নেই। যেমন আমি প্রথমেই বলতে চাই ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছেন রাতের অন্ধকারে।বঙ্গবন্ধুর অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? পৃথীবিপৃষ্টের সব চাইতে নিরাপদ স্থান জেলখানা।সেখানে রাতের অন্ধকারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করাহল,তাঁরা বন্দি ছিলেন, তারপর ও তাঁদের অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে বুদ্ধিজীবিদের বাসা থেকেতুলে নিয়ে জ্যান্ত মানুষকে হত্যা করা হল, তাঁদের অপরাধ কি বিচার করে মিমাংসা করা যেতনা? খালেদ মোশারফ., কর্নেল তাহেরসহ অসংখ্য মুক্তি যুদ্ধা সেনা অফিসারকে মেজর জিয়ার নির্দেশে নির্মম নির্দয় ভাবে হত্যা করা হল, অনেককে গুলী করার পর প্রান পাখী উড়াল দেয়ার আগেই জ্যান্ত মাটি চাপা দেয়া হল, তাঁদের বিচার কি প্রচলিত সেনা আইনে করা যেতনা? অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধা,আওয়ামী লীগের নেতা,মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারি,ব্লগার,প্রকাশক,লেখক সাহিত্যিক,সাংবাদিক হত্যা করা হল,তাঁদের অপরাধ কি আইনের আওতায় এনে বিচার করা যেতনা?আন্দোলনের নামে ঘোষনা দিয়ে মানুষ হত্যা করা,সম্পদ নষ্ট করা,লুটপাট করা কি মানবতা বিরুধী অপরাধের আওতায় পড়েনা?মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ হত্যা লুটপাট,অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার হতে পারে,যুদ্ধাবস্থা ব্যাতিরেকে ঘোষনা দিয়ে তদ্রুপ কর্মে জড়িতদের এবং হুকুমদাতার বিচার কেন হবেনা? নগদ অপরাধের ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার করা কি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব নয়? নাগরীকদের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া কি রাষ্ট্রের কর্তব্যের মধ্যে পড়েনা? যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন তাঁরা কি বিচার পাওয়ার সাংবিধানীক অধিকারের মধ্যে পড়েনা?সেই যুগের সক্রেটিস যদি নীজের উপর আনীত মিথ্যা অভিযোগ জেনে শুনে মেনে নিতে পারেন,সভ্যতার চরম শীখরে দাঁড়িয়ে যারা এই যুগে আইনকে, রাষ্ট্রীয় রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রকাশ্য আন্দোলনের নামে মানুষ খুন করেছেন,সম্পদের হানী ঘটিয়েছেন তাঁরা কি সক্রেটিস যুগের আগের অধিবাসি মনে করেন নীজেদের? তাঁরা নীজেরা নিজেদের মনে করুন কিন্তু মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে কোন যুগে ফিরিয়ে নিতে চান?তাঁদের যদি এতই অসহ্য লাগে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিশেষ কিছু আদর্শের প্রতিপালনের অঙ্গিকারের ভিত্তিতে ৩০লক্ষ শহিদের আত্মদান,পৌনে চারলাখ মাবোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস- তবে জনগনকে সংঘটিত করে আর একটি গনবিপ্লব ঘটিয়ে তাঁদের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে স্বাধীনতার পক্ষের কোন মানুষ বাধাতো দিচ্ছেনা। যাদের নেতৃত্বে, যাদের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন করা হল, তাঁরাতো ক্ষমতায় আছে,তাঁদের কেন জোর পুর্বক,ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে খমতা থেকে নামাতে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে,আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে জনজীবন দুর্বিসহ করে তোলার চক্রান্ত করতে দেয়া হবে।এই সেই দিন মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা নিয়ে যিনি বিতর্ক উত্থাপনের বৃথা চেষ্টা করে জনরোষের আওতার মধ্যে এখনও রয়েছেন,তাঁর সৌখিন বাসভবন পাহারায় আপনার সরকার অতিরীক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে বাধ্য হয়েছে,তিনি কি ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে সমাবেশ করার প্রসাশনিক অনুমতি পায়। বর্তমান গনতান্ত্রিক বিশ্বের একটি দেশের উদাহরন কি কেউ দিতে পারবেন,স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা সেই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে?একটি দেশকি কেউ দেখাতে পারবে যে,সেই দেশের কোনমীমাংসিত এবং প্রতিষ্ঠিত কোন সত্যকে ৩০/৪০ বছর পর আবার জনসমক্ষে উত্থাপন করে লক্ষ লক্ষ শহিদ পরিবারের অন্তরের আগুনে"ঘি "ঢেলে দেয়ার চেষ্টা, কোন প্রতিষ্ঠিত দল বা তাঁর নেতা করেছেন? কেন এই পয্যন্ত সরকার তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা না করে উলটো সমাবেশ করে তাঁর মতবাদ প্রচারের অনুমতি দেয়া হল??তাঁরা নীজেদের এত ক্ষমতাবান মনে করেন কিভাবে? তাঁরা কি করে আবার জাতির নিকট ক্ষমা চাওয়া ছাড়াই প্রকাশ্য সভা সমাবেশ করার অধিকার পায়?কেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সংসদে ঘোষনা দিয়েও এখন পয্যন্ত আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন করছেন না? মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আপনার আশ্বাস বাংলার মানুষ অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করে।সুতারাং জনগনকে দেয়া প্রতিশ্রুতি আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন কল্পে তড়িৎ ব্যাবস্থা গ্রহনকরবেন, জনগনের এই আস্থা বিশ্বাস এখন ও অটুট রয়েছে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,শাপলা চত্বরের সেই দিনের ষড় যন্ত্র মোতাবেক যদি খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার মানুষ রাজপথে নেমে আসতেন,পরিকল্পনাঅনুযায়ী সেনা বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়েআপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারতো,আপনাকে কি জীবিত বাঁচতে দেয়া হত? আপনার পরিবারের কাওন সদস্যকে বাঁচতে দিত?আওয়ামী লীগের থানা উপজেলা পয্যায়ের কোন নেতা কি বাঁচতে দিত? তাঁরা কি সে দিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ধর্ম বিদ্বেষী সরকার উৎখাত করে ধর্মধারি সরকার কায়েমের রাজনৈতিক শ্লোগানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নামক মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ধারক বাহক জননন্দিত এইসংগঠনটিকেও জ্যান্ত কবর দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত ছিল না?আমি আজ আরও একটি বিষয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,সম্পুর্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন চরমপন্থী নেতার অবিকল নকল করা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার--,গনতান্ত্রিকদেশে,গনতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে, গনতান্ত্রীক সংগঠনের,গনতন্ত্রের পুজারি মনে করা কোন নেতা, রাজপথে আন্দোলন না করে, সীমাবদ্ধ কক্ষে ৪১দিন অবস্থান করে, ৪২ জন মানুষকে পুড়িয়ে মেরে,পরবর্তিতে বিচারের সম্মুখ্যিন না হয়ে নিয়মাতান্ত্রীক আন্দোলনের সুযোগ কোন দেশের, কোন নেতা বা কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, এমন উদাহরন কি কেউ দিতে পারবে?? ষড় যন্ত্রের জাল কোথায় বিস্তৃত ছিল তাঁর প্রমান সেই নেত্রী নীজেই তাঁর উষ্মায় প্রকাশ করে দম্ভস্বরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে সুশৃংখল বাহিনীকে তাচ্ছিল্য করে বলে ছিল"সেনাবাহিনী বেঈমান"!!!এর পরও আপনার সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আনায়ন না করে প্রকাশ্য সভার অনুমতি দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার গুলির মনে আগাত দেয়া হয়েছে আমি মনে করি। গত পৌর নির্বাচনে রায় দিয়েছে তাঁর বিচার করার,তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অর্থই হচ্ছে জনগনের ক্ষোভ তাঁর উপর থেকে এখনও কমেনি,বরঞ্চ কয়েক গুন বেড়ে জনরোষের পয্যায় পৌছে গেছে।আপনার সরকারের তাঁকে দেয়া বাড়তিনিরাপত্তাই তা প্রমান করে।সুতারাং দেশ ও জাতি এই রাজনৈতিক লাশের ভার বইবার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা।দেশের এবং জাতির প্রয়োজন বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মত শিক্ষিত, বিজ্ঞান মনস্ক,প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত সমৃদ্ধ জাতি গঠনে জ্ঞানসমৃদ্ধ, আধুনিক সভ্য দুনিয়ার নেতৃত্ব গ্রহন করার মত গুনাবলি সমৃদ্ধ নেতার। কোন অবস্থায় সক্রেটিসের আগের যুগে জাতি ফেরৎ যেতে চায়না।পরিশেষে বলতে চাই,আর কোন সংগাত নয়,এবার চাই সমৃদ্ধি।আর নয় জঙ্গিপনা,এবার চাই ধর্মনিরপেক্ষতা।আর নয় সাম্প্রদায়ীকতা,এবার চাই অসম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা।আর নয় পাকি ভাবধারা প্রতিষ্ঠা,এবার চাই মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের সফল বাস্তবায়ন। জয় আমাদের হবেই হবে, অশুভ অপশক্তির পরাজয় অবশ্যাম্ভাবি। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা