দুই যুদ্ধপরাধির রায় কায্যকরে আমেরিকার সন্তোষ,তল্পিবাহক পাকিস্তানের ক্রন্দন। ============================ অস্থির আবহাওয়ায় সামন্য স্বস্তির বাতাবরনের দেখা মিলেছে বলা অত্যুক্তি হবেনা।বর্তমান বিশ্বের মোড়ল বলে খ্যাত আমেরীকার ভুমিকার উপর বিশ্বের বহুদেশের স্থিতিশীলতা-অস্থিরতা নির্ভর করে, কেউ স্বিকার করুক বা না করুক এটাই বাস্তবতা।বর্তমান সরকারের নীতি আদর্শ নিয়ে যুক্ত রাষ্ট্র আওয়ামী লীগ কাজ করছে, এবং ভাল ফলাফলও পাওয়া যাচ্ছে তা বুঝাই যাচ্ছে।বিচ্ছিন্নভাবে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক বিভিন্ন সংস্থা বা তাঁদের সিনেটের কতিপয় সদস্যের বিবৃতি পত্রিকান্তরে প্রকাশিত হওয়ার পর বাংলাদেশের জনগনের মধ্যে এবং সরকারে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল।প্রত্যেক রায়ের পর আন্তজাতিক কতিপয় সরকারি বেসরকারি সংস্থা ব্যাক্তি মহল তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে যাচ্ছিল,প্রতিবাদের ধরন এবং তীব্রতায় ইতিমধ্যে কিছুটা স্তিমিতভাব বা কমে এসেছে তা গত দুই একদিনের বিশ্বের নামকরা কিছু পত্রিকার উপর চোখ রাখলে স্পষ্ট অনুধাবন করা যায়। অবশ্য ইউরুপিয়ান ইউনিয়ন ছাড়া অন্য কোন দেশ সরকারি ভাবে প্রতিবাদ জানায়নি,একমাত্র পাকিস্তান ছাড়া।ইউরুপিয়ান ইউনিয়নের অন্তভূক্ত দেশগুলির মধ্যে অনেক আগেই মৃত্যুদন্ডাদেশ রহিত করে আইন পাশ করেছে।নীতিগত ভাবে তাঁরা মৃত্যুদন্ডের বিরুধিতা করতে পারে,তবে তাঁরা যুদ্ধপরাধির বিচারের বিপক্ষে নয়। বিভিন্ন পত্রিকায় গত কাল একটা ধারুন সুখবর বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে স্বস্থিরভাব দেখা দিয়েছে।বাংলাদেশের প্রায় পত্রিকায় খবরটি আজ ফলাও করে প্রকাশিত হয়েছে।খবরটি নিম্নরুপ-- যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলি আহসান মুহাম্মাদ মুজাহিদ ও বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সন্তুষ্ট বলে বলে জানিয়েছেন সেদেশের পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তা গিলবার্ট মর্টন।বুধবার ওয়াশিংটনে সাকা-মুজাহিদের ফাঁসির দন্ড কার্যকর সম্পর্কে স্টেট ডিপার্টমেন্ট এই কর্মকর্তা বলেন, যুদ্ধাপরাধও মানবতাবিরোধী ট্রাইব্যুনালের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান অত্যন্ত পরিস্কার। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের এই বিচার কার্যক্রমকে সমর্থন করে। বাংলাদেশে আইনের শাষন প্রতিষ্ঠা হোক সমাজে ন্যায়, বিচার প্রতিষ্ঠা হোক এটা যুক্তরাষ্ট্র চায়। আইন এবং আদালতের রায়ের মাধ্যমে অপরাধীদের সাজা হয়েছে এতে যুক্তরাষ্ট্র সন্তুষ্ট।তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদ নিরসনে রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং দেশীয় ও বহুজাতিক সন্ত্রাসী দলগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সরকারের কঠিন অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ সন্ত্রাসের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠতে পারেনি। বাংলাদেশে বড় কোনো সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেনি। সরকারের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টার কারণে বহুজাতিক সন্ত্রাসী দলগুলো বাংলাদেশের সীমানা ব্যবহার করে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাতে পারেনি। বর্তমান সরকার ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে জানিয়ে তিনি বলেন, আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশ সরাসরি সংশ্লিষ্ট না হয়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বিভিন্ন সময়ে আইএসএর অনুসারীদের গ্রেপ্তার করেছে। জামাআতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি),হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশ (হুজিবি) এবং আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) মতো সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের অনেক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে সরকারের আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো। বর্তমান সরকার যুদ্ধাপরাধের বিচার ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। এ মুহূর্তে ধর্মীয় উগ্রবাদ, যুদ্ধাপরাধী ও স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালাচ্ছে সরকার। উল্লেখযোগ্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বর্তমান সরকার বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাত্রার গুণগত মানোন্নয়নে বদ্ধপরিকর।গিলবার্ট মর্টন যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার হিসাবে উল্লেখ করে বলেন, সন্ত্রাস মুক্ত জঙ্গীবাদ মুক্ত একটি বাংলাদেশ গড়ে উঠুক যুক্তরাষ্ট্র তা চায়। কোন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রমকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে না। বর্তমান সরকারের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশে একটি শান্তিপূর্ণ স্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে। এই পরিবেশ ব্যাহত হয় এমন কোন কাজ যুক্তরাষ্ট্র সরকার সমর্থন করবেনা। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বাংলাদেশ একটি মধ্যবিত্ত আয়ের দেশে পরিনত হচ্ছে এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকার উৎফুল্ল এবং আনন্দিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব পরিবর্তনের জন্য সে দেশে অবস্থারত বাংলাদেশিরা গুরুত্বপুর্ন অবদান রাখছেন এটা পরিস্কার বুঝা যায়।বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ মার্কিন সরকারের বিভিন্নপয্যায়ে ঘনিষ্ট যোগাযোগ রেখে চলেছেন।আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকেও তদ্রুপ সফরের ব্যাবস্থা করা গেলে ষড়যন্ত্রের জালে ছিদ্র হত এটা বলার অপেক্ষা রাখে না।বিরুধিদল যদি লক্ষ লখ ডলার খরছ করে লবিষ্ট ফার্ম নিয়োগ করতে পারে সরকার কেন পক্ষে তাঁর নীতি কৌশল তুলে ধরার জন্য লবিষ্ট নিয়োগ করছেনা তাও বোধগম্য নয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিএনপির নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড নিয়ে পাকিস্তান সরকার এবং সেই দেশের গণমাধ্যম ও একাধিক রাজনৈতিক দল যে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে, তাতে এটা মনে হওয়া স্বাভাবিক যে বাংলাদেশ নয়, পাকিস্তান রাষ্ট্রটির প্রতিই তাঁদের অধিক আনুগত্য ছিল। আর সেটি লুকোছাপা না করে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে জিহাদি মনোভাব দেখিয়েছে, তা কূটনৈতিক শিষ্টাচারের পরিপন্থী। প্রথমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী নিসার আলী জানান, বাংলাদেশে দুই যুদ্ধাপরাধীর বিচারে তিনি দারুণভাবে মর্মাহত ও উদ্বিগ্ন। নিসার আলী ১৯৭৪ সালের চুক্তির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে যা বলেছেন, তার অর্থ হলো সে সময় পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীদের মাফ করে দিয়ে এখন বিচার করছ কেন? এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রও একই কথার প্রতিধ্বনি তুলে দুই দেশের সম্প্রীতি ও বন্ধুত্বের স্বার্থে এ ব্যাপারে আর অগ্রসর না হওয়ার আহ্বান জানালেন। নিজের কথায়ই পাকিস্তান ধরা খেয়েছে। ১৯৭৪ সালের ত্রিদেশীয় চুক্তিতে বাংলাদেশ ও ভারত যৌথ বাহিনীর কাছে আটক ১৯৫ জন পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তার অপরাধ প্রমাণিত হওয়া সত্ত্বেও বিচার না করে মাফ করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তাই, পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করতে চাই, পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী যাঁদের মাফ করে দিতে এবং ভুলে যেতে বলেছিলেন, সেই তালিকায় কি সম্প্রতি দণ্ড পাওয়া দুই যুদ্ধাপরাধীর নাম ছিল? তাঁরা কি পাকিস্তানের নাগরিক? আসলে পাকিস্তানের এই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার পেছনে যে বিষয়টি কাজ করেছে, তা হলো একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিষয়টি সামনে এলে পাকিস্তানের কৃতকর্ম মানুষের চোখের সামনে ভেসে ওঠে। কিন্তু পাকিস্তানের শাসক ও রাজনীতিকেরা সেটি হতে দিতে চান না। এর মাধ্যমে পাকিস্তানের বর্তমান প্রজন্মের রাজনীতিকেরা একাত্তরের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত না থেকেও নিজেদের মানসিকভাবে যুক্ত করেছেন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ এত দিন একাত্তরের ঘটনাবলির জন্য তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ পিপিপি ও তার নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টোর ওপর দায় চাপালেও এখন মনে হচ্ছে, তিনিও সেই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি। যুদ্ধ অপরাধীর বিচার কতটুকু যুক্তিপূর্ন হচ্ছে তা পাকিস্তানের জামায়াতে ইসলামীর বর্তমান ভুমিকা থেকে স্পষ্ট অনুধাবন করা যায়।এর পরেও যদি আমাদের তথাকথিত টকশোবাজদের জ্ঞান ফিরে না আসে তবে বলতেই হয়,বিদেশিদের বীর্যের ক্রিয়া অবশ্যম্ভাবি তাঁদের দেহে এখনো প্রবাহমান। "বাংলাদেশের দুই যুদ্ধাপরাধীর বিচারের ব্যাপারে ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জামায়াতের নেতা সিরাজুল হক। রোববার বান্নুতে আয়োজিত এক জনসভায় তিনি বলেছেন, ‘মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই নেতার একমাত্র অপরাধ ছিল, তাঁরা এই দেশ ও এর আদর্শ ও সেনাবাহিনীকে ভালোবাসতেন। বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকার একের পর এক পাকিস্তানপন্থী লোকদের নির্মূল করছে এবং জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষস্থানীয় নেতাদের ফাঁসিতে ঝোলাচ্ছে। কিন্তু ইসলামাবাদের শাসকেরা নিশ্চুপ রয়েছেন।’" জামায়াতের এই নেতা পাশাপাশি নওয়াজ শরিফকে উদার নীতি ত্যাগ করতে বলেছেন। অন্যথায় বাংলাদেশ বা ভারতে চলে যেতে বলেছেন। পাকিস্তানে প্রতিদিনই সন্ত্রাসী ঘটনায় বহু মানুষ মারা যাচ্ছে, তার প্রতিবাদে পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামি কালো দিবস পালন না করলেও বাংলাদেশের দুই নেতার বিচারের প্রতিবাদে কালো দিবস পালন করেছে। কম যায়নি ইমরান খানের তেহরিক-ই-ইনসাফও। দলটি পাঞ্জাব প্রাদেশিক পরিষদে এ দুজনের ফাঁসির বিরুদ্ধে প্রস্তাব এনেছে।খুব কম শুক্রবার যায় যেদিন কোননা কোন মসজিদে বোমাহামলায় মানুষের জীবনহানি হচ্ছেনা।সেই বিষয়টি নিয়ে একদিনের জন্য ও জামায়াতে ইসলাম পাকিস্তান প্রতিবাদ করেছে তেমনটি পত্রিকার পাতায় পাওয়া যায়না।বাংলাদেশের সর্বচ্ছ আদালতের রায়ের প্রতি প্রতিবাদ জানিয়ে জামায়াত বা সরকার পাকিস্তান দেশ হিসেবে পশ্চাদপদ,জাতি হিসেবে অসভ্যের নিদর্শনই রেখেছেন বলে আমি মনে করি। পাকিস্তানের প্রগতিশিল লেখক সাংবাদিক,সাহিত্যিক এবং জনগন বেশীরভাগ বিচারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন আগে থেকে। সংগঠিত শক্তি বা দলীয় ব্যানার নেই বিধায় সরকারের উচ্চপয্যায়ে প্রভাব বিস্তার করা হয়তোবা সম্ভব হচ্ছেনা।পাকিস্তানের ক্ষমতারবলয়ে এবং ক্ষমতার বাহিরে প্রতিক্রিশীলদের প্রভাব প্রতিপত্তি দেশটির স্বাধীনতার উষালগ্ন থেকেই পরিলক্ষিত হয়।প্রগতিশীল অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিকাশ ১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই শক্তিসঞ্চয় করে সাধারনের মাঝে প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি।নামে বেনামে সেনা শাষনে অভ্যস্ত জাতির মানষিকতা এর চেয়ে ভাল হবেই বা কি করে।প্রগতিশীল চিন্তাধারার লেখক সাহিত্যিক যে একেবারেই কম জম্মেছে তাও কিন্তু নয়।সাহষ করে তাঁরা স্বৈরশাষনের যাতাকলে পিষ্ট হয়েও তাঁদের লেখনি থামিয়ে দেননি। যুগের পর যুগ তাঁরা চেষ্টা করে যাচ্ছেন, লড়াই করে যাচ্ছেন প্রতিক্রিয়ায় আবদ্ধ রাষ্ট্র ও সরকারের নীতি এ আদর্শের বিরুদ্ধে।তেমনি সাম্প্রতিক বাংলাদেশের মানবতা বিরুধি অপরাধের বিচারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া সরকার রাজনৈতিক দল, জামায়াতের বিরুদ্ধে শক্ত এবং তীব্র প্রতিবাদের পত্রিকায় প্রকাশিত উদাহরন নিম্নে তুলে ধরছি। " পাকিস্তান সরকার ‘ভারসাম্যহীনভাবে অতি আবেগ’ দেখিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির মানবাধিকারকর্মী আসমা জাহাঙ্গীর। তিনি অভিযোগ করেন, সামরিক আদালতে ও সৌদি আরবে পক্ষপাতদুষ্ট বিচারের মাধ্যমে পাকিস্তানের নাগরিকদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলেও সে ব্যাপারে সরকার নীরব থাকে। তাদের এমন প্রতিক্রিয়া এই বার্তা দেয় যে দেশের মানুষের চেয়ে বাংলাদেশের বিরোধী দলের নেতাদের প্রতি পাকিস্তান সরকারের অধিক ভালোবাসা ও আবেগ রয়েছে। পাকিস্তানের এই মানবাধিকারকর্মী আরও বলেন, যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে পাকিস্তানে ও সৌদি আরবে যেসব পাকিস্তানি নাগরিককে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হচ্ছে, তাঁদের প্রতি আগে সরকারকে আবেগ দেখাতে হবে। সরকারের এমন আবেগ একটি ব্যাপার নিশ্চিত করেছে যে ওই দুজন (সাকা ও মুজাহিদ) রাজনৈতিক এজেন্ট ছিলেন এবং পাকিস্তানের জন্য কাজ করতেন। ওই দুজন বাংলাদেশি কি পাকিস্তানে বসবাসকারী নাগরিকদের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ? যদি উত্তর হ্যাঁ হয়, তাহলে কেন এবং কিসের জন্য—সরকারের এটাও পরিষ্কার করা উচিত।" সভ্য দুনিয়ায় যেখানে মানবতা বিরুধী শাস্তি মৃত্যু দন্ডের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে উঠছে ঠিক তখন পাকিস্তানিরা স্থগিত থাকা মৃত্যুদন্ডাদেশের উপর থেকে নিষেদাজ্ঞা প্রত্যাহার করে আইনটি আবার পুরোদমে বিচারিক ব্যাবস্থায় চালু করেছে। "গত বছর ডিসেম্বরে পাকিস্তানে মৃত্যুদণ্ডের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর গত ১১ মাসে ২৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে, যা বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম।"মাত্র দেড় দুই বছরের মধ্যে মৃত্যুদন্ড কায্যকারিতার দিক থেকে অন্যতম দেশ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।বাংলাদেশের অবস্থান এখনও তুলনামুলকভাবে তলানীতে অবস্থান। তাঁরপরও পাকিস্তানের মত বর্বর দেশ বাংলাদেশের মানবতা বিরুধিদের মৃত্যুদন্ড নিয়ে কথা বলতে সামান্যতম দ্বিধাম্বিত নয়। পাকিস্তানের এই অকূটনৈতিক আচরণ ও যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। গত সোমবার পাকিস্তানকে দেওয়া প্রতিবাদে বলা হয়: মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার দায়ে দণ্ডিত দুজনের ফাঁসি নিয়ে ইসলামাবাদের প্রতিক্রিয়া একটি সার্বভৌম দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সরাসরি হস্তক্ষেপ। বাংলাদেশ এটাও আশা করে যে পাকিস্তান দায়িত্বশীল আচরণ করবে এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকবে। এতে আরও বলা হয়: ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সই হওয়া চুক্তি নিয়ে খণ্ডিত ব্যাখ্যা মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ অঞ্চলের দীর্ঘস্থায়ী স্থিতি ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিবেশী ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান হচ্ছে চুক্তির মূলনীতি। ওই চুক্তিতে কখনোই মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যায় জড়িত এবং এর পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দায়মুক্তি কিংবা বিচার থেকে রেহাই দেওয়ার কথা বলা হয়নি। বাংলাদেশ সরকার চুক্তি মোতাবেক ১৯৫ জন যুদ্ধ অপরাধিকে ফেরৎ দেয়া এবং তাঁদের বিচারের অঙ্গিকারের রাষ্ট্রীয় চুক্তির কথাও স্মরন করিয়ে ভবিষ্যতে এমন আচরনে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি হওয়ার কথা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের জৈষ্ট কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনার অন্যতম নির্বাচনী অঙ্গিকার ছিল, সকল হত্যাকান্ডের বিচার অনুষ্ঠান করে দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আইনের শাষন প্রতিষ্ঠা করার।সে লক্ষ নিয়ে '৯৬ইং সালে ২১ বছর পর খমতায় এসে জাতির জনকের হত্যার বিচার প্রক্রিয়া স্বল্প পরিসরে হলেও শুরু করেছিলেন।বিচার যথারীতি অনুষ্ঠিত হয়েছে,জড়িত কিছু লোকের শাস্তিও কায্যকর করা হয়েছে,বাকি সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা তাঁদের কৃতকর্মের বেনিফেসিয়ারিদের থেকে সুবিধা নিয়ে বিদেশে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।জেলে জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচারের রায় ও আগামি কয়েক সপ্তাহের মধ্যে প্রকাশিত হবে আশা করা যায়।সবচেয়ে দুর্ভেদ্ধ কঠিন জাতীয় ও আন্তজাতিক প্রভুবেষ্টিত, ২১ বছর স্বৈরাচারের লালনে শক্তি সামর্থ,অর্থ অস্ত্রে বলিয়ান যুদ্ধপরাধীদের বিচার করার অঙ্গিকার নিয়ে ২০০৮ ইং সালে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করে।সরকার গঠননের পরেই জনগনের নিকট দেয়া অঙ্গিকার পুরনের লক্ষে সংসদে মানবতা বিরুধি অপরাধের বিচারের জন্য আন্তজাতিক ট্রাইবুনাল গঠনে আইন পাশ করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করে।দীর্ঘ তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ করে বিচারের প্রাথমিক পয্যায় থেকে দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্রকারিদের টনক নড়ে উঠে।তাঁরা নাশকতা,বোমাবাজি,হত্যা,লুন্ঠন,আগুন সন্ত্রাস,ধর্মীয় গোষ্ঠিকে ইন্দন দিয়ে রাজপথে নামিয়ে সরকারকে নাস্তিকের তিলক পরানোর অপচেষ্টা,জঙ্গী উত্থানে ইন্দন,সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে সরকার উৎখাত, নাস্তিকতার ষড়যন্ত্রে সৃজনশীল লেখক প্রকাশক হত্যা ইত্যাদি আইনশৃংখলা অবনতির নানাহ অপচেষ্টা অব্যাহত রাখে। যুদ্ধ অপরাধের বিচার বা ৭১ এর মানবতা বিরুধিদের বিচার কায্যক্রম বন্ধে এমন কোন অপচেষ্টা নেই যা তাঁরা এবং তাঁদের দোষরদের দ্বারা সংগঠিত হয়নি। শেষ পয্যন্ত কোটি কোটি ডলার খরছ করে বিদেশে লবিষ্ট ফার্ম নিয়োগ দিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্টে চক্রান্ত অব্যাহত রাখে। এতকিছুর পরও জাতির জনকের কন্যার মনোবল,দেশ এবং জাতির উন্নয়ন অগ্রগতি,আইনের শাষন কায়েমে মানবতা বিরুধিদের বিচার প্রক্রিয়ায় সামান্যতম চিড় ধরাতে পারেনি জাতীয় ও আন্তজাতিক ষড়যন্ত্রের ধারক ও বাহকেরা।বরঞ্চ দেশ ও জাতির সংকল্প দৃড থেকে দৃডতর হয়েছে।জাতি ধীরে ধীরে বিচারের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।সেই ঐক্যই আজ চারদিকে আওয়াজ উঠেছে মানবতা বিরুধী অপরাধে শাস্তি পাওয়া প্রত্যেকের সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকুলে বাজেয়াপ্ত পুর্বক তাঁদের নাগরিক অধিকার বঞ্চিত করার জন্য।

   পাকিস্তানের মত প্রতিক্রিয়াশীল দেশের জনগনের মানষিকতা উন্নত হওয়ার আশা পোষন করা সাগরে মুক্তা খোঁজার সমতুল্য।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন