জিয়া পরিবারের রোষানলের আগুনে দগ্ধ বেগম জিয়ার রাজনীতির যবনিকাপাত-- ================================= এই প্রথম বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোন বড় দল থেকে উপদল বা মুল দলকে বিভক্ত করে নতুন দল সৃষ্টি হতে যাচ্ছে।গনতান্ত্রিক রাজনীতিতে দল পরিবর্তন করে অন্য দলে যোগ দেয়া বা নতুন দলের আত্মপ্রকাশ ঘটানো অপরাধের পয্যায়ে পড়েনা, যদিনা আদর্শিক বিভেদ, দর্শন গত অমিল, কর্মসুচির দ্বিমত ইত্যাদির কারনে হয়ে থাকে।অতীতে স্বৈরাচারী সরকার সমুহ রাষ্ট্রের শক্তি ডি,জি,এফ,আই কে ব্যাবহার করে লোভী নেতাদের লোভের মুলা ঝুলিয়ে,আদর্শিক নেতাদের বল্প্রয়োগ করে নতুন দলের জম্ম দিতে দেখা গেছে।কোন কোন সময়ে হার না মানা নেতাদের হত্যা করে প্রতিশোধ নিতেও দেখা গেছে।যেমনটি ৭৫এর ৩রা নভেম্বর জেল খানার অভ্যন্তরে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে মোস্তাক সরকার ভবিষ্যতের সম্ভাব্য কাঁটা পরিষ্কার করে খমতা পাকাপোক্ত করতে গিয়ে মাত্র তিন দিনের মাথায় খমতা ত্যাগ করে ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হতে হয়েছে।যাক সেই কথা,আজকে আমার বিষয় তাই নয়,আলোচনা করতে চেয়েছিলাম দল ভাঙ্গা নিয়ে সেখানেই সীমাবদ্ধ থাকি। দৃশ্যমান না হলেও পর্দার আড়ালে দল ভাঙার রাজনীতি অনেকটা জোরেশোরেই সক্রিয় হচ্ছে। বলা যায়, সাজঘরের প্রস্তুতি শেষের দিকে। লক্ষ্য নতুন বছরের জানুয়ারি মাস। প্রস্তুতি সফল হলে সময়টা রাজপথের প্রধান বিরোদী দল বিএনপির জন্য আরও কঠিন হবে নিশ্চিত ভাবে বলা যায়। এই যখন অবস্থা, তখন এক সময়ে যারা কথিত কিংস পার্টির স্বপ্নে বিভোর ছিলেন, সহসা খমতা পাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন তাদের মধ্যে অনেকে নতুন ভাবে স্বপ্নে বিভোর হতে শুরু করেছেন। তবে রাজনীতি নিয়ে এমন ঘাত-প্রতিঘাতের অংকের পরিণতি অতীতে ভাল হয়নি এমনটি যারা বলে আসতেন তাঁরাও এবং অভিজ্ঞ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকে, এবারের বিষয়টিকে একটু গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন। তারা বলছেন, যদিও দল ভাঙার অপরাজনীতি করে অতীতে কেউই সফল হয়নি, তারপরও এবারের দল ভাঙ্গার প্রেক্ষাপট ভিন্ন রকম। এবার যারা দল ভেঙ্গে নতুন দল গড়বেন তাঁরা বৃহৎ রাজনৈতিক দলের সন্ত্রাস,বোমা বাজি,জঙ্গী পৃষ্টপোষকতা,প্রধান নেত্রীর রাজনৈতিক অনভিজ্ঞতা,প্রধান মন্ত্রীর পদে থাকাকালীন পারিবারিক লুটপাট,তারেকের অতিরীক্ত বাড়াবাড়ি,যোগউপযোগি কর্মসুচি প্রনয়নে ব্যর্থতা,দলীয় কর্মকান্ডে পারিবারিকিকরন,খালেদা জিয়ার পরিবারকে দুর্নীতির দায় থেকে রক্ষা করার জন্য বি,এন,পি,দলকে ন্যাক্কারজনক ভাবে ব্যাবহার,জামায়াতের উপর নির্ভরশীলতা,গনতান্ত্রিক আন্দোলনে হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশে বিদেশে উপহাসের পাত্রে পরিনত করা দলকে ইত্যাদি নানাহ অভিযোগের পাহাড়ের উপর ভর করে দল দ্বিখন্ডিত করার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ফেলেছেন বলে অভিজ্ঞমহল দ্বিধাহীন ভাবে উপলব্দি করছেন। অতীতে দল ভাঙ্গা যদিও নিন্দার কারন হয়ে জনগন থেকে নেতারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতেন,এবারের ব্যাপারটা তাঁর ঠিক উলটো হবে মনে করছে অভিজ্ঞরা। কেননা, মাইনাস ফর্মুলা থেকে শুরু করে অতীতে যারা যখন দল ভাঙার খবরের জন্ম দিয়েছেন তারা কেউ জনগন কতৃক ধিক্কার ছাড়া প্রসংশা পাননি,যাহা আশা করে বের হয়েছিলেন নতুন দলের জম্ম দিয়েছিলেন লাভ কিছুই হয়নি।জনগনের কাতারে কেউই দাঁড়াতে পারেননি। এবার সে রকম কিছু মনে করার কোন কারন নেই। যেহেতু জাতীয় স্বার্থে দল ভেঙ্গে নতুন দল গড়ার প্রত্যয়ে এবারের উদ্যোগ।ভাঙ্গার প্রক্রিয়া যদি ঘটে যায় তখন তা শক্ত ভীত পেয়ে গেলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না। এক টানা দ্বিতীয় মেয়াদে অনেকটা শক্তিশালী অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের মতো একটি বৃহৎ দল সরকারে রয়েছে।বাংলাদেশের ইতিহাসে গনতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে এইবারেই বিপুল জনপ্রিয়তা নিয়ে কোন দল বাংলাদেশের ক্ষমতার মসনদে অনেকটা নিশ্চিত ভাবেই রয়েছেন।এমনটি দ্বিতীয় বার ক্ষমতা উপভোগ করতে অতীতে কখনও কোন দলকে দেখা যায়নি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, দল এবং জোট শেষ অংকে কি হবে তা নিয়ে হয়তো এখনই কিছু বলা না গেলেও অচিরেই ধারনা পাওয়া যাবে । জানুয়ারী মাসের মাঝামাঝি সময়ে বিএনপির বিপরীতে আর একটি বিএনপি অবস্থান নিলে রাজনৈতিক অঙ্গন খানিকটা ঘোলাটে হওয়ার আশংকা রয়েছে। ভোটের হিসেবের মধ্যে বড় একটা উত্থান পতন ঘটবে। পরিস্থিতির কারণে অনেকে নতুন পতাকাতলে সমবেত হবেন,শুনা যায় আওয়ামী লীগের সংষ্কার পন্থি হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার কারনে দলে এবং সরকারে কোনঠাসা নেতারাও নতুন প্রক্রিয়ায় সামিল হচ্ছেন।উল্লেখ্যযে জাতীয়তা বাদী দল ও তাঁর জোট শরিক থেকে যারা বেরিয়ে আসছেন তাঁরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হিসেবে বি,এন,পিতে পরিচিত ছিলেন বলে জানা যায়।সে কারনে নাকি আওয়ামী লীগের বঞ্চিত নেতারা শামিল হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ ব্যাপারে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আমরা ইতিহাস থেকে কোনো শিক্ষা গ্রহণ করি না। কিন্তু অনৈতিকতার পরিণতি ভয়াবহ। আমি আশা করি, সবারই শুভ বুদ্ধির উদয় হবে।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. মাহবুবুর রহমান বলেন, বিএনপিকে কেউ কোনোদিন ভাঙতে পারবে না। এমন চেষ্টা অতীতেও সফল হয়নি। তবে তিনি মনে করেন, এখন আবার নতুন করে যারা চেষ্টা করছেন তাদের পেছনে প্রভাবশালী কোনো না কোনো পক্ষের হাত থাকতে পারে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ‘আমরা ভাঙা-গড়ার রাজনীতি করি না। যদি কেউ বিএনপি থেকে বেরিয়ে যায় তার জন্য তো সরকার দায়ী নয়।’ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বর্তমান প্রধান মন্ত্রী আগেভাগে সাংবাদিক সম্মেলনে বলে দিয়েছেন কোন রাজনৈতিক দলের নেতাদের আওয়ামী লীগে ঠাঁই হবেনা।তাঁর এই কথাটি সর্বমহলে প্রসংশিত হয়েছে।অভিজ্ঞরা মনে করেন বি,এন,পি জামায়াতের বেশ কিছু নেতা আওয়ামী লীগে যোগ দেয়ার জন্য বিভিন্ন মহলে জোর তদ্বির চালানোর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এই ঘোষনাটি দেন।এতে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর শক্তিশালী বিরুদী দল থাকা গনতন্ত্রের অপরিহায্য শর্তের প্রতি তাঁর অঙ্গিকারের বাস্তব পদক্ষেপ বলে অনেকে মন্তব্য করছেন। সাম্প্রতিক সময়ে হঠাৎ করে গুপ্তহত্যা বেড়ে যাওয়ায় দল ভাঙার গোপন প্রক্রিয়ার পালে জোরেশোরে হাওয়া লেগেছে। একদিকে এসব ষড়যন্ত্রমূলক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরকার যেমন উদ্বিগ্ন, তেমনি এ উদ্বেগ থেকেই রাজনীতির অন্দর মহলে শুরু হয়েছে নানা তৎপরতা। দুই বিদেশী হত্যাকাণ্ডের পর থেকে রাজনীতির পটভূমি তৃতীয় কোনো পক্ষ ঘোলাটে করতে অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে,ধারনাটি স্পষ্টতা পায়। একইসঙ্গে এ ধরনের স্পর্শকাতর হত্যাকাণ্ডে বিএনপির যোগসূত্রতার খবর প্রকাশিত হওয়ায় দলের নেতারা যারপরনাই নার্ভাসনেস অনুভব করা শুরু করেছেন। এমনিতে অবরোধে মানুষ পুড়িয়ে মেরে কঠিন বিপর্যয়ের মধ্যে আছে দলটি।গুপ্ত হত্যায় শামিল হয়ে আরও বেকায়দায় পড়বে, তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। সরকার বাধ্য হয়ে অনিচ্ছা সত্বেও কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিটা দেয়ার মতো বিএনপিকে গুপ্ত হত্যার ঘটনায় কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাস্তবিক অর্থে এমন দুঃসময়ে দল ভেঙে যাওয়ার খবরে বিএনপির জন্য ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে বিপাকের শেষ সীমায় পৌছাবে দলটির নেত্রীর পরিবার এবং দলটিকে। এ মুহূর্তে সরকারের রাজনীতির কৌশলগত দিক হচ্ছে বিএনপিকে শক্তিহীন করে রাখা,কোন অবস্থায় নীজের ঘাড়ে দোষ নিয়ে নহে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সেই দিকেই হাঁটছেন মনে হচ্ছে।নয়তো দলে নতুন কোন লোক যোগদানে কঠোর নিষেদাজ্ঞা দেয়ার কারনই বা কি?জামায়াতের মত কট্রর আওয়ামী বিরুদীদের দলে নিতে পেরেছেন- বি,এন পির মুক্তিযোদ্ধা অংশকে নিতে আপত্তি কোথায়? সরকার এই মহুর্তে ইচ্ছে করলে দলের ভাঙ্গনকে ত্ব্ররান্বিত করে দিতে পারতেন।তাঁদের অজস্র নেতার বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগে দায়েরকৃত পুরনো মামলাগুলো কাজে লাগানোর পাশাপাশি তাদের সব ধরনের সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক যোগাযোগের ওপর বিধি নিশেদ আরোপ করতে পারতেন,যেহেতু গুপ্ত হত্যায় জড়িত থাকার বহু প্রমান ইতিমধ্যে সরকারের হাতে এসে পৌছে গেছে। ২০ দলীয় জোটে বিভক্তি বা দলটির মধ্যকার দ্বন্দ্বকে কাজে লাগিয়ে, তাদের মধ্যে ভাঙন সৃষ্টিতে সক্রিয় উদ্যোগও নিতে পারতেন। সরকার আপাত সেই দিকে নজর না দিয়ে স্বাভাবিক ভাঙ্গনকে উৎসাহিত করার চিন্তায় মগ্ন।প্রধান মন্ত্রী কাউকে দলে নিবেননা, ঘোষনাটি বি,এন,পি ভাঙ্গনের ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চিত হয়েই দিয়েছেন বলে অভিজ্ঞমহল মনে করেন।দল ভাঙ্গনের কালচারে সামিল না হওয়ায় এবং নাম সর্বস্ব নেতাদের দলে না ভিড়ানোর ঘোষনায় প্রধান মন্ত্রী সর্বমহলের প্রসংশায় প্রসংশিত হচ্ছেন। এদিকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের দণ্ড কায্যকরের দিনক্ষন এগিয়ে আসছে। ঘাতকদের অনুসারীরা বেপরোয়া হয়ে দেশে অস্থিরতা তৈরিতে গুপ্তহত্যা এবং বোমা বিস্ফোরণ, নাশকতার পথ বেছে নিয়েছে। বিএনপি-জামায়াত সরাসরি এসব ঘটনার পেছনে রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণে সরকারের নীতিনির্ধারকরা নিজেদের মধ্যে দফায় দফায় আলোচনা করছেন। এ আলোচনায় বিএনপি ও জামায়াতের অতীতের নাশকতার মামলার আসামীদের গ্রেপ্তার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সরকার মনে করে পুরাতন মামলার আসামীদের গ্রেপ্তারের কৌশলে গুপ্ত হত্যার পরিস্থিতির উন্নতি করা সম্ভব হবে। সরকার মনে করে বাস্তবতার আলোকে ২০ দলীয় জোটের পরিধি রাজনৈতিক কারনেই সংকুচিত হতে বাধ্য।তাছাড়া বিএনপি ও জামায়াতের ভেতরের নেতৃত্ব পয্যায়ে মানবতা বিরুধি অপরাধের বিচারের রায়ের পর হরতাল দেয়া বা সমর্থন করা নিয়ে যে দ্বন্দ্ব আছে সেই দ্বন্ধেই জোট সংকোচিত হবে,শুধু সময়ের ব্যাপার।সুতারাং দলে জায়গা দিয়ে বা প্রেসার সৃষ্টি করে জোট ভেঙ্গে স্বৈরাচারী সরকার সমুহের পথ অনুসরন করার কোন প্রয়োজন আছে বলে আওয়ামী লীগ বা দলের নেত্রী শেখ হাসিনা মনে করেন না। অবশ্য এর আগেই ২০ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে এসেছেন বিএনপির পুরনো মিত্র শেখ শওকত হোসেন নিলু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন বিএনপির সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা,বিভিন্ন সভা সমাবেশে প্রধান মন্ত্রীর প্রসংশা করে বক্তৃতা বিবৃতিও দিচ্ছেন প্রায়ই। কিন্তু প্রধান মন্ত্রী তেমন কোন উৎসাহ এ পয্যন্ত দেখিয়েছেন তেমন প্রমান পাওয়া যায় না তাঁর ব্যাপারে। অপরদিকে সাবেক এমপি শহিদুল হক জামাল ও আবু হেনা নতুন বিএনপি গড়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন অনেক আগে থেকেই। বিএনপির সাবেক এ দুই নেতা দলটির সংস্কারপন্থী নেতাদের সংগঠিত করার পাশাপাশি বর্তমানের মুক্তিযোদ্ধা অংশকেও সংগঠিত করে বড় আকারে রাজনৈতিক দল গঠনে জোর তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন। জানা গেছে, বিএনপির সাবেক এই দুই নেতা সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে যোগ দেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন,প্রধান মন্ত্রী সরাসরি তাঁদের না করে দিয়েছেন।ঘটনাটি প্রায় ৭/৮ মাস আগেই ঘটেছিল।সেই দুই নেতাই আরো শক্তি সঞ্চয় করে দলে এবং জোটে ভাঙ্গন প্রক্রিয়ায় সম্মুখে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। আবুহেনা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমকে এবং কি জনসভায় ও বলেন,দলের বহু নেতাকর্মী নেত্রীর হঠকারী কর্মসুচি এবং পরিবার রক্ষার আন্দোলনে নাশকতার অভিযোগে জেলে রয়েছেন। তাঁরা প্রথম দিকে না বুঝেই খালেদা জিয়ার হঠকারি কর্মসুচিতে শামিল হয়েছিল।তাদের মুক্ত করতে আমাদের সংগ্রাম করতে হবে,নিয়মতান্ত্রিক ভাবে,গনতন্ত্রের সজ্ঞা অনুযায়ী আন্দোলন করতে হবে। তিনি জানান, সবাইকে নিয়ে জানুয়ারির মধ্যে বড় আকারের কনভেনশন করে সেখানে নতুন নেতা নির্বাচন করা হবে।অভিজ্ঞমহলের ধারনা বিকল্প ধারার বর্তমান নীরবতায় প্রমান করে তাঁরাও নতুন দলেই শামিল হবেন। বিকল্প ধারার মাহী বি. চৌধুরী সরকারের ঘনিষ্ঠ মহলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে সফল না হওয়ায়,এবং কর্নেল অলির লন্ডনে খালেদার সাথে বৈঠক করার কারনে বি,এন,পিতে শামিল না হয়ে নতুন বি,এন,পিতে শামিল হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে অনেকেই মনে করেন। যদিও বি. চৌধুরীর বি,এন,পি বা খালেদার প্রতি দুর্বলতা এখন ও রয়ে গেছে এবং বি,এন, পিতে ফিরে যাওয়ার পক্ষে। ছেলে মাহী ভবিষ্যত বি,এন,পি রাজনীতির অসারতার কথা চিন্তা করে নতুন বি,এন,পিতে যোগদান অথবা জোট গঠনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বলে জানা গেছে। এর বাইরে ২০ দলীয় জোটের ছোট ছোট রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নতুন বি,এন,পির যোগাযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে। দেশের বুদ্ধিজীবি ও সুশীল সমাজের একটা অংশের পক্ষ থেকে তাদের ভুল রাজনীতি থেকে সরে আসার জন্য অনুপ্রানিত করা হচ্ছে। লন্ডনে অবস্থানরত জামায়াত নেতা ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকের অস্বাভাবিক নীরবতার পেছনেও ঠিক একই রাজনৈতিক কারণ রয়েছে বলে খোদ দলটির নেতাকর্মীরা মনে করেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিয়াউর রহমানের ভাই আহমেদ কামাল নতুন বি,এন,পির সাথে থাকবেন এবং গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা পালন করবেন বলে জানা গেছে।খালেদা জিয়া দলের নেত্রী হওয়া অবদি জিয়া পরিবারের সাথে তেমন একটা ভাল সম্পর্ক রাখেননি তা আগেই পত্রপত্রিকায় জানাজানি ছিল। জিয়ার মৃত্যুর পর ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী না চলাকে তাঁর শশুরবাড়ীর মানুষ ভাল চোখে দেখেননি কখনও। স্বামীর মৃত্যুর পরে একদিনের জন্যও শশুর বাড়ী যাননি বলেও অভিযোগ করেন জিয়ার পরিবার।স্বাধীনতা যুদ্ধের পর শশুর বাড়ী বেড়াতে গেলে বাড়ীর লোকেরা এবং প্রতিবেশীরা বিরুপ মন্তব্য করায় খালেদা শশুর বাড়ীর পথ মাড়াননি বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন। আজকে ইহাই কাঁটা হয়ে জিয়ার আদর্শের উপর বড় ভাগ বসাতে উদ্যোগি হয়েছেন বলে বিশ্লেষকদের ধারনা। জিয়ার ভাই নতুন বি,এন,পি দল আত্মপ্রকাশের প্রাথমিক সব কাজ ইতিমধ্যে সমাপ্ত করে রেখেছেন। তারেক লন্ডন থেকে কাকাকে নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন বলেও জানা গেছে।খালেদা পন্থি বি,এন,পি নেতাদের মাথাব্যাথার বড় কারনই হচ্ছেন জিয়ার ভাই,সে যদি মাঠে নেমে আদিবৃত্তান্ত প্রকাশ শুরু করে, তবে খালেদার বাকী ইমেজ ও নষ্ট হতে সময় লাগবেনা বলে তাঁদের বদ্ধমুল ধারনা।বিষয়টি খোদ খালেদাকেও ভাবিয়ে তুলছে বলে জানা গেছে।এ ছাড়া আহমেদ কামালের মিলাদ মাহফিলকে তিনি ধর্মীয় অনুষ্ঠান বলে মন্তব্য করলেও রাজনীতিতে অভিজ্ঞমহল মনে করেন, ফুল ফোটার আগে ছিড়ে ফেলার আশংকা থেকেই তিনি কথাটা বলতে পারেন। রাজনীতিতে তিনি কেবল অনভিজ্ঞ নন।জিয়ার মতই আহমেদ কামাল সূযোগ সন্ধানী আগে থেকেই।বেগম জিয়ার এমন সংকটময় অবস্থার জন্য তিনি এতদিন অপেক্ষায় ছিলেন।অবশ্য জিয়ার হঠাৎ মৃত্যুর পরও ভিতরে ভিতরে চেষ্টা করেছিলেন, ভাইয়ের ইমেজকে কাজে লাগিয়ে রাজনীতিতে উত্থিত হওয়ার।সেই চেষ্টা কয়েক সিনিয়র নেতার কারনে প্রাথমিক পয্যায় বাধাগ্রস্থ হওয়ায় শেষাবদি চুপসে যান।শমসের মবিন চৌধুরীর সরে যাওয়ার বিষয়ে মাহবুবুর রহমান বলেন, তিনি অসুস্থতাজনিত কারণ দেখিয়েছেন।অভিজ্ঞ গন এই কথাটিতে আস্থা না রেখে বলেন, বর্তমানের গুপ্ত হত্যায় জড়িয়ে পড়ায় বি,এন,পি দেশে বিদেশে সমালোচনার ঢেউ উঠার আগেই তিনি সরে গেছেন। আন্তজাতিক কানেকশান সম্পর্কে শমসের মবিন অনেক কিছুই জানেন।তিনি বেগম জিয়ার ঘনিষ্টজনদের মধ্যে অন্যতম একজন।স্বাভাবিক ভাবেই তিনি জানেন খালেদার বর্তমান কানেকশান কোথায় কোথায় আছে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় থেকে দুর্নীতি, সন্ত্রাস এবং জঙ্গি লালন করেছে। ক্ষমতার বাইরে গিয়েও তারা একই কাজ করছে। জঙ্গিদের লালন-পালন এবং আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে, রাজনীতির নামে পেট্রলবোমা দিয়ে মানুষ হত্যা করছে। এতে তারা যেমন জনগণের কাছে অজনপ্রিয় হয়েছে, তেমনি নিজ দলের নেতাকর্মীদের আস্থাও হারিয়েছে। এরকম অবস্থায় দলটিতে ফাটল ধরার যথেষ্ট কারণ তৈরি হয়েছে। পরিশেষে বলা যায়,জিয়া পরিবারের রোষানলের আগুনে দগ্ধ বেগম জিয়া রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে বিতাড়িত হয়ে স্বেচ্ছায় স্ব-পরিবারে নির্বাসনের পথ বেচে নিতে পারেন।এবারের লন্ডন যাত্রা বেগম জিয়ার রাজনীতির সমাপনি বিদেশ সফর হলে আশ্চায্য হওয়ার কিছুই থাকবেনা।

বাঙ্গালী সমাজে একটা কথা খুব প্রচলন,"ঘরের শত্রু বিভীষন".।অবহেলা,অযত্মে,অবমুল্যায়নের খেসারতে বেগম জিয়া দিশেহারা।পারিবারিক ভাবেই স্বেচ্ছায় নির্বাসনের পথ বেচে নিলে আশ্চায্য হওয়ার কিছুই থাকবে না।সময় তাই নির্দেশ করছে বল অভিজ্ঞরা মনে করেন।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন