অশুভ শক্তির অঘোষিত যুদ্ধ--মন্ত্রী নেতাদের অপরিপক্ষ বচন,বুদ্ধিজীবিদের সীমাহীন দুর্গতি।


  অশুভ শক্তির অঘোষিত যুদ্ধ, মন্ত্রী-নেতাদের সীমাহীন বালখিল্যতা ---

_____________________________________________


  মাননীয় যোগাযোগ মন্ত্রী জনাব ওবায়দুল কাদের সাহেব এবার সরকারে যোগদান করার পর কট্রর কিছু সত্য কথা প্রায় বলতে শুনা যায়।শুধু কট্ররতা কথায় নয় কাজেও তাঁর সাক্ষর প্রতিনিয়ত রেখে যাচ্ছেন।সরকারের নীতি নির্ধারকদের মধ্যে আড়ালে আবড়ালে নেতিবাচক সমালোচনাও করে থাকেন অনেকে যোগাযোগ মন্ত্রীর।জনগনের মাঝে কলকাতার বাংলা ছবির প্রধান চরিত্রের  নামকরনে পাটাকেষ্ট হিসেবেও ডাকা শুরু করে দিয়েছেন।সরকারের উচ্চ মহল থেকে যদিও নিন্দার নিম্নমুখি সমালোচনা শুনা যায়, জনগনের উচ্চারিত শব্দটি একান্তই অন্তরের অন্তস্থল থেকে উৎসারিত ভালবাসা মিশ্রিত  আবেগের বহি:প্রকাশ এতে কোন সন্দেহ নেই।
 লক্ষ করলে দেখা যায়,ওবায়দুল কাদের ভাই নীজে কিন্তু কম কথা বলেন না,তাঁর কথার যৌক্তিকতা ও মাধুয্যতা,কথা বলার ঢংয়ের বৈশিষ্ঠতার কারনে মানুষের শুনতে ভাল লাগে বিধায় চরম শত্রুরাও সমালোচনা করা থেকে বিরত থাকে,বরঞ্চ আগ্রহভরে  তাঁর বক্তৃতা, বিবৃতি,সাক্ষাৎকার শুনার জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়।মাত্র কয়েক দিন আগে কোন একটা অন-লাইন পত্রিকার ভার্সনে এক কলাম লিখকের কলাম পড়তে গিয়ে(স্মরনে আনতে পারছিনা) আমি হতবাক হয়ে গেলাম।তিনি তাঁর লিখায় মাননীয় প্রধান মন্ত্রীকে ইনিয়ে বিনিয়ে বলতে চেয়েছেন,প্রধান মন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে বড় পদটা দখল করার সম্ভাবনা নাকি যোগাযোগ মন্ত্রীর রয়েছে!!

   বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বর্তমানে বাংলাদেশের সব চাইতে বড় এবং গনতান্ত্রিক সংগঠন।গনতন্ত্র চর্চা করার অভ্যেশ বলি আর মানষিকতাই বলি কমবেশী যা হয় তা আওয়ামী লীগেই হয়।যোগ্যতার মাপকাঠিতে যদি বড় পদ দখল করার মত ক্যারিয়ার হয়েই থাকে তবে এতেতো সবার খুশি হওয়ার কথা,তেলবাজি করার কথা নয়।তোমার পত্রিকা দেখার সুযোগ কি মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর হবে? শত শত জাতীয় পত্রিকা থাকতে, তোমার অখ্যাত অন-লাইন পত্রিকা পড়তে যাবেন কেন প্রধানমন্ত্রী? না লিখার মসল্লার অভাবে লিখা,পত্রিকার পাতা পূর্ন করার জন্য চাপানো?যতসব অথর্বের দল---

বিদেশি হত্যা, ব্লগার হত্যা, প্রকাশক হত্যা বা পুলিশ হত্যা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়,ইতিমধ্যে প্রমানীত সত্য হিসেবে জনগনের মধ্যে ঐক্যমত্যতা এসেছে,এই সমস্ত সব কিছুই একই চক্রের কাজ,একজায়গা থেকে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে।সাম্প্রতিককালের এসব হত্যাকান্ডকে যদি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে অভিহিত করা হয়, তহালে হত্যা ষড়যন্ত্রের এসব ঘটনার গভীরতা ও গুরুত্বকে খাটো করা হয়না?প্রকারান্তরে অস্বীকারের সামিল নয় কি?আড়াল করার চেষ্টা করা হলে পরিকল্পিত হন্তারকদের খোঁজে বের করে আইনের আওতায় আনায়ন  করার চেষ্টা কমে যায়না প্রশাসনের ?প্রকারান্তরে হত্যাকারিরা আড়ালে চলে যাওয়ার সুযোগ নিবেনা?আমাদের সরকারের   দায়িত্বশীল মন্ত্রী-নেতা বিশেষ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেও একাধিকবার ওই সব হত্যাকান্ডকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে মন্তব্য করেছেন। এতে জনমনে আতংক কি তিনি কমাতে পেরেছেন? বরঞ্চ জনগন বিরুপ মন্তব্য করতেও পিছপা হয়নি।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের ভাবমুর্তি কমেছে না বেড়েছে?নিশ্চয়ই কমেছে।সরকারের মন্ত্রীর ভাবমুর্তি কমার অর্থই হল সরকারের ভাবমুর্তি কমা,সরকারের ভাবমুর্তি কমার শেষ পরিনতি কি দেশরত্মের ভাবমুর্তি কমে যাওয়া নয় ?কোন মন্ত্রী নেতা এক চিমটি সুনাম কি সঞ্চয় করে দিয়েছেন সরকারের ঝুড়িতে?সঞ্চয় করে খোয়ালে আপত্তির কোন ব্যাপার ছিলনা,প্রধানমন্ত্রীর সঞ্চিত গৌরব আপনার কথায় ও কাজে ভূলুন্ঠিত করবেন কেন?কোন অধিকারে? অধিকার শুধু একটা,আপনি মনে প্রানে আওয়ামী লীগকে ভালবাসেন,বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ভালবাসেন,তবে বাক্যব্যায়ে মিতব্যায়ি হয়ে সরকারের ভাবমূর্তি অক্ষুন্ন থাকায় সহযোগিতা করুন?আপনার কথায় আর কাজে জনগনের বিরক্তির ভাব আসে তাও কি আপনি বুঝেন না? যদি নাই বোঝেন তবে আপনি নেতা হলেন কি করে? তেলবাজি করে?আমি মনে করি ওবায়দুল কাদের ভাই এই কথাটিই আকারে ইঙ্গিতে বোঝাতে চান সরকারের ঘনিষ্ট নেতা মন্ত্রীদের। জনগনের মনের একান্ত নিবিড় পয্যবেক্ষনের ফলাফল  তুলে ধরার চেষ্টাই করেন কাদের ভাই।
  বস্তুত ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর পরই বিডিআর হত্যাকান্ডের নৃশংস ও ভয়াবহতার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারকে জানিয়ে দেয়া হয়েছিল যুদ্ধ আমরা শুরু করলাম,শান্তি তোমাদের দেবনা। ২০১৩-১৪ইং এ এসে সেই যুদ্ধ তুঙ্গে ওঠে এবং রক্তাক্ত গোলাবারুদ,সাথে নতুন সং্যোজন পেট্রোল বোমা দিয়ে জ্যান্ত মানুষকে পোঁড়ে কয়লায় রুপান্তরীত করন। যা আগে কখনও বাংলার মানুষের অভিজ্ঞতায় ছিলনা উপলব্দিতেও ছিলনা। এখন পর্যন্ত থেমে থেমে সেই যুদ্ধই চলছে অঘোষিত ভাবে।
বাঙ্গালী জাতির সবচেয়ে বড় চাওয়া রাজাকারের বিচার করে,দেশকে, জাতিকে পংকিল মুক্ত করা।সেই লক্ষপুরনে সরকার বিচার অনুষ্ঠানের ব্যাবস্থা করে
৭১-এর খুনিদের গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। সে সময়ই সরকার ষড়যন্ত্রকারি মহলের যুদ্ধকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করেছিল।এখনও প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অঘোষিত যুদ্ধের সময়োচিত জবাব দিয়ে চলেছেন অত্যান্ত ধীরস্থির চিত্তে। এই অঘোষিত যুদ্ধের মুল কারন আমাদের সাথে বিচরন করেও একটি মহল সম্যক ভাবে বুঝার চেষ্টা ৭২--৭৫ এও করেননি এখনও করেননা।'৭৫ এর পর  জিয়া, এরশাদ, খালেদা এবং বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির ফসল একচেটিয়া মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি নিধন অন্য পক্ষে রাজাকারের সন্তানদের প্রসাশনের সর্বস্তরে নিয়োগ দিয়ে এমন অবস্থার সৃষ্টি করে রেখেছেন,যাতে কোন ভাল কাজ  সহজে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তি ক্ষমতায় এলেও  করতে না পারে। তাঁর পাকাপোক্ত ব্যাবস্থা করে রেখে গেছেন,বিশেষ করে পুলিশ বাহিনীতে, সচিবালয়ে।   তাদের গড়া ২১ বছরের প্রশাসন দিয়ে  বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে কাজ করতে হচ্ছে।স্বাধীনতার  মূল চেতনাকে পাল্টে দেওয়ার পটভূমিতে বাংলাদেশে কখনও  '৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে, ফাঁসি দেওয়া হবে-এটা কেউকি কল্পনা করতে পেরেছিলেন? অথচ আজকের বাস্তবতা হলো- যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে,ফাঁসিও কায্যকর হচ্ছে,নতুন মামলাও প্রতিনিয়ত যোগ হচ্ছে, অভিযোগ গঠিত হচ্ছে নিয়মিত। সরকারের পক্ষে ইচ্ছা করলেও পিছিয়ে আসার কোন সুযোগ নেই।সামান্য বিলম্বে অতি চেতনাধারিদের তর সয়না,নানাহ ব্যাঙ্গ বিদ্রুপে পরিস্থিতি ঘোলাটে করে দেয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়ে যান।কেউ বলেন সমঝোতা হয়ে গেছে,তাই জামায়াত আন্দোলন থেকে পিছু হঠে গেছে,কেউ বলেন সরকারের সদিচ্ছা নেই, তড়িৎ বিচার কাজ শেষ করার।একটা ব্যাপার বোঝেন না জামায়াতের চোরাগুপ্তা হামলা করা ছাড়া নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের শক্তি নি:শেষ হয়ে গেছে, বি,এন,পির সংগঠিত শক্তি নির্বাচনে অংশগ্রহন না করার   কারনে ছত্রভঙ্গ হয়ে গেছে।'৭৫ ইংরেজীতেও  পাকিস্থানের গড়া প্রসাশন নিয়ে জাতির জনককে এই বিড়ম্বনার জ্বালা সহ্য করে দেশ গড়ার কাজ করতে হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অতি বিপ্লবি চেতনাধারিদের সম্মুখ ষড়যন্ত্রের ফসল ১৫ই আগষ্ট।আজ সেই ভুমিকায় সরাসরি তাঁরা নিজেরাই,পেছনে ৭৫ এ জড়ো হওয়া সমুদয় শক্তি।
  বক্তব্য যারা অহরহ দিচ্ছেন, একেবারে সহজ সরল পানিরমত বিশ্লেষণ করছেন তারা সবাই কিন্তু দেশপ্রেমিক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মনে প্রাণে ধারণ করেন,সন্দেহের কোন অবকাশ আছে বলে আমি মনে করিনা।।দেশের  সংকটকালে ও অতিশয় সংবেদনশীল গুরুত্বপূর্ণ  মুহূর্তে,  প্রকাশ্য লিখিত বক্তব্যকে স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক জঙ্গি অপশক্তির হাতকেই বেশি শক্তিশালী করছে প্রকারান্তরে। এই সহজ বিশ্লেষণটা তাদের মাথায় আছে কিনা বুঝিনা।সময়জ্ঞান খরছ না করে সুযোগ সন্ধানিদের মত ''জোঁক বুঝে যেনতেন ভাবে কলম চালিয়ে'' হাত্তালি নেয়ার সস্তা মানসিকতারই  বহি:প্রকাশ বলে আমি মনে করি।
২১বছরের রেখে যাওয়া আর্থ-সামাজিক ও প্রশাসনিক কাঠামোর ওপর দাঁড়িয়ে  সরকার পরিচালনায় দেশনেত্রী যে বিচক্ষনতার পরিচয় ইতিমধ্যে দেশবাসি সহ বিশ্ব বাসির নিকট তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন, তাঁর প্রেক্ষিত তুলে না ধরে অযাচিৎ, অপ্রাসঙ্গিক বিষয়াদির অবতারনা করে সরকারকে বিভ্রান্ত করার মানষিকতা পোষন করা উচিৎ হচ্ছে বলে আমি মনে করিনা।'৭৫ইং সালেও ঠিক এই পরিস্থিতির অবতারনা করে বিরুদ্ধবাদিদের হাতকে শক্তিশালী করার পর, ষড়যন্ত্রকারিরা তাঁদের কায্যসিদ্ধ করে অতিবিপ্লবী চেতনাধারীদের পিছনের দিকে লাথি দিয়ে পেলে দিতে চোখের দিকেও তাকায়নি।
  সরকার মৌলিক কোন নীতির প্রশ্নে আপস করেছে কিনা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি কোন নীতি আদর্শ বাস্তবায়ন করার পদক্ষেপ নিচ্ছে কিনা, সেই দিকেই নজর রাখা কর্তব্য সবার। তাছাড়া দেশের এহেন সংবেদনশীল সময়ে সমাজের যারা বুদ্ধিদীপ্ত সচেতন মানুষ তাদেরই বেশি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হয়। আমার কেন জানি ধারণা দিন দিন বদ্ধমূল হচ্ছে, এই দায়িত্বশীলতার পরিচয় আমাদের মধ্যে অনেকেই দেখাতে ব্যর্থ হচ্ছেন।আন্তরিকতার অভাবের কারনে মুখে বেফাঁস কথাবার্তা বের হয়ে যাচ্ছে।অযাচিৎ মন্তব্য করতে দ্বিধা করছেন না।

সরকার ও ক্ষমতাসীন দলে অনেক ভুল ভ্রান্তি ত্রুটি বিচ্যুতি রয়েছে, থাকাটাই স্বাভাবিক,ভুল হয়না শয়তানের,মানবিক গুনসম্পন্ন প্রত্যেক মানুষের দোষ ত্রুটি থাকে।তাই বলে তিলকে তাল বানাতে যাব কেন,আমি যদি আদর্শের অনুসারী হই তালকে তিল করাই হবে আমার মুল কাজ।আমরাতো সবাই জানি,নেত্রী নীজেরও সম্মক ধারনায় আছে, দলের মধ্যে আদর্শ বিচ্যুত সুযোগ সন্ধানি রয়েছে,  সরকারের প্রশাসন সহ সর্বক্ষেত্রেই আছে তাঁদের অনুসারী।কতটুকু সত্য জানিনা,প্রধান বিচারপতি এস,কে সিনহা সাহেব নাকি তাঁদেরই আদর্শের ধারক বাহক।তাঁরপরেও তাঁদের দিয়েই সরকার তাঁর মৌলিক রীতিনীতি বাস্তবায়ন করতে হচ্ছে,যেখানে শতভাগ হওয়ার আশা পোষন করা হচ্ছে, সেখানে ধীরতার কারনে হয়তো কিছু কম বা বেশী হয়ে যাচ্ছে, তবে হচ্ছে বাদতো যাচ্ছেনা কিছুই।
 শেখ হাসিনার সরকার ও দলের মৌলিক নীতির উল্লেখযোগ্য কোন পরিবর্তন এই পয্যন্ত হয়নি নির্ধিদ্বায় বলা যায়।অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে, বর্তমান বিশ্ব রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের বিবেচনায় হয়তোবা আদালতের সুস্পষ্ট নির্দেশনায় ধর্ম নিরপেক্ষতা বহাল করেও ইসলামকে রাষ্ট্র ধর্ম করতে সরকার বাধ্য হয়েছে।অন্যভাবে চিন্তা করলে এমনিতেই বর্তমানে শতকরা নব্বই ভাগ ইসলামধর্মের অনুসারির দেশে ধর্ম নিয়ে নাড়াচাড়া করাও কঠিন একটা ব্যাপার।তাছাড়া প্রচারতো আছেই ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা।অথছ খোলাফায়ে রাশেদীনের যুগেও ধর্মকে রাষ্ট্র ধর্ম করে বিতর্কিত করা থেকে বিরত ছিলেন।তখনকার সময়ে তাঁরা বুঝতে পেরেছিলেন ধর্ম ধারন করার বিষয়,ব্যাবহার করার বিষয় নহে।দু:খ জনক হলেও সত্যযে বর্তমানের শিক্ষিত জ্ঞানপাপিরাই ধর্মকে যত্রতত্র ব্যাবহার করে শান্তি ও সাম্যের ধর্ম ইসলামকে জঙ্গিপনার উৎস ধর্ম হিসেবে চিত্রায়িত করার জন্য  উঠে পড়ে লেগেছ।বিশ্বব্যাপি সকল ধর্মেই কিছু লোকের মধ্যে উগ্রতা রয়েছে বদনাম যা হচ্ছে তা শান্তির ধর্ম ইসলামের।
সাম্প্রতিককালে দেশে বেশ কয়েকজন ব্লগার, প্রকাশক,পুলিশ নির্মমভাবে আহত-নিহত হয়েছেন। তাদের চাপাতির আঘাতে ও গুলি করে নৃশংসভাবে দিনদুপুরে হত্যা ও আহত করা হয়েছে। সামান্যতম বিবেকবান মানুষও এই হত্যাকান্ড মেনে নিতে পারে না। সার্বিক পরিস্থিতি লক্ষ্য করলেই বোঝা যায় সরকার হাত গুটিয়ে বসে নেই। '৭২--৭৫ এর  অভিজ্ঞতা থেকেই জানি কোন মহলের পরিকল্পিত গুপ্তহত্যা প্রতিরোধ করা খুব সহজ নয়।
 '৭১-এর বাঙালি মুক্তিযোদ্ধারা বুঝে নিয়েছিল সম্মুখযুদ্ধে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীকে পরাস্ত করা যাবে না। তাই তাদের কাবু করতে হলে একমাত্র পথ গেরিলা যুদ্ধ। এ ব্যাপারে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের উদাহরণ রয়েছে যারা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। বর্তমানের অশুভ শক্তির গুপ্ত আক্রমণ বা গুপ্ত হত্যা- মহান মুক্তি যুদ্ধের অনুস্মরনে গেরিলাযুদ্ধের আদর্শের বিকৃত রুপ ছাড়া আর কিছুই নয়। গেরিলাযুদ্ধ ছিল একটি দেশের স্বাধীনতাপ্রিয় অধিকাংশ মানুষের রনকৌশল। এখন দেশের অশুভ সাম্প্রদায়িক জঙ্গি শক্তি সেই যুদ্ধ কৌশলকেই গণবিরোধী কাজে ব্যবহার করে,মানুষের জান মালের ব্যাপক ক্ষতি করার চেষ্টা করছে অবিরত।
 জনগণকে যদি গুপ্ত অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে জাগিয়ে তোলা যায় তাহলেই ঐ শক্তি হাত গুটিয়ে নিতে বাধ্য হবে। মধ্যপ্রাচ্যসহ পৃথিবীর দেশে দেশে উগ্র জঙ্গি সাম্প্রদায়িক শক্তির যে ভয়াবহ উত্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে অবিলম্বে  বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে সংগঠিত করে প্রতিরুধের দুর্ঘ গড়ে তোলার পদক্ষেপ নেয়া জরুরী প্রয়োজন।জনগনকে সচেতন করে তুলে, তাদের জাগিয়ে তুলে প্রতিরোধ গড়ে তোলা না যায় তাহলে নিয়মিত বাহিনীর পক্ষে সম্ভব হবে না জঙ্গি তৎপরতা ও তার প্রসার বন্ধ করা। '৭১-এ বাঙালির ঐতিহাসিক জাগরণ হয়েছিল বলেই সহজ হয়েছিল গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে পাকি-হানাদার বাহিনীকে পর্যুদস্ত করে পরাজিত করা।আজকে যে শক্তি গুপ্তহত্যার পথ বেছে নিয়েছে তারা জনসমর্থনের অভাবে একদিন পরাজিত হবেই। কারণ দেশের মানুষ শান্তিপ্রিয়। তারা অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাসী এবং গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার প্রতি আস্থাশীল। সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী, জঙ্গি,জামাত শিবির,বিএনপির সম্মিলিত শক্তি--জনগনের  শক্তির কাছে কিছুই না। অশুভ শক্তিকে পরাস্ত করতে নিয়মিত বাহিনীর ওপর নির্ভর না করে জনগণকে উজ্জীবিত ও প্রতিরোধের জন্যে সংগঠিত করতে হবে।
 সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, সাম্প্রতিককালের গুপ্তহত্যাগুলো সবই বিচ্ছিন্ন ঘটনা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এসব ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা না বলে সেদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন- এসব পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
 মন্ত্রী নেতারা যে সমস্ত কথা বলে মানুষের উপহাসের পাত্র হলেন,প্রধান মন্ত্রীর সোজা চাপ্টা ব্যাখ্যা মানুষের প্রশংসাই কুড়িয়েছে।এই সমস্ত বিভ্রান্তি মুলক কথা নেতাদের বলা থেকে বিরত থাকা উচিৎ,নেত্রী চান একরকম আমাদের সম্মানিত নেতারা নেত্রী বলার আগেই  সাংবাদিক ডেকে বাহাদুরি করতে গিয়ে সরকারের ভাবমুর্তি নষ্ট করার প্রয়াস চালান নৈমত্তিক।
 বিদেশি একটি মহল এবং দেশীয় কিছু মানুষ প্রমাণ করতে চাইছে  আইএস বা আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের অস্তিত্ব রয়েছে আমাদের সোনার বাংলায়।তাদের উদ্দেশ্য সোনার বাংলাকে শ্মসানে রুপান্তরীত করে জনগনকে দাসে পরিনত করা।এই কারনেই বিশ্বমোড়ল দেশ আমাদের স্বাধীনতার শত্রু আমেরীকা চায় সরকারের মুখ থেকেও এ কথাটা স্বীকার করাতে ,আই,এস জঙ্গিগোষ্টি --সংগঠিত হত্যা কান্ড গুলী ঘটিয়েছে,তাহলে সহজেই আফগানিস্থান বানানো যাবে  এই দেশকে। বাংলাদেশে আইএস, আল-কায়েদা বা আন্তর্জাতিক কোন জঙ্গি সংগঠনের অস্তিত্ব নেই,নির্দিধায় বলা যায়। কারণ- জামায়াত-শিবির, জেএমবি ও দেশীয় উগ্র মৌলবাদী শক্তির অবস্থান থাকতে বিদেশি জঙ্গি শক্তির শাখা প্রসারের প্রয়োজন নেই। তারাই ঐ সব বিদেশি জঙ্গি শক্তির     হিংসাত্মক তৎপরতা চালানোর বিশ্বস্ততার সংগেই করতে সক্ষম।এছাড়া বিদেশি মদত ও অর্থায়নের সুযোগতো রয়েছেই,তাঁদের রয়েছে নানাবিদ ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান। সরকার ও ক্ষমতাসীন দল ও জোটকে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে  ধর্ম, গণতন্ত্র, প্রগতি ও উন্নয়নবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নামতে হবে। বিলম্ব বা গাফিলতি করা হবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তির নীজেই বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করার সামিল।
 গুপ্তহত্যা, নাশকতা ও অশুভ তৎপরতা নির্মুলে সরকারের পাশাপাশি,সকল সামাজিক প্রতিষ্ঠান,বুদ্ধিজীবি,লেখক সাংবাদিক,সাহিত্যিক সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।কোন অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তির মধ্যে বিবেদ করা চলবেনা,লৌহ কঠিন মনোবলের কাছে ধরাশায়ী হতে বাধ্য হবে সকল অশুভ শক্তি,তাঁদের প্রেতাত্মরা।



        " জয়বাংলা      জয়বঙ্গবন্ধু"
        " জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা"  

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন