জঙ্গি দমনে সরকার অনেকটা সফল হলেও বর্তমানের দানব দমন কি সম্ভুব হবে?

জঙ্গি দমনে সরকার সফল,বর্তমানের দানব দমন কি সম্ভব হবে।??
>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>
শুধু লেখক কিংবা ব্লগার নয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের ওপরই হামলা হচ্ছে আমি মনে করি। সারাদেশে এখন হাজার হাজার মানুষ গভীর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। কিন্তু কোনো বিচার হচ্ছে না।পুলিশ কাউকে চিহ্নিত করতে পারছেন না।যারা ধরা পড়ছেন তাদের বিচারেও ধীর গতি পরিলক্ষিত হচ্ছে।আগেও এই ধরনের হত্যাই সংঘটিত হয়েছে,তবে সেই সমস্ত হত্যা কোন অভিধায় অবিষিক্ত হয়নি।যেমন আহসান উল্লা মাষ্টার, সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরীয়া,উদিচির বর্ষবরন অনুষ্ঠানে হামলা২১শে আগষ্টের হামলা ইত্যাদি আরো শত হামলা কথাই বলা যায়।
বর্তমানের হামলা সমুহের জন্য প্রথমেই যে দিকে নজর দিবেন সেই দিকটি হচ্ছে জঙ্গী।তাঁদের এখন বিচ্ছিন্ন ঘটনা গুলি করার সেই সামর্থ আছে বলে আমি মনে করি না।
আগে দুইজন বিদেশি নাগরিককে হত্যা করা হল।দেশি বিদেশি কেহই রক্ষা পাচ্ছেন না।বিদেশি হত্যার বেলায় ঘটনাকারি চিহ্নিত হয়ে ধরা পড়েছে,কিন্তু কথিত বড়ভাই এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে।বড় ভাইকে চিহ্নিত করে ধরা গেলে হত্যার উদ্দেশ্য সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে আশা করা যায়।
আমরা কেউই তেমন নিরাপদ নই। আসলে শুধু ব্লগার নয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের ওপরই হামলা হচ্ছে। এই পর্যন্ত চারজন ব্লগারকে খুন করা হয়েছে। বুঝতে পারলাম মুক্তমনাদের শাহবাগে অবস্থানের কারনে ধর্মীয় জঙ্গিরা ঐ সমস্ত ঘটনার ঘটিয়েছে। বর্তমানে ঘটনাক্রম হচ্ছে লাল মাটিয়ায় তিন জনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। একই সময়ের মধ্যে প্রকাশক দিপনকে আজিজ সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলার তাঁর অফিস কক্ষে কুঁপিয়ে হত্যা করেছে।হত্যার ধরন আগের ব্লগারদের অনুসরনে অক্ষুন্ন রাখা হয়েছে।
এখানে একটু পিছনে তাকানো প্রয়োজন মনে করি।'৪৭ এর দেশ বিভাগের পর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়ে থেমে থেমে পুরো পাকিস্তানি শাষন আমল জুড়েই সংখ্যায় লুঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা হয়েছে।তাঁর মোটিভ পরিষ্কার ছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর অসাম্প্রদায়িক চেতনা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হলে দাঙ্গা শব্দটি মানুষ ভুলেই গিয়েছিল।জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নির্মম ভাবে হত্যার পর এই জগন্য ইস্যুটি আমাদের শাষক শ্রেনীর পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় সংবিধানের মুলনীতি পরিবর্তনের মাধ্যমে ক্রমস সামনে নিয়ে আসতে থাকে।সর্বশেষ স্বৈরশাষক এরশাদ রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে পুরাতন ইস্যু আবার চাঙ্গা হয়ে ২০০১ সালে নির্বাচনে সাম্প্রদায়িক শক্তির বিজয় মিছিলটি হিন্দুদের উপর পাশবিক নিয্যাতনের মাধ্যমে উৎযাপন করে।তাঁর আগে ভারতে বাবরী মসজিদকে কেন্দ্র করে সুচনা পর্বটি শুরু হয়।২০০৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিশাল সংখ্যাগরিষ্টতা নিয়ে আবার ক্ষমতায় এলে সংখ্যালুঘু শব্দটি ক্রমশ যখন হারিয়ে যেতে বসেছে তখন আরেকটি নতুন শব্দ সংযোজনের সুচনা হল।যাহা ইতিপুর্বে বাংলাদেশে আদৌ কোন দিন ঘটেনি। বাংলাদেশে হঠাৎ নিরীহ শিয়া সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠানে হামলা চালানো হল?
সব হত্যা জঙ্গিরা করছে ধারনাটি আগে থেকে জনমনে প্রোথিত বলে হত্যার পরই সেদিকে নজর রাখার নিমিত্তে চক্রটি কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে কিনা ভেবে দেখা দরকার।আজকের প্রকাশক হত্যার পর হয়তো অনেকের ধারনা হতে পারে অভিজিতকে যারা হত্যা করেছে তাঁরাই দিপনকে হত্যা করতে পারে।যেহেতু দীপন অভিজিতের বইয়ের ও প্রকাশক ছিলেন।মুলত জঙ্গি গোষ্ঠী নয়, স্বাধীনতাবিরোধী চক্র এই ঘটনা গুলী করে যাচ্ছে একের পর এক।এটি একটি পরিকল্পিত নাশকতা। তাই স্বাভিকভাবেই স্বাধীনতা বিরোধী ও জঙ্গি গোষ্ঠীর মধ্যে কোনো তফাৎ করা মারাত্মক ভুল হতে পারে।এরা মুলত একসুতায় গাঁথা জামায়াত শিবির,সাম্প্রদা
য়িক উগ্রগোষ্টি,স্বাধীনতা বিরুদি,মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদিরা। এরা নতুন নামে অভিহিত হতে চায়- জনগনের দৃষ্টি অন্যদিকে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে,জনরোষ থেকে রক্ষা পাওয়ার একটা নয়া কৌশলের অংশ হিসেবে।দুই বিদেশি নাগরিক হত্যা জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের তথাকথিত দায় স্বীকারের ঘটনা থেকেও উপলব্ধি করা যায় অনেক বিষয়। ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার কৌশলের দিকটি পয্যবেক্ষন করলে বুঝতে কারো কষ্ট হওয়ার কথা নয় আমি মনে করি। বর্তমানের সমস্ত হত্যার পিছনে একক শক্তিই সক্রিয়-তাঁরাই জামায়াত শিবির,যুদ্ধ অপরাধীর দোষর,মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুধী,সাম্প্রদায়িকতার পৃষ্ঠপোষক -উদ্দেশ্য পরিষ্কার দেশব্যাপি আইনশৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার।
বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে দেশের সংবাদ মাধ্যম জঙ্গি তৎপরতা নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ প্রকাশিত হতে থাকলে তৎকালীন সরকার তা অস্বীকার করে। মিডিয়ার নাটক বলে অভিহিত করছিল।যা পরবর্তীতে দানব রূপে সমগ্র জাতিকে চেপে ধরছিল।সে জঙ্গি নামক দানবের হাত থেকে জাতি সরকারের দৃড অবস্থানের কারনে কিছুটা স্বস্তি পেলেও বর্তমানের কৌশলি দানবের হাত থেকে মুক্তি পাবে কি না সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।
শিয়াদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে হামলা,দুই বিদেশী নাগরিক হত্যা,অভিজিতের বইয়ের প্রকাশক দীপন হত্যা একসুত্রে গাঁথা,হত্যাকারী অভিন্ন-উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন। নাশকতার মাধ্যমে অস্থির পরিস্থিতির সৃষ্টি করে তৃতীয় শক্তির উত্থান ঘটিয়ে মানবতা বিরুদি অপরাধিদের বিচার বানচাল করার অপতৎপরতা।
পরিত্রানের একমাত্র উপায়, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির সম্মিলিত প্রতিরোধ,সামাজিক গনসচেতনতা,সরকারের কঠোর অবস্থান।শুধু আইনশৃংখলা বাহিনীর উপর নির্ভর করে বর্তমানের দানব দমন করা যাবেনা।তাঁদের রক্ষক ঘরে ঘরে অবস্থান নিয়েছে।কিছুদিন আগেও আওয়ামী লীগের কোন কোন নেতার পরিকল্পিত ভাবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তির মধ্যে বিভ্রান্তি চড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। জোটে ভাঙ্গন ধরিয়ে সরকারকে দুর্বল করার হীন প্রচেষ্টা করা হয়েছিল।মাস পার হতে না হতে যুগৎপৎ স্বাধীনতা বিরুদীরা সাড়াষি অভিযান শুরু করে একের পর এক জীবন কেড়ে নিচ্ছে।এ থেকেই উপলব্ধি করার প্রয়োজন আছে তাঁদের সংখ্যায় যদিও কম হয়ে থাকে সহযোগির কোন ঘাটতি নেই।সুতারাং সম্মিলিত সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলেই দানব দমন করার উদ্যোগ নেয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
" জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু
জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা।"

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg