জঙ্গি দমনে সরকার অনেকটা সফল হলেও বর্তমানের দানব দমন কি সম্ভুব হবে?

জঙ্গি দমনে সরকার সফল,বর্তমানের দানব দমন কি সম্ভব হবে।??
>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>
শুধু লেখক কিংবা ব্লগার নয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের ওপরই হামলা হচ্ছে আমি মনে করি। সারাদেশে এখন হাজার হাজার মানুষ গভীর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। কিন্তু কোনো বিচার হচ্ছে না।পুলিশ কাউকে চিহ্নিত করতে পারছেন না।যারা ধরা পড়ছেন তাদের বিচারেও ধীর গতি পরিলক্ষিত হচ্ছে।আগেও এই ধরনের হত্যাই সংঘটিত হয়েছে,তবে সেই সমস্ত হত্যা কোন অভিধায় অবিষিক্ত হয়নি।যেমন আহসান উল্লা মাষ্টার, সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরীয়া,উদিচির বর্ষবরন অনুষ্ঠানে হামলা২১শে আগষ্টের হামলা ইত্যাদি আরো শত হামলা কথাই বলা যায়।
বর্তমানের হামলা সমুহের জন্য প্রথমেই যে দিকে নজর দিবেন সেই দিকটি হচ্ছে জঙ্গী।তাঁদের এখন বিচ্ছিন্ন ঘটনা গুলি করার সেই সামর্থ আছে বলে আমি মনে করি না।
আগে দুইজন বিদেশি নাগরিককে হত্যা করা হল।দেশি বিদেশি কেহই রক্ষা পাচ্ছেন না।বিদেশি হত্যার বেলায় ঘটনাকারি চিহ্নিত হয়ে ধরা পড়েছে,কিন্তু কথিত বড়ভাই এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে।বড় ভাইকে চিহ্নিত করে ধরা গেলে হত্যার উদ্দেশ্য সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে আশা করা যায়।
আমরা কেউই তেমন নিরাপদ নই। আসলে শুধু ব্লগার নয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের ওপরই হামলা হচ্ছে। এই পর্যন্ত চারজন ব্লগারকে খুন করা হয়েছে। বুঝতে পারলাম মুক্তমনাদের শাহবাগে অবস্থানের কারনে ধর্মীয় জঙ্গিরা ঐ সমস্ত ঘটনার ঘটিয়েছে। বর্তমানে ঘটনাক্রম হচ্ছে লাল মাটিয়ায় তিন জনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। একই সময়ের মধ্যে প্রকাশক দিপনকে আজিজ সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলার তাঁর অফিস কক্ষে কুঁপিয়ে হত্যা করেছে।হত্যার ধরন আগের ব্লগারদের অনুসরনে অক্ষুন্ন রাখা হয়েছে।
এখানে একটু পিছনে তাকানো প্রয়োজন মনে করি।'৪৭ এর দেশ বিভাগের পর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়ে থেমে থেমে পুরো পাকিস্তানি শাষন আমল জুড়েই সংখ্যায় লুঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা হয়েছে।তাঁর মোটিভ পরিষ্কার ছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর অসাম্প্রদায়িক চেতনা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হলে দাঙ্গা শব্দটি মানুষ ভুলেই গিয়েছিল।জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নির্মম ভাবে হত্যার পর এই জগন্য ইস্যুটি আমাদের শাষক শ্রেনীর পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় সংবিধানের মুলনীতি পরিবর্তনের মাধ্যমে ক্রমস সামনে নিয়ে আসতে থাকে।সর্বশেষ স্বৈরশাষক এরশাদ রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে পুরাতন ইস্যু আবার চাঙ্গা হয়ে ২০০১ সালে নির্বাচনে সাম্প্রদায়িক শক্তির বিজয় মিছিলটি হিন্দুদের উপর পাশবিক নিয্যাতনের মাধ্যমে উৎযাপন করে।তাঁর আগে ভারতে বাবরী মসজিদকে কেন্দ্র করে সুচনা পর্বটি শুরু হয়।২০০৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিশাল সংখ্যাগরিষ্টতা নিয়ে আবার ক্ষমতায় এলে সংখ্যালুঘু শব্দটি ক্রমশ যখন হারিয়ে যেতে বসেছে তখন আরেকটি নতুন শব্দ সংযোজনের সুচনা হল।যাহা ইতিপুর্বে বাংলাদেশে আদৌ কোন দিন ঘটেনি। বাংলাদেশে হঠাৎ নিরীহ শিয়া সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠানে হামলা চালানো হল?
সব হত্যা জঙ্গিরা করছে ধারনাটি আগে থেকে জনমনে প্রোথিত বলে হত্যার পরই সেদিকে নজর রাখার নিমিত্তে চক্রটি কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে কিনা ভেবে দেখা দরকার।আজকের প্রকাশক হত্যার পর হয়তো অনেকের ধারনা হতে পারে অভিজিতকে যারা হত্যা করেছে তাঁরাই দিপনকে হত্যা করতে পারে।যেহেতু দীপন অভিজিতের বইয়ের ও প্রকাশক ছিলেন।মুলত জঙ্গি গোষ্ঠী নয়, স্বাধীনতাবিরোধী চক্র এই ঘটনা গুলী করে যাচ্ছে একের পর এক।এটি একটি পরিকল্পিত নাশকতা। তাই স্বাভিকভাবেই স্বাধীনতা বিরোধী ও জঙ্গি গোষ্ঠীর মধ্যে কোনো তফাৎ করা মারাত্মক ভুল হতে পারে।এরা মুলত একসুতায় গাঁথা জামায়াত শিবির,সাম্প্রদা
য়িক উগ্রগোষ্টি,স্বাধীনতা বিরুদি,মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদিরা। এরা নতুন নামে অভিহিত হতে চায়- জনগনের দৃষ্টি অন্যদিকে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে,জনরোষ থেকে রক্ষা পাওয়ার একটা নয়া কৌশলের অংশ হিসেবে।দুই বিদেশি নাগরিক হত্যা জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের তথাকথিত দায় স্বীকারের ঘটনা থেকেও উপলব্ধি করা যায় অনেক বিষয়। ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার কৌশলের দিকটি পয্যবেক্ষন করলে বুঝতে কারো কষ্ট হওয়ার কথা নয় আমি মনে করি। বর্তমানের সমস্ত হত্যার পিছনে একক শক্তিই সক্রিয়-তাঁরাই জামায়াত শিবির,যুদ্ধ অপরাধীর দোষর,মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুধী,সাম্প্রদায়িকতার পৃষ্ঠপোষক -উদ্দেশ্য পরিষ্কার দেশব্যাপি আইনশৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার।
বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে দেশের সংবাদ মাধ্যম জঙ্গি তৎপরতা নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ প্রকাশিত হতে থাকলে তৎকালীন সরকার তা অস্বীকার করে। মিডিয়ার নাটক বলে অভিহিত করছিল।যা পরবর্তীতে দানব রূপে সমগ্র জাতিকে চেপে ধরছিল।সে জঙ্গি নামক দানবের হাত থেকে জাতি সরকারের দৃড অবস্থানের কারনে কিছুটা স্বস্তি পেলেও বর্তমানের কৌশলি দানবের হাত থেকে মুক্তি পাবে কি না সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।
শিয়াদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে হামলা,দুই বিদেশী নাগরিক হত্যা,অভিজিতের বইয়ের প্রকাশক দীপন হত্যা একসুত্রে গাঁথা,হত্যাকারী অভিন্ন-উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন। নাশকতার মাধ্যমে অস্থির পরিস্থিতির সৃষ্টি করে তৃতীয় শক্তির উত্থান ঘটিয়ে মানবতা বিরুদি অপরাধিদের বিচার বানচাল করার অপতৎপরতা।
পরিত্রানের একমাত্র উপায়, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির সম্মিলিত প্রতিরোধ,সামাজিক গনসচেতনতা,সরকারের কঠোর অবস্থান।শুধু আইনশৃংখলা বাহিনীর উপর নির্ভর করে বর্তমানের দানব দমন করা যাবেনা।তাঁদের রক্ষক ঘরে ঘরে অবস্থান নিয়েছে।কিছুদিন আগেও আওয়ামী লীগের কোন কোন নেতার পরিকল্পিত ভাবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তির মধ্যে বিভ্রান্তি চড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। জোটে ভাঙ্গন ধরিয়ে সরকারকে দুর্বল করার হীন প্রচেষ্টা করা হয়েছিল।মাস পার হতে না হতে যুগৎপৎ স্বাধীনতা বিরুদীরা সাড়াষি অভিযান শুরু করে একের পর এক জীবন কেড়ে নিচ্ছে।এ থেকেই উপলব্ধি করার প্রয়োজন আছে তাঁদের সংখ্যায় যদিও কম হয়ে থাকে সহযোগির কোন ঘাটতি নেই।সুতারাং সম্মিলিত সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলেই দানব দমন করার উদ্যোগ নেয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
" জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু
জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা।"

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার সরকার মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যাতত্ব দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস ঐতিহ্যে বিতর্ক উত্থাপনের অভিযোগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন।মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে বসবাস করে,মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার মত দৃষ্টতা দেখিয়ে নি:সন্দেহে তিনি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। এহেন গর্হিত বক্তব্য প্রদানকারী বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার রাখতে পারেননা।মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত অঙ্গিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কোন দল বা জোটের রাজনীতি করারঅধিকার নীতিগতভাবেই থাকতে পারেনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি সকল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করে সর্বচ্ছ আদালতের রায় অনুযায়ী '৭২এর সংবিধান অবিকল বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবী।বাংলাদেশেরজনগন চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ এগিয়ে যাক,মুক্তিযুদ্ধে সাগরসম রক্ত ঢেলে সেই অঙ্গিকারের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেছিল।স্বাধীন বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বসবাসকরে,পরাধীনতার গান শুনতে দেশ স্বাধীন করেনি বাংলার জনগন। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৩ বছরের বিরামহীন সংগ্রামের ফসল মুক্তিযুদ্ধ।সেইযুদ্ধে উপনিবেশিক পাকিস্তানের আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত সেনাবাহিনীকে নিরস্ত্র বাঙালীরা পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছিল।সেই স্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশেপরাজিত শক্তির দোষর,তাঁদের প্রেতাত্বাদের রাজনীতি করার কোন নৈতিক অধিকার নেই।জাতির জনক তাঁদের রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগন জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলায় রাজাকারের কোন স্থান দিতে চায়না। তাই খালেদা জিয়ার ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টার দৃষ্টান্তমুলক সাজার আশা পোষন করে।কোন রাজনৈতিক সমঝোতার ফাঁদে যেন এই মামলা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়,তাঁর গ্যারান্টিও সরকারের নিকট বাংলাদেশের জনগন চায়। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু Ruhul Amin ------------------------------ খালেদা জিয়াকে সমাবেশের অনুমতি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি আশাহত----04 /01 / 0016 ইং পোষ্ট -==================================প্রখ্যাত দার্শনিক,চিন্তাবিদ সক্রেটিসকে কম বেশি আমরা সবাই জানি।সক্রেটিস কোন যুগে জম্মগ্রহন করে মানব সেবায় ব্রতি হয়ে আজও দেশে দেশে অনুকরনীয় অনুসরনীয় হয়ে আছেন তাও আমরা জানি।নিশ্চয়ই তখনকার সময় থেকে বর্তমানের সমাজ, রাষ্ট্রব্যাবস্থাপনা আরো শত গুন উন্নত,সমৃদ্ধ,সভ্য।সক্রেটিস ছুতোর, কামার ইত্যাদি প্রসঙ্গে এসে প্রশ্ন করতেন, 'তাহলে রাষ্ট্র নামক জাহাজটি বিগড়োলে কাকে দিয়ে সারাইয়ের কাজ করাবো'হাসান আজিজুল হক (সক্রেটিস) পৃ : ১৬ সক্রেটিসের এ বিখ্যাত কথপোকথন কারো অজানা নয়। আদর্শবান ন্যায়নীতিভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করবার জন্য সক্রেটিসকে হেমলক পান করতে দেয়া হয়েছিল(বিষ), তারপরও তিনি আইনের প্রতি অটুট শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন- এটাও ছিল তার নির্ভীক বিদ্রোহ। তাকে বাঁচবার সুযোগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি আইনঅবজ্ঞা করেননি, আইনে যদি তার মৃত্যুদন্ড হয় তবে তিনি অবশ্যই তা মানতে রাজি। এখানেও তার সমস্ত জীবনকর্মের অনেক গভীর দর্শন কাজ করেছে। তার উপর মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল একথা তিনি ও এথেন্সবাসী জানতেন। কিন্তু যে আইনে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলো- তিনি সে আইনকে শ্রদ্ধা জানালেন এ অর্থে মানুষকে আইনের প্রতি অনুগত থাকতে বললেন। সেই আইন কারা তৈরি করছে তা তিনি জানতেন তাতে তো আর আইন নামক বিষয়টিকে জীবন থেকে বিতাড়িত করা যায় না।"পবিত্র কোরানে পাকে ও উল্লেখ করা হয়েছে, বিধর্মী কতৃক শাষিত রাষ্ট্র ও সরকার সমুহের আইন মেনে ধর্ম কর্ম করার।এই রুপ রাষ্ট্র ব্যাবস্থায় শুক্রবারের খতবায় বিশেষ আয়াৎ সংযুক্ত আছে এবং নিয়মিত নামাজের সাথে আর ও কয় রাকাত নামাজ আদায় করার নির্দেশনা দেয়া আছে।পরিতাপের বিষয়টি হচ্ছে,গত কয়েক বছর থেকে লক্ষ করা যাচ্ছে একশ্রেনীর মানুষ রাষ্ট্রীয় আইন রীতি নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সর্ব উচ্চ আদালতের রায়কে ও অমান্য করে হরতাল অবরোধ,প্রকাশ্য আদালতের সমালোচনা করতে।শুধু তাই নয় আন্দোলনের নামেপ্রকাশ্য দিবালোকে যাত্রীভর্তি চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে জীবন্ত মানবকে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিতে।উল্লেখ করা প্রয়োজন যারা এই সমস্ত আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিলেন,এবং প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেন যে আদালতের বিরুদ্ধেও কর্মসূচি দেয়া যায়,বক্তব্য দেয়া যায়,তাঁরা কখনই কোন অপরাধীর বিচার কায্য সম্পাদন করেছেন তদ্রুপ কোন উদাহরন নেই। যেমন আমি প্রথমেই বলতে চাই ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছেন রাতের অন্ধকারে।বঙ্গবন্ধুর অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? পৃথীবিপৃষ্টের সব চাইতে নিরাপদ স্থান জেলখানা।সেখানে রাতের অন্ধকারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করাহল,তাঁরা বন্দি ছিলেন, তারপর ও তাঁদের অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে বুদ্ধিজীবিদের বাসা থেকেতুলে নিয়ে জ্যান্ত মানুষকে হত্যা করা হল, তাঁদের অপরাধ কি বিচার করে মিমাংসা করা যেতনা? খালেদ মোশারফ., কর্নেল তাহেরসহ অসংখ্য মুক্তি যুদ্ধা সেনা অফিসারকে মেজর জিয়ার নির্দেশে নির্মম নির্দয় ভাবে হত্যা করা হল, অনেককে গুলী করার পর প্রান পাখী উড়াল দেয়ার আগেই জ্যান্ত মাটি চাপা দেয়া হল, তাঁদের বিচার কি প্রচলিত সেনা আইনে করা যেতনা? অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধা,আওয়ামী লীগের নেতা,মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারি,ব্লগার,প্রকাশক,লেখক সাহিত্যিক,সাংবাদিক হত্যা করা হল,তাঁদের অপরাধ কি আইনের আওতায় এনে বিচার করা যেতনা?আন্দোলনের নামে ঘোষনা দিয়ে মানুষ হত্যা করা,সম্পদ নষ্ট করা,লুটপাট করা কি মানবতা বিরুধী অপরাধের আওতায় পড়েনা?মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ হত্যা লুটপাট,অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার হতে পারে,যুদ্ধাবস্থা ব্যাতিরেকে ঘোষনা দিয়ে তদ্রুপ কর্মে জড়িতদের এবং হুকুমদাতার বিচার কেন হবেনা? নগদ অপরাধের ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার করা কি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব নয়? নাগরীকদের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া কি রাষ্ট্রের কর্তব্যের মধ্যে পড়েনা? যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন তাঁরা কি বিচার পাওয়ার সাংবিধানীক অধিকারের মধ্যে পড়েনা?সেই যুগের সক্রেটিস যদি নীজের উপর আনীত মিথ্যা অভিযোগ জেনে শুনে মেনে নিতে পারেন,সভ্যতার চরম শীখরে দাঁড়িয়ে যারা এই যুগে আইনকে, রাষ্ট্রীয় রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রকাশ্য আন্দোলনের নামে মানুষ খুন করেছেন,সম্পদের হানী ঘটিয়েছেন তাঁরা কি সক্রেটিস যুগের আগের অধিবাসি মনে করেন নীজেদের? তাঁরা নীজেরা নিজেদের মনে করুন কিন্তু মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে কোন যুগে ফিরিয়ে নিতে চান?তাঁদের যদি এতই অসহ্য লাগে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিশেষ কিছু আদর্শের প্রতিপালনের অঙ্গিকারের ভিত্তিতে ৩০লক্ষ শহিদের আত্মদান,পৌনে চারলাখ মাবোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস- তবে জনগনকে সংঘটিত করে আর একটি গনবিপ্লব ঘটিয়ে তাঁদের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে স্বাধীনতার পক্ষের কোন মানুষ বাধাতো দিচ্ছেনা। যাদের নেতৃত্বে, যাদের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন করা হল, তাঁরাতো ক্ষমতায় আছে,তাঁদের কেন জোর পুর্বক,ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে খমতা থেকে নামাতে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে,আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে জনজীবন দুর্বিসহ করে তোলার চক্রান্ত করতে দেয়া হবে।এই সেই দিন মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা নিয়ে যিনি বিতর্ক উত্থাপনের বৃথা চেষ্টা করে জনরোষের আওতার মধ্যে এখনও রয়েছেন,তাঁর সৌখিন বাসভবন পাহারায় আপনার সরকার অতিরীক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে বাধ্য হয়েছে,তিনি কি ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে সমাবেশ করার প্রসাশনিক অনুমতি পায়। বর্তমান গনতান্ত্রিক বিশ্বের একটি দেশের উদাহরন কি কেউ দিতে পারবেন,স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা সেই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে?একটি দেশকি কেউ দেখাতে পারবে যে,সেই দেশের কোনমীমাংসিত এবং প্রতিষ্ঠিত কোন সত্যকে ৩০/৪০ বছর পর আবার জনসমক্ষে উত্থাপন করে লক্ষ লক্ষ শহিদ পরিবারের অন্তরের আগুনে"ঘি "ঢেলে দেয়ার চেষ্টা, কোন প্রতিষ্ঠিত দল বা তাঁর নেতা করেছেন? কেন এই পয্যন্ত সরকার তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা না করে উলটো সমাবেশ করে তাঁর মতবাদ প্রচারের অনুমতি দেয়া হল??তাঁরা নীজেদের এত ক্ষমতাবান মনে করেন কিভাবে? তাঁরা কি করে আবার জাতির নিকট ক্ষমা চাওয়া ছাড়াই প্রকাশ্য সভা সমাবেশ করার অধিকার পায়?কেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সংসদে ঘোষনা দিয়েও এখন পয্যন্ত আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন করছেন না? মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আপনার আশ্বাস বাংলার মানুষ অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করে।সুতারাং জনগনকে দেয়া প্রতিশ্রুতি আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন কল্পে তড়িৎ ব্যাবস্থা গ্রহনকরবেন, জনগনের এই আস্থা বিশ্বাস এখন ও অটুট রয়েছে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,শাপলা চত্বরের সেই দিনের ষড় যন্ত্র মোতাবেক যদি খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার মানুষ রাজপথে নেমে আসতেন,পরিকল্পনাঅনুযায়ী সেনা বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়েআপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারতো,আপনাকে কি জীবিত বাঁচতে দেয়া হত? আপনার পরিবারের কাওন সদস্যকে বাঁচতে দিত?আওয়ামী লীগের থানা উপজেলা পয্যায়ের কোন নেতা কি বাঁচতে দিত? তাঁরা কি সে দিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ধর্ম বিদ্বেষী সরকার উৎখাত করে ধর্মধারি সরকার কায়েমের রাজনৈতিক শ্লোগানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নামক মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ধারক বাহক জননন্দিত এইসংগঠনটিকেও জ্যান্ত কবর দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত ছিল না?আমি আজ আরও একটি বিষয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,সম্পুর্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন চরমপন্থী নেতার অবিকল নকল করা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার--,গনতান্ত্রিকদেশে,গনতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে, গনতান্ত্রীক সংগঠনের,গনতন্ত্রের পুজারি মনে করা কোন নেতা, রাজপথে আন্দোলন না করে, সীমাবদ্ধ কক্ষে ৪১দিন অবস্থান করে, ৪২ জন মানুষকে পুড়িয়ে মেরে,পরবর্তিতে বিচারের সম্মুখ্যিন না হয়ে নিয়মাতান্ত্রীক আন্দোলনের সুযোগ কোন দেশের, কোন নেতা বা কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, এমন উদাহরন কি কেউ দিতে পারবে?? ষড় যন্ত্রের জাল কোথায় বিস্তৃত ছিল তাঁর প্রমান সেই নেত্রী নীজেই তাঁর উষ্মায় প্রকাশ করে দম্ভস্বরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে সুশৃংখল বাহিনীকে তাচ্ছিল্য করে বলে ছিল"সেনাবাহিনী বেঈমান"!!!এর পরও আপনার সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আনায়ন না করে প্রকাশ্য সভার অনুমতি দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার গুলির মনে আগাত দেয়া হয়েছে আমি মনে করি। গত পৌর নির্বাচনে রায় দিয়েছে তাঁর বিচার করার,তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অর্থই হচ্ছে জনগনের ক্ষোভ তাঁর উপর থেকে এখনও কমেনি,বরঞ্চ কয়েক গুন বেড়ে জনরোষের পয্যায় পৌছে গেছে।আপনার সরকারের তাঁকে দেয়া বাড়তিনিরাপত্তাই তা প্রমান করে।সুতারাং দেশ ও জাতি এই রাজনৈতিক লাশের ভার বইবার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা।দেশের এবং জাতির প্রয়োজন বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মত শিক্ষিত, বিজ্ঞান মনস্ক,প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত সমৃদ্ধ জাতি গঠনে জ্ঞানসমৃদ্ধ, আধুনিক সভ্য দুনিয়ার নেতৃত্ব গ্রহন করার মত গুনাবলি সমৃদ্ধ নেতার। কোন অবস্থায় সক্রেটিসের আগের যুগে জাতি ফেরৎ যেতে চায়না।পরিশেষে বলতে চাই,আর কোন সংগাত নয়,এবার চাই সমৃদ্ধি।আর নয় জঙ্গিপনা,এবার চাই ধর্মনিরপেক্ষতা।আর নয় সাম্প্রদায়ীকতা,এবার চাই অসম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা।আর নয় পাকি ভাবধারা প্রতিষ্ঠা,এবার চাই মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের সফল বাস্তবায়ন। জয় আমাদের হবেই হবে, অশুভ অপশক্তির পরাজয় অবশ্যাম্ভাবি। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা