মেজর জিয়ার বি,এন,পি যাদুঘরের পথে,মুজিবের আওয়ামী লীগের দেশে বিদেশে জয়জয়কার---। বর্তমান বি,এন,পির গন্তব্য বা ভবিষ্যত রাজনীতি কোন পয্যায়,কতটুকু বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই দল অবদান রাখতে পারবে,বা আদৌ এই দল ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কিনা --বিশ্লেষনের জন্য রাজনৈতিক বিশ্লেষক হওয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।সাধারন একজন দিন মজুর,অথবা রিক্সাচালককে যদি প্রশ্ন করা হয়,আপনার এলাকায় বি,এন,পি দলের রাজনীতির কি খবর?সেই লোকটি তৎক্ষনাৎ যে উত্তর প্রদান করবে,একজন অতি জ্ঞানী রাজনীতি বিশ্লেষক ও হঠাৎ করে এইরুপ বলার বা কারো প্রশ্নের জবাব দেয়া সম্ভব হবে না।এক কথায় বলা যায় দলটি যে,মহাসংকটে আছে তা একবাক্যে সবাই স্বীকার করেন। বাস্তবতার আলোকে খালেদা তারেকের নেতৃত্বাধীন বিএনপি এখন চরম সংকটের মুখে। বিএনপি এখন কঠিন সময় অতিক্রম করছে।জিয়ার হাতে দল সৃষ্টির পর থেকে কোন সময় বর্তমান পরিস্থিতির মতো, এমন সংকটের মধ্যে বিএনপি আর কখনও পড়েনি।হয় ক্ষমতার স্বাদ গ্রহনে ব্যাস্ত ছিল নয়তো কাছাকাছি অবস্থানেই ছিল।তাই রাজনৈতিক বিশ্লেষকগন মনে করেন, বর্তমান সংকটকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করার মতো নেতৃত্ব বিএনপিতে গড়ে উঠেনি।এইরুপ সংকট কখনও আদৌ আসতে পারে বা আসবে তা কস্মিন কালেও খালেদা পরিবারের চিন্তায় আসেনি।এই প্রথম প্রায় নয় বছরের কাছাকাছি দলটি ক্ষমতার বাইরে থাকায়, নানা দল ও নানা মতের রাজনৈতিক ব্যক্তিদের এখন একত্রে ধরে রাখা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ এরা সবাই দলে এসেছিলেন কিছু পাওয়া কিছু নেওয়ার জন্য। কিন্তু বর্তমান বিএনপির অবস্থা দেখে এদের অনেকে ইতিমধ্যেই কেটে পড়েছেন। বাকিরাও কেটে পড়ার চিন্তা ভাবনা করছেন। এদিকে নিস্তেজ বিএনপিকে আবারও সতেজ করে তোলা অসুস্থ খালেদা জিয়ার পক্ষে এখন আর আগের মতো সহজ নয় বলেই অনেকে মনে করছেন। অন্যদিকে লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমান পরোক্ষভাবে বিএনপির নেতৃত্ব দিলেও তিনি কোনভাবেই দলকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।দীর্ঘদিন দেশের বাইরে থাকায় বিএনপি ও দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির বাস্তবতা থেকে তারেক রহমান এখন অনেক দূরে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন তিনি হয়তো ঝুঁকি নিয়ে আর দেশে ফিরে আসতে চাইবেন না। এমন অবস্থায় তার ব্রিটেনে বসবাসের সময় আরো দীর্ঘ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এছাড়া অবস্থা দেখে আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে যে, আগামী ২০১৯ সালের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমান অবস্থায় লন্ডনে বসে বিএনপিকে তারেক রহমান কতটুকু নেতৃত্ব দিতে পারবেন সে বিষয়ে অনেকেই সন্দেহ পোষণ করেন।দেশে ফিরে না আসার বড় কারনটি হচ্ছে,সে জানে ক্ষমতায় থাকাকালে সে কতটুকু অপরাধ করেছে,বর্তমানে তাঁর শাস্তি অনিবার্য্য।সুতারাং অন্য কোন কৌশলে ক্ষমতার রদবদল করে,তাঁদের সাথে যে কোন সমঝোতার মাধ্যমে দেশে ফিরে আসা ছাড়া তাঁর কোন পথ খোলা নেই।এই কারনে গনতান্ত্রিক জনসমর্থিত দল হওয়া সত্বেও দেশব্যাপি নাশকতা করে,আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে,একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি করা যায় কিনা,সেই চেষ্টা করে গেছেন এতদিন নিবিড় ভাবে।আগামী কয়েক বছরের মধ্যে তদ্রুপ চেষ্টা, আর করতে পারবেন না।পলিসি শতভাগ যে ব্যর্থ মা ছেলে ঠিকই বুঝে গেছেন।তাঁই নতুন কোন পথ খোলা যায় কিনা,সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছেন "মা-ছেলে"।এই ব্যাপারে যে যাই বলুক, আমি তাঁদের একেবারেই দোষ দেইনা,কারন সবাই চায় বাঁচতে-বাঁচার জন্য যা করা দরকার তাই করবে,এতে দোষের কি আছে? খালেদা জিয়ার দলের নেতাদের এবং ব্যারিষ্টারদের আচার আচরনে পরিষ্কার ধারনা মেলে কমপক্ষে চলতি দুই মামলায় খালেদা জিয়ার শাস্তি অনিবার্য্য।সুতারাং আগামিতে সংসদ নির্বাচনে তিনি অংশ নিতে পারবেন না,এটা দিবালোকের মত সত্য। দলকে নেতৃত্ব দেয়ার মত নেতা খালেদা বা তারেক ছাড়া আর কাউকে বিশ্বাস করা যায় না।কারো নেতৃত্বে বি,এন,পি ক্ষমতায় এলেও "মা-ছেলের"প্রতি বর্তমান আওয়ামী লীগ থেকে আরও কোঠোর আচরন করবে না,তার কি গ্যারান্টি? আদিকাল থেকে সব দেশের ইতিহাসের ঘটনাপঞ্জিতো তাই বলে। বিএনপির এই দুঃসময়ে দলটি আদৌ আর সামনের দিকে এগুতে পারবে না।তাই দলের অনেক কেন্দ্রীয় নেতাকে এখন খালেদা তারেকের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সমালোচনা পর্যন্ত করতে দেখা যাচ্ছে। বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে বিএনপির ভবিষ্যত ক্রমাগত ছোটো হয়ে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। যার কারণে অনেকেই মনে করছেন আর বিলম্ব না করে দলকে নুতন করে পুনর্গঠন করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থায় এ ব্যাপারে তিনি কতটুকু সফল হতে পারবেন তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। অন্যদিকে তারেক রহমান বর্তমান সিনিয়র নেতাদের সরিয়ে দিয়ে তরুণদের হাতে বিএনপির নেতৃত্ব দিতে আগ্রহী। কারণ অতীতে বিএনপির ডাকা আন্দোলনগুলোতে এসব সিনিয়র নেতাদের রাস্তায় নামতে দেখা যায়নি। অনেকের সাথে সরকারের আঁতাত রয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এসব নেতা বিএনপির শাসন আমলে বড় বড় ব্যবসা বাণিজ্যের সুযোগ পেয়েছেন। বর্তমানে এগুলোকে ধরে রাখতে তারা দলের ডাকে সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামতে আগ্রহী নন। এদের অনেকেই শুধু শুধু নিজের অর্থনৈতিক ক্ষতি ডেকে আনতে চান না। ইতিমধ্যে এধরনের সমস্যার মধ্যে জড়িয়ে পড়েছেন ঢাকা ব্যাঙ্কের মালিক মির্জা আব্বাসসহ কয়েকজন সিনিয়র নেতা। অন্যদিকে বিএনপি অদূর ভবিষ্যতে কবে আবার ক্ষমতায় আসতে পারবে কিংবা আদৌ কোনো দিন আসতে পারবে কি না সে ব্যাপারে কোনো গ্যারান্টি নেই। এমন অবস্থায় গা বাঁচিয়ে চলাটাকেই অনেক সিনিয়র নেতা উচিত বলে মনে করছেন। এদের অনেকের এখন তারেক রহমানকে পছন্দ নয়। তারেকও সুবিধাবাদী এসব নেতাদের সরিয়ে দিয়ে দলে নুতন নেতৃত্ব নিয়ে আসতে আগ্রহী। মা বেগম খালেদা জিয়ার সাথে এবার এই বিষয়টি নিয়ে তারেক রহমান সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এধরনের সিনিয়র নেতাদের উপদেষ্টা কিংবা অন্যভাবে দলের ক্ষমতাবান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে।সুতারাং দল যে ভাংছে এই ধারনা আর সম্ভাবনার পয্যায় নেই,বাস্তবতায় এসে মিশে গেছে। বর্তমান সরকারও নিজেদের স্বার্থে চাইবে বিএনপি ভেঙ্গে যেন কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। এব্যাপারে সরকার প্রয়োজনে বিপক্ষ শক্তির প্রতি মদদ দিবে,দেওয়া স্বাভাবিক,বঙ্গবন্ধুর পরিবারের প্রতি তাঁরা যে আচরন করেছে,তা যদি শেখ হাসিনার মনে থাকে,মদদ না দিয়ে পারেনা বলে অনেকে মনে করেন। ইতিমধ্যেই অনেকে বলছেন, এই মুহূর্তে যদি খালেদা জিয়ার কোনো কিছু হয়ে যায় তাহলে বিএনপি ভেঙ্গে কয়েক টুকরো হয়ে যেতে পারে। এমন অবস্থায় খালেদা জিয়ার লন্ডন সফর অবশ্যই গুরুত্ব বহন করছে। তিনি লন্ডনযাওয়ার প্রাক্কালে আদালতের নিয়ম অনুযায়ী পারমিশন নিয়েছিলেন কিনা-সে ব্যাপারে সরকার থেকে এখন পর্যন্ত পরিষ্কারভাবে কিছু বলা হয়নি। কারণ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা নিয়মমাফিক চলে আসছে। এই অবস্থায় দেশের বাইরে যাওয়ার নো অবজেকশন সার্টিফিকেট আদালত তাকে দিয়েছিল কি না,সরকারের পক্ষ থেকে সে সম্পর্কে এখনও কিছু বলা হয়নি। অনেকে বলছেন, খালেদা জিয়া লন্ডন থেকে আর আসবেন না। শারীরিক অসুস্থতার অজুহাতে তার দীর্ঘ সময় পরিবারের সাথে থাকার সম্ভবনা রয়েছে। এই অবস্থায় দেশে বিএনপির নেতৃত্বের ভার তারেকের স্ত্রীকে দেয়া হচ্ছে এমন গুজব বাজারে আছে। যাকে দেওয়া হবে তাকে অবশ্যই অত্যন্ত বিশ্বস্ত হতে হবে। বর্তমানে যারা বেগম খালেদা জিয়ার আশেপাশে আছেন তাদের বিরুদ্ধে দলের ভেতরে রয়েছে বিভিন্ন অভিযোগ।কেহই দল পরিচালনা করার মত যোগ্যতা সম্পন্ন নন খালেদা পরিবার মনে করেন। পর্যবেক্ষক মহলের মতে খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতির সুযোগে বর্তমানে বিএনপির সিনিয়র নেতারা নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে দলের ভবিষ্যত নেতৃত্বের ব্যাপারে একটা সমঝোতায় এসে ঘাপটি মেরে বসে আছেন।তাঁরা মনে করেন, দলের জনপ্রিয়তা এখনো বর্তমান। সুতরাং ২০১৯ সালের নির্বাচনে জিয়াউর রহমানের নাম সামনে রেখে খালেদা-তারেকবিহীন বিএনপি গঠন করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে দলের পক্ষে ভালো ফলাফল আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এইসময় যদি খালেদা জিয়া আবারও তত্বাবধায়ক সরকার কিংবা কোনো নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে জামায়াতকে সাথে নিয়ে আন্দোলনে নামেন, তাহলে দলের ভবিষ্যত অস্তিত্ব কঠিন সমস্যার মধ্যে পড়ার সম্ভবনা রয়েছে। অন্যদিকে আগামী নির্বাচনের আগে সরকার হয়তো জামায়াতের সকল রাজনৈতিক কার্যকলাপ নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে পারে। ফলে এককভাবে বিএনপির পক্ষে নির্বাচনের মাধ্যমে আবার ক্ষমতায় আসা কোনো দিন আর সম্ভব হবে না বলেই অনেকে মনে করছেন। পরিসংখ্যান অনুসারে, বিএনপির পক্ষে এখন পর্যন্ত ৩০% ভোট আসার সম্ভবনা রয়েছে বলে অনেকে মনে করেন। তবে দল ভেঙ্গে গেলে ভোটের ফলাফল আরো খারাপ হবে- বলেই পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন। ২০০১ সালের এক পরিসনখ্যানে দেখা গিয়েছিল, বাংলাদেশের ৩০% মানুষ সরাসরি আওয়ামী লীগবিরোধী মনমানষিকতা পোষন করেন।এখন অবশ্য অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে।তার পরও ধরে নিতে পারি, এই জনগোষ্ঠী আওয়ামী লীগ ও ভারতবিরোধী যে কোনো মোর্চায় সবসময় সমর্থন জানাবে। এই জনগোষ্ঠীকেই সম্ভবত খালেদা-তারেকবিহীন বিএনপি আগামীতে তাদের পক্ষে নিয়ে আসার চেষ্টা করবে। ২০১৯ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা শক্তিশালী বিরোধী দলের ভূমিকায় আসার একটা বড় সুযোগ আশা করে। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে খালেদা জিয়ার লন্ডন সফর ও পরবর্তিতে তার সাংগঠনিক কর্মসূচির ওপর। বাংলাদেশের জনগণ চায় দেশে একটা শক্তিশালী বিরোধী দলের অবস্থান। বর্তমানে এরশাদের জাতীয় পার্টিকে কেউ বিরোধী দল হিসেবে দেখছে না। কারণ সরকারের সাথে আপোষ করে তারা ক্ষমতায় রয়েছে। অন্যদিকে অনেকে মনে করেন, বিএনপির এই দুর্বলতার সুযোগে এরশাদের জাতীয় পার্টি ক্ষমতা থেকে সরে এসে সরকার বিরোধী দলের ভূমিকায় মাঠে নামলে জনগণের একটা ভালো সমর্থন দলটির পক্ষে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ক্ষমতায় থাকা আর না থাকা নিয়ে দলটির মধ্যে বর্তমানে রয়েছে মতানৈক্য। এই কারণে এরশাদের ইচ্ছা থাকা সত্বেও তিনি জাতীয় পার্টিকে সরকারবিরোধী ভূমিকায় নিয়ে আসতে পারছেন না। অনেকের মতে, বিএনপিকে ঠেকাতে সরকারের সাথে একটি আলোচনার মাধ্যমে জাতীয় পার্টিকে বিরোধী দলের ভূমিকায় রাজনৈতিক ভাবে মাঠে নামানোর চেষ্টা হচ্ছে। এখন প্রশ্ন হলো বর্তমান অবস্থায় এরশাদ কি পারবেন জাতীয় পার্টিকে বিরোধী দল হিসেবে সঠিকভাবে নেতৃত্ব দিতে?একেক সময় একেক রকম বিবৃতি দিয়ে জনগনের নিকট দলটি পাগলের দল হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।জনগনের নিকট আদৌ এরশাদের কোন গ্রহন যোগ্যতা নেই।তাঁদের দ্বারা কি বিরুদি দলের ভুমিকা পালন করা সম্ভব হবে? কিংবা খালেদা-তারেকবিহীন বিএনপি কি পারবে আগামী নির্বাচনে বিরোধী দলের আসনে বসতে? বিএনপির বর্তমান দুঃসময়ের সুযোগে কর্নেল অলি, ব্যারিস্টার হুদা ও বদরুদ্দোজা চৌধুরীসহ কয়েকজন নেতা বিএনপিতে ফিরে আসার পায়তারা করছেন। তবে তারা বিএনপিতে এলে দলের বর্তমান অবস্থার আদৌ কোনো পরিবর্তন হবে কি না তাতে সন্দেহ রয়েছে। বরং আরো খারাপও হতে পারে। কারণ এই তিন জনই তিন মেরুর মানুষ। অন্যদিকে অলি ও বদরুদ্দোজা একসময়ে এক হয়েও এক থাকতে পারেননি।গত জীবনে ক্ষমতার প্রতিযোগিতায় তারা কেউ কাউকে মানতে বা ছাড় দিতে রাজি হননি।বি,এন,পিতে এলে তাঁরা দুইজন আগের অবস্থায় ফিরে যাবেন না তাও বলা যায় না। কামাল,ইউনুস,ইব্রাহীম,কাদের, অলি, হুদা ও বদরুদ্দোজা এখন বাংলাদেশের রাজনীতিতে আদৌ কোনো গুরুত্ব বহন করেন না। এই অবস্থায় বেগম খালেদা জিয়া জেনে শুনে খাল কেটে কুমির নাও আনতে পারেন। যদিও তিন জনই আপ্রাণ চেষ্টা করছেন বিএনপির এই ক্রাইসিসকে সদ্ব্যবহার করে নিজেদের অবস্থান বিএনপিতে পাকাপোক্ত করতে। উল্লেখযোগ্য যে, একসময় এই তিনজনই বিএনপি থেকে বের হয়ে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে প্রচন্ড সমালোচনা করেছেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে বর্তমানে একটা পরিবর্তন প্রয়োজন বলে পর্যবেক্ষক মহল মনে করছেন। দেশে এখন কোনো কায্যকর জনসমর্থিত,দেশপ্রেমে উদবুদ্ধ বিরোধী দল নেই।এটা দিবা লোকের মত সত্য কথা। চারিদিকে শুধু আওয়ামী লীগের জয় জয়কার। অন্যদিকে বিএনপি গত নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে নাশকতায় অংশ নিয়ে, আগুন সন্ত্রাস করে, মানুষ পুড়িয়ে মারা,ধন সম্পদের বেহাল ক্ষতি সাধন করাতে জনগন তাঁদের এখন আর ভাল চোখে দেখছে না।জনগনের কটুবাক্য নিক্ষেপে নেতারাও নিস্ক্রিয় হওয়া শুরু করেছেন।এমতবস্থায় দিন দিন দলটি দুর্বল হয়ে আসছে। বর্তমানে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত তাদের কোথাও আর দেখা যায় না। অনেকে দল পরিবর্তন করে আওয়ামী লীগে চলে আসছেন। এইকারণে আজ একটি প্রশ্ন সবার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে, বিএনপির বিকল্প কি? কারণ বিএনপি বর্তমানে যেখানে অবস্থান করছে সেখান থেকে তাদের আগের জায়গায় ফিরে আসা আদৌ আর সম্ভব হবে না- তাতে কোন সন্দেহ নেই।এই সন্দেহ বি,এন,পির খোদ নেতারাও করেন না। এখন বিএনপিতে থাকা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি চিন্তা ভাবনা করছে জিয়ার নামকে সামনে রেখে খালেদা-তারেকবিহীন বিএনপি প্রতিষ্ঠার কথা। খালেদা জিয়ার লন্ডন অবস্থানকালে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বড় একটা অংশ খালেদা তারেককে বাদ দিয়ে দল পুর্নগঠন করার প্রকিয়া শুরু করবেন। খালেদা জিয়া যদিও আসেন,সিনিয়রদের বাদ দিয়ে দল পুর্ংঠন করার চেষ্টা করেন,তাহলেও বড় রকমের একটা উত্থান পতন ঘটবে এতে কোন সন্দেহ নেই। তবে সব কিছুই নির্ভর করতে পারে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ভবিষ্যত সাংগঠনিক ভাবে কতটুকু পরিপক্ষতা সহকারে দলের কায্যক্রম পরিচালনা করতে পারেন। লন্ডন থেকে এসে খালেদা জিয়া যদি তারেক রহমানের পরামর্শ অনুসারে বিএনপিতে একটা পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেন তখন বয়োজৈষ্ঠ নেতাদের খালেদা-তারেকবিহীন বিএনপি প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা দেওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলে নিশ্চিত করে বলা যায়। খালেদা জিয়া দলের এই কঠিন সময়ে কি ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন এটাই এখন দেখার বিষয়। অন্যদিকে তিনি লন্ডনে কতদিন অবস্থান করবেন তাও এখন আর নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না।সহসা ফিরে আসা না আসার মধ্যে দলের ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। বিএনপির এই অভ্যন্তরীণ কোন্দলে সরকার কি চুপ করে বসে থাকবে? নিশ্চই না! ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা খালেদা তারেক বিহীন বিএনপি গঠনের কথা প্রকাশ্যে মিডিয়ায় বলেছেন।আওয়ামী লীগ চায় বি,এন,পি থাকুক অবশ্যই বিএনপি থাকবে।তবে খালেদা-তারেকের নেতৃত্বে নয়। সুতরাং আজ হোক আর কাল হোক অবশ্যই আসবে খালেদা-তারেকবিহীন বিএনপি। গনতন্ত্র মনা দেশপ্রেমিক কোন ব্যাক্তি চাইবে না বা চাইতে পারেনা শক্তিশালী সরকারী দলের বিপরীতে বিরুদীদল শক্তিহীন থাকুক।কোন গনতান্ত্রিক দেশের ও কাম্য নয়।যাহাই ঘটুক,যাহাই হোক,দেশ পরিচালনার জন্য,উন্নয়ন অগ্রগতি নিরবিচ্ছিন্ন রাখার মানষে শক্তিশালী, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের,স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসি গনতান্ত্রীক দেশপ্রেমিক, দায়ীত্বশীল বিরুদি দলের একান্ত কাম্য,বর্তমান প্রেক্ষাপটে।এই সত্যকে অস্বিকার করার অর্থই হবে, দেশের ভবিষ্যতকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেয়া। বি,এন,পি সম্পর্কে যে দিক থেকে আলোচনা করিনা কেন,ভবিষ্যতের দিকে তাকালে কেবলেই দেখা যায় যাদুঘর।আল্লাহর সরাসরি হস্তক্ষেপ ছাড়া এই দল বাংলাদেশের রাজনীতিতে কস্মিনকালেও সফল হবে না,বা সফল ভাবে ফিরে আসতে পারবে না,শতভাগ নিশ্চিত করেই বলা যায়।সুতারাং এখনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরন ঘটুক ইহাই কামনা করি মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে।আল্লাহ যেন আমাদের দেশে সুস্থ্যধারায় রাজনীতির চর্চা অব্যাহত রাখার ক্ষমতা সম্পন্ন নেতার আবির্ভাব ঘটিয়ে দেন,এই কামনাই করি। " জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু" " জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা"

ভবিষ্যত বাংলাদেশ বিনির্মানের জন্য সত্যিকারের দেশপ্রেমিক,মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ,গনতান্ত্রিক মুল্যবোধে বিশ্বাসি বিরুদি দলের একান্ত কাম্য।একদলে কখনই গনতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানীক ভাবে গড়ে তোলা সম্ভব নয়।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন