দলীয় প্রতিকে স্থানীয় নির্বাচন,নতুন সমাজ গড়ার অঙ্গিকারের একধাপ অগ্রগতি।
জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু
=========================
স্থানীয় নির্বাচন দলীয় ভাবে হবে,দেশরত্মের সুদুরপ্রসারী চিন্তাচেতনার ফসল=====================
=>=>===================[===
সরকার অনেক দিন পর ভাল একটা উদ্যোগ নিল। গনতন্ত্রকে সুদৃড ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করতে হলে সর্বস্তরে নির্বাচিত প্রতিনিধির অবস্থান যেমনি অপরিহায্য, তেমনি দলীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করাও অবশ্যক ছিল।রাজনৈতিক মহলে বিষয়টি অনেক দিন আগে থেকে ব্যাপক আলোচিত হলেও অতীতে কোন সরকার উদ্যোগ নিতে সাহসি হননি।
দলীয় নির্বাচনের সুফল পেতে দেরী হলে ও অরাজনৈতিক ব্যাক্তিদের হঠাৎ রাজনীতির মাঠে উদয় হয়ে বাজিমাৎ করার প্রবনতা নি:সন্দেহে কমে আসবে। এই একটি সুফল সত্বর পাওয়া যাবে আশা করি। স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় ভাবে করার চিন্তা আওয়ামীলীগের অনেক দিনের ইচ্ছা ছিল। সরকারের মন্ত্রী পরিষদ দলীয় ভাবে নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন। মন্ত্রী পরিষদের নিয়মিত বৈঠকে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, জেলা পরিষদ, সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন আইনের এ সংক্রান্ত সংশোধনের প্রস্তাবের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।প্রস্তাব অনুসারে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে রাজনৈতিক দলীয় প্রতীকে। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো প্রার্থী মনোয়ন দিতে পারবে। মনোনীত প্রার্থী দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবে। তবে এক শতাংশ ভোটারের সমর্থন নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্ধিতার সুযোগ রেখে আইনের সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে।
অতীতে যদিও স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয় হওয়ার বিধান ছিল,কালক্রমে সেই বিধানে দলীয় রঙের চাপ লাগাতে দলগুলি যারপরনাই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেখা যেত।এমন ও দেখা গেছে বিদ্রোহি অনেক প্রাথীকে ভোটের আগে পরে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।এতে তাঁর সারা জীবনের রাজনীতির মাঠে অর্জিত সুনাম নিমিশেই ধুলায় মিশে যেত।
স্থানীয় সরকার বলতে, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনকে বুঝায়।
স্বাধিনতার পর থেকে স্থানীয় সরকারের প্রত্যেক নির্বাচনে ব্যাপকভাবে রাজনৈতিক দলগুলী দলীয় প্রভাব রাখঢাক না রেখেই খাটাতে দেখা গেছে। প্রার্থী সমর্থন থেকে আরাম্ভ করে পোষ্টার, লিপলেট বিতরন,উদ্ধতন নেতাদের নির্বাচনী সভায় বক্তৃতাদান সব নির্বাচনী কাজ দলীয় নেতা কর্মীরাই করেতেন, কোন কোন ক্ষেত্রে মনোনয়ন দিতেও দেখা গেছে। দল-সমর্থিত প্রার্থীরা দলীয় প্রার্থী পরিচয়েই নির্বাচন করতেন। কাগজে কলমে নির্দলীয় হলেও আসলে দলীয় নির্বাচনই হতে দেখা গেছে। অবস্থাদৃষ্টে স্থানীয় নির্বাচন দলীয়ভাবে অনুষ্ঠানের সম্ভাব্যতার বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে থেমে থেমে কয়েক বছর ধরেই। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বরাবরই দলীয় নির্বাচনের পক্ষে ছিল। অন্য দলগুলো অন্য অনেক রাষ্ট্রীয় গুরুত্ব পুর্ন বিষয়ের মত দৌদল্যমানতায় ভুগছিল।স্থানীয় সরকার সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মতামত ইতোমধ্যে পক্ষে বিপক্ষে দেশব্যাপি মানুষের মনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হচ্ছে। উল্লেখ্য, ভারত, ব্রিটেনসহ বহু দেশেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় ভিত্তিতে হয়ে থাকে।কিছুদিন আগে পশ্চিমবঙ্গের‘পুর নির্বাচন’ স্ব স্ব দলের প্রতীকে হতে দেখা গেছে। বাংলাদেশেও বর্তমান সরকার দলীয় পরিচয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পক্ষে নির্বাচনী আইন সংশোধনের সাহসী উদ্যোগ নিয়েছেন।সাহসী উদ্যোগ বলছি এই কারনে,অতীতে দেখা গেছে, নতুন কোন আইন বা রীতি প্রনয়ন করতে গেলে একশ্রেনীর পশ্চাদপদ দল ও গুষ্টি ব্যাপক অপপ্রচার এবং গুজব চড়াতে দেখা গেছে।প্রকৃষ্ট প্রমানের জন্য বেশি দূর যাওয়ার প্রয়োজন নেই।নারীদের অর্জিত সম্পত্তির মালিকানা আইন সংসদে পাস ও হেফাজতিদের ধর্মের অপব্যাখ্যা করে সাধারন মানুষকে বিভ্রান্ত করার হীন প্রচেষ্টা কিছুদিন আগেও দেশ বাসি প্রত্যক্ষ করেছে।
কিছু কিছু বিশেষজ্ঞ সরকারের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানালেও কিয়দংশ শঙ্কার কথা বলে বিভ্রান্তি চড়ানোর চেষ্টা করবেন স্বাভাবিক ভাবেই।বিরুদিদের মুখে নির্বাচনে দলীয় প্রভাবের কথা উঠে আসছে। যেমন- স্থানীয় নির্বাচন দলীয় হলে তৃণমূলে রাজনৈতিক সহিংসতা বিস্তৃত হওয়ার শঙ্কা থাকবে,তৃনমুলে পেশিশক্তির প্রভাব, অর্থবিত্তের প্রভাব খাটিয়ে দলীয় নমিনেশন লাভ করা ও ভোট কেনাবেচার প্রবণতা স্থানীয় সরকার নির্বাচিনেও দেখা দিবে। স্থানীয় পর্যায়ে ভালো লোক কোনো দল করেন না, তাদের প্রার্থী হওয়া বা জেতার সুযোগ সিমীত হয়ে যাবে।
তাঁদের প্রতি সম্মান রেখেই বলতে চাই,রাস্তায় দেখা না গেলে,সমাজের কোন কাজে অংশ না নিলে,জনসেবা করার মানষিকতা না থাকলে,জনগনের সুখে দু:খ্যে অংশ না নিলে,সমাজে বিতর্কের ভয়ে সামাজিকতা না করলে তাঁরাই কি ভাল লোক?
শুধুমাত্র টাকার গৌরবে সমাজে পারিবারিক সম্মান বৃদ্ধির জন্য অকস্যাৎ নির্বাচনে এসে বাজিমাৎ করা যায়, সমাজের কোন কাজ করা যায়না।উন্নয়ন মুলক কোন কাজ তাঁর দ্বারা করা কোন অবস্থায় সম্ভব হয় না ইহা পরিক্ষীত ,বাস্তব,চিরন্তন সত্য।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে হলে যে কোনো সমস্যার জন্য রাজনৈতিক দলগুলো দায়ী থাকবে। এতে কাজে সুবিধা হবে। যাই হোক, এ সংক্রান্ত আইনের সংশোধনী মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হওয়ার পর, ধরে নেয়াই স্বাভাবিক যে, বাকী প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। অর্থাৎ ভবিষ্যতে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় পরিচয়েই হবে। পরিস্থিতির বিবেচনায় বিধানটি অসামঞ্জস্য মনে হলে ও সুদুর প্রসারী বাস্তবমুখি পদক্ষেপ নি:সন্দেহে বলা যায়। আমাদের চাওয়া হবে, বিরুদি দল সমুহের স্থানীয় নির্বাচন সংক্রান্ত আইন ও বিধি প্রণয়নের ক্ষেত্রে আশঙ্কার বিষয়গুলো সরকারের পক্ষ থেকে যেন আমলে নেয়া হয়। উল্লিখিত সব যুক্তি-তর্কের মোদ্দা কথা হলো, দলীয় ভিত্তিতে স্থানীয় নির্বাচনের সফলতা নির্ভর করবে অনেকটাই রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনে স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহন,সকল দলের দায়িত্বশীলতা, সর্বোপরি রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অংশ নিয়ে গনতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষায় মনোযোগি হওয়ার উপর।আমি বিশ্বাস করি ২//৩ টি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে রাজনৈতিক সংস্কৃতির ইতিবাচক পরিবর্তন সংগঠিত হবে।প্রথমে নির্বাচন কমিশনের বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার প্রয়োজন হলেও অচিরেই জনগন সুফল পাওয়া শুরু হলে জনগন অভ্যেসগত ভাবে মেনে নিবে। স্থানীয় পর্যায়ে জনপ্রিয় ব্যক্তিরা যাতে সুযোগ পান সেদিকে উদ্বতন নেতাদের নজর দিতে হবে। সরকারি দল ছাড়া ভিন্ন দলের প্রার্থীরা নির্বাচনে জীতে গেলে,জীতবেতো অবশ্যই, তারা যেন তাদের দায়িত্ব স্বাভাবিকভাবে পালন করতে পারেন, সেটা সরকারের প্রসাশন নিশ্চিত করতে হবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচন কেবল নির্বাচনের পদ্ধতিগত পরিবর্তন নয়, গুণগত পরিবর্তন প্রত্যাশা করে জনগন।সরকারের এই উদ্যোগের ফলে তৎক্ষনাৎ যে সুদুরপ্রসারী উপকার জনগন ও তৃনমুলের জ্ঞানী,ব্যক্তিত্ব সম্পর্ন্ন,জনদরদি সমাজ সেবক গন পাবেন তাঁর কিঞ্চিত বিবরন তুলে ধরতে চাই।
(১)সবচেয়ে বড় যে কাজটি হবে প্রার্থীদের ব্যয় অনেকাংশে কমে যাবে।দলীয় প্রার্থীর ভোট সংগ্রহ কর্মীদের বাধ্যবাধকতার কারনে,ভোট বেচা কেনার হিড়িক কমে আসবে।
(২) অতিশয় গরীব মেধাসম্পন্ন তৃনমুলের নেতাদের ভোটে অংশগ্রহনের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
(৩)দলীয় কাজে গতিশীলতা আসবে।মাঠের সক্রিয় নেতাদের নমিনেশন পাওয়ার সম্ভাবনা যত বাড়বে,দলীয় কাজে অংশ নেয়ার মাত্রা প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে বেড়ে যাবে।
(৪) টাকার কুমিরদের ভোটে প্রভাব বিস্তারের সুযোগ কমে আসবে।সত্যিকারের সমাজ সেবকদের হাতে স্থানীয় সরকার পরিচালনার ক্ষমতা ক্রমশই বৃদ্ধি পেতে থাকবে।
সকল উদ্যোগের ভালমন্দ দিক থাকা স্বাভাবিক।কিছু ব্যতিক্রম হবেনা তা হলফ করে বলা যায় না।পদ্ধতিটি প্রাতিষ্ঠানীক রুপ পেলে জালিয়াতি অবশ্যই কমে যাবে।উদ্ধতন নেতাদের প্রথম দিকে নমিনেশন বেচাকেনার সুযোগ সৃষ্টি হলেও অচিরেই কর্মিদের প্রাথমিক নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা চালু হলে ঐ জাল জস্লিয়াতির সুযোগ অনেকাংশে কমে আসবে আশা করি।
পরিশেষে বলতে চাই,গনতন্রকে সুদৃড ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করতে হলে,আর ও কতক ক্ষেত্রে জননেত্রীর সরকার কে সাহসী উদ্যোগ নেয়ার প্রয়োজন আছে।এই দেশের যত ইতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে,সকল কৃতিত্বই আওয়ামী লীগের।আওয়ামী লীগ যেহেতু স্বাধীনতার রুপকার,বাস্তবায়নকারী,তেমনি জনগনের কল্যানে, দেশের উন্নতির জন্য বড় ঝুকি নিয়ে হলেও কাজ করে যেতে হবে।জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে, মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে, তাঁর রক্তের ঋন শোধ করতে হবে।পুরাতন ঘুনেধরা সমাজের পরিবর্তন করে,জ্ঞান ভিত্তিক,আধুনিক,প্রযুক্তি নির্ভর সমাজ প্রতিষ্ঠা করে, ষড়যন্ত্র কারীদের সকল সমালোচনার উপযুক্ত জবাব দিতে হবে।
পশ্চিমা গনতন্ত্রের ধারক বাহকদের উদ্দেশ্যে সবিনয়ে বলতে চাই,বহুদলীয় গনতন্ত্রের কথা মুখে বলতে শিখেছেন,কাজে পরিনত করেননি।ভোটের গনতন্ত্রে অন্য সকল গনতান্ত্রীক দেশে যেমন ভাবে, যেই সমস্ত স্তরে নির্বাচনের মাধ্যমে গনতন্ত্রের চর্চা অব্যাহত রেখেছেন,বর্তমান সরকার তাই অনুস্মরন করে বাস্তব পদক্ষেপ নিচ্ছেন।আপনারা যা পারেননি দেশরত্ম তাহাই সম্ভব করে দেশকে এগিয়ে নেয়ার প্রয়াস নিচ্ছেন।রাজনৈতিক বিরোধ থাকবে, থাকাটা স্বাভাবিক, গনতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় ভুল সংশোধনের জন্য বিরুদিদলের ছায়া মন্ত্রীসভার অস্তিত্ব থাকাটাও জনগন প্রত্যাশা করে,জনগনকে আপনারা তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।
সময় এসেছে, পরিবর্তনের সকল ইস্যুতে জনগনের প্রত্যাশা অনুযায়ী জাতীয় সকল কর্মকান্ডে জাতীয় ঐক্যমত্য প্রতিষ্ঠার।বিশেষ করে পরিবর্তনের জাতীয় ইস্যুগুলিতে জাতিয় দল সমুহের জাতিয় ঐক্য গড়ে তোলা নতুন প্রজর্ম্মের নতুন দাবী। জাতীয় ঐক্যে যে দল বা জোট যত দুরত্বে অবস্থান করবে,জনগন ও ঐ দল বা জোটের নিকট থেকে সমদুরত্বে অবস্থান নিতে থাকবে।যত শীগ্রই বোধদয় হবে, ততই জোট,দল,সরকার তথা জগনের মঙ্গল সাধিত হবে।
"" জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু
জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা ""
=========================
স্থানীয় নির্বাচন দলীয় ভাবে হবে,দেশরত্মের সুদুরপ্রসারী চিন্তাচেতনার ফসল=====================
=>=>===================[===
সরকার অনেক দিন পর ভাল একটা উদ্যোগ নিল। গনতন্ত্রকে সুদৃড ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করতে হলে সর্বস্তরে নির্বাচিত প্রতিনিধির অবস্থান যেমনি অপরিহায্য, তেমনি দলীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করাও অবশ্যক ছিল।রাজনৈতিক মহলে বিষয়টি অনেক দিন আগে থেকে ব্যাপক আলোচিত হলেও অতীতে কোন সরকার উদ্যোগ নিতে সাহসি হননি।
দলীয় নির্বাচনের সুফল পেতে দেরী হলে ও অরাজনৈতিক ব্যাক্তিদের হঠাৎ রাজনীতির মাঠে উদয় হয়ে বাজিমাৎ করার প্রবনতা নি:সন্দেহে কমে আসবে। এই একটি সুফল সত্বর পাওয়া যাবে আশা করি। স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় ভাবে করার চিন্তা আওয়ামীলীগের অনেক দিনের ইচ্ছা ছিল। সরকারের মন্ত্রী পরিষদ দলীয় ভাবে নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন। মন্ত্রী পরিষদের নিয়মিত বৈঠকে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, জেলা পরিষদ, সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন আইনের এ সংক্রান্ত সংশোধনের প্রস্তাবের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।প্রস্তাব অনুসারে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে রাজনৈতিক দলীয় প্রতীকে। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো প্রার্থী মনোয়ন দিতে পারবে। মনোনীত প্রার্থী দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবে। তবে এক শতাংশ ভোটারের সমর্থন নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্ধিতার সুযোগ রেখে আইনের সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে।
অতীতে যদিও স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয় হওয়ার বিধান ছিল,কালক্রমে সেই বিধানে দলীয় রঙের চাপ লাগাতে দলগুলি যারপরনাই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেখা যেত।এমন ও দেখা গেছে বিদ্রোহি অনেক প্রাথীকে ভোটের আগে পরে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।এতে তাঁর সারা জীবনের রাজনীতির মাঠে অর্জিত সুনাম নিমিশেই ধুলায় মিশে যেত।
স্থানীয় সরকার বলতে, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনকে বুঝায়।
স্বাধিনতার পর থেকে স্থানীয় সরকারের প্রত্যেক নির্বাচনে ব্যাপকভাবে রাজনৈতিক দলগুলী দলীয় প্রভাব রাখঢাক না রেখেই খাটাতে দেখা গেছে। প্রার্থী সমর্থন থেকে আরাম্ভ করে পোষ্টার, লিপলেট বিতরন,উদ্ধতন নেতাদের নির্বাচনী সভায় বক্তৃতাদান সব নির্বাচনী কাজ দলীয় নেতা কর্মীরাই করেতেন, কোন কোন ক্ষেত্রে মনোনয়ন দিতেও দেখা গেছে। দল-সমর্থিত প্রার্থীরা দলীয় প্রার্থী পরিচয়েই নির্বাচন করতেন। কাগজে কলমে নির্দলীয় হলেও আসলে দলীয় নির্বাচনই হতে দেখা গেছে। অবস্থাদৃষ্টে স্থানীয় নির্বাচন দলীয়ভাবে অনুষ্ঠানের সম্ভাব্যতার বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে থেমে থেমে কয়েক বছর ধরেই। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বরাবরই দলীয় নির্বাচনের পক্ষে ছিল। অন্য দলগুলো অন্য অনেক রাষ্ট্রীয় গুরুত্ব পুর্ন বিষয়ের মত দৌদল্যমানতায় ভুগছিল।স্থানীয় সরকার সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মতামত ইতোমধ্যে পক্ষে বিপক্ষে দেশব্যাপি মানুষের মনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হচ্ছে। উল্লেখ্য, ভারত, ব্রিটেনসহ বহু দেশেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় ভিত্তিতে হয়ে থাকে।কিছুদিন আগে পশ্চিমবঙ্গের‘পুর নির্বাচন’ স্ব স্ব দলের প্রতীকে হতে দেখা গেছে। বাংলাদেশেও বর্তমান সরকার দলীয় পরিচয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পক্ষে নির্বাচনী আইন সংশোধনের সাহসী উদ্যোগ নিয়েছেন।সাহসী উদ্যোগ বলছি এই কারনে,অতীতে দেখা গেছে, নতুন কোন আইন বা রীতি প্রনয়ন করতে গেলে একশ্রেনীর পশ্চাদপদ দল ও গুষ্টি ব্যাপক অপপ্রচার এবং গুজব চড়াতে দেখা গেছে।প্রকৃষ্ট প্রমানের জন্য বেশি দূর যাওয়ার প্রয়োজন নেই।নারীদের অর্জিত সম্পত্তির মালিকানা আইন সংসদে পাস ও হেফাজতিদের ধর্মের অপব্যাখ্যা করে সাধারন মানুষকে বিভ্রান্ত করার হীন প্রচেষ্টা কিছুদিন আগেও দেশ বাসি প্রত্যক্ষ করেছে।
কিছু কিছু বিশেষজ্ঞ সরকারের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানালেও কিয়দংশ শঙ্কার কথা বলে বিভ্রান্তি চড়ানোর চেষ্টা করবেন স্বাভাবিক ভাবেই।বিরুদিদের মুখে নির্বাচনে দলীয় প্রভাবের কথা উঠে আসছে। যেমন- স্থানীয় নির্বাচন দলীয় হলে তৃণমূলে রাজনৈতিক সহিংসতা বিস্তৃত হওয়ার শঙ্কা থাকবে,তৃনমুলে পেশিশক্তির প্রভাব, অর্থবিত্তের প্রভাব খাটিয়ে দলীয় নমিনেশন লাভ করা ও ভোট কেনাবেচার প্রবণতা স্থানীয় সরকার নির্বাচিনেও দেখা দিবে। স্থানীয় পর্যায়ে ভালো লোক কোনো দল করেন না, তাদের প্রার্থী হওয়া বা জেতার সুযোগ সিমীত হয়ে যাবে।
তাঁদের প্রতি সম্মান রেখেই বলতে চাই,রাস্তায় দেখা না গেলে,সমাজের কোন কাজে অংশ না নিলে,জনসেবা করার মানষিকতা না থাকলে,জনগনের সুখে দু:খ্যে অংশ না নিলে,সমাজে বিতর্কের ভয়ে সামাজিকতা না করলে তাঁরাই কি ভাল লোক?
শুধুমাত্র টাকার গৌরবে সমাজে পারিবারিক সম্মান বৃদ্ধির জন্য অকস্যাৎ নির্বাচনে এসে বাজিমাৎ করা যায়, সমাজের কোন কাজ করা যায়না।উন্নয়ন মুলক কোন কাজ তাঁর দ্বারা করা কোন অবস্থায় সম্ভব হয় না ইহা পরিক্ষীত ,বাস্তব,চিরন্তন সত্য।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে হলে যে কোনো সমস্যার জন্য রাজনৈতিক দলগুলো দায়ী থাকবে। এতে কাজে সুবিধা হবে। যাই হোক, এ সংক্রান্ত আইনের সংশোধনী মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হওয়ার পর, ধরে নেয়াই স্বাভাবিক যে, বাকী প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। অর্থাৎ ভবিষ্যতে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় পরিচয়েই হবে। পরিস্থিতির বিবেচনায় বিধানটি অসামঞ্জস্য মনে হলে ও সুদুর প্রসারী বাস্তবমুখি পদক্ষেপ নি:সন্দেহে বলা যায়। আমাদের চাওয়া হবে, বিরুদি দল সমুহের স্থানীয় নির্বাচন সংক্রান্ত আইন ও বিধি প্রণয়নের ক্ষেত্রে আশঙ্কার বিষয়গুলো সরকারের পক্ষ থেকে যেন আমলে নেয়া হয়। উল্লিখিত সব যুক্তি-তর্কের মোদ্দা কথা হলো, দলীয় ভিত্তিতে স্থানীয় নির্বাচনের সফলতা নির্ভর করবে অনেকটাই রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনে স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহন,সকল দলের দায়িত্বশীলতা, সর্বোপরি রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অংশ নিয়ে গনতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষায় মনোযোগি হওয়ার উপর।আমি বিশ্বাস করি ২//৩ টি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে রাজনৈতিক সংস্কৃতির ইতিবাচক পরিবর্তন সংগঠিত হবে।প্রথমে নির্বাচন কমিশনের বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার প্রয়োজন হলেও অচিরেই জনগন সুফল পাওয়া শুরু হলে জনগন অভ্যেসগত ভাবে মেনে নিবে। স্থানীয় পর্যায়ে জনপ্রিয় ব্যক্তিরা যাতে সুযোগ পান সেদিকে উদ্বতন নেতাদের নজর দিতে হবে। সরকারি দল ছাড়া ভিন্ন দলের প্রার্থীরা নির্বাচনে জীতে গেলে,জীতবেতো অবশ্যই, তারা যেন তাদের দায়িত্ব স্বাভাবিকভাবে পালন করতে পারেন, সেটা সরকারের প্রসাশন নিশ্চিত করতে হবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচন কেবল নির্বাচনের পদ্ধতিগত পরিবর্তন নয়, গুণগত পরিবর্তন প্রত্যাশা করে জনগন।সরকারের এই উদ্যোগের ফলে তৎক্ষনাৎ যে সুদুরপ্রসারী উপকার জনগন ও তৃনমুলের জ্ঞানী,ব্যক্তিত্ব সম্পর্ন্ন,জনদরদি সমাজ সেবক গন পাবেন তাঁর কিঞ্চিত বিবরন তুলে ধরতে চাই।
(১)সবচেয়ে বড় যে কাজটি হবে প্রার্থীদের ব্যয় অনেকাংশে কমে যাবে।দলীয় প্রার্থীর ভোট সংগ্রহ কর্মীদের বাধ্যবাধকতার কারনে,ভোট বেচা কেনার হিড়িক কমে আসবে।
(২) অতিশয় গরীব মেধাসম্পন্ন তৃনমুলের নেতাদের ভোটে অংশগ্রহনের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
(৩)দলীয় কাজে গতিশীলতা আসবে।মাঠের সক্রিয় নেতাদের নমিনেশন পাওয়ার সম্ভাবনা যত বাড়বে,দলীয় কাজে অংশ নেয়ার মাত্রা প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে বেড়ে যাবে।
(৪) টাকার কুমিরদের ভোটে প্রভাব বিস্তারের সুযোগ কমে আসবে।সত্যিকারের সমাজ সেবকদের হাতে স্থানীয় সরকার পরিচালনার ক্ষমতা ক্রমশই বৃদ্ধি পেতে থাকবে।
সকল উদ্যোগের ভালমন্দ দিক থাকা স্বাভাবিক।কিছু ব্যতিক্রম হবেনা তা হলফ করে বলা যায় না।পদ্ধতিটি প্রাতিষ্ঠানীক রুপ পেলে জালিয়াতি অবশ্যই কমে যাবে।উদ্ধতন নেতাদের প্রথম দিকে নমিনেশন বেচাকেনার সুযোগ সৃষ্টি হলেও অচিরেই কর্মিদের প্রাথমিক নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা চালু হলে ঐ জাল জস্লিয়াতির সুযোগ অনেকাংশে কমে আসবে আশা করি।
পরিশেষে বলতে চাই,গনতন্রকে সুদৃড ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করতে হলে,আর ও কতক ক্ষেত্রে জননেত্রীর সরকার কে সাহসী উদ্যোগ নেয়ার প্রয়োজন আছে।এই দেশের যত ইতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে,সকল কৃতিত্বই আওয়ামী লীগের।আওয়ামী লীগ যেহেতু স্বাধীনতার রুপকার,বাস্তবায়নকারী,তেমনি জনগনের কল্যানে, দেশের উন্নতির জন্য বড় ঝুকি নিয়ে হলেও কাজ করে যেতে হবে।জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে, মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে, তাঁর রক্তের ঋন শোধ করতে হবে।পুরাতন ঘুনেধরা সমাজের পরিবর্তন করে,জ্ঞান ভিত্তিক,আধুনিক,প্রযুক্তি নির্ভর সমাজ প্রতিষ্ঠা করে, ষড়যন্ত্র কারীদের সকল সমালোচনার উপযুক্ত জবাব দিতে হবে।
পশ্চিমা গনতন্ত্রের ধারক বাহকদের উদ্দেশ্যে সবিনয়ে বলতে চাই,বহুদলীয় গনতন্ত্রের কথা মুখে বলতে শিখেছেন,কাজে পরিনত করেননি।ভোটের গনতন্ত্রে অন্য সকল গনতান্ত্রীক দেশে যেমন ভাবে, যেই সমস্ত স্তরে নির্বাচনের মাধ্যমে গনতন্ত্রের চর্চা অব্যাহত রেখেছেন,বর্তমান সরকার তাই অনুস্মরন করে বাস্তব পদক্ষেপ নিচ্ছেন।আপনারা যা পারেননি দেশরত্ম তাহাই সম্ভব করে দেশকে এগিয়ে নেয়ার প্রয়াস নিচ্ছেন।রাজনৈতিক বিরোধ থাকবে, থাকাটা স্বাভাবিক, গনতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় ভুল সংশোধনের জন্য বিরুদিদলের ছায়া মন্ত্রীসভার অস্তিত্ব থাকাটাও জনগন প্রত্যাশা করে,জনগনকে আপনারা তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।
সময় এসেছে, পরিবর্তনের সকল ইস্যুতে জনগনের প্রত্যাশা অনুযায়ী জাতীয় সকল কর্মকান্ডে জাতীয় ঐক্যমত্য প্রতিষ্ঠার।বিশেষ করে পরিবর্তনের জাতীয় ইস্যুগুলিতে জাতিয় দল সমুহের জাতিয় ঐক্য গড়ে তোলা নতুন প্রজর্ম্মের নতুন দাবী। জাতীয় ঐক্যে যে দল বা জোট যত দুরত্বে অবস্থান করবে,জনগন ও ঐ দল বা জোটের নিকট থেকে সমদুরত্বে অবস্থান নিতে থাকবে।যত শীগ্রই বোধদয় হবে, ততই জোট,দল,সরকার তথা জগনের মঙ্গল সাধিত হবে।
"" জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু
জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা ""
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন