দলীয় প্রতিকে স্থানীয় নির্বাচন,নতুন সমাজ গড়ার অঙ্গিকারের একধাপ অগ্রগতি।

জয়বাংলা           জয়বঙ্গবন্ধু
=========================

 স্থানীয় নির্বাচন দলীয় ভাবে হবে,দেশরত্মের সুদুরপ্রসারী চিন্তাচেতনার ফসল=====================
=>=>===================[===

সরকার অনেক দিন পর ভাল একটা উদ্যোগ নিল। গনতন্ত্রকে সুদৃড ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করতে হলে সর্বস্তরে নির্বাচিত প্রতিনিধির অবস্থান যেমনি অপরিহায্য, তেমনি দলীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করাও অবশ্যক ছিল।রাজনৈতিক মহলে বিষয়টি অনেক দিন আগে থেকে ব্যাপক আলোচিত হলেও অতীতে কোন সরকার উদ্যোগ নিতে সাহসি হননি।
দলীয় নির্বাচনের সুফল পেতে দেরী হলে ও অরাজনৈতিক ব্যাক্তিদের হঠাৎ রাজনীতির মাঠে উদয় হয়ে বাজিমাৎ করার প্রবনতা নি:সন্দেহে কমে আসবে।    এই একটি সুফল সত্বর পাওয়া যাবে আশা করি। স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় ভাবে করার চিন্তা আওয়ামীলীগের অনেক দিনের ইচ্ছা ছিল।   সরকারের মন্ত্রী পরিষদ দলীয় ভাবে  নির্বাচনের পক্ষে মত  দিয়েছেন।  মন্ত্রী পরিষদের নিয়মিত বৈঠকে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, জেলা পরিষদ, সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন আইনের এ সংক্রান্ত সংশোধনের প্রস্তাবের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।প্রস্তাব   অনুসারে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে রাজনৈতিক দলীয় প্রতীকে। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো প্রার্থী মনোয়ন দিতে পারবে। মনোনীত প্রার্থী দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবে। তবে এক শতাংশ ভোটারের সমর্থন নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্ধিতার সুযোগ রেখে আইনের সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে।
অতীতে যদিও স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয় হওয়ার বিধান ছিল,কালক্রমে সেই বিধানে দলীয় রঙের চাপ লাগাতে দলগুলি যারপরনাই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেখা যেত।এমন ও দেখা গেছে বিদ্রোহি অনেক প্রাথীকে ভোটের আগে পরে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।এতে তাঁর সারা   জীবনের রাজনীতির মাঠে অর্জিত সুনাম নিমিশেই ধুলায় মিশে যেত।
 স্থানীয় সরকার বলতে, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনকে বুঝায়।
 স্বাধিনতার পর থেকে স্থানীয় সরকারের প্রত্যেক     নির্বাচনে  ব্যাপকভাবে রাজনৈতিক দলগুলী দলীয় প্রভাব  রাখঢাক না রেখেই খাটাতে দেখা গেছে।  প্রার্থী সমর্থন থেকে আরাম্ভ করে পোষ্টার, লিপলেট বিতরন,উদ্ধতন নেতাদের নির্বাচনী সভায় বক্তৃতাদান সব নির্বাচনী কাজ দলীয় নেতা কর্মীরাই করেতেন, কোন কোন ক্ষেত্রে মনোনয়ন দিতেও দেখা গেছে।   দল-সমর্থিত প্রার্থীরা দলীয় প্রার্থী পরিচয়েই নির্বাচন করতেন। কাগজে কলমে নির্দলীয় হলেও আসলে দলীয় নির্বাচনই হতে দেখা গেছে।  অবস্থাদৃষ্টে স্থানীয় নির্বাচন দলীয়ভাবে অনুষ্ঠানের সম্ভাব্যতার বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে থেমে থেমে কয়েক বছর ধরেই। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বরাবরই দলীয় নির্বাচনের  পক্ষে ছিল। অন্য দলগুলো অন্য অনেক রাষ্ট্রীয় গুরুত্ব পুর্ন বিষয়ের মত দৌদল্যমানতায় ভুগছিল।স্থানীয় সরকার   সংশ্লিষ্ট  বিশেষজ্ঞদের মতামত ইতোমধ্যে পক্ষে বিপক্ষে দেশব্যাপি মানুষের মনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হচ্ছে।    উল্লেখ্য, ভারত, ব্রিটেনসহ বহু দেশেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় ভিত্তিতে হয়ে থাকে।কিছুদিন আগে  পশ্চিমবঙ্গের‘পুর নির্বাচন’   স্ব স্ব দলের প্রতীকে হতে দেখা গেছে। বাংলাদেশেও বর্তমান সরকার দলীয় পরিচয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পক্ষে নির্বাচনী আইন সংশোধনের সাহসী উদ্যোগ নিয়েছেন।সাহসী উদ্যোগ বলছি এই কারনে,অতীতে দেখা গেছে, নতুন কোন আইন বা রীতি প্রনয়ন করতে গেলে একশ্রেনীর পশ্চাদপদ দল ও গুষ্টি ব্যাপক অপপ্রচার এবং গুজব চড়াতে দেখা গেছে।প্রকৃষ্ট প্রমানের জন্য বেশি দূর যাওয়ার প্রয়োজন নেই।নারীদের অর্জিত সম্পত্তির মালিকানা আইন সংসদে পাস  ও হেফাজতিদের ধর্মের অপব্যাখ্যা করে সাধারন মানুষকে বিভ্রান্ত করার হীন প্রচেষ্টা কিছুদিন আগেও দেশ বাসি প্রত্যক্ষ করেছে।
কিছু কিছু বিশেষজ্ঞ    সরকারের  উদ্যোগকে সাধুবাদ জানালেও কিয়দংশ    শঙ্কার কথা বলে বিভ্রান্তি চড়ানোর চেষ্টা করবেন স্বাভাবিক ভাবেই।বিরুদিদের মুখে নির্বাচনে দলীয় প্রভাবের কথা   উঠে আসছে। যেমন- স্থানীয় নির্বাচন দলীয় হলে তৃণমূলে রাজনৈতিক সহিংসতা বিস্তৃত হওয়ার শঙ্কা থাকবে,তৃনমুলে পেশিশক্তির প্রভাব, অর্থবিত্তের প্রভাব খাটিয়ে দলীয় নমিনেশন লাভ করা ও ভোট কেনাবেচার প্রবণতা স্থানীয় সরকার নির্বাচিনেও দেখা দিবে।  স্থানীয় পর্যায়ে ভালো লোক  কোনো দল করেন না, তাদের প্রার্থী হওয়া বা জেতার সুযোগ সিমীত হয়ে যাবে।
তাঁদের প্রতি সম্মান রেখেই বলতে চাই,রাস্তায় দেখা না গেলে,সমাজের কোন কাজে অংশ না নিলে,জনসেবা করার  মানষিকতা না থাকলে,জনগনের সুখে  দু:খ্যে অংশ না নিলে,সমাজে বিতর্কের ভয়ে সামাজিকতা না করলে তাঁরাই কি ভাল লোক?
শুধুমাত্র টাকার গৌরবে সমাজে পারিবারিক সম্মান বৃদ্ধির জন্য অকস্যাৎ নির্বাচনে এসে বাজিমাৎ করা যায়, সমাজের কোন কাজ করা যায়না।উন্নয়ন মুলক কোন কাজ তাঁর দ্বারা করা কোন অবস্থায়  সম্ভব হয় না ইহা  পরিক্ষীত ,বাস্তব,চিরন্তন সত্য।
  স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে হলে যে কোনো সমস্যার জন্য রাজনৈতিক দলগুলো দায়ী থাকবে। এতে কাজে সুবিধা হবে। যাই হোক, এ সংক্রান্ত আইনের সংশোধনী মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হওয়ার পর, ধরে নেয়াই স্বাভাবিক যে, বাকী প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। অর্থাৎ ভবিষ্যতে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় পরিচয়েই হবে।  পরিস্থিতির বিবেচনায় বিধানটি অসামঞ্জস্য মনে হলে ও সুদুর প্রসারী বাস্তবমুখি পদক্ষেপ নি:সন্দেহে বলা যায়। আমাদের চাওয়া হবে, বিরুদি দল সমুহের  স্থানীয় নির্বাচন সংক্রান্ত আইন ও বিধি প্রণয়নের ক্ষেত্রে  আশঙ্কার বিষয়গুলো সরকারের পক্ষ থেকে যেন আমলে নেয়া হয়। উল্লিখিত সব যুক্তি-তর্কের মোদ্দা কথা হলো, দলীয় ভিত্তিতে স্থানীয় নির্বাচনের সফলতা নির্ভর করবে অনেকটাই রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনে স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহন,সকল দলের দায়িত্বশীলতা, সর্বোপরি রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অংশ নিয়ে গনতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষায় মনোযোগি হওয়ার উপর।আমি বিশ্বাস করি ২//৩ টি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে রাজনৈতিক সংস্কৃতির ইতিবাচক পরিবর্তন সংগঠিত হবে।প্রথমে  নির্বাচন কমিশনের বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার প্রয়োজন হলেও অচিরেই জনগন সুফল পাওয়া শুরু হলে জনগন অভ্যেসগত ভাবে মেনে নিবে। স্থানীয় পর্যায়ে জনপ্রিয় ব্যক্তিরা যাতে সুযোগ পান সেদিকে উদ্বতন নেতাদের  নজর দিতে হবে। সরকারি দল ছাড়া ভিন্ন দলের প্রার্থীরা নির্বাচনে জীতে গেলে,জীতবেতো অবশ্যই, তারা যেন তাদের দায়িত্ব স্বাভাবিকভাবে পালন করতে পারেন, সেটা সরকারের প্রসাশন নিশ্চিত করতে হবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচন কেবল নির্বাচনের পদ্ধতিগত পরিবর্তন নয়, গুণগত পরিবর্তন প্রত্যাশা করে জনগন।সরকারের এই উদ্যোগের ফলে তৎক্ষনাৎ যে সুদুরপ্রসারী উপকার জনগন ও তৃনমুলের জ্ঞানী,ব্যক্তিত্ব সম্পর্ন্ন,জনদরদি সমাজ সেবক গন পাবেন তাঁর কিঞ্চিত বিবরন তুলে ধরতে চাই।

(১)সবচেয়ে বড় যে কাজটি হবে প্রার্থীদের ব্যয় অনেকাংশে কমে যাবে।দলীয় প্রার্থীর ভোট সংগ্রহ কর্মীদের বাধ্যবাধকতার কারনে,ভোট বেচা কেনার হিড়িক কমে আসবে।
(২) অতিশয় গরীব মেধাসম্পন্ন তৃনমুলের নেতাদের ভোটে অংশগ্রহনের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
(৩)দলীয় কাজে গতিশীলতা আসবে।মাঠের সক্রিয় নেতাদের নমিনেশন পাওয়ার সম্ভাবনা যত বাড়বে,দলীয় কাজে অংশ নেয়ার মাত্রা প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে  বেড়ে যাবে।
(৪) টাকার কুমিরদের ভোটে প্রভাব বিস্তারের সুযোগ কমে আসবে।সত্যিকারের সমাজ সেবকদের হাতে স্থানীয় সরকার পরিচালনার ক্ষমতা  ক্রমশই বৃদ্ধি পেতে থাকবে।
 সকল উদ্যোগের ভালমন্দ দিক থাকা স্বাভাবিক।কিছু ব্যতিক্রম হবেনা তা হলফ করে বলা যায় না।পদ্ধতিটি প্রাতিষ্ঠানীক রুপ পেলে জালিয়াতি অবশ্যই কমে যাবে।উদ্ধতন নেতাদের প্রথম দিকে নমিনেশন বেচাকেনার সুযোগ সৃষ্টি হলেও অচিরেই কর্মিদের প্রাথমিক নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা চালু হলে ঐ জাল জস্লিয়াতির সুযোগ অনেকাংশে কমে আসবে আশা করি।
  পরিশেষে বলতে চাই,গনতন্রকে সুদৃড ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করতে হলে,আর ও কতক ক্ষেত্রে জননেত্রীর সরকার কে সাহসী উদ্যোগ নেয়ার প্রয়োজন আছে।এই দেশের যত ইতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে,সকল কৃতিত্বই আওয়ামী লীগের।আওয়ামী লীগ যেহেতু স্বাধীনতার রুপকার,বাস্তবায়নকারী,তেমনি জনগনের কল্যানে, দেশের উন্নতির জন্য বড় ঝুকি নিয়ে হলেও কাজ করে যেতে হবে।জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে, মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে, তাঁর রক্তের ঋন শোধ করতে হবে।পুরাতন ঘুনেধরা সমাজের পরিবর্তন করে,জ্ঞান ভিত্তিক,আধুনিক,প্রযুক্তি নির্ভর সমাজ প্রতিষ্ঠা করে, ষড়যন্ত্র কারীদের সকল সমালোচনার উপযুক্ত জবাব দিতে হবে।
  পশ্চিমা গনতন্ত্রের ধারক বাহকদের উদ্দেশ্যে সবিনয়ে বলতে চাই,বহুদলীয় গনতন্ত্রের কথা মুখে বলতে শিখেছেন,কাজে পরিনত করেননি।ভোটের গনতন্ত্রে অন্য সকল গনতান্ত্রীক দেশে যেমন ভাবে, যেই সমস্ত স্তরে নির্বাচনের মাধ্যমে গনতন্ত্রের চর্চা অব্যাহত রেখেছেন,বর্তমান সরকার তাই অনুস্মরন করে বাস্তব পদক্ষেপ নিচ্ছেন।আপনারা যা পারেননি দেশরত্ম তাহাই সম্ভব করে দেশকে এগিয়ে নেয়ার প্রয়াস নিচ্ছেন।রাজনৈতিক বিরোধ থাকবে, থাকাটা স্বাভাবিক, গনতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় ভুল সংশোধনের জন্য বিরুদিদলের ছায়া মন্ত্রীসভার অস্তিত্ব থাকাটাও জনগন প্রত্যাশা করে,জনগনকে আপনারা তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।

সময় এসেছে, পরিবর্তনের সকল ইস্যুতে জনগনের প্রত্যাশা অনুযায়ী জাতীয় সকল কর্মকান্ডে জাতীয় ঐক্যমত্য প্রতিষ্ঠার।বিশেষ করে পরিবর্তনের জাতীয় ইস্যুগুলিতে জাতিয় দল সমুহের জাতিয় ঐক্য গড়ে তোলা নতুন প্রজর্ম্মের নতুন দাবী। জাতীয় ঐক্যে যে দল বা জোট যত দুরত্বে অবস্থান করবে,জনগন ও ঐ দল বা জোটের নিকট থেকে সমদুরত্বে অবস্থান নিতে থাকবে।যত শীগ্রই বোধদয় হবে, ততই জোট,দল,সরকার তথা জগনের মঙ্গল সাধিত হবে।


   "" জয়বাংলা  জয়বঙ্গবন্ধু
   জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা ""

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন