অর্জিত সাফল্যকে ধরে রাখার জন্য ঝোঁপ সদৃশ আগাছা পরিষ্কার করার এখনি উপযুক্ত সময়। >>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>><>>>>> সুন্দরের শেষ নেই,উন্নয়নের কমতি নেই,জঙ্গি দমনে অলসতা নেই। বাইরের চেহারা দেখে বুঝার উপায় নেই নীজ ঘর অগোছালো।আগোচালো ঘরে প্রয়োজনীয় দ্রব্য -প্রয়োজনের সময়ে খুঁজে পাওয়া যায়না।হাতের কাছের একান্ত প্রয়োজনীয় জিনিষ হারিয়ে যায়- আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সরকার পরিচালিত হচ্ছে; এই অবস্থায় আওয়ামী লীগের কোনো কর্মী যদি দলের বাইরে তাকিয়ে সরকারের কর্মকাণ্ড দেখে, তবে তার মনে প্রশান্তি সৃষ্টি হতে বাধ্য। কেননা বর্তমান সময়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে পরিচালিত সরকারের বাইরের সৌন্দয্য অকল্পনীয়,অদ্ভুদ,বর্ননাতীত। নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী শুধু নয় তাঁর বাইরেও এমন কাজ হচ্ছে বা চলছে, যে কাজের স্বপ্ন কখন ও কেউ কল্পনায় আনেনি।উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলছে।মন্ত্রী পরিষদে কোন গ্রুপিং নেই,দলে নামানা আনাড়ি কোন দলাদলি নেই।দেশ বিদেশের পত্রপত্রিকা লিখছে সরকারের উন্নয়ন অগ্রগতির প্রসংশা করে প্রত্যহ , মহাপরিকল্পনা নিয়ে রূপকল্প বাস্তবায়নে অগ্রসর হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।এত বড় বড় সব পরিকল্পনা-দেশী বিদেশী পরিকল্পনাবিদেরা ও তাজ্জব বনে যাওয়ার উপক্রম।আমাদের বিরুদী দল সমুহ অনেক আগেই দিক বিদিক হারিয়ে বক্তৃতা বিবৃতি দিতে শুরু করেছে।একবার বলে দেশে কোন উন্নয়ন কাজ হচ্ছে না,আরেক বার বলেন সরকার বড় বড় উন্নয়ন মুলক প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে শুধু লুটপাট করার জন্য।অর্থাৎ বিরুদিতার ধারাবাহিকতাই হারিয়ে পেলেছেন। উন্নয়ন অগ্রগতি-সংস্কার, অনেক পুরানো বিতর্কিত বিষয় সমুহ ঝুলন্ত চিকায় থেকে নামিয়ে মিমাংশা করার কাজ বলতে গেলে সমানে চলছে।সারা পৃথিবী অবাক বিস্ময় শুধু চেয়েই আছে,বিশ্ব সংস্থা সমুহ একের পর এক শুধু অনুন্নত দেশ সমুহকে উদাহরন দিয়েই যাচ্ছে একদা তলাবিহীন ঝুড়ি খ্যাত বাংলাদেশের অভাবনীয় উন্নতি আর অগ্রগতির। কোনটার কাজ অগ্রসর হচ্ছে, কোনটার পরিকল্পনা চূড়ান্ত, কোনোটার আবার পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ চলছে। দেশের ইতিহাসে আগে আর কখনো এত বড় বড় ও আধুনিক যুগ উপযুগি প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের কাজ হাতে নেয়া হয়নি,কোন সরকার সাহষ ও করেনি। প্রকল্পগুলোর কথা দেশের প্রত্যেক নাগরিকের কমবেশি সবার জানা। তবুও এখানে ১০টি মহাপ্রকল্পের উল্লেখ না করে পাচ্ছি না।উল্লেখ করতে হচ্ছে এই জন্যেযে, প্রচারের অভাবে অনেক কিছুই আউট অব সাইট থেকে আউট অব মাইন্ড হয়ে যায়।এমনিতে বাঙ্গালি মনভোলা প্রকৃতির।মিষ্টি মিষ্টি বচন শুনিয়ে কমপক্ষে দুইজন সেনা শাষক স্বৈরশাষন চালিয়ে গেছেন,একজন মরে বেঁচে গেছেন আরেকজন অর্ধমৃত হয়ে এখনও কোনমতে বেঁচে আছেন। নিম্নলিখিত কাজগুলোসহ অন্যান্য প্রকল্প তদারকির জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি মনিটরিং সেল খোলা হয়েছে। এক. পদ্মা সেতুর কাজ পরিকল্পনামতো অগ্রসর হচ্ছে। যে সব নিন্দুক বা হতাশাবাদী ভবিষ্যৎ বাণী করেছিল নিজস্ব অর্থায়নে এই সেতু নির্মাণ সম্ভব নয়, তাদের মুখে ছাই দিয়ে দেশের বৃহত্তম এই স্থাপনা ক্রমেই দৃশ্যমান হচ্ছে। সময়ের আগে ২০১৮ সালের মধ্যে স্বপ্নের এই সেতু ব্যবহার করা যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। দুই. ঢাকা ও চট্টগ্রামে বড় বড় উড়াল সেতু, যা ছিল এতদিন কথায় তা এখন বাস্তবায়িত হচ্ছে। একের পর এক ফ্লাইওভাবের পর শান্তিনগর-মালিবাগ-মগবাজার-ইস্কাটন, সাত রাস্তার মোড় জুরে বিশাল ফ্লাইওভারের নির্মাণকাজ অগ্রসর হচ্ছে। তিন. ঢাকায় মেট্রোরেলের কাজ শুরুর তৎপরতা প্রত্যক্ষ করে মানুষ আশান্বিত হয়ে উঠছে। ফ্লাইওভার ও মেট্রোরেল নির্মাণ শেষ হলে ঢাকার চেহারাই যাবে পাল্টে। চার. রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, যা ছিল ৬০ বছর আগের পরিকল্পনা, তা এখন বাস্তবায়নের দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছে। দেশ আনবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন যুগে প্রবেশের দিন গুনছে। তাছাড়া নির্মিত হচ্ছে দুটি বৃহৎ বিদ্যুৎ প্রকল্প। এই সঙ্গে আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে বিদ্যুৎ আমদানির মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা হচ্ছে। লোডশেডিং কথাটা যেখানে ছিল মানুষের অনবরত বুলি, তা এখন ক্রমে মঙ্গার মতোই অতীতের বিষয়ে পরিণত হচ্ছে। পাঁচ. গভীর সমুদ্রবন্দর তৈরির মাস্টারপ্লানের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দ্বিতীয় অগভীর সমুদ্রবন্দর, যা নির্মিত হবে পায়রায়। ছয়. কর্ণফুলীতে ট্যানেল নির্মাণ এখন আর দিবাস্বপ্ন নয়। সাত. কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর গড়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। আট. পাঁচটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। চট্টগ্রামের মিরশ্বরাই ও আনোয়ারা, মৌলভীবাজার ও বাগেরহাটের মংলায় চারটি বিদেশি অর্থায়নে এবং সিরাজগঞ্জে নিজস্ব অর্থায়নে সম্পন্ন করা হবে। নয়. পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগের জন্য কানেকটিভিটি ব্যবস্থা গড়ে তোলার মহাপরিকল্পনা ক্রমে বাস্তবায়িত হচ্ছে। দশ. সবচেয়ে সাড়া জাগানো প্রকল্প হচ্ছে মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট স্থাপন। ২০১৭ সালের মধ্যে যদি এটা স্থাপিত হয়, তবে মহাবিশ্বে যাবে বাংলাদেশ এবং টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায় পরনির্ভরতা যুগের অবসান হবে। উল্লিখিত দশটি কাজ দশ দিকে দশ হাতে যখন বাস্তবায়ন করার কর্মযজ্ঞ চলছে, তখন ক্রমেই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার রূপকল্প হাতের মুঠোয় এসে যাচ্ছে এবং সমুদ্রে বিজয়ের সুফল করায়ত্ত করতে ‘ব্রু ইকোনমি’ আর অন্য দিকে পার্শ¦বর্তী দেশগুলোর সঙ্গে যে সুসস্পর্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে একে পুঁজি করে আঞ্চলিক সহযোগিতাপূর্ণ অর্থনীতি দেশের উন্নয়নের স্বার্থে কিভাবে হাতের মুঠোয় আনা যায়, সেই পরিকল্পনা প্রণয়নের তৎপরতা চলছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, এই সব বড় বড় প্রকল্পসহ অন্যান্য প্রকল্প বাস্তবায়ন করে উন্নত এক বাংলাদেশ যদি গড়তে হয়, তবে সংবিধান অনুযায়ী রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অত্যাবশ্যক। এই সমস্ত কাজের তদারকির জন্য মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর দপ্তরে উচ্ছ পয্যায়ের এক তদারকি টিম দেশরত্মের দিকনির্দেশনায় কাজ করছে।দুর্মুখেরা এই কিমিটির জ্বালায় জ্বলে পুড়ে চারখার হয়ে যাচ্ছেন।এরা আবার আমাদের দলের মন্ত্রী,এম,পি ক্ষমতাধর সরকারি কর্মকর্তা।কি কারন,কারো কি বুঝতে বাকি আছে?বিরুদি দলের সাথে তাল মিলিয়ে এরাও বলতে চায় ক্ষমতাতো একজনের হাতে,আমরাতো শুধু নামে-----!!!! গ্রেনেডবাজি, বোমাবাজি ও আগুনবাজি প্রভৃতি জঙ্গিবাদী ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে খ্যাতি বানচাল করা যায়নি।তবে গতি মন্থর করতে পেরেছে নিসন্দেহে।ভবিষ্যতেও চরমম্পন্থি কর্মসুচি যদি চলতে থাকে, উল্লিখিত উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড কল্পনার ফানুস হয়ে উবে যাওয়ার আগেই সেই তৎপরতা বানচাল করে দেয়ার মনোবল সরকারের বিদ্যমান আছে,ইহাও কম আশার কথা নহে।বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের বিচারে বলা যায়, দেশে এখন উল্লিখিত সব প্রকল্প বাস্তবায়ন করার মতো রাজনৈতিক পারিবেশ বিরাজ করছে শতভাগ। হরতাল-অবরোধ যা ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী, তা এখন বিএনপি-জামায়াত জোটের চরম ভুল তথা সংবিধানবিরোধী-গণবিরোধী-দেশবিরুদি--সর্বশেষ তাদের দলের রাজনীতির জন্য বিরুদি হিসেবে চিন্থিত হয়েছে।ফলত; দেশবাসী আন্দোলন সংগ্রামের কর্মসুচি প্রত্যাক্ষানতো করছেই তাঁদেরকেও প্রত্যাক্ষান করেছে বলে অনুমেয়। বিএনপি এখন কার্যত সংবাদ মাধ্যমের দল। এতেও নেই স্বস্তি। নেত্রীর নামে বিবৃতি দিয়ে বিবৃতি প্রত্যাহার করে আবার সেই বিবৃতিই প্রচার করার মতো অবস্থা এখন বিএনপির। নেত্রী খালেদা জিয়া যা বলেন, তা অনেকটাই দাদা দাদুর সময়ের কলের গানের মতো চর্বিত চর্বন, মানুষের কথা সেখানে থাকে না। মানুষ তাই এ নিয়ে তেমন উচ্চবাচ্যও করে না। আর ‘লন্ডনের বড় ভাই’ একেবারেই নীরব হয়েঠান্ডা হিমেল হয়ে গেছেন। এত ইতিহাস যিনি জানেন কলেজ ইউনিভারসিটিতে লেখাপড়া করা ছাড়াই, এত ইতিহাস যিনি রচনা করলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসে বড় স্ক্রিনে অডিও-ভিডিও কনফারেন্স করে প্রতিনিয়ত নির্দেশ দিলেন, মানুষকে ঝলসিয়ে দিতে যিনি সালাউদ্দিন গংদের দিয়ে গোপন সংবাদ কেন্দ্র খুলে প্রতিদিন বিবৃতি দিয়ে হরতাল-অবরোধ চালু রাখলেন এবং সর্বোপরি যুদ্ধ জয়ের হুংকার দিলেন প্রতিনিয়ত, তিনি আজ নীরব অচেতন ঘুমের ঘোরে। নেত্রীর লন্ডন যাওয়া নিয়ে কতই না তোড়জোড় বিএনপির কিন্তু এখন তাঁরা আবার হতাশার সাগরে ডুবুডুবু।নেত্রী গেলেন কিন্তু ফিরে আসারতো কোন নাম নেই,তবে কি আসবেন না? গৃহযুদ্ধ বাঁধানোর পরিকল্পনা গ্রহণ ও কার্যকর করতে গিয়ে দল ও জোট এখন যেন নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন ও কর্মসূচি গ্রহণ তা বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াই ভুলে গেছে।একসময়ের অতিবাম ঘরনার আস্ত নাস্তিক তুখুড় বাগ্মি নেতারাও চুপষে গেছেন।ফুটা বেলুনের মত। বিএনপি সুকৌশলে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিকভাবে নীরবতা পালন করছে বলে একটা প্রচার রাজনৈতিক অঙ্গনে রয়েছে।অতি উৎফুল্ল্য কর্নেল অলী আহম্মদ নীজ থেকে না অন্যকোন কারনে স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষনা দিয়ে বসে আছেন বি,এন,পি সহকারে।মনে হয় যেন খালেদাকে সামান্য চাপে রাখা, নির্বাচন মুখি করে রাখার কৌশলের অংশ হিসেবেই এই ঘোষনা আগেভাগে দিয়ে রেখেছেন। যেন নির্বাচন না করে শেষ সম্ভল খালেদাকেও যদি হারায় তাহলে তাদের আর দেখারতো আপাতত কেউ নেই। বলাই বাহুল্য, ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত ও প্রতিহিংসা দিয়ে আপাদমস্তক মোড়া দল ও জোট খেই হারিয়ে ঘাপটি মেরে বসে থাকার কারণ যদি এটা হয়, অসংবিধানিক কিছু একটা করার নীলনক্সা করে তা বাস্তবায়ন করবে,তবে সেই পরিকল্পনাও ভেস্তে যাবে বলে আমার দৃড বিশ্বাস। পাপে নিমজ্জিত বিএনপি দল বা জোট হিসেবে নিয়মতান্ত্রিকভাবে কিছু করার মতো অবস্থা অনেক আগে হারিয়েছে।খালেদা জিয়া নীজে,দলের অন্যসব নেতারা,জোট,জোটের তল্পিবাহক নেতারা একক ভাবে- দলগত ভাবে,জোট গত ভাবে বিধ্বস্ত ও গণবিচ্ছিন্ন। মানুষ এখন উন্নয়ন চায়, নিশ্চিত জীবন-জীবিকার গ্যারান্টি চায়। এ কারণেই দেশবিরুদি অশুভশক্তি,তাঁদের বিদেশী প্রভু সকলকে একযোগে প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলার জনগন। বিএনপি-জামায়াত জোটের অবস্থা এবং জনগণের মনোভাব লক্ষ করে প্রথমেই বলেছি, আওয়ামী লীগ সুন্দর একটি পরিবেশ পেয়েছে দলটির নির্বাচনী অঙ্গীকার সময়মতো বাস্তবায়ন করে এটা প্রমাণ করার জন্য যে, মুক্তিযুদ্ধে যে দল নেতৃত্ব দিয়েছে, সেই দলই পারে জাতিকে অব্যাহত উন্নয়ন দিতে, জীবন-জীবিকার সুদূরপ্রসারী নিশ্চয়তা দিতে এবং সর্বোপরি উন্নত-সমৃদ্ধ-কল্যাণমুখী বাংলাদেশ গড়ে তুলতে। স্বাধীনতার পরে আর কখনো ক্ষমতায় থাকতে আওয়ামী লীগ বাইরে এমন পরিবেশ পায়নি। তবে এই পরিবেশ অর্জন করা সম্ভব হয়েছে; কারো ভুল বা দয়ায় নয়। জাতির অগ্রগতির পথে কলঙ্ক হিসেবে চেপে থাকা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও শাস্তি প্রদান, বর্তমান বিশ্বে উন্নয়নের প্রধান চাবিকাঠি প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বিশ্বাসযোগ্য পর্যায়ে আনা, বিএনপি-জামায়াতের যুদ্ধংদেহী অপতৎপরতা ঠেকানো, উগ্রজঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণ, দ্রব্যমূল্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা এবং সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করার সাফল্যের ভেতর দিয়ে পরিবেশ উন্নয়ন উপযোগী হয়েছে। স্বাধীনতার বিশেষত পঁচাত্তরের পর থেকে বিগত নির্বাচনের আগ পর্যন্তও চিন্তা করা যায়নি, এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। এক কথায় বলা যায়, এটা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে পরিচালিত জোট সরকারের কষ্টার্জিত অর্জন এবং সর্বোপরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি-প্রতিজ্ঞা-সাহস-কৌশলের সম্মিলিত যোগফল। সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মন্ত্রীত্ব নিয়ে উদ্ভূত সমস্যার সুন্দর ও যথাযথ সমাধান, ছাত্রলীগের সম্মেলনে ভোটের মাধ্যমে সমালোচনাহীন নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা, নতুন মন্ত্রী নিয়োগ, কেন্দ্রসহ জেলা ও তৃণমূলের সম্মেলন এবং সর্বোপরি জাতির পিতার জন্ম দিন পালন সম্পর্কে উদাত্ত ঘোষণা প্রভৃতি যখন কমবেশি এক সঙ্গে চলতে থাকে, তখন এমন একটা ধারণা সৃষ্টি হয়েছিল যে, এবারে ঘরের ভেতর থেকে আর ষড়যন্ত্র হবেনা। ধারনায় টিকে থাকা বেশিদিন গেলনা। প্রতিবারের মতোই আশা জাগিয়ে অথর্ব কিছু নেতা অযথা জাসদ বিতর্ক উত্থাপন করে সরকারের মধ্যেই বিভ্রান্তি চড়িয়ে দিলেন।সেখানে নেত্রীকেই শেষ পয্যন্ত হস্তক্ষেপ করতে হল।প্রবীন সাংবাদিক মুক্তিযোদ্ধা প্রবীর শিকদারকে গ্রেপ্তার করিয়ে রিমান্ডে দিয়ে দেয়াহল।সেখানেও নেত্রী নীজেই শেষ পয্যন্ত হস্তক্ষেপ করতে হল।নিম্নমানের খাদ্য আমদানি করে শেষ অবদি আদালতের নির্দেশনা পয্যন্ত গড়াতে হল।এমন এম,পি পেল দেশবাসি মদ্যপ অবস্থায় অথবা অহংকারের বসে গুলি করে শিশুর জীবনহানি ঘটাতে উদ্যত হলেন।ফেনীতে একপ্রভাব শালী এম,পি আরেক এম,পি কে হেস্তন্যস্ত করার জন্য ছাত্রলীগ -যুবলীগকে ব্যাবহার করতে গিয়ে ২৪/২৫ জন ছাত্র যুবক অস্ত্রনিয়ে র্যবের হাতে ধরা পড়ে দীর্ঘদিন জেলে পড়ে আছেন।মাদক ব্যাবসায়ী বদি কক্সবাজারের মুর্তিমান আতঙ্ক হয়ে জনগনের বিরক্তির কারন হয়ে ধরা দিলেন।ফেনীর জনপ্রিয় উপজেলা চেয়ারম্যান একরামকে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা করে আগুন দিয়ে মধ্যযুগীয়কায়দায় পুড়িয়ে ছাই করে ফেলা হল।কোনকোন এলাকার এম,পিরা জামায়াত নেতাদের ফুলের মালা পড়িয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করাচ্ছেন।তাঁরা নীজেরাই জানেন না, আওয়ামী লীগের শক্তির উৎস কোথায়।হীনমন্যতার কারনে তাঁরা দলের মধ্যে সাঁপের বাসা করার জন্য উদ্যত হচ্ছেন। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দলের ‘আগাছা’ উপড়ে ফেলে আওয়ামী লীগ ও ছাত্র লীগকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলবেন।স্বনামধন্য মাননীয় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও ফেনীর এক সভায় বলেছেন,নষ্ট নেতাদের তালিকা হচ্ছে,অচিরেই তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহন করবেন। এতটুকু জেনে উৎসাহিত আশাম্বিত হয়েছিলাম,আশাম্বিত হয়েছিল আমার মত আরো অনেকে,যারা জীবনের সবকিছুত্যাগ করে এখন অর্থনৈতিক ভাবে পঙ্গুত্ববরন করে লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে গেছে। তারপর প্রধানমন্ত্রী আর একটা নতুন শব্দ উচ্ছারন করে বলেছিলেন, ‘পরাজিত শক্তির দোসর ও চাটুকাররা এখনো কিছু আছে।’ দোসর ও চাটুকারদের সম্পর্কে এমন কথা কানে নতুন করে বেজে উঠেছিল এবং আরো উৎসাহিত হয়ে উঠেছিলাম। দোসর ও চাটুকারদের বঙ্গবন্ধু এক কথায় বলেছিলেন"চাঁটার দল।"সেই বিখ্যাত উক্তি সত্য বচনে বঙ্গবন্ধুর সাহষের জন্য বাঙ্গালীর গর্বের উক্তি না হয়ে, ভেঁতু বাঙ্গালীদের নিকট উপহাসের উক্তি হিসেবে তুলে ধরেছিল একদা ষড়যন্ত্র কারীরা।তা আবার তাঁর কন্যার মুখে দ্বিতীয়বার শুনা গেল। পিতার উদ্ধৃতি দিয়ে কন্যা আরো বলছেন, ‘জাতির পিতা বলতেন, ‘বাংলাদেশের মাটি উর্বর। এখানে চারা ফেলতেই যেমন গাছ হয়, তেমনি আগাছাও হয়। অনেক সময় আগাছা প্রকৃত গাছকেই খেয়ে ফেলে।’ জানা এই কালজয়ী উক্তিটি পড়ার পর মনে হয়েছিল, দেশের সবচেয়ে পুরনো ঐতিহ্যবাহী বড় সংগঠন ছাত্রলীগে ভাল ও মেধাবী ছাত্র বেশি, না খারাপ বেশি। নিঃসন্দেহে ভালো অগণিত অসংখ্য। তারা দলের কাছে নীজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য বা আত্মিয় স্বজনের স্বার্থের জন্য আসে না। বঙ্গবন্ধু ও শত লক্ষ শহীদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য দলে নীরবে কাজ করে। দলকে তারা প্রাণের চাইতেও ভালোবাসে। এরা মঞ্চে ওঠে না, দুষ্কর্ম করে না কিন্তু দলের জন্য নিজ অবস্থান ও অবস্থা থেকে যতটুকু পারে, ঠিক ততটুকু করে। এদেরই কিন্তু আগাছা দলের প্রান্তস্থিত স্থানে ঠেলে দেয়। একটু খেয়াল করলেই এটা দেখা যাবে, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের এবং শেখ হাসিনার কর্মসূচি বাস্তবায়ন উর্বর মাটিতে যে তরুণটি প্রকৃত গাছ হিসেবে গড়ে ওঠার প্রতিজ্ঞা নিয়ে ছাত্রলীগে সক্রিয় হচ্ছে; সেই সোনার ছেলেটিই এক সময় আগাছা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। ফলে বাস্তব ক্ষেত্রে আগাছারা নিজেদের শক্তিকে ক্রমেই একচ্ছত্র করে নিতে সক্ষম হচ্ছে। যে দলের মরুব্বি সংগঠনের শীর্ষ পদে প্রতি জেলা উপজেলায় মাস্তানের অবস্থান পাক্কা থাকে সেখানে কোন মেধাবি ছাত্র নেতা-- সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ না হয়ে পারে না। অনেকে বলতে শুনী আমাদের এলাকায় রাজাকারের ঘাটি।আমরা ভোটে জীততে পারি না।খোদ মাননীয় প্রধান মন্ত্রী নীজেও আমাদের এলাকা নিয়ে সন্তুষ্ট নন।বহুবারই তাঁর মুখ থেকে বিরক্তির বহিপ্রকাশ ঘটতে দেখা গেছে।কিভাবে আমার এলাকায় আওয়ামী লীগ ভাল ফলাফল করবে?মানুষ কেন আওয়ামী লীগকে ভোট দিবে? জননেতা খাজা আহম্মদ সাহেবের মৃত্যুর পর এখানে কি আওয়ামী লীগে সৎ, বিচক্ষন, জনসম্পৃত্ত নেতার আবির্ভাব ঘটেছে?ভাল কোন মানুষ এই জেলায় রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে?আওয়ামী লীগ কি কাউকে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছে?এটা এমন একটি জেলা,যে জেলায় ভাল লোকেরা অপদস্ত হয়ে রাজনীতি ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়।কি করে মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দিবে,কেন দিবে--যাঁরা ছিল তাঁরা লুটেরা,যাঁরা আছে তাঁরা লুটেরা,আসবে যাঁরা তাঁরা লুটেরা, নেপথ্যে যাঁরা কলকাঠি নাড়াচাড়া করে তাঁরা আর ও বড় লুটেরা।যে কয়জন ভাল লোক আছেন- মুজিব আদর্শকে ধারন করেন বিদায় দলে কোনরকমে হাজিরা দিয়ে মানসম্মান বাঁচিয়ে রাজনীতি করার অভ্যেস জিইয়ে রেখেছেন। যা ভাবি তা বলতে ভালোবাসি।মনচায় সত্য বলতে বলে বলি, এই বলার জন্য জীবনে বহু খেসারত দিতে হয়েছে,তারপর ও আমার লাজ হয়নি,সম্বিত ফেরেনি। আর কত ইজ্জত গেলে,আর কত বিঘা জমি হারালে,আর কতবার পদের উত্থানপতন হলে সম্বিত ফিরবে তাও আমি জানিনা। আগাছা মুখের কথায় উঠবে না, আশু কিছু ব্যবস্থা নিলেও হবে না। অতীতে একটা স্বতঃসিদ্ধের মতো কথা ছিল, ভালো ছাত্ররা রাজনীতি যেমন করে, তেমনি ভালো ফল করে, তেমনি ভালো চাকরি পায়। দেশকে,দলকে রাজনীতিকে দেয়ার জন্য দলে যুক্ত হতেন।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক নেতাই হয় ভাল জননন্দিত নেতা হয়েছেন নয়তো সি,এস,পি অফিসার হয়েছেন।এই ধারা মনে হয় মাননীয় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পয্যন্ত বহাল ছিল। আগে গুনা হত কোন ছাত্র সংগঠনের কতজন রাজনীতি করা ছাত্র সিএসপি হয়েছেন, শিক্ষক-ইঞ্জিনিয়ার-ডাক্তার হয়েছেন। ছাত্র সংসদে নমিনেশন দেয়া হতো ভালো ছাত্রদের। ছাত্র সংগঠনগুলোতে ছিল মোটিভেশন ও প্রশিক্ষণ, কর্মিসভা। গল্প,উপন্যাস,ভ্রমন কাহিনী,পত্রিকা, রাজনৈতিক বই পড়া ছিল ছাত্র রাজনীতি যারা করতেন তাদের অভ্যাসের অঙ্গ। রাজনীতি করতে টাকা লাগবে, তখন আলোচনায় ছিল না। ১৯৭১-এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নমিনেশনে বা জনগণের ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে কি টাকা প্রধান বিবেচনার মধ্যে ছিল? যদি থাকত তবে কনভেশন মুসলিম লীগের টাকাওয়ালা প্রার্থীদের পরাজিত করা সম্ভব হতো না। প্রসঙ্গত, বিরোধী দলে থাকাকালিন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী রাজনৈতিক মোটিবেশনের জন্য প্রশিক্ষনের ব্যাবস্থা করেছিলেন। বেশ উপুকৃত হয়েছিল ছাত্র লীগের কর্মিরা।তখন ছাত্রনেতাদেরও রাজনীতি সম্পর্কে জানার আগ্রহ দেখেছি। ক্লাসের পর নিবৃত্তে বসে আগামীকালের প্রস্তুতি নিতে দেখেছি। ঘরে গিয়ে মা বাবার সাথে বড়াই করে বলতে শুনেছি,আমার রাজনৈতিক ক্লাস আছে,তাড়াতাড়ি খাওয়ার দাও, যেতে হবে সময় মত।এখন অবারীত সুযোগ থাকার পর ও সেই ব্যাবস্থা নাই কেন জানিনা।নেত্রী কি ধরেই নিয়েছেন এই সময়ের ছাত্র নেতাদের দিয়ে কিছুই হবে না? একদিক থেকে এই কথাগুলো বললাম ঠিকই কিন্তু বিষয়টা সার্বিক চিন্তা-ভাবনার মধ্যে এনে দেশের ঐতিহ্যবাহী দল আওয়ামী লীগে যেন যথাসম্ভব আগাছা না জন্মে সেই সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। সঙ্গে রাখতে হবে অবিচ্ছিন্ন আগাছা পরিষ্কার করার অক্ষয়ী ইস্পাতসম নিড়ানী। রাজনীতিতে যদি থাকে অর্থ, অস্ত্র আর পেশি শক্তির দুর্বৃত্তায়ন, তবে আগাছার চেইন একবার প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেলে আগাছা পরিষ্কার করা খুব একটা সোজা ব্যাপার থাকেনা।৭৫ এর পরবর্তি সরকার সমুহের ভোট কেন্দ্র দখলের সংষ্কৃতি কি এখন ও ভোটের বাজার থেকে তাড়ানো সম্ভব হয়েছে? প্রসঙ্গত বলি বন্দুকযুদ্ধ কোনো সমাধান নয়,হতে পারেনা। বরং এতে দল ও সরকারের মধ্যে ব্যবধান বাড়ে। যেমনটি বেড়েছে ৭৪পরবর্তিতে সর্বভারতীয় দল কংগ্রেসে। তাছাড়া পর পর বন্দুক যুদ্ধের ঘটনার পর,মানুষ মনে করছিল আওয়ামী লীগও মনে করেছিল সন্ত্রাস দমনে সরকারের সদিচ্ছার একটা মেসেজ তৃণমূলে যাবে, ঘটে যাওয়া শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরো দুই একটি ঘটনার পর দেখা গেলো এটা মেসেজ হিসেবে তৃনমুলে তেমন কোন ইতিবাচক সাড়া দিতে সক্ষম হয়নি। সংসদ সদস্য বদির মতো যত্রতত্র চড়-থাপ্পড়,মোশারফের মত ভুমি খেকোদের দৌরাত্ব কমানো যাবে কিভাবে? পঁচাত্তরের পর জাসদ ও সেনাপ্রধানের ভূমিকা নিয়ে অযথা বিতর্কইবা ঠেকানো যাবে কিভাবে? প্রসঙ্গত, অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিতে ইতিহাস নিয়ে রাজনৈতিক আলোচনা এক কথা- আর দায়িত্বশীল নেতাদের ঐক্য বা জোটে থাকা কোনো দল বা ব্যক্তিকে নিয়ে রাজনীতির মাঠে কথা তুলে কর্মী-সমর্থকদের বিভ্রান্ত করা ভিন্ন কথা। ফরিদপুর বা পঞ্চগড়ের সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি নিয়ে এবং প্রবীর সিকদারের গ্রেপ্তার নিয়ে যা হলো; তা হয়তো ফরিদপুরের বাড়ির মালিকের কথার পর চাপা পড়ে গেছে ঠিকই কিন্তু তাতে কথা কি কমবে? নাকি বদনামের সিকি অংশ কমেছে?শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিজের স্বার্থের সঙ্গে ছাত্রদের যুক্ত করে যে তান্ডব করেছেন, তাতে গ্রেপ্তার-বহিষ্কার কিংবা ভিসিকে সরানো যাই হোক না কেন, তাতে বলাবলি থামবে না বদনাম কমবে বা কমেছে?ব্যাক্তির ক্ষত শুকায়না রাজনৈতিক দলের কিভাবে শুকাবে। রাজনীতিক দলে ক্ষত একবার হলে তা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া খুব সোজা নয়। বাসন্তীর মিথ্যা প্রচার এখন পর্যন্ত বহু মানুষ বিশ্বাস করে, আর চোখের সামনে দেখা ঘটনার দাগ কি এত সহজে মোছা সম্ভব হবে?রক্ষীবাহিনীতে ভারতীয় যুবকেরা,এই অপপ্রচার কি এখনও করে তাঁরা মানুষকে বিশ্বাস করাচ্ছেনা, না মানুষ বিশ্বাস করেনা?আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে এই দেশ ভারতকে দিয়ে দিবে,এই সেদিনও কি তাঁরা অপপ্রচার করেনি?মানুষ কি বিশ্বাস করেনি? সবচেয়ে বড় কথা হলো, এসব যদি হতে থাকে, তবে সরকারের বড় বড় কাজ জনগণকে দেখানোর আগে ভানের জলে ভেসে যাবে। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর সরকারের সময়ে এত ভাঙা পুল-কালভার্ট মেরামত হলো, শত-লক্ষ শরণার্থীর পুনর্বাসন হলো এবং ধ্বংসপ্রাপ্ত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার কাজ হলো।যুদ্ধবিধ্বস্থ একটা দেশকে পুনগঠন করা হল- সেটা মানুষ কি মনে রেখেছে?বঙ্গবন্ধুর মুখের কথা চাটার দলকে ঠিকই মনে রেখেছ। এমনিতেই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে জনগনের প্রত্যাশার ব্যারোমিটার কয়েক গুন বেড়ে যায়।শুধু বাংলাদেশের জনগন নয়,গোটা দক্ষিন এশিয়ার প্রত্যাশা কয়েক গুন বেড়ে যায়।তাছাড়া ক্ষমতাসীন দলের সমালোচনা এমনিতে বাড়ে,বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে সমর্থন কমতে দেখা যায়।শেখ হাসিনার দুরদর্শি নেতৃত্বে সমর্থন প্রায় দ্বিগুনের কাছাকাছি বেড়েছে সত্য,লাগাতার ক্ষতের কারনে সেই বাড়তি সমর্থন কাজে লাগানো যাবে কিনা তাতে সন্দেহ রয়েছে প্রায় সমানে সমান। সর্বোপরি রয়েছে, পবিত্র ধর্ম নিয়ে অপপ্রচার ও মিথ্যাপ্রচার। চলছে নানা ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত।হেফাজতিদের খেয়াল ছিল ধর্মদ্রোহিতার তিলক পরিয়ে আজীবনের জন্য আওয়ামী লীগকে ক্ষমতার কেন্দ্র থেকে দূরে রাখা।সেই প্রচেষ্টার কমতি এখনও কমেছে বলে প্রতিয়মান হয়না। স্বপ্নের সেতু পদ্মা নিয়ে কথা বলার চাইতে প্রবীর সিকদার নিয়ে ফরিদপুরের মানুষ কথা বলবে বেশি। বিদ্যুতের সাফল্যের চাইতে শাহজালালের ভিসি নিয়ে মাতামাতি হবে আরো দ্বিগুন। বঙ্গবন্ধু সেটেলাইটের সাফল্যের খবর-দখল,দুবৃত্তায়নের খবরের নিকট পরাজিত হবে।সরকারি কাজের চাইতেও মানুষ বিচার করে দলীয় কর্মকাণ্ডকে।আমাদের মধ্যে এখনও বহু নেতাই আছেন সরকার আর দলের মধ্যে পার্থক্য কি তাহা বুঝেননা। দলীয় নেতাকর্মীদের হাবভাব দেখেই মানুষ দলকে ভোট দেয়।শোক দিবসে যখন প্রচার হলো বঙ্গবন্ধুর ছবির সঙ্গে কারো ছবি প্রচার করা যাবে না, তখন আরো বেশি করে বড় ছবি ও নাম দিয়ে বিলবোর্ড আর রাস্তায় রাস্তায় তোরন নির্মান করা হয়েছে। সময় আসলে দ্রুত বেগে চলে যাচ্ছে। পুঞ্জিভূত ক্ষোভের ভার খুব বেশি হয়ে যাচ্ছে দিনে দিনে। বড় বড় সব অনভিপ্রেত ঘটনা পার হয়ে যাচ্ছে ঠিকই কিন্তু এক সময় ছোট ঘটনায় বড় কোনো ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। দেশবাসী বিশেষত মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের মূলধারার রাজনীতির মানুষ এমনটা একেবারেই চায় না।এই ধারার মানুষ সারা বাংলাদেশ তন্নতন্ন করে খুঁজে একজন মানুষ ও পাওয়া যাবে না,যে নাকি সুযোগ থাকা সর্তেও লুটপাট,দখলবাজি,চাঁদাবাজিতে জড়িত আছেন।তারা মনের গহিন থেকেই চায় না পেন্ডুলামের মতো আশা-নিরাশায় দুলতে,ক্ষনিকের টেনশান তাঁদের মনের আঙ্গিনায় ঠাঁই পেতে।তাঁরা চায় দল হয়ে উঠুক সরকারের উন্নয়ন ও অগ্রগতির সহায়ক।অবারিত সুযোগ কাজে লাগিয়ে জনগনের প্রত্যাশা পুরনের বাহন,উন্নয়ন অগ্রগতির পরিপূরক।গড়ে তুলুক দেশরত্ম তাঁর পিতার, বাঙ্গালী জাতির জনক, সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী, বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা।কাংখিত লক্ষ অর্জনের পথের কাঁটা ইতিমধ্যে ঝোঁপের মত দৃশ্যমান আগাছা মুল গাছকে ঢেকে রেখেছে।এই দৃশ্যমান আগাছাকে সমুলে উৎপাটন করার এখনি সময়,ভবিষ্যতের ইস্পাতসম নিড়ানী তুলে রাখতে হবে সযত্নে,বর্ষা এলে জোয়ারের পানির সাথে আগাছা এসে পানির গতি পথ বদলাবার আগেই যাতে পরিস্কার করা যায় অতিথি আগাছা।সময়মত আগাছা পরিষ্কারের গাফলতির কারনে সকল উন্নয়ন অগ্রগতি,সাফল্যকে ছায়ার মত ঢেকে দিতে সময় একেবারেই নিবেনা। জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা

সরকারের পর্বতসম সাফল্যকে জনসমক্ষে নিয়ে আসার জন্য পরিকল্পিত প্রচারের পাশাপাশি,নেতিবাচক ধারনার সৃষ্টির হোতাদের চিন্থিত করে,দলে নিস্ক্রিয় করে দিতে হবে।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন