রাজনীতি থেকে ব্যাবসায়ি,সেনা কর্মকর্তা,তথাকথিত সুশিলদের হঠানোর এখনি মোক্ষম সুযোগ =============================== মহান মুক্তিযুদ্ধের পর ক্রমস অসাধু কালোটাকার মালিক,সেনা কর্মকর্তা,দেশি বিদেশী এন,জি,ওর স্বত্বাধিকারী একশ্রেনীর সুশীলের রাজনীতিতে আর্বিভাব ঘটে।তাঁরা বিভিন্ন দলে অনুপ্রবেশ করে প্রকৃত রাজনীতিক,যুবসমাজ,দেশ বাসির একদা অহংকারের ছাত্রসমাজকে বিভ্রান্ত করে অবৈধ টাকার বিনিময়ে পথভ্রষ্ট করে দলের অভ্যন্তরে এবং জনমনে প্রভাব প্রতিপত্তি সৃষ্টি করে নীজেদের আখের গোচানোর কাজে মনোনিবেশ শুরু করে।দিনে দিনে আজ তা মহিরুহ আকার ধারন করে গোটা রাজনৈতিক ব্যাবস্থাকে গ্রাস করেছে।মেধাবী ছাত্রদের হাতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্থ তুলে দিয়ে অবৈধ পথে খরছ করার পথ সৃষ্টিতে সহায়ক ভুমিকা পালন করা শুরু করে প্রথমত সেনা কর্মকর্তারা,তার পরেই অবস্থান করে ব্যাবসায়ি নেতারা।সারা দেশের যুব সমাজ তাঁদের হীন উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়ন করতে গিয়ে আজ নেশার জগতে হাবুডুবো খাচ্ছে।তাঁরা না লাগছে দেশের সৃজনশীল কাজে, না লাগছে পরিবারের অভাব মোচনের কোন কাজে।নেশাকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে করতে হচ্ছে ছিনতাই,ডাকাতি,রাহাজানির মত অসামাজিক কাজ। সমাজে দেখা দিচ্ছে ক্ষনে ক্ষনে অস্থিরতা।ইয়াবা ব্যাবসায়ী, স্বর্ন চোরাচালান,সেনাশাষনের সময় দুর্নীতি,ঘোষের টাকার মালিক সেনা কর্মকর্তাদের ছেলে মেয়েদের সাথে ফ্যাশনের প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে ভদ্র সুশীল ঘরের ছেলে মেয়েরা চলে যাচ্ছে বিপদগামীতার পথে।অবৈধ টাকার মালিকেরা সারা দেশকে প্রতিটি ক্ষেত্রে সৃষ্টি করছে ভয়াবহ, মারাত্বক পরিস্থিতি।দেশের প্রতিটি নাগরিক কমবেশি ভুগছেন কন না কোন ভাবে। অনেকের উপলব্ধি ও মনের কথা বলেছেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। দুঃখ করে বলেছেন, রাজনীতি এখন ব্যবসায়ীদের পকেটে চলে গেছে। এমন তিক্ত কথা কিশোরগঞ্জের এই মিঠা মানুষটি বলেছেন একেবারে প্রকাশ্যে। অষ্টগ্রাম পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এক নাগরিক সমাবেশে ভাষণে রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন। আবদুল হামিদ বলেন, সততা বজায় না রাখলে একজন রাজনীতিবিদ কিছুই করতে সক্ষম হবেন না। কেউ অর্থ-বিত্ত করতে চাইলে তাদের জন্য অনেক উপায় আছে। তাদের রাজনীতিতে আসা উচিত নয়। বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘদিনের সহচর হাওরবাসীর এই জনপ্রতিনিধি দাবি করেন তার রাজনীতি মানুষের কল্যাণে। সরকারি কাজ থেকে কোনদিন অবৈধভাবে একটি লাল পয়সাও পকেটে নেননি বলে সাহসী উচ্চারণও করেন রাষ্ট্রপতি। রাজনীতির লক্ষ্য-উদ্দেশ্য একমাত্র জনগণ। আর সেটা পূরণ হয় রাজনীতিকদের মাধ্যমে। কোন রাজনীতিক দেশ ও জাতির কল্যাণের বদলে দল বা ব্যক্তিস্বার্থে কাজ করলে তাকে রাজনীতিক বলা যায় না। বলতে হবে রাজনীতি নামের ব্যবসা। শুধু ব্যবসায়ীরাই রাজনীতির এ বাণিজ্য করছেন না। চাঁদাবাজ, বিত্তশালী, প্রভাবশালীরা নিজ স্বার্থকে আরও প্রতিষ্ঠিত করতে রাজনীতিতে ভিড়ছেন। অল্প সময়ে অবস্থানও তৈরি করে নিচ্ছেন। এদের দুর্বৃত্তায়নে রাজনীতিকরা নাস্তানাবুদ হচ্ছেন। এ ধারা দেশকে কোথায় নেবে সেই দুর্ভাবনা বিবেকবানদের প্রতিনিয়ত তাড়া করছে। রাষ্ট্রপতির কণ্ঠে প্রতিফলিত হয়েছে সেরকম তাড়নাই। খোলা চোখে তাকালে আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতির এই কয়টি বাক্যের মধ্যে গুড় তাৎপয্য আছে।তিক্ত অভিজ্ঞতা না হলে এমন সত্য কথাটি রাষ্ট্রপতির মুখ থেকে বের হত না।নির্বাচনে লক্ষ লক্ষ টাকার চড়াচড়ি মুলত এই সমস্ত ব্যবসায়ী নেতাদের কারনেই উদ্ভব হয়েছে।তাঁরা অজস্র টাকা পয়সা খরছ করে দলের মধ্যে প্রভাব বলয় সৃষ্টি করতে গিয়েই কর্মিদের নষ্ট করেছে।অর্থলোভী জেলা উপজেলা এবং কি কেন্দ্রীয় নেতারাও তাঁদের অর্থের নিকট নতজানু হতে দেখা গেছে।ব্যাবসায়ীরা রাজনীতিকে ব্যাবসার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার কারনেই রাজনীতিতে দুর্নীতির অনুপ্রবেশ ঘটেছে।আগে কখন ও এমনটি হত না। সময়ের ব্যবধানে রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্যরকম বিকেন্দ্রীকরণ হয়েছে। দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে এখন ছড়িয়ে পড়েছে রাজনীতি। এমন প্রতিষ্ঠান খুব কম রয়েছে যেখানে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে রাজনৈতিক ব্যাক্তি বিশেষের সংশ্লিষ্টতা না আছে। রাজনৈতিক ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতা থাকার অর্থই হচ্ছে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটানোর প্রবনতার অঘোষিত মহড়া। তাই ব্যক্তিগত বা প্রাতিষ্ঠানিক- সামাজিক সমৃদ্ধিতে রাজনৈতিক পরশ নেয়ার একটি প্রবণতা সমাজে সাদা চোখেই দেখা যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এ প্রবণতার ভালো-মন্দ অবশ্যই আলোচনা হতে পারে। আশার কথা হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা বা রাজনীতিতে সম্পৃত্ত থাকার প্রবনতা আগের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশী নির্দ্ধিদায় বলা যায়।রাজনীতি সচেতন ব্যাক্তির কর্মক্ষমতা তুলনা মুলক অন্য নিরেপেক্ষ ব্যাক্তির তুলনায় বেশি থাকবে বলার অপেক্ষা রাখে না।প্রত্যেক সামাজিক প্রতিষ্ঠান,স্কুল কলেজ এবং কি পাড়া মহল্লার ক্লাব গুলিতেও জাত রাজনৈতিক এবং সদ্য ব্যাবসায়ী নেতার মধ্যে পার্টিশান সহজেই অনুমায়িত হচ্ছে।ব্যাবসায়ীর টাকার কাছে নিবেদিত রাজনৈতিক নেতাটি গো হারা হেরে লেজ গুটিয়ে বাড়ীতে আশ্রয় নেয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকছেনা।আমি কোন মতেই ব্যাবসায়ীদের রাজনীতির বিপক্ষে নই।আমি বিপক্ষে টাকায় উঠতি যুবক,সমাজের চরিত্রবান ছেলেটির চরিত্র হননের বিপক্ষে।অতিরিক্ত টাকার কারনে আমাদের যুব সমাজ দিনে দিনে নেশার কবলে ডুবে যাচ্ছে আমি তাঁর বিপক্ষে।ব্যবসায়ী বা অন্য কারো রাজনীতি করতে বাধা নাই।কিন্তু বলয় সৃষ্টির নেশায় ছাত্রদের ব্যাবহার করতে গিয়ে প্রয়োজনের অতিরিক্ত টাকা তুলে দিয়ে তাঁদের কোথায় নিয়ে যাচ্ছে তাঁরা। আবার রাজনীতিকদের ব্যবসা করায়ও কোন বাধা নেই। কিন্তু রাজনীতিতে জেঁকে বসা ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্য কি দেশ ও জনগণের কল্যাণ, না রাজনৈতিক প্রভাব-প্রতিপত্তি ও ক্ষমতাকে ব্যবহার করে নিজের ব্যবসা বিস্তার। এটি গুরুতর প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। পাল্টা প্রশ্নও রয়েছে। ব্যবসার জন্য রাজনীতি, আবার রাজনীতির জন্য ব্যবসা এ দু"য়ের কোনটাই দেশের জন্য মঙ্গল হতে পারে না,ফলের জন্যতো নহেই। ব্যবসায়ীর চিন্তায় লাইসেন্স সংগ্রহ, জমি পাওয়া, ভবন নির্মাণ, বিদ্যুৎ-পানি-গ্যাস সংযোগ এবং নিরাপত্তার আয়োজন প্রতিটি ক্ষেত্রেই কমবেশি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রচলিত আইন ও নিয়ম লঙ্গন করে বিল প্রদান থেকে শুরু করে কর ফাঁকি সর্বক্ষেত্রে লাভের অংক কষা। বিভিন্ন পর্যায়ের এ কাজগুলো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলে সহজ হয়ে যায়। আরও অনেক দেশের মতো বাংলাদেশের রাজনীতির এই বাস্তবতা অস্বীকার করা হবে সত্যকে চাপা রাখার অপচেষ্টা। এখানে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর তহবিলের প্রধান উৎস ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের অনেকের অর্থ উপার্জন স্বচ্ছ নয়। আবার কোন ব্যবসায়ী রাজনৈতিক দলকে কত অর্থ দিচ্ছেন এবং তা কিভাবে ব্যয় হচ্ছে সেটাও স্বচ্ছ নয়।ব্যাবসায়ী দিচ্ছেন তাঁর ব্যাবসার উদ্দেশ্যে দলগুলী নিচ্ছে দল পরিচালনার জন্য।সঙ্গতভাবে দুপক্ষই একে অপরের স্বার্থ বিবেচনা করবে,এতে জনগনের কি উপকার হবে তাও ভাবনার বিষয়।জনগনের তথা দেশের যে অপুরনীয় ক্ষতি সাধিত হচ্ছে রাষ্ট্রপতি উপলব্দি করতে পেরেছেন বিধায় সত্য কথাটি অকপটে বলতে পেরেছেন। বলার অপেক্ষা রাখে না, মহামান্য রাষ্ট্রপতির প্রত্যাশা, তার মতো নির্মোহ, সৎ রাজনীতিকরাই রাজনীতি করুক। দেশ পরিচালনা করুক। এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের সঙ্গে কেউ দ্বিমত করেছেন বলে জানা যায়নি। আবার তার এ বক্তব্য ও প্রত্যাশা সাধুবাদ জানিয়ে কেউ বা কোন মহল সামনেও আসেনি। বরং আড়ালে-আবডালে অন্যরকম আলোচনা রয়েছে চুপিসারে, নিঃশব্দে। ব্যবসায়ী পক্ষের অনেকেরই কথা হচ্ছে- বর্তমান যুগটাই ব্যবসা ও ব্যবসায়ীদের। কোন কিছুই ব্যবসা বা ব্যবসায়ীমুক্ত নয়। কে ব্যবসায়ী আর কে নয়, সেটা উত্থাপন করা অমুলক। আমাদের দেশে সামাজিক ব্যবসার পক্ষে অনেকেই। শিক্ষা নিয়ে,স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে এবং কি ফেইজ বুক নিয়েও ব্যবসা চলছে। বাইরের দুনিয়ায় তা আরও ব্যাপক। বিল গেটস-মার্ক জাকারবার্গ তথ্য-প্রযুক্তি ও প্রযুক্তি পণ্য ব্যবসায়ী, তালেবান-আইএসসহ জঙ্গিরা ধর্মব্যবসায়ী, আইসিসি-ফিফা হলো ক্রীড়া ব্যবসায়ী, হলিউড-বলিউড হলো সংস্কৃতি ও ফ্যাশন ব্যবসায়ী। বিভিন্ন দাতাসংস্থা লগ্নি করে টাকা-- বলে উন্নয়ন সহযোগি অর্থাৎ উন্নয়ন ব্যবসায়ী। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান গুলিও নানা ভাবে ব্যবসা করার ধান্ধায় আছে।এত বেসরকারি মানবধিকার সংস্থা কাজের টাকার যোগান আসে কোত্থেকে? সেই ধারায় রাজনীতিও ব্যবসার কাতারে চলে যাবে তাতে আমি বিচলিত নই মোটেই। ব্যবসায়ীদের রাজনীতি বা রাজনীতিকদের ব্যবসা করাকে নিরুৎসাহিত করা তত সহজ বিষয় নয় কোন দলের পক্ষেই। তবে, নিয়ন্ত্রন করা যে দরকার তা পোড় খাওয়া মানুষটি ঠিকই আঁচ করতে পেরেছেন।ভারতে টাটা, আম্বানির মতো বিভিন্ন গ্রুপ বা প্রতিষ্ঠানগুলো রাজনীতিতে আমাদের দেশের মতো করে সম্পৃত্ত নয়। তবে তারা রাজনৈতিক দলগুলোকে আর্থিকভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করে এটা স্বীকৃত সত্য।স্বাধীনতার আগে পরেও ব্যবসায়ীরা আমাদের দেশে রাজনৈতিক দল গুলিকে অর্থ সাহায্যই করেছেন। সরাসরি রাজনীতিতে প্রবেশ করে রাজনীতিকে কুলষিত করেন নাই বা রাজনীতিকরা করতে দেননি।বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষনে তিনি সাহায্য চেয়েছিলেন প্রকাশ্যভাবে,"আমার সংগ্রাম কমিটির কাছে পৌছে দিবেন"।এখানে লক্ষ করুন" পৌছে দিবেন "কথাটা বলে তিনি রাজনীতিকে কিভাবে মহিমাম্বিত করেছেন।কোন ব্যাক্তি যাবে না পৌছে দিতে হবে,প্রাধান্য কি ভাবে দিয়েছিলেন কর্মিদের।এখন আমাদের নেতারা ব্যবসায়ীদের প্রতিষ্ঠানে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকেন টাকার জন্য,তাও নিজের খরছের টাকা দলের জন্য নহে। বৃত্তি বা পেশা হিসেবে ব্যবসার চমৎকারিত্ব দুনিয়াব্যাপি।আমাদের মহান ধর্ম ইসলামেও ব্যাবসাকে এগিয়ে রেখেছেন পেশা হিসেবে। ব্যবসার মূল কথা বা অর্থই হচ্ছে লাভ। যেকোন উপায়ে লাভ করাই সকল ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্য। লাভ করতে গিয়ে ইনকাম ট্যাক্স, সেলস ট্যাক্স,কাস্টমস, পুলিশ, কোট-কাছারি ইত্যাদি থেকে বাঁচার জন্য অন্য ভাবে বলতে গেলে ফাঁকি দেয়ার জন্য রাজনীতিতে নাম লিখানো প্রয়োজন মনে করেন।জনসেবা করার জন্য নয়,নীজের সেবা কন্টক মুক্ত করাই উদ্দেশ্য থাকে অধিকাংশ ব্যাবসায়ী মন্ত্রী এবং সাংসদের। গত দুই আড়াই দশকে দেশে ব্যবসায়ীদের একটি নতুন সফল শ্রেণী তৈরি হয়েছে। লবণ, সয়াবিন তেল, তৈরি পোশাক, ঝুট কাপড়, বালু, জমি, ফ্ল্যাট, শেয়ার থেকে ইয়াবা সোনা চোরাচালানী পর্যন্ত নানা আইটেমের ব্যবসায় তারা শতভাগ সফল। বাজার নিয়ন্ত্রণের সরকারি প্রচেষ্টা তারা ভন্ডুল করে দিতে ও তাঁরা নাকি সক্ষম। তাদের অনেকে ইদানীং ভীষণ সফল রাজনীতিতেও। এক সময় নির্বাচনসহ বিভিন্ন উপলক্ষে তারা মোটা অঙ্কের চাঁদা দিয়ে দল বা সরকারকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করতেন। তারপরও স্বার্থের পক্ষে নীতি ও আইন প্রণয়নে তাদের অনেক দেনদরবার,মন্ত্রীদের নিকট বা রাজনীতিবীদদের দরজায় ধর্নার প্রয়োজন হত।বর্তমানে ব্যবসায়ীরাই রাজনীতিবিদ, রাজনীতিবিদরাই ব্যবসায়ী,সুতারাং কারো দরবারে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। নিজেদের স্বার্থে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা তাদের কব্জায়।শুধুমাত্র সাহষ করে প্রয়োগের উদ্যোগ নেয়া।এই অবস্থায় চলতে থাকলে একসময় দেখা যাবে মাদক বিক্রি বিপনন আমদানী রপ্তানী কোন কিছুতে আইনত আর বাঁধা থাকবে না বরং সেবন না করাই হবে জেল জরিমানার কারন।কারন তাঁদেরতো ব্যাবসা করতেই হবে। গত দুই দশকের সংসদ সদস্যদের পেশাগত অবস্থানও সেই ইঙ্গিত দেয়। সংসদের অর্ধেকেরও বেশি সদস্য নাকি নিজেদের পরিচয়ে লিখেছেন ব্যবসায়ী। এক জরিপে দেখানো হয়েছে, নবম সংসদে ব্যবসায়ীদের ৩০ শতাংশ সরাসরি তৈরি পোশাক শিল্পের সঙ্গে যুক্ত।গতবারের সংসদে আওয়ামী লীগের ২৩৫ এমপির মধ্যে ১২০ জনই ব্যাবসায়ী। বিএনপির ৩০ সদস্যের ১৮ জনই ব্যবসায়ী। চলতি দশম সংসদে ক্ষমতাসীন ও বিরোধীদলের পরিসংখ্যানে তত হেরফের হওয়ার নয়। বরং খানিকটা বেশিও হতে পারে। মনোনয়ন পেতে নীতি, আদর্শ বা ত্যাগের চেয়ে অর্থ-বিত্তের বিবেচনাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে সব দলে। দলীয় পদ-পদবি হাসিলে তার চেয়ে অধিক । কে কত বিত্তশালী, কতটাকা দিতে পারবে উদ্ধতন নেতাকে,গুনে দিবে না খোলা চেকে দিবে-সেটাই হয়ে আছে যোগ্যতার মানদন্ড। আত্মীয়করন তো আগে থেকেই ব্যাধি। এমনতর পরিস্থিতিতে মহামান্য রাষ্ট্রপতির উপলব্ধিটি সচেতন যে কারো জন্যই চিন্তার বিষয়। বিশেষ করে ক্ষমতাসীনসহ জনসম্পৃক্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে রাষ্ট্রপতির মন্তব্য বেশি করে বিবেচনা জরুরি বলে আমি মনে করি। একদিকে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন অন্যদিকে পেশিশক্তির মহড়া, তার উপর ব্যাবসায়ী চিন্তাচেতনা -রাজনৈতিক দলগুলোকে সুস্থ চিন্তা-চেতনা থেকে কত দূরে নিয়ে যাচ্ছে তা বিভিন্ন ঘটনার দিকে তাকালেই বোঝা যায়। রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নে সামাজিকও রাজনীতিক ভীতটা ইতিমধ্যে ভেঙে গেছে। দুর্বল হয়ে পড়েছে মানুষের সহ্য, আদর্শ, মানবিক মূল্যবোধ। লোপ পেয়েছে সত্য, সততা ও আদর্শবোধ। ভয়াবহ একটি অপনীতির ঘোর অমানিশার অন্ধকার ঘিরে ফেলেছে সমাজের নিম্ন, মধ্যম এমনকি নিরীহ শ্রেণীটিকে। দিব্যি ভাল আছেন শুধু অসৎ,দুবৃত্ত,লোভি,ক্ষমতা লিপ্সু, অপরাজনৈতিক কলা কৌশলি,দখলবাজ,বর্নচোরা, কালোবাজারী,মাদকব্যবসায়ী লুটেরা। লক্ষ্য করলেই দেখা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে যেসব মন্ত্রী, এমপি, নেতার কর্মকান্ডে সরকার বেকাদায় পড়েছিল বা পড়ার সমুহ সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল- তারা কেহই রাজনীতি থেকে উঠে আসা নন, তৃণমূল থেকেও উঠে আসেননি। ব্যবসা, চাকরিসহ বিভিন্ন লাভজনক ক্রিয়াকর্মে বিভিন্ন দলীয় সরকার বা সামরিক শাসকদের সঙ্গে দিব্যি মানিয়ে চলতে অভ্যস্ত তারা। দুই বড় দলেই তাদের দেখা মেলে। তারা সহজেই দল ও সরকারে গুরুত্বপূর্ণ পদ বাগিয়ে নিতে পারেন, যা মাঠ-ঘাটের নেতাকর্মীরা পারেন না।সত্যিকারের রাজনীতিবিদেরা তোষামোদি করেন না বা করতে জানেননা, তাই পদে পদে বর্তমানে তাঁরাই হচ্ছেন লাঞ্চিত,বঞ্চিত।ব্যাবসায়ীদের তোয়াজনীতির নিকট ধরাশায়ী হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। আরেক বোমা ফাটানো মন্তব্য করেছেন সাবেক সিএসপি অফিসার, বর্তমান অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান। রাজনীতির একটু বাইরের হলেও প্রাসঙ্গিক। তিনি তদবিরের তোড়ে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠার কথা প্রকাশ্যে বলেছেন। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, এ দেশের মানুষ অনেক কিছু না পারলেও তদবিরের কাজটা খুব ভালো বোঝে এবং পারে। তিনি জানিয়েছেন, তার কাছে যত লোক আসে, তাদের ৯০ শতাংশই আসেন তদবিরের কাজ নিয়ে। এসব তদবিরের অধিকাংশই আবার অসঙ্গত। অর্থাৎ প্রকারান্তরে দুর্নীতি বা স্বজনপ্রীতি। পারিবারিক পর্যায় থেকে শুরু করে সামাজিক, রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, এমনকি রাষ্ট্রীয় কাজে তদবিরের রাজত্ব। বাড়ি তৈরি করতে প্ল্যান পাস করতে হয়। বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানির সংযোগ দরকার। এ ধরনের কাজের ফাইল সহজে নড়ে না। নড়াতে অনেকে প্রভাবশালী ব্যক্তির শরণাপন্ন হতে হয়। এক্ষেত্রে কিছু ক্যাশ টাকা ধরিয়ে দেয়া এখন আর তত অপরাধ মনে করেন না অনেকে। চাকরির আবেদন থেকে শুরু করে উত্তীর্ণ হওয়া, নিয়োগপ্রাপ্তি, পদোন্নতি, এমনকি যুৎসই জায়গায় পোস্টিংয়ের তকদির নিশ্চিত করতে হয়।তাঁর সুনিশ্চিত ব্যাবস্থাও আমাদের স্বনামধন্য ব্যাবসায়ীরা করে রেখেছেন।প্রত্যেক অফিসে বিনা প্রয়োজনে সুন্দরী মহিলাদের নিয়োগ দিয়ে রেখেছেন।প্রয়োজনে তাঁদেরকে তদবীরের কাজে ব্যাবহার করতে দ্বিধা করেন না, নীতি নৈতিকতায় ও বাঁধে না। ব্যাবসায়ী নেতারা রাজনীতিকেও অফিস আদালতের মত করে তদবীরের মাধ্যমে হাসিল করতে সচেষ্ট থাকেন।মাঠে ঘাটে যুবক শ্রেনীর হাতে তুলে দেন মাদকের যোগান,উদ্ধস্তরে করেন ব্যবসায়ীক ধ্যান ধারনায় তদবীর। বাজিমাতের প্রয়োজনে রইলো বাকী আর কি। বর্তমান সরকার এমন সময়ে এক যুগ উপযোগি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।দলীয় প্রতিকে হবে স্থানীয় নির্বাচন।প্রাথী বাছাইয়ের ক্ষমতা যদি স্ব-স্ব এলাকার কর্মি বাহিনীর উপর থাকে তাহলে অচিরেই উপরে উল্লেখিত অভিশাপ থেকে দেশ ও জাতি রক্ষা পাওয়ার পথ প্রসস্ত হবে।তৃন্মুলের নেতা কর্মিদের প্রার্থী বাছাইয়ে ভুমিকা রাখার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করার অর্থ হবে অবৈধ কালোটাকার নিকট রাজনীতি হেরে যাওয়া।অচিরেই গ্রাস করবে গোটা রাষ্ট্র যন্ত্রকে।নিবেদিত, অনুগত নেতা কর্মিরা কখনই নেতা নির্বাচনে ভুল করেনা,ইহা প্রমানীত সত্য।সৎ,মেধাবি, ত্যাগী নেতা কর্মি কখনই লোভ লালসায় আত্মসমর্পন করেনা করতে পারেনা।তাঁদের নেতা নির্বাচন অতীতে কখনই ভুল হয়নি,সুযোগ পেলে ভবিষ্যতেও হবেনা,দৃড় আস্থা অন্তত এই একটি ব্যাপারে পোষন করা যায়। জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখহাসিনা

দলীয় প্রতিকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন,পরিক্ষিত,ত্যাগী,মেধাবি রাজনীতিবিদদের সামনে মেধা বিকাশের পথ খুলে দিয়েছে।অচিরেই দখল বাজ,চাঁদাবাজ,কালোটাকার মালিকেরা কর্মিদের নিকট নাস্তানাবুদ হয়ে বিতাড়িত হবে।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার সরকার মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যাতত্ব দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস ঐতিহ্যে বিতর্ক উত্থাপনের অভিযোগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন।মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে বসবাস করে,মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার মত দৃষ্টতা দেখিয়ে নি:সন্দেহে তিনি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। এহেন গর্হিত বক্তব্য প্রদানকারী বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার রাখতে পারেননা।মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত অঙ্গিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কোন দল বা জোটের রাজনীতি করারঅধিকার নীতিগতভাবেই থাকতে পারেনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি সকল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করে সর্বচ্ছ আদালতের রায় অনুযায়ী '৭২এর সংবিধান অবিকল বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবী।বাংলাদেশেরজনগন চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ এগিয়ে যাক,মুক্তিযুদ্ধে সাগরসম রক্ত ঢেলে সেই অঙ্গিকারের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেছিল।স্বাধীন বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বসবাসকরে,পরাধীনতার গান শুনতে দেশ স্বাধীন করেনি বাংলার জনগন। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৩ বছরের বিরামহীন সংগ্রামের ফসল মুক্তিযুদ্ধ।সেইযুদ্ধে উপনিবেশিক পাকিস্তানের আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত সেনাবাহিনীকে নিরস্ত্র বাঙালীরা পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছিল।সেই স্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশেপরাজিত শক্তির দোষর,তাঁদের প্রেতাত্বাদের রাজনীতি করার কোন নৈতিক অধিকার নেই।জাতির জনক তাঁদের রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগন জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলায় রাজাকারের কোন স্থান দিতে চায়না। তাই খালেদা জিয়ার ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টার দৃষ্টান্তমুলক সাজার আশা পোষন করে।কোন রাজনৈতিক সমঝোতার ফাঁদে যেন এই মামলা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়,তাঁর গ্যারান্টিও সরকারের নিকট বাংলাদেশের জনগন চায়। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু Ruhul Amin ------------------------------ খালেদা জিয়াকে সমাবেশের অনুমতি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি আশাহত----04 /01 / 0016 ইং পোষ্ট -==================================প্রখ্যাত দার্শনিক,চিন্তাবিদ সক্রেটিসকে কম বেশি আমরা সবাই জানি।সক্রেটিস কোন যুগে জম্মগ্রহন করে মানব সেবায় ব্রতি হয়ে আজও দেশে দেশে অনুকরনীয় অনুসরনীয় হয়ে আছেন তাও আমরা জানি।নিশ্চয়ই তখনকার সময় থেকে বর্তমানের সমাজ, রাষ্ট্রব্যাবস্থাপনা আরো শত গুন উন্নত,সমৃদ্ধ,সভ্য।সক্রেটিস ছুতোর, কামার ইত্যাদি প্রসঙ্গে এসে প্রশ্ন করতেন, 'তাহলে রাষ্ট্র নামক জাহাজটি বিগড়োলে কাকে দিয়ে সারাইয়ের কাজ করাবো'হাসান আজিজুল হক (সক্রেটিস) পৃ : ১৬ সক্রেটিসের এ বিখ্যাত কথপোকথন কারো অজানা নয়। আদর্শবান ন্যায়নীতিভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করবার জন্য সক্রেটিসকে হেমলক পান করতে দেয়া হয়েছিল(বিষ), তারপরও তিনি আইনের প্রতি অটুট শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন- এটাও ছিল তার নির্ভীক বিদ্রোহ। তাকে বাঁচবার সুযোগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি আইনঅবজ্ঞা করেননি, আইনে যদি তার মৃত্যুদন্ড হয় তবে তিনি অবশ্যই তা মানতে রাজি। এখানেও তার সমস্ত জীবনকর্মের অনেক গভীর দর্শন কাজ করেছে। তার উপর মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল একথা তিনি ও এথেন্সবাসী জানতেন। কিন্তু যে আইনে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলো- তিনি সে আইনকে শ্রদ্ধা জানালেন এ অর্থে মানুষকে আইনের প্রতি অনুগত থাকতে বললেন। সেই আইন কারা তৈরি করছে তা তিনি জানতেন তাতে তো আর আইন নামক বিষয়টিকে জীবন থেকে বিতাড়িত করা যায় না।"পবিত্র কোরানে পাকে ও উল্লেখ করা হয়েছে, বিধর্মী কতৃক শাষিত রাষ্ট্র ও সরকার সমুহের আইন মেনে ধর্ম কর্ম করার।এই রুপ রাষ্ট্র ব্যাবস্থায় শুক্রবারের খতবায় বিশেষ আয়াৎ সংযুক্ত আছে এবং নিয়মিত নামাজের সাথে আর ও কয় রাকাত নামাজ আদায় করার নির্দেশনা দেয়া আছে।পরিতাপের বিষয়টি হচ্ছে,গত কয়েক বছর থেকে লক্ষ করা যাচ্ছে একশ্রেনীর মানুষ রাষ্ট্রীয় আইন রীতি নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সর্ব উচ্চ আদালতের রায়কে ও অমান্য করে হরতাল অবরোধ,প্রকাশ্য আদালতের সমালোচনা করতে।শুধু তাই নয় আন্দোলনের নামেপ্রকাশ্য দিবালোকে যাত্রীভর্তি চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে জীবন্ত মানবকে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিতে।উল্লেখ করা প্রয়োজন যারা এই সমস্ত আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিলেন,এবং প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেন যে আদালতের বিরুদ্ধেও কর্মসূচি দেয়া যায়,বক্তব্য দেয়া যায়,তাঁরা কখনই কোন অপরাধীর বিচার কায্য সম্পাদন করেছেন তদ্রুপ কোন উদাহরন নেই। যেমন আমি প্রথমেই বলতে চাই ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছেন রাতের অন্ধকারে।বঙ্গবন্ধুর অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? পৃথীবিপৃষ্টের সব চাইতে নিরাপদ স্থান জেলখানা।সেখানে রাতের অন্ধকারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করাহল,তাঁরা বন্দি ছিলেন, তারপর ও তাঁদের অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে বুদ্ধিজীবিদের বাসা থেকেতুলে নিয়ে জ্যান্ত মানুষকে হত্যা করা হল, তাঁদের অপরাধ কি বিচার করে মিমাংসা করা যেতনা? খালেদ মোশারফ., কর্নেল তাহেরসহ অসংখ্য মুক্তি যুদ্ধা সেনা অফিসারকে মেজর জিয়ার নির্দেশে নির্মম নির্দয় ভাবে হত্যা করা হল, অনেককে গুলী করার পর প্রান পাখী উড়াল দেয়ার আগেই জ্যান্ত মাটি চাপা দেয়া হল, তাঁদের বিচার কি প্রচলিত সেনা আইনে করা যেতনা? অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধা,আওয়ামী লীগের নেতা,মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারি,ব্লগার,প্রকাশক,লেখক সাহিত্যিক,সাংবাদিক হত্যা করা হল,তাঁদের অপরাধ কি আইনের আওতায় এনে বিচার করা যেতনা?আন্দোলনের নামে ঘোষনা দিয়ে মানুষ হত্যা করা,সম্পদ নষ্ট করা,লুটপাট করা কি মানবতা বিরুধী অপরাধের আওতায় পড়েনা?মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ হত্যা লুটপাট,অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার হতে পারে,যুদ্ধাবস্থা ব্যাতিরেকে ঘোষনা দিয়ে তদ্রুপ কর্মে জড়িতদের এবং হুকুমদাতার বিচার কেন হবেনা? নগদ অপরাধের ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার করা কি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব নয়? নাগরীকদের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া কি রাষ্ট্রের কর্তব্যের মধ্যে পড়েনা? যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন তাঁরা কি বিচার পাওয়ার সাংবিধানীক অধিকারের মধ্যে পড়েনা?সেই যুগের সক্রেটিস যদি নীজের উপর আনীত মিথ্যা অভিযোগ জেনে শুনে মেনে নিতে পারেন,সভ্যতার চরম শীখরে দাঁড়িয়ে যারা এই যুগে আইনকে, রাষ্ট্রীয় রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রকাশ্য আন্দোলনের নামে মানুষ খুন করেছেন,সম্পদের হানী ঘটিয়েছেন তাঁরা কি সক্রেটিস যুগের আগের অধিবাসি মনে করেন নীজেদের? তাঁরা নীজেরা নিজেদের মনে করুন কিন্তু মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে কোন যুগে ফিরিয়ে নিতে চান?তাঁদের যদি এতই অসহ্য লাগে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিশেষ কিছু আদর্শের প্রতিপালনের অঙ্গিকারের ভিত্তিতে ৩০লক্ষ শহিদের আত্মদান,পৌনে চারলাখ মাবোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস- তবে জনগনকে সংঘটিত করে আর একটি গনবিপ্লব ঘটিয়ে তাঁদের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে স্বাধীনতার পক্ষের কোন মানুষ বাধাতো দিচ্ছেনা। যাদের নেতৃত্বে, যাদের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন করা হল, তাঁরাতো ক্ষমতায় আছে,তাঁদের কেন জোর পুর্বক,ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে খমতা থেকে নামাতে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে,আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে জনজীবন দুর্বিসহ করে তোলার চক্রান্ত করতে দেয়া হবে।এই সেই দিন মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা নিয়ে যিনি বিতর্ক উত্থাপনের বৃথা চেষ্টা করে জনরোষের আওতার মধ্যে এখনও রয়েছেন,তাঁর সৌখিন বাসভবন পাহারায় আপনার সরকার অতিরীক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে বাধ্য হয়েছে,তিনি কি ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে সমাবেশ করার প্রসাশনিক অনুমতি পায়। বর্তমান গনতান্ত্রিক বিশ্বের একটি দেশের উদাহরন কি কেউ দিতে পারবেন,স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা সেই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে?একটি দেশকি কেউ দেখাতে পারবে যে,সেই দেশের কোনমীমাংসিত এবং প্রতিষ্ঠিত কোন সত্যকে ৩০/৪০ বছর পর আবার জনসমক্ষে উত্থাপন করে লক্ষ লক্ষ শহিদ পরিবারের অন্তরের আগুনে"ঘি "ঢেলে দেয়ার চেষ্টা, কোন প্রতিষ্ঠিত দল বা তাঁর নেতা করেছেন? কেন এই পয্যন্ত সরকার তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা না করে উলটো সমাবেশ করে তাঁর মতবাদ প্রচারের অনুমতি দেয়া হল??তাঁরা নীজেদের এত ক্ষমতাবান মনে করেন কিভাবে? তাঁরা কি করে আবার জাতির নিকট ক্ষমা চাওয়া ছাড়াই প্রকাশ্য সভা সমাবেশ করার অধিকার পায়?কেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সংসদে ঘোষনা দিয়েও এখন পয্যন্ত আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন করছেন না? মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আপনার আশ্বাস বাংলার মানুষ অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করে।সুতারাং জনগনকে দেয়া প্রতিশ্রুতি আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন কল্পে তড়িৎ ব্যাবস্থা গ্রহনকরবেন, জনগনের এই আস্থা বিশ্বাস এখন ও অটুট রয়েছে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,শাপলা চত্বরের সেই দিনের ষড় যন্ত্র মোতাবেক যদি খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার মানুষ রাজপথে নেমে আসতেন,পরিকল্পনাঅনুযায়ী সেনা বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়েআপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারতো,আপনাকে কি জীবিত বাঁচতে দেয়া হত? আপনার পরিবারের কাওন সদস্যকে বাঁচতে দিত?আওয়ামী লীগের থানা উপজেলা পয্যায়ের কোন নেতা কি বাঁচতে দিত? তাঁরা কি সে দিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ধর্ম বিদ্বেষী সরকার উৎখাত করে ধর্মধারি সরকার কায়েমের রাজনৈতিক শ্লোগানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নামক মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ধারক বাহক জননন্দিত এইসংগঠনটিকেও জ্যান্ত কবর দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত ছিল না?আমি আজ আরও একটি বিষয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,সম্পুর্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন চরমপন্থী নেতার অবিকল নকল করা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার--,গনতান্ত্রিকদেশে,গনতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে, গনতান্ত্রীক সংগঠনের,গনতন্ত্রের পুজারি মনে করা কোন নেতা, রাজপথে আন্দোলন না করে, সীমাবদ্ধ কক্ষে ৪১দিন অবস্থান করে, ৪২ জন মানুষকে পুড়িয়ে মেরে,পরবর্তিতে বিচারের সম্মুখ্যিন না হয়ে নিয়মাতান্ত্রীক আন্দোলনের সুযোগ কোন দেশের, কোন নেতা বা কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, এমন উদাহরন কি কেউ দিতে পারবে?? ষড় যন্ত্রের জাল কোথায় বিস্তৃত ছিল তাঁর প্রমান সেই নেত্রী নীজেই তাঁর উষ্মায় প্রকাশ করে দম্ভস্বরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে সুশৃংখল বাহিনীকে তাচ্ছিল্য করে বলে ছিল"সেনাবাহিনী বেঈমান"!!!এর পরও আপনার সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আনায়ন না করে প্রকাশ্য সভার অনুমতি দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার গুলির মনে আগাত দেয়া হয়েছে আমি মনে করি। গত পৌর নির্বাচনে রায় দিয়েছে তাঁর বিচার করার,তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অর্থই হচ্ছে জনগনের ক্ষোভ তাঁর উপর থেকে এখনও কমেনি,বরঞ্চ কয়েক গুন বেড়ে জনরোষের পয্যায় পৌছে গেছে।আপনার সরকারের তাঁকে দেয়া বাড়তিনিরাপত্তাই তা প্রমান করে।সুতারাং দেশ ও জাতি এই রাজনৈতিক লাশের ভার বইবার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা।দেশের এবং জাতির প্রয়োজন বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মত শিক্ষিত, বিজ্ঞান মনস্ক,প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত সমৃদ্ধ জাতি গঠনে জ্ঞানসমৃদ্ধ, আধুনিক সভ্য দুনিয়ার নেতৃত্ব গ্রহন করার মত গুনাবলি সমৃদ্ধ নেতার। কোন অবস্থায় সক্রেটিসের আগের যুগে জাতি ফেরৎ যেতে চায়না।পরিশেষে বলতে চাই,আর কোন সংগাত নয়,এবার চাই সমৃদ্ধি।আর নয় জঙ্গিপনা,এবার চাই ধর্মনিরপেক্ষতা।আর নয় সাম্প্রদায়ীকতা,এবার চাই অসম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা।আর নয় পাকি ভাবধারা প্রতিষ্ঠা,এবার চাই মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের সফল বাস্তবায়ন। জয় আমাদের হবেই হবে, অশুভ অপশক্তির পরাজয় অবশ্যাম্ভাবি। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা