গৌরবের শিখরে আমার প্রিয় বাংলাদেশ >>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>> বাংলাদেশ আওয়ামি লীগের প্রচার সেল অত্যান্ত দুর্বল।মহান স্বাধীনতার পর থেকেই বরাবর লক্ষ করলে দেখতে পাওয়া যায়,কোন প্রপাকান্ডের জবাব দেয়ার মত সামর্থ দলটির আছে- লক্ষ করা যায়নি।বিদেশী সাংবাদিক,পয্যবেক্ষক,বিশেষজ্ঞগন বিভিন্ন ভাবে তথ্য সংগ্রহ করে; যে কোন বিষয় ইতিবাচক মতামত প্রকাশ করে, তখনি কেবল বিষয়টি নিয়ে মাতামাতি হয়।প্রধান মন্ত্রী গুরুত্বপুর্ন কোন তথ্য দিলেও দলটি এযাবৎ সে তথ্যকে হাইলাইট করে জনগনের নিকট পৌছাতে বার বার ব্যার্থতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে।দলের নেতিবাচক বিষয়াদি নিয়ে বিরুদিরা হৈচৈ করে দেশে বিদেশে সরকারের ভাবমুর্তি বিনাশ করলেও দলটি প্রচার উইং থেকে জবাব দেয়ার জন্য তদ্রুপ কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়না।যেমন বিরুদিদল লক্ষ লক্ষ টাকা খরছ করে বিদেশী লবিষ্ট ফার্ম নিয়োগ দিয়ে প্রপাকান্ড চালাচ্ছে;বি,এন,পি নেত্রী নীজেও স্বশরীরে সে প্রপাকান্ডে যোগ দেয়ার জন্য বর্তমানেও নিউইয়র্ক অবস্থান করছেন।এই লবিষ্ট ফার্মের এগিনিষ্টে দলগতভাবে আওয়ামী লীগ পালটা লবিষ্ট নিয়োগ দেয়ার প্রয়োজন ছিল।কিন্তু বরাবরের মতই দেখা যাচ্ছে তাতো করেইনি, কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক,বা দলের বিদেশ সক্রান্ত কোন উপকমিটির নেতৃত্বে- এযাবৎ কোন দেশ সফর করে, সরকারের ইতিবাচক কর্মকান্ডের ফিরিস্তি তুলে ধরে, বিদেশি বন্ধু সংস্থা বা সরকার প্রধান,সংশ্লিষ্ট বিষয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত কোন ব্যাক্তির সাথে সাক্ষাতও করেননি।দেশের অভ্যন্তরে সভা সমাবেশ, প্রবন্ধ নিবন্ধ প্রকাশ করেও কোন প্রচারনার উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি।রাস্তায় রাস্তায় দেখা যায় ব্যাক্তি বিশেষের গুনগান করে বড় বড় বিলবোর্ড আর তৌরন। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী নীজ উদ্যোগে ইতিবাচক কোন বিষয়ে কোথাও কোন বক্তব্য দিয়ে জানিয়ে দিলেও তা দল প্রচার করার জন্য সম্মিলিত কোন উদ্যোগ নিতে দেখা যায়না।আওয়ামী লীগের প্রতি অনুগত লিখক বিশ্লেষকেরা যতটুকু সম্ভব লেখালেখি, টক শো করে প্রচার করেন তাতেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে দেশের মানুষকে।কিন্তু তাঁরা এব্যাপারে দায়িত্ব প্রাপ্ত বা স্বীকৃত কোন ব্যাক্তি বা সংস্থা নন,দলের পক্ষে বলার।বিবেকের তাড়নায় হোক অথবা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হওয়ায় আওয়ামী লীগের প্রতি মানষিক ভাবে দুর্বল বিদায় লিখার বা বলার চেষ্টা করে থাকেন। দেশবাসি সকলের জানা আছে বি,এন,পি ক্ষমতা ত্যাগ করার সময়ে বিদ্যুৎ এর কি বেহাল অবস্থা ছিল।তত্বাবধায়কের হাত থেকে ২০০৯সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহন করার পর দেখা গেছে কোথাও বিজলী বাতি জ্বলেনা।সে করুন অবস্থা থেকে সকারের তড়িৎ পদক্ষেপের কারনে স্বল্প সময়ে বাতি জ্বালিয়ে দেশকে অন্ধকার থেকে উত্তরনের যে মাইল ফলক স্থাপন করেছেন তাও দলীয় ভাবে প্রচারে আনতে পারেনি।সরকারীভাবে যতটুকু দেশবাসি জেনেছে তাঁর সিকিভাগও যদি দলীয় প্রচারে থাকতো, তাহলে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে নীজে বলতে হোত না বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্বাপনে আমরা সেঞ্চুরী করেছি।তাঁর আগেই দেশের মানুষ জেনে যেত মাননীয় প্রধান মন্ত্রী অদ্য কততম বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্ভোধন করার জন্য সিলেট যাচ্ছেন বা ভিডিও কনফারন্সের আয়োজন করা হচ্ছে।জাতির জনকের কন্যা নীজ থেকে এত বড় একটা সাফল্যের সংবাদ দেয়ার পরও দলের প্রচার উইং থেকে তাঁর তালিকা সংবলিত কোন তথ্যকনিকা প্রকাশ করতে পারেনি।সংবাদ মাধ্যমের কর্মী, বিশেষজ্ঞ গনের বিশ্লেষন,টেলিভিশনের টক শোতে সুশীল সমাজের ইতিবাচক আলোচনা থেকে দেশের মানুষ যতটুকু জেনেছেন ততটুকুর মধ্যেই প্রচারকায্য সীমাবদ্ধ রইলো।অথছ সকারের প্রথম অবস্থায় সংকট নিরসনের আন্তরিকতার নিদর্শন কুইকরেন্টাল প্লান নিয়ে বিরুদিরা যে অপপ্রচার করেছিল তাঁর সমুচিত জবাব প্রধান মন্ত্রীর সেঞ্চুরীর একটা সামান্য উক্তিই হতে পারতো অন্যসব প্রচারনার সমুচিত জবাব। (১)বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে সেঞ্চুরি --------------------------------- ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে প্রায় ৪৭৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার নতুন ৩টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই ৩ কেন্দ্রের উদ্বোধনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সরকারের আমলে দেশে একশ বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপিত হলো। এর মধ্যে ২০০৯ সালে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে বিগত সাড়ে ৬ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ৭৩টি নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করেছে। দেশে বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। গত সাড়ে ৬ বছরে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। দেশের সব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের (ক্যাপটিভসহ) উৎপাদন ক্ষমতা বর্তমানে ১৪ হাজার মেগাওয়াটের বেশি। ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা ছাড়িয়ে যাবে বলে দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী, যা খুবই আশার কথা। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে দায়িত্ব নেয়ার পর ‘বিদ্যুতের হাহাকার’ দূর করতে প্রথমে ‘ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিদ্যুৎ কেন্দ্র’ করা হয়।বর্তমানে সরকার অনেকগুলো ‘মেগা প্রজেক্ট’ হাতে নিয়েছে।মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘ মেয়াদি প্রকল্প গুলোতে একটু সময় লাগবে। কিন্তু বাংলাদেশে কখনো যেন আর বিদ্যুতের সমস্যা না হয়- সেদিকে লক্ষ রেখেই সরকার কাজ করে যাচ্ছে। একই অনুষ্ঠান থেকেই প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করতে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলোর কাজ সঠিকভাবে ও সময়মতো শেষ করতে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি তাগিদ দিয়েছেন। সরকার বিদ্যুতের মেগা প্রকল্প নিয়ে জোরোশোরে কাজ করছে এবং যথাসময়েই বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বর্তমান সরকারের সাফল্য সর্বমহলেই স্বীকৃত।আমরা আমাদের সক্ষমতার সবটুকু ব্যবহার করতে পারছি না। দেশে গ্যাসের মজুদ কমে আসছে। তেল-গ্যাসের অভাবে আমাদের সক্ষমতার অনেক কম বিদ্যুৎ আমরা এখন উৎপাদন করতে পারছি। কাজেই উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াই যথেষ্ট নয়। বর্তমান বাস্তবতায় কয়লাভিত্তিক বড় বিদ্যুৎ প্রকল্পের বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের প্রসার ঘটাতে হবে। বিদ্যুৎ বিতরণ ও সঞ্চালন অবকাঠামো ও ব্যবস্থাপনার উন্নতি ঘটাতে হবে। ২০২১ সালের মধ্যে সবার ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার ঘোষণা করেছেন সরকার প্রধান জাতির জনকের কন্য।দেশ উন্নয়নের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো, বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রাথমিক কাঁচামালের সরবরাহ নিশ্চিত করা, আমদানি বাড়ানো, অপচয়-দুর্নীতি কমানো সব দিকে গুরুত্ব দিয়ে এগোতে হবে সরকারকে।সরকারের কর্মতৎপরতায় দেখা যাচ্ছে বিদ্যুৎক্ষেত্রে সরকার শতভাগ সফলতার দিকে দেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন। (২)একশত অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘোষনা:-- ----------------------------------- দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে পর্যায়ক্রমে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের গভর্নিং বোর্ডের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই কথা জানিয়েছেন। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এই উদ্যোগ অত্যন্ত সময়োপযোগী। ইতোমধ্যে দেশে ২১টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিনিয়োগ, শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে এ সংখ্যা একশতে উন্নীত করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এতে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি আরো গতিশীল হবে।প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের গভর্নিং বোর্ডের তৃতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী দেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প গড়ে তোলার তাগিদ দিয়ে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে নতুন নতুন ধারণা নিয়ে কাজ করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। ইতোমধ্যে নতুন কয়েকটি অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। বিভিন্ন অঞ্চলের সম্ভাবনার বিষয় বিবেচনায় নেয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সংশ্লিষ্ট এলাকার সম্পদের পর্যাপ্ততার ভিত্তিতে বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ওইসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থাও বিবেচনায় নিতে হবে। এ ধরনের উদ্যোগ বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। সরকার ২০২১ সালের আগেই বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। সেই অনুযায়ী কাজও করছে। এ ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক উন্নয়ন পূর্বশর্ত। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দ্রুতবেগে দেশকে এগিয়ে নিতে সরকার এমন কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে যা প্রশংসার দাবিদার। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপটি হলো নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা। অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগে নতুন প্রবাহ সৃষ্টি হবে। বিদেশি বিনিয়োগ বাড়লে কারখানা সৃষ্টি হলে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম উৎপাদন কেন্দ্রে পরিণত হবে মনে করছেন দেশী বিদেশী বিশেষজ্ঞন। আগামী ১৫ বছরের মধ্যে দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের মাধ্যমে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান এবং ৪ হাজার মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করা যাবে বলে বিশেষজ্ঞগনের অভিমত।সরকার সে লক্ষ্যেই একের পর এক অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। বিনিয়োগ ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চল নিয়ে নতুন আশাবাদ তৈরি হয়েছে দেশী বিদেশি মহলের নিকট। অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের চেহারাই বদলে যাবে। অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো প্রতিষ্ঠিত করতে হলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই। বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য সস্তায় শ্রম পাওয়ার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে বাংলাদেশে,বাংলাদেশ দুতাবাস সমুহ বিভিন্ন প্রচারনা মাধ্যমে সেই দেশের উদ্যোগতা কোম্পেনী সমুহকে অনবরত জানানোর উদ্যোগ গ্রহন করা আবশ্যক। বাংলাদেশের প্রতি আকৃষ্ট করার অন্য উপায় গুলীও কাজে লাগানোর ব্যাবস্থা নিতে হবে। জিএসপি সুবিধাও এ ক্ষেত্রে একটি বাড়তি বিবেচনা। অবকাঠামো ও বিদ্যুৎ সমস্যার ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার ব্যাপক উন্নতি করেছেন বলে বিদেশী বিনিয়োগকারী গন মনে করেন,পজেটিভ এই ধারনাকে সুসংহত করার ব্যাবস্থা নেয়া প্রয়োজন। রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে অন্য অনেক সময়ের তুলনায় বিনিয়োগের পক্ষে -প্রচারের ক্ষেত্রে বিষয়টির উপর গুরুত্ব দেয়া যেতে পারে।অন্যসব সমস্যার সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন,যাহা বিনিয়োগে আগ্রহী করার ক্ষেত্রে এখনও বাধা হিসেবে তাঁরা মনে করে। সর্বোপরি, দেশে বিনিয়োগ বাড়াতে হলে সর্বাগ্রে বর্তমান রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হবে- যে কোন মুল্যে।এর পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের গ্রামমুখী করার ব্যবস্থাও করতে হবে। তাদের দিতে হবে আয়কর মুক্তি। দূর করতে হবে অবকাঠামোগত অসুবিধা ও যোগাযোগের সমস্যা। বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করার জন্য এসব পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। তাহলেই অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো প্রতিষ্ঠার সাফল্য বয়ে আনবে। (৩)বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল। ---------------------------------- পত্রপত্রিকার খবরে প্রকাশ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে নতুন রেকর্ড করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ২ হাজার ৭০০ কোটি (২৭ বিলিয়ন) ডলার অতিক্রম করেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ এন্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কাজী ছাইদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গত ১৭ আগস্ট রিজার্ভ প্রথমবার ২৬ বিলিয়নের ঘর অতিক্রম করেছিল। ওইদিন রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৬ দশমিক ০৩ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুদ থাকতে হয়। বাংলাদেশের আমদানির বর্তমান গতিধারা বলছে, এ রিজার্ভ দিয়ে অন্তত ৭/৮ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, মার্কিন ডলারের বিপরীতে স্থানীয় টাকার শক্তিশালী বিনিময় হার ধরে রাখা, রপ্তানি সহায়তা তহবিলের পরিমাণ ও ব্যবহারের আওতা সম্প্রসারণ, রপ্তানি ও প্রবাসী-আয় বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন ইতিবাচক অগ্রগতির ফলে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত নতুন উচ্চতায় উঠেছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যপণ্যসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্যের দাম কমায় দেশের আমদানি ব্যয় কমেছে। এটিও বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে। গর্ব করার বিষয়টি হচ্ছে দক্ষিন এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ দ্বিতীয় অবস্থানে পৌছে গেছে।এই ধারা অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ আশা করি বাংলাদেশ ব্যাংক গ্রহন করবে। (৪) আই,এম,এফের কিস্তি ছাড়। --------------------------------- এ যাবৎকাল দেখা গেছে বিদেশি সংস্থা,বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অন্যান্ন লগ্নিকারক প্রতিষ্ঠান সমুহ অর্থছাড়ের ব্যাপারে বিভিন্ন কলাকৌশলের আশ্রয় নিত।অনেক সময়ে এক কিস্তি ছাড়ের পর আরেক কিস্তির সময় পার হয়ে গেলেও বিভিন্ন অজুহাতের কারন দেখিয়ে বিলম্ব ঘটাত।অনেক সময় ছলচুতোয় অর্থ প্রত্যাহার করে নিয়ে অন্য আর এক দেশকে সে অর্থ দিয়ে দিত।বাংলাদেশ সহ তৃতীয় বিশ্বের দেশ সমুহের প্রতি তাঁদের এই আচরন প্রতিনিয়ত বলবৎ ছিল। দেশের অভ্যন্তরে সরকারের ব্যার্থতার দলিল হয়ে আলোচনা সমালোচনার তুফান বয়ে যেত।স্বজনপ্রীতি,দুর্নীতি,লুটপাটের বিভিন্ন মুখরোচক কল্পকাহিনী ডালপালা মেলে সাধারন মানুষের মনে সরকারের নীতি নৈতিকতা নিয়ে বিরুপ ধারনার সৃষ্টি হত। কিন্তু এইবার তাঁর উলটো চিত্র দেখা গেল বাংলাদেশের ক্ষেত্রে। প্রতিশ্রুতির কিস্তির তৎবিরের আগেই একসংগে দুইটি কিস্তি বাংলাদেশ ব্যাংকে আই,এম,এফ জমা করে দিয়েছে।বিদেশী গনমাধ্যমের আলোচনায় এসেছে,বর্তমান সরকারের কর্মযজ্ঞে সন্তুষ্টতার কারনে আই,এম,এফ এই পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। যাতে কোন প্রজেক্টের অর্থের কারনে ভোগান্তি না হয়।নিসন্দেহে বাংলাদেশের জন্য ইহা একটি পজেটিব দিক।এই সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে পারলে অন্যান্ন সংস্থা গুলীও আই,এম,এফ এর পদক্ষেপকে অনুস্মরন করতে বাধ্য হবে।এতে লবিং খাতে বিপুল অর্থব্যায় সাশ্রয়ের সাথে সাথে দেশী বিদেশী ঠিকাদারদের বিল সময়মত পরিশোধে, তাঁদের নির্মান কাজের গতিও অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে।সরকারের নির্দিষ্ট সময়ের বাধ্যবাধকতা সম্পন্ন কাজগুলীও যথারীতি সময়মত আদায় করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে আরো সচেতন ভাবে সরকারের সকল ইতিবাচক কাজে সম্পৃত্ত থেকে সহযোগিতা করা একান্ত প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।সরকারের সফলতা সমুহকে প্রচার করার জন্য আরো উদ্যোগি ভুমিকা পালন করা দরকার।আন্তজাতিক পয্যায়ে লবিষ্ট নিয়োগ করে ষড়যন্ত্রকারীদের নেতিবাচক অপপ্রচারের যথাবিহিত জবাব দেয়ার উদ্যোগ দলীয় অর্থব্যায়ে করা প্রয়োজন।দেশের অভ্যন্তরে দলীয় ডনদের কির্ত্তি জাহির করার জন্য নির্মিত বিলবোর্ড সমুহকে সরকারের বিভিন্নকাজে সফলতার তালিকার বোর্ডে রুপান্তরীত করে সফলতার চিত্র জনসমক্ষে তুলে ধরার ব্যাবস্থা গ্রহন করা যেতে পারে। আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা কর্মিদের স্মরন রাখা প্রয়োজন'৭২--'৭৫ এ বঙ্গবন্ধু সরকারের যুগান্তকারী বহু পদক্ষেপ থাকার পরও এবং সদ্যস্বাধীনতা প্রাপ্ত যুদ্ধবিধ্বস্থ দেশকে মাত্র তিন বছরের মধ্যে পুর্নগঠন করার কৃতিত্ব থাকার পরও আমেরীকা কতৃক কৃত্তিম দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করে সরকারের বিরুদ্ধে জনরোষের আগুন জালানোর চেষ্টা সত্বেও বংগবন্ধু দেশকে স্থিতিশীল করে চালের দাম দশ টাকার মধ্যে আনতে সক্ষম হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর সরকার সফল হলেও আওয়ামী লীগ ব্যর্থ ছিল বলে অকালে জাতির জনককে জীবন দিতে হয়েছিল।সামান্য অপপ্রচারের জবাব সেদিন আওয়ামী লীগের প্রচার উইং দিতে পারেনি।যে সমস্ত উদ্ভট গুজব ছড়িয়ে জনগনকে বিভ্রান্ত করা হয়েছিল, সেই সমস্ত গুজবের কোন ভিত্তি ছিলনা।আজ পয্যন্ত তাঁর প্রমান কেউ হাজির করে জননেত্রীর সংসদে দেয়া চেলেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারেনি।কথিত শেখ কামালের ব্যাংক ডাকাতির কোন নজির ২১ বছর সরকারে থেকেও তাঁরা জাতির সামনে তুলে ধরতে পারেনি,সেদিন ব্যাংকের ভল্টে কতটাকা ছিল শেখ কামাল কত টাকা নিতে পেরেছিল।অথবা কি তেলেসমাতি করে নিয়ে যাওয়া টাকার ঘাটতি ব্যাংক কতৃপক্ষ পুরন করেছিল। আওয়ামী লীগের অহমিকার কারনে,প্রচার সেলের দুর্বলতার কারনে সেদিন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে পেরেছিল।জীবন দিয়ে বঙ্গবন্ধু প্রমান করেছেন বাঙ্গালি জাতিকে তিনি কত ভালবাসতেন।তাঁর গৃহিত পদক্ষেপ সারা পৃথিবীর নিয্যাতীত নিপিড়িত মানুষের পূজণীয় -অনুকরনীয়।আওয়ামী লীগের রাজনীতির হাতিয়ার,ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়িতে রুপান্তরীত হয়েছে। এখন কি সেই সমস্ত অপপ্রচার নেই?যদি না থেকে থাকে নারীকুলের সম্পত্তির আধিকার সংক্রান্ত আইনকে কেন্দ্র করে কিভাবে সরকার উৎখাতের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা করতে পারে।গুজব না চড়ালে আমাদের দেশের সম্মানীত মাওলানারা কিভাবে আন্দোলনে যেতে পারে।রাজাকার সাইদীকে চাঁদে দেখা যায় বলে গুজব ছড়িয়ে কোটি কোটি সাধারন মসুলমানের ইমান আকীদা বরবাদ করে শতবছরের ইবাদত নষ্ট করে কুপর বানিয়ে দিতে পারে। ৯৬এ জননেত্রীর সফলতা ছিল আকাশসম।গুটিকতক নেতার অহমিকা,খাই খাই ভাবের কারনে ২০০১ এর নির্বাচনে পরাজয় বরন করে নিতে হয়েছিল।সে দিনও যদি প্রচার সেল তাঁদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতেন,বিদেশ বিষয়ক উপকমিটি তাঁদের উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করতেন,তাহলেও চরম পরাজয় হতনা।গনতন্ত্রে জয় পরাজয় আছে,মেনে নিতে হয়।কিন্তু সফলতা থাকার পর ও যদি চরম পরাজয় হয় তাও কি মানা যায়? এইবারের দেশরত্মের সরকারের সফলতায় কি কোন প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে? চিরশত্রুর মুখ ফসকে যেখানে সফলতার গুন চলে আসছে সেখানে কেন ষড়যন্ত্র?এই পয্যন্ত দুইবারের সরকার পরিচালনায় ব্যার্থতার ক্ষেত্র কোথায় চিহ্নিত করে কেউ বলতে পারবে?শেখ হাসিনার দুরদর্শিতার,যুগ উপযুগি তড়িৎ সিদ্ধান্ত গ্রহনের দক্ষতা,বর্হিবিশ্বে তার ব্যাক্তিগত ইমেজ,গৃহিত পদক্ষেপ সমুহ কোথায় আছে ব্যার্থতা?তবে কেন সরকার উৎখাত করার জন্য ষড়যন্ত্র?শেখ হাসিনাকেও কি জীবন দিয়ে প্রমান করে যেতে হবে তাঁর পরিবারের সকলেই বাংলাদেশকে ভালবাসেন,সমৃদ্ধ বাংলাদেশ চান?শেখ হাসিনাকে উপলক্ষ করে শুধু বিলবোর্ড বসাবেন?তাঁর জন্য জনগনকে কিছুই বলার নেই? জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই বড় বড় বিলবোর্ড বসাতে পারেন,এম,পি,হতে পারেন,মন্ত্রী হতে পারেন,চেয়ারম্যান-মেম্ভার,নেতা হতে পারেন।আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখার ব্যাবস্থা করবেন না?

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন