তথ্য ও প্রযুক্তি খাতের ব্যাপকতার আগে**** আইনী কাঠামোর ব্যাপকতা বেশী প্রয়োজন**** ♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥ !♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥ আইসিটি আইন,৫৭ধারা, সামাজিক সাইট সাময়িক বন্ধকরন--ইত্যকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের উপকরন সমুহ নিয়ে নানাহ ঘটনা প্রবাহ ঘটছে।তথ্যও প্রযুক্তিগত বিষয়ক বিষয়ে নতুন প্রজম্মের নতুন ধারনার শুভলক্ষন সমুহকে জনমানসে ভীতিকর করে তুলতে একশ্রেনীর অপরাধচক্র গড়ে উঠেছে দেশের অভ্যন্তরে এবং দেশের বাইরে। এই কয়দিন আগেও অনেকেই বাহবা দিতে দেখেছি সাইবারযোদ্ধা খ্যাত আন্তদেশীয় হ্যাকার গোষ্টি সমুহকে।বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশের গুরুত্বপুর্ন অফিসিয়াল সাইট সমুহকে হ্যাক করে তাঁরা নাকি সাইবার যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে বাংলাদেশকে জয়ী করছেন,তাঁদেরকে অনেকে ধন্যবাদ দিতে দেখা গেছে।ক্রমবর্ধমান সাইবার হ্যাকারেরা সময়ের পরিক্রমায় সাইবার ক্রিমিনালে রুপান্তরীত হয়ে দেশ ও জনগনের অশান্তির কারন হয়ে দেখা দিতে পারে কয়জনেই বা চিন্তা করেছেন? সম্প্রতি ঘটে যাওয়া চাঞ্চল্যকর এটিএম কার্ড জালিয়াতির সঙ্গে দেশের প্রভাবশালী ৪০ থেকে ৫০ জন ব্যবসায়ী জড়িত বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম। মনিরুল বলেন, এ ঘটনায় জড়িত বিদেশি নাগরিক থমাস পিটারকে দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডে আনা হয়েছে। তিনি গত এক বছরে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এসব কাজে দেশের ৪০ থেকে ৫০ জন ব্যবসায়ী জড়িত। তিনি আরো বলেন, এদের মধ্যে মার্চেন্ট, রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী, সঙ্গীতাঙ্গন এবং ব্যাংকারদের বিশাল একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। পুলিশ ইতোমধ্যে ৩-৪ জনকে শনাক্ত করেছে। বাকীদের ব্যাপরে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এর আগে ইস্টার্ন ব্যাংক, সিটি ব্যাংক এবং ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের এটিএম বুথ জালিয়াতির ঘটনায় থমাস পিটারসহ সিটি ব্যাংকের ৩ জনকে গ্রেফতার করে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। থমাস পিটার জার্মান নাগরিক ছিলেন বলে নিশ্চিত করেন মনিরুল ইসলাম। এই বিদেশি নাগরিক জাল পাসপোর্ট ব্যবহার করতেন। শাহাজালাল বিমান বন্দরে বিপুল পরিমান এটিএম কার্ড় পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে পত্রিকান্তরে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান এর বক্তব্য থেকে স্পষ্ট ফুটে উঠেছে অপরাধিরা তথ্য প্রযুক্তিতে সাধারনের চেয়ে অগ্রগামি।তিনি এক সেমিনারে বলেছেন,---"অর্থ কার্যক্রম যত বেশি অটোমেশন তথা ডিজিটাল হবে, তত ঝুঁকি বাড়বে। সাইবার হ্যাকাররা আমাদের চেয়ে বেশি স্মার্ট। এজন্য সবধরণের নিরাপত্তা ফায়ার-ওয়াল নির্মাণ করতে হবে। বুধবার এক সেমিনারে এ কথা বলেন তিনি। একই সঙ্গে মোবাইলের মাধ্যমে যাতে ভ্যাট দেওয়া যায় সে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য এনবিআরের প্রতি আহ্বান জানান গভর্নর। দেশ ডিজিটালের দিকে যতই ধাবিত হচ্ছে, অপরাধ মাত্রায় ততই নতুন নতুন মাত্রা যোগ হচ্ছে।আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যে হারে টাকা গায়েব হওয়া শুরু হয়েছে এতে এই খাত বিপয্যয়ের মুখে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। আমাদের তথাকথিত বুদ্ধিজীবি গন আইসিটি আইন প্রনয়ন করতে গেলে হৈ হৈ শুরু করে দেন।সম্প্রতি মোবাইল রেজি: এর জন্য আঙ্গুলের চাপ কেন নেয়া হচ্ছে, এক হাইকোর্টের উকিল সাহেব রিট পিটিশন দায়ের করে দিয়েছেন।মামলা করা উকিল সাহেবের নাগরিক অধিকার স্বীকার করি। দুস্কৃতিকারিদের হাত থেকে আমার ছবি বিকৃতকরন,আমার ব্যাংক একাউন্ট এবং সঞ্চিত টাকার হেফাজত,অদ্ভুত ধর্মীয় কাহীনি প্রচার করে আমার ধর্ম বিশ্বাসের মুলে কুঠারাঘাত করন ইত্যাদি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আরও কঠিন আইনি ব্যবস্থাপনা চাই।আমার চাওয়ার মুল্য কি রাষ্ট্র বাধ্য নয়? আমার একটি জিজ্ঞাসা, কোন দেশে,কখন, কি করে নাগরিকের মৌলিক অধিকার সুরক্ষা করতে পেরেছে আইনী বেষ্টনি ছাড়া? দারিদ্রতা বিমোচনের জন্য রাষ্ট্র যেমন কোটি কোটি টাকা ভুর্তুকি দিয়ে সামাজিক বেষ্টনি নির্মান করে সফল হয়েছেন,তেমনি আইসিটি বলি আর ডিজিটাল বলি,-এটিকেও কঠোর আইনী বেষ্টনীতে নিয়ে আসতে হবে। দুস্কৃতকারিরা বিদেশ থেকে প্রযুক্তি এক্সপার্ট আমদানী করে, প্রযুক্তি সাইট ভাড়া নিয়ে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদী কায্যক্রম পরিচালনা করবে, বাংলাদেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠান সমুহ লুটপাট করে সব টাকা নিয়ে যাবে অথছ তাঁদের শাস্তি দেয়ার জন্য কঠোর আইন প্রনয়ন করা যাবেনা ইহা কিছুতেই একটা স্বাধীন সার্বভৌম দেশে সম্ভব হতে পারেনা। ৫৭ ধারা এবং সামাজিক সাইট গুলি কিছুদিন বন্ধ থাকাকালিন যে সমস্ত ব্যক্তিবর্গ ভিন্ন উপায়ে ঐ সমস্ত সাইট সমুহ চালু করে বিভিন্নধরনের ব্যঙ্গোক্তি করেছেন,ভঙ্গচিত্র এঁকে উস্মা প্রকাশ করেছেন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাঁদের চিহ্নিত করে ধরা হলে দেখা যাবে বেশির ভাগই জঙ্গি অথবা জঙ্গীবাদের সমর্থক।তাঁরা এবং তাঁদের সমর্থক মধ্যরাতের টকবাজেরা চায়না, আইনী কঠোরতায় তাঁদের অপরাধ প্রবনতায় ভাটা পড়ুক,তাঁদের অপরাধ কর্মে কোন বিঘ্ন ঘটুক। দেশের নাগরীকেরা চায় শান্তি, স্থীতিশীলতা,সম্পদ আহরন ও আহরীত সম্পদ সুরক্ষার গ্যারান্টি।রাষ্ট্র সাংবিধানীক ভাবেই বাধ্য নাগরীকের জানমাল,ইজ্জত সম্মান রক্ষায় যথা সময় যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহন করুক রাষ্ট্র।সুতারাং গুটিকতক মধ্যরাতের টকবাজের সমালোচনায় এই খাতে বার বার সরকার আইন প্রনয়নে উদ্যোগ নিয়ে পিছনে হঠে যাওয়া কোন অবস্থায় সুখকর হতে পারেনা। যারা বলে মতপ্রকাশে বাধা দেয়ার জন্য সরকার আইন প্রনয়ন করছে, বা মতপ্রকাশের অধিকার সরকার হরন করছে-- মতপ্রকাশের অধিকার না থাকলে এই কথাটিই তিনি কিভাবে জনসমক্ষে প্রচার করছেন? অবিলম্ভে আঞ্চলিক বা আন্তদেশীয় সরকারি উদ্যোগ গ্রহন করে সাইবার অপরাধ দমনে কায্যকর উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।তথ্য ও প্রযুক্তিকে জনকল্যানে নিবিড়ভাবে উপভোগ্য করতে কঠোর আইনী বেষ্টনী গড়ে তোলা সময়ের দাবী।মান্ধাতার আমলের প্রেস ও পাবলিকেন্সনস আইন দিয়ে বর্তমান ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল উপভোগের চিন্তা দেশকে গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দিতে পারে। ****************************** !**************************-** ♥♥জয় বাংলা♥♥জয় বঙ্গবন্ধু♥♥ জয়তু জাতির জনকের কন্যা ♥দেশরত্ম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা♥

  ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ডিজিটাল আইনের প্রয়োজন।সবার আগে প্রয়োজন তথ্যও প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন আইন শৃংখলা বাহিনী।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন