চ্যানেল আই অনলাইন অনলাইন ডেস্ক:- ভবিষ্যতে ইতিবাচক রাজনীতি করবে বিএনপি: খালেদা জিয়া। ♥~~~~~~~~~```~♥ বিএনপি’র ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, তার দল ‘ওয়ানডে ডেমোক্রেসি’তে বিশ্বাস করে না, ক্ষমতায় গেলে দেশে সুশাসনের জন্য দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ হবে, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করা হবে। ভবিষ্যতে ইতিবাচক রাজনীতি করবে বিএনপি। আমার কথা:- -অতীতে নেতিবাচক রাজনীতি করেছেন স্বীকার করে নিলেন।তবে কি তথ্য মন্ত্রী ইনু সাহেবের ধারনাই সঠিক?একসাথে ছিলেনতো--তাই পেটের খবর বন্ধুর আগেই বলে দিতে পেরেছেন। `৭২--'৭৫ এ জিয়ার বাসায় বিশেষ এসাইনমেন্টে নিয়োগ ছিলেন সাবেক বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রী ইনু সাহেবের--! একই বক্তৃতায় খালেদা :- আন্দোলন নস্যাৎ করতে ক্ষমতাসীন দলই নাশকতা ও অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করেছে বলে অভিযোগ করেন খালেদা জিয়া। এজন্য বিএনপি ও শরীকদের দায়ী করে হামলা-মামলা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। আমার কথা:--কয়লা ধুইলেও ময়লা যায়না।বক্তব্যের প্রথমে কি বলেন মাঝে আবার পুরাতন অভ্যেসের বসে সরকারের কাঁধে আগুন সন্ত্রাসের দোষ তুলে দেয়ার প্রয়াস--! একই সভায় খালেদা- কাউন্সিলে বর্তমান সরকারের সমালোচনার পাশাপাশি দলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হিসেবে ‘ভিশন ২০৩০’ ঘোষণা করেন খালেদা জিয়া। এই রূপকল্প অনুযায়ী অর্থনীতি,শিক্ষা, কৃষি, ধর্ম, খেলাধূলা ইত্যাদি খাত নিয়ে দলটির ভবিষ্যৎ কর্মপন্থার সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন তিনি। আগামী নির্বাচনে এই রূপকল্প বা ভিশন ধরেই নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করা হবে বলে জানান বিএনপি নেত্রী। আমার কথা:- তাহলে জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনার রুপকল্পও চুরি হয়ে গেল? না নকল রুপকল্প বানিয়ে বাজারে ছেড়ে দিল? তবে কি শেখ হাসিনার রুপকল্পের বাজারে কাটতি বেশি? ২০৩০ সালে খমতার আশা করে বিএনপি --! (বিএনপির আবালদের কথার প্রতিধ্বনি)।"রুপকল্প ২০৪১"ঘোষনার পর নেতৃস্থানীয় বিএনপির নেতারাও বক্তব্যে, বিবৃতিতে অপ-প্রচার করে বলেছিল,"শেখ হাসিনা জোর পুর্বক হলেও' ২০৪১'সাল পয্যন্ত খমতা দখল করে রাখবে। " তবে কি আমাদের মন্ত্রী নাসিম সাহেবের কথাই ঠিক। আগামী নির্বাচনের পরের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে--!! অংকের হিসাবেতো ঠিক আছে মনে হচ্ছে-!! হায়রে বিএনপি---হায়রে খালেদা খেই হারিয়ে কি বলতে কিযে বলেন নীজেই জানে না।আমি বহুবার বলতে চেষ্টা করেছি,বলেছি -"আওয়ামী লীগ আজ যাহা চিন্তা করে--অন্য রাজনৈতিক দল তা দশ/বিশ বছর পরে চিন্তা করে। ডিজিটাল বাংলাদেশের পরিকল্পনা ঘোষনা করার পর ব্যাঙ্গ করে চন্দ্র সুর্য্যকেও ডিজিটাল বলতেন বিএনপি। ডিজিটালের সুফল যখন মানুষের ঘরের দরজায় কড়া নাড়া শুরু করেছে তখন মুখ বন্ধ করে শুরু করেছে পরিবর্তনের বিরুদ্ধে নিরব আগুন সন্ত্রাস। "রুপকল্প২০২১" ঘোষনার পর বলা হল খমতার মেয়াদ ভারতের নিকট থেকে ২০২১ সাল পয্যন্ত নবায়ন করে এনেছে।এরই মধ্যে ভারতকে বাংলাদেশ দিয়ে দেয়ার চুক্তি সম্পন্ন করে রেখেছে।" "রুপকল্প ২০২১" এর সুফল যখন জনগনের দৃষ্টিসীমায় এসে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, তখন জনজীবনের পরিবর্তনের বিরুদ্ধে শুরু করে আগুন সন্ত্রাসের তান্ডব লীলা। তাণ্ডবের মধ্যেই শেখ হাসিনা যখন "রুপকল্প ২০৪১" ঘোষনা করেন তান্ডবের মাত্রা তখন শিখরে।খালেদা জিয়া সুরক্ষিত কক্ষে বসে ডিজিটাল সুবিধা নিয়ে বিবৃতি দিচ্ছে তাঁর অনুসারীরা জ্যান্ত মানুষ পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিচ্ছে।আর অপপ্রচার করা হচ্ছে শেখ হাসিনা ২০৪১ সাল পয্যন্ত খমতায় থাকার পারমিশন "দাদা বাবুদের" নিকট থেকে আদায় করে নিয়েছে- আমরা আর নির্বাচন করে কি লাভ। উত্তর পাড়াকে পয্যন্ত ষড়যন্ত্রের জালে জড়িয়ে ফেলা হয়েছিল। যখন কিছুই হলনা এবার বলছেন ছাত্র লীগের ছেলেরা পুলিশের পোষাক গাঁয়ে দিয়ে গুলী করে মানুষ হত্যা করছে। পুলিশ আইন শৃংখলা নিয়ন্ত্রনে রাখার স্বার্থে তাঁদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করছে, তারা বলে ছাত্র লীগ গুলী করেছে। আসল কথা হল বর্তমানের কর্মরত: সাধারন সিপাহী থেকে আরাম্ভ করে থানার ইনচার্জ পয্যন্ত তাঁদের ক্যাডার এবং শিবিরের ক্যাডার নিয়োগ দেয়া হয়েছিল,। তাঁদের বদ্ধমুল ধারনা 'আমরা দেখেশুনে আমাদের দলীয় ক্যাডারদের পুলিশে নিয়োগ দিলাম তাঁরা কেন আমাদের গুলি করবে।' তাঁরাতো মুলত: তাঁদের গুলী করছেনা, গুলি করছে সন্ত্রাসী, বোমাবাজদের। জনগনের সম্পদ রক্ষা করা পুলিশের নৈতিক দায়িত্ব--বিএনপি খমতায় গেলে মনে করে বাংলাদেশটাই তাঁদের, সবাইকে একইভাবে চিন্তা করাই তাদের ধর্ম। সর্বশেষে জনগনের মন থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে বলা শুরু করেছেন এবার "ইতিবাচক রাজনীতি"করবেন। "রুপকল্প ২০৩০"প্রনয়ন করবেন। অধিকতর গনতন্ত্রের জন্য দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট (পুরাতন বন্ধু জাসদের থীওরি) আইন সভা করবেন। আমি গত কয়দিন আগে একটি লেখায়ও উল্লেখ করেছিলাম বিএনপির কোন নীতি আদর্শ নেই।তাঁরা হাওয়ায় ভেসে দেশ শাষন করেছে।আগামী প্রজম্মকে এর জবাব দিতে হবে--বর্তমানের রাজনীতিবীদেরা। আওয়ামী লীগ থেকে রুপকল্প চুরি, জাসদের দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইন সভার নীতি হাইজ্যাক করে দেশ চালানো যাবেনা। রাজনীতিও পরিচালনা করা যাবেনা। নেতারা যেমন বিভিন্ন নীতি আদর্শ বিসর্জন দিয়ে একজায়গায় একত্রিত হয়েছেন খুনী জিয়া থেকে সুবিধার প্রলোভনে তেমনি জিয়াও 'ন্যাপের ধানের শীষ' জোরপুর্বক বন্দুকের নলের মুখে দখল করে রেডিমেট দল গঠন করে সবাইকে খমতার হালুয়া রুটির ভাগ বাটোয়ারা দিয়েছেন। খালেদা জিয়াও সেই পদাঙ্ক অনু সরন করে অন্য দলের নীতি আদর্শ চুরি -হাইজ্যাক করে হালুয়া রুটির ভাগ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কোনরকমে রাজনীতির মাঠে টিকে থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।গ্রামের একটা কথা বহুল প্রচলিত, "খোঁজা দুধে পোলা বাঁচেনা।" বিএনপির এই চাটুকারিতা,চুরি, হাইজ্যাক দিয়ে আর যাই হোক দেশও চলবেনা রাজনীতিও হবেনা। "পাতার বাঁধে জোয়ার আটকাতে পারবেনা।" ~~~~~~~~~~♥~~~~~~~~~ জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু জয়তু জাতির জনকের কন্যা প্রধান মন্ত্রী দেশরত্ম শেখ হাসিনা

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন