ইউপি নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সরকারের উদ্যোগ--জন বিচ্ছিন্ন বিরুদী দলকে উজ্জিবীত করতে পারেনি-- ♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥ ♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥ এবারই প্রথম সরকার এবং নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠ ও গ্রহনযোগ্য স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য বেশ কিছু নতুন রীতিনীতি প্রয়োগ করতে যাচ্ছেন।দলীয় মনোনয়নে স্থানীয় নির্বাচনে অভিজ্ঞতা না থাকায় সাধারনে কিছু ভুল বুঝাবুঝি আছে। তা কাটিয়ে উঠার জন্য সরকার আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করছে- সাধারনে দৃশ্যমান করার জন্য বেশ কিছু তড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন নির্বাচন কমিশন। দেশের বিরুদীদলের নেতাকর্মীদের মাঝে হতাশা, দোদল্যমানতা, মনোবল, দলের প্রতি আন্তরীকতা, দীর্ঘদিন ক্ষমতা না পাওয়ার আশংকা, সংগ্রামী লড়াকু মনোভাবের ঘাটতি হেতু নির্বাচন প্রতিযোগিতা মুলক হবে বলে মনে হয়না। দেশের কোথাও সংঘটিতভাবে বিএনপির প্রর্থীরা মনোনয়ন দাখিলের খবর পাওয়া যায়নি। এই সুযোগটি সরকারি দলের নেতৃবৃন্দ বেশ ভাল ভাবেই কাজে লাগানোর চিন্তায় আছেন। ইতিমধ্যে নীজেদের আত্মীয় স্বজনকে মনোনয়ন দিয়ে মাঠে নামিয়েছেন। গ্রহনযোগ্যতার অভাবে তাঁরাও নির্বাচনী আমেজ আনতে সক্ষম হচ্ছেননা। সর্বত্র আনন্দঘন পরিবেশের স্থলে বিস্বাদময় পরিবেশ বিরাজমান। সরকারি দলের প্রভারের বিপরীতে কোথাও কোথাও নিয়মতান্ত্রীক প্রতিবাদের সুযোগ থাকা সত্বেও বিচ্ছিন্ন ভাবে চোরাগুপ্তা হামলা চালানোর খবর পাওয়া যাচ্ছে। নীতি নৈতিকতাহীন নেতৃত্ব জনসম্পৃত্ত কর্মসুচিতে ভয় পেয়ে নির্বাচন কমিশনের অফিস ভাংচুরের মত সরকারি সম্পদ ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এদিকে সরকার এবং নির্বাচন কমিশন সর্বশক্তি নিয়োগ করেও ফললাভ হবে বলে মনে হয়না।নিস্তেজ বিরুদীদলকে সতেজ করে নির্বাচনী মাঠে নামানোর সরকারি উদ্যোগ যথাযথ হলেও তৃনমুলের নেতৃত্বে কোন প্রভাব রাখতে সক্ষম হচ্ছেনা। সর্বত্র গাবাঁচিয়ে চলার মনোভাবের রোগে ধরেছে বিরুদীদলের তৃনমুলে। কেন্দ্রীয়ভাবে নেতিবাচক প্রচারনা বন্ধ করে কর্মী উজ্জিবীত করার প্রক্রিয়া গ্রহন না করা পয্যন্ত বিএনপিকে দিয়ে আর নির্বাচন,আন্দোলন,সংগ্রাম কিছুই সম্ভব হবেনা।নির্বাচন কমিশনের সাম্প্রতিক নেয়া কতেক পদক্ষেপ তুলে ধরছি----- (১) প্রথমধাপের দু’টি ইউপির ভোট বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। উচ্চ আদালতের নির্দেশে দু’টি ইউপির ভোট বাতিল করা হয়েছে। ইউপি দু’টি হলো-ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার মুজিবনগর ও লালমোহন উপজেলার রামগঞ্জ। (২) গত ১১ ফেব্রুয়ারি ৭৫২টি ইউপির তফসিল ঘোষণা করে ইসি। এর মধ্যে নানা জটিলতায় ১৪টি ইউপির ভোট বাতিল আগেই করা হয়। বর্তমানে ৭৩৬টি ইউপিতে ২২শে মার্চ ভোট হবে। (৩) দ্বিতীয় ধাপে একটি ইউপির ভোট বাতিল করা হয়েছে। সেটি হলো-চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষীপুরমডেল ইউপি। (৪)আগামী ৩১ মার্চ ওই ইউপিতে ভোট হওয়ার কথা ছিল। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় ধাপে ৬৮৪টি ইউপির তফসিল ঘোষণা করা হয়। (৫)বিভিন্ন কারণে ১২টি ইউপির তফসিল বাতিল করা হয়। বর্তমানে ৬৭১টি ইউপি ভোট হবে। (৬) আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচন উপলক্ষে আট উপ-সচিবের নেতৃত্বে মনিটরিং টিম গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। (৭)এই টিমের সঙ্গে ইসি সচিবালয়ের ২৬জন কর্মকর্তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে উপ-সচিব সামসুল আলমকে চট্টগ্রাম বিভাগ, আবুল কাসেমকে ঢাকা বিভাগ, ইসরাইল হোসেনকে ময়মনসিংহ বিভাগ, মো. মতিয়ার রহমানকে বরিশাল ও সিলেট বিভাগ, ফরহাদ আহম্মদ খানকে রাজশাহী বিভাগ, আব্দুল ওয়াদুদকে খুলনা বিভাগ এবং রকিবউদ্দিন মন্ডলকে রংপুর বিভাগের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। (৮) ইসি সচিবালয়ের উপ-সচিব (আইন) মহসিনুল হককে আইনি দিকগুলো পর্যালোচনার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবেন। (৯) এবার ছয় ধাপে ইউপি ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ৭৩৬ টি ইউপির ভোট হবে ২২ মার্চ। এরপর ৩১ মার্চ ৬৭২টি ইউপি, ২৩ এপ্রিল ৭১১টি ইউপি, ৭ মে ৭২৮টি ইউপি, ২৮ মে ৭১৪টি ইউপি এবং ৪ জুন ৬৬০টি ইউপিতে ভোট হবে। উপরে উল্লেখীত পদক্ষেপ সমুহ নি:সন্দেহে সরকারের সুষ্ঠ নির্বাচনের ইঙ্গিতবহ। অতীতে কখনই এই পদক্ষেপ সমুহ নেয়া হয়নি। তথাপি বিএনপি সহ অন্যান্ন বিরুদীদলের নেতাকর্মীদের ভোটে অংশগ্রহন করার এবং দলবদ্ধ প্রচারনায় উৎসাহ যোগাতে পারেনি। বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নমিনেশন প্রাপ্ত নেতারা স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথে আঁতাতের মাধ্যমে ভোটের লড়াই থেকে সরে যাচ্ছে। এমতবস্থায় ভোটের আমেজ ধংস হয়ে নিস্তেজ, অনানন্দদায়ক, নির্বাচন প্রহসনের দিকে ধাবিত হচ্ছে। বিএনপি সরকারে যেমন ব্যর্থ্যতার ষোলকলা পুর্ন করে মঈন-ফকরুলদের মত ষড়যন্ত্রকারিদের ক্ষমতায় ঢেকে এনে নীজেদের দলীয় বিপয্যয়ের পথ পরিষ্কার করেছিল। বিরুধী দলের ভুমিকা পালন করতে গিয়ে সন্ত্রাস, বোমাবাজি, মানবতা বিরুধী অপরাধীদের পক্ষ নিয়ে জন সম্পৃত্ততা হারিয়ে গনতন্ত্র, নির্বাচন, আন্দোলন, সংগ্রামকেও বিপদাপন্ন করে তুলেছেন। নির্বাচনে প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্ধিতা না করলে, জনগনকে সম্পৃত্ত করে ভোট যুদ্ধে না নামলে নির্বাচন কমিশনের বা সরকারের কি করার আছে।এমতবস্তায় বিনাপ্রতিদ্বদ্ধিতায় নির্বাচিত হওয়ার কালচার শক্তভাবে শিকড় গেঁড়ে বসার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেয়া যায়না। সরকারি দলের মাঠকর্মীরা চাইবেই প্রভাব বিস্তার করে নির্বাচিত হতে। সকল সরকারের সময়ে এহেন পাশ্চাত্যের গনতন্ত্রে প্রভাব বিস্তারের ভুমিকা পরিলক্ষিত হয়েছে। তখনকার বিরুদীদলের অনড় ভুমিকার কারনে উজ্জিবীত নেতাকর্মী ভোটে ঝাপিয়ে পড়েও কারচুপি, ভোট ডাকাতি অনেক ক্ষেেত্রে প্রতিহত করতে পারেনি। অনস্বীকায্য ভাবে জোর, জবরদখল, হানাহানি, মারামারির মত অনভিপ্রেত ঘটনা সমুহ ঘটেছে। বর্তমানে চলমান স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিরুদীদলের কেন্দ্রীয় পয্যায়ে নেতীবাচক প্রচার, ব্যার্থ্য আন্দোলনের খতিয়ান, পেট্রোল বোমায় মানুষ পুড়িয়ে মারার মত নেতিবাচক কর্মকান্ড বলবৎ থাকা অবস্থায় তৃনমুলের নেতৃবৃন্দ উজ্জিবীত থাকার প্রশ্নই আসেনা। সুতারাং যা হওয়ার তাই হবে, নির্বাচন একতরফা, বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হওয়ার উদাহরনই সৃষ্টি হবে। সরকার বা নির্বাচন কমিশন যতই উদ্যোগ নিবে কোন লাভ হবেনা--.। ♥♥♥♥♥♥♥♥♥ জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু জয়তু জাতির জনকের কন্যা ♥দেশরত্ম প্রধানমন্ত্রী শেখহাসিনা♥

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন