‘পদ্মা সেতু নিয়ে আমরা যে বক্তব্য দিয়েছি তা রাজনৈতিক বক্তব্য---ব্যারিষ্টার মওদুদ আহাম্মদ।
(রুহুল আমিন মজুমদার)


পদ্মা সেতু দুর্নীতি সম্পর্কে মওদুদ বলেন--"পদ্মা সেতুর দুর্নীতি নিয়ে সে সময় আমরা যে বক্তব্য দিয়েছি তা রাজনৈতিক বক্তব্য। কানাডার আদালতে প্রমাণ হয়েছে পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়নি।" পদ্মা সেতুর দুর্নীতির অভিযোগে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তারা মামলা করতে পারবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি আরো বলেন---"গণতন্ত্র এক জিনিস আর সুশাসন আরেক জিনিস।" আমাদের দেশে ৪০ বছরেও কোনো গণতন্ত্রের চর্চা করা হয়নি। এমন কী আমরাও গণতন্ত্রের চর্চা করিনি।*"সাধারণ মানুষ কোনো সরকারকে মনে রাখে না মনে রাখে তার ইতিহাস। ক্ষমতায় থাকার সময় সে তার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কী রেখে গেল।(তথ্যসূত্র:--২০/২/০১৭ইং জাতীয় পত্রিকা সমুহ)

    সুধি পাঠক বন্ধুরা---জনাব মওদুদ আহাম্মদ ক্ষমতার রাজনীতির প্রথম সারির অন্যতম একজন নেতা। রাজনীতি সম্পর্কে তাঁর অভিজ্ঞতা অন্য বর্ষিয়ান নেতাদের তুলনায় কেবলই কম নয়।বলা যায় বহুলাংশে অনেকের চেয়ে ঢের বেশী--"আমি মনে করি।"
   তাঁর বক্তব্যের শেষাংশে তাঁদের সমুদয় শাষন সহ মোট ৪০ বছর গনতন্ত্র, সুশাষন ছিলনা উল্লেখ করেছেন।বাদবাকি বর্তমান সরকারের ছয়বছর গনতন্ত্র এবং সুশাষন উনার নিকট পরিলক্ষিত হচ্ছে।তাঁদের এতদিনকার বক্তব্য রাজনৈতিক বক্তব্য প্রকারান্তরে স্বীকার করায় এই সম্পর্কীত বিষয় আলোকপাত করা নেহাৎই দৃষ্টতার অন্তভুক্ত হবে-- মনে করি।

       তাঁর আজকের বক্তব্য আমার লেখার প্রারম্ভে দেয়ার অন্যতম কারন  "জাতির জনক বঙ্গবন্ধু"কে নির্মমভাবে খুন করার পর মওদুদ সাহেব সহ বেশ কিছু দলপল্টি বাজ নেতা রাজনীতিতে নতুন কিছু 'রাজনৈতিক সংস্কৃতি বা শিষ্টাচার' চালু করেছিলেন। তাঁদের নতুন আবিস্কৃত রাজনৈতিক ষ্টান্ডবাজি সম্পর্কে আমার ধারাবাহিক কিছু লেখার উপর সামাজিক মাধ্যমের "বন্ধুদের কিছু কিছু ক্ষেত্রে আপত্তি মূলক কমেন্ট ছিল।"
অদ্য তাঁদের উদ্দেশ্যে আমার বিগত লেখাগুলীর সত্যতা প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষে "জনাব মওদুদ সাহেব" এর বক্তব্যকে সামনে রেখে হুবহু প্রমান করার সুযোগ হাতছাড়া করা উচিৎ হবেনা মনে করে-"অদ্য পুরাতন অনেকগুলী লেখার সারমর্ম নতুনভাবে উপস্থাপন করা প্রয়োজন মনে করি।

    জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে ১৫ই আগষ্ট '৭৫ ইং রাতের আঁধারে স্ব-পরিবারে, স্বজনসহ হত্যার পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে কতগুলী অনৈতিক, অর্বাচিন, চেতনা বিনাশী, অঙ্গিকারহীন, নৈরাশ্যবাদি, অ-রাজনৈতিক শব্দমালার প্রবর্তন করে--"হত্যাকারি এবং তাঁদের পরবর্তী সহযোগীরা"।

   উল্লেখীত শব্দাবলী শুধুমাত্র অত্রাঞ্চল নয়---"ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনৈতিক কালচারেও কোনদিন ছিলনা। প্রতিতযসা-প্রতিষ্ঠিত জাতীয়নেতা দূরে থাকুক মাঠপয্যায়ের সার্বক্ষনিক নেতাকর্মীদের চারিত্রিক বৈশিষ্টেও ছিলনা। এবং কি বৃহত্তর ভারতীয় উপমহাদেশের জনগনের চিন্তাচেতনাও ছিলনা।"

সম্মিলীত অশুভশক্তির উদ্দেশ্য ছিল সুদূরপ্রসারী---তাঁদের উদ্দেশ্য ব্যাক্তি,সমাজ, রাষ্ট্র তথা সর্বত্র শতভাগ সফল হয়েছে আমি মনে করি। সংক্ষিপ্তভাবে তাঁদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে অদ্য পূরনাবৃত্তি করা প্রয়োজন মনে করি---।

(ক) গনতান্ত্রিক শাষনব্যবস্থাকে ভীতিকর শাষন ব্যবস্থায় প্রতিষ্ঠিত করা।
(খ) শোষনমুক্ত সমাজব্যাবস্থা কায়েমের লক্ষে সমাজতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় সম্পদের সুষম বন্টনকে বিতর্কিত করে সমাজে উচ্চবিত্ত তৈরির পথ পরিষ্কার করা।
(গ)বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদকে দ্বিখন্ডিত করে শক্তিহীন করা।
 (ঘ)ধর্মনিরপেক্ষতাকে অকায্যকর করে শ্বাসত বাঙ্গালী হিন্দু-মুসলিম জাতিগত বন্ধনে ফাটল সৃষ্টি করে দুর্বল করা।

   উল্লেখিত কায্যসিদ্ধির মানসে কুচক্রিমহল রাজনীতিতে কিছু নতুন শব্দ আমদানী করে--যেমন---
(১) "বহুদলীয় গনতন্ত্র" শব্দটি উদ্ভাবন এবং বহুল প্রচলিত শব্দে রুপান্তর।
(২) "বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদে"র উদ্ভাবন ও সংবিধানে সংযোজন।
(৩) সংবিধানে "রাষ্ট্রধর্ম প্রথা প্রবর্তন ও বিছমিল্লাহ সংযোজন"।
(৪) "বিরাষ্ট্রীয় করন" শব্দের আমদানী রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে কায্যকর।

 (ক) গনতান্ত্রিক শাষনে বা রাষ্ট্রব্যবস্থায় দু'টি ধারা সম্পর্কে কমবেশী আমরা সকলে জানি।(১) মন্ত্রী পরিষদ শাষিত সরকার(২) রাষ্ট্রপতি শাষিত সরকার।
উভয় শাষন পদ্ধতি গনতন্ত্রের সূচনালগ্ন থেকে অদ্যাবদি স্বীকৃত এবং বিশ্বব্যাপি সমাদৃত "গনতান্ত্রিক শাষন"পদ্ধতি হিসেবে পরিচিত। গনতন্ত্রে ধর্মবর্ণ, জাতিগোষ্টি, দলমতের সহবস্থান নিশ্চিত থাকার গ্যারান্টি বিদ্যমান থাকায় বিশ্বসমাজ তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হয়েছে।গনতন্ত্র তাঁর নীজগুনের মহত্ব বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে দিয়ে একসময়ের কালজয়ীদর্শনের ধারনা 'মার্ক্সবাদ-লেনিনবাদ' সহ অপরাপর শাষন ব্যবস্থা সমূহকে "রাষ্ট্র শাষনে" বিশ্বব্যাপি অকায্যকর, অবাঞ্চিত, অ-জনপ্রতিনীধিত্বশীল শাষন প্রমান সাপেক্ষে নিজেই সর্বোচ্ছ আসনটি নিশ্চিত করতে পেরেছে। গনতন্ত্রের প্রচলিত সজ্ঞায় নতুন কোন শব্দ সংযোজনের মাধ্যমে "নতুনভাবে সজ্ঞায়িতকরন কখনই সম্ভব নহে।শুধু গনতন্ত্র নয়---অন্যকোন ঐশী কিতাব বা মনুষ্যসৃষ্ট দর্শন, কবিতা, প্রবন্ধ, সাহিত্যেও রচয়িতার অনুমতি ব্যাতিরেকে সংশোধন, সংযোজন, বাতিল গ্রহনযোগ্য নয়।
        গনতন্ত্র যেহেতু পুর্বপ্রকাশেই সজ্ঞায়িত, পরিক্ষীত, পরিশোধিত এবং বিশ্বব্যাপি প্রচলিত আধুনিক, বিজ্ঞান সম্মত, উন্নত, সমৃদ্ধ রাষ্ট্র সফল "শাষন ব্যাবস্থা---"সেহেতু নতুন কোন শব্দ বা শব্দসমষ্টি যুক্ত করার অর্থই গনতন্ত্রকে ফ্যাসিজমে রুপান্তরের চক্রান্ত।" গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে বিদ্যমান ধর্মবর্ণ, জাতিগোষ্টি, লিঙ্গবৈশম্যের সহবস্থান নিশ্চিতে সুনির্দিষ্ট গ্যারান্টিক্লজ উল্লেখ আছে।কোন বিশেষ ধর্ম, বর্ণ, গোষ্টি বা নির্দিষ্ট জাতিকে প্রাধান্য দেয়ার কোন নীতি গনতন্ত্রে স্বীকৃত নয়। সম্পদ আহরন ও বন্টনের নীতিমালা সুস্পষ্ট থাকায় সম্পদ পুঞ্জিভুত করার সুযোগ নেই।
      জাতি, ধর্ম, বর্ণের চিন্তাচেতনা, অনুভূতির যেহেতু সহবস্থান নিশ্চিত ও স্বীকৃত সুতারাং উক্ত স্পর্ষকাতর বিষয়াবলীর সাংঘর্ষিক রুপ ধারন করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্র বলপ্রয়োগের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রনের ক্ষেত্রে "প্রচলিত আইনসিদ্ধ" ব্যবস্থা গ্রহনে কোন বাধা থাকেনা। রাষ্ট্র কতৃক স্বীকৃত দুবৃত্তায়ন নিয়ন্ত্রনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে মানবাধিকারের আন্তজাতিক সনদেরও লঙন হয়না বিধায় আন্তজাতিক মহলের পক্ষ থেকেও চাপপ্রয়োগের দৃষ্টান্ত চোখে পড়েনা। ফলে সমাজ থাকে হিংসা হানাহানীমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, বৈশম্যহীন--রাষ্ট্র মনযোগি হতে পারে জনগনের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে।

   জাতির জনককে হত্যা করে অ-শুভ শক্তি গনতন্ত্রের ধারনা, চরিত্র, সজ্ঞা পরিবর্তন করে জনমানসে গনতন্ত্র সম্পর্কে ভীতি সঞ্চারের উদ্দেশ্যে গনতন্ত্রের মুলনামের আগে "অতি-গনতান্ত্রিক" ভাবপ্রকাশের মাধ্যম "বহুদলীয়" যুক্ত করে "বহুদলীয় গনতন্ত্র" প্রথা চালু করে। "গনতন্ত্রের ব্যাপকতাকে শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলের সীমানায় সীমাবদ্ধ" করে মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত সাম্প্রদায়িক, ধর্মভিত্তিক অ-শুভ রাজনৈতিক শক্তিসমুহকে রাজনীতিতে পুর্ণবাসিত করে।
     তাঁদের প্রচলিত "বহুদলীয়গনতন্ত্র নামের অন্তরালে যেহেতু ধর্মবর্ণ, জাতিগোষ্টি, লিঙ্গভেদাবেদ উপেক্ষিত সেহেতু নির্ধারিত রাজনৈতিক শক্তির বাহিরে সমাজে বসবাসরত: অন্যান্ন সামাজিক শক্তিসমুহ নিরাপদ রইলনা। জাতির জনক হত্যার নেপথ্যনায়ক, মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী বাহিনীর চর মেজর জিয়াউর রহমান প্রচলিত "গণতন্ত্র" এর সঙ্গে "বহুদলীয়" যুক্ত করে প্রকারান্তরে ফ্যাসিবাদী শাষনের সূচনা করে।

(খ) দ্বিতীয়ত গনতান্ত্রিক সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শোষনহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষে উৎপাদিত পণ্যে শ্রমিকের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করে অর্থনৈতিক বৈশম্য দুরিকরন করার লক্ষে উৎপাদনীযন্ত্র রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রনে রাখার মহৎ উদ্দেশ্যে বৃহৎ শিল্পকারখানা জনগনের সম্পদের রুপান্তরের প্রক্রিয়া  "জাতিয়করন" প্রথাকে বিলুপ্ত করে।
   মেজর জিয়া রাষ্ট্রীয় উক্ত কাঠামোর সংজ্ঞা পরিবর্তন করে শ্রেনীবৈশম্য সৃষ্টির মাধ্যমে "শোষক--শোষিত" শ্রেনী তৈরীর লক্ষে "জাতীয়করন" স্থলে "বিরাষ্ট্রীয়করন" শব্দটি যুক্ত করে। ফলে "সাংবিধানিক" ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে রাষ্ট্রীয় সম্পদ "পানির দামে--কোন কোন ক্ষেত্রে নামমাত্র অর্থের বিনিময়ে" রাষ্ট্র কতৃক "ব্যাক্তি ও গোষ্টি"র বরাবরে হস্তান্তর করে সমাজে এলিটশ্রেনী তৈরীর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে।যে শ্রেনীটির বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে অত্রাঞ্চলের আপামর জনগন অস্ত্রহাতে নিতে বাধ্য হয়েছিল, দীর্ঘ নয়মাস মরণপণ যুদ্ধ করে পরাজিত করেছিল তাঁদের উত্থান নিশ্চিত করা হয়।
পরাজিত এলিট শ্রেনীর হাতে "রাষ্ট্রীয় সম্পদ" তুলে দিয়ে সমাজে পুন:জীবিত করে মেজর জিয়া দ্রুত নব্যকোটিপতির একটি শ্রেনীর বিকাশ ঘটায়। তাঁরাই পরবর্তীতে রাষ্ট্রীয় সম্পদের প্রাচুয্যে বলিয়ান হয়ে অ-শুভশক্তির পাহাদারের ভূমিকায় অবতিন্ন হয়। উক্ত গোষ্টি রাষ্ট্রীয় সম্পদের অবৈধ দখল হাতে পেয়ে "শ্রমিক-কর্মচারী"দের শোষনের মাধ্যমে রাতারাতি টাকার কুমিরে পরিণত হয়।
তাঁরা পুর্বপরিকল্পিত ভাবে নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে কলুসিত করার লক্ষে নির্বাচনে অঢেল টাকা খরছ করার রীতি প্রবর্তন করে। ছাত্র-যুবকের হাতে অঢেল টাকা তুলে দিয়ে তাঁদের নৈতিক অধ:পতন ঘটিয়ে রাজনীতি নিয়ন্ত্রকের কাঠি নিজেদের দখলে নিয়ে যায়--নির্বাচনে আমদানী ঘটায় পেশীশক্তির। এমত:বস্থায় সত্যিকারের সার্বক্ষনিক রাজনীতিবীদদের রাজনীতিতে অবস্থান ও জনগনের সেবা  করা কঠিন হয়ে পড়ে।ফলে সহজে রাজনৈতিক মাঠ দখলে নিয়ে তাঁরা "রাজনীতিকে সময় কাটানোর মাধ্যম, উত্তম বিনিয়োগে পরিণত" করে।
লুটেরা ধনিকশ্রনী রাজনীতির নিয়ন্ত্রন হাতে নিয়ে--সর্বস্তরের ত্যাগি নেতাকর্মী, আদর্শিক নেতাকর্মী, মেধাবী ও জ্ঞানীদের রাজনীতি থেকে বিতাড়ন প্রক্রিয়া শুরু করে। ফলে রাজনীতিতে  সার্বক্ষনিক আদর্শিক রাজনীতিবীদের সংকট সরকারে, রাষ্ট্রে, সমাজে দিনে দিনে প্রকট আকার ধারন করেছে।
তাঁর প্রকৃষ্ট প্রমান বিগত কয়দিন আগে শিশুদের পাঠ্যপুস্তক রচনায়ও সুস্পষ্ট হয়ে সচেতন মহলের নজরে এসেছে।দল ক্ষমতায় থেকেও দলীয় আদর্শ বাস্তবায়নে মনযোগী না হয়ে অ-শুভ শক্তির হুমকি আমলে নিয়ে এলিট শ্রেনীর পরামর্শে "দলীয় আদর্শ বহিভূত নীতি" অনুসরন করে সরকার পরিচালনায় বাধ্য হচ্ছে 'আওয়ামী লীগের ন্যায় আদর্শবাদী দল এবং তাঁর নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকেও।

(গ) জাতীয়তাবাদ একটি দেশের বসবাসরত:  সংখ্যা গরিষ্ট মানুষের কৃষ্টি, সংস্কৃতি,আচার আচরনের ধারক বাহক। লক্ষ করুন--"মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল জাতির স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাকল্পে। জাতির রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্যে অন্য জাতিকে বিতাড়ন প্রয়োজন ছিল বলে মুক্তিযুদ্ধের প্রয়োজনীয়তা অবশ্যাম্ভাবি হয়ে উঠে। ফলে দীর্ঘ নয়মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে বিজাতীয়দের পরাজিত করে আবহমান কাল বসবাসরত: জাতিটি "বাংলাদেশ"  নামে রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠা করে।
'১৬-ই ডিসেম্বর ১৯৭১ ইং সালের আগে অত্রাঞ্চলে কারা আবাহমানকাল আগে থেকে বসবাসরত: ছিল? তাঁরা কি "বাংলাদেশী না বাঙ্গালী"? বাংলাদেশী জাতীর অত্র ভুখন্ডে কোনকালে কোন অস্তিত্ব ছিল কি? ১৬-ই ডিসেম্বর ১৯৭১ইং যে জাতি মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বিজাতীয় শাষকদের বিতাড়ন করে "স্বতন্ত্র জাতি সত্বা"র আত্বপ্রকাশ নিশ্চিত করেছিল সেই জাতিকে ১৯৭৬ ইং সালে বাংলাদেশী জাতির মাধ্যমে কি উচ্ছেদ করা হয়েছিল? ১৯৭১ ইং সালে বাংলাদেশ যদি স্বাধীন হয় উক্ত দেশে বসবাসরত: মানবগোষ্টির জম্ম কিভাবে ১৯৭৬ ইং সালে হয়? যুদ্ধ কি বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী আদর্শের অনুসারী জ্বীনপরি করে তাঁদের বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের আদর্শে অনুসারী ''মানবগোষ্টি'' বসতি স্থাপনের অপেক্ষায় ১৯৭৬ ইং সাল পয্যন্ত মুক্ত ভুখন্ড পাহারায় ছিল?

এই অদ্ভুত, উদ্ভট, প্রতারনা মুলক, অত্যাচায্য, কিম্ভুতকিমাকার আদর্শ "বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের" ধারনা জনমনে গেঁথে "বাঙ্গালীজাতি"র জাতীয়তাবোধের চেতনাকে দ্বিখন্ডিত করে প্রথমেই শক্তিহীন করার চক্রান্তে অশুভ শক্তি সফল হয়। জম্মের পাঁছ বছরের মধ্যে শিশুবস্থায় 'বাঙ্গালীজাতী' স্পষ্টত:ই "বাংলাদেশী-বাঙ্গালী" দুই চেতনায় দ্বিখন্ডিত হয়ে পড়ে। শক্তিহীন, দ্বিখন্ডিত জাতিকে অ-শুভশক্তির ক্রিড়ানকে পরিণত করে অন্ধকার যুগে ফিরিয়ে নিতে তাঁদের আর কোন সমস্যা রইলনা।

(ঘ) আমরা জানি---গনতন্ত্র এবং ইসলামীজম সাঁপে নেউলে সম্পর্ক।গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ধর্ম, বর্ণ, জাতি, লিঙ্গের কোন প্রকার প্রাধান্য নেই।রাষ্ট্রের চোখে সকলেই সম অধিকার ভোগ করবে, সমমায্যদায় বসবাস করার অধিকার রাষ্ট্রীয় ভাবে সংরক্ষিত থাকে।অপরদিকে ইসলামীজমে শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের একক প্রধান্য থাকবে।অন্যান্ন ধর্মের অনুসারীগন ইসলাম ধর্মের অনুগ্রহে প্রাপ্ত সুবিধা নিয়ে বসবাস করার অধিকার থাকবে।
অশুভ শক্তির প্রেতাত্বারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে সম্পুর্ণ "গনতন্ত্রের বিপরীত ধর্মকে রাষ্ট্র পরিচালনায় সংযুক্ত করে। ধর্মের শ্বাসত মানবিকরুপকে বিকৃতরুপে প্রতিস্থাপনের মানসে অতিক্ষুদ্রাংশকে রাষ্ট্র পরিচালনায় যুক্ত করে সংখ্যাগরিষ্ট ইসলামধর্মের অনুসারী মসুলমানদের সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে তাঁদের আস্থা আর্জনের প্রতি মনযোগী হয়। গনতন্ত্র এবং ধর্মের সহবস্থান নিশ্চিত করা হয়েছে মর্মে একদিকে "সাক্ষাত রাষ্ট্রীয় প্রতারনা অন্যদিকে ধর্মীয় প্রতারণা"র আশ্রয় গ্রহন করে। অত্যাচায্য ঘটনাটি লক্ষ করলে বুঝতে কষ্ট হওয়ার কথা নয়---"সম্পুর্ণ আল্লাহর কোরান এবং নবীজির হাদিস বহিভুত বেদা'তি "মনুষ্যসৃষ্ট রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি"র অভ্যন্তরে "আল্লাহ প্রদত্ত আসমানি কিতাবের পবিত্র আয়াত "বিছমিল্লাহ" সংযোজনের মাধ্যমে "মহান আল্লাহর সঙ্গেও প্রতারনার আশ্রয় গ্রহন করেছে। "পাক কোরান ভিত্তিক "ধর্মীয় শাষনব্যবস্থা" কায়েম না করে ধর্মকে মনুষ্যসৃষ্ট দর্শন "গনতন্ত্রের" অভ্যন্তরে প্রবেশে--"ধর্মকে করেছে অপমান, অপদস্ত, কুলুষিত "গনতন্ত্র"কে করেছে বিপদগামী।"


      উল্লেখিত কায্যাদি সম্পন্নকরন ও রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে সম্পুর্ণ বাস্তবায়িত করা একক দল ও গোষ্টি, সামরিক বা বেসামরিক শক্তির পক্ষে দীর্ঘদিন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা সম্ভব নাও হতে পারে।পরবর্তী রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারি শক্তিকে তাঁদের নিয়ন্ত্রনে রাখার উদ্দেশ্যে রাজনীতিতে নতুন শব্দের আমদানীর সাহায্যে "রাজনীতির নতুন সংস্কৃতি" প্রচলন করার নিমিত্তে নিম্নোক্ত শব্দরাজী সমাজের সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়া হয়----
 
(১) নিত্য দল পরিবর্তনের ধারা অক্ষুন্ন রাখার স্বার্থে "এলাকার উন্নতি" শব্দের আমদানী করে "জাতীয় রাজনীতি"কে অঞ্চলপ্রীতির রাজনীতিতে কেন্দ্রীভূত করে।

 (২) মুক্তিযুদ্ধে বিলুপ্ত 'প্রাসাদ ষড়যন্ত্র'কে উজ্জিবীত করে "ফ্যাসিষ্ট শাষন কায়েমের লক্ষে সর্বত্র গোপনীয়তার নীতি "ঘরোয়া রাজনীতি ও সংলাপ" শব্দের আমদানী করে।ফলে গনতন্ত্রের সৌন্দয্য প্রকাশ্যরুপ সকল পক্ষের উপস্থীতিতে প্রকাশ্য সভা,সমাবেশ, আন্তদলীয় বৈঠক এবং আন্তদলীয় নেতাদের প্রকাশ্য বৈঠক ও মেলামেশার রাজনৈতিক শিষ্টাচারের মুলে কুঠারাগাত করা হয়।কালক্রমে উক্তব্যাধি শীর্ষস্থানীয় নেতদের চোখদেখাদেখি পয্যন্ত বন্ধ হয়ে 'জাতীয় সমস্যা' সমাধানের সকল পথ রুদ্ধ করে দেয়া হয়।

(৩)রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে কিছু নেই শব্দের আমদানী----"সর্বদা রাজনৈতিক নেতাদের নীতি-আদর্শ পরিবর্তনের ধারার প্রবর্তন করে সকল সময়ে ক্ষমতাসীন দলের উচ্ছিষ্ট ভাগাভাগির পথ পরিস্কার এবং মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকার বিরুধীদের নিত্য একই ঠিকানা ব্যবহারের যুৎসই শব্দই হচ্ছে "রাজনীতিতে শেষ কথা নেই।"

(৪)রাজনীতিবীদদের সমাজে অ-বিশ্বস্ত, অ-গ্রহনযোগ্য, অ-র্বাচিন, অপ্রয়োজনীয় প্রানীতে রুপান্তরের লক্ষে--"রাজনীতিতে মিথ্যা বলা যেতে পারে" শব্দমালার প্রবর্তন।" সত্যকে হাজার বার উচ্চারনের মাধ্যমে মিথ্যায় পরিণত করে গুজুবের জম্ম দেয়াই ইহার লক্ষ।উক্ত শব্দমালার প্রয়োগের মাধ্যমে বিগতদিনে  সত্যকে মিথ্যা, মিথ্যাকে সত্যে পরিণত করার শত উদাহরন পরিলক্ষিত হয়েছে। তৎক্ষনাৎ ন্মিথ্যা গুজুব রটিয়ে লক্ষ লক্ষ মসুলমানের ইমান আকীদায় চিড় ধরাতেও তাঁদের সামান্যতম বুক কাঁপেনি।আল্লাহর কোরানকে কল্পিত হিন্দুযুবকের পায়ের নীছে নিতেও তাঁদের দ্বিধা হয়না, কাবার উপর দেবিমুর্তি স্থাপনেও তাঁদের হাত সামান্য কাঁপেনা।

(৫) রাজনীতি কঠিন করার ঘোষনার প্রতিফলনে ব্যাবসায়িদের ঢেকে এনে রাজনীতিবীদদের সমান্তরালে প্রতিষ্ঠা--"রাষ্ট্রকে বিরাজনীতিকরনের সফল উদ্যোগ বটে। রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাটের মাধ্যমে ধনিক শ্রেনী সৃষ্টি এবং তাঁদেরকে রাজনীতিতে পুর্ণবাসিত করে তাঁদের দ্বারা সার্বক্ষনিক, আদর্শিক, মেধাবি রাজনীতিবীদদের রাজনীতির অঙ্গন থেকে হঠানোর অভিনব এই ফর্মুলার জনক মেজর জিয়াউর রহমান। তিনি অত্যান্ত সফলতা এবং দক্ষতার সঙ্গে উক্ত উক্তির যথাযথ বাস্তবায়ন করে রাষ্ট্রের সর্বত্র উহার প্রতিফলনের স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়েছেন।ব্যাক্তি, রাষ্ট্র, সরকারে পরবর্তীতে উক্তনীতি তাঁর পরবর্তী শাষকেরাও যথাযথ অনুসরনের ফসল বর্তমান প্রজম্ম মুল্য পরিশোধের পরেও ভোগ করতে বাধ্য হচ্ছে বা রাষ্ট্র বাধ্য করছে।
  যেমন--উচ্চ আদালত কতৃক জিয়া, এরশাদ শাষনকাল অবৈধ ঘোষনার পরেও তাঁদের সংবিধান সংশোধনের ধারাগুলী যথারীতি রাষ্ট্র অনুসরন করতে বাধ্য হচ্ছে, রাষ্ট্রের নাগরিককেও তাঁর আইন প্রতিনিয়ত  বাধ্য করছে।

(৬) "রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে ব্যবহারিক জ্ঞানের প্রাধান্যের স্থলে পুঁথিগতজ্ঞানে"র প্রাধান্য দিয়ে তাঁদের আদর্শ, উদ্দেশ্য প্রচার প্রচারনার তল্পিবাহক গোষ্টির সৃষ্টি। রাজনীতিবীদের স্থলে রাজনীতি বিশ্লেষক, বুদ্ধিজীবির স্থলে শুসিল সমাজ, সামরিক জ্ঞানের অধিকারির স্থলে সামরিক বিশ্লেষক, অর্থনীতিবীদের স্থলে অত্থনীতি বিশ্লেষক, সমাজ সংস্কারক, ইউনিয়ন বা সংঘ- সমিতির স্থলে এনজিও ইত্যাদি শব্দমালা প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে সমাজের সর্বস্তরে একশ্রেনীর টাউট বাটপার, অতিকথক, পরচর্চা, পরনিন্দাকারীর উদ্ভব ঘটিয়ে জনমনে বিরুপ প্রভাব সৃষ্টির চিরস্থায়ী রীতি প্রবর্তন করেছেন বিগত দুইযুগের শাষনে অশুভ শক্তি।

      টাউট শ্রেনীটি জীবনে রাজনীতির পথে একপাও না দিয়ে রাজনীতির তপ্ত বাক্য সমুহ প্রতিনিয়ত পত্র-পত্রিকায়, ইলেক্ট্রিক মিডিয়ায় আওড়ে যাচ্ছে। ফলে জনমনে দেখা দিচ্ছে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে সামাজিক অস্থিরতা।অশুভ শক্তির উদ্দেশ্য শতভাগ এক্ষেত্রে সফলতা লাভ করেছে আমি মনে করি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবি শিক্ষক ছাত্রদের পাঠদানের আগাম  প্রস্তুতি গ্রহন না করে; টেলিভিশনে রাতে কার বিরুদ্ধে কি বলে বক্তব্য শুরু করবেন বা নতুন করে রাজনীতি সম্পর্কে কি বলবেন তা নিয়ে ঘরে বসে গভেষনায় কাটিয়ে দিচ্ছেন দিনের পর দিন রাতের পর রাত। ফলে ছাত্ররা বঞ্চিত হচ্ছে উপযুক্ত গভেষনাধর্মী শিক্ষা থেকে জাতি দেখছে বাচাল ভঙ্গির কতিপয় টাউটের অতিকথনের ফুলঝুরি।

 (৭) "রাজনীতি রাজার নীতি" বহুল প্রচারনার উদ্যোগ গ্রহনের মাধ্যমে রাজনীতিকে সাধারনের নাগালের বাহিরে নেয়ার প্রক্রিয়ার সফল প্রয়োগের মাধ্যমে সাধারন ঘরের অতিশয় সৎ ছাত্র, যুবক রাজনীতির মাঠ ছেড়ে পারিবারিক অর্থনৈতিক উন্নতির প্রতি মনযোগী হতে উৎসাহিত হয়ে পড়ে। তাঁদের স্থান দখল করে ধনী অসৎ ব্যাবসায়ীর টাকায় কেনা অতিশয় অসৎ, দুবৃত্ত, সমাজবিরুধী ছাত্র নামধারী অ-ছাত্র, বখাটে যুবক, সমাজের টাউট বাটপার শ্রেনী।

(৮)রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গ- প্রত্যঙ্গে অভ্যন্তরীন সমিতি ও ইউনিয়নের বার্গেনিং শক্তি ও ক্ষমতা বিলুপ্ত করার লক্ষে বিদেশীদের আর্থিক সহায়তায় অর্থলোপাটকারি "এনজি"ও শব্দের আমদানী করে। রাষ্ট্র শক্তির সমান্তরালে এনজিও শক্তিকে অনেকক্ষেত্রে রাষ্ট্রশক্তির বিকল্প শক্তিরুপে আত্মপ্রকাশের যাবতীয় কায্যাদি সম্পন্ন করে প্রতিনিয়ত রাষ্ট্রের সংঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার উপযোগী করে গড়ে তোলে। এনজিও কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠে জনগনের রক্তচোষা, অসৎ চরিত্রের ভদ্রবেশী এক সুচুতুর নাগরিক গোষ্টি। তাঁরা প্রতিনিয়ত রাষ্ট্রীয় শুভ উদ্যোগের বিরুধীতার মাধ্যমে বিদেশী শক্তির এজেন্ডা বাস্তবায়নে তাঁদের তৎপরতা সদা অব্যাহত রেখে দেশের উন্নয়ন, অগ্রগতিতে বিরাট বাঁধার সৃষ্টি করে রাখে।
        কতিপয় এনজিও ইহুদীদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষে ইসলাম ধর্মে হারাম সুদের ব্যবসাকে ইসলামীকরন করে দিব্যি চড়া সুদের ব্যবসা জমজমাট চালিয়ে যেতেও তাঁদের বিবেকে সামান্যতম নাড়া দেয়না।

  সুধী পাঠক বন্ধুরা--এবার সংক্ষিপ্ত আলোচনার মাধ্যমে সম্মিলীত অ-শুভশক্তির উদ্দেশ্য সম্পর্কে কিঞ্চিত আলোচনা করা প্রয়োজন মনে করি।

(ক) রাষ্ট্রের ভিত্তি "সাংবিধানিক পদপদবী" সমূহকে সর্বদা বিতর্কীত করে আইনের শাষন ভুলুন্ঠিত করার প্রক্রিয়া গ্রহন। গনতন্ত্র চর্চায় প্রতিনিয়ত বাঁধার সৃষ্টি করে গনতান্ত্রিক শাষন ব্যবস্থাকে অকায্যকর, অগ্রহনযোগ্য প্রমান সাপেক্ষে ফ্যাসিজম কায়েমের পথ সুগম করা।
(খ)রাষ্ট্রের সর্বত্র অরাজকতা, বিশৃংখলা, নাশকতা, হানাহানী, হত্যা, গুম, বৈশম্যের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় কাঠামো ভঙ্গুর করে তোলা।গনতন্ত্রের মুল বৈশিষ্ট সর্বস্তরে জনগনের নিকট জবাবদিহীতাকে বাধাগ্রস্ত করে লুটপাটের সংস্কৃতি চালু রেখে ক্রমান্বয়ে রাষ্ট্রকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা।

(গ)মুক্তিযুদ্ধের অর্জনকে বিতর্কীত করে তাঁর অন্তনিহীত শক্তি ধ্বংস করা।

(ঘ)স্বাধীনতার সুফল প্রাপ্তি থেকে জনগনকে বঞ্চিত রেখে "৭১ এর আগের পরাধীনতাই উত্তম ছিল, চিন্তাচেতনা জনমনে গেঁথে দেয়া।

 সর্বশেষে তাঁদের মরুব্বি সাহায্যদাতাদের হাতে দেশের ভাগ্য তুলে দিয়ে জাতিকে তল্পিবাহক, হুকুমের দাস, ভিন্নরাষ্ট্রের গোলামে পরিণত করার এজেন্ডার সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে পরাজয়ের চরম প্রতিশোধ গ্রহন।
"জয়বাংলা     জয়বঙ্গবন্ধু
  ruhulaminmujumder27@gmail.com
 




মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন