বঙ্গকন্যার নৈতিকতার শক্তিতে বিএনপির মৃত্যু--বিশ্বব্যাংকের চল্লিশা অনুষ্ঠিত।
  (রুহুল আমিন মজুমদার)

       আধুনিক প্রযুক্তির কল্যানে বিশ্বব্যাপি তথ্যপ্রবাহের অবাধ সুযোগে নাটক, চলচিত্র, পত্রপত্রিকা এবং কি বাস্তবতায়ও ব্যাক্তি-ব্যাক্তির পাঁপ মোছনে উৎগ্রীব হতে দেখেছি, সু-খবরে বেহুশ হতে দেখেছি, শোকে পাথর হতে দেখেছি, একে অপরের ভুলের মাশুল দিতে দেখেছি, একে অপরের ভুলের প্রায়চিত্ত করতেও দেখেছি কিন্তু কোন রাজনৈতিক দলের সমকক্ষ অন্যরাজনৈতিক দল, একনেতার সমকক্ষ অন্যনেতা, এক রাজনৈতিক পরিবারের সমকক্ষ অন্য রাজনৈতিক পরিবার হতে দেখিনি, ব্যাক্তির সমকক্ষ ব্যাক্তি, পরিবারের সমকক্ষ পরিবার হ'তে কখনও দেখিনি। চলমান বিশ্বের আবহমান কালের ইতিহাসেও এমন নজীর চোখে পড়ে না।
     প্রত্যেক ব্যাক্তি, গোষ্টি, পরিবার, দল তাঁদের নীজ নীজ ক্ষেত্রে    স্ব-স্ব মহিমায় উজ্জ্বল, স্ব-স্ব চারিত্রিক বৈশিষ্টের প্রদীপ্ত আলোয় উদ্ভাসিত। ব্যাক্তির দোষ-গুন অন্যদের অনুকরন, অনুসরন করতে দেখেছি।গোষ্টির মহিমায় মহিমাম্ভিত হতে দেখেছি অন্য অনেক গোষ্টি বা রাষ্ট্রের জনসমষ্টিকে।রাজনৈতিক দলের আদর্শ ধারন করে বহু তরুন,  যুবক, আবাল, বৃদ্ধ বণিতাকে অকাতরে জীবন বলি দিতেও দেখেছি।
      তুলনা হতে পারে একে অপরের বা একাধিকে, এক পরিবারের সঙ্গে অন্য পরিবারের বা একাদিক পরিবারের মধ্যে-- সেই তুলনা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সুন্দর, লম্বা, বেটে, সততা, অসততা, যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, অর্থ, সম্পদ, বংশ মায্যদা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে। তাই বলে এক ব্যাক্তি বা এক পরিবারের সকলের চারিত্রিক বৈশিষ্ট অন্য ব্যাক্তি বা পরিবারের সঙ্গে হুবহু মেলানো বা মেলানোর চেষ্টা কি আদৌ সম্ভব? বিশ্ব ব্রম্মান্ডে কখনও কারো ব্যাক্তিগত চেহারা, চরিত্র, আচার আচরন, শিক্ষা, সভ্যতা ইত্যাদি যাহাই বলিনা কেন--"মিলেছে কখনও বা মিলবে কখনও?"
      বিএনপি এবং তাঁর বুদ্ধিজীবিগন সেই অ-সম্ভবকে সম্ভব করার চেষ্টাই করে যাচ্ছেন গত সাধারন নির্বাচনের পর থেকে। তাঁদের একান্ত বদ্ধমুল ধারনা বা দৃড বিশ্বাস--"জিয়া পরিবারে'র চারিত্রিক বৈশিষ্টের সংঙ্গে 'হাসিনা পরিবারে'র চারিত্রিক বৈশিষ্ট যতক্ষন পয্যন্ত সমপয্যায় নিয়ে আসতে না পারবে, ততক্ষন বাংলাদেশের জনগন  বিএনপি দলের ডাকে আন্দোলন, সংগ্রামে রাজপথে তো নামবেই না, নির্বাচনেও ভোট দিবেনা।
       লক্ষ করলে দেখা যায় কয়েকটি অনাক্ষাংকীত ঘটনায় বিএনপি এবং তাঁর অনুগত শুশিল সমাজের মধ্যে একরকম হাজার কোটি ডলার লটারী পাওয়ার চাইতেও লক্ষগুন বেশী খুশীর ভাব লক্ষ করা গিয়েছিল।  নেতা-পাতিনেতা, শুসিল তো বটেই দায়িত্বশীল  নেতা, নেত্রী এবং কি সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যাক্তিবর্গ সহ সর্বমহল ঐদিন গুলিতে হয়ে পড়েছিল--"জ্ঞানশূন্য, দিশেহারা, বেঁহুশ।"
     'শেখ হাসিনার পরিবার'কে তাঁদের অনুগত ব্যাক্তি ও পরিবারের সমকক্ষে নিয়ে আসার জন্যে ষড়যন্ত্রকারিরা এমন কতক বিষয় 'ষড়যন্ত্রের বিষয়বস্তুতে পরিনত করেছিল" বিষয় গুলির উপর তাঁদের মধ্যে বিদ্যমান অনেকের "যথেষ্ট জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা" বিরাজমান ছিলনা--তা কিন্তু নয়। তাঁরাও নিশ্চিত জানতেন 'কস্মিন কালে'ও বিষয়গুলি 'হাসিনা পরিবার' নয় শুধু-অন্য  কারোর পক্ষেই ঘটানো  আদৌ সম্ভব ছিলনা।
      কিন্তু বিধিবাম--তাঁরাও রাজনীতির মৌসাহেব, চাটুকার, রাজনীতির কীট, ষড়যন্ত্রের লগ্নিকারী, টাউট বাটপারদের স্রোতের সঙ্গে কখন নিজেদের ভাসিয়ে দিয়েছিলেন--নীজেরাও টের করতে  পারেননি"। যখন হুঁশ ফিরে এসেছে তখন লজ্জা, গ্লানি, অপমানের বোঝা মাথায় নিয়ে পেছনে দৌঁড়াতে গিয়ে--"সাধারন নির্বাচন বয়কট করার পর তাঁদের 'রাজনীতির ভাণ্ডারে'  অবশিষ্ট যাহাই ছিল তাও হারিয়ে চারদেয়ালের বদ্ধকোনে বর্তমান সরকারের পুরো সময়কাল 'নেশার ঘোরে' কাটিয়ে দিতে বাধ্য হলেন।"
    দেশের আনাছে কানাছে লক্ষ লক্ষ মজ্জাগত রাজনীতি সচেতন নেতাকর্মীর বিশাল বাহিনী, দলের সার্বক্ষনিক  সক্রিয় নেতৃবৃন্দ আন্দোলনের পরবর্তী দিকনির্দেশনা না পেয়ে হতাশাগ্রস্ত, নেশাগ্রস্ত, মানষিক বিকার গ্রস্ত হয়ে পড়তে লাগলেন।উদ্ধতন নেতৃবৃন্দের এহেন রাজনৈতিক অবস্থানে  ক্ষোভে দু:খ্যে অনেকে দলত্যাগ করে সরকারি দলে যোগদান, কেউবা রাজনীতিত্যাগ আবার অনেকে চোর, ডাকাত, অথবা জঙ্গী খাতায় নাম লেখাতে একরকম বাধ্যই হয়েছেন। ঐ যে প্রবচনে আছে--"ব্যাক্তির ভুলে শুধু সংশ্লিষ্ট পরিবার কষ্ট পায়, নেতার ভুলে দেশের আপামর জনগনের দু:খ্যের সীমা থাকেনা" এক্ষেত্রেও হুবহু তাই হল।"
         অতি উৎসাহী নেতাকর্মীগন বর্তমান  সরকারের 'নৈতিক শক্তির উৎস অনুসন্ধান' না করে অশুভ শক্তির প্ররোচনায় অথবা অথর্ব কেন্দ্রীয় নেতাদের হুকুম পালন করতে গিয়ে একাধিক নাশকতা মামলার আসামী হয়ে দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন।তাঁদের মধ্যে একটি ক্ষুদ্র অংশ সরকার উচ্ছেদ, শেখ হাছিনার পরিবারকে হত্যা ষড়যন্ত্রে জড়িয়ে অবস্থানরত: দেশের গোয়েন্দা নজরদারি অথবা তদীয় দেশের জেলহাজতে থাকায় দেশে পরিবার পরিজন প্রতিপালন থেকেও বঞ্চিত রয়েছেন।
         আর একটি অংশ  'অতি আদর্শবাদী নেতাকর্মী' জঙ্গী গোষ্টির অর্থ সংগ্রাহকের ভূমিকায় অবতীর্ন হয়ে তদীয় দেশের গোয়েন্দাজালে আটক হয়ে দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন। তাঁরা দেশের প্রচলিত আইনে বিচারের সম্মুখ্যিন হয়ে জেলখানায় মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হয়ে পরিবার পরিজনেরও ঘৃনার বলিতে পরিণত হয়েছেন। উভয় শ্রেনীর আশা ছিল জঙ্গী হামলা ত্বরান্বিত করে নিজের মাতৃভূমিতে অস্থীরতা সৃষ্টির মাধ্যমে বিদেশী শক্তি অথবা তৃতীয় কোন শক্তির রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের সুযোগে নিরাপদে দেশে ফেরার স্বপ্ন। কিন্তু ভাগ্যদেবী তাঁদের সাথে চরম প্রতারনা করেছে- স্বপ্নে বিভোর যুবকগন  তদীয় দেশের গোয়েন্দা সংস্থার নজর এড়াতে ব্যর্থ হয়ে সেই দেশের অথবা বাংলাদেশে ফেরৎ এসে বাংলাদেশের জেলখানায়  পরিবার বিচ্ছিন্নতায় মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হচ্ছেন।

        পাঠক বন্ধুগন উপরে উল্লেখিত আলোচনার বিষয়ে দু'একটি উদাহরন তুলে না ধরলে আপনাদের সম্যক ভাবে হয়ত বা বুঝতে অনেকের কষ্ট হতে পারে।
   আমরা জানি- প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ওয়াদা বা ইসতেহার থাকে।নির্বাচন প্রচারনা কালীন উক্ত নির্বাচনী ইশতেহারের উপর প্রচার প্রচারনার মাধ্যমে জনমত সংগঠিত করে জনগনের রায় নিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে।ইহা সভ্য দুনিয়ার গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার স্বীকৃত  রীতি।
   জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু '৬৯ এর গনভ্যুত্থানে পুর্ববাংলার  জনগনের মৌলিক  বাঁচার দাবী স্বীকৃত ৬দফাকে  '৭০ এর সাধারন নির্বাচনে নির্বাচনী ইশতেহারে সংযুক্ত করেন। নির্বাচনে  নিরংকুস গনরায় পাওয়ার কারনে ঊল্লেখিত ৬দফাও জনগনের ভোটে অনুমোদিত হয়েছে মর্মে পুর্ব পাকিস্তানের জনগনের ভাগ্য নির্ধারনের একক শক্তিশালী নৈতিক বলে বলিয়ান হয়েছিলেন।পশ্চিমা শাষক গোষ্টির সঙ্গে ৬ দফার প্রশ্নে দেশী বিদেশী সমঝোতা মূলক আলোচনার চাপ সহজে প্রত্যাক্ষান করে পূর্ববাংলার স্বাধীনতাকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষে পৌঁছাতে  সক্ষম হয়েছিলেন।
      তদ্রুপ বঙ্গরত্ম শেখ হাসিনা '২০০৮ ইং সালের ঘোষিত সাধারন নির্বাচনে 'ডিজিটাল বাংলাদেশ' গড়ার অঙ্গিকারের সাথে 'আইনের শাষন প্রতিষ্ঠাকল্পে '৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে  মানবতাবিরুধী অপরাধের বিচার' করবেন সংযুক্ত করে ভুমিধ্বস বিজয় অর্জন করে বাংলাদেশের জনগনের সেবা করার "রাষ্ট্রীয় স্বীকৃত শাষক" রুপে সরকার পরিচালনার শফথ গ্রহন করেন।
   নির্বাচনী অঙ্গিকার বাস্তবায়নের লক্ষে মানবতা বিরুধী বিচার কায্য শুরু করার জন্যে আন্তজাতিক মানসম্পন্ন বিচার ট্রাইবোনাল গঠন করে বিচার অনুষ্ঠানের প্রারম্ভ হ'তে বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত মহল গুলির পক্ষ হতে বিভিন্ন ভাবে বাঁধা প্রাপ্ত হতে থাকেন। সাংগঠনিক ভাবে পরাজিত চারদলীয় জোট অপরাপর রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে এবং বাহিরের "বাংলাদেশ বিরুধী অশুভ শক্তি সমূহ"কে একত্রিত করে উক্ত বিচার কায্য বানচাল করার চক্রান্তে নতুন নতুন ইস্যু সংযুক্ত করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।
       মানবতা বিরুধী বিচার অনুষ্ঠানে আগেই  জনগনের রায় নিয়ে সরকার ছিলেন নৈতিক বলে বলিয়ান। শেখ হাসিনা অত্যান্ত চাতুয্যের সঙ্গে তাঁর দলকে ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ বা প্রতিহতের নিমিত্তে  রাজপথে না নামিয়ে অনিবায্য গৃহযুদ্ধের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করেন। অপর দিকে রাষ্ট্রীয় শক্তি ব্যবহার করে সম্মিলীত অ-শুভশক্তিকে নিস্তেজ করে বিচার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে সক্ষম হন।
        বিগত আন্দোলনে পরাজিত শক্তি তাঁদের দেশী বিদেশী প্রভুদের সাহায্যে শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে  "দুর্নীতির কালিমালিপ্ত" করে জনগন ও সরকারকে  বিভ্রান্ত, জনবিচ্ছিন্ন করে ক্ষমতা থেকে সরানোর  লক্ষে "সরকার ও বিশ্বব্যাকের যৌথ উদ্যোগের মেঘা প্রকল্প পদ্মাসেতু নির্মানে" কোনপ্রকার অর্থবরাদ্ধের আগেই "কাল্পনিক দুর্নীতি"র অভিযোগ উত্থাপন করাতে "বিশ্বব্যাংক কে প্ররোচিত" করতে সক্ষম হয়।
      পুর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী-- বিশ্বব্যাংক অভিযোগ উত্থাপনের সঙ্গে সঙ্গেই চতুর্দিক থেকে ষড়যন্ত্রকারিরা এক সঙ্গে, একবাক্যে -আওয়াজ তোলে। নিম্নে তাঁদের অন্যতম দুই একজনের তখনকার সময়ে দেয়া বক্তব্য পাঠকদের স্মৃতিতে ভাশ্বর রাখার উদ্দেশ্যে তুলে ধরা প্রয়োজন মনে করি।
        (১) গুলশান অফিসে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বলেন, দেশ স্বাধীনের পর এই প্রথম বিশ্বব্যাংক তার দেয়া বরাদ্দ দুর্নীতির কারণে বাতিল করল। দুর্নীতি দমন কমিশন আবুল হোসনকে বাঁচানো চেষ্টা করছে বলেও এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করে বিএনপি।
     (২)ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন- পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার ১০ মাস পর তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের পদত্যাগ প্রমাণ করছে যে অভিযোগটি সঠিক ছিল। পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে তা প্রমাণিত। যদি সে আরো আগে পদত্যাগ করত, তাহলে হয়ত বরাদ্দ বাতিল করা হত না। অপর এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল দাবি করেন--"বিশ্ব ব্যাংক যেই তিনজনের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ তুলছে তার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনাও একজন।"
      (৩) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ বলেছিলেন, যদি আবুল হোসেন একজন দেশপ্রেমিক হয়ে থাকে, তাহলে কে দেশপ্রেমিক নয়? প্রাথমিক অবস্থায় আবুল হোসেনকে সমর্থন দেয়ায় একটি বার্তাই সাধারণ মানুষ পায়। আর তা হল, ‘সাধারণ মানুষের টাকা যারা ডাকাতি করে, তাদেরই রাজনীতিতে আসার অধিকার রয়েছে।
      এমত:বস্থায় সরকার, বাংলাদেশের বন্ধুরাষ্ট্র সমূহের সরকার প্রধানগন কিংকর্তব্যবিমূঢ হয়ে পড়েন--"বিশ্বব্যাংকের উপর আন্তজাতিক চাপ ক্রমশ: বৃদ্ধি পেতে থাকে।অর্থ বরাদ্ধের আগে কিভাবে অর্থলোপাট হয় তাঁর ব্যাখ্যাও একাধিক রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে উত্থাপন করা  হয়।বিশ্বব্যাংক তাঁদের অস্তিত্ব ও বিশ্বাস রক্ষাকল্পে উপায়ন্তর না পেয়ে আন্তজাতিক আদালতের শরনাপন্ন হয়।
            বিশ্বব্যাংকের উদ্দেশ্য--"সময়ক্ষেপন করে মিথ্যা, বানোয়াট অভিযোগ উত্থাপনের কারনে "ক্ষুব্দ বাংলাদেশ সরকার"কে প্রয়োজনীয় সহযোগীতার আশ্বাসের বিনিময়ে নিয়ন্ত্রন করে আপাত: বিশ্বচাপকে প্রশমিত করা।"
       উক্ত উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে একাধিকবার সময় প্রার্থনা, বিচারকের উপর অনাস্থা, বিচারের স্থান পরিবর্তন ইত্যাদি যৌক্তিক উপায় অবলম্বনের মাধ্যমে সময়ক্ষেপন অপর দিকে ঘন ঘন বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তাদের বাংলাদেশ সফর অব্যাহত রেখে "নতুন নতুন মেঘা প্রকল্পে নামমাত্র সুদ ও বিনাসুদে অর্থ বরাদ্ধ" এর প্রতিশ্রুতির জোয়ার তোলে।
      কোন অবস্থায় বাংলাদেশ সরকারকে নিয়ন্ত্রন করতে না পেরে অবশেষে ব্যাংকের নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত কর্তাব্যাক্তি গতমাসে  বাংলাদেশ সফরে হাজির হন।তিনি প্রথমেই বাংলাদেশের শিশুদের পুষ্টি চাহিদা পূরণে একশত কোটি ডলার সাহায্য ঘোষনা করেন এবং সরকারের নেয়া দ্বিতীয় পদ্মাসেতু সহ অন্যান্ন "মেঘা প্রকল্পে" অর্থবরাদ্ধ যথারীতি সচল রাখার প্রতিশ্রুতি পুণ: ব্যাক্ত করেন।এইবারও বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে মামলা সংক্রান্ত মনোভাব পরিবর্তনের কোন প্রতিশ্রুতি আদায় করে নিতে পারেননি।
        শেষাবদি বিশ্বব্যাংক নিজেদের করা মামলায় নিজেরা হেরে প্রমান করেছে--"শেখ হাসিনার সরকার শুধুমাত্র জনগনের বলে বলিয়ান নয়--নীজ পরিবারে স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতির প্রশ্রয় না দিয়ে নৈতিক বলেও ছিলেন বলিয়ান।" ফলে বিশ্বব্যাংকের  সকল প্রকার লোভনীয় অফার দেশ ও জনগনের স্বার্থে অবলীলায় গ্রহন করেছেন সত্য নিজকে রাখতে পেরেছেন অনড়, দৃড  এবং
অ-নমনীয়।
         একই সময়ে মাননীয় প্রধানমনন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য পুত্র আইটি বিশেষজ্ঞ এবং সরকার প্রধানের অ-বৈতনিক 'তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা' জনাব সজীব ওয়াজেদ (জয়) এর বিরুদ্ধে আমেরিকার ফেডারেল ব্যাংকে, তাঁর নীজস্ব একাউন্টে  "ত্রিশ বিলিয়ন ডলার" জমা আছে। বাংলাদেশ থেকে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত টাকা পাচার করে বিদেশী ব্যাংকে জমা রাখা  হয়েছে মর্মে আর একটি অভিযোগও উত্থাপন করে।
       উল্লেখ্য যে ষড়যন্ত্রকারিগন এতই বেঁহুশ ছিলেন যে উল্লেখিত দেশের শুধুমাত্র ব্যাংক নয় বেসরকারি "অর্থলগ্নিকারি প্রতিষ্ঠানে"ও অর্থ জমা রাখার প্রয়োজনে  খাতকের "আয়ে ব্যায়ের" ফিরিস্তি জমা দেয়া বাধ্যতা মূলক। সন্দেহজনক অর্থ লেনদেন ব্যাংক কতৃপক্ষ যে কোন সময় একাউন্ট প্রিজ, অর্থ আটক এবং মামলা রুজুর অধিকার--"ব্যাংক কতৃপক্ষ এর অধিকার সেই দেশের আইনের মাধ্যমে সুরক্ষিত।"
       ষড়যন্ত্রকারিরা সুইসব্যাংকের নাম না বলে বেঁহুশ অবস্থায় আমেরিকান ফেডারেল ব্যাংকের নাম নেয়।অবশেষে সজিব ওয়াজেদ জয়ে এবং তাঁর "মা প্রধানমন্ত্রীর" চেলেঞ্জের মুখে প্রমান সংগ্রহের কথা বলে গুজুবসৃষ্টিকারি ষড়যন্ত্রিরা পালিয়ে রক্ষা পায়।
   ঐসময়ের ডামাডোলের মধ্যেই জাতি জানতে পারে--ষড়যন্ত্রকারিদের ছড়ানো গুজুব সজিব ওয়াজেদ জয়" আমেরিকার প্রেসিডেন্টের চেয়ে দ্বিগুন বেতন ভাতা বাংলাদেশ সরকার থেকে নিয়ে আমেরিকায় জমা করেছে। সরকারের দায়িত্বশীল মহল জাতিকে আশ্বস্ত করে যে "সজিব ওয়াজেদ জয়" সম্পূর্ণ অবৈতনিক উপদেষ্টা হিসেবে প্রধান মন্ত্রির উপদেষ্টা পদে অধিষ্টিত আছেন এবং কি তাঁর গাড়ীর জ্বালানীও "সরকারি পোল" থেকে সংগ্রহ করেন না। এই কঠিন সত্যটি সরকারের কেউ জানতেও পারেননি এবং "শেখ হাসিনা" নীজেও কোন দিন ঘুনাক্ষরে মুখে আনেননি। এখানেই তাঁর বদন্যতা,এখানেই তাঁর মহত্ব, এখানেই তাঁর ত্যাগের বিস্ময় লুকিয়ে আছে।
        জয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপনকালীন সময়ে 'বাংলাদেশ ব্যাংকে'র রিজার্ভ হ্যাকিং এর ঘটনা প্রকাশ পায়। (এমনিতে কান্দুনী বুড়ী আরও পাইছে ঢোলের বাড়ি)। গুজুবের ডালপালা, শাখা প্রশাখা প্রসারীত হয়ে উক্ত হ্যাকিং জয়ের কাঁধে তোলার জন্যে মহলটি মরিয়া হয়ে প্রপাকান্ড চালাতে থাকে। সাধারন মানুষকে ধারনা দেয়ার আপ্রান চেষ্টা অব্যাহত রাখে যে-- "বাংলাদেশে একজনই আছে রিজার্ভ হ্যাকিংয়ে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন প্রযুক্তিবীদ--তিনিই হচ্ছেন প্রধান মন্ত্রী পুত্র " সজিব ওয়াজেদ জয়"। আল্লাহর অশেষ কৃপায় ফিলিপিন্স সরকার তাঁদের দেশীয় হ্যাকার জড়িত বিষয়ে তদন্তে আপাদমস্তক ঘটনা জাতি জানতে পারে।হ্যাকিংয়ে জড়িত অনেকেই সাজাপ্রাপ্ত অনেকেই বিচারাধীন পয্যায় রয়েছে।চুরি যাওয়া অর্থ ইতিমধ্যে কিছু অংশ ফেরৎ ও এনেছে সরকার।
        তৎসময়ে আর একটি চাঞ্চল্যকর হত্যা পরিকল্পনা আমেরিকান সরকারের গোয়েন্দা তথ্যে উঠে আসে এবং একজন উক্ত ঘটনায় সেই দেশের জেলে সাজা প্রাপ্ত হয়ে আটকও আছেন। ঘটনাটি হচ্ছে--"প্রধান মন্ত্রী পুত্র "সজিব ওয়াজেদ জয়"কে হত্যা পরিকল্পনা।" উক্ত ঘটনায় জড়িত উভয় দেশের প্রতি্যসা কয়েকজন অভিযুক্ত হয়ে মামলার ফাঁদে আটক আছেন। ইনশাল্লাহ অচিরেই উক্ত ঘটনার সুষ্ঠ বিচার জাতি দেখতে পাবে।
         শেষ যাত্রায়ও ষড়যন্ত্রকারিদের আশা ভঙ্গে উপরে উল্লেখিত বিষয়টি পরিস্কার হয় এবং বরেন্য ব্যাক্তি জনাব এমাজ উদ্দিনের বিবৃতি এবং ফখরুল ইসলামের বক্তব্য পয্যালোচনায়  পরিস্কার বুঝা যায়-- ঘটনার সত্যতা থাকুক বা না থাকুক তাঁদের কিছুই আসে যায়না--খালেদা পরিবারের লুটপাটের কালিমা মুছতে শেখ হাসিনার পরিবারের গাঁয়ে কালিমালেপন তাঁদের জন্যে ফরজ"।
          অবশেষে কোনবস্থায় সফল হতে না পেরে "মা ছেলে"কে হত্যা পরিকল্পনা করতেও পাষান্ডদের বিবেকে বাঁধেনি, সামান্য বুক কাঁপেনি।তাঁরা জানেনা- -"পরের জন্য গর্ত খুড়ে আগে নিজে নেমে দেখতে হয়, খুঁড়া গর্তের গভীরতায় কাজ চলবে কিনা"। বিধির বিধান ষড়যন্ত্রকারি-তো-মরল-ই- সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের চল্লিশাও খেয়ে গেল।
           "জয়বাংলা     জয়বঙ্গবন্ধু"
    ruhulaminmujumder27@gmail.com
     

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার সরকার মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যাতত্ব দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস ঐতিহ্যে বিতর্ক উত্থাপনের অভিযোগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন।মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে বসবাস করে,মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার মত দৃষ্টতা দেখিয়ে নি:সন্দেহে তিনি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। এহেন গর্হিত বক্তব্য প্রদানকারী বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার রাখতে পারেননা।মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত অঙ্গিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কোন দল বা জোটের রাজনীতি করারঅধিকার নীতিগতভাবেই থাকতে পারেনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি সকল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করে সর্বচ্ছ আদালতের রায় অনুযায়ী '৭২এর সংবিধান অবিকল বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবী।বাংলাদেশেরজনগন চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ এগিয়ে যাক,মুক্তিযুদ্ধে সাগরসম রক্ত ঢেলে সেই অঙ্গিকারের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেছিল।স্বাধীন বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বসবাসকরে,পরাধীনতার গান শুনতে দেশ স্বাধীন করেনি বাংলার জনগন। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৩ বছরের বিরামহীন সংগ্রামের ফসল মুক্তিযুদ্ধ।সেইযুদ্ধে উপনিবেশিক পাকিস্তানের আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত সেনাবাহিনীকে নিরস্ত্র বাঙালীরা পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছিল।সেই স্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশেপরাজিত শক্তির দোষর,তাঁদের প্রেতাত্বাদের রাজনীতি করার কোন নৈতিক অধিকার নেই।জাতির জনক তাঁদের রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগন জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলায় রাজাকারের কোন স্থান দিতে চায়না। তাই খালেদা জিয়ার ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টার দৃষ্টান্তমুলক সাজার আশা পোষন করে।কোন রাজনৈতিক সমঝোতার ফাঁদে যেন এই মামলা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়,তাঁর গ্যারান্টিও সরকারের নিকট বাংলাদেশের জনগন চায়। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু Ruhul Amin ------------------------------ খালেদা জিয়াকে সমাবেশের অনুমতি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি আশাহত----04 /01 / 0016 ইং পোষ্ট -==================================প্রখ্যাত দার্শনিক,চিন্তাবিদ সক্রেটিসকে কম বেশি আমরা সবাই জানি।সক্রেটিস কোন যুগে জম্মগ্রহন করে মানব সেবায় ব্রতি হয়ে আজও দেশে দেশে অনুকরনীয় অনুসরনীয় হয়ে আছেন তাও আমরা জানি।নিশ্চয়ই তখনকার সময় থেকে বর্তমানের সমাজ, রাষ্ট্রব্যাবস্থাপনা আরো শত গুন উন্নত,সমৃদ্ধ,সভ্য।সক্রেটিস ছুতোর, কামার ইত্যাদি প্রসঙ্গে এসে প্রশ্ন করতেন, 'তাহলে রাষ্ট্র নামক জাহাজটি বিগড়োলে কাকে দিয়ে সারাইয়ের কাজ করাবো'হাসান আজিজুল হক (সক্রেটিস) পৃ : ১৬ সক্রেটিসের এ বিখ্যাত কথপোকথন কারো অজানা নয়। আদর্শবান ন্যায়নীতিভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করবার জন্য সক্রেটিসকে হেমলক পান করতে দেয়া হয়েছিল(বিষ), তারপরও তিনি আইনের প্রতি অটুট শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন- এটাও ছিল তার নির্ভীক বিদ্রোহ। তাকে বাঁচবার সুযোগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি আইনঅবজ্ঞা করেননি, আইনে যদি তার মৃত্যুদন্ড হয় তবে তিনি অবশ্যই তা মানতে রাজি। এখানেও তার সমস্ত জীবনকর্মের অনেক গভীর দর্শন কাজ করেছে। তার উপর মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল একথা তিনি ও এথেন্সবাসী জানতেন। কিন্তু যে আইনে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলো- তিনি সে আইনকে শ্রদ্ধা জানালেন এ অর্থে মানুষকে আইনের প্রতি অনুগত থাকতে বললেন। সেই আইন কারা তৈরি করছে তা তিনি জানতেন তাতে তো আর আইন নামক বিষয়টিকে জীবন থেকে বিতাড়িত করা যায় না।"পবিত্র কোরানে পাকে ও উল্লেখ করা হয়েছে, বিধর্মী কতৃক শাষিত রাষ্ট্র ও সরকার সমুহের আইন মেনে ধর্ম কর্ম করার।এই রুপ রাষ্ট্র ব্যাবস্থায় শুক্রবারের খতবায় বিশেষ আয়াৎ সংযুক্ত আছে এবং নিয়মিত নামাজের সাথে আর ও কয় রাকাত নামাজ আদায় করার নির্দেশনা দেয়া আছে।পরিতাপের বিষয়টি হচ্ছে,গত কয়েক বছর থেকে লক্ষ করা যাচ্ছে একশ্রেনীর মানুষ রাষ্ট্রীয় আইন রীতি নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সর্ব উচ্চ আদালতের রায়কে ও অমান্য করে হরতাল অবরোধ,প্রকাশ্য আদালতের সমালোচনা করতে।শুধু তাই নয় আন্দোলনের নামেপ্রকাশ্য দিবালোকে যাত্রীভর্তি চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে জীবন্ত মানবকে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিতে।উল্লেখ করা প্রয়োজন যারা এই সমস্ত আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিলেন,এবং প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেন যে আদালতের বিরুদ্ধেও কর্মসূচি দেয়া যায়,বক্তব্য দেয়া যায়,তাঁরা কখনই কোন অপরাধীর বিচার কায্য সম্পাদন করেছেন তদ্রুপ কোন উদাহরন নেই। যেমন আমি প্রথমেই বলতে চাই ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছেন রাতের অন্ধকারে।বঙ্গবন্ধুর অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? পৃথীবিপৃষ্টের সব চাইতে নিরাপদ স্থান জেলখানা।সেখানে রাতের অন্ধকারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করাহল,তাঁরা বন্দি ছিলেন, তারপর ও তাঁদের অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে বুদ্ধিজীবিদের বাসা থেকেতুলে নিয়ে জ্যান্ত মানুষকে হত্যা করা হল, তাঁদের অপরাধ কি বিচার করে মিমাংসা করা যেতনা? খালেদ মোশারফ., কর্নেল তাহেরসহ অসংখ্য মুক্তি যুদ্ধা সেনা অফিসারকে মেজর জিয়ার নির্দেশে নির্মম নির্দয় ভাবে হত্যা করা হল, অনেককে গুলী করার পর প্রান পাখী উড়াল দেয়ার আগেই জ্যান্ত মাটি চাপা দেয়া হল, তাঁদের বিচার কি প্রচলিত সেনা আইনে করা যেতনা? অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধা,আওয়ামী লীগের নেতা,মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারি,ব্লগার,প্রকাশক,লেখক সাহিত্যিক,সাংবাদিক হত্যা করা হল,তাঁদের অপরাধ কি আইনের আওতায় এনে বিচার করা যেতনা?আন্দোলনের নামে ঘোষনা দিয়ে মানুষ হত্যা করা,সম্পদ নষ্ট করা,লুটপাট করা কি মানবতা বিরুধী অপরাধের আওতায় পড়েনা?মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ হত্যা লুটপাট,অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার হতে পারে,যুদ্ধাবস্থা ব্যাতিরেকে ঘোষনা দিয়ে তদ্রুপ কর্মে জড়িতদের এবং হুকুমদাতার বিচার কেন হবেনা? নগদ অপরাধের ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার করা কি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব নয়? নাগরীকদের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া কি রাষ্ট্রের কর্তব্যের মধ্যে পড়েনা? যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন তাঁরা কি বিচার পাওয়ার সাংবিধানীক অধিকারের মধ্যে পড়েনা?সেই যুগের সক্রেটিস যদি নীজের উপর আনীত মিথ্যা অভিযোগ জেনে শুনে মেনে নিতে পারেন,সভ্যতার চরম শীখরে দাঁড়িয়ে যারা এই যুগে আইনকে, রাষ্ট্রীয় রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রকাশ্য আন্দোলনের নামে মানুষ খুন করেছেন,সম্পদের হানী ঘটিয়েছেন তাঁরা কি সক্রেটিস যুগের আগের অধিবাসি মনে করেন নীজেদের? তাঁরা নীজেরা নিজেদের মনে করুন কিন্তু মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে কোন যুগে ফিরিয়ে নিতে চান?তাঁদের যদি এতই অসহ্য লাগে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিশেষ কিছু আদর্শের প্রতিপালনের অঙ্গিকারের ভিত্তিতে ৩০লক্ষ শহিদের আত্মদান,পৌনে চারলাখ মাবোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস- তবে জনগনকে সংঘটিত করে আর একটি গনবিপ্লব ঘটিয়ে তাঁদের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে স্বাধীনতার পক্ষের কোন মানুষ বাধাতো দিচ্ছেনা। যাদের নেতৃত্বে, যাদের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন করা হল, তাঁরাতো ক্ষমতায় আছে,তাঁদের কেন জোর পুর্বক,ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে খমতা থেকে নামাতে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে,আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে জনজীবন দুর্বিসহ করে তোলার চক্রান্ত করতে দেয়া হবে।এই সেই দিন মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা নিয়ে যিনি বিতর্ক উত্থাপনের বৃথা চেষ্টা করে জনরোষের আওতার মধ্যে এখনও রয়েছেন,তাঁর সৌখিন বাসভবন পাহারায় আপনার সরকার অতিরীক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে বাধ্য হয়েছে,তিনি কি ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে সমাবেশ করার প্রসাশনিক অনুমতি পায়। বর্তমান গনতান্ত্রিক বিশ্বের একটি দেশের উদাহরন কি কেউ দিতে পারবেন,স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা সেই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে?একটি দেশকি কেউ দেখাতে পারবে যে,সেই দেশের কোনমীমাংসিত এবং প্রতিষ্ঠিত কোন সত্যকে ৩০/৪০ বছর পর আবার জনসমক্ষে উত্থাপন করে লক্ষ লক্ষ শহিদ পরিবারের অন্তরের আগুনে"ঘি "ঢেলে দেয়ার চেষ্টা, কোন প্রতিষ্ঠিত দল বা তাঁর নেতা করেছেন? কেন এই পয্যন্ত সরকার তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা না করে উলটো সমাবেশ করে তাঁর মতবাদ প্রচারের অনুমতি দেয়া হল??তাঁরা নীজেদের এত ক্ষমতাবান মনে করেন কিভাবে? তাঁরা কি করে আবার জাতির নিকট ক্ষমা চাওয়া ছাড়াই প্রকাশ্য সভা সমাবেশ করার অধিকার পায়?কেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সংসদে ঘোষনা দিয়েও এখন পয্যন্ত আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন করছেন না? মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আপনার আশ্বাস বাংলার মানুষ অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করে।সুতারাং জনগনকে দেয়া প্রতিশ্রুতি আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন কল্পে তড়িৎ ব্যাবস্থা গ্রহনকরবেন, জনগনের এই আস্থা বিশ্বাস এখন ও অটুট রয়েছে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,শাপলা চত্বরের সেই দিনের ষড় যন্ত্র মোতাবেক যদি খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার মানুষ রাজপথে নেমে আসতেন,পরিকল্পনাঅনুযায়ী সেনা বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়েআপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারতো,আপনাকে কি জীবিত বাঁচতে দেয়া হত? আপনার পরিবারের কাওন সদস্যকে বাঁচতে দিত?আওয়ামী লীগের থানা উপজেলা পয্যায়ের কোন নেতা কি বাঁচতে দিত? তাঁরা কি সে দিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ধর্ম বিদ্বেষী সরকার উৎখাত করে ধর্মধারি সরকার কায়েমের রাজনৈতিক শ্লোগানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নামক মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ধারক বাহক জননন্দিত এইসংগঠনটিকেও জ্যান্ত কবর দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত ছিল না?আমি আজ আরও একটি বিষয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,সম্পুর্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন চরমপন্থী নেতার অবিকল নকল করা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার--,গনতান্ত্রিকদেশে,গনতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে, গনতান্ত্রীক সংগঠনের,গনতন্ত্রের পুজারি মনে করা কোন নেতা, রাজপথে আন্দোলন না করে, সীমাবদ্ধ কক্ষে ৪১দিন অবস্থান করে, ৪২ জন মানুষকে পুড়িয়ে মেরে,পরবর্তিতে বিচারের সম্মুখ্যিন না হয়ে নিয়মাতান্ত্রীক আন্দোলনের সুযোগ কোন দেশের, কোন নেতা বা কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, এমন উদাহরন কি কেউ দিতে পারবে?? ষড় যন্ত্রের জাল কোথায় বিস্তৃত ছিল তাঁর প্রমান সেই নেত্রী নীজেই তাঁর উষ্মায় প্রকাশ করে দম্ভস্বরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে সুশৃংখল বাহিনীকে তাচ্ছিল্য করে বলে ছিল"সেনাবাহিনী বেঈমান"!!!এর পরও আপনার সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আনায়ন না করে প্রকাশ্য সভার অনুমতি দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার গুলির মনে আগাত দেয়া হয়েছে আমি মনে করি। গত পৌর নির্বাচনে রায় দিয়েছে তাঁর বিচার করার,তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অর্থই হচ্ছে জনগনের ক্ষোভ তাঁর উপর থেকে এখনও কমেনি,বরঞ্চ কয়েক গুন বেড়ে জনরোষের পয্যায় পৌছে গেছে।আপনার সরকারের তাঁকে দেয়া বাড়তিনিরাপত্তাই তা প্রমান করে।সুতারাং দেশ ও জাতি এই রাজনৈতিক লাশের ভার বইবার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা।দেশের এবং জাতির প্রয়োজন বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মত শিক্ষিত, বিজ্ঞান মনস্ক,প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত সমৃদ্ধ জাতি গঠনে জ্ঞানসমৃদ্ধ, আধুনিক সভ্য দুনিয়ার নেতৃত্ব গ্রহন করার মত গুনাবলি সমৃদ্ধ নেতার। কোন অবস্থায় সক্রেটিসের আগের যুগে জাতি ফেরৎ যেতে চায়না।পরিশেষে বলতে চাই,আর কোন সংগাত নয়,এবার চাই সমৃদ্ধি।আর নয় জঙ্গিপনা,এবার চাই ধর্মনিরপেক্ষতা।আর নয় সাম্প্রদায়ীকতা,এবার চাই অসম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা।আর নয় পাকি ভাবধারা প্রতিষ্ঠা,এবার চাই মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের সফল বাস্তবায়ন। জয় আমাদের হবেই হবে, অশুভ অপশক্তির পরাজয় অবশ্যাম্ভাবি। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা