বঙ্গকন্যার নৈতিকতার শক্তিতে বিএনপির মৃত্যু--বিশ্বব্যাংকের চল্লিশা অনুষ্ঠিত।
  (রুহুল আমিন মজুমদার)

       আধুনিক প্রযুক্তির কল্যানে বিশ্বব্যাপি তথ্যপ্রবাহের অবাধ সুযোগে নাটক, চলচিত্র, পত্রপত্রিকা এবং কি বাস্তবতায়ও ব্যাক্তি-ব্যাক্তির পাঁপ মোছনে উৎগ্রীব হতে দেখেছি, সু-খবরে বেহুশ হতে দেখেছি, শোকে পাথর হতে দেখেছি, একে অপরের ভুলের মাশুল দিতে দেখেছি, একে অপরের ভুলের প্রায়চিত্ত করতেও দেখেছি কিন্তু কোন রাজনৈতিক দলের সমকক্ষ অন্যরাজনৈতিক দল, একনেতার সমকক্ষ অন্যনেতা, এক রাজনৈতিক পরিবারের সমকক্ষ অন্য রাজনৈতিক পরিবার হতে দেখিনি, ব্যাক্তির সমকক্ষ ব্যাক্তি, পরিবারের সমকক্ষ পরিবার হ'তে কখনও দেখিনি। চলমান বিশ্বের আবহমান কালের ইতিহাসেও এমন নজীর চোখে পড়ে না।
     প্রত্যেক ব্যাক্তি, গোষ্টি, পরিবার, দল তাঁদের নীজ নীজ ক্ষেত্রে    স্ব-স্ব মহিমায় উজ্জ্বল, স্ব-স্ব চারিত্রিক বৈশিষ্টের প্রদীপ্ত আলোয় উদ্ভাসিত। ব্যাক্তির দোষ-গুন অন্যদের অনুকরন, অনুসরন করতে দেখেছি।গোষ্টির মহিমায় মহিমাম্ভিত হতে দেখেছি অন্য অনেক গোষ্টি বা রাষ্ট্রের জনসমষ্টিকে।রাজনৈতিক দলের আদর্শ ধারন করে বহু তরুন,  যুবক, আবাল, বৃদ্ধ বণিতাকে অকাতরে জীবন বলি দিতেও দেখেছি।
      তুলনা হতে পারে একে অপরের বা একাধিকে, এক পরিবারের সঙ্গে অন্য পরিবারের বা একাদিক পরিবারের মধ্যে-- সেই তুলনা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সুন্দর, লম্বা, বেটে, সততা, অসততা, যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, অর্থ, সম্পদ, বংশ মায্যদা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে। তাই বলে এক ব্যাক্তি বা এক পরিবারের সকলের চারিত্রিক বৈশিষ্ট অন্য ব্যাক্তি বা পরিবারের সঙ্গে হুবহু মেলানো বা মেলানোর চেষ্টা কি আদৌ সম্ভব? বিশ্ব ব্রম্মান্ডে কখনও কারো ব্যাক্তিগত চেহারা, চরিত্র, আচার আচরন, শিক্ষা, সভ্যতা ইত্যাদি যাহাই বলিনা কেন--"মিলেছে কখনও বা মিলবে কখনও?"
      বিএনপি এবং তাঁর বুদ্ধিজীবিগন সেই অ-সম্ভবকে সম্ভব করার চেষ্টাই করে যাচ্ছেন গত সাধারন নির্বাচনের পর থেকে। তাঁদের একান্ত বদ্ধমুল ধারনা বা দৃড বিশ্বাস--"জিয়া পরিবারে'র চারিত্রিক বৈশিষ্টের সংঙ্গে 'হাসিনা পরিবারে'র চারিত্রিক বৈশিষ্ট যতক্ষন পয্যন্ত সমপয্যায় নিয়ে আসতে না পারবে, ততক্ষন বাংলাদেশের জনগন  বিএনপি দলের ডাকে আন্দোলন, সংগ্রামে রাজপথে তো নামবেই না, নির্বাচনেও ভোট দিবেনা।
       লক্ষ করলে দেখা যায় কয়েকটি অনাক্ষাংকীত ঘটনায় বিএনপি এবং তাঁর অনুগত শুশিল সমাজের মধ্যে একরকম হাজার কোটি ডলার লটারী পাওয়ার চাইতেও লক্ষগুন বেশী খুশীর ভাব লক্ষ করা গিয়েছিল।  নেতা-পাতিনেতা, শুসিল তো বটেই দায়িত্বশীল  নেতা, নেত্রী এবং কি সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যাক্তিবর্গ সহ সর্বমহল ঐদিন গুলিতে হয়ে পড়েছিল--"জ্ঞানশূন্য, দিশেহারা, বেঁহুশ।"
     'শেখ হাসিনার পরিবার'কে তাঁদের অনুগত ব্যাক্তি ও পরিবারের সমকক্ষে নিয়ে আসার জন্যে ষড়যন্ত্রকারিরা এমন কতক বিষয় 'ষড়যন্ত্রের বিষয়বস্তুতে পরিনত করেছিল" বিষয় গুলির উপর তাঁদের মধ্যে বিদ্যমান অনেকের "যথেষ্ট জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা" বিরাজমান ছিলনা--তা কিন্তু নয়। তাঁরাও নিশ্চিত জানতেন 'কস্মিন কালে'ও বিষয়গুলি 'হাসিনা পরিবার' নয় শুধু-অন্য  কারোর পক্ষেই ঘটানো  আদৌ সম্ভব ছিলনা।
      কিন্তু বিধিবাম--তাঁরাও রাজনীতির মৌসাহেব, চাটুকার, রাজনীতির কীট, ষড়যন্ত্রের লগ্নিকারী, টাউট বাটপারদের স্রোতের সঙ্গে কখন নিজেদের ভাসিয়ে দিয়েছিলেন--নীজেরাও টের করতে  পারেননি"। যখন হুঁশ ফিরে এসেছে তখন লজ্জা, গ্লানি, অপমানের বোঝা মাথায় নিয়ে পেছনে দৌঁড়াতে গিয়ে--"সাধারন নির্বাচন বয়কট করার পর তাঁদের 'রাজনীতির ভাণ্ডারে'  অবশিষ্ট যাহাই ছিল তাও হারিয়ে চারদেয়ালের বদ্ধকোনে বর্তমান সরকারের পুরো সময়কাল 'নেশার ঘোরে' কাটিয়ে দিতে বাধ্য হলেন।"
    দেশের আনাছে কানাছে লক্ষ লক্ষ মজ্জাগত রাজনীতি সচেতন নেতাকর্মীর বিশাল বাহিনী, দলের সার্বক্ষনিক  সক্রিয় নেতৃবৃন্দ আন্দোলনের পরবর্তী দিকনির্দেশনা না পেয়ে হতাশাগ্রস্ত, নেশাগ্রস্ত, মানষিক বিকার গ্রস্ত হয়ে পড়তে লাগলেন।উদ্ধতন নেতৃবৃন্দের এহেন রাজনৈতিক অবস্থানে  ক্ষোভে দু:খ্যে অনেকে দলত্যাগ করে সরকারি দলে যোগদান, কেউবা রাজনীতিত্যাগ আবার অনেকে চোর, ডাকাত, অথবা জঙ্গী খাতায় নাম লেখাতে একরকম বাধ্যই হয়েছেন। ঐ যে প্রবচনে আছে--"ব্যাক্তির ভুলে শুধু সংশ্লিষ্ট পরিবার কষ্ট পায়, নেতার ভুলে দেশের আপামর জনগনের দু:খ্যের সীমা থাকেনা" এক্ষেত্রেও হুবহু তাই হল।"
         অতি উৎসাহী নেতাকর্মীগন বর্তমান  সরকারের 'নৈতিক শক্তির উৎস অনুসন্ধান' না করে অশুভ শক্তির প্ররোচনায় অথবা অথর্ব কেন্দ্রীয় নেতাদের হুকুম পালন করতে গিয়ে একাধিক নাশকতা মামলার আসামী হয়ে দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন।তাঁদের মধ্যে একটি ক্ষুদ্র অংশ সরকার উচ্ছেদ, শেখ হাছিনার পরিবারকে হত্যা ষড়যন্ত্রে জড়িয়ে অবস্থানরত: দেশের গোয়েন্দা নজরদারি অথবা তদীয় দেশের জেলহাজতে থাকায় দেশে পরিবার পরিজন প্রতিপালন থেকেও বঞ্চিত রয়েছেন।
         আর একটি অংশ  'অতি আদর্শবাদী নেতাকর্মী' জঙ্গী গোষ্টির অর্থ সংগ্রাহকের ভূমিকায় অবতীর্ন হয়ে তদীয় দেশের গোয়েন্দাজালে আটক হয়ে দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন। তাঁরা দেশের প্রচলিত আইনে বিচারের সম্মুখ্যিন হয়ে জেলখানায় মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হয়ে পরিবার পরিজনেরও ঘৃনার বলিতে পরিণত হয়েছেন। উভয় শ্রেনীর আশা ছিল জঙ্গী হামলা ত্বরান্বিত করে নিজের মাতৃভূমিতে অস্থীরতা সৃষ্টির মাধ্যমে বিদেশী শক্তি অথবা তৃতীয় কোন শক্তির রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের সুযোগে নিরাপদে দেশে ফেরার স্বপ্ন। কিন্তু ভাগ্যদেবী তাঁদের সাথে চরম প্রতারনা করেছে- স্বপ্নে বিভোর যুবকগন  তদীয় দেশের গোয়েন্দা সংস্থার নজর এড়াতে ব্যর্থ হয়ে সেই দেশের অথবা বাংলাদেশে ফেরৎ এসে বাংলাদেশের জেলখানায়  পরিবার বিচ্ছিন্নতায় মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হচ্ছেন।

        পাঠক বন্ধুগন উপরে উল্লেখিত আলোচনার বিষয়ে দু'একটি উদাহরন তুলে না ধরলে আপনাদের সম্যক ভাবে হয়ত বা বুঝতে অনেকের কষ্ট হতে পারে।
   আমরা জানি- প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ওয়াদা বা ইসতেহার থাকে।নির্বাচন প্রচারনা কালীন উক্ত নির্বাচনী ইশতেহারের উপর প্রচার প্রচারনার মাধ্যমে জনমত সংগঠিত করে জনগনের রায় নিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে।ইহা সভ্য দুনিয়ার গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার স্বীকৃত  রীতি।
   জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু '৬৯ এর গনভ্যুত্থানে পুর্ববাংলার  জনগনের মৌলিক  বাঁচার দাবী স্বীকৃত ৬দফাকে  '৭০ এর সাধারন নির্বাচনে নির্বাচনী ইশতেহারে সংযুক্ত করেন। নির্বাচনে  নিরংকুস গনরায় পাওয়ার কারনে ঊল্লেখিত ৬দফাও জনগনের ভোটে অনুমোদিত হয়েছে মর্মে পুর্ব পাকিস্তানের জনগনের ভাগ্য নির্ধারনের একক শক্তিশালী নৈতিক বলে বলিয়ান হয়েছিলেন।পশ্চিমা শাষক গোষ্টির সঙ্গে ৬ দফার প্রশ্নে দেশী বিদেশী সমঝোতা মূলক আলোচনার চাপ সহজে প্রত্যাক্ষান করে পূর্ববাংলার স্বাধীনতাকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষে পৌঁছাতে  সক্ষম হয়েছিলেন।
      তদ্রুপ বঙ্গরত্ম শেখ হাসিনা '২০০৮ ইং সালের ঘোষিত সাধারন নির্বাচনে 'ডিজিটাল বাংলাদেশ' গড়ার অঙ্গিকারের সাথে 'আইনের শাষন প্রতিষ্ঠাকল্পে '৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে  মানবতাবিরুধী অপরাধের বিচার' করবেন সংযুক্ত করে ভুমিধ্বস বিজয় অর্জন করে বাংলাদেশের জনগনের সেবা করার "রাষ্ট্রীয় স্বীকৃত শাষক" রুপে সরকার পরিচালনার শফথ গ্রহন করেন।
   নির্বাচনী অঙ্গিকার বাস্তবায়নের লক্ষে মানবতা বিরুধী বিচার কায্য শুরু করার জন্যে আন্তজাতিক মানসম্পন্ন বিচার ট্রাইবোনাল গঠন করে বিচার অনুষ্ঠানের প্রারম্ভ হ'তে বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত মহল গুলির পক্ষ হতে বিভিন্ন ভাবে বাঁধা প্রাপ্ত হতে থাকেন। সাংগঠনিক ভাবে পরাজিত চারদলীয় জোট অপরাপর রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে এবং বাহিরের "বাংলাদেশ বিরুধী অশুভ শক্তি সমূহ"কে একত্রিত করে উক্ত বিচার কায্য বানচাল করার চক্রান্তে নতুন নতুন ইস্যু সংযুক্ত করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।
       মানবতা বিরুধী বিচার অনুষ্ঠানে আগেই  জনগনের রায় নিয়ে সরকার ছিলেন নৈতিক বলে বলিয়ান। শেখ হাসিনা অত্যান্ত চাতুয্যের সঙ্গে তাঁর দলকে ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ বা প্রতিহতের নিমিত্তে  রাজপথে না নামিয়ে অনিবায্য গৃহযুদ্ধের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করেন। অপর দিকে রাষ্ট্রীয় শক্তি ব্যবহার করে সম্মিলীত অ-শুভশক্তিকে নিস্তেজ করে বিচার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে সক্ষম হন।
        বিগত আন্দোলনে পরাজিত শক্তি তাঁদের দেশী বিদেশী প্রভুদের সাহায্যে শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে  "দুর্নীতির কালিমালিপ্ত" করে জনগন ও সরকারকে  বিভ্রান্ত, জনবিচ্ছিন্ন করে ক্ষমতা থেকে সরানোর  লক্ষে "সরকার ও বিশ্বব্যাকের যৌথ উদ্যোগের মেঘা প্রকল্প পদ্মাসেতু নির্মানে" কোনপ্রকার অর্থবরাদ্ধের আগেই "কাল্পনিক দুর্নীতি"র অভিযোগ উত্থাপন করাতে "বিশ্বব্যাংক কে প্ররোচিত" করতে সক্ষম হয়।
      পুর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী-- বিশ্বব্যাংক অভিযোগ উত্থাপনের সঙ্গে সঙ্গেই চতুর্দিক থেকে ষড়যন্ত্রকারিরা এক সঙ্গে, একবাক্যে -আওয়াজ তোলে। নিম্নে তাঁদের অন্যতম দুই একজনের তখনকার সময়ে দেয়া বক্তব্য পাঠকদের স্মৃতিতে ভাশ্বর রাখার উদ্দেশ্যে তুলে ধরা প্রয়োজন মনে করি।
        (১) গুলশান অফিসে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বলেন, দেশ স্বাধীনের পর এই প্রথম বিশ্বব্যাংক তার দেয়া বরাদ্দ দুর্নীতির কারণে বাতিল করল। দুর্নীতি দমন কমিশন আবুল হোসনকে বাঁচানো চেষ্টা করছে বলেও এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করে বিএনপি।
     (২)ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন- পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার ১০ মাস পর তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের পদত্যাগ প্রমাণ করছে যে অভিযোগটি সঠিক ছিল। পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে তা প্রমাণিত। যদি সে আরো আগে পদত্যাগ করত, তাহলে হয়ত বরাদ্দ বাতিল করা হত না। অপর এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল দাবি করেন--"বিশ্ব ব্যাংক যেই তিনজনের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ তুলছে তার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনাও একজন।"
      (৩) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ বলেছিলেন, যদি আবুল হোসেন একজন দেশপ্রেমিক হয়ে থাকে, তাহলে কে দেশপ্রেমিক নয়? প্রাথমিক অবস্থায় আবুল হোসেনকে সমর্থন দেয়ায় একটি বার্তাই সাধারণ মানুষ পায়। আর তা হল, ‘সাধারণ মানুষের টাকা যারা ডাকাতি করে, তাদেরই রাজনীতিতে আসার অধিকার রয়েছে।
      এমত:বস্থায় সরকার, বাংলাদেশের বন্ধুরাষ্ট্র সমূহের সরকার প্রধানগন কিংকর্তব্যবিমূঢ হয়ে পড়েন--"বিশ্বব্যাংকের উপর আন্তজাতিক চাপ ক্রমশ: বৃদ্ধি পেতে থাকে।অর্থ বরাদ্ধের আগে কিভাবে অর্থলোপাট হয় তাঁর ব্যাখ্যাও একাধিক রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে উত্থাপন করা  হয়।বিশ্বব্যাংক তাঁদের অস্তিত্ব ও বিশ্বাস রক্ষাকল্পে উপায়ন্তর না পেয়ে আন্তজাতিক আদালতের শরনাপন্ন হয়।
            বিশ্বব্যাংকের উদ্দেশ্য--"সময়ক্ষেপন করে মিথ্যা, বানোয়াট অভিযোগ উত্থাপনের কারনে "ক্ষুব্দ বাংলাদেশ সরকার"কে প্রয়োজনীয় সহযোগীতার আশ্বাসের বিনিময়ে নিয়ন্ত্রন করে আপাত: বিশ্বচাপকে প্রশমিত করা।"
       উক্ত উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে একাধিকবার সময় প্রার্থনা, বিচারকের উপর অনাস্থা, বিচারের স্থান পরিবর্তন ইত্যাদি যৌক্তিক উপায় অবলম্বনের মাধ্যমে সময়ক্ষেপন অপর দিকে ঘন ঘন বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তাদের বাংলাদেশ সফর অব্যাহত রেখে "নতুন নতুন মেঘা প্রকল্পে নামমাত্র সুদ ও বিনাসুদে অর্থ বরাদ্ধ" এর প্রতিশ্রুতির জোয়ার তোলে।
      কোন অবস্থায় বাংলাদেশ সরকারকে নিয়ন্ত্রন করতে না পেরে অবশেষে ব্যাংকের নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত কর্তাব্যাক্তি গতমাসে  বাংলাদেশ সফরে হাজির হন।তিনি প্রথমেই বাংলাদেশের শিশুদের পুষ্টি চাহিদা পূরণে একশত কোটি ডলার সাহায্য ঘোষনা করেন এবং সরকারের নেয়া দ্বিতীয় পদ্মাসেতু সহ অন্যান্ন "মেঘা প্রকল্পে" অর্থবরাদ্ধ যথারীতি সচল রাখার প্রতিশ্রুতি পুণ: ব্যাক্ত করেন।এইবারও বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে মামলা সংক্রান্ত মনোভাব পরিবর্তনের কোন প্রতিশ্রুতি আদায় করে নিতে পারেননি।
        শেষাবদি বিশ্বব্যাংক নিজেদের করা মামলায় নিজেরা হেরে প্রমান করেছে--"শেখ হাসিনার সরকার শুধুমাত্র জনগনের বলে বলিয়ান নয়--নীজ পরিবারে স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতির প্রশ্রয় না দিয়ে নৈতিক বলেও ছিলেন বলিয়ান।" ফলে বিশ্বব্যাংকের  সকল প্রকার লোভনীয় অফার দেশ ও জনগনের স্বার্থে অবলীলায় গ্রহন করেছেন সত্য নিজকে রাখতে পেরেছেন অনড়, দৃড  এবং
অ-নমনীয়।
         একই সময়ে মাননীয় প্রধানমনন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য পুত্র আইটি বিশেষজ্ঞ এবং সরকার প্রধানের অ-বৈতনিক 'তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা' জনাব সজীব ওয়াজেদ (জয়) এর বিরুদ্ধে আমেরিকার ফেডারেল ব্যাংকে, তাঁর নীজস্ব একাউন্টে  "ত্রিশ বিলিয়ন ডলার" জমা আছে। বাংলাদেশ থেকে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত টাকা পাচার করে বিদেশী ব্যাংকে জমা রাখা  হয়েছে মর্মে আর একটি অভিযোগও উত্থাপন করে।
       উল্লেখ্য যে ষড়যন্ত্রকারিগন এতই বেঁহুশ ছিলেন যে উল্লেখিত দেশের শুধুমাত্র ব্যাংক নয় বেসরকারি "অর্থলগ্নিকারি প্রতিষ্ঠানে"ও অর্থ জমা রাখার প্রয়োজনে  খাতকের "আয়ে ব্যায়ের" ফিরিস্তি জমা দেয়া বাধ্যতা মূলক। সন্দেহজনক অর্থ লেনদেন ব্যাংক কতৃপক্ষ যে কোন সময় একাউন্ট প্রিজ, অর্থ আটক এবং মামলা রুজুর অধিকার--"ব্যাংক কতৃপক্ষ এর অধিকার সেই দেশের আইনের মাধ্যমে সুরক্ষিত।"
       ষড়যন্ত্রকারিরা সুইসব্যাংকের নাম না বলে বেঁহুশ অবস্থায় আমেরিকান ফেডারেল ব্যাংকের নাম নেয়।অবশেষে সজিব ওয়াজেদ জয়ে এবং তাঁর "মা প্রধানমন্ত্রীর" চেলেঞ্জের মুখে প্রমান সংগ্রহের কথা বলে গুজুবসৃষ্টিকারি ষড়যন্ত্রিরা পালিয়ে রক্ষা পায়।
   ঐসময়ের ডামাডোলের মধ্যেই জাতি জানতে পারে--ষড়যন্ত্রকারিদের ছড়ানো গুজুব সজিব ওয়াজেদ জয়" আমেরিকার প্রেসিডেন্টের চেয়ে দ্বিগুন বেতন ভাতা বাংলাদেশ সরকার থেকে নিয়ে আমেরিকায় জমা করেছে। সরকারের দায়িত্বশীল মহল জাতিকে আশ্বস্ত করে যে "সজিব ওয়াজেদ জয়" সম্পূর্ণ অবৈতনিক উপদেষ্টা হিসেবে প্রধান মন্ত্রির উপদেষ্টা পদে অধিষ্টিত আছেন এবং কি তাঁর গাড়ীর জ্বালানীও "সরকারি পোল" থেকে সংগ্রহ করেন না। এই কঠিন সত্যটি সরকারের কেউ জানতেও পারেননি এবং "শেখ হাসিনা" নীজেও কোন দিন ঘুনাক্ষরে মুখে আনেননি। এখানেই তাঁর বদন্যতা,এখানেই তাঁর মহত্ব, এখানেই তাঁর ত্যাগের বিস্ময় লুকিয়ে আছে।
        জয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপনকালীন সময়ে 'বাংলাদেশ ব্যাংকে'র রিজার্ভ হ্যাকিং এর ঘটনা প্রকাশ পায়। (এমনিতে কান্দুনী বুড়ী আরও পাইছে ঢোলের বাড়ি)। গুজুবের ডালপালা, শাখা প্রশাখা প্রসারীত হয়ে উক্ত হ্যাকিং জয়ের কাঁধে তোলার জন্যে মহলটি মরিয়া হয়ে প্রপাকান্ড চালাতে থাকে। সাধারন মানুষকে ধারনা দেয়ার আপ্রান চেষ্টা অব্যাহত রাখে যে-- "বাংলাদেশে একজনই আছে রিজার্ভ হ্যাকিংয়ে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন প্রযুক্তিবীদ--তিনিই হচ্ছেন প্রধান মন্ত্রী পুত্র " সজিব ওয়াজেদ জয়"। আল্লাহর অশেষ কৃপায় ফিলিপিন্স সরকার তাঁদের দেশীয় হ্যাকার জড়িত বিষয়ে তদন্তে আপাদমস্তক ঘটনা জাতি জানতে পারে।হ্যাকিংয়ে জড়িত অনেকেই সাজাপ্রাপ্ত অনেকেই বিচারাধীন পয্যায় রয়েছে।চুরি যাওয়া অর্থ ইতিমধ্যে কিছু অংশ ফেরৎ ও এনেছে সরকার।
        তৎসময়ে আর একটি চাঞ্চল্যকর হত্যা পরিকল্পনা আমেরিকান সরকারের গোয়েন্দা তথ্যে উঠে আসে এবং একজন উক্ত ঘটনায় সেই দেশের জেলে সাজা প্রাপ্ত হয়ে আটকও আছেন। ঘটনাটি হচ্ছে--"প্রধান মন্ত্রী পুত্র "সজিব ওয়াজেদ জয়"কে হত্যা পরিকল্পনা।" উক্ত ঘটনায় জড়িত উভয় দেশের প্রতি্যসা কয়েকজন অভিযুক্ত হয়ে মামলার ফাঁদে আটক আছেন। ইনশাল্লাহ অচিরেই উক্ত ঘটনার সুষ্ঠ বিচার জাতি দেখতে পাবে।
         শেষ যাত্রায়ও ষড়যন্ত্রকারিদের আশা ভঙ্গে উপরে উল্লেখিত বিষয়টি পরিস্কার হয় এবং বরেন্য ব্যাক্তি জনাব এমাজ উদ্দিনের বিবৃতি এবং ফখরুল ইসলামের বক্তব্য পয্যালোচনায়  পরিস্কার বুঝা যায়-- ঘটনার সত্যতা থাকুক বা না থাকুক তাঁদের কিছুই আসে যায়না--খালেদা পরিবারের লুটপাটের কালিমা মুছতে শেখ হাসিনার পরিবারের গাঁয়ে কালিমালেপন তাঁদের জন্যে ফরজ"।
          অবশেষে কোনবস্থায় সফল হতে না পেরে "মা ছেলে"কে হত্যা পরিকল্পনা করতেও পাষান্ডদের বিবেকে বাঁধেনি, সামান্য বুক কাঁপেনি।তাঁরা জানেনা- -"পরের জন্য গর্ত খুড়ে আগে নিজে নেমে দেখতে হয়, খুঁড়া গর্তের গভীরতায় কাজ চলবে কিনা"। বিধির বিধান ষড়যন্ত্রকারি-তো-মরল-ই- সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের চল্লিশাও খেয়ে গেল।
           "জয়বাংলা     জয়বঙ্গবন্ধু"
    ruhulaminmujumder27@gmail.com
     

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন