একদল মৌলভি মসুলমানদের নৈরাশ্যবাদে উদ্ভোদ্ধ করে ইসলামকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে----"প্রকৃত আলেম ওলামা সাহেবেরা কি চেয়ে চেয়ে শুধুই দেখবে?"
   (রুহুল  আমিন  মজুমদার)
 
        আমগাছে ওয়াজ মাহফিলের মাইক বাঁধতে  দেয়নি বিধায় আমগাছটি পাতা, কান্ড, ফুল, কলি ঝরা ধরেছিল।গৃহস্ত ভুল বুঝতে পেরে মাদ্রাসার বড় হুজুরের হাতে পায়ে ধরে পানি পড়া এনে দেয়ার পর সাথে সাথে পাতা ঝরা, ফুল ঝরা বন্ধ হয়ে গাছ জ্যান্ত হয়ে উঠেছে।
  মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে পাশের বাড়ীর টিউব ওয়েল থেকে পানি আনতে দেয়নি, মাদ্রাসার বড় হুজুরের বদ-দোয়ায় উক্ত টিউবওয়েলের পানির স্তর নীছে নেমে গেছে, পানি উঠেনা। গৃহস্ত বড় হুজুরের হাতে পায়ে ধরে মাফ চাওয়ার পর হুজুর দোয়া করে দেন। সাথে সাথে টিউব ওয়েলের পানি গড়গড় করে পড়া শুরু করেছে।
  বড় হুজুরের মুখের লালা দোয়া হিসেবে কবুল হয়। যে কেউ খেতে পারলে পেটের রোগ বালাই দূর হয়ে যায়।অনেকেই উপকৃত হয়েছেন। হুজুর বড় বুজর্গান--"বদ-দোয়ায় সর্বনাশ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে"।
    ত্রিশবছর আগে মাদ্রাসার ছোট হুজুর মৃত্যুবরন করেছিলেন।তিনি ছিলেন আল্লাহভক্ত নেককার সহী আলেমদের মধ্যে অন্যতম একজন। ত্রিশ বছর পর ছোট হুজুরের লাশ কবরে "তরতাজা" পাওয়া গেছে।ছোট হুজুর মাদ্রাসার বড় হুজুরকে স্বপ্নে দেখায়, তাঁর লাশ তুলে পূনরায় নতুন কাপড় দিয়ে দাপন করার জন্যে।বুজর্গান ব্যাক্তিদেরকে মাটি স্পর্ষ করতে পারেনা, কাপড় মাটিতে মিশে গেছে কিন্ত্যু পূর্ণাঙ্গ শরীর তরতাজাই রয়েছে--"কাপড় পরিবর্তন করতে গেলে দেখা যায় হুজুর যেন জীবিত এবং হাঁসছেন"।
    বন্ধুগন উল্লেখিত বক্তব্যগুলি আমার নয়--"আমার পাশ্ববর্তি গ্রামের ওয়াজ মাহফিলের মাইক থেকে আমার নীজকানে শুনতে পাওয়া হুজুরের বয়ানের অংশ বিশেষ মাত্র।" এই ধরনের লক্ষলক্ষ বাস্তব উদাহরন তুলে ধরে কতিপয় মাওলানা ওয়াজ করে থাকেন। ভিডিওতে একটি ওয়াজ মাঝে মাঝে অনেকেই শুনেছেন, আমিও শুনেছি। তিনি কিন্তু নামকরা এক ওয়ায়েজিন মাওলানা (নাম এই মহুর্তে আমার মনে আসছেনা, স্থান ব্রাম্মনবাড়িয়া)।তিনি ইন্ডিয়াতে ওয়াজ করতে গিয়েছিলেন।সেখানে তাঁর জীবনের চরম পরিণতির বর্ণনা শুনে উপস্থিত শ্রোতাগন অঝোরে চোখের পানি ফেলে দিতে দেখেছিলাম। মাওলানা সাহেব শেষ পয্যন্ত হিন্দু এবং মুসলিম ধর্মের শ্রেষ্ঠত্বের বাহাসে জিতে এক হিন্দু বৃদ্ধ ঠাকুর কতৃক জেলমুক্তি ঘটাতে সক্ষম হয়েছিলেন। পরবর্তিতে সে বৃদ্ধ ঠাকুর ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেছিল কিনা আমার শুনা হয়নি।
      প্রকাশ্য ওয়াজ মাহফিলের নামে নৈরাশ্যবাদ, জাতিগত হিংসা, ধর্মকে অতিরঞ্জন, আলৌকিক কাহিনীরুপে তুলে ধরার চরম, ব্যাপক প্রচারযজ্ঞের মহা উৎসব চলছে একশ্রেনীর ওলামা, মাশায়েখ কতৃক প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসা কেন্দ্রিক ওয়াজ মাহফিলে। যাহা ইসলাম ধর্মে আদৌ স্বীকৃত নয় বরঞ্চ নবীজির জামানায়ও হারাম, ধর্মদ্রোহী, মোনাফেকি হিসেবে ঘোষিত হয়েছিল।বাস্তবতা বিবর্জিত কোন কিছুই ইসলামে স্বীকৃত নয়, ইহা আমাদের মনে রাখা উচিৎ।
    প্রিয় পাঠক বন্ধুরা- বর্তমান যুগ ডিজিটাল যুগ-।মগজে যখন লেখার উপজিব্য কিছু আসেনা---একা একা ভালও লাগেনা, তখন কোটি কোটি পেইজবুক ব্যবহারকারি ক্ষুদে সাংবাদিক উপস্থিত যাহাই সামনে পায় তার ছবি পোষ্ট করে বন্ধুদের জানিয়ে দেয়--"আমি আছি তোমাদের সাথে"। ঘরের লাল মোরগটি কয়টা ডিম দিল তাও বন্ধুরা পোষ্ট করতে ভুলেনা।বাচ্চা মেয়েটির পাতলা পায়খানা দেখা দিলে ষ্টেটাস দিয়ে বন্ধুদের নিকট চোখের মণির জন্য দোয়া কামনা করে থাকে।সকালে ঘুম থেকে উঠার পর চেহারা কেমন দেখায়, বিকেলে সুর্য্যের কিরন হেলে পড়লে ছবিটা কেমন হয়, লাল শাড়ীতে কেমন মানিয়েছে ইত্যকার পাতিলের খবর তৎক্ষনাৎ বন্ধুমহলে ছড়িয়ে দিতে ভুলেনা।
    দু:খ্যজনক হলেও সত্য--"মাওলানা সাহেবরা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের প্রতি আনুগত্যতার কারনে মহান আল্লাহ এমন বুজর্গী দান করেছেন, তিনি যখন যাহাই কামনা করবেন আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাকে তাই দান করে থাকেন। আল্লাহর অশেষ রহমতে উনারা প্রতিনিয়ত  এমন সব হাজারো কেরামতির নিদর্শন স্থাপন করার পরও কোটি কোটি পেইজবুক ইউজার  বন্ধু, শতশত সাংবাদিক, পত্রপত্রিকা, ইলেকট্রিক মিডিয়া  হিংসাবশত: প্রতিনিয়ত এমন হাজারো খবর প্রকাশ করেনা।
          বাংলাদেশের বুজর্গান মাওলানা ভারতে ওয়াজ মাহফিলে অংশ নিতে গিয়ে জীবনহানীর সংশয় দেখা দেয়া সত্বেও অপ-লাইনের পত্রিকা বিদ্বেশ বশত: খবরটি চাপায়নি।বাংলাদেশ এম্বেসিও বুজর্গান মহান হুজুরের জেলমুক্তির জন্যে এগিয়ে আসেনি। বাংলাদেশের নাস্তিক অথর্ব সরকার প্রতিবাদ দূরে থাকুক অন্তত: ভারতীয় হাইকমিশন থেকে খবর নেয়ার প্রয়োজন ছিল-তাও নেয়নি। বড়-ই দু:খ্য লাগে জেলখানায় তাঁদের দেশীয় কয়েদীদের তিনটা রুটি ডাল, মাংস খাবার দিলেও বাংলাদেশের হাজতি হুজুরকে মাত্র একটি শুকনা রুটি বরাদ্ধ দিয়েছে, সাথে পানিও দেয়নি।পানির কষ্টে আমাদের বরেন্য মাওলানা সাহেব চটপট করে মৃত্যু কোলে ঢলে পড়ার উপক্রম হলেও পাষান কাফের একফোঁটা পানি দেয়নি। এহেন অমানবিক আচরন কোন অবস্থায় মেনে নেয়া যায় না মানতে পারিনা। অথছ এই অমানুষিক অত্যাচারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের কোন ধর্মীয় সংগঠন প্রতিবাদি মিছিল মিটিং করার উদ্যোগ নেয়নি। দৈবশক্তিতে জানা হয়ে গিয়েছিল মিছিল সমাবেশ নাস্তিক সরকার করতে দিবেনা।
         বে-নামাজী, বে-কেয়ামী, বে-রোজাদার, বুঝ-জ্ঞানহীন, খোদাদ্রোহী, পাপিষ্ট যুবক ছেলেপেলে, সাংবাদিক, পত্রপত্রিকা, জনসমক্ষে প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের একাধিক বদখবর চাপিয়ে লাখ লাখ উলামা মাশায়েখের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে কার্পন্য করেনা।অথছ আল্লাহর কুদরত প্রাপ্তির খবর এড়িয়ে যায়।
     আল্লাহ তাঁর প্রেরিত পবিত্র পাককালামে বারবার সতর্কবানী দিয়ে বলেছেন---"জেনে, শুনে, বুঝে যদি কেউ তাঁর পাককালামের অর্থের বিকৃতি ঘটায়, মিথ্যা বলে, মোনাফেকি করে তাঁদের শাস্তি পৃথিবীতে এবং কেয়ামতের মাঠে অবধারিত। আল্লাহ তাঁর বান্দাদের অনুধাবন করার নিমিত্তে, সম্যক ধারনা লাভের জন্যে বহু উদাহরন মানুষের চোখের সামনে ধরে রেখেছেন। দুনিয়াতে যত পাপকাজ মানুষ করে সব পাপ আল্লাহ হয়তো বা মাফ করে দিবেন কিন্ত্যু তিনি মিথ্যা যারা বলে তাঁদের মাফ করবেন না।" মিথ্যা বলা 'মহাপাপ' বলে তিনি ঘোষনা করেছেন। দুনিয়াতে যত নবী বা রাসুল আল্লাহ পাঠিয়েছেন সবাই নবী এবং রাসুল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন কিন্তু হযরত মহাম্মদ (স:) শেষনবী এবং তিনি শ্রেষ্ঠ নবী তিনিই একমাত্র 'মহানবী'। তদ্রুপ সব পাঁপের সেরা পাঁপ অ-কষ্টকর, সহজে উচ্চারন সম্ভব একমাত্র মিথ্যাকে "মহাপাঁপ"--মিথ্যাবাদীকে "মহাপাঁপী" ঘোষনা করেছেন আল্লাহ।
    মহাপাঁপি মানুষদেরকে মহান আল্লাহ তাঁর চারপাশের পরিবার পরিজন, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবের নিকট দুনিয়াতেই 'লানত' দিয়ে লজ্জিত করে শাস্তি দিয়ে থাকেন। সাময়িক বিপদ আপদ ইমান পরিক্ষার আওতায় পড়ে। মৃত্যু যন্ত্রনা বা সমপয্যায়ের কষ্ট লানতের মধ্যে পড়েনা--আল্লাহ তাঁর খাস বান্দাদের মৃত্যু যন্ত্রনা বা তৎসম কষ্ট  দিয়ে  বা তাঁর আগে কঠিন শারিরীক রোগের দু:খ্য, কষ্ট, যন্ত্রনা দিয়ে গুনাহ হালকা করে, তাঁকে পাকপবিত্র করে তিনি উঠিয়ে নেন।কেয়ামতের মাঠে যেন আল্লাহর নেকবান্দা অন্য বেহেস্তি বান্দাদের নিকট লজ্জিত না হতে হয়।
    অন্যদিকে ধোঁকাবাজ, আল্লাহর হুকুমের সর্বাপেক্ষা বিকৃতকারি সর্বাধিক বিকৃত অনুগত বান্দাদের তিনি লোকচক্ষুর অন্তরালে এমন কঠিন বদভ্যেস ফয়দা করে দেন, সেই বদভ্যেসের জ্বালায় লোকটি বদকাজ কখন, কোনসময়ে, কোনস্থানে করতে উদ্যত হয়--সে নিজেই টের পায়না। ফলে জনসমক্ষে পরহেজগার নামাজি, অহরাত্র ইবাদতকারি,  ইমানদার, সম্মানী ব্যাক্তি হিতাহীত জ্ঞান শুন্যবস্থায় ধরা পড়ে--লোকসমাজে লজ্জিত হওয়ার ন্যাক্কারজনক উদাহরণ সৃষ্টি হ'তে দেখা যায়। লক্ষ করলে দেখা যায়--"মহান আল্লাহর এমন ধারার সত্যতার হাজারো উদাহরন আমাদের চারপাশে ঘটেনি, এমন সময় আমরা কদাচিৎ পার করেছি।মুলত: লজ্জার চেয়ে বড় শাস্তি আর কিছুই নেই--,ইহাও সত্যি।
   
     "লানৎ" শব্দটি ছোট কিন্তু তাৎপয্য বহুবীদ। সর্ব উচ্চস্থানে থেকেও কোন বদকাজের জন্যে জনসমক্ষে হেয়প্রতিপন্ন হওয়া,পরিবারের নিকট হেয় প্রতিপন্ন হওয়া,  লজ্জিত হওয়ার কারনে আত্মহত্যা করে নীজকে বিলীন করে দেয়ার ইচ্ছা পোষনের ন্যায় কাজগুলিকে "লানৎ"  বলা যেতে পারে।মহান আল্লাহ ঐ সমস্ত বান্দাকেই লানৎ" দিয়ে থাকেন যারা আচার, আচরন, কথা বার্তায়, ইবাদত বন্দেগীতে জনসমক্ষে সর্বত্তম অথছ সম্পূর্ন আল্লাহ, আল্লাহর রাসূল এবং কোরানের নির্দেশীত পথের বিকল্প।
    "লানতের" সর্বাপেক্ষা উত্তম উদাহরন হ'তে পারে "বলৎকার", সমকামিতা, ভিক্ষাবৃত্তি, বেশ্যাবৃত্তি, লুচ্চামী, পরকিয়া শব্দগুলি। সমলিঙ্গের সহবাস নিশ্চয়ই বদভ্যাসের এমন একটি--"মদ, মাদক, সুপেয় খাদ্য, বিপরীত লিঙ্গের যৌনকর্ম, স্ত্রী সহবাস ইত্যাদি ছেড়ে দেয়া সম্ভব কিন্তু সমলীঙ্গের যৌনতা তাঁদের ছেড়ে দেয়া সম্ভব হয়না। ইহা আল্লাহ প্রদত্ত একটি কঠিনতম গজব বলা যেতে পারে। ভালভাবে লক্ষ করলে দেখা যায়--এই কঠিন রোগটির সর্বাধিক আক্রান্ত ব্যাক্তিদের মধ্যে নাস্তিক্যবাদে বিশ্বাসীদের মধ্যে অনেকের এবং একশ্রেনীর উলামা মাশায়েখ, অতিধার্মীক, পরহেজগার ব্যাক্তিদের অনেকের মধ্যে দেখা যায়, এবং কি প্রমানীত সত্যে পরিণত হয়েছে।
    তবে হ্যাঁ ব্যাতিক্রমও আছে--ব্যাতিক্রম নেই বা সাধারনে নেই এমন বদ অভ্যেস আমি কখনই বলছিনা---কতিপয় ব্যাতিক্রম সর্বক্ষেত্রেই বিরাজমান থাকে, থাকবে। তবে উল্লেখিত দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে নজরে আসে, এবং ইহা প্রমানীত সত্য। সরকারি মাদ্রাসার আলেম--সাধারন মসুলমান, অন্যান্ন ধর্মালম্বি সাধারন মানুষের মধ্যে বেশির ভাগ উক্ত হীনকাজকে অত্যান্ত ঘৃনা এবং "কবীরাহ গুনাহ" হিসেবে বিবেচনা করে। সাধারনত আমার ব্যাক্তিগত নজরে অদ্যাবদি সরকারি মাদ্রাসার কোন আলেমের এহেন ঘৃনিত বদভ্যেস চোখে পড়েনি।  খুববেশী জনসমক্ষে লজ্জিত হওয়ার তেমন কোন উদাহরনও আমার সংগ্রহে নেই।
     অতিধার্মীকদের পরিণতি নবী করিম (স:) এর জীবিতবস্থায়ও এমন একাধিক উদাহরন আমরা দেখি। আমি দৃডতার সঙ্গে বিশ্বাস করি--"নবী তাঁর জীবদ্দশায় যা কিছু করেছেন, সব কিছু আল্লাহর হুকুমেই করেছেন।" কথিত আছে এবং বিভিন্ন ভাবে হাদিছেও এসেছে--"নবী করিম (স:) যখন পথে বের হ'তেন তাঁকে আগে কোন 'সাহাবী' সালাম দিতে পারতেন না, নবীজি আগেই সালাম দিতেন। "আবু লা'হাব" সাহাবীদের মধ্যে খুবই ইমানদার, পরহেজগার এবং নবীজির প্রিয় সাহাবীদের মধ্যে অন্যতম একজন ছিলেন। তিনি নবীজি কেন, কিভাবে আগে সালাম দিতে পারেন এই সম্পর্কে পরিক্ষা করার জন্যে একদিন নবীজি যে পথে প্রতিনিয়ত বের হন, সেই পথের ঝোঁপের আড়ালে বসে রইলেন-। নবীজিকে আগে সালাম দিতে পারেন কিনা, পরিক্ষা করার উদ্দেশ্যে।
     নবীজি যথারীতি বের হয়ে উক্ত স্থানে আসামাত্রই "আবু লাহাব" লাফ দিয়ে উঠে নবীজিকে সালাম দিলেন।নবীজি সাথে সাথে আবু লাহাবকে ইসলাম থেকে 'খারেজ' করে দিয়ে বলেছেন "আবু লাহাব মানুষরুপি শয়তান"। পবিত্র কোরানেও এই ঘটনার বিবরণ যথাযথভাবে এসেছে।নবীজি তাঁর উম্মতদের সতর্ক করে বলেছেন---"একদল ইসলামধর্ম রক্ষক, প্রচারক বের হবে, তাঁরা দেখতে প্রকৃত ইসলামের অনুসারীর মতই হবে, সাদা বকের চাইতেও সুন্দর পাগড়ী পড়া উক্ত ধর্মপ্রচারক গন মসুলমানদের ইমান আ'কিদা, বিশ্বাসে চিড় ধরানোর যাবতীয় উপাদান তাঁদের মধ্যে দেখা যাবে, তাঁরা আর কেউ নন- আবু লাহাবের অনুসারী'--"ইসলামের দলত্যাগী বা খারেজ বা খারেজী হিসেবে পরিচিতি পাবে।"
    উক্ত ঘটনার কিছুকাল পর খলিফা শেরে আলীর সময়কার একটি যুদ্ধেও তাঁর সত্যতা প্রতিষ্ঠিত হতে দেখা গেছে।একদল মুসলিম হযরত আলীর শাষনামনে যথাযথ ভাবে ইসলাম ধর্ম রাষ্ট্রীয় পয্যায় হযরত আলী অনুসরন করছেনা--মর্মে তাঁর রাজত্বে বিদ্রোহ করেন।হযরত আলী (র:) তাঁদেরকে দমন করার জন্যে সৈন্যসামন্ত সহকারে সেখানে গিয়ে যুদ্ধে লিপ্ত হলেন। প্রচন্ড যুদ্ধ চলার পর বিদ্রোহী বাহিনী নাস্তানাবুদ হয়ে পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হলে, শয়তানীর ভাব জেগে উঠে তাঁদের মধ্যে। শয়তান "বিদ্রোহী ইসলামী সৈন্যদের দলনেতা" উপায়ন্তর না দেখে "বর্শার মাথায়" পবিত্র কোরান বেঁধে "যুদ্ধবিরতির আহব্বান জানালেন।
    সেই দিনটি ছিল শুক্রুবার, যুদ্ধটিও হচ্ছিল গভীর জঙ্গলের পাশে খোলা ময়দানে। যেহেতু পবিত্র কোরান উঁচিয়ে যুদ্ধ বিরতির আবেদন জানিয়েছে সেহেতু উক্ত আহব্বানকে অমান্য করে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া কোন অবস্থায় মুসলিম বাহিনীর সমচিন নয়। "হযরত আলী" যুদ্ধ বিরতির ঘোষনা মেনে নিয়ে, সৈন্যদের জুমার নামাজের প্রস্তুতি এবং খাবার প্রস্তুতের নির্দেশ দিলেন। হযরত আলীর সেনাবাহিনী দীর্ঘদিনের যুদ্ধের ক্লান্তি নিয়ে এদিক সেদিক ছত্রভঙ্গ হয়ে গেল, কেউ কেউ রান্নাবান্নার কাজে মনযোগ দিল, অনেকেই  জুম্মার নামাজের প্রস্তুতির ব্যাস্ততায় মগ্ন। এমনি সময় ইসলামের মুখোশধারী শয়তান আলেমদের পক্ষ থেকে সাড়াশি আক্রমনের মাধ্যমে মুসলিম সৈন্যদের অকাতরে হত্যা, লুটপাট করে চরমভাবে পরাজিত করে বীরত্ব প্রকাশ করে। তাঁরা আর কেউ-ই নয়--"নবীজি কতৃক ইসলাম থেকে খারেজ হওয়া "আবু লাহাবের অনুসারী অতিধার্মীক "খারেজী"র বংশ বা অনুসারী শয়তান।ইসলামের ইতিহাসে বেঈমানী, মোনাফেকি, শতানের এই যুদ্ধ " জুম্মাতুল জঙ্গল" নামে বিধৃত হয়ে মসুলমানদের নিকট অনুকরনীয় হয়ে রয়েছে।
   
      ইসলামে নৈরাশ্যবাদ, অতিরঞ্জন, গলাবাজি,ঠোঁটবিক্রির মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ, ভিক্ষাবৃত্তি কোনবস্থায় স্বীকৃত নয়, বরঞ্চ হারাম হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এমনকি কাফের শাষিত রাষ্ট্রে বসবাসকারি ইসলাম ধর্মের অনুসারিদের "রাষ্ট্রীয় আইনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ সম্পূর্ণ নিষেদ" করেছেন। কাফের শাষন মেনে জীবন যাপন করার নির্দেশনা দিয়ে  "পবিত্র জুমাবার" অতিরিক্ত নামাজ আদায়ের মাধ্যমে মহান সৃষ্টি কর্তার নিকট "কাফের শাষন থেকে মুক্তির আরজ" করার জন্যে বলা হয়েছে।এর ব্যাত্যায় আল্লাহ তাঁদের বংশানুক্রমে লানৎ দিয়ে পৃথিবীতে অনুসরনের জন্যে উদাহরন সৃষ্টি করে রাখার হাজারো কৃর্তি আমাদের চোখের সামনেই আছে।কিন্তু আমরা তা দেখেও নাদেখা বুঝেও না বুঝার ভান করে থাকি।
      জাতি, ধর্ম, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারিগন নবীজির শাষনামল এবং কি খলিফাদের শাষনামলেও ধিকৃত হয়ে বংশ পরস্পরায় দায় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হয়েছে, আজো হচ্ছে। যেমনটি নবীজির শাষনামলে আবু লাহাবের অনুসারীগন আজো ইসলামে 'খারেজী' হিসেবে চিহ্নিত হয়ে মুসলিম সমাজে ধীকৃত, অপাংক্তেয়। নবীজির সাহাবী শাষনামলে বিশ্বস্ত সাহাবী "মোয়াবিয়া পুত্র ইয়াজিদে"র "কারবালা ময়দানে"র ঘটনা পৃথিবীর আলো বিকিরন যতদিন থাকবে ততদিন ঘৃনাভরে উচ্ছারীত হবে "অতিধার্মীক ইয়াজিদের" নাম। খলিফাদের শাষনকালে হাজারো উদাহরন দেয়ার উপকরন রয়েছে।
    ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলিম শাষক নবাব সিরাজদৌল্লার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারি মীর জাপর আলী খাঁন,  মীর কাশেম আলী খান সহ আরো অনেক নাম ইতিহাসে ঘৃনার উপাদান হয়ে থাকবে অনন্তকাল।
    পাকিস্তান শাষনামলের প্রথম দিকেই তথাকথিত ধর্মবাজ মাওলানা মওদু'দীর "ফেৎনাবাজির শাস্তি মৃত্যুদন্ড প্রাপ্তি" এবং পরবর্তীতে তাঁদের রক্ষক ফেৎনাবাজ সৌদি শাষক "আল-সৌদ"  কতৃক মানবিক আবেদনের প্রেক্ষিতে মুক্তির ইতিহাস লিখা থাকবে ইসলাম ধর্মভিত্তিক দলের ইতিহাসে ঘৃনার সাক্ষি হয়ে।
      বাঙ্গালী জাতির মুক্তির আকাংখাকে ধর্মের আবরনে ঢেকে গনহত্যা সংগঠিত করার অপরাধে দেরীতে হলেও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে বিচার অনুষ্ঠিত হচ্ছে।শাস্তি প্রাপ্ত প্রত্যেক অপরাধীর নামের আগে রাজাকার সংযুক্তি ঘটবে। তাঁরা সকলেই বংশানুক্রমে ঘৃনার আধাঁরে পরিনত হয়ে ধরা থেকে একসময়ে উচ্ছেদ হ'তে বাধ্য হবে- যেমন অতীতে হয়েছিল।জাতির জনকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী খোন্দকার মোস্তাক গংদের নাম জাতি চিরদিন ঘৃনাভরে উচ্চারন করবে।
    আল্লাহ নীজেই তাঁর পবিত্র কোরানে বার বার বলেছেন--"তাঁর প্রেরীত পবিত্র গ্রন্থ "কোরানের রক্ষনকারী" তিনি নিজেই।পবিত্র কোরান রক্ষার অর্থই হচ্ছে ইসলাম রক্ষা।যেহেতু ইসলাম সার্বজনীন ধর্ম, শান্তির ধর্ম সেহেতু আল্লাহর ঘোষনার সম্মান রক্ষা, ওয়াদা রক্ষার স্বার্থেই তিনি বলেছেন--"তোমরা ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করিও না।"
    masterruhulamin@gmail.com

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার সরকার মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যাতত্ব দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস ঐতিহ্যে বিতর্ক উত্থাপনের অভিযোগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন।মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে বসবাস করে,মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার মত দৃষ্টতা দেখিয়ে নি:সন্দেহে তিনি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। এহেন গর্হিত বক্তব্য প্রদানকারী বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার রাখতে পারেননা।মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত অঙ্গিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কোন দল বা জোটের রাজনীতি করারঅধিকার নীতিগতভাবেই থাকতে পারেনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি সকল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করে সর্বচ্ছ আদালতের রায় অনুযায়ী '৭২এর সংবিধান অবিকল বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবী।বাংলাদেশেরজনগন চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ এগিয়ে যাক,মুক্তিযুদ্ধে সাগরসম রক্ত ঢেলে সেই অঙ্গিকারের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেছিল।স্বাধীন বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বসবাসকরে,পরাধীনতার গান শুনতে দেশ স্বাধীন করেনি বাংলার জনগন। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৩ বছরের বিরামহীন সংগ্রামের ফসল মুক্তিযুদ্ধ।সেইযুদ্ধে উপনিবেশিক পাকিস্তানের আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত সেনাবাহিনীকে নিরস্ত্র বাঙালীরা পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছিল।সেই স্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশেপরাজিত শক্তির দোষর,তাঁদের প্রেতাত্বাদের রাজনীতি করার কোন নৈতিক অধিকার নেই।জাতির জনক তাঁদের রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগন জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলায় রাজাকারের কোন স্থান দিতে চায়না। তাই খালেদা জিয়ার ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টার দৃষ্টান্তমুলক সাজার আশা পোষন করে।কোন রাজনৈতিক সমঝোতার ফাঁদে যেন এই মামলা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়,তাঁর গ্যারান্টিও সরকারের নিকট বাংলাদেশের জনগন চায়। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু Ruhul Amin ------------------------------ খালেদা জিয়াকে সমাবেশের অনুমতি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি আশাহত----04 /01 / 0016 ইং পোষ্ট -==================================প্রখ্যাত দার্শনিক,চিন্তাবিদ সক্রেটিসকে কম বেশি আমরা সবাই জানি।সক্রেটিস কোন যুগে জম্মগ্রহন করে মানব সেবায় ব্রতি হয়ে আজও দেশে দেশে অনুকরনীয় অনুসরনীয় হয়ে আছেন তাও আমরা জানি।নিশ্চয়ই তখনকার সময় থেকে বর্তমানের সমাজ, রাষ্ট্রব্যাবস্থাপনা আরো শত গুন উন্নত,সমৃদ্ধ,সভ্য।সক্রেটিস ছুতোর, কামার ইত্যাদি প্রসঙ্গে এসে প্রশ্ন করতেন, 'তাহলে রাষ্ট্র নামক জাহাজটি বিগড়োলে কাকে দিয়ে সারাইয়ের কাজ করাবো'হাসান আজিজুল হক (সক্রেটিস) পৃ : ১৬ সক্রেটিসের এ বিখ্যাত কথপোকথন কারো অজানা নয়। আদর্শবান ন্যায়নীতিভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করবার জন্য সক্রেটিসকে হেমলক পান করতে দেয়া হয়েছিল(বিষ), তারপরও তিনি আইনের প্রতি অটুট শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন- এটাও ছিল তার নির্ভীক বিদ্রোহ। তাকে বাঁচবার সুযোগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি আইনঅবজ্ঞা করেননি, আইনে যদি তার মৃত্যুদন্ড হয় তবে তিনি অবশ্যই তা মানতে রাজি। এখানেও তার সমস্ত জীবনকর্মের অনেক গভীর দর্শন কাজ করেছে। তার উপর মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল একথা তিনি ও এথেন্সবাসী জানতেন। কিন্তু যে আইনে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলো- তিনি সে আইনকে শ্রদ্ধা জানালেন এ অর্থে মানুষকে আইনের প্রতি অনুগত থাকতে বললেন। সেই আইন কারা তৈরি করছে তা তিনি জানতেন তাতে তো আর আইন নামক বিষয়টিকে জীবন থেকে বিতাড়িত করা যায় না।"পবিত্র কোরানে পাকে ও উল্লেখ করা হয়েছে, বিধর্মী কতৃক শাষিত রাষ্ট্র ও সরকার সমুহের আইন মেনে ধর্ম কর্ম করার।এই রুপ রাষ্ট্র ব্যাবস্থায় শুক্রবারের খতবায় বিশেষ আয়াৎ সংযুক্ত আছে এবং নিয়মিত নামাজের সাথে আর ও কয় রাকাত নামাজ আদায় করার নির্দেশনা দেয়া আছে।পরিতাপের বিষয়টি হচ্ছে,গত কয়েক বছর থেকে লক্ষ করা যাচ্ছে একশ্রেনীর মানুষ রাষ্ট্রীয় আইন রীতি নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সর্ব উচ্চ আদালতের রায়কে ও অমান্য করে হরতাল অবরোধ,প্রকাশ্য আদালতের সমালোচনা করতে।শুধু তাই নয় আন্দোলনের নামেপ্রকাশ্য দিবালোকে যাত্রীভর্তি চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে জীবন্ত মানবকে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিতে।উল্লেখ করা প্রয়োজন যারা এই সমস্ত আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিলেন,এবং প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেন যে আদালতের বিরুদ্ধেও কর্মসূচি দেয়া যায়,বক্তব্য দেয়া যায়,তাঁরা কখনই কোন অপরাধীর বিচার কায্য সম্পাদন করেছেন তদ্রুপ কোন উদাহরন নেই। যেমন আমি প্রথমেই বলতে চাই ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছেন রাতের অন্ধকারে।বঙ্গবন্ধুর অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? পৃথীবিপৃষ্টের সব চাইতে নিরাপদ স্থান জেলখানা।সেখানে রাতের অন্ধকারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করাহল,তাঁরা বন্দি ছিলেন, তারপর ও তাঁদের অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে বুদ্ধিজীবিদের বাসা থেকেতুলে নিয়ে জ্যান্ত মানুষকে হত্যা করা হল, তাঁদের অপরাধ কি বিচার করে মিমাংসা করা যেতনা? খালেদ মোশারফ., কর্নেল তাহেরসহ অসংখ্য মুক্তি যুদ্ধা সেনা অফিসারকে মেজর জিয়ার নির্দেশে নির্মম নির্দয় ভাবে হত্যা করা হল, অনেককে গুলী করার পর প্রান পাখী উড়াল দেয়ার আগেই জ্যান্ত মাটি চাপা দেয়া হল, তাঁদের বিচার কি প্রচলিত সেনা আইনে করা যেতনা? অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধা,আওয়ামী লীগের নেতা,মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারি,ব্লগার,প্রকাশক,লেখক সাহিত্যিক,সাংবাদিক হত্যা করা হল,তাঁদের অপরাধ কি আইনের আওতায় এনে বিচার করা যেতনা?আন্দোলনের নামে ঘোষনা দিয়ে মানুষ হত্যা করা,সম্পদ নষ্ট করা,লুটপাট করা কি মানবতা বিরুধী অপরাধের আওতায় পড়েনা?মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ হত্যা লুটপাট,অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার হতে পারে,যুদ্ধাবস্থা ব্যাতিরেকে ঘোষনা দিয়ে তদ্রুপ কর্মে জড়িতদের এবং হুকুমদাতার বিচার কেন হবেনা? নগদ অপরাধের ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার করা কি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব নয়? নাগরীকদের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া কি রাষ্ট্রের কর্তব্যের মধ্যে পড়েনা? যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন তাঁরা কি বিচার পাওয়ার সাংবিধানীক অধিকারের মধ্যে পড়েনা?সেই যুগের সক্রেটিস যদি নীজের উপর আনীত মিথ্যা অভিযোগ জেনে শুনে মেনে নিতে পারেন,সভ্যতার চরম শীখরে দাঁড়িয়ে যারা এই যুগে আইনকে, রাষ্ট্রীয় রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রকাশ্য আন্দোলনের নামে মানুষ খুন করেছেন,সম্পদের হানী ঘটিয়েছেন তাঁরা কি সক্রেটিস যুগের আগের অধিবাসি মনে করেন নীজেদের? তাঁরা নীজেরা নিজেদের মনে করুন কিন্তু মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে কোন যুগে ফিরিয়ে নিতে চান?তাঁদের যদি এতই অসহ্য লাগে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিশেষ কিছু আদর্শের প্রতিপালনের অঙ্গিকারের ভিত্তিতে ৩০লক্ষ শহিদের আত্মদান,পৌনে চারলাখ মাবোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস- তবে জনগনকে সংঘটিত করে আর একটি গনবিপ্লব ঘটিয়ে তাঁদের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে স্বাধীনতার পক্ষের কোন মানুষ বাধাতো দিচ্ছেনা। যাদের নেতৃত্বে, যাদের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন করা হল, তাঁরাতো ক্ষমতায় আছে,তাঁদের কেন জোর পুর্বক,ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে খমতা থেকে নামাতে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে,আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে জনজীবন দুর্বিসহ করে তোলার চক্রান্ত করতে দেয়া হবে।এই সেই দিন মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা নিয়ে যিনি বিতর্ক উত্থাপনের বৃথা চেষ্টা করে জনরোষের আওতার মধ্যে এখনও রয়েছেন,তাঁর সৌখিন বাসভবন পাহারায় আপনার সরকার অতিরীক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে বাধ্য হয়েছে,তিনি কি ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে সমাবেশ করার প্রসাশনিক অনুমতি পায়। বর্তমান গনতান্ত্রিক বিশ্বের একটি দেশের উদাহরন কি কেউ দিতে পারবেন,স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা সেই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে?একটি দেশকি কেউ দেখাতে পারবে যে,সেই দেশের কোনমীমাংসিত এবং প্রতিষ্ঠিত কোন সত্যকে ৩০/৪০ বছর পর আবার জনসমক্ষে উত্থাপন করে লক্ষ লক্ষ শহিদ পরিবারের অন্তরের আগুনে"ঘি "ঢেলে দেয়ার চেষ্টা, কোন প্রতিষ্ঠিত দল বা তাঁর নেতা করেছেন? কেন এই পয্যন্ত সরকার তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা না করে উলটো সমাবেশ করে তাঁর মতবাদ প্রচারের অনুমতি দেয়া হল??তাঁরা নীজেদের এত ক্ষমতাবান মনে করেন কিভাবে? তাঁরা কি করে আবার জাতির নিকট ক্ষমা চাওয়া ছাড়াই প্রকাশ্য সভা সমাবেশ করার অধিকার পায়?কেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সংসদে ঘোষনা দিয়েও এখন পয্যন্ত আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন করছেন না? মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আপনার আশ্বাস বাংলার মানুষ অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করে।সুতারাং জনগনকে দেয়া প্রতিশ্রুতি আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন কল্পে তড়িৎ ব্যাবস্থা গ্রহনকরবেন, জনগনের এই আস্থা বিশ্বাস এখন ও অটুট রয়েছে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,শাপলা চত্বরের সেই দিনের ষড় যন্ত্র মোতাবেক যদি খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার মানুষ রাজপথে নেমে আসতেন,পরিকল্পনাঅনুযায়ী সেনা বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়েআপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারতো,আপনাকে কি জীবিত বাঁচতে দেয়া হত? আপনার পরিবারের কাওন সদস্যকে বাঁচতে দিত?আওয়ামী লীগের থানা উপজেলা পয্যায়ের কোন নেতা কি বাঁচতে দিত? তাঁরা কি সে দিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ধর্ম বিদ্বেষী সরকার উৎখাত করে ধর্মধারি সরকার কায়েমের রাজনৈতিক শ্লোগানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নামক মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ধারক বাহক জননন্দিত এইসংগঠনটিকেও জ্যান্ত কবর দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত ছিল না?আমি আজ আরও একটি বিষয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,সম্পুর্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন চরমপন্থী নেতার অবিকল নকল করা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার--,গনতান্ত্রিকদেশে,গনতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে, গনতান্ত্রীক সংগঠনের,গনতন্ত্রের পুজারি মনে করা কোন নেতা, রাজপথে আন্দোলন না করে, সীমাবদ্ধ কক্ষে ৪১দিন অবস্থান করে, ৪২ জন মানুষকে পুড়িয়ে মেরে,পরবর্তিতে বিচারের সম্মুখ্যিন না হয়ে নিয়মাতান্ত্রীক আন্দোলনের সুযোগ কোন দেশের, কোন নেতা বা কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, এমন উদাহরন কি কেউ দিতে পারবে?? ষড় যন্ত্রের জাল কোথায় বিস্তৃত ছিল তাঁর প্রমান সেই নেত্রী নীজেই তাঁর উষ্মায় প্রকাশ করে দম্ভস্বরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে সুশৃংখল বাহিনীকে তাচ্ছিল্য করে বলে ছিল"সেনাবাহিনী বেঈমান"!!!এর পরও আপনার সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আনায়ন না করে প্রকাশ্য সভার অনুমতি দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার গুলির মনে আগাত দেয়া হয়েছে আমি মনে করি। গত পৌর নির্বাচনে রায় দিয়েছে তাঁর বিচার করার,তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অর্থই হচ্ছে জনগনের ক্ষোভ তাঁর উপর থেকে এখনও কমেনি,বরঞ্চ কয়েক গুন বেড়ে জনরোষের পয্যায় পৌছে গেছে।আপনার সরকারের তাঁকে দেয়া বাড়তিনিরাপত্তাই তা প্রমান করে।সুতারাং দেশ ও জাতি এই রাজনৈতিক লাশের ভার বইবার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা।দেশের এবং জাতির প্রয়োজন বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মত শিক্ষিত, বিজ্ঞান মনস্ক,প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত সমৃদ্ধ জাতি গঠনে জ্ঞানসমৃদ্ধ, আধুনিক সভ্য দুনিয়ার নেতৃত্ব গ্রহন করার মত গুনাবলি সমৃদ্ধ নেতার। কোন অবস্থায় সক্রেটিসের আগের যুগে জাতি ফেরৎ যেতে চায়না।পরিশেষে বলতে চাই,আর কোন সংগাত নয়,এবার চাই সমৃদ্ধি।আর নয় জঙ্গিপনা,এবার চাই ধর্মনিরপেক্ষতা।আর নয় সাম্প্রদায়ীকতা,এবার চাই অসম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা।আর নয় পাকি ভাবধারা প্রতিষ্ঠা,এবার চাই মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের সফল বাস্তবায়ন। জয় আমাদের হবেই হবে, অশুভ অপশক্তির পরাজয় অবশ্যাম্ভাবি। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা