একদল মৌলভি মসুলমানদের নৈরাশ্যবাদে উদ্ভোদ্ধ করে ইসলামকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে----"প্রকৃত আলেম ওলামা সাহেবেরা কি চেয়ে চেয়ে শুধুই দেখবে?"
(রুহুল আমিন মজুমদার)
আমগাছে ওয়াজ মাহফিলের মাইক বাঁধতে দেয়নি বিধায় আমগাছটি পাতা, কান্ড, ফুল, কলি ঝরা ধরেছিল।গৃহস্ত ভুল বুঝতে পেরে মাদ্রাসার বড় হুজুরের হাতে পায়ে ধরে পানি পড়া এনে দেয়ার পর সাথে সাথে পাতা ঝরা, ফুল ঝরা বন্ধ হয়ে গাছ জ্যান্ত হয়ে উঠেছে।
মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে পাশের বাড়ীর টিউব ওয়েল থেকে পানি আনতে দেয়নি, মাদ্রাসার বড় হুজুরের বদ-দোয়ায় উক্ত টিউবওয়েলের পানির স্তর নীছে নেমে গেছে, পানি উঠেনা। গৃহস্ত বড় হুজুরের হাতে পায়ে ধরে মাফ চাওয়ার পর হুজুর দোয়া করে দেন। সাথে সাথে টিউব ওয়েলের পানি গড়গড় করে পড়া শুরু করেছে।
বড় হুজুরের মুখের লালা দোয়া হিসেবে কবুল হয়। যে কেউ খেতে পারলে পেটের রোগ বালাই দূর হয়ে যায়।অনেকেই উপকৃত হয়েছেন। হুজুর বড় বুজর্গান--"বদ-দোয়ায় সর্বনাশ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে"।
ত্রিশবছর আগে মাদ্রাসার ছোট হুজুর মৃত্যুবরন করেছিলেন।তিনি ছিলেন আল্লাহভক্ত নেককার সহী আলেমদের মধ্যে অন্যতম একজন। ত্রিশ বছর পর ছোট হুজুরের লাশ কবরে "তরতাজা" পাওয়া গেছে।ছোট হুজুর মাদ্রাসার বড় হুজুরকে স্বপ্নে দেখায়, তাঁর লাশ তুলে পূনরায় নতুন কাপড় দিয়ে দাপন করার জন্যে।বুজর্গান ব্যাক্তিদেরকে মাটি স্পর্ষ করতে পারেনা, কাপড় মাটিতে মিশে গেছে কিন্ত্যু পূর্ণাঙ্গ শরীর তরতাজাই রয়েছে--"কাপড় পরিবর্তন করতে গেলে দেখা যায় হুজুর যেন জীবিত এবং হাঁসছেন"।
বন্ধুগন উল্লেখিত বক্তব্যগুলি আমার নয়--"আমার পাশ্ববর্তি গ্রামের ওয়াজ মাহফিলের মাইক থেকে আমার নীজকানে শুনতে পাওয়া হুজুরের বয়ানের অংশ বিশেষ মাত্র।" এই ধরনের লক্ষলক্ষ বাস্তব উদাহরন তুলে ধরে কতিপয় মাওলানা ওয়াজ করে থাকেন। ভিডিওতে একটি ওয়াজ মাঝে মাঝে অনেকেই শুনেছেন, আমিও শুনেছি। তিনি কিন্তু নামকরা এক ওয়ায়েজিন মাওলানা (নাম এই মহুর্তে আমার মনে আসছেনা, স্থান ব্রাম্মনবাড়িয়া)।তিনি ইন্ডিয়াতে ওয়াজ করতে গিয়েছিলেন।সেখানে তাঁর জীবনের চরম পরিণতির বর্ণনা শুনে উপস্থিত শ্রোতাগন অঝোরে চোখের পানি ফেলে দিতে দেখেছিলাম। মাওলানা সাহেব শেষ পয্যন্ত হিন্দু এবং মুসলিম ধর্মের শ্রেষ্ঠত্বের বাহাসে জিতে এক হিন্দু বৃদ্ধ ঠাকুর কতৃক জেলমুক্তি ঘটাতে সক্ষম হয়েছিলেন। পরবর্তিতে সে বৃদ্ধ ঠাকুর ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেছিল কিনা আমার শুনা হয়নি।
প্রকাশ্য ওয়াজ মাহফিলের নামে নৈরাশ্যবাদ, জাতিগত হিংসা, ধর্মকে অতিরঞ্জন, আলৌকিক কাহিনীরুপে তুলে ধরার চরম, ব্যাপক প্রচারযজ্ঞের মহা উৎসব চলছে একশ্রেনীর ওলামা, মাশায়েখ কতৃক প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসা কেন্দ্রিক ওয়াজ মাহফিলে। যাহা ইসলাম ধর্মে আদৌ স্বীকৃত নয় বরঞ্চ নবীজির জামানায়ও হারাম, ধর্মদ্রোহী, মোনাফেকি হিসেবে ঘোষিত হয়েছিল।বাস্তবতা বিবর্জিত কোন কিছুই ইসলামে স্বীকৃত নয়, ইহা আমাদের মনে রাখা উচিৎ।
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা- বর্তমান যুগ ডিজিটাল যুগ-।মগজে যখন লেখার উপজিব্য কিছু আসেনা---একা একা ভালও লাগেনা, তখন কোটি কোটি পেইজবুক ব্যবহারকারি ক্ষুদে সাংবাদিক উপস্থিত যাহাই সামনে পায় তার ছবি পোষ্ট করে বন্ধুদের জানিয়ে দেয়--"আমি আছি তোমাদের সাথে"। ঘরের লাল মোরগটি কয়টা ডিম দিল তাও বন্ধুরা পোষ্ট করতে ভুলেনা।বাচ্চা মেয়েটির পাতলা পায়খানা দেখা দিলে ষ্টেটাস দিয়ে বন্ধুদের নিকট চোখের মণির জন্য দোয়া কামনা করে থাকে।সকালে ঘুম থেকে উঠার পর চেহারা কেমন দেখায়, বিকেলে সুর্য্যের কিরন হেলে পড়লে ছবিটা কেমন হয়, লাল শাড়ীতে কেমন মানিয়েছে ইত্যকার পাতিলের খবর তৎক্ষনাৎ বন্ধুমহলে ছড়িয়ে দিতে ভুলেনা।
দু:খ্যজনক হলেও সত্য--"মাওলানা সাহেবরা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের প্রতি আনুগত্যতার কারনে মহান আল্লাহ এমন বুজর্গী দান করেছেন, তিনি যখন যাহাই কামনা করবেন আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাকে তাই দান করে থাকেন। আল্লাহর অশেষ রহমতে উনারা প্রতিনিয়ত এমন সব হাজারো কেরামতির নিদর্শন স্থাপন করার পরও কোটি কোটি পেইজবুক ইউজার বন্ধু, শতশত সাংবাদিক, পত্রপত্রিকা, ইলেকট্রিক মিডিয়া হিংসাবশত: প্রতিনিয়ত এমন হাজারো খবর প্রকাশ করেনা।
বাংলাদেশের বুজর্গান মাওলানা ভারতে ওয়াজ মাহফিলে অংশ নিতে গিয়ে জীবনহানীর সংশয় দেখা দেয়া সত্বেও অপ-লাইনের পত্রিকা বিদ্বেশ বশত: খবরটি চাপায়নি।বাংলাদেশ এম্বেসিও বুজর্গান মহান হুজুরের জেলমুক্তির জন্যে এগিয়ে আসেনি। বাংলাদেশের নাস্তিক অথর্ব সরকার প্রতিবাদ দূরে থাকুক অন্তত: ভারতীয় হাইকমিশন থেকে খবর নেয়ার প্রয়োজন ছিল-তাও নেয়নি। বড়-ই দু:খ্য লাগে জেলখানায় তাঁদের দেশীয় কয়েদীদের তিনটা রুটি ডাল, মাংস খাবার দিলেও বাংলাদেশের হাজতি হুজুরকে মাত্র একটি শুকনা রুটি বরাদ্ধ দিয়েছে, সাথে পানিও দেয়নি।পানির কষ্টে আমাদের বরেন্য মাওলানা সাহেব চটপট করে মৃত্যু কোলে ঢলে পড়ার উপক্রম হলেও পাষান কাফের একফোঁটা পানি দেয়নি। এহেন অমানবিক আচরন কোন অবস্থায় মেনে নেয়া যায় না মানতে পারিনা। অথছ এই অমানুষিক অত্যাচারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের কোন ধর্মীয় সংগঠন প্রতিবাদি মিছিল মিটিং করার উদ্যোগ নেয়নি। দৈবশক্তিতে জানা হয়ে গিয়েছিল মিছিল সমাবেশ নাস্তিক সরকার করতে দিবেনা।
বে-নামাজী, বে-কেয়ামী, বে-রোজাদার, বুঝ-জ্ঞানহীন, খোদাদ্রোহী, পাপিষ্ট যুবক ছেলেপেলে, সাংবাদিক, পত্রপত্রিকা, জনসমক্ষে প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের একাধিক বদখবর চাপিয়ে লাখ লাখ উলামা মাশায়েখের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে কার্পন্য করেনা।অথছ আল্লাহর কুদরত প্রাপ্তির খবর এড়িয়ে যায়।
আল্লাহ তাঁর প্রেরিত পবিত্র পাককালামে বারবার সতর্কবানী দিয়ে বলেছেন---"জেনে, শুনে, বুঝে যদি কেউ তাঁর পাককালামের অর্থের বিকৃতি ঘটায়, মিথ্যা বলে, মোনাফেকি করে তাঁদের শাস্তি পৃথিবীতে এবং কেয়ামতের মাঠে অবধারিত। আল্লাহ তাঁর বান্দাদের অনুধাবন করার নিমিত্তে, সম্যক ধারনা লাভের জন্যে বহু উদাহরন মানুষের চোখের সামনে ধরে রেখেছেন। দুনিয়াতে যত পাপকাজ মানুষ করে সব পাপ আল্লাহ হয়তো বা মাফ করে দিবেন কিন্ত্যু তিনি মিথ্যা যারা বলে তাঁদের মাফ করবেন না।" মিথ্যা বলা 'মহাপাপ' বলে তিনি ঘোষনা করেছেন। দুনিয়াতে যত নবী বা রাসুল আল্লাহ পাঠিয়েছেন সবাই নবী এবং রাসুল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন কিন্তু হযরত মহাম্মদ (স:) শেষনবী এবং তিনি শ্রেষ্ঠ নবী তিনিই একমাত্র 'মহানবী'। তদ্রুপ সব পাঁপের সেরা পাঁপ অ-কষ্টকর, সহজে উচ্চারন সম্ভব একমাত্র মিথ্যাকে "মহাপাঁপ"--মিথ্যাবাদীকে "মহাপাঁপী" ঘোষনা করেছেন আল্লাহ।
মহাপাঁপি মানুষদেরকে মহান আল্লাহ তাঁর চারপাশের পরিবার পরিজন, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবের নিকট দুনিয়াতেই 'লানত' দিয়ে লজ্জিত করে শাস্তি দিয়ে থাকেন। সাময়িক বিপদ আপদ ইমান পরিক্ষার আওতায় পড়ে। মৃত্যু যন্ত্রনা বা সমপয্যায়ের কষ্ট লানতের মধ্যে পড়েনা--আল্লাহ তাঁর খাস বান্দাদের মৃত্যু যন্ত্রনা বা তৎসম কষ্ট দিয়ে বা তাঁর আগে কঠিন শারিরীক রোগের দু:খ্য, কষ্ট, যন্ত্রনা দিয়ে গুনাহ হালকা করে, তাঁকে পাকপবিত্র করে তিনি উঠিয়ে নেন।কেয়ামতের মাঠে যেন আল্লাহর নেকবান্দা অন্য বেহেস্তি বান্দাদের নিকট লজ্জিত না হতে হয়।
অন্যদিকে ধোঁকাবাজ, আল্লাহর হুকুমের সর্বাপেক্ষা বিকৃতকারি সর্বাধিক বিকৃত অনুগত বান্দাদের তিনি লোকচক্ষুর অন্তরালে এমন কঠিন বদভ্যেস ফয়দা করে দেন, সেই বদভ্যেসের জ্বালায় লোকটি বদকাজ কখন, কোনসময়ে, কোনস্থানে করতে উদ্যত হয়--সে নিজেই টের পায়না। ফলে জনসমক্ষে পরহেজগার নামাজি, অহরাত্র ইবাদতকারি, ইমানদার, সম্মানী ব্যাক্তি হিতাহীত জ্ঞান শুন্যবস্থায় ধরা পড়ে--লোকসমাজে লজ্জিত হওয়ার ন্যাক্কারজনক উদাহরণ সৃষ্টি হ'তে দেখা যায়। লক্ষ করলে দেখা যায়--"মহান আল্লাহর এমন ধারার সত্যতার হাজারো উদাহরন আমাদের চারপাশে ঘটেনি, এমন সময় আমরা কদাচিৎ পার করেছি।মুলত: লজ্জার চেয়ে বড় শাস্তি আর কিছুই নেই--,ইহাও সত্যি।
"লানৎ" শব্দটি ছোট কিন্তু তাৎপয্য বহুবীদ। সর্ব উচ্চস্থানে থেকেও কোন বদকাজের জন্যে জনসমক্ষে হেয়প্রতিপন্ন হওয়া,পরিবারের নিকট হেয় প্রতিপন্ন হওয়া, লজ্জিত হওয়ার কারনে আত্মহত্যা করে নীজকে বিলীন করে দেয়ার ইচ্ছা পোষনের ন্যায় কাজগুলিকে "লানৎ" বলা যেতে পারে।মহান আল্লাহ ঐ সমস্ত বান্দাকেই লানৎ" দিয়ে থাকেন যারা আচার, আচরন, কথা বার্তায়, ইবাদত বন্দেগীতে জনসমক্ষে সর্বত্তম অথছ সম্পূর্ন আল্লাহ, আল্লাহর রাসূল এবং কোরানের নির্দেশীত পথের বিকল্প।
"লানতের" সর্বাপেক্ষা উত্তম উদাহরন হ'তে পারে "বলৎকার", সমকামিতা, ভিক্ষাবৃত্তি, বেশ্যাবৃত্তি, লুচ্চামী, পরকিয়া শব্দগুলি। সমলিঙ্গের সহবাস নিশ্চয়ই বদভ্যাসের এমন একটি--"মদ, মাদক, সুপেয় খাদ্য, বিপরীত লিঙ্গের যৌনকর্ম, স্ত্রী সহবাস ইত্যাদি ছেড়ে দেয়া সম্ভব কিন্তু সমলীঙ্গের যৌনতা তাঁদের ছেড়ে দেয়া সম্ভব হয়না। ইহা আল্লাহ প্রদত্ত একটি কঠিনতম গজব বলা যেতে পারে। ভালভাবে লক্ষ করলে দেখা যায়--এই কঠিন রোগটির সর্বাধিক আক্রান্ত ব্যাক্তিদের মধ্যে নাস্তিক্যবাদে বিশ্বাসীদের মধ্যে অনেকের এবং একশ্রেনীর উলামা মাশায়েখ, অতিধার্মীক, পরহেজগার ব্যাক্তিদের অনেকের মধ্যে দেখা যায়, এবং কি প্রমানীত সত্যে পরিণত হয়েছে।
তবে হ্যাঁ ব্যাতিক্রমও আছে--ব্যাতিক্রম নেই বা সাধারনে নেই এমন বদ অভ্যেস আমি কখনই বলছিনা---কতিপয় ব্যাতিক্রম সর্বক্ষেত্রেই বিরাজমান থাকে, থাকবে। তবে উল্লেখিত দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে নজরে আসে, এবং ইহা প্রমানীত সত্য। সরকারি মাদ্রাসার আলেম--সাধারন মসুলমান, অন্যান্ন ধর্মালম্বি সাধারন মানুষের মধ্যে বেশির ভাগ উক্ত হীনকাজকে অত্যান্ত ঘৃনা এবং "কবীরাহ গুনাহ" হিসেবে বিবেচনা করে। সাধারনত আমার ব্যাক্তিগত নজরে অদ্যাবদি সরকারি মাদ্রাসার কোন আলেমের এহেন ঘৃনিত বদভ্যেস চোখে পড়েনি। খুববেশী জনসমক্ষে লজ্জিত হওয়ার তেমন কোন উদাহরনও আমার সংগ্রহে নেই।
অতিধার্মীকদের পরিণতি নবী করিম (স:) এর জীবিতবস্থায়ও এমন একাধিক উদাহরন আমরা দেখি। আমি দৃডতার সঙ্গে বিশ্বাস করি--"নবী তাঁর জীবদ্দশায় যা কিছু করেছেন, সব কিছু আল্লাহর হুকুমেই করেছেন।" কথিত আছে এবং বিভিন্ন ভাবে হাদিছেও এসেছে--"নবী করিম (স:) যখন পথে বের হ'তেন তাঁকে আগে কোন 'সাহাবী' সালাম দিতে পারতেন না, নবীজি আগেই সালাম দিতেন। "আবু লা'হাব" সাহাবীদের মধ্যে খুবই ইমানদার, পরহেজগার এবং নবীজির প্রিয় সাহাবীদের মধ্যে অন্যতম একজন ছিলেন। তিনি নবীজি কেন, কিভাবে আগে সালাম দিতে পারেন এই সম্পর্কে পরিক্ষা করার জন্যে একদিন নবীজি যে পথে প্রতিনিয়ত বের হন, সেই পথের ঝোঁপের আড়ালে বসে রইলেন-। নবীজিকে আগে সালাম দিতে পারেন কিনা, পরিক্ষা করার উদ্দেশ্যে।
নবীজি যথারীতি বের হয়ে উক্ত স্থানে আসামাত্রই "আবু লাহাব" লাফ দিয়ে উঠে নবীজিকে সালাম দিলেন।নবীজি সাথে সাথে আবু লাহাবকে ইসলাম থেকে 'খারেজ' করে দিয়ে বলেছেন "আবু লাহাব মানুষরুপি শয়তান"। পবিত্র কোরানেও এই ঘটনার বিবরণ যথাযথভাবে এসেছে।নবীজি তাঁর উম্মতদের সতর্ক করে বলেছেন---"একদল ইসলামধর্ম রক্ষক, প্রচারক বের হবে, তাঁরা দেখতে প্রকৃত ইসলামের অনুসারীর মতই হবে, সাদা বকের চাইতেও সুন্দর পাগড়ী পড়া উক্ত ধর্মপ্রচারক গন মসুলমানদের ইমান আ'কিদা, বিশ্বাসে চিড় ধরানোর যাবতীয় উপাদান তাঁদের মধ্যে দেখা যাবে, তাঁরা আর কেউ নন- আবু লাহাবের অনুসারী'--"ইসলামের দলত্যাগী বা খারেজ বা খারেজী হিসেবে পরিচিতি পাবে।"
উক্ত ঘটনার কিছুকাল পর খলিফা শেরে আলীর সময়কার একটি যুদ্ধেও তাঁর সত্যতা প্রতিষ্ঠিত হতে দেখা গেছে।একদল মুসলিম হযরত আলীর শাষনামনে যথাযথ ভাবে ইসলাম ধর্ম রাষ্ট্রীয় পয্যায় হযরত আলী অনুসরন করছেনা--মর্মে তাঁর রাজত্বে বিদ্রোহ করেন।হযরত আলী (র:) তাঁদেরকে দমন করার জন্যে সৈন্যসামন্ত সহকারে সেখানে গিয়ে যুদ্ধে লিপ্ত হলেন। প্রচন্ড যুদ্ধ চলার পর বিদ্রোহী বাহিনী নাস্তানাবুদ হয়ে পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হলে, শয়তানীর ভাব জেগে উঠে তাঁদের মধ্যে। শয়তান "বিদ্রোহী ইসলামী সৈন্যদের দলনেতা" উপায়ন্তর না দেখে "বর্শার মাথায়" পবিত্র কোরান বেঁধে "যুদ্ধবিরতির আহব্বান জানালেন।
সেই দিনটি ছিল শুক্রুবার, যুদ্ধটিও হচ্ছিল গভীর জঙ্গলের পাশে খোলা ময়দানে। যেহেতু পবিত্র কোরান উঁচিয়ে যুদ্ধ বিরতির আবেদন জানিয়েছে সেহেতু উক্ত আহব্বানকে অমান্য করে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া কোন অবস্থায় মুসলিম বাহিনীর সমচিন নয়। "হযরত আলী" যুদ্ধ বিরতির ঘোষনা মেনে নিয়ে, সৈন্যদের জুমার নামাজের প্রস্তুতি এবং খাবার প্রস্তুতের নির্দেশ দিলেন। হযরত আলীর সেনাবাহিনী দীর্ঘদিনের যুদ্ধের ক্লান্তি নিয়ে এদিক সেদিক ছত্রভঙ্গ হয়ে গেল, কেউ কেউ রান্নাবান্নার কাজে মনযোগ দিল, অনেকেই জুম্মার নামাজের প্রস্তুতির ব্যাস্ততায় মগ্ন। এমনি সময় ইসলামের মুখোশধারী শয়তান আলেমদের পক্ষ থেকে সাড়াশি আক্রমনের মাধ্যমে মুসলিম সৈন্যদের অকাতরে হত্যা, লুটপাট করে চরমভাবে পরাজিত করে বীরত্ব প্রকাশ করে। তাঁরা আর কেউ-ই নয়--"নবীজি কতৃক ইসলাম থেকে খারেজ হওয়া "আবু লাহাবের অনুসারী অতিধার্মীক "খারেজী"র বংশ বা অনুসারী শয়তান।ইসলামের ইতিহাসে বেঈমানী, মোনাফেকি, শতানের এই যুদ্ধ " জুম্মাতুল জঙ্গল" নামে বিধৃত হয়ে মসুলমানদের নিকট অনুকরনীয় হয়ে রয়েছে।
ইসলামে নৈরাশ্যবাদ, অতিরঞ্জন, গলাবাজি,ঠোঁটবিক্রির মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ, ভিক্ষাবৃত্তি কোনবস্থায় স্বীকৃত নয়, বরঞ্চ হারাম হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এমনকি কাফের শাষিত রাষ্ট্রে বসবাসকারি ইসলাম ধর্মের অনুসারিদের "রাষ্ট্রীয় আইনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ সম্পূর্ণ নিষেদ" করেছেন। কাফের শাষন মেনে জীবন যাপন করার নির্দেশনা দিয়ে "পবিত্র জুমাবার" অতিরিক্ত নামাজ আদায়ের মাধ্যমে মহান সৃষ্টি কর্তার নিকট "কাফের শাষন থেকে মুক্তির আরজ" করার জন্যে বলা হয়েছে।এর ব্যাত্যায় আল্লাহ তাঁদের বংশানুক্রমে লানৎ দিয়ে পৃথিবীতে অনুসরনের জন্যে উদাহরন সৃষ্টি করে রাখার হাজারো কৃর্তি আমাদের চোখের সামনেই আছে।কিন্তু আমরা তা দেখেও নাদেখা বুঝেও না বুঝার ভান করে থাকি।
জাতি, ধর্ম, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারিগন নবীজির শাষনামল এবং কি খলিফাদের শাষনামলেও ধিকৃত হয়ে বংশ পরস্পরায় দায় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হয়েছে, আজো হচ্ছে। যেমনটি নবীজির শাষনামলে আবু লাহাবের অনুসারীগন আজো ইসলামে 'খারেজী' হিসেবে চিহ্নিত হয়ে মুসলিম সমাজে ধীকৃত, অপাংক্তেয়। নবীজির সাহাবী শাষনামলে বিশ্বস্ত সাহাবী "মোয়াবিয়া পুত্র ইয়াজিদে"র "কারবালা ময়দানে"র ঘটনা পৃথিবীর আলো বিকিরন যতদিন থাকবে ততদিন ঘৃনাভরে উচ্ছারীত হবে "অতিধার্মীক ইয়াজিদের" নাম। খলিফাদের শাষনকালে হাজারো উদাহরন দেয়ার উপকরন রয়েছে।
ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলিম শাষক নবাব সিরাজদৌল্লার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারি মীর জাপর আলী খাঁন, মীর কাশেম আলী খান সহ আরো অনেক নাম ইতিহাসে ঘৃনার উপাদান হয়ে থাকবে অনন্তকাল।
পাকিস্তান শাষনামলের প্রথম দিকেই তথাকথিত ধর্মবাজ মাওলানা মওদু'দীর "ফেৎনাবাজির শাস্তি মৃত্যুদন্ড প্রাপ্তি" এবং পরবর্তীতে তাঁদের রক্ষক ফেৎনাবাজ সৌদি শাষক "আল-সৌদ" কতৃক মানবিক আবেদনের প্রেক্ষিতে মুক্তির ইতিহাস লিখা থাকবে ইসলাম ধর্মভিত্তিক দলের ইতিহাসে ঘৃনার সাক্ষি হয়ে।
বাঙ্গালী জাতির মুক্তির আকাংখাকে ধর্মের আবরনে ঢেকে গনহত্যা সংগঠিত করার অপরাধে দেরীতে হলেও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে বিচার অনুষ্ঠিত হচ্ছে।শাস্তি প্রাপ্ত প্রত্যেক অপরাধীর নামের আগে রাজাকার সংযুক্তি ঘটবে। তাঁরা সকলেই বংশানুক্রমে ঘৃনার আধাঁরে পরিনত হয়ে ধরা থেকে একসময়ে উচ্ছেদ হ'তে বাধ্য হবে- যেমন অতীতে হয়েছিল।জাতির জনকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী খোন্দকার মোস্তাক গংদের নাম জাতি চিরদিন ঘৃনাভরে উচ্চারন করবে।
আল্লাহ নীজেই তাঁর পবিত্র কোরানে বার বার বলেছেন--"তাঁর প্রেরীত পবিত্র গ্রন্থ "কোরানের রক্ষনকারী" তিনি নিজেই।পবিত্র কোরান রক্ষার অর্থই হচ্ছে ইসলাম রক্ষা।যেহেতু ইসলাম সার্বজনীন ধর্ম, শান্তির ধর্ম সেহেতু আল্লাহর ঘোষনার সম্মান রক্ষা, ওয়াদা রক্ষার স্বার্থেই তিনি বলেছেন--"তোমরা ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করিও না।"
masterruhulamin@gmail.com
(রুহুল আমিন মজুমদার)
আমগাছে ওয়াজ মাহফিলের মাইক বাঁধতে দেয়নি বিধায় আমগাছটি পাতা, কান্ড, ফুল, কলি ঝরা ধরেছিল।গৃহস্ত ভুল বুঝতে পেরে মাদ্রাসার বড় হুজুরের হাতে পায়ে ধরে পানি পড়া এনে দেয়ার পর সাথে সাথে পাতা ঝরা, ফুল ঝরা বন্ধ হয়ে গাছ জ্যান্ত হয়ে উঠেছে।
মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে পাশের বাড়ীর টিউব ওয়েল থেকে পানি আনতে দেয়নি, মাদ্রাসার বড় হুজুরের বদ-দোয়ায় উক্ত টিউবওয়েলের পানির স্তর নীছে নেমে গেছে, পানি উঠেনা। গৃহস্ত বড় হুজুরের হাতে পায়ে ধরে মাফ চাওয়ার পর হুজুর দোয়া করে দেন। সাথে সাথে টিউব ওয়েলের পানি গড়গড় করে পড়া শুরু করেছে।
বড় হুজুরের মুখের লালা দোয়া হিসেবে কবুল হয়। যে কেউ খেতে পারলে পেটের রোগ বালাই দূর হয়ে যায়।অনেকেই উপকৃত হয়েছেন। হুজুর বড় বুজর্গান--"বদ-দোয়ায় সর্বনাশ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে"।
ত্রিশবছর আগে মাদ্রাসার ছোট হুজুর মৃত্যুবরন করেছিলেন।তিনি ছিলেন আল্লাহভক্ত নেককার সহী আলেমদের মধ্যে অন্যতম একজন। ত্রিশ বছর পর ছোট হুজুরের লাশ কবরে "তরতাজা" পাওয়া গেছে।ছোট হুজুর মাদ্রাসার বড় হুজুরকে স্বপ্নে দেখায়, তাঁর লাশ তুলে পূনরায় নতুন কাপড় দিয়ে দাপন করার জন্যে।বুজর্গান ব্যাক্তিদেরকে মাটি স্পর্ষ করতে পারেনা, কাপড় মাটিতে মিশে গেছে কিন্ত্যু পূর্ণাঙ্গ শরীর তরতাজাই রয়েছে--"কাপড় পরিবর্তন করতে গেলে দেখা যায় হুজুর যেন জীবিত এবং হাঁসছেন"।
বন্ধুগন উল্লেখিত বক্তব্যগুলি আমার নয়--"আমার পাশ্ববর্তি গ্রামের ওয়াজ মাহফিলের মাইক থেকে আমার নীজকানে শুনতে পাওয়া হুজুরের বয়ানের অংশ বিশেষ মাত্র।" এই ধরনের লক্ষলক্ষ বাস্তব উদাহরন তুলে ধরে কতিপয় মাওলানা ওয়াজ করে থাকেন। ভিডিওতে একটি ওয়াজ মাঝে মাঝে অনেকেই শুনেছেন, আমিও শুনেছি। তিনি কিন্তু নামকরা এক ওয়ায়েজিন মাওলানা (নাম এই মহুর্তে আমার মনে আসছেনা, স্থান ব্রাম্মনবাড়িয়া)।তিনি ইন্ডিয়াতে ওয়াজ করতে গিয়েছিলেন।সেখানে তাঁর জীবনের চরম পরিণতির বর্ণনা শুনে উপস্থিত শ্রোতাগন অঝোরে চোখের পানি ফেলে দিতে দেখেছিলাম। মাওলানা সাহেব শেষ পয্যন্ত হিন্দু এবং মুসলিম ধর্মের শ্রেষ্ঠত্বের বাহাসে জিতে এক হিন্দু বৃদ্ধ ঠাকুর কতৃক জেলমুক্তি ঘটাতে সক্ষম হয়েছিলেন। পরবর্তিতে সে বৃদ্ধ ঠাকুর ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেছিল কিনা আমার শুনা হয়নি।
প্রকাশ্য ওয়াজ মাহফিলের নামে নৈরাশ্যবাদ, জাতিগত হিংসা, ধর্মকে অতিরঞ্জন, আলৌকিক কাহিনীরুপে তুলে ধরার চরম, ব্যাপক প্রচারযজ্ঞের মহা উৎসব চলছে একশ্রেনীর ওলামা, মাশায়েখ কতৃক প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসা কেন্দ্রিক ওয়াজ মাহফিলে। যাহা ইসলাম ধর্মে আদৌ স্বীকৃত নয় বরঞ্চ নবীজির জামানায়ও হারাম, ধর্মদ্রোহী, মোনাফেকি হিসেবে ঘোষিত হয়েছিল।বাস্তবতা বিবর্জিত কোন কিছুই ইসলামে স্বীকৃত নয়, ইহা আমাদের মনে রাখা উচিৎ।
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা- বর্তমান যুগ ডিজিটাল যুগ-।মগজে যখন লেখার উপজিব্য কিছু আসেনা---একা একা ভালও লাগেনা, তখন কোটি কোটি পেইজবুক ব্যবহারকারি ক্ষুদে সাংবাদিক উপস্থিত যাহাই সামনে পায় তার ছবি পোষ্ট করে বন্ধুদের জানিয়ে দেয়--"আমি আছি তোমাদের সাথে"। ঘরের লাল মোরগটি কয়টা ডিম দিল তাও বন্ধুরা পোষ্ট করতে ভুলেনা।বাচ্চা মেয়েটির পাতলা পায়খানা দেখা দিলে ষ্টেটাস দিয়ে বন্ধুদের নিকট চোখের মণির জন্য দোয়া কামনা করে থাকে।সকালে ঘুম থেকে উঠার পর চেহারা কেমন দেখায়, বিকেলে সুর্য্যের কিরন হেলে পড়লে ছবিটা কেমন হয়, লাল শাড়ীতে কেমন মানিয়েছে ইত্যকার পাতিলের খবর তৎক্ষনাৎ বন্ধুমহলে ছড়িয়ে দিতে ভুলেনা।
দু:খ্যজনক হলেও সত্য--"মাওলানা সাহেবরা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের প্রতি আনুগত্যতার কারনে মহান আল্লাহ এমন বুজর্গী দান করেছেন, তিনি যখন যাহাই কামনা করবেন আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাকে তাই দান করে থাকেন। আল্লাহর অশেষ রহমতে উনারা প্রতিনিয়ত এমন সব হাজারো কেরামতির নিদর্শন স্থাপন করার পরও কোটি কোটি পেইজবুক ইউজার বন্ধু, শতশত সাংবাদিক, পত্রপত্রিকা, ইলেকট্রিক মিডিয়া হিংসাবশত: প্রতিনিয়ত এমন হাজারো খবর প্রকাশ করেনা।
বাংলাদেশের বুজর্গান মাওলানা ভারতে ওয়াজ মাহফিলে অংশ নিতে গিয়ে জীবনহানীর সংশয় দেখা দেয়া সত্বেও অপ-লাইনের পত্রিকা বিদ্বেশ বশত: খবরটি চাপায়নি।বাংলাদেশ এম্বেসিও বুজর্গান মহান হুজুরের জেলমুক্তির জন্যে এগিয়ে আসেনি। বাংলাদেশের নাস্তিক অথর্ব সরকার প্রতিবাদ দূরে থাকুক অন্তত: ভারতীয় হাইকমিশন থেকে খবর নেয়ার প্রয়োজন ছিল-তাও নেয়নি। বড়-ই দু:খ্য লাগে জেলখানায় তাঁদের দেশীয় কয়েদীদের তিনটা রুটি ডাল, মাংস খাবার দিলেও বাংলাদেশের হাজতি হুজুরকে মাত্র একটি শুকনা রুটি বরাদ্ধ দিয়েছে, সাথে পানিও দেয়নি।পানির কষ্টে আমাদের বরেন্য মাওলানা সাহেব চটপট করে মৃত্যু কোলে ঢলে পড়ার উপক্রম হলেও পাষান কাফের একফোঁটা পানি দেয়নি। এহেন অমানবিক আচরন কোন অবস্থায় মেনে নেয়া যায় না মানতে পারিনা। অথছ এই অমানুষিক অত্যাচারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের কোন ধর্মীয় সংগঠন প্রতিবাদি মিছিল মিটিং করার উদ্যোগ নেয়নি। দৈবশক্তিতে জানা হয়ে গিয়েছিল মিছিল সমাবেশ নাস্তিক সরকার করতে দিবেনা।
বে-নামাজী, বে-কেয়ামী, বে-রোজাদার, বুঝ-জ্ঞানহীন, খোদাদ্রোহী, পাপিষ্ট যুবক ছেলেপেলে, সাংবাদিক, পত্রপত্রিকা, জনসমক্ষে প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের একাধিক বদখবর চাপিয়ে লাখ লাখ উলামা মাশায়েখের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে কার্পন্য করেনা।অথছ আল্লাহর কুদরত প্রাপ্তির খবর এড়িয়ে যায়।
আল্লাহ তাঁর প্রেরিত পবিত্র পাককালামে বারবার সতর্কবানী দিয়ে বলেছেন---"জেনে, শুনে, বুঝে যদি কেউ তাঁর পাককালামের অর্থের বিকৃতি ঘটায়, মিথ্যা বলে, মোনাফেকি করে তাঁদের শাস্তি পৃথিবীতে এবং কেয়ামতের মাঠে অবধারিত। আল্লাহ তাঁর বান্দাদের অনুধাবন করার নিমিত্তে, সম্যক ধারনা লাভের জন্যে বহু উদাহরন মানুষের চোখের সামনে ধরে রেখেছেন। দুনিয়াতে যত পাপকাজ মানুষ করে সব পাপ আল্লাহ হয়তো বা মাফ করে দিবেন কিন্ত্যু তিনি মিথ্যা যারা বলে তাঁদের মাফ করবেন না।" মিথ্যা বলা 'মহাপাপ' বলে তিনি ঘোষনা করেছেন। দুনিয়াতে যত নবী বা রাসুল আল্লাহ পাঠিয়েছেন সবাই নবী এবং রাসুল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন কিন্তু হযরত মহাম্মদ (স:) শেষনবী এবং তিনি শ্রেষ্ঠ নবী তিনিই একমাত্র 'মহানবী'। তদ্রুপ সব পাঁপের সেরা পাঁপ অ-কষ্টকর, সহজে উচ্চারন সম্ভব একমাত্র মিথ্যাকে "মহাপাঁপ"--মিথ্যাবাদীকে "মহাপাঁপী" ঘোষনা করেছেন আল্লাহ।
মহাপাঁপি মানুষদেরকে মহান আল্লাহ তাঁর চারপাশের পরিবার পরিজন, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবের নিকট দুনিয়াতেই 'লানত' দিয়ে লজ্জিত করে শাস্তি দিয়ে থাকেন। সাময়িক বিপদ আপদ ইমান পরিক্ষার আওতায় পড়ে। মৃত্যু যন্ত্রনা বা সমপয্যায়ের কষ্ট লানতের মধ্যে পড়েনা--আল্লাহ তাঁর খাস বান্দাদের মৃত্যু যন্ত্রনা বা তৎসম কষ্ট দিয়ে বা তাঁর আগে কঠিন শারিরীক রোগের দু:খ্য, কষ্ট, যন্ত্রনা দিয়ে গুনাহ হালকা করে, তাঁকে পাকপবিত্র করে তিনি উঠিয়ে নেন।কেয়ামতের মাঠে যেন আল্লাহর নেকবান্দা অন্য বেহেস্তি বান্দাদের নিকট লজ্জিত না হতে হয়।
অন্যদিকে ধোঁকাবাজ, আল্লাহর হুকুমের সর্বাপেক্ষা বিকৃতকারি সর্বাধিক বিকৃত অনুগত বান্দাদের তিনি লোকচক্ষুর অন্তরালে এমন কঠিন বদভ্যেস ফয়দা করে দেন, সেই বদভ্যেসের জ্বালায় লোকটি বদকাজ কখন, কোনসময়ে, কোনস্থানে করতে উদ্যত হয়--সে নিজেই টের পায়না। ফলে জনসমক্ষে পরহেজগার নামাজি, অহরাত্র ইবাদতকারি, ইমানদার, সম্মানী ব্যাক্তি হিতাহীত জ্ঞান শুন্যবস্থায় ধরা পড়ে--লোকসমাজে লজ্জিত হওয়ার ন্যাক্কারজনক উদাহরণ সৃষ্টি হ'তে দেখা যায়। লক্ষ করলে দেখা যায়--"মহান আল্লাহর এমন ধারার সত্যতার হাজারো উদাহরন আমাদের চারপাশে ঘটেনি, এমন সময় আমরা কদাচিৎ পার করেছি।মুলত: লজ্জার চেয়ে বড় শাস্তি আর কিছুই নেই--,ইহাও সত্যি।
"লানৎ" শব্দটি ছোট কিন্তু তাৎপয্য বহুবীদ। সর্ব উচ্চস্থানে থেকেও কোন বদকাজের জন্যে জনসমক্ষে হেয়প্রতিপন্ন হওয়া,পরিবারের নিকট হেয় প্রতিপন্ন হওয়া, লজ্জিত হওয়ার কারনে আত্মহত্যা করে নীজকে বিলীন করে দেয়ার ইচ্ছা পোষনের ন্যায় কাজগুলিকে "লানৎ" বলা যেতে পারে।মহান আল্লাহ ঐ সমস্ত বান্দাকেই লানৎ" দিয়ে থাকেন যারা আচার, আচরন, কথা বার্তায়, ইবাদত বন্দেগীতে জনসমক্ষে সর্বত্তম অথছ সম্পূর্ন আল্লাহ, আল্লাহর রাসূল এবং কোরানের নির্দেশীত পথের বিকল্প।
"লানতের" সর্বাপেক্ষা উত্তম উদাহরন হ'তে পারে "বলৎকার", সমকামিতা, ভিক্ষাবৃত্তি, বেশ্যাবৃত্তি, লুচ্চামী, পরকিয়া শব্দগুলি। সমলিঙ্গের সহবাস নিশ্চয়ই বদভ্যাসের এমন একটি--"মদ, মাদক, সুপেয় খাদ্য, বিপরীত লিঙ্গের যৌনকর্ম, স্ত্রী সহবাস ইত্যাদি ছেড়ে দেয়া সম্ভব কিন্তু সমলীঙ্গের যৌনতা তাঁদের ছেড়ে দেয়া সম্ভব হয়না। ইহা আল্লাহ প্রদত্ত একটি কঠিনতম গজব বলা যেতে পারে। ভালভাবে লক্ষ করলে দেখা যায়--এই কঠিন রোগটির সর্বাধিক আক্রান্ত ব্যাক্তিদের মধ্যে নাস্তিক্যবাদে বিশ্বাসীদের মধ্যে অনেকের এবং একশ্রেনীর উলামা মাশায়েখ, অতিধার্মীক, পরহেজগার ব্যাক্তিদের অনেকের মধ্যে দেখা যায়, এবং কি প্রমানীত সত্যে পরিণত হয়েছে।
তবে হ্যাঁ ব্যাতিক্রমও আছে--ব্যাতিক্রম নেই বা সাধারনে নেই এমন বদ অভ্যেস আমি কখনই বলছিনা---কতিপয় ব্যাতিক্রম সর্বক্ষেত্রেই বিরাজমান থাকে, থাকবে। তবে উল্লেখিত দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে নজরে আসে, এবং ইহা প্রমানীত সত্য। সরকারি মাদ্রাসার আলেম--সাধারন মসুলমান, অন্যান্ন ধর্মালম্বি সাধারন মানুষের মধ্যে বেশির ভাগ উক্ত হীনকাজকে অত্যান্ত ঘৃনা এবং "কবীরাহ গুনাহ" হিসেবে বিবেচনা করে। সাধারনত আমার ব্যাক্তিগত নজরে অদ্যাবদি সরকারি মাদ্রাসার কোন আলেমের এহেন ঘৃনিত বদভ্যেস চোখে পড়েনি। খুববেশী জনসমক্ষে লজ্জিত হওয়ার তেমন কোন উদাহরনও আমার সংগ্রহে নেই।
অতিধার্মীকদের পরিণতি নবী করিম (স:) এর জীবিতবস্থায়ও এমন একাধিক উদাহরন আমরা দেখি। আমি দৃডতার সঙ্গে বিশ্বাস করি--"নবী তাঁর জীবদ্দশায় যা কিছু করেছেন, সব কিছু আল্লাহর হুকুমেই করেছেন।" কথিত আছে এবং বিভিন্ন ভাবে হাদিছেও এসেছে--"নবী করিম (স:) যখন পথে বের হ'তেন তাঁকে আগে কোন 'সাহাবী' সালাম দিতে পারতেন না, নবীজি আগেই সালাম দিতেন। "আবু লা'হাব" সাহাবীদের মধ্যে খুবই ইমানদার, পরহেজগার এবং নবীজির প্রিয় সাহাবীদের মধ্যে অন্যতম একজন ছিলেন। তিনি নবীজি কেন, কিভাবে আগে সালাম দিতে পারেন এই সম্পর্কে পরিক্ষা করার জন্যে একদিন নবীজি যে পথে প্রতিনিয়ত বের হন, সেই পথের ঝোঁপের আড়ালে বসে রইলেন-। নবীজিকে আগে সালাম দিতে পারেন কিনা, পরিক্ষা করার উদ্দেশ্যে।
নবীজি যথারীতি বের হয়ে উক্ত স্থানে আসামাত্রই "আবু লাহাব" লাফ দিয়ে উঠে নবীজিকে সালাম দিলেন।নবীজি সাথে সাথে আবু লাহাবকে ইসলাম থেকে 'খারেজ' করে দিয়ে বলেছেন "আবু লাহাব মানুষরুপি শয়তান"। পবিত্র কোরানেও এই ঘটনার বিবরণ যথাযথভাবে এসেছে।নবীজি তাঁর উম্মতদের সতর্ক করে বলেছেন---"একদল ইসলামধর্ম রক্ষক, প্রচারক বের হবে, তাঁরা দেখতে প্রকৃত ইসলামের অনুসারীর মতই হবে, সাদা বকের চাইতেও সুন্দর পাগড়ী পড়া উক্ত ধর্মপ্রচারক গন মসুলমানদের ইমান আ'কিদা, বিশ্বাসে চিড় ধরানোর যাবতীয় উপাদান তাঁদের মধ্যে দেখা যাবে, তাঁরা আর কেউ নন- আবু লাহাবের অনুসারী'--"ইসলামের দলত্যাগী বা খারেজ বা খারেজী হিসেবে পরিচিতি পাবে।"
উক্ত ঘটনার কিছুকাল পর খলিফা শেরে আলীর সময়কার একটি যুদ্ধেও তাঁর সত্যতা প্রতিষ্ঠিত হতে দেখা গেছে।একদল মুসলিম হযরত আলীর শাষনামনে যথাযথ ভাবে ইসলাম ধর্ম রাষ্ট্রীয় পয্যায় হযরত আলী অনুসরন করছেনা--মর্মে তাঁর রাজত্বে বিদ্রোহ করেন।হযরত আলী (র:) তাঁদেরকে দমন করার জন্যে সৈন্যসামন্ত সহকারে সেখানে গিয়ে যুদ্ধে লিপ্ত হলেন। প্রচন্ড যুদ্ধ চলার পর বিদ্রোহী বাহিনী নাস্তানাবুদ হয়ে পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হলে, শয়তানীর ভাব জেগে উঠে তাঁদের মধ্যে। শয়তান "বিদ্রোহী ইসলামী সৈন্যদের দলনেতা" উপায়ন্তর না দেখে "বর্শার মাথায়" পবিত্র কোরান বেঁধে "যুদ্ধবিরতির আহব্বান জানালেন।
সেই দিনটি ছিল শুক্রুবার, যুদ্ধটিও হচ্ছিল গভীর জঙ্গলের পাশে খোলা ময়দানে। যেহেতু পবিত্র কোরান উঁচিয়ে যুদ্ধ বিরতির আবেদন জানিয়েছে সেহেতু উক্ত আহব্বানকে অমান্য করে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া কোন অবস্থায় মুসলিম বাহিনীর সমচিন নয়। "হযরত আলী" যুদ্ধ বিরতির ঘোষনা মেনে নিয়ে, সৈন্যদের জুমার নামাজের প্রস্তুতি এবং খাবার প্রস্তুতের নির্দেশ দিলেন। হযরত আলীর সেনাবাহিনী দীর্ঘদিনের যুদ্ধের ক্লান্তি নিয়ে এদিক সেদিক ছত্রভঙ্গ হয়ে গেল, কেউ কেউ রান্নাবান্নার কাজে মনযোগ দিল, অনেকেই জুম্মার নামাজের প্রস্তুতির ব্যাস্ততায় মগ্ন। এমনি সময় ইসলামের মুখোশধারী শয়তান আলেমদের পক্ষ থেকে সাড়াশি আক্রমনের মাধ্যমে মুসলিম সৈন্যদের অকাতরে হত্যা, লুটপাট করে চরমভাবে পরাজিত করে বীরত্ব প্রকাশ করে। তাঁরা আর কেউ-ই নয়--"নবীজি কতৃক ইসলাম থেকে খারেজ হওয়া "আবু লাহাবের অনুসারী অতিধার্মীক "খারেজী"র বংশ বা অনুসারী শয়তান।ইসলামের ইতিহাসে বেঈমানী, মোনাফেকি, শতানের এই যুদ্ধ " জুম্মাতুল জঙ্গল" নামে বিধৃত হয়ে মসুলমানদের নিকট অনুকরনীয় হয়ে রয়েছে।
ইসলামে নৈরাশ্যবাদ, অতিরঞ্জন, গলাবাজি,ঠোঁটবিক্রির মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ, ভিক্ষাবৃত্তি কোনবস্থায় স্বীকৃত নয়, বরঞ্চ হারাম হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এমনকি কাফের শাষিত রাষ্ট্রে বসবাসকারি ইসলাম ধর্মের অনুসারিদের "রাষ্ট্রীয় আইনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ সম্পূর্ণ নিষেদ" করেছেন। কাফের শাষন মেনে জীবন যাপন করার নির্দেশনা দিয়ে "পবিত্র জুমাবার" অতিরিক্ত নামাজ আদায়ের মাধ্যমে মহান সৃষ্টি কর্তার নিকট "কাফের শাষন থেকে মুক্তির আরজ" করার জন্যে বলা হয়েছে।এর ব্যাত্যায় আল্লাহ তাঁদের বংশানুক্রমে লানৎ দিয়ে পৃথিবীতে অনুসরনের জন্যে উদাহরন সৃষ্টি করে রাখার হাজারো কৃর্তি আমাদের চোখের সামনেই আছে।কিন্তু আমরা তা দেখেও নাদেখা বুঝেও না বুঝার ভান করে থাকি।
জাতি, ধর্ম, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারিগন নবীজির শাষনামল এবং কি খলিফাদের শাষনামলেও ধিকৃত হয়ে বংশ পরস্পরায় দায় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হয়েছে, আজো হচ্ছে। যেমনটি নবীজির শাষনামলে আবু লাহাবের অনুসারীগন আজো ইসলামে 'খারেজী' হিসেবে চিহ্নিত হয়ে মুসলিম সমাজে ধীকৃত, অপাংক্তেয়। নবীজির সাহাবী শাষনামলে বিশ্বস্ত সাহাবী "মোয়াবিয়া পুত্র ইয়াজিদে"র "কারবালা ময়দানে"র ঘটনা পৃথিবীর আলো বিকিরন যতদিন থাকবে ততদিন ঘৃনাভরে উচ্ছারীত হবে "অতিধার্মীক ইয়াজিদের" নাম। খলিফাদের শাষনকালে হাজারো উদাহরন দেয়ার উপকরন রয়েছে।
ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলিম শাষক নবাব সিরাজদৌল্লার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারি মীর জাপর আলী খাঁন, মীর কাশেম আলী খান সহ আরো অনেক নাম ইতিহাসে ঘৃনার উপাদান হয়ে থাকবে অনন্তকাল।
পাকিস্তান শাষনামলের প্রথম দিকেই তথাকথিত ধর্মবাজ মাওলানা মওদু'দীর "ফেৎনাবাজির শাস্তি মৃত্যুদন্ড প্রাপ্তি" এবং পরবর্তীতে তাঁদের রক্ষক ফেৎনাবাজ সৌদি শাষক "আল-সৌদ" কতৃক মানবিক আবেদনের প্রেক্ষিতে মুক্তির ইতিহাস লিখা থাকবে ইসলাম ধর্মভিত্তিক দলের ইতিহাসে ঘৃনার সাক্ষি হয়ে।
বাঙ্গালী জাতির মুক্তির আকাংখাকে ধর্মের আবরনে ঢেকে গনহত্যা সংগঠিত করার অপরাধে দেরীতে হলেও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে বিচার অনুষ্ঠিত হচ্ছে।শাস্তি প্রাপ্ত প্রত্যেক অপরাধীর নামের আগে রাজাকার সংযুক্তি ঘটবে। তাঁরা সকলেই বংশানুক্রমে ঘৃনার আধাঁরে পরিনত হয়ে ধরা থেকে একসময়ে উচ্ছেদ হ'তে বাধ্য হবে- যেমন অতীতে হয়েছিল।জাতির জনকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী খোন্দকার মোস্তাক গংদের নাম জাতি চিরদিন ঘৃনাভরে উচ্চারন করবে।
আল্লাহ নীজেই তাঁর পবিত্র কোরানে বার বার বলেছেন--"তাঁর প্রেরীত পবিত্র গ্রন্থ "কোরানের রক্ষনকারী" তিনি নিজেই।পবিত্র কোরান রক্ষার অর্থই হচ্ছে ইসলাম রক্ষা।যেহেতু ইসলাম সার্বজনীন ধর্ম, শান্তির ধর্ম সেহেতু আল্লাহর ঘোষনার সম্মান রক্ষা, ওয়াদা রক্ষার স্বার্থেই তিনি বলেছেন--"তোমরা ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করিও না।"
masterruhulamin@gmail.com
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন