এই প্রথম বাঙ্গালী জাতি তাঁদের মননশীলতার সর্ব্বৃহৎ মাসব্যাপি অনুষ্ঠান মালা সর্বপ্রকার ভয়মুক্ত, শান্তিপূর্ণ, আশংকামুক্ত, পরিবেশে উৎযাপন করবে।
(রুহুল  আমিন  মজুমদার)

      রাত পোহালেই ভাষার মাস। এই মাসটিকে এক অর্থে বলা যায় সৃজন শীলতার মাস, বাঙ্গালী সংস্কৃতি বিকাশের মাস, প্রগতিশীলতার ধারাবাহিকতার মাস। মাসব্যাপি শুরু হবে দেশব্যাপি বই উৎসব।সারা বছর বই পড়া এবং কেনার প্রতি যদিও আগ্রহ না থাকে উৎসব, আমেজের কারনে এই মাসটিতে বই পড়ায় অনভস্ত ব্যাক্তিরাও মেলায় বেড়াতে গেলে দুই একটা বই কেনার চেষ্টা করে করবেন।লেখকগনও সারা বছর বসে থাকলেও এই মাসটিতে একটি বই মেলায় নিয়ে আসার চেষ্টা করবেন। বই সংশ্লিষ্ট সব মহলের ব্যাস্ততার পারদ মাসটিকে ঘিরে বেড়ে সর্ব উচ্চ স্থানে পৌঁছে যাবে।

   বাঙালীর এই মাসের বইমেলা এক অর্থে প্রাতিষ্ঠানিকতা পেয়েছে তাঁদের মননে, চিন্তায়, চেতনায়। অশুভশক্তির নানারুপ হামলা, হত্যা, বিশৃংখলা বইমেলার আগ্রহে সামান্য চিড় ধরাতে পেরেছে বলে আমি মনে করিনা। কারণ ২০১৫ সালের বইমেলায় অভিজিৎকে হত্যা করা হয়েছে। যখন প্রকাশকরা ২০১৬’র বইমেলার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিলেন, তখনই জাগৃতির প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপনকে হত্যা করা হয়। একইদিন শুদ্ধস্বরের প্রকাশক টুটুলের ওপরও হামলা করা হয়। বইয়ের পাতায়, পাঠকের চোখে, লেখকের মননে, প্রকাশকের দোরগোড়ায় সেই রক্তের দাগ এখনও স্পষ্ট। প্রতিবার একটি জমজমাট মেলা হবে এই ভাবনা নিয়ে সবাই যখন মেলার মাঠে সমাগত হয়, তখনই রাজনৈতিক অস্থিরতায় মেলায় মৌনতা নেমে আসে। তখনও কোন নেতিবাচক প্রভাব বইমেলায় ছায়া ফেলতে পারেনি, মানুষ বই কিনেছে তবে মুখে হাসি ছিলনা, ছিল ঘৃনার বহ্নিশীখা।

এবার অবশ্য রাজনৈতিক দিক থেকে পূর্বাভাস অনেকটাই পরিচ্ছন্ন  ও স্থিতিশীল। বইমেলার ইতিহাসে এমন সুবাতাস আর কখনও ছিলনা।পাকিস্তান শাষনামলে বইমেলার মুল উদ্দেশ্য ছিল বাংলা ভাষার আলাদা স্বাতন্ত্রতাবোধ, সর্বত্র বাঙ্গালী চেতনাবোধ ফুটিয়ে তোলা,বাঙ্গালী সংস্কৃতি ও কৃষ্টিকে তুলে ধরার প্রানান্তকর চেষ্টা।বাঙ্গালী জাতিকে সকল প্রকার কুসংস্কার থেকে টেনে তুলে প্রগতির ধারায় সম্পৃত্ত করার প্রতিই লক্ষ ছিল সর্বস্তরের লেখক প্রকাশক, কবি সাহিত্যিক সর্বপোরি রাজনৈতিক, সামাজিক শক্তি সমুহের।

      মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হলে উল্লেখিত ধারা পরিবর্ততিত হয়ে ভাষা, সংস্কৃতি ও কৃষ্টিকে সমৃদ্ধ, সুরক্ষিত করার দিকেই মনযোগী ছিলেন সর্বস্তরের সংশ্লিষ্ট মহল।'৭৫ এর ১৫ ই আগষ্ট পটপরিবর্তনে প্রগতিশীল মননে বিরাট এক ধাক্কা অনুভুত হয়।ফলশ্রুতিতে প্রগতির ধারায় চিড় ধরার আশংকা অনুভুত হয়।এমন সময়ে সমাজের বিভিন্ন অঙ্গিনা থেকে একদল প্রগতিশীল লেখক, সাহিত্যিক, কবি, কলামিষ্ট জীবনের মায়া ত্যাগ করে বের হয়ে আসেন।

        শুরু হয় বাংলা নাটক, সিনেমা সহ পত্র পত্রিকায় কিঞ্চিত ধারা পরিবর্তনের সুচনা। হুমায়ুন আহাম্মদের নাটকে পাখির মুখে উঠে আসে "তুই রাজাকার" মত সাহষী সংলাপ। আমজাদ হোসেনের চলচিত্রে উঠে আসে একাধিক বাঙ্গালী, বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক চলচিত্র। মঞ্চ নাটক এই সময় যুগান্তকারি কতিপয় নাটক মঞ্চায়নের মাধ্যমে প্রগতির ধারাকে সামনে নিয়ে আসতে ব্যাপক  ভূমিকা পালন করে।সাপ্তাহিক আজকের সুয্যদয়ের "গেদুচাচার খোলা চিঠি" সাপ্তাহিক "যায় যায় দিন" সহ বেশ কয়েকটি ছোট ছোট প্রগতিশীল পত্রিকা সমাজের অন্যায়, অনাচার কুস্মুন্ডতা নিয়ে লেখালেখির মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে জনমনে প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়। টেলিভিশন নাটকের মধ্যেও এসেছিল যুগান্তকরি এক বিপ্লব।এক্ষেত্রেও ধারাবাহিক নাটক "এই সব দিন রাত্রী" সহ বেশ কিছু নাটক ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জনের মাধ্যমে তরুন সমাজকে সংগঠিত করার কাজে ভুমিকা রাখতে দেখা গেছে।

  '৭৫ এর ১৫ই আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার মাধ্যমে ভাষা আন্দোলনের সাংস্কৃতিক ধারাবাহিকতায়-মুক্তিযুদ্ধে পরিণতির মাধ্যমে প্রগতিশীলতার ধারায় যে বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছিল ত্রিশলক্ষ তাজা প্রান, প্রায় পৌণে চার লক্ষ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে সেই রাষ্ট্রটি প্রতিক্রিয়াশীল, সাম্প্রদায়িক গোষ্টির খপ্পরে আটকে পড়ে। সর্বত্র অশুভ শক্তির আস্ফালনে সমাজ, রাষ্ট্র, রাজনীতি কলুষিত হতে থাকে।দেশে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ভুলুন্ঠিতত হতে থাকে। সেনা শাষক, স্বৈরশাষকদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগীতায় প্রতিক্রিয়াশীল সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠি, স্বাধীনতা বিরুধী শক্তি এবং তাঁদের প্রতিপালিত অ-শুভচক্র বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ, ভাষাআন্দোলন, স্বাধীনতা, জাতিরজনককে নিয়েও বিরুপ মন্তব্য করতে সাহষ দেখিয়েছিল। জাতির জনকের মর্মান্তিক শোক দিবসকেও ব্যাঙ্গ করতে কার্পন্য করেনি তাঁরা। মহান নেতাকে হত্যা করে সেই দিনটিকে জম্ম উৎসবের নামে আনন্দ উল্লাস করতেও তাঁদের বিবেকে সামান্যতম বাঁধা দেয়নি।

   নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরুধী আন্দোলনের মাধ্যমে গনতান্ত্রিক ধারায় ফিরে আসার মহৎ অর্জনকে কালিমালিপ্ত করার উদ্দেশ্যে অশুভ শক্তির প্রেতাত্বা বিএনপি সরকারের প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় নব্বইয়ের দশকে সাম্প্রদায়িক প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের সসস্ত্র উত্থান পরিদৃষ্ট হয়। রাজশাহীতে কথিত বাংলা ভাই প্রকাশ্য অস্ত্র হাতে প্রশাসনের পাহারায় মিছিলের মাধ্যমে তাঁদের উপস্থীতি জানান দেয়।' '৯৬ ইং এর সাধারন নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাছিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে সাময়িক উত্থান প্রক্রিয়া স্তিমিত হলেও গোপনে সংগঠিত হয়ে শক্তি সঞ্চয় করতে থাকে। আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধানের ধারা অনুযায়ী শান্তিপুর্ণ ক্ষমতা ত্যাগের  পরক্ষনেই ব্যাপক শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে দেশি বিদেশী শক্তির সহযোগীতায় তাঁরা মাঠ দখল করে নেয়। ক্ষমতা ছাড়ার অব্যবহিত পর পরই দেশব্যাপি নারকীয় তান্ডবের মাধ্যমে আওয়ামী নেতাদের দেশত্যাগে বাধ্যকরে সাধারন সমর্থক ও সংখ্যালুঘুর উপর মধ্যযুগীয় বর্বতা চালায়। বিদেশী শক্তির মদদপুষ্ট "ষড়যন্ত্রকারি তত্বাবধায়ক সরকারে"র সার্বিক পৃষ্টপোষকতা এক্ষেত্রে তাঁদের অত্যাচারের মাত্রাকে কয়েকগুন বাড়িয়ে দেয়।

  ২০০১ ইং সালের সাধারন নির্বাচনে আওয়ামী শুন্য মাঠে চার দলীয় জোট একক সংখ্যা গরিষ্টতা পেয়ে সরকার গঠন করলে দেখা যায়--সেই সরকারের ভিতরে এবং বাহিরে অশুভশক্তি তাঁদের প্রকাশ্য উপস্থীতি নিশ্চিত করে ফেলেছে। একদিকে অশুভ শক্তির প্রকাশ্য প্রেতাত্বার প্রধান শক্তি বিএনপি সরকার গঠন করে মুক্তিযুদ্ধের বিরুধীতাকারি জামায়াতের হাতে মুক্তিযুদ্ধের অর্জন লাল সবুজের পতাকা তুলে দেয় অন্যদিকে দেশের ৬৪ জেলায় একই দিন একই সময়ে বোমা হামলার মাধ্যমে অশুভ শক্তির উত্থানের স্থীরতা এবং সাংগঠনিক ব্যাপকতার শক্তি প্রদর্শন করে জানিয়ে দেয় প্রগতিশীলতার দিনশেষ, অন্ধকারের যুগের শুভ সুচনা।

      অত্যাচায্য বিষয়টি হচ্ছে  রাষ্ট্রীয় শক্তিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অশুভ শক্তির এতবড় "দুবৃত্তায়নে"র পরেও সরকারি পয্যায় উক্ত বোমা হামলার কারন, শক্তি চিহ্নিতকরন, উদ্দেশ্য অনুসন্ধানে কোনপ্রকার রাষ্ট্রীয় তদন্ত দল গঠন করা হয়নি। আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরীয়া হত্যা সহ বৃটিশ রাষ্ট্র দূতের উপর বোমা হামলা,২১ শে আগষ্ট শেখ হাছিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বোমা হামলায় আইভি রহমান সহ ২৯ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করা হলেও, হত্যার মোটিভ গায়েব সহ রক্ত, মাংসের স্তুপ পয্যন্ত ধুয়ে মুছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে 'সকল প্রকার প্রমানাদি সরকারি ভাবে মুছে দেয়া হয়।' ৯০ ইং সাল হতে ২০০৬ ইং সালের মধ্যে কম করে হলেও তেরবারের উপর শেখ হাছিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালানো হয়--"কোন হামলারই তদন্ত করা হয়নি বরঞ্চ উপহাস করা হয়েছে আওয়ামী লীগের অন্তদলীয় কোন্দলের ফসল হিসেবে দেশে বিদেশে প্রচার প্রপাগান্ডের মাধ্যমে।"

     ২০০৬ ইং সালের সাধারন নির্বাচন ঘনিয়ে এলে ষড়যন্ত্রকারিরা তাঁদের পতন অনিবায্য আঁচ করতে পেরে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার একপয্যায়ে শেখ হাছিনার নেতৃত্বে মহাজোটের আন্দোলনের মুখে সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা দিয়ে সরে যাওয়ার প্রাক্কালে বিদেশী ষড়যন্ত্রের ফাঁদে আটকে যায় খালেদা জিয়া। সেনা বাহিনী ক্ষমতা গ্রহন না করলেও তাঁদের সমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা নিয়ে তিনমাসের সরকারকে দুইবছর টেনে নিয়েও উদ্দেশ্য সাধন করতে না পেরে নির্বাচনের ঘোষনা দিতে বাধ্য হয়। ঘোষনা মোতাবেক সাধারন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট ভুমিধ্বস বিজয়ের মাধ্যমে শেখ হাছিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করে।

    শেখ হাছিনার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হলে উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে সরকার কতিপয় সাংবিধানিক পরিবর্তনের মাধ্যমে ৭২ এর সংবিধানে ফিরে আসতে বাধ্য হয়। নির্বাচনী ওয়াদা এবং উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে মুক্তিযুদ্ধে মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচারের উদ্যোগ নিলে সরকার অশুভ শক্তির টনক নড়ে উঠে। তাঁরা ৭২ -'৭৫ এর চিহ্নিত সকল অপশক্তি একজোটে দেশব্যাপি অস্থীরতা, হত্যা, সন্ত্রাস, ঘুম খুনে মেতে উঠে। ইতিপুর্বে একাধিকবার প্রমানিত ষড়যন্ত্রী তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিকে উপলক্ষ করে ধর্মকে সামনে রেখে রাষ্ট্রের ভিতরে বাহিরে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠে। এক্ষেত্রে '৭৫ এর ষড়যন্ত্রের মুল হোতা মেজর জিয়া নির্দেশিত পথে তাঁর পত্নি খালেদা জিয়া নেপথ্যের কারিগরের দায়িত্বে থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকায় নামে। পরিশেষে প্রকাশ্য আগুন সন্ত্রাসের নেতৃত্ব পয্যন্ত তোলে নেয় হাতে "বিশদলীয় জোটনেত্রী" বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।খালেদা জিয়ার প্রকাশ্য নেতৃত্বে ২০১৪ ইং সালের নভেম্বর হতে জানুয়ারী ২০১৫ ইংপয্যন্ত  অশুভ শক্তির চরম উত্থান এবং আস্ফালন দেশবাসিকে আশংকিত করে তোলে।

     দেশ ও জনগনের ঘোর অমানিষায় অতীতের ন্যায়  এইবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক প্রগতিশীল ধারার তরুন প্রজম্মের লাখ লাখ তরুন  মানবতা বিরুধী বিচারের পক্ষে অবস্থান গ্রহন করে সাম্প্রদায়িক গোষ্টির মুখে চুন লাগাতে সক্ষম হয়।তাঁরা দিবারাত্র গনজাগরন মঞ্চ মিছিলে শ্লোগানে সরগরম করে তোলে। অল্প সমময়ের মধ্যে সর্বস্তরের আবাল বৃদ্ধবণিতা, লেখক, সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিককর্মী, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির মিলনমেলায় পরিনত হয়ে মহাশক্তি রুপে আবিভুত হয়। তাঁদের অবস্থান দেশব্যাপি সাড়া জাগিয়ে বিদেশী ষড়ড়যন্ত্রীদের ভীত কাঁপিয়ে দিতে সক্ষম হয়।

অশুভশক্তি তাঁদের অবস্থা বেগতিক দেখে ছাত্রদের শান্তিপুর্ণ অবস্থানকে নাস্তিকতার অপবাদে বিনাশ করার উদ্দেশ্যে ইসলামী জোটের অন্যতম শরিক হেফাজতের আমীর মাওলানা শফি সাহেবের নেতৃত্বে মতিঝিল শাফলা চত্বরে একদিনের অবস্থানের অনুমতি নিয়ে লাগাতার অবস্থানের ঘোষনা দিলে চরম সংকট দেখা দেয়।তাঁরা শাফলা চত্বরের আশেপাশে ব্যাপক লুটতরাজ, ব্যাংক বীমায় আগুন, পবিত্র কোরানে আগুন দিয়ে বিভেষিকাময় পরিস্থীতির সৃষ্টি করে জনজীবন অচল করার হঠকারি পদক্ষেপ গ্রহন করে।

 এরই মধ্যে বিশ দলীয় জোটনেত্রী খালেদা জিয়া বিএনপি নেতাকর্মীদের হেফাজতের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ এবং ঢাকার জনগনকে রাজপথে নামার আহব্বান জানিয়ে প্রকাশ্যে তাঁর অবস্থান নিশ্চিত করেন।সেনা বাহিনীকেও প্রকাশ্য উস্কানী দিয়ে সম্পৃত্ত করার চেষ্টা চালান,।সেনাবাহিনীর  একটা ক্ষুদ্র অংশকে সম্পৃত্ত করেছিলেনও। পরিস্থীতি সরকার নিয়ন্ত্রন করলে সেই অংশটি নিজেদেরকে গুটিয়ে নেয়।পরবর্তীতে খালেদা জিয়া কতৃক প্রকাশ্য সেনাবাহিনী সম্পর্কে অশালীন বক্তব্য থেকে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠে। উক্ত সময়ে সুরক্ষিত স্থানে অবস্থান গ্রহন করে জোটনেত্রী খালেদা জিয়া সরকারকে টেনে নামানোর মত উগ্র, অশালীন বিবৃতির মাধ্যমে নেতাকর্মীদের মনোবল দৃড করার কৌশল গ্রহন করে।এরশাদ তাঁর আগেই পানি, শুকনা খাদ্য নিয়ে হেফাজতিদের পাশে অবস্থান গ্রহন করেছিলেন।

এমনতর পরিবেশে জাতিরজনকের কন্যা মহাজোটের নেতাকর্মীদের শান্ত থাকার উপয্যপোরি অনুরুধ জানিয়ে অনিবায্য গৃহযুদ্ধের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করার প্রয়াস গ্রহন করেন। মানব সৃষ্ট দোর্য্যোগ রাষ্ট্রীয় শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে মোকাবেলা করে দেশও জনগনের মনে স্বস্তি ও স্থীরতা আনার প্রয়াস গ্রহন করে সফল হন। অ-শুভশক্তির হোতা জামায়াত, উত্থিত এবং দীর্ঘবছর রাষ্ট্রীয় আনুকুল্যে পরিপুষ্ট জঙ্গী গোষ্টির বিরুদ্ধে সাঁড়াষি রাষ্ট্রীয় আইনানুগ শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে সরকার তাঁদেরকে ইতিমধ্যে অনেকটা নিস্তেজ করে দিতে সক্ষম হন।

'৫২এর পর বাঙ্গালী তাঁর মননশীলতার উৎসব বইমেলা এইবারই প্রথম কোন প্রকার হুমকি ছাড়া আনন্দ উল্লাসের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত করার সুযোগ পেল। বর্তমান সরকারের সফল রাষ্ট্র পরিচালনার কারনে এইবারই বৃহত্তর পরিসরেই শুধু নয় বিজয়ী বেশে বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে এবং ভাষা শহিদদের স্মরণ করবে জাতি। সামাজিক মিডিয়া পেইজবুক, গুগুল, টুইটার সহ অন্যান্ন সকল মাধ্যমে আনন্দের জোয়ার আসার লক্ষন ইতিমধ্যে ফুটে উঠেছে। ভাষাপ্রেমি সকল প্রগতিমনা ভাইবোন তাঁদের প্রোফাইল ছবি এবং কভার ফটো পফিবর্তন করবেন। ভাষা শহিদদের স্মরনে অখ্যাত অজ্ঞাত সকলেই শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে তাঁদের শ্রেষ্ঠ পুর্ব পুরুষ ভাষা শহিদদের সম্পর্কে কমবেশি লিখবেন।সামাজিক মিডিয়া সমুহে নিসংশয়ে বইমেলার বিভিন্ন দিক নিয়ে প্রতিষ্ঠিত লেখক সাহিত্যিক সাংবাদিক, শিক্ষক, ছাত্রছাত্রীগন তাঁদের অভিমত তুলে ধরার প্রয়াস নেবেন।

         বাংলা একাডেমিও এইবার মেলার পরিসর বাড়িয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই শিশুচত্বর রাখা হচ্ছে এবার। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দেয়ালের পাশ থেকেই মেলা শুরু হয়ে যাচ্ছে। অনেকটা হেঁটে গিয়ে দর্শনার্থীদের মেলায় প্রবেশ করতে হচ্ছে না। প্রবেশের গেইটের সংখ্যা যেমন বাড়ানো হচ্ছে তেমন প্রশস্থ রাখা হচ্ছে মূল প্রবেশদ্বার। বলা হচ্ছে পাঠক, লেখক, প্রকাশকরা নিরাপত্তা নজরদারীর মধ্যেই থাকবেন। তবে এই আশ্বাস জারি করেই মেলা কর্তৃপক্ষের থিতু থাকার সুযোগ নেই।

  বাঙ্গালীর মননশীলতার বইমেলাকে উপলক্ষ করে অশুভশক্তি তাঁদের কুড়ানো শক্তিকে কাজে লাগিয়েও অঘটন ঘটানোর চেষ্টা করতে পারে।অতিমাত্রায় অশুভশক্তির নিস্তেজতার উচ্চ ধারনা পোষন বিপদ বয়ে নিয়ে আসতে পারে। আজকের নির্মল পরিবেশে বই উৎসবের পরিবেশ নিশ্চিতকরনে জাতি  ইতিমধ্যে অনেক মুল্য পরিশোধ করেছে।কোনপক্ষের অবহেলায় যেন এই অর্জিত সাফল্যের গায়ে আচড় না লাগতে পারে তজ্জন্য সংশ্লিষ্ট সকল মহলকে সজাগ থাকার আহব্বান জানাই।
        masterruhulamin@gmail.com
"জয়বাংলা     জয়বঙ্গবন্ধু"

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন