বাঙ্গালী মুসলিম সমাজ নিজেদের দর্শনও মানেনা, আল্লাহর নবীর শাষনও মানেনা----"মানে শুধু ইহুদি, ইংরেজ তথা পাশ্চাত্যের শাষনব্যবস্থা।"
(রুহুল আমিন মজুমদার)
মানব সমাজের সভ্যতা বিকাশের প্রথমার্ধে ইসলাম ধর্মের আবির্ভাব ঘটে। যখন মানব সমাজের প্রত্যহিক চাহিদা পূরনার্থ্যে চারিদিকে হিংসা, হানাহানি, জাতি গোষ্টিগত বিরোধ, একে অপরের উপর প্রধান্য বিস্তারের লক্ষে এক গোষ্টি অন্য গোষ্টিকে নি:শেষ করে দেয়ার চেষ্টারত: থাকায় চারদিকে ঘোর অন্ধকার নেমে এসেছিল ঠিক তখনই আল্লাহ তাঁর মনোনীত ধর্ম গ্রন্থ আল-কোরান নবী করিম (স:) এর মাধ্যমে সমগ্র মানব জাতির কল্যানে পৃথিবীতে প্রেরন করেন। আল্লাহ প্রেরীত আল-কোরান এবং নবী (স:) এর উপর বিশ্বাস স্থাপন কারীগন ইসলাম ধর্মের অনুসারি হিসেবে পরিচিত হন। আল্লাহ তাঁর প্রেরিত কিতাব সমগ্র মানব সমাজের কল্যানে এবং ইসলামকে সমগ্র মানব জাতির অনুসরনীয় করে সার্বজনীনতা ও সাম্যের ধর্মরুপে স্বীকৃতি প্রদান করেন।
মহান আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী নবীকরীম (স:) এর জীবনাচারকে অনুকরনীয় করে রাখার উদ্দেশ্যে সকল গুনাবলী তাঁর মধ্যে অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে মহামনবে রুপান্তর করেন। তিনি যেমন আল্লাহ প্রেরীত কোরানের ধারক তেমনি উহার বিস্তারের জন্যে প্রচারক, যেমনি নতুন সমাজ সৃষ্টিকারক তেমনি নতুন সমাজের শাষক, যেমন আল-কোরানের আলোকে রচিত হাদিসের মাধ্যমে কোরান এবং মানব সমাজে নিত্যনতুন সমস্যার সমাধান দিয়ে ধর্ম সংস্কারক হিসেবেও অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করে ছিলেন। তখনকার যুগে এমন কোন বিষয় ছিলনা যাহা ঘটেনি এবং নবী (স:)কোরানের আলোকে সমাধান দেননি।
তাঁর সৃষ্ট ইসলামী রাষ্ট্রের শাষনকর্তা হয়ে তিনিই প্রথম কোরানের আলোকে রাষ্ট্র শাষন ব্যবস্থা "মদিনা সনদ" রচনা করেন। তাঁর আগে বৃহত্তর কোন রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ছিলনা এবং ছোট ছোট 'নগর রাষ্ট্র' সমূহ শাষনের কোন রুপরেখাও ছিলনা। তাঁর মৃত্যুর পর কিভাবে পরবর্তী প্রজম্ম ইসলাম ধর্মের প্রসার, ইসলামী সাম্রাজ্য বিস্তার ও শাষন করবেন--"তাঁর রুপরেখাও তাঁর ওফাৎ এর আগে সর্বশেষ মসুলমানদের বৃহত্তর মিলনমেলা "হজ্বের অনুষ্ঠানে" ভাষনের মাধ্যমে দিকনির্দেশনা দিয়ে যান।" তাঁর আগে কোন রাষ্ট্র শাষকের ভাষন দেয়ার রীতিও প্রচলন ছিলনা। তাঁর শেষ ভাষনকে পরবর্তীতে মানব জাতির ইতিহাসে 'সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ভাষন' স্বীকৃতি দিয়ে "বিদায়ী হজ্বে''র ভাষন হিসেবে নামকরন করা হয়েছে।
নবী (স:) রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রবর্তন করে শাষক নিয়োগের রীতিও প্রচলন করে গেছেন। তৎসময়ের অভিজ্ঞ সাহাবীদের বেশীরভাগ 'সাহাবী'র মতামতের মাধ্যমে শাষনকর্তা নিয়োগের বিধান তিনিই দেখিয়েছেন।পরবর্তীতে খলিফাদের শাষনে নীতিটি পুর্ণাঙ্গ অনুসরনকল্পে সমাজের সর্বস্তরের অভিজ্ঞ সাহাবীদের বৈঠকে বেশীরভাগ 'সাহাবী'র মতামতের ভিত্তিতে" সকল প্রকার বিতর্ক এড়িয়ে 'খলিফা' নির্বাচন সম্পন্ন করা হয়েছিল। এইরুপ আধুনিক নেতা নির্বাচনের পদ্ধতি ও রীতিটি সর্বযুগের শ্রেষ্ঠ রীতিরুপে "আল্লাহ নবীজির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন"।
নবীজির জীবিতবস্থায় মানব সমাজের দৈনন্দিন উন্নতি ও সভ্যতার ক্রমবিকাশের ফলে উদ্ভোত নতুন নতুন সমস্যা ও জটিলতা নিরসন কল্পে নির্দিষ্ট রুপরেখাও বলে দিয়েছেন। ইসলাম ধর্ম যেহেতু সর্বযুগের শ্রেষ্ঠধর্ম, বিশ্বমানবতার শান্তির ধর্ম এবং ইসলামী শাষন 'সার্বজনীন শাষন' সেহেতু যুগের সাথে তালমিলিয়ে আল-কোরানের নির্দেশনা অমলিন রেখে, হাদিসের আলোকে পরিবর্তন, পরিবর্ধন, আধুনিক, যুগোপযোগী করার লক্ষে সাহাবীদের পরবর্তী তাবেঈন-তাবেতাবেঈন সর্বশেষ ধর্মীয় জ্ঞানে অভিজ্ঞ আলেম উলামাদের উপর দায়িত্ব দিয়ে গেছেন।
যেহেতু ইসলাম সার্বজনীন ধর্ম এবং আল-কোরান সমগ্র মানব জাতির কল্যানে আল্লাহ প্রেরন করেছিলেন সেহেতু নবীজির প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রে "রাষ্ট্র ধর্ম" ছিলনা। যেহেতু নবীজির বিদায়ী হজ্বের ভাষন ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠিবেদে সমগ্র মানব জাতির উদ্দেশ্যে প্রদত্ত ভাষন ছিল সেহেতু ঐ ভাষনের প্রারম্ভে কোরানের পবিত্র আয়াত 'বিছমিল্লাহ' বলে নবীজি শুরু করেননি।আল্লাহ যেহেতু তাঁর কোরান সমগ্র মানব জাতির কল্যানে এবং ইসলাম ধর্মে ইমান আনার জন্যে সমগ্র মানব জাতির উদ্দেশ্যে আহব্বান রেখেছেন সেহেতু নবীজির সকল কর্মকান্ড "আল্লাহ' সমগ্র মানব জাতির নিকট অ-বিতর্কিত রেখেছেন।"
আল্লাহ তাঁর কোরানে মানব জাতি এবং জ্বিনের বিচার করবেন উল্লেখ করায় নবীজি ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেদ করেছেন।--"সঙ্গে স্ব-স্ব ধর্ম পালনের স্বাধীনতা দিয়েছেন"। তিনি সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমানদের শাষনে সংখ্যালুঘু অন্যান্ন ধর্মের নাগরীকদের সুরক্ষার নীতিও সুস্পষ্টভাবে "নীজের শাষনে' উদাহরন রেখেছেন এবং পরবর্তীতে যারা শষন করবেন তাঁদেরকেও অনুসরন করার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসলামের সৌন্দয্য, ভাতৃত্ববোধ, মহত্ব, সাম্যের রীতি যতদিন অব্যাহত ছিল মসুলমানদের বিজয় ততদিন আল্লাহ অব্যাহত রেখেছিলেন। ইসলামের অভ্যন্তরে "অতিধার্মীক" নবীজির জীবিতবস্থায় বহি:স্কৃত করা খারেজদের হাতে একে একে তিন খলীফার মর্মান্তিক মৃত্যুর পর ইসলামের অগ্রযাত্রা থেমে যায়। সার্বজনীন ইসলামের অনুসারী মসুলমান এবং নবীজির নির্দেশ অমান্যকারি "কেন্দ্রিভুত ইসলামের অনুসারী"দের অভ্যন্তরীন কোন্দলে নবীজির আদরের দৌহিত্র "হাসান এবং হুসাইন"কেও কারবালার ময়দানে জীবন দিতে হয়েছিল।
অতিধার্মীকগন নবীজির শাষনের "সংখ্যা গরীষ্টের মতামতে নির্বাচিত শাষন প্রথা খেলাফত" বাতিল করে বংশ পরস্পরায় শাষন ব্যবস্থা "বাদশাহী" শাষন কায়েম করেন। সার্বজনীন "ইসলামী শাষন" খেলাফতের শাষনকে শুধুমাত্র মুসলিম শাষন "বাদশাহী শাষনে" রুপান্তরীত করে ইসলামের সৌন্দয্যহানী ঘটানোর প্রক্রিয়া তখনই চালু করেন। পরবর্তীতে সেই শাষনব্যবস্থাই আরো বেশী শাষক, শোষক, দখলবাজীর রুপ ধারন করে "সম্রাট শাষন" নাম ধারন করে ভারতীয় উপমহাদেশ পয্যন্ত বিস্তৃতি ঘটে। একের পর এক জনপথ করায়ত্ত হয়েছিল ঠিকই কিন্তু ইসলাম ধর্মের প্রচার, প্রসার বিস্তৃতি আর ঘটেনি। সংখ্যাতত্বের দিকে নজর দিলে যে কোন সচেতন ধার্মীক ব্যাক্তি আমার কথার যুক্তিকতা খুঁজে পাবেন--আশা করি।
আমাদের অত্র ভারতীয় উপমহাদেশেও 'বাদশাহী দখলবাজী শাষনে'র আগে 'খেলাফতের শাষনামলে' "সূফি সাধক, দরবেশ" গনের আগমনে যতটুকু ইসলাম ধর্মের বিস্তৃতি ঘটেছিল পরবর্তী "বাদশাহী, সম্রাটি" শাষনামলে ইঞ্চি পরিমানেও বিস্তৃতি ঘটেনি। বরঞ্চ শাষনকায্য নি:স্কন্টক রাখার উদ্দেশ্যে ইসলামের বিপরীতে অতিধার্মীক শাষক কতৃক প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে "দীন- ই- এলাহী" ধর্মের প্রবর্তন করতেও দেখা যায় (ইতিহাসে)। অতিধার্মীকগন লেবাজের গুনে সাধারন মসুলমানদের বিভ্রান্ত করে "সার্বজনীন শান্তি, সাম্যের ইসলামী খেলাফতের শাষনের বিপরীতে জোর, জুলুম, দখল, লুটপাট, শোষন, শাষনের "বাদশাহী, সম্রাটি" ইসলামী শাষনের প্রবর্তন করে ইসলামকে করেছে বিশ্বময় প্রশ্নবিদ্ধ, অগ্রযাত্রা দিয়েছে থামিয়ে, হিংসা হানাহানী দিয়েছে বাড়িয়ে।
লেবাজী ইসলাম ধর্মের ধারাবাহিকতা থেকে ইসলাম রক্ষিত না হয়ে আজকের দিনে আরো ব্যাপক শক্তি সঞ্চয় করে বহুগুন প্রভাব নিয়ে তাঁরা আবির্ভুত হয়েছে। অবশ্য নবী (স:) তাঁর জীবিতবস্থায় লেবাজী ধর্মধারী, অতিধার্মীক ও তাঁদের চেনার উপায় এবং কি প্রভাব বিস্তারের লক্ষন সম্মন্ধে মসুলমানদের সতর্ক করে দিয়ে গেছেন। লেবাজধারী আলেমগন তাঁদের আচার, আচরন, ধর্ম পালনের আনুগত্যতা দিয়ে খেলাফত যুগেও মসুলমানদের বিভ্রান্ত করে খলিফা হত্যা ও নবীজির বংশবিনাশ করতে পেরেছিল-বর্তমানেও সেই ধারাই তাঁরা অক্ষুন্ন রেখে ইমানদার সাধারন মসুলমানদের বিভ্রান্ত করে ইসলামকে অতিরঞ্জন, নৈরাশ্যবাদের অতলতলে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। এরা সম্পূর্ণ আবু লাহাব, মোয়াবিয়া, ইয়াজিদের পথ অনুসরন করছে কিনা প্রকৃত আলেম সমাজের ভেবে দেখা প্রয়োজন।
বর্তমান বিশ্বের ইসলাম ধর্মের নিয়ন্ত্রন এই শ্রেনীর হাতেই রয়েছে অনুমেয়। সৌদী আরব সহ অন্য কোন মুসলিম প্রধান দেশেই নবীজির শাষনামলের রীতিনীতি অনুসৃত হওয়ার উদাহরন দেখা যায়না। সৌদী আরব বহুকাল আগে থেকে আল্লাহ এবং তাঁর নবীর বিরুধী "বাদশাহী শাষন" অব্যাহত রয়েছে। মিশরে দাঁড়ি রাখার উপর কড়া নিষেদাজ্ঞা জারি আছে এবং কি নবীজির আচার আচরন অনুসরনে প্রচুর ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়। ইরানে যদিও আপাত: দৃষ্টে ইসলামী শাষন নিয়ে একশ্রেনী গর্ব অনুভব করতে দেখা যায় তাঁরা মুলত: ইসলাম ধর্মের বিকৃতকারি, সর্বনাশকারি। ইরানের শাষক শ্রেনী শিয়া ধর্মালম্বি এবং শিয়া মতবাদের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনা করেন।ইরাকে ইহুদী শাষক আমেরিকা কতৃক সাদ্দাম সরকারকে উৎখাতের মাধ্যমে ইসলামী শাষনের যৎকিঞ্চিত ধারা লক্ষনীয় ছিল তাও তিরোহিত করেছেন।
পাশ্চাত্যের ইহুদী, খৃষ্টানগন "ইসলামের সৌন্দয্যের এককনা মাত্র' "নেতা নির্বাচনের পদ্ধতি"কে আর এককদম বাড়িয়ে সর্বস্তরের জনগনের মাধ্যমে নির্বাচিত প্রতিনীধি কতৃক নির্বাচিত পদ্ধতি "গনতন্ত্র" নাম দিয়ে শান্তি, সমৃদ্ধি, শৌয্য, বিয্য, আধুনিক, বিজ্ঞানভিত্তিক সুখী সমৃদ্ধ দেশের অধিকারি হয়েছেন। সমাজতন্ত্রীরা নবী (স:) এর শুধুমাত্র "নেতা নির্বাচনের কেন্দ্রিকতা"কে গ্রহন করে কালজয়ী থিসিসের ধারক বাহক হয়েছেন--"চীন, সৌভিয়েত সহ বিশ্বের অর্ধেক শাষন করার কৃতিত্বের অধিকারি হয়েছেন"।
মসুলমানদের হাতে নবীজির সমগ্র জীবন দর্শন, আল-কোরান, নবীজির শাষনকালের দৃষ্টান্ত, নেতা নির্বাচনের "খেলাফতের" সমগ্র পদ্ধতি, শাষন করার নীতি "মদীনা সনদ', সংখ্যালুঘু ধর্মীয় গোষ্টি রক্ষায় "বিদায় হজ্বের ভাষন' থাকা সত্বেও বিশ্বের কোথাও ইঞ্চি পরিমান শাষন করার জায়গা নেই। এতেই বুঝা যায় প্রকৃত ইসলাম ধর্মের অনুসারিদের হাতে ইসলাম নেই। রাষ্ট্র শাষনে নবীজির পথ খেলাফত তিরোহিত হওয়ার পর ইসলামের প্রচার, প্রসার, বিস্তৃতি রুদ্ধ হয়ে গেছে এবং সেই রুদ্ধতা আজও অব্যাহত ও দৃশ্যমান।
মুসলিমগন খলীফা শাষনের পর হতে বিশ্বময় ইহুদী নাসারাদের হাতে অপমান, অপদস্ত, রাজ্যহারা, রাষ্ট্রহারা হওয়ার ধারাবাহিকতা থেকে রক্ষা পায়নি। ইহা আল্লাহ প্রদত্ত শাস্তি কিনা আলেম সমাজের ভেবে দেখার সময় হয়েছে। নচেৎ খেলাফতের শাষনামলের "অর্ধ পৃথিবীর শাষন" আজকের আধুনিক, বিজ্ঞানভিত্তিক, গনতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় বিশ্বময় কোথাও ধুলিকনায়ও অবশিষ্ট নেই কেন--"তাঁর ব্যাখ্যা আলেম ওলামাদের দেয়া প্রয়োজন।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু খেলাফত, মদীনা সনদের সমগ্র গ্রহন করে বাকশাল" গড়ে তুলেও দেশ শাষন করতে পারেননি। খেলাফতের শাষন-- "কোরান, হাদিসকে অক্ষুন্ন রেখে এবং সেই আলোকে মসুলমানদের একক শাষন অব্যাহত রাখার নিমিত্তে বিভিন্ন কর্মে নিয়োজিত ধর্মীয় জ্ঞানী ব্যাক্তিদের সংখ্যা গরীষ্টের মতামতে নেতা নির্বাচিত হওয়ার বিধান ছিল।
"বাকশালেও সংবিধানের মূলনীতি অক্ষুন্ন রেখে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিভিন্ন শ্রেনী পেশার নির্বাচিত প্রতিনীধি কতৃক সংখ্যা গরিষ্টের ভোটে নেতা নির্বাচনের বিধান ছিল"(বর্তমান নির্বাচিত জেলাপরিষদ পদ্ধতির কাছাকাছি)। যাতে কোন প্রকারেই স্বাধীনতা বিরুধী, অশুভ শক্তি নির্বাচিত হতে না পারে তজ্জন্য নির্দিষ্ট নির্বাচিত প্রতিনীধি পদ্ধতি গ্রহন করা হয়েছিল। দেশে বিরাজমান হিংসা হানাহানী, হত্যা, গুম, লুটতরাজ বন্ধ করে---"শান্তি, শৃংখলা, উন্নতি, সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষে সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে একক 'জাতীয় দলের' অন্তভূক্ত করার "অভিনব রাষ্ট্র শাষন পদ্ধতির নাম "বাকশাল"।
অন্যদিকে--ইসলামী শাষনকে সার্বজনীন, সাম্যের, শান্তির শাষনে রুপান্তরে এবং ইসলামী শাষনের অভ্যন্তরে অন্য জাতিগোষ্টির অনুপ্রবেশ ঠেকানোর লক্ষে শুধুমাত্র ইসলামী জ্ঞানসম্পন্ন নির্দিষ্ট ব্যাক্তিদের নির্বাচনে সংখ্যা গরিষ্টের অভিমতে খেলাফতের উত্তরাধিকার মনোনীত করার বিধান ছিল।
পার্থক্য শুধুমাত্র একটি মনুষ্য সৃষ্টি "বাংলাদেশের বাঙ্গালী জাতির কল্যানে" অন্যটি নবীজির সৃষ্টি "বিশ্বমানবতার কল্যানে সৃজিত ছিল।"বাঙ্গালী জাতি দৃশ্যত নিজেদের পদ্ধতিও মানতে রাজী নয় নবী (স:) এর শাষন ব্যবস্থার প্রতিও আগ্রহি নয়।
অশুভ শক্তির অব্যাহত উত্থানে আমরা না পারছি নিজেদের উদ্ভাবীত রাষ্ট্র পরিচালনার ব্যাবস্থা গড়ে তুলতে না পারছি মহান ধর্ম ইসলামের আলোকে রাষ্ট্র পরিচালনায় সহযোগীতা দিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে অনন্তকালের বাসস্থানে সুখে, শান্তিতে থাকার নিশ্চয়তার ধারে কাছে ঘেঁষতে।আমরা বাঙ্গালী মুসলিম সমাজ খোদাবিরুদ্ধ সংখ্যালুঘু নিয্যাতন এবং ইহুদী আবিস্কৃত "জোর যার রাজ্য তার" নীতি তথাকথিত পুতিগন্ধময় রাষ্ট্রব্যবস্থা "গনতন্ত্রের" প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনের মাধ্যমে নীজ জাতিকে নিয়ে যাচ্ছি অন্ধকারে, ধর্মকে করছি অপমান, অপদস্ত, নবীজিকে দিচ্ছি প্রতিনিয়ত দু:খ্য, আল্লহকে করছি নারাজ।"
ruhulaminmujumder27@gmail.com
(রুহুল আমিন মজুমদার)
মানব সমাজের সভ্যতা বিকাশের প্রথমার্ধে ইসলাম ধর্মের আবির্ভাব ঘটে। যখন মানব সমাজের প্রত্যহিক চাহিদা পূরনার্থ্যে চারিদিকে হিংসা, হানাহানি, জাতি গোষ্টিগত বিরোধ, একে অপরের উপর প্রধান্য বিস্তারের লক্ষে এক গোষ্টি অন্য গোষ্টিকে নি:শেষ করে দেয়ার চেষ্টারত: থাকায় চারদিকে ঘোর অন্ধকার নেমে এসেছিল ঠিক তখনই আল্লাহ তাঁর মনোনীত ধর্ম গ্রন্থ আল-কোরান নবী করিম (স:) এর মাধ্যমে সমগ্র মানব জাতির কল্যানে পৃথিবীতে প্রেরন করেন। আল্লাহ প্রেরীত আল-কোরান এবং নবী (স:) এর উপর বিশ্বাস স্থাপন কারীগন ইসলাম ধর্মের অনুসারি হিসেবে পরিচিত হন। আল্লাহ তাঁর প্রেরিত কিতাব সমগ্র মানব সমাজের কল্যানে এবং ইসলামকে সমগ্র মানব জাতির অনুসরনীয় করে সার্বজনীনতা ও সাম্যের ধর্মরুপে স্বীকৃতি প্রদান করেন।
মহান আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী নবীকরীম (স:) এর জীবনাচারকে অনুকরনীয় করে রাখার উদ্দেশ্যে সকল গুনাবলী তাঁর মধ্যে অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে মহামনবে রুপান্তর করেন। তিনি যেমন আল্লাহ প্রেরীত কোরানের ধারক তেমনি উহার বিস্তারের জন্যে প্রচারক, যেমনি নতুন সমাজ সৃষ্টিকারক তেমনি নতুন সমাজের শাষক, যেমন আল-কোরানের আলোকে রচিত হাদিসের মাধ্যমে কোরান এবং মানব সমাজে নিত্যনতুন সমস্যার সমাধান দিয়ে ধর্ম সংস্কারক হিসেবেও অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করে ছিলেন। তখনকার যুগে এমন কোন বিষয় ছিলনা যাহা ঘটেনি এবং নবী (স:)কোরানের আলোকে সমাধান দেননি।
তাঁর সৃষ্ট ইসলামী রাষ্ট্রের শাষনকর্তা হয়ে তিনিই প্রথম কোরানের আলোকে রাষ্ট্র শাষন ব্যবস্থা "মদিনা সনদ" রচনা করেন। তাঁর আগে বৃহত্তর কোন রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ছিলনা এবং ছোট ছোট 'নগর রাষ্ট্র' সমূহ শাষনের কোন রুপরেখাও ছিলনা। তাঁর মৃত্যুর পর কিভাবে পরবর্তী প্রজম্ম ইসলাম ধর্মের প্রসার, ইসলামী সাম্রাজ্য বিস্তার ও শাষন করবেন--"তাঁর রুপরেখাও তাঁর ওফাৎ এর আগে সর্বশেষ মসুলমানদের বৃহত্তর মিলনমেলা "হজ্বের অনুষ্ঠানে" ভাষনের মাধ্যমে দিকনির্দেশনা দিয়ে যান।" তাঁর আগে কোন রাষ্ট্র শাষকের ভাষন দেয়ার রীতিও প্রচলন ছিলনা। তাঁর শেষ ভাষনকে পরবর্তীতে মানব জাতির ইতিহাসে 'সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ভাষন' স্বীকৃতি দিয়ে "বিদায়ী হজ্বে''র ভাষন হিসেবে নামকরন করা হয়েছে।
নবী (স:) রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রবর্তন করে শাষক নিয়োগের রীতিও প্রচলন করে গেছেন। তৎসময়ের অভিজ্ঞ সাহাবীদের বেশীরভাগ 'সাহাবী'র মতামতের মাধ্যমে শাষনকর্তা নিয়োগের বিধান তিনিই দেখিয়েছেন।পরবর্তীতে খলিফাদের শাষনে নীতিটি পুর্ণাঙ্গ অনুসরনকল্পে সমাজের সর্বস্তরের অভিজ্ঞ সাহাবীদের বৈঠকে বেশীরভাগ 'সাহাবী'র মতামতের ভিত্তিতে" সকল প্রকার বিতর্ক এড়িয়ে 'খলিফা' নির্বাচন সম্পন্ন করা হয়েছিল। এইরুপ আধুনিক নেতা নির্বাচনের পদ্ধতি ও রীতিটি সর্বযুগের শ্রেষ্ঠ রীতিরুপে "আল্লাহ নবীজির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন"।
নবীজির জীবিতবস্থায় মানব সমাজের দৈনন্দিন উন্নতি ও সভ্যতার ক্রমবিকাশের ফলে উদ্ভোত নতুন নতুন সমস্যা ও জটিলতা নিরসন কল্পে নির্দিষ্ট রুপরেখাও বলে দিয়েছেন। ইসলাম ধর্ম যেহেতু সর্বযুগের শ্রেষ্ঠধর্ম, বিশ্বমানবতার শান্তির ধর্ম এবং ইসলামী শাষন 'সার্বজনীন শাষন' সেহেতু যুগের সাথে তালমিলিয়ে আল-কোরানের নির্দেশনা অমলিন রেখে, হাদিসের আলোকে পরিবর্তন, পরিবর্ধন, আধুনিক, যুগোপযোগী করার লক্ষে সাহাবীদের পরবর্তী তাবেঈন-তাবেতাবেঈন সর্বশেষ ধর্মীয় জ্ঞানে অভিজ্ঞ আলেম উলামাদের উপর দায়িত্ব দিয়ে গেছেন।
যেহেতু ইসলাম সার্বজনীন ধর্ম এবং আল-কোরান সমগ্র মানব জাতির কল্যানে আল্লাহ প্রেরন করেছিলেন সেহেতু নবীজির প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রে "রাষ্ট্র ধর্ম" ছিলনা। যেহেতু নবীজির বিদায়ী হজ্বের ভাষন ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠিবেদে সমগ্র মানব জাতির উদ্দেশ্যে প্রদত্ত ভাষন ছিল সেহেতু ঐ ভাষনের প্রারম্ভে কোরানের পবিত্র আয়াত 'বিছমিল্লাহ' বলে নবীজি শুরু করেননি।আল্লাহ যেহেতু তাঁর কোরান সমগ্র মানব জাতির কল্যানে এবং ইসলাম ধর্মে ইমান আনার জন্যে সমগ্র মানব জাতির উদ্দেশ্যে আহব্বান রেখেছেন সেহেতু নবীজির সকল কর্মকান্ড "আল্লাহ' সমগ্র মানব জাতির নিকট অ-বিতর্কিত রেখেছেন।"
আল্লাহ তাঁর কোরানে মানব জাতি এবং জ্বিনের বিচার করবেন উল্লেখ করায় নবীজি ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেদ করেছেন।--"সঙ্গে স্ব-স্ব ধর্ম পালনের স্বাধীনতা দিয়েছেন"। তিনি সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমানদের শাষনে সংখ্যালুঘু অন্যান্ন ধর্মের নাগরীকদের সুরক্ষার নীতিও সুস্পষ্টভাবে "নীজের শাষনে' উদাহরন রেখেছেন এবং পরবর্তীতে যারা শষন করবেন তাঁদেরকেও অনুসরন করার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসলামের সৌন্দয্য, ভাতৃত্ববোধ, মহত্ব, সাম্যের রীতি যতদিন অব্যাহত ছিল মসুলমানদের বিজয় ততদিন আল্লাহ অব্যাহত রেখেছিলেন। ইসলামের অভ্যন্তরে "অতিধার্মীক" নবীজির জীবিতবস্থায় বহি:স্কৃত করা খারেজদের হাতে একে একে তিন খলীফার মর্মান্তিক মৃত্যুর পর ইসলামের অগ্রযাত্রা থেমে যায়। সার্বজনীন ইসলামের অনুসারী মসুলমান এবং নবীজির নির্দেশ অমান্যকারি "কেন্দ্রিভুত ইসলামের অনুসারী"দের অভ্যন্তরীন কোন্দলে নবীজির আদরের দৌহিত্র "হাসান এবং হুসাইন"কেও কারবালার ময়দানে জীবন দিতে হয়েছিল।
অতিধার্মীকগন নবীজির শাষনের "সংখ্যা গরীষ্টের মতামতে নির্বাচিত শাষন প্রথা খেলাফত" বাতিল করে বংশ পরস্পরায় শাষন ব্যবস্থা "বাদশাহী" শাষন কায়েম করেন। সার্বজনীন "ইসলামী শাষন" খেলাফতের শাষনকে শুধুমাত্র মুসলিম শাষন "বাদশাহী শাষনে" রুপান্তরীত করে ইসলামের সৌন্দয্যহানী ঘটানোর প্রক্রিয়া তখনই চালু করেন। পরবর্তীতে সেই শাষনব্যবস্থাই আরো বেশী শাষক, শোষক, দখলবাজীর রুপ ধারন করে "সম্রাট শাষন" নাম ধারন করে ভারতীয় উপমহাদেশ পয্যন্ত বিস্তৃতি ঘটে। একের পর এক জনপথ করায়ত্ত হয়েছিল ঠিকই কিন্তু ইসলাম ধর্মের প্রচার, প্রসার বিস্তৃতি আর ঘটেনি। সংখ্যাতত্বের দিকে নজর দিলে যে কোন সচেতন ধার্মীক ব্যাক্তি আমার কথার যুক্তিকতা খুঁজে পাবেন--আশা করি।
আমাদের অত্র ভারতীয় উপমহাদেশেও 'বাদশাহী দখলবাজী শাষনে'র আগে 'খেলাফতের শাষনামলে' "সূফি সাধক, দরবেশ" গনের আগমনে যতটুকু ইসলাম ধর্মের বিস্তৃতি ঘটেছিল পরবর্তী "বাদশাহী, সম্রাটি" শাষনামলে ইঞ্চি পরিমানেও বিস্তৃতি ঘটেনি। বরঞ্চ শাষনকায্য নি:স্কন্টক রাখার উদ্দেশ্যে ইসলামের বিপরীতে অতিধার্মীক শাষক কতৃক প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে "দীন- ই- এলাহী" ধর্মের প্রবর্তন করতেও দেখা যায় (ইতিহাসে)। অতিধার্মীকগন লেবাজের গুনে সাধারন মসুলমানদের বিভ্রান্ত করে "সার্বজনীন শান্তি, সাম্যের ইসলামী খেলাফতের শাষনের বিপরীতে জোর, জুলুম, দখল, লুটপাট, শোষন, শাষনের "বাদশাহী, সম্রাটি" ইসলামী শাষনের প্রবর্তন করে ইসলামকে করেছে বিশ্বময় প্রশ্নবিদ্ধ, অগ্রযাত্রা দিয়েছে থামিয়ে, হিংসা হানাহানী দিয়েছে বাড়িয়ে।
লেবাজী ইসলাম ধর্মের ধারাবাহিকতা থেকে ইসলাম রক্ষিত না হয়ে আজকের দিনে আরো ব্যাপক শক্তি সঞ্চয় করে বহুগুন প্রভাব নিয়ে তাঁরা আবির্ভুত হয়েছে। অবশ্য নবী (স:) তাঁর জীবিতবস্থায় লেবাজী ধর্মধারী, অতিধার্মীক ও তাঁদের চেনার উপায় এবং কি প্রভাব বিস্তারের লক্ষন সম্মন্ধে মসুলমানদের সতর্ক করে দিয়ে গেছেন। লেবাজধারী আলেমগন তাঁদের আচার, আচরন, ধর্ম পালনের আনুগত্যতা দিয়ে খেলাফত যুগেও মসুলমানদের বিভ্রান্ত করে খলিফা হত্যা ও নবীজির বংশবিনাশ করতে পেরেছিল-বর্তমানেও সেই ধারাই তাঁরা অক্ষুন্ন রেখে ইমানদার সাধারন মসুলমানদের বিভ্রান্ত করে ইসলামকে অতিরঞ্জন, নৈরাশ্যবাদের অতলতলে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। এরা সম্পূর্ণ আবু লাহাব, মোয়াবিয়া, ইয়াজিদের পথ অনুসরন করছে কিনা প্রকৃত আলেম সমাজের ভেবে দেখা প্রয়োজন।
বর্তমান বিশ্বের ইসলাম ধর্মের নিয়ন্ত্রন এই শ্রেনীর হাতেই রয়েছে অনুমেয়। সৌদী আরব সহ অন্য কোন মুসলিম প্রধান দেশেই নবীজির শাষনামলের রীতিনীতি অনুসৃত হওয়ার উদাহরন দেখা যায়না। সৌদী আরব বহুকাল আগে থেকে আল্লাহ এবং তাঁর নবীর বিরুধী "বাদশাহী শাষন" অব্যাহত রয়েছে। মিশরে দাঁড়ি রাখার উপর কড়া নিষেদাজ্ঞা জারি আছে এবং কি নবীজির আচার আচরন অনুসরনে প্রচুর ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়। ইরানে যদিও আপাত: দৃষ্টে ইসলামী শাষন নিয়ে একশ্রেনী গর্ব অনুভব করতে দেখা যায় তাঁরা মুলত: ইসলাম ধর্মের বিকৃতকারি, সর্বনাশকারি। ইরানের শাষক শ্রেনী শিয়া ধর্মালম্বি এবং শিয়া মতবাদের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনা করেন।ইরাকে ইহুদী শাষক আমেরিকা কতৃক সাদ্দাম সরকারকে উৎখাতের মাধ্যমে ইসলামী শাষনের যৎকিঞ্চিত ধারা লক্ষনীয় ছিল তাও তিরোহিত করেছেন।
পাশ্চাত্যের ইহুদী, খৃষ্টানগন "ইসলামের সৌন্দয্যের এককনা মাত্র' "নেতা নির্বাচনের পদ্ধতি"কে আর এককদম বাড়িয়ে সর্বস্তরের জনগনের মাধ্যমে নির্বাচিত প্রতিনীধি কতৃক নির্বাচিত পদ্ধতি "গনতন্ত্র" নাম দিয়ে শান্তি, সমৃদ্ধি, শৌয্য, বিয্য, আধুনিক, বিজ্ঞানভিত্তিক সুখী সমৃদ্ধ দেশের অধিকারি হয়েছেন। সমাজতন্ত্রীরা নবী (স:) এর শুধুমাত্র "নেতা নির্বাচনের কেন্দ্রিকতা"কে গ্রহন করে কালজয়ী থিসিসের ধারক বাহক হয়েছেন--"চীন, সৌভিয়েত সহ বিশ্বের অর্ধেক শাষন করার কৃতিত্বের অধিকারি হয়েছেন"।
মসুলমানদের হাতে নবীজির সমগ্র জীবন দর্শন, আল-কোরান, নবীজির শাষনকালের দৃষ্টান্ত, নেতা নির্বাচনের "খেলাফতের" সমগ্র পদ্ধতি, শাষন করার নীতি "মদীনা সনদ', সংখ্যালুঘু ধর্মীয় গোষ্টি রক্ষায় "বিদায় হজ্বের ভাষন' থাকা সত্বেও বিশ্বের কোথাও ইঞ্চি পরিমান শাষন করার জায়গা নেই। এতেই বুঝা যায় প্রকৃত ইসলাম ধর্মের অনুসারিদের হাতে ইসলাম নেই। রাষ্ট্র শাষনে নবীজির পথ খেলাফত তিরোহিত হওয়ার পর ইসলামের প্রচার, প্রসার, বিস্তৃতি রুদ্ধ হয়ে গেছে এবং সেই রুদ্ধতা আজও অব্যাহত ও দৃশ্যমান।
মুসলিমগন খলীফা শাষনের পর হতে বিশ্বময় ইহুদী নাসারাদের হাতে অপমান, অপদস্ত, রাজ্যহারা, রাষ্ট্রহারা হওয়ার ধারাবাহিকতা থেকে রক্ষা পায়নি। ইহা আল্লাহ প্রদত্ত শাস্তি কিনা আলেম সমাজের ভেবে দেখার সময় হয়েছে। নচেৎ খেলাফতের শাষনামলের "অর্ধ পৃথিবীর শাষন" আজকের আধুনিক, বিজ্ঞানভিত্তিক, গনতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় বিশ্বময় কোথাও ধুলিকনায়ও অবশিষ্ট নেই কেন--"তাঁর ব্যাখ্যা আলেম ওলামাদের দেয়া প্রয়োজন।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু খেলাফত, মদীনা সনদের সমগ্র গ্রহন করে বাকশাল" গড়ে তুলেও দেশ শাষন করতে পারেননি। খেলাফতের শাষন-- "কোরান, হাদিসকে অক্ষুন্ন রেখে এবং সেই আলোকে মসুলমানদের একক শাষন অব্যাহত রাখার নিমিত্তে বিভিন্ন কর্মে নিয়োজিত ধর্মীয় জ্ঞানী ব্যাক্তিদের সংখ্যা গরীষ্টের মতামতে নেতা নির্বাচিত হওয়ার বিধান ছিল।
"বাকশালেও সংবিধানের মূলনীতি অক্ষুন্ন রেখে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিভিন্ন শ্রেনী পেশার নির্বাচিত প্রতিনীধি কতৃক সংখ্যা গরিষ্টের ভোটে নেতা নির্বাচনের বিধান ছিল"(বর্তমান নির্বাচিত জেলাপরিষদ পদ্ধতির কাছাকাছি)। যাতে কোন প্রকারেই স্বাধীনতা বিরুধী, অশুভ শক্তি নির্বাচিত হতে না পারে তজ্জন্য নির্দিষ্ট নির্বাচিত প্রতিনীধি পদ্ধতি গ্রহন করা হয়েছিল। দেশে বিরাজমান হিংসা হানাহানী, হত্যা, গুম, লুটতরাজ বন্ধ করে---"শান্তি, শৃংখলা, উন্নতি, সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষে সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে একক 'জাতীয় দলের' অন্তভূক্ত করার "অভিনব রাষ্ট্র শাষন পদ্ধতির নাম "বাকশাল"।
অন্যদিকে--ইসলামী শাষনকে সার্বজনীন, সাম্যের, শান্তির শাষনে রুপান্তরে এবং ইসলামী শাষনের অভ্যন্তরে অন্য জাতিগোষ্টির অনুপ্রবেশ ঠেকানোর লক্ষে শুধুমাত্র ইসলামী জ্ঞানসম্পন্ন নির্দিষ্ট ব্যাক্তিদের নির্বাচনে সংখ্যা গরিষ্টের অভিমতে খেলাফতের উত্তরাধিকার মনোনীত করার বিধান ছিল।
পার্থক্য শুধুমাত্র একটি মনুষ্য সৃষ্টি "বাংলাদেশের বাঙ্গালী জাতির কল্যানে" অন্যটি নবীজির সৃষ্টি "বিশ্বমানবতার কল্যানে সৃজিত ছিল।"বাঙ্গালী জাতি দৃশ্যত নিজেদের পদ্ধতিও মানতে রাজী নয় নবী (স:) এর শাষন ব্যবস্থার প্রতিও আগ্রহি নয়।
অশুভ শক্তির অব্যাহত উত্থানে আমরা না পারছি নিজেদের উদ্ভাবীত রাষ্ট্র পরিচালনার ব্যাবস্থা গড়ে তুলতে না পারছি মহান ধর্ম ইসলামের আলোকে রাষ্ট্র পরিচালনায় সহযোগীতা দিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে অনন্তকালের বাসস্থানে সুখে, শান্তিতে থাকার নিশ্চয়তার ধারে কাছে ঘেঁষতে।আমরা বাঙ্গালী মুসলিম সমাজ খোদাবিরুদ্ধ সংখ্যালুঘু নিয্যাতন এবং ইহুদী আবিস্কৃত "জোর যার রাজ্য তার" নীতি তথাকথিত পুতিগন্ধময় রাষ্ট্রব্যবস্থা "গনতন্ত্রের" প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনের মাধ্যমে নীজ জাতিকে নিয়ে যাচ্ছি অন্ধকারে, ধর্মকে করছি অপমান, অপদস্ত, নবীজিকে দিচ্ছি প্রতিনিয়ত দু:খ্য, আল্লহকে করছি নারাজ।"
ruhulaminmujumder27@gmail.com
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন