শেখ হাসিনা সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গিকার পূরণ।
(রুহুল আমিন মজুমদার)

    বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের এবারের সম্মেলনে গুনগত পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। গনতন্ত্রায়নের ধারাকে রাষ্ট্রের সর্বত্র অনুশীলন করার সময় এখনই।রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে কালশক্তি সমুহ গনতন্ত্রের অভিযাত্রাকে বিঘ্নিত করার অপচেষ্টা আমরা লক্ষ করেছি এর আগেও।যখনই বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ শাষন ক্ষমতা হাতে নিয়েছে তখনই অশুভ শক্তি সমুহ বিনা নোটিশে দলবদ্ধ হয়ে দেশকে অস্থীতিশীল করার চেষ্টা করেছে।সফলও হয়েছে বার কয়েক।
 নারীদের অর্জিত সম্পদের মালিকানা বিষয়ক আইন প্রনয়নের উদ্যোগকে কোরান ও সুন্নাহ বিরুধী আখ্যা দেয়। ২০১৪/১৫ ইং সালে অশুভ শক্তি সমুহ আইনের ধরন তলিয়ে না দেখে একজোটে বিনা অজুহাতে কোরা'আন ও সুন্নাহ বিরুধী আইন প্রনয়ন করা থেকে বিরত রাখতে কিভাবে মধ্যযুগীয় তান্ডব চালিয়েছিল সকলের স্মরণে থাকার কথা।"কথিত আইনটি কি, কেমন তাঁর ধরন, ইসলামের রীতিনীতির কোন পয্যায়ে কতটুকু তাঁর ব্যবধান  অদ্যাবদি অশুভশক্তির পক্ষ থেকে তাঁর কোন ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি। উক্ত আইনটি বাতিল বা রহিতকরন তাঁদের মূল উদ্দেশ্য ছিল না। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল পরিস্কার---"নাস্তিক্যবাদের অপবাদে আওয়ামীলীগকে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করে একই অজুহাতে শতবছর একক ক্ষমতা  উপভোগ ও পরিচালনা।
    অথছ স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করে তাঁরাই নাম অদলবদলে ক্ষমতায় ছিল, দীর্ঘ ত্রিশ বছরের অধিককাল।বঙ্গবন্ধুর ইসলামের প্রচার প্রসারে যে সমস্ত  মৌলিক কাজগুলী সমাপন করেছিলেন, সেই সমস্ত কাজকে সম্প্রসারনের জন্য তাঁর বিপরীতে অথবা নতুনভাবে শুন্য পরিমান কাজও কোন ইসলাম ধর্ম ব্যাবহার করে ক্ষমতা দখকারি শাষকগনের হাতে সম্পন্ন হয়নি।বরঞ্চ বিশ্বের শ্রেষ্ঠ লিখিত সংবিধান '৭২ এর সংবিধানকে ছিন্নভিন্ন করে শাষন শোষন, লুটপাট অব্যাহত রাখতে  জাতিকে নিয়ে গেছে অন্ধকারের মধ্যযুগীয় শাষন '৭১ এর আগে পাকিস্তানী ভাবধারায়।
    গনতন্ত্র শুধুমাত্র নির্বাচন নয়; নির্বাচন হচ্ছে জনগনের পছন্দকে প্রাধান্য দেয়ার একটি রীতি। বিশ্বে বহু ধরনের গনতন্ত্র চলমান রয়েছে।প্রতিটি দেশ তাঁদের আবাহাওয়া, জনগনের মন মেজাজের উপর নির্ভর করে গনতন্ত্রের চর্চা করছে। বাংলাদেশ তাঁর নিজস্ব পারিপাশ্বিক অবস্থা,জন গনের মনমেজাজ ও  চাহিদা অনুযায়ী যখনই গনতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান সমুহকে সাজাবার প্রক্রিয়া গ্রহন করার উদ্যোগ নিয়েছে তখনই অশুভ শক্তি তাঁদের সর্বশক্তি নিয়োগ করে বাঁধা দিয়েছে। গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দেশকে এগিয়ে নেয়ার পুর্বশর্ত শিক্ষিত, আধুনিক, বিজ্ঞান মনস্ক, প্রযুক্তি নির্ভর সুশিক্ষিত জাতি"।সে জায়গাটিতে সংস্কারের মাধ্যমে উন্নত বিশ্বের আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার সঙ্গে প্রতিযোগিতার লক্ষে নিজেদের ধ্যানধারনায় রাষ্ট্রব্যবস্থা সাজাবার চেষ্টা করা হলেই অ-শুভ শক্তি বিনানোটিশে দলবদ্ধ হয়ে দেশকে অস্থীতিশীল করে তোলার প্রক্রিয়া গ্রহন করে।
    রাষ্ট্র ব্যাবস্থাপনায় তাঁর কর্ম সঞ্চালনের নিমিত্তে বহু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ রয়েছে-যেমন:--বাংলাদেশের গনতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামো অনুযায়ী (১)শাষন বিভাগ( প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে প্রয়োজনীয় সংখ্যক মন্ত্রী নিয়ে গঠিত নির্বাহী পরিষদ, রাষ্ট্রের এইরুপ প্রশাসন পরিচালনার ক্ষমতাপ্রাপ্ত সর্ব উচ্চ নির্বাহী পরিষদকে সরকার নামে অভিহিত করা হয়  (২) বিচার বিভাগ( বিদ্যমান সর্বচ্ছো আদালতের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত অন্যান্ন বিচারক এবং তাঁর অধ:স্তন বিচারিক আদালত ও পরিদপ্তর, অধিদপ্তর সমূহ পরিচালনার  নিমিত্তে গঠিত একটি স্বায়ত্বশাষিত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান) (৩) আইন বিভাগ (জনগনের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত ক্ষমতাপ্রাপ্ত রাজনৈতিক দল ও জোটের নির্বাচিত জনপ্রতিনীধিদের অধিক গ্রহনযোগ্য  সংসদ নেতাকতৃক পরিচালিত, প্রচলিত সাংবিধানিক ধারানুযায়ী গঠিত  'সংসদ'। গঠিত সংসদ রাষ্ট্র ও সরকার পরিচালনার নিমিত্তে প্রয়োজনীয় নতুন আইন প্রনয়ন, সংশোধন, বাতিল এবং সরকার প্রধান নির্দিষ্টকরনের অধিকারপ্রাপ্ত একমাত্র সর্বচ্ছো ক্ষমতাসম্পন্ন সাংবিধানিক নির্বাহী প্রতিষ্ঠান)। রাষ্ট্রের তিন মূলভিত্তির অভ্যন্তরে অন্যান্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সামষ্ঠিকতা বিরাজমান রয়েছে।
     পুর্ণাঙ্গ স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র বাবস্থার জন্যে প্রয়োজন নির্দিষ্ট জনসমষ্টি, ভুখন্ড, সার্বভৌমত্বের গ্যারান্টি। অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা, উন্নয়ন, আধুনিক সমাজ বিনির্মান, প্রযুক্তির ব্যবহার, অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থানের নিশ্চয়তা বিধান যুক্ত রাষ্ট্র মায্যদাশীল রাষ্ট্রের প্রতীক। রাষ্ট্রের সমুদয় অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে জনগনের কল্যানে নিয়োজিত রাখার নির্দিষ্ট নীতি ও আদর্শ গ্রহন করে গড়ে উঠে রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে একাধিক রাজনৈতিক দল। তাঁদের মধ্যে এক বা একাধিক রাজনৈতিক দল বা জোট বিদ্যমান কাঠামোর অধিনে জনগনের সমর্থন আদায়ের নিমিত্তে প্রচলিত নিয়মে নির্বাচনে অংশগ্রহন করে থাকে। জনগনের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভোটাধিকারের মাধ্যমে রাজনৈতিক দল, জোট বা ব্যাক্তি বা ব্যক্তির মনোনীত প্রার্থীদের অনেকের  মধ্যে  একজনকে রাষ্ট্রের আইনানুযায়ী গঠিত এলাকাভিত্তিক পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত  করে। বিদ্যমান রাজনৈতিক দল বা জোটের প্রেরিত প্রতিনীধিদের এইরুপ সংখ্যানুপাতে অধিক নির্বাচিত প্রতিনীধি সংবলিত রাজনৈতিক দল বা জোট সরকার গঠনের অধিকার লাভ করে। প্রতিনীধির সংখ্যায় অধিক  সংখ্যাতত্বকে  জনমতের প্রতিফলন ভিত্তি ধরে বিজয়ী রাজনৈতিক দল বা জোটকে সাংবিধানিক নীতিতে বিজয়ী নির্ণয় করা হয়।
      রাজনৈতিক দলের মোট প্রাপ্তভোট সরকার গঠনে জনমতের প্রতিফলন ধরা হয়না। নির্বাচন প্রাক্কালে রাজনৈতিক দলের ঘোষিত নির্বাচনী ইশতেহার বিজয়ী দল বা জোটের  রাষ্ট্র পরিচালনার অঙ্গিকারও গনরায় প্রাপ্ত এবং বাস্তবায়ন যোগ্য বিবেচিত হয়। অধিকসংখ্যক আসনে বিজয়ী দল বা জোট সাংবিধানিক রীতিতে বিদ্যমান  রাষ্ট্র যন্ত্র পরিচালনার ক্ষমতাপ্রাপ্ত হন। উক্তরুপ পদ্ধতিতে জনগনের অধিক কল্যানে নিয়োজিত থাকা রাজনৈতিক দল বা জোটকে একাধিকবার ক্ষমতায় নিয়ে আসার বা বর্জন করার অধিকার জনগন সংরক্ষিত রাখেন।এইরুপ পদ্ধতি অনূসরন করা হয় রাষ্ট্রের একটিমাত্র অঙ্গ 'শাষন বিভাগ' পরিচালনার ক্ষেত্রে। রাষ্ট্রের অন্যান্ন বিভাগ ও অঙ্গ প্রত্যঙ্গ পরিচালনার ক্ষেত্রে এইরুপ নির্বাচনের মাধ্যমে জনমতের প্রতিফলনের কোন ব্যবস্থা নেই। শাষন বিভাগ কতৃক প্রনিত বিধিবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রের অত্যাবশ্যকীয় অঙ্গ, বিভাগ, পরিদপ্তর, অধিদপ্তর,স্বায়ত্বশাষিত প্রতিষ্ঠান, আধাসরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সমূহ পরিচালিত হয়।
   উল্লেখিত আলোচনায় দেখা যায় --"নির্বাচন রাষ্ট্রের মুল ভিত্তি নয়; জনগনের পছন্দের ব্যাক্তি, দল বা জোটকে শাষন রাষ্ট্রের শাষনকায্য পরিচালনার কতৃত্ব হস্তান্তরের মোক্ষম একটি পদ্ধতি মাত্র।" এইরুপ জনরায়ে নির্বাচিত দল বা জোট রাষ্ট্রীয় কাঠামোর অধিনস্ত সর্বময় বিষয়াদির কতৃত্ব প্রাপ্ত হইয়াছেন বিবেচিত হয়। এক্ষেত্রে সাধারনত: অধিক গনতন্ত্রমনা রাজনৈতিক দল বা জোট--রাষ্ট্রের সমুদয় অঙ্গ প্রত্যঙ্গে অধিক জবাবদিহীতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতকল্পে ব্যবস্থা গ্রহন পূর্বক সর্বত্র জনমতের প্রতিফলন ঘটানোর পদক্ষেপ গ্রহন করে থাকে।
পক্ষান্তরে গনতন্ত্রের প্রতি অ-শ্রদ্ধাশীল ব্যাক্তি বা গোষ্টি জোরপূর্বক রাষ্ট্রের সমুদয় অঙ্গ প্রত্যঙ্গে স্বেচ্ছাচারিতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তাঁদের ইচ্ছামাফিক পরিচালনার নিমিত্তে স্বৈরাচারী, একনায়কতান্ত্রিক, ফ্যাসিবাদি শাষন প্রতিষ্ঠা করে। এইরুপ শাষনে--শাষক শ্রেনীর একক আধিপত্যে রাষ্ট্রের সমূদয় যন্ত্র, তাঁদের ইচ্ছামাফিক পরিচালিত হয়। এইরুপ শাষনে জনমতের প্রতিফলন বা প্রাধান্য মোটেও থাকেনা। রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরে গনতন্ত্রের চর্চায় অধিক মনযোগী রাজনৈতিক দল বা জোট রাষ্ট্র পরিচালনায়ও অধিক গনতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করবে এবং ইহাই স্বাভাবিক। প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরে গনতন্ত্র চর্চার অভাব রেখে রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অঙ্গিকার বাস্তবায়নের ঘন ঘন দৃড় শফথ গ্রহন জনমতের প্রতি সাক্ষাৎ প্রতারনা, জনমত বিভ্রান্ত করার অপকৌশল ছাড়া অন্যকিছু নয়।
     আগেই একাধিকবার বলা হয়েছে "রাষ্ট্র যন্ত্র পরিচালনার ক্ষমতা জনমত পুষ্ট বিজয়ী দল বা জোটের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর বা সরকার পরিচালনার বৈধ ব্যাক্তি ও গোষ্টি চিহ্নিত করার কায্যকর উপায় হচ্ছে নির্বাচন। সরকারের বহুবিদ অঙ্গ প্রত্যঙ্গের মধ্যে নির্বাচন একটি কায্যকর  অনুষঙ্গ মাত্র"।একমাত্র নির্বাচিত সরকারই গনতান্ত্রিক সরকার ইহা বিবেচনা করার কোন যুক্তিকতা বিরাজমান নেই, রাষ্ট্রের সমূদয় অঙ্গপ্রত্যঙ্গে গনতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষিত হচ্ছে কিনা বা গনতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠার লক্ষে সরকার কায্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে কিনা, ইহার উপর গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে উক্ত দল বা জোটের সদিচ্ছার প্রমান অনেকাংশে নির্ভর করে।
     রাষ্ট্র যন্ত্রের অভ্যন্তরে আবশ্যকিয় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সমূহে নির্দিষ্ট নীতি অনুসরন, সর্বক্ষেত্রে জবাবদিহীতা প্রতিষ্ঠা, নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি, পদাবনতি ইত্যাদির স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠা কল্পে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি ও নীতি অনুযায়ী  অনুসরনের বাধ্যবাধকতাকে প্রাতিষ্ঠানিক গনতন্ত্র বলা যেতে পারে। সরকারের প্রতিটি অঙ্গ- প্রত্যঙ্গ স্ব-স্ব বিধি অনুযায়ী এবং প্রনীত রাষ্ট্রীয় আইনানূযায়ী বা সাংবিধানিক ধারানুযায়ী স্বাধীন, স্বচ্ছ, জবাবদিহীতার সকল অনুষঙ্গ উম্মুক্ত রেখে অবাধ নিরপেক্ষভাবে  কায্যক্রম পরিচালিত হওয়া এবং ধারাবাহিকতায় কোনরুপ বিঘ্নতার লক্ষনকে প্রশ্রয় না দেয়াকে  গনতান্ত্রিক প্রাতিষ্ঠানিকতার ভিত্তিমূল বলা যায়।ইহা বহুলাংশে স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের ধারাবাহিক গনতান্ত্রিক মুল্যবোধের প্রাধান্য এবং নিয়ন্তর অনুশীলনের উপর অনেকাংশে নির্ভশীল।
     বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ইতিপুর্বে অনুষ্ঠিত দলের জাতীয় সম্মেলন সম্পুর্ণ গনতান্ত্রিক ভাবে, নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে সম্পাদন করে বাংলাদেশের এযাবৎ কালের ইতিহাসে নজির স্থাপন করেছেন।নেতা নির্বাচনে খোলাখোলি বিতর্কে অংশ নিয়েছে সারাদেশব্যাপি তৃনমূলের নেতাকর্মীগন।কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের একজন কায্যকরি কমিটির সদস্যকেও একক কক্ষমতাবলে মনোনীত করা হয়নি। নির্বাচিত সভানেত্রী এবং সাধারন সম্পাদকের নেতৃত্বে সাধারন আলোচনার ভিত্তিতে প্রস্তাব ও সমথনের মাধ্যমে প্রত্যেক সম্মানীত কায্যকরি কমিটির সদস্যদের নির্বাচিত করা হয়েছে।এই ধারা তৃনমূল পয্যন্ত বিস্তৃত করার সুনির্দিষ্ট নীতি প্রনয়ন পুর্বক গঠনতন্ত্রে সংযোজন করা হয়েছে। তৃনমূল পয্যায় নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের নিমিত্তে কায্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের জন্যে স্ব স্ব জেলা, উপজেলা, ইউনিয়নকে অনুসরন করার নির্দেশনা দিয়েছেন নবনির্বাচিত সভানেত্রী ও সাধারন সম্পাদক।উক্ত ধারা অব্যাহত রাখা গেলে অচিরেই সর্বস্তরে উন্নত চরিত্রের অধিকারি, দক্ষ, কর্মঠ, জ্ঞানী, রাজনীতি সচেতন রাজনৈতিক ব্যাক্তিরাই রাজনীতি ও সংগঠনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ পাবে। ঐতিহ্য হীন, মুর্খ, লুটেরা, অর্থলোভী, দখলদার, সন্ত্রাসী, মাস্তান, ব্যবসায়ী, সুযোগ সন্ধানীরা স্বয়ংক্রিয় ভাবে দল থেকে বিতাড়িত হতে বাধ্য হবে।
   গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের উপযুক্ত প্রমান রেখেছে বিগত জাতীয় সম্মেলনে দলটি। রাষ্ট্রের সর্বত্র সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্বশাষিত প্রতিষ্ঠানে গনতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি দেয়ার রীতি গঠনতন্ত্রের অঙ্গিকার নামায় সংযুক্ত করেছে। এইরুপ অবস্থায় অন্যকোন রাজনৈতিক দলের গঠনতন্ত্রে উক্ত বিষয়টি সংযোজনে আরও কয়েকযুগ পেরিয়ে গেলেও সম্ভব হবে মনে হয়না। নেতা নির্বাচনে যে সমস্ত দলে গনতন্ত্রের চিহ্ন অনুসরন করার রীতিনীতি নেই সেই সমস্ত দল সরকারের অঙ্গপ্রত্যঙ্গে গনতন্ত্রের চর্চা অনুসরন চিন্তাও বাতুলতা মাত্র।গনতন্ত্র মুখে বলা যত সহজ কায্যক্ষেত্রে প্রয়োগ তত সহজ নয়।গনতন্ত্রের চর্চায় প্রথমেই প্রয়োজন অনুশীলন,   সহনশীলতা, পরমতসহিঞ্চুতা, ধৈয্য, একাগ্রতা, জনগনের প্রতি অগাধ বিশ্বাস এবং জনরায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর মানষিকতা।উল্লেখিত কোনটিই বিদ্যমান রাজনৈতিক দলের আচরনে পরিস্ফুটিত হয়না।সুতারাং দলে গনতন্ত্রের চর্চার অভাব রেখে মুখে গনতন্ত্রের কথা সহজে বলা সম্ভব হলেও সরকারের সর্বস্তরে গনতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকতা দেয়ার সদিচ্ছার পরিস্ফুটন সূদুর পরাহতই বলা যায়।
      দীর্ঘবছর ক্ষমতা উপভোগের কারনে দলে স্থবিরতা এসেছে; বাহিরে হৃষ্টপুষ্ট দেখা গেলেও অভ্যন্তরে উইপোকায় খেয়ে জির্ণশীর্ণ করে ফেলেছে ঐতিহ্যবাহী দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগকে। অবিলম্বে সরকার এবং দলের মধ্যে বিভাজন রেখা টেনে বিচ্ছিন্ন করার লক্ষে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতা নির্বাচনে সতর্ক পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছিল। মাননীয় সভানেত্রীর চিন্তা চেতনার সঙ্গে তৃনমূল কর্মীদের মনের মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে।অনুষ্ঠিত জাতীয় সম্মেলনের কায্যক্রম বিশ্লেষনে দেখা যায়--সরকারের দায়িত্বশীল একাধিক মন্ত্রীকে দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব প্রদান করা হয়নি অন্যদিকে দলের গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব বহনকারি একাধিক ব্যাক্তিকেও সরকারের কায্যক্রম থেকে বিরত রাখা হয়েছে। নি:সন্দেহে বলা যায় সময় উপযোগী উক্ত পদক্ষেপ কঠোর ভাবে প্রতিপালিত হলে সরকার যেমন আরো অধিকতর সচল হবে তেমনি দলও তাঁর স্বাভাবিক গতিশীলতা ফিরে পাবে।
             দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর মন্ত্রিসভায় রদবদল করার প্রয়োজন ছিল অত্যাবশ্যকীয়।কিন্তু অদ্যাবদি তার কোন লক্ষন দেখা যাচ্ছে না। যাদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে নেওয়া হবে না, তাদের মন্ত্রিসভায় দেখা যেতে পারে এমনটি হওয়ার আভাস প্রত্যক্ষ করা গিয়েছিল। সেই প্রেক্ষাপটে ঘোষিত চার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে একজনও মন্ত্রিসভায় নেই। এর মধ্যে দীপু মনি ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাহাঙ্গীর কবির নানক ছিলেন স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী। অবশ্য প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী। আট সাংগঠনিক সম্পাদকের মধ্যে কেউই মন্ত্রিসভার সদস্য নন। বিগত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বীর বাহাদুর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে রয়েছেন। তাকে এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় কমিটির কোন পয্যায় রাখা হয়নি। সম্পাদক মণ্ডলীর ঘোষিত ২২টি পদধারীর কেউ মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী নন। বরং বিগত কমিটিতে থাকা চারজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় কোনো পদপদবী পাননি।
      আওয়ামী লীগকে ২০১৯ সালের সাধারন নির্বাচনে অংশগ্রহননের উপযোগী করে গড়ে তোলার নিমিত্তে দলকে গতিশীল করা খুবই প্রয়োজন।  সরকারের কর্মকাণ্ড আরও বেগবান, স্বচ্ছ, জবাবদীহি,  দুর্নীতিমুক্ত করার পদক্ষেপের উপর নির্ভর করছে জনসমর্থনের পারদ উপরে উঠার লক্ষন। দল ও সরকারের গৃহিত পদক্ষেপ জনদৃষ্টি আকর্ষনের কৌশলের অংশ হিসেবে নবনির্বাচিত সাধারন সম্পাদক ও প্রেসিডিয়ামের কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে সরকারের কায্যক্রম থেকে আলাদা করা একান্ত প্রয়োজন। ১৪ জন প্রেসিডিয়াম সদস্যের মধ্যে কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, জন প্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ দলীয় পদ এবং সরকার দুই জায়গায়ই আছেন। পাশাপাশি সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর দায়িত্বে রয়েছেন। ইহা স্বীকায্য যে সরকারের গুরুত্বপুর্ণ দায়িত্ব পালনরত: অবস্থায়  দলীয় দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে নেতাকর্মীদের সংঙ্গে অধিক মেশার সুযোগহেতু  তাঁদের অনাকাংক্ষীত তদ্ভীরও আশংকাজনক বৃদ্ধি পাবে। এক্ষেত্রে নেতাকর্মীদের তদবির অনুযায়ী কায্যসিদ্ধি না হলে দলের অভ্যন্তরে বিরুপ প্রতিক্রিয়া অনস্বিকায্য হয়ে দেখা দিবে, এবং ইহা স্বাভাবিক।
     আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এখন থেকেই মাঠ গোছানোর কাজ শুরু করেছেন দলের উচ্চ পর্যায় থেকে। সে কারণেই জাতীয় সম্মেলনের এক দিন পর জেলা নেতাদের সঙ্গে মতবিনিয় সভায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।সভানেত্রীর নির্বাচনী প্রস্তুতির নির্দেশনা অনেকক্ষেত্রে সঠিকভাবে অনুসৃত হচ্ছে মনে হয়না।চট্রগ্রাম, কুমিল্লা, রংপুর সহ অধিকাংশ এলাকায় এখনো দলীয় প্রাধান্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে খুনাখুনী অব্যাহত রয়েছে। আগামী নির্বাচনে উল্লেখিত আদিপত্ত বিস্তারের লক্ষন সমূহ নেতিবাচক উপলক্ষ হয়ে প্রার্থীদের ভরাডুবি নিশ্চিত করার আশংকা উড়িয়ে দেয়া যায়না।
     পুর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনকের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় নেতাদের সাংগঠনিক সফর শুরু করার ঘোষনা বাস্তবায়িত হয়নি। এই রুপে  বারবার ঘোষিত রাজনৈতিক কর্মসূচি দলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।মন্ত্রীদের অতিকথন নিয়ন্ত্রনের ব্যবস্থা নেয়া সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে, দল ও নেতা সর্বস্তরে হাসির পাত্র হওয়ার অর্থই নিশ্চিত দল ব্যাক্তিত্ব শুন্যতায় আক্রান্ত হওয়া।এইরুপ ক্ষেত্রে নির্বাচিত হওয়ার সমূদয় ক্ষেত্র প্রস্তুত থাকাবস্থায়ও কাংক্ষীত ফলাফল দল এবং ব্যাক্তি উভয় ক্ষেত্রে সুনির্দষ্টতার অভাবে পক্ষে নাও আসতে পারে।
     বঙ্গবন্ধুর জীবিতবস্থায় বারকয়েক দলের অভ্যন্তরে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনার ঘোষনা দিয়ে পেছনে চলে যাওয়ার কারনে জীবন দিয়ে তাঁর প্রায়চিত্ত করতে হয়েছে। অনেক আগে থেকে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনার ঘোষনা থাকা সত্বে ও অদ্যাবদি তাঁর লক্ষন স্পষ্ট হচ্ছেনা।সাধারন নির্বাচনের অব্যবহিত আগে ইচ্ছা থাকা সত্তেও অভিযান পরিচালনা আদৌ  সম্ভব হবে বলে মনে হয়না। জাতির জনক পারেননি নিশ্চয়ই সময় তাঁকে চায়নি।তাঁর কন্যা এতদিন পারেননি দেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতার কারনে। উদ্যোগ নিয়ে নেত্রী বার বার পিছনে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
     আমি সর্বান্তকরনে বিশ্বাস করি উদ্যোগটি নেয়ার উপযুক্ত সময় এখনি। সব দিক গুছিয়ে, পরিকল্পিতভাবে এবং সুশৃংখল ভাবে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে শুদ্ধি অভিযান পরিচালিত করা এই সময়ের সর্বাপেক্ষা জরুরী প্রয়োজন। আশাকরি হেলায় সময় এবং সুযোগ পার না করে উদ্যোগটির সফল বাস্তবায়ন করা হবে।
    ইহা অনস্বীকায্য যে দল ক্ষমতায় থাকার কারণে  সরকারে মিশে গেছে। এতে তৃণমূল পর্যায়ে বিভক্তি চরম আকার ধারণ করেছে। অধিকাংশ স্থানেই মন্ত্রী-এমপিদের সঙ্গে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের ভালো সম্পর্ক নেই। তাই একসঙ্গে দল ও সরকারে দুটি পদে একই ব্যাক্তিকে না রাখার সিদ্ধান্ত অত্যান্ত যুগোপযুগী, আধুনিক, সুদুরপ্রসারী ফলাফল বয়ে আনবে সরকার ও দলের জন্যে।
     বিগত জাতীয় সম্মেলন পয্যালোচনায় একটি সিদ্ধান্তেই উপনীত হওয়া যায়--শেখ হাসিনা এমন একটি দল, দেশ এবং শাষন ব্যবস্থা তাঁর জীবদ্দশায় রেখে যেতে চান-- "যে দল বাঙ্গালী মানসের চিন্তাচেতনার সঙ্গে সম্পুর্ণ সামজস্যপুর্ণ হবে। তিনি এমন একটি শাষন ব্যবস্থার ভীত ফচনা করে রেখে যেতে চান-- যে শাষন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ গনতান্ত্রিক রীতিনীতি অনুসরন এবং রাষ্ট্রের সকল স্তম্ভে গনতান্ত্রিক চর্চা অব্যাহত রাখার নিমিত্তে উদ্যোগ প্রতিনিয়ত চলমান থাকবে। গনতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি সুদৃড ভিত্তিমূলের উপর প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে সমৃদ্ধ, উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মান করে আগামী প্রজম্মের বাসযোগ্য বাংলাদেশ গড়ে তোলার পথপ্রদর্শক হতে চান। তাঁর চিন্তাচেতনায় এমন একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনা সদা জাগ্রত-- যে রাষ্ট্র ব্যবস্থা আধুনিকতার ধারকবাহক হয়ে জনগনের সেবায় ব্রতি থাকবে আবহমান কাল। তিনি এমন একটি অসাম্প্রদায়িক জাতি গঠন করতে চান-- যে শাষন ব্যাবস্থায় অ-শুভশক্তির কোন ছায়া যেন আগামী প্রজম্মের অগ্রগতির পথ রুদ্ধ করে জাতিকে শতবছর পিছিয়ে দিতে না পারে।তিনি এমন একটা দেশ গড়ে তোলার জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন-যে দেশটি কোন বিষয়ে যেন কারো মুখাপেক্ষি না থাকে। তাঁর সার্বক্ষনিক ধ্যানধারনায়, মননে বিরাজমান এমন একটি বাংলাদেশ --যে দেশটি সর্বক্ষেত্রে সম্পুর্ণ স্বাধীন, আত্মমায্যদাশীল, স্বাবলম্ভি, উন্নত, সমৃদ্ধ, বিজ্ঞানমনস্ক,  প্রযুক্তি নির্ভর, আধুনীক, উন্নত বিশ্বের সমকক্ষ শক্তিশালী স্বনির্ভর ।তাঁর সকল কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে ২০২১-২০৪১ ভিশনকে সামনে রেখে এবং তা লক্ষনীয়ভাবে দৃশ্যমান হয়ে জাতিকে প্রতিনিয়ত তাঁদের স্বপ্ন বাসনাকে আন্দোলীত করে তুলছে।"
      পরিশেষে শুধু একটি কথাই বলতে চাই--'কাজী নজরুল ইসলামে'র মাথার দাম নির্ধারন করেছিল একদা সাম্প্রদায়িক গোষ্টি। সময়ের ব্যবধানে তাঁর রচিত কবিতা গান আর গজল ছাড়া তাঁদের সভা জমে না, বাঙ্গালী জাতি তাঁকে জাতীয় কবির মায্যদায় ভুষিত করে মাথায় তুলে রেখেছে।মাথার দাম নির্ধারকগন তাঁদের ভাষায়--"কবি ইসলামের বুলবুলি"।একুশ বছর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু নিষিদ্ধ ছিলেন অঘোষিত ভাবে; তিনি ফিরে এসেছেন বাঙ্গালীচিত্তে সগৌরবে,স্বমহিমায়, উজ্জলতর আলোক বিচ্ছুরনের মাধ্যমে।তাঁর কন্যারও দেহবসান হবে চিরায়ত বিধানে।শত বছর পরেও তিনি ফিরে আসবেন বার বার বাঙ্গালী মানসে তাঁর যুগশ্রেষ্ঠ সংস্কার, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, গনতন্ত্রের অভিযাত্রায় নেয়া পদক্ষেপ সমূহ সময়ের ব্যবধানে শ্রেষ্ঠত্বের ভুমিকায় অবতির্ন হয়ে ধরা দিবে বিশ্বের গনতন্ত্রের পুজারীদের মননে। ধরিত্রীর মানস কন্যা পরিবর্তীত হয়ে আবারো গনতন্ত্রের মানসকন্যার চারিত্রিক রুপ পরিগ্রহ করে দেশ, জাতি, বিশ্বময় অনুসরন, অনুকরন যোগ্য হয়ে উঠবে তাঁর কর্মময় জীবন ও চলমান শাষন ব্যবস্থা তথা "ডিজিটাল বাংলাদেশ দর্শন"।
ruhulaminmujumder27@gmail.com

             

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন