খালেদা জিয়ার প্রস্তাবীত বিএনপি দলীয় নির্বাচনী ইশতেহার সম্পূর্নভাবে তাঁর পরিবার রক্ষার ইশতেহার।
      রুহুল আমিন মজুমদার।

     বিএনপি জোট আগামী ২০১৯ সালের শেখ হাসিনা সরকারের অধিনে অনুষ্ঠিতব্য সাধারন নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে।এই লক্ষে দলটি তাঁদের নির্বাচনী ইসতেহার প্রনয়নের কাজ শুরু করেছে বলে পত্র পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়েছে। তাঁদের নির্বাচনী ইসতেহারে কয়েকটি বিষয় গুরুত্ব সহকারে সংযোজিত করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।(১) রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনায়নে সংবিধান সংশোধন (২) বিগত বিএনপি দলের জাতীয় সম্মেলনে ঘোষিত 'ভিশন ২০৩০' অনুযায়ী মধ্য আয়ের দেশে রুপান্তরের পরিকল্পনা সংযোজন।(৩) দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট আইন সভা সহ আরো কয়েকটি নতুন বিষয় সংযোজনের মাধ্যমে সরকারের অভিনবত্ব আনার চিন্তাভাবনা করছেন বলে জানা গেছে। দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের রাষ্ট্রপরিচালনায় অংশগ্রহন করার সুযোগ দানের নিমিত্তে কায্যকর উপায় অবলম্বন এবং তৎমর্মে ব্যাবস্থা গ্রহনের কথাও বলা হচ্ছে। রাষ্ট্রের বর্তমান সাংবিধানিক বিধানে উল্লেখিত 'ন্যায়পাল' নিয়োগের বিধানকে পুর্ণজ্জীবিত করে একজন ন্যায়পাল নিয়োগের মাধ্যমে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতিরোধে কায্যকর ব্যবস্থা গ্রহনের চিন্তাভাবনা করছে বলে বিশ্বস্ত সুত্রে খবর দিয়েছে পত্রপত্রিকা।
      বিএনপির নির্বাচনী ইশতেহার অবলোকনে পরিস্কার একটি বিষয় ধারনা লাভ করা সচেতন যে কোন নাগরিকের অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।দিবালোকের ন্যায় সত্যে পরিণত হয়েছে যে--তাঁদের বিগত দিনের আন্দোলনের লক্ষ ছিল মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার রোধ এবং জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র কতৃক আনীত মামলা সমূহের বিচার প্রক্রিয়া বানচাল করন। সর্বজনবিদীত যে --দলের অস্তিত্বকে জিম্মি রেখে 'খালেদা জিয়া' তাঁর পরিবার  রক্ষা করার মরণপণ আন্দোলনে দলকে সম্পৃত্ত করেছিলেন। খালেদার উদ্দেশ্য প্রনোদিত আন্দোলনে দলের অধিকাংশ সচেতন নেতাকর্মী সাড়া না দেয়ায় জনগনের সাড়াও পাওয়া যায়নি।  বিগত দিনের ব্যর্থ আন্দোলনের ইস্যু তত্বাবধায়ক সরকারের দাবীকে তাই তিনি  পায়ে দলে নতুন করে "নির্বাচন সহায়ক সরকারে"র ঘাড়ে বসে উদ্দেশ্য হাসিলের চেষ্টায় ব্রতি হয়েছেন।
    খালেদা জিয়া এবং তাঁর দল অবশ্যম্ভাবি জানেন তাঁর এবং তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ শতভাগ সঠিক এবং শাস্তি অনিবায্য।২১ আগষ্টের শেখ হাসিনাকে হত্যা প্রচেষ্টার 'মাষ্টার মাইন্ড তারেক জিয়া'-- হত্যাকান্ডে অংশ নেয়া 'মুফতি হান্নান' কতৃক আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে পরিস্কারভাবে উঠে এসেছে। এমত:বস্থায় মামলার রায় প্রদান দীর্ঘায়িত করে বর্তমান সরকার উৎখাতের সকল ষড়যন্ত্র ইতিমধ্যে সর্বৈব ব্যার্থতায় পয্যবসিত হয়েছে।তারেক জিয়া বাংলাদেশী নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করে বৃটেনের নাগরিকত্ব গ্রহন করেছে, মামলার মোকাবেলায় নৈতিক দুর্বলতা ও অসহায়ত্বের কারনে এমনটি করতে বাধ্য হয়েছেন। অভিজ্ঞ আইন বিশারদের ধারনা--সহসা ক্ষমতা পাওয়া ছাড়া জিয়া পরিবারের অস্তিত্বরক্ষা কোন অবস্থায় সম্ভব নয়। ইতিমধ্যে তাঁদের কৃত অপরাধের ধরন জনমনে ব্যাপক চাঞ্চল্যতা সৃষ্টি করেছে।
      এমত:বস্থায় খালেদা জিয়া বাংলাদেশের জনগনের সঙ্গে বড়রকমের প্রতারনার আশ্রয় গ্রহন ব্যতিত অন্যকোন উপায়ও নেই। তাঁর প্রস্তাবিত নির্বাচনী ইশতেহার কোনক্রমেই বাস্তবায়ন সম্ভব নয়, কমপক্ষে দুই তৃতীয়াংশ সংসদ সদস্যের সংখ্যাগরিষ্টতা ব্যাতিত। রাজনীতি সচেতন এবং সামান্য আইন বিষয় নাড়াচাড়া করা প্রত্যেক নাগরিকই বিষয়টি ভালভাবেই অবগত আছেন। বর্তমান বাংলাদেশের সামগ্রিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষনে প্রত্যেক সচেতন নাগরিক নিশ্চয়ই আমার সাথে  একমত হবেন যে-- বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থীরতা, অর্থনৈতিক উন্নতি, আইনশৃংখলার স্বাভাবিকতা, শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, আওয়ামী লীগের দলীয় শক্ত অবস্থানের প্রেক্ষিত বিবেচনায় বিএনপি তাঁর মিত্রদল সহ বিশদলীয় জোট একক সংখ্যা গরিষ্টতা পাওয়ার ইচ্ছা বা আকাংক্ষা অলীক কল্পনা ব্যতিত অন্য কিছু নয়। বিএনপি দলের অধিকাংশ সিনিয়র নেতৃত্ব বিষয়টি ভালভাবে অবগত হতে পেরেছেন বিধায়, দলীয় লোভনীয় পদপদবী পরিত্যাগ করে  ইতিমধ্যে স্বাভাবিক পারিবারিক কর্মজীবনে ফিরে গেছেন।আরো অনেকে যাওয়ার প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করে রেখেছেন। যেকোন পরিস্থীতি উদ্ভবের অপক্ষায় প্রহর গুনছেন। আওয়ামীলীগের দরজা খোলা থাকলে বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটিতে জেলা পয্যায়ের অনেক নেতাই স্থান পাওয়ার সুযোগ গ্রহন করার ব্যবস্থা হ'ত ইহা নিদ্বিদায় বলা যায়। আওয়ামীলীগের দরজা বন্ধ থাকার কারনে সুযোগ সন্ধানী নেতাদের "ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি" অবস্থায় দিনাতিপাত করতে হচ্ছে।
    এমত:বস্থায় সম্পূর্ন অ-বাস্তবায়নযোগ্য, প্রচলিত সংবিধান বহির্ভুত, সর্বপ্রকার আইন কানুনকে উপেক্ষা করে প্রতারনা মুলক  ইশতেহার সাজানোর পদক্ষেপ নিচ্ছে বিএনপি এবং তাঁর নেত্রী খালেদা জিয়া। জিয়া পরিবারের দুই সদস্যের সম্ভাব্য শাস্তি ভোগ থেকে রক্ষার সাংবিধানিক একমাত্র উপায় রাষ্ট্রের দুই নির্বাহী ক্ষমতা,  অভিযুক্ত দুইজনের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়া।সেই কৌশল বাস্তবায়নের অংশই হচ্ছে 'প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতি'র ক্ষমতার ভারসাম্য আনায়নের আগাম নির্বাচনী অঙ্গিকার সংযোজন।অর্থাৎ যে কোন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার গঠনের সুযোগ পাওয়া গেলে "মা--ছেলে''র যুগৎপৎ মূর্খের রাষ্ট্রপরিচালনা দেশবাসি উপভোগ করতে পারবে। সেই লক্ষ নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে বিএনপির নির্বাচনী ইশতেহার।ইহা যদি কোনক্রমে আইনী জটিলতায় সম্ভব না হয় "বিশিষ্ট ব্যাক্তি"দের  রাষ্ট্র পরিচালনায় অংশগ্রহন নিশ্চিত করার দলীয় অঙ্গিকারে সজ্ঞায় দেখা যেতে পারে অন্যান্ন বিশিষ্ট ব্যাক্তিদের সঙ্গে মূর্খ, দুর্নীতির বরপুত্র, বিশিষ্ট ব্যাক্তি 'তারেক জিয়া'কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি অথবা  ন্যায়পালের ভুমিকায়।
    দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইন সভা ইশতেহারে সংযোজন সম্পূর্ণ জনগনের চোখে ধূলা দিয়ে নির্বাচনী বৈতরনী পার হওয়া ছাড়া অন্যকিছু নয়। যদি ধরেও নেই কোন এক আলৌকিক ক্ষমতাবলে বাংলাদেশের সব কয়টি আসন বিএনপি পেয়ে গেছে, তথাপিও উক্ত দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা বাস্তবায়ন সম্ভব হবেনা। একমাত্র কারন উক্ত আইন সংসদে অনুমোদনের সঙ্গে সঙ্গে  বিদ্যমান সরকারকে পদত্যাগ করে সংসদের উভয় কক্ষে নতুন নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। সেই নির্বাচনে উচ্চকক্ষে সংখ্যাধিক্যে জিতে নতুন ভাবে সরকার গঠন করতে হবে। সেই মনোবল কি বিএনপি বা বিশ দলের জোটের মধ্যে কারো আছে?
           বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ম শেখ হাসিনা '২০০৮ইং সালে সেনা সমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকার কতৃক সাধারন নির্বাচন ঘোষিত হলে, দলের নির্বাচনী ইশতেহারে "ডিজিটাল বাংলাদেশ" গড়ার অঙ্গিকার ব্যাক্ত করেন। তাঁর অভিনব আবিস্কার ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নে বিভোর করে বিপুল সংখ্যক নতুন প্রজম্মকে কাছে টানতে সক্ষম হন।নতুন প্রজম্মের নতুন ভোটারদের ভোট পক্ষে আসায় বিপুল ভোটে জিতে তিনি সরকার গঠন করেছিলেন।সরকারে বসে ক্ষমতা উপভোগ করার চাইতে ক্ষমতাকে জনগনের কল্যানে ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে কঠিন এক সংগ্রামের ব্রতি গ্রহন করেছিলেন। তিনি তাঁর সরকারকে "ডিজিটাল বাংলাদেশ"গড়ার কঠিন সংগ্রামে সর্বতোভাবে নিয়োজিত করেছিলেন।
         তিনি তাঁর কল্পিত দেশ উন্নয়নের ধারনাকে তিন ভাগে ভাগ করে সুদুরপ্রসারী, বাস্তব মুখী চিন্তাচেতনার এক কল্পিত উন্নয়ন রেখচিত্র "ভিশন২০২১" অংকন করে অগ্রসর হওয়ার মানসে সরকারের প্রাথমিক সংস্কার শুরু করেছিলেন। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহন করে উপস্থীত সমস্যা সমূহ চিহ্নিত করে  আপাত: সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহন করেন এবং সর্বতো ভাবে সফল হন। সরকারের সংস্কার কায্যক্রম শেষে তিনি তাঁর কল্পিত চিন্তার ফসল 'রুপকল্প ২০২১' ঘোষনা অনুযায়ী উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহন করেছিলেন।তিনি উক্ত 'রুপকল্প' গ্রহন ও বাস্তবায়নে স্বল্প মেয়াদি, মধ্যমেয়াদি, দীর্ঘমেয়াদি ছোট, মাঝারী ও মেঘা প্রকল্প গ্রহন করে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকতা কর্মচারি, মন্ত্রী পরিষদের সদস্যদেরকে স্ব-স্ব কাজে মনোযোগী হতে উৎসাহীত করে তোলেন। স্বল্প সময়ের মধ্যে বিগত জোট সরকারের পাঁছবারের দুর্নীতিতে শীর্ষে থাকা দেশটিকে রাষ্ট্রের সকল সুচকে উন্নয়নের দৃশ্যমান পয্যায় নিতে সক্ষম হন।ফলে ২০১৪/ ১৫ সালের বিএনপি জোট কতৃক লাগাতার আন্দোলন, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, রাহাজানি, আগুন সন্ত্রাস সত্বেও দেশকে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে উন্নিত করতে তিনি সক্ষম হয়েছিলেন।
            ২০১৪ সালের সাধারন নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতির জনকের কন্যা তদ্রুপভাবে বাংলাদেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ দেশে রুপান্তর করে বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর লক্ষে "রুপকল্প ২০৪১" ঘোষনা করেন।তিন ধাপে ইতিমধ্যে প্রকল্প গ্রহন ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন।  প্রথমবস্থায় বিশদলীয়জোটের শীর্ষনেতারা ডিজিটাল বাংলাদেশকে ব্যঙ্গাত্বকভাবে জাতির সামনে উপস্থাপন করার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে' 'রুপকল্প২০২১' বানচাল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন।তাঁরা দেশে বিদেশে অপ-প্রচার চালাতে থাকে যে-'শেখ হাসিনা '২০২১'সাল পয্যন্ত ক্ষমতায় থাকার মহাপরিকল্পনার নাম দিয়েছেন 'ভিশন ২০২১। ২০১৪ সালের সাধারন নির্বাচনে অংশ না নিয়ে গনতন্ত্রকে নস্যাৎ, চলমান উন্নয়ন অগ্রগতি বানচাল এবং নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়  বিএনপি।  সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক উপায়ে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার মানসে লাগাতার আন্দোলনের ডাক দেয় দলটি। ঘোষিত আন্দোলনে সকল প্রকার বৈধ, স্বীকৃত, নিয়মাতান্ত্রিক আন্দোলনের পথ পরিহার করে হঠকারীতার আশ্রয় গ্রহন করে। আগুন বোমা, নৈরাজ্য, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাসের মাধ্যমে দেশব্যাপি অস্থীর ও ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে জনজীবন অচল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। দেশে বিদেশে অপ-প্রচার চালাতে থাকে যে, শেখ হাসিনার অধিনে সুষ্ঠ নির্বাচন অসম্ভব, সাজানো নির্বাচনে অংশ নিয়ে কোন লাভ হবেনা। '২০৪১'সাল পয্যন্ত আওয়ামী লীগ ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার সকল আয়োজন সম্পন্ন করে রেখেছে। এমত:বস্থায় নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচন আদায় ব্যাতিত আন্দোলনের অন্যকোন বিকল্প নেই।
      পুর্বে দুইবারের ব্যার্থ তত্বাবধায়কের দাবিকে উপলক্ষ করে দেশব্যাপি বিশদলীয় জোট জামায়াতের চক্রান্তে শ্বেতসন্ত্রাসের কালোথাবা বিস্তার ঘটায়। তাঁদের এই ষড়যন্ত্রে যোগ দেয় নব্য রাজাকার শিবির, '৭১এর রাজাকার জামায়াত, সাম্প্রদায়িক উগ্র জঙ্গী গোষ্টি হেফাজত, চরম ডান-বাম গোষ্টি সমুহ। সর্বস্তরের জঙ্গিদের সঙ্গি করে বাসাবাড়ী ছেড়ে লাগাতার ৪২ দিন গুলশানের রাজনৈতিক কায্যালয়ে অবস্থান গ্রহন পূর্বক বিবৃতির মাধ্যমে দেশময় নৈরাজ্য সৃষ্টি করে অস্বাভাবিক পরিস্থীতির উদ্ভব ঘটানোর সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন।অবশেষে উক্ত আন্দোলনের কর্মসূচি স্থগিত বা বাতিল না করে রাজনৈতিক কায্যালয় ত্যাগ করে বাসায় আশ্রয় গ্রহন করেন।মূলত: জাতির জনকের কন্যার একান্তিক সাহষ, অসিম ধৈয্য, রাষ্ট্র নায়কোচিত মনোভাবের কারনে, চরমভাবে পরাজিত হয়ে লেজগুটিয়ে আগুন সন্ত্রাসের নেত্রী আন্দোলন বন্ধ নাকরে বাসায় চলে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন।
 ইতিমধ্যে আন্দোলন ব্যার্থতার কারনে জোট ও দলে নিষ্ক্রিয়তা দেখা দেয়ায় নতুন এবং অভিনব এক উপায় খুজে বের করেন। দেশ ইতিমধ্যে তাঁদের ব্যংঙ্গ, নাশকতা, নৈরাজ্য, সন্ত্রাস, জঙ্গীপনাকে উপেক্ষা করে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে রুপান্তরিত হয়ে জনমনে স্বস্তি, শান্তি, আনন্দ, উল্লাসের জোয়ার এসে গেছে। সরকারের প্রতি অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় জনগনের আস্থা ও বিশ্বাস অবিশ্বাস্যভাবে বেড়ে যাওয়ায় সরকার বিরুধী আন্দোলন সংগ্রামে জনসম্পৃত্ততা পাওয়া যাচ্ছিলনা। বার বার আন্দোলনের ঘোষনা দিয়ে জনসম্পৃত্ততার লেশমাত্র না পেয়ে পরিবার রক্ষার নতুন কলাকৌশলের সন্ধানে ব্যাপৃত হওয়া ব্যাতিত অন্যকোন উপায়ন্তর খুঁজে পাচ্ছেন না।
        ২০১৬ ইং এর মাঝামাঝি বিএনপি তাঁদের দলীয় জাতীয় কাউন্সিলের আয়োজন করে। উক্ত কাউন্সিলে বেগম জিয়া 'জাসদের' আন্দোলনের হাতিয়ার 'দ্বি-কক্ষ' বিশিষ্ট আইনসভা এবং আওয়ামীলীগের উন্নয়নের দর্শন' 'রুপকল্প' হাইজ্যাক করে 'চোখের লজ্জা' বিসর্জন দিয়ে 'রুপকল্প ২০৩০' খসড়া ঘোষনা প্রকাশ করে। ""উল্লেখ্য যে আওয়ামীলীগের ঘোষিত,('রুপকল্প ২০২১--২০৪১' নিম্নমধ্যম--উন্নত ও সমৃদ্ধ) বাংলাদেশের পরিকল্পিত স্বপ্ন-রেখচিত্র। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনা বলেননি যে '২০৩০' আগে বা পরে বাংলাদেশ "উন্নত মধ্যম' আয়ের" দেশে রুপান্তরীত হবে।"এই ফাঁক টুকুকে কাজে লাগিয়ে 'মূর্খের সাগর খালেদা জিয়া' মাঝামাঝি সময়কে 'মধ্যম' আয়ের 'রুপকল্প ভিশন ২০৩০' ঘোষনা করেন। ইহা অবুঝ মানুষও বুঝতে পারে ২১--৪১ এর মাঝামাঝি একটা সময়ে দেশমধ্য আয়ের সময় পার করবে।মধ্য আয়ের সময় পার করা ছাড়া নিম্ন থেকে লাফিয়ে উচ্চ হতে পারেনা।সেই সময়টুকুকে বেছে নিলেন তাঁদের নির্বাচনী ইশতেহারে "রুপকল্প ২০৩০" নামে।
         জনগনের সঙ্গে প্রতারনার নয়া কৌশল বটে!!! সৃষ্টিতে দলটি বন্দুকের নলে ক্ষমতা পেয়েছিল। ন্যাশানাল আওয়ামী পার্টির  ভাসানী অংশের মার্কা 'ধানের শীষ' হাইজ্যাক করে দল বানিয়েছিল।বিভিন্ন দলের সুযোগ সন্ধানী নেতাদের ভাগিয়ে এবং দালাল, রাজাকার, মানবতাবিরুধী অপরাধী, চৈনিক নাস্তিক কমিউনিষ্ট, সর্বজনবিদিত নাস্তিক সর্বহারাদের সমন্বয়ে সরকার গঠন করেছিল- বঙ্গবন্ধু হত্যাকারী মাষ্টার মাইন্ড "খুনি মেজর জিয়া"। তাঁরই ধারাবাহিকতা রক্ষাকল্পে তাঁর ছেড়ে দেয়া বীরঙ্গনাপত্নি খালেদা জিয়া, সবেধন নীলমণি দুর্নীতির বরপূত্র তাঁরেক জিয়া সম্পূর্ণভাবে দলটির উৎসের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আওয়ামী লীগ সরকারের তথা জাতির জনকের কন্যা 'শেখ হাসিনা'র "ডিজিটাল বাংলাদেশ দর্শন" দিনে দুপুরে, সবার চোখে ধূলা দিয়ে  হাইজ্যাক করার নিলর্জ্জ উদ্যোগ গ্রহন করেছে। এইরুপ দর্শন চুরি সাধারনত: রাজনীতিতে দেখা যায় না--ক্ষমতার লোভে তাও সম্ভব করেছে পরিবার রক্ষায় মরিয়া 'খালেদা জিয়া।"
 ruhulaminmujumder27@gmail.com
   
     



মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন