জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সুন্নী মাদ্রাসার স্বিকৃতি দিয়েছিলেন তাঁরকন্যা দিলেন কওমির স্বিকৃতি।
(রুহুল আমিন মজুমদার)

        নি:সন্দেহে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি, আওয়ামী পরিবার, আওয়ামী পরিবারের শুভাকাংক্ষীদের একটা অস্থির সময় পার হচ্ছে। কোনরুপ ঘোষনা ছাড়াই হেফাজতের সর্বস্তরের 'উলামা-মাশায়েখে'র সঙ্গে বঙ্গভবনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার আন্তরিকতা পূর্ণ বৈঠক হয়ে গেছে।বৈঠক শেষে খাওয়া-দাওয়াও অনুষ্ঠিত হয়েছে। উলামা- মাশায়েখদের সংঙ্গে শেখ হাসিনাও খাওয়ায় অংশ নিয়েছেন।বুঝতে কষ্ট হওয়ার কথা নয়, দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম ওলামাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক অত্যান্ত আন্তরিকতা পূর্ণ, সৌহার্দ্য পুর্ণ ছিল।
     বৈঠকের সময়টি আকস্মিক হতে পারে কিন্তু বৈঠকের পরিবেশ তৈরী, প্রাথমিক আলোচনা, দাবি দাওয়া পয্যালোচনা ইত্যাদি বিষয়গুলী কোন অবস্থায় হঠাৎ করে সংগঠিত হয়নি। এর পেছনে একদল সরকারি কর্মকর্তা, জাতীয় নেতা,  প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের কর্মকর্তা সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী টিমের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা অনেকদিন আগে থেকে লক্ষ করা গেছে।তাঁদের উক্ত প্রচেষ্টাকে সৌদি আরবের মক্কা ও মদীনার ইমামদ্বয়ের নেতৃত্বে গত কয়দিন আগে সফর করে যাওয়া উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন প্রতিনীধি দলের ভুমিকা এবং ৫৬০টি বহুমূখি মসজিদ নির্মানের ঘোষনা অনেকখানি এগিয়ে দিয়েছে।তাছাড়া সৌদি আরব সরকারের ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভুমিকা, পবিত্র মক্কান গরীর নিরাপত্তা বাংলাদেশের হাতে ছেড়ে দেয়ার অনূরুধ জানিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব, জঙ্গিবাদ দমনে সৌদি সরকারের সঙ্গে ঐক্যমত্য, ইমামদ্বয়ের ইসলাম সুরক্ষায় বর্তমান সরকারের ভূয়সি প্রশংসা এক্ষেত্রে কায্যকর ভূমিকা পালন করেছে।
    এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন। মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতা জাতির জনকের হাতে আসার পর  বেসরকারি স্কুল, কলেজ আধা সরকারি প্রতিষ্ঠান ঘোষনালগ্নে দেশের আনাছে কানাছে প্রতিষ্ঠিত হাজার হাজার মাদ্রাসাকেও আধা সরকারি ঘোষনা করে স্কুল কলেজের মায্যদায় বেতন- ভাতাদি দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করে বঙ্গবন্ধু তাঁর ঐকান্তিক দেশ প্রেমের বাহুতে তাঁদেরকে আবদ্ধ করতে পেরেছিলেন। তিনি  তাঁদেরকে ভিক্ষার হাত থেকে রক্ষার উদ্দেশ্যে ধর্মীয় নৈতিক শিক্ষার পাশাপাশি কর্মমূখি শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে সম্যক ধারনা দিতে পেরেছিলেন।ওলামা-মাশায়েখ গন তাঁর আন্তরিক আহব্বানকে যথারীতি গ্রহন করার কারনে তাঁদেরকে আজীবনের জন্যে ভিক্ষার হাত থেকে রক্ষা করে কর্মের হাতিয়ারে রুপান্তর করতে সক্ষম হয়েছিলেন।    
    কথিত যে, মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতে ইসলাম সাংগঠনিক ভাবে বিরুধিতা করেছিল,তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আলেম ওলামা তখনও ছিল না। স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীরাই তাঁদের সংগঠনের মূল শক্তির উৎস ছিল। আলেম-ওলামা গন তখনকার সময়ে  জামায়াতে ইসলামীর " মওদূদীবাদের ফেৎনা"র রাজনীতি পছন্দ না করলেও বেশিরভাগ আলেম "দ্বিজাতি তত্বে"র বিশ্বাসীহেতু  বাংলাদেশের অভ্যুদ্বয়ের প্রাক্কালে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ বিরুধীতা করেছিল।বেশির ভাগ আলেম পাকিসেনাদের গঠিত শান্তিকমিটির মেম্ভার,চেয়াম্যানের ভুমিকায় অবতির্ন হয়ে মুক্তিযোদ্ধা পরিবার গুলিকে ধ্বংস করার প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিল।তথাপি জাতির জনকের সরকার দেশের বিপূল সংখ্যক  কর্মহীন অলস অংশকে রাষ্ট্রীয় শিক্ষা কারিকুলামের আওতায় এনে কর্মমূখি করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কার্পন্য করেননি। তিনি মাদ্রাসার জন্যে ঢাকায় স্বতন্ত্র "মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড়" স্থাপন করে সেখান থেকে মাদ্রাসা সমূহকে নিয়ন্ত্রন করার উদ্যোগ গ্রহন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসা বোর্ড়ের বাড়তি দেশের অন্য কোথাও দ্বিতীয় আর একটি বোর্ড় গড়ার কাজে কোন সরকারই উদ্যোগ গ্রহন করেনি।যদিও সমসাময়িক কালে স্কুল, কলেজ পয্যায়ে ৫/৬ টি বোর্ড় মহানগর পয্যায় স্থাপিত হয়ে বাংলা শিক্ষা মাধ্যমকে ব্যাপক প্রসার ঘটাতে উদ্যোগি ভুমিকা পালন করে যাচ্ছে।
    জাতির জনকের  চিন্তাচেতনা যে সঠিক ছিল, তাঁর প্রমান বিভিন্ন ধারার সরকারের হাতে দেশ পরিচালিত হলেও, মাদ্রাসা শিক্ষা লক্ষভ্রষ্ট হয়নি। মুক্তি যুদ্ধের সরকার দেশ পরিচালনায় সুযোগ পেলে হয়তো বা অগ্রগতি আরো তড়িৎ গতিতে সম্পন্ন হ'ত।ইতিমধ্যে মাদ্রসা কারিকুলামে ইংরেজি, অংকের পাশাপাশি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা কায্যক্রমও বিস্তৃতি লাভ করেছে।নি:সন্দেহে বলতে পারি জাতির জনকের সৎ, যুগোপযোগী উদ্দেশ্য--সমাজের  অলস অংশটিকে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সাথে সম্পৃত্ত করে কর্মমূখি করার প্রচেষ্টা অনেকাংশেই সফল হয়েছে।
    উল্লেখ্য জাতির জনকের শাষনামলে পটিয়ার জঙ্গলে জরাজির্ণ অবস্থায় সবেমাত্র নতুন ভাবে  কওমী মতবাদে বিশ্বাসি মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়ে স্বল্প পরিসরে তাঁদের কায্যক্রম শুরু করেছিল।
    ইহা অনস্বিকায্য যে, মুক্তিযুদ্ধের ডামাডোলের মধ্যে ১৯৭১ ইং সালে চুপিসারে পটিয়ায় জঙ্গলে কওমী শিক্ষা প্রসারের উদ্দেশ্যে মাদ্রাসাটি স্থাপিত হলেও অচিরেই তাঁর শাখা প্রশাখা দেশব্যাপি ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমবস্থায় সূন্নী মতালম্বি আলেম ওলামাদের সঙ্গে বনিবনা না হলেও কালক্রমে কওমী অংশটি শক্তি সামর্থ্যে সুন্নীদের ছাড়িয়ে যায়।তাঁদের অস্তিত্ব বর্তমানে বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামে একাধিক মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার প্রতি লক্ষ করলেই বুঝা যায়। কর্মহীন শিক্ষার কারনে কওমী মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে নীজগ্রামে বা বাড়ীর আঙ্গিনায় আর একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে ভিক্ষার মাধ্যমে জীবন জীবিকা নির্বাহের প্রতি ঝুঁকে পড়া ছাড়া তাঁদের আর কোন উপায় থাকেনা।এমত:বস্থায় স্বল্প সময়ে পটিয়ার কওমী  মাদ্রাসার অনূকরনে দেশব্যাপি ব্যাঙের ছাতার মত কওমী মাদ্রাসা বিস্তার লাভ করে। বর্তমানে এইরুপ মাদ্রাসা এবং উহার অনুসারি অলস মস্তিস্কের ছাত্র শিক্ষকের পদভারে দেশব্যাপি বিরাট এক সামাজিক ক্যান্সার  বিস্তার লাভ করেছে। বিপূলসংখ্যক অলস মস্তিস্ক ভবিষ্যত জীবনযাপন, পরিবার প্রতিপালনের উপযুক্ত ক্ষেত্রের  সন্ধান না পেয়ে, হতাশা গ্রস্ততায় নিমজ্জিত হয়ে অধিকাংশই নৈরাশ্যবাদের প্রতি ঝুঁকে পড়েছে।
    উক্তরুপ অবস্থান থেকে উত্তরণের লক্ষে রাষ্ট্রের পদক্ষেপ গ্রহন নৈতিক দায়িত্ব এবং কর্তব্য।যেহেতু কল্যান রাষ্ট্রের মুলভিত্তিই হচ্ছে দেশের সকল নাগরিকের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা চিকিৎসার ন্যায় মৌলিক বিষয় গুলি সমভাবে নিশ্চিত করা। দেশের সকল নাগরিকের কর্মসংস্থান সহ জীবনমান উন্নয়নে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা।
    বর্তমানের এই সামাজিক ক্যান্সারকে গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা দিয়ে নিয়ন্ত্রন আদৌ সম্ভব নয়। প্রয়োজন সামাজিক ভাবে কর্মমূখি শিক্ষায় শিক্ষিত করে দেশ ও জনগনের কল্যানে তাঁদেরকে সদা উৎসাহিত করা।এই লক্ষকে সামনে রেখে বর্তমান সরকার সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাবনার আলোকে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে গঠিত কমিটি তাঁদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকে মিলিত হতে থাকে।সরকারের সঙ্গে আলোচনার প্রক্কালে তাঁরা প্রথম ধাক্কায় রাজনৈতিক বলয় পরিত্যাগের উদ্দেশ্যে গতবছর বিশদলীয় জোটের সঙ্গত্যাগ করেন।এর আগে তাঁদেরকে বিশদলীয় জোটের নেত্রী খালেদা জিয়া ক্ষমতা দখলের সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে শান্তিপুর্ণ "শাফলা চত্বরে"র সন্ধ্যা নাগাদ অবস্থানের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বর্তমান সরকারের পতন না হওয়া পয্যন্ত "লাগাতার অবস্থানে" রুপান্তরের মাধ্যমে দেশব্যাপি ব্যাপক নৈরাজ্য সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সন্ত্রাস, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, পবিত্র কোরানে আগুন সহ সমাজ ও রাষ্ট্রবিরুধী কর্মকান্ডের দিকে উক্ত অবস্থান সমাবেশকে ঠেলে দেয়।এতে দেশের আপামর জনগনের মধ্যে তাঁদের ধর্ম পালন এবং উদ্দেশ্য নিয়ে নেতিবাচক নানাহ প্রশ্ন দেখা দেয়।এমত:বস্থায় দলটির ব্যাপক সংখ্যক আলেম ওলামা সন্ত্রাস ও লুটপাটের মামলায় জড়িত হয়ে পড়েন এবং সরকারের সঙ্গত দমন পীড়নের শিকারে পরিণত হন।
    দলের নেতা মাওলানা আহম্মেদ সফি সাহেব বিশ দলের উদ্দেশ্য সম্পর্কে সম্যক ধারনাহেতু সরকারের বিরুদ্ধে সংগঠিত ভাবে রাজপথে নামা থেকে বিরত থাকেন। এবং কি তাঁর জামাতা হেফাজতের মহাসচিবকে কারাগারে নেয়ার পরও তিনি কোন প্রকার প্রতিক্রিয়া জানাতে অস্বিকৃতি জানান।ইতিমধ্যে সফি সাহেবের সরকার ও সরকারি দল সম্পর্কে ইতিবাচক কিছু বিবৃতি পত্র পত্রিকায় ছাপানো হয়।সরকার তাঁদের এই দুর্বল মহুর্তকে পুঁজি করে রাষ্ট্রীয় কারিকুলামে অন্তভূক্তির  অনুরুধ জানিয়ে সরকারি কর্মকর্তা ও বিশিষ্ট রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিনীধি সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করে তাঁদের নিকট প্রেরণ করেন। শুরু হয় দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ইতিবাচক আলোচনা।উক্ত আলোচনার ফলশ্রুতিতে গত ১০/০৪/ ২০১৭ ইং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে তাঁদের নেতৃস্থানীয় আলেম ওলামা সমন্বয়ে প্রায় ৩৫০ জনের বিরাট এক প্রতিনীধি বহর বঙ্গভবনে বৈঠকে বসেন। বৈঠকে তাঁদের দীর্ঘদিনের দাবী "দাওরায় হাদিছ" সর্বোচ্ছ শ্রেনীর উত্তিন্ন 'আলেমদের সনদ' বাংলা 'মাষ্টার্সের' সমমায্যদা দানের বিষয় মাননীয় "প্রধানমন্ত্রী" নীতিগত সিদ্ধান্ত ঘোষনা করেন।তাঁদের শিক্ষা ব্যবস্থা স্বতন্ত্রীকরন সাপেক্ষে পাঠ্যসুচি নির্ধারন ও অন্যান্ন বিষয়াদি বাস্তবায়নের জন্যে একটি শক্তিশালী কমিটি ঘোষনারও সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
    এরই মধ্যে রাষ্ট্রীয় পয্যায় গুরুত্বপূর্ণ কিছু সিদ্ধান্ত গত জানুয়ারী মাসে দেশব্যাপি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছিল। দেশের আলেম ওলামাদের শিল্প স্থাপনে উৎসাহিত করার লক্ষে সরকার স্বতন্ত্র একটি "শিল্পএলাকা" স্থাপনের ঘোষনা প্রদান করে। তাছাড়াও দেশের নতুন প্রতিষ্ঠিত একশ'টি শিল্পঞ্চলের যে কোনটিতে 'ওলামা মাশায়েখ'দের মধ্যে উদ্যোগী যে কাউকে শিল্পস্থাপনে অগ্রাধিকার এবং সর্বোচ্ছ রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতা দেয়ার ঘোষনা দেয়া হয়। এতেই প্রতিয়মান হয়- সরকার সমাজের অলস অংশটিকে কর্মমূখি করে দেশ ও জনগনের সম্পদে পরিণত করার ক্ষেত্রে আন্তরিকতার কোন অভাব নেই।
    এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য-- জাতির জনক বঙ্গবন্ধু যে সমস্ত আলেম ওলামাদের রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে সমাজের সম্পদে পরিণত করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন তাঁরা অতিশয় ধর্মপালনে উদার প্রকৃতির ছিলেন।মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নিলেও ইসলাম ধর্মের ক্ষতিকারক কোন কর্মকান্ডে তাঁদের দেখা যায়নি। বাঙ্গালী সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ইতিহাস ঐতিহ্যকে  অবজ্ঞা করলেও অবস্থান গ্রহনকরেনি। হয়ত বা জ্ঞানের পরিধি কম হওয়ায় এমন ব্যাত্যায় হতে পারে। ইসলাম কোন জাতির ইতিহাস, ঐতিহ্য, কৃষ্টি, সংস্কৃতি গ্রহন বর্জনের সুনির্দিষ্ট কোন রুপরেখা দেয়নি। আরব দেশে ইসলাম ধর্ম আগমনের আগে তাঁদের অনুসৃত জাতিগত ঐতিহ্য, ইতিহাস, কৃষ্টি, সংস্কৃতি  ইসলাম ধর্ম গ্রহনের পরে পরিবর্তিত করেনি।তদ্রুপ বিশ্বের কোথাও কোন জাতির কৃষ্টি পরিবর্তিত হওয়ার কোন উদাহরন আজ পয্যন্ত স্থাপিত হয়নি।
    এখানে লক্ষনীয় বিষয়টি হচ্ছে--কওমী শ্রেনীর আলেম ওলামাগন "ইসলাম ধর্ম" বিষয়ক বিভিন্ন কর্মকান্ডে গোড়া থেকেই গোঁড়ামীকে প্রাধান্য দিতে দেখা যায়।যদিও ইসলামে গোঁড়ামীর কোন স্থান নেই।ইসলাম মানবজাতির জন্যে প্রেরিত আল্লহর পছন্দের শ্রেষ্ঠ ধর্ম।আল্লাহর প্রেরিত আসমানী কিতাব "কোর'আন'' সমগ্র মানবজাতির কল্যানে প্রেরিত একমাত্র "ধর্মগ্রন্থ।" বিশ্বমানবতার কল্যানে প্রেরিত ধর্ম 'ইসলাম'কে শুধুমাত্র মুসলমানদের একক ধর্মে রুপান্তরের প্রচেষ্টা কাম্য হতে পারেনা।
    কওমী শ্রেনীর আলেম- ওলামা এবং তাঁদের অনুসারিগন বাঙ্গালীর হাজার বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্য, কৃষ্টি,  সংস্কৃতিকে শুধুমাত্র অবজ্ঞাই করেনা-- শক্ত অবস্থান গ্রহন করে প্রচলিত রাষ্ট্রব্যবস্থাকেই হুমকির মূখে ঠেলে দিতে কার্পন্য করে না। যাহা মক্কা ও মদীনার ইমামদ্বয় বার বার হুশিয়ারি উচ্ছারন করে বলে গেলেন--" ইসলামে এইরুপ আচরন বিধিসকমত নয়"।তাঁদের প্রতিহত করা রাষ্ট্র যন্ত্রের জন্যে ফরজ। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তি, আওয়ামী পরিবার, গনতান্ত্রমনা জনগোষ্টির যতসব ভয়ের কারন এখানেই।সর্বস্তরে জাতির জনকের কন্যার প্রতি আস্থা বিশ্বাসের কোন ঘাটতি থেকে নয়,উল্লেখিত আলেমদের বৈশিষ্টের কারনেই জনগন শংকিত।
     ইসলামের প্রথম যুগের সৌন্দয্যে, উদায্যে আকৃষ্ট হয়ে দলে দলে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেছিলেন। খোলাফায়ে রাশেদীনের শাষনামলে এবং তৎপরবর্তিতে সাহাবা এবং ওলি আউলিয়াগন  ইসলাম ধর্মকে করেছেন প্রসারিত, মুসলিম ধর্মের অনুসারিগন হয়েছেন মহিমাম্বিত।
    দু:খ্য জনক হলেও সত্য, খোলাফায়ে রাশেদীনের পর একদল মসুলমান উগ্রতা, হিংসা, গোঁড়ামীকে প্রাধান্য দিয়ে ইসলাম ধর্মকে করেছে বিতর্কিত,মুসলমানদের অস্তিত্বকে  করে তুলেছে বিপন্ন।বর্তমান যুগেও বিশ্বের দেশে দেশে ইসলাম ধর্মকে সামনে রেখে বিস্তার ঘটেছে জঙ্গিবাদ, হানাহানি, রেশারেশি, হত্যা, আত্মহত্যার ন্যায় ঘৃনিত, ইসলামে পরিত্যাজ্য কর্মকান্ড।বাংলাদেশেও এর ব্যাতিক্রম নয়---এখানেও সময় সময় উগ্রতা মাথা ছাড়া দিয়ে উঠতে দেখা যায়।
    এমত:বস্থায় ইসলামী ফাউন্ডেশনের আমন্ত্রনে মক্কা ও মদীনার ইমামদ্বয় বাংলাদেশ সফর ছিল অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপয্যমন্ডিত। ইসলামী ফাউন্ডেশন আয়োজিত আলেম-ওলামাদের সমাবেশে সম্মানীত ইমামদ্বয় ইসলামের মূলনীতি সম্পর্কে তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য উপস্থাপন করেন। বাংলাদেশের আপামর জনগন তাঁদের বক্তব্যকে আন্তরিকভাবে গ্রহন করে, সকল প্রকার উগ্রতা, গোঁড়ামী পরিহারের দৃডরুপ স্পষ্ট হতে না হতেই দেশের শীর্ষ "আলেম- ওলামা"গন রাষ্ট্রীয় ধারায়  ফিরে আসার অঙ্গিকার নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের প্রধান "মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা  শেখ হাসিনার" সাথে একান্ত বৈঠকে মিলিত হন।
    তাঁরা বৈঠকশেষে সৌহার্দপুর্ণ পরিবেশে রাষ্ট্রীয় আতিথ্য গ্রহন করেন এবং "শেখ হাসিনা ও বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারে"র দীর্ঘায়ু কামনা করে  বিশেষ মোনাজাত করেন।
   

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার সরকার মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যাতত্ব দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস ঐতিহ্যে বিতর্ক উত্থাপনের অভিযোগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন।মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে বসবাস করে,মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার মত দৃষ্টতা দেখিয়ে নি:সন্দেহে তিনি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। এহেন গর্হিত বক্তব্য প্রদানকারী বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার রাখতে পারেননা।মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত অঙ্গিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কোন দল বা জোটের রাজনীতি করারঅধিকার নীতিগতভাবেই থাকতে পারেনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি সকল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করে সর্বচ্ছ আদালতের রায় অনুযায়ী '৭২এর সংবিধান অবিকল বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবী।বাংলাদেশেরজনগন চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ এগিয়ে যাক,মুক্তিযুদ্ধে সাগরসম রক্ত ঢেলে সেই অঙ্গিকারের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেছিল।স্বাধীন বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বসবাসকরে,পরাধীনতার গান শুনতে দেশ স্বাধীন করেনি বাংলার জনগন। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৩ বছরের বিরামহীন সংগ্রামের ফসল মুক্তিযুদ্ধ।সেইযুদ্ধে উপনিবেশিক পাকিস্তানের আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত সেনাবাহিনীকে নিরস্ত্র বাঙালীরা পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছিল।সেই স্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশেপরাজিত শক্তির দোষর,তাঁদের প্রেতাত্বাদের রাজনীতি করার কোন নৈতিক অধিকার নেই।জাতির জনক তাঁদের রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগন জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলায় রাজাকারের কোন স্থান দিতে চায়না। তাই খালেদা জিয়ার ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টার দৃষ্টান্তমুলক সাজার আশা পোষন করে।কোন রাজনৈতিক সমঝোতার ফাঁদে যেন এই মামলা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়,তাঁর গ্যারান্টিও সরকারের নিকট বাংলাদেশের জনগন চায়। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু Ruhul Amin ------------------------------ খালেদা জিয়াকে সমাবেশের অনুমতি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি আশাহত----04 /01 / 0016 ইং পোষ্ট -==================================প্রখ্যাত দার্শনিক,চিন্তাবিদ সক্রেটিসকে কম বেশি আমরা সবাই জানি।সক্রেটিস কোন যুগে জম্মগ্রহন করে মানব সেবায় ব্রতি হয়ে আজও দেশে দেশে অনুকরনীয় অনুসরনীয় হয়ে আছেন তাও আমরা জানি।নিশ্চয়ই তখনকার সময় থেকে বর্তমানের সমাজ, রাষ্ট্রব্যাবস্থাপনা আরো শত গুন উন্নত,সমৃদ্ধ,সভ্য।সক্রেটিস ছুতোর, কামার ইত্যাদি প্রসঙ্গে এসে প্রশ্ন করতেন, 'তাহলে রাষ্ট্র নামক জাহাজটি বিগড়োলে কাকে দিয়ে সারাইয়ের কাজ করাবো'হাসান আজিজুল হক (সক্রেটিস) পৃ : ১৬ সক্রেটিসের এ বিখ্যাত কথপোকথন কারো অজানা নয়। আদর্শবান ন্যায়নীতিভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করবার জন্য সক্রেটিসকে হেমলক পান করতে দেয়া হয়েছিল(বিষ), তারপরও তিনি আইনের প্রতি অটুট শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন- এটাও ছিল তার নির্ভীক বিদ্রোহ। তাকে বাঁচবার সুযোগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি আইনঅবজ্ঞা করেননি, আইনে যদি তার মৃত্যুদন্ড হয় তবে তিনি অবশ্যই তা মানতে রাজি। এখানেও তার সমস্ত জীবনকর্মের অনেক গভীর দর্শন কাজ করেছে। তার উপর মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল একথা তিনি ও এথেন্সবাসী জানতেন। কিন্তু যে আইনে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলো- তিনি সে আইনকে শ্রদ্ধা জানালেন এ অর্থে মানুষকে আইনের প্রতি অনুগত থাকতে বললেন। সেই আইন কারা তৈরি করছে তা তিনি জানতেন তাতে তো আর আইন নামক বিষয়টিকে জীবন থেকে বিতাড়িত করা যায় না।"পবিত্র কোরানে পাকে ও উল্লেখ করা হয়েছে, বিধর্মী কতৃক শাষিত রাষ্ট্র ও সরকার সমুহের আইন মেনে ধর্ম কর্ম করার।এই রুপ রাষ্ট্র ব্যাবস্থায় শুক্রবারের খতবায় বিশেষ আয়াৎ সংযুক্ত আছে এবং নিয়মিত নামাজের সাথে আর ও কয় রাকাত নামাজ আদায় করার নির্দেশনা দেয়া আছে।পরিতাপের বিষয়টি হচ্ছে,গত কয়েক বছর থেকে লক্ষ করা যাচ্ছে একশ্রেনীর মানুষ রাষ্ট্রীয় আইন রীতি নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সর্ব উচ্চ আদালতের রায়কে ও অমান্য করে হরতাল অবরোধ,প্রকাশ্য আদালতের সমালোচনা করতে।শুধু তাই নয় আন্দোলনের নামেপ্রকাশ্য দিবালোকে যাত্রীভর্তি চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে জীবন্ত মানবকে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিতে।উল্লেখ করা প্রয়োজন যারা এই সমস্ত আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিলেন,এবং প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেন যে আদালতের বিরুদ্ধেও কর্মসূচি দেয়া যায়,বক্তব্য দেয়া যায়,তাঁরা কখনই কোন অপরাধীর বিচার কায্য সম্পাদন করেছেন তদ্রুপ কোন উদাহরন নেই। যেমন আমি প্রথমেই বলতে চাই ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছেন রাতের অন্ধকারে।বঙ্গবন্ধুর অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? পৃথীবিপৃষ্টের সব চাইতে নিরাপদ স্থান জেলখানা।সেখানে রাতের অন্ধকারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করাহল,তাঁরা বন্দি ছিলেন, তারপর ও তাঁদের অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে বুদ্ধিজীবিদের বাসা থেকেতুলে নিয়ে জ্যান্ত মানুষকে হত্যা করা হল, তাঁদের অপরাধ কি বিচার করে মিমাংসা করা যেতনা? খালেদ মোশারফ., কর্নেল তাহেরসহ অসংখ্য মুক্তি যুদ্ধা সেনা অফিসারকে মেজর জিয়ার নির্দেশে নির্মম নির্দয় ভাবে হত্যা করা হল, অনেককে গুলী করার পর প্রান পাখী উড়াল দেয়ার আগেই জ্যান্ত মাটি চাপা দেয়া হল, তাঁদের বিচার কি প্রচলিত সেনা আইনে করা যেতনা? অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধা,আওয়ামী লীগের নেতা,মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারি,ব্লগার,প্রকাশক,লেখক সাহিত্যিক,সাংবাদিক হত্যা করা হল,তাঁদের অপরাধ কি আইনের আওতায় এনে বিচার করা যেতনা?আন্দোলনের নামে ঘোষনা দিয়ে মানুষ হত্যা করা,সম্পদ নষ্ট করা,লুটপাট করা কি মানবতা বিরুধী অপরাধের আওতায় পড়েনা?মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ হত্যা লুটপাট,অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার হতে পারে,যুদ্ধাবস্থা ব্যাতিরেকে ঘোষনা দিয়ে তদ্রুপ কর্মে জড়িতদের এবং হুকুমদাতার বিচার কেন হবেনা? নগদ অপরাধের ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার করা কি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব নয়? নাগরীকদের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া কি রাষ্ট্রের কর্তব্যের মধ্যে পড়েনা? যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন তাঁরা কি বিচার পাওয়ার সাংবিধানীক অধিকারের মধ্যে পড়েনা?সেই যুগের সক্রেটিস যদি নীজের উপর আনীত মিথ্যা অভিযোগ জেনে শুনে মেনে নিতে পারেন,সভ্যতার চরম শীখরে দাঁড়িয়ে যারা এই যুগে আইনকে, রাষ্ট্রীয় রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রকাশ্য আন্দোলনের নামে মানুষ খুন করেছেন,সম্পদের হানী ঘটিয়েছেন তাঁরা কি সক্রেটিস যুগের আগের অধিবাসি মনে করেন নীজেদের? তাঁরা নীজেরা নিজেদের মনে করুন কিন্তু মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে কোন যুগে ফিরিয়ে নিতে চান?তাঁদের যদি এতই অসহ্য লাগে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিশেষ কিছু আদর্শের প্রতিপালনের অঙ্গিকারের ভিত্তিতে ৩০লক্ষ শহিদের আত্মদান,পৌনে চারলাখ মাবোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস- তবে জনগনকে সংঘটিত করে আর একটি গনবিপ্লব ঘটিয়ে তাঁদের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে স্বাধীনতার পক্ষের কোন মানুষ বাধাতো দিচ্ছেনা। যাদের নেতৃত্বে, যাদের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন করা হল, তাঁরাতো ক্ষমতায় আছে,তাঁদের কেন জোর পুর্বক,ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে খমতা থেকে নামাতে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে,আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে জনজীবন দুর্বিসহ করে তোলার চক্রান্ত করতে দেয়া হবে।এই সেই দিন মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা নিয়ে যিনি বিতর্ক উত্থাপনের বৃথা চেষ্টা করে জনরোষের আওতার মধ্যে এখনও রয়েছেন,তাঁর সৌখিন বাসভবন পাহারায় আপনার সরকার অতিরীক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে বাধ্য হয়েছে,তিনি কি ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে সমাবেশ করার প্রসাশনিক অনুমতি পায়। বর্তমান গনতান্ত্রিক বিশ্বের একটি দেশের উদাহরন কি কেউ দিতে পারবেন,স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা সেই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে?একটি দেশকি কেউ দেখাতে পারবে যে,সেই দেশের কোনমীমাংসিত এবং প্রতিষ্ঠিত কোন সত্যকে ৩০/৪০ বছর পর আবার জনসমক্ষে উত্থাপন করে লক্ষ লক্ষ শহিদ পরিবারের অন্তরের আগুনে"ঘি "ঢেলে দেয়ার চেষ্টা, কোন প্রতিষ্ঠিত দল বা তাঁর নেতা করেছেন? কেন এই পয্যন্ত সরকার তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা না করে উলটো সমাবেশ করে তাঁর মতবাদ প্রচারের অনুমতি দেয়া হল??তাঁরা নীজেদের এত ক্ষমতাবান মনে করেন কিভাবে? তাঁরা কি করে আবার জাতির নিকট ক্ষমা চাওয়া ছাড়াই প্রকাশ্য সভা সমাবেশ করার অধিকার পায়?কেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সংসদে ঘোষনা দিয়েও এখন পয্যন্ত আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন করছেন না? মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আপনার আশ্বাস বাংলার মানুষ অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করে।সুতারাং জনগনকে দেয়া প্রতিশ্রুতি আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন কল্পে তড়িৎ ব্যাবস্থা গ্রহনকরবেন, জনগনের এই আস্থা বিশ্বাস এখন ও অটুট রয়েছে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,শাপলা চত্বরের সেই দিনের ষড় যন্ত্র মোতাবেক যদি খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার মানুষ রাজপথে নেমে আসতেন,পরিকল্পনাঅনুযায়ী সেনা বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়েআপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারতো,আপনাকে কি জীবিত বাঁচতে দেয়া হত? আপনার পরিবারের কাওন সদস্যকে বাঁচতে দিত?আওয়ামী লীগের থানা উপজেলা পয্যায়ের কোন নেতা কি বাঁচতে দিত? তাঁরা কি সে দিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ধর্ম বিদ্বেষী সরকার উৎখাত করে ধর্মধারি সরকার কায়েমের রাজনৈতিক শ্লোগানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নামক মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ধারক বাহক জননন্দিত এইসংগঠনটিকেও জ্যান্ত কবর দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত ছিল না?আমি আজ আরও একটি বিষয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,সম্পুর্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন চরমপন্থী নেতার অবিকল নকল করা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার--,গনতান্ত্রিকদেশে,গনতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে, গনতান্ত্রীক সংগঠনের,গনতন্ত্রের পুজারি মনে করা কোন নেতা, রাজপথে আন্দোলন না করে, সীমাবদ্ধ কক্ষে ৪১দিন অবস্থান করে, ৪২ জন মানুষকে পুড়িয়ে মেরে,পরবর্তিতে বিচারের সম্মুখ্যিন না হয়ে নিয়মাতান্ত্রীক আন্দোলনের সুযোগ কোন দেশের, কোন নেতা বা কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, এমন উদাহরন কি কেউ দিতে পারবে?? ষড় যন্ত্রের জাল কোথায় বিস্তৃত ছিল তাঁর প্রমান সেই নেত্রী নীজেই তাঁর উষ্মায় প্রকাশ করে দম্ভস্বরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে সুশৃংখল বাহিনীকে তাচ্ছিল্য করে বলে ছিল"সেনাবাহিনী বেঈমান"!!!এর পরও আপনার সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আনায়ন না করে প্রকাশ্য সভার অনুমতি দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার গুলির মনে আগাত দেয়া হয়েছে আমি মনে করি। গত পৌর নির্বাচনে রায় দিয়েছে তাঁর বিচার করার,তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অর্থই হচ্ছে জনগনের ক্ষোভ তাঁর উপর থেকে এখনও কমেনি,বরঞ্চ কয়েক গুন বেড়ে জনরোষের পয্যায় পৌছে গেছে।আপনার সরকারের তাঁকে দেয়া বাড়তিনিরাপত্তাই তা প্রমান করে।সুতারাং দেশ ও জাতি এই রাজনৈতিক লাশের ভার বইবার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা।দেশের এবং জাতির প্রয়োজন বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মত শিক্ষিত, বিজ্ঞান মনস্ক,প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত সমৃদ্ধ জাতি গঠনে জ্ঞানসমৃদ্ধ, আধুনিক সভ্য দুনিয়ার নেতৃত্ব গ্রহন করার মত গুনাবলি সমৃদ্ধ নেতার। কোন অবস্থায় সক্রেটিসের আগের যুগে জাতি ফেরৎ যেতে চায়না।পরিশেষে বলতে চাই,আর কোন সংগাত নয়,এবার চাই সমৃদ্ধি।আর নয় জঙ্গিপনা,এবার চাই ধর্মনিরপেক্ষতা।আর নয় সাম্প্রদায়ীকতা,এবার চাই অসম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা।আর নয় পাকি ভাবধারা প্রতিষ্ঠা,এবার চাই মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের সফল বাস্তবায়ন। জয় আমাদের হবেই হবে, অশুভ অপশক্তির পরাজয় অবশ্যাম্ভাবি। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা