বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অ-সাম্প্রদায়িক বটে তবে নাস্তিক্যবাদে বিশ্বাসী নয়।
(রুহুল আমিন মজুমদার)
অদ্য মুজিবনগরের বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠন দিবসে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে ফুল দিতে গিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আওয়ামীলীগ সভানেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দৃডতার সঙ্গে বলেন--'সাম্প্রদায়িকতার শেষ চিহ্নটুকু মুছে দেয়ার লক্ষে কাজ করে যাচ্ছে তাঁর সরকার।" তাঁর আগে কওমী মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের শীর্ষনেতা আল্লামা সফি সাহেবের নেতৃত্বে প্রায় তিন শতাধিক ওলামা--গনভবনে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করে তাঁদের শিক্ষা সনদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং ওলামা শিক্ষা বোর্ড়কে স্বতন্ত্র শিক্ষা বোর্ড হিসেবে অনুমোদনের বিষয় নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।উক্ত বৈঠকে সরকার প্রধান নীতিগত ভাবে বিপুল সংখ্যক মাদ্রাসার ছাত্র/ ছাত্রীদের ভবিষ্যত জীবন অন্ধাকারাচ্ছন্নতার বিবেচনায় তাঁদের শিক্ষা সনদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিদান এবং স্বতন্ত্র শিক্ষাকায্যক্রম পরিচালনার নিমিত্তে শিক্ষাবোর্ড়ের দাবি মেনে নেন।
জাতীয় ও আন্তজাতিক বিশ্বে ঘটনাটি ব্যাপক চাঞ্চল্যতা সৃষ্টি করে। ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা অনুষ্ঠান এবং বিবিসির বাংলা অনুষ্ঠানে ধারাবাহিক উক্ত চাঞ্চল্যকর বৈঠকের বিভিন্ন দিক নিয়ে ব্যাপক আলোচনা অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে।তাঁদের অনুষ্ঠানে উক্ত বৈঠকের যত না ইতিবাচক দিক নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে তার চেয়ে বেশী সাম্প্রদায়িকতায় সূদুর প্রসারী নেতিবাচক দিক নিয়েই আলোকপাত করতে দেখা গেছে। বাংলাদেশের রাজনীতির অঙ্গনেও বিষয়টি সর্বমহলে তোড়পাড় সৃষ্টি করেছে।
বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তাঁর বিবৃতিতে বলেন আওয়ামী লীগ ধর্ম নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছে।বিবিসি তাঁদের ভাষ্যে বলেন --'আওয়ামীলীগ সাম্প্রদায়িক শক্তির নিকট আত্মসমর্পন করেছে'। বিএনপির মহাসচিব ফকরুল ইসলাম বলেন--'শেখ হাসিনা কোন ধর্মই পালন মানেন না।' ভয়েস অব আমেরিকা তাঁদের মূল্যায়নে বলেন --'আওয়ামী লীগ ইসলামী জঙ্গী উত্থান রোধে মাঝপথে বিঘ্নতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে আপোষ করেছে।' আওয়ামী লীগের দলের অভ্যন্তরেও বিষয়টি অধিকাংশ নেতাকর্মী সহজভাবে নিতে পারেন নাই। আড়ালে আবড়ালে নানামূখী মন্তব্য করতেও পিছপা হচ্ছেনা তৃনমূল থেকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পয্যন্ত।
প্রীয় পাঠক বন্ধুগন দেশীয় রাজনীতি এবং আন্তজাতিক মহলের চাঞ্চল্যতাই প্রমান করে--'শেখ হাসিনা সঠিক সময় উপযুক্ত কাজটি করতে পেরেছেন।' আমরা সকলেই জানি-- হেফাজতের সংঙ্গে বৈঠকটি রাষ্ট্রীয় গনভবনে সরকার প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সরকার বিরুধী দেশী-বিদেশী মহল, দেশী- বিদেশী মিডিয়া সমূহ তাঁদের মানষিক অস্থীরতাহেতু বারবার আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দলকে জড়িয়ে বিভিন্নমূখি অভিমত প্রকাশ করে চলেছে। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরেও বিষয়টিকে দলীয় অ-সাম্প্রদায়িক চেতনার বিপরীত হিসেবে গন্য করেছেন অনেকেই।
এমত:বস্থায় মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে ফুল দিতে এসে শেখ হাসিনা উল্লেখিত মন্তব্যটি করেছেন। লক্ষনীয় বিষয়টি হচ্ছে বাংলাদেশের শতভাগ মানুষ গনতন্ত্র চায়, গনতান্ত্রিক শাষন ব্যবস্থা কামনা করে। শতভাগ মানুষ বিশ্বাস করে গনতান্ত্রিক শাষনই বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতি নিশ্চিত করতে পারে। কিন্তু গনতন্ত্রের সর্বক্ষেত্রে ভারসাম্যতার প্রয়োজনীয়তা একজনও বিশ্বাস করে কিনা সন্দেহ আছে। বাংলাদেশের শতভাগ মানুষ মনে করে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা চিকিৎসা ৫টি বিষয় নিশ্চিত করাই কল্যান রাষ্ট্রের মূলভিত্তি।কিন্তু একজনও বিশ্বাস করে কিনা আমার সন্দেহ আছে--রাষ্ট্র ও সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্টিকে রাষ্ট্রীয় বিশেষ ব্যবস্থাপনায় মূলস্রোতের সঙ্গে একিভূত করাও কল্যান রাষ্ট্রের অন্যতম ভিত্তির মধ্যে একটি। গনতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকুক শতভাগ মানুষই কামনা করে কিন্তু গনতন্ত্রের কেন্দ্রিকতা একজনও অনুসরন করেনা। বাংলাদেশের ন্যায় রাজনীতি সচেতন জনগন বিশ্বের অন্যকোন দেশে নেই কিন্তু রাজনীতির ক্ষেত্রে আদর্শিক শিক্ষায় এতবেশি পিছিয়ে পড়া নেতাকর্মী অন্যকোন দেশেও নেই-- ইহাও সত্য।
নবনির্বাচিত সাধারন সম্পাদক বিশেষ কিছু প্রনিদানযোগ্য বক্তব্যই তোলে ধরেছেন বিভিন্ন সময়ে।তিনি একাধিকবার বলেছেন---'রাজনীতি ও সাংবাদিক পেশায় হাইব্রিডের আধিক্যে যোগ্যরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে।' একই সঙ্গে তিনি বলেন--'সাংবাদিকতা ও রাজনীতিতে মান কমে যাচ্ছে। নব্য হাইব্রিডদের তিনি কাউয়ার সংগে তুলনা করতেও পিছপা হননি। সর্বশেষ তিনি মন্তব্য করলেন নব্য হাইব্রিড আওয়ামী লীগারেরা ফার্মের মুরগী। অর্থাৎ বসে বসে পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহন করে মোটাতাজা হওয়াই তাঁদের একমাত্র লক্ষ--'দল, সরকার, রাজনীতি সম্পর্কে তাঁদের চিন্তাচেতনায় কিছু ধারন করার প্রয়োজন আছে কিনা তাঁদের সেদিকে কোন ভাবনাই নেই।'
প্রীয় পাঠক বন্ধুরা---দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের পর সামন্তপ্রথা উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়েছে।কিন্তু তাঁর অবশিষ্টাংশ এখনও সমাজ দেহের রন্ধে রন্ধে রয়ে গেছে। সামন্ত প্রথা উচ্ছেদের পর গনতন্ত্র আসি আসি বলে আজও পথিমধ্যেই আটকে আছে। আটকে আছে বললে ভুল হবে আটকিয়ে রেখেছে সামন্ততন্ত্রের বীজে লালিত অতিবিপ্লবী মানষিকতা সম্পন্ন রাজনীতিবীদেরা। তাঁরা দেশীয় আবহাওয়ায় গনতন্ত্রের সংজ্ঞা নির্ধারন নাকরে আমদানী করেছেন পশ্চিমের আবহাওয়ায় পুষ্ট গনতন্ত্রকে। যার ফলে পশ্চিমা গনতন্ত্র বাংলাদেশ তথা ভারতীয় উপমহাদেশের আবহাওয়ার হৃষ্টতা না পেয়ে দৈন্যতায় রুপান্তরীত হয়ে পেশী শক্তিকেই বারবার উৎসাহীত করে চলেছে। ব-দ্বিপের উর্বর ভূমিতে জাতীয় বীজের গনতন্ত্র চর্চা না করে পাশ্চাত্য গনতন্ত্র চর্চা করতে গিয়ে সামন্তবাদের গরিমায় অন্ধ মানুষদের রোষানলে পড়ে গনতন্ত্র সঠিকভাবে বিকশিত না হয়ে প্রত্যহ মৃত্যুর মিছিলকে বড় করে তুলছে।
আমি এখানে একটিমাত্র উদাহরন দিয়ে ব্যাপারটি আপনাদেরকে বুঝিয়ে বলতে চাই-- "একনেতা একদেশ---বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ" শ্লোগানের প্রবক্তা ছিল তথাকথিত '৭২--৭৫ ইং এর হাইব্রিড আওয়ামী লীগারদের। উক্ত শ্লোগানভীতি বাঙ্গালী জাতির জনককে বাংলাদেশ অকালে হারাতে হয়েছিল।বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ সংক্ষেপে "বাকশাল" একদলীয় শাষন ছিল বটে কিন্তু কখনই একব্যাক্তির বংশানুক্রমিক শাষন ছিলনা। তাছাড়াও একদলীয় শাষনের অভ্যন্তরে বহুদলের সংমিশ্রনে জাতীয় দলের রুপরেখায় অংকিত ছিল তাঁর থিম। হাইব্রিড আওয়ামী লীগারগন সেদিন "একনেতা একদেশ ---বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ " শ্লোগানে জাতীয় দলের শাষন ব্যবস্থাকে একদলীয় বংশানুক্রমিক শাষনের বৃত্তে বেঁধে, জনগনের মাঝে বঙ্গবন্ধুর উদার রাজনৈতিক ধ্যানধারনাকে সংকীর্ণতার গন্ডিতে আবদ্ধ করেছিলেন অত্যান্ত সূকৌশলে।
এই প্রসঙ্গে আমি দেশের রাজনীতি বিশ্লেষকদের নিকট জানতে চাই--সমবায় সমিতির নির্বাচন কি একনেতার আজীবন ক্ষমতায় থাকার জন্য অনুষ্ঠিত হয় নাকি সমিতিভুক্ত যে কোন সদস্যই নেতা পদের জন্য নির্বচনে অংশ গ্রহন করতে পারে? আরো সহজে যদি বলি---খোলাফায়ে রাশেদীনের সময়কালে মসজিদে বসে সাহাবীদের অধিকাংশের মতামতের ভিত্তিতে খলীফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হ'ত নাকি বংশানুক্রমলিক হত? খলীফা নির্বাচনের উক্ত পদ্ধতিতে কি গনতন্ত্রের অভাব ছিল? খলীফা নির্বাচনে বংশানুক্রমিক ধারা কখনও কি বহাল ছিল? জাতির জনক বঙ্গবন্ধু মুজিবের 'বাকাশাল" শাষনে শাষক নির্বাচনের নীতি উল্লেখিত দুই নীতির বাহিরে অন্য কোন নীতি বা পদ্ধতি ছিল ?
যদি না হয়ে থাকে তাহলে "একনেতা একদেশ---বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ" শ্লোগান কেন দেয়া হয়েছিল? বঙ্গবন্ধুকে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত করতে? আজকেও দেখি আওয়ামী লীগের মধ্যে তৎদ্রুপ একটি শক্তিশালী শ্রেনীর উম্মেষ ঘটেছে। তাঁরাও প্রকারান্তরে বলতে চায়---"শেখ হাসিনার বাংলাদেশ"।অতিভক্তির লক্ষন আর কি!
রাষ্ট্র ধর্ম "ইসলাম"এর বিরুদ্ধে আনীত রীট উচ্চ আদালত বাদীদের এই রুপ রিট মামলা দাখিলের কোন অধিকার বা এখতিয়ার নেই মর্মে খারিজ করেছে। অনেক আওয়ামী লীগ নেতা শোকর গোজার করে নীজের দিলকে শীতল করেছে।সাথে বন্ধুদেরকেও শীতলতার পরশ দিতে ভুল করেননি। এই পরশ তিনি কি মুজিব আদর্শের সৈনীক হয়ে বুঝেশুনে দিলেন, নাকি আওয়ামী লীগ করি-- ভাল লাগে তাই। দর্শন, আদর্শ, নীতি জানার প্রয়োজন কি নেই ?
পবিত্র কোরানে বহু জায়গায় আল্লাহপাক বলেছেন,"জ্বীন এবং এনসান"এর বিচার হবে কিয়ামতের ময়দানে"।কোরানের কোন জায়গায় বলেছেন জ্বীন এবং মসুলমান ধর্মের অনুসারীদের বিচার হবে?"এনসান বলতে মানব জাতিকে বুঝায় নাকি শুধু ইসলাম ধর্মালম্বিদের বুঝায়? ইহজগতে বিচারের পর আদালত শাস্তি নিশ্চিত করেন কার কি শাস্তি--আইন অনুযায়ী প্রাপ্য। কেয়ামতের ময়দানে আল্লাহ মানব জাতি এবং জ্বিনের বিচার করবেন --সেই বিচার অনুষ্ঠিত হবে দুনিয়ায় কৃত অপরাধের, নিশ্চয়ই ধর্মের বিচার হবেনা। ইসলাম যেহেতু আল্লাহ প্রেরিত তাঁর পছন্দের একমাত্র ধর্ম এবং তাঁর সৃষ্ট মানবজাতিকে সৎ পথে থাকার নির্দেশনা মুলক একমাত্র ধর্ম। সেহেতু ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা কৃতকর্মের শাস্তি ভোগের পর হলেও বেহেস্তে যাওয়ার আশা করতে পারেন; অন্য কোন মনগড়া ধর্মের মানুষ এই সুবিধা আল্লাহর নিকট থেকে আশা করতে পাবেনা।
জাতির জনকের সাড়ে তিনবছরের ধর্মনিরপেক্ষতার শাষনে ইসলামের প্রচার প্রসারে সে সমস্ত মৌলিক কাজ গুলী হয়েছিল তাঁর অকাল মৃত্যুর পর যে কয়জন শাষক বাংলাদেশ শাষন করেছেন--সবাই তো ইসলামের জন্য জীবনবাজি রাখা শাষক। গত ৪০বছরে তুলনামুলক তাঁর সিকিভাগ কাজ সব সরকার মিলে করেছে ? যদি না করে থাকে-- রাষ্ট্র ধর্ম করে কি হবে ?ইহা কি ইসলামের সঙ্গে শাষকশ্রেনীর প্রতারনার আওতায় পড়েনা? যে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম--আমার "লালিত বিশ্বাস ইসলাম ধর্মের" কোন কাজ করেনা; শুধুমাত্র সংবিধানে শোভা পায় --সেই রাষ্ট্র ধর্ম সংবিধানে থাকার চাইতে না থাকাই শ্রেয়।
ধর্মনিরপেক্ষতা সকল ধর্মের কাজ সমভাবে করে তাঁর নিরপেক্ষতা প্রমান করে। সুতারাং নিরপেক্ষতার নীতি অধিক শ্রেয় নয় কি ? মক্কা- মদীনার ইমামদ্বয়ের বক্তব্যের সারমর্ম হচ্ছে --ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা এটি শুধু ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অস্তিত্বের বিষয় নয়, এটা সমগ্র জাতির এবং আমাদের মুসলিম সমাজের ধর্মীয় দায়িত্ব। ভাইগন এত বেশী ধর্মানুরাগী যদি হয়ে থাকেন তবে দেশরত্মের খোলাফায়ে রাশেদীনের শাষনের প্রতি আপনাদের সমর্থন পাওয়া যায়নি কেন? মদীনা সনদ অনুযায়ী দেশ শাষনের প্রস্তাবে সাড়া দেননি কেন? বর্তমানের আলেম সমাজ কি তাঁদের চেয়েও বড় কিছু?
বর্তমান সরকার দেশকে সঠিক ভাবে এগিয়ে নিচ্ছে শতকরা তিয়াত্তরজন মানুষ মনে করে। বিশ্ববাসিও মনে করে বাংলাদেশ তাঁর গন্তব্যপথে সঠিকভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর অ-সাম্প্রদায়িক শাষনে মোল্লাদের সনদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেয়া হয়নি? তখন ও কি দল আদর্শবিচ্যুত হয়েছিল? তখন যদি বঙ্গবন্ধু তাঁদের মুল জনগোষ্ট্রির স্রোতে মিশাতে না পারতেন, আজকের বাঙলাদেশ কেমন হ'ত--ভাবা যায়!!
প্রধানমন্ত্রী কওমী মাদ্রাসাকে এই মহুর্তে রাষ্ট্রীয় স্রোতধারায় আনতে ব্যর্থ্য হলে, আগামী বিশ বছরের মধ্যে একটি করে মাদ্রাসা প্রত্যেক বাড়ীর দরজায় প্রতিষ্ঠিত হয়ে হুরের আশায় শুধু রক্তাক্ত বাংলাদেশই দেখা যেত--পানির সন্ধান কোথাও পাওয়া যেত বলে মনে হয়না।বিশবছর পরের বাংলাদেশকে বিশ বছর আগে রক্ষা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যত বাংলাদেশকে বাসযোগ্য করার ক্ষেত্রে যুগান্তকারি দৃষ্টান্তই স্থাপন করেছেন। বাংলাদেশের এমন কোন নাগরিক কি আছেন--যিনি কওমী মাদ্রাসার গানীতিক উত্থান অ-স্বীকার করতে পারেন? তাঁদের জীবন জীবিকার তাগিদেই তাঁরা কওমী মাদ্রাসার উত্থান দ্রুত ঘটিয়েছেন।-জীবন জীবিকার গ্যারান্টি রাষ্ট্র দিতে পারলে মাদ্রাসা পত্তনের প্রয়োজন কি বলেন?
'৭৫--- ৯৬ দীর্ঘসময় অবহেলা, নিয্যাতন, নিপীড়নে যে দলটি তাঁর চুলপরিমাণ আদর্শ বিচ্যুৎ হয়নি সেই দলটি বিগত ৪০ বছরের ইতিহাসে বর্তমান সময়ে গৌরবের স্বর্ণশীখরে অধিষ্ঠিত থাকাবস্থায়, আদর্শের জলাঞ্জলী দিতে হবে!! যে সমস্ত মহল চিন্তা করে তাঁদের আদর্শ ধারন পাত্রটি নিয়েই প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক।
ইহাও একান্ত বাস্তবতা যে--অসাম্প্রদায়িক চেতনা লালন করলেও আওয়ামী লীগ ধর্মবিশ্বাসেও অনুরাগী।তাঁর প্রকৃষ্ট প্রমান বঙ্গবন্ধু তাঁর শাষনামলে যেমন নাস্তিক ধর্মদ্রোহিদের নাগরিকত্ব বাতিল করেছিলেন তেমনি তাঁর কন্যাও প্রমানীত নাস্তিকদের জেল হাজতে প্রেরন করেছেন।নবী (স:) এর কটুক্তিকারীদের সর্বচ্ছো শাস্তি মৃত্যুদন্ড করার প্রস্তাবও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করা যায় কিনা চিন্তাভাবনা করছেন।আবার ধর্মাশ্রয়ী দলযে নয় তাঁর প্রমানতো নিত্যই রেখে যাচ্ছে ধর্ম ব্যাবসায়ী, ধর্মশ্রয়ী দলগুলী।
ruhulaminmujumder27@gmail.com
(রুহুল আমিন মজুমদার)
অদ্য মুজিবনগরের বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠন দিবসে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে ফুল দিতে গিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আওয়ামীলীগ সভানেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দৃডতার সঙ্গে বলেন--'সাম্প্রদায়িকতার শেষ চিহ্নটুকু মুছে দেয়ার লক্ষে কাজ করে যাচ্ছে তাঁর সরকার।" তাঁর আগে কওমী মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের শীর্ষনেতা আল্লামা সফি সাহেবের নেতৃত্বে প্রায় তিন শতাধিক ওলামা--গনভবনে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করে তাঁদের শিক্ষা সনদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং ওলামা শিক্ষা বোর্ড়কে স্বতন্ত্র শিক্ষা বোর্ড হিসেবে অনুমোদনের বিষয় নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।উক্ত বৈঠকে সরকার প্রধান নীতিগত ভাবে বিপুল সংখ্যক মাদ্রাসার ছাত্র/ ছাত্রীদের ভবিষ্যত জীবন অন্ধাকারাচ্ছন্নতার বিবেচনায় তাঁদের শিক্ষা সনদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিদান এবং স্বতন্ত্র শিক্ষাকায্যক্রম পরিচালনার নিমিত্তে শিক্ষাবোর্ড়ের দাবি মেনে নেন।
জাতীয় ও আন্তজাতিক বিশ্বে ঘটনাটি ব্যাপক চাঞ্চল্যতা সৃষ্টি করে। ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা অনুষ্ঠান এবং বিবিসির বাংলা অনুষ্ঠানে ধারাবাহিক উক্ত চাঞ্চল্যকর বৈঠকের বিভিন্ন দিক নিয়ে ব্যাপক আলোচনা অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে।তাঁদের অনুষ্ঠানে উক্ত বৈঠকের যত না ইতিবাচক দিক নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে তার চেয়ে বেশী সাম্প্রদায়িকতায় সূদুর প্রসারী নেতিবাচক দিক নিয়েই আলোকপাত করতে দেখা গেছে। বাংলাদেশের রাজনীতির অঙ্গনেও বিষয়টি সর্বমহলে তোড়পাড় সৃষ্টি করেছে।
বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তাঁর বিবৃতিতে বলেন আওয়ামী লীগ ধর্ম নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছে।বিবিসি তাঁদের ভাষ্যে বলেন --'আওয়ামীলীগ সাম্প্রদায়িক শক্তির নিকট আত্মসমর্পন করেছে'। বিএনপির মহাসচিব ফকরুল ইসলাম বলেন--'শেখ হাসিনা কোন ধর্মই পালন মানেন না।' ভয়েস অব আমেরিকা তাঁদের মূল্যায়নে বলেন --'আওয়ামী লীগ ইসলামী জঙ্গী উত্থান রোধে মাঝপথে বিঘ্নতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে আপোষ করেছে।' আওয়ামী লীগের দলের অভ্যন্তরেও বিষয়টি অধিকাংশ নেতাকর্মী সহজভাবে নিতে পারেন নাই। আড়ালে আবড়ালে নানামূখী মন্তব্য করতেও পিছপা হচ্ছেনা তৃনমূল থেকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পয্যন্ত।
প্রীয় পাঠক বন্ধুগন দেশীয় রাজনীতি এবং আন্তজাতিক মহলের চাঞ্চল্যতাই প্রমান করে--'শেখ হাসিনা সঠিক সময় উপযুক্ত কাজটি করতে পেরেছেন।' আমরা সকলেই জানি-- হেফাজতের সংঙ্গে বৈঠকটি রাষ্ট্রীয় গনভবনে সরকার প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সরকার বিরুধী দেশী-বিদেশী মহল, দেশী- বিদেশী মিডিয়া সমূহ তাঁদের মানষিক অস্থীরতাহেতু বারবার আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দলকে জড়িয়ে বিভিন্নমূখি অভিমত প্রকাশ করে চলেছে। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরেও বিষয়টিকে দলীয় অ-সাম্প্রদায়িক চেতনার বিপরীত হিসেবে গন্য করেছেন অনেকেই।
এমত:বস্থায় মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে ফুল দিতে এসে শেখ হাসিনা উল্লেখিত মন্তব্যটি করেছেন। লক্ষনীয় বিষয়টি হচ্ছে বাংলাদেশের শতভাগ মানুষ গনতন্ত্র চায়, গনতান্ত্রিক শাষন ব্যবস্থা কামনা করে। শতভাগ মানুষ বিশ্বাস করে গনতান্ত্রিক শাষনই বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতি নিশ্চিত করতে পারে। কিন্তু গনতন্ত্রের সর্বক্ষেত্রে ভারসাম্যতার প্রয়োজনীয়তা একজনও বিশ্বাস করে কিনা সন্দেহ আছে। বাংলাদেশের শতভাগ মানুষ মনে করে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা চিকিৎসা ৫টি বিষয় নিশ্চিত করাই কল্যান রাষ্ট্রের মূলভিত্তি।কিন্তু একজনও বিশ্বাস করে কিনা আমার সন্দেহ আছে--রাষ্ট্র ও সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্টিকে রাষ্ট্রীয় বিশেষ ব্যবস্থাপনায় মূলস্রোতের সঙ্গে একিভূত করাও কল্যান রাষ্ট্রের অন্যতম ভিত্তির মধ্যে একটি। গনতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকুক শতভাগ মানুষই কামনা করে কিন্তু গনতন্ত্রের কেন্দ্রিকতা একজনও অনুসরন করেনা। বাংলাদেশের ন্যায় রাজনীতি সচেতন জনগন বিশ্বের অন্যকোন দেশে নেই কিন্তু রাজনীতির ক্ষেত্রে আদর্শিক শিক্ষায় এতবেশি পিছিয়ে পড়া নেতাকর্মী অন্যকোন দেশেও নেই-- ইহাও সত্য।
নবনির্বাচিত সাধারন সম্পাদক বিশেষ কিছু প্রনিদানযোগ্য বক্তব্যই তোলে ধরেছেন বিভিন্ন সময়ে।তিনি একাধিকবার বলেছেন---'রাজনীতি ও সাংবাদিক পেশায় হাইব্রিডের আধিক্যে যোগ্যরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে।' একই সঙ্গে তিনি বলেন--'সাংবাদিকতা ও রাজনীতিতে মান কমে যাচ্ছে। নব্য হাইব্রিডদের তিনি কাউয়ার সংগে তুলনা করতেও পিছপা হননি। সর্বশেষ তিনি মন্তব্য করলেন নব্য হাইব্রিড আওয়ামী লীগারেরা ফার্মের মুরগী। অর্থাৎ বসে বসে পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহন করে মোটাতাজা হওয়াই তাঁদের একমাত্র লক্ষ--'দল, সরকার, রাজনীতি সম্পর্কে তাঁদের চিন্তাচেতনায় কিছু ধারন করার প্রয়োজন আছে কিনা তাঁদের সেদিকে কোন ভাবনাই নেই।'
প্রীয় পাঠক বন্ধুরা---দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের পর সামন্তপ্রথা উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়েছে।কিন্তু তাঁর অবশিষ্টাংশ এখনও সমাজ দেহের রন্ধে রন্ধে রয়ে গেছে। সামন্ত প্রথা উচ্ছেদের পর গনতন্ত্র আসি আসি বলে আজও পথিমধ্যেই আটকে আছে। আটকে আছে বললে ভুল হবে আটকিয়ে রেখেছে সামন্ততন্ত্রের বীজে লালিত অতিবিপ্লবী মানষিকতা সম্পন্ন রাজনীতিবীদেরা। তাঁরা দেশীয় আবহাওয়ায় গনতন্ত্রের সংজ্ঞা নির্ধারন নাকরে আমদানী করেছেন পশ্চিমের আবহাওয়ায় পুষ্ট গনতন্ত্রকে। যার ফলে পশ্চিমা গনতন্ত্র বাংলাদেশ তথা ভারতীয় উপমহাদেশের আবহাওয়ার হৃষ্টতা না পেয়ে দৈন্যতায় রুপান্তরীত হয়ে পেশী শক্তিকেই বারবার উৎসাহীত করে চলেছে। ব-দ্বিপের উর্বর ভূমিতে জাতীয় বীজের গনতন্ত্র চর্চা না করে পাশ্চাত্য গনতন্ত্র চর্চা করতে গিয়ে সামন্তবাদের গরিমায় অন্ধ মানুষদের রোষানলে পড়ে গনতন্ত্র সঠিকভাবে বিকশিত না হয়ে প্রত্যহ মৃত্যুর মিছিলকে বড় করে তুলছে।
আমি এখানে একটিমাত্র উদাহরন দিয়ে ব্যাপারটি আপনাদেরকে বুঝিয়ে বলতে চাই-- "একনেতা একদেশ---বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ" শ্লোগানের প্রবক্তা ছিল তথাকথিত '৭২--৭৫ ইং এর হাইব্রিড আওয়ামী লীগারদের। উক্ত শ্লোগানভীতি বাঙ্গালী জাতির জনককে বাংলাদেশ অকালে হারাতে হয়েছিল।বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ সংক্ষেপে "বাকশাল" একদলীয় শাষন ছিল বটে কিন্তু কখনই একব্যাক্তির বংশানুক্রমিক শাষন ছিলনা। তাছাড়াও একদলীয় শাষনের অভ্যন্তরে বহুদলের সংমিশ্রনে জাতীয় দলের রুপরেখায় অংকিত ছিল তাঁর থিম। হাইব্রিড আওয়ামী লীগারগন সেদিন "একনেতা একদেশ ---বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ " শ্লোগানে জাতীয় দলের শাষন ব্যবস্থাকে একদলীয় বংশানুক্রমিক শাষনের বৃত্তে বেঁধে, জনগনের মাঝে বঙ্গবন্ধুর উদার রাজনৈতিক ধ্যানধারনাকে সংকীর্ণতার গন্ডিতে আবদ্ধ করেছিলেন অত্যান্ত সূকৌশলে।
এই প্রসঙ্গে আমি দেশের রাজনীতি বিশ্লেষকদের নিকট জানতে চাই--সমবায় সমিতির নির্বাচন কি একনেতার আজীবন ক্ষমতায় থাকার জন্য অনুষ্ঠিত হয় নাকি সমিতিভুক্ত যে কোন সদস্যই নেতা পদের জন্য নির্বচনে অংশ গ্রহন করতে পারে? আরো সহজে যদি বলি---খোলাফায়ে রাশেদীনের সময়কালে মসজিদে বসে সাহাবীদের অধিকাংশের মতামতের ভিত্তিতে খলীফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হ'ত নাকি বংশানুক্রমলিক হত? খলীফা নির্বাচনের উক্ত পদ্ধতিতে কি গনতন্ত্রের অভাব ছিল? খলীফা নির্বাচনে বংশানুক্রমিক ধারা কখনও কি বহাল ছিল? জাতির জনক বঙ্গবন্ধু মুজিবের 'বাকাশাল" শাষনে শাষক নির্বাচনের নীতি উল্লেখিত দুই নীতির বাহিরে অন্য কোন নীতি বা পদ্ধতি ছিল ?
যদি না হয়ে থাকে তাহলে "একনেতা একদেশ---বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ" শ্লোগান কেন দেয়া হয়েছিল? বঙ্গবন্ধুকে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত করতে? আজকেও দেখি আওয়ামী লীগের মধ্যে তৎদ্রুপ একটি শক্তিশালী শ্রেনীর উম্মেষ ঘটেছে। তাঁরাও প্রকারান্তরে বলতে চায়---"শেখ হাসিনার বাংলাদেশ"।অতিভক্তির লক্ষন আর কি!
রাষ্ট্র ধর্ম "ইসলাম"এর বিরুদ্ধে আনীত রীট উচ্চ আদালত বাদীদের এই রুপ রিট মামলা দাখিলের কোন অধিকার বা এখতিয়ার নেই মর্মে খারিজ করেছে। অনেক আওয়ামী লীগ নেতা শোকর গোজার করে নীজের দিলকে শীতল করেছে।সাথে বন্ধুদেরকেও শীতলতার পরশ দিতে ভুল করেননি। এই পরশ তিনি কি মুজিব আদর্শের সৈনীক হয়ে বুঝেশুনে দিলেন, নাকি আওয়ামী লীগ করি-- ভাল লাগে তাই। দর্শন, আদর্শ, নীতি জানার প্রয়োজন কি নেই ?
পবিত্র কোরানে বহু জায়গায় আল্লাহপাক বলেছেন,"জ্বীন এবং এনসান"এর বিচার হবে কিয়ামতের ময়দানে"।কোরানের কোন জায়গায় বলেছেন জ্বীন এবং মসুলমান ধর্মের অনুসারীদের বিচার হবে?"এনসান বলতে মানব জাতিকে বুঝায় নাকি শুধু ইসলাম ধর্মালম্বিদের বুঝায়? ইহজগতে বিচারের পর আদালত শাস্তি নিশ্চিত করেন কার কি শাস্তি--আইন অনুযায়ী প্রাপ্য। কেয়ামতের ময়দানে আল্লাহ মানব জাতি এবং জ্বিনের বিচার করবেন --সেই বিচার অনুষ্ঠিত হবে দুনিয়ায় কৃত অপরাধের, নিশ্চয়ই ধর্মের বিচার হবেনা। ইসলাম যেহেতু আল্লাহ প্রেরিত তাঁর পছন্দের একমাত্র ধর্ম এবং তাঁর সৃষ্ট মানবজাতিকে সৎ পথে থাকার নির্দেশনা মুলক একমাত্র ধর্ম। সেহেতু ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা কৃতকর্মের শাস্তি ভোগের পর হলেও বেহেস্তে যাওয়ার আশা করতে পারেন; অন্য কোন মনগড়া ধর্মের মানুষ এই সুবিধা আল্লাহর নিকট থেকে আশা করতে পাবেনা।
জাতির জনকের সাড়ে তিনবছরের ধর্মনিরপেক্ষতার শাষনে ইসলামের প্রচার প্রসারে সে সমস্ত মৌলিক কাজ গুলী হয়েছিল তাঁর অকাল মৃত্যুর পর যে কয়জন শাষক বাংলাদেশ শাষন করেছেন--সবাই তো ইসলামের জন্য জীবনবাজি রাখা শাষক। গত ৪০বছরে তুলনামুলক তাঁর সিকিভাগ কাজ সব সরকার মিলে করেছে ? যদি না করে থাকে-- রাষ্ট্র ধর্ম করে কি হবে ?ইহা কি ইসলামের সঙ্গে শাষকশ্রেনীর প্রতারনার আওতায় পড়েনা? যে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম--আমার "লালিত বিশ্বাস ইসলাম ধর্মের" কোন কাজ করেনা; শুধুমাত্র সংবিধানে শোভা পায় --সেই রাষ্ট্র ধর্ম সংবিধানে থাকার চাইতে না থাকাই শ্রেয়।
ধর্মনিরপেক্ষতা সকল ধর্মের কাজ সমভাবে করে তাঁর নিরপেক্ষতা প্রমান করে। সুতারাং নিরপেক্ষতার নীতি অধিক শ্রেয় নয় কি ? মক্কা- মদীনার ইমামদ্বয়ের বক্তব্যের সারমর্ম হচ্ছে --ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা এটি শুধু ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অস্তিত্বের বিষয় নয়, এটা সমগ্র জাতির এবং আমাদের মুসলিম সমাজের ধর্মীয় দায়িত্ব। ভাইগন এত বেশী ধর্মানুরাগী যদি হয়ে থাকেন তবে দেশরত্মের খোলাফায়ে রাশেদীনের শাষনের প্রতি আপনাদের সমর্থন পাওয়া যায়নি কেন? মদীনা সনদ অনুযায়ী দেশ শাষনের প্রস্তাবে সাড়া দেননি কেন? বর্তমানের আলেম সমাজ কি তাঁদের চেয়েও বড় কিছু?
বর্তমান সরকার দেশকে সঠিক ভাবে এগিয়ে নিচ্ছে শতকরা তিয়াত্তরজন মানুষ মনে করে। বিশ্ববাসিও মনে করে বাংলাদেশ তাঁর গন্তব্যপথে সঠিকভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর অ-সাম্প্রদায়িক শাষনে মোল্লাদের সনদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেয়া হয়নি? তখন ও কি দল আদর্শবিচ্যুত হয়েছিল? তখন যদি বঙ্গবন্ধু তাঁদের মুল জনগোষ্ট্রির স্রোতে মিশাতে না পারতেন, আজকের বাঙলাদেশ কেমন হ'ত--ভাবা যায়!!
প্রধানমন্ত্রী কওমী মাদ্রাসাকে এই মহুর্তে রাষ্ট্রীয় স্রোতধারায় আনতে ব্যর্থ্য হলে, আগামী বিশ বছরের মধ্যে একটি করে মাদ্রাসা প্রত্যেক বাড়ীর দরজায় প্রতিষ্ঠিত হয়ে হুরের আশায় শুধু রক্তাক্ত বাংলাদেশই দেখা যেত--পানির সন্ধান কোথাও পাওয়া যেত বলে মনে হয়না।বিশবছর পরের বাংলাদেশকে বিশ বছর আগে রক্ষা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যত বাংলাদেশকে বাসযোগ্য করার ক্ষেত্রে যুগান্তকারি দৃষ্টান্তই স্থাপন করেছেন। বাংলাদেশের এমন কোন নাগরিক কি আছেন--যিনি কওমী মাদ্রাসার গানীতিক উত্থান অ-স্বীকার করতে পারেন? তাঁদের জীবন জীবিকার তাগিদেই তাঁরা কওমী মাদ্রাসার উত্থান দ্রুত ঘটিয়েছেন।-জীবন জীবিকার গ্যারান্টি রাষ্ট্র দিতে পারলে মাদ্রাসা পত্তনের প্রয়োজন কি বলেন?
'৭৫--- ৯৬ দীর্ঘসময় অবহেলা, নিয্যাতন, নিপীড়নে যে দলটি তাঁর চুলপরিমাণ আদর্শ বিচ্যুৎ হয়নি সেই দলটি বিগত ৪০ বছরের ইতিহাসে বর্তমান সময়ে গৌরবের স্বর্ণশীখরে অধিষ্ঠিত থাকাবস্থায়, আদর্শের জলাঞ্জলী দিতে হবে!! যে সমস্ত মহল চিন্তা করে তাঁদের আদর্শ ধারন পাত্রটি নিয়েই প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক।
ইহাও একান্ত বাস্তবতা যে--অসাম্প্রদায়িক চেতনা লালন করলেও আওয়ামী লীগ ধর্মবিশ্বাসেও অনুরাগী।তাঁর প্রকৃষ্ট প্রমান বঙ্গবন্ধু তাঁর শাষনামলে যেমন নাস্তিক ধর্মদ্রোহিদের নাগরিকত্ব বাতিল করেছিলেন তেমনি তাঁর কন্যাও প্রমানীত নাস্তিকদের জেল হাজতে প্রেরন করেছেন।নবী (স:) এর কটুক্তিকারীদের সর্বচ্ছো শাস্তি মৃত্যুদন্ড করার প্রস্তাবও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করা যায় কিনা চিন্তাভাবনা করছেন।আবার ধর্মাশ্রয়ী দলযে নয় তাঁর প্রমানতো নিত্যই রেখে যাচ্ছে ধর্ম ব্যাবসায়ী, ধর্মশ্রয়ী দলগুলী।
ruhulaminmujumder27@gmail.com
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন