অ-শুভশক্তির আস্ফালনরোধে প্রয়োজন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির সম্মিলীত প্রতিরোধ।
রুহুল আমিন মজুমদার

    সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্য সরানোর দাবিতে জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররম এলাকায় অবস্থান নিয়েছিল ইসলামী আন্দোলনের নেতা চরমোনাই পীরের নেতৃত্বে।দলটির প্রচার সম্পাদক আহমদ আব্দুল কাইয়ুম জানিয়েছেন, সমাবেশে যোগ দিতে নেতাকর্মীরা সারাদেশ থেকে ঢাকায় এসেছেন।সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর  মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম, প্রেসিডিয়াম সদস্য  সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব  মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

       এর আগে ২০ এপ্রিলের মধ্যেই সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের ভাস্কর্য সরাতে আল্টিমেটাম দিয়েছিল চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দলটির ২১ এপ্রিল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার কথা ছিল। পুলিশের অনুমতি না পাওয়ায় বায়তুল মোকাররমের সামনে নামাজের পর সমাবেশ করে। সমাবেশ থেকে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা থাকলে তা না করে সরকারকে আবারো সময় বেঁধে দিয়েছেন আগামী রোজার ঈদ পয্যন্ত।

যে কোন রাজনৈতিক দল তাঁদের আদর্শ অনুযায়ী বক্তব্য দেয়ার, দাবী জানানোর, আন্দোলনের হুমকি ধমকি দেয়ার, আন্দোলন করার অধিকার গনতান্ত্রীক রাষ্ট্রে বৈধ।আমার বক্তব্য সেটি নয়। আমার আলোচ্য বিষয়--তাঁদের সমাবেশে প্লেকার্ডে লেখা স্লোগান এবং মুখে ধ্বনিত শ্লোগান নিয়ে। তাঁদের বহনকরা প্লেকার্ডের লেখা এবং স্লোগানে একটি বিশেষ সম্প্রদায়কে হিন্দুস্তান যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

     আমি প্রথমেই সম্মানীত সুধিমহলের নিকট প্রশ্ন রাখতে চাই---সবাই জানে গ্রিক ভাস্কায্য এবং তাঁরাও মুখে বলে গ্রিক মূর্তি। গ্রিক ভাস্কায্য হোক আর মূর্তি হোক আমি সেদিকে যাবনা।আমি জানতে চাই গ্রিক দেশের নাগরিকেরা কি হিন্দু? যদি হিন্দু না হয়, দোষ কেন হিন্দুদের হবে? গ্রিসের নাগরিকেরা যদি হিন্দুই হতেন, ধরে নেয়া যেত বিশ্বায়নের যুগে হিন্দুদের গাঁয়ে  দোলা লেগেছে। তাছাড়া গ্রিক ভাস্কায্য বা মুর্তি যাই বলিনা কেন--বসিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট কতৃপক্ষ, হিন্দুদের কেন হিন্দুস্থানে যেতে হবে? গ্রিক মুর্তির সাথে ষাটলক্ষ হিন্দু যদি হিন্দুস্থানেই যেতে হয়, বাবরী মসজিদের সাথে ছয়কোটি বাঙ্গালী মসুলমানকে বাংলাদেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত যদি শিবসেনা বা বিজেপি নেয় (উভয় হিন্দু সাম্প্রদায়িক দল) তাহলে কি চরমোনাই পীর সাহেবদের খুব ভাল কিছু হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে ?

      চরমোনাই পীর সাহেবেরা ভুলে গেছেন '৭১ এর মুক্তি যুদ্ধে সেদিনের বহনকরা প্লেকার্ডে উল্লেখিত সাম্প্রদায়িক চেতনাসমৃদ্ধ শ্লোগানের চরম পরাজয়ের গ্লানী। তখন কেবলমাত্র শতকরা  ১৫ থেকে ২০ জন শিক্ষিত মসুলমানের বিচরন ছিল এই অঞ্চলে। নতুনভাবে উদ্ভব শিক্ষিত মসুলমান সমাজে বিজ্ঞানের ছোঁয়াও তখন তেমন লাগেনি। মুসলিম সমাজে নতুন সৃষ্ট একটি মধ্যবিত্ত শ্রেনী সবেমাত্র বর্ধিঞ্চুতা পেতে যাচ্ছিল। তাঁদের ছেলেমেয়েরাই সকল বাঁধা উপেক্ষা করে ইংরেজি শিক্ষার প্রতি ঝুকে পড়ে। বর্ধিঞ্চু সেই শিক্ষিত সমাজের অগ্রজ 'শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার আলোকে অত্রাঞ্চলে বিদ্যমান ধর্মবেদে বাঙ্গালী জাতীর ঐক্যবদ্ধরুপ "বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ" আবিস্কার করেছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল এই অঞ্চলকে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সব শ্রেনীপেশার মানুষ মিলেমিশে বসবাস করার উপযোগী করে গড়ে তোলার সুদুরপ্রসারী চিন্তা।

      ২০০বছরের বৃটিশ শাষনে আজকের ভাস্কায্য বিরুধীরাই মুসলিম সমাজকে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত রেখেছিল।তাঁদের সে সময়কার 'ইংরেজী শিক্ষা হারাম' ফতোয়ার কারনে কালক্রমে মসুলমান সমাজ অতীতের শৌয্যবিয্য হারিয়ে হিন্দুদের তল্পিবাহকে পরিণত হয়েছিল। মুসলিম সমাজের সেইদিনের ক্রান্তিকাল পার করে পাকিস্তান রাষ্ট্র ক্যেমের অব্যবহিত পর ধর্মীয় উম্মদনা সৃষ্টি করে বাঙ্গালীর সংস্কৃতি, কৃষ্টি, জাতীয়তাবোধ উম্মেষে সামান্যতম বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। ২৩ বছর পশ্চিম পাকিস্তানী শাষক শ্রেনীর প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সর্বাঙ্গীন পৃষ্টপোষকতা পাওয়া সত্বেও বাঙ্গালীর অমলীন সত্বাকে রুখতে পারেনি। বাঙ্গালী মননে তাঁর আবহমান কালের অকৃত্তিম বন্ধন ভাংলা ভাষার সাংস্কৃতি ,কৃষ্টি, ভাষাগত মিল হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ধর্মবেদে যে জাতীয়তাবোধের উম্মেস ঘটিয়েছিলেন 'জাতির জনক বঙ্গবন্ধু', সেই চেতনাবোধে ঐক্যবদ্ধ বাঙ্গালী '৭১ ইং সালে সকল প্রকার সাম্প্রদায়িক শক্তির কবর রচনা করে, ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদী অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ সৃষ্টি করেছিল।

   স্বাধীনতার অব্যবহিত পর বঙ্গবন্ধু নতুন বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের মায্যদা দিয়েছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি। বাংলাদেশের রণ সঙ্গিতের মায্যদা দিয়েছিলেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রখ্যাত কবিতা "বিদ্রোহী" কবিতাটিকে।ভাষা আন্দোলনের অমর সঙ্গীত 'আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী' রচিত ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী'' বছরের প্রথমার্ধ্যে ফেব্রুয়ারী মাসে, কোন বাঙ্গালী অবশিষ্ট থাকেনা মনের অজান্তেই গেয়ে উঠেনা, শোকে মূহ্যমান বাঙ্গালী। ফেব্রুয়ারি মাস এলে এমনকোন বই পড়ুয়া বাঙ্গালী নেই, যে বাঙ্গালীর মনে পড়ে না ''বঙ্গবিবেক আবুল ফজলের অমর রচনা-- ‘একুশ মানে মাথা নত না করা’।

   কবিগুরুর দেশপ্রেমের অমলিন শিখা, নজরুলের চির বিদ্রোহের আগুন,  গাফফার চৌধুরীর বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকার অর্জনের ক্ষেত্রে ত্যাগের শোকগাঁথা, আবুল ফজলের বাঙ্গালী জাতির শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়ানোর অনুপ্রেরনা যতদিন বাঙ্গালী মানসে অনুরনিত হবে, অনুপ্রানিত হবে ততদিন বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে সাম্প্রদায়ীকতার বিষবাস্প ছড়ানোর কোন সুযোগ কোন মহলের হবেনা। এই সত্যটি সেদিনের প্লে-কাড বহনকারী চরমোনাই পীর সাহেবদের অস্তিত্ব আবহমান টিকিয়ে রাখার স্বার্থেই বুঝা একান্ত প্রয়োজন ছিল। সমসাময়িক সময়ে প্রতিষ্ঠিত ধর্ম ব্যাবসায়ী, ইহুদির অনুসারি ইসলাম ধর্মে বিচরন করা বকধার্মিক, সাম্প্রদায়িক উগ্র ইহুদীবাদী শক্তির পতনের প্রতি পীর সাহেবের খেয়াল রাখা উচিৎ ছিল। যে চালটি পাতিলে বেশি লাফায়, পাতিলের বাহিরে আগুনের চুল্লি অথবা ঝাড়ুর আগায় তাঁর স্থান হয়।


        বাঙ্গালী চেতনায় যতবার আঘাত এসেছে বাঙ্গালী ততবার বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে চক্রান্ত প্রতিহত করেছে। তবু কালের পরিক্রমায় মীরজাফর থেকে মোস্তাক, মোস্তাক থেকে জিয়ার জম্ম হয়েছে এই বাংলায়, বাংলার গর্বীত মায়ের উদরে। তাঁরা কলংকীত করেছে বারেবারে, বিভিন্নভাবে বাঙ্গালীর জাতীয়তাবোধকে, বাঙ্গালীর শ্বাস্বত: সংস্কৃতি আবহমানকালের কৃষ্টিকে। বিশ্ব দরবারে বাঙ্গালী জাতি কে পরিচয় করে দিতে চেয়েছে-ভাষাহীন, সাম্প্রদায়িক, খুনী, আইন, বিচার, রাষ্ট্র কাঠামো না মানা অসভ্য জাতি হিসেবে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর তৎকালীন সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান একুশের চেতনাকে অত্যন্ত কৌশলে ধ্বংস করে দিতে চেয়েছিল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষা ভিত্তিক গড়ে উঠা সাংস্কৃতিক আন্দোলনকে তাঁর মেধা, কৌশল, প্রজ্ঞা এবং রাজনৈতিক দুরদর্শীতা দিয়ে তিলে তিলে দেশভিত্তিক আন্দোলনে রূপদান করেছিলেন। সেই দেশটির নামও রেখেছিলেন তিনি নীজের মুখে, স্বাধীনতা পাওয়ার মাত্র কয়বছর আগেই। মীর জাফর জিয়া অনুধাবন, অনুকরন করেছিলেন বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামের ধারাবাহিকতা, তাঁর শয়তানীর অন্তদৃষ্টি দিয়ে।কোথায় থেকে কোথায় এসে পরিনতি পেয়েছিল জাতির জনকের সংগ্রামের ইতিহাস। জিয়াও বঙ্গবন্ধুর শুরু থেকে ধংশের কৌশল অবলম্বন করে সুচুতুরতার সঙ্গে, অত্যান্ত সুক্ষভাবে। তিনি ভাষা আন্দোলনের মুলচেতনা বাঙ্গালী জাতিয়তা বোধকে কনডেম করে জিন্নাহর ধর্ম ভিত্তিক" দ্বি-জাতি " তত্ত্বের চেতনা প্রয়োগ করতে থাকেন তার রাষ্ট্র পরিচালনার রাজনৈতিক কৌশলে।

     তিন হাজার বছরে গড়ে উঠা বাঙালীর ইতিহাস ঐতিহ্য,কৃষ্টি সংস্কৃতি সর্বপরি ভাষার ভিত্তিতে গড়ে উঠা "বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের" স্থলে ১৯৭১ ইং সালের ১৬ ই ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে প্রতারীত করে, তাঁর অনুকরনে "বাংলাদেশী জাতীয়তা বাদ" স্থাপন করেন। এই এক শঠতার ধুম্রসৃষ্টি করে মহামায়ার ইন্দ্রজাল বিছানো চতুরতায় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহ্লাস বিকৃতির করুন এক নিদর্শন। মানুষ মানুষকে প্রতারিত করে, ঠকায় কিন্তু দেশ এবং জাতির সাথেও তদ্রুপ করতে পারে, সাধারন আমজনতা কি বুঝার কোন সামর্থ রাখে?

      প্রিয় পাঠক আপনাদের অনেকেরই মনে আছে, মেজর জিয়ার প্রথম "রাজাকার প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজুর রহমান "১৯৭৯ সালে সংসদে দাঁড়িয়ে বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলে -বাংলা ভাষার নামকরণের ঘোষণা দিয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট মেজর জিয়ার পরামর্শেই তিনি এই ঘোষনা দিয়েছিলেন। মুক্তিযোদ্ধার রঙ গাঁয়েমাখা মীরজাফর জিয়ার পরামর্শ ছাড়া প্রেসিডেন্ট শাসিত" সরকারের) প্রধান মন্ত্রী এই ঘোষনা দিতে পারেনা। প্রধানমন্ত্রীর চাকুরিটাইতো মহামান্য" রাষ্ট্রপতির ইচ্ছা অনিচ্ছার উপর নির্ভরশীল।
 দেশ ভাগ হতে পারে, খন্ড বিখন্ড হতে পারে একই ভাষাভাষির মানুষ কিন্তু ভাষা কি ভাগ হতে পারে? বর্তমান মধ্যপ্রাচ্যের "আরবজাতি " বহুধা ভাগে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন নামে দেশ শাষন করছে কিন্তু তাঁদের জাতীয়তাবোধের চেতনা "আরব জাতীয়তাবাদ" কি পরিবর্তন হয়েছে? ,নাকি কখনও কেউ পরিবর্তন করার উদ্যোগ নিয়েছে? তাঁদের আরবি ভাষার কি পরিবর্তন হয়েছে? তাঁদের সংস্কৃতির বন্ধন যদি আরবি ভাষা হতে পারে, আমাদের সংস্কৃতির বন্ধন বাংলায় অসুবিধা কোথায়? বিয়ে, জম্মদিন, আরব জাতির নিজস্ব জাতীয় উৎসবে আনন্দে, পালাপার্বনে উলুধ্বনী দেয়ার প্রথা তাঁদের আবহমান কালের। তাঁদের সেই কৃষ্টির কি পরিবর্তন হয়েছে? নবী করিম (স:) করেছেন নাকি পরবর্তি কোন ধর্মীয় নেতা করেছেন? তবে  বাঙ্গালী সংস্কৃতি অনুসরনে বা বাংলা ভাষা,সংস্কৃতি, কৃষ্টিতে ইসলাম ধর্মের অমায্যদা হবে?

  মুলত: শাহ আজিজকে দিয়ে হিন্দু-বিদ্বেষী সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি উস্কে দিয়ে সাধারন বাঙ্গালী মসুলমানদের সস্তা সেন্টিমেন্টকে পুজি করে পাকিস্তানী ধারাকে পুন: প্রতিষ্ঠিত করার মানষে জিয়া উল্লেখিত ঘোষনাটি সংসদে দেয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। জিয়াই আনুষ্ঠানিক ভাবে বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদকে ধ্বংসের ভিত্তি স্থাপন করেন। এখানে শেষ হলেতো ভালই ছিল, তারপরের ইতিহাস আরো বর্বর, করুন, হৃদয়বিদারক। "বাংলাদেশ বেতারের" নাম পরিবর্তন করে তিনি রাখেন "রেডিও বাংলাদেশ".।চালনা বন্দরের নাম পরিবর্তন করে রাখেন, "পোর্ট অব চালনা"। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের রণধ্বনী "জয় বাংলা" শ্লোগানকেও পরিবর্তন করার স্পর্ধাও দেখান মুক্তিযুদ্ধা জিয়া। জয় বাংলার জায়গায় পাকিস্তানী ভাবধারার শ্লোগান 'বাংলাদেশ জিন্দাবাদ' স্থাপন করেন তিনি।

    এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ করতে চাই যে--'বাংলাদেশ জিন্দাবাদ" শ্লোগান বঙ্গবন্ধুর রক্তের উপর দাঁড়িয়ে খুনিরা ১৫ আগষ্ট প্রত্যুষ্যেই ভাঙ্গা ভাঙ্গা গলায় ভীত সম্ভ্রস্তভাবে রেডিওতে বারবার বঙ্গবন্ধু হত্যার ঘোষনা দেয়ার পরেই উচ্চারন করেছিল। জিয়া বঙ্গবন্ধুর রক্তমাখা খুনীদের উচ্চারীত শ্লোগানটিই নিজ কন্ঠে ধারন করেন। আর কয়বছর সময় পেলে হয়তোবা "পাকছার জমিন নেছা দোবাত'কেও" আমাদের কৃষ্টি সংস্কৃতির অঙ্গ "জাতীয় সঙ্গীত" বলে চালিয়ে দেয়ার উদ্যোগ গ্রহন করতেন তিনি। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে---বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের জন্য যে সমস্ত পত্র দেয়া হত সেখানে" নিমন্ত্রন" শব্দটি পয্যন্ত উঠিয়ে দিয়েছিল। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তৎসময়ের সভাপতি বর্ষিয়ান জননেতা জনাব মরহুম আবদুল মালেক উকিল প্রতিবাদ জানালে তাঁকে "ভগবান দাশ" বলে বিদ্রুপ করতেও তাঁদের বিবেকে বাঁধেনি।
   মুলত: ছোটছোট পরিবর্তন করে বাঙ্গালী মননে ধারন করিয়ে---বড় পরিবর্তনের সুদুরপ্রসারী চিন্তা করেছিলেন জিয়া। তাঁর সেই চেতনার ধারাবাহিকতা রক্ষা করেছেন বিগত ১৯৯৬ ইং সাল পয্যন্ত সরকার গুলী। বাংলাদেশের সংবিধানে স্পষ্ট উল্লেখ আছে---যদি বাংলা---ইংরেজী শব্দ প্রয়োগ বা বিন্যাসে অসামঞ্জস্য পরিলক্ষিত হয়,সেই ক্ষেত্রে বাংলা শব্দটির প্রাধান্য পেয়ে প্রতিস্থাপিত হবে। মেজর জিয়া এই জায়গাটুকুতেও পরিবর্তন করে বসিয়ে দেন ইংরেজী প্রধান্যের বিষয়টি। আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি, ,কৃষ্টিতে ছোট ছোট পরিবর্তন করে বড় পরিবর্তনের মানষিকতা গড়ে তোলার প্রয়াস নিয়েছিলেন জিয়া এবং তাঁর পরর্তী সামরিক, সেনাসমর্থীত বেসামরিক ফ্যাসিবাদি সরকার সমুহ।

      জিয়ার মিত্রশক্তি এবং স্বাধীনতাবিরুধী অবস্থান, ইতিহাস ঐতিহ্য পরিবর্তন, সংস্কৃতি, কৃষ্টির উপর নগ্ন হামলা, মাতৃ ভাষা বাংলায় পরিবর্তনের সূচনা মূলত: পাকিস্তানী ধারায় পিরিয়ে নেয়ার অপচেষ্টার ধারাবাহিকতা। বঙ্গবন্ধু খুনের মাষ্টার মাইন্ড জিয়ার মুক্তিযুদ্ধ বিরুধী চেতনার ধারাবাহিকতা হচ্ছে আজকের দিনের ভাস্কায্য বিতর্ক সহ এযাবৎ উত্থাপিত তাঁদের অনুসারি বিভিন্ন জনের বিভিন্ন মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা তথা দেশদ্রোহী বক্তব্য।

        সাম্প্রদায়িক অপশক্তির আক্রমণের মুখে ব্রাহ্মনবাড়িয়ায় অ-সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক শক্তিসমুহ, মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারি রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি সমূহ শত্রু চিহ্নিত করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। ভোটের রাজনীতির কারনে রাজনৈতিক দলগুলো এই সহিংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়নি। সাংস্কৃতিক গোষ্টি সমূহের দায়িত্ব নিতে হবে রাজনৈতিক শক্তির দৈন্যতা ঘোচানোর। বৃহৎ সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মাধ্যমে এই ব্যর্থতা ঘোচানো ছাড়া এইসময়ে আর কোন গত্যান্তর নেই।
       সহিংসতা ঘটানো অপশক্তির সঙ্গে সম্পৃত্তরা জানেনা সংস্কৃতির বিনাশ কখনই হয়না। এটি মানবজাতির সহজাত প্রক্রিয়ায় অংশ। কোনোভাবেই এর গতি রুদ্ধ করা যায় না। মৌলবাদী শক্তির এমন আস্ফালন এবং ক্ষনেক্ষনে ঝটিকা আক্রমণ অনেক দিন আগে থেকেই লক্ষ করা যাচ্ছে। আর সব সময় তাদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে বিজ্ঞানমনস্ক ও প্রগতিশীল ব্যাক্তি, সাংস্কৃতি ও সাংস্কৃতিক কর্মী, শিল্প কলায় জড়িত ব্যাক্তি, শিল্পি, সাহিত্যিক সর্বশেষ যুক্ত হল মননশীল শিল্পকর্ম "ভাস্কায্য।"

       এই অপশক্তির অগ্রযাত্রা মোকাবেলায় কেবলমাত্র মাদ্রাসা শিক্ষা যুগোপযোগী করে হবেনা। যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করেনা, তাদের বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষে সোচ্চার হতে হবে। প্রগতির ধারার যে যেখানে আছে সে সেখান থেকেই সামর্থনুযায়ী সর্ব শক্তি ঢেলে দিয়ে তাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। যেকোন মুল্যে স্বাধীনতা, বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধবাদী শক্তিকে বিনাশ করতে হবে। অশুভশক্তির উৎসস্থল জ্বালিয়ে পুড়িয়ে চারখার করে দিয়ে, আগামী প্রজম্মের জন্য নতুন বাংলাদেশ,প্রগতিশীল বাংলাদেশ, অসাম্প্রদায়ীক বাংলাদেশ, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
 
       বর্তমান বাংলাদেশের ক্ষমতার রাজনীতি দিয়ে অশুভশক্তির গতিরোধ সম্ভব নয়। অতীতেও রাজনৈতিক শক্তি আন্দোলন গড়ে তোলেনি,শেষমহুর্তে নেতৃত্ব তুলে নিয়েছে,তাঁদের ক্ষমতা পাওয়ার সুবিধার্থে। প্রত্যেক রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় বসার সুবিধাই চাইবে এবং ইহা স্বাভাবিকও বটে। আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন---ভাষাভিত্তিক সাংস্কৃতিক আন্দোলন দাঁনা বেঁধেছিল বলেই '৭১ ইং সালে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ পেয়েছিলাম। উনসত্তরে পুর্ববাংলার আপামর জনগনের গনভ্যুত্থান ঘটেছিল বলেই মুক্তিযূদ্ধের গৌরবে গৌরাম্বিত হতে পেরেছে বাঙ্গালী জাতি। মহীয়ষি নারী 'জাহানারা ঈমামের' নেতৃত্বে মানবতা বিরুধী অপরাধের প্রতিকি বিচার সম্ভব হয়েছিল বলেই '৯৬ এ আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসতে পেরেছিল। সেই প্রতিকী বিচারের রেশ ধরে বর্তমান সময়েও রাজাকারের বিচার সম্ভব হচ্ছে। শাহবাগে 'গনজাগরন মঞ্চ' হয়েছিল বলেই--আপিল সহ রাজাকারের সর্বচ্ছো শাস্তির বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত হয়েছে। তদ্রুপ পূর্বের মতই আর একটি আন্দোলন প্রয়োজন সার্বজনীনভাবে। এবারের আন্দোলনের একমাত্র এবং একমাত্র লক্ষ হবে অ-শুভশক্তি এবং তাঁদের প্রেতাত্বাদের সর্বমূলে বিনাশ।

        সাধারন চিন্তাচেতনায় সমৃদ্ধ যে কোন সচেতন নাগরীকের উপলব্দি করার ক্ষেত্রে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়---ব্রাম্মনবাড়ীয়ার সহিংস ঘটনার পরপরই অশুভ চক্রটির ত্রানকর্তার ভুমিকায় অবতির্ন্ন হয় বিএনপি জামায়াতের বিশদলীয় জোটনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে প্রকাশ্য অবস্থান গ্রহন করে প্রতিষ্ঠিত সত্যকে অস্বীকার করে জনমনে বিভ্রান্তি চড়ানোই কৌশল গ্রহন করে সে।  সাম্প্রদায়িক গোষ্টি সমূহের মেরুকরন ও আস্ফালনের ক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার মুক্তিযুদ্ধবিরুধী অবস্থান এবং প্রকাশ্য বক্তব্য তাঁদের আস্ফালনের ক্ষেত্রে প্রভূত শক্তি যুগিয়েছে। নতুন নতুন বিতর্ক উত্থাপন করে একের পর এক  চ্যালেঞ্জ চুঁড়ে দিয়ে সরকার, ক্ষমতাসীন দল ও জাতিকে সহিংস করে তোলাই তাঁদের উদ্দেশ্য। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির ধৈয্যচ্যুতি ঘটিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ স্বীকার করার অপচেষ্টা মাত্র। বিএনপি জোটের আস্কারা পেয়ে নতুনভাবে বাঙ্গালীর ঐতিহ্যের বিরুদ্ধে বিতর্কিত ভূমিকায় অবতিন্ন হলেন চরমোনাই পীর সাহেব। তাঁর নেতৃত্বে সারাদেশ থেকে জড়ো হওয়া অতিক্ষুদ্র শক্তিও সরকারকে ভাস্কায্য সরানোর আলটিমেটাম দেয়ার দু:সাহষ দেখাতে পেরেছে। ইহা নির্গাত মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারি দল,বাঙ্গালী চেতনার ধারক বাহক দল, বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক চেতনার আদর্শে উজ্জিবীত দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ও তাঁর সরকারের চরম দুর্বলতা।

      ৭৫ ইং থেকে ২০০৬ইং মাঝখানে ১৯৯৬-২০০১ ইং বাদ দিলে তাঁরাই তো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থ ব্যয় করে শহীদ দিবস, স্বাধীনতাদিবস, বিজয়দিবস সহ অন্যান্ন জাতীয় দিবস সমূহ পালন করেছেন। তখন মনে হয়নি-- মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ বাঙ্গালী শহীদ হয়নি। এখন তাঁদের মনে হচ্ছে পরম বন্ধুরা যখন একের পর এক ফাঁসীর রজ্জুতে ঝুলছে এবং ঝুলার অপেক্ষায় আছে। ধর্মব্যাবসায়ী, অশুভশক্তি, ষড়যন্ত্রকারি, দেশদ্রোহীদের বিনাশের অপর নাম বিশদলীয় জোট এবং তাঁর নেত্রীর সর্বৈব বিনাশ। তাইতো মরিয়া হয়ে তাঁদের বাঁচার এত আয়োজন। সকল চেষ্টা ব্যার্থ হওয়ার পর নতুন আঙিকে ষড়যন্ত্রের নকশা বাস্তবায়নের অংশই হচ্ছে লাগাতার মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবার, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, জাতিবেদ, শিক্ষা, সংস্কৃতি, ভাস্কায্য সর্বোপুরী বাঙ্গালী অসাম্প্রদায়িক অস্তিত্বের উপর একের পর এক আঘাত করে প্রতিঘাতের অপেক্ষায় প্রহরগোনা। যেকোন ভাবে সরকারের ধৈয্যচ্যুতি ঘটিয়ে দেশকে অস্থীতিশীলতার দিকে ঠেলে দিয়ে পানি ঘোলা করাই তাঁদের প্রতিজ্ঞা।

          প্রাচীন যুগ থেকে অত্রাঞ্চলে সাহিত্যপ্রীতি ও সঙ্গীতপ্রীতি, শিল্পি ও শিল্পের কদর দেখা যায়। লোকনৃত্যে, সাহিত্যে ও শিল্পে একটি আধ্যাত্মিকতার ছাপ দৃশ্যমান। বাংলার ভাটিয়ালি, বাউল, মুর্শিদি, মারফতি প্রভৃতি গানের মধ্যে এখানকার জনজীবনের অন্তরের সুর ধ্বনিত হয়। কবিগান, যাত্রা, জারি, সারি, পালাগান, কীর্তন ইত্যাদির সঙ্গে অত্রাঞ্চলের মানুষের সম্পর্ক নিবিড়। যত দিন বাঙালি আছে, বাংলা ভাষা আছে, শহীদ মিনার আছে, একুশে ফেব্রুয়ারি আছে, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দ দাসের কবিতা আছে, লালন ফকির, হাসনরাজা ও ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর সঙ্গীত আছে তত দিন কোন ষড়যন্ত্রই বাধাঁ হয়ে দাঁড়াতে পারবে না। অ-শুভ সাম্প্রদায়ীক গোষ্টি যত চেষ্টাই করুক না কেন, সহিংসতা, সন্ত্রাস ও ধর্মান্ধতার মাধ্যমে আবহমান বাংলার এই সংস্কৃতি, কৃষ্টি ধ্বংস করা যাবেনা। বাঙালি জাতির অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে এইহীন অপচেষ্টার বিরুদ্ধে  সাংস্কৃতিক দল,মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি, মুক্তমনা লেখক সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সর্বপোরি বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী ব্যাক্তি, সংগঠন সমুহের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার এখনই সময়। শিল্প সংস্কৃতি, কৃষ্টির বিরুদ্ধে যেকোন হুমকি অতীতের ন্যায় বাঙ্গালী বুকের তাজা রক্ত ঢেলে প্রতিহত করবেই করবে।
    "জয়বাংলা    জয়বঙ্গবন্ধু"



মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার সরকার মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যাতত্ব দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস ঐতিহ্যে বিতর্ক উত্থাপনের অভিযোগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন।মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে বসবাস করে,মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার মত দৃষ্টতা দেখিয়ে নি:সন্দেহে তিনি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। এহেন গর্হিত বক্তব্য প্রদানকারী বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার রাখতে পারেননা।মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত অঙ্গিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কোন দল বা জোটের রাজনীতি করারঅধিকার নীতিগতভাবেই থাকতে পারেনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি সকল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করে সর্বচ্ছ আদালতের রায় অনুযায়ী '৭২এর সংবিধান অবিকল বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবী।বাংলাদেশেরজনগন চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ এগিয়ে যাক,মুক্তিযুদ্ধে সাগরসম রক্ত ঢেলে সেই অঙ্গিকারের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেছিল।স্বাধীন বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বসবাসকরে,পরাধীনতার গান শুনতে দেশ স্বাধীন করেনি বাংলার জনগন। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৩ বছরের বিরামহীন সংগ্রামের ফসল মুক্তিযুদ্ধ।সেইযুদ্ধে উপনিবেশিক পাকিস্তানের আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত সেনাবাহিনীকে নিরস্ত্র বাঙালীরা পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছিল।সেই স্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশেপরাজিত শক্তির দোষর,তাঁদের প্রেতাত্বাদের রাজনীতি করার কোন নৈতিক অধিকার নেই।জাতির জনক তাঁদের রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগন জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলায় রাজাকারের কোন স্থান দিতে চায়না। তাই খালেদা জিয়ার ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টার দৃষ্টান্তমুলক সাজার আশা পোষন করে।কোন রাজনৈতিক সমঝোতার ফাঁদে যেন এই মামলা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়,তাঁর গ্যারান্টিও সরকারের নিকট বাংলাদেশের জনগন চায়। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু Ruhul Amin ------------------------------ খালেদা জিয়াকে সমাবেশের অনুমতি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি আশাহত----04 /01 / 0016 ইং পোষ্ট -==================================প্রখ্যাত দার্শনিক,চিন্তাবিদ সক্রেটিসকে কম বেশি আমরা সবাই জানি।সক্রেটিস কোন যুগে জম্মগ্রহন করে মানব সেবায় ব্রতি হয়ে আজও দেশে দেশে অনুকরনীয় অনুসরনীয় হয়ে আছেন তাও আমরা জানি।নিশ্চয়ই তখনকার সময় থেকে বর্তমানের সমাজ, রাষ্ট্রব্যাবস্থাপনা আরো শত গুন উন্নত,সমৃদ্ধ,সভ্য।সক্রেটিস ছুতোর, কামার ইত্যাদি প্রসঙ্গে এসে প্রশ্ন করতেন, 'তাহলে রাষ্ট্র নামক জাহাজটি বিগড়োলে কাকে দিয়ে সারাইয়ের কাজ করাবো'হাসান আজিজুল হক (সক্রেটিস) পৃ : ১৬ সক্রেটিসের এ বিখ্যাত কথপোকথন কারো অজানা নয়। আদর্শবান ন্যায়নীতিভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করবার জন্য সক্রেটিসকে হেমলক পান করতে দেয়া হয়েছিল(বিষ), তারপরও তিনি আইনের প্রতি অটুট শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন- এটাও ছিল তার নির্ভীক বিদ্রোহ। তাকে বাঁচবার সুযোগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি আইনঅবজ্ঞা করেননি, আইনে যদি তার মৃত্যুদন্ড হয় তবে তিনি অবশ্যই তা মানতে রাজি। এখানেও তার সমস্ত জীবনকর্মের অনেক গভীর দর্শন কাজ করেছে। তার উপর মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল একথা তিনি ও এথেন্সবাসী জানতেন। কিন্তু যে আইনে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলো- তিনি সে আইনকে শ্রদ্ধা জানালেন এ অর্থে মানুষকে আইনের প্রতি অনুগত থাকতে বললেন। সেই আইন কারা তৈরি করছে তা তিনি জানতেন তাতে তো আর আইন নামক বিষয়টিকে জীবন থেকে বিতাড়িত করা যায় না।"পবিত্র কোরানে পাকে ও উল্লেখ করা হয়েছে, বিধর্মী কতৃক শাষিত রাষ্ট্র ও সরকার সমুহের আইন মেনে ধর্ম কর্ম করার।এই রুপ রাষ্ট্র ব্যাবস্থায় শুক্রবারের খতবায় বিশেষ আয়াৎ সংযুক্ত আছে এবং নিয়মিত নামাজের সাথে আর ও কয় রাকাত নামাজ আদায় করার নির্দেশনা দেয়া আছে।পরিতাপের বিষয়টি হচ্ছে,গত কয়েক বছর থেকে লক্ষ করা যাচ্ছে একশ্রেনীর মানুষ রাষ্ট্রীয় আইন রীতি নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সর্ব উচ্চ আদালতের রায়কে ও অমান্য করে হরতাল অবরোধ,প্রকাশ্য আদালতের সমালোচনা করতে।শুধু তাই নয় আন্দোলনের নামেপ্রকাশ্য দিবালোকে যাত্রীভর্তি চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে জীবন্ত মানবকে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিতে।উল্লেখ করা প্রয়োজন যারা এই সমস্ত আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিলেন,এবং প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেন যে আদালতের বিরুদ্ধেও কর্মসূচি দেয়া যায়,বক্তব্য দেয়া যায়,তাঁরা কখনই কোন অপরাধীর বিচার কায্য সম্পাদন করেছেন তদ্রুপ কোন উদাহরন নেই। যেমন আমি প্রথমেই বলতে চাই ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছেন রাতের অন্ধকারে।বঙ্গবন্ধুর অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? পৃথীবিপৃষ্টের সব চাইতে নিরাপদ স্থান জেলখানা।সেখানে রাতের অন্ধকারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করাহল,তাঁরা বন্দি ছিলেন, তারপর ও তাঁদের অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে বুদ্ধিজীবিদের বাসা থেকেতুলে নিয়ে জ্যান্ত মানুষকে হত্যা করা হল, তাঁদের অপরাধ কি বিচার করে মিমাংসা করা যেতনা? খালেদ মোশারফ., কর্নেল তাহেরসহ অসংখ্য মুক্তি যুদ্ধা সেনা অফিসারকে মেজর জিয়ার নির্দেশে নির্মম নির্দয় ভাবে হত্যা করা হল, অনেককে গুলী করার পর প্রান পাখী উড়াল দেয়ার আগেই জ্যান্ত মাটি চাপা দেয়া হল, তাঁদের বিচার কি প্রচলিত সেনা আইনে করা যেতনা? অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধা,আওয়ামী লীগের নেতা,মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারি,ব্লগার,প্রকাশক,লেখক সাহিত্যিক,সাংবাদিক হত্যা করা হল,তাঁদের অপরাধ কি আইনের আওতায় এনে বিচার করা যেতনা?আন্দোলনের নামে ঘোষনা দিয়ে মানুষ হত্যা করা,সম্পদ নষ্ট করা,লুটপাট করা কি মানবতা বিরুধী অপরাধের আওতায় পড়েনা?মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ হত্যা লুটপাট,অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার হতে পারে,যুদ্ধাবস্থা ব্যাতিরেকে ঘোষনা দিয়ে তদ্রুপ কর্মে জড়িতদের এবং হুকুমদাতার বিচার কেন হবেনা? নগদ অপরাধের ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার করা কি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব নয়? নাগরীকদের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া কি রাষ্ট্রের কর্তব্যের মধ্যে পড়েনা? যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন তাঁরা কি বিচার পাওয়ার সাংবিধানীক অধিকারের মধ্যে পড়েনা?সেই যুগের সক্রেটিস যদি নীজের উপর আনীত মিথ্যা অভিযোগ জেনে শুনে মেনে নিতে পারেন,সভ্যতার চরম শীখরে দাঁড়িয়ে যারা এই যুগে আইনকে, রাষ্ট্রীয় রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রকাশ্য আন্দোলনের নামে মানুষ খুন করেছেন,সম্পদের হানী ঘটিয়েছেন তাঁরা কি সক্রেটিস যুগের আগের অধিবাসি মনে করেন নীজেদের? তাঁরা নীজেরা নিজেদের মনে করুন কিন্তু মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে কোন যুগে ফিরিয়ে নিতে চান?তাঁদের যদি এতই অসহ্য লাগে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিশেষ কিছু আদর্শের প্রতিপালনের অঙ্গিকারের ভিত্তিতে ৩০লক্ষ শহিদের আত্মদান,পৌনে চারলাখ মাবোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস- তবে জনগনকে সংঘটিত করে আর একটি গনবিপ্লব ঘটিয়ে তাঁদের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে স্বাধীনতার পক্ষের কোন মানুষ বাধাতো দিচ্ছেনা। যাদের নেতৃত্বে, যাদের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন করা হল, তাঁরাতো ক্ষমতায় আছে,তাঁদের কেন জোর পুর্বক,ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে খমতা থেকে নামাতে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে,আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে জনজীবন দুর্বিসহ করে তোলার চক্রান্ত করতে দেয়া হবে।এই সেই দিন মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা নিয়ে যিনি বিতর্ক উত্থাপনের বৃথা চেষ্টা করে জনরোষের আওতার মধ্যে এখনও রয়েছেন,তাঁর সৌখিন বাসভবন পাহারায় আপনার সরকার অতিরীক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে বাধ্য হয়েছে,তিনি কি ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে সমাবেশ করার প্রসাশনিক অনুমতি পায়। বর্তমান গনতান্ত্রিক বিশ্বের একটি দেশের উদাহরন কি কেউ দিতে পারবেন,স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা সেই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে?একটি দেশকি কেউ দেখাতে পারবে যে,সেই দেশের কোনমীমাংসিত এবং প্রতিষ্ঠিত কোন সত্যকে ৩০/৪০ বছর পর আবার জনসমক্ষে উত্থাপন করে লক্ষ লক্ষ শহিদ পরিবারের অন্তরের আগুনে"ঘি "ঢেলে দেয়ার চেষ্টা, কোন প্রতিষ্ঠিত দল বা তাঁর নেতা করেছেন? কেন এই পয্যন্ত সরকার তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা না করে উলটো সমাবেশ করে তাঁর মতবাদ প্রচারের অনুমতি দেয়া হল??তাঁরা নীজেদের এত ক্ষমতাবান মনে করেন কিভাবে? তাঁরা কি করে আবার জাতির নিকট ক্ষমা চাওয়া ছাড়াই প্রকাশ্য সভা সমাবেশ করার অধিকার পায়?কেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সংসদে ঘোষনা দিয়েও এখন পয্যন্ত আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন করছেন না? মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আপনার আশ্বাস বাংলার মানুষ অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করে।সুতারাং জনগনকে দেয়া প্রতিশ্রুতি আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন কল্পে তড়িৎ ব্যাবস্থা গ্রহনকরবেন, জনগনের এই আস্থা বিশ্বাস এখন ও অটুট রয়েছে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,শাপলা চত্বরের সেই দিনের ষড় যন্ত্র মোতাবেক যদি খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার মানুষ রাজপথে নেমে আসতেন,পরিকল্পনাঅনুযায়ী সেনা বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়েআপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারতো,আপনাকে কি জীবিত বাঁচতে দেয়া হত? আপনার পরিবারের কাওন সদস্যকে বাঁচতে দিত?আওয়ামী লীগের থানা উপজেলা পয্যায়ের কোন নেতা কি বাঁচতে দিত? তাঁরা কি সে দিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ধর্ম বিদ্বেষী সরকার উৎখাত করে ধর্মধারি সরকার কায়েমের রাজনৈতিক শ্লোগানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নামক মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ধারক বাহক জননন্দিত এইসংগঠনটিকেও জ্যান্ত কবর দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত ছিল না?আমি আজ আরও একটি বিষয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,সম্পুর্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন চরমপন্থী নেতার অবিকল নকল করা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার--,গনতান্ত্রিকদেশে,গনতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে, গনতান্ত্রীক সংগঠনের,গনতন্ত্রের পুজারি মনে করা কোন নেতা, রাজপথে আন্দোলন না করে, সীমাবদ্ধ কক্ষে ৪১দিন অবস্থান করে, ৪২ জন মানুষকে পুড়িয়ে মেরে,পরবর্তিতে বিচারের সম্মুখ্যিন না হয়ে নিয়মাতান্ত্রীক আন্দোলনের সুযোগ কোন দেশের, কোন নেতা বা কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, এমন উদাহরন কি কেউ দিতে পারবে?? ষড় যন্ত্রের জাল কোথায় বিস্তৃত ছিল তাঁর প্রমান সেই নেত্রী নীজেই তাঁর উষ্মায় প্রকাশ করে দম্ভস্বরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে সুশৃংখল বাহিনীকে তাচ্ছিল্য করে বলে ছিল"সেনাবাহিনী বেঈমান"!!!এর পরও আপনার সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আনায়ন না করে প্রকাশ্য সভার অনুমতি দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার গুলির মনে আগাত দেয়া হয়েছে আমি মনে করি। গত পৌর নির্বাচনে রায় দিয়েছে তাঁর বিচার করার,তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অর্থই হচ্ছে জনগনের ক্ষোভ তাঁর উপর থেকে এখনও কমেনি,বরঞ্চ কয়েক গুন বেড়ে জনরোষের পয্যায় পৌছে গেছে।আপনার সরকারের তাঁকে দেয়া বাড়তিনিরাপত্তাই তা প্রমান করে।সুতারাং দেশ ও জাতি এই রাজনৈতিক লাশের ভার বইবার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা।দেশের এবং জাতির প্রয়োজন বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মত শিক্ষিত, বিজ্ঞান মনস্ক,প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত সমৃদ্ধ জাতি গঠনে জ্ঞানসমৃদ্ধ, আধুনিক সভ্য দুনিয়ার নেতৃত্ব গ্রহন করার মত গুনাবলি সমৃদ্ধ নেতার। কোন অবস্থায় সক্রেটিসের আগের যুগে জাতি ফেরৎ যেতে চায়না।পরিশেষে বলতে চাই,আর কোন সংগাত নয়,এবার চাই সমৃদ্ধি।আর নয় জঙ্গিপনা,এবার চাই ধর্মনিরপেক্ষতা।আর নয় সাম্প্রদায়ীকতা,এবার চাই অসম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা।আর নয় পাকি ভাবধারা প্রতিষ্ঠা,এবার চাই মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের সফল বাস্তবায়ন। জয় আমাদের হবেই হবে, অশুভ অপশক্তির পরাজয় অবশ্যাম্ভাবি। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা