সদা শংকিত, দরিদ্র, বিনিয়োগ প্রত্যাশী বাংলাদেশ--১০০কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রত্যাশায় ভুটান যাত্রা।
  (রুহুল আমিন মজুমদার)

       বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী গত কয়দিন আগে ভারত সফরে গিয়েছিলেন।ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বেশ কিছু চুক্তি ও সমঝোতা সাক্ষরিত হয়েছে। বাংলাদেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক দল সমূহের মধ্যে বিএনপি উক্ত চুক্তি ও সমঝোতার প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছিল শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অবশিষ্ট যাহাই ছিল সমগ্রই এবারকার সফরে ভারতের নিকট বিক্রয় করে দিয়ে এসেছেন। বাংলাদেশের মানুষ দায়িত্ববান বিরুধী দল এবং একাধিকবার বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর অভি্যোগের প্রেক্ষাপটে অতিশয় শংকিত হয়ে পড়ে। জনগনের শংকা দূর করার কায্যকর পদক্ষেপ না নিয়ে অদ্য শেখ হাসিনা ১০০ কোটি ডলার নিয়ে ভূটান গমন করেছেন। সেখানে ভূটান সরকার বাংলাদেশের জন্যে একখন্ড জমি দান করেছেন।

       সামরিক সমঝোতা স্বাক্ষরকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী সামরিক চুক্তি অভিহীত করে ভারতের আগ্রাসনের আশংকাও প্রকাশ করেছেন । সমঝোতা স্মারককে চুক্তি অভিহীত করার পেছনে তাঁর অজ্ঞতা কাজ করেছে, নাকি অপপ্রচারের উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে দেশবাসিকে শংকিত করে তুলার অসৎ উদ্দেশ্যে?  এ বিষয় কোন প্রকার মন্তব্য দলটির পাওয়া যায়নি ।তিনি একদিকে বলছেন দেশের অবশিষ্ট যাহাই ছিল সবকিছু বিক্রি করে দিয়েছেন অন্যদিকে ভারতের আগ্রাসনের আশংকা প্রকাশ করে তাঁর প্রথম দেয়া দেশবিক্রির অভিযোগককে নীজেই মিথ্যা প্রমান করছেন। দেশ যদি আসলে বিক্রয়ই হয়ে যায়--আগ্রাসনের প্রশ্ন আসে কিভাবে? ভারতের মালিকানা দেশে ভারত সরকারের সেনাবাহিনী অবাধ যাতায়ত করবে--এখানে আগ্রাসনের বিষয়টি আসবে কেন?

   দেশ ও জনগনের মনের ভীতি দূর করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরের পরদিন সাংবাদিক সম্মেলন করেন। তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন ১৯৮১ ইং সালে বাংলাদেশ সরকার চীনের সাথে একটি ৫০ বৎসর মেয়াদি প্রতিরক্ষা সামরিক চুক্তি করেছিল। চুক্তিটি বর্তমানেও বলবৎ আছে।তিনি সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসা করেন ঐ সামরিক প্রতিরক্ষা চুক্তিতে কি আছে---আপনারা কি কেউ জানেন? চুক্তি যে করা হয়েছিল বিগত ৩৫ বছরের মধ্যে কোন সরকার কি প্রকাশ করেছে,---সেই চুক্তিতে কি ছিল? তিনি বলেন কথাটি প্রাসঙ্গিক ভাবে এসেছে নতুবা আজও ঐ চুক্তি সম্পর্কে আমি বলতামনা। চুক্তিটি অত্যান্ত ---!!! বলেই প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর কথা থামিয়ে দেন।মুখের অভিব্যাক্তিতে অনুমান করা যায়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৈমত্বের জন্যে চুক্তিটি হুমকি স্বরুপই ছিল।

     প্রধানমন্ত্রীর উক্ত সাংবাদিক সম্মেলনে জনমনের ভীতি দূর না হয়ে দ্বিগুন আকার ধারন করেছে।বাংলাদেশের গৌরবের মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ বিরুধীতাকারি দেশ চীন। তাছাড়াও আবহমানকাল থেকেই আমাদের শত্রুদেশ পাকিস্তানের সঙ্গে রয়েছে দেশটির একাধিক সামরিক, প্রতিরক্ষামূলক চুক্তি।সেই  গনচীনের সঙ্গেই অবৈধ ক্ষমতা দখলকারি মেজর জিয়া প্রতিরক্ষা চুক্তি করেছে তাও অতিসংগোপনে!! যে চুক্তির বিষয়বস্তু বিগত বছরগুলীতে সকল সরকার রাষ্ট্রীয় ভাবেই গোপন করে চলেছেন!!! প্রধানমন্ত্রী বলতে চেয়েও কথা ঘুরিয়ে নিলেন কেন!! কি আছে ঐ চুক্তিতে? বাংলাদেশের জনগন জানতে চায় ঐ চুক্তির বিষয়বস্তু কি? অবিলম্ভে চুক্তির বিষদ বিবরনী জনসমক্ষে প্রকাশ করার দাবি জানাই।

       মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রায়শ:ই একটি কথা বলেন--এবার আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় না আসতে পারলে বাংলাদেশের ইতিহাস মুছে যেত।কথাটির তাৎপয্য তখন বুঝিনি। বিগত দুই/তিন বছরের মধ্যে বিএনপির সর্বস্তরের নেতাদের মুক্তিযুদ্ধের  ইতিহাস বিকৃতি এবং পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা কতৃক বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতির তথ্য সংবলিত পুস্তক রচনা ও বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে দেয়া, তথাকথিত অজ্ঞাত ইসরাইল কানেক্টেড ব্যাবসায়ির বিএনপি দলের কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদপ্রাপ্তি, চিকিৎসার নামে সেনাসমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকারের সঙ্গে আপোষ মীমাংসায়--খালেদা পুত্রদ্বয়কে বিদেশে পালায়নের সুযোগ গ্রহন, কোটি কোটি ডলার ব্যয় করে আন্তজাতিক লবিষ্ট নিয়োগ, তারেক জিয়ার উদ্যত আচরণ, আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টির উদ্দেশ্যে হত্যা,গুম, আগুন সন্ত্রাস, সাধারন নির্বাচন বর্জন, সেনাবাহিনীকে কটাক্ষ, জঙ্গিদের প্রতি মায়া দরদ ইত্যাদির যোগফল মিলাতে গেলে, রাজনীতি সচেতন যে কোনব্যাক্তি হতবিহব্বল না হয়ে পারে না।

       ষড়যন্ত্র, মিথ্যাচারেরও একটি সীমারেখা আছে। দেশ ও জনগনের সুদুরপ্রসারি সমূহ ক্ষতির সম্ভাবনাময় বিষয়াবলী নিয়ে দায়িত্বশীল ব্যাক্তি, গোষ্টি, রাজৈতিক দলের মিথ্যাচারের নমূনা বিশ্বের কোন দেশেই দেখা যায়না।বাংলাদেশই একমাত্র ব্যাতিক্রম। নি:সন্দেহে পদ্মাসেতু বাংলাদেশের  গৌরব, অহংকার, সক্ষমতার প্রতিক। পদ্মাসেতুর নির্মানের কথিত দুর্নীতির অভিযোগ শুধুমাত্র ব্যাক্তি বা সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নয়। এই অভি্যোগ ছিল বিদেশী বন্ধুরাষ্ট্র, সাহায্য সংস্থা, ঋনদাতাদেশ ও সংস্থা,  সাহায্যকারিদেশ ও সংস্থা থেকে বাংলাদেশকে বিচ্ছিম্ন করার সুদুরপ্রসারী মহাপরিকল্পনার অংশ। পদ্মাসেতুর বরাদ্ধ টাকা প্রত্যাহার শুধুমাত্র বাংলাদেশের মেঘা প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে অন্তরায় সৃষ্টির উদ্দেশ্য ছিলনা। বাংলাদেশকেই অকায্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার মহাপরিকল্পনারই অংশ ছিল।

      দেশী কুলাংঙ্গার মীরজাফর সুদি ইউনূছের সঙ্গে সুর মিলিয়ে আন্তজাতিক বেনিয়া গোষ্টির ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে দেশের দায়িত্বশীল বিরুধীদল একই সময়ে একই বিষয়ে ষড়যন্ত্র, মিথ্যাচারে লিপ্ত হতে পারেনা। সেই কাজটিও বিএনপি করেছে নিদ্বিধায়,অবলিলায়, নিশ্চিন্তে, নির্বিঘ্নে, বুকচেতিয়ে।আন্তজাতিক আদালতে বাংলাদেশের কোনপ্রকার দুর্নীতির চিহ্ন না পেয়ে গুজুব সৃষ্টি অভিহিত করে রায় দেয়ার পর--অবলিলায় আবার স্বীকারও করে নেয় ইহা তাঁদের রাজনৈতিক বক্তব্য ছিল। সারা বিশ্ব থেকে বাংলাদেশকে  বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্রেও কি আপনাদের রাজনীতি?  কথিত দুর্নীতি প্রমান হলে কোন দেশের প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী হতেন আপনারা? কোন দেশের মিডিয়ায় রাতের অন্ধকারে শুশিলের কৌকিল হয়ে কৌহু কহু ডাকতেন?

     একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলতে চাই--একশ্রেনীর ব্যাক্তিও গোষ্টি দেশের কোন উন্নয়নই দেখে না। সারা বিশ্ব দেখে, বিশ্বব্যাংক দেখে, বন্ধুরাষ্ট্র সমূহের সরকার প্রধান, রাষ্ট্র প্রধাংন দেখেন বিএনপি এবং তাঁর মিত্রগন দেখে না।একলক্ষকোটি টাকার বাৎসরিক রাষ্ট্রীয় বাজেট চার লক্ষ কোটি টাকার অংকে পৌঁছে গেছে তারপরও কোন উন্নয়ন দেখেনা, অবকাঠামো দেখেনা, সাবমেরিন, জাহাজ, রকেট, যুদ্ধবিমান, পারমানবিক চুল্লি কিছুই দেখেনা।যাক অন্ধ হলে দেখবে কিভাবে? দেশের ঐশ্রেনীর অন্ধদের কে বস্তুগত কোন উদাহরন দিয়ে উন্নয়নের ফিরিস্তি দিতে চাইনা।অদৃশ্য শক্তির অনুভব অন্ধদের মধ্যে প্রবল থাকে জানি। আমি তাঁদের উদ্দেশ্যে অদৃশ্যশক্তির উন্নয়ন সম্পর্কে তুলনামূলক একটি আলোচনা উপস্থাপন করতে চাই।

       সকলেই জানি সভ্যতা, উন্নয়ন, অগ্রগতির মূল চাবিকাঠির অদৃশ্যশক্তির নাম বিদ্যুৎ। ইংরেজীতেও তাঁকে পাওয়ার অর্থাৎ শক্তি নামেই ডাকে সবাই।
২০০৯ সাল নাগাদ সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে পরিচালিত মোট ৪৩টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু ছিল। এর মধ্যে সরকারি উদ্যোগে পরিচালিত ১৮টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ৩৮২৪ মেগাওয়াট এবং বেসরকারি উদ্যোগে স্থাপিত ২৫টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদনক্ষমতা ২১০৪ মেগাওয়াট। তবে এসব কেন্দ্র থেকে প্রকৃতপক্ষে উৎপাদনক্ষমতার সমপরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হতনা। পিক আওয়ারে সরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি থেকে সর্বোচ্চ ৩৩৩১ এবং বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি থেকে ২০৪৫ মেগাওয়াটসহ মোট সর্বোচ্চ ৫৩৭৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হওয়ার ক্ষমতা ছিল।

   সুষ্ঠ রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে অধিকাংশ কেন্দ্রই বছরের পর বছর অকেজো হয়ে পড়ে থাকার কারনে চাহিদা মাফিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কখনই সম্ভব হয়নি।বর্তমান সরকারের ক্ষমতার প্রথমাংশে দেখা যায় অধিকাংশ উৎপাদন কেন্দ্র বিকল হয়ে পড়ে আছে,সারাদেশ অন্ধকারে  ডুবে আছে। ২০০৯-১০ অর্থ বছরে দেশে সর্বমোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ২৫,৬২২ মিলিয়ন কিলোওয়াট।২০১১ সালে পিডিবির গ্রাহকসংখ্যা ছিল ২,১৫৯.৮৭৯।দেশের মোট জনগোষ্টির ৩৩ শতাংশ বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগী ছিল।

২০০৮ সালের জানুয়ারী--মার্চ পয্যন্ত সেনাসমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকারের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় দেশে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছিল চার হাজার ৩৬ মেগাওয়াট।কালক্রমে তা কমে ২০০৯ সালের প্রথম দিকে বিদ্যুৎ উৎপাদন এসে দাঁড়ায় মাত্র ২৫০০ মেঘাওয়ার্টে। উক্ত সময়ে বর্তমান সরকার সাধারন নির্বাচনে ভুমিধ্বস বিজয়ের মাধ্যমে শেখহাসিনার নেতৃত্বে সরকার পরিচালনার দায়িতেওভার গ্রহন করে। সারাদেশ অন্ধকারাচ্ছন্ন থেকে কালক্রমে আলোতে নিয়ে আসার বিস্তারীত বিবরনীতে গেলামনা নিবন্ধের আকার বিস্তৃত হয়ে পাঠকদের বিরক্তির কারন হয়ে দাঁড়াবে। গত বছরের সর্বশেষ তথ্য দিয়ে লেখা শেষ করতে চাই।

 মে ২০১৬ ইং সাল  পর্যন্ত দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১৪ হাজার ৫৩৯ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। আওয়ামী লীগ ঘোষিত রূপকল্প ২০২১ অর্জনের লক্ষ্যে পৌঁছাতে আরও ২৪ হাজার মেগাওয়াট নতুন বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের।এ বছর নভেম্বরে ১৫ হাজার মেগাওয়ার্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন   উৎযাপন করবে সরকার। বন্ধ উৎপাদনী বিদ্যুৎ প্লান্টের হিসেব বাদ দিয়ে সর্বশেষ ১৪/০৩/২০১৭ ইং তারিখের তথ্য নিম্নে তুলে দিলাম।

বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা (মেঃওঃ): ১৩,১৭৯* (মার্চ ২০১৭)
সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন (মেঃওঃ): ৯,০৩৬ (৩০ জুন ১৬)
গ্রাহক সংখ্যা: ২ কোটি ৪২ লক্ষ (মার্চ ২০১৭)
মোট সঞ্চালন লাইন (সা.কি.মি.): ১০,৩৭৭ (ফেব্রুয়ারি ২০১৭)
বিতরণ লাইন (কি.মি.): ৩ লক্ষ ৮৯ হাজার (ফেব্রুয়ারি ২০১৭)
মাথাপিছু উৎপাদন (কিঃওঃআঃ): ৪০৭ কিঃওঃআঃ (আগষ্ট ২০১৬)
বর্তমানে বিদ্যুৎ সুবিধা প্রাপ্ত জনগোষ্ঠী:( ৮০%)
নতুন সংযুক্ত বিদ্যুৎ প্লান্ট---(১০৭টি)

  প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, ইতিমধ্যে বাংলাদেশের সর্বত্র চৈত্রের দাবদাহের মধ্যেও বিদ্যুতের আসা যাওয়ার সম্মুখ্যিন হচ্ছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল।১০হাজার মেগাওয়ার্টেরব্ল বেশি বিদ্যুত উৎপাদনের পরও অতিষ্ট জনজীবন। এত বিদ্যুত যাচ্ছে কোথায়? শিল্প, কলকারখানা, অবকাঠামো কিছুইতো হয়নি!!
 ভারত সফরের প্রাক্কালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২হাজার মে: ও: বিদ্যুৎ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।সমুদয় বিদ্যুৎ এই বছরেই যুক্ত হবে জাতীয় গ্রিডে।এদিকে বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে ভূটানের রাজধানী থিম্পুতে রাত্রিযাপন করছেন অদ্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। উন্নয়ন একেবারেই হয়নি!! এযাবৎকাল শুনে এসেছি---বাংলাদেশে বিদেশী রাষ্ট্র ও ব্যাক্তির বিনিয়োগ পরিবেশ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে লম্বা লম্বা বক্তৃতা।, আজকের খবরে শুনলাম বাংলাদেশ বিনিয়োগ করবে ভূটানে তাও আবার জলবিদ্যুত উৎপাদনে।ভুটান থেকে উৎপাদিত বিদ্যুত বাংলাদেশে নিয়ে আসার পরিকল্পনায় সরকার সেই দেশেই বিদ্যুৎ প্লান্ট করার আগ্রহ ব্যাক্ত করেছে।

      কথিত ভারতের নিকট বিক্রিত দেশ ভুটান কে কিনতে যাওয়া কততম আশ্চায্যের মধ্যে পড়তে পারে তাঁর বিচারের ভার পাঠক ভাইদের উপর ছেড়ে দিলাম।
ruhulaminmujumder27@gmail.com
 


মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন