শেখ হাসিনার ভারত সফর----"বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্ব বহুমাপাক্ষিক সহযোগীতায় রুপান্তর।"
(রুহুল আমিন মজুমদার)
বাংলাদেশের রাজনীতির একটি অংশের ধারা প্রবাহিত হচ্ছে অদ্ভূত যুক্তিহীন বাগাড়ম্বরতার স্রোতের মধ্য দিয়ে। এই গোষ্টিটি বাংলাদেশের অভ্যুদ্বয়ের আগে পাকিস্তান রাষ্ট্রটিকে টিকিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃত সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ভারত বিদ্বেসী মনোভাব উদ্ভব ঘটিয়েছিল।পাকিস্তানী শাষকগোষ্টির পরিকল্পিত পরিকল্পনায় এই মনোভাব সৃষ্টি এবং লালন করা হয়েছিল।তাঁদের পরিকল্পনার হোমওয়ার্ক সম্পন্ন করা হয়েছিল অখন্ড ভারতের পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে পূর্বাঞ্চলের মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলকে অন্তভূক্তির উদ্দেশ্যে অত্রাঅঞ্চলে " হিন্দু --মুসলিম" দাঙ্গা সৃষ্টি করে একিভূত পাকিস্তান সৃষ্টির দাবিকে ত্বরান্বিত করার উদ্দেশ্য সাধন করতে।
পরবর্তীতে জাতিগত ভাবে পাকিস্তান- হিন্দুস্তান দুটি রাষ্ট্র উদ্ভব হয়েছে সত্য কিন্ত্যু হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গায় সৃষ্টি হওয়া বৈরিভাব আর কখনও দূর করার চেষ্টা হয়নি। বরঞ্চ পাকিস্তানীদের শাষন শোষন দীর্ঘায়ীত করার লক্ষে অত্রাঞ্চলের উন্নয়ন অগ্রগতির চাবিকাঠি অমিমাংসীত রেখে ক্ষেত্র বিশেষ অনুচ্ছারিত রেখে সময় সময় বৈরিতাকে উস্কে দেয়ার নীতি গ্রহন করেছিল। পাকিস্তানী শাষক গোষ্টির অ-প্রকাশিত উক্ত নীতি অত্রাঞ্চলে লালন করার জন্যে একটি মুৎসুদ্ধি গোষ্টি, রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় তাঁরা উদ্ভব ঘটিয়েছিল।উদ্ভব হওয়া কায়েমী স্বার্থবাদী গোষ্টিটি ''দ্বিজাতি তত্বের" ছদ্ধাবরনে 'পবিত্র ধর্ম ইসলাম'কে ব্যবহার করে অত্রাঞ্চলের মুক্তিকামী জনগনের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে অস্ত্রধারন করতেও দ্বিধা বোধ করেনি।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত বাংলাদেশের স্বাধীনতার উদ্দেশ্যে পরিচালিত বাঙ্গালীর মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট তৈরীর প্রাক্কালে প্রচন্ডভাবে বিকশীত করেছিল।এদেশীয় সেই সমস্ত অনুচরেরা শেষপয্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে অস্ত্রহাতে সম্মুখ যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে দখলদার পাকিস্তানী সেনাদের সহযোগীতায় অকাতরে বাঙ্গালী হত্যা, বাঙ্গালী নারী দর্শন, অসহনীয়, অবর্ননীয় মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত হতেও কুন্ঠিত হয়নি।' ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে বাঙ্গালী দামাল ছেলেরা পাকিস্তানী সেনাদের সঙ্গে তাঁদেরকেও পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদ্বয় ঘটিয়েছিল।
পাকিস্তান সৃষ্টির প্রারম্ভেই বাঙ্গালী জাতির জনক বুঝতে পেরেছিলেন পশ্চিমারা তাঁদের শোষন শাষন অব্যাহত রাখার স্বার্থে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে অত্রাঞ্চলের সম্পদরাজীর আহরন করবেনা। সম্পদ ছাড়া অত্রাঞ্চলের জনগনের জীবনমানও উন্নয়ন হবে না। ভারতের প্রয়াত নেত্রী "প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি"ও একই ভাবে বুঝতে পেরেছিলেন পশ্চিমাদের শাষন শোষন অব্যাহত রাখার স্বার্থেই পুর্বাঞ্চলের বিপুল সম্পদ আহরনে পশ্চিমারা নিত্য বাধা হয়ে দাঁড়াবে। সীমানা চিহ্নিতকরন জটিলতার অজুহাতে ভারতকে এককভাবে সম্পদ আহরন করতেও দিবে না। এমনিতেই সিমান্তে অহেতুক জটিলতার পক্ষেই ছিল পশ্চিম পাকিস্তান। অথছ সমৃদ্ধ অত্রাঞ্চলের বিপূল পরিত্যাক্ত সম্পদ আহরন ও সূষম ব্যবহার ছাড়া ঘনবসতিপূর্ণ জনগোষ্টি সমৃদ্ধ অত্রাঞ্চল অর্থনৈতিক উন্নতি ও অগ্রগতি কোনভাবেই সম্ভব হবেনা।
বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে-- দুই দেশের সুদুরপ্রসারী দৃষ্টিসম্পন্ন দুইনেতা ভারত বিভাগ ও অভ্যন্তরীন ষড়যন্ত্রের রাজনীতির প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন।বিশ্ব সভ্যতার বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্ন জাতিগোষ্টি প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সম্পদ আহরন ও বিপনের মাধ্যমে সম্পদশালী জাতিতে রুপান্তরিত হয়ে জ্ঞান বিজ্ঞানেও এগিয়ে গেছে। একই সময়ে স্বাধীনতা পেলেও ভারতীয় উপমহাদেশের কোন দেশেই স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্রহেতু বিপুল সম্পদ থাকা সত্বেও কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন ও অগ্রগতি সম্ভব হয়নি। অথছ বিশ্বব্যাপি কর্মশক্তির অধিকাংশই ভারতীয় উপমহাদেশেই বসবাসরত ছিল।
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর বিশ্ব নেতৃবৃন্দের তিক্ত অভিজ্ঞতার আলোকে এবং সম্মিলীত জাতিপুঞ্জের ব্যার্থতা সম্যক উপলব্দিতে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের সংজ্ঞা নির্ধারন সহ "জাতিসংঘ" প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে।ষড়যন্ত্রকারিরা তথায় মনযোগ দেয়ার সুযোগ না দিয়ে দখল ও আধিপত্য বিস্তারের কাল্পনিক গল্প ছড়িয়ে ভারত বিদ্বেসী মনোভাব সৃষ্টিতেই মনযোগী ছিল। এহেন ষড়যন্ত্র সম্পর্কে দুই দেশের দুই নেতার উপলব্দি সময় উপযোগি ও সমপয্যায় হওয়ায় মুলত: বাংলাদেশের স্বাধীনতার লক্ষে পরিচালিত বাংলার মুক্তিকামী মানুষের মুক্তিযুদ্ধ ভারতের সহযোগিতায় পরিপূর্ণতা পেতে বিপুল ভুমিকা পালন করেছিল।
তাই দেখা যায়--একাত্তরে স্বাধীনতার প্রাণপুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার পরপরই বাংলাদেশের নিত্য প্রতিবেশী ভারতের সহযোগিতার যাত্রা শুরু হয়। ভারত কয়েক লাখ শরণার্থীকে মাসের পর মাস লালন করেছে, এককোটি শরনার্থী আশ্রয় দিয়েছে, তাঁদের খাবার দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধা ছাত্র জনতাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে শত্রু মোকাবেলার উপযোগী করে গড়ে তোলেছে। প্রবাসী মুজিব নগর সরকারের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে মুলত: ভারত থেকে। স্বাধীনতা যুদ্ধের চরম পর্যায়ে তাঁদের সেনাবাহিনী পাঠিয়ে দেশকে পাক হানাদারমুক্ত করায় সহযোগীতা করেছে। মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধের মাঠে ভারতীয় সেনাবাহিনীর উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। অত্রাঞ্চলের দূরদর্শী রাজনীতির দুই প্রভাবশালী নেতা বঙ্গবন্ধু ও ইন্দিরা গান্ধীর ভবিষ্যত প্রজম্মের উন্নতি, অগ্রগতির প্রতি সুদুর প্রসারী দৃষ্টি ভঙ্গি অটুট,ও ঐক্যমত্য ছিল বলেই সম্ভব হয়েছে।
পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভারতীয় সরকারের আস্থা থেকেই ক্রমাগত সহযোগিতার ক্রমবর্ধমান ধারারও বিস্তৃতি ঘটেছিল।স্বাধীন বাংলাদেশের যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির সামগ্রিক উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু সরকারের প্রতি প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও ছিল সে আস্থারই প্রতিবিম্ব। স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই ‘ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী চুক্তি’ ছিল পারস্পরিক আস্থাপূর্ণ সম্পর্কের ক্ষেত্রে অনন্য এক সংযোজন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও সে সময়ের ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ১৯৭২ সালের ১৯ মার্চ চুক্তিটি স্বাক্ষর করেছিলেন। উভয় দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, উন্নয়নে সহযোগিতা, সম্পদ আহরন, সম্পদের কায্যকর ব্যবহার, আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধা, অমিমাংসীত ভুখন্ড হস্তান্তর, উভয় দেশের জল ও স্থল সীমানা চিহ্নিতকরন, অভিন্ন নদীর পানি সুষম বন্টন, চিটমহল বিনিময় সহ বহুমাত্রিক আঞ্চলিক সহযোগীতাপুর্ণ ২৫ বছর মেয়াদি "ভারত ---বাংলাদেশ মৈত্রী চুক্তি " সম্পাদিত হয়েছিল। চুক্তিটি শেষাবদি "মুজিব-- ইন্দিরা" মেত্রী চুক্তি নামেই খ্যাতি অর্জন করেছিল।
প্রীয় পাঠক লক্ষ করুন-- উল্লেখিত চুক্তিটি আজ থেকে ৪৩ বছর আগে কায্যকর হলে এই সময়ে দুই দেশের অর্থনৈতিক অবস্থান কোথায় পৌঁছাত।মুজিব--ইন্দিরা মৈত্রী চুক্তির ধারাবাহিকতায় জাতির জনকের কন্যার এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী মৌদির নেতৃত্বে চিটমহল ও সমুদ্র সীমানা নির্ধারীত হওয়ার পর বাংলাদেশের আয়তন দাঁড়িয়েছে দ্বিগুনেরও বেশী।প্রাপ্ত ভুখন্ড ও সমুদ্র সীমানার সম্পদরাজী পাহারা দেয়ার জন্যে সামরিক সরঞ্জামের উপস্থীত প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। উদ্দেশ্য সাধনকল্পে গনচীনের সংজ্ঞে সামরিক চুক্তির আওতায় অত্যাধুনিক সাবমেরিন সহ যুদ্ধজাহাজ ও সামরিক সরঞ্জাম সংগ্রাহ করেছেন হাসিনা সরকার। "ভারত- বাংলাদেশ মৈত্রী চুক্তির" আওতায় ৪৩ বছর আগে উক্ত সম্পদের মালিকানা হস্তগত হলে বাংলাদেশ বিশ্বদরবারে কত বছর আগে নেতৃত্ব দেয়ার সক্ষমতা অর্জন করতো একবার ভাবুনতো।
১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ৩০ বছর মেয়াদি ‘গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি’ স্বাক্ষর করেন বঙ্গবন্ধু তনয়া দেশরত্ম শেখ হাসিনা। পরের বছর ১ জানুয়ারি থেকে চুক্তিটি কার্যকর হয়ে আজও বলবৎ রয়েছে।তখন থেকেই শুরু হয় পুর্বতন মৈত্রীর বন্ধন পুণ:দ্ধারের আয়োজন।দীর্ঘবছর পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের মধ্য দিয়ে উক্ত আক্ষাংকা বাস্তবায়নের পথ সুগম হল।
জাতির জনকের কন্যা ২০০৯ সালের পর দ্বিতীয়বার সরকার গঠন করে চীনসহ কয়েকটি দেশের সঙ্গে প্রযুক্তি সহায়তা, সামরিক সরঞ্জাম, অবকাঠামো উন্নয়ন, সম্পদ আহরন, পারমানবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন সহ নানা ক্ষেত্রে সমঝোতা স্মারক সই করেছে। এসব সমঝোতায় সাধারণত তথ্যবিনিময়, প্রশিক্ষণ ও কারিগরি ক্ষেত্রে নানামুখী সহযোগিতার উল্লেখ আছে। অন্যান্ন দেশের চাইতে ভারত প্রতিবেশি দেশ হিসেবে উক্ত সহযোগিতার ক্ষেত্র সামরিক খাতের চাইতেও অন্য অনেক ক্ষেত্রে এখন অনেক বড় হয়ে উঠছে। বিশ্বব্যাপি সাতশত কোটি মানুষের বাস, তম্মধ্যে ভারতেই বসবাস করে প্রায় দেড় শত কোটি মানুষ। বাংলাদেশ ও ভারতে বসবাস করে দুই শত কোটির কাছাকাছি মানব সন্তান। বিপুল পরিমান জনসংখ্যার দৈনন্দিন চাহিদা পুরণকল্পে নেয়া সহযোগিতায় বৈরিতার প্রশ্ন অবান্তর নয় কি?
দুই দেশের সমুদ্র সম্পদ, অভিন্ন নদীর পানি, ভুগর্স্থ খনিজসম্পদ, প্রাকৃতিক সম্পদ, অর্থনৈতিক অবকাঠামো, সামরিক সরঞ্জাম, যোগাযোগ অবকাঠামো, সমুদ্র বন্দর, সমুদ্রের বিশাল সম্পদরাজীর অনুসন্ধান ও উত্তোলন ইত্যাদি অর্থনৈতিক উন্নতির চাবিকাঠি সমূহ একযোগে করা গেলে দুই দেশই অর্থনৈতিক উন্নতির শিখরে উঠতে পারবে বলে বিশেষজ্ঞরা অনেক আগে থেকে মতামত ব্যাক্ত করে আসছে। বিশেষজ্ঞগন এও মনে করেন বিদ্যমান সম্পদ সঠিকভাবে আহরন ও ব্যবহার করা গেলে অত্রাঞ্চলের জনচাহিদা পূরণ সাপেক্ষে অবশ্বাম্ভাবি বহি: বিশ্বকেও সহযোগীতা করা সম্ভব হবে। উভয় দেশের জনগনের উপলব্দিতে যখন সকল প্রকার বৈরিতাকে পরিহার করে উন্নতি, অগ্রগতির অর্থনৈতিক বিষয় সমূহ সমাধানকল্পে সম্পর্ক নিবিড়তর করে তোলার প্রয়োজনীতা দেখা দিয়েছে--তখনই কায়েমি স্বার্থান্বেষী মহলের জাতীয় ও আন্তজাতিক ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য যে ---দুই দেশের পরস্পরের বিশাল বাজার, ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত শ্রেণির বর্ধিত চাহিদা পূরনকল্পে আন্তজাতিক সম্পর্কের ফায়দা নিয়ে বাংলাদেশ-ভারত যখন বিশ্ববাজারে একটি বড় আর্থিক অঞ্চল হিসেবে দাঁড়ানোর জন্যে প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন নানা বিতর্ক উত্থাপন করার অন্তহীন চেষ্টা লক্ষ করা যাচ্ছে। উল্লেখিত সমস্ত বিতর্ক অর্থহীনভাবে উত্থাপন করে অত্রাঞ্চলকে অগ্রসরমান বিশ্ব থেকে পিছিয়ে দিতে উদগ্রিব হয়ে উঠে পড়ে লেগেছে স্বার্থান্বেষী মহলটি। বাংলাদেশ তাঁর নিজস্ব প্রযুক্তিতে কারো উপর নির্ভরশীল না হয়ে-- বিদ্যমান সম্পদ আহরন সম্ভব কিনা, আলোচনা না করে অযাচিত অন্যের সহযোগিতায়ও বাঁধা প্রদান করে চলেছে। তাঁরা কার উদ্দেশ্য হাসিলের চেষ্টা করছে? জনগনই সময়ে বিচার করবে--- ইনশাল্লাহ।
বিশ্বব্যাপি উন্নত দেশসমুহের পাস্পারিক সহযোগীতার আলোকে অত্রাঞ্চলেও "বাংলাদেশ-ভারত" পরস্পরের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাঁধা অপসারন কল্পে অমিমাংশীত এবং দীর্ঘ যুগের অনুচ্ছারিত বিষয় সমূহ যেমন---" সমুদ্র সীমানা নির্ধারন, গঙ্গা চুক্তি, চিটমহল সমস্যা সহ অনেকগুলী সমস্যা ইতিমধ্যে সমাধান করেছে। অন্যান্ন বিরাজমান সমস্যা সমূহ চিহ্নিত করনের উদ্যোগ গ্রহন করেছে। তিস্তা সহ সকল সমস্যা সমাধান করে দুটি দেশ উন্নয়ন অগ্রগতির লক্ষে পরস্পর সহযোগীতার হাত সম্প্রসারিত করার উদ্যোগ নিয়েছে। জাতির জনকের কন্যা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রমৌদি বদ্ধপরিকর--এতদাঞ্চলের উন্নতির লক্ষে প্রয়োজনীয় যা যা করার দরকার তাই তাঁরা দুই নেতাই করবেন।ইতিমধ্যে দুই দেশের মধ্যে বহুপাক্ষিক ২২টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সাক্ষরিত হয়েছে। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্র চিহ্নিত করার কাজও চলছে। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সহযোগিতার ধারাবাহিকতা রক্ষা করার দৃড অঙ্গিকারও ব্যাক্ত করেছেন দুই নেতা।
এতেই স্বার্থান্বেষী মহলের বুকে চিন চিন ব্যাথা শুরু করেছে। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের পরিক্ষিত প্রতিবেশি দুইবন্ধু দেশ পারস্পারিক সহযোগীতায় উন্নয়নের মহাসড়কে উঠে গেলে ষড়যন্ত্রকারিদের যুগ যুগান্তরের ষড়যন্ত্রের কালবিড়াল বেরিয়ে পড়বে। বাংলার পথে প্রান্তরে ঘুরে বেড়ানো পরসম্পদে বলিয়ান উক্ত কাল বিড়াল অবশ্যাম্ভাবি গোষ্টিগত চোরের সুস্বাধু উপাদেয় খাদ্যে পরিণত হবে।কাল বিড়ালের সুস্বাধু মাংস চোরের মাত্রাতিরিক্ত প্রহারের ক্ষেত্রে অত্যান্ত প্রয়োজনীয়--খনার বচন থেকেই জানি।
ruhulaminmujumder27@gmail.com
(রুহুল আমিন মজুমদার)
বাংলাদেশের রাজনীতির একটি অংশের ধারা প্রবাহিত হচ্ছে অদ্ভূত যুক্তিহীন বাগাড়ম্বরতার স্রোতের মধ্য দিয়ে। এই গোষ্টিটি বাংলাদেশের অভ্যুদ্বয়ের আগে পাকিস্তান রাষ্ট্রটিকে টিকিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃত সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ভারত বিদ্বেসী মনোভাব উদ্ভব ঘটিয়েছিল।পাকিস্তানী শাষকগোষ্টির পরিকল্পিত পরিকল্পনায় এই মনোভাব সৃষ্টি এবং লালন করা হয়েছিল।তাঁদের পরিকল্পনার হোমওয়ার্ক সম্পন্ন করা হয়েছিল অখন্ড ভারতের পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে পূর্বাঞ্চলের মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলকে অন্তভূক্তির উদ্দেশ্যে অত্রাঅঞ্চলে " হিন্দু --মুসলিম" দাঙ্গা সৃষ্টি করে একিভূত পাকিস্তান সৃষ্টির দাবিকে ত্বরান্বিত করার উদ্দেশ্য সাধন করতে।
পরবর্তীতে জাতিগত ভাবে পাকিস্তান- হিন্দুস্তান দুটি রাষ্ট্র উদ্ভব হয়েছে সত্য কিন্ত্যু হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গায় সৃষ্টি হওয়া বৈরিভাব আর কখনও দূর করার চেষ্টা হয়নি। বরঞ্চ পাকিস্তানীদের শাষন শোষন দীর্ঘায়ীত করার লক্ষে অত্রাঞ্চলের উন্নয়ন অগ্রগতির চাবিকাঠি অমিমাংসীত রেখে ক্ষেত্র বিশেষ অনুচ্ছারিত রেখে সময় সময় বৈরিতাকে উস্কে দেয়ার নীতি গ্রহন করেছিল। পাকিস্তানী শাষক গোষ্টির অ-প্রকাশিত উক্ত নীতি অত্রাঞ্চলে লালন করার জন্যে একটি মুৎসুদ্ধি গোষ্টি, রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় তাঁরা উদ্ভব ঘটিয়েছিল।উদ্ভব হওয়া কায়েমী স্বার্থবাদী গোষ্টিটি ''দ্বিজাতি তত্বের" ছদ্ধাবরনে 'পবিত্র ধর্ম ইসলাম'কে ব্যবহার করে অত্রাঞ্চলের মুক্তিকামী জনগনের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে অস্ত্রধারন করতেও দ্বিধা বোধ করেনি।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত বাংলাদেশের স্বাধীনতার উদ্দেশ্যে পরিচালিত বাঙ্গালীর মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট তৈরীর প্রাক্কালে প্রচন্ডভাবে বিকশীত করেছিল।এদেশীয় সেই সমস্ত অনুচরেরা শেষপয্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে অস্ত্রহাতে সম্মুখ যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে দখলদার পাকিস্তানী সেনাদের সহযোগীতায় অকাতরে বাঙ্গালী হত্যা, বাঙ্গালী নারী দর্শন, অসহনীয়, অবর্ননীয় মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত হতেও কুন্ঠিত হয়নি।' ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে বাঙ্গালী দামাল ছেলেরা পাকিস্তানী সেনাদের সঙ্গে তাঁদেরকেও পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদ্বয় ঘটিয়েছিল।
পাকিস্তান সৃষ্টির প্রারম্ভেই বাঙ্গালী জাতির জনক বুঝতে পেরেছিলেন পশ্চিমারা তাঁদের শোষন শাষন অব্যাহত রাখার স্বার্থে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে অত্রাঞ্চলের সম্পদরাজীর আহরন করবেনা। সম্পদ ছাড়া অত্রাঞ্চলের জনগনের জীবনমানও উন্নয়ন হবে না। ভারতের প্রয়াত নেত্রী "প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি"ও একই ভাবে বুঝতে পেরেছিলেন পশ্চিমাদের শাষন শোষন অব্যাহত রাখার স্বার্থেই পুর্বাঞ্চলের বিপুল সম্পদ আহরনে পশ্চিমারা নিত্য বাধা হয়ে দাঁড়াবে। সীমানা চিহ্নিতকরন জটিলতার অজুহাতে ভারতকে এককভাবে সম্পদ আহরন করতেও দিবে না। এমনিতেই সিমান্তে অহেতুক জটিলতার পক্ষেই ছিল পশ্চিম পাকিস্তান। অথছ সমৃদ্ধ অত্রাঞ্চলের বিপূল পরিত্যাক্ত সম্পদ আহরন ও সূষম ব্যবহার ছাড়া ঘনবসতিপূর্ণ জনগোষ্টি সমৃদ্ধ অত্রাঞ্চল অর্থনৈতিক উন্নতি ও অগ্রগতি কোনভাবেই সম্ভব হবেনা।
বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে-- দুই দেশের সুদুরপ্রসারী দৃষ্টিসম্পন্ন দুইনেতা ভারত বিভাগ ও অভ্যন্তরীন ষড়যন্ত্রের রাজনীতির প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন।বিশ্ব সভ্যতার বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্ন জাতিগোষ্টি প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সম্পদ আহরন ও বিপনের মাধ্যমে সম্পদশালী জাতিতে রুপান্তরিত হয়ে জ্ঞান বিজ্ঞানেও এগিয়ে গেছে। একই সময়ে স্বাধীনতা পেলেও ভারতীয় উপমহাদেশের কোন দেশেই স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্রহেতু বিপুল সম্পদ থাকা সত্বেও কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন ও অগ্রগতি সম্ভব হয়নি। অথছ বিশ্বব্যাপি কর্মশক্তির অধিকাংশই ভারতীয় উপমহাদেশেই বসবাসরত ছিল।
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর বিশ্ব নেতৃবৃন্দের তিক্ত অভিজ্ঞতার আলোকে এবং সম্মিলীত জাতিপুঞ্জের ব্যার্থতা সম্যক উপলব্দিতে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের সংজ্ঞা নির্ধারন সহ "জাতিসংঘ" প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে।ষড়যন্ত্রকারিরা তথায় মনযোগ দেয়ার সুযোগ না দিয়ে দখল ও আধিপত্য বিস্তারের কাল্পনিক গল্প ছড়িয়ে ভারত বিদ্বেসী মনোভাব সৃষ্টিতেই মনযোগী ছিল। এহেন ষড়যন্ত্র সম্পর্কে দুই দেশের দুই নেতার উপলব্দি সময় উপযোগি ও সমপয্যায় হওয়ায় মুলত: বাংলাদেশের স্বাধীনতার লক্ষে পরিচালিত বাংলার মুক্তিকামী মানুষের মুক্তিযুদ্ধ ভারতের সহযোগিতায় পরিপূর্ণতা পেতে বিপুল ভুমিকা পালন করেছিল।
তাই দেখা যায়--একাত্তরে স্বাধীনতার প্রাণপুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার পরপরই বাংলাদেশের নিত্য প্রতিবেশী ভারতের সহযোগিতার যাত্রা শুরু হয়। ভারত কয়েক লাখ শরণার্থীকে মাসের পর মাস লালন করেছে, এককোটি শরনার্থী আশ্রয় দিয়েছে, তাঁদের খাবার দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধা ছাত্র জনতাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে শত্রু মোকাবেলার উপযোগী করে গড়ে তোলেছে। প্রবাসী মুজিব নগর সরকারের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে মুলত: ভারত থেকে। স্বাধীনতা যুদ্ধের চরম পর্যায়ে তাঁদের সেনাবাহিনী পাঠিয়ে দেশকে পাক হানাদারমুক্ত করায় সহযোগীতা করেছে। মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধের মাঠে ভারতীয় সেনাবাহিনীর উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। অত্রাঞ্চলের দূরদর্শী রাজনীতির দুই প্রভাবশালী নেতা বঙ্গবন্ধু ও ইন্দিরা গান্ধীর ভবিষ্যত প্রজম্মের উন্নতি, অগ্রগতির প্রতি সুদুর প্রসারী দৃষ্টি ভঙ্গি অটুট,ও ঐক্যমত্য ছিল বলেই সম্ভব হয়েছে।
পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভারতীয় সরকারের আস্থা থেকেই ক্রমাগত সহযোগিতার ক্রমবর্ধমান ধারারও বিস্তৃতি ঘটেছিল।স্বাধীন বাংলাদেশের যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির সামগ্রিক উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু সরকারের প্রতি প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও ছিল সে আস্থারই প্রতিবিম্ব। স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই ‘ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী চুক্তি’ ছিল পারস্পরিক আস্থাপূর্ণ সম্পর্কের ক্ষেত্রে অনন্য এক সংযোজন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও সে সময়ের ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ১৯৭২ সালের ১৯ মার্চ চুক্তিটি স্বাক্ষর করেছিলেন। উভয় দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, উন্নয়নে সহযোগিতা, সম্পদ আহরন, সম্পদের কায্যকর ব্যবহার, আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধা, অমিমাংসীত ভুখন্ড হস্তান্তর, উভয় দেশের জল ও স্থল সীমানা চিহ্নিতকরন, অভিন্ন নদীর পানি সুষম বন্টন, চিটমহল বিনিময় সহ বহুমাত্রিক আঞ্চলিক সহযোগীতাপুর্ণ ২৫ বছর মেয়াদি "ভারত ---বাংলাদেশ মৈত্রী চুক্তি " সম্পাদিত হয়েছিল। চুক্তিটি শেষাবদি "মুজিব-- ইন্দিরা" মেত্রী চুক্তি নামেই খ্যাতি অর্জন করেছিল।
প্রীয় পাঠক লক্ষ করুন-- উল্লেখিত চুক্তিটি আজ থেকে ৪৩ বছর আগে কায্যকর হলে এই সময়ে দুই দেশের অর্থনৈতিক অবস্থান কোথায় পৌঁছাত।মুজিব--ইন্দিরা মৈত্রী চুক্তির ধারাবাহিকতায় জাতির জনকের কন্যার এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী মৌদির নেতৃত্বে চিটমহল ও সমুদ্র সীমানা নির্ধারীত হওয়ার পর বাংলাদেশের আয়তন দাঁড়িয়েছে দ্বিগুনেরও বেশী।প্রাপ্ত ভুখন্ড ও সমুদ্র সীমানার সম্পদরাজী পাহারা দেয়ার জন্যে সামরিক সরঞ্জামের উপস্থীত প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। উদ্দেশ্য সাধনকল্পে গনচীনের সংজ্ঞে সামরিক চুক্তির আওতায় অত্যাধুনিক সাবমেরিন সহ যুদ্ধজাহাজ ও সামরিক সরঞ্জাম সংগ্রাহ করেছেন হাসিনা সরকার। "ভারত- বাংলাদেশ মৈত্রী চুক্তির" আওতায় ৪৩ বছর আগে উক্ত সম্পদের মালিকানা হস্তগত হলে বাংলাদেশ বিশ্বদরবারে কত বছর আগে নেতৃত্ব দেয়ার সক্ষমতা অর্জন করতো একবার ভাবুনতো।
১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ৩০ বছর মেয়াদি ‘গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি’ স্বাক্ষর করেন বঙ্গবন্ধু তনয়া দেশরত্ম শেখ হাসিনা। পরের বছর ১ জানুয়ারি থেকে চুক্তিটি কার্যকর হয়ে আজও বলবৎ রয়েছে।তখন থেকেই শুরু হয় পুর্বতন মৈত্রীর বন্ধন পুণ:দ্ধারের আয়োজন।দীর্ঘবছর পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের মধ্য দিয়ে উক্ত আক্ষাংকা বাস্তবায়নের পথ সুগম হল।
জাতির জনকের কন্যা ২০০৯ সালের পর দ্বিতীয়বার সরকার গঠন করে চীনসহ কয়েকটি দেশের সঙ্গে প্রযুক্তি সহায়তা, সামরিক সরঞ্জাম, অবকাঠামো উন্নয়ন, সম্পদ আহরন, পারমানবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন সহ নানা ক্ষেত্রে সমঝোতা স্মারক সই করেছে। এসব সমঝোতায় সাধারণত তথ্যবিনিময়, প্রশিক্ষণ ও কারিগরি ক্ষেত্রে নানামুখী সহযোগিতার উল্লেখ আছে। অন্যান্ন দেশের চাইতে ভারত প্রতিবেশি দেশ হিসেবে উক্ত সহযোগিতার ক্ষেত্র সামরিক খাতের চাইতেও অন্য অনেক ক্ষেত্রে এখন অনেক বড় হয়ে উঠছে। বিশ্বব্যাপি সাতশত কোটি মানুষের বাস, তম্মধ্যে ভারতেই বসবাস করে প্রায় দেড় শত কোটি মানুষ। বাংলাদেশ ও ভারতে বসবাস করে দুই শত কোটির কাছাকাছি মানব সন্তান। বিপুল পরিমান জনসংখ্যার দৈনন্দিন চাহিদা পুরণকল্পে নেয়া সহযোগিতায় বৈরিতার প্রশ্ন অবান্তর নয় কি?
দুই দেশের সমুদ্র সম্পদ, অভিন্ন নদীর পানি, ভুগর্স্থ খনিজসম্পদ, প্রাকৃতিক সম্পদ, অর্থনৈতিক অবকাঠামো, সামরিক সরঞ্জাম, যোগাযোগ অবকাঠামো, সমুদ্র বন্দর, সমুদ্রের বিশাল সম্পদরাজীর অনুসন্ধান ও উত্তোলন ইত্যাদি অর্থনৈতিক উন্নতির চাবিকাঠি সমূহ একযোগে করা গেলে দুই দেশই অর্থনৈতিক উন্নতির শিখরে উঠতে পারবে বলে বিশেষজ্ঞরা অনেক আগে থেকে মতামত ব্যাক্ত করে আসছে। বিশেষজ্ঞগন এও মনে করেন বিদ্যমান সম্পদ সঠিকভাবে আহরন ও ব্যবহার করা গেলে অত্রাঞ্চলের জনচাহিদা পূরণ সাপেক্ষে অবশ্বাম্ভাবি বহি: বিশ্বকেও সহযোগীতা করা সম্ভব হবে। উভয় দেশের জনগনের উপলব্দিতে যখন সকল প্রকার বৈরিতাকে পরিহার করে উন্নতি, অগ্রগতির অর্থনৈতিক বিষয় সমূহ সমাধানকল্পে সম্পর্ক নিবিড়তর করে তোলার প্রয়োজনীতা দেখা দিয়েছে--তখনই কায়েমি স্বার্থান্বেষী মহলের জাতীয় ও আন্তজাতিক ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য যে ---দুই দেশের পরস্পরের বিশাল বাজার, ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত শ্রেণির বর্ধিত চাহিদা পূরনকল্পে আন্তজাতিক সম্পর্কের ফায়দা নিয়ে বাংলাদেশ-ভারত যখন বিশ্ববাজারে একটি বড় আর্থিক অঞ্চল হিসেবে দাঁড়ানোর জন্যে প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন নানা বিতর্ক উত্থাপন করার অন্তহীন চেষ্টা লক্ষ করা যাচ্ছে। উল্লেখিত সমস্ত বিতর্ক অর্থহীনভাবে উত্থাপন করে অত্রাঞ্চলকে অগ্রসরমান বিশ্ব থেকে পিছিয়ে দিতে উদগ্রিব হয়ে উঠে পড়ে লেগেছে স্বার্থান্বেষী মহলটি। বাংলাদেশ তাঁর নিজস্ব প্রযুক্তিতে কারো উপর নির্ভরশীল না হয়ে-- বিদ্যমান সম্পদ আহরন সম্ভব কিনা, আলোচনা না করে অযাচিত অন্যের সহযোগিতায়ও বাঁধা প্রদান করে চলেছে। তাঁরা কার উদ্দেশ্য হাসিলের চেষ্টা করছে? জনগনই সময়ে বিচার করবে--- ইনশাল্লাহ।
বিশ্বব্যাপি উন্নত দেশসমুহের পাস্পারিক সহযোগীতার আলোকে অত্রাঞ্চলেও "বাংলাদেশ-ভারত" পরস্পরের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাঁধা অপসারন কল্পে অমিমাংশীত এবং দীর্ঘ যুগের অনুচ্ছারিত বিষয় সমূহ যেমন---" সমুদ্র সীমানা নির্ধারন, গঙ্গা চুক্তি, চিটমহল সমস্যা সহ অনেকগুলী সমস্যা ইতিমধ্যে সমাধান করেছে। অন্যান্ন বিরাজমান সমস্যা সমূহ চিহ্নিত করনের উদ্যোগ গ্রহন করেছে। তিস্তা সহ সকল সমস্যা সমাধান করে দুটি দেশ উন্নয়ন অগ্রগতির লক্ষে পরস্পর সহযোগীতার হাত সম্প্রসারিত করার উদ্যোগ নিয়েছে। জাতির জনকের কন্যা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রমৌদি বদ্ধপরিকর--এতদাঞ্চলের উন্নতির লক্ষে প্রয়োজনীয় যা যা করার দরকার তাই তাঁরা দুই নেতাই করবেন।ইতিমধ্যে দুই দেশের মধ্যে বহুপাক্ষিক ২২টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সাক্ষরিত হয়েছে। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্র চিহ্নিত করার কাজও চলছে। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সহযোগিতার ধারাবাহিকতা রক্ষা করার দৃড অঙ্গিকারও ব্যাক্ত করেছেন দুই নেতা।
এতেই স্বার্থান্বেষী মহলের বুকে চিন চিন ব্যাথা শুরু করেছে। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের পরিক্ষিত প্রতিবেশি দুইবন্ধু দেশ পারস্পারিক সহযোগীতায় উন্নয়নের মহাসড়কে উঠে গেলে ষড়যন্ত্রকারিদের যুগ যুগান্তরের ষড়যন্ত্রের কালবিড়াল বেরিয়ে পড়বে। বাংলার পথে প্রান্তরে ঘুরে বেড়ানো পরসম্পদে বলিয়ান উক্ত কাল বিড়াল অবশ্যাম্ভাবি গোষ্টিগত চোরের সুস্বাধু উপাদেয় খাদ্যে পরিণত হবে।কাল বিড়ালের সুস্বাধু মাংস চোরের মাত্রাতিরিক্ত প্রহারের ক্ষেত্রে অত্যান্ত প্রয়োজনীয়--খনার বচন থেকেই জানি।
ruhulaminmujumder27@gmail.com
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন