মুজিবাদর্শ বাস্তবায়ন রাষ্ট্রীয় পয্যায় প্রতিফলনে কৌশলী বঙ্গবন্ধুকন্যা----
(রুহুল আমিন মজুমদার)

     একমাত্র শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারনেই বাংলাদেশ বিশ্ব সংস্থার বিভিন্ন পদে অধিষ্ঠিত হতে পেরেছে এবং পারছে।আন্তজাতিক নেতৃত্বের খুব কম সেক্টর বাকি আছে--যেখানে বাংলাদেশের উপস্থিতি এখনও নিশ্চিত হয়নি।জাতি সংঘ দিয়ে শুরু করে বর্তমানের আই,টি বিশ্ব কোথায় নেই বাংলাদেশের অস্থিত্ব? উন্নয়ন!  "সে'তো শেখ হাসিনার যাদুর বাঁশি।" বিশ্বের একজন নেতাকেও খুঁজে পাওয়া যাবেনা--"শেখ হাসিনার উন্নয়নের গতিতে বিস্মিত নন"। তিনি প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষের প্রয়োজনীয়তা, চাওয়া পাওয়া, অভাব অভিযোগ যেমন অন্তর দিয়ে অনুভব করেন, তেমনি শহুরে মধ্যবিত্ত শ্রেনী এবং উচ্চবিত্তের চাওয়া পাওয়াও অন্তর দিয়ে অনুভব করেন। তিনি যেমন চাকুরি জীবিদের "বেতন ভাতা' দ্বিগুন করে স্থায়ী বেতন কাঠামো দিয়েছেন ; তেমনি বাজার স্থীতিশীল রেখে মধ্যবিত্ত শ্রেনীকেও স্বস্তিতে রেখেছেন। প্রতিবেশি দেশ সমুহের সঙ্গে সু'সম্পর্কের মাধ্যমে যেমন যুগযুগান্তরের সমস্যা সমূহ সমাধান করেছেন--মুক্তিযুদ্ধে বৈরি দেশ সমূহের সঙ্গেও গড়ে তুলেছেন বন্ধুত্বের অমলিন বন্ধন।
    যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে উন্নয়নের গতিধারা পরিবর্তিত হয়ে "জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর "স্বপ্নের বাংলাদেশে"র স্থান দখল করেছে তাঁর দৌহিত্র 'জনাব সজিব ওয়াজেদ জয়ে'র উদ্ভাবিত এবং তাঁর জৈষ্ঠকন্যা কতৃক বাস্তবায়ীত "ডিজিটাল বাংলাদেশ" নামে। আধুনিক বিশ্বের স্থান দখল করেছে "ডিজিটাল বিশ্ব বা আইটি বিশ্ব"। একদা আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে না পারলেও নেতৃত্বের দুরদর্শীতায় আইটি বিশ্বে বাংলাদেশই সেরার ভূমিকায় অবতির্ন হতে পেরেছে। জেলা গভর্নরে'র স্থান দখল করেছে 'জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান।" মোট কথা শেখ হাসিনার নেতৃত্বের দুরদর্শীতা, সিদ্ধান্ত গ্রহন ও বাস্তবায়নের গতির সঙ্গে সরকার এবং দল কেউ সমান তালে দৌঁড়াতে পারছে না। গভীর ভাবে লক্ষ করলে দেখা যায়-- 'সরকার প্রধানের' চিন্তা চেতনার সঙ্গে সরকারের 'মন্ত্রী পরিষদ', 'সরকার' এবং 'সরকারি দলের নেতাকর্মী'দের 'চিন্তা চেতনায়' বিস্তর ব্যবধান।
     "আমি নির্দিদ্বায় বলতে পারি--শেখ হাসিনা জাতির জনকের শোষনমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার অঙ্গিকার হ'তে চুল পরিমানও পদস্থলিত হননি।'৭২ এর সংবিধান পুণ:প্রতিষ্ঠার নিয়ন্তর প্রচেষ্টা হতে কিঞ্চিত দূরে সরেননি।মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সর্বস্তরে প্রতিষ্ঠার অঙ্গিকার পুরণে নিরলস প্রচেষ্টা থেকে বিরত হননি।ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম দিয়ে শুরু হওয়া আন্দোলন সরকার গঠন করার তিনবছরের মধ্যে পরিপূর্ণতা দিতে পেরেছেন খাদ্যে বাংলাদেশকে স্বয়ং সম্পূর্ণতার মধ্য দিয়ে। সর্বশেষ ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার নিমিত্তে সংবিধানের আলোকে নির্বাচন কমিশন গঠন ছিল সেই  আন্দোলনের ইতি।
          তিনি আইনের শাষন প্রতিষ্ঠার কঠিন সংগ্রাম অতিক্রম করার পথে এখনও বিশ্রাম করার প্রয়োজন অনুভব করেননি।বাঙ্গালী জাতি সত্বা সর্বস্তরে ফিরিয়ে আনতে দুর্গম পথের ভয়ে আড়ষ্টতায় ভোগেননি।  যারা বিভিন্ন লোভ লালসায় "বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বিচ্যুত হয়ে ব্যাক্তি লাভের 'স্বপ্নে বিভোর" তাঁদের নিকট মনে হচ্ছে যেন অশুভ শক্তির আন্দোলন, নাশকতা, জীবনহানী, উচ্চ আদালতের রায় কায্যকরের বাধ্যবাধকতাহেতু  বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নের কঠিন শফথ হ'তে "শেখ হাসিনা বিচ্যুত হয়েছেন'। 'আমাদের বিশ্বাসের মধ্যে ফাটল আছে 'শেখ হাসিনার মনোবলে কমতি চোখে পড়েনা। "শেখ হাসিনা  সাম্প্রদায়িক শক্তির সাথে আপস করেছেন যারা চিন্তা করেন-'আমি মনে করি তাঁরা বোকার স্বর্গে বাস করেন।" অনেক আগেই (উচ্চ আদালত কতৃক সংশোধনী বাতিলের পর) তিনি বার কয়েক বলেই দিয়েছেন-''৭২ এর সংবিধান অনুযায়ী দেশ চলছে, এবং ইনশাল্লাহ এই পথ চলা অব্যাহত থাকবে"।  প্রধানমন্ত্রীর কথিত '৭২ এর সংবিধান কি আদৌ সাম্প্রদায়িক?
      ত্রিশবছর যে সমাজকে শুধু পেছনেই ঠেলা হয়েছে সেই সমাজকে ৫/৭ বছরের চেষ্টায় পূন:স্থাপন সম্ভব ;এইরুপ চিন্তা চেতনা অতিবিপ্লবী মানষিকতার বহি:প্রকাশ ব্যাতিত অন্য কিছু নয়।
    বাংলাদেশের 'অসাধারন মানুষ'দের মধ্যে 'শেখ হাসিনাকে মুল্যায়নে সংকির্ণতা থাকলেও 'সাধারন মানুষ'এবং 'বহি:বিশ্ব' ঠিকই তাঁকে মুল্যায়ন করছে।তাঁকে হাড়ে হাড়ে চিনে গেছে।তাঁর শক্তির উৎস কোথায়,শেকড় কোথায়, চাওয়া পাওয়া কি? সাধারনে বেশ ভালই জানা হয়ে গেছে। বিদেশীরা  গভেষনা করে স্থীর সিদ্ধান্তে এসে গেছেন অনেক আগেই--" শেখ হাসিনা সারা বিশ্বের বিস্ময়।" অথছ আমাদের গুটিকতক 'অ-সাধারন ব্যাক্তি' এখনও  বুঝতে পারেনি। আমাদের শত্রুরা তো বিদেশীরা চেনার আগেই চিনে গেছে--শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতার ঘরে শ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গকন্যা জম্ম নিয়েছে--" জাতির পিতাকে স্বপরিবারে হত্যা করা হলেও সেই ঘরে জম্ম নেয়া বঙ্গকন্যা  বহাল তবিয়তেই আছে"। বঙ্গকন্যাকে হত্যা করে মুক্তিযুদ্ধের 'পক্ষ শক্তি'কে নেতৃত্ব শুন্য করার  প্রচেষ্টার অন্ত কখনই ছিলনা, এখনও নেই।
      ইহা সত্য-- আওয়ামী লীগের মধ্যে অনেক ত্যাগী আদর্শবান, সর্বস্বহারা নেতাকর্মী আছেন যারা সদ্য আগত  'হাইব্রিড, কাউয়া নেতাকর্মীদের' অত্যাচারে, আস্ফালনে ক্ষুব্দ। তাঁদের ভূলে গেলে চলবে না ----"বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি ঐতিহ্যবাহী গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক গন সংগঠন।" এই দল কমরেড নির্ভর কমিনিষ্ট পার্টি নয় আবার উগ্র ধর্মীয় মৌলবাদি ক্যাডার ভিত্তিক সংগঠনও নয়।  আওয়ামীলীগ যেহেতু গনসংগঠন --এখানে দলে দলে নেতাকর্মী এবং সাধারন মানুষ আসবে; সময়ে আবার অনেকে  চলেও যাবে। আদর্শ ধারন করে রাজনীতি করার আকালে হাইব্রিডের দৌরাত্ব অনস্বিকায্য বৃদ্ধি পাবে- ইহা স্বাভাবিক।
                  আদর্শিক, ত্যাগী, দলকানা নেতাকর্মীদের এখানে রাগ বা অভিমান করার কিছুই নেই। রাজনীতির এমনি ধারা নতুন নতুন ডেকে আনার প্রয়োজন হতে পারে কিন্তু  পুরাতন কেউ কাউকে ডাকার প্রয়োজন মনে করেনা।সামনের সারিতে কেউ কাউকে সহজভাবে বসতে  দেয়না। মেধা ও যোগ্যতাগুনে সামনের সারির আসন  কারো না কারো থেকে কেড়ে নেয়ার প্রয়োজন হতে পারে। দলীয় রাজনীতিতে আপনা আপনি অর্জিত হয়না কোন পদপদবি। রাজনীতিতে অভিমানের অপর নাম 'রাজনীতির আত্মহত্যা' বা অকালমৃত্যু। রাজনীতি  বিমূখতার অর্থ হচ্ছে রাজনীতি"-- আপনাকে রাজনীতি ত্যাগ করার সুযোগ দেয়া'। কখনও রাজনীতিতে পুন:  ফিরে আসতে চাইলেও 'রাজনীতি আপনাকে আর হয়তোবা গ্রহন করবেনা'।
     রাজনীতির মাধ্যমে নেতা প্রতিষ্ঠিত হয়।রাজনীতিতে অবদানের কারনে  মন্ত্রী এমপি হ'তে পারেন- ত্যাগহীন কে কখন  প্রতিষ্ঠিত হ'তে পেরেছেন, বিশেষ পরিস্তীতি ছাড়া? বাংলাদেশ একটি তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নকামি দেশ। স্বভাবতই এখানে অনেকেরই জনসেবার পাশাপাশি নিজের পরিবার এবং আত্মীয় স্বজনের সেবা করার ইচ্ছা বা মনোবাসনা থাকাটা অত্যান্ত স্বাভাবিক। আত্মীয় স্বজনকে প্রোভাইড করার জন্য হয়ত তিনিও রাজনীতি করেছেন এবং জীবনের সুবর্ণ সময় গুলী দলের কাজে, রাজনীতির জন্য ব্যয় করেছেন। মনে মনে আশা করেছিলেন দল যদি কোন দিন ক্ষমতা পায় এবং তিনি যদি সুবিধাজনক অবস্থানে থাকেন--তবে 'নীজের পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদে'র জন্য কিছু একটা নিশ্চয়ই করতে পারবেন। নেতাঁর ক্ষমতার বলয়ে দুই চারজন নন-আওয়ামীলীগার, রাজাকার, আলবদর পুত্রের ক্ষমতার দাপট থাকবেনা এমনটি আশা করা বাতুলতা মাত্র।
               যে সমস্ত নেতাদের এলাকায় 'হাইব্রিডের দৌরাত্ব' নেই সেই সমস্ত এলাকার রাজনৈতিক অবস্থা অস্বাভাবিক বলা যেতে পারে। নিশ্চয়ই সেই এলাকার নেতাকর্মীদের দলের প্রতি আনুগত্য অপরিসীম এবং অন্তর দিয়ে আদর্শ ধারন করতে পেরেছেন'। আমাদের সবচেয়ে বড় দুভাগ্য ঐতিহ্যবাহী গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের 'কর্মীবাহিনী' এবং 'গনতন্ত্রের অনুশীলন' করা লাখ লাখ 'নেতাকর্মীর সরব উপস্থীতি থাকা সত্বেও দলীয় একক রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের মালিক-'একজনের হাতে কুক্ষিগত হয়ে যাওয়া'।দলের ত্যাগী, আদর্শবান নেতাকর্মীদের সময়ে লোভ লালসার আবর্তে ঘুরপাক খাওয়ার কারনে মুলত: নতুন 'আমদানীকৃত নেতাকর্মী'দের অনুপ্রবেশ ঘটে। তাঁদেরকে গ্রহনে আপত্তিকর মন্তব্য লক্ষ করা যায়- নিজেদের লোভের কারনে ঘটেছে তা কিন্তু প্রকাশিত থাকেনা।
          আমি বিশ্বাস করি 'লক্ষ লক্ষ ত্যাগি নেতাকর্মীর ঘুর্ণায়নে কিছু আগাছা এমনি ডুববে আর উঠবে'-- হতাশার সাগরে নিমজ্জিত হওয়ার  কিছুই নেই। রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমার শুধু দেখার বিষয় --''আমার ত্যাগের বিনিময়ে দল ক্ষমতার মসনদে বসে দলে আদর্শ  ধীরে হলেও বাস্তবায়ন করছে কিনা।' সরকারের রাষ্ট্র পরিচালনার নীতিতে দলীয় আদর্শ প্রতিফলিত হচ্ছে কিনা। রাজনীতি টাকা আহরনের একমাত্র অবলম্বন ত্যাগিদের ইচ্ছা হওয়া কাম্য নয়। টাকা আহরনের ক্ষেত্রের কোন অভাব নেই-- রাজনীতি করার প্রয়োজন হয়না। তাই যদি হয় টাকা আহরন উদ্দেশ্য--" ব্যবসা বা যুৎসই চাকুরিই যথেষ্ট।"
       যে কারনে এবং যে উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে বা যে আদর্শ ধারন করে সর্বস্ব বিলিয়ে রাজনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে ছিলাম -- 'আমার শ্রম আর ত্যাগের বিনিময়ে সরকার গঠিত হওয়ার পর সরকার সেই আদর্শ অনুসরন এবং বাস্তবায়নে কার্পন্যতা করছে কিনা।যদি এমন হয় সরকার গঠনের পর দল আদর্শ বিচ্যুত হয়ে বিপরীত আদর্শ বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিচ্ছেন--"তখন বিদ্রোহ করার বা দলত্যাগ  করার অধিকার আমার রয়েছে"। দলের অভ্যন্তরে থেকে দলীয় সিদ্ধান্তের বিপরীতে অবস্থান গ্রহন--দলের জন্য কখনই সুফল বয়ে আনে না। আওয়ামী লীগের  নেতাকর্মীদের এহেন আচরন বিরুধীদের ভঙ্গুর রাজনীতিতে শক্তিরই যোগান দেয়--ব্যাক্তির ক্ষতি অনিবায্য হয়ে উঠে দলের ক্ষতি হয় সাময়িক।
              আদর্শের অনুসরন্যোগ্য নেতাকর্মীর সংকট অনেক আগে থেকে ছিল। ইদানিং  আকাল দেখা দিয়েছে।এই অবস্থা সৃষ্টির পেছনে বহুবিদ কারনের মধ্যে অন্যতম একটি কারন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে "জেনারেশন গ্যাপ"। নামে বেনামে সামরিক শাষনের যাঁতাকলে পিষ্ট ছাত্রলীগের রাজনীতি। "দীর্ঘবছর ছাত্রদের মধ্যে ছাত্রলীগ কাজ করতে না পারার কারনে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে 'আদর্শিক রাজনীতি' চর্চার বদলে 'পেশিশক্তি নির্ভর রাজনীতি'র আমদানী ঘটেছে'। পেশিশক্তির আমদানী  হয়েছে ছাত্র রাজনীতিতে ছাত্রলীগ  শুধুমাত্র টিকে থাকার প্রয়োজনে। অর্থাৎ শাষক গোষ্টির প্রত্যক্ষ তত্বাবধানে ছাত্ররাজনীতিতে পেশি শক্তির উত্থানের বিপরীতে ছাত্রলীগ 'টিকে থাকার প্রয়োজনে পেশি শক্তি নির্ভর হ'তে হয়েছে।'  পেশিশক্তির কবল থেকে মুক্ত হ'তে ছাত্রলীগকে অনেক সময়ের প্রয়োজন রয়েছে। প্রতিষ্ঠিত শক্তিকে উচ্ছেদ করা কঠিন একটি কাজ-চাইলেই যে সম্ভব তা কিন্তু নয়। পেশীশক্তির কারনে ইতিমধ্যে দল অনেক চড়া মুল্য পরিশোধ করতে হয়েছে। আশা করি গনতন্ত্রের চর্চা অব্যাহত থাকলে পেশীশক্তির বিকাশ স্বয়ংক্রিয় ভাবেই নিয়ন্ত্রিত হতে বাধ্য হবে। এখানে ঘোষনা দিয়ে বা পুলিশি অভিযানে নিয়ন্ত্রন করার কিছুই নেই।রাজনীতি দিয়েই পেশী শক্তির বিকাশ রুদ্ধ করতে হবে- 'দেশরত্ম সেই পথেই হাঁটছেন।'
    আদর্শিক রাজনীতির আকালের ছোট্র একটা উদাহরন দিতে চাই। রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম সম্পর্কে উচ্চ আদালতে রায়ের পর অনেক নেতাকর্মী হরেক রকমের মন্তব্য, উপলব্দি, শোকর গোজার ইত্যাদিতে ব্যাপৃত ছিল।অনেকেই তাঁর ব্যাক্তিগত মন্তব্য, অনেকের সারগর্ব বক্তব্য, অভিজ্ঞতা, উপলব্দি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে দেখা গেছে। একটিবারও উক্ত রায়ের প্রতি বর্তমান সরকারের কি অবস্থান বা কি প্রতিক্রিয়া তা অনুসরন করার প্রয়োজন মনে করেনি। রায়ের  আগে একই  আদালত তৎসম্পর্কীত সংবিধানের দুটি সংশোধনীই বাতিল করেছিলেন এবং 'অবৈধ সেনা শাষন সময়কালকে'ও অবৈধ বলে রায় দিয়েছিলেন। উক্ত রায়ের আলোকে সরকার জাতীয় সংসদে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই  কিছুদিন আগে। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারি রাষ্ট্রপতিদ্বয়ের রাষ্ট্রীয় প্রাপ্য সকল সুযোগ সুবিধা বাতিলের"। তাঁদের মধ্যে একজন জীবিত এবং একজনের মৃত্যু হলেও উভয়ের দলীয় অবস্থান বিদ্যমান রয়েছে।  তথাপিও উক্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোন পক্ষ আন্দোলন দুরের থাকুক একটা বিবৃতি দিয়েও প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেনি।
         "রাষ্ট্র বনাম মাজদার" হোসেন মামলার আংশিক সংশোধন করে সরকার কায্যকর করলেও বাদবাকি অংশ গ্রহন বর্জন থেকে বিরত রয়েছে।সম্পূর্ণ রায় রাষ্ট্র কায্যকর করা ব্যাতিত অহেতুক মন্তব্য করা হীনমন্যতারই পরিচায়ক। সংবিধানে রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম সংযোজন বা হেফাজতের সঙ্গে বৈঠক অসাম্প্রদায়িক আওয়ামী লীগের সাম্প্রদায়িক রুপপরিগ্রহ করার কারন বহন করে না। আদালত নির্দেশ দেয়ার পর সংসদ কতৃক অনুমোদিত হয়ে সংবিধানে সংযোজিত হওয়া পয্যন্ত অন্তত: বলা যায় না রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম সংবিধানে বহাল।তদ্রুপ শিক্ষা সনদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেয়ার অর্থ এই নয় যে---হেফাজত আওয়ালীগকে সমর্থন করেছে বা আওয়ামী লীগ সাম্প্রদায়িকতাকে প্রশ্রয় দিচ্ছে।
    '৭০ এর নির্বাচন ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ৭২ এর অ-সাম্প্রদায়িক সংবিধান প্রনয়নের সময়কাল ; ২০০৯ এর নির্বাচন, ২০১০ এর ৬ষ্ঠ ও অষ্টম সংশোধনী বাতিল এবং ২০১৪-১৫ ইং সালের বাস্তবায়ন সময় কালের বাস্তবতা এক ও অভিন্ন নয়।গনতন্ত্রের মর্মবাণী অনুযায়ী জনমতের প্রাধান্য দেয়াই বিচক্ষন সরকারের নীতি ।বর্তমান সরকার জনমতের প্রতি লক্ষ রেখেই  সাংবিধানিক সিদ্ধান্ত সমূহ নিচ্ছেন--বিভ্রান্তির কোন সুযোগ আছে বলে মনে করি না।
 ruhulaminmujumder27@gmail.com
"জয়বাংলা     জয়বঙ্গবন্ধু"
       
 
 
                             


মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন